Search

Sunday, February 11, 2018

ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি - ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে কমিশন নিতেন মহিউদ্দিন আলমগীর



ঋণ দেওয়ার বিনিময়ে গ্রাহকের কাছ থেকে কমিশন নিয়েছেন বহুল আলোচিত ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী)।

এ ছাড়া এ দু’জন টাকার বিনিময়ে ব্যাংকে অনেক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশে দেওয়া ঋণ পরিশোধ না হলেও অভিনব কায়দায় পরিশোধ দেখানো হয়েছে। মাত্র তিনটি ঋণ হিসাব এবং এক বছরের নিয়োগের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে চাঞ্চল্যকর এসব অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের গুরুতর অনিয়মের মাধ্যমে তাদের নৈতিক স্খলন ঘটেছে। এ অনিয়ম বের হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় এখন এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের সব ঋণে বহির্নিরীক্ষক দিয়ে বিশেষ অডিট করাচ্ছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, নমুনা ভিত্তিতে মাত্র কয়েকটি ঋণ হিসাবের ওপর নিরীক্ষণ চালিয়ে ব্যাপক এ জালিয়াতির তথ্য পাওয়া গেছে। আমানতকারীদের অর্থ লোপাট, ব্যাংকটির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হওয়ায় অনিয়মের ধরন এবং জালিয়াতির মাধ্যমে কত টাকা তছরুপ হয়েছে, তা বের করা জরুরি। একই সঙ্গে ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত চিত্র নির্ণয় করা আবশ্যক। এমন পরিস্থিতিতে বহির্নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে তার অনুমোদন প্রক্রিয়া, ঋণের সদ্ব্যবহার, সহায়ক জামানত, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব যাচাইসহ সার্বিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে চিহ্নিত করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর মানি লন্ডারিং বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) এবং দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে।

ঋণ হিসাব থেকে দু’জনের নামে পে-অর্ডার ইস্যু
মহীউদ্দীন খান আলমগীরের একক সুপারিশে গত বছর তনুজ করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় ফারমার্স ব্যাংক। পরিচালনা পর্ষদ, ক্রেডিট কমিটি বা ইসি কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এ ঋণ দেওয়া হয়। গত বছরের ১৯ জুলাই গ্রাহকের একটি মেয়াদি হিসাব থেকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা তার চলতি হিসাবে স্থানান্তর হয়। একই দিন ৪২ লাখ টাকা নগদে উত্তোলন করেন ওই গ্রাহক। প্রথমে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামে ৮০ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার ইস্যু করে তনুজ করপোরেশন। পরে আবার বাতিল করে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামে ১৮ লাখ টাকা ও মাহাবুবুল হক চিশতীর নামে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। অবশিষ্ট ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা জনৈক জাকির হোসেন নামের অপর ব্যক্তির।

জাহান ট্রেডার্স নামে অপর একটি ঋণ হিসাব থেকে গত বছরের ১৯ মার্চ এক কোটি ৪০ লাখ টাকা আরেকটি চলতি হিসাবে স্থানান্তর হয়। এই ঋণও দেওয়া হয় মহীউদ্দীন খান আলমগীরের একক সুপারিশে। আর উভয় গ্রাহক নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও পুরো টাকা তুলেছেন নগদে। ফলে অবশিষ্ট টাকাও প্রকৃত খাতে ব্যবহার হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের এমপি মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সার্বিক অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের অডিট কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী বলেন, ‘পদত্যাগ করার পর চেয়ারম্যান এবং তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হচ্ছে। সুবিধাবাদীরা এটা করছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীর আজ চেয়ারম্যান থাকলে কেউ এসব বলতে পারত না।’ পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘পে-অর্ডারে কত আছে?’ সুনির্দিষ্ট অঙ্ক বলার পর তিনি বলেন, ‘এটা আমার স্মরণে নেই।’ তিনি বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান, যিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমানে এমপি। পদত্যাগ করার কথা পরিচালনা পর্ষদে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সামনে তার পদত্যাগপত্রে সই হয় কীভাবে। এটা আপনারা একটু দেখেন।’

লোকবল নিয়োগে অনিয়মের ক্ষেত্রে তার সংশ্নিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল চিশতী বলেন, ‘নিয়োগে তো কমিটি থাকে। নিয়োগ কমিটির ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কমিটি অনুমোদন দিলে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন।’ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে একটি পরীক্ষা নেওয়া হলেও নম্বরপত্র মূল্যায়ন না করে আর্থিক লেনদেনের বিপরীতে নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা সঠিক নয়। এসব অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অংশ।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, কোনো গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে মহীউদ্দীন খান আলমগীর, বাবুল চিশতী বা পর্ষদের কোনো সদস্যের অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়ে থাকলে সেটা ফৌজদারি অপরাধ। কেননা, ঋণগ্রহীতার অ্যাকাউন্ট থেকে পরিচালকের অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার কথা নয়। এই একটি কারণেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পর্ষদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ঘাপটি মেরে বসে থাকবেন। ব্যাংকের অবস্থা ভালো হলে আবার চেয়ারম্যান হবেন। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের শেয়ার বিক্রির ব্যবস্থা করা উচিত।

