Search

Saturday, June 2, 2018

মাদকবিরোধী অভিযানের দুটো বড় গলদ

শাহদীন মালিক


১৫ মে বাংলাদেশের সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। উদ্দেশ্য মাদকাসক্তি ও মাদকদ্রব্যের কেনাবেচা দমন করা। ভালো কথা।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ১৯৭১ সালের ১৭ জুলাই ‘ওয়ার অন ড্রাগস’, অর্থাৎ মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ‘ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি’ নামে মাদক দমনের জন্য নতুন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৪৫ বছর পরও যুদ্ধ অব্যাহত আছে। যুদ্ধে মিত্র থাকলে ভালো হয়, এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বড় মিত্র এখন মেক্সিকো ও কলম্বিয়া। মিত্রদেশ মেক্সিকো ও কলম্বিয়াকে এই যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র অনুদান দেয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। গত দুই-তিন বছরের হিসাবে দেখছি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রথমবারের মতো শতকরা ১০ ছাড়িয়ে গেছে।

মাদকের বিরুদ্ধে সর্বশেষ বড় যুদ্ধ ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট দুতার্তে। এই যুদ্ধে ফিলিপাইনে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই। দুতার্তে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ম্যানিলা বে’র জেলেরা বড়লোক হয়ে যাবে। অনেকটা আমাদের পদ্মা-মেঘনা সংযোগের চাঁদপুরের মাঝিদের মতো। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় যদি শত শত মানুষের লাশ ফেলা হয় আর সেই লাশের গলিত মাংস খেয়ে মাছগুলো যদি মোটাতাজা হয় আর জেলেরা সেই মোটা মোটা মাছ ধরে বিক্রি করেন, তবে তাঁদের আয়–উন্নতি হতে পারে। দুতার্তে ম্যানিলা বে’র জেলেদের এ রকম আশ্বাস দিয়েছিলেন। ওই জেলেদের আয়-উন্নতি হয়েছে কি না, সে খবর এই অধম এখনো পায়নি। দুতার্তে আরও বলেছেন, তাঁর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই যুদ্ধে দরকার হলে নারী মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের যৌনাঙ্গ তাক করে গুলি করবে। আমাদের যুদ্ধ সবে শুরু হয়েছে। নিক্সনের শুরু করা আর দুতার্তের চালিয়ে যাওয়া যুদ্ধগুলোর সবক আমাদের অভিযান-কর্তাদের হয়তো কাজে দেবে, উপকারে আসবে।

২.
গলদের কথায় আসি। এই সব তথাকথিত যুদ্ধের কেন প্রয়োজন হয়? কারণ একটা। যাঁদের দায়িত্ব ছিল মাদক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখা, মাদক অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা, তাঁরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থতা চলছে বহু বছর, যুগ যুগ ধরে। সীমান্ত পেরিয়ে আগে আসত ফেনসিডিল, এখন ইয়াবা। অর্থাৎ মাদক এ দেশে পাচার হচ্ছে অবাধে, ডুগডুগি বাজিয়ে। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, বাসে-ট্রাকে, লঞ্চে-স্টিমারে, রিকশা-ভ্যানে, গাড়িতে ও আরও বহু আকারে ও প্রকারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধাবিপত্তি নেই বললেই চলে।

মাদক কারবারিরা একেবারেই যে ধরা পড়ছে না, তা নয়। মামলাও হচ্ছে। কিন্তু ফলাফল শূন্যপ্রায়। এখান-ওখান থেকে জানা গেছে, হাজার হাজার, সম্ভবত লাখ লাখ মাদক মামলা বিচারাধীন বছরের পর বছর ধরে। তারিখের পর তারিখ পড়ে, সাক্ষী আসে না, জব্দ তালিকার সাক্ষী সম্পূর্ণ লাপাত্তা, তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতিমধ্যে বদলি হয়ে গেছেন তিনবার তিন জেলায়, আর তাই বছরের পর বছর তারিখ পড়ে। বিচার হয় না, শাস্তিও হয় না। সরকারি কৌঁসুলিদের নিয়োগ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে, প্রধানত রাজনৈতিক বিবেচনায়, দক্ষতা-যোগ্যতা যাচাইয়ের কোনো বালাই নেই। মামলা শেষ হলো কি হলো না, তাতে তাঁদের কিছু যায়-আসে না। সরকার বদল হলে তাঁদের চাকরি শেষ। দুই-চার বছরে যা পাওয়া যায়, উপরিসহ, সেটাই মুখ্য। আট-নয় মাস আগে এক সংবাদপত্র রিপোর্ট করেছিল যে তখন সারা দেশে ২ লাখ ১৬ হাজারের মতো মাদক মামলা বিচারাধীন ছিল। সেই অবস্থার অবনতি ছাড়া উন্নতি নিশ্চয়ই হয়নি, উন্নতি বা সংস্কারের জন্য কেউ তো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এই সব প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, অযোগ্যতা আর অদক্ষতার সমাধান গুলি করে মানুষ মেরে করা যাবে না। যখন এই সব প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে যায়, তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয়। মাদকাসক্তি নিঃসন্দেহে এবং নিশ্চয়ই একটা মহা সমস্যা। মাদকের খপ্পরে পড়ে হাজার হাজার, লাখ লাখ তরতাজা তরুণ জীবন তিলে তিলে অতল গহ্বরের দিকে যাচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে মাদকাসক্তের ভাইবোন, মা–বাবা, ছেলেমেয়ে—সবার জীবন হয়ে যাচ্ছে এলোমেলো। কিন্তু জনগণ দেখছে প্রতিষ্ঠানগুলো তেমন কিছু করতে পারছে না। তৈরি হয় অসন্তোষ, রোষ ও নিরাপত্তাহীনতা। জনগণ চায় সরকার ফলপ্রসূ কিছু করুক, এই রকম পরিস্থিতিতেই সাধারণত সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। বহু দেশে এটা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুতার্তে ক্ষমতায় এসেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছিলেন, ‘আমাকে ভোট দাও, আমি প্রেসিডেন্ট হলে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাব। সবাইকে মেরে সাফ করব।’

কিন্তু মাদক দমনের জন্য রাষ্ট্র বা সরকার যে প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি করে, সেগুলো যদি ঠিকমতো তাদের দায়িত্ব পালন না করে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগের জায়গায় বা আগের অবস্থায় রেখে বন্দুকযুদ্ধ করে মাদক সমস্যার সমাধান করা যাবে না। ধরে নিলাম, হাজার হাজার মাদক কারবারির তালিকা সরকারের কাছে আছে। নিকট ভবিষ্যতে তাঁদের প্রত্যেকেই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হবেন, তাহলে কি সমস্যার সমাধান হবে? প্রতিষ্ঠানগুলোর যদি কোনো পরিবর্তন না হয়, সংস্কার না হয়, দক্ষতা-যোগ্যতা না বাড়ে, ঘুষ-দুর্নীতি বহাল তবিয়তে থাকে, তাহলে কি মাদক দমন হবে? 

