Search

Tuesday, November 20, 2018

ব্যাংক লুটের টাকায় শাহাবুদ্দিনের ‘রাজপ্রাসাদ’


হোসেন গ্লাস ফ্যাক্টরি ছিল চট্টগ্রামের খুলশী এলাকার হাবিব লেনে। ২০০৪-০৫ সালের দিকে ফ্যাক্টরির কর্ণধার মীর হোসেন সওদাগরের কাছ থেকে দুই দফায় প্রায় ৯০ কাঠা জমি কেনেন এসএ গ্রুপের কর্ণধার শাহাবুদ্দিন আলম। দখল করেন দ্য চিটাগং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির ১৯ কাঠাসহ রেলের আরো কিছু জমি। ওই জমিতেই গড়ে তোলেন প্রাসাদোপম বাড়ি। জনশ্রুতি আছে, খুলশীতে শাহাবুদ্দিন আলমের এ বাড়িই এখন চট্টগ্রামের সবচেয়ে বিলাসবহুল বাড়ি। নির্মাণের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির ভাষ্যমতে, প্রায় পাঁচ একর জায়গা (খেলার মাঠ ও খোলা জায়গাসহ) ৫৭ হাজার বর্গফুটের তিনতলা বাড়িটির মূল্য জমিসহ ৬০০-৭০০ কোটি টাকা।

ভারতীয় দূতাবাসের পাশেই শাহাবুদ্দিন আলমের প্রাসাদোপম বাড়িতে থাকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বেষ্টনী। প্রবেশ গেট থেকে অতিথিদের ‘ঘোড়ার গাড়িতে’ করে মূল বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে কথিত আছে।

এসএ গ্রুপের কর্ণধার বাড়িটি নির্মাণ করেন ২০১২-১৩ সালের দিকে। তার আগ থেকেই বিপুল অংকের ব্যাংকঋণ পেতে থাকেন এ ব্যবসায়ী। তার ঘনিষ্ঠজন ও ব্যাংকারদের ভাষ্য, ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের টাকায় এ প্রাসাদ বাড়ি তৈরি করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম। পরে ওই ঋণ খেলাপি হতে থাকলে আইনের আশ্রয় নিতে থাকে ব্যাংকগুলো। সেই মামলার একটিতে গ্রেফতার হয়ে তিনি এখন কারাগারে। তার বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলা করেছে চিটাগং কো-অপারেটিভ হাউজিংও।

শাহাবুদ্দিন আলমের প্রতিষ্ঠান এসএ গ্রুপের কাছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে পূবালী ব্যাংকের। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ব্যাংকটির ঋণ পরিশোধ না করায় এরই মধ্যে শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ব্যাংকটি। পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবদুল হালিম চৌধুরী বলেন, বিলাসবহুল চট্টগ্রামের বাড়িসহ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে শাহাবুদ্দিন আলমের বেশ কয়েকটি বাড়ি, ফিলিং স্টেশন, বহুতল মার্কেটসহ স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। ব্যাংকের টাকায়ই তিনি এসব সম্পত্তি গড়েছেন বলে শুনেছি।

বাড়িটি নির্মাণের সময় নির্মাণ উপকরণ সরবরাহকারী একজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে বলেন, বাড়িটি নির্মাণে ছয় ফুট বাই চার ফুটের একটি বড় টু-ডি ল্যান্ডস্কেপ করা হয়। ল্যান্ডস্কেপ অনুযায়ী, মূল ভবনটি তিনতলাবিশিষ্ট ডুপ্লেক্স আকৃতির। তবে এ বাড়িতে রয়েছে একাধিক ভবন। বাড়ির কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য রয়েছে আলাদা ভবন। রয়েছে একাধিক স্থায়ী মঞ্চ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নার প্রয়োজনে মূল বাড়ির বাইরে রয়েছে শেডযুক্ত রান্নাঘর। আরো আছে মিউজিয়াম, হেলিপ্যাড, লাইব্রেরি, একাধিক খেলার মাঠ ও কোর্ট, জিমনেসিয়াম, কনফারেন্স হল, বৈঠকখানা, বাগান, পার্ক ও শিশুদের খেলার স্থান। ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরের বড় অংশ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে সর্বাধুনিক সুইমিংপুল। বাড়ির নিরাপত্তায় রয়েছে আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি।

বাড়িটি নির্মাণে প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী আনা হয়েছে বিদেশ থেকে। বাড়ির বাগান সৃজনে ব্যবহার করা হয়েছে বিদেশী গাছ, মাটি ও উপাদান। এক্ষেত্রেও প্রতারণার শিকার হয়েছেন এসব সরবরাহকারী।

চট্টগ্রামের স্থানীয় এক আমদানিকারকের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বিদেশী গাছ ও ফুলের চারা সংগ্রহ করেন শাহাবুদ্দিন আলম, যদিও অধিকাংশ টাকা এখনো পরিশোধ করেননি।

বাড়িটির বাগান ও সবুজায়নের দায়িত্বে ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিক। প্রায় এক বছর লোকবল নিয়ে বাগান সৃজনের কাজ করেন তিনি। তাকেও পাওনার পুরো টাকা পরিশোধ করেননি শাহাবুদ্দিন আলম। বাগানের জন্য নেয়া অতিরিক্ত চারা এখনো শাহাবুদ্দিনের প্রাসাদ বাড়িতে পড়ে আছে, মোহাম্মদ রফিককে ফেরত দেননি।

বিদেশী নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার ছাড়াও বাড়িটি নির্মাণে আর্কিটেক্ট আনা হয়েছে ভারত থেকে। ব্যাংকের ঋণ সমন্বয়ে এরই মধ্যে বাড়িটি তার পুত্রবধূর নামে হেবা করে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

