Search

Wednesday, July 25, 2018

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কর্মকর্তার বাসা থেকে ইয়াবা উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বরখাস্ত সহকারী উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) সালাউদ্দিনের দুটি বাসা থেকে পাঁচ হাজার ৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১১। জব্দ করা হয় মাদক বিক্রির ৯ লাখ ৪শ’ টাকা। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় সালাউদ্দিনের সহযোগী সুমন (২৫) কে। সে র‌্যাবকে জানায়, উদ্ধার ইয়াবা ও টাকার মালিক সালাউদ্দিন ডিবি পুলিশের একজন বরখাস্ত এএসআই। মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে প্রায় সাত মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা থেকে সালাউদ্দিন বরখাস্ত হয়। সেই থেকে সালাউদ্দিন পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।

তবে, পলাতক হলেও সে এখনো নারায়ণগঞ্জ ডিবি’র অফিসার পরিচয় দিয়ে চলে। স্থানীয় লোকজন তাকে সালাউদ্দিন স্যার ও ডিবির স্যার হিসেবে চেনে। তার তিনটি প্রাইভেট কার রয়েছে। এই কার দিয়ে বিভিন্ন স্থানে মাদক পৌঁছে দেয়া হয় এবং প্রতিদিনের ইয়াবা বিক্রির টাকার হিসাব রাখার জন্য ব্যক্তিগত সহকারী রয়েছে। আছে বেতনভুক্ত কর্মচারী। ইয়াবা বিক্রি করে প্রচুর অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাওয়া সালাউদ্দিনের ইয়াবা সেবনের জন্য একটি জেন্টস পার্লারও রয়েছে।

সোমবার রাতে শহরের নগরখানপুর ও সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ারে দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি জসিম উদ্দীন চৌধুরী পিপিএম জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়িকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সালাউদ্দিন নামক একজন পাইকারি ইয়াবা বিক্রেতার নাম উঠে আসে যে নিজের প্রাইভেট কারে ইয়াবা বিক্রেতাদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দেয়। কয়েকদিন আগে গোপনসূত্রে  কদমতলী এলাকায় ফ্রেন্ডস টাওয়ারে সালাউদ্দিনের একটি ভাড়া বাসার সন্ধান পাওয়ার পর র?্যাব-১১ ওই বাসার উপর নজরদারি শুরু করে। একপর্যায়ে সোমবার সন্ধ্যায় ৭টার দিকে কদমতলীর ফ্রেন্ডস টাওয়ারের ভাড়া বাসায় সালাউদ্দিনের অবস্থান জানতে পেরে র?্যাব-১১ অভিযান চালায়। র?্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সালাউদ্দিন ও তার ড্রাইভার জাসিম পালিয়ে গেলেও তার সহকারী সুমন গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তার সুমনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাসার মালিক আলমাস ও কেয়ারটেকারকে সঙ্গে নিয়ে সালাউদ্দিনের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে পাঁচ হাজার ২শ’ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৮ লাখ ৫০ হাজার ৪শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ৯টায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার নগরখানপুর এলাকায় সালাউদ্দিনের অপর ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪শ’ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, উদ্ধার ইয়াবা ও টাকার মালিক সালাউদ্দিন তিনি পুলিশের একজন বরখাস্ত এএসআই। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি মামলা করা হবে বলে র‌্যাব জানিয়েছে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জুলাই ২৫,২০১৮ 

Tuesday, July 24, 2018

ডিজিটাল দুর্নীতিতে বন্ধ হয়ে গেল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র


বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির  ও খামখেয়ালিপনার কারণে অবশেষে বন্ধ হলো দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। গতকাল সকাল থেকে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কয়লা দিয়ে এ কেন্দ্রে উৎপাদন হতো ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ফলে দিনাজপুরসহ রংপুর বিভাগের আটটি জেলা বিদ্যুৎ সঙ্কটের মধ্যে পড়বে।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম বলেন, কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড কয়লা সরবরাহ করতে না পারায়, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলনকৃত কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার মে. টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে। কাগজে কলমে এই কয়লা থাকার কথা থাকলেও দৃশ্যমান নয়, যা ডিজিটাল দুর্নীতির নামান্তর। কয়লার হিসাব মেলাতে না পারার কারণে গত ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কোম্পানির সচিব (জিএম প্রশাসন)কে প্রত্যাহার করেছে, একই কারণে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মাইনিং অ্যান্ড অপারেশন ও উপ মহাব্যবস্থাপক (স্টোর)কে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। তবে খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ১১ বছরে এক কোটি ১০ লাখ টন কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। এর মধ্যে সিস্টেম লসের পরিমাণ এক লাখ ৪০ হাজার টন কয়লা।

