Search

Sunday, March 11, 2018

একক ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারি - অভিযোগ ছিল গাড়ি চুরির, এখন বড় শিল্পপতি

  • ১০ বছর আগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ইউনুছ।
  • অভিযোগ ছিল গাড়ি চুরির।
  • ইউনুছ এখন ব্যাংকঋণের টাকায় বড় শিল্পপতি।
  • এ্যাননটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুছ।
  • এ্যাননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২২টি।


১০ বছর আগেও অভিযোগ ছিল গাড়িচোর চক্রের নেতা তিনি। ২০০৭ সালে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছিলেন। এর ঠিক তিন বছর পর থেকে তিনি আবির্ভূত হন জনতা ব্যাংকের অন্যতম বড় ঋণগ্রাহক হিসেবে। ব্যাংকটি সব নিয়মনীতি ভঙ্গ করেই তাঁকে উদার হস্তে অর্থ দিয়ে গেছে। আর এখন তিনি বড় শিল্পপতি, ২২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক।

তিনি এ সময়ের আলোচিত গ্রাহক এ্যাননটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউনুছ বাদল। জনতা ব্যাংক তাঁকে ছয় বছরে দিয়েছে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধা। ২০০৭ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের বিশেষ দলের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। ইউনুছ বাদলের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করেছিল তখনকার গণমাধ্যমগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে যে তিনি আসলে সাধারণ ব্যবসায়ী নন। হয়তো দুর্নীতির ওপর ভিত্তি করে তাঁর ব্যবসার শুরু। এ ধরনের লোককে ব্যাংকের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া একেবারেই অনুচিত।’

ইউনুছ বাদলের বিষয়ে কথা হয় গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া ডিবির তৎকালীন চার কর্মকর্তার সঙ্গে। প্রায় ১১ বছর আগে তাঁদের হাতে গাড়ি চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া লোকটি কী উপায়ে জনতা ব্যাংক থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেলেন, সেটি ভেবে তাঁরাও বিস্মিত।

ডিবির তখনকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাড়ি চুরি-ছিনতাই বন্ধ এবং চোরাই গাড়ি ও মোটরসাইকেল উদ্ধারের জন্য ২০০৭ সালের ১৯ মার্চ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের বিশেষ দুটি আভিযানিক দল গঠন করা হয়। দল দুটির নেতৃত্বে ছিলেন ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মাসুদুর রহমান। তিনি এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) দায়িত্ব পালন করছেন। মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৭ সালের ১৭ মে উত্তরা থেকে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজন ইউনুছ বাদলকে তিনি কয়েকটি কারণে স্মরণ করতে পারেন। চোরাই গাড়ি বিক্রির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। পরে পুলিশ সেই মামলা তদন্ত করে অভিযোগপত্র দেয়।

গ্রেপ্তারের পর ২০০৭ সালের ১৮ মে ঢাকা মহানগর পুলিশের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তির শিরোনাম ছিল ‘ডিবির হাতে গাড়ি চুরি সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার’। ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ‘ডিবির এডিসি মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে গাড়ি চুরি-সংক্রান্ত একটি বিশেষ দল ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ গাড়িচোর দলের সদস্য মো. ইউনুছ (বাদল), বিপ্লব, শফিউদ্দীন, শফিকুল ইসলাম ও এ বি এম শামসুল হাসানদের গ্রেপ্তার করে।’

বর্তমানে অবসরে থাকা ডিবির সাবেক এক উপপরিদর্শক প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৭ সালের ১৭ মে তিনিসহ এসআই আবদুল হাকিম, এসআই আকরাম, জাকির ও রাজ্জাক ইউনুছ বাদলকে ধরতে উত্তরায় অভিযান চালান। বাদল তখন একটা দোতলা বাড়ির পুরোটা নিয়ে থাকতেন। তিনি পোশাক কারখানার মালিক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তদবিরও এসেছিল।

ইউনুছ বাদলের বিষয়ে জানতে শুক্রবার ডিবির তৎকালীন গাড়ি চুরি প্রতিরোধকারী দলের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ইউনুছ বাদলকে নিয়ে  তাঁর তখনকার অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো একে উত্তরা থেকে ধরেছিলাম। আমি নিজে ওর বাড়িতে অভিযানে গিয়েছিলাম। তখনই তার কী শানশওকতের জীবন!’

ডিবির তৎকালীন একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (এখন পুলিশ সুপার) প্রথম আলোকে বলেন, ইউনুছ বাদলকে ধরে আনার পর বিএনপির প্রয়াত প্রভাবশালী এক নেতার ছেলে ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ইউনুছের জন্য জোর সুপারিশ করেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল বলে তাঁর সুপারিশ তেমন পাত্তা পায়নি। এমনকি ইউনুছ বাদল কর্মকর্তাদের কাছে তাঁকে গ্রেপ্তারের তথ্য গণমাধ্যমে না দেওয়ার জন্য সরাসরি মোটা অঙ্কের ঘুষ সেধেছিলেন। পরে অবশ্য বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

তখনকার গণমাধ্যমে খবর
ইউনুছ বাদল ও তাঁর চক্রের গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি ২০০৭ সালের ১৯ মে ইত্তেফাক, মানবজমিনসহ কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল বলে জানান কর্মকর্তারা। ইত্তেফাক ও মানবজমিন-এ খবরটি খুঁজে পাওয়া গেছে। ১৯ মের মানবজমিন-এর খবর অনুযায়ী, প্রায় ২০ জনের একটা চক্রের নেতৃত্ব দিতেন ইউনুছ। মানবজমিন-এ ডিবি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘গ্রেপ্তারদের মধ্যে ইউনুছ ওরফে বাদল গাড়িচোর সংঘবদ্ধ চক্রের প্রধান হোতা। তার নেতৃত্বে নগরীতে গাড়িচোর চক্রের ২০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি চুরি করে তাদের নির্ধারিত গ্যারেজ বা মার্কেটে পার্কিং করে লুকিয়ে রাখে।...’

ইউনুছ বাদল সম্পর্কে মানবজমিন-এ তখন লেখা হয়েছিল, ‘...ওই চক্রের মূল হোতা বাদল চার-পাঁচ বছর ধরে গাড়ি চুরির সঙ্গে জড়িত। ওই গাড়ি চুরি করে উত্তরায় দুটি ও টঙ্গীতে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছে। তার তিনটি গার্মেন্টস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বলেও জানা গেছে। এরা গাড়ি চুরি করে প্রথমে উত্তরায় লুকিয়ে রাখে। কখনো এসব গাড়ি নেত্রকোনায় নিয়ে রাখা হতো।...’

ইত্তেফাক-এ ছাপা হওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘...গ্রেপ্তার হওয়া শফিউদ্দীন স্বীকার করেছে ইউনুছের নেতৃত্বে বিভিন্ন মার্কেট, বিপণিবিতান, গ্যারেজ থেকে প্রাইভেট কার চুরি করে আসছিল তারা।...সন্ধ্যার পরে যাত্রী সেজে ট্যাক্সিক্যাব ছিনতাই করে সেটিকে ব্যবহার করে গভীর রাতে গ্যারেজ থেকে গাড়ি ছিনতাই করে তারা।’

এখনকার ইউনুছ বাদল
মো. ইউনুছ বাদলের এ্যাননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২২টি। প্রায় সবই পোশাক ও বস্ত্র খাত-সম্পর্কিত। জনতা ব্যাংকের উদার আনুকূল্য পেয়ে তিনি সম্প্রতি বিপুলভাবে আলোচনায় এসেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, জনতা ব্যাংকের মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ইউনুছ বাদলের প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধা, যা মোট মূলধনের প্রায় দ্বিগুণ। এটিকে বলা হচ্ছে একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারি। মূলত ব্যাংকই অতি উৎসাহী হয়ে একের পর এক ঋণসুবিধা দিয়েছে। জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ছাড়াও ইউনুছ বাদল পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন একাধিক মন্ত্রী, ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ব্যাংকের সিবিএ নেতাদের। ‘একক ব্যক্তির ঋণে বৃহত্তম কেলেঙ্কারি’ শিরোনামে এই নিয়ে প্রথম আলোতে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল গত ৫ ফেব্রুয়ারি। 

২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ বছর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারকাত। তাঁর সময়েই ইউনুছ বাদলকে ঋণের নামে অর্থ দেওয়া হয়। আর নিয়মনীতি না মেনে এভাবে ঋণ দেওয়ায় বিপদে ব্যাংক, গ্রাহকও ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।

আবুল বারকাতের পরে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান। তিনি সে সময় প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে তারা আরও ঋণ চেয়েছিল, আমি দিইনি। এ কারণে আমি তাদের শত্রুতে পরিণত হয়েছি। আর ঋণের প্রায় সবই আগের চেয়ারম্যানের (আবুল বারকাত) সময় দেওয়া।’

প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এ নিয়ে কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তাঁর মন্তব্য ছিল, জনতা ব্যাংক একসময় সেরা ব্যাংক ছিল। কিন্তু আবুল বারকাতই ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন।

২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে ছয় বছর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এস এম আমিনুর রহমান। এ্যাননটেক্স গ্রুপের বড় অংশ ঋণ তাঁর সময়ে দেওয়া। গতকাল শনিবার রাতে আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ইউনুছ বাদল গাড়ি চুরির দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, এটা কখনো শোনেননি। এ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলে সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত গতকাল ফোন ধরেননি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এম হাফিজউদ্দিন খান পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিস্মিত হচ্ছি এবং বিপন্ন বোধ করছি। জনতা ব্যাংক কী করে একজন গ্রাহককে এত টাকা দিয়ে দিল? তা-ও আবার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে? আবার এমন একজন ব্যক্তিকে, যিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ব্যাংকে এত কেলেঙ্কারির পর আবার কেলেঙ্কারি!’