ফারমার্স ব্যাংকের বর্তমান এমডি মো. এহসান খসরু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে বহির্নিরীক্ষক দিয়ে ফাংশনাল অডিটের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ থাকা গুলশান ও মতিঝিল শাখার পরিদর্শন শেষ পর্যায়ে এসেছে। ব্যাংকটির ৫৬টি শাখার মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের ঋণ রয়েছে ১৫টির মতো শাখায়। রোববার থেকে বাকি শাখার পরিদর্শন শুরু হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে এসব পরিদর্শন শেষ করে পাঠানো সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণের মধ্যে অর্ধেকের বেশি রয়েছে এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের।

এ দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। এটা গোপনীয় বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বিএফআইইউ যা তথ্য পায়, তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেওয়া হয়। আর মানি লন্ডারিং হলে সেটা যাবে দুদকে।

তারল্য সংকট এবং বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে গত ২৭ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং চেয়ারম্যান পদ থেকে মহীউদ্দীন খান আলমগীর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একই দিন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও ব্যাংক থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর ১৯ ডিসেম্বর একেএম শামীমকে এমডি থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিতে চলমান তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন করে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

জনবল নিয়োগে অনিয়ম
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোকবল নিয়োগে অনিয়মের সঙ্গে তৎকালীন চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীর সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা দু’জন যোগসাজশ করে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, লোক নিয়োগে ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মও মানা হয়নি। প্রতিবেদনে শুধু ২০১৭ সালে লোকবল নিয়োগের একটি চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, আলোচ্য বছর ব্যাংকটিতে ৮৫ কর্মকর্তা নিয়োগ হয়। এর প্রতিটিতে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশ রয়েছে। এ ছাড়া অনেক প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্তের ওপর তার স্বাক্ষরসহ ‘পরিচালক জনাব চিশতী’ কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। এসব নিয়োগের জন্য ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে সংক্ষিপ্ত একটি পরীক্ষা নেওয়া হলেও এসব উত্তরপত্রে কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এসব নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।

ঋণ পরিশোধ না করেই সমন্বয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসটুআরএস করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফেরদৌস জবায়েত ইসলাম ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি। তার নামে গুলশান শাখায় সৃষ্ট চারটি হিসাবে ৪৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঋণ দেওয়া হয়েছে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশের ভিত্তিতে। এর মধ্যে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি মেয়াদি ঋণ ছাড়া অন্য ঋণের বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের কাছে কোনো তথ্যই নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল যাওয়ার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে এসব ঋণ সমন্বয় দেখানো হলেও বাস্তবে সমন্বয় হয়নি। যে কারণে বিপুল অঙ্কের এ অর্থ জমা দেখানো হলেও ওই দিন শাখায় ছিল মাত্র আড়াই লাখ টাকা। অভিনব কায়দায় শুধু ভাউচারের মারপ্যাঁচে ঋণ সমন্বয় দেখানো হয়েছে।

ঋণ সমন্বয়ে জালিয়াতির কৌশলটি ছিল এ রকম- গত ২৬ নভেম্বর চারজন গ্রাহকের আট কোটি ৬০ লাখ টাকার স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় তারা নগদায়ন করেন। তারা হলেন- জামালগঞ্জ শাখার গ্রাহক আলী আশরাফ, মিরপুরের পাইকপাড়া শাখার গ্রাহক শংকর নকরেক, কুমিল্লা শাখার রাকিবুল হাসান ও ধানুয়া শাখার মো. পলিন। একই দিন ব্যাংকটির টাঙ্গাইল শাখায় ফারাহ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, ফারিব অটো রাইস মিল ও আরসিএল প্লাস্টিকের হিসাবে নগদে ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা দেখানো হয়। এরপর ৬ ডিসেম্বর ফারাহ ট্রেডের হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী রাকিবুল হাসান। ফারিব অটো রাইস মিলের চলতি হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী আলী আশরাফ। আর আরসিএল প্লাস্টিকের হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন অপর স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী মো. পলিন। এই তিন প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব থেকে উত্তোলন করা ১৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এসটুআরএস করপোরেশনের মেয়াদি ঋণ সমন্বয় হয়েছে। এ ছাড়া নয় কোটি ১৫ লাখ টাকার অপর মেয়াদি ঋণটি টাঙ্গাইল শাখা থেকে গত ৫ ডিসেম্বর নগদ জমার মাধ্যমে সমন্বয় এবং ১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ঋণটি গত ৭ ডিসেম্বর বকশীগঞ্জ শাখায় নগদ জমার মাধ্যমে সমন্বয় দেখানো হয়েছে। এর বাইরে গ্রাহকের সাত কোটি ৬৫ লাখ টাকার ওভারড্রাফট ঋণে গত ২৯ সেপ্টেম্বরের পর কোনো লেনদেন নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরসিএল প্লাস্টিকের স্বত্বাধিকারী রাশেদুল হক চিশতী তখনকার অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীর ছেলে। এসটুআরএস ব্যাংকটির ১৫টি শাখার সাজসজ্জার কাজ করেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের টাকা যথাযথ ব্যবহার না করে অন্যত্র ব্যবহার হয়েছে। পরিদর্শন চলা অবস্থায় সে তথ্য গোপন করতে এ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।  

