Search

Monday, May 21, 2018

ডলার সংকটে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এলসি খুলছে না ব্যাংক

জ্বালানি তেল আমদানি


ইয়ামিন সাজিদ

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই অস্থিরতা চলছে দেশের ডলারের বাজারে। বেসরকারি অনেক ব্যাংকই তীব্র ডলার সংকটে ভুগছে। এর প্রভাব পড়েছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জ্বালানি তেল আমদানিতে। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছে না অনেক ব্যাংক। ফলে জ্বালানি তেলের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) দ্বারস্থ হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। সরাসরি আমদানির পরিবর্তে বিপিসির কাছ থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করছে তারা।

দুই বছর আগেও নীতি ও শর্ত পূরণ না করেই নিজস্ব উদ্যোগে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু করেছিল বেসরকারি খাতের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু এলসি খুলতে না পারায় গত ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বালানি তেলের জন্য বিপিসির ওপর নির্ভরশীল তারা।

সূত্রমতে, ডলার সংকটের কারণে দেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকই এখন আমদানির জন্য বড় কোনো এলসি খোলার ঝুঁকি নিচ্ছে না। পুরনো এলসিগুলোর দায় পরিশোধেও হিমশিম খাচ্ছে অনেক ব্যাংক।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনিস এ খান এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, অনেক দিন থেকেই বাজারে ডলারের সংকট চলছে। বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ডলারের দাম বাড়ছে। ফলে অনেক ব্যাংকই দেখে-শুনে এলসি খুলছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য অনেক জ্বালানি তেলের প্রয়োজন হয়। এ তেল আমদানির জন্য বড় এলসি খোলার সক্ষমতা অনেক ব্যাংকেরই এখন নেই।

দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে উৎপাদনে আছে ১০৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মধ্যে কুইক রেন্টাল ও রেন্টালসহ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৬৬। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাস, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল। এর মধ্যে ৩৫টি ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক।

এর মধ্যে বিভিন্ন শর্তে সামিট পাওয়ার, ওরিয়ন, ডরিন পাওয়ার, বাংলাক্যাটসহ প্রায় ১৫টি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ফার্নেস অয়েল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। তবে দু-একটি কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বিপিসির সঙ্গে চুক্তি না করেই তেল আমদানি শুরু করে। এতে নিয়ম অনুযায়ী প্রাপ্য রয়্যালটি হারায় বিপিসি। নিজস্ব আমদানির সুবাদে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি লিটারে ২০-২৫ টাকা সাশ্রয় করে। কিন্তু ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় জ্বালানি তেলের জন্য আবার বিপিসির কাছেই ফিরছে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী এসব প্রতিষ্ঠান।

অবশ্য তেল আমদানি বন্ধ করা হয়নি বলে জানান বারাকা পাওয়ারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। শুরু থেকেই তারা প্রতি মাসে ৬০-৭০ হাজার টন তেল আমদানি করে আসছেন বলে তিনি বণিক বার্তাকে জানান তিনি।

ডলার সংকটের আশু সমাধান দেখছেন না ব্যাংকারদের অনেকেই। সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ডলারের পর্যাপ্ত রিজার্ভ সত্ত্বেও এলসির দায় পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও চাহিদা অনুযায়ী ডলার দিচ্ছে না। বিদ্যমান এ সংকট ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জ্বালানি তেলের জন্য বিপিসির দ্বারস্থ হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির এলসিও খুলতে পারছে না রূপালী ব্যাংক। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী আমাদের হাতে ডলার নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকও যথাসময়ে পর্যাপ্ত ডলার দিতে পারছে না। এজন্য বাধ্য হয়েই বিপিসির নতুন এলসি নিতে পারছি না। একইভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানের এলসিও দেখে-শুনে খুলতে হচ্ছে।

কম দামে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে গিয়ে এমনিতেই চাপে আছে বিপিসি। কম দামে জ্বালানি তেল বিক্রির কারণে প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় এ চাপ আরো বাড়বে। ২০১৬ সালে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৩৩ ডলার থাকলেও এখন তা ৭০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

এর মধ্যেই বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর আমদানি বন্ধের কারণে বাড়তি জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে বিপিসিকে। বর্ধিত চাহিদা মেটাতে নতুন করে চলতি মাসের শুরুতে অতিরিক্ত দুই লাখ টন তেল আমদানির বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিপিসি।

জানতে চাইলে বিপিসির সদ্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান মো. আকরাম আল হোসাইন বণিক বার্তাকে বলেন, আমরা সব সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে জ্বালানি দিয়ে আসছি। মাঝখানে কিছু প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে জ্বালানি আমদানির অনুমতি নিয়েছে। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়া বিপিসির আমদানি কিছুটা বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪ শতাংশ এবং অকটেন ও পেট্রলের দাম ১০ শতাংশের মতো কমানো হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের আমদানি ব্যয় ৮৩ টাকা। তবে গ্রাহক পর্যায়ে বিপিসি বিক্রি করছে ৬৫ টাকায়।
  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা/ মে ২১,২০১৮ 

The sub-jail that failed to start in 30 years

Decision to turn Sakhipur prison a safe home for children uncertain


Mirza Shakil










The dilapidated sub-jail in Sakhipur upazila of Tangail has not been used since it was built nearly 30 years ago. PHOTO: Mirza Shakil

The land of an unused sub-jail in Sakhipur upazila is being grabbed by the vested quarters as the prison could not start functioning in around 30 years of its completion.

Work for the sub-jail on 2.23 acres of land in the municipal area started in 1985 and construction of the structure, built to accommodate 25 prisoners, was completed in 1988 at a cost of Tk 1 crore.

The activities of the sub-jail, however, could not be started due to political unrest. It has not been used since then.

The main iron gate of the jail has broken up due to rust. The wooden windows of the main building gradually rotted and collapsed. Electric fittings and the water tank has been stolen. Moreover, the jail area has turned into a jungle due to growth of grass and weeds for years.


Wild plants have grown along the walls of the sub-jail due to lack of maintenance. PHOTO: Mirza Shakil

A part of the building, constructed for the assistant superintendent of the jail, has been occupied by a local youth club and the imam of a local mosque, locals said.

The rest of the building is being used as office of the local microbus owners' association, while a part of the land is being used as a stand for CNG-run three-wheelers, they added.

A leader of the local microbus and three-wheeler drivers' association Mohammad Shahjahan Ali Miah claimed that they have been using a part of the land of the abandoned jail after taking permission from the local administration.

A part of the field of the jail is being used as a market, while several owners of adjacent houses have also been using the land for different purposes after grabbing it.

A local kindergarten is using the office room of the jail as its office. School owner Fazlul Haque said he has been using the abandoned room temporarily for public interest with the permission from the local administration. "I shall leave the place anytime the authorities ask," he added.

A section of land of the sub-jail has been grabbed to set up shops. PHOTO: Mirza Shakil

Upazila Nirbahi Officer Mousumi Sarkar Rakhi said they were investigating the matter.

"If anyone is found to have occupied the land of the jail illegally, steps will be taken soon to remove them from there," she added.

The then work assistant of Public Works Department (PWD) Mohammad Tohiz Uddin looked after the jail for 14 years.

He said Tangail PWD, on behalf of the home ministry, handed over the unused jail to Sakhipur Upazila Social Welfare Department on May 26 in 2005 for making it a safe home for children.

Upazila Social Welfare Officer (USWO) Mohammad Mansur Ahmed said they have yet to get any directive from the government so far for turning the unused jail to a safe home for children.

"We have requested the higher authorities to get demarcation of the jail land done for taking it under the control of the social welfare department," he said.