  • প্রথম আলো/ ১১-৩-১৮

প্রেসক্লাবে গ্রেপ্তার - আদালতের দিকনির্দেশনার লঙ্ঘন ঘটেছে

মিজানুর রহমান খান




জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারীকে পরিচয় না দিয়ে গ্রেপ্তারের ঘটনা থেকে মনে হয়, আমাদের শাসকেরা যেন কোনোভাবেই মানতে রাজি নন যে গ্রেপ্তার মানবিক হতে পারে। ডিবি নামটির মধ্যে এককালে একটা পরিশীলিত ও সৌম্য ভাবমূর্তির বিষয় ছিল। কিন্তু তারাও ধীরে ধীরে পোশাকি বাহিনীর মতো অহেতুক উগ্রতা দেখাতে চাইছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের মতো একটি স্থান থেকে একজন রাজনৈতিক কর্মীকে যেভাবে অস্ত্র উঁচিয়ে গ্রেপ্তার করা হলো, যেখানে স্বীকৃতমতে তারা কোনো ‘বন্দুকযুদ্ধের’ আশঙ্কা করেনি, সেটা নজিরবিহীন।


ওই গ্রেপ্তারের ঘটনায় বাংলাদেশ বনাম ব্লাস্টের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক ঐতিহাসিক রায়ে দেওয়া দিকনির্দেশনার লঙ্ঘন ঘটেছে। রায়ে বলা আছে, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো কর্মকর্তা তাঁর পরিচয় প্রকাশ করবেন এবং যদি দাবি করা হয়, তাহলে গ্রেপ্তার ব্যক্তি বা গ্রেপ্তারের সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে তিনি তাঁর পরিচয়পত্র প্রদর্শন করবেন।’

গত মঙ্গলবার ডিবির প্রেসক্লাব অভিযানে পরিচয়পত্র দূরে থাক, উপস্থিত সাংবাদিকেরা আতঙ্কিত হয়ে ভাবতে বসেছিলেন, এই অস্ত্রধারীরা কারা? নাশকতাকারী ভেবে অনেকে চিৎকার শুরু করলে তাঁরা বলেছেন ‘আমরা পুলিশ’। পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেছেন, ‘অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে মানুষকে অবশ্যই অস্ত্রধারীর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত করাতে হবে।’ একটি ডিবি টিম একজন ফেরার আসামিকে গ্রেপ্তারে কেন অনাবশ্যক শক্তি প্রদর্শন করল, সে বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন ও বিস্ময় দেখা দিলেও তার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এই নিবন্ধকারের কাছে বারীর স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামী ৯০টির বেশি ‘রাজনৈতিক’ মামলার আসামি, দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। পুলিশ এত দিন যাঁকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হলো, তাঁকে এবার প্রেসক্লাবে পেয়ে এভাবে শোরগোল ফেলে ধরার দরকার পড়ল কেন?


ওই গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনের বহুবিধ লঙ্ঘন ঘটেছে। ১৯৯৮ সালে শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে ডিবি সদস্যদের হাতে শামীম রেজা রুবেল হত্যাকাণ্ড ঝড় তুলেছিল। তখন আওয়ামী লীগ সরকার বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন করেছিল। সেই কমিশনের আলোকেই দুই বছর আগে আপিল বিভাগ গ্রেপ্তার ও রিমান্ড সম্পর্কে চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।

প্রেসক্লাব থেকে সাদাপোশাকে ডিবির অভিযান সেই বিচার বিভাগীয় কমিশনের কথাই স্মরণ করিয়ে দেবে। বিচারপতি হাবিবুর রহমান খান কমিশনের সুপারিশের অনেকটা বাস্তবায়ন করেছিল আওয়ামী লীগ। খান কমিশন তার সুপারিশে বলেছিল, গ্রেপ্তারের পর গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে কী কারণে এবং কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, পুলিশ তা নিয়ে লুকোচুরির আশ্রয় নেবে না। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে তা জানাতে হবে অথবা তাঁর মনোনীত আইনজীবীকে সংবাদ দেবে। ব্লাস্টের মামলায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের বরাতে ২০০৩ সালে হাইকোর্টের গাইডলাইনে বলা ছিল, গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে হবে। বারীকে গ্রেপ্তারের ১১ ঘণ্টা পরে বারীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেছেন, পুলিশের তরফে কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি। ফোনে তিনি পুলিশ কর্মকর্তা মি. দীপককে পেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি জানাননি ঠিক কোন মামলায় তাঁকে ধরা হয়েছে।

খান কমিশন এটাও বলেছিল, ‘যদিও ধৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটবর্তী হাকিমের কাছে পাঠানোর বিধান আছে, তবু স্থান-কালভেদে অধিক সময় থানাহাজতে রাখার প্রয়োজন না থাকলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’ দুপুর ১২টার দিকে ধরার পরে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করার কোনো চেষ্টা ছিল বলে জানা যায়নি।

ব্লাস্ট মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২৪ মে ২০১৬ তারিখে দেওয়া রায়ে বলেছিলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ যখন কেবল অত্যন্ত দরকারি হয়ে পড়বে এবং তাদের কর্তব্য পালনে প্রয়োজনের সীমা পর্যন্ত তারা শক্তি প্রয়োগ করতে পারে।’

প্রেসক্লাবের ঘটনা থেকে প্রতীয়মান, সরকার বা পুলিশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা সম্পর্কে উদাসীন, এটা সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোকে অবহিত করানো দরকার। এতে বলা আছে, ‘কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোনো ধরনের উসকানি কিংবা কোনো ধরনের নির্যাতন বা বেদনাদায়ক কিছু হতে দেওয়া সহ্য করবে না কিংবা অন্য কোনো প্রকারের নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি কিংবা কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উচ্চতর আদেশ প্রয়োগ করবে না কিংবা একটি যুদ্ধ বা একটি যুদ্ধের হুমকি, জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বা অন্য কোনো জরুরি অবস্থার (পাবলিক ইমার্জেন্সি) মতো ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিকে নির্যাতন কিংবা অন্যান্য নিষ্ঠুরতা, অমানবিক কিংবা অবমাননাকর আচরণ কিংবা শাস্তিদানের যৌক্তিকতা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।’

১৯৯৮ সালে খান কমিশনের নির্দেশনা শুধরে ২০১৬ সালের রায়ে যা লেখা হয়েছিল, তার বিচ্যুতি প্রমাণিত বলা যায়। কারণ এতে বলা আছে, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন সদস্য কর্মকর্তা কাউকে গ্রেপ্তার করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিন্তু অনধিক ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের স্থান, সময় এবং অন্তরীণ রাখার স্থান সম্পর্কে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নিকটতম আত্মীয়কে এবং তেমন আত্মীয়ের অনুপস্থিতিতে গ্রেপ্তার ব্যক্তির সুপারিশমতে তাঁর কোনো বন্ধুকে অবহিত করবেন।’ এমনকি এ কথাও বলা আছে, ‘বাসা বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হলে তাঁর নিকটাত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহক মারফত বিষয়টি জানাতে হবে। শফিউল বারীকে গ্রেপ্তারের পর এটা তামিল হয়নি। ডিবির ওই টিম এটা জানত কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন বটে। তবে না জানাটা দাবি করা হবে দোষণীয়।

বারীর স্ত্রী বলেছেন, তাঁকে বা তাঁদের আইনজীবীদের বারীর সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। অথচ সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, ‘আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি যদি ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে তাঁর পছন্দ অনুযায়ী একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের কিংবা তাঁর কোনো নিকটাত্মীয়র সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করবেন।’

সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্বাচনী বছরটিতে মনে হচ্ছে ওই নির্দেশনা পালন করার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কুম্ভকর্ণদের ঘুম ভাঙাতে পুনরায় বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ দরকার পড়বে।

  • Courtesy: Prothom Alo Mar 10, 2018

Rise in per capita income no yardstick of development: Kamal Hossain


Staff Correspondent

Lawyer Kamal Hossain addresses a discussion on equity and citizen rights at Bishwa Sahitya Kendra in Dhaka on Saturday. — New Age photo
Senior Jurist Dr Kamal Hossain said Saturday that per capita income rise could not be the yardstick of development as it was worked out by aggregating high income and low income groups.
He called per capita income as a misnomer as the disparities in earnings were averaged to work it out.
Speaking at the inaugural session of national conference on ‘Access to Justice for All,’ he said, in a society marked by disparities, most of the resources were monopolized by 10 per cent of the rich class while the incomes for the 90 per cent keep on getting less and less.
he conference was hosted by 28 legal aid and human rights organizations at Bishwa Sahitya Kendra in the capital.