পাওনাদার ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা শাহাবুুদ্দিনের প্রাসাদ বাড়িতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন, তাদের বর্ণনা মতে, চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম বিলাসবহুল বাড়ি এটি। যেখানে হেলিপ্যাড, সুইমিংপুল ও ব্যায়ামাগারসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। বাড়ির ভেতরে পুকুর সমান সুইমিংপুলের নিচে রয়েছে স্বচ্ছ গ্লাস। পুরো বাউন্ডারির মধ্যে দুটি ভবন। মূল ভবনটি তিনতলাবিশিষ্ট, যেটি শাহাবুদ্দিন আলমের পরিবারের থাকার জন্য। মূল ভবনের ড্রয়িং রুমটি ডিম্বাকৃতি। অন্যটা দোতলা ভবন। যেখানে তার অফিস স্টাফ, গেস্ট রুম ও নিরাপত্তাকর্মীরা থাকেন। বাড়িটির দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় মূল ফটক দিয়ে প্রবেশের পর বিশেষায়িত যানের মাধ্যমে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় অতিথিদের। ছেলে-মেয়ের বিয়ে, বাড়ি উদ্বোধন ও পারিবারিক যেকোনো অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের রাজকীয় অভ্যর্থনা দেয়া হয় ব্যাংকের ঋণে তৈরি শাহাবুদ্দিন আলমের বিলাসবহুল এ বাড়িতেই।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, মূল ফটকের ভেতর বাড়ির আঙিনায় সার্বক্ষণিক সাত-আটজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত থাকে। পরিবারের ব্যবহারের জন্য গাড়ি রয়েছে ৮-১০টি, যার মধ্যে আছে পাজেরো স্পোর্টস কার, আউডি, টয়োটা, ল্যান্ড ক্রুজারসহ বিলাসবহুল গাড়ি।

খুলশীতে ভারতীয় দূতাবাস পার হতেই হাবিব লেনের শেষ প্রান্তে শাহাবুদ্দিন আলমের প্রাসাদোপম বাড়িটির অবস্থান। বাড়ি নম্বর-৪৩৭৯। গতকাল বাড়িটির মূল ফটকের সামনে যেতেই নিরাপত্তাকর্মীরা বেরিয়ে আসেন। পরিচয় জানার পর ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেননি। বাইরে থেকে দেখা যায়, সাত-আটজন নিরাপত্তাকর্মী। বাড়িতে শাহাবুদ্দিন আলমের পরিবারের কেউ নেই বলে জানান তারা।

শাহাবুদ্দিন আলমের পিতা মো. শামসুল আলম ছিলেন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রামের বকশীরহাটে পারিবারিক একটি কাপড়ের দোকান ছিল তার। এছাড়া নিজ এলাকার পুকুরপাড় অঞ্চলে বাল্বের ছোট একটি ফ্যাক্টরি ছিল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর মধ্যম হালিশহরের বাসিন্দা চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী ইমাম শরীফ সওদাগরের ছেলে মো. আবুল কালাম তার মেয়েকে শাহাবুদ্দিন আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন। আবুল কালামের ছেলেরা ছোট থাকায় শ্বশুরের ব্যবসার দেখাশোনা করেন শাহাবুদ্দিন আলম। মূলত তার ব্যবসার মূলধন তৈরি হয় সেখান থেকেই। শ্বশুরের ব্যবসা দেখাশোনার সময়ই শাহাবুদ্দিন আলম নিজের ব্যবসাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বড় করে তোলেন। শ্বশুরদের দীর্ঘদিনের পুরনো পারিবারিক ব্যবসা কার্যত বন্ধ হয়ে গেলে শ্বশুরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর থেকেই বাবার নামে একাধিক শিল্প-কারখানা স্থাপনে মনোযোগী হন তিনি।

এক সময় পৈতৃকভাবে উল্লেখযোগ্য জমি না থাকলেও বর্তমানে মাইলের মাথা এলাকার মূল সড়কের দুই পাশের অধিকাংশ জমিই শাহাবুদ্দিন কিনে নিয়েছেন। ওই এলাকার লায়লা ফিলিং স্টেশনের মালিকানাও তার নামে।

শাহাবুদ্দিন আলমের এক নিকটাত্মীয় নাম প্রকাশ না করে বণিক বার্তাকে বলেন, এক দশক আগেও শাহাবুদ্দিন আলমের ব্যবসা বলতে উল্লেখ করার মতো কিছু ছিল না। ব্যাংক থেকে বড় বড় ঋণ নেয়ার পর থেকেই নিজ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ জমিগুলো কিনে নেন তিনি। এয়ারপোর্ট রোডের উভয় পাশের গুরুত্বপূর্ণ জমিগুলো কিনে মার্কেট নির্মাণ করেছেন।

ঋণের টাকায় শাহাবুদ্দিন আলম বিলাসবহুল বাড়ি ও সম্পদ গড়লেও ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ করেননি। বর্তমানে তার কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। পাওনা আদায়ে ব্যাংকগুলো আইনের আশ্রয় নিয়েছে। গত কয়েক বছরে এসএ গ্রুপের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে এ পর্যন্ত দেড়শর বেশি মামলা করেছে পাওনাদার ব্যাংক। ব্যাংক এশিয়ার এক মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন চট্টগ্রামের এ ব্যবসায়ী।


  • Courtesy: Banikbarta/ Nov 20, 2018

Punitive measures against perpetrators are the answer

EDITORIAL

THE Financial Institutions Division’s plan to train directors to safeguard interests of state-owned banks sounds farcical as it is unlikely to work. The division arranged the programme against the backdrop of loan scams involving at least Tk 13,000 crore in state-owned Sonali, BASIC and Janata banks under the board of directors appointed during the Awami League’s two consecutive tenures in the government. The Anti-Corruption Commission failed to prosecute even former BASIC Bank chairman Abdul Hye Bachhu although the central bank found his involvement in the approval of loans of Tk 6,000 crore to fictitious borrowers that made the once profit-making bank fail. A former central bank governor rightly noted that there would be no benefit of such a brainstorming sessions since problems of state-owned banks — such as growing non-performing loans and political intervention — were known to all. Under such circumstances, it is disturbing that the division has arranged a programme of training for bank directors. All that is needed now is the willingness of the government to punish the politically motivated directors responsible for the shabby condition of these banks.