এ দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড নেসকো-এর প্রধান প্রকৌশলী শাহাদৎ হোসেন সরকার বলেন, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রতিদিন ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন, এর মধ্যে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে, কিন্তু কয়লা সঙ্কটের কারণে গত এক মাস থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিট বন্ধ থাকায়, সেখান থেকে মাত্র ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসত। এই কারণে গত এক মাস থেকে বিদ্যুতের কিছু ঘাটতি দেখা দিয়েছে, এখন পুরোপুরি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ায় এই ঘাটতি আরো বাড়ল। তিনি আরো বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হলেও বাইরে থেকে বিদ্যুৎ এনে চাহিদা পূরণ করা হবে, তবে এতে বিদ্যুতের ভোল্টেজ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেই সাথে লোডশেডিং হতে পারে।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে নতুন ফেজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে, কয়লা উত্তোলন শুরু হলেই কয়লার এই সঙ্কট থাকবে না বলে তিনি আশা রাখেন।

তদন্তে নেমেছে দুদক

পার্বতীপুর সংবাদদাতা জানান, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উত্তোলিত ‘কয়লার মজুদ কেলেঙ্কারি’র ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বেলা ২টা ৩০ মিনিটে দুদক দিনাজপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক বেনজির আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্তদল বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি পরিদর্শন করে। তদন্তদলের অন্যরা হলেন : দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো: কামরুজ্জামান, সহকারী পরিদর্শক ওবায়দুর রহমান ও শাহজাহান আলী। তদন্তদলের প্রধান বেনজির আহমেদ বলেন, দুদক ঢাকা অফিসের নির্দেশে তিনি খনির কয়লা কেলেঙ্কারি তদন্তে এসেছেন। সরেজমিন প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, কয়লা মজুদের নথিপত্র অনুযায়ী খনির কোল ইয়ার্ডে যেখানে এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা। সে জায়গায় রয়েছে মাত্র এক থেকে দেড় টন কয়লা। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে কয়লা মজুদের নথিপত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট নথিপত্র প্রস্তুত থাকার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

এ দিকে কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে দুদকের ঢাকা অফিসের পরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে গতকাল বিকেলে তিন সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্তদল গঠন করা হয়। তদন্তদলের অন্য সদস্যরা হলেন : দুদকের সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ ও সহকারী পরিচালক মো: তাইজুল ইসলাম।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ জুলাই ২৪,২০১৮ 

‘বাড়াবাড়ি নয়’ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও আক্রমণে ছাত্রলীগ


প্রধানমন্ত্রীর ‘বাড়াবাড়ি’ না করার নির্দেশনার পরও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব ঘটনা ঘটে।

গতকাল রোববার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামে যেন কোনো বাড়াবাড়ির অভিযোগ আর তিনি না পান; পরিষ্কারভাবে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’ কাদের বলেন, শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসংবর্ধনা শেষে তার উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কাদের এমন কথা জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

গতকাল বিকেলে এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন জন যুগ্ম আহ্বায়ককে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান উজ্জ্বল এই হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হামলার শিকার নিয়াজি সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিকেল ৫টা ১০মিনিটের দিকে সমাবেশ শেষ করে অটোরিকশায় বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তার সঙ্গে যে আর দুজন হামলার শিকার হয় তারা হলেন রাতুল সরকার ও সোহরাব হোসেন।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশ থেকেই চারটি মোটরসাইকেলে করে তাদের অটোরিকশার পিছু নেয়। কাঁটাবন মোড়ে তারা তাদের থামিয়ে টেনে বের করে মারধর করে। রাতুলের সঙ্গে এক পর্যায়ে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও সোহরাবকে তারা বেদম প্রহার করে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর বলেন, বাটা সিগনাল দিয়ে যাওয়ার সময় একটি সিএনজি অটোরিকশা আমার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে আমরা সেটিকে থামাই। অটোরিকশার চালকের সঙ্গে আমাদের কথা কাটাকাটি হয়। তার দাবি, ভেতরে কে ছিল তারা সেটা দেখেননি, তাদের সঙ্গে কোনো কথাও হয়নি।