"We believe the grabbers will go away willingly when steps are taken to turn the unused sub-jail to a safe home for children, or for any other social welfare purpose," he added.

  • Courtesy: Daily Star/ May 21, 2018

Anti-narcotics drive: 8 killed in ‘gunfights’ in six districts

Amid an ongoing crackdown on narcotics, eight alleged drug peddlers were killed in one night in separate “gunfights” in different districts of the country.

Three suspected drug traders were killed in Jessore district, while one each died in Chuadanga, Rajshahi, Narsingdi, Jhenidah and Tangail.

In Jhenidah, an alleged drug trader was killed in a ‘gunfight’ with Rab at the junction of three roads at Narendrapur village under Kaliganj upazila of the district, reports our correspondent.

The deceased was identified as Sabdul Mondol, 42, son of Mohammad Ali Mondol of Narendrapur village under the upazila, our Jhenidah correspondent reports quoting Jhenidah Rab camp Commander Golam Morshed.

Rab recovered a nine MM pistol, two rounds of bullets, 100 bottles of phensydil, 150 pieces of Yaba and a helmet from the spot.

Abdul Mannan, a man from the same village said he was working on his vegetable plot with Sabdul on Sunday around 5:00pm when some plain cloth men picked up Sabdul from the plot, reports our correspondent.

In Jessore, three ‘drug peddlers’ were killed in two different areas in the town, reports our Benapole correspondent quoting officer-in-charge of Kotwali Police AKM Ajmal Huda.

The drug traders were killed in separate gunfights between two groups of drug traders in Khejur Bagan area in Nawab Ali of Sheikhati and Kholadanga area in the early hours today, the official said.

Police recovered 500 pieces of Yaba, two pistols and cartridges from the spot.

In Chuadanga, Janab Ali, 32, a ‘drug trader’ was killed in a gunfight with police at Uthli village under Jibonnagar upazila of the district.

Seeing a group of seven to eight people at Synnashitola field, a patrol team of police led by Sub-Inspector Milon Ullah stopped his vehicle on Uthli- Synnashitola road at about 3:30am, reports our Kushtia correspondent quoting officer-In-Charge (OC) of Jibonnagar police station Mahmud Rahman.

The gathering of people opened fire on the policemen when the law enforcers asked what they were doing, triggering a gunfight in retaliation, the OC said.

In Rajshahi, a suspected drug peddler was killed in a “gunfight” with members of Rab-5 around midnight.

Huge amounts of Yaba, arms and ammunition were recovered from the spot, according to a text message sent to media by Rab.

In Narsingdi, a “drug-peddler” accused in multiple criminal cases and a top criminal was killed in a “gunfight” with members of Rab-11, according to a text message sent to media by Rab.

Large amounts of Yaba tablets were recovered from the spot.

According to UNB, in Tangail, a suspected drug trader Abul Kalam Azad Khan, 42, son of late Abdur Rahman Khan, a resident of Purbo Pakutia of Ghatail upazila, and also accused in five cases, was killed in a “gunfight” with members of Rapid Action battalion in a brickfield area of Deula Bari around 12:00am. 

  • Courtesy: The Daily Star /May 21, 2018

Mismatch in job, edn behind lack of skilled workers: study


Bangladesh lacked skilled workers as there was a huge gap between what they learned at general, technical and vocational education institutions and what the country’s industrial firms and the international market needed. 

According to a study unveiled on Sunday, the country would require 8.48 crore skilled workers by 2035 to increase its productivity for achieving a sustainable development goal. 

Bangladesh Technical Education Board and Institution of Diploma Engineers jointly conducted the study titled ‘Build skill Bangladesh for emerging Bangladesh as a developed nation.’The study found that over Tk 22,000 crore would be required for preparing these 8.48 crore skilled workers. 

Researchers and education minister Nurul Islam Nahid held education-job market mismatch, lack of interest from parents to send their children to technical vocational education and training responsible for a lower number of high-skilled workers. They said that due to the less number of skilled workers in Bangladesh, the country was earning relatively less amount of remittance and many foreigners working here were taking a huge amount of foreign currencies back to their homeland.

‘We are taking the findings of the report as an important document,’ Nahid said during the unveiling ceremony of the study.‘We are trying to increase the technical vocational education and training across the country as well as increase the quality of education for producing skilled labour. 

‘Number of students in technical vocational education and training was less as many guardians were unwilling to send their children there considering it meant for the academically weak students,’ he said, adding that the mentality of the parents was gradually changing due to government efforts. 

While making a presentation, one of the researchers Syed Abdul Aziz, said that there were 63 million workforces in Bangladesh in 2015-16. He said that 2.49 crore skilled workers would be needed by 2025, 2.91 crore by 2030 and 3.07 crore by 2035.

About Tk 22,000 crore would be needed to arrange their education and training to make them skilled, he added.

The Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry president Shafiul Islam Mohiuddin said that education system in our country was producing ‘a number of graduates unnecessary’.

He pointed out that Bangladeshi migrant workers earned less than other for the same work just because of the low level of their skill. He added that currently foreigners working in Bangladesh takes about 5 to 6 billion US dollar back to their homeland as salaries for their mid to top-level jobs as Bangladesh did not produce qualified workers.

Bureau of Manpower, Employment and Training data showed that inward remittance in the country stood about $13 billion from about 1 crore overseas workers, down from $15.8 billion in 2015. 

Bangladesh lags behind the Philippines, Sri Lanka, Pakistan, and India in terms of both sending skilled workers abroad and earning remittance, according to the World Bank’s migration and remittances fact book 2016.

It showed that among the top 10 remittance receiving countries in the world, Bangladesh was the 10th with remittance worth $15.8 billion in 2015 while India earned the highest $72.2 billion.The Philippines stood third with remittance worth $29.9 billion and Pakistan was the 8th with $20.1 billion in remittance.

Centre for Policy Dialogue study in March this year showed that foreigners were working at 16 per cent of readymade garment factories in Bangladesh. 

Particularly in production planning 37.3 per cent of total foreign professionals, merchandising 20.1 per cent, quality assurance 11.9 per cent and washing sections 8.2 per cent and others, said the study. 
  • Courtesy: New Age/May 21, 2018

Bangladesh government must increase spending on education


A DECLINE in spending on education — from 14.4 per cent of the total government expenditure in the 2017 financial year to 12.59 per cent in the 2018 financial year — belies the government claim of having improvement in the quality of education as a priority. Bangladesh spends, as New Age reported on Sunday quoting from the 2017–18 Global Education Monitoring Report that UNESCO, 1.9 per cent of the gross domestic product, which accounts for about 13 per cent of the total government expenditure while it should range, as the report suggests, between 4 per cent and 6 per cent of the gross domestic product or 15 per cent and 20 per cent of the total government expenditure. 

The figures for Bangladesh, as the report says, remain less than what other South Asian neighbours have in spending on education. The war-torn Afghanistan is reported to have spent 3.3 per cent of the gross domestic product on education, Bhutan 7.4 per cent, India, 3.8 per cent, the Maldives 5.2 per cent, Nepal 3.7 per cent, Pakistan 2.6 per cent and Sri Lanka 2.2 per cent.

In 2015, the median global public expenditure on education was 4.7 per cent of the gross domestic product and even the median South Asian expenditure was 3.3 per cent and Bangladesh’s spending is nowhere near the South Asian median. The allocation for education in the budget decreased from 15 per cent in the 2011 financial year to 11–12 per cent in the 2018 financial year, having telling effects on national education. 

