Search

Thursday, February 22, 2018

Govt puts democracy into grave - Mirza Alamgir



Bangladesh Nationalist Party secretary general Mirza Fakhrul Islam Alamgir on Wednesday said the government has put democracy into grave by snatching people's all rights.

‘We on behalf of our Chairperson Khaleda Zia , paid tributes to language martyrs .We are unfortunate that we are observing the day at a time when democracy was put into grave destroying all democratic institutions and snatching people's all rights, including the voting one,’  he said while talking to reporters after placing wreath at the Central Shaeed Minar.

BNP central leaders, led by Mirza Fakhrul Islam Alamgir and its standing committee member Khandaker Mosharref Hossain, went to the Central Shaheed Minar around 11:30 am to pay tributes to the language martyrs.

Fakhrul demanded immediately release of Khaleda Zia from jail. He said they are observing the day with a broken heart and anger as their Chairperson was sent to jail in a graft case.

The BNP leader renewed his party's call to people for forging a national unity to restore democracy. ‘We hope we will be able to wage a movement uniting people to free democracy and our leader. We must wage a mass movement to oust the government and defeat it,’ he said.

Fakhrul said they will continue to put their efforts for forging a national unity until it is not created and the fascist government's fall is ensured.

  • Courtesy: new Age Feb 21, 2018

পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে ধর্ষণ


  • স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা এ ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ কিশোরীর পরিবারের
  • মামলায় পুলিশ কৌশলে ওই নেতার নাম বাদ দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে        



নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় পুলিশ পরিচয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে কিশোরীকে (১৬) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগের এক স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই নেতাসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ মামলার এজাহার থেকে তাঁকে (যুবলীগ নেতা) বাদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কিশোরীর স্বজনেরা। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

অভিযোগ ওঠা যুবলীগ নেতার নাম মজিবুর রহমান ওরফে শরীফ। তিনি উপজেলার নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কিশোরী তার পরিবারের সঙ্গে নোয়াখোলা ইউনিয়নের এয়াছিন বাজার এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকে। ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ পরিচয়ে পাঁচ-ছয়জন যুবক ওই বাড়িতে ঢোকেন। তাঁরা ওই ঘর থেকে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে যান। পরে ওই কিশোরীকে পাশের বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে বাড়ির সামনে ফেলে যান। 

কিশোরীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ওরফে শরীফসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। কিন্তু তিন দিন পর শরীফের নাম বাদ দিয়ে দুজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি রেকর্ড করে পুলিশ। এরপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এ অবস্থায় শরীফ ও আসামিরা তাঁদের বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতেও তাঁদের বাড়ির সামনে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

কিশোরীর বাবা বলেন, শরীফ ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় এলাকায় কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। এ ঘটনায় মেয়ে ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে দিয়ে দিন পার করছেন।

তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান শরীফ। গতকাল বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, তিনি ধর্ষণ বা হুমকি দেওয়া কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। স্থানীয়ভাবে যুবলীগের দুটি পক্ষ রয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় তাঁকে জড়ানোর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাত থাকতে পারে বলে তিনি সন্দেহ করছেন। 

উপজেলা যুবলীগের একাংশের আহ্বায়ক ও চাটখিল পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ উল্যাহ পাটোয়ারী বলেন, তদন্তে শরীফ যদি অপরাধী প্রমাণ হন, তাঁর বিচার হবে। যদিও একটি মহল এই মামলায় শরীফকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল আনোয়ার বলেন, ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ নিয়ে কিশোরী ও তার মা ৮ ফেব্রুয়ারি নয়, ১০ ফেব্রুয়ারি থানায় আসেন। ওই দিনই তাঁদের দেওয়া অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। বাদীর অভিযোগে যাঁদের আসামি করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। পরের দিন ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে, তবে এখনও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। ওসি আরও বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে শরীফের নাম এলে তাঁকেও আসামি করা হবে বলে জানান ওসি।

  • Courtesy: ProthomAlo Feb 22, 2018

Tuesday, February 20, 2018

প্রধানমন্ত্রীর এতিম ফান্ড ছিলই না, তাহলে টাকা তছরুপ হবে কী করে?

শামসুল আলম


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত একটি বানোয়াট মামলার রায়ে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন কারান্তরীণ। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য পদাধিকারীরা জোরছে আওয়াজ করে বেড়াচ্ছেন- ‘খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করে খেয়েছেন, তাই তার জেল হয়েছে।’ বিনা ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংসদ অধিবেশনে এমন কথাও বলছেন, ‘তাঁর রাজনীতি শেষ করে দেয়া হয়েছে, তিনি আর কখনও নির্বাচন করতে পারবেন না, ক্ষমতায় আসতে পারবেন না!’ ৭৩ বছর বয়স্ক একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দু’শ বছরের পুরাতন এক নির্জন এলাকার পরিত্যাক্ত বাড়িতে সলিডারি কনফাইনমেন্টে রাখার পরেও কত প্রতিহিংসা-জিঘাংসার উৎকট রূপ দেখল জাতি! এরা নাকি রাজনীতিবিদ! খালেদা জিয়া দুর্নীতি করেছেন, কী করেননি সে প্রশ্নের উত্তরে পরে আসছি। তবে সংসদে যে কথা বলা হয়েছে ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি শেষ করে দেয়া হয়েছে’, এটাই বোধ হয় আসল টার্গেট। সত্য উদঘাটন বা ন্যায় বিচার করা নয়, বর্ণিত লক্ষ্য অর্জন মূল উদ্দেশ্য। 

প্রথমেই নিজের পরিচয় দিয়ে নিই। যে সময়কার ঘটনা ১৯৯১ সালে ৯ জুন, আমি তখন প্রধানমন্ত্রীর অফিসে সহকারী সচিব পদে কর্মরত। ঐ অফিসে তখন মাত্র ৮ জন সরকারি কর্মকর্তা ছিলাম আমরা। ভারপ্রাপ্ত সচিব কামাল সিদ্দিকী, সাবিহউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পিএস-১, উপসচিব ম. সাফায়েত আলী (মরহুম), এম এ মোমেন প্রধানমন্ত্রীর এপিএস, তাজুল ইসলাম তথ্য অফিসার, তিনজন সহকারী সচিব আবদুজ জাহের (৮২ ব্যাচ, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব), আমি শামসুল আলম, এবং আলী আহমেদ। আমাদের অফিস ছিল বাংলাদেশ সচিবালয়ের ১ নম্বর বিল্ডিংয়ে। প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বসতেন চার তলার অফিস কক্ষে (সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টের অফিস), আমরা বসতাম দোতলায়।


তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান (মরহুম) কুয়েতের আমিরের নিকট থেকে একটি ফান্ড আনেন শহীদ জিয়ার নামে এতিমখানা বানানোর উদ্দেশ্যে। কুয়েতের আমিরের সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের হিসাব হতে প্রেরিত ১২ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলারের ডিডিতে ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ লেখা ছিল বটে, কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশ সরকারের ঐরূপ কোনো ফান্ড ছিল না। ওটা একটা বেসরকারি অনুদান হওয়ার পরেও প্রেরকের ভুলের কারণে ঐরূপ হয়। ভারপ্রাপ্ত সচিব কামাল সিদ্দিকীকে ঐ ডিডি দেয়া হলে তিনি তা ভাঙানোর নিমিত্ত সোনালী ব্যাংক রমনা শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন। পরে ঐ টাকা (৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা) তুলে সেভিংস/এসটিডি/এফডিআর হিসাব খোলা হয়। ১৯৯৩ সালে সুদসহ তুলে পুরো টাকাটা ২ কোটি ৩৩ লাখ করে সমান দু’ভাগ করে এতিমখানা নির্মাণের নিমিত্ত বাগেরহাট এবং বগুড়ায় দুটি ট্রাস্টকে প্রদান করা হয়। এই চেক দু’টিতে সই করেন একাউন্ট হোল্ডার কামাল সিদ্দিকী। এর আগে দু’টি ট্রাস্ট গঠন ও রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। বাগেরহাটের জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সেটেলার হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এবং বগুড়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের সেটেলার হন তারেক রহমান। বাগেরহাটে মোস্তাফিজুর রহমান সাহেব জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে এতিমখানা নির্মাণ করে যথারীতি পরিচালনা করেন। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা নূর আহমেদ ১১/৬/২০০৮ তারিখে জমা দেয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ট্রাস্টটি বেসরকারি ট্রাস্ট, এবং ‘বর্ণিত ট্রাস্টের নামে একটি এতিমখানা স্থাপন করা হয়েছে, যা চলমান রয়েছে বিধায় প্রাথমিক অনুসন্ধানে উক্ত ট্রাস্টের কোনো অর্থ আত্মসাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে দুদকের মামলার অভিযোগকারী এবং তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদও তা মেনে নেন। ফলে বাগেরহাটের এই খন্ড নিয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করা হয়নি বা মামলাও হয়নি (এটা মাথায় রাখবেন)।

এবারে বগুড়ার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট নিয়ে আলোচনা। বগুড়ার জন্য বরাদ্দ করা ২.৩৩ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় ট্রাস্টের নামে বগুড়াতে ২.৭৯ একর ধানি জমি ক্রয় করা হয়। বাদ বাকি সব টাকা ট্রাস্টের একাউন্টে আছে, তা স্বীকার করেছেন মামলার বাদী ও তদন্তকারী কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ। ট্রাস্টির সদস্যদের কর্মব্যস্ততার কারণে এই টাকা ব্যবহার করে এতিমখানা নির্মাণ করা হয়নি সত্য, তবে তারেক রহমান এতিমখানার ঐ টাকাকে উচ্চ মুনাফাধারী বিভিন্ন ব্যাংকে রেখে তা তিন গুণ বর্ধিত করেন। ট্রাস্টের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের পরিচিত সলিমুল হক কামালকে দায়িত্ব দেন ঐ টাকা ব্যাংকে রাখার জন্য। কামাল সাহেব তার নিজের নামে এবং তার পরিচিত গিয়াসউদ্দিন ও সৈয়দ আহাম্মদ নামে এফডিআর করেন পরে লাভসহ ভাঙ্গিয়ে সম্পূর্ণ টাকা ট্রাস্টের একাউন্টে জমা করা হয়।

২০০৬ সালে এতিমখানার জন্য ঢাকার কাছে আশুলিয়ায় জমি কেনার উদ্দেশ্যে জনৈক শরফুদ্দিনের সাথে বায়না করে ২টি এফডিআর মূলে অর্থ দেয়া হয়, যাতে মেয়াদান্তে ২.৫০ কোটি পাওয়ার কথা। কিন্তু ১/১১র পরে দেশে ধরপাকড় ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে এবং পরে তারেক রহমান গ্রেফতার হলে ঐ জমির রেজিস্ট্রি করা সম্ভব হয়নি। ফলে শরফুদ্দিন উক্ত এফডিআর ভেঙে ২.১০ কোটি টাকা ট্রাস্টকে ফেরৎ দান করেন। মূলত এটাই হলো মামলার ২.১০ কোটি টাকার উৎস। বাস্তবে ট্রাস্টের কাছে এখনও ৬ কোটির বেশি টাকা আছে ব্যাংকে। এখানে দুর্নীতির মামলা হলে ৬ কোটির জন্যই হওয়ার কথা। আর কুয়েতি অনুদান সংক্রান্তে মামলা হলে ১২.৫৫ লাখ ডলার বা ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকার উপরে হওয়ার কথা। এর একটিও হয়নি। অর্থাৎ মামলাটি বস্তুনিষ্ট হয়নি, বরং বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছে!
মামলার শুরুতে অভিযোগ আনা হয় যে, অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। পরে আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণাদিতে যখন প্রমাণ হয় যে, কোনো টাকা কেউ আত্মসাৎ করেনি, তারপরে সরকারি পক্ষ সেটি ঘুরিয়ে দেয় অন্য দিকে। সরকারি তহবিলের অর্থ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রাইভেট ট্রাস্টকে দেয়ার অভিযোগ আনা হয় এবং সেই কারণ দেখিয়ে বানোয়াট কাগজপত্র ও সাক্ষী দিয়ে ধারণার বশবর্তী হয়ে বেগম জিয়াকে সাজা দেয়া হয়।

‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ ছিলনা 

প্রকৃতপক্ষে, ১৯৯১ সালে ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম ফান্ড’ নামে সরকারি কোনো তহবিল ছিল না, এখনও নাই। ১৯৯১ সালের জুন মাসে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্বাহী ক্ষমতা ছিল না। তাই ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। বরং এমন কোনো তহবিল সৃজন করতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (এতিমখানা এই মন্ত্রণালয়াধীন) অনাপত্তি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন দেয়ার আবশ্যকতা ছিল। ঐভাবে কোনো তহবিল সৃষ্টি করা হয়েছিল কি? আদতে তেমন কিছু ঘটেনি। ফলে ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ নামে কোনো সরকারি তহবিল ছিল না। ফলে ঐরূপ কোনো ফান্ডের টাকা আত্মসাত বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে টাকা সরানো স্রেফ কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ ছাড়া আর কিছু নয়।

কেউ যদি অভিযোগ করে, আমার পকেট থেকে কেউ টাকা চুরি করেছে। পরে খুঁজে দেখা গেলো তার কোনো পকেটই নেই। তাহলে চুরির প্রশ্ন আসবে কী করে? এখানেও তেমন ঘটনা ঘটেছিল। প্রধানমন্ত্রীর এতিম ফান্ড ছিলই না, তাহলে টাকা তছরুপ হবে কী করে? ঐ ফান্ড কে সৃষ্টি করলো? এরকম কিছু গঠন হয়ে থাকলে সরকারি গেজেট কোথায়? অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি কোথায়? রাষ্ট্রপতির অনুমোদন কোথায়? সরকারি ফান্ড হলে প্রতিবছর তার অডিট হওয়ার কথা। এমন কিছু হয়েছিল কি? কোনো নিরীক্ষা হয়েছিল কি? হয়ে থাকলে সেই অডিট রিপোর্ট কই? আছে কি এমন কিছু? কিছুই নেই। তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ নিজেও তা স্বীকার করেছেন