Sonali Bank, Janata Bank, Agrani Bank, Rupali Bank and BASIC Bank have become safe havens for rule violators as their boards illegally dictate the loan approval process and adopt malpractice and fact-tampering ignoring the regulators. As such, it is not surprising at all that most of these banks were rocked by loan scams with shady loans approved by the errant boards. According to the BFID report, borrowers defaulted on 48 per cent of the loans, 80 per cent of which is bad loan. Such a plunder of public money could take place for lack of efficiency and transparency in credit approval, credit administration and credit oversight and recovery, poor selection of borrowers, politically motivated lending and negligence in risk management. All these failures of the state-owned banks also squarely fall on the government, which sets up the bank boards, often with people of a partisan bias. The situation in these banks is so alarming that there is an urgent need to overhaul the management structure of these banks to bring their directors under a framework agreement to ensure their accountability.

Against this backdrop of scams, bad loans and fraudulent practice by the banks, the government should have thought of bringing about a change in its banking policy. Still training can be provided for directors to impart knowledge on new subjects such as cyber theft and money laundering law. But no training is needed to make them aware of their core responsibility. It is high time the government concentrated on prosecuting and punishing the responsible individuals of state-owned banks exemplarily and, thus, abstained from abetting more financial crimes.

  • Courtesy: New Age/ Nov 20, 2018

EC seems lenient about code violations

No plan yet to launch special drives against illegal arms, field admin remain unchanged

  
The Election Commission seems to be lenient about violation of the electoral code of conduct as it has taken no action although its instructions to parties and authorities concerned to go by the code have fallen flat.

Neither the police have launched special drives to seize illegal arms and arrest the listed criminals nor does the commission have any plan to reshuffle the field administrations to ensure neutrality of officials and a level playing field ahead of the 11th parliamentary elections schedule for December 30.

Campaign materials of nomination aspirants mostly from the ruling Awami League seeking votes were still on display in Dhaka and at places across the country violating the electoral code of conduct while the dateline for the removal of such publicity stuffs expired Sunday past midnight.

New Age correspondents in districts reported that thousands of posters seeking votes for aspirants of different political parties were still there on the walls at places.

In the capital, banners, posters and graffiti seeking vote were found in different areas, including Gabtoli, Gulistan, Naya Paltan, Dhanmondi, Wari, Motijheel, Captan Bazar, Farmgate, Lalbagh, Uttara, Jatrabari, Mirpur and Tejgaon on Monday. Aspirants, their supporters and trade unions of different government and private offices have covered the walls with posters, hanged banners and made graffiti seeking votes for the ruling Awami League, the opposition Bangladesh Nationalist Party and the Jatiya Party faction led by HM Ershad.

Commission secretary Helaluddin Ahmed told reporters on Monday that no punitive action was taken against anyone for violating the electoral code of conduct till Monday.He also said that returning officers and other authorities concerned were asked to take actions against the code violators. He claimed that about 90 per cent of illegal campaign materials had been removed by the deadline.

This time, the elections are set to be held with the field administration the government has laid out as the commission has no plan to bring about any change in the administration.

Opposition alliance Jatiya Oikya Front on November 14 demanded that the commission needed to reshuffle the field administration, laid out by the government, to ensue minimum neutrality of the field administration during the elections.

Governance campaigners said that the reshuffle of the field administration was a precondition for a fair election as the field officials were directly involved in conducting polls. They said that the field administration, including the police administration, had been reshuffled in consultation with the commission before previous general elections to ensure neutrality of the field-level officials.

Election commissioner M Rafiqul Islam said that the commission had no plan to ask the government to reshuffle the field administration.

He said that the commission would only think about the matter if complaints were raised against any particular officer.He said that the commission had not asked the law enforcement agencies to conduct any special drives to seize illegal arms.

He said that seizure of illegal arms was a routine work and the commission remained the law enforcement agencies of their routine work only. He said that the commission issued no instruction to the police to arrest listed criminals to avoid ‘unexpected incidents’.

The commission on Saturday issued a notification stating that actions would be taken against aspirants, parties and owners of buildings, enterprises, markets and transports from where posters, banners, graffiti, billboard, gate, marquees, lightings and campaign materials for votes would not be removed by the deadline.

The commission also asked the city corporations, municipal councils and other local government bodies to take necessary steps in this regard for ensuring a level playing field.

Dhaka North City Corporation public relations officer ASM Mamun said that the city corporation had so far removed 1.3 lakh posters and festoons and five teams continued monitoring the violation of the electoral code. He said that they were yet to take any punitive action against anyone. 

Dhaka South City Corporation also ran drives to remove posters Monday and removed several thousand posters from walls in different areas, including Azimpur, Purana Paltan, Motijheel and Khilgaon area. Its additional chief waste management officer Khandaker Millatul Islam said that still thousands of posters and banners were there in different city streets even after crash programme to remove them.

He said that they removed huge posters of not only nomination seekers but different government organisations also.He said that no action was taken anyone as they found none of the code violators on the spot.

‘We have collected samples of the poster of the campaign materials to submit to the Election Commission for taking actions,’ he said.

After the announcement of the polls schedule on November 8, at least six people — two in Dhaka and four Narsinghdi — were killed in AL internal clashes.

  • Courtesy: New Age/ Nov 20, 2018

EC ORDER TO REMOVE POSTERS, BANNERS

Local admin steps in


Local administration officials had to pull down campaign materials in several places across the country yesterday as many parliamentary aspirants didn't remove their posters and banners within the Sunday deadline.

The Election Commission had directed all political parties and aspirants to bring down their campaign materials by November 18.

But district administrations and city corporations had to conduct drives led by executive magistrates to rid roadsides, walls and electric poles of the materials in many places.

Quoting officials, the EC yesterday said 90 percent of the campaign materials had been removed.

"We have once again directed divisional commissioners, deputy commissioners and chief executive officers of city corporations and other local government bodies today [yesterday] to remove the electoral campaign materials. They will take action against political parties and candidates who had not removed those," said EC Secretary Helal Uddin Ahmed.

The Dhaka South City Corporation (DSCC) started removing posters, banners and festoons since yesterday morning. Led by DSCC Executive Magistrate Masud Rana, the drive was conducted in Suritola, English Road, Purana Paltan, Khilgaon, and Motijheel areas.All employees concerned were asked to remove the materials as per the EC directives, an official said.