Education is the door to a sound nation and quality education often calls for additional resources, higher pay for teachers, reduced class size and improved facilities. With the government coming to spend less on education, it will be highly difficult, or almost impossible, to improve the quality of national education. This seems more so as while the spending on education thins away, the number of students keeps increasing, leaving managers of education grappling with the situation that may ultimately make a mess of it. The decline in spending on education also forces the government to largely ignore educational institutions in rural areas, or spend a bit more on institutions in urban areas, contributing to the widening disparity between urban and rural students. This calls out the government on spending more on education. But all education stages may not need the same amount of money and the government should, therefore, ensure that the money is allocated where it will have the greatest impact.

In a situation like this, the government must increase spending on education to improve the quality and the reach of education. While doing so, it must attend to issues such as the misuse and wastage of money; the increased spending would, otherwise, will have no meaning in the end. The government must also not solely focus on equity, which has so far not been achieved, but also on adequacy as far as education spending is concerned. 

  • Courtesy: New Age /Editorial May/ 21, 2018

রমজানে অস্বাভাবিক বাজার

অতিরিক্ত মুনাফা ও চাঁদাবাজির রাশ টানুন


রমজান মাস শুরু হয়েছে এবং ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বাস মিথ্যা প্রমাণ করে প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বিভিন্ন মাত্রায় বেড়েছে। কিন্তু অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে এই মাত্রায় দাম বাড়ার যুক্তিসংগত কারণ নেই, কেননা বাজারে ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বিপুল। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হলে পণ্যের দাম বাড়ে, কিন্তু যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, সেগুলোর কোনোটার সরবরাহে ঘাটতি আছে—এমন খবর পাওয়া যায়নি।

তাহলে এমন অস্বাভাবিক মাত্রায় দাম বাড়ার কারণগুলো কী হতে পারে?

প্রথমত, ব্যবসায়ীরা রমজান মাস উপলক্ষে বাড়তি মুনাফা করার লোভ সামলাতে পারছেন না। একটি উদাহরণ চিনি, যার চাহিদা রমজান মাসে বেশ বাড়ে। সব উৎস থেকে পাওয়া খবর হলো, দেশে এই মুহূর্তে চিনির মজুত আছে মোট চাহিদার তুলনায় বেশি, বাজারে সরবরাহেরও কোনো ঘাটতি নেই, উপরন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কমেছে। কিন্তু দেশের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫ টাকা বেড়েছে। বোঝা যায়, ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়েছেন। যেমন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন রোজা উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা তা বিক্রি করছেন ৫০০ টাকা দরে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার ফলে যেসব আমদানি পণ্যের দাম দেশের বাজারেও কমেছে, সেগুলোর খুচরা বিক্রেতারা দাম কমাননি। ভোজ্যতেল ও ছোলার ক্ষেত্রে এ রকম দেখা যাচ্ছে, দাম কমার সুফল পাচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা, ভোক্তারা নন। লবণ কোম্পানিগুলো খুচরা বিক্রেতাদের প্রতি কেজি লবণে ১০ টাকা কমিশন দিচ্ছে, ভোক্তা পর্যায়ে দাম কমাচ্ছে না। অর্থাৎ এসব ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ইচ্ছামাফিক।

দ্বিতীয়ত, কৃষিজাত খাদ্যপণ্যের দাম ভোক্তা পর্যায়ে দুই থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদক বা কৃষকের কোনো লাভ হচ্ছে না। দৃষ্টান্তস্বরূপ, বগুড়া জেলার মহাস্থান হাটে কৃষক এক কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করে পাচ্ছেন ২০ টাকা, সেই মরিচ মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। বেগুন, পটোল, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স, শসাসহ অন্যান্য সবজির দামেও এ রকম অস্বাভাবিক তারতম্য লক্ষ করা যাচ্ছে। উৎপাদনকারী বা কৃষক তাঁর উৎপাদিত ফসলের যে দাম পান, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেন না; অনেক ক্ষেত্রে লাভ দূরে থাক, উৎপাদন খরচই ওঠে না। কিন্তু সেই একই কৃষিপণ্য ভোক্তাকে কিনতে হয় অনেক বেশি দামে—আমাদের দেশের বাজারব্যবস্থার এই অসংগতি প্রায় সারা বছরই লেগে থাকে। কিন্তু রমজান মাসে দেখা যাচ্ছে অসংগতিটা বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক মাত্রায়।

এর কি কোনো প্রতিকার নেই? কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বগুড়া জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তার বক্তব্য হলো: ‘পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারের দামের পার্থক্য নিয়ে জেলা পর্যায়ের সভায় বহুবার আলোচনা হয়েছে। সবজির খুচরা বাজার নিয়ন্ত্রণের উপায় খোঁজা হচ্ছে।’ আমাদের বক্তব্য হলো, পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের অস্বাভাবিক পার্থক্য গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রাখতে হলে এই অস্বাভাবিকতার কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। সবজির পাইকারদের সংঘবদ্ধভাবে কৃষকদের ঠকানোর অভিযোগ বহুলালোচিত, কিন্তু খুচরা বাজারেও যে একধরনের সংঘবদ্ধ ‘পকেট কাটা’র অভিযোগ আছে, তা নিয়ে আলোচনা কম হয়। এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। তা ছাড়া, পণ্য পরিবহনের পথে বিভিন্ন পর্যায়ে যে চাঁদাবাজি চলে এবং রমজান মাসে যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়, সেটা দমন করার প্রবল উদ্যোগ প্রয়োজন। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আছে। এসব বন্ধ করতে হবে।
সর্বোপরি বাজারের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে।
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো / মে ২১, ২০১৮ 

Sunday, May 20, 2018

‘প্রজ্ঞাপন না হলে কঠোর আন্দোলন’ — রাশেদ খান-নুরুল হক



২০১৮-র কোটা সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশে সব ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটাভিত্তিক  নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত একটি আন্দোলন বা বিক্ষোভ। স্বাধীনতা যুদ্ধের দীঘ চার দশকের বেশি চালু থাকা  কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে চাকরি প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিক বিক্ষোভ এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারীরা।

বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের বেশি কোটা রয়েছে যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলাভিত্তিক কোটা ১০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ। তবে নিয়ম অনুসারে এসব কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে ১ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।

এদিকে সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদসমূহে চাকরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই আন্দোলনের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরার জন্য সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডি-এর মুখোমুখি হয়েছেন কোটা আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান এবং নুরুল হক নুরু। যৌথ সাক্ষাৎকার‌টি নিয়েছেন ব্রে‌কিং‌নিউজের স্টাফ ক‌রেসপ‌ন্ডেন্ট তৌহিদুজ্জামান তন্ময়।


ব্রেকিংনিউজ: কোটা আন্দোলনের শুরুর কথা সম্পর্কে কিছু বলুন।

রাশেদ খান-নুরুল হক: কোটার মাধ্যমে চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন হয়েছে, তখনকার সময়ে সরকারের সাথে আলোচনাও করেছিল। কিন্তু এটা আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কোটা নিয়ে এ পর্যন্ত তিনবার সরকারের পক্ষ থেকে তিনটা কমিশন করা হয়েছিল। কিন্তু কোনোটারই বাস্তবায়ন হয়নি। শুধু মুখেই সংস্কারের কথা সীমাবদ্ধ ছিল। এ কারণে ধীরে ধীরে সবার মধ্যেই একটা ক্ষোভ সৃষ্টি হতে থাকে  সেজন আমাদের এই আন্দোলন। এর পরিপেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করি। কোটার কারণে যারা চাকরি পাচ্ছে না, পদগুলো ফাঁকা হচ্ছে অথচ আপনার-আমার যোগ্যতা আছে কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। তারা আন্দোলনের জন্য কোনো প্লাটফর্ম পাচ্ছিল না বা নেতৃত্ব পাচ্ছিল না। আমরা যখন প্রথম ডাক দিই ১৭ ফেব্রুয়ারি তখন শাহবাগে শুধু মানববন্ধন করি। সেই মানববন্ধনে অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে যোগ দেয়। মানববন্ধন আমাদের সাহস জুগিয়েছিল যে এইভাবে যদি আমরা একটা জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি তাহলে কোটা সংস্কার হলেও হতে পারে। এরপর ১১মার্চ আমরা প্রচারের জন্য সাইকেল র‌্যালি করি। এরপর আমরা ঢাকার বাইরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলন গড়ে তুলি এবং সমন্বয়ের মাধ্যমে একটা আহ্বায়ক কমিটি করি। শুধু ছাত্ররাই নয় শিক্ষক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সবাই আমাদের সাপোর্ট দিয়েছে। ১-৭ এপ্রিল কোটা সংস্কার সপ্তাহ পালিত হয়। এই আন্দোলনের সবাই আমাদের সাথে এসে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। আমরা আগামী প্রজন্মকে একটা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার ও যোগ্যদের যোগ্য স্থান দেয়ার জন্য এই আন্দোলন করছি।

