Search

Monday, December 17, 2018

অভিযোগ পেলেই শুধু আশ্বাস ইসির

  • এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 
  • তদন্তের আশ্বাসের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ইসি। 
  • হামলা-সংঘাতের ঘটনা বাড়ছে। 
  • ড. কামালের গাড়িবহরে হামলায় মামলা। 
  • সিইসির মতে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।



একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে হামলা–সংঘাতের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন ঘটনায় ‘বিব্রত’ ‘দুঃখ প্রকাশ’ আর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় গতকাল রোববার রাজধানীর দারুস সালাম থানায় মামলা করেছেন ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক। মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৪ নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও ১০ ডিসেম্বর প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে ক্রমে হামলা–সংঘাতের ঘটনা বাড়ছে। এখন পর্যন্ত শতাধিক জায়গায় প্রচারে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হামলার শিকার হচ্ছেন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী–সমর্থকেরা।

গতকাল ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক কামাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, হামলার ঘটনা চলতে থাকলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। তাই এখনই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আর এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ইসিকেই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

এবার নির্বাচনী সংঘাতে এখন পর্যন্ত দুজনের প্রাণহানি হয়েছে। দুজনেই আওয়ামী লীগের। অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আফরোজা আব্বাস, মাহবুব উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবু সাইয়িদের প্রচারে হামলা হয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে হামলার মুখে পড়ে ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরও। প্রায় প্রতিদিনই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি তাদের প্রার্থীদের প্রচারে হামলা-বাধা ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে ইসিতে লিখিতভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করছে। গণতান্ত্রিক বাম জোটও ঢাকা ১২,১৩, ১৪, পটুয়াখালী-৪, কুষ্টিয়া-৩, সাতক্ষীরা-১ আসনে প্রচারে বিভিন্নভাবে বাধার দেওয়া হচ্ছে বলে ইসিতে অভিযোগ দিয়েছে।

ইসি বলছে, নির্বাচন–পূর্ব অনিয়ম ঠেকাতে সংসদীয় আসনভিত্তিক যুগ্ম জেলা জজ ও সহকারী জজের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচনী তদন্ত কমিটি (ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি) এবং নির্বাহী হাকিমেরা কাজ করছেন। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইসি এ আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

নির্বাচন আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতিপক্ষের সভা, শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে বাধা দেওয়া যাবে না। আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান আছে।

কেউ নির্বাচন কমিশনে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করলে বা কোনো তথ্যের ভিত্তিতে বা অন্য কোনোভাবে ইসি নির্বাচন–পূর্ব অনিয়মের অভিযোগ পেলে তা নির্বাচনী তদন্ত কমিটিতে পাঠাতে পারে অথবা তাৎক্ষণিকভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু ইসি শুধু নজর দিচ্ছে নির্বাচনী তদন্ত কমিটির দিকে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী যুগ্ম জেলা জজ ও সহকারী জজের সমন্বয়ে গত ২৫ নভেম্বর ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সংসদীয় আসনভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসব কমিটিকে। কমিটি কারও অভিযোগের ভিত্তিতে বা নিজ উদ্যোগে নির্বাচনী অনিয়ম বা ঘটনা তদন্ত করতে পারবে। নির্বাচন শেষ হওয়ার আগেই তদন্ত শেষ করতে হবে। তদন্ত শেষ করার তিন দিনের মধ্যে তারা সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে দেবে। কমিশন সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, কয়েকটি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি অভিযোগ যাচাই করে সত্যতা পায়নি। তবে কোন কোন এলাকার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি, তা সচিব স্পষ্ট করেননি।

হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী গতকাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, এসব ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে নির্বাচন কমিশন। কারণ, সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পুলিশকে এ নিয়ে কড়া নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, দু-এক জায়গায় কিছু বদলিও করা হয়েছে।

গত শনিবার সিইসিও নির্বাচনী তদন্ত কমিটির কথা বলেছিলেন। তবে তিনি স্বীকার করেছিলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেতে একটু সময় লেগে যায়। এ ধরনের ঘটনা প্রতিহত করতে তাঁরা পুলিশকে চিঠি দেবেন। 

কামাল হোসেনের গাড়ি বহরে হামলায় মামলা

কামাল হোসেনের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় গতকাল মামলা হয়েছে। দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. যোবায়ের মামলাটির তদন্ত করছেন। জানতে চাইলে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ কাজ শুরু করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

মামলার বাদী ঢাকা–১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক। এজাহারে তিনি লিখেছেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বের হওয়ার সময় কামাল হোসেন ও অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের ওপর আকস্মিক হামলা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে রাম দা, ছুরি, চাকু, লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটাসহ শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রনি, শাহ আলী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুল ইসলাম শুভ, দারুস সালাম থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মো. ইসলাম, মো. বাদল, মো. জুয়েল, শেখ ফারুক (টোকাই ফারুক), ১২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো সোহেল, দারুস সালাম থানা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ রাজন, সদস্য নাবিল খান, শাহ আলী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জাকির ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত ও সদস্য শাওন এ হামলা চালান।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনের আগে এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার দায়িত্ব ইসির। নির্বাচনের সময় পুলিশও নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কিন্তু সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় ইসি গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে। এভাবে চললে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ থাকবে না, কোথাও কোথাও নির্বাচন ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