  • লেখক সাবেক সরকারি কর্মকর্তা। 

ম্যাডাম থেকে মমতাময়ী মায়ের আসনে বেগম জিয়া


মোবায়েদুর রহমান 


বেগম জিয়াকে সাজা দেওয়ার পরবর্তী ১১ দিনের ঘটনাবলী দেখে আওয়ামী লীগ ও সরকারী নেতাদের রীতিমত আক্কেল গুড়ুম। তারা ভাবলেন কি, আর হলো কি। খালেদা জিয়ার সাজাকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত কোথাকার পানি কোথায় দিয়ে দাঁড়াবে সেটা এখনও সঠিক ভাবে বলতে পারা না গেলেও ঘটনা প্রবাহ যেভাবে গড়াচ্ছে তার ফলে আওয়ামী লীগের সব হিসেব লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ফলে তারাও এসব বিষয় নিয়ে নতুন করে হিসাব নিকাশ করতে বসেছে এবং দাবার ছক নতুন করে সাজাতে শুরু করেছে। একজন শিক্ষিত ভদ্রলোক আমাকে বললেন যে আওয়ামী লীগ এই খেলায় প্রথম রাউন্ডে প্রচন্ড হোঁচট খেয়েছে। গত ১৭ তারিখ বিকালে গুলশান যাচ্ছিলাম। কথা প্রসঙ্গে ড্রাইভার বললেন যে, আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি প্রশ্ন করলাম, কেন? তার উত্তর, আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের ছকটি সাজানো ছিল এভাবে: বেগম জিয়ার ৫ বছরের জেল হবে। জেল হওয়ার রায়টি শুনেই তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে শুরু হবে হুলুস্থুল কান্ড। বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল সহ বেগম জিয়ার নেতা কর্মী ও সমর্থকরা সাথে সাথেই আন্দোলনের নাম করে ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক তৎপরতায় মেতে উঠবে। তারা বেপরোয়াভাবে গাড়ি ভাংচুর করবে, গাড়ি ঘোড়ায় আগুন লাগিয়ে দেবে, পুলিশের প্রতি অবিরাম ইষ্টক বর্ষণ করবে এবং সারা শহরে বোমা বা ককটেল ফাটাবে। তাদের এসব কর্মযজ্ঞের ফাঁক দিয়ে এজেন্ট প্রোভোকেটিয়ারা মিছিল বা জনতার মাঝে অনুপ্রবেশ করবে এবং পেট্রোল বোমা বা গুলি করার মতো নাশকতা চালাবে। ফলে সহানুভ‚তির পরিবর্তে বেগম জিয়া তথা বিএনপির প্রতি জনগণের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হবে। এই সুযোগে সরকার ঢাকা মহানগরী থেকে শুরু করে গ্রামে গঞ্জে পর্যন্ত সন্ত্রাস দমনের নামে বিএনপির বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান চালাবে এবং হাজার হাজার কর্মীকে গ্রেফতার করবে। ৮ ফেব্রুয়ারির আগেই কদম ফোয়ারার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ২ শত নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের এখনও মুক্তি দেওয়া হয়নি। তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই নতুন করে নাশকতার বিভিন্ন মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেককেই এর মধ্যেই রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পর বিএনপি যদি হরতাল বা অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতো তাহলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্তও জাল বিছিয়ে বিএনপির নেতা কর্মীদেরকে ছেঁকে তোলা হতো। এদেরকে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে জেলে রাখা হতো এবং ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ইলেকশনের আগে মুক্তি দেওয়া হতো না। এভাবে আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে সমানে গোল দিতো। 

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার প্রাজ্ঞ ও দুরদর্শী নেতৃত্ব তাদেরকে সেই সুযোগ দেয়নি। গত ১১ দিন ধরে বেগম জিয়ার রায়ের পরে বিএনপি যেভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে সেটি এক কথায় কারান্তরীণ নেত্রীর অসাধারণ দুরদর্শিতার পরিচায়ক। নিয়মতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি রাজপথ থেকে পালিয়ে যায়নি। বরং অতীতের যেকোনো সময়য়ের চেয়ে আরো বেশি সংখ্যায় রাজপথ সরব রেখেছে। এবার শুধু জনগণ নয়, আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছেও স্পষ্ট প্রতিভাত হলো যে, বিএনপির এই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পেছনে রয়েছে জনগণের সর্বাত্মক সমর্থন। সেই সাথে একটি সাধারণ ধারণা সব শ্রেণীর জনগণের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে যে সরকার বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে একটি ভিত্তিহীন ও সাজানো মামলার মাধ্যমে দন্ড দিয়েছে যাতে করে বেগম জিয়া এবং তার দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায়। এখন এটি ওপেন সিক্রেট যে বিএনপি যদি নির্বাচনে যায় এবং জনগণ যদি ভোট কেন্দ্র পর্যন্ত যেতে পারে তাহলে শাসকদল শুধু যে হারবে তাই নয়, তাদের হারাটা হবে একেবারে গো-হারা। 

এখন বেগম জিয়ার কারাদন্ড আওয়ামী লীগ এবং সেই সুবাদে তাদের সরকারের জন্য হয়েছে শাঁখের করাত। এধারেও কাটে, ওধারেও কাটে। এখন তারা কি করবেন? বিভিন্ন ছলছুতা করে বেগম জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করবেন? নাকি তার জামিনের পেছনে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না? এই দুইয়ের দোলাচলে এখন দুলছে আওয়ামী লীগ। 

\দুই\
আওয়ামী লীগ ৬৫ বছরের একটি পুরাতন পার্টি। রাজনীতির বাতাস তারা মোটামুটি বুঝতে পারে। এই ১১ দিনেই তারা বুঝে গেছে যে কারাদন্ড দেওয়ার ফলে প্রতিটি দিন যাচ্ছে আর বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তা হুহু করে বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন বেগম জিয়ার জনপ্রিয়তা হবে হিমালয়ের মত উঁচু এবং তিনি হবেন মহা নেতা। ইতোমধ্যেই তিনি সম্মান, সহানুভ‚তি এবং জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে অনন্য উচ্চতায় উঠে গেছেন। এখন তার লাখ লাখ নেতা ও কর্মী তাকে আর ম্যাডাম ডাকে না। জেলে যাওয়ার পর থেকেই তিনি রূপান্তরিত হয়েছেন এক মমতাময়ী মাতৃ রূপে। অন্যের কথা বাদই দিন, এমনকি কিশোরগঞ্জের সাবেক এমপি মেজর আকতারুজ্জামান পর্যন্ত মিছিল করছেন এবং আওয়াজ তুলেছেন তিনি এবং তার সমর্থকরা তাদের মাকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনবেনই। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে মেজর আকতারুজ্জামান বিএনপির এমপি ছিলেন। কিন্তু তার কিছু কার্যকলাপ দলীয় স্বার্থের পরিপন্থী হওয়ায় তিনি দল থেকে বাদ পড়েন। এখন সেটি ভুলে যেয়ে তিনিও দেশনেত্রীকে মা হিসেবে মেনে নিয়েছেন এবং মায়ের মুক্তির জন্য রাস্তায় নেমেছেন। দেশনেত্রী বা ম্যাডাম থেকে মায়ের মর্যাদায় আসীন হওয়া বাংলাদেশের ৪৭ বছরের ইতিহাসে আমরা দেখিনি। তার প্রতি সমর্থন এবং দরদ যে কি পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেটা যে কতটা গভীর তার কিছু নজির দেওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে আমি অনেক কিছুই বলতে পারতাম। কিন্তু তাতে করে লেখাটি অনেক বড় হয়ে যাবে। তবুও দুয়েকটি ঘটনা না বললেই নয়। 

ধানমন্ডি এলাকার একটি এ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে আমি থাকি। এখানকার অধিকাংশ ফ্ল্যাট মালিকদের স্ত্রীরা গৃহীনি। তারা উচ্চ শিক্ষিত। কিন্তু তারা পেশাজীবি বা চাকুরিজীবি নন। গত রবিবার ৪জন গৃহীনি এসে বললেন, আমরা তো বেগম জিয়ার জন্য কিছুই করতে পারছি না। বলুন তো ভাই আমরা যদি তার মুক্তির দাবিতে লিখিত গণস্বাক্ষরে সই দেই তাহলে কি তিনি মুক্ত হবেন? আমি বললাম, মুক্ত হবেন কিনা জানি না, তবে আপনাদের যতটুকু করার ততটুকু তো করলেন। ঐ মহিলারা অতঃপর ৪ জনে একটি গাড়িতে উঠে নয়াপল্টনে গিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে এসেছেন। বনানীর একটি বহুতল বিশিষ্ট এ্যাপার্টমেন্টের কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী এবং ফ্ল্যাট মালিকদের কয়েকজন ড্রাইভার নিজেরা কন্ট্রিবিউট করে জেল গেটে গিয়েছিলেন খাবার নিয়ে। কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় তাদেরকে ফিরে আসতে হয়েছে।

এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে মনে হয় সেদিন আসছে, যেদিন এই ঢাকা মহানগরীতেই গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ের কিছু ঐতিহাসিক ও বিপ্লবী ঘটনা গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিক পথে ফিরে আসতে পারে। 

এসব দেখে শুনে শাসকদের চিত্ত চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ১১ দিন ধরে মামলার সার্টিফায়েড কপি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। হয়তো এই লেখাটি যেদিন প্রকাশিত হলো তার আগের দিন অর্থাৎ সোমবার তাদেরকে কপি দেওয়া হবে এবং আজ হয়তো তারা আপিল করবেন এবং জামিন চাইবেন। কেন রায়ের এই নকল নিয়ে এমন টালবাহানা করা হলো? এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজ্ঞ এবং আন্তার্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনবিদ ড. কামাল হোসেন বলেছেন যে নকল নিয়ে যা করা হলো সেটি ছিল একটি প্রহসন। এসব রায়ের কপি পেতে তিন দিনও লাগে না। আর এরা ১০ দিনেও সেটি দেয় না। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বেগম জিয়াকে হয়রানী করা। 

\তিন\
প্রথম রাউন্ডে হেরে গিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে শাসক দল একটি নতুন খেলা শুরু করেছে। টেলিভিশন টকশোগুলোতে ৩ জন করে আলোচক আনা হচ্ছে। এরা হলেন একজন আওয়ামী লীগার, একজন জাতীয় পার্টির আরেকজন বিএনপির। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি তো একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। সুতরাং তারা হয়ে যাচ্ছে দুই, আর বিএনপি হচ্চে এক। বিএনপির কোনো সিনিয়র নেতা বা অভিজ্ঞ আলোচক আসছেন না। বরং বলা যায় আসতে পারছেন না। এলে পরেই তো টক শো শেষে একেবারে লাল ঘরে। আসল কথা হলো, সরকারের পরিকল্পনা। দুষ্ট লোকে বলে যে আগামী নির্বাচনে সরকার জাতীয় পার্টিকে দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্টি এবং জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হিসেবে সাজাতে চায়। আর বিএনপিকে থার্ড পার্টি। তবে ইংরেজীতে একটি কথা আছে না Man proposes God disposes. 

সেজন্য আওয়ামী লীগের সব ধরণের নেতা এবং টেলিভিশন টকশোর আওয়ামী এবং জাপা পন্থী আলোচকদের মুখে এখন শুধু বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদ্গার। একটি কথা টকশোতে প্রায়ই বলা হচ্ছে যে বেগম জিয়া যেমন কাজ করেছিলেন তেমন ফল পাচ্ছেন। বেগম জিয়া নাকি এরশাদকে গ্রেফতার করেছিলেন। এখন তিনিও গ্রেফতার হয়েছেন। এদের অজ্ঞতা দেখে করুনা হয়। এরা জ্ঞান পাপী। তাদের জানা উচিৎ যে এরশাদকে বেগম জিয়া গ্রেফতার করেননি। তাকে গ্রেফতার করেছিলেন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিচারপিত সাহাবুদ্দিন আহমেদ। এরশাদ পদত্যাগ করেন ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর। সেই দিনই প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দন আহমেদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালের ১২ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট এরশাদ অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেফতার হন। আর খালেদা জিয়া প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ। অর্থাৎ এরশাদ গ্রেফতার হওয়ার ২ মাস ৭ দিন পর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন। তবে দুঃখের বিষয়, এসব তথ্য জনগণের কাছে পরিস্কারভাবে বলতে পারে না বিএনপি। মনে হয় না তাদের কোনো থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আছে। অতীতেও ছিল না। এখনও নাই। 

আরেকটি তথ্য আমার জানা ছিল না। তথ্যটি পরিবেশিত হয়েছে শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক প্রথম আলোর ১১ পৃষ্ঠায়। প্রকাশিত নিবন্ধের এক স্থানে বলা হয়েছে, জনতা টাওয়ার মামলায় আপিল বিভাগ এরশাদের সাজা বহাল রাখলে তিনি ২০০০ সালের ২১ ডিসেম্বরে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং মাননীয় বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। তাঁকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ জানিয়ে চার দলের শীর্ষ নেতারা যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তাতে খালেদা জিয়ারও সই ছিল। আজ বিএনপি নেতারা যেমন বলছেন, সাজানো মামলায় খালেদাকে ফাঁসানো হয়েছে, সেদিন জাতীয় পার্টির নেতারাও দাবি করেছিলেন, চারদলীয় জোটে যাওয়ার কারণেই সরকারের রোষের শিকার হয়েছেন এরশাদ। এই ঘটনা থেকে এটি পরিস্কার হয়ে যায় যে বেগম জিয়া কোনো সময় নিচু ও সংকীর্ণ মনের মানুষ ছিলেন না। তাই এরশাদের শাস্তির বিরুদ্ধেও তার মুক্তি চেয়ে প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি সই দিয়েছিলেন। অথচ সেই জাতীয় পার্টিই আজ সমস্বরে এই মর্মে মিথ্যাচার করছে যে বেগম জিয়াই নাকি তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। ওপরে যেসব ঘটনা বিবৃত করলাম সেসব ঘটনা থেকে একটি বিষয় পরিস্কার হয়ে যায় যে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির রাজনীতির প্রধান ভিত্তিই হলো মিথ্যাচার এবং মিথ্যা প্রোপাগান্ডা। 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই আজ আলোচনা করা সম্ভব হলো না। সেটি হলো বেগম জিয়ার জামিন পেতে কত সময় লাগবে? এই সব মামলা মোকদ্দমা পেরিয়ে তিনি কি আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন? এ সম্পর্কে আমি লেখার ইচ্ছে রাখি আগামী মঙ্গলবার। অবশ্য এর মধ্যে যদি ভিন্ন ঘটনা ঘটে যায় তাহলে ভিন্ন কথা। 

আজকে এটুকু বলছি যে বেগম জিয়ার ইলেকশন করা না করার ব্যাপারে আমি কয়েকটি উদাহরণ দেবো। এরমধ্যে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জেনারেল এরশাদ, ভারতের পরলোকগত জয় ললিতা জয়ারাম, ম খা আলমগীর, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এমপি বদি প্রমূখ।

  • Email: journalist15@gmail.com
  • উৎসঃ dailyinqilab.com 


দিল্লি নির্বাচনে বিএনপিকে দেখতে চায়


ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মূল্যায়ন



ওমর শাহ 

ভারতীয় শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়াান এক্সপ্রেস জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডাদেশ লাভের ঘটনাকে আইনের শাসনের দিক থেকে নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে মূল্যায়ন করেছে। মিডিয়া পরিষ্কার করেছে যে, খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ সত্ত্বেও দিল্লি আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ দেখতে আগ্রহী।