.
বছর বিশেক আগে কম্বোডিয়ায় গিয়েছিলাম। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষের দিকে পল পট সরকার ভেবেছিল, ওই দেশের সব বদ মানুষকে মেরে ফেললে দেশটা সাংঘাতিক ভালো হয়ে যাবে। ওই সরকার চার বছরে মানুষ মেরেছিল ২০ লাখ। দেশের মোট জনসংখ্যার কমবেশি এক-চতুর্থাংশ। কী দেখেছিলাম, কী বুঝেছিলাম এই কথায় নাই-বা গেলাম। তবে এত মানুষ মারার চার দশক পরও কম্বোডিয়া যেখানে ছিল, সেখানেই আছে। সুইজারল্যান্ড হতে কত যুগ লাগবে, কে জানে। কথায় কথায় যখন সুইজারল্যান্ড চলেই এল, তখন বলেই রাখি, সুইজারল্যান্ডে কেন্দ্রীয় সরকার নেই বললেই চলে। যেমন নেই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক।

এই সরকার ২০১৪ সালে এবারের দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর কম্বোডিয়ার হুন সেন বাংলাদেশ সফরে আসা প্রথম সরকারপ্রধান। হুন সেন সরকারপ্রধান আছেন ১৯৮৫ সাল থেকে। অকাতরে, নির্বিচারে মানুষ মেরে কোনো দেশ, জাতি বা সরকার সামাজিক কোনো সমস্যার সমাধান করতে পেরেছে বলে জানা নেই। সরকার ১৫ মে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, যুদ্ধ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মাদক কারবারিরা শুধু যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে তা নয়, একে অপরের সঙ্গে ভীষণভাবে বন্দুক নিয়ে গুড়ুম গুড়ুম করতে লেগে গেছে। নিজেরাও মারছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেও মরছে। বিচার ছাড়া মানুষ মরছে। পুলিশের হাতে মানুষ মরছে, র‍্যাবের গুলিতে মানুষ মরছে। গত বিএনপি সরকারের প্রথম দিকে সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি দমনে যৌথ বাহিনীর হাতে ‘হার্ট অ্যাটাকে’ মানুষ মরেছিল কমবেশি ৬০ জন। ওই মানুষগুলো মরার দেড় দশক পর সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি কি বিন্দুমাত্র কমেছে? তখন সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজি করত অপরাধীরা, এখন আমরা সবাই মনে করি যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা অংশ শুধু সন্ত্রাস-চাঁদাবাজিই করে না, মাদক অপরাধও করে, এমনকি ভাড়াটে খুনি হিসেবেও কাজ করেছে। আর কিছুদিন মানুষ মারলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা বড় অংশ অপ্রতিরোধ্য অপরাধী হয়ে পড়বে। যে দেশেই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ মারা হয়েছে, সেই সব দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই এখন অপরাধ করছে অনেক বেশি। আর তারা সবচেয়ে আগে আইনের ঊর্ধ্বে। প্রতিষ্ঠানের সংস্কার না করে, আর মানুষ মেরে মাদক দমন হবে না, দেশের অবস্থা হবে খারাপ থেকে খারাপতর। যদিও এই মুহূর্তে অনেকেই মনে করবেন, সরকার তো ভালোই করছে।

  • ড. শাহদীন মালিক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক
  • Courtesy: Prothom Alo /June 01, 2018

নির্বাচন কমিশনে ভিন্নমত

মিজানুর রহমান খান



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মাহবুব তালুকদারের নোট অব ডিসেন্ট সম্ভবত নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসের প্রথম ঘটনা। এর আগে এ টি এম শামসুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দীন কমিশনের আমলে ভিন্নমত দেওয়া-বিষয়ক গুঞ্জন শোনা গেলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন দুটি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিতে উদ্যোগী হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর দেননি। শামসুল হুদা কমিশন অবশ্য তা মেনে নিয়েছিল। ভারতের নির্বাচন কমিশনেও কমিশনের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর পরে এই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গড়ালে তাঁরা বলে দিলেন, ইসি একটি সমন্বিত বডি হিসেবে কাজ করবে। আর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অনেক পরে আমাদের উচ্চ আদালতও ওই রায়ের বরাতে একই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কিন্তু দেশে গণতান্ত্রিক ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ যখন যথেষ্ট সংকুচিত হয়ে পড়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছিল, তখন একজন মাহবুব তালুকদার তবু একটি উদাহরণ তৈরি করলেন। শুনেছি, আরও একজন সাংসদদের এমন সুবিধা প্রদানের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু তাঁরা তালুকদারের মতো সাহসী হননি। 

সামগ্রিকভাবে নুরুল হুদা কমিশন অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে তৈরি করা হলেও এ পর্যন্ত তারা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প হয়ে ওঠা বা বিবেচিত হওয়ার অবস্থা থেকে অনেক দূরে রয়েছে। পরিহাস হলো, যে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক শ্রীহীনতার জন্য আমরা অনেকে তাদের নাম মুখে নিতে চাই না, সেখানে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকার বদলের ধারা ফিরে এসেছে। সামরিক বাহিনী পেছন থেকে কলকাঠি নাড়লেও তারা বিচার বিভাগের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অপসারণের ভূমিকম্প সামলে নিয়েছে। এমনকি সব থেকে যা লক্ষণীয় তা হলো, পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির ধকলও কাটিয়ে উঠেছে তারা। নওয়াজ শরিফের উত্তরসূরি তাঁর দল থেকে এসেছেন, তাঁর পরিবার থেকে নয়। সম্পূর্ণ অজানা-অচেনা মানুষেরা রাতারাতি প্রধানমন্ত্রী পদে আসছেন। ওয়েস্টমিনস্টার ধাঁচ, যার ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল, সেই ধাঁচটি এখন পাকিস্তান সাফল্যের সঙ্গে অনুসরণ করছে।

৩১ মে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের মেয়াদ পূরণ হচ্ছে। ওই দিনই সংসদটি আপনা–আপনি ভেঙে যাবে। ২৫ জুলাই তারা নির্বাচনে যাবে। সব থেকে বড় সাফল্য, ২৮ মে ক্ষমতাসীন মুসলিম লিগ ও বিরোধী দল সমঝোতার মাধ্যমে সাবেক প্রধান বিচারপতি নাসিরুল মুলককে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছে। ডেমোক্রেসি রিপোর্টিং ইন্টারন্যাশনালের (ডিআরআই) বরাতে ডন দাবি করেছে, পাকিস্তানই এই মুহূর্তে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করছে। তাদের এই দাবি সম্ভবত ঠিক নয়, কারণ গ্রিসের সংবিধানেও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান আছে। 

তবে পাকিস্তানই একমাত্র দেশ, যেখানে সরকারি ও বিরোধী দল সব থেকে বেশিবার অরাজনৈতিক এবং অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সমঝোতাক্রমে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছে। ১৯৯০ সালে গোলাম মোস্তফা জাতই, ১৯৯৩ সালে মির বালাক শেখ মাজারি ও মইন আহমেদ কোরেশি, ১৯৯৬ সালে মালিক মিরাজ খালিদ, ২০০৭ সালে মুহাম্মদ মিয়া সুমরো এবং ২০১৩ সালে মির হাজার খান খুসো (একজন সাবেক বিচারপতি) তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদি বলা হয়, এর পেছনে সামরিক বাহিনী কলকাঠি নেড়েছে, তাহলে এটা প্রতীয়মান হয় যে পাকিস্তান সামরিক শাসনের একটি ধ্রুপদি রাষ্ট্র হয়েও বেসামরিক মুখকে সামনে আনার চেষ্টায় কিছুটা সাফল্য দেখিয়েছে। 

পাকিস্তানে একাদিক্রমে কয়েকটি মেয়াদে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদাহরণ তৈরি করতে পারে, তা একসময় অনেক নির্বাচন ও গণতন্ত্র-বোদ্ধার ধারণার বাইরে ছিল। ২০১২ সালের আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ে প্রেসিডেন্টের বিশেষ এখতিয়ার ছিল। সেখানেও আমরা দেখব, পাকিস্তানি দলীয় প্রেসিডেন্টরা দলের বাইরে যেতে পেরেছেন। ২০১২ সালে সংবিধান সংশোধন করে বলা হলো যে প্রেসিডেন্টের এই বিশেষ এখতিয়ার থাকবে না। তখন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতার ‘সমঝোতাক্রমে’ প্রধান উপদেষ্টা বাছাইয়ের ক্ষমতা দেওয়ার পর এই ধারণা খুব স্বাভাবিক ছিল যে এটা কাজে দেবে না। কিন্তু সেই আশঙ্কা এখন পর্যন্ত অমূলক প্রমাণিত হয়েছে। সমঝোতা না হলে কী হবে, সেই বিকল্পও সংবিধান রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি যাবে সমসদস্যসংখ্যক সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির কাছে। তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে তারা পাঠাবে ইসির কাছে, যাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী উপহার দিতে হবে। এরপর কেন্দ্রে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী এবং প্রদেশে তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে নয়া মন্ত্রিসভা কাজ শুরু করে দেবে। 

