ড. আবদুল লতিফ মাসুম / নয়া দিগন্ত
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে দৃশ্যমান হবে, দেশটি লুটপাটের প্রান্তসীমায় উপনীত হয়েছে। অর্থনীতির যেসব খাত রয়েছে, যেমন - উন্নয়ন, ব্যাংক, শিল্প ব্যবস্থাপনা, আমদানি ও রফতানি ইত্যাদি খাতগুলোয় শাসক দলের দুর্নীতি, অনিয়ম ও অনাচার একধরনের ধস নামিয়েছে। ক্ষমতাসীন লোকেরা অনৈতিক ও বেআইনিভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে একেক জন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্যবসায়ী শ্রেণী। রাজনীতিতে ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক প্রাধান্য এতটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, লোকজন পার্লামেন্টকে ‘কোটিপতিদের ক্লাব’ বলে সমালোচনা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ব্যাংক আইনের সংশোধনী প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘অর্থশক্তির ক্ষমতা যে রাষ্ট্র বা রাজনৈতিক শক্তিকে অতিক্রম করে গেছে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে তা প্রমাণিত হলো’। মূলত সামগ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও কথাটি প্রযোজ্য। আপাতত ব্যাংক লুটপাটের কাহিনীই পত্রস্থ হলো।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক
সম্প্রতি একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শোচনীয় অবস্থা ফুটে উঠেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে রাষ্ট্রীয় পাঁচটি শীর্ষ ব্যাংকের মূলধন উধাও হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো লাভ তো দূরের কথা সরকারের ব্যাংক খাতের লোকসান গুনতে গুনতে এখন মূলধনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ব্যাংকগুলো নিজের মূলধন তো হারিয়েছেই, উপরন্তু সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতিতে পড়েছে। ব্যবসায়ের পরিবর্তে এসব ব্যাংক এখন মূলধন জোগান দিতেই চিন্তিত। ইতোমধ্যে মূলধন ঘাটতি মেটাতে সরকারের কাছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। ঘাটটিতে থাকায় এসব ব্যাংক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসায় পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়েছে। ব্যাংক পাঁচটি হচ্ছে - সোনালী, রূপালী, বেসিক, কৃষি এবং রাশজাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। এর মধ্যে সোনালী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংক ঋণের মান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিধিব্যবস্থা বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ও দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের মূলধন পূরণের প্রসঙ্গে জানা যায়, ক্ষমতাসীনদের বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি ও খেলাপি ঋণ আদায় না করতে পারায়ই ব্যাংকগুলোর মূলধনের ঘাটতি বেড়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১১-২০১৩ সালের মধ্যে সোনালী, জনতা ও বেসিক ব্যাংক থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা বেহাত হয়েছে। এর বাইরে রূপালী, অগ্রণী ব্যাংকসহ বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর দুর্নীতির তথ্যও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন তদন্তে উঠে আসে।
ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র
অতি সম্প্রতি, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯২ সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রচলিত নিয়ম-রীতি, আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে এ সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র কায়েম হতে যাচ্ছে। নতুন নিয়মে একই পরিবারের চারজন ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন। পরিচালকেরা ব্যাংকে থাকতে পারবেন টানা ৯ বছর। মূলত প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সুযোগ দিতেই এভাবে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হলো। বর্তমান আইনে অনেকেরই পরিচালক থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে আসছিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাংক পরিচালকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করল সরকার। ব্যাংক অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এর মাধ্যমে বেসরকারি ব্যাংকে অবাধ লুটপাটের দরজা খুলে দেয়া হলো। এই সিদ্ধান্ত এটাই প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে লুটপাটের রাজত্ব কায়েমের জন্যই আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। বাধা-বন্ধনহীন ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাবে অনেক। বিশৃঙ্খল হবে পুরো ব্যাংক খাত। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে অবশ্যই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, সরকারি দলের লোকজন সব ব্যাংক দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে দেশে বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা ৪০টি। এসব ব্যাংকের উদ্যোক্তারা মূলধনের জোগান দিয়েছেন ১৬ হাজার কোটি টাকা। এসব ব্যাংকে এখন আমানতের পরিমাণ ছয় লাখ কোটি টাকা। আমানতের তুলনায় উদ্যোক্তা পরিচালকদের মূলধন মাত্র আড়াই শতাংশের চেয়ে কিছু বেশি, অথচ তারাই এখন ব্যাংকের মালিক-মোখতার সেজে বসেছেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ সালে প্রণীত হয়। এটি সংশোধিত হয় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে। ওই আইন অনুযায়ী চলতি বছরেই বেশির ভাগ পরিচালকের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। এ কারণে ২০১৬ সালের মধ্যভাগ থেকে ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক-বিএবি, সংশ্লিষ্ট আইনের বেশ কিছু ধারা পরিবর্তনের দাবি করে আসছিল। এখন তাদের দাবিদাওয়া অনুযায়ী ব্যাংক ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে।
লাগামহীন খেলাপি ঋণ
ব্যাংক ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকার এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের লুটপাটের রাজত্বের আরেকটি বড় প্রমাণ ঋণ নিতে নিতে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে ফেলা। এ বছর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৭৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এক বছরেই ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের লাগাম কোনোভাবেই টানতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ সুবিধা দিয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ দীর্ঘ মেয়াদে পুনর্গঠন করা হয়েছে। একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যাপ্ত অর্থ জমা ছাড়াই ঋণ পুনঃতফসিল করে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পরেও গত মার্চ ২০১৭ শেষে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। ব্যাংকের মোট ঋণের এটি ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। এ বছরেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এ হিসাবের বাইরে আরো ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। এই অবলোপনের তথ্য যোগ করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে এক লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। এ পরিসংখ্যানটি যেকোনো মানুষকে বিচলিত করবে। ব্যাংক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি ব্যাংকগুলো থেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ নেয়া হচ্ছে। অপর দিকে, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকেরা নিজেদের মধ্যে ঋণ দেয়া-নেয়া করছেন। যে উদ্দেশ্যে ঋণ নেয়া হচ্ছে, তার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। জনপ্রিয় একটি দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ঋণের অর্থ পাচারও হচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করা ব্যবসায়ীরা ঠিক করছেন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন পদে কারা আসবেন। প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয় যে, এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এর ফলে ক্রমেই খেলাপি ঋণের ভয়াবহতা বেরিয়ে আসছে। সাধারণ মানুষ দেখতে পাচ্ছে, অর্থঋণ ও দেউলিয়া আদালতের মাধ্যমে ঋণখেলাপিদের কোনো বিচার হচ্ছে না।
লুটপাটের রাজত্ব
উপরিউল্লিখিত প্রতিবেদনগুলোর আলোকে বলা যায়, দেশের বেশির ভাগ অর্থনৈতিক খাত লুটপাটের অবাধ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এর ফলে দেশের রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ধ্বংসের পথে। এর আগে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থা নামের দুটো বিশেষায়িত ব্যাংক ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংস করা হয়েছে সবচেয়ে ভালো ব্যাংক হিসেবে পরিচিত বেসিক ব্যাংককে। অর্থনীতিবিদ শওকত হোসেন মাসুম এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন, একের পর এক সরকারি ব্যাংক ধ্বংসের জন্য সরকার নিজেই দায়ী। সরকার এসব ব্যাংককে জনগণের সেবা দেয়ার জন্য নয় বরং, সমর্থক এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ধনী ও নব্য ধনীদের সুবিধা দেয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে রেখেছে। এ কাজে যারা সহায়তা দিতে পারবেন তাদেরই উচ্চপদে বসানো হয়েছে। এ কারণেই এসব ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কেউ কেউ ছয় বছরের বেশি সময় ধরে এমডি থেকে যান। সরকারি ব্যাংকগুলোতে পরিচালনা বোর্ড নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রেও কাজ করে রাজনৈতিক বিবেচনা। বোর্ডে স্থান পান দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ব্যাংকের এসব বোর্ড চেয়ারম্যান ও পরিচালকেরাও অনিয়মের সহায়তাকারী ও দর্শক। প্রতিবেদক উদাহরণ দিয়ে বলেন, সরকারি মালিকানায় থেকেও একসময় বেসিক ব্যাংক শিল্প সচিবের নেতৃত্বে একটি ভিন্ন ব্যবস্থায় চলত। ২০০৯ সালে সেখানেও চেয়ারম্যান করা হয় জাতীয় পার্টির একজন মধ্যম সারির নেতাকে। তার নেতৃত্বে ব্যাপক লুটপাটের কারণে বেসিক ব্যাংক এখন মৃত প্রায়। উল্লেখ্য, সব ব্যাংকের পরিচালনা পদে আওয়ামী লীগের নেতা, পাতি নেতাদের বসিয়ে দেয়া হয়। জনাব শওকত তার প্রতিবেদনে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের এমডি হিসেবে একনাগাড়ে ছয় বছর থাকার উদাহরণ উল্লেখ করেন। ওই কর্তাব্যক্তির অন্যায়-অনিয়মের অনেক প্রতিবেদন জাতীয় দৈনিকগুলোতে ছাপা হওয়া সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। হাস্যকর হলেও সত্য, মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র এক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক লোক দেখানো পদক্ষেপ হিসেবে ওই ব্যক্তিকে অপসারণ করে। পরে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পলাতক থাকেন। তিনি এতই ক্ষমতাসীন যে, জামিন নিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেছেন বলে খবর রয়েছে। প্রধান রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সাবেক এমডিও দেশ ছেড়েছেন বলে খবর বেরিয়েছে। উল্লেখ্য, বেসিক ব্যাংকের সাবেক এমডিও পলাতক এবং দেশ ছাড়া হয়েছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক, জনতা ব্যাংকের বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ বেশ কিছু কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১৫ হাজার কোটি টাকার অর্থ সরকারি ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সময়ে সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে। এ পর্যন্ত এ দুষ্কর্মের জন্য কেউ শাস্তি পায়নি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, ওই সময় হলমার্ক কেলেঙ্কারির বিষয়ে হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনাকে অর্থমন্ত্রী ‘সামান্য কয়েকটি টাকা’ ধরনের মন্তব্য করে লোকজনকে বিস্মিত করেছিলেন। প্রতিবেদক শওকত হোসেন আরো তথ্য দেন যে, দুদকের মামলায় বেসিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ব্যক্তির নামই নেই। এসব ঘটনায় কি প্রমাণ হয়, বিচার বা দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সরকারের আগ্রহ কম। আরো বিস্ময়ের ব্যাপার যে, আত্মসাৎ করা পুরো অর্থই ব্যাংক থেকে তুলে নিতে দেয়া হয়। প্রতিবেদক যথার্থভাবেই উল্লেখ করেন, সব ব্যাংকই এখন তথ্যপ্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নত। সুতরাং কোন ব্যাংক হিসাব থেকে কী পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে, অর্থ কোথায় কোথায় গেছে, কার হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছে তা চাইলেই বের করা সম্ভব, কিন্তু এ কাজটি করা হয় না। এ কথা সহজেই বলা যায়, এসব লুটপাটের সাথে কারা জড়িত এবং পেছনে সহায়তাকারী কারা, তা খুঁজে বের করতে সরকারের কোনো সদিচ্ছা নেই। ঘটনাদৃষ্টে বলা যায়, দুদক ‘হুমকিসর্বস্ব’ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বিভিন্নভাবে গণমাধ্যম ও সিভিল সোসাইটি এসব লুটপাটের বিরুদ্ধে বাদ-প্রতিবাদ করলেও দুদকের তেমন সাড়া দৃশ্যমান হয়নি।
এটি গোটা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক, এভাবে বেপরোয়াভাবে দেশের সম্পদ, জনগণের অর্থ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রাথমিক দিনগুলোতেও একই দৃশ্য একই লুটপাটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তখনকার দিনে এটি প্রবাদ বাক্যের মতো ছিল যে, ‘ওলটপালট করে দে মা, লুটেপুটে খাই’। সময় বদলেছে। লুটপাটের সীমা-পরিসীমা বিস্তৃত হয়েছে অনেক। এখন উন্নয়ন থেকে চতুর্থ শ্রেণীর চাকরি সব জায়গাতেই বিনিয়োগ এবং লুটপাট। কথায় বলে, History repeats itself, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে। সময় বদলায় মানুষ বদলায় না। ‘হে মোর দুর্ভাগা দেশ’!
লেখক : প্রফেসর, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
mal55ju@yahoo.com
No comments:
Post a Comment