Search

Saturday, May 12, 2018

বিচার ও জনগণ : আস্থা অনাস্থার পাশা খেলা

তৈমূর আলম খন্দকার

৪ মে ২০১৮ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত আইনের শাসন ও গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনায় দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা বক্তব্যে বলেছেন, ‘আইনের শাসন দেশে চলছে না, চলছে পুলিশের শাসন। দেশে আইনের শাসন ও গণতন্ত্র নিয়ে জগাখিচুড়ি চলছে। এ অবস্থা যত দিন থাকবে, তত দিন আমরা নিঃশেষ হয়ে যাবো।’ এ কথাগুলো শুধু রাজনৈতিক দল বলছে না, এখন বলছেন দেশবরেণ্য আইনজীবীরা, যারা রাজনৈতিকভাবে এক প্ল্যাটফর্মের যাত্রী নন, যাদের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব ড. কামাল হোসেন, যিনি এক সময় আওয়ামী ঘরানার অন্যতম কর্ণধার ছিলেন।

জমিদারদের লাঠিয়াল ও পুলিশের কার্যক্রমে কার্যত কোনো তফাত নেই। লাঠিয়ালের দায়িত্ব প্রজা দমন, খাজনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে গরু-বাছুর টেনে আনা, বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেয়া প্রভৃতি। পুলিশের সৃষ্টি হয়েছিল দুষ্টের দমন ও ভালোকে রক্ষা করার জন্য, যদিও পুলিশ সে দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে নিয়োগকর্তার মনোরঞ্জনকেই তাদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে বেছে নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দিক থেকে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। মনোরঞ্জনের অর্থাৎ তৈল মর্দনের ব্যবহারও ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন পদ্ধতিতে। যেমন ‘স্বাধীন’ অর্থাৎ যারা আইনগতভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাধীন; তারাও আজ্ঞাবহতার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। 

কে কত বড় দেশপ্রেমিক, এ কথা সাধারণত আলোচনা হয় না; বরং কে নিয়োগকর্তার প্রশংসায় চাপাবাজি ও তৈল মর্দনে ব্যস্ত, তা নিয়েই আলোচনা বেশি হয় এবং তৈল মর্দনকারীর গুরুত্ব ক্ষেত্রবিশেষে সেভাবেই চক্রবৃদ্ধি হারে পরিমাপ হতে থাকে। গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষার শেষ ভরসাস্থল ‘আদালত’। সেই আদালত এখন পুলিশের কাছে জিম্মি। কারণ, নিয়োগকর্তার লাঠিয়ালদের তোয়াজ না করলে নিয়োগকর্তা অসন্তুষ্ট হবেন; এটা ভেবেই সর্বক্ষেত্রে পুলিশের মুখোমুখি আর কেউ হতে চায় না।

রাজনৈতিক মিথ্যা মামলা-গ্রেফতার প্রভৃতি বাণিজ্যের পরে রিমান্ড-জামিনের পর জেলগেটে গ্রেফতার এবং একটি মামলায় জামিন হওয়ার পর অন্য আরেকটি মামলায় Shown Arrest করে জামিন অকার্যকর করে দেয়ার প্রবণতায় পেছনে রয়েছে নিয়োগকর্তাকে তৃপ্তি দেয়া, যা তৈলের বাটির যথাযথ ব্যবহার, অন্যটি অর্থনৈতিক লাভবান। পরিতাপের বিষয়, পুলিশের সব অপকর্ম ও বাণিজ্যের সার্বিক বিষয়গুলো জায়েজ হচ্ছে আদালতের মাধ্যমে। জনগণ এ নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য যে দরজায় গিয়ে আশ্রয় নেবেন, সেই দরজার মালিক নিজেও পুলিশের মুখাপেক্ষী। ফলে জাতি আজ আশায় বুক বেঁধে আছে, কবে এর পরিসমাপ্তি ঘটবে?

দেশে চলছে পুলিশি শাসন, এ কথা আজ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীরা বলছেন; কিন্তু এ কথাটি সাধারণ মানুষের যারা ভুক্তভোগী। গণতন্ত্রের জন্য সরকারপ্রধান গণতন্ত্রের মানসকন্যা হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি নেয়ার জন্য যেখানে মরিয়া, সেখানে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য হ্যাজাক লাইট বা টর্চ লাইট দিয়ে খুঁজে কতটুকু পাওয়া যাবে, তা নিয়ে আলোচনা করার আগে রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতার সুফল দেশবাসী কতটুকু ভোগ করছে, তা নিয়ে একটু কথা বলা প্রাসঙ্গিক। স্বাধীনতার চেতনার কথা বললে গোটা জনগোষ্ঠী স্বাধীনতার চেতনা কতটুকু ভোগ করছে, তা পর্যালোচনার দাবি রাখে। আব্রাহাম লিঙ্কন, ডাইসি, অ্যারিস্টটল প্রভৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ‘রাষ্ট্র’ এবং রাষ্ট্রের সাথে জনগণের সম্পর্ক তা নির্ধারণে বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন। কিন্তু আধুনিক জগতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তারা একটি নতুন সংজ্ঞা রাষ্ট্রীয় বিষয়ে যোগ করেছেন। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, ‘নাগরিকদের ভয়মুক্ত রাখাই রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব।’ এখন প্রশ্ন বাংলাদেশের তথা স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিকরা কি ভয়মুক্ত অবস্থায় দিনযাপন করতে পারছে? নাকি তারা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস থেকে মুক্ত?

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী A.V. DICEY বলেছেন, ‘বিলাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার কারণ বিলাতের গণতন্ত্র হলো জনমতভিত্তিক, কেবল আইনভিত্তিক নয়।’ The Law of constitution (1915) রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতা সম্পর্কে সংজ্ঞা প্রদানে উল্লেখ করেছে, ‘Behind the soveriegn which the lawyer recognizes, there is another sovereign to whom the legal soveriegn must bow’ এখানেও জনমতকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই গণতন্ত্রকে নির্বাসন দিয়ে স্বৈরতন্ত্রকে গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে ব্যবহার করছে। সরকারের কাছে সব ক্ষমতা রয়েছে। ক্ষমতা রয়েছে একজন নারীকে পুরুষ এবং একজন পুরুষকে নারীতে রূপান্তরিত ছাড়া সরকার সবই করতে পারে। এ অবস্থায় সরকারের রাহুগ্রাস থেকে জনগণকে যারা নিরাপত্তা দেবে, সেই বিচার বিভাগ কি রাহুগ্রাসমুক্ত?

গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছিলেন, ‘Democracy means for the people, by the people and of the people’ ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে সরকার সফল হওয়ায় সরকারের রক্ষাকবজ পুলিশ এখন বেপরোয়া। কারণ, ‘গণতন্ত্র’ তার আসল রঙ (Defination) হারিয়ে এখন নকল ছদ্মাবরণে রঞ্জিত হয়েছে।

‘গণতন্ত্র’ স্বাধীনতার মূল চেতনা- এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় আছে কি? যদি না থাকে, তবে সংজ্ঞাটিকে People’, অর্থাৎ জনগণকে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলনের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। 

কিন্তু বাংলাদেশের গণতন্ত্রে এখন আর জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলনকে গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে পুলিশ, যাদের কাছে রয়েছে বৈধ অস্ত্র ও মিথ্যা মামলা দেয়ার সীমাহীন ক্ষমতা। বাংলাদেশ পুলিশ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক ভাষণে যেমন মিথ্যার ফুলঝুরি ছোটে তেমনি মিথ্যার সাগরে বাংলার জনগণ এখন নিমজ্জিত। এ অবস্থা থেকে জাতিকে যারা রক্ষা করবে, যাদের সংবিধানের অভিভাবক বা Safe gurd হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়, সেই ‘বিচার বিভাগের’ স্বাধীন এ রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের অস্তিত্ব কোথায়? বিভিন্ন রাষ্ট্র গণতন্ত্রের নামে রাষ্ট্র পরিচালনা করলেও গণতন্ত্রের সংজ্ঞা কিন্তু নিজ নিজ সুবিধামতো প্রদান করছে। যেমন- বাংলাদেশ সরকার বলছে উন্নয়নের গণতন্ত্রের অর্থাৎ দিনের পর দিন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্রের ঘোড়া দাবড়িয়ে উন্নয়নের ডামাডোল বাজাচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নের গণতন্ত্র আখ্যা দিয়ে গণতন্ত্রের উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।

নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের প্রধান দায়িত্ব। অন্য দিকে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, নাগরিকদের ভয়মুক্ত রাখাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এখানে প্রশ্ন- বাংলাদেশের নাগরিকরা কি রাষ্ট্রীয় কশাঘাত থেকে ভয়মুক্ত জীবনযাপন করতে পারছে? দেশের বিচার বিভাগ কি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে?

পুলিশ যাকে তাকে যেকোনো সময় যেকোনো অবস্থায় গ্রেফতার করছে, অভিযোগ থাকুক বা না থাকুক, যদি সে সরকারবিরোধী ঘরানার লোক হয় তবে কোনো অভিযোগের প্রয়োজন হয় না। জামিন হওয়ার পর জেলগেট থেকে পুরনো মামলা দেখিয়ে পুনরায় গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করে। 

কোর্ট জামিন নামঞ্জুর করে পুনরায় চাহিদামতো রিমান্ড মঞ্জুর বা জেলহাজতে প্রেরণ করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে- অভিযুক্ত জেলে থাকা অবস্থায় তাকে Shown Arrest অর্থাৎ গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়নি কেন? এ প্রশ্নটি যাদের করার কথা অর্থাৎ বিচার বিভাগ, তারা এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলে না, বরং পুলিশ যেভাবে চায় সেভাবেই আদালত আদেশ প্রদান করেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য যে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন ‘গণতন্ত্র’ বিহনে তা-ও ভেস্তে গেছে।

বিচারব্যবস্থা অর্থাৎ প্রভাববিহীন বিচারব্যবস্থাই স্বাধীনতার অন্যতম চেতনা। সংবিধান নিশ্চিত করেছে, ‘আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা- যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে।’ অর্থাৎ নাগরিকদের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য পবিত্র সংবিধান প্রতিশ্রুতি প্রদান করলেও সে অধিকার কি জনগণ পাচ্ছে? সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য বিচার বিভাগের ওপর যে সাংবিধানিক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, ক্ষেত্রবিশেষে সে বিচার বিভাগ কি সে দায়িত্ব পালন করতে পারছে? 

বাংলাদেশ একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র, রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। কিন্তু কার্যত আমাদের রাষ্ট্রের বর্তমান পেক্ষাপটে বাস্তবতার নিরিখে সংজ্ঞায়িত করলে এ থেকে কী ধারণা পাওয়া যাবে?

যে রাষ্ট্রের বিচার বিভাগ যতটুকু প্রভাবমুক্ত, সে রাষ্ট্রের নাগরিকেরা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস থেকে ততটুকু নিরাপদ। ব্রিটেনে বিচারব্যবস্থার একটি প্রবাদ রয়েছে, ‘ব্রিটেনের একজন অসহায় নিঃস্ব নাগরিকের কুঁড়েঘরে বৃষ্টির পানি ঢুকতে পারে, সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে, ঘর থেকে চাঁদের আলো দেখা যায়; কিন্তু বিধিবদ্ধ বিধান ছাড়া  (Without due process of law) ব্র্রিটেনের রানী সে কুঁড়েঘরে প্রবেশ করতে পারেন না।’ অর্থাৎ রানীর প্রতিনিধি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো নাগরিককে বিধিবদ্ধ বিধান ছাড়া নাজেহাল, হয়রানি বা গ্রেফতার করতে পারে না। কারণ, সে রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় প্রভাবমুক্ত। অথচ আমাদের রাষ্ট্রের পুলিশের ক্ষমতার কাছে ক্ষেত্রবিশেষে আদালত অসহায়। এর প্রতিকারে জাতি কোথায় আশ্রয় পাবে? বিচার বিভাগের অসহায়ত্ব জনগণের আস্থা-অনাস্থার পাশা খেলায় পরিণত হয়েছে, যার অবসান করার জন্য একটি প্রভাবমুক্ত শক্তিশালী বিচার বিভাগ জরুরি। নতুবা আস্থা-অনাস্থার পাশা খেলা চলতেই থাকবে। 

  • নয়াদিগন্ত/মে ১১ ২০১৮ 


Unapproved projects rule chart

ADP for FY 2018-19


FHM Humayan Kabir

The government has included a record number of 1,664 unapproved fresh projects in the Annual Development Programme (ADP) for the next fiscal year, mostly on political considerations, insiders said Friday.

The unapproved projects that outnumber the approved ones do not have any allocation against their names in the ADP. The government's highest economic policy-making body the National Economic Council (NEC) approved the ADP for the next fiscal year (FY) Thursday last.

The number of unapproved projects is up by 317 from the approved ones, included in the Tk 1.73 trillion ADP for the next fiscal year (FY) 2018-19.

Development experts said the rise in unapproved projects without fund allocations in the ADP is a bad practice.

Out of the 1,664 unapproved projects, a total of 1,338 are proposed to be financed from internal sources while 326 others are expected to be financed with resources coming from bilateral and multilateral donors.

In the original Tk 1.57 trillion ADP for the FY 2018, the government incorporated a total of 1,675 unapproved projects without allocation of funds.

"We have included many of these projects coming under political pressure. We know that some of those projects are not necessary for the country at this moment," a top official at the Planning Commission (PC) told the FE.

The official said if you analyse the number of unapproved projects, you will see that the highest number of those projects have come from the Road Transport and Highways Division, the Local Government Division, the Ministry of Railway and the Water Development Board.

The largest number of unapproved fresh projects (152) has come from the Road Transport and Highways Division. The number is higher than that of approved projects 131.

More than 100 unapproved projects each have come from the Bangladesh Railway, the Local Government Engineering Department (LGED), the Ministry of Home and the Water Development Board for inclusion in the next year's ADP.

"Many unapproved fresh projects in the ADP ultimately remain unimplemented every year due to lack of adequate fund allocations, proper feasibility study and designs," said another PC official requesting anonymity.

Development experts have opposed this kind of government initiatives, saying that this system not only affects the quality of work, but also creates scope for misappropriation of public funds.

Former finance and planning adviser to the caretaker government Dr AB Mirza Azizul Islam told the FE that since most of the fresh projects are included on "political consideration" without any feasibility study, those do not get adequate funds after their approval by the government, resulting in both cost and time overrun and less impact on national development.

"Since the next fiscal year will encompass election period, the government just wants to show the people that they have undertaken projects although those may not receive adequate allocations from the government," Dr Islam said.

He said the government should not continue with the culture of including unapproved projects in the ADP. Rather it should make serious attempts to improve the quality work of the ongoing projects.