ব্রেকিংনিউজ: ঢাবির ভিসির বাসায় হামলা সম্পর্কে কি বলবেন?
রাশেদ খান-নুরুল হক: হামলার পরে আমাদের ভিসি স্যার সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘আমার বাসায় যারা হামলা করেছে তারা খুবই দক্ষ এবং পরিকল্পিতভাবে করেছে। এই হামলার সাথে আমার ছাত্ররা জড়িত নয়।’ এমনকি ডিএমপি কমিশনারও বলেছিলেন, এই হামলা দক্ষ লোক ছাড়া করতে পারে না। তাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়েই কিন্তু হামলার ব্যাপারে আমরা জড়িত না সেটি পরিষ্কার। একটা গোষ্ঠী আমাদের রাজনৈতিকভাবে জামায়াত-শিবিরের কর্মী হিসেবে প্রমাণ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে কিন্তু আমরা বলেছি সারা বাংলার ছাত্রসমাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলন করছে এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। তারা প্রচার করেছিল যাতে আমাদের আন্দোলন দুর্বল হয়ে যায়। তারা ওই প্রচারে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা মনে করি তারাই ভিসি স্যারের বাড়িতে জঘন্য এই হামলা চালিয়েছে। নির্দিষ্ট করে বলা যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদি হাসান ৮ এপ্রিল পুলিশের সাথে ছাত্রদের ধরে ধরে মেরেছে সেই ভিডিও ইউটিউবে আছে। আমাদের ধারণা ভিসির বাসায় হামলা মেহেদি হাসান ও তার নেতৃত্বে হয়েছে।

ব্রেকিংনিউজ: রাশেদ খানের কাছে প্রশ্ন, একটি গোষ্ঠী আপনাকে শিবিরের কর্মী বলে দাবি করছে এই ব্যাপারে কি আপনি বলবেন?
রাশেদ খান-নুরুল হক: এনএসআই, ডিজিএফআইসহ সকল গোয়েন্দা বিভাগ যারা নেতৃত্বে আছি আমাদের সবাইকে নিয়ে তদন্ত করেছে।  আন্দোলনের গত তিনমাসে তারা কেউই কোনো সময় বলেনি আমরা কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের কিংবা আমাদের পরিবার রাজনীতির সাথে জড়িত অথবা স্কুল-কলেজে ছাত্র রাজনীতির কোনো পোস্টে ছিল। এ ধরনের কথা কোনো পত্রিকাও দেখাতে পারেনি। ইত্তেফাকের মতো পত্রিকা আমার  শিবিরের যে সম্পৃক্ততার কথা লিখেছিল সেটি ভুয়া প্রমাণ হয় এবং পরে তারা ক্ষমাও চেয়েছে। আমার বাবা একজন কাঠমিস্ত্রী। আমার বাবা অথবা আমার পরিবারের কারো কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যদি সম্পৃক্ত থাকে তাহলে কেউ প্রমাণ করতে পারে আমি চ্যালেঞ্জ করছি ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমা চাইবো।

ব্রেকিংনিউজ: যে ৫টি দাবি করে কোটা আন্দোলন চলছিল তার সবগুলো যদি সরকার না মেয়ে নেয় তাহলে আপনাদের ভূমিকা কি হবে?
রাশেদ খান-নুরুল হক: আমাদের ৫ দফা দাবির ব্যাপারে সরকারের প্রতিনিধি দলের সাথে কথা হয়েছে। তারা আমাদের দাবির ৫৬% থেকে কমিয়ে ১৫% করতে চেয়েছে। এখানে আমরা ৫% ছাড় দিয়েছি। ১৫% করে হলেও দ্রুত আমরা দ্রুত প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন চাই।

ব্রেকিংনিউজ: ছাত্রলীগ কি আপনাদের সাথে আছে?
রাশেদ খান-নুরুল হক: আন্দোলনের শুরু থেকে ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীরা আমাদের সাথে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। ছাত্রলীগ যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন সেহেতু তাদের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর  ৮ এপ্রিলের পর থেকে সরাসরি তারা আমাদের সাথে নেই। তবে ছাত্রলীগের একটি বৃহৎ অংশ আমাদের সাথে এখনও রয়েছে। আপনারা জানেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ থেকে কোটা সংস্কার আন্দলোনের জন্য অনেকেই পদত্যাগ পর্যন্ত করেছে।

ব্রেকিংনিউজ: আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কি আপনারা সন্তুষ্ট?
রাশেদ খান-নুরুল হক: এই আন্দোলনটা ছিল সাধারণ ছাত্রদের। যদি এই আন্দোলনে জামায়াত-শিবির ঢুকে থাকে তাহলে প্রশাসন শুধু তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নিত। কিন্তু কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে ঢুকে গুলি চালাবে? রাবার বুলেট নিক্ষেপ করবে? কেন টিয়ারশেল মারবে? কেন হলের মসজিদে ঢুকে আমাদের উপর হামলা চালাবে? আমরা মনে করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই আন্দোলনে সম্পূর্ণ  ব্যর্থ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ তাদের ক্যাম্পাসে তাদের অনুমতি ছাড়া কিভাবে পুলিশ রাতভর সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলা চালালো? সেদিন শুধু পুলিশই নয় অনেক বহিরাগত ক্যাম্পাসে রামদা চাপাতি নিয়ে শোডাউন দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়নি?


ব্রেকিংনিউজ: কোটা প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে সর্বশেষ আপনাদের অবস্থান কি?
রাশেদ খান-নুরুল হক: বিভিন্ন কুচক্রীমহল আমাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়েছে এবং এখনও চালিয়ে যাচ্ছে। বারবার বলেছি আমরা কখনই সরকারবিরোধী নয় আমরা সরকারের উন্নয়নের সহযোগী। যে কারণে যখনই সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে আমরা তখনই তাদের কথা শুনেছি। তার বড় প্রমাণ হল- গত ৯ এপ্রিল সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও মাননীয় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ডেকেছিলেন আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়ে গিয়েছিলাম এবং ২৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ন্যাম ভবনে ডেকেছিলেন সেখানেও আমরা আলোচনার জন্য গিয়েছি। তারা আমাদের প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে ৭ মে পর্যন্ত ঘোষণা দেয়ার পরও কোনো প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ার পর আমরা আবারও সোমবার (১৪ এপ্রিল) আন্দোলনে নামি এবং মঙ্গলবার (১৫ মে) সারা দেশে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে নির্দেশনে দেন তার উপরে আর কোনো নির্দেশনা থাকে না বলে আমরা মনে করি। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরেই আমরা আনন্দ মিছিল করেছি এবং তাকে আমরা ‘মাদার অব এডুকেশন’ নামেও ঘোষণা দিয়েছি। আমরা মনে করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটার ব্যাপারে যে কথা বলেছেন তা দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।

