মোর্শেদ নোমান, ঢাকা
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নানা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চলছে ঢিমেতালে। বারবার অনুসন্ধান কর্মকর্তা বদলের জটে তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না সরকারি সেবা সংস্থাটির শীর্ষ কর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধান এগিয়ে চলছে। অভিযোগের প্রকৃতি ও ব্যাপকতার কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগতে পারে।
দুদক সূত্র জানায়, তিতাসের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির তিনটি বড় অভিযোগ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। এসব অভিযোগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক এমডি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সিবিএ নেতারা রয়েছেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে কাগজপত্র সংগ্রহ ছাড়া তেমন অগ্রগতি নেই বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, অনুসন্ধান বা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নানা কারণে কমিশন নানা বিচার–বিশ্লেষণ করেই এ পরিবর্তন করে। অনুসন্ধান বা তদন্তের প্রয়োজনে কর্মকর্তা পরিবর্তন হতে পারে। আবার বদলির কারণেও এটা হয়। তবে তাতে অনুসন্ধানে প্রভাব পড়ে না।
দুদক সূত্র বলছে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ, সীমার অতিরিক্ত গ্যাস ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিতাসের গাজীপুর ও টঙ্গী অঞ্চলের শীর্ষ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে এর দায়িত্ব ছিল উপপরিচালক আহমারুজ্জামানের। প্রেষণে দুদকে আসা এই কর্মকর্তা কয়েক মাস আগে পদোন্নতি পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান পুলিশে ফিরে যান। অনুসন্ধান পর্যায়ে অভিযোগ সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। নতুন অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান দুদকের আরেক উপপরিচালক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। তাঁর নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। দলের অন্য দুই সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান ও মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। দলটি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেপ্টেম্বরে দুই দফায় তিতাসের পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী এবং ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফায় তলব করেন। কিন্তু তাঁরা হাজির হননি। এরই মধ্যে আবারও অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে নতুন করে উপপরিচালক মো. মনজুর আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়।
পুরোনো ওই অভিযোগের সঙ্গে গাজীপুর, সাভার, ভালুকা ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে তিতাসের এমডিসহ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘কেজি মেপে ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে দেওয়া হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘তিতাসে “কেজি মেপে” ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে তিতাসের ঘুষ লেনদেনের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়।
ওই প্রতিবেদনে তিতাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মীর মশিউর রহমান, পাইপলাইন ডিজাইন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাব্বের আহমেদ চৌধুরী, ইলেকট্রিক্যাল কোরেশন কন্ট্রোল (ইসিসি) বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান, গাজীপুরের চলতি দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (বর্তমানে জিএম, ভিজিল্যান্স) এস এম আবদুল ওয়াদুদ এবং সাবেক কোম্পানি সচিব ও বর্তমানে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এমডি মোশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, সাব্বের আহমেদ চৌধুরী গাজীপুর বিক্রয় অঞ্চলে এবং মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমান টঙ্গী উত্তরের সিস্টেম অপারেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক থাকার সময়ে ঘুষ নিয়েছেন প্রধানত স্থাপনা পুনর্বিন্যাস, গ্রাহকদের অবৈধ গ্যাস-সংযোগ, গ্যাসের অবৈধ লোড বৃদ্ধি, অনুমোদন অতিরিক্ত স্থাপনা ব্যবহারের অবৈধ সুযোগ এবং পছন্দসই পদায়নকে কেন্দ্র করে। অভিযোগে খুদে বার্তায় ঘুষের আলাপের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে খুদে বার্তার রেকর্ড উল্লেখ করে বলা হয়, গাজীপুরে অবস্থিত এএমসি নিট কম্পোজিট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী প্রদীপ দাসের কাছ থেকে তিতাস কর্মকর্তা সাব্বের আহমেদ চৌধুরী পরিবার যে ঘুষ নিয়েছে, এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার একটি ঘটনা ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবরের। ওই দিন সাব্বের-প্রদীপের খুদে বার্তাগুলোয় ৫০ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে। একইভাবে গাজীপুরের ভিয়েলাটেক্স লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান থেকেও সাব্বের আহমেদ ও মীর মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষের বিষয়টি উঠে এসেছে। অনুরূপভাবে মো. আবু বকর সিদ্দিকুর রহমানসহ সবুর, জাহাঙ্গীর, টেপা, নোমান ও কাদেরসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে, মিটার টেম্পারিং ও মিটার বাইপাস করে গ্যাস–সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের আরও একটি অভিযোগ ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে অনুসন্ধান করছে দুদক। ওই অভিযোগে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সাবেক এমডি মীর মসিউর রহমানসহ আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। কিন্তু অসুস্থতার কথা জানিয়ে দুদকে হাজির হননি তাঁরা। এরই মধ্যে ৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এর কয়েক দিন পরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরীকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানা গেছে, আগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে প্রেষণে নদী রক্ষা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান
তিতাসের সিবিএ সভাপতি ও দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আলাদা আরেকটি অনুসন্ধান করছে দুদক। সংস্থার উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান অনুসন্ধানের দায়িত্ব আছেন।
সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিনসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ গ্যাস–সংযোগ ও মিটার টেম্পারিংসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সিবিএ সভাপতি কাজীম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আয়াজ উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ নাসীর উদ্দিন, হিসাব রক্ষক আসাফুদ্দৌল্লাহ টুটুল ও সাভার মিটারিং অ্যান্ড ভিজিল্যান্স শাখার ডেপুটি ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলামকে সেপ্টেম্বরে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
এ ছাড়া তিতাসের আরও অন্তত এক ডজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলমান। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনুসন্ধানে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে অনেক সময় অভিযোগ–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অভিযোগের বিষয়গুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। অনেকে সময় নথিপত্রসহ নানা প্রমাণ গায়েব করার মতো কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে যেতে পারেন। তবে দুদক বলছে, অনুসন্ধানে সময় নেওয়া হয় যথাযথ তথ্য–প্রমাণ জোগাড় করার জন্য। যত দ্রুত প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ও প্রমাণ পাওয়া যায়, তত দ্রুতই অনুসন্ধান শেষ হয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
Search
Sunday, October 28, 2018
পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে যাত্রীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে সারা দেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গণপরিবহন, বিশেষ করে বাসের অপেক্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সড়কে থাকা বিআরটিসির স্বল্পসংখ্যক বাস মানুষে ঠাসা। যেসব জায়গায় বাস থামে, সেখানে অপেক্ষায় অনেক মানুষ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে আজ সকাল ছয়টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। চলবে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত। সড়ক পরিবহন খাতের শ্রমিকদের এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। দাবি আদায় না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ ধর্মঘট শুরুর দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিসগামী যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে রওনা দেন গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে। কেউ বেশি ভাড়ায় রিকশা অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় আজ সকাল থেকেই শত শত মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিআরটিসির দু-একটি বাস আসতেই তাতে উঠতে হুড়োহুড়ি করছেন যাত্রীরা। রাস্তায় অপেক্ষা করতে করতে অনেককেই হাঁটা শুরু করছেন।
মগবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন শাপলা জাহান। তিনি কারওয়ান বাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
রাজধানীর মহানগর হাউজিং সোসাইটি থেকে কারওয়ান বাজারে যাওয়ার জন্য নওরীন হাসানকে আজ অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নওরীন বলেন, ‘অন্য দিন পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাস পেয়ে যাই। আজ বাস পাইনি। এরপর সিএনজির জন্য অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলাম। কিন্তু তাও নেই। রিকশা পেলাম না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সবজি নিয়ে আসা এক ভ্যানওয়ালাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে অবশেষে তাতে করে কারওয়ান বাজারে আসি।’
মালিবাগ, মৌচাক ও মগবাজারে আজ সকাল থেকে প্রতিদিনের চেনা দৃশ্য নেই। মগবাজারে যেখানে বাসের ভিড় লেগে থাকে, আজ সেখানে বিআরটিসির বাসের দেখা মিলছে বেশ খানিকক্ষণ পরপর। যাত্রীতে ঠাসা সেই বাসে উঠতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেছে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের।
রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল, শ্যামলী ও মিরপুর-১-এ শত শত মানুষকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে সারা দেশে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গণপরিবহন, বিশেষ করে বাসের অপেক্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হাজারো যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সড়কে থাকা বিআরটিসির স্বল্পসংখ্যক বাস মানুষে ঠাসা। যেসব জায়গায় বাস থামে, সেখানে অপেক্ষায় অনেক মানুষ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে আজ সকাল ছয়টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়। চলবে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত। সড়ক পরিবহন খাতের শ্রমিকদের এই সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। দাবি আদায় না হলে ৩০ অক্টোবর থেকে লাগাতার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
আজ ধর্মঘট শুরুর দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিসগামী যাত্রীদের গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে রওনা দেন গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে। কেউ বেশি ভাড়ায় রিকশা অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাচ্ছেন।
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় আজ সকাল থেকেই শত শত মানুষকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বিআরটিসির দু-একটি বাস আসতেই তাতে উঠতে হুড়োহুড়ি করছেন যাত্রীরা। রাস্তায় অপেক্ষা করতে করতে অনেককেই হাঁটা শুরু করছেন।
মগবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় ছিলেন শাপলা জাহান। তিনি কারওয়ান বাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
রাজধানীর মহানগর হাউজিং সোসাইটি থেকে কারওয়ান বাজারে যাওয়ার জন্য নওরীন হাসানকে আজ অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নওরীন বলেন, ‘অন্য দিন পাঁচ মিনিটের মধ্যে বাস পেয়ে যাই। আজ বাস পাইনি। এরপর সিএনজির জন্য অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলাম। কিন্তু তাও নেই। রিকশা পেলাম না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সবজি নিয়ে আসা এক ভ্যানওয়ালাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করে অবশেষে তাতে করে কারওয়ান বাজারে আসি।’
মালিবাগ, মৌচাক ও মগবাজারে আজ সকাল থেকে প্রতিদিনের চেনা দৃশ্য নেই। মগবাজারে যেখানে বাসের ভিড় লেগে থাকে, আজ সেখানে বিআরটিসির বাসের দেখা মিলছে বেশ খানিকক্ষণ পরপর। যাত্রীতে ঠাসা সেই বাসে উঠতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেছে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের।
রাজধানীর গাবতলী, টেকনিক্যাল, শ্যামলী ও মিরপুর-১-এ শত শত মানুষকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
Courtesy: Prothom Alo Oct 28, 2018
সার্ভিস চার্জের নামে চাঁদাবাজি
ড্রিঞ্জা চাম্বুগং, ঢাকা
সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
উত্তরা বিডিআর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে দৈনিক ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। সার্ভিস চার্জের নামে বাজারের পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে আদায় করা এই টাকার পরিমাণ মাসে ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারের বৈদ্যুতিক বিল, পানির বিলসহ অন্যান্য পরিষেবা বাবদ মাসে এত টাকা কখনো হয় না। আদায় করা টাকার অধিকাংশই যায় কয়েকজনের পকেটে। সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মে মাস থেকে ‘উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রেতা-বিক্রেতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের’ রসিদে চাঁদা তোলা শুরু হয়। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদে কয়েক দিনের মধ্যেই কৌশল বদলানো হয়। রসিদ বাদ দিয়ে তখন রেজিস্টার খাতায় টাকা আদায় শুরু হয়।
সার্ভিস চার্জের রসিদ অনুযায়ী, দৈনিক বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৩ টাকা, জেনারেটরের জন্য ২৫, পানির বিল ৭, নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন ২৫, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন ১০, টয়লেট খরচ ৭, অফিস খরচ ৮, অফিস স্টাফদের বেতন ২৬, বাজার উন্নয়নে ৪০ এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ২৯—এই মোট ২০০ টাকা দিতে হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সার্ভিস চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তোলা হয়, এর অর্ধেকও খরচ হয় না। অধিকাংশ টাকা যায় সমিতির নেতাদের পকেটে।
একটি লাইন থেকে পুরো বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) হিসাবে দেখা যায়, বহুমুখী সমবায় সমিতির ৬৬৩১১০০০০০০১-নম্বর মিটারে জুনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, জুলাইতে ১ লাখ ৯৩ হাজার বিল হয়েছে। চলতি অক্টোবরের প্রথম ১১ দিনে ৬৫ হাজার টাকার মতো বিল হয়েছে। ওই মিটারে প্রতি মাসে গড়ে পৌনে দুই লাখ টাকার বেশি বিল হয় না বলেও ডেসকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল বাবদ দৈনিক ২৩ টাকা করে পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা তোলা হয়। অর্থাৎ মাসে যে পরিমাণ বিল হয়, এর দ্বিগুণ টাকা তোলা হয় বিদ্যুৎ বিল বাবদ।
বাজারটিতে ওয়াসার দুটি পানি সংযোগ আছে। দুই সংযোগেরই গ্রাহক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন। দুই সংযোগে জুলাইতে ৬৯ হাজার ৮১২ টাকা, আগস্টে ৫৬ হাজার ৮০ এবং সেপ্টেম্বরে ৪৪ হাজার ৫০৭ টাকা বিল হয়েছে। অথচ দৈনিক ৭ টাকা বাবদ এক মাসে ব্যবসায়ীদের কাছে এক লাখ টাকার বেশি আদায় করা হয় পানির বিল বাবদ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন বিডিআরের পরিচালনায় এই বাজার তৈরি করা হয়। সেই থেকে এটি বিডিআর বাজার নামেই পরিচিত। তবে এখন এটি সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গেল মে মাসের আগে সমিতির সার্ভিস চার্জ ছিল দৈনিক ১০ টাকা। আর প্রতিটি দোকানে সাব-মিটার আছে। সে অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল দিতে হতো। ব্যবসার ধরনভেদ তখন ৩০০-৯০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। এতে একজন ব্যবসায়ীর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুতের বিলসহ মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকার মতো লাগত। এখন এই খরচ পাঁচ-ছয় গুণ বেড়ে গেছে।
