Search

Wednesday, May 29, 2024

এই নতজানু বাংলাদেশ শহীদ জিয়ার নয়

প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান 


বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে অগ্রসরমান পৃথিবীর এক অনন্য বিস্ময়ের নাম বাংলাদেশ। যার সূচনা হয়েছিলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সাড়ে ৭ কোটি বাংলাদেশির বিজয়োল্লাসের মধ্য দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছিলো। সেদিন স্বাধীনতার মহান ঘোষক জেনারেল জিয়া পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন সেই বিদ্রোহই বিপ্লবের পথকে শাণিত করে। উন্মোচিত করে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই সবুজ গালিচায় মোড়ানো সার্বভৌম ভূখন্ড। 


শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার বাগবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান দ্বিতীয়। ১৯৫২ সালে তিনি করাচি একাডেমি স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচিতে ডি. জে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৫৫ সালে সামরিক বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। করাচিতে দু'বছর চাকরি করার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। এছাড়াও তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ লাভ করেন। একই বছর তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে পদোন্নতি পেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জয়দেবপুরে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। 


১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা ও মানুষের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি শুরু করলে জিয়া দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধে পরাজিত হলে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও সেদিন দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। স্ত্রী- সন্তানদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জানা সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য নিজ নামে জেড ফোর্স গঠন করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। 


দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হলে লাল সবুজের পতাকায় শোভিত স্বাধীন দেশে তিনি পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে যান এবং ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে তিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শেখ মুজিবের সরকার জিয়াউর রহমানকে 'বীর উত্তম' খেতাবে ভূষিত করে। 


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ক্যু ও পাল্টা ক্যু‘র মাধ্যমে দেশ যখন চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকটে নিপতিত তখন জিয়াউর রহমান আবার দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। 


১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব ও সংহতির মধ্যদিয়ে তিনি গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্ত হয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পাদপীঠে আসীন করে। 


জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানিকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। 


জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরপরই উন্নয়ন অভিযাত্রায় সূচনা হয়। এতো অল্প সময়ে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন খুব সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে সম্ভব হয়নি। নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কিছু উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরা হলো- 


১) ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন সরকার সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। বাকশাল প্রবর্তনে রুষ্ঠ সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনে ব্যাকুল ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জিয়াউর রহমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রথা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। গণমাধ্যমের উপর থেকে সকল কালাকানুন প্রত্যাহার করে মুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেন। 


২) তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের কুশীলব কর্নেল তাহেরকে গ্রেফতার করেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর অস্তিত্ব রক্ষা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অগ্রনায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। 


৩) সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল-পিআইবি প্রতিষ্ঠা করেন। 


৪) ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পুরস্কার চালু অনুদান তহবিল গঠন, ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চলচ্চিত্রে প্রেসিডেন্ট পুরস্কারের সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ বছরই তিনি জাতীয় জনসংখ্যা পরিষদ এবং এর সাথে স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগে যুক্ত করেন। 


৫) ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সালে তিনি প্রবর্তন করেন একুশে পদক। 


৬) গুণী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে ১৯৭৭ সালে তিনি চালু করেন দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার 'স্বাধীনতা পদক' প্রবর্তন করেন। 


৭) শিল্প-সংস্কৃতিতে শিশুদের মেধা মননের বিকাশের লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই পুরোনো হাইকোর্ট ভবনের পশ্চিম পাশে তিনি শিশু একাডেমির নতুন ভবন উদ্বোধন করেন। 


৮) ১৯৭৮ সালে তিনি কলেরা (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতাল, দক্ষ নার্স তৈরির লক্ষ্যে ৫ জানুয়ারি ১৯৮১ সালে ঢাকার মহাখালীতে নার্সিং কলেজ এবং ১৯৮১ সালের ৩ এপ্রিল তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় নিপসম, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও ইপিআই প্রতিষ্ঠিত হয়। 


৯) তিনি ৫০ শয্যার ক্যান্সার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, পিজি হাসপাতালের সি-ব্লক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটসহ চিকিৎসকদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিএমএ ভবন-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 


১০) বাংলাদেশি জাতির মননের প্রতীক বাংলা একাডেমির উন্নয়নে বাংলা একাডেমি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮' জারি করেন। 