A PC member said: "In most cases, very few projects get allocations in the revised ADP or the following year's ADP. This results in escalation of cost of such projects."
  • Courtesy: The Financial Express /May 12, 2018

Why Bangladesh's inequality is likely to rise

Nazmul Ahasan

The issues of growing income inequality and unequal distribution of wealth between the rich and the poor have lately gained traction across the west. Oxfam's yearly inequality report serves as the most damning indictment of this rise in disparity. Eighty-two percent of the entire global wealth created last year, the report estimates, went straight into the pockets of the richest one percent of the world's population. The poorest 50 percent, on the other hand, received zero percent of that wealth.

Social democrats or socialists on the left aisle of the political spectrum blame inequality as the primary source of many social discontents that exist in western societies. Liberals, however, attribute these resentments to a widespread distaste for pluralism, multiculturalism, migration, globalisation, etc.

The debate over what influenced people most to hate the existing political system is far from over, but across the subcontinent, including Bangladesh, the debate has hardly any presence at all.

The latest Household Income and Expenditure Survey released by Bangladesh Bureau of Statistics (BBS) found that the income share of the poorest five percent of our population was 0.23 percent of overall income, a sharp fall from 2010 when it was 0.78 percent. In contrast, the richest 5 percent's share of income grew to 27.89 percent, up from 24.61 percent in 2010. This basically means that the bottom five percent's share of national income has decreased, whereas the richest five percent's has increased.

While the BBS survey mainly sheds light on growing income inequality, wealth inequality is even worse. According to estimates by the Centre for Policy Dialogue (CPD), wealth inequality in terms of Gini coefficient—an economic term to gauge income or wealth inequality on a scale of 0 to 1, in which 1 represents perfect inequality and 0 signifies perfect equality—stands at a staggering 0.74, whereas the Gini coefficient for income inequality is 0.48.

While the existing data is worrying enough, real inequality is likely to be worse because the richest in our society are reluctant to reveal their actual wealth and income.

In the last Dhaka mayoral election, two contestants, both business tycoons, refused to include their expensive cars in their wealth statements. They argued that these cars belonged to their companies, which, however, happened to be owned by none other than themselves.

China-based Hurun Global in 2017 named one Bangladeshi businessman in its global rich list, estimating that his assets would be worth USD 1.3 billion. The businessman conceded that the company his family owns may have had assets worth the figure but that he “personally” does not own that much wealth.

They pretend that their “personal” wealth and that of their companies are somehow different, even though it's pretty clear that both are more or less the same thing. For all their wealth, it's hard to find too many wealthy businessmen in the list of the top taxpayers. The man who paid the highest amount of tax last year was the owner of a chewing tobacco company.

The tricky part here is that many among the super-rich base their business on massive loans taken from banks. When you show your working capital coming from loans, you are more likely to be exempted from paying taxes. In addition, taxing the rich is one of the least priorities of our major political parties.

Raising minimum wage or living wage is a popular and important issue in the west, but no major parties—not even the opposition—in Bangladesh would voice in favour of increasing the wage of garment workers. No one, after all, wants to disturb their donors.

Far from taxing the richest, successive governments rather succumb to the business community's demands to reduce the existing taxes in the name of providing “incentives”. When labourers take to the streets to demand a wage increase, the government on behalf of industry leaders, deploy forces to crush their voices.

According to a study by the Finance Ministry, 45-65 percent of the assets in our economy are not taxed. As the super-rich have ample ways to evade their dues, a large portion of the government's revenue comes from indirect taxation such as value added taxes (VAT), which is applicable to all people regardless of their income. Those who are poor spend a large proportion of their income, whereas the rich spend a very small portion of theirs.

“One of the prime philosophies of taxing is to reduce income inequality,” Mustafizur Rahman of CPD told BBC. The failure to tax the wealthiest is, therefore, a major cause of the widening inequality.

Our country was supposed to be a progressive country. Our founding fathers included “socialism” in addition to democracy as one of our founding pillars in the constitution.

Most of our finest universities still run with public money. Yet, we do not regulate private universities that charge students hefty fees. We have public hospitals across the country, but they provide low quality service, while top private hospitals charge its clients as much as five-star hotels do.

Of late, we have been in love with a new model of project development called “Public-Private Partnership,” despite the fact that the objective of the government and private entities would collide, theoretically, rather than align. Unlike the private sector, the government isn't supposed to be a profit-making enterprise while investing in public welfare.

Our economy is neither capitalistic nor socialistic. This is a conundrum we may have chosen to live with, but the cost is too steep. At this phase of our economic history, we are supposed to be experiencing very high employment growth, investment, and a higher standard of living, but what we are experiencing, instead, is growing inequality, credit crunch, rampant corruption, massive outflow of money, etc. The crisis that advanced economies experience during the phase of maturation is all set to hit ours in its nascent stage.
  • Courtesy: The Daily Star/ May 12, 2018.

চার বছরে কর্মজীবীর প্রকৃত আয় আড়াই শতাংশ কমেছে: সিপিডি

চার বছরের ব্যবধানে দেশের কর্মজীবী মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। ২০১৩ সালে একজন কর্মজীবী প্রতি মাসে গড়ে ১৪ হাজার ১৫২ টাকা মজুরি পেতেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এসে তা কমে ১৩ হাজার ২৫৮ টাকা হয়েছে। প্রকৃত আয় কমেছে আড়াই শতাংশের মতো।

অন্যদিকে পুরুষদের চেয়ে নারী কর্মজীবীদের প্রকৃত আয় বেশি কমেছে। ২০১৩ সালে একজন কর্মজীবী নারী প্রতি মাসে গড়ে ১৩ হাজার ৭১২ টাকা মজুরি পেতেন। এখন পান ১২ হাজার ২৫৪ টাকা। মজুরি কমেছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। অন্যদিকে, পুরুষেরা চার বছর আগে পেতেন ১৪ হাজার ৩০৯ টাকা। এখন ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৫৮৩ টাকা মজুরি পান।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে। আজ বুধবার গুলশানের এক হোটেলে এই গবেষণা প্রকাশ করা হয়। গবেষণা উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে ওই গবেষণাপত্রের ওপর সংলাপ অনুষ্ঠান হয়।

সিপিডির গবেষণায় আরও বলা হয়, কর্মক্ষম বয়সের নারীদের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ কোনো মজুরির বিনিময়ে কাজে সম্পৃক্ত নয়, আবার পড়াশোনা কিংবা প্রশিক্ষণও নিচ্ছেন না তাঁরা। এর ফলে শ্রমবাজারে বিপুলসংখ্যক নারী অংশগ্রহণ নেই। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রয়োজন। সিপিডি আরও বলেছে, গত চার বছরে শিল্প খাতে সাড়ে আট লাখ নারীর কর্মসংস্থান কমেছে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগামী চার দশক জনমিতির লভ্যতার দ্বারপ্রান্তে আছে বাংলাদেশ। শ্রমবাজারে অনেক তরুণ-তরুণী আসবে। আমরা তাদের কীভাবে কাজে লাগাব-তা ভাবতে হবে। নারীদের শোভন কাজের বিষয়টি ভাবতে হবে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) শামসুল আলম বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান কীভাবে কমিয়ে আনুষ্ঠানিক আনা যায়, সেই বিষয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে। আবার গৃহস্থালির কাজ করেন, কিন্তু মজুরি পান—এমন নারীদের কাজের মূল্য কীভাবে বের করা যায়, তা গবেষণা করে বের করা উচিত। তাহলে তাদের অবদান জাতীয় আয়ে যুক্ত করা যাবে।

সংলাপ অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, অর্থনীতিবিদ, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন।
  • Courtesy: Prothom Alo/ May 09, 2018

Current account deficit hits record high

AKM Zamir Uddin


Bangladesh's current account deficit recorded an all-time high of $7.08 billion in the first nine months of the fiscal year as the country's capacity to export is failing to keep up with the appetite for imports.

