Search

Wednesday, January 2, 2019

স্বাধীনতা নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতিত - কাদের সিদ্দিকী


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন,লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আবার নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতিত হলো। ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন লোভ দেশ এবং দেশের মানুষকে আজকের অবস্থায় এনে ফেলেছে।

 ৩০শে ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা যে নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা এ জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। আজ রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিলো। ফলে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবং অন্যরাও খুবই নগণ্য ভোটে নির্বাচিত হয়, যা ছিলো ন্যায় ও সত্যের বিচারে অবৈধ। 

তিনি বলেন, এ বছর নানান টানাপোড়েন থাকলেও দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান এবং ন্যুনতম নীতি-নৈতিকতাকে পদদলিত করে এই নির্বাচনকে স¤পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছে। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে বিরোধীদলের দাবি দাওয়া ও প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার স্বার্থে আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু সমস্ত আইনকানুন ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা ও পুলিশি হয়রানী করে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল  দেয়ার সব রকমের অপচেষ্টা করা হলেও নির্বাচনী মাঠে থাকার ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। পদে পদে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ভয়ভীতি, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে আমাদের কর্মী সমর্থকেরা মাটি কামড়ে নির্বাচনী মাঠে থাকার চেষ্টা করেছে। 

বঙ্গবীর বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাধা, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী পোষ্টার ছিঁড়ে ও পুড়িয়ে ফেলাসহ এহেন কোন কাজ নেই যা সরকারী দল করেনি। জনগণ আশা করেছিল সেনাবাহিনী নামার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে, কিন্তু তার উল্টো হয়েছে। 

তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতে সকল কেন্দ্রে  সরকার দলীয় কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলেমিশে প্রতি কেন্দ্রে অর্ধেক ভোট কোন কোন কেন্দ্রে তার চেয়েও বেশি নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভরে রাখে। যে কারণে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ায় বেলা ১০-১১টার পর কোন ভোটার ভোট দিতে পারেননি, কারণ তাদের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে। অন্যদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সরকারী দলের ক্যাডারের ভূমিকা পালন করে। সবকিছু মিলিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভোটের মৃত্যু ঘটায়, যা কোন গণতান্ত্রিক দেশে সংগঠিত হওয়া অসম্ভব। মানুষের ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে দেশের মানুষের যে ঘৃনা আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু কন্যা অর্জন করলেন তা দেখে আমরা মর্মাহত এবং আতঙ্কিত। 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, যখন স্বাভাবিক পরিবর্তনের পথ রুদ্ধ হয়, তখনই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে, যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। দেশের ও মানুষের স্বার্থে এই নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবানও জানান তিনি। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানুয়ারী ২,২০১৯ 

গভর্নমেন্ট অব দি বিজিবি বাই দি র‌্যাব এবং ফর দি পুলিশ‌


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মিথ্যা জয়ের জন্য ভোট জালিয়াতি করতে পানির মতো টাকা খরচ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে। তারাই একতরফা নির্বাচনের মূখ্য উপাদান হিসাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে আর গণতন্ত্রের গৌরবোজ্জ্বল যুগ সৃষ্টি হলো না। শেখ হাসিনার দল মানুষের ভোটে জিতেনি, তার দল জিতেছে গায়েবি ভোটে।’

তিনি বলেন, ‘এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে নতুন গভর্নমেন্ট তৈরি হবে তা হবে গভর্নমেন্ট অব দি বিজিবি বাই দি র‌্যাব এবং ফর দি পুলিশ। এই মহাডাকাতি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে এরা ক্রমান্বয়ে উপহাস করছে। আওয়ামী নেতারা এখন গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের চাপাবাজী ও গলাবাজীর জোরে ভোট নিয়ে মহা-জালিয়াতির ঘটনা আড়াল করতে চাচ্ছে, কিন্তু দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে চোখে কিছুই এড়িয়ে যায়নি।’

বুধবার, ২ জানুয়ারি দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনের পূর্ণপাঠ নিচে দেওয়া হল -

সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আস্সালামু আলাইকুম।

২৯ ডিসেম্বর রাত কালো রাত, ৩০ শে ডিসেম্বর দিন অন্ধকার দিন। ২৯ শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মানবশূণ্য কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির নির্বোধ উল্লাসে মেতে উঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা। ৩০ শে ডিসেম্বর ভোটের দিন গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নের ওপর ধেয়ে  এলো মহাদূর্যোগ। ভোটের দিন বিশ্ববাসী মহাশঙ্কা নিয়ে দেখল বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশকর্তৃক দেশের জণগনের আত্মমর্যাদাবোধে অসম্মানের দৃশ্যটি। তারা দেখল ভোটাধিকার বঞ্চনার শেষ দৃশ্যটি। রাতের আধাঁরে কেন্দ্রে-কেন্দ্রে অকটেন ও ডিজেল পোড়া ধোঁয়া। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা, ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢোকানো। এই সংবাদ নির্বাচনের আগের রাত ১১ টায়  আমি আপনাদের ব্রিফিং করে জানিয়েছিলাম।

সাংবাদিকবৃন্দ,
মিথ্যা জয়ের জন্য ভোট জালিয়াতি করতে পানির মতো টাকা খরচ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে। তারাই একতরফা নির্বাচনের মূখ্য উপাদান হিসাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে আর গণতন্ত্রের গৌরবোজ্জল যুগ সৃষ্টি হলোনা। শেখ হাসিনার দল মানুষের ভোটে জিতেনি, তার দল জিতেছে গায়েবী ভোটে। এখন শেখ হাসিনার  নেতৃত্বে যে নতুন গভর্নমেন্ট তৈরি হবে তা হবে গভর্নমেন্ট অব দি বিজিবি বাই দি র‌্যাব এবং ফর দি পুলিশ। এই মহাডাকাতি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনকে এরা ক্রমান্বয়ে উপহাস করছে। আওয়ামী নেতারা এখন গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রনে নিয়ে তাদের চাপাবাজি ও গলাবাজির জোরে ভোট নিয়ে মহা-জালিয়াতির ঘটনা আড়াল করতে চাচ্ছে, কিন্তু দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে চোখে কিছুই এড়িয়ে যায়নি। ৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচন ১৯৭৩ সালের খারাপ নির্বাচনের চাইতেও কুৎসিত।

প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, 
৩০ শে  ডিসেম্বর নির্বাচনের পর দেশ আরও একধাপ তমাসাচ্ছন্ন বর্বর যুগে প্রবেশ করলো। নির্বাচনের নামে নিষ্ঠুর রসিকতা করে এখন জনপদের পর জনপদে ধানের শীষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর চলছে পৈশাচিক বর্বরতা। মূর্খের অহংকারে আক্রমণ করে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে নিরীহ মানুষের বাড়ী-ঘর-দোকানপাট-বাজার। সেগুলি অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের ঘর ছাড়া, এলাকা ছাড়া, গ্রেফতার করা  রীতিমতো হিড়িক শুরু হয়েছে। নানা হয়রানীসহ শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। আক্রমনে অনেকে নিহত হয়েছেন। ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান-কৃষি খামার-সহায়সম্পদের উপর বেপরোয়া হানা দেওয়া হচ্ছে অবিরাম।

সবচেয়ে মর্মস্পর্শি শ্বাসরোধী ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীতে এক সিএনজি চালকের স্ত্রীকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে শ্লীলতাহানী করা। আওয়ামী লীগের ১০/১২ জনের এক দল কর্মী নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকার মধ্যব্যাগারে ৪ সন্তানের মা সিএনজি চালকের স্ত্রীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে বলে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে মহিলাটি সবার সামনে ধানের শীষে সিল দেয়। এরপর রাত ১০ টার দিকে সন্ত্রাসীরা পুলিশ পরিচয়ে বাড়ীতে ঢুকে গৃহবধুটির হাত-পা ও মুখ বেঁেধ রাতভর নির্যাতন করে ঘরের পাশে ফেলে যায়। সে এখন নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। এটি শুধু একজন ব্যক্তিকেই পৈশাচিক নির্যাতনে শ্লীলতাহানী নয় এটি জনগনের ভোটাধিকারকেই শ্লীলতাহানী করা হলো। সিএনজি চালকের স্ত্রীর ক্রন্দনবিধুর অন্তহীণ আর্তি বিশ্ব বিবেককে কাঁদিয়েছে। বাংলাদেশে মানবতা এখন কাঁদছে। বিশ্ব মানবতা এই ঘটনায় স্তম্ভিত-শিহরিত ও বিমুঢ়।