  • Courtesy: AmaderShomoy.Com/সমকাল

পুলিশি হেনস্তা বন্ধ করুন - সন্দেহের বশে গণ-আটক

সম্পাদকীয়


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা ও তাঁর কারাগারে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে উত্তেজনা ও অস্থিরতার আশঙ্কা সৃষ্টি হলো, তা এড়ানো সম্ভব হলে ভালো হতো। কেননা এটা নির্বাচনের বছর, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে গণতান্ত্রিক রীতিমাফিক একটা কার্যকর রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

খালেদা জিয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার ফলে নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, তা এখনই চূড়ান্ত নয়। তাঁর উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, রায়ের সার্টিফায়েড কপি পাওয়ার পর তাঁরা আপিল করবেন। সুতরাং, নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিএনপির আশান্বিত থাকার সুযোগ রয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, রায়টি তাদের কাছে যতই পক্ষপাতমূলক মনে হোক না কেন, তা এসেছে আইনি প্রক্রিয়ায় এবং এ রায়কে যদি তারা নাকচ বা ভুল প্রমাণিত করতে চায়, তবে তা করার সুযোগও রয়েছে একমাত্র আইনি প্রক্রিয়ায়।

এটা স্বস্তির বিষয় যে, রায় ঘোষণার দিন বা তার পরে বড় ধরনের কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। বিএনপির নেতারা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণে অতিমাত্রায় সতর্কতা লক্ষ করা গেছে এবং তার ফলে সাধারণ মানুষের চলাফেরায় অসুবিধার সৃষ্টি হলেও শারীরিক বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেনি। ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর আচরণও সংযত ছিল।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জনমনে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের যে আশঙ্কা-উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল, তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলে আপাতদৃষ্টিতে প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে তা সম্পূর্ণভাবে দূর হয়নি, একধরনের চাপা উদ্বেগ-আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। গত কদিনে বিএনপির প্রচুর সংখ্যক নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে, তাঁরা ক্ষুব্ধ। খালেদা জিয়ার কারাবাস তাঁদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তা ছাড়া তাঁরা আগে থেকেই সরকারি দমন-পীড়নের অভিযোগ করে আসছেন; নতুন পরিস্থিতিতে দলের কর্মকাণ্ডে আরও বাধাবিঘ্নের মুখোমুখি হলে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ-উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের অনুপস্থিতিতে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—এ দুই প্রধান রাজনৈতিক দল, যাদের একাধিকবার সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে, তাদের মধ্যে কোনো কার্যকর রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। বিএনপির চেয়ারপারসনের দণ্ডিত ও কারারুদ্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যকার দূরত্ব আরও বেড়ে গেল, বৈরিতা আরও তীব্র হলো। ফলে আপাত দৃশ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশের অন্তরালে ছাইচাপা আগুনের মতো উত্তেজনা ঘনীভূত হচ্ছে কি না—এই উদ্বেগ অস্বাভাবিক নয়।

কিন্তু আমরা শান্তি চাই। যে উদ্বেগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তার অবসান চাই। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে, এপ্রিলের শুরুতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। এই পরীক্ষার্থীদের এবং সার্বিকভাবে সব শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক লেখাপড়ার পরিবেশ অটুট রাখতে হলে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কর্মজীবী মানুষের পথেঘাটে চলাফেরা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চলার নিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে হবে। সে জন্য সব রাজনৈতিক দলকে সংযম-সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হোক নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। সরকারকে দমন–পীড়নের পথ পরিহার করতে হবে; সবার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

  • Courtesy: prothomAlo/Feb 11, 2018

‘এরশাদকে খুশি করতে সরকার বেগম জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের জেলখানায় নিয়েছে’ - মাহফুজ উল্লাহ



সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, এরশাদকে খুশি করতে বর্তমান সরকার একটা আপ্রাণ চেষ্টায় আছে। কারণ সামনের নির্বাচনে এরশাদ তাদের নির্ভরযোগ্য মিত্র হবে ১৪ দলীয় জোটের। এতে তাদের জয়লাভটা সহজ হবে। সেজন্য এরশাদকে খুশি করতে  বেগম জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের জেলখানায় নেয়া হয়েছে।

পারমিতা সাহা’র সঞ্চালনায় সময় টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান সম্পাদকীয়’তে ‘কারাগারে খালেদা ও রাজনীতি’ বিষয়ক আলোচনায় তিনি একথা বলেন। এসময় অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

মাহফুজ উল্লাহ বলেন, রাজনীতিতে যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের ক্ষমতা বেশি থাকে। তারা যেভাবে ইচ্ছা প্রতিপক্ষকে দমন করতে পারে। আর ভিন্নমত বা বিরোধী দলকে দমন করতে রাষ্ট্রের পুলিশ ও অন্যান্য যন্ত্রকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়। তা খুব দুঃখজনক। এভাবে একটা খারাপ প্রবণতা তৈরি করছি।

  • Courtesy: AmaderShomoy.Com

BNP holds demos amid police actions, arrests

The Bangladesh Nationalist Party would stage human chains at metropolitan cities, district headquarters and upazilas on Monday, sit-in for an hour on Tuesday and token hunger strike from 9:00am to 5:00pm on Wednesday for unconditional release of party chairperson Khaleda Zia.