সত্য আড়াল না করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

সম্পাদকীয়

সিইসির কথা ও কাজ

যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির প্রার্থীদের ওপর উপর্যুপরি হামলা চলছে, সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের আক্রমণে আহত হয়ে তাঁদের কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার মুখে শোনা গেল, ‘নির্বাচনে ইতিমধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে, প্রার্থীরা ইচ্ছামাফিক প্রচার চালাতে পারছেন।’ তিনি যেদিন (শনিবার) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ইসির কৃতিত্বের বয়ান করছিলেন, সেদিনই বিরোধী দলের ১২ জন প্রার্থীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া প্রার্থীর গাড়িবহরে হামলা, তাঁদের প্রচারে বাধা দেওয়ার ঘটনা প্রতিদিন ঘটে চলেছে। তাঁর এই উক্তি আক্রান্ত মানুষগুলোর প্রতি মশকরা ছাড়া কিছু নয়।

পত্রিকার খবর থেকে আরও জানা যায়, বিরোধী দলের প্রার্থীরা শুধু সরকারি দলের হাতেই লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছেন না; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাঁদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। কুমিল্লার একটি আসনের প্রার্থীসহ স্থানীয় তিন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাশকতার মামলায়। এ অবস্থায় সেখানে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে প্রচারকাজ চালানো অসম্ভব। ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী আহসানউল্লাহর স্ত্রী রিনা হাসান নারী কর্মীদের নিয়ে প্রচারে বের হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাঁকেই বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তাদের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আছে। নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের শত শত মামলার দোহাই দিয়ে বিরোধী দলের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অথচ সিইসি ও তাঁর সহযোগীদের মুখে শুনছি, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে।’ এসবই কি তঁাদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নমুনা?

তফসিল ঘোষণার পর সিইসি বলেছিলেন, এখন থেকে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশমতো কাজ করছে। সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর এই যে দমন–পীড়ন ও হামলা চলছে, তার দায়ও তাঁকে এবং কমিশনকে নিতে হবে। নাশকতার মামলাগুলোর চালচিত্র সিইসির জানা না থাকলেও দেশবাসীর জানা আছে। কোথাও কোনো ঘটনা ঘটলে পুলিশ কিছু লোকের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অন্যদের অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে মামলা করে। এরপর সেই অজ্ঞাত নামের স্থলে যার খুশি তার নাম বসিয়ে দেয়। বিরোধী দলের অনেক প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের এভাবেই হয়রানি করা হচ্ছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নেওয়ায় জনমনে নির্বাচন নিয়ে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছিল, তা পর্যায়ক্রমে ক্ষীণ হতে শুরু করেছে। সরকারি দলের লোকজন নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেও বিরোধী পক্ষ অনেক ক্ষেত্রে মাঠেই নামতে পারছে না। একে আর যা–ই হোক স্বাভাবিক নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি বলা যায় না। সরকারি দল আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চললেও ইসি কিছু বলছে না।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে সিইসি ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সেসব কমিটি কাজ করছে কি না, করলেও কীভাবে করছে, সেই হিসাব কি তঁারা নিয়েছেন? যেখানে সিইসির বক্তব্যে আমরা আচরণবিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি আশা করেছিলাম, সেখানে তাঁর বক্তব্যে অপরাধীরা আশকারা পেয়ে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচনের সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে বাস্তবতা কী তা সবাই দেখতে পাচ্ছে, সত্য আড়াল করার চেষ্টা কোনো ফল দেবে না। নির্বাচনের মাত্র ১৩ দিন বাকি আছে। এখনই বিরোধী দলের ওপর হামলা, মামলা ও প্রচারকাজে বাধা দেওয়ার ঘটনাগুলো কঠোর হাতে বন্ধ করুন।

কিছু লজ্জা আছে, যা তৈরি হয় হাতে গোনা কিছু ব্যক্তির নির্লজ্জ লালসার কারণে, কিন্তু মাথা হেঁট হয় গোটা জাতির। অবশ্য জাতির মাথা হেঁট হওয়া নিয়ে তাদের আদৌ মাথাব্যথা আছে কি না, তা অবশ্য এক বড় প্রশ্ন। ক্ষমতা ও অর্থ লোপাটের লোভ তাঁদের লজ্জাবোধের ওপর নির্লজ্জতার পর্দা টেনে দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মতো পবিত্র বিষয়ও সেই পর্দাকে ছিন্ন করতে পারছে না।

মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বন্ধুপ্রতিম বিদেশি ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে দেওয়া সম্মাননার ক্রেস্ট জালিয়াতি নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। সম্মাননা পদকের সোনার ১৬ আনার ১২ আনাই ফাঁকি ছিল। এই ফাঁকির মধ্য দিয়ে প্রায় ৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা লুটপাট হয়েছে। যথারীতি তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত হয়েছে। তদন্ত করতে গিয়ে আরও কিছু টাকাপয়সা খরচ হয়েছে। শেষমেশ কাউকে কোনো দণ্ড ভোগ করতে হয়নি।

অন্যায়ের প্রতিকার না করলে তার পুনরাবৃত্তি যে অনিবার্য তা অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণে দুর্নীতির খবরে আবার প্রমাণিত হলো। খবরে জানা যাচ্ছে, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি করে একতলা পাকা ভবন বানিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। এর সঙ্গে গরু, হাঁস, মুরগি পালনের জন্য পৃথক শেড থাকছে। সেই সঙ্গে থাকছে একটি করে নলকূপ। এই বাড়ির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বীর নিবাস’।

দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় এ রকম ২ হাজার ৯৭১টি ‘বীর নিবাস’ বানিয়ে দেওয়ার কথা। ৮৫৫টি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ১ হাজার ৭৪টি ইউনিটের কাজ চলছে। এ ছাড়া ২৭৩টির দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একেকটি ভবন নির্মাণে খরচ হয়েছে আট থেকে দশ লাখ টাকা।