The DSCC would continue the drive and had requested ward councillors for assistance.

In Chittagong, posters of Awami League leader and parliamentary hopeful Syed Mahmudul Haque was seen on the south gate of MA Aziz Stadium.

Another AL aspirant Helal Uddin's posters were also there. Banners of AL aspirants were seen on the walls of Railway hospital and Railway Building areas yesterday.

Contacted, Munir Hossain Khan, Chattogram district election officer, said mobile courts led by 16 executive magistrates had conducted drives across the city.

“As far as I know, electoral campaign posters and banners have been removed in 95 percent of the areas,” he said.

Except Godagari upazila, most of the campaign materials were removed on time in Rajshahi.

At Kamarpara market, posters of AL aspirants Motiur Rahman and Tajibul Islam were seen at 3:00pm yesterday.

"Most of the aspirants paid heed to our call and cleaned up the materials. We had engaged workers to remove the remaining ones," said Kader, deputy commissioner of Rajshahi. He said no punitive action was taken against anyone.

“If any campaign material still remains, our mobile courts will launch drives and take legal action,” he added. In Dinajpur, our correspondent found many posters of Ahmed Sharif Rubel, a JP aspirant.

Some posters of Communist Party of Bangladesh aspirants were found at Kalitola area of the district. A big signboard of Sweschchasebak League also remained there.

In Barishal, Executive Magistrate Mozzeml Haque Chowdhury said about 50 billboards had been removed in a drive in several areas. No one was penalised though.

The Khulna City Corporation removed most of the banners, posters and other campaign materials from the city by Sunday. The remaining materials were removed by 10 executive magistrates yesterday, said Palash Kanti Bala, chief executive officer of the corporation.

Only a few torn banners were seen yesterday.There were similar pictures in Bogra, Mymensingh, Narayanganj and Kurigram.

  • Courtesy: The Daily Star /Nov 20, 2018

No child should have to live on the street

EDITORIAL

Children being robbed of basic rights


The sight of children begging and sleeping on the streets in the capital has, unfortunately, become so common that it has ceased to arouse our collective conscience anymore. Drug peddling and addiction and involvement in crimes among street children are serious issues that are yet to be addressed. It is a paradoxical reality that hundreds of thousands of street children in the country—with an overwhelming majority in Dhaka—fight to survive every day by begging, pickpocketing or selling drugs at a time when our aspirations of becoming a developing country have taken centre stage in the national discourse.

The number of children living on the streets in different cities across the country is estimated to be in the millions. These children whose misery is fuelled by abject poverty and lack of social protection simply have nowhere to go. Much like many problems, the issue of vulnerability of street children and their basic rights remaining unfulfilled is also rooted in the lack of implementation of existing policies. National Children Policy 2011 clearly states that “(a) nutrition, (b) health, (c) overall protection, (d) education and (e) social security of the child shall be given priority for the poverty alleviation of the children.”

If such well-intended policies were rigorously implemented, the fate of countless children in the country who have ended up on the streets would have been far different. Although there are some NGOs and shelter homes for these children, they are not nearly enough to rehabilitate even a miniscule percentage of them. As we observe Universal Children's Day today, we urge the Ministry of Women and Children Affairs to do much more to ensure that the basic needs of street children—shelter, education and healthcare are met.

  • Courtesy: The Daily Star /Nov 20, 2018

বেকারত্ব বাড়ছেই!

সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেকারদের কথা ভাববে কি?

বাংলাদেশের তরুণদের বেকারত্বের হার সাত বছরে দ্বিগুণ হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদনে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৮টি দেশের বেকারত্ব, তরুণদের কর্মসংস্থান, নিষ্ক্রিয় তরুণের হার, আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থান, কর্মসন্তুষ্টি ইত্যাদি নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আর বেকারির দিক থেকে বাংলাদেশ আছে ২৭ নম্বরে, একমাত্র পাকিস্তানের নিচে।

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই উন্নতি করেছি, কিন্তু কেন সেই  উন্নয়ন–প্রক্রিয়ায় তরুণদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না, সে ব্যাপারে নীতিনির্ধারকেরা একেবারেই উদাসীন বলে মনে হচ্ছে। যথা বাংলাদেশে নিষ্ক্রিয় তরুণদের হার ২৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, তরুণেরা যত বেশি পড়ালেখা করছেন, তাঁদের তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। দেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি হওয়া ব্যক্তি ও পরিবার তো বেটেই, রাষ্ট্রেরও বিরাট অপচয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গত এপ্রিলে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে বেকার ছিল ২৬ লাখ ৭৭ হাজার; যা আগের বছরের চেয়ে ৮৭ হাজার বেশি। দেশে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ৬ কোটি ৩৫ লাখ হলেও এদের একটি বড় অংশ যে পুরোপুরি বেকার অথবা ছদ্মবেশী বেকার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  

বাংলাদেশে তরুণদের বেকারত্বের হার বেশি না কম, সেটি জানতে দেশি-বিদেশি জরিপ বা গবেষণার প্রয়োজন নেই। সরকারি কর্মকমিশনে প্রতিবছর চাকরিপ্রার্থীর বর্ধিত সংখ্যা থেকে সেটি অনুমান করা যায়। ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় ২ হাজার ২৪টি শূন্যপদের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৩ লাখ ৮৯ হাজার জন চাকরিপ্রার্থী। প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ১৯১ জন প্রতিযোগী। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ তেমন না বাড়ায় কর্মসংস্থানও খুব আশাব্যঞ্জক নয়। তদুপরি বেসরকারি খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরিও কম। চাকরির ক্ষেত্রে রয়েছে অনিশ্চয়তা। আইএলওর প্রতিবেদন মতে, কাজে যুক্ত ৫৪ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন, তাঁদের যথাযথ হারে বেতন বা মজুরি দেওয়া হয় না। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব বলছে, দেশে শ্রমবাজারে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের প্রায় ৭৮ শতাংশ হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাতে। অর্থাৎ এঁদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই।