ব্রেকিংনিউজ: সময় দেয়ার জন্য আপনাদের দুজনকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
রাশেদ খান-নুরুল হক: ব্রেকিংনিউজ ও আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।


  • কার্টেসি — breakingnews.com.bd

গণতন্ত্রহীণতার কারণেই দেশে অস্থিরতা — হেলেন জেরিন


 এস এম আতিক হাসান


বিএনপির রাজনীতিতে যে কয়জন নারী নেতৃত্ব মেধাবী, পরিশ্রমী, সৎ ও বিনয়ী তাদের মধ্যে অন্যতম মাদারীপুরের কৃতীসন্তান ইডেন কলেজের সাবেক ভিপি  হেলেন জেরিন খান। নেতৃত্বের অসাধারণ গুণাবলি এবং সবসময় রাজপথ আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় ক্রমে হয়ে উঠছেন বিএনপির অপরিহার্যদের একজন এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন।

দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের। ২০০১ সালে সংরক্ষিত আসনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন গণমাধ্যম ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডি-এর মুখোমুখি হন এই রাজনীতিক। দীর্ঘ সময়ের কথোপকথনে উঠে আসে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অভিজ্ঞতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও ব্যক্তিজীবনের জানা-অজানা নানা তথ্য-উপাত্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ব্রেকিংনিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এস এম আতিক হাসান।

ব্রেকিংনিউজ: দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটু ব্যখ্যা করুন।
হেলেন জেরিন খান: দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কি বলবো? দেশে তো একনায়কতন্ত্র চলছে। এতদিন দেশের মানুষ বলেছে, এখন এটা সারা বিশ্ব থেকে স্বীকৃতি লাভ করেছে বর্তমান এই স্বৈরাচারী সরকার। আপনি জানেন যে কিছুদিন আগে জার্মানির একটি সংস্থা যে রিপোর্টে নতুন যে পাঁচটি স্বৈরাচারী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

বর্তমানে যারা বিরোধী দল তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য যা যা করার দরকার সেটা ধাপে ধাপে করছে এই অবৈধ সরকার। প্রথম তারা  ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভুয়া ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। তারপর বিরোধী দল যখন এই ভুয়া নির্বাচনের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে তখনই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার এবং হয়রানি শুরু করে।

বিরোধী দলের চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের কেউ হয়রানি করা হচ্ছে। শত শত মামলা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে ৭৮ হাজারের অধিক মামলা দিয়েছে। আমাদের দলের চেয়ারপারসনকে মিথ্যা ও ভুয়া মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছে। শুধু কারাগারে রেখেছে তা নয়, এই মামলা নিয়ে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে যদি কারো পাঁচ বছরের সাজা হয় সাধারণত তার বয়স বিবেচনা করে জামিন দেয়া হয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া একজন মর্যাদাশীল মানুষ এবং তার বয়স অনেক, তিনি অসুস্থ এসব বিষয় বিবেচনা করলে জামিন পান। কিন্তু হাইকোর্ট জামিন দিলেও সুপ্রিম কোর্ট তাকে আটকে দিয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে রাজনীতি পরিচালিত হচ্ছে। আসলে রাজনীতি বলতে কিছু নেই। বিরোধীদল কোনো সভা করতে পারে না। মানববন্ধন করতে গেলে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে ধরে নিয়ে যায়। তারা বলে যে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিন্তু আমরা মনে করি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না আসলে তারা ভুয়া সরকারের পেটোয়া বাহিনী এবং ভুয়া সংগঠনেরই কেউ হতে পারে তারা। গুম খুন হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এখন অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে।

ব্রেকিংনিউজ: দেশের এমন পরিস্থিতিতে আপনাদের দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলনকে কীভাবে দেখছেন?
হেলেন জেরিন খান: দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন এই মুহূর্তে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশে বারবার হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সবচেয়ে বেশি যার অবদান, তিনি হলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেই আপসহীন নেত্রীকে অন্যায় ও সাজানো মামলা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমি মনে করি শুধু বেগম খালেদা জিয়াকে না পুরো দেশকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে পারলে সারা দেশের মানুষ মুক্ত হবে। সে কারণে আমি মনে করি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অনতিবিলম্বে মুক্ত করা দরকার, যদি দেশকে মুক্ত করতে হয়। দেশের জনগণকে মুক্ত করতে হয়, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হয়, প্রতিষ্ঠা করতে হয়, দেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

ব্রেকিংনিউজ: দেশের এই ক্রান্তিকালে বিএনপি যে আন্দোলন করছে এ আন্দোলন কি সঠিক পথে আছে?
হেলেন জেরিন খান: কোনো আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান করে না। সময়ের সাথে সাথে আন্দোলনও ভিন্ন রূপ ধারণ করে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজেই বলেছেন একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ সরকারকে হঠাতে হবে। সেই কারণে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশেই বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যেটা চেয়েছিল, যে ফাঁদ তারা পেতেছিল, সে ফাঁদে বিএনপি পা দেয়নি বলে আওয়ামী লীগ টালমাটাল হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখলে বিএনপি কঠিন আন্দোলন দিবে জ্বালাও-পোড়াও করবে, হরতাল দিবে আর সেই হরতালে গাড়ি পোড়াবে আওয়ামী লীগ। হরতাল দিবে বিএনপি আর সেই হরতালে অসংখ্য মানুষ পোড়াবে আওয়ামী লীগ। সেই কারণেই বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। আপনি দেখবেন যে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ হচ্ছে চুপ থাকা। বিএনপি এই মুহূর্তে যে কর্মসূচিগুলো দিচ্ছে এটাই সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের। বিএনপি হরতাল দেবে আর জ্বালাও পোড়াও করবে আওয়ামী লীগ আর তারা সারা বিশ্বে বলে বেড়াবে বিএনপি একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর দল, জ্বালাও-পোড়াওয়ের দল। আর সেই কারণেই বিএনপি এ রকম আন্দোলনে যায়নি। তবে আমি মনে করি দেশের মানুষের প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের দেশকে মুক্ত করবো।


ব্রেকিং নিউজ: আপনারা সবসময় বলেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণ বিএনপিকে ভোট  দেবে। জনগণ কেন বিএনপিকে ভোট দেবে?
হেলেন জেরিন খান: জনগণ এই কারণে ভোট দেবে বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল। বাকশাল নয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছন  বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। আমাদের নেত্রী কোনদিন অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। বিএনপিকে এই কারণে জনগণ ভোট দিবে। বিএনপির আমলে কোন ব্যাংক ডাকাতি হয়নি, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়নি, দেশে আইনের শাসন ছিল, নারীরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারত। আজকের নারীরা যতটা অনিরাপদ এতটা মনে হয় একাত্তরেও হয়নি। এই আমলে যতটা নারীদের অনিরাপদ আর কোনো সময়ই এতটা অনিরাপদ হয়নি। এই কারণেই বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে আর বিএনপির আমলে সব প্রতিষ্ঠানই সচল ছিল। আপনি বিচার বিভাগ বলেন, আইন বিভাগ বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেন, সব জায়গা তেই স্বাধীনতা ছিল। কিন্তু এখন প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই অচল করে দেয়া হয়েছে। একটা মাত্র প্রতিষ্ঠান সচল আছে, সেটা হল অবৈধ সরকার। আর এই সরকারের কাজ হলো এদেশে যত বিরোধী দল, মত এবং লোক আছে, সবাইকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। দেশের এমন অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে বিএনপিকে দরকার আর এই কারণেই জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে।