ভারতীয় মিডিয়া সাধারণভাবে বলেছে, মিসেস জিয়ার দণ্ডাদেশকে সরকারিভাবে দিল্লি ‘পাথুরে নীরবতা’য় উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু তারা বেশি উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, এই মামলার কারণে যদি খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়, আর তার পরিণতিতে বিএনপি যদি নির্বাচন বয়কট করে, তাহলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ একটি ‘কম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে’ রূপান্তরিত হতে পারে। বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়া এবং ইসলামী রেডিক্যালদের মনোভাব বিবেচনায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, আওয়ামী লীগের কোনো কোনো অংশের আপত্তি অগ্রাহ্য করে যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, সেই তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ৯ই ফেব্রুয়ারি ‘একটি সংকীর্ণতম মাঠ’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলেছে, ‘দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতা বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর জেল হয়েছে। কিন্তু জনসাধারণের দৃষ্টিতে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, খালেদা জিয়ার কারাবরণের ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাপক রাজনৈতিক ক্ষমতা আরো বেশি সংহত করার পথ তৈরি করে দেবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি নেত্রী ও তার দলকে যদি অংশগ্রহণ করতে না দেয়া হয়, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ অনুরূপ অবাধ ক্ষমতা আরো সুসংহত করতে পারে। অনেকের মতে, এমনকি তিনি বাংলাদেশকে একটি কম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে আগ্রহী হতে পারেন।’

এক্সপ্রেস লিখেছে, ‘‘অবশ্যই সেই দিনটি এখনো বেশ দূরে। কিন্তু বাস্তবতা এটাই রয়ে গেছে যে, ১৯৭৫ সালে আততায়ীর বুলেটে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যরা নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে একজন তেজদ্দীপ্ত সাহসী নারী হিসেবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকারীর ভাবমূর্তি থেকে দ্রুত সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। একটি রক্তস্নাত যুদ্ধ থেকে জন্ম নেয়া দেশটি তখনো পর্যন্ত তারুণ্য উদ্দীপ্ত ছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশিরা ক্রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কারণ এটা প্রতীয়মান হয়েছে যে, তিনি স্বজনপ্রীতি-দুর্নীতি এবং উপদলীয় কোন্দলকে মার্জনা করেছেন এবং তার ক্রমশ অজনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে এসব অবদান রেখেছে। সার্বিক বিচারে মিসেস জিয়ার বিরুদ্ধে তিনি নিজকে তার ভয়ানক ব্যক্তিগত বৈরিতার ঊর্ধ্বে উঠাতে সক্ষম হননি। তিনি বিশ্বাস করেন যে, জামায়াতে ইসলামী, যে দলটির কিছু সদস্য স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকিস্তানি শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিএনপির আঁতাত রয়েছে। এর কিছু অভিযোগের সত্যতা থাকতে পারে। শেখ হাসিনার ব্যাপক মানসিক আঘাত এবং প্রতিশোধের জন্য তার একটি ব্যক্তিগত অভিপ্রায় হয়তো বোধগম্য। কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, যার হাতে দেশটির নেতৃত্ব, তিনি যদি ঘৃণার বেদিতে দেশটির ভবিষ্যৎ সমর্পণ করেন, তাহলে তা শুধুই তাকে ম্লান করতে পারে এবং তার দেশকে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

শেখ হাসিনা একটি গণতান্ত্রিক স্পেস বা স্থান সৃষ্টি করতে অসামর্থ্যের পরিচয় দিচ্ছেন। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের জনগণ বিচার করতে পারবে। আর এর ফলে এমন একটি ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে, যাতে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ওই স্বাধীনতা যুদ্ধে খালেদা জিয়ার স্বামী তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান, যিনি ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছিলেন, তিনিসহ অধিকাংশ বাংলাদেশি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাঁধে কঁাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। শেখ হাসিনা যদিও সন্ত্রাসী এবং ইসলামী উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তদুপরি তাকে দেখা হবে এমন একটি পরিস্থিতি তিনি সৃষ্টি করছেন, যা মিসেস জিয়াকে টেনে নামানোর এবং যাতে প্রকারান্তরে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রের বীজ বপন করা হবে। দুর্নীতির দায়ে বেগম জিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ভালোই করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আরো গভীরভাবে তলিয়ে দেখা দরকার যে, আজ তার দরকার একটি গণতান্ত্রিক এবং সহানুভূতিপ্রবণ জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে নেতৃত্ব দেয়া।’’

উল্লেখ্য যে, দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গত ৮ই ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের দিনেই পত্রিকাটির কনসাল্টিং এডিটর জ্যোতি মালহোত্রা লিখেছিলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর জেল হওয়ার কারণে ঢাকা ঝড়ের মধ্যে পড়েছে। দিল্লিকে করেছে উদ্বিগ্ন। জিয়ার দণ্ডাদেশ লাভে দিল্লিতে চলছে পাথুরে নীরবতা। দিল্লি বিশ্বাস করে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আরো অধিকতর ক্ষমতার পরিধি বিস্তার করার ঝুঁকি নেবেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ শাসনে শেখ হাসিনাই ‘বেস্ট বেট’ (শ্রেষ্ঠ বাজি) রয়ে গেছেন। মালহোত্রা মনে করেন, খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বাংলাদেশকে একটি ঝড়-তুফানের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তার আশঙ্কা, আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে।

দুই নেত্রীর মধ্যে তিক্ততার গভীরতার দিকে আলোকপাত করতে গিয়ে মালহোত্রা উল্লেখ করেছেন যে, ‘দেশটির সবচেয়ে দুই ক্ষমতাধর নারীর মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার তীব্রতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেন, “তিনি আজ কোথায়”? মালহোত্রা অবশ্য স্পষ্ট করেছেন যে, মিসেস জিয়াকে যদি আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় এবং এর আগের নির্বাচনের মতো বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে, তাহলে শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ কোনো প্রকৃত বিরোধী দল ছাড়াই দেশ শাসন করবে। কিন্তু সেটা হবে দিল্লির অসন্তোষের কারণ। তার কথায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দিল্লিতে ঢাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একটি স্টাবলিশমেন্ট, তারা ইসলামী উগ্রপন্থিদের তরফের চাপ এবং টানাপড়েনে মনোযোগী এবং একটি দ্রুত প্রভাবশালী হয়ে ওঠা চীন কর্তৃক ঢাকার প্রতি আর্থিক সহায়তা প্রদানের ঘটনাবলী সত্ত্বেও তারা এটা স্পষ্ট করেছে যে, ভারত শেখ হাসিনার ‘‘গণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগের’’ প্রতি সমর্থন দেবে। কিন্তু দিল্লি একইসঙ্গে শান্তভাবে শেখ হাসিনার প্রতি এই আহ্বান রেখেছে যে, বিরোধী দল বিএনপি, যার সঙ্গে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছেন; সেই দলটি যাতে দৃষ্টিগোচরভাবে আসন্ন নির্বাচনে ন্যূনতম অংশগ্রহণ করে, যাতে তা তিনি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে দিল্লির যুক্তি হলো, একটি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশটির গণতান্ত্রিক ভিন্নমত সিস্টেমের মধ্যে থেকে উত্তমরূপে মোকাবিলা করতে পারবে, বিরোধী দলকে বাইরে রেখে নয়।

মালহোত্রা আরো লিখেছেন, এটি একটি যুক্তি যে, যদিও শেখ হাসিনা তার প্রধানমন্ত্রিত্বের গত চার বছরে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, বেসামরিক স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর উপস্থিতি সম্প্রসারণ এবং বাংলাদেশে চীনাদের স্বাগত জানানোর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠলেও দিল্লির ওই পরামর্শের প্রতি সম্পূর্ণ বিরুদ্ধাচারণ করবে না। মালহোত্রার মতে, দিল্লি নির্দিষ্টভাবে ২০১৫ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফর থেকে দ্রুত চীনা প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নজর রাখছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার সফরকালে ২৬ বিলিয়ন ডলারের একটি চেক কেটে শেখ হাসিনার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সেই থেকে বাংলাদেশিরা চীনের কাছ থেকে দুটি সাবমেরিন কিনেছেন এবং চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় চীনা কোম্পানিগুলোকে কিছু অবকাঠামো গড়ে তুলতে দিয়েছেন। দিল্লি এসব বিষয়কে একটি ‘পয়েন্ট’ হিসেবে নিয়েছে। সেকারণে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ মিসেস জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। যদিও আওয়ামী লীগের একটি অংশ বলেছিল, মিসেস জিয়ার সঙ্গে সুষমা স্বরাজের সাক্ষাৎ করা ঠিক হবে না।