সরকারের দাবি, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-১৫) ১ কোটি ৪০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরও যদি বেকারের হার দ্বিগুণ হয়, তাহলে সরকারের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মধ্যে যে বিরাট ফাঁক আছে, তা বুঝতে অর্থনীতির পণ্ডিত হতে হয় না। বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার বেশি হওয়ার কারণ, মুখে যত বড় কথাই বলি না কেন, আমরা আমাদের শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে পারিনি।  একদিকে দেশে শিক্ষিত বেকারের হার বাড়ছে, অন্যদিকে উচ্চহারে বেতন দিয়ে বিদেশ থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী আমদানি করা হচ্ছে। এই বৈপরীত্য থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহার তৈরিতে ব্যস্ত আছে। কিন্তু তাদের ইশতেহারে যুগোপযোগী শিক্ষা ও সত্যিকার মানবসম্পদ উন্নয়নের নিশ্চয়তা থাকবে কি না, সেটাই জিজ্ঞাস্য। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে, কিন্তু দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আমরা যে পিছিয়ে আছি, সেসব নিয়ে কারও মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের চাওয়া-পাওয়া গুরুত্ব না পেলে উন্নয়নের সব উদ্যোগই ভেস্তে যাবে। বেকারির দেশে টেকসই উন্নয়ন হয় না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ২০,২০১৮

আ.লীগের সঙ্গে ইসলামি দল বেশি

  • প্রচলিত ধারণা, ইসলামপন্থী দলের ভোট বিএনপির দিকে বেশি যায়
  • ইসলামপন্থী ভোটব্যাংকের দিকে নজর আ. লীগ ও মিত্র জাতীয় পার্টির
  • এবার ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় ৭০টি ইসলামি দল ও সংগঠন
  • ২৯টি দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে
  • ৩২টি দল আছে জাপার সঙ্গে, যারা ভোটে সরকারের সহায়ক হবে
  • বিএনপির সঙ্গে আছে ৫টি ইসলামি দল



একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ভোটের মাঠে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোর তৎপরতা। এসব দলের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ এবং এর মিত্র জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। একসময় বিএনপির ঘনিষ্ঠ ইসলামি দলও ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মিত্রতা গড়েছে।

এবার ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় আছে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলিয়ে ৭০টি ইসলামি দল ও সংগঠন। এর মধ্যে ২৯টি দল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। ৩২টি দল আছে জাতীয় পার্টির সঙ্গে, যারা ভোটের মাঠে সরকারের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। আর বিএনপির সঙ্গে আছে ৫টি দল।

অনেক দিন ধরে একটা ধারণা আছে যে জাতীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলগুলোর ভোট বিএনপির দিকেই বেশি যায়। এবার এই ‘ভোটব্যাংকের’ দিকে নজর দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং এর মিত্র এরশাদের জাতীয় পার্টি। এরই অংশ কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও সরকার সখ্য গড়ে তোলে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ইসলামপন্থীদের বেশি করে কাছে টানা গেলে বিএনপির ভোট কমবে, এই কৌশল থেকে ছোট-বড় সব ধরনের ধর্মভিত্তিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিদের সঙ্গে গত পাঁচ বছর সরকার সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে। কারও কারও সঙ্গে দূর থেকে নির্বাচনী সমঝোতা করছে।

তবে দুটি দল—চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (আতাউল্লাহ) এখন পর্যন্ত কোনো দিকে যায়নি। তবে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ তার আগে-পরে ইসলামী আন্দোলনের প্রতি সরকার কিছুটা নমনীয় ছিল। বিশেষ করে, ইসলামী আন্দোলন গত ১০ বছরে সারা দেশে ওয়াজ মাহফিলসহ নির্বিঘ্নে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়েছে। চরমোনাই পীরের অনেক মাহফিলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ ও প্রভাবশালী নেতাদের আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে থাকতে দেখা গেছে।

অবশ্য ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব সময় আমরা সভা-মাহফিলের যে সুযোগ পাই, তা না। বিএনপি, জাতীয় পার্টিও সমাবেশ করে। তবে আমাদের প্রতি সরকারের একটা সুনজর থাকতে পারে এ কারণে যে আমরা হাঙ্গামা করি না। প্রশাসন আমাদের ঝুঁকি মনে করে না।’ তিনি বলেন, ‘সাময়িক সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেকে অন্য জোটে যাচ্ছে। আমরা জোট, নোট, চোট এগুলোকে সতর্কভাবে এড়িয়ে চলছি।’

সরকারের সমর্থনে নতুন নতুন জোট

সর্বশেষ সম্মিলিত ইসলামী জোট নামে নতুন একটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয় ৩ নভেম্বর। এই জোটের শরিক দল আটটি। এই জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা জাফরুল্লাহ খান দীর্ঘদিন প্রয়াত মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ হাফেজ্জী হুজুর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ছিলেন। সম্প্রতি তিনি ওই দলের মহাসচিবের পদ হারান। এরপর তিনি খেলাফত আন্দোলনের একাংশ নিয়ে নতুন দল করেন। এত দিন তাঁর অবস্থান ছিল সরকারের বিরুদ্ধে। চলতি মাসে জাফরুল্লাহ খান আটটি অনিবন্ধিত সংগঠন নিয়ে সম্মিলিত ইসলামী জোট গঠন করেন। তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচন করতে চায়। জোটের নেতারা গত শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকের বিষয়ে সম্মিলিত ইসলামী জোটের কো-চেয়ারম্যান মুফতি ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১০টি আসনের প্রার্থী তালিকা দিয়েছি। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমাদের জানাবেন।’

মুফতি ফখরুলও খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলন নামে নতুন দল গঠন করেছেন।

গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৫টি দল নিয়ে সরকারের সমর্থনে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (আইডিএ) নামের আরেকটি জোটের আত্মপ্রকাশ হয়। এর চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান লক্ষ্মীপুর-১ আসনের তরীকত ফেডারেশনের সাংসদ এম এ আউয়াল। এই দুজন দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছেন। এই জোট সাতটি আসন চেয়ে সরকারের কাছে তালিকা দিয়েছে।