সবজি ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, দৈনিক ১০ টাকায় তাঁরা আগে নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, পানি, জেনারেটরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা পেতেন। তিনি বলেন, আগে মিটার অনুযায়ী মাসে ৩০০-৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা আসত। এখন ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরই মাসে ছয় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. আলী রাজ বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে সার্ভিস চার্জের নামে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী—সব সমিতির নামে, তাই চাঁদা না দিয়ে উপায় নেই। তিনি বলেন, সমিতির নেতা আনোয়ার হোসেন, খালেক সরকার, আলী মাস্টার, নূর আলম, ইলিয়াস, জাহাঙ্গীর ও আকতাররা সমিতির নামে এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
যোগাযোগ করা হলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের মতেই সার্ভিস চার্জ দৈনিক ২০০ টাকা করা হয়েছিল। সব খরচ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উদ্দেশ্য ছিল দোকানঘর সংস্কার। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিনের মধ্যে সার্ভিস চার্জ নেওয়া বন্ধ করা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছে এখন কোনো টাকা নেওয়া হয় না। রেজিস্টার খাতায় লিখে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
তবে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খালেক সরকারের দেখানো রসিদে অক্টোবরের ১০ তারিখে মাছ-মুরগির দোকান থেকে জেনারেটর ও পানি বাবদ ২০ টাকা, কাঁচাবাজার থেকে পানি বাবদ ২০ টাকা আর মুদিবাজার থেকে জেনারেটর বাবদ ৪০ টাকা করে দৈনিক ওঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে খালেক সরকার বলেন, এটা চাঁদাবাজি নয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 27, 2018
সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
উত্তরা বিডিআর বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে দৈনিক ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়। সার্ভিস চার্জের নামে বাজারের পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে আদায় করা এই টাকার পরিমাণ মাসে ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজারের বৈদ্যুতিক বিল, পানির বিলসহ অন্যান্য পরিষেবা বাবদ মাসে এত টাকা কখনো হয় না। আদায় করা টাকার অধিকাংশই যায় কয়েকজনের পকেটে। সার্ভিস চার্জ না দিলে বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। সমিতি কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মে মাস থেকে ‘উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রেতা-বিক্রেতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের’ রসিদে চাঁদা তোলা শুরু হয়। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদে কয়েক দিনের মধ্যেই কৌশল বদলানো হয়। রসিদ বাদ দিয়ে তখন রেজিস্টার খাতায় টাকা আদায় শুরু হয়।
সার্ভিস চার্জের রসিদ অনুযায়ী, দৈনিক বিদ্যুৎ বিল বাবদ ২৩ টাকা, জেনারেটরের জন্য ২৫, পানির বিল ৭, নিরাপত্তাকর্মীদের বেতন ২৫, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বেতন ১০, টয়লেট খরচ ৭, অফিস খরচ ৮, অফিস স্টাফদের বেতন ২৬, বাজার উন্নয়নে ৪০ এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ২৯—এই মোট ২০০ টাকা দিতে হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সার্ভিস চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তোলা হয়, এর অর্ধেকও খরচ হয় না। অধিকাংশ টাকা যায় সমিতির নেতাদের পকেটে।
একটি লাইন থেকে পুরো বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) হিসাবে দেখা যায়, বহুমুখী সমবায় সমিতির ৬৬৩১১০০০০০০১-নম্বর মিটারে জুনে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা, জুলাইতে ১ লাখ ৯৩ হাজার বিল হয়েছে। চলতি অক্টোবরের প্রথম ১১ দিনে ৬৫ হাজার টাকার মতো বিল হয়েছে। ওই মিটারে প্রতি মাসে গড়ে পৌনে দুই লাখ টাকার বেশি বিল হয় না বলেও ডেসকোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল বাবদ দৈনিক ২৩ টাকা করে পাঁচ শতাধিক দোকান থেকে মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা তোলা হয়। অর্থাৎ মাসে যে পরিমাণ বিল হয়, এর দ্বিগুণ টাকা তোলা হয় বিদ্যুৎ বিল বাবদ।
বাজারটিতে ওয়াসার দুটি পানি সংযোগ আছে। দুই সংযোগেরই গ্রাহক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন। দুই সংযোগে জুলাইতে ৬৯ হাজার ৮১২ টাকা, আগস্টে ৫৬ হাজার ৮০ এবং সেপ্টেম্বরে ৪৪ হাজার ৫০৭ টাকা বিল হয়েছে। অথচ দৈনিক ৭ টাকা বাবদ এক মাসে ব্যবসায়ীদের কাছে এক লাখ টাকার বেশি আদায় করা হয় পানির বিল বাবদ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন বিডিআরের পরিচালনায় এই বাজার তৈরি করা হয়। সেই থেকে এটি বিডিআর বাজার নামেই পরিচিত। তবে এখন এটি সমিতির মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। গেল মে মাসের আগে সমিতির সার্ভিস চার্জ ছিল দৈনিক ১০ টাকা। আর প্রতিটি দোকানে সাব-মিটার আছে। সে অনুযায়ী বিদ্যুতের বিল দিতে হতো। ব্যবসার ধরনভেদ তখন ৩০০-৯০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। এতে একজন ব্যবসায়ীর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুতের বিলসহ মাসে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকার মতো লাগত। এখন এই খরচ পাঁচ-ছয় গুণ বেড়ে গেছে।
সবজি ব্যবসায়ী আবুল হাসেম বলেন, দৈনিক ১০ টাকায় তাঁরা আগে নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা, পানি, জেনারেটরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা পেতেন। তিনি বলেন, আগে মিটার অনুযায়ী মাসে ৩০০-৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসত। সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা আসত। এখন ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরই মাসে ছয় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মো. আলী রাজ বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে সার্ভিস চার্জের নামে জোর করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী—সব সমিতির নামে, তাই চাঁদা না দিয়ে উপায় নেই। তিনি বলেন, সমিতির নেতা আনোয়ার হোসেন, খালেক সরকার, আলী মাস্টার, নূর আলম, ইলিয়াস, জাহাঙ্গীর ও আকতাররা সমিতির নামে এই চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত।
যোগাযোগ করা হলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীদের মতেই সার্ভিস চার্জ দৈনিক ২০০ টাকা করা হয়েছিল। সব খরচ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উদ্দেশ্য ছিল দোকানঘর সংস্কার। তবে ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে তিন দিনের মধ্যে সার্ভিস চার্জ নেওয়া বন্ধ করা হয়। ব্যবসায়ীদের কাছে এখন কোনো টাকা নেওয়া হয় না। রেজিস্টার খাতায় লিখে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
তবে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খালেক সরকারের দেখানো রসিদে অক্টোবরের ১০ তারিখে মাছ-মুরগির দোকান থেকে জেনারেটর ও পানি বাবদ ২০ টাকা, কাঁচাবাজার থেকে পানি বাবদ ২০ টাকা আর মুদিবাজার থেকে জেনারেটর বাবদ ৪০ টাকা করে দৈনিক ওঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে খালেক সরকার বলেন, এটা চাঁদাবাজি নয়।
Courtesy: Prothom Alo Oct 27, 2018
Thursday, October 25, 2018
নির্বাচনের আগে প্রকল্প পাসের হিড়িক : ব্যয়ের জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হোক
সম্পাদকীয়
নির্বাচনের আগে প্রকল্প পাসের হিড়িক পড়ে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। কিন্তু সব রেকর্ড ভেঙে এবার দেড় মাসে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের প্রকল্প পাস করেছে সরকার। বেশির ভাগ প্রকল্পই ভোটারদের খুশি করার নির্বাচনী প্রকল্প বলে অভিযোগ মিলছে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তেমন যাচাই-বাছাই না করেই প্রকল্প পাঠাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনে। আর পরিকল্পনা কমিশনও অতিরিক্ত চাপে যথাযথ যাচাই না করেই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাঠাচ্ছে। এতে করে প্রকল্পের মান রক্ষা ও বেশি ব্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। এছাড়া অনেক প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে, যা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা একে ভোটার আকর্ষণে সরকারের কৌশল হিসেবেই দেখছেন। এতে অর্থের অপচয়সহ দুর্নীতি বেড়ে ওঠার আশঙ্কাও রয়েছে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, নির্বাচনের সময় দ্রুত প্রকল্প পাস করতে গিয়ে মানহীন ও অগুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে আর বাস্তবায়ন হয় না, শুধু অর্থের অপচয় হয়। ভোটার আকর্ষণে এমন প্রবণতা দেশের অর্থনীতির জন্য তো বটে, জনগণ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। দেশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা প্রয়োজন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, নতুন অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর সঙ্গে দলীয় রাজনীতির অনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা। যদি দলীয় সংশ্লিষ্টতা থাকে, সেক্ষেত্রে প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় থেকে যায়। ঠিকমতো বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া না হলে এর সঠিক মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এতে অপচয় হয় সরকারি অর্থের। অতীতে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে। কাজেই প্রকল্প অনুমোদন দেয়াই যথেষ্ট নয়, তার যথাযথ মান নিশ্চিত করা এবং নির্দিষ্ট সময় ও স্বল্প ব্যয়ে সম্পন্ন করাই বড় বিষয়।
বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন বলতে টাকা ছাড়করণকে বোঝানো হয়। বাস্তবতা হলো টাকা ছাড়করণ নয়, প্রকল্পের মান ঠিক রেখে যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করাই হলো বাস্তবায়ন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রতি বছর বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর অদক্ষতার কারণে এডিপি কাটছাঁট করা হয়। বাস্তবায়ন কম হওয়ার ফলে বৈদেশিক সাহায্যের ছাড়ও কমে যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় এডিপির অর্থায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নেয়া প্রকল্পগুলোয় মাঠপর্যায়ে নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন। দরকার অর্থনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক মনোযোগ দেয়া। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এডিপির যথাযথ বাস্তবায়ন অপরিহার্য। অর্থনৈতিক অগ্রগতি অনেকাংশে এডিপি বাস্তবায়নের ওপর নির্ভরশীল। বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করতে এটি সরকারের বিনিয়োগ। তাছাড়া আমাদের অবকাঠামোগত দুর্বলতা চরম। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর দুর্বল অবকাঠামোর জন্য আমরা কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে ব্যর্থ হচ্ছি।
প্রতিটি প্রকল্পের শুরুতে যে ব্যয় দেখানো হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়ে যায়। অনেক প্রকল্পই অনুমোদনের ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করা হয়েছে। এছাড়া কঠিন শর্তের ঋণ নিয়েও বড় বড় প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। আমরা এখন ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের দিকে যাচ্ছি। নিয়মানুসারে প্রকল্পে মোট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থার অর্থায়ন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়। সব প্রকল্পেই বিদেশী সহায়তা পাওয়া যায় না। তখন দেশীয় অর্থায়ন থেকে এসব ব্যয় মেটানো হয়। বস্তুত ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে সরকারি বিনিয়োগ পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন একান্ত দরকার। এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সফলতা অর্জনের জন্য দরকার দক্ষতা বৃদ্ধি, সঠিক প্রকল্প নির্বাচন, সুব্যবস্থাপনা, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান। এটি ছাড়া পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করতে হবে। সবাইকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কাজ করতে হবে। এমন প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে, যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির সহায়ক হয়। পাশাপাশি দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাস পায়। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলো পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়াও বাঞ্ছনীয়।
- কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ ২৫ অক্টোবর ২০১৮
Quality leadership matters in banks
EDITORIAL
That the failure of the top management is, to a large extent, responsible for the current uncomfortable state of the country's banking sector is an indisputable fact. Problems such as soaring non-performing loans (NPLs), liquidity and capital shortage, forgery and loan scams are rooted in the deficiency noted at the top management level of a number of banks. A seminar organised by the Bangladesh Institute of Bank Management (BIBM) on Monday last listed the absence of capable and efficient leaders as the root cause of management failure in banks.
The observation, obviously, would arouse an uncomfortable feeling in the top echelons of most banks, but they are unlikely to react to it. Unfortunately, the prevailing situation in the banking industry leaves enough room for anyone to shower criticism, only if he or she intends to do so.
Of the all the problems, the one concerning NPL has been hurting the banks most. None would dispute the fact that not all borrowers are expected to faithfully service their debts to banks. Even in efficient banking systems, there is some amount of default loans. But the problem becomes too difficult to handle when NPL volume overshoots the manageable level. If a bank is manned by capable leaders, its NPL would remain within the manageable limit, for they would ensure that the relevant officials of the bank are diligent in sanction, disbursement and recovery of loans.
The NPL problem is rather an acute one in Bangladesh. Even after window-dressing its share in the total outstanding loans is estimated to be more than 10 per cent. But the actual size of NPL would be much bigger in the case of state-owned banks. Though the public sector banks are only a few in numbers they have a big share in the NPL -- 40 private banks had NPL worth Tk 480 billion while NPL in only 8 (eight) public sector banks had soared to Tk 390 billion at the end of June last.
The very size of the NPL in any bank does actually highlights the efficiency level of the bank management. The profit earned by the bank may also be an indicator, but not always. Reasonable profit with low NPL level should be an ideal yardstick, for higher rate of NPL puts a bank in real trouble and shows the bank's top management's incompetence. Higher NPL not only erodes a bank's profitability, but also creates multifarious troubles, including capital shortage.
The quality of leadership at the management level is thus very important for banks. The first thing a competent leadership would try to do is to ensure good governance which is considered sine qua non for quality performance, financial or otherwise, by an entity. The banks have, in effect, a two-tier leadership: one is provided by the professional bankers and the other by the board of directors. When the constituents of the two tiers perform in unison to ensure good governance at all levels, the results are bound to be good for banks.
There is again the banking sector regulator, the Bangladesh Bank, which is legally empowered to facilitate healthy growth of banking sector and punish errant operators. It, however, enjoys limited power in the case of management affairs of the public sector banks.
Recruitment of competent professionals having high ethical standards at the professional management level is very important. And the top management of banks comprising professional bankers must also enjoy operational freedom and confidence of the board. This happens only when the board itself is represented by enlightened people having high level of honesty and integrity. The BIBM survey has detected the absence of strong leadership in the country's banking sector. The central bank, in particular, should search its soul whether it has done enough to get strong leaders at the forefront of the banking sector.
