Search

Saturday, April 23, 2016

শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত – বিএনপি



মার্কিন আদালতে ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত অভিযোগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা এবং আমেরিকায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সন্দেহ জনক লেনদেন সম্পর্কে সরকারের নির্লিপ্ততার বিষয়ে বিএনপি বক্তব্যÑ

প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
গত ১৬ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে ভোর বেলায় একটি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয়ে সাদা পোষাকের কয়েকজন পুলিশ মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক এবং দেশের খ্যাতনামা প্রবীন সাংবাদিক, লেখক কলামিষ্ট জনাব শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে সময় তাঁর বৃদ্ধা স্ত্রী বাসায় থাকা সত্ত্বেও তাকে কিছু জানানো হয়নি এবং গ্রেফতার করার ওয়োরেন্ট কিম্বা কোন কারণ প্রদর্শন করা হয় নি
গত ৩রা আগষ্ট ২০১৫ তারিখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা অপরাধ তদন্ত বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক মো: ফজলুর রহমান কর্তৃক পল্টন মডেল থানায় দায়েরকৃত এফ.আই.আরএর ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে
ইতিমধ্যে এই বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ মানুষটিকে দিনের রিমান্ড শেষে আবারও দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে যা অমানবিক বলে আমরা মনে করি এবং তার বাড়ী থেকে কিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে বলেও মিডিয়ার কল্যাণে দেশবাসী জেনেছেন
প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
প্রবীন সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র তার তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুকে লেখেন যেÑ "আজ আমাদের সরকার সাংবাদিক বিরোধীদল বিএনপি নেতা শফিক রেহমানকে আমাকে অপহরণ হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে এই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে একজন বিএনপি নেতার পুত্র, একজন সাবেক এফবিআই এজেন্ট এবং তার বন্ধুর মধ্যে ২জন এখন জেল খাটছেন শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মামলা থেকে প্রত্যক্ষভাবে এসেছে
জনাব সজিব ওয়াজেদ জয়ের এই বক্তব্য ভিত্তিহীন হওয়া সত্ত্বেও গত শনিবার থেকে অদ্যাবধি প্রতিদিন সরকার প্রধান থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতা মন্ত্রীগণ তারস্বরে, কথাই প্রমাণের চেষ্টা করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ হত্যার পরিকল্পনায় সেখানে বসবাসরত একজন বিএনপি নেতার পুত্র অর্থের বিনিময়ে এফবিআই এজেন্টকে কাজে লাগিয়েছেল এবং সেই অপরাধে তাদের জেল হয়েছে
তারা আরও বলছেন, এই হত্যা পরিকল্পনায় সাংবাদিক শফিক রেহমান দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ছাড়াও ঢাকা, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের উর্দ্ধতন বিএনপি নেতৃবৃন্দ জড়িত
সজিব ওয়াজেদ জয়, তার মা এবং রাজনৈতিক সহকর্মীদের ভিত্তিহীন মিথ্যাচারের জবাব দেয়া প্রয়োজন বিধায় আজ আমরা আপনাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি
প্রিয় সাংবাদিক ভাই বোনেরা,
আমেরিকান নাগরিক রিজভী আহমেদ সিজারএর বিরুদ্ধে আমেরিকান আদালতে যে মামলা হয়েছিল তাতে ২০১১ সালে তিনি সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়ার লক্ষ্যে একজন এফবিআই এজেন্টকে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে এক হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন এবং কিছু নথি পেয়েছিলেন তার অপরাধ ছিল, সরকারী কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়া এবং এফবিআই কর্মকর্তার অপরাধ ছিল ঘুষ নেয়া বিনা অনুমতিতে সরকারী দলিল কোন ব্যক্তি বিশেষকে হস্তান্তর করা
এই মামলা চলাকালে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল তাতে মার্চ ২০১৩ তারিখে সজিব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুকে যে বক্তব্য পোষ্ট করেছিলেন তার প্রেক্ষিতে রিজভী আহমেদ সিজারএর ২টি উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হয় একটি হলো সজিব ওয়াজেদ জয়ের জীবন যাপন দুর্নীতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া এবং অন্যটি তাকে অপহরণ দৈহিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা
বিচার চলাকালে সজিব ওয়াজেদ জয়ও নিজেকে ভিকটিম দাবি করে মামলার আসামি রিজভী আহমেদ সিজার তাকে অপহরণ হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বলে অভিযোগ করেন
কিন্তু ২০১৫ সালের মার্চ প্রদত্ত রায়ে সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ দৈহিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার অভিযোগের পক্ষে কোন প্রমাণযোগ্য যুক্তিগ্রাহ্য তথ্য উপাত্ত না পেয়ে মাননীয় বিচারক মামলায় অভিযুক্ত রিজভী আহমেদ সিজারকে এই অভিযোগ থেকে অব্যহতি দিয়েছেন এবং সজিব ওয়াজেদ জয়কেভিকটিম হিসাবে মানতে রাজী হননি আদালতে সংক্রান্ত মন্তব্য হলো:
            1. “Ahmed was not convicted of potentially other crimes such as making   threats against Individual 1 or his family or attempting to assault or kidnap      him or harming him in some either way. If that's    what this case was about   and there was evidence of that and he was convicted of that, then individual1       would be a victim.” (রায়ের ১০ পৃষ্ঠায়)|
            2. " I will also say for the record that the government's contention that      Ahmed in fact sought to kidnap and physically harm an individual is a          stretch. I just don't feel there's enough evidence that's presented to me for       me to make that finding." ((রায়ের পৃষ্ঠায়)|  
            3." But I don’t believe that there’s sufficient evidence that            he        really did seek to kidnap and physically harm Individual 1 .” ((রায়ের পৃষ্ঠায়)|
            4. “ But there is no talk in these exchanges about doing      physical harm to Individual” (রায়ের পৃষ্ঠায়)|  