এম এ আউয়াল গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (বাহাদুর শাহ), সাইফুদ্দীন মাইজভান্ডারীর দল সুপ্রিম পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলকে অন্তর্ভুক্ত করে জোট পুনর্গঠন করছি। আশা করছি পাঁচ থেকে সাতটি আসন পাব।’

শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদের বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও মুফতি রুহুল আমিনের নেতৃত্বাধীন খাদেমুল ইসলাম সরাসরি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। মুফতি রুহুল আমিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শুকরানা সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন।

মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলেম-ওলামাদের একটি দূরত্ব ছিল। এবার বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া এবং কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাসনদের সরকারি স্বীকৃতির প্রভাব ইসলামপন্থীদের ওপর পড়েছে।’

নিবন্ধিত ২টি বিএনপি ও ৬টি আ.লীগের সঙ্গে

নির্বাচন কমিশনে এখন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৩৯টি। এর মধ্যে ইসলামপন্থী দল ১০টি। এর মধ্যে ছয়টিই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (নজিবুল বশর) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে, আর ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (বাহাদুর শাহ) মহাজোটের শরিক। বাকি চারটি দল ইসলামী ঐক্যজোট (নেজামী), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (হাবিবুর রহমান) ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মান্নান) ও জাকের পার্টির (মোস্তফা আমীর) সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে আছে দুটি দল—খেলাফত মজলিস (ইসহাক) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (আবদুল মোমেন)। নিবন্ধিত বাকি দুটি ইসলামি দল ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলন (আতাউল্লাহ) কোনো দিকে যায়নি এখনো।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কে কোন উদ্দেশ্যে জোট পরিবর্তন করেছেন, নতুন নতুন ঘনিষ্ঠতা তৈরি করছেন, এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ অনেক সচেতন। আদর্শ বদল করে নিজের চাওয়া-পাওয়ার জন্য যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের কথায় মানুষ ভোটের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে বলে মনে করি না।’
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ২০,২০১৮ 

Govt to borrow Tk 20b more from banks

Net borrowing to reach Tk 30.42b in Nov 

 

The government revised its auction calendar on Monday keeping an option for borrowing Tk 20 billion more for financing budget deficit ahead of the December general elections, officials said. Under the revised calendar, the net borrowing from the banking system is set to reach Tk 30.42 billion by the end of this month, compared with Tk 10.42 billion earlier.

The government may borrow the additional amount of money from the market by the end of November through issuing bonds, the officials added.

"We've revised the auction calendar in line with the Ministry of Finance (MoF) advice," a senior official of the Bangladesh Bank (BB) told the FE. The revised calendar will come into effect from today (Tuesday), said the official.

"The government has revised its auction calendar to meet immediate cash requirements ahead of the upcoming national polls," a senior official familiar with the government debt-management activities told the FE. The 11th national election is scheduled to be held on December 30.

"Collected revenue from tax fairs will take time for depositing with the government accounts," the official said while explaining the necessity for revising the calendar.

The National Board of Revenue (NBR) received Tk 18.99 billion as income tax in the last six days from tax-fairs. The week-long fairs concluded on Monday.

The government's bank borrowing trend for December will be finalised in the next meeting of Cash and Debt Management Technical Committee (CDMTC) by the end of this month.

"The committee will finalise the amount of such borrowing reviewing the overall economic situation," the official added. The government bank borrowing may increase further in December ahead of the elections, the official hinted.

Senior treasury officials of commercial banks, however, did not see immediate impact of the extra bank borrowing on the market.

"The demand for local currency may pick up in the market if the existing upward trend in government bank borrowing continues," a treasury official of a leading private commercial bank (PCB) told the FE.

The weighted average rate (WAR) on call money rose to 3.60 per cent on Sunday from 3.50 per cent of the previous working day, the BB data showed.

The finance ministry had set a bank-borrowing target of Tk 420.29 billion for fiscal year 2019 to finance the budget deficit. Under the proposed bank borrowing, the government will borrow Tk 239.65 billion issuing long-term bonds while the remaining Tk 180.64 billion through treasury bills (T-bills).

Currently, four T-bills are being transacted through auctions to adjust the government's borrowing from the banking system.

The T-bills have 14-day, 91-day, 182-day and 364-day maturity periods.

Also, five government bonds with tenures of two, five, 10, 15 and 20 years respectively are traded on the market.

  • Courtesy: The Financial Express /Nov 20, 2018

Monday, November 19, 2018

ইসি কি পুলিশের অধীন, না পুলিশ ইসির অধীন?

সোহরাব হাসান


নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা ব্যক্তিদের সম্পর্কে কি পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগ খোঁজখবর নিতে পারে? সেটি সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রমের আওতায় পড়ে। কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার পর এ বিষয়ে অন্য কারও নাক গলানো উচিত নয়। বিষয়টি পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে। তাঁরা যাঁকে যোগ্য মনে করেছেন, তাঁকে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালনের জন্য যেরূপ কর্মচারীদের প্রয়োজন হইবে, নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করিলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনকে সেইরূপ কর্মচারী প্রদানের ব্যবস্থা করিবেন।’

এর অর্থ হলো নির্বাচন কমিশন যাঁকে নিয়োগ দেবে, তাঁকেই মেনে নিতে হবে। কিন্তু গত কয়েক দিন পত্রিকায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে পুলিশ বিভাগ যেভাবে খোঁজখবর নিচ্ছে, তা শুধু এখতিয়ারবহির্ভূত নয়, বেআইনিও। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখা প্রয়োজন, নির্বাচন কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছেন বিরোধী দলের তালিকা অনুযায়ী নয়; নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তারাই এই তালিকা তৈরি করেছেন, যাঁরা সদাশয় সরকারের মাঠপর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাও। এখন নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে পুলিশের খবরদারি করা রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল।