১১) ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান যশোরের উলশী-যদুনাথপুর খাল খননের মাধ্যমে খাল খনন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। 


১২) ১৯৭৭ সালের ২২ মে জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 


১৩) ১৯৭৯ সালের ৯ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৭৭) প্রদান করেন। জিয়ার আগ্রহেই ১৯৮১ সালের মার্চ-এপ্রিলে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। 


১৪) ১৯৭৮ সালে ৪টি বিভাগীয় শহরে ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। 


১৫) শিশুদের বিনোদনের জন্য ১৯৭৯ সালে রাজধানীর শাহবাগে তিনি প্রতিষ্ঠান করেন জাতীয় শিশু পার্ক। শিশুর স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও পরিচর্যার জন্য শ্যামলীতে একটি শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। 


১৬) ১৯৭৬ সালে শিশুদের সাংস্কৃতিক বিকাশ তরান্বিত করতে পুনরায় রিয়েলিটি টেলিভিশন প্রতিযোগিতা 'নতুন কুড়ি' চালু করেন। 


১৭) ১৯৮০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। 


১৮) দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্ক প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেন তিনি।


১৯) দেশে সকল ধর্মের মানুষের স্বীয় ধর্ম পালনের সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। 


২০) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। 


২১) পল্লী চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং প্রথম বছরেই ২৭ হাজার লোককে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। 


২২) ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৩) ১৯৮১ সালের ১৯ জানুয়ারি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বরেণ্য ব্যক্তিদের একটি বহর নিয়ে তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে হিযবুল বাহার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমি ধারণা সৃষ্টি হয়। 


২৪) তিনি বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় দফতর প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৫) বিদ্যুতের আলো সারাদেশে পৌঁছে দিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। 


২৬) তিনি জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৭) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপন অভিযান পরিচালনা করেন। 


২৮) ১৯৮০ সালের ২৬ ডিসেম্বর জিয়া বাংলাদেশি কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকায় ফরেন অ্যাফেয়ার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৯) ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পরিচিতি ও ভাবমুর্তি বৃদ্ধি করেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। 


৩০) নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৮ সালে প্রথম মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু করেন। 


৩১) বাংলাদেশে প্রথম মহিলা রাষ্ট্রদূত ও মহিলা অডিটর জেনারেল নিয়োগ করেন। 


৩২) মহিলা পুলিশ, আনসার ভিডিপি বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। কর্মজীবী মহিলাদের সুবিধার্থে তিনিই প্রথম কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করেন। 


৩৩) জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ১৫ থেকে ৫০-এ উন্নীত করেন। 


৩৪) ১৯৮০ সালে তিনি যৌতুক বিরোধী আইন প্রণয়ন করেন। ১৯৭৮ সালে কুয়েতে ৬০৭৮ জন শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যমে বিদেশে মানবসম্পদ পাঠানোর সূচনা করেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। 


৩৫) মুজিব আমলের মৃতপ্রায় কলকারখানাগুলো তিনি বেসরকারিকরণের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবীত করেন। 


৩৬) ১৯৭৭ সালে পোশাক কারখানা তৈরির মাধ্যমে তিনি দেশে তৈরি পোশাকখাতের সূচনা করেন। 


৩৭) ১৯৮১ সালে ঢাকায় জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। 


৩৮) প্রেসিডেন্ট জিয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ লাভ কর। 


৩৯) উপজাতীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে রাঙামাটিতে 'উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট এবং নেত্রকোনার বিরিশিরিতে উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। 


শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখন্ড দিয়েছিলেন। জাতি হিসেবে তিনি গড়ে দিয়েছিলেন আত্মমর্যাদার ভীত। যা তার স্বল্প সময়ের শাসনকালে বিশ্বব্যাপী প্রসংশিত ও অনুকরণীয় হয়। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এখন আমরা একটি উল্টো বাংলাদেশকে দেখছি। যে বাংলাদেশে নেই গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন। শৌর্য-বীর্য আর সমৃদ্ধির বাংলাদেশের পরিবর্তে এখন আমরা এক নতজানু, ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু বাংলাদেশকে দেখছি। পরাধীনতার এই বাংলাদেশ আমার না। এটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া সেই বাংলাদেশ নয়। 


লেখক: প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান  

মহাসচিব, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাব।

No comments:

Post a Comment