এত টাকা খরচ করে যে ‘বীর নিবাসগুলো’ ইতিমধ্যেই বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বছর না পেরোতেই তার নানা স্থানে ফাটল ধরেছে। যাঁরা বীর নিবাসে উঠেছিলেন, তাঁরা এখন ছাদ ধসে মারা পড়ার আতঙ্কে আছেন। অনেক ভবনেই পলেস্তারা খসে পড়েছে।

নিম্নমানের কাঠ ব্যবহার করায় জানালা খুলে পড়ছে। অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ক্রেস্টের সোনার বদলে যেভাবে তামা–দস্তা চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, একইভাবে এখানেও ইট–বালু–সিমেন্টের সঙ্গে ভেজাল নির্মাণসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আরও ভয়ানক কথা হলো অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যাঁদের বাড়ি করে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশ মোটেও অসচ্ছল নয়। প্রভাব খাটিয়ে নিজের বাড়িতে সরকারি টাকায় এই ভবন বানিয়ে তাঁরা ভাড়া দিয়েছেন।

সাধারণ অবকাঠামো এবং রাস্তাঘাট নির্মাণে ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর যোগসাজশে দুর্নীতি হয়। জাতি এটিকে দুর্ভাগ্য হিসেবে প্রায় মেনেই নিয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ গোটা দেশবাসীর আবেগের জায়গা। তঁাদের নামে বরাদ্দ করা ভবন নির্মাণেও যদি এভাবে দুর্নীতি হয়, তবে আমাদের আর থাকে কী!
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮

US to send observers to Bangladesh election amid opposition concerns


The United States will send 12 teams of observers and fund thousands of domestic observers to monitor an election in Bangladesh it hopes will be free and fair, a senior official at the US Embassy in Dhaka said.

Amid opposition concerns about rigging in the December 30 general election, there has been speculation about US plans for it, especially after the European Union this week said it would not send observers, nor comment on the vote or result.

Prime Minister Sheikh Hasina is seeking a third straight term.

Her old rival, Khaleda Zia, who leads the main opposition Bangladesh Nationalist Party, is in jail after being convicted on charges she says were politically motivated. Scores of BNP workers have also been detained.

The BNP boycotted the last election, in 2014, as unfair, but has said it will take part this time, though it is seeking international monitors of polls it says it believes will be flawed.

The United States is sending a dozen teams, each of about two observers, who will fan out to most parts of the country, William Moeller, political officer at the US embassy in Dhaka, told Reuters.

“The Bangladesh government has emphasised that it plans to hold a free and fair election,” Moeller said this week.

“We welcome that and are providing funding for election observers who hope to see such an outcome.”

Moeller referred to reports of harassment and intimidation before recent city corporation elections, which he said may have suppressed voter turnout.

“We raised these concerns at the time, so we are hoping we won’t see the same issues in the national elections.”

The US National Democratic Institute said after an assessment in October the polls would be held “amid a high degree of political polarisation, heightened tensions and shrinking political space”.

The Bangkok-based Asian Network for Free Elections will send a team of about 30 short- and long-term observers, Moeller said.

About 15,000 Bangladeshi observers will be funded jointly by the US Agency for International Development, Britain’s Department for International Development and the Swiss government, he said.

The domestic observers would spread out but might not be able to reach every polling station, he said.

PLAYING DOWN WORRIES

Hasina and Khaleda have alternated in power over the last 28 years. Elections in Bangladesh are often violent and marred by ballot-stuffing and voter intimidation.

Hasina’s Awami League has held power since 2009 and dispensed from 2014 with a practice of letting a neutral caretaker government oversee elections, to the anger of the BNP.

The government has brushed off opposition fears of rigging.

“I don’t see any possibility this time, because all the parties are participating, and all of them will have their election agents,” said HT Imam, a political adviser to Hasina.

Bangladesh has seen steady economic growth under Hasina and the development of a vibrant garment sector under-pinning export growth, and accounting for 80 percent of the economy.

But rights groups have criticised increasing curbs on freedom of speech and the media.

Hope to capitalise on dissatisfaction, the BNP has formed an alliance with smaller parties called the National Unity Front and Hasina said this week she expected competitive polls.

The EU delegation in Dhaka said it was not sending observers because of growing demand for them amid tight resources.

India had no plan to send observers unless Bangladesh asked, an official at the Indian High Commission said.

  • Courtesy: The Daily Star /Dec 17, 2018

Thursday, December 13, 2018

'Embarrassed, saddened' by polls violence

Says CEC as AL, BNP complain against each other; army likely to be deployed 5 days before polls

Mohiuddin Alamgir

Chief Election Commissioner KM Nurul Huda yesterday said the commission was “embarrassed and saddened” over election violence, including Tuesday's attack on the motorcade of BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir.
BNP leaders met the CEC and Inspector General of Police Mohammad Javed Patwary, demanding an end to attacks by “Awami League goons” and police harassment of their activists. 

Hours after their meeting with the CEC, ruling AL leaders went to Nurul Huda. They said the AL men were being targeted across the country in which at least two of their activists were killed in Tuesday's violence, second day of the electioneering.

Earlier in the day, the CEC at a programme said he was embarrassed as violence broke out during campaign for the December 30 polls.

Election Commissioner Rafiqul Islam told The Daily Star that election inquiry committees would look into the incidents.

“We will instruct the law enforcers to take steps in a meeting on Thursday [today] so that a conducive atmosphere prevails during campaign,” he said.

The EC is going to hold a meeting with top officials of law enforcement agencies to finalise the security plan, including deployment of army as a striking force during election, said officials.

“We have made a primary decision to deploy army as the striking force five days before the voting day,” Rafiqul added.   

'EC EMBARRASSED'

CEC Nurul Huda said the EC was deeply saddened and embarrassed over violence in Noakhali that left a man killed and the attack on Fakhrul's motorcade in Thakurgaon during campaigns.

He was briefing executive magistrates on their election duties at the Nirbachan Bhaban in the capital's Agargaon.