The party announced the fresh programmes following countrywide demonstrations, protesting against February 8 verdcit that jailed Khaleda for five years, for Friday and Saturday that was marked by police actions and arrests. BNP senior joint secretary general Ruhul Kabir Rizvi announced the programmes at a briefing at the BNP central office.

The party held protest rallies and processions across the country for the second day on Saturday amid police actions and arrests.

Reports received from different districts said that police either foiled demonstrations or did not allow BNP leaders and activists them to bring out processions or confined demonstrations putting barricades. 

Police picked up BNP leaders and activists from the processions and rallies. Police also continued overnight raids on houses of BNP leaders and activists and arrested scores of them across the country.

BNP claimed that law enforcers had arrested over 4,200 leaders and activists, including 400 only on Saturday, across the country since January 30 centring the verdict delivered on February 8 by a special court jailing Khaleda for to five years and her eldest son Tarique Rahman and four others for 10 years.

Announcing the fresh programme, Rizvi said that the government could not weaken Khaleda’s mental strength detaining her and hatching further conspiracy against her. He claimed that the BNP chief would lead the party keeping mental strength intact for people wherever she stayed.

The party earlier announced country wide protests for Friday and Saturday immediately after the pronouncement of the verdict on February 8 in the Zia Orphanage Trust case, terming it politically motivated.

As part of the programme, senior BNP leaders, including standing committee member Mirza Abbas, vice-chairman Barkatullah Bulu and Khaleda’s adviser Zainul Abdin Farroque led a procession from Paltan at about 1:20pm.

As the procession of several thousand leaders, activists was passing by Fakhirerpul Panir Tank area crossing Dainik Bangla crossing, cops charged baton from behind the procession and dispersed them at about 1:30pm, witnesses said. BNP claimed that more than 40 leaders and activists, including Dhaka south city BNP vice-president Nabiullah, were picked up from the procession while over 50 were injured in police action. Paltan police station sub-inspector Sultana Akhter, however, confirmed arrest of 15.

Shahbagh police officials said that they arrested four in a case lodged with the police station on February 8 for attacking police while Khaleda’s motorcade was heading for Old Dhaka’s makeshift court. Official sources in Dhaka court said 10 accused in political cases were produced before the metropolitan magistrate courts on Saturday.

New Age correspondent in Sylhet, quoting police officials, reported that police arrested 25 BNP activists – 16 in the city and nine in different upazilas – in separate drives in 24 hours ending Saturday evening. In the afternoon, police foiled BNP procession in front of Bandar Bazar area in the city and arrested two.

In Comilla, police arrested four BNP and Chhatra Dal activists from Ponra Math under Debidwar while they were preparing to bring out a procession Saturday morning, said Debidwar police station officer-in-charge Mizanur Rahman.

In Netrokona, police foiled a procession of Mahila Dal at Moktarpara in the district town in the morning and detained five leaders and activists, including district convener Arifa Jesmin Nahin.

In Gaibandha, police arrested six activists of BNP and Jamaat at places early Saturday, said the district superintendent of police Mashruqur Rahman Khaled. 

New Age correspondent in Jessore, quoting Kotwali police officer-in-charge AKM Azmal Huda, reported that sub-inspector Babun Chandra Biswas on Friday night lodged a case with Kotwali police station accusing 32 BNP leaders and activists, including district general secretary Syed Saberul Huq Sabu, of ‘attempt to oust the democratic’ government.

New Age correspondent in Shariatpur reported that police arrested six BNP leaders and activists on the district court premises after they ended a procession.

New Age correspondent in Jhenaidah, quoting the district police superintendent Mijanur Rahaman, reported that 25 BNP leaders and activists were arrested at four upazilas early Saturday.

Barisal City BNP held a demonstration in front of its office near Ashwini Kumar Hall in the morning while Khulna city and district BNP also held separate demonstrations in front of the district and city BNP office at KD Ghosh Road.

Tangail district BNP demonstrated in front of Victoria Road district BNP office protesting Khaleda’s conviction, our correspondent in Tangail reported. In Bogra, police kept the district BNP demonstration within 150 yards in front the party office putting barricade at both ends.

  • Courtesy: new Age Feb 11, 2018

Khaleda in solitary confinement: Moudud


Five senior lawyers after visiting Bangladesh Nationalist Party chairperson Khaleda Zia at former Dhaka Central Jail on Saturday said that she was not given facilities of Division I she deserved in jail but was kept in ‘solitary confinement.’