Kamal Hossain said that only when common people have access to basic needs and rights it could be
said that the nation achieved economic development in ;line with the goals of the War of Independence.
He said that as the nation could not yet for institutionalize democracy, the movement for the institutionalization of democracy still continued.
Enactment of the Right to Information Act being a revolutionary change in itself, he called for ensuring common folks’ access to information.
He said that common folks were less demanding of their rights and the authorities were not interested to provide them their rights.
Due to colonial legacy people love to think that government and not they were the state’s owners.
Kamal said that the legal aid and human rights organizations had a lot to do to bridge this gap.
In his keynote paper, Jagannath University assistant professor SM Masum Billah said that he considered the partisan legal community as an obstacle on the common people’s way to access justice.
Quoting the findings of a research, Bangladesh Legal Aid Services Trust honorary executive director Sara Hossain said that in this country hardly two per cent of victims of violation of rights usually seek justice.

Presided over by Bangladesh National Women Lawyers’ Association president Fawzia Karim Firoze, the conference was also addressed by Wave Foundation executive director Mohsin Ali and Nagarik Udyog chief executive Zakir Hossain.
   >NEWAGE/3-11-2018
 

Saturday, March 10, 2018

An ugly show of police excess

Where is the democratic space?


We are appalled at the way law enforcers disrupted a peaceful sit in by the BNP on Thursday by brutally swooping on a Chhatra Dal leader they wanted to arrest. During the scuffle the Chhatra Dal activist was manhandled by the police and his clothes torn off. Other members of BNP were hurt in the tussle. What could possibly warrant such violent behaviour from those whom we have entrusted to be protectors of law and order?

First of all, the sit in by the BNP was a peaceful one hence there was no reason for any kind of police force to be employed. Secondly, if it is to arrest a BNP party man because he had cases against him, why did it have to be at that particular venue when the main opposition was holding a sit in?

Clearly the police action was politically motivated and aimed at foiling the opposition's programme.

We are dismayed and concerned to see the increasing tendency to diminish the country's democratic space. In a democracy it is a given that opposition parties will have the right to assemble and carry out political programmes. But what we have seen is that every time the BNP has tried to hold a programme it has been disrupted in one way or another by state forces. The government has denied permission to the BNP to hold rallies while allowing its own party to hold them without any objection whatsoever. Even protests or rallies by other groups have been clamped down upon with unnecessary force. These are anomalies in a democracy and contradict the very principles upon which our constitution is based.

If indeed the government is serious of living up to the claim of being democratic it must fulfil basic prerequisites. Allowing opposition parties by giving them the space to hold peaceful programmes is a primary one. Political intimidation is hardly conducive to holding a free and fair election, something that the ruling party has promised the people.

  • The Daily Star/10-03-18

TRUE PERSPECTIVE OF MARCH 7 UNDER THREAT Should today’s AL be so averse to democracy?

Shahid Islam


History must be savoured and passed onto the posterity as the true portrayal and reflection of the past. Yet, being ruled by others and being self-ruled making tectonic differences in terms of how the rules of law get applied and administered; how the power is shared and sustained; and how dissent is dealt with; history too appears in different shades and colours under diverse circumstances to blunt the truth, though momentarily.

In today’s Bangladesh, power can be grabbed and preserved arbitrarily; dissent can be disenfranchised by coercion; and, lessons of history can be re-written to inspire a budding generation to believe what is not true. Then again, who defines what truth is? More often than not, the victors impose their own version of truth on the vanquished. That is the main irony of history, and that’s what is making us concerned.

AL’s tradition

Truth is universal, and it’s that narration which accords with the factsthe realities. The true significance of March 7 in the life of independence Bangladesh lies in the fact that Sheikh Mujib that day informed the Pakistani military junta of his intent and desire to break free of Pakistan unless the democratic wills of the majority Pakistanis were respected, and, power handed over to the Awami League (AL) that had won the December 1970 election.

Was Mujib ready to wage such a struggle against the mighty military forces of Pakistan, if needed? Militarily he was not, but politically he was; given that almost 95 per cent of East Pakistanis were with him; although not all of them had voted for the AL. Why then the Pakistani regime did not take into cognizance the power of the Bengali masses and, instead, resorted to a military crackdown which transformed a sheer political conundrum into a regional war between India and Pakistan?

Mujib knew his strengths and weaknesses. But he found himself clinched between devil and a blue sea; as did Bhutto and Yahya, the other two protagonists of the time. Since its inception in Dhaka in 1949, the All Pakistan Awami Muslim League fought under Bengali nationalists like Maolana Abdul Hamid Khan Bhashani, Shawkat Ali, Yar Mohammad Khan, Shamsul Huq, and, was joined later by HS Suhrawardy to establish democracy in Pakistan.

On April 17, 1953, the Awami Muslim League became Awami League (AL) and its co-founder, Sheikh Mujibur Rahman, emerged as its invincible leader to broach in 1966 the vision of creating the federation of East and West Pakistan; to keep this Muslim predominant nation alive and kicking. Mujib also knew, only the mandate of the masses could keep a geographically and ethnically divergent, disjointed, nation-state stitched together. He was a democrat, as well as a maverick statesman.

Military’s predicaments

The political gambit adopted by Pakistani military junta was not based on any such public expectations and aspirations. That is what made Mujib’s 7th March speech a historic colossus to enable the Bengali nation to wage a war of liberation, and, snatch independence with the help of Pakistan’s sworn enemy, India.

The military junta’s predicaments, or foolishness, were crass, lamentable and somewhat unavoidable too. Yahya Khan knew he had to overcome three seemingly insurmountable obstacles to keep Pakistan glued together. First: He must allow the election to be free, fair and inclusive. Second: He must show a sincere intent to hand over power to the winning party. Third: He must convince the winning party that any constitutional impediments stirred in the process must be negotiated through discussions.

Handling the crisis

What very few Indian or Bangladeshi historians admit is that the constitutional crisis created by the December 1970 election was almost intractable. Yet, on January 14, 1971, Yahya Khan declared: “Sheikh Mujibur Rahman is going to be the future prime minister of the country.” The failure of a series of negotiations in the following weeks led President Yahya Khan to revise his stance and declare on March 26: “Sheikh Mujibur Rahman’s action of starting his non-cooperation movement is an act of treason ....He has attacked the solidarity and integrity of this country. This crime will not go unpunished.” This threat was mostly in reference to Mujib’s 7th March declaration that “struggle this time is for emancipation; struggle this time is for independence.”

The call for emancipation referred to the implementation of the six point charter and obtaining regional autonomy for all regions of Pakistan upon Mujib becoming the Prime Minister. The threat of independence was in response to the military Junta’s negation to hand over power to the legally elected AL.

As the threat of becoming totally independent of Pakistan mostly emanated from the power of the so called Legal Framework Order (LFO) of 1970 that had empowered the President to delay power transfer under constitutional exigencies. Mujib feared the President might declare the entire election outcome null and void, invoking constitutional hamstrings of any hues.

Constitutional crisis

The constitutional crisis emanated from the facts that (1) Mujib would embark upon a transition upon becoming the Prime Minister, based on his professed six-point demands that included regional autonomy for the diverse regions of Pakistan. (2) In Punjab and Sind, ZA Bhutto-led Pakistan People’s Party (PPP) won clear majority in a manner that tuned into a victory in entire West Pakistan, despite the nationalists’ victory in Baluchistan and NWFP. (3) The AL didn’t win a single seat in the West, nor had Bhutto’s PPP gained a single seat in the East. (4) Yet, the AL had won 167 seats against the PPP’s 88 in a 313 member parliament and deserved to rule Pakistan as the party first past the post. Besides, the AL had on January 3 administered an oath of its elected MPs to comply with the six point charter, hence implement the regional autonomy blue print upon assuming power.

Bhutto aligns with army

The military junta took ZA Bhutto on board to overcome this crisis and demanded that the AL modify its six-point charter on which elected AL MPs had taken oath on March 3 to implement, and, cooperate with the military regime to waive the LFO’s stipulated 120 days deadline to frame a new constitution. These two demands were conveyed to Dhaka by Bhutto, as a precondition to Bhutto coming to Dhaka to join the National Assembly session, the first call for which was slated for March 3, then postponed on March 1; prompting the AL MPs to take oath to implement the six point charter on March 3.

Somewhat surprised by the AL’s strategy to take oath from MPs on March 3 to implement the six point charter, Yahya called for a Round Table Conference of the leaders of all parties represented in the National Assembly to be held on March 10, which Bhutto agreed to join, but Mujib rejected. That is another reason why the speech by Mujib on March 7 carries more importance, as people of East Pakistan by then was prepared go for the option of independence.