“The value of a person's life is much more precious than an election,” the CEC said.

“Don't create any obstacle to election campaign of any candidate,” he said, urging all political parties to show tolerance and abide by the electoral code of conduct.

The CEC also directed the magistrates to take steps to avoid any untoward incidents when they would perform their polls duties.

'STOP ATTACK ON BNP MEN'

In a letter to the CEC yesterday, BNP Vice-chairman Selima Rahman demanded that EC take measures to stop attacks by “AL goons” and police harassment of the BNP activists.

She alleged that law enforcers were harassing the BNP activists even after the allocation of electoral symbols.

The BNP candidates are not able to take part in electioneering as they are being attacked in different places across the country. “The situation reaches such a stage that we might not be able to appoint polling agents on the voting day,” she alleged while talking to reporters.

“We think the CEC is truly embarrassed because the EC cannot exercise its power.”

“If the CEC takes action, the election will be acceptable to all,” she added.

After meeting the CEC, the BNP delegation, led by Selima, met the IGP. During the meeting with the IGP, she alleged that the BNP was facing obstacles to electioneering.

She also sought security from police to conduct electioneering safely for the next 18 days. “Our leaders are being arrested. Those who are on bail are also being arrested in old cases.”

Selima said the police chief listened to their complaints with attention and assured her of ensuring security and safety of the campaigners in the future.

'AL MEN BEING TARGETED'

In the afternoon, HT Imam, co-chairman of AL election steering committee, alleged that the AL men were being targeted all over the country during electioneering and two of its leaders were killed on Tuesday.

A five-member delegation, led by him, went to the commission and urged it to take action against those involved in the violence.

“We have informed the commission that the main target of the violence centring the election is the Awami League men,” Imam, also Prime Minister Sheikh Hasina's political adviser, told journalists after the meeting.

He also alleged that BNP supporters also carried out attacks on AL supporters and vandalised their houses in Patuakhali, Phulpur in Mymensingh, Chuadanga, Narsingdi, Manikganj, Gagni in Meherpur, and Shahjadpur in Sirajganj.

Imam said the attack on Fakhrul's motorcade took place due to BNP's internal feud and no AL men were present there. 

The EC is neutral and taking an all-out effort to hold a free and fair election, he added.

  • Courtesy: The Daily Star/ Dec 13, 2018

বরাদ্দের এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পিএসসি

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দের মাত্র ১০ শতাংশ অর্থও খরচ করতে পারেনি। অবশ্য গতবার একই সময়ে ১৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের বরাদ্দের ১০ শতাংশ টাকাও খরচ করতে পারেনি। সেই তুলনায় এবার অবস্থা একটু ভালো। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এবার আসি এডিপি বাস্তবায়নে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের। এই তালিকায় শীর্ষে আছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সরকারি কর্মকমিশন। কোনো টাকাই খরচ করতে পারেনি তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি প্রকল্পে ১২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। তবে এখন পর্যন্ত এক টাকাও খরচ করতে পারেননি এই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। অন্যদিকে সরকারি কর্মকমিশনের একটি প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও কোনো টাকা খরচ হয়নি।

আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, বরাদ্দের ১০ শতাংশের কম টাকা খরচ করেছে, এমন অন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো রেলপথ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আইএমইডির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবারের এডিপিতে ১ হাজার ৫০৭টি প্রকল্প আছে। এর মধ্যে ১৯৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওই ১১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

অথচ চলতি অর্থবছরের শুরুতেই পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে একাধিক সভা করে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন। নির্বাচনের বছরে যেন কাজ আটকে না থাকে, সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। এমনকি কোনো প্রকল্পে টাকা খরচ করতে না পারলে বরাদ্দের টাকা যেন অন্য প্রকল্পে খরচ করা হয়, এমনও নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। গত রোববার সংবাদ সম্মেলনেও পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বছরের শুরু থেকে এডিপি বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও মাঠের অবস্থায় তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। ফলে এডিপির বাস্তবায়ন গতানুগতিকভাবেই চলছে। আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সার্বিকভাবে এডিপির ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

কমিশনের স্বচ্ছতা ও দৃঢ়তা বজায় থাকুক

এম সাখাওয়াত হোসেন

আমার আগের নির্বাচন-সংক্রান্ত অনেক লেখায় বলেছি, ২০১৮ সালের নির্বাচন নানাবিধ কারণে বেশ জটিল হবে। নির্বাচনকালীন সরকার এবং সর্বোপরি যারা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে, সেই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। জটিলতার অনেক উদাহরণ ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান বিষয় বহুল আলোচিত নির্বাচনকালীন সরকার। কী হবে সেই সরকারের কাঠামো এবং তাদের কার্যপরিধিই–বা কেমন হবে? এসব প্রশ্নের কারণ উপমহাদেশের কোথাও সংসদ বহাল রেখে এবং অপরিবর্তিত মন্ত্রিসভা নিয়ে নির্বাচন হয় না। অন্যান্য দেশে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার এবং বিলুপ্তির পর চলতি সরকারের ছোট আকারে গঠিত সরকারের তত্ত্বাবধানেই সরকার পরিচালিত হয় এবং নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে।

ব্রিটেনে সংসদের মেয়াদ স্থির ছিল না, তবে ২০১১ সালে পাঁচ বছর অন্তর সংসদ শেষ দিনের মধ্যরাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং বিলুপ্তির ১৭ দিনের মাথায় পরবর্তী নির্বাচন হয়। কেবিনেট রানির কাছে পদত্যাগপত্র দিলে ওই সরকারকেই ছোট সরকার গঠন করে নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। ব্রিটেনে উল্লিখিত অ্যাক্টের সঙ্গেই নির্ধারিত তফসিল ঘোষিত রয়েছে, আলাদা করে তফসিল ঘোষণা করা হয় না; শুধু মধ্যবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়। ব্রিটেনে নির্বাচন কমিশন শুধু নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে এবং ফলাফলও ঘোষিত হয় সেখান থেকেই।

