Search

Tuesday, November 20, 2018

বেকারত্ব বাড়ছেই!

সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেকারদের কথা ভাববে কি?

বাংলাদেশের তরুণদের বেকারত্বের হার সাত বছরে দ্বিগুণ হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৮টি দেশের বেকারত্ব, তরুণদের কর্মসংস্থান, নিষ্ক্রিয় তরুণের হার, আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মসন্তুষ্টি ইত্যাদি নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আর বেকারির দিক থেকে বাংলাদেশ আছে ২৭ নম্বরে, একমাত্র পাকিস্তানের নিচে।

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই উন্নতি করেছি, কিন্তু কেন সেই  উন্নয়ন–প্রক্রিয়ায় তরুণদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না, সে ব্যাপারে নীতিনির্ধারকেরা একেবারেই উদাসীন বলে মনে হচ্ছে। যথা বাংলাদেশে নিষ্ক্রিয় তরুণদের হার ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, তরুণেরা যত বেশি পড়ালেখা করছেন, তাঁদের তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। দেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি হওয়া ব্যক্তি ও পরিবার তো বেটেই, রাষ্ট্রেরও বিরাট অপচয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গত এপ্রিলে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে বেকার ছিল ২৬ লাখ ৭৭ হাজার; যা আগের বছরের চেয়ে ৮৭ হাজার বেশি। দেশে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ৬ কোটি ৩৫ লাখ হলেও এদের একটি বড় অংশ যে পুরোপুরি বেকার অথবা ছদ্মবেশী বেকার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  

বাংলাদেশে তরুণদের বেকারত্বের হার বেশি না কম, সেটি জানতে দেশি-বিদেশি জরিপ বা গবেষণার প্রয়োজন নেই। সরকারি কর্মকমিশনে প্রতিবছর চাকরিপ্রার্থীর বর্ধিত সংখ্যা থেকে সেটি অনুমান করা যায়। ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় ২ হাজার ২৪টি শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৮৯ হাজার জন চাকরিপ্রার্থী। প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ১৯১ জন প্রতিযোগী। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ তেমন না বাড়ায় কর্মসংস্থানও খুব আশাব্যঞ্জক নয়। তদুপরি বেসরকারি খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরিও কম। চাকরির ক্ষেত্রে রয়েছে অনিশ্চয়তা। আইএলওর প্রতিবেদন মতে, কাজে যুক্ত ৫৪ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন, তাঁদের যথাযথ হারে বেতন বা মজুরি দেওয়া হয় না। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব বলছে, দেশে শ্রমবাজারে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের প্রায় ৭৮ শতাংশ হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাতে। অর্থাৎ এঁদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সরকারের দাবি, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-১৫) ১ কোটি ৪০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরও যদি বেকারের হার দ্বিগুণ হয়, তাহলে সরকারের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মধ্যে যে বিরাট ফাঁক আছে, তা বুঝতে অর্থনীতির পণ্ডিত হতে হয় না। বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার বেশি হওয়ার কারণ, মুখে যত বড় কথাই বলি না কেন, আমরা আমাদের শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে পারিনি।  একদিকে দেশে শিক্ষিত বেকারের হার বাড়ছে, অন্যদিকে উচ্চহারে বেতন দিয়ে বিদেশ থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী আমদানি করা হচ্ছে। এই বৈপরীত্য থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহার তৈরিতে ব্যস্ত আছে। কিন্তু তাদের ইশতেহারে যুগোপযোগী শিক্ষা ও সত্যিকার মানবসম্পদ উন্নয়নের নিশ্চয়তা থাকবে কি না, সেটাই জিজ্ঞাস্য। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে, কিন্তু দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আমরা যে পিছিয়ে আছি, সেসব নিয়ে কারও মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের চাওয়া-পাওয়া গুরুত্ব না পেলে উন্নয়নের সব উদ্যোগই ভেস্তে যাবে। বেকারির দেশে টেকসই উন্নয়ন হয় না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ২০,২০১৮

আ.লীগের সঙ্গে ইসলামি দল বেশি

  • প্রচলিত ধারণা, ইসলামপন্থী দলের ভোট বিএনপির দিকে বেশি যায়
  • ইসলামপন্থী ভোটব্যাংকের দিকে নজর আ. লীগ ও মিত্র জাতীয় পার্টির
  • এবার ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় ৭০টি ইসলামি দল ও সংগঠন
  • ২৯টি দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে
  • ৩২টি দল আছে জাপার সঙ্গে, যারা ভোটে সরকারের সহায়ক হবে
  • বিএনপির সঙ্গে আছে ৫টি ইসলামি দল



একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ভোটের মাঠে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোর তৎপরতা। এসব দলের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ এবং এর মিত্র জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। একসময় বিএনপির ঘনিষ্ঠ ইসলামি দলও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মিত্রতা গড়েছে।

এবার ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় আছে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে ৭০টি ইসলামি দল ও সংগঠন। এর মধ্যে ২৯টি দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। ৩২টি দল আছে জাতীয় পার্টির সঙ্গে, যারা ভোটের মাঠে সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। আর বিএনপির সঙ্গে আছে ৫টি দল।

অনেক দিন ধরে একটা ধারণা আছে যে জাতীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভোট বিএনপির দিকেই বেশি যায়। এবার এই ‘ভোটব্যাংকের’ দিকে নজর দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং এর মিত্র এরশাদের জাতীয় পার্টি। এরই অংশ কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও সরকার সখ্য গড়ে তোলে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ইসলামপন্থীদের বেশি করে কাছে টানা গেলে বিএনপির ভোট কমবে, এই কৌশল থেকে ছোট-বড় সব ধরনের ধর্মভিত্তিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে গত পাঁচ বছর সরকার সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে। কারও কারও সঙ্গে দূর থেকে নির্বাচনী সমঝোতা করছে।

