Search

Wednesday, January 2, 2019

স্বাধীনতা নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতিত - কাদের সিদ্দিকী


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন,লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আবার নতুন করে মহাসঙ্কটে নিপতিত হলো। ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন লোভ দেশ এবং দেশের মানুষকে আজকের অবস্থায় এনে ফেলেছে।

 ৩০শে ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা যে নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা এ জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। আজ রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। 

কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন এ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল বর্জন করেছিলো। ফলে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবং অন্যরাও খুবই নগণ্য ভোটে নির্বাচিত হয়, যা ছিলো ন্যায় ও সত্যের বিচারে অবৈধ। 

তিনি বলেন, এ বছর নানান টানাপোড়েন থাকলেও দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

কিন্তু সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান এবং ন্যুনতম নীতি-নৈতিকতাকে পদদলিত করে এই নির্বাচনকে স¤পূর্ণ প্রহসনে পরিণত করেছে। তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে বিরোধীদলের দাবি দাওয়া ও প্রস্তাবকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার স্বার্থে আমরা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু সমস্ত আইনকানুন ও সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা ও পুলিশি হয়রানী করে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল  দেয়ার সব রকমের অপচেষ্টা করা হলেও নির্বাচনী মাঠে থাকার ব্যাপারে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। পদে পদে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ভয়ভীতি, হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে আমাদের কর্মী সমর্থকেরা মাটি কামড়ে নির্বাচনী মাঠে থাকার চেষ্টা করেছে। 

বঙ্গবীর বলেন, বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় বাধা, হামলা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় নির্বাচনী পোষ্টার ছিঁড়ে ও পুড়িয়ে ফেলাসহ এহেন কোন কাজ নেই যা সরকারী দল করেনি। জনগণ আশা করেছিল সেনাবাহিনী নামার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে, কিন্তু তার উল্টো হয়েছে। 

তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতে সকল কেন্দ্রে  সরকার দলীয় কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলেমিশে প্রতি কেন্দ্রে অর্ধেক ভোট কোন কোন কেন্দ্রে তার চেয়েও বেশি নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভরে রাখে। যে কারণে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ায় বেলা ১০-১১টার পর কোন ভোটার ভোট দিতে পারেননি, কারণ তাদের ভোট আগেই দেয়া হয়ে গেছে। অন্যদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সরকারী দলের ক্যাডারের ভূমিকা পালন করে। সবকিছু মিলিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভোটের মৃত্যু ঘটায়, যা কোন গণতান্ত্রিক দেশে সংগঠিত হওয়া অসম্ভব। মানুষের ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে দেশের মানুষের যে ঘৃনা আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু কন্যা অর্জন করলেন তা দেখে আমরা মর্মাহত এবং আতঙ্কিত। 

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, যখন স্বাভাবিক পরিবর্তনের পথ রুদ্ধ হয়, তখনই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে, যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়। দেশের ও মানুষের স্বার্থে এই নির্লজ্জ ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবানও জানান তিনি। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানুয়ারী ২,২০১৯ 

No comments:

Post a Comment