At this point last fiscal year, the deficit was $1.37 billion. The previous highest deficit was registered in 2015-16 when it stood at $4.26 billion.

Higher import payments and a moderate growth of remittance inflow and export earnings are mainly responsible for the widening deficit.

In July-March, imports surged 24.50 percent year-on-year whereas exports grew 6.98 percent. The record current account deficit has already weakened the local currency against the US dollar.

On Wednesday, the interbank exchange rate was Tk 83.10 per USD, up from Tk 80.50 a year earlier, according to central bank data. The dollar will appreciate further if the deficit is not halted in the months to come, said a central banker.

“The production cost will increase significantly due to the appreciating trend of the greenback as the country has to import a large quantity of industrial raw materials to produce essential goods,” he said.

The higher cost of production will also fuel inflation, which, in turn, will have an adverse impact on the spending capacity of consumers, the central banker said. A good flow of remittance can stem the widening deficit.

In July-March of 2017-18, remittance posted 16.42 percent growth from a year earlier, but it is not sufficient considering the large import payments, according to the central banker. 

The trade deficit widened by 87.55 percent year-on-year to $13.20 billion in the first nine months of the fiscal year, according to data from the BB. The government should take immediate measures to boost the export earnings in order to narrow both the trade deficit and the current account, another BB official said.
  • Courtesy: The Daily Star/ May 11, 2018

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট — আকাশে অশ্বডিম্ব প্রেরণ (পার্ট ১)


 —  জিয়া হাসান 



বিভিন্ন জনের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অতিশয়োক্তি দেখলেও, ডিফ্যাক্টো মিডিয়া প্রথম আলোর সোর্স এবং সরকারের পক্ষে পলক সাহেবের আলোচনায় মুল্ তিনটা সুবিধার কথা বলা হচ্ছে।

১। স্যাটেলাইট ভাড়া নিতে যে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ হতো সেইটা বাঁচবে এবং ফ্রি ট্রান্সপন্ডার দিয়ে ট্রান্সমিশন বেচে, বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে।

২। প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবার সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে।

৩। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনায় দারুণ কার্যকর ভূমিকা রাখবে এই স্যাটেলাইট। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও এ স্যাটেলাইটকে কাজে লাগানো সম্ভব

কথা তিনটাই সত্য। কিন্ত, বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইটের ক্ষেত্রে প্রতিটা দাবীই বাংলাদেশের পারস্পেক্টিভে বিভিন্ন ভাবে মিথ্যাচার এবং একটা স্বৈরাচারী সরকারের ভাবমূর্তি স্থাপনের উদগ্র বাসনা থেকে দেশের টাকায় একটা প্রজেক্ট যা, এই অর্থনীতিক এবং প্রযুক্তিগত ভাবে মোটেও যৌক্তিক নয়।

কারন এই সার্ভিসগুলো ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নিচ্ছে কারণ এই গুলো কমার্শিয়ালি এভেলেবল এবং অনেকগুলো এখন ফ্রি পাওয়া যায়। ফলে বাংলাদেশকে এভেলেবল সার্ভিসগুলো বাদ দিয়ে কেন ৪ হাজার কোটি টাকার একটা ফিক্সড কস্ট-এর বোঝা নিতে হবে, সেটা কমার্শিয়ালি ভায়াবল কিনা সেটা সততার সাথে যাচাই করতে হবে, পুরো ফাইনান্সিয়াল মেরিট দিয়ে।

এবং একটু গভীরে গেলেই দেখবেন, এই প্রজেটের মূল উদ্দেশ্য সরকারি বেনিয়াদের ব্যবসা নিশ্চিত করার জন্যে যা দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় এবং আমাদের ফিউচার উপার্জনের ঋণের টাকায় শুধুমাত্র সালমান সাহেবদের পকেট ভারি করবে।

স্যাটেলাইট ভাড়া নেয়ার বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ের দাবিটা হচ্ছে সব চেয়ে অসত্য দাবি, কারন , একটা ১৫ বছর শেলফ লাইফের শুধুমাত্র ইনিশিয়াল কষ্ট যার ৩ হাজার কোটি টাকা, সেইখানে বছরে ১২০ কোটি টাকা সেভ করে আপনি কয় বছরে এই কস্ট তুলবেন। 

তারপরে আছে এর প্রতি বছরের অপারেটিং কস্ট, পলক সাহেব এবং তার আব্বাদের বিদেশ ভ্রমন কস্ট, সেইটা কত হাজার কোটি টাকায় যাবে, এবং এই এইচএসবিসি ব্যাংকে থেকে হাই ইন্টেরেস্ট রেট ১৫০০ কোটি টাকা লোনের এমরটাইজেসান কোথায় যাবে সেইটা কেউ হিসেব করছেনা ।

এই গ্যাপটা কাভার দেয়ার জন্যে, জিওস্টাটিক স্যাটেলাইটের কাভার এরিয়ায় যত দেশ আছে সেইগুলোর নাম নিয়ে বলা হচ্ছে, এই দেশগুলোর নেটওয়ার্ক এই স্যাটেলাইট থেকে সার্ভিস কিনবে। বঙ্গবন্ধু সাটেলাইটের জিওস্টাটিক লোকেশানের কাভারেজে পড়েছে ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, শ্রীলঙ্কা , নেপাল সহ আর কিছু দেশ।

এগেইন এই দেশগুলোতে স্যাটেলাইট কানেকভিটিভি কিনে যে প্রতিষ্ঠানগুলো এরা অনেকেই প্রাইভেট যাদের কারো না কারো সাথে চুক্তি আছে, কারো কারো আছে নিজস্ব স্যাটেলাইট যেমন সিংটেল। আর ভারতে তো ২০১৭ সালে একটা স্য‌াটেলাইট আকাশে তুলে বলছে এইটা সাউথ এশিয়ান দেশের জন্যে ফ্রি গিফট। এবং সেই ফ্রি গিফট পেয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটালেইটের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ প্রথমে একটু ভয় পায়, তারপরে, তাও প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে ভারতে গিয়ে সেই ফ্রি স্যাটেলাইট যাকে বলা হচ্ছে সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট সেইটা ব্যাবহারের চুক্তি সাক্ষর করে এসেছেন।
তাই এই বৈদেশিক মুদ্রা আদায়ের দাবী আরেকটা ভয়ংকর মিথ্যা। রিমোট জায়গায় স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট কানেকশান দেয়ার দাবিটা হচ্ছে সবচেয়ে জঘন্য মিথ্যা।

একটা জিনিষ করা সম্ভব মানেই বলে করা ভায়াবল, তা নয়।

বেশ কিছু আলোচনায় দেখলাম , বাংলাদেশে ১৮০ টি উপজেলায় ফাইবারের কানেকশান নাই, এই কানেকশান স্যাটেলাইট দিয়ে দেয়া হবে। এই দাবিটা ক্যাটাগরিকালি মিসলিডিং। কারণ , বাংলাদেশ খুব ছোট একটা দেশ।