তবে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এই ঘটনার ভিডিও ভিন্ন কথা বলে। সেখানে আমির ও সাইদুরসহ ছাত্রলীগের সাত থেকে আটজন নেতাকর্মীকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালাতে দেখা যায়। তারা প্রথমে তাদের ‘ছিনতাইকারী’ আখ্যা দেয়। এসময় আমির রাতুলকে ধরে ছিল ও অন্যরা তাকে কিল-ঘুষি মারছিল। অন্য দুজনকেও একইভাবে মারতে দেখা যায় ভিডিওটিতে।

এসময় দুজন পুলিশকে তাদের নিরস্ত করার চেষ্টা করতে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত তারা বিফল হন।

অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম লেমনের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত একজনকে মারধর করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, হামলার শিকার ছেলেটি সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তার পরিচয় জানা যায়নি।

গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র ফেডারেশনের একজনকে পিটিয়ে আহত করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলা নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করায় তার ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন মিলে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রাকিবুল রাকিবকে মারধর করে। ক্লাস শেষে বের হয়ে আসার সময় বিবিএ ভবনের সামনে তার ওপর হামলা করা হয়।

  • Courtesy: The Daily Star /Bangla/ Jul 23, 2018

Attack inside court premises

Why did the law enforcers not intervene sooner?


The attack on Mahmudur Rahman, acting editor of a Bengali daily, inside the court premises in Kushtia, on July 22, is shocking and disturbing, to say the least. The attackers, allegedly members of the BCL, vandalised Rahman's car when he came out of the court house and got into the car. When he took shelter in a lawyer's room, the attackers burst into the room and assaulted him leaving his face and head bloodied. All this while, the law enforcers, responsible for keeping order within and outside the courtroom, remained silent bystanders.

Firstly, the person in question against whom a defamation case has been lodged went by the law and surrendered to the court and was granted bail. Yet he was attacked within the court premises. This in itself indicates that those who attacked him do not believe in the law or in the courts of the country. Rather, they have taken law into their own hands. How can this be acceptable in a democratic country?

Secondly, why did the law enforcers on duty allow such an attack to happen right in front of them? Are they so powerless that they do not dare to intervene when an obvious offense is taking place? We have seen the same stance of total indifference when quota reform activists were attacked by members of the BCL in recent weeks. The law enforcers are entrusted with the responsibility of stopping any kind of violence in the public domain. So why didn't they do their job?

In the case of the attack inside the court premises, we are not supporting any particular individual but emphasising the fact that this is an issue of protection of every citizen under law and upholding the law of the land and the honour of the courts. The government must intervene and put an end to this reprehensible practice by taking action against those responsible for the attack.

  • Courtesy: The Daily Star /Editorial /Jul 24, 2018


No Qaeda, IS links found

Charges pressed against 8 in Holey Artisan attack case


Police yesterday pressed charges against eight of the 21 militants who they say wanted to destabilise Bangladesh by initiating the country's worst-ever terror incident over two years ago.

A faction of local outfit JMB carried out the attack at Holey Artisan Bakery in Gulshan in 2016, and involvement of global terror organisations like Islamic State or al-Qaeda was not found, said a top counterterrorism official hours before submission of the charge sheet.

Hasnat, Saiful and Shaon not named in the charge sheet.

“Though the terrorist attack took place on July 1, 2016, they [militants] had started preparing for it five to six month back,” said Monirul Islam, chief of Counter Terrorism and Transnational Crime (CTTC) unit of DMP, in a briefing. 

The militants recced several places and finally selected the Holey Artisan as it had no internal security arrangements and they found it easy to escape, he added.  

Another reason for choosing the café was that a large number of foreigners would be found at the posh and popular eatery, located in Gulshan's diplomatic zone.

The militants thought if they could kill a big number of foreigners, they would be under local and international spotlight, alongside drawing attention of global terrorist groups, said the CTTC chief.

Seventeen foreigners were among the 20 hostages massacred in the café attack -- nine Italians, seven Japanese, one Indian. Two police officers also lost their lives as they responded immediately.

The militants shot and hacked all the victims, except for a Japanese national, within 20 to 25 minutes of their entry. The Japanese, who hid inside a refrigerator, was killed later on, Monirul said.

The slain hostages also include two Bangladeshis and a Bangladesh-born US citizen.

Five of the 21 militants were killed inside the bakery in a commando operation launched to end the siege while eight others, including mastermind Tamim Ahmed Chowdhury, were killed later in different pre-emptive anti-militancy drives.