ব্রেকিংনিউজ: বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস যদি দীর্ঘায়িত হয় সেক্ষেত্রে বিএনপি কেমন কর্মসূচি গ্রহণ করবে?
হেলেন জেরিন খান: আমি বিশ্বাস করি না ম্যাডামের কারাবাস দীর্ঘায়িত হবে। ম্যাডাম এমন কোন কাজ করেননি যে তার কারাবাস দীর্ঘায়িত হতে পারে। আমি বিশ্বাস করি মঙ্গলবার যে রায়টি হবে সেই রায়ের মাধ্যমেই ম্যাডাম জামিন পাবেন এবং কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।

ব্রেকিংনিউজ: একজন নারী নেত্রী হিসাবে আগামীর আন্দোলনে নারীদের কিভাবে সম্পৃক্ত করবেন?
হেলেন জেরিন খান: নারীদের আন্দোলন আগে যেরকম ছিল এখনও সেরকমই থাকবে। আপনারা দেখেছেন ম্যাডামের ৮ ফেব্রুয়ারি রায়কে কেন্দ্র করে আড়াইশ জন নারীনেত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর আগে কিন্তু এতো হয়নি। গ্রেফতার হয়েছেন এই কারণে যে তারা পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে আন্দোলন করেছেন। আরেকটি বিষয় হলো এই সরকারের আমলে নারীদের কোন নিরাপত্তা নেই, স্বাধীনতা নেই, বিএনপি সময় কিন্তু নারীদের পুরো স্বাধীনতার পক্ষে ছিল। নারীদের নামে মামলা দেয়া তো দূরে থাক এটা চিন্তা করতো না। এজন্য আওয়ামী লীগের নারীরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করে বেড়াতন আর বর্তমানে আমাদের নারীনেত্রীদের কে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

ব্রেকিংনিউজ: সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ভারতের প্রভাব কমেছে অথচ বাংলাদেশে এর প্রভাব বেড়েছে। এর কারণটা কি হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
হেলেন জেরিন খান: এটার মূল কারণ হলো আমাদের দেশের গণতন্ত্রহীনতা। যেহেতু বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, একটি দল জোর করে করে ক্ষমতা দখল করে আছে, সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ভারতে দেশে ঢুকে পড়েছে। এমন হয়েছে যে বাংলাদেশ একটি নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে ভারতের মতামত ছাড়া হবে না। সে কারণে জাতির কাছে একটি বড় প্রশ্ন আমরা কি স্বাধীন? আমরা দেশের জনগণ হিসেবে একটি ভোট দিব, সেটাও যদি দিতে না পারি তাহলে কি কারণে এবং কিভাবে আমরা স্বাধীন এবং স্বাধীন দেশে বাস করি। আরেকটি বিষয় হলো আমাদের দেশের বর্ডারগুলো খুবই অরক্ষিত। মাঝে মাঝে দেখা যায় এবং শোনা যায় ভারতের বাহিনী বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে বাংলাদেশীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, গুলি করে মেরে ফেলছে। এটার মূল কারণ হল গণতন্ত্রহীনতা। এই যে দেখেন মিয়ানমার থেকে নির্যাতন করে রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিল। এর সম্মানজনক প্রতিকার আমরা করতে পারলাম না। মিয়ানমারের মতো একটি দেশ রোহিঙ্গাদেরকে নির্যাতন করে আমাদের দেশে পাঠিয়ে দিলেও আমাদের পাশে ভারত, রাশিয়া, চীন কাউকে আমরা পেলাম না। আমরা তীব্রভাবে প্রতিবাদ করতে পারলাম না। কেন কারণ আমাদের নিজেদের মধ্যে কোন ইউনিটি নেই। আজ যদি সব দলের মধ্যে একতা থাকতো তাহলে মিয়ানমার কিন্তু এতটা সাহস করতে পারত না। এখন আবার শুনতে পাচ্ছি, আসাম থেকে মুসলমানদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বা নির্যাতন করা হচ্ছে আর এগুলোর একটাই কারণ হলো আমাদের দেশে গণতন্ত্রহীনতা।

ব্রেকিংনিউজ: এতো পেশা থাকতে রাজনীতিতে কেন আসলেন?
হেলেন জেরিন খান: আমার বাবা ভালো মানুষ এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তাকে সংসারের হাল ধরার জন্য চাকরি নিতে হয়েছিল। কারণ তিনি আমাদের পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি শুরু করেন। আমার মাও  সমাজসেবক ছিলেন। আমার মা এবং বাবা সব সময় আমাকে বলতেন রাজিয়া সুলতানা। আমাকে বলতেন আমার মেয়েকে রাজিয়া সুলতানা বানাবো। বাবা ছিলেন জেলা বিএনপির ভাইস ভাইস চেয়ারম্যান। আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি। আমাদের এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো এই যেমন:১৬ ডিসেম্বর ২৬ শে মার্চ এসব অনুষ্ঠানে আমার বাবা বক্তব্য দেয়ার জন্য আমার নাম লিখে দিতেন এবং তিনি বক্তব্য লিখে দিতেন আমাকে বলতেন তুমি বক্তব্য দাও। আমার সাহসটা সেখান থেকেই। বলা যায় রাজনীতিটা পারিবারিকভাবেই এসেছে।

তখন আমি বুঝিনি। যখন আমি ইডেন কলেজে আসলাম তখন আমার বাবা-মায়ের কার্যক্রমকে মনে পড়তো এবং দেখি মেয়েদের নানান সমস্যা কলেজে পানি সমস্যা আবার গার্জিয়ান ছাড়া বের হতে দিত না, বাজার করতে দিত না। তখন এরশাদের শাসন ছিল। দেখা যেত এরশাদ কিংবা রওশন এরশাদের কোন প্রোগ্রাম হলে মেয়েদের জোর করে নিয়ে যাওয়া হতো। মেয়েরা যেতে চাইত না আর এসবের প্রতিবাদ করতে করতেই রাজনীতিতে ঢুকে যাই। সে সময় ইডেনে বিভিন্ন সমস্যা ছিল, খাওয়ার সমস্যা ছিল, কারো কাপড়ের সমস্যা থাকলে নিজের কাপড়টা দিতাম। খাবার এনে দিতাম আর এইভাবে সবার কাছে পরিচিত হই। তারপর ইডেনের ভিপি হলাম আর এভাবেই রাজনীতিতে আসা।


ব্রেকিংনিউজ: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
হেলেন জেরিন খান: ব্রেকিংনিউজকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।


  • কার্টেসি — breakingnews.com.bd

চট্টগ্রামে ইয়াবায় রাতারাতি শ’শ’ কোটিপতি

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে

ইয়াবার কল্যাণে চট্টগ্রামে শ’শ’ কোটিপতি গজে উঠছে রাতারাতি। যাদের নামের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে পুলিশের খাতায়ও। চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তালিকায় দামি গাড়ি এবং একাধিক ফ্ল্যাটধারী এমন অনেকেরই খোঁজ মিলছে। ইয়াবা যাদের ভাগ্য খুলে দিয়েছে। আর তাদের হাতে ধ্বংস হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ হিসেবে বেড়ে উঠা কিশোর-তরুণরা। কোটিপতি ব্যবসায়ীরাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পার্ট টাইম জব হিসেবে অনেক ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম কর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে নানা পেশার মানুষদের আয়েশি জীবনের টোপ দিয়ে কাছে টেনে নিচ্ছে।