কালো টাকার প্রাচুর্য্য প্রয়োগে বেড়ে ওঠা এই আওয়ামী নির্যাতন কারীরা জালজালিয়াতি ভোটের মহাযজ্ঞের পর এখন কান্ড জ্ঞানহীন নিষ্ঠুর বেপরোয়া। এরা ভোট ডাকাতির মহাসাফল্যে সহজাত বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছে। এরা মনুষ্যত্ব বির্সজন দিয়ে এখন নারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে জনগনের ভোটাধিকারকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে ঘনায়মান হতাশা আর বিরোধীদের গুম-খুনের শিকার হওয়ার পরিমান যে কতো বাড়রে তা নিয়ে অনাগত দিনের দুশ্চিন্তা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা জণগনের চোখে বিভৎস রূপ নিয়ে ফুটে উঠেছে। ১০ বছরতো আওয়ামী লীগই ক্ষমতায়, তাহলে মিথ্যা জয়োল্লাসের বহিঃ প্রকাশে এতো হিংসার ছবি কেন ? এরা ধারাবাহিকভাবে অশান্তি জিইয়ে রেখে মানুষের জাগরনকে ঠেকানোর চেষ্টা করবে। সেই জন্য তারা দর্শন হিসেবে বেছে নিয়েছে সন্ত্রাসবাদ। তবে তাদের মনে রাখতে হবে পতন কিন্তু দিন-ক্ষন-তারিখ-মাস ঘোষনা দিয়ে আসে না।

দাউদকান্দিতে নির্বাচনোত্তর আ.লীগের ব্যাপক সহিংসতা ভাংচুর-লুটপাট,মিথ্যা মামলা দায়ের, আহত ৭

কুমিল্লা-১ আসনের দাউদকান্দি পৌর সদরসহ বিভিন্ন গ্রাম, দাউদকান্দি উপজেলার দাউদকান্দি (উত্তর), গোয়ালমারী, সুন্দলপুর, বিটেশ^র, মারুকা, দৌলতপুর ও ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও বাজারে বিএনপি নেতা কর্মী ও সমর্থদের বাড়ী ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনোত্তর ব্যাপক সন্ত্রাসী হামলা, লুটপাট, মারধর, চাঁদাবাজি ও প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে। আমি অবিলম্বে নির্বাচনোত্তর আওয়ামী লীগের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ এবং প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। 

৩০ ডিসেম্বর রাত থেকে এই পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা দাউদকান্দি পৌর এলাকার তুজারভাঙ্গা গ্রামে কাউন্সিলর মোস্তাক মিয়া এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাওসার আলমের বাসভবনসহ মাইজপাড়া, দোনারচর, উত্তর নছরুদ্দি গ্রামে নোয়াব ও বাবুলের বাড়ীতে গ্রামে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে। তারা দাউদকান্দি বাজারে পৌর বিএনপি সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মিয়াজি ও শামীমের দোকান বন্ধ করে দেয়। পৌর এলাকার ইট ব্যবসায়ী মনু মিয়া ব্যাপারীর ইটের ভাটা থেকে দুই ট্রাক ইট লুট করে নিয়ে যায়। সুন্দলপুর ইউনিয়নের সুন্দলপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন ও বিডিআর নুরুল ইসলাম মিয়াজী সহ ২জন এবং বড় গোয়ালী গ্রামের ইব্রাহিমকে পিটিয়ে আহত করে, একই গ্রামের হাফেজ আবদুল করিম সহ ১৫ জনের বাড়ী ভাংচুর করে, এছাড়া বড় গোয়ালী বাজারের ৩টি দোকান ও চকমখোলা গ্রামের কামাল হোসেন সহ ৩জনের বাড়ীতে ব্যাপক ভাংচুর চালায় এবং ২ জনকে আহত করে। দাউদকান্দি উত্তর ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের কামাল ও কাওসারের বাড়ী সহ নন্দলপুর ও গোলাপেরচর গ্রামের ১০টি গ্রামে যুবলীগের ক্যাডাররা বাড়ী-ঘর ভাংচুর করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বারপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের বাসরা গ্রামে প্রায় ২৫টি বাড়ীতে হামলা করে, এতে ৪ জন জখম হয়। সশস্ত্র ক্যাডাররা ইলিয়টগঞ্জ বাজারে ৫ টি দোকান বন্ধ করে দেয়। ক্যাডাররা দৌলতেরকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং গোয়ালমারী ইউনিয়নের দৌলতেরকান্দি গ্রামের ৩০/৩৫টি বাড়ী দুই দিন ধরে নারকীয় তান্ডব চালাচ্ছে। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরও সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। যা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। এছাড়া নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে প্রায় ৭টি মামলা করা হয়েছে যেখানে কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন আহমেদ সহ শত শত নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। অথচ এ সকল সহিংস ঘটনার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে দাউদকান্দি থানা মামলা নিচ্ছে না। অবিলম্বে নির্বাচন উত্তর এইসব সহিংস ঘটনা বন্ধ করার জন্য আমি জোর দাবি জানাচ্ছি।

গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এলডিপি’র চেয়ারম্যান ড. কর্নেল (অবঃ) অলি আহমেদ বীর বিক্রম এর নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে চন্দনাইশ ও আংশিক সাতকনিয়ার ৬টি ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের দ্বারা ব্যাপক সহিংসতা সংঘটিত হয়। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে এলডিপি’র কর্মী শফিকুল ইসলাম, মোঃ জিসান ও মাহবুব আলমসহ ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে আহতাবস্থায় স্থানীয় চান্দনাইশ হাসপাতালসহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। অপরদিকে আওয়ামী ক্যাডার’রা ১২টি মোটর সাইকেল ও ৪টি মাইক্রোবাস নিয়ে অলি আহমেদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুকের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ চালালে তিনি গুরুতর আহত হন, তার মৃত্যু হয়েছে বলে হামলাকারীরা নিশ্চিত হলে রাস্তার পাশে ঝোপের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। অধ্যাপক ওমর ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী আমিন, আবুল ও আবু সলেহ।

গত ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে কোন ধানের শীষের ও ছাতা মার্কার নেতাকর্মীদেরকে ঘরে থাকতে দেয়নি আওয়ামী ক্যাডারা’রা। সকল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। শতকরা ৯০ ভাগ পোলিং এজেন্টকে প্রশাসনের সহায়তায় কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়। এমনকি নির্বাচনের দিন কোন সাধারণ ভোটারকেও ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। ১০৪ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১০০ টি দখল করে ভোটের আগের রাত ও ভোটের দিন নৌকা প্রতীকে জালভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। এতো অনাচার ও অনিয়মের পরেও নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, ভয়ভীতিমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে যারা বলছেন আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-তারা আত্মা বিক্রি করে মনুষ্যত্বের বিলোপ ঘটিয়েছেন। 

সাংবাদিক বন্ধুরা,
এই ধরনের ঘটনা ৩০০টি নির্বাচনী এলাতেই ঘটেছে। এই ঘটনাটি নমুনা স্বরুপ উত্থাপন করা হলো। অনুরুপভাবে বিএনপি’র মহাসচিব, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ, ড. কামাল হোসেন, মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, ব্যারিষ্টার মাহবুদ্দিন খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, রুমানা মাহমুদ, মিয়া নুরুদ্দিন অপুর উপর হামলা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সুপরিকল্পিতভাবে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করা অথবা নির্বাচন ছেড়ে দেয়ার জন্য বাধ্য করতে এধরনের ঘটনায় তারা লিপ্ত হয়েছিলো। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ অতীতে কখনও ক্ষমতায় আসেনি। স্বাধীনতার পর থেকে জণগনের ভোটে কখনও আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়নি। এবারও আওয়ামীলীগের কোন সদস্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি, বরং প্রত্যেক এলাকার উপজেলার ইউনো ও থানার ওসি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। একজন রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব:) অলি আহমদ বীর বিক্রমের সাথে যদি এধরনে ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে ৩০০ আসনে কি ধরণের ঘটনা ঘটেছে তা সহজেই অনুমেয়। এরপরেও যারা বলছেন শন্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে তারা হয় উৎকোচ গ্রহণ করেছেন না হলে জ্ঞানপাপী। নির্বাচনের পূর্বে প্রায় ২৫ দিন দেশের মানুষ দোজগে বাস করেছে। এখনও হাজার-হাজার নেতাকর্মী জেলহাজতে আছেন।
সকলকে ধন্যবাদ।

বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত, হামলাকারীকে গণপিটুনি

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় মোতালেক হাওলাদার (৪০) নামে এক বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তিল্লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে আহত মোতালেব ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। এদিকে এ ঘটনায় হামলাকারী শাকিল মৃধাকে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টার দিকে ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তিল্লা নিজ বাড়ি থেকে মোতালেব হাওলাদার দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে পার্শ্ববর্তী নলবুনিয়া গ্রামের শাকিল মৃধা তার (মোতালেব) পথরোধ করে। একপর্যায়ে ‘বিএনপি-রাজাকার এলাকায় থাকতে দিবো না বলে’ এলোপাতাড়িভাবে মোতালেবকে ছুরিকাঘাত করে শাকিল। এদিকে, মোতালেবকে ছুরিকাঘাত করায় শাকিলকে গণপিটুনি দিয়েছে স্থানীয় জনতা।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি মিলন কৃষ্ণ মিত্র বলেন, ‘শাকিল প্রথমে মোতালেবকে ছুরিকাঘাতে আহত করেছে। পরে মোতালেবের লোকজন শাকিলকে কুপিয়েছে। দুইজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
  • ইত্তেফাক/ ০২-০১-২০১৯

নির্বাচনে ভোট চুরি নয়, ডাকাতি হয়েছে: সুপ্রিম কোর্ট বার

সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘নির্বাচনে ভোট চুরি নয়, ভোট ডাকাতি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও সরকার মিলেমিশে এ ডাকাতি করেছে। এমন নির্বাচন চৌদ্দ পুরুষের জীবনে দেখিনি।’ বুধবার সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বার সভাপতি এসব কথা বলেন।

বার সম্পাদক এম মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, ভোটের নামে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

UK for credible resolution of complaints on Bangladesh polls irregularities


The United Kingdom has urged the Bangladesh authorities for a full, credible and transparent resolution of all complaints related to the conduct of the December 30 general elections.

“While I welcome the participation of all opposition parties in these elections, I am aware of credible accounts of obstacles, including arrests, that constrained or prevented campaigning by opposition parties, and of irregularities in the conduct of elections on polling day that prevented some people from voting,” said British Minister of State for Asia and the Pacific Mark Field.

He came up with the comments in a press statement yesterday following the announcement of the unofficial results for the 11th Parliamentary Elections in Bangladesh.

“I deplore the acts of intimidation and unlawful violence that have taken place during the campaign period, and am deeply concerned by the incidents that led to so many deaths on polling day. My thoughts are with the families and friends of those who have lost loved ones,” the British minister said in the statement.

Terming free, fair, peaceful, and participatory elections essential to any functioning democracy, Minister Field said, “It is vital for the government and all political parties to now work together to address differences and find a way forward in line with the interests of the people of Bangladesh”.

Mentioning that the UK has a broad and important partnership with Bangladesh, and a significant Bangladeshi diaspora in the UK, Mark Field added, “We will continue to support the people of Bangladesh in their aspirations for a more stable, prosperous, and democratic future”.

  • Courtesy: The Daily Star/ Jan 02, 2019

A victim of a venomous mindset

EDITORIAL

Woman gang-raped for voting for her choice

We are horrified at the incident of a gang-rape in Noakhali's Subarnachar last Monday. A 35-year-old woman was victimised for voting for the BNP. Going by the report of this daily, during Sunday's voting, Ruhul, the publicity affairs secretary of Subarnachar AL, insisted that the woman vote for the party, but as she didn't oblige, he threatened her at the voting centre. She was allegedly gang-raped later that night by Ruhul's accomplices who are also local Awami League activists.

This is a rare incident and just goes to show how poisonous our political culture has become over the years and how women are always the worst victims of this political culture. Our major political parties, particularly the ruling Awami League, always take credit for their success in women's empowerment, but when it comes to ensuring safety of women, the story is not the same. The fact that a woman was gang-raped just because she had an opinion of her own is beyond appalling.

As women rights activists have put it, the basic characteristics of our politics are still patriarchal in nature and the issue of women's safety is never addressed in party meetings. Moreover, many women members of major political parties often face harassment by their fellow male party members. If women's safety cannot be ensured within the political parties, how will women's safety be ensured in the remote corners of the country? Therefore, our political parties must change their mindset and give priority to gender issues. They must stop victimising women for their petty political interests. Several recent studies have found that violence against women is on the rise in the country. And ruling party members should not be a reason for this rise.

