Search

Thursday, January 3, 2019

লক্ষ্মীপুরে পুলিশের ওপর যুবলীগের হামলা, ১০ যুবলীগ নেতা আটক

লক্ষ্মীপুরে আটিয়াতলীতে লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমানকে কুপিয়ে আহতের জের ধরে সৃষ্ট ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এতে পুলিশ সদস্য সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছে। ঘটনায় সংগঠনটির ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।

জানা যায়, আজ সকালে পূর্বশত্রুতার জের ধরে দেলোয়ার হোসেন নামে এক যুবক লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমানকে কুপিয়ে আহত করে। কিছুক্ষণ পর দেলোয়ার হোসেনকেও পিটিয়ে কুপিয়ে আহত করে পুলিশে খবর দেয় ফজলুর রহমানের লোকজন পরে পুলিশ দুজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে দুপুরে হাসপাতালে ফজলুর রহমানকে দেখতে আসে যুবলীগ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে দেলোয়ার হোসেনের ওপর হামলা করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর হামলা করে তারা। নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়

এতে সদর থানার এসআই আবদুল আলীম, এএসআই গিয়াস উদ্দিন, পুলিশ সদস্য নয়ন মেহেদী হাসানসহ পুলিশ, সাংবাদিক মীর ফরহাদ হোসেন সুমন, জেলা যুবলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপু, সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা জেলা পরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমানসহ ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে যুবলীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান,রুপম হাওলাদার ইকবাল হোসেন হিমলক্বারীসহ  ১০ যুবলীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে।

হাসপাতাল, পুলিশ যুবলীগ সুত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আঠিয়াতলী গ্রামের যুবক দেলোয়ার হোসেন স্থানীয় লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমানকে হত্যার চেষ্টা মামলায় মঙ্গলবার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় ফেরেন। বুধবার সকালে সে একটি ছোরা নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানের ওপর হামলা চালায় দেলোয়ার হোসেন। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ আহত দুজনকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

খবর পেয়ে শহরের যুবলীগ নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে যান। সময় দেলোয়ারের ওপর হামলার চেষ্টা করেন তারা। পুলিশ তাদের বাধা দিলে এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। সময় আহত হন পুলিশ কর্মকর্তা এস আই আব্দুল আলীম, এএসআই গিয়াস উদ্দিন, সদস্য নয়ন, মেহেদী, সাংবাদিক মীর ফরহাদ হোসেন সুমন, জেলা যুবলীগ সভাপতি সালাহ উদ্দিন টিপু, সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা জেলা পরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমানসহ ১০ জন।

পরে হাসপাতালে পুলিশ শহরে অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলা (পশ্চিম) যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক জেলা পরিষদের সদস্য মাহাবুবুর রহমান, সদর পূর্ব যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক রুপম হাওলাদার, পৌর যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক ইকবাল হোসেন হিমলক্বারী, যুবলীগ নেতা আজগর হোসেন, মিজানুর রহমান মোহাম্মদ উল্যাহসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০ টি মটরসাইকেল জব্দ করে নিয়ে যায়।

এদিকে জেলা যুবলীগের সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাউদ্দিন টিপু হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমিসহ ১০জন নেতাকর্মী আহত হয়। সামান্য ভূল বুঝাবুঝিতে নেতাকর্মীদের আটক করে নিয়ে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আসম মাহাতাব উদ্দিন জানান, পূর্বশত্রুতায় আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষ দেলোয়ার হোসেন। দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনণ করতে গেলে পাল্টা হামলার শিকার হয় পুলিশ। এতে পুলিশ আহত হয়। হাসপাতাল শহরের বিভিন্নস স্থানে অভিযোন চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে হাসপাতাল শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি 
Courtesy: Manabzamin Jan 02, 2019

একটি বিতর্কিত নির্বাচন ও বাংলাদেশি রাজনীতির বিপজ্জনক নবযুগ

মানবজমিন ডেস্ক 
(সিএনএন- প্রকাশিত নিবন্ধের ভাবানুবাদ। নিবন্ধটি লিখেছেন মাইকেল কুগেলম্যান।

চট্টগ্রামে ভোটের আগে ব্যালট বাক্স ভরা পেলেন বিবিসি'র সাংবাদিক





নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে গত ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের সরকার পুনঃনির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের মতে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট ৩০০ আসনের মধ্যে বিস্ময়করভাবে ২৮৮টি আসনে জিতেছে। প্রত্যাশিতভাবেই বিরোধী দলগুলো ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে।

তিক্ত সহিংসতাপূর্ণ পক্ষপাতের কারণে বাংলাদেশের রাজনীতি ইতিমধ্যেই বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। বিতর্কিত নির্বাচনের ফল সে রাজনীতিকে নতুন আরেকটি বিপজ্জনক যুগে ঠেলে দিতে পারে। বিরোধীদের ক্ষোভ দেখানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে। আওয়ামী লীগ কয়েক বছর ধরেই বিরোধীদের দুর্বল করে দেয়ার পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের দমন-পীড়নের অন্যতম উপায় হলো ঢালাও গ্রেপ্তার
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন শীর্ষ বিরোধী নেতা জেলে রয়েছেন। এতে দুর্বল হয়ে পড়া প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন তার আগের সত্তার প্রতিচ্ছায়ায় পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্মম রাজনৈতিক দমন-পীড়ন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ধারণাকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করেছে।