তবে দুটি দল—চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (আতাউল্লাহ) এখন পর্যন্ত কোনো দিকে যায়নি। তবে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ তার আগে-পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রতি সরকার কিছুটা নমনীয় ছিল। বিশেষ করে, ইসলামী আন্দোলন গত ১০ বছরে সারা দেশে ওয়াজ মাহফিলসহ নির্বিঘ্নে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়েছে। চরমোনাই পীরের অনেক মাহফিলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ ও প্রভাবশালী নেতাদের আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে থাকতে দেখা গেছে।

অবশ্য ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব সময় আমরা সভা-মাহফিলের যে সুযোগ পাই, তা না। বিএনপি, জাতীয় পার্টিও সমাবেশ করে। তবে আমাদের প্রতি সরকারের একটা সুনজর থাকতে পারে এ কারণে যে আমরা হাঙ্গামা করি না। প্রশাসন আমাদের ঝুঁকি মনে করে না।’ তিনি বলেন, ‘সাময়িক সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেকে অন্য জোটে যাচ্ছে। আমরা জোট, নোট, চোট এগুলোকে সতর্কভাবে এড়িয়ে চলছি।’

সরকারের সমর্থনে নতুন নতুন জোট

সর্বশেষ সম্মিলিত ইসলামী জোট নামে নতুন একটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয় ৩ নভেম্বর। এই জোটের শরিক দল আটটি। এই জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা জাফরুল্লাহ খান দীর্ঘদিন প্রয়াত মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ওই দলের মহাসচিবের পদ হারান। এরপর তিনি খেলাফত আন্দোলনের একাংশ নিয়ে নতুন দল করেন। এত দিন তাঁর অবস্থান ছিল সরকারের বিরুদ্ধে। চলতি মাসে জাফরুল্লাহ খান আটটি অনিবন্ধিত সংগঠন নিয়ে সম্মিলিত ইসলামী জোট গঠন করেন। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন করতে চায়। জোটের নেতারা গত শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকের বিষয়ে সম্মিলিত ইসলামী জোটের কো-চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১০টি আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছি। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের জানাবেন।’

মুফতি ফখরুলও খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলন নামে নতুন দল গঠন করেছেন।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৫টি দল নিয়ে সরকারের সমর্থনে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (আইডিএ) নামের আরেকটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয়। এর চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান লক্ষ্মীপুর-১ আসনের তরীকত ফেডারেশনের সাংসদ এম এ আউয়াল। এই দুজন দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছেন। এই জোট সাতটি আসন চেয়ে সরকারের কাছে তালিকা দিয়েছে।

এম এ আউয়াল গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (বাহাদুর শাহ), সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারীর দল সুপ্রিম পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলকে অন্তর্ভুক্ত করে জোট পুনর্গঠন করছি। আশা করছি পাঁচ থেকে সাতটি আসন পাব।’

শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও মুফতি রুহুল আমিনের নেতৃত্বাধীন খাদেমুল ইসলাম সরাসরি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। মুফতি রুহুল আমিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শুকরানা সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন।

মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলেম-ওলামাদের একটি দূরত্ব ছিল। এবার বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাসনদের সরকারি স্বীকৃতির প্রভাব ইসলামপন্থীদের ওপর পড়েছে।’

নিবন্ধিত ২টি বিএনপি ও ৬টি আ.লীগের সঙ্গে

নির্বাচন কমিশনে এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি। এর মধ্যে ইসলামপন্থী দল ১০টি। এর মধ্যে ছয়টিই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (নজিবুল বশর) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে, আর ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (বাহাদুর শাহ) মহাজোটের শরিক। বাকি চারটি দল ইসলামী ঐক্যজোট (নেজামী), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (হাবিবুর রহমান) ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মান্নান) ও জাকের পার্টির (মোস্তফা আমীর) সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে আছে দুটি দল—খেলাফত মজলিস (ইসহাক) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (আবদুল মোমেন)। নিবন্ধিত বাকি দুটি ইসলামি দল ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলন (আতাউল্লাহ) কোনো দিকে যায়নি এখনো।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কে কোন উদ্দেশ্যে জোট পরিবর্তন করেছেন, নতুন নতুন ঘনিষ্ঠতা তৈরি করছেন, এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ অনেক সচেতন। আদর্শ বদল করে নিজের চাওয়া-পাওয়ার জন্য যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের কথায় মানুষ ভোটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে বলে মনে করি না।’
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ২০,২০১৮ 

Govt to borrow Tk 20b more from banks

Net borrowing to reach Tk 30.42b in Nov 

 

The government revised its auction calendar on Monday keeping an option for borrowing Tk 20 billion more for financing budget deficit ahead of the December general elections, officials said. Under the revised calendar, the net borrowing from the banking system is set to reach Tk 30.42 billion by the end of this month, compared with Tk 10.42 billion earlier.

The government may borrow the additional amount of money from the market by the end of November through issuing bonds, the officials added.

"We've revised the auction calendar in line with the Ministry of Finance (MoF) advice," a senior official of the Bangladesh Bank (BB) told the FE. The revised calendar will come into effect from today (Tuesday), said the official.

"The government has revised its auction calendar to meet immediate cash requirements ahead of the upcoming national polls," a senior official familiar with the government debt-management activities told the FE. The 11th national election is scheduled to be held on December 30.

