Search

Sunday, January 13, 2019

এমপির চাঁদা দাবি — প্রতিবাদে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
আগামীকাল সোমবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট পালন করা হবে।শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. অলি আহমদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সীতাকুণ্ড আসনের এমপি দিদারুল আলম দিদারের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিক নেতাকে মারধর ও চাঁদা দাবির অভিযোগে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় সীতাকুণ্ডের এমপি দিদার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ ও নগরীর অলঙ্কার মোড় থেকে সীতাকুণ্ড রুটে চলাচলকারী ৮ নং রুটের মালিক সমিতির নেতাদের বাসায় ডাকেন। এ সময় অলঙ্কার থেকে সীতাকুণ্ড রুটে গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ তার কাছে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক নেতারা জানান, ট্রেড ইউনিয়নের আইন ও শ্রমিকদের অর্পিত দায়িত্ব শ্রমিকের মতামত ছাড়া ছেড়ে দেয়া সম্ভব নয়।
তাদের এ কথার জবাবে এমপি তাদের বলেন, তাকে প্রতিমাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তাতে সম্মত না হওয়ায় এমপি দিদার একপর্যায়ে ৮ নং রুটের মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলমকে মারধর শুরু করেন।
এ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে এমপি দিদার উত্তেজিত হয়ে শ্রমিক নেতা অলি আহমদকেও মারধর করেন। প্রয়োজনে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। তাদের ঘর থেকে জোর করে বের করে দেন।
এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সংগঠনের এক জরুরি সভায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়।
এতে আগামীকাল সোমবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলা-চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ৪৮ ঘণ্টা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, এমপি দিদার চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি ও মারধরের অভিযোগে সভায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে এমপি দিদারুল আলম শ্রমিক ফেডারেশনের এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।

Kamal in denial about bad loan situation


Bangladesh's non-performing loan situation is not as dire as is being reported in the news media, said Finance Minister AHM Mustafa Kamal.

As of September last year, NPL accounts for 11.45 percent of the banking sector's total loans, according to Bangladesh Bank data. In terms of amount, it stood at Tk 99,370 crore -- the largest yet in Bangladesh's 48-year history.

The rate of NPL is far higher in other countries, including the neighbouring India, Kamal told reporters after a meeting with the Bankers Association of Bangladesh (BAB) at his office yesterday.

At the end of September, the rate of NPL was 10.58 percent in India. In Pakistan it was 8.3 percent, as of March 2018.

“Everybody is worried about NPL. But the way it is reported in the media, it is not so high,” Kamal said, while instructing the central bank and the financial institution division to evaluate the information.

The new finance minister went on to assert that the total NPLs will not increase by even a penny going forward. “As of today, what is on the balance sheet will remain the same -- it will not increase in anyway.”

He said he held the meeting with the bank owners on the condition that the sector's NPL cannot increase going forward. “It is your matter now how the NPL will be managed or reduced.”

Quoting the bank owners, Kamal said they have assured him that the NPL will not edge up further. “With the government's assistance and our own efforts the NPL will not increase from today,” said Nazrul Islam Mazumder, chairman of the BAB.

In response to a question from a reporter, Kamal said all businessmen are influential.

Asked whether he would take any actions against the influential businessmen who do not pay back loans, Kamal sought for a specific list of names from reporters that he will verify.

“If the businessmen do not become influential, how will investment come? From where will employment come and how will poverty be reduced?” Influential businessmen account for 82 percent of the economy and it is impossible to run the economy without them, he said. “Your idea about the people is your perception.”

  • Courtesy: The Daily Star/ Jan 13, 2019

Who is maintaining Dhaka's cleanliness?

EDITORIAL

Why is there a dumping ground underneath Mouchak flyover?

The piling of garbage under the Mouchak flyover is another example of the sorry state of management plaguing Dhaka city. Residents of the area, having suffered through terrible gridlocks and various other problems for years because of the construction of the flyover, are now forced to endure this new nuisance, while various city authorities continue to shirk their responsibility for cleaning this mess up.

As this newspaper reported yesterday, the local DNCC Councillor of the Public Works Department and the DNCC's Zonal Executive Officer (Zone-3) both indicated that they are not responsible for the problem when contacted and asked about the matter. And the great irony here is that while this mindless dumping takes place at the bottom of the flyover, the flyover itself is relatively clean, which is the same picture that we see in the case of many other flyovers throughout Dhaka. This is a perfect example of how city authorities often portray everything to be fine on the surface, while management problems persist underneath causing all sorts of suffering for city dwellers.