- Courtesy: The Financial Express /Oct 25, 2018
Economists moot new poverty benchmark
Improving living standard
Senior economist Prof Wahiduddin Mahmud has suggested the government change the poverty estimation method considering the current global and domestic socio-economic scenarios.
"Our national poverty-line income should be changing over time as standard of living improves. It's a moving goal," he said.
"Why should we be staying at the same poverty line when we become a middle-income country? We should redefine the poverty line estimate," Prof Mahmud stated.
"Currently, poverty is estimated here by expenditure. But if we estimate poverty considering income, the rate could be higher," he said at a programme in Dhaka on Wednesday.
Bangladesh should measure poverty by redefining the poverty-line income taking into account the changes occurred over time and improvement in living standards.
The General Economic Division (GED) of the Planning Commission organised the event at its office to launch two books on poverty.
The books were titled 'Aiding Resilience among the Extreme Poor in Bangladesh' and 'Extreme Poverty, Growth and Inequality in Bangladesh'.
University Press Ltd (UPL) Dhaka and Practical Action Publishing, UK, published the books respectively. At the event, state minister for finance and planning MA Mannan agreed with Prof Mahmud and said poverty method based on income estimate needs to be changed.
"Reality must be faced so we get real picture," added Mr Mannan who was present as the chief guest.
Geof Wood, emeritus professor at University of Bath, UK, Dr Binayak Sen, research director at Bangladesh Institute of Development Studies (BIDS), economist Prof Abdul Bayes took part in the discussion.
GED member Prof Shamsul Alam chaired the event.
According to the BBS data, Bangladesh's poverty rate came down to 21.8 per cent and the extreme poverty rate to 11.3 per cent in 2018.
The rates were 23.1 per cent and 12.1 per cent a year ago, the data showed.
Prof Mahmud said Bangladesh estimates poverty based on its own measurement tools. "If we use global methods, the estimate could be different."
He, however, said the country is on track to eradicate extreme poverty.
"Once Bangladesh was seen as a test case-if it can develop, any other country can develop," he told the gathering.
"But there is a difference now. If it is said that if any country leads to eradicate poverty, may be it could be Bangladesh," the economist asserted.
Meanwhile, Dr Sen said although poverty is falling in Bangladesh, income inequality is rising.
"We need to think how to address the higher trend of income inequality as the Gini coefficient could go beyond 5.2 level within a short period," he added.
The Gini coefficient is a scale of measuring income inequality where 0 to 1.0 is considered as the lower to higher levels of inequality.
Although many people are now out of poverty, Mr Sen said, they might slip into "poverty trap" for varies possible shocks and other factors.
Prof Bayes said the level of inequality was low in the post-independence period, but it is higher now.
"Overtime the inequality has become larger and poverty has declined," the economist mentioned.
Meanwhile, Prof Alam said when the Gini coefficient of a country goes above 0.5, it will fall into a danger zone owing to social unrest.
The Gini coefficient in Bangladesh has now stood at 0.458, according to the BBS data.
Prof Mahmud said Bangladesh has a lot of social safety-net programmes but most of them are overlapping, thus increasing the service delivery cost.
Meanwhile, Prof Wood said extreme poor families cannot easily be reached through generic policy and operational packages.
"They require much more precise support, calibrated to their particular combination of circumstances," he said.
Prof Wood suggested setting up a new "cadre of social workers" to give more support to the vulnerable households.
- Courtesy: The Financial Express/ Oct 25, 2018
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। প্রথম মাঠের কর্মসূচি সিলেটের জনসভা থেকে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে।
ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি তুলে ধরে সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়া ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তি দাবি করেন। সকালে হযরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে ঐক্যফ্রন্টের মাঠের কর্মসূচি শুরু করেন শীর্ষ নেতারা। দুপুরের পর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আয়োজিত জনসভায় অংশ নেন তারা। সমাবেশ ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে তা সম্পন্ন হয়েছে। জনসভায় জামায়াত ছাড়া ২০ দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলের নেতারা বক্তব্য দেন। দুপুরের পরে শুরু হওয়া সমাবেশ বিকালে রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাড়িয়ে আশেপাশের সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। জনসভা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরে ছিল পুরো এলাকা।
জনসভায় আসতে পথে পথে বাধারও অভিযোগ করেছেন নেতারা। সমাবেশ শেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে।
জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের শরিক দলের যেসব নেতা বক্তব্য দেননি তাদের মঞ্চ থেকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়াসহ আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি’র দাবিতে বেলা ২টায় এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এতে সভাপতিতত্ব করেন। বেলা ২টা বাজতেই বাধা উপেক্ষা করে সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। বেলা আড়াইটায় যখন সমাবেশস্থলে ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মঞ্চে পৌঁছেন তখন কানায় কানায় ভরপুর পুরো মাঠ। এরপর থেকে মানুষ বাড়তে থাকে সমাবেশ স্থলে। ক্রমেই জনতার ঢল ছড়িয়ে পড়ে সামনের রাস্তায়। একদিকে সিটি পয়েন্ট ও অন্যদিকে তালতলা পয়েন্ট পর্যন্ত ছিল মানুষের উপস্থিতি। রেজিস্ট্রারির মাঠের সামনেই সুরমা মার্কেট। মার্কেটের প্রতিটি তলায় অবস্থান ছিল নেতাকর্মীদের। বিপুলসংখ্যক লোক সমাগমের মধ্যেও পুলিশ ও র্যাবের কড়া টহল ছিল।
নিকট অতীতে কোনো কর্মসূচিতে রেজিস্ট্রারি মাঠে এত লোক সমাগম ঘটেনি বলে জানিয়েছেন আশপাশের ব্যবসায়ীরা। বেশিসংখ্যক লোকের উপস্থিতি থাকলেও সেটি ছিল শান্তিপূর্ণ। নগরীর প্রবেশমুখ দক্ষিণ সুরমা এলাকায় গাড়ি রেখে বিভিন্ন জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা হেঁটে হেঁটে সমাবেশস্থলে পৌঁছেন। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত সাদেকের সঞ্চালনায় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্রের প্রজা হয়ে থাকতে চায় না, দেশের মালিক তাদের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। এজন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বিজয় অনিবার্য।
ড. কামাল হোসেন উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার কি মাঠে থাকবেন? এ সময় জনসভায় উপস্থিত জনতা হ্যাঁ বলে সম্মতি জানান। সংবিধান প্রণেতা বলেন, আমাদের প্রায়ই শুনতে হয় মাঠে নাই। আমরা আগামী দিনে কর্মসূচি দেবো। তার জন্য মাঠে নামতে হবে। ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি উল্লেখ করে তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানের ৭নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনগণ দেশের মালিক।
কিন্তু আপনারা কি মালিকানার ভূমিকায় থাকতে পেরেছেন? জনগণ যেন মালিকানা পায়, এজন্য আমরা ৭ দফা দিয়েছি। এই ৭ দফা আপনাদের কাছে বিতরণ করা হবে। আপনারা এগুলো নিয়ে গ্রামে গ্রামে, ইউনিয়নে ইউনিয়নে, থানায় থানায়, জেলায় জেলায় যাবেন। ঐক্যফ্রন্টের এই দাবি হালকাভাবে নেবেন না। এত বড় জিনিস ফিরিয়ে আনার জন্য আপনাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনসভা সফল করায় সিলেটের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, মালিকানা উদ্ধারে জনগণের ঐক্য অপরিহার্য।