In this particular case, we are astonished at the comment of a superintendent of police in Noakhali who said that the rape took place but claimed it was not related to voting. How could a policeman make such a claim even before holding any investigation? We hope the police will play its own neutral role and do more than just “try” to arrest the alleged culprits. 

  • Courtesy: The Daily Star/ Jan 02, 2019

ধানের শীষে ভোট দেয়ায় গণধর্ষণ: ‘নির্দেশদাতাকে’ বাদ দিয়ে মামলা!

নোয়াখালীর সুর্বণচর উপজেলায় গত ৩১ ডিসেম্বর ৪ সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ অভিযোগের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু, অভিযুক্তদের তালিকায় সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদিও ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন যে, ‘ধানের শীষে’ ভোট দেওয়ায় ওই ব্যক্তি তার সহযোগীদের তাকে ধর্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।ভুক্তভোগী নারীর স্বামী- যিনি ১ জানুয়ারি মামলাটি করেছিলেন- আমাদের সংবাদদাতাকে জানান, পুলিশ প্রথমে ঘটনার বিবরণী (এফআইআর) লিখে নেয় এবং পরে সেখানে তাকে সই করতে বলে।

গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, “আমি নিরক্ষর মানুষ... সেখানে কী লেখা হয়েছে তা আমি পড়তে পারিনি। আমি শুধু সই করে দিয়েছি।”

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৫ বছরের ওই নারী গত ৩১ ডিসেম্বর অভিযোগ করেছিলেন, নির্বাচনে বিএনপি’র ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ায় রুহুল আমীনের ১০ থেকে ১২ জন সহযোগী তাকে ধর্ষণ করে।

তবে, সুবর্ণচর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে পরিচয়দানকারী রুহুল আমীন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ওই নারীর স্বামী গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইব্রাহিম খলিলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে তাকে ও তার ছেলেকে চর জব্বার থানায় নিয়ে আসে।

তিনি বলেন, “আমি পুলিশকে বলেছি যে, ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমীন তার সহযোগীদেরকে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণের নির্দেশ দেয়।”

“কিন্তু, মামলার বিবরণীতে পুলিশ রুহুল আমীনের নাম ও ধর্ষণের কারণ কোনোটিই উল্লেখ করেনি,” অভিযোগ করেন তিনি।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযুক্তরা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রুহুল আমীনের সমর্থক বলে মামলার বাদী তাদেরকে জানিয়েছেন।

তাহলে মামলার বিবরণীতে রুহুলের নাম নেই কেন?- জানতে চাইলে ইব্রাহিম দাবি করেন যে, অভিযোগকারী নিজেই রুহুলের নাম উল্লেখ করেননি।

এ ঘটনায় ৩১ ডিসেম্বর রাতে বাদশা আলম নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা সেই মামলায় উল্লেখিত অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- মো. সোহেল (৩৫), হানিফ (৩০), স্বপন (৩৫), চৌধুরী (২৫), বেচু (২৫), বাসু (৪০), আবুল (৪০), মোশাররফ (৩৫) এবং সালাউদ্দিন (৩৫)। এরা সবাই সুবর্ণচরের মধ্য বাইগ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিবেশী সালাউদ্দিন নামের এক লোক অভিযোগকারীর বাড়িতে আসে এবং তার নাম ধরে ডাকে। এ সময় তার স্ত্রী দরজা খুলে দিলে অভিযুক্তরা জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে পূর্বশক্রতার জেরে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারতে থাকে। একপর্যায়ে তারা অভিযোগকারী ও তার সন্তানদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তার স্ত্রীকে একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে গণধর্ষণ করে।

এছাড়াও, অভিযুক্তরা চলে যাওয়ার আগে অভিযোগকারীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে বলেও মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরপর, অভিযোগকারী নিজেকে বাঁধামুক্ত করেন এবং স্ত্রীকে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার করেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. খলিল উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টটি এখনও হাতে আসেনি।

এদিকে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ১ জানুয়ারি বলেছেন, এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে তারা নিজেরাই তদন্ত করবে।

এছাড়াও, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশসহ ৪০টি মানবাধিকার সংগঠনের একটি প্লাটফর্ম এ ঘটনার নিন্দা ও জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও দাবি করেছে সংগঠনগুলো।
  • The Daily Star/ Bangla/ 02-01-2019