"Collected revenue from tax fairs will take time for depositing with the government accounts," the official said while explaining the necessity for revising the calendar.

The National Board of Revenue (NBR) received Tk 18.99 billion as income tax in the last six days from tax-fairs. The week-long fairs concluded on Monday.

The government's bank borrowing trend for December will be finalised in the next meeting of Cash and Debt Management Technical Committee (CDMTC) by the end of this month.

"The committee will finalise the amount of such borrowing reviewing the overall economic situation," the official added. The government bank borrowing may increase further in December ahead of the elections, the official hinted.

Senior treasury officials of commercial banks, however, did not see immediate impact of the extra bank borrowing on the market.

"The demand for local currency may pick up in the market if the existing upward trend in government bank borrowing continues," a treasury official of a leading private commercial bank (PCB) told the FE.

The weighted average rate (WAR) on call money rose to 3.60 per cent on Sunday from 3.50 per cent of the previous working day, the BB data showed.

The finance ministry had set a bank-borrowing target of Tk 420.29 billion for fiscal year 2019 to finance the budget deficit. Under the proposed bank borrowing, the government will borrow Tk 239.65 billion issuing long-term bonds while the remaining Tk 180.64 billion through treasury bills (T-bills).

Currently, four T-bills are being transacted through auctions to adjust the government's borrowing from the banking system.

The T-bills have 14-day, 91-day, 182-day and 364-day maturity periods.

Also, five government bonds with tenures of two, five, 10, 15 and 20 years respectively are traded on the market.

  • Courtesy: The Financial Express /Nov 20, 2018

Monday, November 19, 2018

ইসি কি পুলিশের অধীন, না পুলিশ ইসির অধীন?

সোহরাব হাসান


নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা ব্যক্তিদের সম্পর্কে কি পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগ খোঁজখবর নিতে পারে? সেটি সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রমের আওতায় পড়ে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার পর এ বিষয়ে অন্য কারও নাক গলানো উচিত নয়। বিষয়টি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে। তাঁরা যাঁকে যোগ্য মনে করেছেন, তাঁকে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীদের প্রয়োজন হইবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।’

এর অর্থ হলো নির্বাচন কমিশন যাঁকে নিয়োগ দেবে, তাঁকেই মেনে নিতে হবে। কিন্তু গত কয়েক দিন পত্রিকায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে পুলিশ বিভাগ যেভাবে খোঁজখবর নিচ্ছে, তা শুধু এখতিয়ারবহির্ভূত নয়, বেআইনিও। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা প্রয়োজন, নির্বাচন কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছেন বিরোধী দলের তালিকা অনুযায়ী নয়; নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তারাই এই তালিকা তৈরি করেছেন, যাঁরা সদাশয় সরকারের মাঠপর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাও। এখন নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে পুলিশের খবরদারি করা রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল।

কয়েক দিন ধরে প্রথম আলোয় এ নিয়ে একাধিক খবর প্রকাশিত হলেও নির্বাচন কমিশন অনেকটা নির্বিকার। একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কমিশন থেকে পুলিশ বিভাগকে এ রকম কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তাহলে পুলিশ কি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কাজটি করছে? যদি তারা তা করে থাকে, নির্বাচন কমিশনের উচিত এখনই বন্ধ করা। কিন্তু তারা সেসব না করে লুকোচুরি খেলছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি কথা বেশ প্রচারিত আছে যে ক্ষমতাসীনেরা ধরে নিয়েছিলেন, বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপি জোট নির্বাচনে আসবে না। এটা ধরে নিয়েই নির্বাচন কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, এবারেও ২০১৪ সালের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একটি নির্বাচন হবে। কে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন, কে থাকবেন না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্বাচন কর্মকর্তাদের ‘দেশপ্রেম’ বা দলপ্রেমের প্রশ্নটি তখনই সামনে আসে, যখন বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়, প্রায় সব জেলায়ই পুলিশ নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছে। আমাদের একজন সহকর্মী সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে। তিনিও এসে জানালেন, নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভয়ভীতিতে আছেন। পুলিশের লোকজন তাঁদের জিজ্ঞাসা করছেন, আপনি এর আগে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছিলেন কি না। আপনি কোনো রাজনৈতিক দলের বা ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি না?

খুবই নিরীহ প্রশ্ন। এই নিরীহ প্রশ্নের আড়ালের সত্যটি হলো, আপনি ‘ক’ দলের সঙ্গে জড়িত থাকলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু ‘খ’ দলের সঙ্গে জড়িত থাকলেই সমস্যা। এই পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর না নিয়ে যদি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অফিসে খোঁজখবর নিতেন, আরও অনেক মজার তথ্য পেতেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব যখন আওয়ামী জোট শামিল হন কিংবা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিএনপি জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হন, তখন কারও ‘অতীত রাজনীতি’ নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া অর্থহীন।

কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা অতীতে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল করলে যে পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বদলাবেন না, সে কথা জোর দিয়েও বলা যায় না। এখন যেসব পুলিশ কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইছেন, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় জানাটা আরও বেশি জরুরি বলে মনে করি। তাঁদের আচরণে মনে হয়, জন্মসূত্রেই ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অতি উৎসাহীরাই যেকোনো সরকারকে ডুবানোর জন্য যথেষ্ট, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সংবিধান অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারী (অন্তত নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত) নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে চলে গেলে পুলিশ বিভাগের লোকজন তার বাইরে থাকতে পারেন না। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেও যেই প্রশাসন ছিল, এখনো সেই প্রশাসন কাজ করছে। তবে পার্থক্য হলো তাঁরা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে চলে গেলেন।