Among the eight charge-sheeted accused, six are now in jail. They are Jahangir Alam alias Rajib Gandhi, recruiter of the café attackers; Rashed alias Rash, one of the planners; Sohel Mahfuz, grenade supplier; arms suppliers Mizanur Rahman alias Boro Mizan and Hadisur Rahman Sagor, and Rakibul Islam, so-called religious trainer.

The other two Shahriful Islam Khaled and Mamunur Rashid Ripon -- are fugitives and have fled the country, police say. Investigation Officer of the case, Inspector Humayun Kabir of CTTC unit, pleaded with the court to issue arrest warrant against them and order attachment of their property.

The five gunmen, who held the diners hostage and got killed, are Nibrash Islam, Mir Sabeh Mubashir and Rohan Imtiaz, Khairul Islam Payel and Shafiqul Islam Uzzal.

The eight killed in other operations are Tamim Chowdhury; Sarwar Jahan, a top operative of mainstream JMB and financier; Nurul Islam Marzan, a Chittagong University student and café attack coordinator; Jahidul Islam, a retired major and trainer, Basharuzzaman Chocolate, a software engineer; Abu Raihan Tarik, a top operative, Tanvir Kaderi, a banker and financier; and Mizanur Rahman alias Chhoto Mizan, grenade supplier.

HASNAT NOT IN CHARGE SHEET

The investigators, however, didn't name former private university teacher Hasnat Reza Karim in the charge sheet as they found no evidence against him after analysing accounts from witnesses and arrested militants.

Hasnat, who along with his family members went to the café to have his daughter's birthday dinner, was arrested on August 3, 2016 and later made an accused in the case. He has been in custody since then.

To get released, he has to wait until the court accepts the charge sheet in the next hearing or to seek bail beforehand.

During the siege, the attackers allowed him to leave the café with other hostages before the commandos stormed it.

Later, two photographs of Hasnat and another hostage, Canadian university student Tahmid Hasib Khan, surfaced on August 7, 2016. In the photos, the two appeared to be talking with one of the gunmen, Rohan.

On April 16 last year, a Dhaka court acquitted Tahmid of the charges and he was freed.

“I am waiting for my husband,” Hasnat's wife Sharmina Parvin told The Daily Star yesterday.

Asked about the ordeal she has undergone since the café attack, Sharmina said, “What's the point in talking about it now?”

Metropolitan Magistrate Nurunnahar Yasmin received the 68-page charge sheet along with other relevant documents and evidence at 4:00pm yesterday.

The IO appealed to the court to relieve Hasnat of the charges and drop the names of 13 militants killed in different raids although charges against them were proved.

Police also didn't find involvement of Saiful Chowkidar, 34, a pizza chef, and Zakir Hossain Shaon, 19, a kitchen help, previously named as suspects.

Saiful died during the commando operation launched on the morning of July 2. Shaon, under police custody, died of wounds at Dhaka Medical College Hospital on July 8, 2016 after being detained by the law enforcers.

Hospital and morgue sources had said he suffered splinter wounds and there were “marks of beating” on his body.

Talking to The Daily Star yesterday, Shaon's father Abdus Sattar said they had been demanding justice for his son since he was killed in custody.

“But we have been deprived…” Sattar said, adding that Shaon was his eldest son and an earning member of the family. But they didn't get any compensation for the loss.

Saiful's sister Moina Begum said people refuse to believe that Saiful was not a militant. “They ask me if he were not a militant, why police didn't hand over his body to us,” she said in tears.

“Now it is a matter of consolation that we can at least say he is innocent.”

At the briefing, asked if the death of the two were “collateral damage”, Monirul said the investigators could not ascertain how they were killed -- being attackers or being victims. Because all the attackers and victims were killed at the bakery, he added.

The CTTC boss said they didn't find any previous links of Saiful and Shaon with the attackers.

In the charge sheet, 211 persons were made witnesses, and 149 of them witnessed the attack or had information about it.

Besides, the court recorded statements of 17 survivors who were inside the eatery during the attack. Police produced 75 pieces of evidence before the court. 

  • Courtesy: The Daily Star/ Jul 24, 2018

Tk 1 lakh for each project

64 development projects get such a 'token allocation'; analysts term it eyewash, waste of public money


Jagaran Chakma

Some 64 projects, many of which are important infrastructure ones, got just Tk 1 lakh each this fiscal year in a bizarre move by the government that has presented its most expansive development budget yet of Tk 1.80 lakh crore.

People do not benefit from these token allocations as it will further delay the implementation of the projects, said Ahsan H Mansur, executive director of the Policy Research Institute.