এ রকম একটি ব্যবস্থা পাকিস্তানে টিকে যেতে পারলে কেন তা অন্যত্র কাজ করবে না, তার উত্তর হয়তো বিশেষজ্ঞদের জানা আছে। তবে পাকিস্তান দেখাচ্ছে, একটি শক্তিশালী এবং স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ইসির কোনো বিকল্প নেই। ২০১২ সালে সংবিধান সংশোধনের পর ২০১৩ সালে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে পাকিস্তানি ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দল কিন্তু সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল। তখন ইসিই ত্রাতার ভূমিকায় নামে এবং বিচারপতি খোসোর ব্যাপারে সংসদীয় কমিটি সমঝোতায় আসতে ব্যর্থ হলেও ইসি তা স্থির করে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ইসি যখন সাংসদদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে আচরণবিধি সংশোধন করেছে, তখন পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি অনুযায়ী গোটা পাকিস্তানের সকল পর্যায়ে শুধু মন্ত্রীরা নন, তাঁদের সন্তান, পোষ্যরা এবং তাঁদের অধীনে থাকা সকল পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রচারণায় শামিল হতে পারেন না। 

আসল কথা হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক কিংবা দলীয় সরকার—যার অধীনেই হোক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসিই সর্ব অগ্রগণ্য। ২৮ মে ডন-এ আহমেদ বিলাল মেহবুব ‘আমাদের কি সত্যিই কেয়ারটেকার কেবিনেট দরকার’ শীর্ষক নিবন্ধে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনেছেন। তিনি অনির্বাচিত ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আনার বিরোধী। বলেছেন, উল্টো ফল দেওয়ায় বাংলাদেশ ২০১১ সালে এই বিধান বিলোপ করেছে। তবে মেহবুব স্বীকার করেছেন যে ইসির ভূমিকার কারণেই ২০১৩ সালে অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে পাকিস্তান। আবার এ-ও ঠিক যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানাবলি ১৮তম সংশোধনীতে কার্যকর করার পর এর কিছু অস্পষ্টতা থাকায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে ঠিক হয়েছে। বাংলাদেশেও দুই মেয়াদে নির্বাচন করতে নির্দেশনা বহাল আছে। পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্টকে মানা হয়েছে, বাংলাদেশে হচ্ছে না। 

২০১৩ সালে লতিফুর রহমান-মার্কা ১৮ সচিব বদলের ঘটনা ঘটলে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করেন। সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নেয়। কিন্তু তাই বলে সেই যুক্তিতে তারা ব্যবস্থাটাই বাতিল করেনি। ইসির অনুমতি ছাড়া পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনো কর্মকর্তাও বদলি করতে পারে না। মেহবুবের সুপারিশ, বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচিতরা মিলেই করুন। ভারতীয় ইসির কঠোর গাইডলাইন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও কানাডার কেয়ারটেকার 
কনভেনশনের আদলে ইসিকে দিয়ে গাইডলাইন করানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে দ্বিমত করার সুযোগ নেই।

কেয়ারটেকার বা দলীয়—যে সরকারের অধীনেই নির্বাচন হোক না কেন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন ও সমঝোতার সংস্কৃতি ছাড়া গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং কার্যকর সংসদ ও সরকার কল্পনা করা কঠিন। মাহবুব তালুকদারের নোট অব ডিসেন্টকে স্বাগত জানাই। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অকিঞ্চিৎকর। মাহবুব তালুকদার সরকারি দলের কথায় আচরণবিধি সংশোধনে পরিহাস দেখেছেন। আর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজসহ সবার সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ সংলাপের পর সেসব সুপারিশ কিছু বেছে নিতে কমিশনের এ পর্যন্ত একটি বৈঠকেও না বসার বিষয়টিকে আমরা (সম্প্রতি ইসি এ বিষয়ে রঙিন প্রকাশনা বের করেছে) জাতির সঙ্গে ইসির পরিহাস হিসেবেই বিবেচনা করতে চাই।
  • Courtesy: Prothom Alo/ May 31, 2018

How (not) to fight drug

Inam Ahmed and Shakhawat Liton


We tried to be in touch with them to get to know how they react to the ongoing anti-drug drive. All of them have been yaba addicts for a long time. Their phones are switched off.

Finally, we got hold of one. He sounded scared. A little disoriented.
“I am keeping myself low,” he whispered. “I am scared of being caught and killed.” And then he cuts off.

Unfortunately for him, he is today regarded as a criminal instead of a person with health issues who needs treatment, not punishment. He is the end user, one who takes the drug. It is millions like him who make
up the yaba market. They create the demand and so the supply continues -- through a long and convoluted chain.

So, when the current drive only targets the supply side without any
regard to a concerted move to curb the demand and when the drive takes a blanket view that anyone in the yaba chain is a criminal with no plan to treat and cure the addicts, skeptics would have a second opinion.

If you do not cut the demand, can the supply be stopped? If this is
the questions then the drive looks segregated and partial, likely to
bring partial success at a prolonged effort.

Across the world, drug (yaba included) problem is not regarded as a
solely criminal affair but a bigger health issue. While countries
focus on fighting the drug cartels, more successful countries have
focused on the users -- the addicts -- to put them back on track
through health care and rehabilitation.

The more successful countries are today decriminalising drug use. And
that is helping them fight the menace, statistics show.

But to develop this argument further, let's face one thing flatly --
there is not a single country not facing the drug problem. It's all
about a case of magnitude that makes a success story.

The US, Thailand and the Philippines can be lumped on one side of the
spectrum, which have tried to control drugs with full violence.

The US started its new approach since Richard Nixon's time in the
1970s and continues with Donald Trump who full-heartedly supports what
Duterte of the Philippines is doing -- so far 12,000 dead in its
anti-drug drive.

The Philippines, despite earning a bad name for its violent approach,
has so far been successful in its campaign that started in 2016. But
drug is a long story and it is unwise to come to a conclusion by
judging a short success.

The US drug policy failed spectacularly. A simple figure proves it
correctly -- in 2016 alone 64,000 died in drug overdose, a lot more
than the US body count in Vietnam War. And yet there are more people
incarcerated in the US for drug related cases than anywhere in the
world.

Thailand had also waged a violent war against yaba in 2003 and killed
some 2,800 people. After the initial success, yaba has come back. Its
government has publicly conceded that the country's bloody war on
drugs has been “wrong the whole time”.

Singapore, Malaysia, Vietnam and China also wanted to deal with drugs
with iron hands, executing drug peddlers and users alike. All of them
have harsh laws to deal with drug-related crimes.

Singapore executed 247 people for drug crimes between 1991 and 2000.
In China, executions of drug convicts were often a public event.
Thirteen percent of its death penalties handed down are in drug cases.

But did that bring any recess? Figures will tell the story again.
Singapore arrested 3,089 drug abusers in 2016, 40 percent of them new
abusers, up from 1,127 arrests in 2006. In Malaysia, the number of
newly registered drug users doubled in 2016 from 2012. In Indonesia,
which so boastfully executes drug criminals, also saw an almost
doubling of drug addicts between 2011 and 2015.

These countries have of late got the message from the figures and gone
on a retrospection of their act ions.  After 2,800 deaths, Thailand is
now talking about drug legalisation and rehabilitation strategy.

On the other end of the spectrum are the countries like Portugal,
Ecuador, Uruguay, Switzerland, the Netherlands and even Mexico, a
country so beset by drug problem until a few years ago.

And what is the lesson from them?

All these countries have decriminalised drug use from the realisation
that for a drug user it is a health issue and not a matter of
morality. It is simply like if you have diabetes you should not blame
the person but threat the disease.

Portugal was the first EU country to decriminalise all drugs that has
resulted in not only a decline in arrests but also in illegal drug
use. It has put in a lot of resources behind rehabilitation while
still making drug trafficking a punishable offence. It has put in
place a “dissuasion commission” to talk to drug consumers and counsel
them.