আমাদের মন্ত্রীরা একসময় গলা ফাটিয়ে বলতেন, নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ (তত্ত্বাবধায়ক শব্দটি ইচ্ছে করেই উল্লেখ করলাম না, সংবিধানবহির্ভূত এ রকম একটি শব্দ ব্যবহারের জন্য তারা মামলাও ঠুকে দিতে পারেন) সরকারের প্রয়োজন নেই। ক্ষমতাসীন সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে রুটিন কাজ করে যাবে এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই হবে সবকিছুর নিয়ন্তা হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, তাঁরা সবকিছুর নিয়ন্তা নন। তাঁদের ওপরের নিয়ন্তা হচ্ছে পুলিশ।

এ কথাও আমাদের জানা যে তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন কমিশন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সাধারণত, সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা এসব পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তাঁদের কারও বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজন মনে করলে তারা কাজটি পুলিশ বিভাগকে দিয়েই করবে। কিন্তু পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কারও সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া বা তদন্ত করতে পারে না। অথচ তারাই সেটি করছে আর নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ‘সার্বভৌম নির্বাচন’ কমিশন পুলিশের অধীন একটি সংস্থায় পরিণত হবে।

একজন অতি উৎসাহী জেলা প্রশাসক বলেছেন, রাষ্ট্র নাকি যেকোনো নাগরিকের ওপর গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাতে পারে। তাঁর কথা সঠিক ধরে নিলে রাষ্ট্রকে ১৬ কোটি মানুষের বিরুদ্ধেই গোয়েন্দাগিরি করতে হয়। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সেটি হতে পারে না। হতে পারে একমাত্র পুলিশি রাষ্ট্রে।

পুলিশের এই অপতৎপরতা এখনই থামানো দরকার। না হলে হয়তো তারা ভোটারদেরও এই বলে পাকড়াও করতে থাকবে যে আপনি আগে কোন দলকে ভোট দিয়েছেন এবং তাঁর উত্তর মনঃপূত না হলে বলবে, ‘আপনার ভোটকেন্দ্র যাওয়া যাওয়ার প্রয়োজন নেই।’ তখন প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হলেও ভোটারদের জন্য হবে না।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ১৯,২০১৮ 

পদ্মা সেতু — পরিবর্তিত নকশায় ১৫ মাস পর পিয়ারের পাইলিং শুরু


পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় গত বছরের জুলাইয়ে জটিলতা দেখা দেয় ১৪টি পিয়ারের নকশায়। পরবর্তী সময়ে একই জটিলতা দেখা দেয় আরো ছয়টি পিয়ারে। পরিবর্তন আনতে হয় এসব পিয়ারের নকশায়। ত্রুটি শনাক্তের ১৫ মাস পর সম্প্রতি পরিবর্তিত নকশার এসব পিয়ারের পাইলিং শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তের যেসব পিয়ারের নকশায় ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, সেগুলোর পাইলিংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে।

পদ্মা সেতুর ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৫, ১৯, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারসংলগ্ন মাটির গঠনে ভিন্নতা পাওয়ার পর সেগুলোর পাইলিং স্থগিত রেখে নতুন করে নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যেই ২৪, ২৫, ২৮, ৩৩, ৩৪ ও ৩৬ পিয়ারেও দেখা দেয় একই সমস্যা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব পিয়ারের পাইলিং স্থগিত রাখা হয়। সেতুর ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউইর প্রকৌশলীরা এসব পিয়ারের নতুন নকশা করে দিয়েছেন।

শুক্রবার সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে মাওয়া প্রান্তের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বরসহ বেশ কয়েকটি পিয়ারে পরিবর্তিত নকশায় পাইলিং করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ৬, ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের পাইলিং কিছুটা দৃশ্যমানও হয়েছে। ৯ নম্বর পিয়ারের পাশে বসানো বিশালাকার হ্যামার। আরেকটি বিশালাকার হ্যামার রয়েছে ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের কাছে। একইভাবে মাঝ পদ্মার কয়েকটি পিয়ারেও চলছে পাইলিংয়ের কাজ।

পদ্মা সেতুতে পিয়ার হবে মোট ৪২টি। এর মধ্যে নদীর ভেতরে থাকা ৪০টি পিয়ারের প্রতিটিতে ছয়টি করে পাইল করার কথা ছিল। নকশা বদলে ফেলা পিয়ারে ছয়টির বদলে সাতটি করে পাইল করা হচ্ছে। ফলে পাইলের সংখ্যা ২৪০ থেকে বেড়ে ২৬২টিতে উন্নীত হচ্ছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট টিমের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, নতুন নকশায় ২২টি পিয়ারে ছয়টির বদলে সাতটি করে পাইল করা হচ্ছে। পাশাপাশি পাইলগুলোর গভীরতা স্থানভেদে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত কমানো হয়েছে। নতুন নকশা করা হয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউইর তত্ত্বাবধানে। পরিবর্তিত নকশায় দ্রুত পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে চলছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ পিয়ারের গভীরতা ১২০-১৩০ মিটার। তবে নকশায় পরিবর্তন আনা পিয়ারের পাইলের গভীরতা ৯৮ থেকে ১১৪ মিটারের মধ্যে রাখা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের পিয়ারগুলোর গভীরতা তুলনামূলক কম। জাজিরা অংশে পরিবর্তিত নকশার পিয়ারগুলোর গভীরতা সে তুলনায় বেশি হচ্ছে।