উপমহাদেশে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনগুলোই সম্পূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে। এই সব নিয়োগের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রিটার্নিং কর্মকর্তা (আরও)। উপমহাদেশের দেশগুলোতে ক্ষেত্রবিশেষে নিজস্ব অথবা বেসামরিক প্রশাসন এবং কয়েকটি দেশে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এই উপমহাদেশে শুধু বাংলাদেশেই নির্বাচন কমিশন, যার বিশাল কর্মী বাহিনী রয়েছে এবং এখন উপজেলা পর্যন্ত রয়েছে বিশেষায়িত নিজস্ব অফিস। তা ছাড়া, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় অ্যাক্ট ২০০৯-এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন কাঠামোগত, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এবং বাজেটের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন, যা অনেক নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারবহির্ভূত। কাজেই বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন আক্ষরিক অর্থে স্বাধীন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্থা। সংবিধানের ধারা ১১৯-এর মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

উল্লিখিত সাংবিধানিক ধারা এবং অন্যান্য ধারাবলেও জনপ্রতিনিধিত্ব অাদেশের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকালে মাঠপর্যায় থেকে সরকার পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা; বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা থেকে ভোটকেন্দ্রের সাধারণ আনসার পর্যন্ত।ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে। মূলত ডেপুটি কমিশনারদের (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; যে ব্যবস্থা স্বাধীনতার আগে থেকে বহাল রয়েছে। বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা আগের তুলনায় বেশ জটিল। যার কারণে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষে অনেকগুলো নির্বাচনী আসন এবং বহু প্রার্থীকে সমানভাবে নিরীক্ষণ ও তদারকি করতে হিমশিম খেতে হয়। উপমহাদেশের অন্যান্য দেশে প্রতিটি সংসদীয় আসনের জন্য একজন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হয়। ভারত ছাড়া পাকিস্তান ও নেপালে জেলার বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদেরই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে পাকিস্তানে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদেরও নিয়োগ দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অাদেশ ১৯৭২ ধারা ৭ (১)-এ প্রতি সংসদীয় আসনের জন্য একজন অথবা দুটির অধিক আসনের জন্য একজনের নিয়োগের উল্লেখ রয়েছে। কাজেই একটি জেলায় একাধিক অথবা প্রতিটি আসনে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিধান থাকলেও স্বাধীনতার পর থেকে এ ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়নি; এমনকি নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব প্রশিক্ষিত লোকবল থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে নিয়োজিত হয়নি। অবশ্য ২০০৮ সালের পর উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা নিয়োগ শুরু হয়।

এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তা অতীতের যেকোনো নির্বাচন থেকে (১৯৯১-২০১৪) ভিন্ন। সংসদ বহাল অবস্থায় অত্যন্ত শক্তিশালী সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিশেষ করে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সম্পাদন করতে হচ্ছে। এর কিছু প্রতিফলন দেখা গেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক রেকর্ড পরিমাণ প্রার্থী বাতিলের মধ্য দিয়ে। এতসংখ্যক প্রার্থী বাতিলের যে মেরুকরণ দৃশ্যমান হয়েছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলের বিদ্রোহী, স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বিএনপির প্রার্থী। প্রাথমিক বাছাইয়ে এ চিত্র ফুটে ওঠায় নির্বাচনী পরিবেশ বাদানুবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এবং এর চাপ পড়েছিল খোদ নির্বাচন কমিশনের ওপর। কারণ, একমাত্র বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনই (উপমহাদেশে) আপিল আদালত হিসেবে আপিল গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করার আইনগত ক্ষমতা রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশনে ৫৪৩ জন প্রার্থী বাতিলের এবং গ্রহণের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। তিন দিন বিরামহীন শুনানির পর গৃহীত সিদ্ধান্তে ২৪৩ জনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনকে তিন দিনের শুনানিতে ৫৪৩টি আপিলের নিষ্পত্তি করতে হয়েছে, তার মানে প্রতিদিন গড়পড়তা ১৮১টি আপিল শুনতে হয়েছে, যার জন্য শুধু ধৈর্যেরই নয়, একাগ্রতার প্রয়োজন রয়েছে। তা ছাড়া, বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যে কাজটি সহজ ছিল না। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে এবং ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকারী। তবে এই পরিস্থিতির জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদাসীনতা এবং আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও সিদ্ধান্তহীনতা দায়ী। যেসব কারণে মনোনয়ন বাতিল হয়েছে বলে প্রকাশ, তার অনেকটাই আরপিও-১৯৭২-এর ধারা ১৪ (১) (ডি) (ii)এর পরিপন্থী বলে মনে করা যায়। ধারাটি হয় রিটার্নিং কর্মকর্তারা সঠিক প্রয়োগ করেননি, অথবা একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

উল্লিখিত ধারাটিতে উল্লেখ রয়েছে যে, যেসব ত্রুটি মনোনয়নপত্রে মূলগত (Substantial) পরিবর্তন আনবে না এবং যা তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধনযোগ্য, ওই সব কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল না করা। কিন্তু পত্রিকা পর্যালোচনায় দেখা যায় যে এ ধরনের ভুলের জন্য প্রচুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিল; যার কারণে বাড়তি চাপ পড়েছে নির্বাচন কমিশনের ওপর। তবে দু-একটি ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত সঠিক মনে হলেও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। তবে এমন ধরনের গ্রহণের কারণ কী, তার ব্যাখ্যা নির্বাচন কমিশনই দিতে পারবে।