In order to overcome this vicious cycle of mismanagement and inaptitude, city authorities need to be held accountable for failing to provide proper services to the inhabitants of Dhaka.

In the meantime, we call on the concerned authorities—whoever that may be—to immediately clean up the area under the Mouchak flyover, and to take the necessary initiatives to ensure that it remains clean henceforth.

  • Courtesy: Daily Star /Jan 13, 2019

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফলাফল কী প্রমাণ করে?

সোহরাব হাসান

সারা দেশে যখন বিএনপির ভূমিলীন পরাজয় ঘটেছে তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফলভিন্ন বার্তা দেয়। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন না। মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের যুববিষয়ক উপদেষ্টা ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মঈনউদ্দিন ভূঁইয়া ও জিয়াউল হক মৃধা। মহাজোটের প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। নির্বাচনের দুই দিন আগে তিনি তাঁর শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধার সম্মানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসেন।

জিয়াউল হক মৃধা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মঈনউদ্দিন ভূঁইয়ার মধ্যে। মঈনউদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন। সেখানকার আওয়ামী লীগের সমর্থক ভোটাররা নিশ্চয়ই বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দেননি। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ থেকে বরাবর বিএনপির বা চারদলীয় জোটের প্রার্থী জিতেছেন, এ কথাও সত্য নয়। ২০০৮ সালে মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে হারিয়ে মহাজোট প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এর আগে এই আসন থেকে একাধিকবার বিজয়ী হলেও তিনি ডাকসাইটে কোনো নেতা নন। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তও সব সময় মানেননি। ১৯৮৬ সালে বিএনপি ভোট বর্জন করলেও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচিত হন ১৯৯১ সালে। আবার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ১২ জুন—দুটি নির্বাচনেই জয়ী হন তিনি।

২০০১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। পরে আবদুস সাত্তারকে টেকনোক্র্যাট কোটায় ভূমি প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন খালেদা জিয়া। 

আবদুস সাত্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ২২ বছর পর আবার ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। যেখানে বিএনপির দেড় শতাধিক প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন, সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ৮ হাজার ভোটে তাঁর জয়ী হওয়া ব্যতিক্রমী ঘটনাই বটে। কেন এমনটি হলো? ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন সারা দেশের বিএনপির ভোটাররা কী এই আসনে এসে ভিড় করেছিলেন? যদিও ভোটার আইডি কার্ড চালু হওয়ার পর এক স্থানের ভোটার আরেক স্থানে গিয়ে ভোট দিতে পারেন না।

৯ জানুয়ারি স্থগিত তিন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পর দেখা যায়, ধানের শীষের প্রার্থী আবদুস সাত্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনউদ্দিনকে ৮ হাজার ৫৭৮ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। ১৩২ কেন্দ্রের ফলাফলে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট। অন্যদিকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মঈনউদ্দিন মঈন পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের দিন অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার কারণে আশুগঞ্জ উপজেলার তিনটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এর আগে ১৩২টির মধ্যে ১২৯টি কেন্দ্রে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া পেয়েছিলেন ৮২ হাজার ৭৩২ ভোট। মঈনউদ্দিন ভূঁইয়া পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট। এই তিনটি কেন্দ্রে ১০ হাজার ৫৭৪ ভোটের মধ্যে বুধবার ৪ হাজার ৩০০ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে কলার ছড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনউদ্দিন পেয়েছেন ২ হাজার ৮৫৫ আর ধানের শীষের প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ২৭৪ ভোট।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাতজন প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার জয়ের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল আটে। তবে ৩০ ডিসেম্বরে জয়ী সাত প্রার্থী এখনো শপথ নেননি। আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, তিনিও দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলবেন।

এর আগে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য তিনি প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকদের দায়ী করেছেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কোনো কারণ ছাড়াই স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনউদ্দিনের সমর্থকেরা তাঁর গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালান। এ ব্যাপারে তিনি নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

হামলার বিচার হবে কি না, সেটি আইন আদালতের বিষয়। আমরা বিস্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোটের ফলাফলে। এটি তো বাংলাদেশেরই একটি জেলা। এখানে যদি বিজয়ী প্রার্থী ও বিজিত প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ৮ হাজার হয়ে থাকে, অন্যান্য জায়গায় দেড় দুই লাখ হলো কীভাবে? বিজয়ী ১১০ জন প্রার্থী নিজ নিজ আসনে যে ভোট পড়েছে, তার ৯১ শতাংশই পেয়েছেন। ৮৯ জন পেয়েছেন ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ভোট। নির্বাচনে জয়–পরাজয় যা–ই হোক না কেন, ভোটের এই ব্যবধান ঠিক মেলানো যায় না।