“This is misallocation of resources as well as waste of public money,” he added.

Of the 64 projects, 57 are five to eight years old and they were scheduled for completion this June, four are ongoing and the remaining three did not even start work, according to data from the planning ministry.

But the government has indiscriminately allocated Tk 1 lakh to each of these projects without considering their deadline or their importance.

Take the case of the Tk 2,008 crore Shikalbaha 225 megawatt (MW) dual fuel combined cycle power plant, which as of February this year has spent Tk 1,282 crore or 64 percent of its allocation.

But the government has given just Tk 1 lakh to it this fiscal year.

Similarly, the construction of the Bangladesh Railway's new line for Ishwardi-Pabna-Dhalar Char has got a mere Tk 1 lakh despite the completion of 91 percent of the work as of February.

Another striking case was the construction of the Muradpur-2 Gate and GEC Junction Flyover in Chittagong, a Tk 970 crore project.

As of February, the project is 63 percent through and yet the government gave it only Tk 1 lakh this year.

There are at least six projects on the list with over 90 percent of the works done, with one even 99 percent through. Another nine projects have finished at least 80 percent of their works.

“This token allocation will keep the projects alive and we will revise those in future,” MA Mannan, state minister for finance and planning, told The Daily Star yesterday.

He, however, acknowledged that in some cases the cost of the projects increased due to delays in implementation.

Mansur said the planning ministry should stop the projects or allocate the necessary funds.

Often, the politicians just want to show that they are working on a big number of projects, so the projects are kept alive by allocating token funds, said AB Mirza Azizul Islam, former adviser to the caretaker government.

“It's eyewash,” he added.

Towfiqul Islam Khan, research fellow at the Centre for Policy Dialogue, said they have also found some projects that have finished but still got allocations and so did some others that are yet to take off.

Abdus Salam, chairman of the Chittagong Development Authority, suggested Khan might be right.

The Muradpur-2 Gate and GEC Junction Flyover project has already been completed, he said.

“I was surprised to see that the government has allocated Tk 1 lakh for the project in the current fiscal year.”

  • Courtesy: Daily Star /Business/ Jul 24, 2018

Section 16(2) Of Special Powers Act: Scrapped yet used for arrest

arrested in Singair Nearly three decades ago, section 16(2) was dropped from the Special Powers Act, 1974. But strangely, police filed a case under the section and even arrested two accused in Manikganj's Singair this May.

They are still in jail.

The High Court yesterday expressed dissatisfaction over filing of the case under the non-existent section.

The bench of Justice M Enayetur Rahim and Justice Md Mostafizur Rahman also directed police not to make any arrest or file any case under the section. Besides, it ordered the inspector general of police to take necessary steps in this regard.

The court came up with the order while granting six weeks' anticipatory bail to two other accused in the case -- Sajedul Alam Shadin and Habibur Rahman Lalu. They had filed a bail petition recently.

On May 23, two accused -- Salauddin and Bashir alias Bashir Member -- were on charges of holding a “secret meeting” at Salauddin's home at Charuigram village and planning “subversive activities for the release of arrested BNP chief Khaleda Zia”.

The case was filed the next day against 21 people, including the four, with Singair Police Station under section 16(2) of the special powers act, said Khandker Imam Hossain, officer-in-charge of the police station.

Asked, he said he was not aware whether the section still existed or not. “As far as my knowledge goes, cases are filed with other police stations under the section,” he said.

Contacted, Assistant Attorney General Md Yusuf Mahmud Morshed said the section had been incorporated in the act with a provision for five years' imprisonment and fines for committing “prejudicial acts”.

In 1991, the then government scrapped the section while bringing amendment to the law. However, cases were still being filed and suspects arrested under the section, he said. 

He said attempts were made in 2007 to revive the section but parliament did not approve it.

Supreme Court lawyers said the section was dropped from the act as other laws already had provisions to deal with the relevant offences.

Talking to The Daily Star about the issue yesterday, Prof Mizanur Rahman, a former chairman of the National Human Rights Commission, said if any law or part of the law was declared null and void, it could not be enforced.

“If a citizen is arrested or harassed under the scrapped law that very action becomes an offence. Whoever has resorted to it must be prosecuted,” he said.

“Section 16 (2) of the Special Powers Act, 1974 is no longer a part of the act and cannot be enforced by any authorities, be it the executive or the judiciary … ignorance of law is not an excuse for anyone. This is a minimum requirement for rule of law and democratic governance.” 