এসব দমন-পীড়নকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি নতুন জোটকে নিয়ে প্রচারণা চালায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এটা ভাবা কঠিন যে, সন্দেহজনকভাবে ভারসাম্যহীন একটি নির্বাচনী ফল নিয়ে বিরোধী দল চুপ করে বসে থাকবে। আওয়ামী লীগের বিস্ময়কর বিজয় নিয়ে বিরেীধদলসহ অন্য সমালোচকরা বলছেন, এটাইলেকশননা, বরং এটাসিলেকশন আর যারা সরকারের কঠোর আইন কৌশলকে সমর্থন করেন, তারা সাফাই গাইছেন যে, এটা ধর্মীয় কট্টরপন্থার বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যের বিজয়। এতে অবদান রেখেছে দেশের আকর্ষণীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি। যদিও আওয়ামী লীগ তাদের ভোটব্যাংক বৃদ্ধি করার জন্য ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধেছে। এর মধ্যে হেফাজতে ইসলাম অন্যতম। এটি দেশের সবচেয় বড় ইসলামী সংগঠন

প্রকৃতপক্ষে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকরা সরকারের কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা খারাপ মানবাধিকার রেকর্ডকে এড়িয়ে চলতে চান। কেননা তারা মনে করেন, দল তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কিছুর যোগান দিচ্ছে। আর এটাই তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ধরনের মানুষরা সরকারের কর্তৃত্ববাদী নীতিকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। 

আয়ের অসমতাসহ কয়েকটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উদ্বেগজনক হওয়ার পরেও তা শক্তিশালী জিডিপি প্রবৃদ্ধির নিচে চাপা পড়েছে। আর এসব ইস্যুতে আওয়ামী লীগের কর্মকা-ের সমালোচনা দলটির সাধারণ সমর্থকদেরকে প্রভাবিত করে না। 

এটা বলা যায় না যে, আওয়ামী লীগ ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি করেনি। বিপরীতে, এটা বিশ্বাস করা যায় না যে, কোনো দল পার্লামেন্টে ৯৫ শতাংশেরও বেশি আসন পেতে পারে। তা যত জনপ্রিয়তাই থাকুক না কেন। বরং লক্ষণীয় বিষয় হলো, আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনসমর্থন আছে। ভোট পাওয়ার জন্য বা সংকটের সময়ে দলটি এর ওপর নির্ভর করতে পারে।

এদিকে, বিরোধীদের নতুন নির্বাচনের দাবি প্রত্যাশিতভাবেই নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান করেছে। বাস্তবে, অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো ছাড়া বিরোধীদের হাতে ক্ষোভ প্রকাশের উপায় খুবই কম। বিএনপি এর মিত্রদের রাজপথে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রতিবাদের সামর্থ্যরে অভাব রয়েছে। যা তাদের দুর্বল অবস্থাকে ফুটিয়ে তুলেছে। বিরোধীজোটের খুব কম সংখ্যক নেতাই ক্ষমতাসীন দলের এমন একতরফা বিজয় প্রত্যাশা করেছেন। বিরোধীদের মধ্যকার এই ক্ষোভ থেকে এখনো বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা সহিংসও হয়ে উঠতে পারে। ধরনের বিক্ষোভ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা উস্কে দিতে পারে।

প্রশ্নবিদ্ধভাবে ক্ষমতাসীন দল আরো পাঁচবছর ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ এখন একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার খুব নিকটে রয়েছে। ভবিষ্যতে  শক্তিশালী ক্ষমতাসীন দল গুরুত্বহীন বিরোধীদলের মধ্যে যে কোনো ধরনের সহাবস্থান কল্পনা করা খুবই কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে কোনো সমঝোতার পরিবেশও তৈরি হয় না।

অবস্থায় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অস্পষ্ট। একদিকে, জনজীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে উন্নয়ন জোরদার করতে বাংলাদেশ তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে, নির্বাচনী বিজয়ে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রাখতে পারে। যতদিন পর্যন্ত দলটি মনে না করবে যে, তাদের এই দমন-পীড়ন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, বিনিয়োগকারীদের বাধাগ্রস্ত করছে, ততদিন দলটি তাদের এই কর্মকা- চালিয়ে যাবে। বিরোধীরা দুর্বল অবস্থায় যতটুকু সম্ভব মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইবে। ক্রমবর্ধমান এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ জামায়াতে ইসলামীর মতো কট্টরপন্থি দলগুলোকে উগ্রপন্থার দিকে উস্কে দিতে পারে।

আরো ব্যাপকভাবে বলতে গেলে, বাংলাদেশের তরুণরা আশঙ্কাজনকভাবে গণতন্ত্রের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে পারে। যেভাবেই বিশ্লেষণ করা হোক না কেন, বাংলাদেশের সামনে সহিংস উদ্বেগের দিন অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ-ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি, ভাঙচুর

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আওয়ামী লীগের দুই অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সময়অ তাদের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের কাছে সংঘর্ষ হয়। শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, বাজারের কাছে একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাইনবোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে।

একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মীদের ধাওয়া দেয়। পরে তারা পালিয়ে যায়।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেনছাত্রলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ঘটনার কিছুক্ষণ পরই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায় 
Courtesy: Prothom Alo Jan 03, 3029