Ecuador was once ravaged by America's war on drugs. Now it has made a
law to put into place a system for treatment and rehabilitation for
addicts. At the same time, it has moved to decriminalise drugs.

Some countries such as Uruguay and Portugal have even gone as far as
to supervised drug taking to reduce risks of HIV. Uruguay has
legalised marijuana and the government sells cannabis at a fixed
price.

Czech Republic and Switzerland have very effective counselling and
“harm reduction” programmes. Czech citizens face small fines for
possession of any drugs for personal consumption and the government
prosecutes major drug trafficking and distribution while offering
rehabilitation. It has achieved reduction of drug use and overdose.

The world over, the call from physician organisations, including the
British Medical Association, is for a change in the way the society
treats drug users and to make treatment, rather than punishment a
priority.

Even the UN has learnt it the hard way. The UN has issued three drug
conventions, the first in 1961, that ban the use of illicit drugs. It
was thought that the ban would reduce the use of drugs, but far from
it drug use has grown substantially worldwide. So, the UN recently
reversed its thinking and in April 2016, the UN Office on Drugs and
Crime stated that drug policies must be “evidence-based” and designed
to improve public health, not undermine it.

Ruth Dreifuss, chair of the Global Commission on Drug Policy, told the
Medscape Medical News that the European experience clearly shows that
physicians are one of the main groups that can bring about a change in
attitudes about drug use and possession. She noted that a wide range
of therapies are available to treat drug-dependent patients.

Unfortunately for Bangladesh, laws are quite harsh for users and they
are seen more as criminals rather than people with health issues. A
drug consumer can get a term between two and 10 years.

And rehabilitation facilities are enormously inadequate. For a country
with an estimated 60 to 70 lakh drug addicts, treatment facilities
exist only for 2,800 people both in public and private facilities. The
attitude of the state is further exposed if one considers that the
government facilities include only 115 beds in four centres.

What Bangladesh needs badly is a two-pronged strategy -- cutting
supply, meaning dealing strictly with traffickers and dealers, and at
the same time rehabilitating the addicts. Singapore can be a bright
example to emulate. From its single focus of capital punishment to
all, it has segregated the addicts from the traffickers. For the
traffickers, the penalty is capital punishment.

Singapore runs a massive anti-drugs public education programme in
schools. Addicts are given two chances in a drug rehabilitation
centre. If they can kick their drug habit, they will not have any
criminal record. But those who will not give up drugs will go to
prison, where they are put on general rehabilitation programmes to
help them reintegrate into the community.

The result? The number of drug abusers has decreased by two-thirds in
a decade. That makes a lucrative figure for Bangladesh. An example
worth trying.



Courtesy: The Daily Star June 01, 2018

TIB terms deaths 'unconstitutional'

Anti-narcotic drive


Expressing concern over the deaths of a large number of 'drug peddlers' in the ongoing anti-narcotic drive, the Transparency International Bangladesh (TIB) labelled the killings as 'unconstitutional'.

The anti-graft watchdog also questioned the explanation of the deaths, given by the law-enforcement agencies, and sought judicial probe into the 'gunfights'.

TIB Executive Director Dr Iftekharuzzaman in a statement on Thursday said the constitution of the country has given all citizens the right to justice.

He said the government is saying that the anti-drug campaign is going on according to the list of drug dealers, prepared on the basis of intelligence reports.

"Still, there are questions regarding the legal acceptance of the process."

"Besides, the way the 'listed persons' are killed before getting accused in the judicial system is completely unconstitutional," he added.

Mentioning the government's claim of the drug dealers' firing back as a measure of safeguard, he said, "We don't know about any follow-up of legal process to ascertain its authenticity."

He also said in general, it seems that only the small drug peddlers and the users have become the victims of 'gunfights'.

Stating that these people could be used as crucial informants to resolve drug problem permanently, Mr Zaman said, "Because of the deaths of the small-scale drug sellers, the kingpins of drug business will remain out of sight."

He said gunfight has not been proved as an effective tool to control spread of drug anywhere in the world.
  • Courtesy: The Financial Express /June 01. 2018


'Murder' it was

Ayesha Begum, wife of Teknaf municipality councillor Akramul Haque who according to Rab was killed in a gunfight, reading out a written statement during a press conference at Cox's Bazar Press Club yesterday. Akramul's family called the conference demanding a judicial probe into the death. Their two daughters, Tahiyat and Nahiyan, are also seen in the photo being consoled by their uncles. Photo: Star



An unverified audio clip of chilling conversations suggests a purported plot to kill Teknaf poura councillor Akram


"The commissioner has not done anything ... Why are you killing him?"

Repeating these words, a female voice kept screaming over a mobile phone moments after hearing a gunshot during a phone call, according to an unverified audio clip.

At a press conference in Cox's Bazar yesterday, Ayesha Begum, wife of slain Teknaf municipality councillor Akramul Haque, claimed that the female voice in the audio clip was hers, and that she was trying to talk to her husband on his mobile phone on May 26 night.

She gave reporters four audio clips of chilling conversations, raising allegations of cold-blooded murder of her husband.

However, the Rapid Action Battalion in a press release earlier said Akram was killed in a “gunfight” between the elite force and drug dealers in Teknaf around 1:00am on May 27.

The Daily Star could not independently verify the authenticity of the audio clips.

In the fourth audio clip with duration of around 13 minutes, the first gunshot was heard just seconds before the second one.

There was a very brief conversation before it.

"Aren't you involved?" said an unidentified voice.

"No", replied another voice.

After a few seconds, the sound of pulling back the hammer of a gun was heard. Then a gunshot rang out. What followed next was groaning of a man.

BEGGING FOR LIFE


As the groaning continued for a few seconds, Akram's wife and two daughters on the other side of the phone screamed and begged for his life, saying he was innocent, according to the audio clip.

Terming it a planned killing, Ayesha demanded judicial probe into the incident, and urged Prime Minister Sheikh Hasina to ensure justice for “the killing of one of her dedicated supporters".

Rab refuted the allegations brought by Ayesha, and said her statement was “completely untrue”.

At the press conference, Ayesha broke down in tears while claiming her husband's innocence. Their two daughters Tahiyat and Nahiyan, and Akram's brother Nazrul Islam sat near her.

"Allah, give us our father back. I want to call my Abbu once. He was a nice man and never committed any misdeed or crime. He was innocent. He has been killed,” said Akram's elder daughter Tahiyat.

As she was saying this, her younger sister Nahiyan, a sixth grader, fainted.

REPEATED TF CALLS


Ayesha told reporters that Akram left home around 9:00pm on May 26 following repeated calls from an official of a special intelligence agency.

"As he did not return home even after 11:00pm, our daughter called Akram at 11:13pm on his cell phone. He said ma 'I am going to Hnila with the major with whom I came here',” Ayesha said.

“My daughter again called him at 11:14pm when Akram in a choked voice said 'I am going to the TNO office. Tell your mother',” she continued.

“When our daughter again asked when he would return, he replied 'Inshallah I will return after work'.”

Ayesha made the last phone call to Akram at 11:32pm. It was received but Akram was not saying anything.

"An unknown voice was heard talking to him [Akram]. The person said 'aren't you involved?'

"My husband replied 'I am not involved'. Then I heard gunshots and groaning of my husband. I almost lost my mind. I and my daughters screamed and begged them not to kill him...,” she said.

"But our requests could not melt their hearts ... those fell on deaf ears. They killed my husband firing one shot after another,” she said.

“Even after the killing of my husband, we could hear the conversations among them. They said 'now shoot at the vehicle'. This was done to show that the incident was a gunfight,” Ayesha alleged, adding that she recorded the four phone calls.


'I'LL COME BACK'


In one of the clips, there was a conversation between Akram and his daughter in which he told her daughter to go to sleep and that he would return home soon.

"Hello Abbu," said Akram's daughter said as he picked up the phone.

"Where are you?" she asked.

Akram said he was going to the TNO office and would return home soon.

"How long will it take?" her daughter asked.

"It won't take long. I will come back inshallah. Okay now. Go to sleep," replied the councillor.