যা হোক এতসংখ্যক মনোনয়নপত্র বাতিল এবং বৈধতা পাওয়ার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড একদিকে মাঠপর্যায়ের সামঞ্জস্যহীনতার পরিচয়, তেমনি আইনের স্পষ্টীকরণের অভাব মনে হয়। কমিশন এসব বাতিল এবং পরে এতসংখ্যক বৈধতার রিটার্নিং কর্মকর্তা পর্যায়ের কারণগুলো খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে এ কারণে যে, এসব বাতিল করা মনোনয়ন, যা নির্বাচন কমিশনে বৈধতা পেয়েছে। যেগুলোর পেছনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অনভিজ্ঞতা, খামখেয়ালি অথবা অন্য কোনো অজ্ঞাত কারণ রয়েছে কি না। খামখেয়ালি অথবা অন্য কোনো অজ্ঞাত কারণ থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

নির্বাচন কমিশন অবশ্য শুনানি এবং কার্যকরভাবে সিদ্ধান্তসহ নিষ্পত্তি যেভাবে করেছে, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করা যায়, নির্বাচন কমিশন তাদের ক্ষমতার সঠিক প্রয়োগ করে সুষ্ঠুভাবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করবে। এতটুকুই জাতি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে।

  • ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কলাম লেখক
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

পুলিশের ব্যর্থতা ইসির কাঁধেই বর্তাবে

সম্পাদকীয়

নির্বাচনী প্রচারণা ও সহিংসতা


নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই অন্তত ১৮ জেলায় সহিংসতা দেখা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা, মওদুদ আহমদ ও মঈন খানের এলাকায় প্রচারকর্মে বাধা, বগুড়ায় যুবদল কর্মীর বাড়িতে আগুন, হামলাসহ কিছু স্থানে সংঘর্ষ-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিয়োগান্ত ঘটনা ঘটল নোয়াখালী ও ফরিদপুরে। ঝরল যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীর দুটো তাজা প্রাণ।

প্রায় প্রতিটি ঘটনায় পাল্টাপাল্টি দোষারোপের ঘটনা লক্ষ করা গেছে। এমনকি বিএনপির মহাসচিবের শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রায় হামলার পরে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মীরা ‘সস্তা ভাবাবেগ’ নিতে বিএনপিই হামলা করেছে বলেও দাবি করেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ওসি আশ্বস্ত করেছেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, ঘটনার তদন্ত হবে। কিন্তু সার্বিক বিচারে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ এবং ত্বরিত হস্তক্ষেপের অনুপস্থিতি আমাদের পীড়িত ও বিচলিত করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যথিত ও বিব্রত হয়েছেন মর্মে যে মন্তব্য করেছেন, তা যথেষ্ট নয়। পুলিশের ব্যর্থতা এখন ইসির কাঁধেই বেশি বর্তাবে। ইসিকে দেখাতে হবে, তারা পুলিশকে সঠিক নির্দেশনা দিয়েছে।   

আর সহিংসতা বিস্তারের দায়দায়িত্ব অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিতে হবে। এ রকম হামলার জন্য কারা দায়ী, তা নিয়ে যেহেতু পরস্পরবিরোধী অভিযোগ রয়েছে, তাই পুলিশ পক্ষপাতমুক্তভাবে কী বলে এবং কী করে, সেটাই হবে সবার দেখার বিষয়। ৩০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে ছোটখাটো সহিংসতাকেও অত্যন্ত গুরুত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত হবে। বড় ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার আশঙ্কা নিয়ে গতকাল বুধবার কারওয়ান বাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী দক্ষ, তাদের কাছে কোনো চ্যালেঞ্জই চ্যালেঞ্জ নয়। তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৈরি।’ কিন্তু এটুকু আমাদের আশ্বস্ত করে না। ঐতিহ্য অনুযায়ী কিছু বিক্ষিপ্ত সহিংসতা ঘটেই থাকে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই খোদ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা চালানোর বিষয়টি কিন্তু সাধারণ ঘটনা নয়।

আমরা আশা করব, এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তা অবিলম্বে চিহ্নিত করা, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা হলে পুলিশের পক্ষে তার যথা ভূমিকা পালন করার শর্ত পূরণ করা হবে। নির্বাচনকালে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আধা সামরিক এবং এলিট ফোর্স নিয়োগ করা হবে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি একান্তভাবেই পুলিশকেই দায়িত্ব নিতে হবে।   

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব পক্ষ মাঠ সমতল করার ধারণা সমর্থন করে। এ বিষয়ে পুলিশের যে হাতটি রয়েছে, সেটি যে পরিচ্ছন্ন, তাদেরই তা নিশ্চিত করতে হবে। অবশ্য ক্ষমতাসীন দলকেও তা চাইতে হবে। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে, মন্ত্রিসভার সদস্যরা শুধু নিরাপত্তা পাবেন, প্রটোকল পাবেন না। এত দিন পুলিশের একটি বড় অংশ প্রটোকল রক্ষায় নিয়োজিত ছিল। এই প্রটোকলের কারণে পুলিশ অনেক জরুরি বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না বলে আমরা নানা সময় শুনেছি। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন, এ সময় প্রচারণার স্থানগুলোর নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। প্রচলিত আইন এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি দাবি করে যে, দেশের প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের, তাঁদের সভা–সমাবেশ ও যাতায়াতের ক্ষেত্রেও যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরের ওপর হামলার ঘটনাটিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একটি গুরুতর ঘাটতি হিসেবেই বিবেচিত হবে।অনেক সময় বলা হয়, মর্নিং শোজ দ্য ডে। নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই সহিংসতা তাই আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের আশঙ্কা অমূলক প্রতিপন্ন করাই হোক পুলিশের মূল দায়িত্ব।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