‘She is treated as an ordinary prisoner,’ BNP standing committee member Moudud Ahmed told reporters after one hour meeting with Khaleda at the prison. 

He said that prison and intelligence officials were present during the meeting.

Five senior lawyers Moudud, BNP standing committee member Jamiruddin Sircar, BNP chief’s adviser Khondkar Mahbub Hossain, former attorney general AJ Mohammad Ali and Abdur Rezzaque Khan met Khaleda to discuss legal issues and get necessary authorisation for her appeal against the verdict that jailed her for five years on February 8 in Shaheed Ziaur Rahman Orphanage Trust case.

The lawyers reached the jail gate at about 3:00pm, waited until 4:25pm and then members from police and intelligence agencies escorted them to Khaleda’s facility. They came out of the jail at about 5:45pm.

Moudud said that Khaleda was kept at a broken and abandoned facility in the former prison, and her personal domestic help was not allowed to serve her. ‘Her domestic help was not allowed although she could not move alone,’ said Moudud, also former law minister.

He said that Khaleda was well though she was kept as a general prisoner despite deserving Division-I privileges in jail as per the revised Jail Code.

Moudud said that although the government claimed that Khaleda was given an assistant in jail but in reality she was kept alone and the food served to her were inedible. ‘She is not given the food prepared at home,’ he said.

Moudud alleged that the government deliberately kept Khaleda in solitary confinement simply to harass her. ‘It is against the constitution.’ ‘She cannot move alone as she had a major surgery in the knee. We will go to the High Court,’ he said.

Asked whether they had contacted the jail authorities to give Khaleda higher division facilities, Moudud said that there was no need to contact the authorities. ‘The law clearly says what would take place. Division facility is supposed to be given automatically,’ he said. ‘Actually the government is doing all these to irritate Khaleda,’ he said. 

Moudud said that they might file appeal against the trial court verdict if the copy of the verdict was available on Sunday. 

Khandkaer Mahbub Hossain and AJ Mohammad Ali told New Age that Khaleda’s moral was high comparing the past.

  • Courtesy: new Age Feb 11, 2018

Question leak becomes phenomenon

Maths question leaked too, 14 arrested so far



Question paper leak has emerged as a phenomenon of the ongoing Secondary School Certificate examinations as the mathematics multiple-choice question portion was allegedly leaked an hour and a half before the exams on Saturday morning.

Questions, at least the multiple-choice portion, have allegedly been leaked well before each day’s examination and 14 people, including five teachers, have so far been arrested since the secondary terminal exams began February 1. Examinees and their parents alleged that the mathematics multiple-choice question portion along with the solutions was available on Facebook at about 8:30am, while the three- hour exam began at 10:00am.


A student needs to answer multiple-choice questions for 30 out of 100 marks for the paper. The law enforcement agencies arrested three people, including a teacher, in Rajshahi, Sherpur and Gazipur on Saturday.

Sripur police station assistant sub-inspector Joynal Abedin said that a teacher, Amjad Hossain, was arrested Saturday morning just few minutes before the exam started for allegedly attempting to leak the question paper. ‘Amjad, headmaster of Dhonai Bepari High School at Sripur in Gazipur, was trying to pass the question paper,’ he said.

New Age correspondent in Rajshahi reported that Rajshahi City College student Rabia Islam Riya was arrested while she was solving the questions collecting the leaked question paper over her smart phone, said Boalia police station officer-in-charge Aman Ullah. 

In Sherpur, Solaiman Hossain was held for his alleged involvement in question leak, said Sherpur sadar police station officer in-charge Nazrul Islam. Police also filed cases against them under Public Examinations (Offences) Act, 1980.

In Sylhet, a youth, Dilwar Hossain, was arrested at about 9:30am after finding images of leaked questions on his smart phone, said Biman Bandar police station officer-in-charge Mosharraf Hossain.

Guardians and examinees alleged that earlier questions of English second paper, Bangla first and second papers and religion and moral education in the secondary terminal exam were leaked.

Affected examinees and guardians blasted the education ministry for its failure to stop the question papers being leaked. They said that the steps taken by the education ministry were mere eyewash and yielded no results.

Inter-education board controllers of examinations convener Tapan Kumar Sarkar said that they got an allegation of question leak but the match between the leaked and real question paper was not confirmed. ‘We are aware of the issue and trying to figure out the source of the question leakage’ he said.

Attending a programme as chief guest in Rajbari, state minister for technical and madrassah education Kazi Keramat Ali on Friday denied the allegation of question leak and said vested interests were trying to malign the government and the ministry as well by spreading rumours. 

The education ministry said that the coaching centres were kept shut during the secondary terminal exams and the examinees were asked to take their seats at the exam halls 30 minutes before the exams.

The government on February 4 formed a high-powered committee to monitor and investigate the allegations of question leak in the ongoing public exams. On the same day the education ministry announced a bounty of Tk 5 lakh for anyone helping in the identification of people involved in the question leak. The measures brought no visible results.