It’s much clear from hindsight that the military junta’s dependence on the LFO, and alignment with Bhutto, to negate the verdict of the people led to the eventual dismemberment of Pakistan. To the contrary, Mujib, the AL and the masses of Bangladesh won their freedom and independence by scrupulously adhering to the democratic norms until the war was foisted upon the nation by the Pakistani military on the night of March 25.

Today, the people of Bangladesh are crying for democracy, which the AL under Mujib’s daughter, Sheikh Hasina, is unwilling to offer under pretexts that in retrospect make even Yahya Khan look much dwarfed and diminutive. That too constitutes a dismal irony of history.

  • The Holiday/09-03-18 

Tk 94 billion capital gobbled under political influence

Shakhawat Hossain


Bangladesh Bank has recently presented a list of top twenty five loan defaulters to the Parliamentary Committee on Finance Ministry. However, the central bank has not yet unveiled the names and profiles of top twenty five loan borrowers who obtained enormous figures of loans from different banks reportedly by submitting insufficient mortgages and cashing in the political influence . 

According to sources, these loan recipients are highly influential and they have robust control over the boards of directors in most of the state-run and private banks, relevant sources have informed.

The parliamentary committee, has, however, asked BB to submit a report after detecting the barriers in realising the default loans and also sought suggestions within next 45 days to reforms the laws to stop loan defaults. Besides, the committee asked to submit a detailed report on the defaulters with their family identification and how much they have taken in loans from which bank.

Finance Minister also stated that the banking arena is heavily inflicted with bad debts of 65 thousand crore taka. The total sums of defaulted loans have in the meantime reached 1 lakh 35 thousand crore taka including Bangladesh Bank’s written off debts, financial sources have stated.

The amount of defaulted loans of top 25 defaulters reached BDT 9,696 crore up to September 2017. According to Bangladesh Bank’s list, the top default borrowers include Mohammad Ilias Brothers (BDT 889.49 crore), Quantum Power Systems Ltd (BDT 558.9 crore), Jashim Vegetable Oil Ltd (BDT 547.95 crore), Max Spinning Mills (BDT 525.60 crore), Benetex Industries (BDT 516.94 crore), Dhaka Trade Housing (BDT 485.29 crore), Anwar Spinning Mills (BDT 474.37 crore), Siddique Traders (BDT 428.57 crore), Yasir Enterprise (BDT 414.80 crore), Alfa Composite Towels Ltd (BDT 401.73 crore), Legend Holdings (BDT 347.85 crore), Hallmark Fashion Ltd (BDT 339.34 crore), Mac International (BDT 338.74 crore), Monno Fabrics (BDT 338.37 crore), Fair Trade Fabrics (BDT 322.4 crore), Saharis Composite Towel (BDT 312.96 crore), Nurjahan Super Oil Ltd (BDT 304.49 crore), Keya Yarn Ltd (BDT 292.53 crore), Saleh Carpet Mills (BDT 287.1 crore), Fair Yarn Processing Ltd (BDT 273.16 crore), SK Steel (BDT 271.48 crore), Chowdhury Knitwear (BDT 269.38 crore), Help Line Resources Ltd (BDT 258.30 crore) Six Seasons Apartment Ltd (BDT 254.57 crore ) and Bismillah Towels Ltd (BDT 243.84 crore). 

Financial sources have further revealed that voluminous amounts of loans clinched by big borrowers are often being rescheduled and written off by the central bank to give them undue privileges in violation of banking ethics. Bankers have said that a defaulted loan can be rescheduled up to highest three times but some loans are being rescheduled ten to twelve times due to nepotism and political pressure which is a gross violation of banking principles.

AMA Muhith had also informed Parliament last week that seven banks are undergoing a hazarded plight with capital deficit reaching over 9,000 crore taka. Among these seven banks there are four state-run banks while another three banks are private ones. On the other hand, managing directors of different banks have reportedly asked further for 20, 000 crore taka from the government to overcome their capital crisis.

According to media reports, seven banks of Bangladesh were operating with capital deficits totalling over Tk 94 billion until September last year. The total amount of capital deficit in state-owned banks Sonali, Rupali, Janata and BASIC was more than Tk 76.26 billion. Privately-owned Commerce Bank, Farmers Bank, and ICB Islamic Bank‘s total capital deficits were over Tk 17.91 billion. The information on the banks’ capital deficits were revealed in the parliament following a query by independent MP Abdul Matin on February 26. According to Finance Minister AMA Muhith, the government gave the state-owned banks Tk102.72 billion recapitalisation facility from 2005-06 to 2016-17, which were already added to the banks as capital.

Against such a large-scale banking meltdown in the country, national mass media have widely reported that Sonali Bank, Janata Bank, Agrani Bank, Rupali Bank and BASIC Bank have become safe havens for rule violators as their boards illegally dictate the loan approval process and thus sources of plundering public money by some ‘businessmen’ having close links with the ruling Awami League. It is now common knowledge that such plundering of public money could take place for lack of transparency in credit approval, credit administration and credit oversight, poor selection of borrowers, politically motivated lending and negligence in risk management. All these failures of the state-owned banks also squarely fall on the government, which sets up the bank boards, mostly with people of a partisan bias, to apportion favour among influential quarters of the party in power. The prevailing situation is so alarming that, without prosecuting the financially errant directors, it will be mere rhetoric to talk about curbing massive corruption engulfing the country.

Who is to be blamed?

As augmentation of defaulted loans has hit the country like a plague, some nagging questions have raised in the mind of the countrymen as to where Tk 94 billion capital have gone? Who are behind the scene of all the bank scams what would be punishment for them? It should be scrutinized for what reasons information about influential loan borrowers is not being exposed. Proper actions cannot be taken against financial culprits if the authorities do not disclose relevant details.

These questions are also being validly raised by the countrymen when the “helpless” finance minister openly admits that the government is to blame for the rising loan defaults at state banks in the last 9 years.

The people called for punishment for people involved in corruptions and scams like Hallmark scam, Bismillah Group scam, BASIC Bank and Janata Bank scams, Bangladesh Bank reserve heist and share market scams, which that shook Bangladesh, to prove that the government wanted to curb corruption.

It is certainly sure that politically appointed most board members are reportedly involved in the ongoing loan scam remained outside the purview of any legal or procedural action proves that incumbents are not committed to contain the corruption in the sector. But what is the reason behind? Such a troublesome question is being openly raised soon after the country’s major opposition leader and former Prime Minister Khaleda Zia landed in jail on February 8 after a makeshift court sentenced her to five years in jail in a graft case filed during the military-controlled regime in 2008. 

In the evolved circumstances billions of taka is being looted in the country, but one hardly hears of any cases regarding such embezzlement. In terms of money, the charges against Begum Zia are nothing in comparison. Charges against a politician who had been at the helm of government are definitely serious, but there was no need to settle the case before the election. However, that was given priority and this has made a participatory and credible election uncertain.

Though the Anti-Corruption Commission (ACC) has so far brought charges or arrested 41 bankers for their alleged involvement in the loan scams, including embezzlement of Tk 3,700 crore by Hallmark Group from Sonali Bank and Tk 6,000 crore from BASIC Bank, the commission, however, not yet brought charge against directors including former chairman of BASIC Bank chairman Sheikh Abdul Hye Bacchu.

In most cases, managerial level bankers are facing charges. While the bankers in question certainly have certain responsibilities, they appear to be used as scapegoat to intentionally protect the politically appointed board members from facing legal action for their financial frauds. When asked about the inaction of the ACC in this regard, the response of the ACC lacked any clarity.

Even members of the parliamentary body on finance raised questions about the role of ACC saying that it is ‘mysterious’ why it has failed to prosecute the mastermind of the loan scams. In this backdrop when the involvement of people closely linked with the political incumbents are making headlines of media since 2009, the government in fact has taken steps to prevent information on loan scam be made public, instead of bringing the mastermind of loan scam to justice. In a directive of the financial division on February 8, it has asked state-run financial entities to check against leak of ‘confidential’ information — an order appears to be an effort to hide issues of national importance than to redress the prevailing crisis.

Besides, all people of the country have rights to know what is happening in the banking system including loan disbursement. All the defaulted and borrowed money belongs to the country’s citizens. Therefore, there is no valid point in hiding information about bank loans.

Why JS passes ‘controversial’ banking companies act?

Most interestingly and surprisingly, national Parliament on January 16, 2018 passed the ‘controversial’ Banking Companies Act-2018 without bringing any change to the proposed law, which allows four members of the same family to sit on the board of a commercial bank and the directors to hold their posts for nine years consecutively. Despite protests from various quarters, the government has passed the law to benefit some directors of banks.

Finance Minister Abul Maal Abdul Muhith placed the bill before the House seeking its immediate passage. The House, with Speaker Shirin Sharmin Chaudhury in the chair, passed the bill by a voice vote rejecting all the amendment motions put forwarded by the opposition lawmakers.

Economists and noted bankers opposed the proposed law saying it would hurt the interest of depositors. They said the government brought the amendments for the benefit of the businessmen. ‘It would turn the banks into family concerns as general shareholders and clients have been strongly condemning the decision, they observed.