নির্বাচনী অনিয়মের সুরাহা চায় জাতিসঙ্ঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সঙ্ঘটিত যাবতীয় অনিয়ম তদন্ত করে সুরাহার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অন্য দিকে নির্বাচনী অভিযোগ আইনগতভাবে মোকাবেলার কথা বলেছে জাতিসঙ্ঘ। অনিয়মের কারণে বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা ক্ষুণ হয়েছে। অনিয়মের এসব অভিযোগ স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করে সুরাহা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

ওয়াশিংটন থেকে গতকাল মঙ্গলবার দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মুখপাত্র রবার্ট পেলাডিনো বলেছেন, নির্বাচনের আগে হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। এ কারণে বিরোধীদলীয় অনেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা অবাধে প্রচারণা চালাতে পারেননি। নির্বাচনের দিন অনিয়মের কারণে কিছু ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন করেছে।

সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশনকে এসব অনিয়মের দাবি সুরাহা করতে গঠনমূলকভাবে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দারুণ রেকর্ড এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ লক্ষ্যগুলো সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার ও বিরোধীদের সাথে কাজ করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী।

এ দিকে ইইউ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের আকাক্সার প্রতিফলন। তবে নির্বাচনের দিনটি সহিংস ছিল। নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়ায় সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধা ছিল। এটি নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনিয়মের এসব অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত করে পূর্ণ স্বচ্ছতার সাথে সুরাহা করা উচিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইইউ চায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ইইউ এসব কাজকে সমর্থন দিয়ে যাবে।

এ দিকে নির্বাচনী অভিযোগগুলো শান্তিপূর্ণভাবে এবং আইনগত পদ্ধতিতে মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। তারা বলেছে, বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে সহিংস ঘটনা ও অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জাতিসঙ্ঘ সচেতন রয়েছে।

নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র গতকাল এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান। তিনি বলেন, ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে বিরোধীদের অংশগ্রহণকে জাতিসঙ্ঘ স্বাগত জানায়। আমরা সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম পালন করে নির্বাচন-পরবর্তী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি, যে পরিবেশে জনগণের সমাবেশ ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অক্ষুণ থাকবে। সহিংসতা ও জানমালের ওপর আক্রমণ গ্রহণযোগ্য নয়। নির্বাচনী প্রচারণা ও ভোটগ্রহণের দিন প্রার্থী ও ভোটারদের হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন মুখপাত্র।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ ০২ জানুয়ারী ২০১৯ 


নির্বাচনে অনিয়মের যথাযথ তদন্ত চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এবং তার আগে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাগুলোর পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত  চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপের ২৮ রাষ্ট্রের ওই জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র গতকাল এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। ইইউ’র ব্রাসেলসস্থ হেড কোয়ার্টার থেকে দেয়া  ওই বিবৃতিতে বলা হয়- ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক ফলাফলও ঘোষণা করেছে। গত ১০ বছরে এই প্রথম এমন নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি এবং বিরোধী দলের অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। কিন্তু ভোটের দিনে সহিংসতা এবং প্রচার-প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা বিশেষত পুরো প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য বাধা ভোট এবং প্রচারণাকে দূষিত করেছে। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত উত্থাপিত অনিয়মের অভিযোগগুলো যথাযথ তদন্ত করা এবং ওই তদন্ত কাজে পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আশা করে বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে সামনে এগিয়ে যাবে। আর বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ইইউ এতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে।
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানুয়ারী ২,২০১৯ 

নির্বাচনকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান ড. কামালের


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন৷ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান৷

ড. কামাল বলেন, ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এ নির্বাচনকে বৈধতা দিয়ে নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। আমি আশা করি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এ ‘ভোট ডাকাতি’র নির্বাচনকে কোনোভাবেই স্বীকৃতি দেবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রহসনের এ নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলনই ঘটেনি। এটিকে সরকারের একটি ‘পাতানো নির্বাচন’ বলেও দাবি প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের।

নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কোনো আন্দোলনে যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ৩০ ডিসেম্বরই পাতানো এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা ও পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছি।

ঐক্যফ্রন্টের অন্য নেতাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে নির্বাচন পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান ড. কামাল হোসেন।
  • কার্টসিঃ যুগান্তর/ ০২-০১-২০১৯