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে নির্বাচন না হলে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। সত্যিকার নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা সাত দফা দিয়েছি। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করবো। ড. কামাল হোসেন বলেন, বারবার বলা হয় উন্নয়ন, কিন্তু কার উন্নয়ন? যারা আমাদের ভোট বঞ্চিত করে রেখেছে, তাদের উন্নয়ন।
জনসভার প্রধান বক্তা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিলেট অনেক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে, আজ আরেকটি ইতিহাসের জন্ম দিলো। সেই ইতিহাস গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনবো। সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে। বলেন, আজকে যে নতুন লড়াই শুরু হলো, সেই লড়াইয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে। তারেক জিয়াসহ সব বন্দিদের মুক্ত করে আনতে হবে। বিএনপি মহাসচিব নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে জনগণকে আহ্বান জানান।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, দেশটা ডাকাতের হাতে পড়েছে। তিনি উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশকে বাঁচাতে চান? খালেদা জিয়ার মুক্তি চান? তাহলে শুধু নিজেরা মাঠে নামলে হবে না, সর্বস্তরে জনগণকে নামাতে হবে। তিনি বলেন, এই সমাবেশে আসতে কর্মীদের বাধা দেয়া হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার পরও সিলেট শহরে কোনো রাস্তায় জায়গা নেই। তিনি বলেন, সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, আর একটি কর্মীর গায়ে হাত দিলে সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নামবে। এ লড়াই বাঁচার লড়াই, এ লড়াই ভোটের অধিকারের লড়াই। এ লড়াইয়ে জিততে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজ নতুন যাত্রা শুরু হলো। ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশে একটি স্বৈরাচারি সরকার রয়েছে। এ কারণে ঐক্য করতে হয়েছে। এই ঐক্যের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। উচ্চতম থেকে নিম্নতম পর্যায়ে দুর্নীতি হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে সব ঘুষ দুর্নীতির হিসাব নেবো। একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবো। তিনি বলেন, এই সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে, রিজার্ভ, কয়লা লুট করেছে, এজন্য সরকার ভয় পায়। কিন্তু যতই ভয় পাক, নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তফসিল ঘোষণার ্আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এদেশের জনগণের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি, সারা দেশের জনগণ রাস্তায় নামবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সভা সফল করার জন্য বিএনপি সভাপতির বাড়িতে একটি বৈঠক বসেছিল, পুলিশ সেখানে হানা দিয়েছে। নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করা হয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করা হয়েছে। সিলেটের প্রত্যেকটি রাস্তা পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে। বাস থেকে সমাবেশে আসা মানুষকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। টেম্পু, থ্রি হুইলার এগুলোতে যারা আসছে তাদেরকে পর্যন্ত নামিয়ে দিয়েছে। এই জনসভা গতকাল (মঙ্গলবার) করার কথা ছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু আমরা ঠিকই আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। এই রেজিস্ট্রারি মাঠে লাখো জনতা হাজির হয়েছে। তিনি বলেন, দেশ এখন গভীর সংকটে।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এখন জেলে, উনার হাঁটুতে ব্যথা, দুইবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। ৭৩ বছর বয়সে তার জেল খাটবার কথা নয়। কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। তার বিচার হয়নি। অথচ তার দুই কোটি টাকা ফুলে ফেঁপে ৬ কোটি টাকা হয়েছে। আমরা সবাই বলছি তার মুক্তি চাই। আমি জানি আপনাদের সবার মনের মধ্যে ক্ষোভ। আপনারা আগামী দিনে শপথ নিন কিভাবে তাকে মুক্ত করে আনতে পারি। দোতলার একটা ভাঙা জায়গায় তাকে রাখা হয়েছে, হাঁটুর ব্যথার কারণে হাঁটতে পারেন না, নিচে নামতে পারেন না, ডাক্তার দেখা করতে যায়, দেখা করতে দেয়া হয় না। উনি সেখান থেকে নেমে জেলগেট পর্যন্ত আসতে পারবেন এমন শক্তি নেই। মেরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেক দেন-দরবার করে তাকে পিজিতে আনা হয়েছে। যে ডাক্তার দেখাতে চান তাকে দেখতে দেয়া হচ্ছে না। তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, শুধু চিৎকার, স্লোগান দিয়ে নয়, কীভাবে মুক্ত করে আনতে পারি সেই চিন্তা করেন।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আজ আমাদের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়। ২০১৪ সালে এক দল খেলেছে মানে ওয়াক ওভার। যদি কেউ মনে করে এইবার ওয়াক ওভার নিয়ে আবার খেলতে পারবে, সে সুযোগ দেয়া হবে না। গতবার নির্বাচনের সময় ঘরের মধ্যে ছিলেন, এই বার যদি আমরা নির্বাচনে অংশ নিই, কোটি কোটি মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন। পাশে থাকবেন।
এই সমাবেশ দেখে সরকার অবাক হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা একদিনের গণতন্ত্র চাই না, সারা বছরের গণতন্ত্র চাই। সেই লড়াইয়ে সবাইকে পাশে চাই।
ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, সিলেটে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জন্ম। তারা মুক্তিযুদ্ধে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। সিলেটের মানুষ কখনো নিচু করে না, মাথা উঁচু করে হাঁটে। শাহজালাল, শাহপরানের এ অধ্যাত্মিক ভূমি থেকে একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সূচনা হলো। সফলতা আসবেই। তিনি বলেন, সিলেটের মানুষ বিদেশ থেকে লাখ লাখ টাকা পাঠায় আর সরকারের লোকজন পাচার করে।
সুলতান মনসুর বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে। তিনি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। রেফারি এবং খেলোয়াড় একজন হবে না, রেফারিং করতে চাইলে খেলোয়াড় হওয়া যাবে না, আর খেলোয়াড় হতে চাইলে রেফারি হওয়া যাবে না।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, এই সমাবেশে প্রতি পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নাটক করছি। কিন্তু কালকে সারারাত নাটক দেখেছি। নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। এত বাধার পরও সমাবেশে তিল ধারণের জায়গা নেই। তিনি বলেন, জনতা এই দেশের মালিক, তারা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে চায়। এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সেই অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমরা কিছু সিকি আধুলি একত্রিত হয়েছি। তিনি বলেন, এই সিকি আধুলির আমিও একজন। আজকে হয়রানি চলছে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ বলেন, কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট মুক্তির জন্য কাজ করছে। খালেদা জিয়া তাতে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আইনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার কামাল হোসেন, মইনুল হোসেনরা করতে পারবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আর কামাল হোসেনের পার্থক্য কোথায়? তিনি বলেন উনারা (সরকার) চাচ্ছে ঢাকার বাংলাদেশ আর আমরা চাচ্ছি সিলেটের বাংলাদেশ, বরিশালের বাংলাদেশ। সমগ্র দেশের বাংলাদেশ। প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে ওষুধের দাম, চিকিৎসা ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে। কৃষক-শ্রমিক ন্যায্য মূল্য পাবে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোরও প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়া এখন জেলে, শেখ হাসিনা কী জানেন খালেদা জিয়া ওই জেল থেকে বের হলে কে ওই জেলে যাবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে যাবো। তার আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। যাওয়ার রাস্তা শেখ হাসিনা দেখতে না পেলে জাতীয় ঐক্য সেই রাস্তা দেখিয়ে দেবে। খেলাফত মজলিস এর মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তা না হলে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে দেবো না।
এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সব পদক্ষেপে এলডিপি সমর্থন করে। সব কার্যক্রমে সঙ্গে থাকবে আজকের এই ময়দান থেকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করেই এই দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেলায়েত ইসলাম বলেন, সমস্ত জনগোষ্ঠী একটি দাবি নিয়ে এসেছে। আমরা স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে চাই।
জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, দেশে রাজনৈতিক মাঠে একের পর এক নাটক হচ্ছে। শাসকগোষ্ঠী দিশাহারা হয়ে গেছে। এর কারণ আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে। এর কারণ সারা দেশে বিরোধী শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কোনো শক্তি নাই এই ঐক্যকে বিনষ্ট করার। ঐক্যফ্রন্টের ভয়ে সরকার কাঁপছে।
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমীন বলেন, অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে। আমাদের বিরোধীরা আমাদের উত্তেজিত করতে চাইবে। আমরা সে পথে যাব না। জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, আমাদের বাকস্বাধীনতা নেই। বেগম জিয়াকে কেন মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। সকল রাজবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে। ছোট বড় সবাই মিলে ঐক্য গড়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমদ চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুল হক আসপিয়া, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, তাহসিনা রুশদীর লুনা, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমেদ আবদুল কাদের, নাগরিক ঐক্য সিলেটের আহ্বায়ক জিল্লুর রশিদ, গণফোরাম নেতা আ হ ম শফিকুল আলম, জগলুল হায়দার আতিক, মোকাব্বির খান, বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আকতার, বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জেএসডির ইস্কান্দার রাজা চৌধুরী, বিএনপির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা সভাপতি জিকে গউস, সহসাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, কলিম উদ্দিন মিলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি প্রমুখ।
ইলিয়াসকে ফেরত চাইলেন লুনা: সমাবেশে নিখোঁজ বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাইলেন তার পত্নী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেগম তাহসিনা রুশদীর লুনা। সমাবেশ শুরুর কিছুক্ষণ পর বেলা ৩টার দিকে তিনি বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন- ‘ইলিয়াস আলীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।’ লুনা আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। দেশ বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। এটা চলতে পারে না।’ এজন্য তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
পথে পথে বাধার অভিযোগ
সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে। এমনকি বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থেকে ভীতির সৃষ্টি করেছে। এমন অভিযোগ করেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। সমাবেশ শুরুর আগে বেলা দেড়টায় মাঠে বসেই তিনি সাংবাদিকদের বলেন- সিলেটের বাইরে থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসতে চাইছিলেন। কিন্তু তাদের পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে। যাত্রীবাহী যানবাহন আটকে তল্লাশি করা হয়। প্রাইভেট গাড়ি করে নেতাকর্মীরা শহরে ঢুকতেই পারেননি। তিনি বলেন- পুলিশের বাধা থাকার পরও সমাবেশস্থলের অদূরে ছাত্রলীগের কর্মীরা মহড়া দেয়। এতে করে ভীতির সৃষ্টি হয়। সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বক্ত সাদেক অভিযোগ করেন- পুলিশ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ধরপাকড় চালায়। এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
১২ নেতাকর্মী কারাগারে: বৈঠককালে আটক কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। শাহরিয়ারকে গতকাল দুপুরে ও কয়েস লোদীকে রাতেই ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে আটক অপর ১২ নেতাকর্মীকে ছাড়া হয়নি। তাদের গতকাল দুপুরে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। তাদের ছাড়া হলেও গতকাল ১২ জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ সেলিম মিয়া জানিয়েছেন- মঙ্গলবার রাতেই ডা. শাহরিয়ার ও কয়েস লোদীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটক অন্য ১২জন বিভিন্ন মামলার আসামি হওয়ায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
- কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২৫ অক্টোবর ২০১৮
Govt officials given shield from arrest
PASSAGE OF SARKARI CHAKRI BILL 2018
Prior govt approval needed for detaining them on charges related to their job
Parliament last night passed the Sarkari Chakri Bill-2018 with a discriminatory provision, which makes it mandatory for the Anti-Corruption Commission to take permission from the appropriate authorities before arresting any government official on charges related to their job. The bill was passed by voice vote despite serious objections by 10 lawmakers from the main opposition Jatiya Party and one independent MP.
They said the provision that makes it compulsory for the ACC to have approval before detaining any public servant “is a black provision and is in conflict with the constitution”.
They proposed that the House invite public opinion on the bill before its passage, but the proposal was rejected.
“Article 27 of the constitution says all citizens are equal in the eye of the law. But the law has a black provision regarding the arrest of government officials for committing crime and corruption,” said JP MP Selim Uddin.
This law has made government officials “super citizens”, which will create a class system in society. This is totally against the spirit of the constitution, he added.
“It is a compromised law, which goes against the idea of establishing rule of law,” Shamim Haider Patwary, another JP MP, told the House before the vote began.
Yet another JP lawmaker, Fakhrul Imam, said, “Everyone is equal before the law. But this law didn't uphold this spirit.”
State Minister for Public Administration Ismat Ara Sadique placed the bill in parliament on October 21.
Responding to the objections, she said that the lawmakers' proposal would not bring any qualitative change in the law.
"I am, therefore, sorry for not being able to entertain the proposal,” she said.
WHAT'S IN THE LAW
The law says public servants cannot be arrested until a court frames charges against them. No prior permission is needed in that case.
But before charges are framed, they can be arrested only after getting permission from the appropriate authorities, meaning the hiring authorities or any other authorities defined in any other existing law.
Under the law, a civil servant will be suspended initially and will lose their jobs if they are given capital punishment or punishment of more than one year in jail.
However, they will face departmental action if they are given jail sentence below one year.
At the moment, their service is regulated under various laws.
Once the president signs the new law, all issues relating to their jobs will fall under the scope of this law.
The retirement age remains unchanged at 59 while it is 60 for freedom fighters.
However, the government can send a public servant into forced retirement after 25 years of service without showing any reason. They can also voluntarily retire after 25 years.
“DISCRIMINATORY, UNACCEPTABLE”
Former cabinet secretary Ali Imam Majumder said the provision that makes it mandatory for the ACC to take prior permission for arresting any public servant will weaken the ACC Act and compromise the commission's work.
A public servant can be found with smuggled gold, drug and bribe, for example. But they cannot be arrested immediately because of the provision, which will affect graft-fighting activities, he added.