যাদের বেশির ভাগই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া, আনোয়ারা, বাঁশখালী, পটিয়া ও সাতকানিয়ার। এছাড়া রয়েছে কুমিল্লা ও বরিশাল জেলার লোক। যারা সড়ক, সমুদ্র ও আকাশপথ দিয়ে নিয়মিত ইয়াবা পাচারে জড়িত।

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি বন্দর) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ইয়াবা পাচারকারীদের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে চট্টগ্রামে শ’শ’ কোটিপতির সন্ধান মিলেছে। এ নিয়ে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে সামপ্রতিক যে তথ্য আছে সেটা হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এখন পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করছেন। পণ্য পরিবহন তাদের মূল উদ্দেশ্য নয়। পণ্যের আড়ালে ইয়াবা পাচারই হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কারণে প্রথাগত পরিবহন ব্যবসায়ী যারা আছেন তারাও বিপাকে পড়ছেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, ইয়াবা ব্যবসা চলছে এখন মুঠোফোনে। টেকনাফের বিশেষ একজনকে জানাতে হয় কী পরিমাণ ইয়াবা লাগবে, পাঠাবেই বা কোথায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ ইয়াবা চলে যায় সেই ঠিকানায়। লেনদেন হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। টেকনাফ থেকে ইয়াবা তাই চট্টগ্রাম হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে। 

তিনি বলেন, ২০০৬ সাল থেকেই মিয়ানমার থেকে টেকনাফ হয়ে ইয়াবার চালান আসতে থাকে এ দেশে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে কয়েক বছর আগেও টেকনাফে পেশা হিসেবে যারা জেলে, রিকশাচালক, বেকার যুবক, পিঠা বিক্রেতা, কৃষক বা ক্ষুদ্র লবণচাষি ছিলেন, তাদের প্রায় অধিকাংশই এখন সচ্ছল, কেউ কেউ কোটিপতি, গাড়ি হাঁকিয়ে চলেন। গ্রামের রাস্তার দু’পাশে সব সুরম্য বাড়িঘর। এরমধ্যে অন্যতম টেকনাফের নাজিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এজাহার মিয়ার ছেলে নূরুল হক ওরফে ভুট্টো। একটি রিকশা কেনার সামর্থ্য ছিল না নূরুল হকের। বসতবাড়ি বলতে ছিল গোলপাতার একটি ঘর। সেই নূরুল হক এখন নাজিরপাড়ার দুটি বাড়ির মালিক। চট্টগ্রাম ও খুলনায় তার ফ্ল্যাট আছে। আছে তিনটি গাড়িও। জমিজমাও কিনেছেন অনেক। নাজিরপাড়ায় রাস্তার পাশে এখন একটি মার্কেটও নির্মাণ করছেন। 

নূরুল হক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। নূরুল হক একাই শুধু নন, সঙ্গে আছেন তার পিতা এজাহার মিয়া, ভাই নুর মোহাম্মদ ওরফে মংগ্রী, ভগ্নিপতি নূরুল আলম, ভাগিনা জালাল উদ্দিন, বেলাল, আবছার উদ্দিন, হেলাল, হোছেন কামাল ও নুরুল আমিন ওরফে খোকন। তারা সবাই ইয়াবা মামলার আসামি। চলতি বছরের ৮ই এপ্রিল চকরিয়ার নূরুল হুদা নামে এক যুবক ধরা পড়ে পুলিশের হাতে। সাত বছর আগে যে ছিল বাসের হেলপার। আর এখন চট্টগ্রাম শহরের অভিজাত এলাকার যে ফ্ল্যাটে তার পরিবার থাকে, সেটির ভাড়া ৩৫ হাজার টাকা। আয়ের উৎস একটাই, ইয়াবা। মাত্র পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। গাড়ি আছে দুটি। বিউটি পার্লার খুলে দিয়েছেন স্ত্রীকে। রয়েছে মুঠোফোনের দোকান। জমি কিনেছেন কক্সবাজার শহরে, ফ্ল্যাট কিনেছেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম শহরের ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িসহ হুদাকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সেদিন হুদার গাড়িতে ১০ হাজার ইয়াবা ছিল। হুদা এখন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। এর আগে বিভিন্ন সময়ে দুবার তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিছুদিন পরই জামিনে বেরিয়ে যান তিনি। তার অর্থবিত্তের বিষয়টি এতদিন অজানা ছিল।

আনোয়ারা গহিরাকেন্দ্রিক ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রধান মোজাহের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর এলাকার চান মিয়ার ছেলে। মুখোশের আড়ালে তিনি ইয়াবা পাচারের কাজ করতেন। র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ইয়াবা সিন্ডিকেটের প্রধান মো. মোজাহারের নগরীতে আছে ছয়তলা বাড়ি। এর দ্বিতীয় তলায় তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন। ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান নয়-দশ বছর আগেও ছিলেন বেকার। টেকনাফ মৌলভীপাড়ার চোরাচালানের ঘাট নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পর ইয়াবা পাচার শুরু করেন। এখন দুটি মাইক্রোবাস ও চারটি ভারতীয় বিভিন্ন মডেলের দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের মালিক। একটি আলিশান বাড়িও বানিয়েছেন। তার ছোট ভাই আবদুর রহমান ও কামাল হোসেন ইয়াবা ব্যবসায় সক্রিয়।

গ্রীনলাইন পরিবহনের এসি বাসে কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় নতুন ব্রিজ এলাকায় তল্লাশির সময় মহিলা ক্রিকেটার মুক্তা ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন ৩০শে এপ্রিল সকালে। তিনি প্রায়ই কক্সবাজার যাওয়া-আসা করতেন। মুক্তা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অনার্সের ছাত্রী ছিলেন। মাদকাসক্ত হওয়ার পর অনিয়মিত হয়ে পড়ায় তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়। তিনি ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ, মহিলা ক্রিকেট লীগে নিয়মিত অংশ নেন। মহিলা ক্রিকেট আনসার টিমের তিনি একজন নিয়মিত ক্রিকেটার বলে জানান বাকরিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী। ওসি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, কক্সবাজারে গিয়ে প্রায়ই তিনি নাহিদ নামে এক লোকের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় রিপন নামে আরেকজনকে সরবরাহ করতেন। ৪ঠা মে শুক্রবার চট্টগ্রামের হালিশহরের শ্যামলী হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্লাটে ধরা পড়ে ইয়াবার সবচেয়ে বড় চালান। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এই অভিযানে ১৩ লাখ ইয়াবাসহ মো. আশরাফ (৩৪) ও হাসান (২৪) নামে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে আশরাফ ছিলেন সৌদি আরব প্রবাসী। তাদের বাড়ি বান্দরবান পার্বত্য জেলায়।

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, আশরাফ প্রবাস জীবনে তেমন উন্নতি করতে না পারলেও দেশে এসে মাত্র এক দুই বছরে ইয়াবা পাচার করে রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। শ্যামলী হাউজিং সোসাইটির ওই ফ্লাট ছাড়াও নাসিরাবাদে একটি ফ্লাট ও বাকলিয়ায় একটি প্লটের মালিক তিনি। রয়েছে দুটি গাড়িও। 

গত বছর ৩১শে আগস্ট সিদ্দিকুল ইসলাম নামে এক ইয়াবা ব্যসায়ীর খোঁজ মিলে। যার কৌশলের কাছে বারবার পরাস্ত হতে হয়েছিল পুলিশের কৌশল। তবে শেষরক্ষা হয়নি তার। ইয়াবা পাচারে সিদ্দিকুল ইসলাম গড়ে তুলেছেন পারিবারিক সিন্ডিকেট।