In another clip, her daughter asked Akram where he was.

"I am going to Hnila. Hnila", he said.

"Hnila? Why?" she asked.

"For emergency work," he replied.

"Emergency work... Why?" asked the impatient daughter.

With a heavy voice, he replied, "I'm going ammu, okay ... I'm driving."

The audio clip ended there.

At the beginning of the around 13-minute clip, a phone kept ringing and Akram's wife was heard saying, "Allah ... please pick up the phone."

Then someone received the call.

Ayesha then said, "I want to talk to the commissioner [councillor Akram]. Hello, who is this? Who received the call? I'm his wife."

Then several gunshots were heard with intervals.

At one stage, an unidentified voice was heard telling, “Give me shells... three... four. How many have you brought?”

Then another voice said, “Ten.”

Sound of sirens was heard at the end of the clip.

'KILLED IN A PLANNED MANNER'


At the press conference at the Cox's Bazar Press Club, Ayesha said it would be clear who killed her husband and who were behind the murder once the mobile call list was recovered.

"You heard the mobile voice records. So judge it for yourself whether he was killed in a gunfight as claimed by the Rab or if it is a planned killing," she said.

She alleged that her husband Akram, 46, a three-time councillor, an Awami League member and former Teknaf Jubo League president, was killed in a planned manner.

After Akram's death, Rab-7 in a Facebook post as well as in a press release claimed that Akram was killed in a “gunfight” at Noakhalipara on Teknaf Marine Drive Road.

The Rab members claimed to have seized 10,000 yaba, a pistol, a shotgun, six bullets, some spent bullet shells and a motorcycle.

“But everything was totally staged… a planned murder,” Ayesha said, adding she would produce evidence to support the claim.

On May 26, a person claiming to be an officer of a special intelligence agency posted in Teknaf called her husband over the phone, saying they wanted to buy a piece of land. The man had been contacting Akram for this purpose for three weeks, she claimed.

At one point, the man even introduced Akram to a Rab official. He regularly contacted Akram and talked about buying the land along the Marine Drive road and Akram took them to some land owners several times as a mediator, she added.

“On May 26, the officer called him repeatedly saying a senior official from Dhaka came and called him in Parjatan Hotel Netong,” she told the press conference that began around 11:30am.

WRONG IDENTITY


The Rab in its statement mentioned Akram's father as Mojaher Mia alias Abdus Sattar of Najirpara Teknaf. But, in fact, his father is late Abdus Sattar of Kaukkhali Para in Teknaf municipality, she said.

“It is mysterious … to mention the name and address of a man whom they targeted for a month and then killed him,” Ayesha said.

After the shooting, she along with her daughter and a close relative rushed to the Teknaf Police Station and described the incident to the officer-in-charge.

The OC wanted to know the name and address and said one man named Akramul Haque had been killed in a shootout on Marine Drive road, Ayesha said.

Akram's body was handed over to the family the next day and the namaj-e-janaza held at Teknaf Pilot High School Ground was attended by thousands of people.

“Have you ever heard of a janaja of a drug trader where thousands of people attended?” Ayesha asked.

“Only a few days ago, I had a family where there was insolvency, but no want of happiness. Now I only have grief,” she said.

She claimed her husband was never in drug business; he was rather vocal against it.

If he was involved in drug trade, he would not be elected councillor thrice, she said. “Why couldn't he build a house although he was a Jubo League president for 12 years in a place like Teknaf? Why are we living in a room of his ancestral home?”

She alleged that Akram's name was put on the list of drug dealers as he came under the wrath of an official of an intelligence agency long ago.

“We support the drive against drugs, but we don't want to see anyone killed the way my husband was,” she said.

RAB CLAIM

Mufti Mahmud Khan, director of Rab legal and media wing, dismissed the allegation, saying it was “completely untrue”.

“What happened during the raid was reported in the media. There is enough evidence in the media and other reports that he was involved with drugs. His name was on different lists of drug traders,” he told The Daily Star yesterday.

The Rab officer said Akram opened fire and Rab members recovered firearms and a huge amount of drugs from the spot.
  • Courtesy — The Daily Star/ June 01, 2018. 

এসপি মিজানের দুর্নীতি নিয়ে নতুন অনুসন্ধানে দুদক

  • পুলিশের ৬০ সদস্যকে রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজে লাগিয়েছিলেন
  • ১৮ বছরে কয়েক শ বিঘা স্থাবর সম্পত্তি কিনেছেন
  • নকল সার কারখানাও চালাতেন




পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের অনুসন্ধানের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পুলিশের আরেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই কর্মকর্তা পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার। বর্তমানে রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কমান্ড্যান্ট (বদলির আদেশাধীন)। নাম মিজানুর রহমান।
এসপি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ আয় করেছেন। নকল সারের কারখানা পরিচালনা করেছেন। নিজের বাড়ি নির্মাণে পুলিশের ৬০ জন সদস্যকে কাজে লাগিয়েছেন। এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আগামী ৬ জুন সকালে তাঁকে তলব করেছে দুদক। সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করছেন। তিনিই মিজানকে তলব করেছেন দুদকে এসে বক্তব্য দেওয়ার জন্য।
এর আগে ২০১২ সাল থেকে মিজানের বিরুদ্ধে দুদকে অনুসন্ধান হলেও সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকার পরও তাঁকে দায়মুক্তি দিয়েছিল সংস্থাটি।

অভিযোগ সম্পর্কে এসপি মিজানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দুদক সূত্র জানায়, নিজের বাড়ি নির্মাণের সময় পুলিশের ৬০ জন সদস্যকে রাজমিস্ত্রির সহকারী বা জোগালির কাজ করানোর অভিযোগ ওঠে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানটি শুরু করে দুদক। অভিযোগ ছিল, সাভারের হেমায়েতপুরের আলীপুর ব্রিজ-সংলগ্ন ৮৪ শতাংশ জমির ওপর বাড়ি তৈরি ও ঢাকার মিরপুরের মাজার রোডের আলমাস টাওয়ারের পাশে আরও একটি বাড়ি নির্মাণে জোগালি ও শ্রমিক হিসেবে সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৫০ থেকে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে দিয়ে কাজ করান মিজানুর রহমান। সরকারি কর্মচারীদের ব্যক্তিগত কাজে খাটানোর অভিযোগ এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামেন দুদকের উপপরিচালক এস এম মফিদুল ইসলাম। এর মধ্যে মিজানের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। 
পরে অনুসন্ধানের ক্ষেত্র আরও বেড়ে যায়। মিজানের বিরুদ্ধে নকল সার কারখানা পরিচালনার অভিযোগ ওঠে। এটিও যুক্ত হয় অভিযোগ নথিতে। এর মধ্যে নতুন করে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান সহকারী পরিচালক মো. ফারুক আহমেদ।

বাড়ি নির্মাণে জোগালি পুলিশ

দুদক সূত্র জানায়, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এমন পুলিশ সদস্যদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে দুদকের হাতে। এসপি মিজান সাভারের হেমায়েতপুরের আলিপুর ব্রিজ-সংলগ্ন জগন্নাথপুরে প্রায় ৮৪ শতাংশ জায়গার ওপরে তৈরি করেছেন আলিশান বাড়ি। ওই কাজে মাত্র তিনজন পেশাদার রাজমিস্ত্রির সঙ্গে হেলপার বা জোগালি হিসেবে ব্যবহার করছেন সাব-ইন্সপেক্টরসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার প্রায় ৬০ জন পুলিশ সদস্য। নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে পুলিশের গাড়ি। প্রায় একই অভিযোগ রয়েছে রাজধানীর মিরপুরের আলমাস টাওয়ারের পাশে ও নরসিংদীর পলাশে তাঁর আরও বাড়ি নির্মাণে। পুলিশ প্রবিধানে স্পষ্ট বলা রয়েছে, পুলিশের প্রতিটি সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাঁদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করানো যাবে না।