বিধি লঙ্ঘন রুখতে হবে

শাহদীন মালিক

১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টেলিভিশনের খবরে ঠাকুরগাঁও, বগুড়া ও অন্য আরেক জায়গায় গাড়িবহরে হামলার অভিযোগের কথা জানলাম। এক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার বক্তব্য ছিল অনেকটা এই গোছের, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। মনে হলো, ভাবখানা যেন তথ্যপ্রমাণ দিয়ে কেউ অভিযোগ করলে প্রাথমিক তদন্ত করা হবে, যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে, রিপোর্ট দেওয়া হবে, তারপর পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। ভাবলাম, এসব করতে করতে ৩০ ডিসেম্বর না পার হয়ে যায়।

মাস দুয়েক আগে বহু নাগরিকের মনে অংশীদারিমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে প্রচণ্ড সন্দেহ ছিল।

ঐক্যফ্রন্ট গঠন, প্রধানমন্ত্রীর সংলাপ এবং তাতে দলে দলে অংশগ্রহণ, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা হিসেবে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁর নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত এবং একই সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপিসহ অন্য অনেক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রত্যয়ে অংশীদারিমূলক নির্বাচন এখন নিশ্চিত হয়েছে। নির্বাচন হবে, জনগণ ভোট দিতেও যাবে। তবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করতে হবে।

সফল নির্বাচনের তিন বড় পক্ষ—সরকার, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশন। এই তিন পক্ষের মধ্যে প্রথম দুই পক্ষ তাদের দায়িত্বের বেশির ভাগই ইতিমধ্যে পালন করা শুরু করে দিয়েছে। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, এই মুহূর্ত থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তার বিরাট গুরুদায়িত্ব এখন নির্বাচন কমিশনের কাঁধে। এ সময়ে সবচেয়ে বড় বাধা আচরণবিধি লঙ্ঘন। এই বড় বাধাটা দূর করতে হবে এবং আচরণবিধি লঙ্ঘন কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। প্রথম রাতেই বিড়াল না মারলে সবকিছু ভন্ডুল হয়ে যেতে পারে।

সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এ সভা-সমিতি-অনুষ্ঠানসংক্রান্ত; পোস্টার ও লিফলেট; যানবাহন ব্যবহার; দেয়াল লিখন; উসকানিমূলক বক্তব্য; মাইকের ব্যবহার; প্রচারণার সময়; নির্বাচনী ব্যয়সীমা ইত্যাদি সংক্রান্ত নিয়মকানুন এবং বিভিন্ন বাধানিষেধ স্পষ্টভাবে বলা আছে। সবাই এগুলো মেনে চললেই নির্বাচনটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। এই বিধিমালার ১৭ ধারায় বলা আছে, এসব বাধানিষেধ লঙ্ঘন বা অমান্য করলে তা হবে নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম। এই বিধিতেই বলা আছে যে নির্বাচন কমিশন ‘কোন তথ্যের ভিত্তিতে বা অন্য কোনভাবে কমিশনের নিকট কোন নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হইলে, কমিশন...’ এসব বিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন। স্পষ্টতই লিখিত অভিযোগের জন্য নির্বাচন কমিশনের বসে থাকলে চলবে না। দেশের বেশ কয়েকটি নিউজ চ্যানেল ও পত্রপত্রিকাসহ অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে একই লঙ্ঘনের খবর পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশন তার ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নিতে পারে।

দিন দশেক আগে, ‘আচরণবিধি বেড়াতে গেছে’ শিরোনামে প্রথম আলোয় যা লিখেছিলাম, তার কিছুটা হলেও পুনরাবৃত্তি হয়তো হবে, তবু বলব, আচরণ-বিধিমালা প্রচার করতে হবে। বিধিমালা লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে দুজন করে বিচারকের সমন্বয়ে যে ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তার তালিকা জনগণকে জানাতে হবে। সবাই জানবে, কোন এলাকার বিধিমালা লঙ্ঘনের জন্য কার কাছে যেতে হবে।

বিধিমালার লঙ্ঘন রুখতে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে, লঙ্ঘনের শাস্তি ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড। শাস্তিটা কত বড়, সেটা কথা নয়। এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানাই হোক, শাস্তি যা-ই হোক না কেন, সেটা গৌণ। মুখ্য হলো, শাস্তির একটা ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে এবং সেটা তড়িৎ গতিতে।

খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটির নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে কয়েক দিন আগে খেদ প্রকাশ করেছিলেন। সেটাই যথেষ্ট নয়। তদন্ত কমিটিগুলোকে সক্রিয় হতে হবে। তদন্ত কমিটিগুলো অধস্তন আদালতের তুলনামূলকভাবে কম বয়োজ্যেষ্ঠ বিচারকদের নিয়ে গঠিত। প্রথাগত বিচারব্যবস্থা অনুসরণ করে, অর্থাৎ অভিযোগপত্র পাওয়া, অভিযোগকারী সাক্ষীসাবুত নিয়ে হাজির হলে তারপর লম্বা শুনানি, সবকিছু যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা করা, তারপর বিস্তারিত রায় লেখা—এই ঐতিহাসিক পথে চললে নির্বাচন বিপথে চলে যাবে। দেশের এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই কমিটিগুলোকে উদ্যমী ও উদ্যোগী হতে হবে। গাড়ির কাচ ভেঙেছে কি না, ইটপাটকেল পড়েছে কি না, সেটা দেখতে ও বুঝতে গভীর তদন্তের প্রয়োজন পড়ে না। এই বিচারকেরা বেশ কয়েক বছর বিচার করেছেন, এবারের বিচার গতিশীল ও ফলপ্রসূ হতে হবে। সময় বেঁধে দেওয়া আছে তিন দিন। এখানে মামলার জট হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়বে।