কয়েক দিন ধরে প্রথম আলোয় এ নিয়ে একাধিক খবর প্রকাশিত হলেও নির্বাচন কমিশন অনেকটা নির্বিকার। একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কমিশন থেকে পুলিশ বিভাগকে এ রকম কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তাহলে পুলিশ কি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কাজটি করছে? যদি তারা তা করে থাকে, নির্বাচন কমিশনের উচিত এখনই বন্ধ করা। কিন্তু তারা সেসব না করে লুকোচুরি খেলছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি কথা বেশ প্রচারিত আছে যে ক্ষমতাসীনেরা ধরে নিয়েছিলেন, বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপি জোট নির্বাচনে আসবে না। এটা ধরে নিয়েই নির্বাচন কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, এবারেও ২০১৪ সালের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একটি নির্বাচন হবে। কে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন, কে থাকবেন না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। নির্বাচন কর্মকর্তাদের ‘দেশপ্রেম’ বা দলপ্রেমের প্রশ্নটি তখনই সামনে আসে, যখন বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর থেকে জানা যায়, প্রায় সব জেলায়ই পুলিশ নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছে। আমাদের একজন সহকর্মী সম্প্রতি উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে। তিনিও এসে জানালেন, নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভয়ভীতিতে আছেন। পুলিশের লোকজন তাঁদের জিজ্ঞাসা করছেন, আপনি এর আগে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছিলেন কি না। আপনি কোনো রাজনৈতিক দলের বা ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি না?

খুবই নিরীহ প্রশ্ন। এই নিরীহ প্রশ্নের আড়ালের সত্যটি হলো, আপনি ‘ক’ দলের সঙ্গে জড়িত থাকলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু ‘খ’ দলের সঙ্গে জড়িত থাকলেই সমস্যা। এই পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর না নিয়ে যদি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অফিসে খোঁজখবর নিতেন, আরও অনেক মজার তথ্য পেতেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব যখন আওয়ামী জোট শামিল হন কিংবা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বিএনপি জোটের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হন, তখন কারও ‘অতীত রাজনীতি’ নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া অর্থহীন।

কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা অতীতে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল করলে যে পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বদলাবেন না, সে কথা জোর দিয়েও বলা যায় না। এখন যেসব পুলিশ কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে নির্বাচন কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইছেন, তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় জানাটা আরও বেশি জরুরি বলে মনে করি। তাঁদের আচরণে মনে হয়, জন্মসূত্রেই ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই অতি উৎসাহীরাই যেকোনো সরকারকে ডুবানোর জন্য যথেষ্ট, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সংবিধান অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারী (অন্তত নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত) নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে চলে গেলে পুলিশ বিভাগের লোকজন তার বাইরে থাকতে পারেন না। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেও যেই প্রশাসন ছিল, এখনো সেই প্রশাসন কাজ করছে। তবে পার্থক্য হলো তাঁরা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারে চলে গেলেন।

আমাদের মন্ত্রীরা একসময় গলা ফাটিয়ে বলতেন, নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ (তত্ত্বাবধায়ক শব্দটি ইচ্ছে করেই উল্লেখ করলাম না, সংবিধানবহির্ভূত এ রকম একটি শব্দ ব্যবহারের জন্য তারা মামলাও ঠুকে দিতে পারেন) সরকারের প্রয়োজন নেই। ক্ষমতাসীন সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে রুটিন কাজ করে যাবে এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই হবে সবকিছুর নিয়ন্তা হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, তাঁরা সবকিছুর নিয়ন্তা নন। তাঁদের ওপরের নিয়ন্তা হচ্ছে পুলিশ।

এ কথাও আমাদের জানা যে তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন কমিশন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সাধারণত, সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা এসব পদে নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তাঁদের কারও বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখবে। প্রয়োজন মনে করলে তারা কাজটি পুলিশ বিভাগকে দিয়েই করবে। কিন্তু পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কারও সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া বা তদন্ত করতে পারে না। অথচ তারাই সেটি করছে আর নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ‘সার্বভৌম নির্বাচন’ কমিশন পুলিশের অধীন একটি সংস্থায় পরিণত হবে।

একজন অতি উৎসাহী জেলা প্রশাসক বলেছেন, রাষ্ট্র নাকি যেকোনো নাগরিকের ওপর গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাতে পারে। তাঁর কথা সঠিক ধরে নিলে রাষ্ট্রকে ১৬ কোটি মানুষের বিরুদ্ধেই গোয়েন্দাগিরি করতে হয়। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সেটি হতে পারে না। হতে পারে একমাত্র পুলিশি রাষ্ট্রে।

পুলিশের এই অপতৎপরতা এখনই থামানো দরকার। না হলে হয়তো তারা ভোটারদেরও এই বলে পাকড়াও করতে থাকবে যে আপনি আগে কোন দলকে ভোট দিয়েছেন এবং তাঁর উত্তর মনঃপূত না হলে বলবে, ‘আপনার ভোটকেন্দ্র যাওয়া যাওয়ার প্রয়োজন নেই।’ তখন প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনটি অংশগ্রহণমূলক হলেও ভোটারদের জন্য হবে না।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ নভেম্বর ১৯,২০১৮ 

পদ্মা সেতু — পরিবর্তিত নকশায় ১৫ মাস পর পিয়ারের পাইলিং শুরু


পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চলা অবস্থায় গত বছরের জুলাইয়ে জটিলতা দেখা দেয় ১৪টি পিয়ারের নকশায়। পরবর্তী সময়ে একই জটিলতা দেখা দেয় আরো ছয়টি পিয়ারে। পরিবর্তন আনতে হয় এসব পিয়ারের নকশায়। ত্রুটি শনাক্তের ১৫ মাস পর সম্প্রতি পরিবর্তিত নকশার এসব পিয়ারের পাইলিং শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মাওয়া প্রান্তের যেসব পিয়ারের নকশায় ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, সেগুলোর পাইলিংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে।

পদ্মা সেতুর ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৫, ১৯, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর পিয়ারসংলগ্ন মাটির গঠনে ভিন্নতা পাওয়ার পর সেগুলোর পাইলিং স্থগিত রেখে নতুন করে নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যেই ২৪, ২৫, ২৮, ৩৩, ৩৪ ও ৩৬ পিয়ারেও দেখা দেয় একই সমস্যা। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব পিয়ারের পাইলিং স্থগিত রাখা হয়। সেতুর ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউইর প্রকৌশলীরা এসব পিয়ারের নতুন নকশা করে দিয়েছেন।