নকল সার কারখানা পরিচালনা

দুদকে থাকা অভিযোগে বলা হয়েছে, এসপি মিজান ফসল উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত টিএসপি বা ট্রিপল সুপার ফসফেট সার নকল করার চারটি বড় কারখানার পরিচালনা করেন। এর মধ্যে দুটি কারখানা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আর অন্য দুটি ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে। ওই চারটি কারখানায় প্রতিদিন এক হাজার টন নকল টিএসপি সার তৈরি করা হয়, যার দাম প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর এসব সার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সরকারি টিএসপি সারের বস্তায় ভরে। কিছু সার বিক্রি হয় ‘তিউনিসিয়া টিএসপি’ নামে। গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দুদক তা আমলে নেয় এবং এ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে। এ বিষয়েও দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে মিজানকে।


জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ

মিজানুর রহমানের নানা সম্পদের তথ্যও রয়েছে দুদকের হাতে। হেমায়েতপুর, মিরপুর মাজার রোড, নরসিংদীসহ বিভিন্ন স্থানে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করেছে দুদক। সেগুলোর পাশাপাশি অস্থাবর সম্পদের তথ্যও নেওয়া হয়েছে।

অদৃশ্য প্রভাবে বারবারই ধরাছোঁয়ার বাইরে মিজান

২০১২ সালে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক যে অনুসন্ধান করেছে, তখন সংস্থার চারজন কর্মকর্তা আলাদাভাবে অনুসন্ধান করেও তাঁর অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাননি। একাধিকবার অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করেও মামলা করার মতো কিছু পায়নি দুদক। তাই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে মিজানকে অব্যাহতি দিয়েছিল সংস্থাটি। তবে এ বিষয়ে দুদকেও কানাঘুষা ছিল। প্রভাব খাটিয়ে দুদক থেকে দায়মুক্তির সনদ নিয়েছিলেন বলে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছিল।

দুদক সূত্র জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে অনুসন্ধান শুরু হয়। উপপরিচালক গোলাম মোরশেদ অনুসন্ধান শুরু করলেও পরে আরেক উপপরিচালক ফজলুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুজনই মিজানুর রহমানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিলেও কমিশন তা গ্রহণ করেনি। পরে আবার অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপপরিচালক হামিদুল হাসানকে। হামিদুল হাসানও অভিযোগটি নথিভুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তির সুপারিশ করেন। এ সুপারিশ অগ্রাহ্য করে উপপরিচালক মো. আবদুস সোবহানকে পুনঃ অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয় কমিশন।

দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছরে তিনি কয়েক শ বিঘা স্থাবর সম্পত্তি কিনেছেন। ব্যাংকে তাঁর নগদ অর্থ রয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। তাঁর স্ত্রীর নামে লাইসেন্স নেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বৈধ করেন। এসব রেকর্ডে মিজানের স্ত্রী নীপা মিজানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান অনুসন্ধান কর্মকর্তা হামিদুল হাসান। কিন্তু কমিশনের ওপর মহল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে অদৃশ্য ইশারায় অনুসন্ধান নথিভুক্তির সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।

সবশেষ অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আবদুস সোবহানের অনুসন্ধান চলার সময় নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকবার এসপি মিজানুর রহমানকে দুদকে আসতে দেখা যায়। এ সময় তিনি সাক্ষাৎ করেন দুদকের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও অনুসন্ধান কর্মকর্তার সঙ্গে। আর এর ফলে পুনঃ অনুসন্ধান প্রতিবেদনেও তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়েরের পরিবর্তে নথিভুক্তির সুপারিশ আসে।

এর আগে ২০১১ সালে এসপি মিজানের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ অনুসন্ধান করেন দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের তৎকালীন অনুসন্ধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম। অনুসন্ধানে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় স্ত্রী নীপা মিজানের নামে ব্যবসা পরিচালনা, ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে ব্যবসায়িক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। তিনি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর সুপারিশ করলেও মামলা না করে অভিযোগটি নথিভুক্ত হয়ে যায়
  • Courtesy: Prothom Alo/ May 31, 2018

রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় খুলনায় মাদক ব্যবসা

• পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাংসদ মিজানুর রহমানের নাম
• ছাত্রলীগের এক নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রীর দুই ভাইয়ের নামও আছে
• পুলিশের ৩৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোক্ষ সহায়তার অভিযোগ
• তালিকা পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে


রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় খুলনায় মাদক ব্যবসা চলছে। এ ব্যবসায় জড়িত ব্যক্তিদের সরকারদলীয় স্থানীয় সাংসদ মিজানুর রহমান পৃষ্ঠপোষকতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পৃষ্ঠপোষক হিসেবে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ানের দুই ভাইয়ের নামও রয়েছে। মাদক ব্যবসায় পুলিশের ৩৪ কর্মকর্তাও পরোক্ষভাবে সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মাদক ব্যবসায়ী ও তাঁদের পৃষ্ঠপোষকদের নিয়ে করা সরকারের তালিকায় এসব নাম পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে খুলনায় পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে ওই তালিকা পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষক-আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী হিসেবে তালিকায় খুলনা-২ আসনের সাংসদ ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের নাম রয়েছে। টেলিফোনে জানতে চাইলে সাংসদ বিস্ময় প্রকাশ করে জানতে চান, ‘কোন মাসের তালিকায় নাম এসেছে, আগের না এখনকার? আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রায়ই আপনার নাম এসেছে, দোষী না হলে কেন নাম আসে—জানতে চাইলে সাংসদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দলের ভেতর থেকেও এসব ষড়যন্ত্র হতে পারে। আবার অন্য রাজনৈতিক দলের লোকজন এসব করতে পারে। আমি খালেক তালুকদারকে মেয়র হিসেবে জিতিয়ে এনেছি। এটা বোধ হয় কারও সহ্য হচ্ছে না।’ আপনি দোষী না হলে তালিকায় নাম আসা নিয়ে কোনো প্রতিবাদ করেন না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সাংসদ বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তো আমাকে কিছু বলেনি। তাহলে কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করব?’

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ১৬ এপ্রিল সাংসদ মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যে অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, তার মধ্যে মাদক ব্যবসার অভিযোগটি অন্যতম।

মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ওই তালিকায় খুলনা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শামসুজ্জামান মিয়া, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিসুর রহমান বিশ্বাসের নাম আছে। শামসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেউ প্রভাবিত হয়ে এই তালিকায় আমার নাম লিখেছে।’

আর আনিসুর রহমানের ভাষ্য, ‘এই নামের তালিকা কারা দিল, কীভাবে এল, আমার জানা নেই। আমি তো রাজনীতিতে নেই। সরকারদলীয়ও নই।’ 

পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রলীগ নেতাদের নাম

তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নাম আছে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামানের। আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, মাদকের তালিকায় তাঁর নাম কীভাবে এল এটি তিনি জানেন না। তিনি বলেন, শহরে মাদক সমস্যা আছে। মাদকের সঙ্গে জড়িতরা প্রকৃতপক্ষে কোনো দলের না। এরই মধ্যে পুলিশের সহায়তায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি পরিবারকে তিনি উচ্ছেদ করিয়েছেন বলে দাবি করেন।

মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নাম আছে কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহর। তিনি মাদক সেবন ও বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মাদক-সংক্রান্ত কোনো মামলা তাঁর নামে নেই। জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা।

তবে কয়রা থানার একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাসুম বিল্লাহ যে মাদকের সঙ্গে জড়িত, তা এলাকাবাসীর সবাই জানে। এ ছাড়া বিএল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব মোড়লের নামও আছে মাদকের পৃষ্ঠপোষকের তালিকায়। বিএল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিশাত ফেরদৌস প্রথম আলোকে বলেন, বিএল কলেজে ছাত্রলীগের বিশাল কমিটি। কলেজের দুটি হলে নিয়মিত বহিরাগতরা মাদকের আসর বসায়। স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতারা তাদের সহায়তা করেন।

পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের ভাই শাহাবুদ্দিন ও ফুফাতো ভাই কাজী ইব্রাহিম মার্শালের নামও আছে। এ ব্যাপারে শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে মার্শাল বলেছেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করব, কি করে আমাদের নাম আসল?’ আর এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি সাবেক প্রতিমন্ত্রী। 

মাদক ব্যবসায় দুই থানার ওসির নাম

খুলনা জেলা ও মহানগরে মাদক চোরাকারবার ও সরবরাহে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহায়তা করেন ৩৪ জন পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁদের মধ্যে জেলা পুলিশের দুই থানার দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১২ জনের নাম আছে। বাকি ২২ জন খুলনা মহানগর পুলিশে কর্মরত। তালিকায় থাকা দুই ওসি হলেন ফুলতলা থানার আসাদুজ্জামান ও দিঘলিয়া থানার হাবিবুর রহমান।

জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান তালিকায় তাঁর নাম আসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘কেউ না কেউ শত্রুতা করে এটা করেছে, এটা আমি নিশ্চিত।’ দিঘলিয়া থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি তো আইনের ঊর্ধ্বে না, যদি জড়িত থাকি তবে কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

খুলনা মহানগরে মাদক চোরাকারবার ও সরবরাহে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তাকারী হিসেবে কেএমপির ২২ পুলিশ সদস্যের নাম রয়েছে। খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সোনালী সেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তালিকায় যেসব পুলিশের নাম আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কেএমপির উপকমিশনাররা নিজ নিজ ইউনিটের তদন্ত করছেন।
  • Courtesy: Prothom Alo /June 01, 2018

Friday, June 1, 2018

দলবাজ সাংবাদিকদের কর্মকান্ডে সাংবাদিক পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে

— আমীর খসরু 



আমীর খসরু 
প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের তাত্ত্বিক ধারণার উদ্ভাবক দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিল জীবনভর প্রতিনিধিত্বশীল সরকারের জয়গান গাইলেও, তিনি এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্ধিহান ছিলেন হয়তো প্রতিনিধিত্বশীল সরকার ব্যবস্থাও শেষ পর্যন্ত কতিপয়ের শাসনে পর্যবসিত হবে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের সম্পর্ক নিয়ে রয়েছে নানামুণির  নানামত।  এ কারণে বিষয়টি নিয়ে অযথা সময় নষ্ট না করলেও, দু’একটি কথা অন্তত বলা প্রয়োজন। বাংলাদেশসহ যে সব দেশে গণতন্ত্রের চরম ঘাটতি বহুকাল ধরে আছে, সেসব দেশের মানুষের মনোজগতে শাসকদের পক্ষ থেকে সুকৌশলে এ ধারনাটি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে কোন মতে যেনতেন পন্থায় নামকা ওয়াস্তে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামই হচ্ছে গণতন্ত্র। অার গণতন্ত্র উন্নয়নের মতো একটি বিষয়ের কাছে নিতান্তই গৌণ।  কিন্তু নিরেট বাস্তবতা হলো, , নির্বাচন গণতন্ত্রের রাস্তায় ওঠার প্রথম ধাপ মাত্র, কোনক্রমেই একমাত্র ধাপ নয়। গণতন্ত্র চর্চার মুশকিলটি হচ্ছে এখানেই যে বিদ্যমান শাসক শ্রেণীর মনোজগতে আসলে গণতন্ত্র নেই শুধু অাছে সাইনবোর্ড নামে একটি জায়গায় যা তাদের ভাষায় পাকি অামলে দেখানো হয়েছে। কাজেই  রাষ্ট্রে ও সমাজে গণতন্ত্র চর্চা হবে- এটা সম্ভব নয়, সংগত কারণেই।

গণতন্ত্র যখন একেবারে তলানিতে বা পাল্লার নেতিবাচক দিকে যায়, ঝুলটা যখন বিপরীত হয়, তখন নির্বাচন নামক কর্মকাণ্ডেও রকমফের দেখা দেয়। একথাটি বলতেই হবে যে এ দেশে কখনও সহি বা সঠিক নির্বাচন হয়েছে তা হলফ করে কেউ বলতে পারবেন না। দেশের ইতিহাসের প্রথম অর্থাৎ ১৯৭৩’র নির্বাচন অনুষ্ঠানের কৌশলের সাথে এর বছর ছয়েক পরের হ্যাঁ না ভোটের কৌশলকে যেমন মেলানো যাবে না- তেমনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকেও নয়।

ক্ষমতা বিকেন্দ্রায়নের বিষয়টি যদি গণতন্ত্রের অন্যতম একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাও এখন নির্বাচনের নামে ইতিমধ্যে যেসব রাজনৈতিক বিকৃতি ও বৈকল্য ঘটে গেছে তা থেকে কোনক্রমেই বাইরে নয়। এ কারণে ক্ষমতার  ‘সর্বগ্রাসী ক্ষুধা’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনকেও বহুকাল ধরে রেহাই দিচ্ছে না। এসব নির্বাচনকে গ্রাস করার নানা ধরন-ধারন পাল্টাচ্ছে। যেকারণে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে অন্য সব নির্বাচনের সাথে মেলানো যাবে না। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবী করছেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন তাদের দল আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। বাস্তবে কি তাই? আসলে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ও প্রশাসনে যারা ছিলেন তারা। আর বিপর্যয় হয়েছে নির্বাচন কমিশনের। জনগণ বরাবরের মতো নিরব সাক্ষী হয়েছিলেন।

আর আরেক দফা সীমাহীন একটি ক্ষতি হয়ে গেছে সাংবাদিকদের ও  গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতায়। সাংবাদিকদের সম্পর্কে জনমনে ধারণা গত কিছুকাল ধরে এমনিতেই ভালো নয়। একাংশ, অন্য অংশ বলে যে বিভাজন আগেই হয়ে রয়েছে তা আরো বিকট-প্রকট হয়েছে; পাল্লা দিয়ে তারা এখন দলীয় লেজুড়বৃত্তিতে মগ্ন। আর এতে যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তা কখনই সামাল দেয়া সম্ভব নয়; এ এক অপূরণীয় অনিবার্য বিপদ, কিছু সংখ্যক ‘আপদে’র কারণে। খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অথবা গাজীপুরে আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তথাকথিত সাংবাদিক নেতারা বক্তৃতাবাজি করে, মিছিল করে, দলীয় প্রার্থীর জন্য ভোট ভিক্ষা চায়- নিজ পেশার বদলে দলবাজিকে প্রাধান্য দেয়; যেসব সাংবাদিক সামান্য অর্থের কাছে নতজানু হয়, অতিসামান্য চাপেই মেরুদনণ্ডহীন হয়ে পড়ে- তখন আর সবাই যা বলে বলুক, দলবাজ কথিত এইসব সাংবাদিকদের এই কর্মকাণ্ডে সাংবাদিক পরিচয় দিতে আমার অন্তত লজ্জা লাগে, ঘৃণাবোধ করি।

কাজেই খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল কি হয়েছে- তা নিয়ে আমার মতো অনেকেরই আসলে উদ্বিগ্ন নন। আমরা সবাই উদ্বিগ্ন এই কারণে যে, ইহজনমে হয়তো আর মন্দের ভালো একটি নির্বাচনও আর দেখে যেতে পারবো না।


বিএনপির কথায় কোনও গুরুত্ব দিচ্ছে না, আলীগের সব দাবিই মানছে অাজ্ঞাহুজুর ‌ইসি!



আওয়ামী লীগের প্রায় সব চাওয়া পূরণ করলেও বিএনপির চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়নি কমিশন।

বিএনপির পক্ষ থেকে করা ৭৯টি প্রস্তাব ও সুপারিশের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি বাস্তবায়ন করেছে ইসি। শতাংশের হিসাবে বিএনপির দাবি পূরণের হার এক দশমিক ২৬ ভাগ। আর আওয়ামী লীগের ১২টি প্রস্তাব ও সুপারিশের মধ্যে এখন পর্যন্ত একটি বাদে সব বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে কমিশন। শতাংশের হিসাবে ক্ষমতাসীন দলটির দাবি বাস্তবায়নের হার ৯১ দশমিক ৬৬ ভাগ।

২০১৭ সালের নির্বাচনি সংলাপের চিত্র বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।




জিয়ার প্রতি এত আক্রোশ কেন?