বিজয়ী আওয়ামী লীগের নেতারা বলতে চাইছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফল বোধ হয় অন্য কথা বলছে।

  • Courtesy: Prothom Alo /Jan 13, 2019

নারীশিক্ষা নিয়ে আহমদ শফীর বক্তব্য দুঃখজনক — মির্জা আলমগীর


নারীশিক্ষা নিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর দেওয়া বক্তব্যকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক’ বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পাঠানোর জন্য হেফাজতে ইসলামের আমিরের বক্তব্যে আমি হতবাক ও বিস্মিত হয়েছি। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এই ধরনের বক্তব্য বাংলাদেশিদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিব্রত করবে। নারী-শিক্ষার সঙ্গে ধর্মের কোনো বিরোধ নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনে করে সুশিক্ষায় নারী আলোকিত না হলে তাদের বিকাশ ও প্রকৃত ক্ষমতায়ন হবে না।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শিক্ষিত না হলে সমাজকল্যাণ, অর্থনৈতিক ও মানবিক সাম্যসহ ইসলামের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী বুঝতে পারবে না। সন্তানের প্রাথমিক শিক্ষা লাভ ঘটে মায়ের কাছ থেকেই। নৈতিক ও অক্ষরপরিচয়ের প্রথম পাঠশালাই হলো মায়ের সাহচর্য। সুতরাং মা সুশিক্ষিত না হলে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানটি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত হয় না।

শিক্ষা নিয়ে নিজ দল বিএনপির নীতিও বিবৃতিতে তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সামাজিক অন্যায় ও বৈষম্য দূর করতে নারীশিক্ষা অপরিহার্য। বাংলাদেশের মোট জনসমষ্টির অর্ধেকই নারী। প্রাচীন প্রথা ও কুসংস্কারের নিগড় থেকে বেরিয়ে এসে জাতিগঠন ও জাতীয় অর্থনীতিতে যথার্থ ভূমিকা পালনের প্রধান শর্ত হচ্ছে নারীশিক্ষা। এটি বিএনপির ঘোষিত নীতি।

নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, নারীরা শিক্ষিত না হলে তাঁরা প্রতারণা, লাঞ্ছনা ও শোষণ বঞ্চনা থেকে রক্ষা পাবে না। নিগ্রহ ও অসম্মানের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের অক্ষরহীন নারীদের অবশ্যই পড়ালেখা করতে হবে। তা না হলে আমাদের দেশ ও সমাজ পিছিয়ে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হত্যার হুমকি ছাত্রলীগ নেতার


বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। শিক্ষককে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকর্তৃক হত্যার হুমকির প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এই হত্যা হুমকির সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস, পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অন্য দিকে, অভিযুক্ত একজন শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন ছাত্রলীগের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা। ফলে শিক্ষক-কর্মকর্তা আর কর্মচারীদের মুখোমুখি অবস্থানে শিক্ষার্থীরা। এই দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে গোটা ক্যাম্পাসে। সংঘর্ষের আশঙ্কায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ দিকে, শিক্ষককে ছাত্রলীগ নেতাকর্তৃক হত্যার হুমকির ঘটনা তদন্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন।

গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় কনফারেন্স রুমে এক সাংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় যারা যশোর শহরে বসে বিশ্ববিদ্যালয়কে অশান্ত করার হীন চেষ্টা করছে তাদের কঠোর হস্তে দমন করার জন্য সরকার ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২১ লাখ টাকার ফার্নিচার সরবরাহকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট ও রিজেন্ড বোর্ডের সদস্য সিনিয়র শিক্ষক ড. ইকবাল কবির জাহিদকে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

একপর্যায়ে তিনি প্রফেসর ড. জাহিদকে হত্যার হুমকি দেন বলে একটি মোবাইল কল রেকর্ড শুনিয়ে ড. জাহিদ সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপুল বেনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডারে অংশ নিয়ে ২১ লাখ টাকার ফার্নিচার সরবরাহ করে। যা অত্যন্ত নিম্নমানের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই নিম্নমানের ফার্নিচার বুঝে নিয়ে বিল ছাড় না করার কারণে তিনি ড. ইকবাল কবির জাহিদকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

একই সাথে এই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তিনি গত সংসদ নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত নৌকা প্রতীক ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে ফেলার ঘটনাকে পুঁজি করে একটি মনগড়া বক্তব্য তৈরি করে একজন সিনিয়র শিক্ষককে হত্যার হুমকি প্রদানসহ তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন। 

একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়কে বহিরাগত সন্ত্রাসীমুক্ত করার দাবিতে অনঢ় শিক্ষকসমাজ। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নাজমুল হাসান।

এ দিকে নৌকা প্রতীককে অবমাননা করার অপরাধে শিক্ষক ড. জাহিদ ইকবালের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করেছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। তারা শিক্ষক ড. ইকবাল কবির জাহিদকে রাজাকার পরিবারের সদস্য এবং সাবেক শিবির নেতা বলে অভিহিত করে অবিলম্বে তার অপসারণ দাবি করেন। এসব দাবির পক্ষে-বিপক্ষে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে উভয়পক্ষ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ভিসি প্রশাসন পৃথকভাবে এই বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ভিসি ড. আনোয়ার হেসেন বলেন, আমার জীবন থাকতে কোনো শিক্ষককে অপমানকারী এই ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবে না। শহর থেকে কলকাটি নাড়ার মাধ্যমে একটি মহল এই সম্ভাবনাময় বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করার চক্রান্ত করছে। এটা হতে দেয়া হবে না। যারা নিম্নমানের ফার্নিচার সরবরাহ করে গায়ের জোরে বিল আদায় করে নিতে চায় তারাই এই হত্যার হুমকি প্রদান করে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে শুধু নয়; দেশের গোটা শিক্ষকসমাজকে কলুষিত করেছেন। তিনি এই ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের চিহ্নিতপূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহায়তা কামনা করেন।
  • নয়া দিগন্ত/ জানু ১৩, ২০১৯

শ্রমিকরা রাস্তায়, থেমে থেমে সংঘর্ষে আহত অর্ধশত


সাভারের আশুলিয়ায় টানা সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে তৈরি পোশাক শ্রমিকরা। রবিবার সকালে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার তৈরি পোশাক শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বাইপাইল আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন শাখা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলে শ্রমিকরা ধীরে ধীরে চলে যায়।

আশুলিয়ার  বেরন এলাকার শারমিন গ্রুপের এম ডিজাইন কারখানার এইচ আর এডমিন ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কারখানার কোন শ্রমিক বিক্ষোভ করেনি। সকালে কারখানার শ্রমিকরা শান্তভাবে ভেতরে প্রবেশ করে কাজে যোগ দেয়। কিছুক্ষণ পর বহিরাগত একটি গ্রুপ এসে আমাদের কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় আমরা বাধ্য হয়ে কারখানাটি ছুটি দিলে শ্রমিকরা বের হয়ে চলে যায়। 

তৈরি পোশাক কারখানার এই কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, আমাদের কারখানার শ্রমিকরা শান্তি মতো কাজ করে আসছে। কিন্তু তারা দুপুরে খাবারের সময় বা কোন প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে গেলে একটি অপরিচিত গ্রুপের লোকজন তাদের কে বিভিন্নভাবে মারধর করে এবং কারখানায় কাজ করতে নিষেধ করে। তিনি বলেন কিছু কিছু ভুঁইফোড় শ্রমিক সংগঠনের নামে একটি গ্রুপ দেশের পোশাকশিল্প কে অস্থিতিশীল করার লক্ষে পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। আমরা প্রতিদিনই শ্রমিকদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এই সব শ্রমিকরা কারখানার বাইরে গেলে ওই সব শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদেরকে বিভিন্নভাবে ভুল বুঝিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ এর দিকে নিয়ে যায়। যার ফলে আমরা বোঝানো সত্ত্বেও তা কোন কাজে আসছে না। এ বিষয়ে তিনি সরকার ও প্রশাসনের কাছে বিষয়টি সঠিক ভাবে অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তা না হলে ভবিষ্যতে তৈরি পোশাকশিল্পকে এই দেশে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হয়ে পড়বে। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক কারখানা মালিকদের এমন অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে পোশাক শ্রমিকরা জানান, আমরা কারো প্ররোচনায় নয়, নিজেদের স্বার্থে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি।  সোলাইমান নামে একজন পোশাক শ্রমিক জানান, নতুন ঘোষিত মজুরি কাঠামোতে আমার বেতন বেড়েছে এক হাজার টাকার মতো এর বিপরীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৫০০ টাকা। অন্যদিকে একজন হেলপারের মজুরি বেড়েছে তিন হাজার টাকা। তাহলে যে শ্রমিক টি কালকে গ্রাম থেকে এসে কাজে যোগদান করেই আট হাজার টাকা মজুরি পাবে আর আমরা পাঁচ বছর ধরে কাজ করে বেতন পাচ্ছি দশ হাজার টাকা। তাই অবিলম্বে তিনি এই মজুরি বৈষম্য সংশোধনের দাবি জানান।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শেখ রেজাউল হক দিপু বলেন,  শ্রমিকরা সকালে কারখানা থেকে একযোগে বের হয়ে বাইপাইল আবদুল্লাহপুর সড়ক জিরাবো বিশ মাইল সড়কসহ বিভিন্ন শাখা সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভাঙচুরের চেষ্টা করলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করি। এসময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের কিছুটা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে টিয়ার শেল জলকামান ব্যবহার করে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর তারা বিভিন্ন শাখা সড়কে অবস্থান নিলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তারা  চলে যায়। বর্তমানে শিল্প এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানু ১৩,২০১৮ 

