Search

Sunday, January 27, 2019

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ব্রিজটির আজ একি হাল!


দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ক্রমেই অনুপযোগী হয়ে পড়ছে মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতিবিজড়িত ফেনীর শুভপুর ব্রিজটি। অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাশে আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনীর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহিদ।

ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়ন ও চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার করের ইউনিয়ন সীমান্তে ছোট ফেনী নদীর ওপর ১৯৫২ সালে এ ব্রিজটি স্থাপন করা হয়। স্থাপনের দীর্ঘ ৬৬ বছর অতিক্রম হলেও অযত্ন-অবহেলায় ব্রিজটি এখন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। 

জানা যায়, ১৯৫২ সালের দিকে আরসিসি স্লাবের ওপর ব্রেইলি ট্রাস দিয়ে ১২৯ মিটার দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে নদীর প্রশস্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৬৮ সালে সেতুটিতে ২৪৯ মিটার সম্প্রসারণ করা হয়। এতে করে সেতুটির দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ৩৭৪ মিটারে।


মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন জানান, যুদ্ধ চলাকালীন ব্রিজের এপারে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। এটি ব্যবহার করেই ওপারের পাকহানাদার বাহিনীকে পরাহত করেন ফেনীর মুক্তিযোদ্ধারা। ব্রিজের ১০নং পিলারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এটিকে কিঞ্চিত ক্ষতিগ্রস্ত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিলে এ অংশ হানাদার মুক্ত হয়।

তিনি জানান, এখনও ব্রিজটির বিভিন্ন স্থানে গোলা বারুদের চিহ্ন পাওয়া যাবে। যুদ্ধ চলাকালীন সেক্টর কমান্ডাররা ব্রিজের আশপাশে থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে এটি সংষ্কার করে পুণরায় চালু করা হয়। স্মৃতিস্বরূপ বিভিন্ন চলচ্চিত্রে শুভপুর ব্রিজের চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ব্রিজটি এখনও দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এখন সেখানে আগের মতো জৌলুস নেই। এর পাশেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। আর এতেই ব্রিজের মূল পিলারগুলোর নিচে থেকে মাটি সরে গেছে। এতে এর পশ্চিমাংশ যেকোনো সময়ে ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে প্রয়োজনীয় সংস্কার না করায় ব্রিজের ওপর ঢালাই নষ্ট হয়ে গেছে। লোহার রেলিং ও নাট-বল্টু খুলে চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এখন ছোট পরিবহন পার হলেও কাঁপতে থাকে ব্রিজটি। দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজটির ওপর ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক বিভাগ। 

ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল জানান, ব্রিজটির সম্মুখে ইতোমধ্যে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে। ব্রিজটিকে দ্রুত মেরামত অথবা বিকল্প ব্রিজ নির্মাণের দাবিও জানান তিনি।
  • জাগোনিউজ বিডি/ জানু ২৭, ২০১৯  

No comments:

Post a Comment