এই উপজেলাগুলোর মধ্যে সবগুলোতেই রেডিও লিংক দিয়ে ইন্টারনেট কানেকশান দেয়া যায়, দেয়া হয়েছে, দেয়া হচ্ছে । যেই সব উপজেলায় বর্তমানের বিটিএস নাই, সেই খানে নতুন বিটিএস বসিয়ে লাইন অফ সাইট তৈরি করে খুব সহজেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট দেয়া সম্ভব- যেই ব্রডব্যান্ড কানেকশান স্যাটেলাইট কখনও সম্ভব নয়- স্যাটেলাইট হাই ল্যাটেন্সির কারণে ন্যারো ব্যান্ড কানেকশান দিতে পারবে, নব্বই দশকের টেলিফোন লাইনের মত- ইয়াহু যুগের মানুষেরা মনে করতে পারবেন সেই সব দুঃসহ দিনের কথা।

টেলিকম নেটওয়ার্কগুলো এই কাজ সহজেই করছে এবং প্রতিটা নেটওয়ার্ক দাবি করে, তারা বাংলাদেশের শত ভাগ কাভার করে। ফলে স্যাটেলাইট দিয়ে রিমোট জায়গা কাভারের বিষয়টা একটা প্রপাগান্ডা।

রিমোট জায়গায় যদি গ্রামীণ বা রবির কানেকশান না যায়, তবে সেই রিমোট জায়গায় স্যাটেলাইটের কানেক্টিভিটি রিসিভ করার জন্যে ভিস্যাট বসাবে কে ? ভিস্যাটের পয়সা কে দেবে ? সেই রিমোট জায়গায় ভিস্যাটের ইলেক্ট্রিসিটি কানেকশান কোত্থেকে  আসবে?
ফলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে বাংলাদেশে রিমোট জায়গায় ইন্টারনেট কানেকশান দেয়া হবে, এটা জঘন্য মিথ্যা । কারণ, রিমোট জায়গায় ইন্টারনেট কানেকশান দেয়ার অনেক অপশন প্রযুক্তির হাতে আছে। যেমন, আমাদের বাংলা লায়ন এবং কিউবির ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক যে প্রযুক্তি সেগুলো লাইন অফ সাইট না থাকলেও অনেক দূরে ইন্টারনেট কানেকশান দিতে পারে।

কিন্ত এই নেট ওয়ার্কগুলো গ্রামে বা উপজেলায় যায় নাই, কারন তাদের ইকন‌মিজ অফ স্কেল নাই, সেজন্যই কমারশিয়ালি ভায়াবল নয়।

জাস্ট টেলিকম কোম্পানিগুলোর ৪ জি লাইসেন্সে বিশাল ফি নিয়ে প্রথমেই সরকার প্রফিটটা নিয়ে গেছে ফলে ,কোম্পানিগুলো এখন স্ট্রাগল করছে, ৪ জি ইনভেস্টমেন্ট জাস্টিফাই করতে বা রিমোট জায়গায় ফোরজি নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দিতে। এরা বেনিয়া এদের কাজ শেয়ারহোল্ডারদের ভ্যালু তুলে অানা, পাবলিক সার্ভিস দেয়া না।

স্যাটেলাইট থেকে অনেক কম খরচে ফোর জি বা ওয়াইম্যাক্স দিয়ে ব্রডব্যান্ড কানেকশান দেয়া যাবে। যেইটা কখনোই স্যাটেলাইট পারবেনা ভূপৃষ্ঠ থেকে দূরে থাকার কারনে, লগারিদমিকালি ডাটা লস হওয়ার কারনে এবং খুব হাই ল্যাটেন্সির স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের কানেকশানও খুবই দুর্বল। এবং এইটার ব্যান্ডউইথ এখনো ন্যারো যেইটা দিয়ে একটা সামান্য ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবেন না। দেখলে, মাসিক লাখ টাকার উপরে খরচ পড়বে।

সারা দেশে ফোর জি নেটওয়ার্ক বা ওয়াইম্যাক্স দিয়ে যে রিমোট জায়গায় ইন্টারনেট দেয়ার দায় সরকারের ছিল, যাকে, অতিরিক্ত ভাড়া তুলে নেয়ার লুটেরা মনোভাবের কারণে সেই সম্ভাবনা ধ্বংস করা হয়েছে। সেইটা করে দেবে, খুবই স্লো ল্যাটেন্সির স্যাটেলাইট এবং সেইটা মিডিয়াগুলো এবং প্রযুক্তিবিদেরা যেভাবে হাইলাইট করছে তা জনগণকে ধোকা দেয়া ছাড়া কিছু নয়। 

বঙ্গবন্ধু স্যাটালাইট সেটআপ দিয়ে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি দেয়া হবে, সেটা একটা ধুম্রজাল। বরং মূল ইস্যু হচ্ছে, তারা সালমান সাহেবের কোম্পানিকে ডাইরেক্ট টু দা হোমের ব্যবসা তৈরি করে দিতে চায়, যেটা টাটা স্কাই এর মত একটা সার্ভিস। পাকিস্তানে ২০১৭ সালে ডিটিএইচের অকশনে ১৪০০ কোটি টাকা পেয়েছে সরকার।

বাংলাদেশেও যে কোন তরঙ্গ বেচতে ওপেন অকশন হওয়ার আইন রয়েছে (শুনেছি নিশ্চিত নই)।

কিন্ত বাংলাদেশ সরকার সালমান সাহেবের কোম্পানি রিয়েল ভিউ কোম্পানিকে কোন ধরনের অকশন বাদে তবারক মুল্যে ডিটএইচের পারমিশন দিয়েছে। এই কানেক্টিভিটি তারা তৈরি করেছে, একটা রুশ কোম্পানি দিয়ে। এই ৩০০০ কোটি টাকার স্যাটেলাইট মূলত ব্যবহার হবে নামমাত্র মুল্যে ডিটিএইচ বেচার পারমিশন দেয়া হবে। এই জন্যে এই স্যাটেলাইটের সকল মিটিং এ সালমান সাহেবকে দেখা যায়।

আর আমরা ইন্টেলেকচুয়ালি এমন বেকুব একটা দেশ এইখানে, রেপিস্টের সাথে রেপডের বিয়ে দিলে সেই বিয়ে সামাজিকভাবে গ্রহনযোগ্য হয়। 

এই স্যাটেলাইটেও বিষয়টা সেরকম। রেপিস্টের সাথে রেপডের বিয়েতে সবাই হাততালি দেয়।

ডিটিএইচ-এর আলোচনাটা আমরা সবার শেষে করবো, কারণ, এই খানেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে সালমান এফ রহমানদের সোনার হাঁস- সেইটা আমাদেরকে ভালো ভাবে বুঝতে হবে।

— লেখক সাড়া জাগানো ব্লগার ও তরুন উদ্দ্যোক্তা।


বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট থেকে আয় করার দাবি হাস্যকর



—   মোস্তফা কামাল পলাশ 


বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহ নিয়ে সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের প্রচার দেখে আমার অবস্থা হয়েছে ঘর পোড়া গরুর মতো যে কিনা সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।

বাংলাদেশ সরকার ফ্রান্সের কোম্পানি থ্যালেস অ্যালেনিয়ার কাছ থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা দিয়ে একটি কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহ কিনেছে। বাংলাদেশের পার্সেল পরিবহন কোম্পানি এস এ পরিবহন বা বিদেশি কোম্পানি ডিএইচএল অথবা ফেডেক্স যেমন টাকার বিনিময়ে আপনার মালামাল দেশের ভিতরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে পৌঁছিয়ে দেয় তেমনি একটি আমেরিকান কোম্পানি স্পেসএক্স (SpaceX) যা টাকার বিনিময়ে কোন দেশ বা কোম্পানির বিভিন্ন প্রকার কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশের বিভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দেয় কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী।