Guardians of several examinees in capital alleged that they had got several photographs of the mathematics multiple-choice questions. They said that they found uploaded pictures of set-B questions on Facebook groups ‘Psc Jsc Ssc Hsc Job Degree Honrs Nebondon Polytechnic Reall Out Question’ at 8:44am, ‘PSC • JSC • SSC • HSC Exam Helping Center’ at 9:00am and a Facebook messenger group ‘SSC Ganit 2018’ at 8:30am.

Allegations of question leaks in Primary Education Completion exams after Class-V, Junior School Certificate exams after Class-VIII, Secondary School Certificate exam after Class-X and Higher Secondary Certificate exam in 2017 had also surfaced ahead of the exams.

  • Courtesy: New Age/Feb 11, 2018

Saturday, February 10, 2018

ব্যাংক–শেয়ার লুটকারীদেরও বিচার হোক - সোহরাব হাসান


সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকায় সাধারণত যানজট বেশি হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে দেখি, রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। স্বল্পসংখ্যক বাস চলছে। প্রাইভেট গাড়ি আরও কম। রাস্তায় যত মানুষ, তার চেয়ে বেশি পুলিশ ও র‍্যাব সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন ফুটপাতে। মাঝেমধ্যে বিজিবির টহল গাড়ি আসছে, যাচ্ছে। আগের দিন সন্ধ্যা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শহরের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছিল। কিন্তু অফিসযাত্রী, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ, কারখানার শ্রমিক, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের তো বের হতেই হবে। বাস-রিকশা চলুক বা না চলুক। রায় নিয়ে রাস্তায়-অফিসে মানুষের মধ্যে যতটা কৌতূহল লক্ষ করেছি, তার চেয়ে বেশি উদ্বেগ দেখেছি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে।

খালেদা জিয়ার মামলার রায় আদালতের সীমা ছাড়িয়ে রাজপথে উত্তাপ ছড়িয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে বিরোধী দলের চেয়ে সরকারি দলের ভূমিকাই বেশি। অভিযুক্ত ব্যক্তি সব সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করবেন। কিন্তু রায়ের অনেক আগেই যদি ক্ষমতার মঞ্চ থেকে কাউকে ‘চোর’, ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে নিয়ত গালমন্দ করা হয়, তখন সেই বিচার নিয়ে  জনমনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

দুর্নীতির দায়ে আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়ার বিচার করেছে। বিএনপির আমলে বিদেশে পাচার হওয়া কিছু অর্থ ফেরতও এনেছে। কিন্তু যে এরশাদ গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে নয় বছর জবরদস্তি শাসন চালিয়ে দেশে-বিদেশে মহা দুর্নীতিবাজ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, সেই এরশাদকে ক্ষমতার অংশীদার করেছে আওয়ামী লীগ। রাজনীতির এক অদ্ভুত সংশ্লেষণ।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা। কারওয়ান বাজার থেকে প্রেসক্লাবে যেতে হাইকোর্টের দক্ষিণ মোড়ে সিরডাপের গা ঘেঁষে দেখা গেল সারি সারি যানবাহন। কোনোটি পুলিশের, কোনোটি র‌্যাব বা বিজিবির। সঙ্গে জলকামান। এ পথ দিয়েই খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়ার কথা। প্রেসক্লাবে থাকতেই খবর পেলাম, তিনি গুলশান থেকে রওনা হয়ে গিয়েছেন। সবাই নড়েচড়ে বসলেন। বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো লাইভ দেখাচ্ছে। কিন্তু খালেদা জিয়া জনসভায় ভাষণ দিলে কিংবা সংবাদ সম্মেলন করলে সেটি তারা লাইভ দেখাতে পারে না। এই হলো বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। সরকার যতটুকু চাইবে প্রচার করা যাবে, যেটুকু চাইবে না প্রচার করা যাবে না।

দুপুর ১২টা। পুলিশ নয়াপল্টনে বিএনপির অফিস কর্ডন করে রেখেছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা অফিসে ঢুকেছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অফিস থেকে হেঁটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে যোগ দেবেন। কিন্তু কোনো কর্মীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। একপর্যায়ে পুলিশ কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দিলে কয়েকজন সাংবাদিক আটকা পড়েন। পরে অবশ্য তাঁরা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।

অন্যদিকে গতকাল ধানমন্ডি ৩/এ সড়কে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর অফিসটি ছিল সরগরম। সকাল থেকে সেখানে দলের নেতা-কর্মীদের ভিড়। যাঁরা বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন, তাঁদের বাইরের অনেকেই সেখানে হাজির। সাত মসজিদ সড়কের পাশের ফুটপাতে সার বেঁধে বসে ছিলেন আওয়ামী যুব মহিলা লীগের একদল কর্মী। আর অফিসের সামনে পুরুষ কর্মীরা ইতস্তত ঘোরাফেরা করছেন। ভেতরে নেতারা টিভি সেটের সামনে বসে আছেন। ভাবলেশহীন। রায়ে কী হবে, তা যেন তাঁদের জানা।