Why Bangladesh Bank heist report delayed again?

Meanwhiel, the submission of the investigation report on the digital heist of the central bank, which is one of the biggest cyber heists in the history, has been deferred once again. The Dhaka Metropolitan Magistrate’s Court has fixed April 1 as the new date after the investigation officer failed to file the report on February 28. Hackers pulled off one of the biggest cyber heists in history when they stole $81 million from Bangladesh Bank’s account with the Federal Reserve Bank of New York in February 2016. Bangladesh Bank’s Accounts and Budgeting Division Joint Director Jubaer Bin Huda filed a case with Motijheel police on March 15 that year over the heist. The court had ordered CID to investigate the case and file a report.

“Govt partly to blame for state banks’ soured credit”

Meanwhile, Finance Minister AMA Muhith had admitted that the government is to blame for the rising loan defaults at state banks. “Classified loans are very high,” the minister said at Sonali Bank’s Annual Conference on February 3, 2018.

“The government is partly at fault. We often put pressure on the six (state) banks. As Sonali Bank is the largest bank, it faces the most pressure.”During a question-answer session in parliament, Muhith said banks had failed to recoup Tk 656 billion from top borrowers in the past 10 years. Classified loans amounted to Tk 725 billion, he had added. The Awami League was in power for nine of the 10 years Muhith discussed. Bad loans are roughly twice the cost of the Padma Bridge. “It is your main duty to know your customers and scrutinise any proposal to the best of your ability. Future success depends on project planning.”

“Opposition” MP urges PM to sack failed ministers

“Opposition” lawmaker Ziauddin Ahmed Bablu in Jatiya Sangsad on February 28 came down hard on the finance minister and urged Prime Minister Sheikh Hasina to sack ‘failed’ ministers for the interest of the government. Standing on a point of order, Bablu asked for formation of a bank commission to identify irregularities in the banking sector. The Jatiya Party MP quoted finance minister AMA Muhith as saying in a statement two days earlier that the banks had Tk9,500 crore capital deficits and questioned where the capital had gone. He said that the capital was being provided by taxpayers and it was their money.

Besides, esteemed citizens and financial experts have stressed that the country’s people deserve to know in details about all loan defaulters and loan recipients. Hiding information about people who receive big amounts of loans is a major obstacle for the establishment of accountability and good governance in banking and financial activities, monetary analysts have said.


  • The Holiday/09-03-18


Thursday, March 8, 2018

স্বাধীনতার চেতনা শব্দটি এখন বুলিতে পরিণত হয়েছে



বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা’ শব্দটি এ দেশে এখন বহুল প্রচলিত একটি বুলিতে পরিণত হয়েছে। কথায় কথায় অনেকেই তোতা পাখির মতো এই শব্দটি উচ্চারণ করছেন, ব্যবহার করছেন। কিন্তু বাস্তবে তাদের বেশির ভাগই স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করেন না।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তিই ছিল স্বাধীনতার মূল চেতনা। ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে, ধনিক শ্রেণির বিরুদ্ধে, বৈষম্য এবং শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করে একটি সমঅধিকারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণের প্রত্যাশায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু আমরা বাস্তবে কী পেয়েছি? মঙ্গলবার রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। আলোচনায় অংশ নেন - প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু এবং সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরের মাথায় এসে আমরা দেখছি, নব্য ধনিক শ্রেণির জন্ম হয়েছে। বৈষম্য বেড়েছে। ভারসাম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সব সম্পদ মুষ্টিমেয় একটি গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। সম্পদশালীরা ক্ষমতাও নিয়ন্ত্রণ করছে। একসময় সাধারণ মানুষ জনপ্রতিনিধি হতে পারত। এখন কোটিপতি না হলে নির্বাচন করা যায় না। সত্তরের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচনে আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কালীগঞ্জসহ কয়েকটি জায়গায় ঘুরেছি। ভোটে জনগণের সম্পৃক্ত দেখেছি। টাকা খরচ করতে হয়নি। এখন ২ কোটি টাকার নিচে নির্বাচন হয় না। সাধারণ মানুষ ভোটে দাঁড়াতে সাহস করে না। যাদের হাতে টাকা আছে তারাই ভোট করে, নির্বাচিত হয়। সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে। নীতির রাজনীতি এখন বিলুপ্তির পথে।’

অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, বঙ্গবন্ধু-তাজউদ্দীনের মতো নেতাদের বাড়ি গাড়ি ছিল না। সম্পদ ছিল না। এখন ছাত্র নেতারাও কোটি টাকা দামের গাড়িতে চলেন। তাদের সম্পদের অভাব নেই। এখন দল ক্ষমতায় এলেই অনেকে নিজের আখের গোছান। সম্পদশালী হন। এর নাম স্বাধীনতার চেতনা না। দেশের বেশির ভাগ শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষকে অস্বীকার করে স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন করা যাবে না।

  • সুত্রঃ যুগান্তর 


নারী ও শিশুরা বিচার পায় না


২০০৭ সালের এক সন্ধ্যায় ঢাকার প্রান্তে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফিরছিল ১৩ বছরের একটি মেয়ে। পরিচিত দুজন তরুণ তাকে ডেকে নিয়ে সারা রাত আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। এই অভিযোগে মায়ের এজাহারে মামলা হয়। ডাক্তার ধর্ষণের আলামত পেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ এক আসামির হদিস বের করতে না পারায় তিনি অব্যাহতি পান। অন্যজন প্রায় আট বছর বিচার চলার পর সাক্ষীর অভাবে খালাস পান। মেয়েটির পরিবার বলছে, দুজনই এখনো এলাকায় আছেন।

২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর বিকেলে ভাটারা এলাকায় বাড়ির পাশের দোকানে গিয়েছিল নয় বছরের মেয়েটি। বাবা পরদিন কাছের এক ডোবায় তার বস্তাবন্দী লাশ পেলেন। মেয়েটিকে কেউ ধর্ষণ করার পর গলা টিপে মেরেছিল। পরপর ছয়জন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা মামলাটির তদন্ত করেন। চারজন গ্রেপ্তারও হয়। কিন্তু সর্বশেষ কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তাদের অব্যাহতি চান। তিনি লেখেন, আগের তদন্তে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। মেয়েটির বাবা এই প্রতিবেদনে নারাজি দিয়েছেন।

শ্যামলীর ১৩ বছরের পিংকীকে উত্ত্যক্ত করতেন এলাকার দুই যুবক। ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি পাড়ার ওষুধের দোকানে তাঁরা মেয়েটির হাত ধরে টানাহেঁচড়া করেন, চড়-থাপ্পড় মারেন। ঘরে ফিরে পিংকী আত্মহত্যা করে, কারণটা চিরকুটে লিখে যায়। অভিযুক্ত দুজন গ্রেপ্তার হয়ে বছর না ঘুরতেই জামিন পেয়েছেন। সাড়ে সাত বছর ধরে বিচার চলছে। সাক্ষ্য দিয়েছেন শুধু তিনজন আত্মীয়।

পিংকীর পরিবার মধ্যবিত্ত। বাকি দুটি নিম্নবিত্ত। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা এই মামলাগুলোর বিচার হচ্ছে একই নামের ট্রাইব্যুনালে।

ঢাকা জেলার পাঁচটি ট্রাইব্যুনালে আসা গুরুতর ছয়টি অপরাধের মামলা নিয়ে প্রথম আলোর প্রায় দেড় বছরের অনুসন্ধান বলছে, বিচারের পরিস্থিতি এ রকমই। পুলিশ আসামিদের খুঁজে পাচ্ছে না অথবা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাচ্ছে না। পুলিশ আর সরকারি কৌঁসুলিরা (পিপি) সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করে মামলা জিততে পারছেন না। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ধর্ষণের জন্য হত্যা, যৌতুকের জন্য হত্যা, আত্মহত্যায় প্ররোচনা আর যৌন পীড়নের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রেও না।

ট্রাইব্যুনালগুলোর বিচারিক নিবন্ধন খাতা থেকে প্রথম আলো এই ছয় অপরাধে ২০০২ থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত আসা ৭ হাজার ৮৬৪টি মামলার প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। তখনো পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছিল ৪ হাজার ২৭৭টি মামলা। সাজা হয়েছিল মাত্র ১১০টি মামলায়। অর্থাৎ বিচার হয়েছিল ৩ শতাংশের কম ক্ষেত্রে। বাকি ৯৭ শতাংশ মামলার আসামি হয় বিচার শুরুর আগেই অব্যাহতি পেয়েছে, নয়তো পরে খালাস হয়ে গেছে।

মামলাগুলোর বেশির ভাগ থানায় করা, কয়েক শ মামলা হয়েছে সরাসরি ট্রাইব্যুনালে। সব কটিরই তদন্তের ভার পুলিশের। তদন্তে অবহেলা, গাফিলতি ও অদক্ষতা থাকে। আদালতে সাক্ষী আনা আর সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে পুলিশ আর পিপিদের অযত্ন ও গাফিলতি থাকে। ভুক্তভোগী পক্ষ হয়রানি আর টাকা খেয়ে মামলা ঘুরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে।

অনেক মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। কখনো আদালতের বাইরে আপস হয়। ট্রাইব্যুনালের মাথায় মামলার পাহাড় জমে। এসবের জন্য জবাবদিহি বা নজরদারির নজির চোখে পড়েনি। ভাটারায় ধর্ষণের পর খুন হওয়া শিশুটির বাবা এখনো আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘পুলিশের ভুলে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। আমি কি তাহলে আমার মেয়ে হত্যার বিচার পাব না?’