জানা যায়, কাউইর কাছ থেকে পদ্মা সেতুর পরিবর্তিত নকশা চলতি বছরের মার্চের দিক থেকে পেতে শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন। ক্রমান্বয়ে সব পিয়ারের পরিবর্তিত নকশা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বুঝে পেয়েছে। সব মিলিয়ে এ জটিলতায় পেরিয়ে গেছে প্রায় ১৫ মাস।

তবে পিয়ারের নকশা জটিলতা সেতুর কাজকে দীর্ঘায়িত করবে না বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট টিমের এক সদস্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, নকশা জটিলতা সেতুর নির্মাণকাজ বিলম্বিত করছে না। কারণ যে অংশটুকুর জন্য নকশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে, শুধু সেই অংশটিই তো মূল কাজ নয়। এর বাইরে আরো নানা কাজ রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সেগুলো এগিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

তাহলে নির্মাণকাজে বিলম্বের কারণ কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পদ্মা বিশ্বের বড় ও শক্তিশালী নদীগুলোর অন্যতম। এর তলদেশের মাটির অবস্থাও অন্য রকম। একেক স্থানের মাটির ধরন একেক রকম। বলতে গেলে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হচ্ছে। এ প্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার মানুষ কাজ করছেন। এর মধ্যে এক হাজার চীনা কর্মীও রয়েছে, যারা এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করছেন। এর বাইরে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট আছে, প্যানেল অব এক্সপার্ট আছেন। এত মানুষ তো আর বসে নেই। বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। পলিটিক্যাল মাস্টাররা অনেকেই বলবেন যে এটা এখনো কেন হলো না। কিন্তু তাদের হয়তো ধারণা নেই যে কাজটা কত বড়। এ ধরনের ফাউন্ডেশন পৃথিবীতে এই প্রথম হচ্ছে। যে হ্যামার দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, সে ধরনের শক্তিশালী হ্যামার পৃথিবীতে ছিল না। শুধু পদ্মা সেতুর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বানানো হয়েছে।

এখনো সেতুর অনেক কাজ বাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীর তলদেশে পাইলিং করে কংক্রিট ঢেলে পিয়ার তোলা হচ্ছে। পিয়ার হয়ে যাওয়ার পর স্প্যান বসবে। সেগুলোর ওপর আবার বসবে কংক্রিটের বিম। রেললাইন বসাতে হবে। স্টেশন নির্মাণ করতে হবে। এখনো অনেক কাজ বাকি।

পদ্মা সেতু প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নদীর ভেতরে থাকা ৪০ পিয়ারের মধ্যে ১১টির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ২৬২টির মধ্যে টপ অ্যান্ড বটম পাইলিং হয়েছে ১৬৯টি। সেতুতে মোট স্প্যান বসবে ৪১টি। এর মধ্যে ১৭টি স্প্যান প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছেছে, যার ছয়টি এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য চীনের ওয়ার্কশপে স্টিল প্লেট থেকে স্টিল মেম্বার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে ১৩টি স্প্যানের। কাজ চলছে আরো ছয়টির। এ স্প্যানগুলো চীন থেকে শিগগিরই মাওয়া ঘাটে এসে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।

প্রাক্কলন অনুযায়ী, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২-এর নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ। মূল সেতুর নির্মাণ ও নদী শাসনকাজের পরামর্শক তত্ত্বাবধানের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৭৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত নদী শাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৪৫ শতাংশ। জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে সেতুর ওপর আরো একাধিক স্প্যান বসবে। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রাক্কলিত মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি নভেম্বর মাসেই। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ। স্বভাবতই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রকল্পের মেয়াদ কতদিন বাড়ানো হতে পারে, তা জানতে চাওয়া হয় সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের কাছে। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

  • Courtesy: Banikbarta/ Nov 19, 2018

Unwanted ‘police verification’ stands to harm elections

EDITORIAL

POLICE personnel eliciting, and trying to elicit, information, mainly political affiliation and inclination, on people — mostly teachers, bankers and officials of government, semi-government and autonomous organisations — likely to be recruited as presiding and assistant presiding officers in the national elections scheduled for December 30, as New Age reported on Sunday, seems to be worrying. 

While the Election Commission is reported not to have left any instructions with the law enforcement agencies to collect information on political disposition of probable election officers, it leaves the scope to reason that this could be an intimidation mechanism of the incumbents to influence the holding of the elections. District- and upazila-level officers have prepared list of people who could be recruited as presiding and assistant presiding officers and the lists have already been sent to the returning officers, who are deputy commissioners of the 64 districts and two divisional commissioners, so that can begin the recruitment for election duties in 40,199 polling stations, having 2,06,540 polling booths. The people listed for the probable recruitment have largely been panicked at the ‘police verification’ that they are having to face.

A high schoolteacher, who has been on election duties since 1990, for an example, says that he has never experienced such ‘verification’ and reports his colleagues having received phone calls from law enforcers. Many others are reported to have received visitors from the law enforcement agencies who have interrogated them about their political affiliations. 

While the Election Commission, which says that it has not given any such instruction for the law enforcers, has decided to discuss the issue, the police authorities seek to brush aside the incidents as mere allegations saying that it is not clear who are out to gather information on the political inclination of the probable president and assistant presiding officers. They further say that they will take action against the people gathering information on the teachers, bankers and officers without any instruction from the election authorities. The Election Commission should stringently deal with the issue as the incidents stand to harm the holding of the national elections and to tarnish the image of the commission. It should immediately order an investigation of the matter and hold to account people responsible for this after a credible investigation. Unless the commission does this, the commission will only prove its bias towards the political incumbents. It should not let the police go just by putting everything down to allegations as whoever does this does in the name of the law enforcement agencies.