মামলার রায় ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয়। বিএনপির নেতারা মনে করেন, এই রায় তাঁদের জন্য শাপেবর হবে। জিজ্ঞেস করি, কীভাবে? তাঁরা বললেন, উচ্চ আদালতে আপিল হলে খালেদা জামিন পাবেন। তিনিও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর মতো সারা দেশে নির্বাচনী প্রচার চালাবেন। এরপরও যদি তাঁকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটিই আন্দোলনের ইস্যু হবে। আর আওয়ামী লীগের নেতারা বললেন, মামলাটিকে রাজনৈতিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ সরকার এই মামলা করেনি। মামলা করেছে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার। জিজ্ঞেস করি, সেই সরকার তো আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধেও অনেক মামলা করেছিল। তাঁদের জবাব, প্রতিটি মামলাই আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। পরের প্রশ্ন ছিল, খালেদা জিয়া জেলে থাকলে আওয়ামী লীগের ভোট বাড়বে, না কমবে? এ প্রশ্নের সরাসরি উত্তর পাওয়া গেল না।

বেলা তিনটা। গুলিস্তানের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। তারপরও কিছু কিছু হকার পসরা সাজিয়ে বসেছেন। জিজ্ঞেস করি, বেচাকেনা কেমন। বললেন, রাস্তায় মানুষই নেই, বেচাকেনা হবে কী করে? তবে পাশের জন কৌতুক করে যোগ করলেন, ‘আমাদের আয় শুধু কমেনি। পুলিশের আয়ও কমেছে।’

প্রেসক্লাবের সামনে এসে দেখি একেবারে ভিন্ন চিত্র। মাসখানেক ধরে এখানে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অবস্থান নিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে শিক্ষকই ছিলেন বেশি। সর্বশেষ স্বাস্থ্যকর্মীরা আমরণ অনশন করেন। সরকার কৌশলে তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে। ভেতরে তখন সাংবাদিক বন্ধুরা তর্কে মশগুল। রায়ের পর খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না। কেউ বলছেন পারবেন, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না, তিনি অপরাধী। কেউ বলছেন, উচ্চ আদালত তাঁর শাস্তি স্থগিত রাখলেও তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। কেননা আইনের চোখে তিনি অপরাধী। উচ্চ আদালত অপরাধ স্থগিত করতে পারেন না। শাস্তি স্থগিত করতে পারেন। আইনমন্ত্রীও স্থির কিছু জানাতে পারলেন না। বললেন, এ বিষয়ে দুই ধরনের রায় আছে।

রাতে টিভিতে দেখলাম জাতীয় সংসদে খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে সরকার ও আধা সরকারদলীয় সাংসদেরা গলা ফাটিয়ে বলছেন, উচিত বিচার হয়েছে। জাতীয় পার্টির একজন সাংসদ বললেন, খালেদা জিয়া অন্যায়ভাবে তাঁদের নেতা এরশাদকে জেল খাটিয়েছেন। বিএনপিও তো এখন একই কথা বলছে। অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। আইনের প্রতি আইনপ্রণেতারা তখনই আস্থা রাখেন, যখন নিজের পক্ষে যায়।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা টাকা খালেদা জিয়া অন্য হিসাবে জমা করেছেন। বিএনপির সরকারের আমলে বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু কোনোটারই বিচার হয়নি। বিচার হলো শুধু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার। এর আগের বিএনপি ও আওয়ামী লীগের আমলের অনেক দুর্নীতির মামলা এখনো ঝুলে আছে।

১০ বছরেরও বেশি সময় খালেদা জিয়া ক্ষমতার বাইরে। এই সময়ে দেশে সুশাসন ও সুনীতির বন্যা বয়ে গেছে, বলা যাবে না। খালেদা জিয়ার আমলে যেমন দুর্নীতি ছিল, এখনো দুর্নীতি আছে। দুটি উদাহরণ দিই। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯১১ কোটি ডলার পাচার হয়েছে ২০১৪ সালে, টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী সে দেশের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

এসব তথ্য কি প্রমাণ করে, দেশে দুর্নীতি হয় না? দুর্নীতি হয়। কিন্তু দুর্নীতির কুশীলবেরা ধরা পড়েন না। ধরা পড়লেও বিচার হয় না। বিচার হলে ২০১০–এর শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতারা কীভাবে বাইরে থাকেন? বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারির নায়কেরা কীভাবে দাপট দেখান? এসব বড় বড় দুর্নীতির জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের কেশাগ্র স্পর্শ না করলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বাড়তেই থাকবে। ‘বাছাই করা বিচার’ দিয়ে সুশাসন বা সুবিচার কোনোটাই কায়েম করা যায় না।

খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের পর এবার সরকার ব্যাংক কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতা এবং বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের ধরুক। বিচার করুক। তারপরই না বলা যাবে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। অপরাধী শাস্তি পাবেই।