“There are many positive things about Sarkari Chakri Bill-2018, but the section in question should not be incorporated,” he added.
Transparency International Bangladesh Executive Director Dr Iftekharuzzaman said it was extremely disappointing that the Jatiya Sangsad gave priority to convenience of the few at the expense of public interest.
“The provision is discriminatory and is in conflict with the constitution, which pledges that all citizens are equal before the law,” he told The Daily Star.
The lawmakers have failed to understand that while anyone, including themselves, can be arrested without prior approval, only a certain group of individuals have been granted such a privilege, he said.
“This is unacceptable and untenable from the point of view of equality, justice and non-discrimination,” he added.
- Courtesy: The Daily Star /Oct 25, 2018
"Nagad" service makes competition uneven
EDITORIAL
Opens doors to illegal transactions
Bangladesh Post Office's digital financial service platform Nagad has sent shockwaves through the mobile financial service (MFS) sector, which, till date, had been dominated by private sector players. The disproportionately higher transaction limits under Nagad will, operators believe, create a monopoly by the state. For instance, the daily transaction limit under Nagad is Tk 2,50,000 whereas it is Tk 15,000 for other operators. Similarly, the monthly limit for Nagad customers is a hefty Tk 5,00,000 while for private operators it ranges from Tk 25,000 to Tk 1,00,000.
Furthermore, the service provided by Nagad does not fall under the central bank's scrutiny because it is regulated by Bangladesh Postal Act Amendment 2010 and will not be governed by MFS regulations. Now, the bigger question here is, given the high transaction limit, what is there to stop the Nagad service from being misused to finance terrorist activities or to launder money? There are no stringent checks and balances or regulatory framework governing Nagad. This should be of serious concern for policymakers.
Setting such high limits for this service will surely drive existing MFS players out of business because customers will inevitably switch to the service that allows them to transact in such large denominations of money on a daily or monthly basis. The explanation given by the post office that Nagad is merely a digitalised version of money order is not enough. It is imperative that there is a level playing field for all operators in the market and they must all conform to the same regulatory policies. We are all for healthy competition but the proposed Nagad platform, in its current manifestation, is anything but healthy.
- Courtesy: The Daily Star /Oct 25, 2018
Unite for fair polls
Oikyafront urges people at its first rally held in Sylhet, vows to wage peaceful agitation
Jatiya Oikyafront leaders join hands on the rally stage yesterday afternoon at Sylhet Registrar's Office ground. Thousands of people joined the first ever rally of the newly formed alliance. Photo: Sheikh Nasir
Leaders at the Jatiya Oikyafront's maiden public rally yesterday asked people to unite for ensuring a free and fair election and “restoring” their right to vote.
They said they would wage a peaceful movement to realise their seven-point demand and achieve their 11 goals. They urged the government to have dialogues with the opposition parties for the sake of free and fair polls.
"We are now united and our victory is sure and certain," said Dr Kamal Hossain, a top leader of the alliance, while addressing the rally at Sylhet's Registrar's Office ground in Bandarbazar.
"People should unite, not political parties. The people are the owners of the country and you have to strengthen people's unity to restore this ownership," said Dr Kamal, also president of the Gonoforum.
A part of the crowd attending the Oikyafront rally in Sylhet yesterday. Photo: Sheikh Nasir
There is no alternative to people's unity for "ousting the autocratic government from office", he said.
He urged all to spread the message of the seven-point demand and 11 goals to villages, upazilas, and districts and make people realise that the country belongs to them.
The seven-point demand includes holding of the election under a nonpartisan interim government, and dissolution of parliament and deployment of the army before the polls.
Rejecting the ruling party's claims of carrying out massive development work in the country, Dr Kamal said some people received the fruits of development, but not all the people of the nation. "It cannot be called development. We want development of the 16 crore people and thus we have to be united."
He thanked the people for attending the rally overcoming various obstacles.
Addressing the rally, BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir said, “We will restore democracy and our voting rights through a peaceful movement.”
Through this movement, BNP Chairperson Khaleda Zia and other detained political leaders would be released from jail before the announcement of the election schedule, he said.
Top leaders of election-oriented newly-floated political alliance Jatiya Oikyafront offer prayers at the shrines of Hazrat Shah Jalal in Sylhet on Wednesday, October 24, 2018. Photo: Collected
He said the government must resign, parliament should be dissolved and the Election Commission reconstituted before the polls schedule is announced. Electronic Voting Machines (EVM) should not be used in the polls, he added.
“We will not allow digital election rigging.”
Yesterday's rally was the first public appearance of the alliance since its formation on October 13. All top leaders of the alliance were on stage.
People gather as Jatiya Oikyafront begins their first ever public rally in Sylhet’s Registrar's Office field in Bandarbazar on October 24, 2018. Photo: Mohammad Al-Masum Molla
The BNP men thronged the venue in small processions around 1:00pm. Many of them came from adjacent districts. A large number of them carried banners, festoons and placards demanding release of Khaleda Zia.
Huge banners were seen hung in the meeting area demanding withdrawal of cases against BNP leader Tarique Rahman and other senior leaders of the party.
An Awami League procession with about 500 people went by the venue around 12:45pm without any untoward incident.
Before the rally, top leaders of the election-oriented alliance offered fateha at the shrines of Hazrat Shah Jalal (RA) and Hazrat Shah Paran (RA).
Speakers at the rally that began at 2:00pm, alleged that the alliance leaders and activists were obstructed at different places so that they could not join the rally. Vehicular movement was restricted and buses were checked, they said, adding that even three-wheelers were stopped.
Jatiya Samajtantrik Dal President ASM Abdur Rab alleged that the country was in the grip of robbers and the people should unite and take to the street to realise the seven-point demand and free the country from the clutches of the robbers.
“The government is provoking us to become violent. You have to have patience. We will wage a peaceful agitation,” he said.
BNP standing committee member Khandakar Mosharraf Hossain said the government wants to hold another lopsided election like that of 2014 fearing a crushing defeat in the upcoming polls.
“We will contest the election and form the peoples' government … .”
Another standing committee member of the party, Moudud Ahmed, said the government would be forced to go for a negotiation with the opposition parties in the face of a tough anti-government movement.
The former law minister said they would prepare a whitepaper on the government's corruption when they assume power.
Nagorik Oikya Convener Mahmudur Rahman Manna urged the government to hold dialogues with the opposition parties.
“If it is not done, we know how to oust a government.”
He claimed that the government was hatching a conspiracy to have another “walkover election” like that of the January 5, 2014. “We don't want to create any chaotic situation. But, we will never allow the government to go unchallenged this time.”
Zafrullah Chowdhury, one of the key people of the Oikyafront, asked people to raise their voices for a general election under a non-partisan interim government.
Oikyafront leader Sultan Md Monsur Ahmed, also a former Awami League leader, said the government must resign before the announcement of election schedule. He and Mostafa Mohsin Montu ended their speeches chanting “Joy Bangla, Joy Bangabandhu”.
Sylhet city Mayor Ariful Haque Choudhury chaired the event.
- Courtesy: The Daily Star /Oct 25, 2018
Subscribe to:
Posts (Atom)