Khurshid Alam Khan, a Supreme Court lawyer and also the editor of Dhaka Law Reports that compiles and publishes SC verdicts, said it was very unfortunate that law enforcement agencies did not even know that the section has been dropped.

It casts a serious doubt about the competence of the law enforcers, he said adding that many innocent could have been harassed and arrested under the section.

He also said police should be provided with proper academic training on the laws they follow.

Contacted, Attorney General Mahbubey Alam declined to make any comment on the issue. He said he could not say anything without reading the HC order that granted bail to two of the accused in connection with the case filed in Singair.

Meanwhile, Mantu Ghosh, lawyer for Sajedul and Habibur, alleged that six other suspects in the case had sought bail from a court in Manikganj but the pleas were rejected.

The Daily Star, however, could not verify this claim.

  • Courtesy: The Daily Star /Jul 24, 2018

Monday, July 23, 2018

Why the delay in implementation?

Still no uniform university admission test


Eight years have passed since the education ministry had in principle decided to introduce a uniform or cluster system for university admission, yet, the government has failed to implement the system still after all these years. Even a decision to begin the uniform admission procedure with the agricultural universities from this year has been cancelled on grounds of “lack of time for preparations”, although the decision was made in November last year.

The proposed system would save admission seekers time, cost and travel required to take admission tests at different public universities across the country, and the numerous hassles and pressures they face to prepare for the separate admission tests. In spite of all these benefits, some public universities have been opposing the implementation of the cluster system as it would reduce the income of the universities as well as teachers from the sale of admission forms and from invigilation and checking of answer scripts, according to ministry and UGC sources.

Whether it is due to lobbying from them or because of its own failures, the fact that the government has not been able to implement the cluster system which would save students so much time, money and energy, is unacceptable.

Given that the UGC has also been suggesting modifying the existing admission process for a long time, terming it too expensive, questionable and coaching-oriented, the government has no excuse for delaying the implementation of the uniform admission system. Therefore, we call on the authorities to recognise the importance of implementing the system and thus act accordingly with the appropriate urgency.

  • Courtesy: The Daily Star /Editorial /jul 23, 2018

ইসি কেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়?

তিন সিটি নির্বাচন

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তাপ-অস্থিরতা বাড়ছে। বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা পুরো অসত্য বলা যাবে না। যেকোনো সুষ্ঠু নির্বাচনের পূর্বশর্ত সবার জন্য সমান সুযোগ। নির্বাচন কমিশন সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি। এমনকি সেই পরিবেশ তৈরি করতে তারা সচেষ্ট, সেটিও ভোটারদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। ফলে ৩০ জুলাই অবাধ ও গ্রহণযোগ্য ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর স্থানীয় জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে চলে যান এবং তাদের হুকুম পালনে তাঁরা বাধ্য। 

ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা নানা বিতর্কের সৃষ্টি করে। এ কারণেই আমরা শুরু থেকে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতি শক্ত হাতে মোকাবিলার কথা বলে আসছি। কিন্তু কমিশন মুখে সবার জন্য সমান সুযোগের কথা বললেও কাজ ও আচরণে তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তিন সিটিতে পাইকারি গ্রেপ্তারের ঘটনা না ঘটলেও সিলেটে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থীকে দুই দফায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে হয়েছে। প্রথমবার দলীয় কর্মীকে থানা থেকে ছাড়াতে, দ্বিতীয়বার পুলিশ বিএনপির দুই কর্মীকে আটক করলেও তা স্বীকার না করায় তিনি পুলিশের উপকমিশনারের কার্যালয়ের সামনে কর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন। এ ধরনের ঘটনা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় এবং নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতার প্রমাণ তুলে ধরে।

তবে রাজশাহীতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি আরও উদ্বেগজনক এ কারণে যে সাম্প্রতিককালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা এটাই প্রথম। এ ঘটনায় টেলিফোনের কথোপকথনের সূত্র ধরে পুলিশ বিএনপির একজন স্থানীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কাজ যারাই করুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে নিরীহ ও নিরপরাধ কেউ অযথা হয়রানির শিকার না হন।

এ ছাড়া রাজশাহীতে একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামায়াতের নারী কর্মীদের কুৎসা রটনার ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। যেকোনো ব্যক্তির অধিকার আছে তাঁর পছন্দসই  প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করার। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর অধিকার নেই।

শুরুতে তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী পরিবেশ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ঘটনা অস্থিরতা তৈরি করে। বিরোধী দলের নির্বাচনী প্রচারে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটলেও ইসি নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এ বিষয়ে এন্তার অভিযোগ এলেও প্রতিকার না করা দুর্ভাগ্যজনক।

পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বিরোধী দলের প্রার্থীদের মধ্যে এই শঙ্কা আছে যে পুলিশ ভোটের দিন কিংবা তার আগের রাতে তাঁদের নির্বাচনী এজেন্টদের পাকড়াও করতে পারে। অর্থাৎ আসল পরীক্ষা হবে ভোটের দিন। খুলনা ও গাজীপুরে বিএনপির এজেন্টদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীতেও যেন সে রকম কিছু না ঘটে, সে ব্যাপারে ইসিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানিয়ে দিতে হবে, নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না।  

তিনটি সিটি করপোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার সংস্থার নির্বাচনে তারা কোনোভাবে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ জুলাই ২৩, ২০১৮ 

বিবি’র ওপর ‘আস্থা’ রাখুন!

গোলাম মোর্তোজা

‘জার্মানি থেকে কিনে আনা মেশিন পিতলকেও স্বর্ণ হিসেবে দেখায়’- বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় কর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য।
বেয়াড়া মেশিনের ওপর নির্ভর না করে, প্রস্তর যুগে ফিরে গেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাথরে ঘর্ষণ দিয়ে মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখেছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক পাথর ঘষে স্বর্ণের মান যাচাই করছে। প্রকৃতির শিক্ষাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। মানুষের তৈরি মেশিনের ওপর আর নির্ভরশীলতা নয়।

এ জন্যে তারা ‘বিশ্বস্ত’ একজন স্বর্ণকার ঠিক করেছেন। যিনি কষ্টি পাথরে ঘষে স্বর্ণের ক্যারেট পরিমাপ করেন। এক কর্তা তা লেখেন। যাচাই-বাছাই করারও কেউ নেই বা রাখা হয়নি। ‘ছয় স্তরের’ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলে কথা। যত কম লোককে সম্পৃক্ত করা যাবে, ততো ভালো। যা কিছু ঘটবে ‘কেরানির ভুল’।

ডিজিটাল মেশিন নয়, স্বর্ণকারই ‘বিশ্বস্ত’! মেশিন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পক্ষে সাক্ষী দিতে পারত না। ‘বিশ্বস্ত’ স্বর্ণকার ঠিকই সাক্ষী দিয়ে বলছেন, স্বর্ণ ঠিকই আছে। ২২ ক্যারেটের স্বর্ণ ১৮ ক্যারেট হিসেবে জমা রাখা হয়। এতে হয়ত নিলামে বিক্রির সময় কর্তাদের সুবিধা হয়।

কষ্টি পাথরে ঘষা দিয়ে স্বর্ণ রাখলে, যা রাখা হয় কখনো কখনো তার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়- সাক্ষী দিয়ে বলেছেন ‘বিশ্বস্ত’ স্বর্ণকার!

২। স্বর্ণ রাখার ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছয় স্তর বিশিষ্ট। টাকা রাখার ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার স্তর নিশ্চয়ই আরও বেশি। বেশি যে তার প্রমাণ, টাকা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে। বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা জানা গিয়েছিল ২০১৫ সালে। ভল্ট এলাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা চুরি করে ভেগে যাচ্ছিলেন দীপক চন্দ্র দাস। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে এসেছিলেন ইন্ডিয়ান স্টেট ব্যাংক থেকে। এত কঠিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সিসি টিভির ফুটেজে ঠিকই তিনি ধরা পড়ে যান। এই প্রশ্ন এখানে মোটেই প্রাসঙ্গিক নয় যে, তিনি কী করে ভল্ট এলাকা থেকে টাকা চুরি করলেন! প্রাসঙ্গিক যে তিনি চুরি করে ধরা পড়েছেন। তাকে পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল কেন- সেই প্রশ্নও প্রাসঙ্গিক নয়। প্রাসঙ্গিক খুব বড় মুখে বলা যে, ইন্ডিয়ান স্টেট ব্যাংক তাকে বহিষ্কার করেছিল বলে জানিয়েছিল। থানা-পুলিশ এগুলো ভালো কাজ নয়। ‘যাহা ভালো নয়, তাহা বাংলাদেশ ব্যাংক করিতে পারে না।’

তাছাড়া পুলিশের ব্যাপার আসলে, নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ-প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন নয়, বিশ্বস্ততা বা বিশ্বাসই মূল বিষয়- বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চয়ই এই নীতি অনুসরণ করে।