কৃত্রিম উপগ্রহগুলোকে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে কিছু নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৃথিবী বা অন্য কোন গ্রহ-উপগ্রহের চার পাশে প্রদক্ষিণ করে বা ঘুরতে থাকে একটি নিদিষ্ট পিরিয়ডে। যেমন, কোন কোন কৃত্রিম উপগ্রহ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় আপনি যে শহরে বসবাস করেন সেই শহরের উপর দিয়ে চলাচল করে। 

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর দূরত্ব অনুসারে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। লো-আর্থ অরবিট (লিও) ও জিয়োসিনক্রোনাস অরবিট (জিয়ো)। লিও স্যাটেলাইট আবার দুই ধরনের। এক ধরনের লিও স্যাটেলাইট উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর উপর দিয়ে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে, অন্য ধরনের লিও স্যাটেলাইট দুই মেরুর উপর দিয়ে চলে না। দুই মেরুর উপর দিয়ে চলাচলকারী কৃত্রিম উপগ্রহ গুলোকে পোলার অরবিটং স্যাটেলাইট বলা হয়ে থাকে। যেগুলো দুই মেরুর উপর দিয়ে চলে না সেগুলোকে বলা হয়ে থাকে নন-পোলার অরবিটিং স্যাটেলাইট। বর্তমান সময়ে প্রায় ১৩০০ লিও ও ৪০০ জিয়ো স্যাটেলাইট পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরছে।

লো-আর্থ অরবিট বা লিও কৃত্রিম উপগ্রহগুলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর চার পাশের ঘুরতে থাকে। পক্ষান্তরে জিও কৃত্রিম উপগ্রহগুলো ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬০০০ কিলোমিটার উঁচুতে অবস্থান করে পৃথিবী নিজ কক্ষপথে যে গতিতে ঘুরে সেই একই গতিতে জিও কৃত্রিম উপগ্রহগুলো ঘুরতে থাকে। আপনি তুলনা করতে পারেন যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাম্প্রতিককালে চালু করা দুই লেনের মহাসড়কে পাশাপাশি একটি বাস ও একটি মোটরসাইকেল একই গতিতে চট্টগ্রাম অভিমুখে চলছে। রাস্তায় কোন ট্রাফিক জ্যাম নাই, ফলে বাস ও মোটরসাইকেলটি একই গতিতে চলবে ও একই সময়ে চট্টগ্রামে পৌছবে।

বাংলাদেশ সরকার যে কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটি কিনেছে ফ্রান্সের কোম্পানির কাছ থেকে সেটি একটি জিয়োসিনক্রোনাস অরবিট বা জিয়ো স্যাটেলাইট। বাংলাদেশ সরকার এর নাম দিয়েছে বঙ্গবন্ধু-১। অাকাশে বাহক রকেট মে ১০, ২০১৮, মহাকাশে বাণিজ্যিকভাবে কৃত্রিম উপগ্রহটি কক্ষে নি‌য়ে স্থাপন করার চেষ্টা করবে আমেরিকার মহাকাশ যোগাযোগ বিষয়ক বাণিজ্যিক কোম্পানি স্পেস-এক্স। আমেরিকার ফ্লোরিডা রাজ্যের ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৬০০০ কিলোমিটার উঁচুতে প্রতিস্থাপন করার লক্ষ্যে  ভূ-পৃষ্ঠ ত্যাগ করবে। উৎক্ষেপণের পরে চূড়ান্ত স্থানে পৌছাতে সময় লাগবে প্রায় ৮ দিন। 

মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটি পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারকে স্পেস-এক্স কোম্পানিকে রকেটের ভাড়া হিসাবে ৭০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ৫৬০ কোটি টাকা দিতে হবে।

সরকারের দেওয়া তথ্য মতে বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটিতে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এর মধ্যে ২০টি বাংলাদেশ ব্যবহার করবে বাকি ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিক ভাবে ভাড়া দেওয়া হবে টাকার বিনিময়ে। প্রশ্ন করতে পারেন ট্রান্সপন্ডার কি? ট্রান্সপন্ডার হল কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহে স্থাপিত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা ভূ-পৃষ্ঠ থেকে পাঠানো তড়িৎ সিগনাল (বেতার তরঙ্গ) গ্রহণ করে তা বিবর্ধিত করে আবারও সেই সিগনাল প্রাপকের কাছে পাঠাতে পারে । সরকারের তথ্য মতে বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটি ক্রয় করা, সেটি উৎক্ষেপণ করা ও কক্ষপথে স্পেস কেনা বাবদ সর্বমোট প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটির জীবনকাল হবে ১৫ বছর। তবে অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কৃত্রিম উপগ্রহ পূর্বে নির্ধারিত পুরো জীবনকাল পূরণ করতে পারে না । 

সরকারের নীতি-নির্ধারকরা বলছে ২০ টি ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিক ভাবে ভাড়া দিয়ে মিলিয়ন-মিলিয়ন ডলার আয় করবে। কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ে যাদের সামান্যতম ধারণা আছে তারা সরকারের নীতি-নির্ধারকদের দাবি শুনে মুচকি হাঁসছে। 

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত নিজে কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ বানিয়ে নিজেদের রকেটের মাধ্যমে তা পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করে থাকে। যেহেতু ভারত নিজেই ভূ-উপগ্রহ বানায় ও তা কক্ষপথে স্থাপন করে তাই এই কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহগুলোর জন্য বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম খরচ হয়। 

ভারত মঙ্গলগ্রহে একটি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পাঠিয়েছে আমেরিকার ১০ ভাগের এক ভাগ খরচে। এই তো গতবছর ভারত একটি মাত্র রকেটে করে এক সাথে ১০৪ টি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করেছে। তার মধ্যে একটা মাত্র কোম্পানি একই সাথে ৮৮টি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করেছে। ভারতের সরকারি ও বেসরকারি অনেক কোম্পানির কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ আছে যেগুলো অনেক কম খরচে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের যে নীতি-নির্ধারক ২০ টি ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়ে মিলিয়ন-মিলিয়ন ডলার আয় করবে বলে আশার বাণী শোনাচ্ছে তারা ভারতীয় সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে নিজেদের পণ্য বিক্রয় করতে পারবে কি না? একই কথা প্রযোজ্য সিঙ্গাপুরের কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রেও। বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের কোম্পানিগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে অপেক্ষাকৃত কম দামে ক্রেতার কাছে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিক ভাবে ভাড়া দিতে পারবে কি না?