ড. শাহদীন মালিক: বাংলাদেশ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার আল্টিমেটাম

বিএফইউজে ও ডিইউজে’র বিক্ষোভ সমাবেশ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দেয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিএফইউজে ও ডিইউজে। ৫৪টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এ আল্টিমেটাম দেন। তারা বলেন, সম্প্রতি ৫৪টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করা হয়েছে। এর আগে আমার দেশ পত্রিকা, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ানসহ অনেক মিডিয়া বন্ধ করা হয়েছে। আমরা এসব বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের দাবি না মানলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএফইউজে মহাসচিব এম. আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম, বিএফইউজে সহ-সভাপতি নূরুল আমিন রোকন ও মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহসভাপতি শাহীন হাসনাত, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য সাদ বিন রাবী, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন-ক্র্যাবের সভাপতি সালেহ আকন বক্তব্য দেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি মিছিল তোপখানা রোড প্রদক্ষিণ করে।

রুহুল আমিন গাজী বলেন, ভোটারবিহীন সরকার তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই ৫৪টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করেছে। এছাড়া এর আগেও আমার দেশ পত্রিকা, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ানসহ অসংখ্য মিডিয়া সরকার বন্ধ করেছে। এর ফলে হাজার হাজার সাংবাদিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছে। পাশাপাশি সাংবাদিক সমাজসহ দেশের মানুষের বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। এ সরকার গণমাধ্যমবিরোধী। এই সরকারের বিদায় ছাড়া স্বাধীন গণমাধ্যম সম্ভব নয়। এম আবদুল্লাহ বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় আসলেই আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হয়। সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার জন্য আমরা দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ আন্দোলন সংগ্রাম করছি। কিন্তু সরকার কোনো কর্ণপাত করছে না। একের পর এক মিডিয়া বন্ধ করে বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। বর্তমানে মনে হয় আমরা পুলিশি রাষ্ট্রে বসবাস করছি। পুলিশ একটি তালিকা পাঠাবে আর মিডিয়া বন্ধ হয়ে যাবে- তা মেনে নেয়া যায় না। কাদের গনি চৌধুরী বলেন, একের পর এক মিডিয়া বন্ধ করে সরকার ফ্যাসিবাদের পরিচয় দিচ্ছে। সরকারের অপকর্ম যেনো প্রকাশ না করতে পারে এজন্যই ৫৪টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ করেছে। আমরা অবিলম্বে সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া জোর দাবি জানাচ্ছি। ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করছে। শহীদুল ইসলাম বলেন, কেউ যেন সরকারের সমালোচনা করতে না পারে এজন্য বেছে বেছে মিডিয়া বন্ধ করছে। এরই অংশ হিসেবে ৫৪টি মিডিয়া বন্ধ করেছে। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতেই সরকার বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। অবিলম্বে বন্ধ সব মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আজ বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সকাল সাড়ে ১০টায় নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে এ বৈঠক শুরু হবে। বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার এবং  জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সংসদ নির্বাচনে ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় সাধারণ এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকা এবং উপকূলীয়, দুর্গম ও পার্বত্য এলাকার ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। দশম জাতীয় নির্বাচনের আদলে এবারো আইনশৃঙ্খলায় থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তা ছক। জানা গেছে, ভোটকেন্দ্র পাহারার ক্ষেত্রে সাধারণ কেন্দ্রে একজন পুলিশসহ ১৪ জন, মেট্রোপলিটন এলাকার কেন্দ্রে তিনজন পুলিশসহ ১৫ জন এবং দুর্গম ও উপকূলীয় এলাকার কেন্দ্রে দুইজন পুলিশসহ ১৪ জন রাখার বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা রেখেছে ইসি। 

তবে, ভোটকেন্দ্র সুরক্ষিত রাখতে বাইরে থাকবে সামরিক-আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এর মধ্যে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা।

আর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবে। কিন্তু কেন্দ্রে প্রবেশে অনুমতি লাগবে রিটার্নিং অথবা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার। এ ছাড়া নির্বাচনের বিধি-ভঙ্গ, প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য, চরিত্রহননের অপচেষ্টা প্রতিরোধে মাঠে থাকবে নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। এবার সব মিলিয়ে প্রায় ৭ লাখের কাছাকাছি মোতায়েন হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এসব বাহিনী ৩০০ সংসদীয় আসনের ৪০ হাজার ১৮০টি কেন্দ্র পাহারা ও ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটারের নির্বিঘ্নে ভোটদানে সহায়তা দিতে কাজ করবে। কমিশনের যুগ্ম সচিব খন্দকার মিজানুর রহমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ বেশি হলেও ভিআইপি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, থানা-প্রশাসন শূন্য করে সব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে এ কাজে যুক্ত করা যাবে না। বৈঠকে, কীভাবে ফোর্স মোতায়েন হলে সব কূল বজায় থাকবে সেটিও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। 

সূত্রমতে, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোট গ্রহণের আগে ও পরে ভিন্ন মেয়াদের জন্য সেনা, র‌্যাব ও পুলিশসহ অন্য বাহিনী মোতায়েন করতে যাচ্ছে ইসি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ২৪শে ডিসেম্বর মাঠে নামবেন। ২রা জানুয়ারি পর্যন্ত তারা নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন। বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিম হিসেবে ২৬শে ডিসেম্বর থেকে ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। ২৯শে ডিসেম্বর ৩০০ আসনে সব মিলে ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নামবেন। তারা ভোটের পর দুই দিনসহ সবমিলে চারদিন মাঠে থাকবেন।

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনেও একইভাবে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করেছিল ইসি। তবে ২০০৮ সালে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