৩. শুধু শুধু প্রশ্ন তোলা কিছু মানুষের বাতিক। বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রস্তর যুগে ফিরে গিয়ে কত ভালো কাজ করেছে, তা কিন্তু প্রমাণও হয়েছে। চিন্তা করে দেখেন ডিজিটাল ‘সুইফট’র ওপর নির্ভর করার কারণেই কিন্তু রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরি হয়ে গেছে। স্বর্ণের মতো টাকাও যদি ম্যানুয়ালি হ্যান্ডেল করা হতো, তাহলে এই চুরির সম্ভাবনা ছিল না। টাকা বস্তায় ভরে জাহাজে করে পাঠানোর ব্যবস্থা করলে ‘হ্যাকার’রা চুরির সুযোগ পেত না। টাকা গণনার জন্যে মেশিনের ওপর নির্ভর না করে, মানুষের ওপর নির্ভর করার নীতির কথাও বাংলাদেশ ব্যাংক ভেবে দেখতে পারে। তাহলে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।

৪. আস্থা এবং অনাস্থা- দুটি শব্দের অবস্থান পাশাপাশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ‘অনাস্থা’ শব্দটি উচ্চারণ করা ঠিক হবে না। আর শুধু ‘আস্থা’ নয়, যা কিছুই ঘটুক না কেন ‘বিশ্বাস’ও রাখতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি। শুল্ক ও গোয়েন্দা দপ্তর এক বছর ধরে অনুসন্ধান-তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে ছয় মাস আগে। একটি চিঠির উত্তর দেড় মাসেও দিতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে কিছু যায় আসে না, শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরের তদন্তকেও এত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, বাংলা-ইংরেজির ভুল, কেরানির ভুল- তা বিশ্বাস করতে হবে। ‘পরিমাপক স্বর্ণকার ৪ কে ৮ লিখে ফেলেছে’- এটাই বিশ্বাস করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো এক কর্তা  লিখেছেন, আমি নই- স্বর্ণকারের এই কথার চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে বেশি বিশ্বাস রাখতে হবে। আস্থা এবং বিশ্বাসই শেষ কথা, তার প্রমাণ অর্থ প্রতিমন্ত্রীও দিয়েছেন ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের স্বর্ণ ঠিকই আছে’। যেখানে ‘বিশ্বাস’ থাকে সেখানে তদন্ত-অনুসন্ধান-যাচাই-বাছাই গুরুত্বপূর্ণ নয়।  ‘বিশ্বাস’ না থাকলে কি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলতে পারতেন ‘সোনা গায়েবের কোনো ঘটনা ঘটেনি’!

৫. কোন দেশ কোন পদ্ধতিতে স্বর্ণ পরিমাপ করে, তাও বিবেচ্য বিষয় নয়। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব পদ্ধতিতে কাজ করতে পছন্দ করে। এখন কেউ কষ্টি পাথর ব্যবহার করে না, আধুনিক মেশিনের ওপর নির্ভর করে- তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু যায় আসে না। প্রকৃতির পাথরই সবচেয়ে বেশি ‘বিশ্বস্ত’। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি ‘আস্থা-বিশ্বাস’ আরও মজবুত করার জন্যে ‘অনুসন্ধান-তদন্ত’ ‘যাচাই-বাছাই’ শব্দগুলো আগামী কয়েকদিন আলোচিত হবে। তৃতীয় পক্ষ বা তৃতীয় কোনো দেশ থেকেও তদন্তকারী আনার কথা ভাবা শুরু হয়েছে। রিজার্ভ চুরির পরেও আনা হয়েছিল। যাকে বা যে প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করানো হয়েছিল, সন্দেহের তালিকায় তিনি বা তার প্রতিষ্ঠানও ছিল। চুরির পর আবার গোপনে তাকেই আনা হয়েছিল। তারপর কী হলো? ‘বিশ্বাস’ যেখানে প্রধান, সেখানে এ প্রশ্ন অবান্তর। ড. ফরাসউদ্দিন আহমদ ও ড. কায়কোবাদের করা তদন্ত রিপোর্ট, কয়েকবার দিন তারিখ দিয়েও প্রকাশ করা হয়নি। কারণ রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও ‘প্রশ্ন’ সামনে আসবে।

‘আস্থা এবং বিশ্বাস’র প্রতি ‘বিশ্বস্ত’ থাকার নীতিতে ‘প্রশ্ন’ পরিত্যাজ্য।

  • কার্টসিঃ দ্য ডেইলি স্টার / জুলাই ২৩,২০১৮