Some of what the Election Commission has so far done or decided not to do — regarding the holding of marches by the incumbent political party during nomination paper sales and the reshuffle in the field administration in view of the national elections — appears to show the Election Commission’s failure in ensuring a level playing field for all parties and alliances in the electoral fray. A string of actions or decisions continued in this direction could make it uncomfortable for the parties in opposition to stay in the electoral fray. The Election Commission must act to stop such aberrations and that must happen early.

  • Courtesy: New Age/ Nov 19, 2018

Rice production slows

Experts call for steps to raise output


The growth of rice production has slowed to only 0.4 percent since 2010, making it tough to feed the growing population amid a continuous fall in arable land, the chief of International Rice Research Institute (IRRI) said yesterday.

Before 2010, rice production grew by more than 2 percent annually, Humnath Bhandari said at the opening of a two-day workshop on “Transforming Rice Breeding (TRB): current status and way forward”.

IRRI organised the event at the ACI Centre at Tejgaon in the capital.

“Land is declining. So if we cannot continue increasing the yield, how can we feed the growing population?” Bhandari questioned.

Every year around 2 million of people are added to the population, which now stands at over 160 million, he said.

Bangladesh now has 13 million farmers who produce over 35 million tonnes of rice a year, according to a presentation showed at the event.

In 2014-15, per hectare yield was 3.04 tonnes, which has to be increased to meet the future demand, experts said at the event.

By 2050, the annual demand for rice will hit around 44.6 million tonnes in Bangladesh, according to the presentation. Bhandari stressed the need for conducting more research on rice and developing new varieties of the staple food to face the challenges of feeding the growing population.

Agriculture Secretary Md Nasiruzzaman said there is a relation between rice production and food security.

For this reason, the government gives importance to research to develop improved varieties of rice capable of giving higher yield, he said.

“We have no alternative but to raise rice production.”

Crop lands are shrinking every year due to housing and industrialisation, ACI Ltd's Chairman M Anis Ud Dowla said.

ACI had invested $6 million to develop high-yield varieties of rice in collaboration with Bangladesh Rice Research Institute (BRRI) and IRRI.

The TRB, a project of IRRI, was taken to spread use of modern breeding tools and for faster development of new rice varieties.

The project will help develop new rice varieties in three to four years, much faster than the traditional system, which takes eight to nine years, according to IRRI.

“The new approach of rice breeding is cost-effective and based on market demand,” the institute said in a statement.

“The important aspect of the modern approach is the selection process, which is molecular based and unlike the visual selection system in the traditional approach.”

IRRI said the rice varieties once developed through the TRB approaches will be 'highly acceptable' by the farmers not only for high yield but also for the desirable traits such as resistance to diseases and pests, salinity tolerant and attractive grain quality.

“Farmers will not cultivate decades old varieties; instead they will cultivate the new ones. This would make tremendous boost of rice production in Bangladesh,” according to IRRI.

Among others, Prof Lutful Hassan, former vice-chancellor of Bangladesh Agricultural University; Md Shahjahan Kabir, director general of BRRI, and Gary Atlin, senior programme officer at Bill & Melinda Gates Foundation, were also present.

  • Courtesy: The Daily Star/ Nov 19, 2018

Ill-advised comments

EDITORIAL

Is EC accepting or predicting the inevitable?


Election commissioner Kabita Khanam said that it is not possible to hold 100 percent free and fair elections anywhere in the world. We are used to hearing from time to time comments varying from the sublime to the ludicrous from members of successive election commissions. However, the recent comments of one of the present election commissioners, about the upcoming election, take the cake. Just to put the matter in context, on November 16, we were told by the said commissioner that nowhere in the world is there a completely free, fair and 100 percent blemish-free election, and it would be the same in Bangladesh too.

Apart from the fact that she is absolutely off the mark in her assertion regarding the quality of elections elsewhere, her views about the December 2018 election are highly ominous. What should one make of such a comment at a very sensitive time, when everyone is imploring the EC to exercise the powers vested on it by the constitution and the relevant laws, and hold an acceptable and participatory election where the voters can choose their candidates without hindrance or let? Interestingly, only in August did we hear the CEC himself say as much about the election being 100 percent foolproof, which the said election commissioner disowned, that being not the opinion of the EC. And now it is she who has repeated the very opinion she had repudiated. Therefore, one could well ask: What is the benchmark for the norm, and how much “bad” would be the pass mark for a “good election”?

It seems that not only has the EC resigned to the fait accompli but the comments also encourage what it considers as inevitable and unpreventable. We believe that the views and opinions of election commissioners reflect the EC's stand on particular issues unless that is explicitly disowned, which so far has not been done. Instead of preparing the voters to expect the worst, the EC should assert its resolve to hold a good election. No EC can deliver with a negative mind frame.

  • Courtesy: The Daily Star / Nov 19, 2018

CNN vs Trump: Is there anything for us to learn?

Mahfuz Anam

A federal judge on Friday ordered the White House to reinstate the press credentials of CNN reporter Jim Acosta. His “pass” was revoked after a heated exchange with President Trump. Judge Timothy Kelly, a Trump appointee, issued what in US legal terms is called a temporary restraining order so that the CNN reporter can continue his work while full hearing is held.

CNN's case is that the withdrawal of the White House Pass was a violation of the freedom of press protected by US law and numerous Supreme Court judgments, all emanating from the landmark feature of the US Constitution, the First Amendment, which says “Congress shall make no law… abridging the freedom of speech, or of the press…” CNN also raised the point of “due process”—whether any procedure was at all followed in revoking Acosta's pass or it was just an arbitrary order of the President's office.