আর শ্যামলীর পিংকীর চাচা আলী আশরাফ আখন্দ বলেছেন, ‘আমরা অনেক আগে আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে এসেছি। অথচ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ অন্য সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছে না। বিচার চাইতে গিয়ে প্রতি পদে বিড়ম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে।’

মামলা প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতার কারণ হিসেবে আরও এসেছে অভিযোগকারী আর আসামিদের মধ্যে আপস অথবা আঁতাত হয়ে যাওয়ার কথা। আর এসেছে মিথ্যা মামলা হওয়ার অভিযোগ। তা ছাড়া, আজ পর্যন্ত সরকার আইনটির কোনো বিধি করেনি। এতে নানা রকম সমস্যা হচ্ছে। আইনজীবীরা আইনের কিছু ঘাটতির কথাও বলেছেন।

অনুসন্ধানী দলের সদস্যরা ৬৫টি মামলার নথিপত্র খুঁটিয়ে পড়েছেন। এগুলোর এবং এর বাইরেও অনেকগুলো নথির ঠিকানা ধরে ভুক্তভোগী আর আসামিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলেছেন সরকারি কৌঁসুলি আর পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে, রাষ্ট্রের পক্ষে অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব যাঁদের। কথা হয়েছে অভিজ্ঞ আইনজীবী আর মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে।

আসামির সঙ্গে অভিযোগকারীর আপসের নেপথ্যে অনেক রকম কথা থাকে। ২০০২ সালের মাঝামাঝি ঢাকার এক উপজেলায় অতি দরিদ্র একজন কিশোরী গ্রামের পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছিল। বিচার চলছিল। কিন্তু ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠি লিখে পিপিকে জানায়, ‘মামলাটি না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি আর চালাতে চায় না জানিয়ে পিপি আবেদন করলে ১ নম্বর ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন।

অভিযোগকারীরা অবশ্য এত কথা জানেন না। গত অক্টোবরের এক সন্ধ্যায় মেয়েটি ও তাঁর মা প্রথম আলোকে বলেন, আসামিরা জামিনে বের হয়ে আসার পর থেকে এলাকায় তাঁদের ওপর আপস করার জন্য খুব চাপ ছিল। মেয়েটি বলেন, ‘নেতা লগে থাকছে, আর দ্যাশের মইধ্যে গইন্যমাইন্য লোকেরা আছে। মাতবর-চেয়ারম্যান এরা বলছে। আসামির লোকেরা বলছে, এ রকম আর কোনো সময় হইব না, যা হওয়ার হয়া গেছে। মাথা নত হয়া মাইন্যা নিছি।’

অভিযোগকারীদের বড় অংশ দরিদ্র। খুঁটিয়ে দেখা ৬৫টি মামলার ৫১ টিতেই অভিযোগকারীরা স্বল্প আয়ের পোশাককর্মী, গৃহকর্মী, বস্তিবাসী বা ছিন্নমূল নারী ও শিশু। তাঁরা থানা আর আদালতে চক্কর কেটে খরচপত্র করে মামলা টানতে পারেন না। মামলা তদারকির জন্য তাঁরা মূলত পিপির ওপর নির্ভরশীল। সহায়ক আইনজীবী নিয়োগের সামর্থ্য তাঁদের নেই।

আপসের বাস্তবতার সঙ্গে মিলেমিশে আসে এই সাধারণ অভিযোগ যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা অধিকাংশ মামলাই মিথ্যা। ২০১৬ সালের জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে সারা দেশের ৪০ টির বেশি ট্রাইব্যুনালের বিচারকেরা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ার এক নম্বর কারণ হিসেবে মিথ্যা মামলাকে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, এমনকি ধর্ষণের মামলারও নেপথ্যে অন্য বিরোধ থাকে।

তবে প্রথম আলোর খুঁটিয়ে দেখা মামলাগুলো ভুয়া মামলার ঢালাও অভিযোগকে সমর্থন করেনি। তা ছাড়া সাবেক ও বর্তমান অন্তত আটজন পিপি, বেশ কয়েকজন আইনজীবী, পুলিশ কর্মকর্তা ও অভিযোগকারীরা বলেছেন, হত্যা বা আত্মহত্যা তো বটেই, গুরুতর এই ছয় অপরাধের মামলাগুলোর বেশির ভাগ ঘটনাই সত্য।

ধর্ষণ ও যৌন পীড়নের অভিযোগকারীকে থানা থেকে আদালত পর্যন্ত অশেষ হয়রানি পোহাতে হয়। লোকলজ্জা আর ধিক্কারের মুখোমুখি হতে হয়। তাদের সান্ত্বনা-পরামর্শ বা পুনর্বাসনের সুযোগ খুবই কম। নিতান্ত মরিয়া না হলে কেউ মামলা করতে আসে না।

অব্যাহতি, খালাস, ঝুলে থাকা
পুলিশ যখন এজাহারে বর্ণিত আসামির বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করার মতো তথ্য পায় না, তখন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ট্রাইব্যুনাল শুনানিতে সেটা গ্রহণ করলে সেখানেই মামলার ইতি হয়, আসামি অব্যাহতি পায়। তদন্তে প্রাথমিক প্রমাণ পেলে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়, যার ভিত্তিতে শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন। অথবা আসামি অব্যাহতিও পেতে পারে।

অভিযোগ গঠিত হলে বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ সময়ে ন্যূনতম সাক্ষী ও প্রমাণ হাজির করা না হলে আদালত মামলার ইতি টেনে আদেশ দিতে পারেন। তখন সাক্ষীর অভাবে আসামি খালাস পায়। আবার রাষ্ট্রপক্ষ পূর্ণ শুনানিতে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে আসামি বেকসুর খালাস পায়।

ছয় অপরাধে ১৫ বছরে নিষ্পত্তি হওয়া মামলাগুলোর ৪১ শতাংশের ক্ষেত্রে আসামিরা বিচার শুরুর আগেই অব্যাহতি পেয়েছে। আর ৫৫ শতাংশ মামলায় সাক্ষ্য-শুনানির শেষে আসামিরা বেকসুর খালাস পেয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তির কারণ নিবন্ধন খাতায় লেখা নেই, কয়েকটির নিষ্পত্তি হয়েছে আসামির মৃত্যুতে। এভাবে ৯৭ শতাংশ মামলার আসামির বিরুদ্ধেই এসব গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

চলমান মামলাসহ মোট দেখা মামলার তিন-চতুর্থাংশের কিছু কম ধর্ষণের অপরাধে করা। প্রায় এক-চতুর্থাংশ হচ্ছে যৌন পীড়নের মামলা। দেখা যায়, ২০১২ সালের পর থেকে মামলা আসা বেড়েছে এবং সেটা মূলত যৌন অপরাধের মামলার জন্য।

সাজার হার সবচেয়ে কম যৌন পীড়নের মামলাগুলোতে, সবচেয়ে বেশি হচ্ছে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায়। তবে এই মামলাগুলো সংখ্যায় খুবই কম আর সেখানেও নিষ্পত্তি হওয়া তিন-চতুর্থাংশ মামলায় আসামি অব্যাহতি বা খালাস পেয়েছে।

চলমান ছিল ৩ হাজার ৫৮৭টি মামলা। ২০০২ সালে আদালতে আসা ১৬টি মামলা তখনো ঝুলছিল। এর বড় অংশ ধর্ষণ ও গণধর্ষণের মামলা। চলমান মামলার প্রায় ৪০ শতাংশ (১ হাজার ৩৪৬ টি) ছয় থেকে ১৩ বছর ধরে ঝুলছিল। বিচার শুরু হতে হতেই অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। এভাবে ঝুলে থাকার সময়টা ২০ বছর পেরিয়ে যাওয়ারও নজির আছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ প্রথম আলোকে বললেন, ‘অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রসিকিউশন পক্ষের (রাষ্ট্রপক্ষ) দুর্বলতার কারণে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, অনেক মামলা শক্তভাবে অতি দ্রুত বিচার করা উচিত। কিন্তু তদন্ত, অভিযোগপত্র দেওয়া আর অভিযোগ গঠনে অনেক সময় চলে যায়। বিচারও ধীরগতিতে চলে।

মামলা যত গড়ায়, সাক্ষী এনে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে আসামিদের শাস্তি দেওয়ার সম্ভাবনা তত কমে। আপসের সম্ভাবনাও বাড়ে। ২০০২ সালে আসা মামলাগুলোর মাত্র চারটিতে সাজা হয়েছে। সবই ২০০৪ সালের মধ্যে। এরপর সব মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে খালাসে।