মালহোত্রা তার উপসংহার টেনেছেন এই বলে যে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় মিসেস জিয়ার দণ্ডাদেশ এবং যে মামলায় ২১ মিলিয়ন টাকা তছরুপের দায়ে তার ছেলে তারেক রহমানকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়, সেসব ঘটনাকে শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা আরো সংহত করার পথ হিসেবে নেবেন। তিনি এবং তার আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বাস করেন যে, দুর্নীতি দমন আদালত থেকে মা ও তার ছেলে উপযুক্ত শাস্তিই পেয়েছে। আদালত ব্যাখ্যা করেছে যে, বিদেশি অনুদান লাভ করার ঠিক আগে কেন ওই ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছিল?


  • উৎসঃ amadershomoy.com 



A narrower field

Jailing of Khaleda Zia revives questions about Sheikh Hasina’s pursuit of absolute power in Bangladesh 


Editorial/ The Indian Express/ February 9, 2018 12:16 am



The sentencing of former Bangladesh Prime Minister and Bangladesh Nationalist Party (BNP) leader Khaleda Zia to five years in jail is on charges of corruption. In public perception, however, Zia’s incarceration paves the way for a further consolidation of Prime Minister Sheikh Hasina’s vast political power. If the BNP leader is not allowed to participate in general elections scheduled for December this year, and her party boycotts the polls like it did five years ago in 2013, then Hasina and her Awami League party may accumulate such untrammelled power that, many feel, she may be tempted to transform Bangladesh into a state less democratic.

Of course, that day is still far away. But the fact remains that Hasina’s reputation at home has rapidly deteriorated — from the brave courageous woman who returned home despite the fact that her family members, including her father, Bangabandhu Sheikh Mujibur Rehman, were killed by the assassin’s bullet in 1975. The nation was still so young, then, just born of a bloody war. But in the past five years, during her second term as prime minister, Bangladeshis are angry that she has seemingly condoned nepotism, corruption and faction-fighting, and this has contributed to her growing unpopularity. By all accounts, she has not been able to let go of her terrible personal animosity against Zia. She believes the BNP is hand in glove with the Jamaat-i-Islami, several of whose members once colluded with the enemy, Pakistan, in the liberation war. Some of this may even be true. Hasina’s enormous trauma and perhaps even a personal desire for revenge may be understandable. But for a prime minister to be seen to stake her country’s future at the altar of hate can only diminish her — and drag her country down.

Hasina’s inability to create the democratic space that will allow her opponent to be judged by the people of Bangladesh risks undermining the spirit of the liberation war in which most Bangladeshis — including Khaleda’s husband, then Major Ziaur Rahman, who read the declaration of independence on behalf of Sheikh Mujib on March 27, 1971 — fought shoulder to shoulder with each other, against Pakistan. For Hasina, otherwise so brave in fighting both terrorists and radical Islamists, to be seen to be actively creating the conditions to bring Zia down, is to sow the seeds of a brittle state. The courts did well to convict Zia for corruption. But Bangladesh’s prime minister needs to dig deeper into her reserves to build the sinews of a democratic and compassionate nation today.

Corruption in police

Action must follow words


The comments of a deputy commissioner of Dhaka Metropolitan Police (DMP) at a recent police conference show the prevalence of corruption in the postings of officers-in-charge and sub-inspectors. According to the DC, prospective OCs have to pay amounts as high as Tk 30 lakh to Tk 1.5 crore for their postings. The amount of bribes for transfers of sub-inspector also goes into the lakhs.

These amounts involved are staggeringly high—so much so that it would not be amiss to say that this initial corruption further fuels other corruption and irregularities we hear of. There have been many cases where victims of crimes have accused the police of not filing cases without graft. In many cases too, we see these officials granting impunity to criminals because they are monetarily influenced. When their initiation into these posts costs them so dearly, it is no wonder they are looking to earn back that money and more through their jobs. Not to mention the culture of bribery that is created. This too was pointed out by the DC when he said, “If an OC gets appointed by paying lakhs of taka in bribe, he will want to indulge in robbery, stealing and drug trading to make money.” Those are strong words, coming from the police themselves.

We are glad that this realisation has come from the police and they seem to be trying to purge the institution of the practice. Speaking ahead of further recruitments, the call for cooperation from the DC and other officials is timely. But we fear, calling for transparency is not enough. Strong measures must follow suit, and only through exemplary punishment of those found to be taking bribes can it be put to an end. We urge the police to heed the DC's call and work towards that goal.

  • Courtesy: The Daily Star Feb 20,2018

Bangladesh's press say they are losing the courage to report amid threats from all sides


By Steven Butler/CPJ Asia Program Coordinator on February 13, 2018



Nazmul Huda pointed his TV camera at garment workers demonstrating for higher wages in Savar, on the outskirts of Dhaka, and at the police firing tear gas and rubber bullets at them. It took a while for police to notice the ETV reporter, and they were furious. After all, they had ordered him to leave the area and stop reporting the day before. So they demanded he turn over his recordings. When Huda explained that he had none--it had all been broadcast live--it only made the police angrier.

As Huda told his story recently in a hotel lobby in Dhaka, his friendly, made-for-TV personality grew more somber. That December 2016 afternoon marked the start of a nightmare for Huda that is ongoing. And while few journalists in Bangladesh ever face the brutality and intimidation that he described that day, it's a cautionary tale that explains the feeling of fear repeated again and again by journalists with whom I spoke, who say they worry no one is there to protect them.

By appearances, Bangladesh has a vibrant and boisterous media industry. But its journalists are facing a diverse range of threats, from out-of-control police and forced disappearances, to tough criminal defamation laws under Section 57 of the Information and Communication Act. Militant attacks decimated a once-thriving community of bloggers and many journalists say they still feel the threat. Highly partisan politics polarized the journalist community, even splitting the journalist union into two competing organizations. Meanwhile, journalists say they endure repeated intimidating "advisory" phone calls from police, army intelligence, or the government. The net result is a siege mentality. "I don't have the courage anymore," said Matiur Rahman, editor of the leading Bangla daily paper, Prothom Alo. Rahman worries not just about himself and his family, but also his staff and the fate of the newspaper that he mustered the courage to found in 1998.

The result, according to every editor and reporter with whom I spoke, is that important news is sometimes ignored to avoid angering the military, the government--especially Prime Minister Sheikh Hasina and her family--or extremist religious groups. "I'm at a very high level of self-censorship," said Mahfuz Anam, editor of the leading English paper The Daily Star. Anam said that he is personally facing 84 legal cases for sedition or defamation, with potential damages of US$8 billion. With cases filed in different jurisdictions, the editor said, he is forced to travel around the country to defend himself.

Other journalists with whom I spoke, and who asked not to be named for fear of retaliation, had similar stories. One of them recalled how he received a call from the government requesting that he stop giving blanket coverage to a controversial mayoral election. He said he complied, as did all other publications and broadcast channels.