According to reports, prominent among CNN supporters were the Associated Press, Bloomberg, The New York Times, NBC News, USA Today, The Washington Post, Politico, Gannett, and numerous others. Interestingly, Fox News, which is Trump's favourite news outlet and a vehement critic of Trump's detractors, came out strongly in favour of CNN saying it was a “press freedom” issue. Nearly every prominent US media house came out against the White House decision and took the collective position that “…reporters covering the White House must remain free to ask questions.”

For those who may not have followed this story, CNN chief White House correspondent Jim Acosta angered President Trump when he did not yield his mike and continued to question, leading Trump to call him a “rude, terrible person” during a press conference on November 7. Later, Acosta's White House pass was revoked.

What this case proves is that nobody has the right to arbitrarily curtail the activities of the media regardless of how powerful the person may be. Donald Trump, elected to the highest and the most powerful office in the US, did not have the “power” to revoke a simple thing like the White House press pass of a journalist without “due process” and in a way that violates the US Constitution. Regardless of how deeply the US President may dislike a reporter and however much he could be angry at him or her, a person holding an elected office cannot decide on personal whims, prejudices and feelings that affect the freedom of the press.

Judge Kelly's order proves that getting elected to the most powerful office in a country does not automatically give a person concerned a license to act on one's prejudice, vengefulness and personal likes and dislikes, etc. This can happen only when a country is governed by law, and not by caprice, and where institutions are higher than individuals.

Recall how many executive orders of President Trump have been nullified by the judiciary because of their flawed legal status. Again, this could happen only because of the “division of power” that exists between the judiciary, the legislative and the executive branches of the state. Modern democratic states are all based on this fundamental principle of “division of power” so there is a “check and balance” between the three branches of the state. Without such a “check and balance” and the resultant “oversight” of one organ of the state over another, the likelihood of the emergence of “elected despotism” cannot be avoided as has happened in all countries where such a “division of power” and “check and balance” do not exist.

The CNN case also proves the crucial role that the judiciary plays in ensuring the freedom of the media. Judge Kelly not only acted in favour of the freedom of the press but did so most expeditiously, within days—the case was lodged on November 13 and the order was issued on November 16—so that the CNN reporter could resume his work even before the case was heard. The judge could have easily refused to issue the “restraining order” till the hearing of the case. But that would have meant that the CNN journalist would have been unable to carry out his duties as a part of the free press. Judge Kelly did not want that to happen, proving once more how crucial the role of the judiciary is in guaranteeing the freedom of the media.

The CNN incident also shows how critical it is for journalists to be united in fighting for press freedom. All media outlets in the US, regardless of their political inclinations, joined hands in opposing what President Trump did to the CNN reporter. Of special significance is the role of Fox News. We have seen over the last years how blatantly, and in some cases blindly, Fox News supported Trump. Starting from his candidacy and throughout his campaign and later after he became the President, Fox News was and remains a close ally, prompting Trump to term it his “favourite”, and calling the rest, especially CNN, the “fake media”. In the case of CNN reporter Acosta, the “favourite” came out in support of the “fake” since the issue clearly was of press freedom.

Closer to home, some months ago, a Pakistani journalist was put on the “Exit List” (banning travel abroad) by the home ministry at the insistence of the Pakistan's powerful military. Journalist bodies and most media houses protested in unison, and the journalist's name was dropped from that list.

As is the case in the US, so also in ours, the judiciary is the ultimate guarantor of all sorts of individual and collective freedoms, including the freedom of speech and freedom of the press. It is the judiciary that comes to the aid of the press when the constitutional guarantee is violated by governments of the day. It is again the judiciary to whom people and the media turn when restrictive laws are passed and when journalists and media professionals are harassed or jailed under one pretext or the other. We ardently hope that our judiciary would do more to make individual and collective freedoms a far greater reality than it is today, especially in the case of the media. Here, mention can be made of two important judgments by the Supreme Court, one in 2005 and another in 2016, where “Peoples' Right to Know” was most spiritedly upheld.

On the issue of the unity of journalists in Bangladesh, members of this noble profession must seriously introspect deeply as to where we have come because of our disunity on political lines. One repressive law after another are being imposed on us and yet the response from the journalists are muted, if at all. Nothing seems to bring the professional solidarity that is most necessary if we are to protect press freedom and the right to freedom of speech, given to us in our Constitution.

We conclude by mentioning that a CNN-type case has been existing in Bangladesh for nearly two years. The Daily Star and Prothom Alo are prevented from entering the PMO, the Gono Bhaban, and covering all events of the head of the government. We are also barred from entering the Awami League party offices. In spite of this “ban”, our coverage continues based on TV footage and secondary sources.

CNN at least knew what triggered the Presidential “ban” and could go to court for redress. As for us, till today we have not been given any explanation either verbally or in writing as to the reasons why we are so prevented.

Mahfuz Anam is Editor and Publisher, The Daily Star.

  • Courtesy: The Daily Star/ Nov 19, 2018

গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে ইসি!