শুক্রবার সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে মাওয়া প্রান্তের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বরসহ বেশ কয়েকটি পিয়ারে পরিবর্তিত নকশায় পাইলিং করতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ৬, ৭ ও ৮ নম্বর পিয়ারের পাইলিং কিছুটা দৃশ্যমানও হয়েছে। ৯ নম্বর পিয়ারের পাশে বসানো বিশালাকার হ্যামার। আরেকটি বিশালাকার হ্যামার রয়েছে ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারের কাছে। একইভাবে মাঝ পদ্মার কয়েকটি পিয়ারেও চলছে পাইলিংয়ের কাজ।

পদ্মা সেতুতে পিয়ার হবে মোট ৪২টি। এর মধ্যে নদীর ভেতরে থাকা ৪০টি পিয়ারের প্রতিটিতে ছয়টি করে পাইল করার কথা ছিল। নকশা বদলে ফেলা পিয়ারে ছয়টির বদলে সাতটি করে পাইল করা হচ্ছে। ফলে পাইলের সংখ্যা ২৪০ থেকে বেড়ে ২৬২টিতে উন্নীত হচ্ছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট টিমের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, নতুন নকশায় ২২টি পিয়ারে ছয়টির বদলে সাতটি করে পাইল করা হচ্ছে। পাশাপাশি পাইলগুলোর গভীরতা স্থানভেদে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত কমানো হয়েছে। নতুন নকশা করা হয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউইর তত্ত্বাবধানে। পরিবর্তিত নকশায় দ্রুত পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে চলছে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ পিয়ারের গভীরতা ১২০-১৩০ মিটার। তবে নকশায় পরিবর্তন আনা পিয়ারের পাইলের গভীরতা ৯৮ থেকে ১১৪ মিটারের মধ্যে রাখা হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের পিয়ারগুলোর গভীরতা তুলনামূলক কম। জাজিরা অংশে পরিবর্তিত নকশার পিয়ারগুলোর গভীরতা সে তুলনায় বেশি হচ্ছে।

জানা যায়, কাউইর কাছ থেকে পদ্মা সেতুর পরিবর্তিত নকশা চলতি বছরের মার্চের দিক থেকে পেতে শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন। ক্রমান্বয়ে সব পিয়ারের পরিবর্তিত নকশা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বুঝে পেয়েছে। সব মিলিয়ে এ জটিলতায় পেরিয়ে গেছে প্রায় ১৫ মাস।

তবে পিয়ারের নকশা জটিলতা সেতুর কাজকে দীর্ঘায়িত করবে না বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্যানেল অব এক্সপার্ট টিমের এক সদস্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, নকশা জটিলতা সেতুর নির্মাণকাজ বিলম্বিত করছে না। কারণ যে অংশটুকুর জন্য নকশায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে, শুধু সেই অংশটিই তো মূল কাজ নয়। এর বাইরে আরো নানা কাজ রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সেগুলো এগিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

তাহলে নির্মাণকাজে বিলম্বের কারণ কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, পদ্মা বিশ্বের বড় ও শক্তিশালী নদীগুলোর অন্যতম। এর তলদেশের মাটির অবস্থাও অন্য রকম। একেক স্থানের মাটির ধরন একেক রকম। বলতে গেলে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হচ্ছে। এ প্রকল্পে প্রায় ১০ হাজার মানুষ কাজ করছেন। এর মধ্যে এক হাজার চীনা কর্মীও রয়েছে, যারা এক্সপার্ট হিসেবে কাজ করছেন। এর বাইরে ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট আছে, প্যানেল অব এক্সপার্ট আছেন। এত মানুষ তো আর বসে নেই। বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। পলিটিক্যাল মাস্টাররা অনেকেই বলবেন যে এটা এখনো কেন হলো না। কিন্তু তাদের হয়তো ধারণা নেই যে কাজটা কত বড়। এ ধরনের ফাউন্ডেশন পৃথিবীতে এই প্রথম হচ্ছে। যে হ্যামার দিয়ে কাজ করা হচ্ছে, সে ধরনের শক্তিশালী হ্যামার পৃথিবীতে ছিল না। শুধু পদ্মা সেতুর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বানানো হয়েছে।

এখনো সেতুর অনেক কাজ বাকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীর তলদেশে পাইলিং করে কংক্রিট ঢেলে পিয়ার তোলা হচ্ছে। পিয়ার হয়ে যাওয়ার পর স্প্যান বসবে। সেগুলোর ওপর আবার বসবে কংক্রিটের বিম। রেললাইন বসাতে হবে। স্টেশন নির্মাণ করতে হবে। এখনো অনেক কাজ বাকি।

পদ্মা সেতু প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নদীর ভেতরে থাকা ৪০ পিয়ারের মধ্যে ১১টির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। ২৬২টির মধ্যে টপ অ্যান্ড বটম পাইলিং হয়েছে ১৬৯টি। সেতুতে মোট স্প্যান বসবে ৪১টি। এর মধ্যে ১৭টি স্প্যান প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছেছে, যার ছয়টি এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য চীনের ওয়ার্কশপে স্টিল প্লেট থেকে স্টিল মেম্বার তৈরির কাজ শেষ হয়েছে ১৩টি স্প্যানের। কাজ চলছে আরো ছয়টির। এ স্প্যানগুলো চীন থেকে শিগগিরই মাওয়া ঘাটে এসে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।

প্রাক্কলন অনুযায়ী, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২-এর নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ। মূল সেতুর নির্মাণ ও নদী শাসনকাজের পরামর্শক তত্ত্বাবধানের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৭৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত নদী শাসনের কাজ শেষ হয়েছে ৪৫ শতাংশ। জানতে চাইলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে সেতুর ওপর আরো একাধিক স্প্যান বসবে। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রাক্কলিত মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি নভেম্বর মাসেই। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ। স্বভাবতই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রকল্পের মেয়াদ কতদিন বাড়ানো হতে পারে, তা জানতে চাওয়া হয় সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের কাছে। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

  • Courtesy: Banikbarta/ Nov 19, 2018