বাংলাদেশের মতো আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার সরকারেরও খায়েশ হয়েছিল নিজের দেশের একটা কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাবে। ঐ দেশের রাজনীতিবিদরা তাদের দেশের জনগণকে হাইকোর্ট দেখিয়ে বলেছিল উৎক্ষেপিত কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ট্রান্সপন্ডার বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়ে মিলিয়ন-মিলিয়ন ডলার আয় করবে। বাস্তবে দেখা গেছে এক বছরে আয় করে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। মনে করুন দুই বন্ধু একই সাথে একই ব্যবসায় নেমেছে। একজন বাপের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অন্য জন ব্যাংক থেকে ১০ -১৫ % সুদে লোন নিয়ে। লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করা ব্যক্তিটি যদি আপনাকে আশ্বাস দেয় যে আমার উৎপাদিত পণ্যটি বাপের টাকা নিয়ে ব্যবসা শরু করা মানুষটির চেয়ে কম দামে বিক্রি করবো তবে তা বিশ্বাস করা কষ্টকর বৈকি।

বিবিসির সংবাদে প্রকাশ আফ্রিকা মহাদেশের ঘানার ছোট একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র ৫০ হাজার ডলার খরচ করে নিজেই বানিয়েছে এক কিউবিক ফুট আকৃতির একটি কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ যাকে কিউবস্যাট বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও এমনি একটি ন্যানো স্যাটেলাইট বানিয়ে ইতিমধ্যেই তা কক্ষপথে পাঠিয়েছে। সুতরাং বলা চলে বঙ্গবন্ধু-১ নামক কৃত্রিম যোগাযোগ উপগ্রহটি বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ নয় সরকারের দাবি অনুসারে।

এবারে অন্য একটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করি। বাংলাদেশের মতোই আফ্রিকার অন্য একটি দেশ বিদেশি কোম্পানিকে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে কক্ষপথে পাঠানোর চুক্তি করে। সেই সাথে ঐ কোম্পানিকে শর্ত দেয় যে ঐ দেশের একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ঐ কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি প্রতিটি পর্যায়ে সংযুক্ত করতে হবে ও ট্রেইন অাপ করতে হবে। ঐ শর্ত মেনেই সেই বিদেশি কোম্পানি ঐ দেশের জন্য কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে ও কক্ষপথে পাঠায়। পরে আফ্রিকা মহাদেশের ঐ দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেই কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি যোগ্যতা অর্জন করে ও বর্তমানে নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করছে অন্য দেশের জন্য। আফ্রিকার ঐ দেশের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ তৈরির সফলতা নিয়ে দ্য ইকনমিস্ট পত্রিকায় বিশেষ সংবাদ প্রকাশ করেছিল প্রায় ২ বছর পূর্বে। সেখানে বাংলাদেশ করলো কি পুরো প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের কোন প্রকৌশলী বা বৈজ্ঞানিককে কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ তৈরির প্রজেক্টে সংযুক্ত করেছে বলে আজ পর্যন্ত কোন তথ্য জানতে পারি নি।

একটা কৃত্রিম উপগ্রহের অপারেশনাল লাইফ টাইম হয়ে থাকে ৫ থেকে ১৫ বছর। প্রধানমন্ত্রীর কথা হতে জানতে পেরেছি যে এই কৃত্রিম উপগ্রহের মেয়াদ ১৫ বছর। তার মানে আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে আবারও কোন কোম্পানিকে কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরির দায়িত্ব দিতে হবে। আবারও দেশের ৩ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশি কোম্পানির কাছে চলে যাবে।

অথচ আফ্রিকার সেই দেশের রাজনৈতিক নেতা বা পলিসি মেকারদের মতো বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতা বা পলিসি মেকাররা যদি দূরদর্শী হতো তবে বুয়েটের মেকানিকাল ও ইলেকট্রিকাল বিভাগের অধ্যাপকদের এই কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ তৈরির প্রজেক্টে সরাসরি ট্রেইন অাপ করা সম্ভব ছিল।

নির্বাচন ও ভোটমুখী প্রকল্প

নির্বাচন কমিশনের সচেতন হওয়া উচিত


জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন দল ও তার সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে ভোটার আকর্ষণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করা শুধু অশোভন ও অন্যায্যই নয়, সুস্থ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য ক্ষতিকরও বটে। কারণ, এর ফলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সব প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য সমান সুযোগ ব্যাহত হয়, যা নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারকে সে পথেই এগোতে দেখা যাচ্ছে।

এই নির্বাচনী বছরে সাংসদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ইত্যাদি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে তিনটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এসবের পেছনে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ১৬ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। জানা গেছে, এ রকমের আরও তিনটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সাংসদদের কাজ মূলত আইন প্রণয়ন করা এবং সরকারি কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত করা; স্কুল-কলেজ ইত্যাদি নির্মাণ করা নয়। নির্বাচনী বছরে এসব প্রকল্প হাতে নেওয়ায় এটা খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য।

এবং উদ্দেশ্যটা বেশি স্পষ্ট হচ্ছে আরও দুটি খবর থেকে।

প্রথমটি হলো, সড়ক ও নালা নির্মাণের জন্য ২৮১টি পৌরসভাকে দেওয়া হচ্ছে মোট ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতিটি পৌরসভাকে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়েও একটা অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প নামে চলমান একটি প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার আট মাস আগেই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা হয়েছে প্রায় তিন গুণ ব্যয় বাড়িয়ে। কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, পৌরসভাগুলোর উন্নয়নকাজের সঙ্গে রাজনীতি বা জাতীয় নির্বাচনে ভোটার আকর্ষণের সম্পর্ক কী। এর সরল উত্তর হলো, পৌরসভার মেয়রদের ওপর স্থানীয় সাংসদদের প্রভাব থাকে এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে এ ধরনের প্রকল্প তাঁদের জন্য সুবিধার কারণ হয়। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ার আগেই তাড়াহুড়ো করে দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করার যুক্তি নির্বাচনের আগে ভোটারদের খুশি করা ছাড়া আর কী হতে পারে?

দ্বিতীয় খবরটি রীতিমতো তুঘলকি কাণ্ড: প্রায় ৬০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে জনগণের সামনে ক্ষমতাসীনদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাফল্যগাথা প্রচার করার উদ্দেশ্যে! সরকারের সাফল্য প্রচারের জন্য রাষ্ট্রীয় বেতার-টেলিভিশনের নিরন্তর প্রচারণা ক্ষমতাসীনদের কাছে যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। তাই এবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ অধিদপ্তরকে বিশেষ প্রকল্প হাতে নিতে হলো: দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, সংগীতানুষ্ঠান, নারী সমাবেশ ইত্যাদি নানা কর্মসূচি চালানো হবে; সেসব কর্মসূচি যাঁরা উপভোগ করতে যাবেন, তাঁদের আপ্যায়নও করা হবে। এসব প্রচারণা অভিযানের পেছনে ব্যয় করা হবে সরকারি তহবিল, অর্থাৎ জনগণের টাকা।

নির্বাচনের বছরে ক্ষমতাসীনেরা ভোটারদের মন জয় করার উদ্দেশ্যে তাঁদের ইচ্ছেমতো প্রচারাভিযান চালাতেই পারেন। তবে তা করা উচিত ক্ষমতাসীন দলের তহবিল খরচ করে; এ ধরনের কাজে ব্যয় করার জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ প্রদানের নৈতিক অধিকার সরকারের নেই। কারণ, এভাবে নির্বাচনী প্রচারণা পরিবেশে অসমতার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের মতো হাতিয়ার থাকার পরও সরকারের সাফল্যের প্রচারণায় যোগাযোগ অধিদপ্তরের ৬০ কোটি টাকার প্রকল্প জনস্বার্থের বিবেচনায় আপত্তিকর।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। উল্লিখিত সরকারি উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। 
  • Courtesy: সম্পাদকীয়/ Prothom Alo/ May 10, 2018

Bangladesh Bank flouts own rules

Why special consideration for a non-performing bank?