সূত্র জানায়, ইয়াবার চালান টেকনাফ থেকে ঢাকায় আনা এবং ঘাটে ঘাটে পৌঁছে দিতে চারটি জিপ ব্যবহার করেন সিদ্দিকুল ইসলাম। একটি জিপে টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চালান আনা হয়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনতে ব্যবহার করেন দুটি জিপ। আর ঢাকায় ঘাটে ঘাটে ইয়াবার চালান পৌঁছে দিতে বাকি জিপটি ব্যবহার করা হয়। ইয়াবাবাহী জিপ পুলিশ রাস্তায় আটকালে অনেক সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের গাড়ি বলে পরিচয় দিয়েও রক্ষা পান তারা। গাড়ি চালানোর জন্য রয়েছে বেতনভুক্ত চারজন দক্ষ চালক। প্রতি চালানেই তাদের আবার দেয়া হয় ঝুঁকি ভাতা।

সিদ্দিকের তিন ছেলের দু’জনই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। স্ত্রী রশিদা খাতুনও গ্রেপ্তার হয়েছেন দু’দফা। টেকনাফ থেকে ঢাকায় ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন সিদ্দিকের দুই ছেলে রবিউল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলাম। একেক সপ্তাহে একেক ছেলে এই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তার আগে নেয়া হয় অভিনব এক কৌশল। চালান আনতে যাওয়ার আগে রবিউল কিংবা ফরিদুল নিজের মোবাইল নম্বরটি কয়েকদিন আগেই বন্ধ করে দেন। তখন ব্যবহার করেন নতুন সিম ও ফোন সেট। পাশাপাশি ঢাকার কোনো একটি থানায় সিদ্দিক বা তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে নিখোঁজ জিডি করা হয়। যেন চালানসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও আদালতে দেখাতে পারেন, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি তিনদিন বা চারদিন আগেই নিখোঁজ হয়েছেন। এমন তথ্যই বের হয়ে এসেছে তাদের গ্রেপ্তারের পর। আর এ পদ্ধতিতে আদালত থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যান তারা। এরমধ্যে ছেলে রবিউল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যদিও ঠিকমতো ক্লাস করেন না, বাবার ইয়াবা ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত তিনি। নিয়ন্ত্রণ করেন ইয়াবা সিন্ডিকেট।

টেকনাফের নাজিরপাড়ার নুরুল আলম ভালো ফুটবল খেলতেন। আর্জেন্টাইন ফুটবলারের নাম অনুসারে লোকে তাকে ডাকতেন ডি মারিয়া বলে। সাত-আট বছর আগেও নুরুল আলম রিকশা চালাতেন। এখন ইয়াবার কারবার করেন। তার ভাই ফরিদুল আলমের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে দেড় কোটি টাকা। তাকে নারায়ণগঞ্জের দুটি ইয়াবার মামলায় আটক করা হলে তিনি জামিনে ছাড়া পান। গত বছর ১৮ই সেপ্টেম্বর ১০ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আতিকুল ইসলাম তারেক তার ভগ্নিপতির হাত ধরে মাদক কারবারে জড়িয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারেক (২০) চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবি সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি টেকনাফে। তার বাবা টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়ার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, তারেকের এক বোনের স্বামী টেকনাফের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা ফজর আলী। ফজর আলী ও তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী পুলিশের তালিকাভুক্ত ইয়াবা বিক্রেতা। মাস খানেক আগে চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে ফজর। 

কামরুজ্জামান বলেন, তারেক একাই একটি ফ্ল্যাট নিয়ে চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো এলাকায় থাকেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হওয়ায় সচ্ছল পরিবারের ইয়াবা আসক্ত ছেলেদের সঙ্গে তার উঠাবসা সহজ ছিল। ইয়াবা কেনাবেচা করে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীতে পরিণত হওয়া ব্যক্তিরা পরিবহন ব্যবসায় বিনিয়োগ করছে বলে তথ্য দিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান কিনে নিজেরা পরিবহন প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে সেই গাড়িতে কৌশলে বিশেষ চেম্বার বানিয়ে পাচার করছে ইয়াবা। নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (বর্তমানে কোতোয়ালি থানায় বদলিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সংঘবদ্ধ ইয়াবা পাচারকারী চক্র তাদের কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। ২১টি ট্রাক কিংবা কাভার্ড ভ্যান কিনে তারা নিজেদের পরিবহন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। সেই পরিবহনে তারা সাধারণত পচনশীল দ্রব্য যেমন মাছ পরিবহন করছে। মূলত পণ্য পরিবহনের মতো করে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবা চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িতদের একটা তালিকা জমা দেয়া আছে। এক সংসদ সদস্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাসহ প্রায় সব পেশার লোকের নাম ওই তালিকায় উল্লেখ আছে; কিন্তু সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জড়িত থাকায় প্রশাসন এখন এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

  • কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২০,২০১৮ 

৩ ডিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ব্যবস্থা নিতে চিঠি

নোয়াখালী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে নোয়াখালীর ডিসি মো. মাহবুবুল আলম তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের ডিসি খান মো. নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাট দিবসের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। চাঁপাই নবাবগঞ্জের ডিসি মো. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ওই জেলার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডল অভিযোগ দিয়েছেন। যদিও পরে আরেকটি চিঠি দিয়ে তা প্রত্যাহার করে নিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেছেন, তার প্যাড ও সই স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তিন ডিসি’র বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলে টাঙ্গাইলের আরমান নামে এক ব্যক্তি তার জেলার ডিসি খান মো. নূরুল আমিনের বিরুদ্ধে পাট দিবসের চেক জালিয়াতির অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ৬ই মার্চ পাট দিবস পালিত হয়েছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সরকার জেলা প্রশাসক বরাবর ২৫ হাজার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ১৫ হাজার টাকার চেক দেয়। কিন্তু টাঙ্গাইলের ডিসি ১১টি উপজেলার ইউএনও’র চেক আটকে দেন। এরপর ইউএনওদের কাছ থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা নেন।

অভিযোগে বলা হয়, ইউএনওদের চেকগুলো ডিসি’র নির্দেশে টাঙ্গাইলের মুখ্য পাট পরিদর্শক শহিদুল্লাহ ও উপ-সহকারী পাট পরিদর্শক রায়হান ডিসি অফিসের নাজির জয়নাল আবেদীনের মাধ্যমে ডিসির কাছে পৌঁছায়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের নামে আসা ২৫ হাজার টাকার চেকটি নাজির জয়নাল আবেদীন নিজ নামে উত্তোলন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আরমানের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩০শে এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা-১ (১) অধিশাখার উপসচিব চৌধুরী সামিয়া ইয়াসমীন-এর স্বাক্ষরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।

এদিকে নোয়াখালীর ডিসি মো. মাহবুবুল আলম তালুকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগে তিনি বলেন, ডিসি হিসেবে মাহবুবুল যোগদানের পর থেকে মাইজদী শহরের বিভিন্ন ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকারি সম্পত্তি হরিলুটে ইন্ধন যোগাচ্ছেন। মোটা অঙ্কের সুবিধার বিনিময়ে মাইজদী নিশাত প্লাজার উত্তর পাশে হেলাল, মানিক ও হায়দার ইলেকট্রিককে গণপূর্তের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জায়গা দখলে সহযোগিতা করেছেন। এ অভিযোগটিও খতিয়ে দেখতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডলের ডিও লেটারে অভিযোগের ভিত্তিতে ওই জেলার ডিসি মো. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও গত ৩রা এপ্রিল আরেক ডিও লেটারে চাঁপাই নবাবগঞ্জের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মইনুদ্দীন মণ্ডল জানান, চাঁপাই নবাবগঞ্জের ডিসি একজন সৎ, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা। তিনি সুনামের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন ডিসি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন তারা। এরপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে
  • কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২০,২০১৮