  •  সোহরাব হাসান/প্রথম আলোর


দেশে এখন বন্য আইন চলছে - মান্না


দেশে এখন বন্য আইন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। শুক্রবার রাজধানীতে প্রশ্নপত্র ফাঁস, শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন নিয়ে নাগরিক ছাত্র ঐক্য আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মান্না বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রয়োজন। কিন্তু সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়ে সেই পথে না হাঁটারই ইঙ্গিত দিয়েছে। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো সরকার আগে থেকেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনা মামলার রায় কী হবে, তা জানত।

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা উদ্ধৃত করে মান্না বলেন, ‘যারা দেশ থেকে হাজার কোটি টাকা পাচার করছে, তাদের পরিচয় প্রধানমন্ত্রী জানেন। অথচ তাদের শাস্তি আগে নিশ্চিত না করে তড়িঘড়ি করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই রায়ের উদ্দেশ্য সবারই জানা।’

মান্না বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, শান্তির পথে সবকিছু বিকশিত হোক, এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সেই পরিবেশ সবাই মিলে তৈরি করতে হবে। গায়ের জোরে হবে না।’

  • Courtesy: NTVnews/Feb 9, 2018

‘নিরপরাধ’ বেগম জিয়া কারাগারে - অলি আহমেদ


এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া অমূলক। যারা লুটপাট করেছে, তাদের খবর নেই, অথচ নিরপরাধ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে নেয়া হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় কী করে ১০ দিনে লেখা সম্ভব হয় এমন প্রশ্ন তুলেছেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কর্নেল অলি একটি অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্ন তুলেন।

কর্নেল অলি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা পরিকল্পিত। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী রায়ের আগেই তার জন্য আগেই কারাগারে জায়গা ধোয়ামুছার কাজ হয়েছে। আর ৬৩২ পৃষ্ঠার রায় মাত্র ১০ দিনে কীকরে লেখা সম্ভব? যারা লুটপাট করেছে, তাদের খবর নেই, অথচ নিরপরাধ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে নেয়া হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার বিষয়টি সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত। তাকে যে কারাগারে রাখা হয়েছে, সেটি অপরিচ্ছ্ন্ন। বিএনপি নেত্রীকে কারাগারে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের প্রতিবাদে বিএনপি যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাতে সমর্থন করেন এলডিপি চেয়ারম্যান।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন।

এছাড়াও একই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।


  • Courtesy: শীর্ষ নিউজ/জে Feb 10, 2018

শিক্ষার নৈরাজ্য দূর না হলে ভাষার নৈরাজ্যও দূর করা যাবে না - যতীন সরকার


৪২ বছর শিক্ষকতা করেছি আমি। লক্ষ্য করেছি, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গেই বলতে হয়, আমাদের শিক্ষিত লোকেরা, এমনকি বাংলা সাহিত্য নিয়ে যারা পড়ালেখা করেছেন, বড় বড় ডিগ্রি নিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা সবগুলো বাংলা অক্ষর চিনেন না। শুনতে খুবই খারাপ শোনাতে পারে, কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই এসব বলছি। আমাদের অর্থনীতির সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন গবেষক ও শিক্ষাবিদ যতীন সরকার।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সংযুক্ত অক্ষরের ব্যবহার, মাত্রার ব্যবহার সম্পর্কেও অনেক শিক্ষিত মানুষের ধারণা নেই। এই যখন অবস্থা তখন ভাষার ব্যবহারে যে কি নৈরাজ্য হবে, সে সম্পর্কে আর কিছু না বললেও চলে। ভাষার এই নৈরাজ্য হচ্ছে আমাদের মানসিক নৈরাজ্যেরই প্রতিফলন। ভাষা নৈরাজ্যের কারণ, ছেলেবেলা থেকেই শিশুদের যেভাবে বাংলা পড়ানোর দরকার, সেভাবে পড়ানো হয় না। যারা শিক্ষক, তারা একরকম না পড়েই শিক্ষক হয়ে যান! তাদের হাত ধরেই অজ্ঞতা বহুগুণ বাড়বে। এখন তাই হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভাষার সঠিক ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন একটা সঠিক, সচেতনতামূলক আন্দোলন। যারা লিখেন, তারা এবং গণমাধ্যম যদি এ ব্যাপারে যথাযথ ভূমিকা গ্রহণ করে তাহলে এর ইতিবাচক ফল আমরা পেতে পারি।

যতীন সরকার বলেন, সাংবাদিকেরা যদি সচেতন হন ভাষা ব্যবহার সম্পর্কে, তা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায়, সবাইকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য যদি একটা আন্দোলন  গড়ে তোলায় যায় তাহলে ভাষার সঠিক ব্যবহার সম্ভব। তা না হলে করতে না পারলে তা কখনো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বাংলা একাডেমির উপর সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বাংলা একাডেমি কিছু কিছু কাজ, তবে বাংলা একাডেমি সবকিছু করতে পারে না। এখানে দায়িত্বটা শিক্ষা বিভাগকে গ্রহণ করতে হবে সবচেয়ে বড় করে। এখানে আমরাও কেউ দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারি না। তবে আমাদের শিক্ষার নৈরাজ্য দূর না করতে পারলে ভাষার নৈরাজ্যও দূর হবে না।

  • Courtesy: AmadehShomoy.Com