শামছুল ইসলাম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও থেমে নেই রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার (বাঁয়ে); আপনজনের সাথে দেখা করতে আদালতে শিশুসন্তান নিয়ে এসেছেন এই নারী। দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থেকেও দেখা মেলেনি। এক সময় ক্লান্ত হয়ে মায়ের কোলেই ঘুমিয়ে পড়ে শিশুটি। ছবি দু’টি গতকাল ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে তোলা - ছবি : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী

নিজেদের অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্য ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। গত ৭ আগস্ট ইসিতে এক কর্মশালা উদ্বোধনের পর সিইসি বলেছিলেন, বড় পাবলিক নির্বাচনে যে অনিয়ম হবে না, এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তার এমন বক্তব্যের পর দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিইসির আরো সতর্ক হয়ে কথা বলা উচিত বলে মন্তব্য করেন খোদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ভোটের মাত্র দেড় মাস আগে গত শুক্রবার প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামনেই নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

এ দিকে তফসিল ঘোষণার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোর জোর দাবি থাকলেও এ প্রশ্নে নীরব ইসি। তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ দেয়ার ঘোষণা দেয় ইসি। কিন্তু ভোটের তারিখ পরিবর্তন, দলীয় মনোনয়ন উত্তোলন ও জমা দেয়ার সময় কর্মীদের মিছিল সমাবেশসহ নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো। অন্য দিকে নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশি তল্লাশি ও গ্রেফতারসহ নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে বিএনপি ও তাদের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো।

তফসিল ঘোষণার পর থেকেই অব্যাহত রয়েছে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাদ যাচ্ছেন না বিরোধী দলের সমর্থকেরাও। মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে দিনমজুর সমর্থকদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এতে সারা দেশে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী এবং ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আর ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন।

নির্বাচন কমিশনের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং অবিবেচনাপ্রসূত বক্তব্য গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে।

নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একজন নির্বাচন কমিশনারের পক্ষে এ ধরনের কথা বলা খুবই গর্হিত কাজ। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না, এ কথা বলাটা একেবারেই অযাচিত ও অবিবেচনাপ্রসূত। এমন বক্তব্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অজুহাত তৈরিতে সহায়ক হবে। তাদেরকে একপ্রকার বার্তাই দেয়া হলো যে, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয়। একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্য দেয়া নৈতিকতার পরিপন্থী।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুদ্ধের আগেই তারা পরাজয় বরণ করছেন কেন? এতে তো নৈতিকতা দুর্বল হয়ে যায়। যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন, তারা তো অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজটি পরিচালনা করেন। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সুরক্ষার বিষয়টি তো নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু এমন যদি হয়, একজন নির্বাচনী কর্মকর্তাকে কেউ হুমকি দিলো বা লাঞ্ছিত করল, সে ক্ষেত্রে আপনি তার সুরক্ষা না দিয়ে বললেন যে এমনটি তো হবেই। তা হলে তো কেউ আর নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে আগ্রহী হবেন না। এখানে যদি তারা নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই বলে দেন যে, সুষ্ঠু হবে না, তা হলে তো নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে তাদের থাকাই উচিত না। তাদের সবারই পদত্যাগ করা উচিত। যারা অনিয়ম ঠেকাতে পারবে, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে, তাদেরই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে থাকা উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার এটি কোনোভাবেই বলতে পারেন না। এভাবে কথা বললে কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। নির্বাচন কমিশনের ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু তারা এভাবে বললে অজুহাত দাঁড় করানো হবে। তারা কর্মকর্তাদের জন্য আগেই অজুহাত তৈরি করে রাখছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে তাদের উচিত ওই পদ থেকে সরে যাওয়া। 

নির্বাচন কমিশন এমন বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন বক্তব্যের কারণে প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কমিশন আসলেই ভালো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কি না। এগুলো নির্বাচন কমিশনের বেসামাল হওয়ার লক্ষণ কি না তা জানা দরকার। 

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, এটি নৈতিকতার ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য। কেউ যদি মনে করেন তার পক্ষে এটি সম্ভব না, তা হলে নৈতিকভাবে দায়িত্ব পালনে তার তো ওই পদে থাকা উচিত নয়। দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোই তার জন্য নৈতিক কাজ হবে।

শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা জনগণকে এমন কোনো নির্বাচন উপহার দিতে চাই না, যেন জনগণের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন এটি পৃথিবীর কোনো দেশেই হয় না। আমাদের দেশেও তা সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে চাই, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, যেটা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে। 

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এই হাওয়া যেন কোনোভাবেই বৈরী না হয়, এই নির্দেশনা কমিশন থেকে থাকবে। আপনাদের সেটি প্রতিপালন করতে হবে। কমিশন চায় না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক।

অন্য দিকে ‘জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই’ মন্তব্য করে গত আগস্টে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।

পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি না এমন প্রশ্নে কে এম নুরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এ ধরনের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েই থাকে। বড় বড় পাবলিক নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। বরিশালে বেশি অনিয়ম হয়েছে, সেখানে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, সেভাবে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সিইসির এ বক্তব্যের সাথে বেগম কবিতা খানমসহ চার নির্বাচন কমিশনারই দ্বিমত করেছিলেন। তখন তারা বলেছিলেন, এটি ইসির অবস্থানও নয়।

ওই সময় বেগম কবিতা খানম সিইসির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, সিইসির ওই বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি না। আমি দ্বিমত পোষণ করি। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যই তো আমরা শপথ নিয়েছি। সুতরাং আমি এটি কখনই সমর্থন করি না। এটি কমিশনের বক্তব্য বলেও আমি মনে করি না। সিইসির এমন বক্তব্য নির্বাচনে অনিয়মকারীদের উসকে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সিইসির ওই বক্তব্য নিয়ে তার সাথে নির্বাচন কমিশনের দূরত্বও সৃষ্টি হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছিল। তখন সিইসিকে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্য দিকে সিইসিকে অভয় দিয়ে দেশবাসীর ওপর আস্থা রাখতে বলেছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/নভেম্বর ১৯,২০১৮