It defies rationale that the central bank would relax its own rules of business to allow for four state-owned banks and one government financial institution to inject Tk 715 cores into the troubled Farmers Bank. BB's investigations into the bank found that its top brass is complicit in the financial meltdown that involved the former chairman and ex-chairman of the executive committee. Yet, we find that instead of ordering structural changes in the way the bank is managed, the central bank is more interested in replenishing the bank's fortunes.

The rules have been relaxed so that the bar on one director of a bank holding the same position in another is now not valid and four managing directors of state-owned banks will sit on Farmers Bank. These institutions will in effect have more than 10 percent share of the bank which is a violation of Article 14 of the Act, while the central bank has cited another article of the Act that allows it to relax any rule upon suggestions from the government. 

So, are we to surmise that since this bank is partly owned by a lawmaker, the rules do not apply? Again, precisely what sort of message is being given to other financial institutions which may be susceptible to scams? Unfortunately for us, it seems that far from bringing about changes that would re-establish discipline in the financial sector, the BB has chosen to pump in money to these bottomless baskets.

  • Courtesy: The Daily Star /Editorial /May 11, 2018

Still waiting for the bell to ring

INVOLUNTARY DISAPPEARANCE, IMPUNITY AND INJUSTICE


C R Abrar

I am tired of visiting morgues, riverbanks and other places in search of my brother,” said Rehana Banu. Her brother Pintu, an opposition activist, was picked up allegedly by plainclothes law enforcers from Pallabi on December 11, 2013. Pintu remains untraced.

Holding her minor daughter in her lap, Shumi Akhter of Chittagong had a different story to tell. Her husband Nurul Alam, also a political activist, was picked up by uniformed and plainclothes men around midnight on March 29 last year. “We thought my husband was taken to the police station and the police would send him to court the next morning... Around 4am we came to know that his body was floating on the Karnaphuli river, with his hands tied,” narrated Shumi in a choked voice.

In another case, a father from Jhenaidah informed that he was able to meet his son in police custody. Subsequently, the police denied he was in their custody. With his meagre means he left no stone unturned to secure information about his missing son, of no avail.

These are a few narratives of the near and dear ones of victims of involuntary disappearance at an event organised by "Mayer Dak" (Mother's Call), an organisation of the families of the disappeared, a little over a fortnight ago in the city. More than 80 families joined the event and about a score of heart-wrenching testimonies were presented. Though the families came from different parts of the country, representing a diverse range of trades and professions, and the incidents took place over a stretch of several years, a set of patterns emerges from the narratives.

In most cases victims were young political activists belonging to opposition political parties or their front organisations. In one instance a member of the student wing of the ruling party was the victim. Most families claimed that their loved ones were innocent and no case was ever lodged against them. In many cases the victims were picked up from their own homes or those of their relatives, either at night or in the very early hours of the day, and those who came to pick up introduced themselves as members of law enforcement agencies (LEAs), while in some cases those persons donned uniforms of LEAs. Interestingly, no case has been reported in which the victims were presented with a warrant, nor the alleged enforcers of the law furnished any identification documents. In most instances families or eyewitnesses reported that perpetrators used black-tinted white vans (microbuses), while in some instances they used clearly marked vehicles of a particular LEA.

After the involuntary disappearance, in all cases, family members contacted local police stations or Rapid Action Battalion offices or local public representatives, and in some cases members of parliament and ministers, but no information about the whereabouts and condition of the disappeared was ever made available to them. Most frustrating has been the refusal of the authorities to register complaints of involuntary disappearance. A case was cited where the family furnished names not only of the alleged agency involved but also of the concerned functionaries with their ranks. The police refused to take the complaint, according to these families. It was only after those specific details were taken off that the complaint was noted they have alleged.

The affected families were in unison to express their disappointment that no progress had taken place in the investigation in any of these cases. In a few instances families were threatened with consequences if they pushed the cases further.

Topping all was the case of Mohammad Shahnur Alam. He died on May 6 in Brahmanbaria Sadar Hospital. His family brought allegations of torture against members of a LEA and filed a petition in the magistrate's court. Najmun Nahar, magistrate of Brahmanbaria, on June 6, 2014 instructed the police to treat the complaint filed by Shahnur's family as the First Information Report. Within 24 hours she was stripped off her bicharik khomota (judicial authority). On June 7, the Judge's Court of Brahmanbaria ordered an “investigation for an FIR.” Demanding restoration of the original order Shahnur's family filed a writ in the High Court on July 6. In at least two instances, after a lot of hurdles the families filed writ petitions and the Court instructed agencies to produce the individuals concerned. The matter remains pending for a long period of time.

The similarities in the sequence of events and the reported responses and actions of the members of the LEAs in the testimonies raise some important questions. Firstly, how is it possible for groups of rogue elements to abduct individuals, often donning uniforms and using clearly marked vehicles of recognised LEAs of the country? Secondly, why is it that the victims are mostly dissidents or members of the organisations affiliated with the political opposition? Thirdly, why is it that local police stations refuse to entertain complaints of involuntary disappearance and are adamant in rejecting complaints if they contain specific details of the alleged perpetrators? Fourthly, in cases where complaints are accepted, what precludes the law enforcers from investigating them properly and fairly? Fifthly, why, in certain cases, have members of victims' families alleged to have been kept in surveillance and threatened with severe consequences? And finally, why was the magistrate of Brahmanbaria summarily transferred and why does the higher judiciary appear to be reticent in disposing of these important petitions? All these questions beg response from those who are at the helm of law enforcement and dispensation of justice.

The distressed families drew attention of the highest office of the land to their plight. Deeply appreciating the intervention in the case involving the husband of a prominent environmental activist, they urged the prime minister to order investigation and ensure justice in all cases of involuntary disappearance with the compassion and sincerity as she did in the case concerned. They reminded the high-ups in the LEAs that the latter are duty-bound to protect every individual irrespective of their political opinion or social status and all have the right to live and die in dignity. They further reminded the wrongdoers that in the recent past, under the initiative of this government, indemnity to protect perpetrators of certain crimes has been rescinded paving the way for bringing perpetrators to justice even after decades. The aggrieved members of victims' families expressed their resolve that days of impunity are over and one day perpetrators of involuntary disappearances will also be held accountable in the same way.

Still retaining unflinching hope that their loved ones are alive, members of the families demanded their immediate return. Eight-year-old Hridi refuses to hold her disappeared father's photo anymore. Her plea: “I want to walk around holding my dad's hand.” 

The families that have resigned to the notion that their loved ones are not likely to return want to know the details about what happened to them. Munna's father's last wish was if the state failed to bring back his son, it should at least show him where he was put to rest. His desire remained unfulfilled as he passed away a year ago. The expectation to embrace one day his disappeared brother Shahinur appears to have faded from Mehdi Hasan's mind. Now Mehdi only wants to know why Shahinur was brutally killed after being disappeared. “If I at least get an answer, I would think I have got enough justice. I don't want anything more,” he informed the audience.

The loaded testimonies conveyed the message that families of the involuntary disappeared are worse off than those whose bodies were eventually found. The families of the latter had their closure with the last rites performed, religious ceremonies held, resting places identified, and inheritance and pension issues settled. Members of the families who remain traceless continue to remain in a suspended condition. They have no scope to observe the day when their loved ones had departed. Years pass by, wives do not know if they are widows now and children unaware if they are orphans.

Shujon's mother remains resolute in her hope that one day her son will be back and ring the door bell. She says she has run out of tears, but is eagerly waiting for that day to dawn. One hopes that day is not too far away.

  • CR Abrar teaches international relations at the University of Dhaka.
  • Courtesy: The Daily Star/ May 11, 2018