অব্যাহতির চক্কর
ভাটারার ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটি একে একে থানা, গোয়েন্দা বিভাগ আর সিআইডির ছয়জন কর্মকর্তা তদন্ত করেছিলেন। শেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপপরিদর্শক মো. শামসুদ্দিন চূড়ান্ত প্রতিবেদনে লিখেছেন, সুরতহালের সময় লিজার যৌনাঙ্গ থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করানোর দরকার ছিল। তা ছাড়া মেয়েটির পোশাক সিআইডির ডিএনএ পরীক্ষণাগারে পাঠানো হয়েছিল ২৬ দিন পরে। আসামি শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা তখন আর পাওয়া যায়নি।

শামসুদ্দিন লিখেছেন, ‘পূর্ববর্তী তদন্তকারী অফিসারের অবহেলার কারণে’ তদন্তে কোনো ফলপ্রসূ তথ্য পাওয়া যায়নি। বারবার চেষ্টা করেও তিনি ওই কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাননি। সব শেষে তিনি লিখেছেন, এটি একটি ‘সত্য মামলা বলে প্রতীয়মান হলেও’ কোনো আসামিকে শনাক্ত করা বা ঘটনা উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি শামসুদ্দিন দেন মামলা হওয়ার এক বছর এক মাস পর, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। এজাহারকারী মেয়েটির বাবার নারাজির ওপর শুনানি এখনো চলছে। আসামিরা জামিনে আছেন।

বিচারিক নিবন্ধন খাতার লিপিকারদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অব্যাহতির প্রায় সবই চূড়ান্ত প্রতিবেদন মূলে হয়েছে। ছয় অপরাধের মোট মামলার সেটা প্রায় চার ভাগের এক ভাগ। ঘটনা ‘সত্য’, কিন্তু অপরাধী মিলছে না-এমনটা বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন হয়েছে। তবে অনেকগুলোই হয়েছে এজাহার ‘মিথ্যা’ বা ‘ভুল তথ্য’ দিচ্ছে বলে।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) ও ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজিএম) আদালতে জমা পড়ে। তাদের ২০১৬ সালের নিবন্ধন খাতায় এই ছয় অপরাধের মামলায় যত চূড়ান্ত প্রতিবেদন হয়েছে, প্রায় অর্ধেকই ‘ভুল তথ্য’ হিসেবে।

অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশ আসামিপক্ষের কাছ থেকে টাকা খেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। মামলা না নেওয়ার অভিযোগও আছে। সরাসরি ট্রাইব্যুনালে মামলা হওয়ার এটা একটা কারণ। বেশ কয়েকজন এজাহারকারী ও ভুক্তভোগী নারী প্রথম আলোকে আরও বলেছেন, থানায় মামলা করার সময় পুলিশ সন্দেহ বা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে, খারাপ কথা বলে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলছেন, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অসদুপায় ও গাফিলতির সুস্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আর ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মোনালিসা বেগম বলেছেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে ভিকটিম সাবালক হলে অন্য তথ্য মেলে, ঘটনাস্থল ভুল বেরোয়। তখন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। গ্রহণ বা অগ্রহণ আদালতের এখতিয়ার।’

মোনালিসা বলেছেন, ‘৫ কি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে পুলিশের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে।’ তবে এই আইনের মামলাগুলো পুলিশ খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখে। জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা তদন্ত তদারক করেন। প্রথম আলো শিশু ধর্ষণ ও হত্যার কয়েকটি মামলায় বারবার তদন্ত হতে দেখেছে।

মিথ্যা মামলা হলে বাদীর বিরুদ্ধে বিচারের বিধান আইনেই আছে। প্রথম আলো মাত্র একটিতে সেটা হতে দেখেছে। মোনালিসা বলেছেন, পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এর প্রস্তাব থাকে, কিন্তু আদালত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করেন না। আদালতের ওপর এমনিতেই অনেক মামলার চাপ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরকারের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারটির (ওসিসি) আইনজীবী ফাহমিদা আক্তার বহু বছর ধরে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের পক্ষে মামলা লড়ছেন। তিনি বলছেন, মামলা দায়েরের পর আপস হয়ে গেলে তদন্ত কর্মকর্তাকে অভিযোগকারী বলেন, আসামিপক্ষের সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ নেই। তখন পুলিশ ‘তথ্যগত ভুল’ বলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। ফাহমিদা বলেন, ‘তখনই পুলিশ বলছে এগুলো মিথ্যা মামলা।’

একাধিক মামলায় পুলিশ আসামির হদিস পায়নি। প্রথম আলো অবশ্য তাদের খুঁজে পেয়েছে। আসামি ভুল বেরোলে পুলিশ সঠিক আসামিকে খুঁজে বের করতে পারেনি। নাম-ঠিকানার ছোটখাটো ভুল দেখিয়ে আসামির অব্যাহতি চেয়েছে। প্রাথমিক তথ্য-আলামত সংগ্রহে খামতি, ডাক্তারি বা ফরেনসিক পরীক্ষা নিয়ে সমস্যা আর ঠিক লোককে সাক্ষী না করায় সাজা হয়নি। পরবর্তী প্রতিবেদনগুলোয় এমন উদাহরণ এবং পুলিশের নানা সীমাবদ্ধতার বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।

এদিকে গত নভেম্বরে পুলিশ ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২৩৮টি হত্যা মামলার ওপর একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে। গবেষণাটি বলছে, থানা-পুলিশ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তদন্তে গাফিলতি, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ত্রুটি আর ম্যাজিস্ট্রেটের ভুলে অর্ধেকের বেশি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন।

সময়ের ফেরে আপস
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সব অপরাধই বিচারের জন্য গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ আপস-মীমাংসার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বিচার চলাকালেও আপস হয়।

সচরাচর ভুক্তভোগীর চেয়ে আসামিপক্ষ সবল থাকে। তাদের চাপে ভুক্তভোগীরা আপস করতে বাধ্য হয়। ফাহমিদা বলেন, ‘চাপটা এমন হয় যে আপস করতে হবে, নয়তো এলাকা ছাড়তে হবে।’ কয়েকটি নথিতে দেখা যায়, স্বয়ং ভুক্তভোগী আদালতে হলফনামা বা সাক্ষ্য দিয়ে অভিযোগ তুলে নিচ্ছেন। খালাসের রায় হয়ে যাচ্ছে।

তা ছাড়া বিচার হবে-এই আস্থার প্রশ্নটি বড়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিকটিম যদি জানেন মামলার সঠিক বিচার হবে, তখন কিন্তু তিনি আর আপসের দিকে যাবেন না। তিনি বিচার চাইবেন। কিন্তু অভিযোগকারী যখন দেখেন আসামি টাকার জোরে নিজেকে খালাস করে নেবেন, তখন আপস করে ফেলেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরাও আদালতে পাল্টি খান।’

পিবিআইয়ের গবেষণাটি দেখেছিল, লম্বা সময় লাগায় ৩৭ শতাংশ সাক্ষী আপস করেছেন। বিচারে দেরি হলে বাদীপক্ষের লোকজনও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। আর সাক্ষ্য দিতে আসেন না।

সাক্ষী গরহাজির
যে ধর্ষণের মামলার কথা দিয়ে এই প্রতিবেদন শুরু হয়েছে, তাতে রাষ্ট্রপক্ষের ১৩ জন সাক্ষী ছিলেন। আট বছরে ২৯টি শুনানির তারিখে এজাহারকারী মা ও ভুক্তভোগী মেয়েটি ছাড়া আর কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেননি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক এক আদেশে মামলাটির ইতি টানেন।

সাক্ষী হাজির করার দায়িত্ব পুলিশের। সাক্ষীকে কোর্টে তোলা, সাক্ষ্য উপস্থাপনের ভার পিপির। পিপিদের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে এই দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ আছে। পিপিরা অবশ্য এ কথা মানেন না। আর অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব বলছেন, বেশির ভাগ পিপি রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পান। তাঁদের দায়বদ্ধতা থাকে না।

সর্ব অঙ্গে ব্যথা
কয়েকজন আইনজ্ঞ বলেছেন, বড় পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে অনেকগুলো অপরাধে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের মতো চরম সাজার বিধান থাকা আসামিদের খালাস পাওয়ার একটি কারণ। সাজা কম হলে শাস্তি পাওয়া বাড়ে। তা ছাড়া, আইনে কিছু অপরাধের ধারা ঢালাও হওয়ায় মিথ্যা মামলা দায়েরের সুযোগ বেশি। পাল্টা মামলা না করায় ‘মিথ্যা মামলা’র অভিযোগের সুরাহা হচ্ছে না।

আইনে তদন্ত ও বিচারের জন্য সময়সীমাসহ পুলিশ, ডাক্তার, পিপি ও ট্রাইব্যুনালের জবাবদিহির বিধান আছে। কিন্তু শেষের দুই ক্ষেত্রে বিচ্যুতির শাস্তি সুনির্দিষ্ট নয়। বিধি না থাকায় অনেক কাজের পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট হচ্ছে না। জবাবদিহি হওয়ার হিসাব-কিতাব বা নজরদারি নেই। আর ভুক্তভোগীর ভোগান্তির শেষ নেই।
  • প্রথম আলো/৮-৩-১৮

INTERNATIONAL WOMEN’S DAY Derogatory words for women in school texts not just slipshod


Textbooks studied by schoolchildren have words to mean a woman that carry degrading shades and overtones of helplessness, lustfulness, wantonness, sensuousness, entertainment and various other derogatory words that demonstrate how a woman is treated in a patriarchal society. 
Such words mentioned as synonyms for nari (woman) are found in Bangla grammar books used as texts from grade four to 10 in government and non-government schools and madrassahs across the country. 