ইন্ডিভিজুয়াল বলতে এখানে সজিব ওয়াজেদ জয়কে বোঝানো হয়েছে

মামলার রায়ে প্রমাণিত হয়েছে যে, রিজভী আহমেদ সিজার প্রকৃত পক্ষে সজিব ওয়াজেদ জয় এবং তার মা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক ভাবে বিব্রত দুর্নীতিগ্রস্থ হিসাবে উপস্থাপনের প্রমাণ হিসাবে নির্ভরযোগ্য ডকুমেন্ট সংগ্রহের জন্যই চেষ্টা করেছিল এবং কিছুটা সফলও হয়েছিল এর প্রমাণও আদালতের রায়ে লিপিবদ্ধ আছে

এই মামলায় প্রসিকিউশন পক্ষ অর্থাৎ সরকার আদালতে সজিব ওয়াজেদ জয় এফবিআই মেমো সম্পর্কে মন্তব্য করে যে :

            “In late September-2011, in furtherance of the scheme, Special     Agent Lustyik caused other personnel in FBI’s White    plains R.A.      to retrieve confidential records pertaining to Individual 1,   including, among other things, an internal      memorandum (the     “FBI Memo”) that referred to Individual 1 and a sum of $ 300             million, and a confidential report, Known    as s Suspicious Activity           Report (the “SAR”) that also referred to Individual 1.         (Goverment's sentencing merorandum (এর ৩য় পৃষ্ঠায়)


উল্লেখযোগ্য যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংক কিম্বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে সন্দেহজনক একটিভিটি রিপোর্টÑ (SAR)) ফাইল করতে হয় সজিব ওয়াজেদ জয় এবং ৩০০ মিলিয়ন ডলার নিয়েই এই সন্দেহজনক একটিভিটি রিপোর্টÑ (SAR) এফবিআই মেমোর সাথে জমা ছিল


