বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি'র পতাকা |
কানাডার একটি আদালতের দেয়া রায়কে দেশেবিদেশে জনগণ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ও ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করতে অসত্যভাবে উপস্থাপন করে চলেছে বাংলাদেশের স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী।
চলুন দেখি কানাডার আদালতের জুডিশিয়াল রিভিউতে এই ব্যাপারে কি লেখা আছে।
জুয়েল হোসেন গাজী কানাডায় পৌঁছেন ২০১৩ সালের ১৮ই জনুয়ারি। ২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি কানাডায় রেসিডেন্সি পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। রেসিডেন্ট ভিসা অ্যাপ্লিক্যান্ট গাজী নিজেকে বিএনপির সদস্য বলে উল্লেখ করেন। গাজী তার অ্যাপ্লিক্যাশানে এমনভাবে কেইস সাজানোর চেষ্টা করেছেন যাতে তার আবেদন কানাডা মঞ্জুর করতে বাধ্য হয়। তিনি বিএনপির কাঁধে বন্দুক রেখে উদ্দেশ্য সাধন করতে চেয়েছেন। বিএনপিকে তিনি নিজেই প্রথমে সন্ত্রাসী দল বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন বিএনপি হরতাল চলাকালে সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত থাকলেও নিজেকে যে কোন সন্ত্রাসী কাজ থেকে দূরে রেখেছেন। এখন দেশে ফিরলে বিএনপি তার জান নেয়ার চেষ্টা করবে, অতএব, কানাডা তাকে রেসিডেন্ট ভিসা দিয়ে কানাডায় থাকার অনুমতি দিক। কিন্তু পরিশেষে নিজের জালে নিজেই ধরা পড়ে যান গাজী । ইমিগ্রেশান প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ পার হতে পারলেও দ্বিতীয় ধাপে আটকে যান তিনি। এদিকে, বিএনপি বলেছে যে এই গাজী তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সদস্য নন। জুয়েল হোসেন গাজী নামে কেউ বিএনপির কোন পর্যায়ের কোন কমিটিতে নেই। কানাডার আদালত, বিএনপির কেউ নন, এমন একজনকে বিএনপির লোক হিসেবে বিবেচনা করেছে!
যাহোক, ২০১৬ সালের মে মাসে গাজীর রেসিডেন্সির আবেদন রিভিউ করে নাকচ করে দেয় আদালত।
উল্লেখ করা যায় যে ২০১৫ সালে আমেরিকার আদালতের মতে বিএনপি কোন সন্ত্রাসী দল নয়। US Immigration Court, dated July 2015, which found that the BNP had not 'evolved into a terrorist organization'. আর আমেরিকা এই রায় দিয়েছে প্রমাণ বা 'preponderance of evidence' এর ভিত্তিতে।
কানাডার আদালতের রিভিউয়ে হরতাল বা ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশের সব দলকেই একই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
"The BNP and the Awami League have been the two main political parties in Bangladesh. As counsel for the applicant has noted, politics in Bangladesh is a violent affair. In that respect both parties have engaged in similar tactics. One such practice is the use of general strikes (hartal) as a form of political protest."
কানাডার আদালতের রিপোর্টে থাকা দুইটি নিউজ এই ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য —
১। Congressional Research Service report, CRS report:
“Both the AL and the BNP, when out of power, have devoted their energies to parliamentary boycotts, demonstrations, and strikes in on effort to unseat the ruling party. "
২। The Immigration and Refugee Board of Canada — IRB Report:
"Both government and opposition party supporters used armed violence and intimidation to enforce hartals or disrupt rival parties' demonstrations and street rallies."
অতএব, আওয়ামী লীগও কানাডার আদালতের চোখে ধোয়া তুলসি পাতা নয়। এই ব্যাপারে তাদের বিচারে দুই দলই নিদেন পক্ষে একই অবস্থানে আছে। আর এতে বরং তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত যে তারা দেশে সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সর্বশেষ কথা, কানাডার সরকার বিএনপিকে কখনই জঙ্গি দল হিসাবে লিস্টেড করে নাই। আদালতের রিভিউ রিপোর্টেই এই কথা লেখা হয়েছে, "the Canadian government has not listed the BNP as a Listed Terrorist Entity"।
আর আমেরিকান সরকার এবং আদালতের প্রমাণের ভিত্তিতে বিএনপি কোন জঙ্গি বা সন্ত্রাসী দল নয়। বরং দলটি আধুনিক ও গণতন্ত্রবাদী দল হিসেবে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিতি লাভ করেছে। দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বিশ্ববাসী 'গণতন্ত্রের মাতা' বলে ডাকে। আর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরউত্তম বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
— লেখাটি কানাডার আদালতের রিভিউ ডকুমেন্টে ফাইল #IMM-2401-16 এর ভিত্তিতে লেখা।
- লেখক ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্ট।
No comments:
Post a Comment