But, these textbooks do not contain any entry for Purush (man) in the chapter dealing with synonyms.

Parents, rights activists and educationists observe that depiction of women degradingly in the textbooks reflects the sorry state of the country’s education system that may hinder sound mental growth of future generations. 

‘It’s alarming that schoolchildren study textbooks demeaning women, which may help develop patriarchal mentality among the male students to look down upon women in society while the female students may lose self-confidence,’ said rights activist Khushi Kabir, expressing her concern.

‘Depicting women derogatorily also goes against the spirit of building a discrimination-free society that we aspire for and also has been endorsed in the country’s sustainable development goals,’ she said. 

‘I was shocked when my daughter asked me whether I am abala [helpless] as she learned the word as a synonym for women in her Bangla grammar book,’ said Rokeya Sultana, a single mother.

Bangla Bhashar Byakaran, written by martyred intellectuals Munier Chowdhury and Mofazzal Haider Chowdhury in 1969 and published by National Curriculum and Textbook Board, is the textbook for grade IX and X in all schools and madrassahs. 

Page 188 of the book mentions nari (woman) having abala (helpless), kamini (lustful), mahila (a woman confined to home), streelok (housewife) and ramani (sensuous) as its synonyms.

Besides, teachers at schools and private coaching centres use additional Bangla grammar books such as Bhasha Shoily: Bangla Byakaran O Rachana, written by Dr Delwar Mofiz and published by Grantha Bitan, for improving skills of the pupils of grade IX and X to solve creative questions. 

Page 221 of the book mentions ramani, rama, streelok, patni, bama, abala, angana, manabi, manabika, awrat, jenana, bala, mohila, kamini, bhamini, banita, lalana, angana, bharja, pramada and shimantini. Kamini, banita and pramada respectively stand for lustful, darling and entertainer. 

Grantha Bitan staff said the book was hugely sought for by the grade IX and X students as many teachers of both government and non-government schools recommended it for solving creative questions.

Many schools use Bhasha Reeti: Bangla Byakaran Nirmity, published by Bangla Prakash and written jointly by AKM Abdur Rab and Tapankar Chakrabarti, as text for grade VIII students, which on page 309 also gives similar synonyms for nari. 
Though the NCTB does not publish Bangla grammar textbooks for primary schoolchildren, head teachers of many non-government schools said they included Bangla grammar books published by private publishers in their curriculum to make their pupils more advanced than students of other schools which follow only the NCTB curriculum.

One of such books Lal Sabuj Bangla Byakaran O Nirmiti, written by Dr Shamiuzzaman and published by Tanha Publications, on page 22 mentions abala, Ramani, streelok, kanta and bala as synonym for nari. 

Khorshed Alam, owner of Tanha Publications, said that the book was used as text at Ideal School, Viqarunnisa Noon School, South Point School and many other reputed non-government schools. 

Many government school teachers at classes and private coaching centres also recommended it to the students, he said. 

Dhaka University’s retired Bangla professor Abul Kashem Fazlul Haque told New Age that neither nari (woman) nor purush (man) had any appropriate synonym in Bangla as did male or female in English. 

‘Depending on status in society, women have been described with some words which have been stated in these books as synonyms,’ Professor Haque said. 

He suggested revision of textbooks to portray women with dignity. ‘If the book written by Munier Chowdhury and Mofazzal Haider Chowdhury in 1969 contains some words not relevant to present society, it needs to be corrected. And other textbooks should be written keeping in mind an enlightened and sensible future generation,’ he suggested.

For making the textbooks relevant to the present time, NCTB member (curriculum) Professor Md Moshiuzzaman said, the board had already decided to publish a new textbook for Bangla grammar for grade IX and X students. ‘Application for appointing writers will be called soon,’ he said. 

‘We gave advisement in newspapers asking schools not include textbooks published by private publishers in their curriculum and also requested Directorate of Secondary and Higher Education to take action in this regard,’ Moshiuzzaman said.

DSHE director general Professor Md Mahbubur Rahman said that stern action would be taken against schools forcing children to study additional books published by private publishers. 

  • NewAge/8-3-18

INTERNATIONAL WOMEN’S DAY Safety of women in public transports at stake


The use of public transports by women is becoming riskier and more unsafe amid increasing incidents of rape and sexual harassments and even murder while on board.

Some gangs are active on different highways to conduct these crimes and what is more alarming is that these crimes are taking place not only at night but also in broad daylight on busy roads and in so-called secure places. 

Culture of impunity, patriarchal attitudes and lack of speedy trial and awareness are the main reasons behind the situation, educationists and rights activists say. 

Incidents like gang-rape and murder of law student Zakia Sultana Rupa in Tangail, another gang-rape of an ethnic minority woman in a microbus in Dhaka and molestation of a Bangladeshi female passenger on the Maitree Express on Dhaka-Kolkata route by an Indian Border Security Force soldier shocked the entire country.

BRAC Road Safety Programme director Ahmed Najmul Hussain told New Age that between Gazipur intersection and Bangabandhu Bridge there were some active gangs who got on buses as passengers to violate women.

Najmul was also former Inspector General of Police and former chairman of Bangladesh Road Transport Authority. 

Deputy inspector general Md Atiqul Islam of highway police told New Age on Monday that they were working on 12 such incidents and in five of them they had detected the perpetrators.
So far they had arrested six such gangs on Dhaka-Tangail highway, he said.

People were stunned after Rupa was brutally killed after gang rape in a moving bus at Madhupur in Tangail by transport workers who also dumped her body on roadside on August 25, 2017.

On February 12, a court in Tangail sentenced the bus driver and his three assistants to death and the bus supervisor to seven years’ jail for killing Rupa.

On January 23 this year, a female Dhaka University student jumped off a running bus in Uttar Badda at 10:00am to escape sexual assault attempt. Later police detained two transport workers. 

Just a day ago on January 22, a Bangladeshi female passenger was molested on Maitree Express on Dhaka-Kolkata route by an Indian Border Security Force soldier.

Maliha Salehin, a banker who travels daily on Mugdapara-Banani route, said that after office time she avoids buses without passengers. 

‘Now-a-days we hear of incidents of sexual assaults and crime against female passengers,’ she said, adding, ‘That is why I am afraid of riding empty buses.’ 

A female lecturer of Udayan Higher Secondary School said on different occasions female students shared with her how they faced sexual harassment in public transports. 

According to a report compiled and published by Passenger Welfare Association this February, at least 21 female passengers were victims of rape, sexual assault and harassment in transports across the country in the last 13 months. 

On Tuesday, BRAC launched a research report which says that about 94 per cent of the female passengers have experienced sexual harassment at some time or other in public transports in the country.

Following harassment, about 46 per cent of them were influenced to wear hijab, about 21 per cent reduced using of public transports and about 8 per cent quit jobs or outside work. 

An ActionAid Bangladesh study in 2016 revealed that 84 per cent of all woman commuters surveyed said they were subjected to sexual harassment while 62 per cent of the surveyed women limited their movement and had strict timings when they were moving about alone.

Dhaka University professor emeritus Najma Chowdhury said culture of impunity was the main reason behind the recurrent incidents of violence against women in transports. 

Only stern implementation of laws could ease these incidents, she said. 

Bangladesh Mahila Parishad president Ayesha Khanam alleged that though the country had achieved progress in economic indicators, it still lagged behind in social indicators due to continued violence against women.

‘Violence against women never was an agenda for policy makers; they rather say that this is not an issue at all,’ Ayesha regretted. 

Human rights lawyer Salma Ali said still most people in society observed women as a ‘commodity product’.

These incidents continued to take place due to culture of impunity, patriarchal attitude, misuse of technology and lack of accountability.

Salma, also former executive director of Bangladesh National Women Lawyers’ Association, said that recently life term was given to a bus driver and his helper for raping a female passenger in 2016 while the victim fought the case without informing the incident to her family. 

Change in mindset of law enforcers, speedy trial, awareness and family support for the victims could change the scenario, she suggested. 

Nijera Kori coordinator Khushi Kabir pointed out transport owners’ indifference to bringing responsible transport workers under law after any incidents for this situation. 

‘In this country implementation of laws and polices is rare,’ she observed and added that immediate action and complaint system in transports could play a strong role in easing violence against women. 

Road Transport and Highways Division secretary Md Nazrul Islam admitted that though they had taken initiatives to make people and transport workers aware about violence against women in transports, there should be more initiatives for it.

  • NewAge/ 08-3-18