মিনার রশিদ 



মিনার রশিদ 

বুধবার, মে ৩০, দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কারাবন্দি দলীয় চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব যা জানিয়েছেন তা সত্যিই দু:খ জনক । পরিত্যক্ত কারাগারের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানির অভাব, গুমোট আবহাওয়া ও নিয়মিত বিদ্যুৎহীনতার কারণে দেশনেত্রীর শ্বাসকষ্ট ও জ্বর লেগেই আছে। প্রতি রাত্রে তার জ্বর আসছে। এটা যে কোনো সুস্থ মানুষের জন্য অত্যন্ত এলার্মিং। জ্বরটা যাচ্ছে না।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া ও তার পরিবারের ওপর অবৈধ সরকারের আক্রোশ এত তীব্র কেন? এই প্রশ্নটি প্রায়শই মনের মধ্যে উদয় হয় ।

উত্তর বোধহয় একটাই । শহীদ জিয়া এবং তাঁর পরিবারটি আধিপত্যবাদ ও তাদের এদেশীয় লেন্দুপ দর্জিদের জন্যে সত্যিকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে পড়েছে । এই দেশটিকে সিকিম বানানোর পথে শহীদ জিয়ার স্মৃতি ও রেখে যাওয়া পরিবারটিই প্রধান বাঁধা ।

আজ ৩০ শে মে । আজ থেকে ৩৭ বছর আগে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নেন জিয়া । কিন্তু জীবনের এই সময়টুকুতে যে কীর্তি রেখে গেছেন তা সত্যি বিস্ময়কর ।

তাঁর জীবন ও কর্ম একটু অধ্যয়ন করলেই সরকারের গায়ের জ্বালা উপলব্ধি করতে সহজ হবে ।

ইতিহাসের বাকে যেখানেই অন্যদের ব্যর্থতা ফুটে উঠে - সেখানেই তাঁর সফলতা জ্বল জ্বল করে ওঠে । স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে নভেম্বরের সিপাহী জনতার বিপ্লব - সব জায়গাতেই এই ফ্যানোমেনাটি স্পষ্ট হয়ে পড়ে। 

এদেশে রাজনীতি মানেই ছিল রাজধানীতে বসে বাঘ ভাল্লুক মারার গলাবাজি বা চাপা বাজি । এই চাপাবাজদের জব্দ করতেই তিনি বলেছিলেন, I will make the politics difficult for the politicians। তিনি করেছিলেনও তাই । একজন লোক জোরে হাঁটছেন, পাশে সবাই দৌড়াচ্ছেন । বিভিন্ন আর্কাইভে শহীদ জিয়ার যতগুলো ভিডিও দেখা যায় প্রায় সব জায়গাতেই এই দৃশ্যটি চোখে পড়ে । জিয়া অলস বসে কবিতা আবৃত্তি করছেন কিংবা বসে বসে সিগারেটে সুখ টান দিচ্ছেন- এমন ছবি কোথাও দেখা যায় না । জিয়া মানেই গতি, জিয়া মানেই সামনে এগিয়ে যাওয়া । তার ছবি সে কথাই বলে ।

যে সামরিক শাসন নিয়ে তাকে দোষারূপ করা হয় - তা জারি করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খোন্দকার মোশতাক আহমেদ । তিনি বরং দেড় বছরের মাথায় সেই সামরিক শাসন তুলে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । আজীবন গণতন্ত্রের জন্যে সংগ্রাম করা এক নেতার হাত দিয়ে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয় । অন্যদিকে এক জেনারেলের হাত দিয়ে সেই গণতন্ত্র মুক্তি পায় । এটাও রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের কাছে এক চরম বিষ্ময়ের ব্যাপার!

হেনরি কিসিন্জার এই দেশটিকে ৭৪ সালে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে ঠাট্টা করেছিলেন । শহীদ জিয়া সেই তলাবিহীন ঝুড়িকে কয়েক বছরের মধ্যেই খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে তুলেছিলেন । ৭৫ এর পর এক বছরের মধ্যেই খাদ্যের দাম অর্ধেকে নামিয়ে এনেছিলেন । যে রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল করছে তার শুরুটাও তিনিই করে দিয়ে গেছেন । 

আজকে প্রতিটা ক্ষেত্রে যে সফলতা তার প্রায় প্রতিটির গোড়াপত্তন তিনি করে গেছেন । এমনকি বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তাঁর হাত দিয়েই শুরু হয় । আজকের ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থানে নিয়ে আসার পেছনে এই প্রতিষ্ঠানের অবদান অনস্বীকার্য । 

তিনি খাল কাটা কর্মসূচী শুরু করেন । নদী খনন ও খাল কাটার মধ্যেই জাতির অস্তিত্ব নির্ভর করছে - সেই ম্যাসেজটিও তিনি রেখে গেছেন ।

তিনি SAARC এর স্বপ্নদ্রষ্টা । ইরাক - ইরান যুদ্ধ বন্ধের মধ্যস্ততাকারী। তাঁর সময়েই বাংলাদেশ নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পদ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয় জাপানকে টপকিয়ে । ইন্দো-চিন সামরিক কনফ্লিক্টে মালয়শিয়া-বাংলাদেশের যুক্ত ইশতেহার প্রকাশ করা হয় । যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, এবং চীন সফর করেন এবং চীন থেকে সেই সময়ে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা পান । তিনি যখন ভারতে সফরে যান তখন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাকে রিসিভ করেন । এসব ক্ষেত্রে তাঁর স্মার্টনেস বিশ্ব পরিসরে বিশেষ সম্মান নিয়ে আসে । 

ফিলিপিনস সফরের সময় তাঁর ছবি দিয়ে ধাতব মুদ্রা ছাপানো হয় । এই ধরণের কোনো সম্মান এদেশের অন্য কোনো সরকার প্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের কপালে জুটেছে কি না জানা নেই । যাদেরকে বিশ্ব নেতা বা নেত্রী বলে কান গরম করে ফেলা হয় তাদের এরকম ছবি খুব একটা দেখা যায় না । আমার এক বন্ধু শহীদ জিয়ার এমন একটি দুর্লভ ছবি পাঠিয়েছে । পাঠকদের সাথে সেটি শেয়ার করছি ।
তিনি স্বল্প সময়ে প্রশিক্ষিত এবং প্রফেশনাল সামরিক বাহিনী গড়ে তুলেন। বামপন্থীদের চরম হঠকারী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা তিনিই ফিরিয়ে আনেন । তাঁর এই কন্ট্রিবিউশন সেনাবাহিনী কোনোদিন ভুলতে পারবে না ।

একটি শেষ কথা । একজন মানুষ দশটি ভালো কাজ করলে একটি ভুল করতেই পারে । কারণ তিনি দোষে গুণে মানুষ ছিলেন , ফেরেশতা ছিলেন না । তবে শাসক শ্রেণীকে সমালোচনা করার এই সুযোগটি এই দেশের মানুষকে তিনিই করে দিয়ে গেছেন । এটা কোনো চাটুকারী দাবী নয় - সাপোর্টিং ডকুমেন্ট মজুদ আছে । 

বিরোধী দল হিসাবে আওয়ামী লীগকে পুনর্জীবন- সেটাও শহীদ জিয়াই করে দিয়ে গেছেন । তাদের নেত্রীকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন । এর পুরস্কার হিসাবে অবশ্য কয়েক দিন পরেই তাকে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে! 

দেশের মানুষ তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানটির এই আত্মত্যাগকে শাহাদত হিসাবে গণ্য করে। পরম করুণাময় যেন দেশের মানুষের মনের এই আকুতিটিকে গ্রহন করেন, তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করেন । আমিন ।

  • লেখক পলিটিক্যাল এনালিস্ট ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।