In Huda's case, the journalist said that when he realized police were trying to pick him up a few days after the protest, he turned himself in, never imagining what would come next. Huda recalled how he was taken away, hooded, handcuffed and beaten for days, thrown in a ditch, retrieved, beaten some more, and, when he asked for water, was forced to drink urine. He said he had to stand for two days straight, while police tried to obtain a confession that he had conspired with the garment workers, and finally came before a judge to face six criminal charges. Mercifully, he said, the judge sent him to prison, where the beatings ended.

After 45 days Huda was granted bail. A court later threw out all the charges filed against him, except for a criminal defamation one filed under Section 57 of Bangladesh's Information and Communication Act. But legal charges aren't his biggest worry. "Any time, they can pick me up and kill me," said Huda, whose case is still ongoing. "I am always with that fear." Huda said he has returned to work, but with police repeatedly warning him not to attend press conferences or cover stories, he has trouble making living. He added that intelligence agents monitor and follow him and he never leaves home without a companion, so at least someone can bear witness and inform his family should he disappear.

Abdul Awal, the officer in charge of Ashulia Police Station, where the case against Huda was filed, told CPJ he had no knowledge of the allegations that the journalist was tortured after his arrest.

When we met in his Dhaka office, Information Minister Hasanul Haq Inu, dismissed claims of a beleaguered press and boasted of the transparency of the government, including the 2009 Right to Information Act, and of the thousands of online applications for newspaper licenses, as if to say, 'how can people complain?' And there's some truth to that, with the emergence of innovative online news portals like bdnews24, or relatively recently launched print products in the past few years, such as the Dhaka Tribune.

As for Section 57, the online criminal defamation law that has struck fear into so many journalists? "It's not a law for journalists," he said, but rather aimed at online criminal activities, although he admitted that local police are sometimes been overzealous, throwing journalists and others into jail over perceived slights to others. CPJ has documented several arrests under the act in the past three years and every journalist with whom I spoke while in Dhaka said they were afraid of falling afoul of it.

A bill to replace Section 57, the Digital Security Bill, is in the works and will put authority to apply the law's harsh provisions to a committee of experts, the information minister told me. Even so, the proposed law, like the current one, criminalizes speech, so the potential dangers for journalists remain.

Aside from the threat of legal action or arrest, the divisiveness of Bangladeshi politics--between the ruling Awami League and the Bangladesh National Party--has polarized the journalism industry with most publications and broadcast channels identified as pro or anti one party or the other. And disappearances, while mainly affecting politicians, have scared everyone. It hit close to home last year with the disappearance of journalist Utpal Das, who reappeared, unharmed, unexpectedly a few months later.

Fear still lingers from a spate of murders in 2015, when extremists hacked to death four bloggers in separate attacks. Arif Jebtik, who started blogging in 2006, said he at first ignored the threats he received until his mother started getting calls in the family village home. "We had indications they would burn down our house," he said, speaking in his home in Dhaka. He uprooted his mother to Dhaka, quit his job, stopped jogging outside, and went into hiding, where he essentially remains. The life that he once had is finished, and he hasn't posted on his blog in two and a half years. "Once you are a target," he said, "you are a target for the rest of your life."

With such a range of threats, reversing the damage to freedom of expression will prove difficult, especially as the nation drifts from the secular, liberal democratic, values that inspired Bangladesh's freedom fighters in the 1971 war of independence against Pakistan. "What we achieved in 24 years [struggling] against Pakistan," said Rahman, the Prothom Alo editor, "we lost in 46 years of Bangladesh."

- Asia program coordinator Steven Butler lived and worked in Asia as a foreign correspondent for nearly 20 years, and later was Foreign Editor at the Knight Ridder Washington Bureau. He holds a PhD in political science from Columbia University. 

চট্টগ্রামে কিশোর অপরাধী তৈরির নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক বড়ভাই’


চট্টগ্রামে কিশোর অপরাধী তৈরির নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক বড়ভাই’। যাদের সঙ্গে মিশে বিপথগামী হচ্ছে স্কুলপড়ুয়া কিশোররা। তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে ভয়ঙ্কর অস্ত্র। যা পেয়ে চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ ও মাদকদ্রব্য বিক্রির মতো জঘন্য অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে কিশোররা। 

গত রোববার সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতে হাজির করার পর পুলিশকে গুলির দায়ে আটক ৬ কিশোর সরল মনে এই স্বীকারোক্তি প্রদান করে। শুক্রবার পুলিশকে গুলি করার ঘটনায় শনিবার ও রোববার দুইদিনে ৬ কিশোরকে আটক করে পুলিশ।

যারা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেও একই স্বীকারেক্তি প্রদান করে। স্বীকারোক্তিতে পুলিশকে গুলি করা পিস্তলটি রাজনৈতিক বড়ভাই ফারুকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে। আবার ঘটনার পরপরই ফারুককে পিস্তলটি ফেরত দেয়া হয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দেন। 

ফারুক নগরীর এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা। সে পেশাদার ছিনতাইকারী। তারই নির্দেশে আটক খোকন চৌধুরী (২৪) গুলি লোড করে পিস্তল নিয়ে তার সহযোগী আয়মান জিহাদের বন্ধুকে মারতে যাচ্ছিল। এমন স্বীকারোক্তি দেন খোকন চৌধুরী নিজেই। আদালত তাদের এই স্বীকারোক্তি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেন। 

চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার আবদুল ওয়ারিশ গতকাল সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, শুক্রবার নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইটে রেলস্টেশন সড়ক মুখে তল্লাশি চৌকিতে পাঁচলাইশ থানার এসআই আবদুল মালেককে গুলি করার পর ঘটনাস্থল থেকে আবদুল হাকিম অভি (১৯) এবং দুই দিনের অভিযানে ৫ জনকে আটকের পর সন্ধ্যা ৭টায় সিএমএম আদালতে নেয়া হয়। এরপর আটককৃত ৬ জনই পৃথক পৃথক জবানবন্দি দেন আদালত। পরে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। 

তিনি বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে এ পর্যন্ত ১০ কিশোর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। যাদের বয়স ১৭ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। এদের বেশিরভাগই এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তবে এরমধ্যে একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রও রয়েছে। রয়েছে দুজন  পেশাদার ছিনতাইকারীও।  

এরমধ্যে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে ছিনতাইকারী খোকন চৌধুরী। সে বোয়ালখালী উপজেলার দিলীপ চৌধুরীর ছেলে। তারা ওমরগণি এমইএস কলেজের ছাত্রলীগ নেতা ফারুককেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত। স্বীকারোক্তি মোতাবেক  তাদের ‘বড়ভাই’ ফারুকই তাদের বিপথগামী করে তোলে। বড়ভাইয়ের নির্দেশে তারা সিআরবি এলাকায় প্রতিপক্ষের একজনকে খুন করতে যাচ্ছিল। কিন্তু তল্লাশি চৌকিতে ধরা পড়ার ভয়ে তারা পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যায়। 

একইভাবে মাত্র দু’মাস আগে গত বছরের ১২ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় নগরীর জামালখান এলাকার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে। আদনান হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক বড়ভাই যুবলীগ নেতা এনাম কিশোরদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল।

এভাবে চট্টগ্রাম মহানগরীর সবক’টি স্কুল-কলেজকেন্দ্রিক কিশোররা অবস্থান ভেদে রাজনৈতিক বড়ভাইদের ছত্রছায়ায় নানা অপরাধে লিপ্ত রয়েছে। যারা দিন ও রাতে নগরীর বিভিন্ন সড়কের ব্যস্ততম মোড়, আবাসিক এলাকা, বিনোদন পার্কগুলোতে আড্ডা দেয়। 

নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে এ ধরনের প্রায় তিন শতাধিক কিশোর গ্যাং রয়েছে। যারা হরহামেশাই চুরি-ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণের মতো নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে। আধিপত্য বিস্তারে একে অপরকে খুন করতেও তারা পিছপা হচ্ছে না। 