প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,
আদালতে জমা দেয় মার্কিন সরকারের রিপোর্টে সজিব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ কিম্বা দৈহিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করার অভিযোগ আদালত গ্রহণ না করা সত্ত্বেও শুধু তার ফেসবুকে দেয়া একটা পোষ্টএর উপর ভিত্তি করে ঢাকায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশ এফআইআর হলো, গোপনে তদন্ত হলো, মামলা হলো এবং বয়োবৃদ্ধ ভালমানুষ বলে সুপরিচিত সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হলো, রিমান্ডে নেয়া হলো
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচার হওয়া মামলার অভিযোগপত্র, আদালতে জমা দেয়া সরকারের লিখিত রিপোর্ট, অভিযুক্ত কিম্বা সাক্ষীদের কোন জবানবন্দী, মামলার রায় এমনকি ঢাকার রমনা থানায় দায়েরকৃত এফ.আই.আর. কিম্বা পল্টন থানায় দায়েরকৃত মামলার কোথাও সাংবাদিক শফিক রেহমান, বন্দী সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কিম্বা বিএনপি কোন নেতার উল্লেখ নেই অথচ শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে হয়রানী করা হচ্ছে, মাহমুদুর রহমানকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো এবং একই কাল্পনিক অভিযোগে দেশে বিদেশে অবস্থানকৃত বিএনপি উর্দ্ধতন নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে যথেচ্ছা অভিযোগ করে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে
 
অথচ আদালতে পেশকৃত মার্কিন সরকারের ডকুমেন্টে উল্লিখিত (SAR) অর্থাৎ সজিব ওয়াজেদ জয় ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে সরকার টু শব্দটি করছেনা কেন ? শেয়ার মার্কেট ব্যাংকগুলোর যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে তারও কোন বিচার হচ্ছে না এই দুই বিষয়ের মধ্যে কোন যোগসূত্র আছে কি নাÑএটা জানার অধিকার অবশ্যই জনগণের আছে আর তাই জনগণ ব্যাপারে নিরপেক্ষ কার্যকর তদন্ত চায় জনগণ জানতে চায় যে, সন্দেহ জনক এই লেনদেনের ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার উৎস কি, এই বিপুল অর্থের প্রকৃত মালিক কে? কোন বিশেষ ব্যক্তি না বাংলাদেশের জনগণ? আমরা আশা করি সরকার জনগণের এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দেয়ার জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে

প্রিয় বন্ধুগণ,
সরকার দেশের, সরকার হওয়ার কথা জনগণের সেই জনগণের সম্পদ রক্ষার পরিবর্তে গুটি কতক মানুষকে অন্যায়ভাবে সম্পদের মালিক হতে দেয়ার অধিকার কোন সরকারের থাকতে পারেনা নির্বিঘেœ এসব লুটপাট চলতে দেয়ার ফলে আজ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ পর্যন্ত চুরি করা হয়েছে এটা বন্ধ করা না গেলে আমাদের প্রিয় দেশটা ফতুর হয়ে যাবে
 
আমরা তাই মিথ্যা অভিযোগে আটক সাংবাদিক শফিক রেহমানের মুক্তি সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানোর চক্রান্ত বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানাচ্ছি
 
কাল্পলিক এবং মার্কিন আদালতে ভিত্ত্বিহীন বলে প্রমানিত অভিযোগে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার সরকারী দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি একই সাথে ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের অন্যায়ভাবে বিব্রত ক্ষতিগ্রস্থ করার লক্ষ্যে যে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি

আমরা স্পষ্ট ভাষায় পুনরায় উল্লেখ করতে চাই যে, বিএনপি একটি জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক দল হিসাবে অপহরণ কিম্বা হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বরং বর্তমানে ক্ষমতাসীনদের আমলেই বিএনপি এবং এর অঙ্গদল সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মী অপহরণ হত্যার শিকার হয়েছে Ñ যার কোন বিচার আজও হয়নি আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আজ হোক কাল হোক এসব রাজনৈতিক অপহরণ হত্যার বিচার হবেই ইনশাআল্লাহ
আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