তিনি আরো বলেন, কিশোর হওয়ায় এসব অপরাধে লিপ্ত হওয়ার বিষয়ে আগে পুলিশের ধারণা ছিল না। ফলে কিশোরদের দিকে পুলিশের নজর তেমন একটা ছিল না। আর এ সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছে রাজনৈতিক বড়ভাইরা। যাদের নিয়ে নির্বিঘ্নে নীরবে নানা অপরাধ সংঘটিত করে যাচ্ছে কিশোররা। এরমধ্যে ইয়াবাসহ মাদক বিক্রি করার বিষয়টিও রয়েছে।   

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকালে কিশোর গ্যাংয়ের গুলিতে আহত নগরীর পাঁচলাইশ থানার এএসআই আবদুল মালেক বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় একই থানার এসআই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। 

এ মামলায় ঘটনার দিন আটক আবদুল হাকিম অভি (১৯), শনিবার নগরীর মুরাদপুর থেকে আটক মাইনুদ্দিন ফরিদ ওরফে রাকিব (১৭) ও নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে আটক জুবায়ের হোসেন প্রত্যয় (১৭) রোববার জেলার আনোয়ারা উপজেলা থেকে আটক খোকন চৌধুরী (২৪) ও আয়মান জিহাদ (১৭) এবং নগরীর রহমান নগর থেকে আটক তানজিল করিম খান মাহি (১৮)কে আসামি করা হয়। 

এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, মামলায় খোকনসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে ৬ কিশোর গ্রেপ্তার হলেও চার জন বাইরে রয়েছে। পুলিশকে গুলি করা পিস্তলটিও উদ্ধার হয়নি এখনো। পিস্তলটির মালিক ফারুককেও খুঁজছে পুলিশ। 

তিনি বলেন, আটক ও আসামি কিশোররা বেশিরভাগই যুবলীগ সন্ত্রাসী কারাবন্দি অমিত মুহুরির অনুসারী। তাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে শুলকবহর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা সোলায়মান বাদশার নামও উঠে এসেছে। তিনি ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি মোহাম্মদ ওয়াসিমের অনুসারী। তারা সবসময় নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ১২ থেকে ১৬ নম্বর বাড়ির সামনে আড্ডা দেয়। এ গ্রুপটির নেতৃত্বে আছে আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের কথিত ছাত্রলীগ নেতা একরাম ও আরিফ।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন বলেন, পুলিশকে গুলি করার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামি সমপৃক্ত বলে আদালতে জবানবন্দি দেয়। তারা ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েক জনের নামও বলেছে। এরমধ্যে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন প্রত্যয় ও সাইফুদ্দিন ফরিদ ওরফে রাকিবের জামিন আবেদন করা হলেও প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগার থেকে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতিসহ পরীক্ষা শেষে তাদের গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত সেইফ হোমে পাঠানোর আদেশ দেন। 

  • Courtesy: Manabzamin Feb 20, 2018

খালেদা জিয়ার সাজা-পরবর্তী রাজনীতি

ক্ষতি হলো আওয়ামী লীগের - কাদের সিদ্দিকী



দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় আওয়ামী লীগ অথবা বর্তমান সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। এ কারণে বিএনপিও নড়াচড়া করার একটা পথ পেয়েছে বলে তার ধারণা।

খালেদা জিয়ার সাজা-পরবর্তী রাজনীতি নিয়ে সমকালের সঙ্গে আলাপকালে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ নেতা কাদের সিদ্দিকী বলেছেন,  ছোট চোরও চোর; বড় চোরও চোর। কিন্তু বর্তমানে নানাভাবে হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি কোটি টাকার তসরুপ হচ্ছে। সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মামলায় সাজা দেওয়ার বিষয়টিকে মানুষ খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না।

বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের ভাষায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর যখন খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরিশালে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। খালেদা জিয়ার শাস্তি সম্পর্কে ওই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন, সাধারণ মানুষ তা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। ওই মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রুজু করা মামলাটি একটি সাধারণ দুর্নীতির মামলা। এই মামলাটিকে ফৌজদারি চরিত্রে থাকতে দিলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সাধুবাদ পাওয়া যেত। কিন্তু রাজনৈতিক চরিত্র দেওয়ায় বিচার ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কাদের সিদ্দিকীর প্রশ্ন- যে বিচারক খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়েছেন, আদেশের সময় তিনি কেন ডিভিশন দেননি? এটা নিয়ে তো কোনো প্রশ্নই হওয়ার কথা ছিল না। আর নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে কেন খালেদা জিয়াকে রাখা হলো? সাব-জেল ঘোষণা করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে তার বাড়িতেই রাখা যেত। এ সবকিছুই সাধারণ মানুষের কথা, তাদের ভাবনা।

কাদের সিদ্দিকীর মূল্যায়ন- খালেদা জিয়াকে একটি সাধারণ দুর্নীতির মামলায় দণ্ড দেওয়ায় আইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিচারালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর কারণ একটাই। বিচারের আগে যদি এ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা না হতো, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুল আলোচিত মামলাটির বিচার নিয়ে কোনো ধরনের সন্দেহ দেখা দিত না। কেউ কোনো প্রশ্নও তুলত না।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেছেন, বিগত দিনের কিছু কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে মানুষ অনেকটাই বিএনপি থেকে সরে গিয়েছিল। এ দেশের মানুষ আর হাওয়া ভবন দেখতে চায় না বলেই অনেক পেছনে পড়ে ছিল বিতর্কিত নেতা তারেক রহমান। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দণ্ড দিয়ে নির্জন কারাগারে পাঠানোর পর তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি অনেকটাই বেড়ে গেছে।

কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের সোজা-সাপটা কথা- মানুষ এক বেলা না খেয়ে থাকলে যতটা কষ্ট বোধ করে, ভোট দিতে না পারলে তার চাইতে বেশি ব্যথিত হয়। তারা গণতন্ত্রের কিছু বুঝুক আর না বুঝুক, ভোট বোঝে। ১৯৪৭ সালে তারা ভোটের মাধ্যমে সিলেটকে পূর্ব পাকিস্তানে এনেছিল। ১৯৫৪ সালে ভোট দিয়ে পাকিস্তানিদের স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েই তারা স্বাধীনতার সূচনা করেছিল। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা অস্ত্র হাতে রক্ত ঢেলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছি।

চলমান রাজনীতিতে বিরাজমান সংকট সমাধানের পথও বাতলে দিয়েছেন আবদুল কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ অর্থাৎ সরকারি প্রভাবমুক্ত সাধারণ নির্বাচনই সমস্যা থেকে উত্তরণের প্রধান উপাদান হতে পারে। এর কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বহু ঝড়-তুফান পাড়ি দিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছেন। সামনে একটি ভালো সাধারণ নির্বাচন করাতে না পারলে তিনি অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।

সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য কাদের সিদ্দিকী আরও বলেছেন, বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি খরচে নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে যদি দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পায়, বিচার বিভাগ সাহসী হয়, আইনের দ্বারা বিচার হয়, সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব অসুবিধায় পড়বেন। কাদের সিদ্দিকী স্মরণ করিয়ে দেন, দেশের অনেক মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট অথবা দল অথবা এই দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে আছে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তাদের সঙ্গে রয়েছে। কিংবা ওই দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আসল বাস্তবতা হলো, নিষ্ফ্ক্রিয় থাকলেও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনও অন্ধকারেই আছে। জাতিও বিভক্ত হয়নি। 

  • Courtesy: Samakal Feb 2018