ক্যাবের প্রতিবেদন — ঢাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ ভাগ


বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) রাজধানী ঢাকার খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবার দাম বিশ্লেষণ করে বলেছে, ২০১৮ সালে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ শতাংশ। পণ্যমূল্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে ৫.১৯ শতাংশ। এর আগে ২০১৭ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছিল ৮.৪৪ শতাংশ, পণ্যমূল্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়েছিল ৭.১৭ শতাংশ। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে গত বছর জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, প্রবৃদ্ধির হার কমেছে ২.৪৪ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্রসাধনী পণ্য সাবানের। পণ্যটির মূল্য গড়ে বেড়েছে ২০ শতাংশ।

গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাব এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াত ব্যয় বাদ দিয়ে জীবনযাপনের ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সংগঠনটি।

এ সময় ক্যাবের উপদেষ্টা এম শামসুল আলম, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান জানান, ঢাকা শহরের ১৫টি খুচরা বাজারের ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা সংস্থার তথ্য নিয়ে এই পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তারা। ভোক্তার ঝুলিতে যেসব পণ্য ও সেবা রয়েছে সেসব পণ্য ও সেবা পরিবারের মোট ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করে পণ্য ও সেবার ওজনের ভিত্তিতে শহুরে জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই হিসাব বের করেছে ক্যাব। 

দেশের মোট জনসংখ্যার বড় অংশ গ্রামে থাকলেও নিজেদের সামর্থ্যের অভাবে ব্যয়ের সার্বিক চিত্র তুলে আনা সম্ভব হয়নি জানিয়ে ক্যাব চেয়ারম্যান বলেন, শহুরে এই হিসাব সার্বিক চিত্র সম্পর্কে একটি আংশিক ধারণা দেবে। ক্যাব সভাপতি বলেন, আমাদের আয় বৈষম্য বাড়ছে। এটা শুভ লক্ষণ নয়। তবে, আমাদের আয় বাড়ছে। সেক্ষেত্রে কারো আয় বেড়েছে কোটি টাকা, কারো শত টাকা। তবে, মানুষের মধ্যে আয় বাড়ায় একটু স্বস্তির ভাব রয়েছে। যেভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে সেভাবে যদি আয় বাড়ার বিষয়ে সরকার নজর দেয় তাহলে ব্যয় নিয়ে মানুষ স্বস্তিবোধ করবে। 

তিনি বলেন- ক্যাবের পর্যবেক্ষণ, ২০১৮ সালে অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ছিল। মোটা চালের দাম ১৫ শতাংশ, ডালের দাম গড়ে ১৭ শতাংশ, তেলের দাম ২ শতাংশ, মসলার দাম ২২ শতাংশ, শাক-সবজির দাম প্রায় ১১ শতাংশ এবং চিনির দাম ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমেছে।

২০১৮ সালে দাম বেড়েছে: ক্যাবের হিসাবে ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে সাবানের। এই পণ্যটির দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া চালের গড় মূল্য ৮.৯১ শতাংশ, মাছের দাম ১৩.৫০ শতাংশ, শাক-সবজিতে ৯.৩৮ শতাংশ, পান-সুপারিতে ৭.১৮ শতাংশ, তরল দুধে ১৩.৩৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।

২০১৮ সালে দাম কমেছে: ২০১৮ সালে এর আগের বছরের তুলনায় ডাল, লবণ, মসলা, চিনির দাম কিছুটা কমেছে। দেশি মসুর ডালে ১২.৪৩ শতাংশ, আমদানি করা মসুর ডালে ১০.৮৪ শতাংশ, আস্ত ছোলার দাম ৩.৩৭ শতাংশ, দেশি রসুন ২০.৫৩ শতাংশ, আমদানি রসুন ৩২.৩৭ শতাংশ কমেছে। ভোজ্য তেল, গুঁড়ো দুধ, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও রেলের ভাড়া এই বছর ছিল অপরিবর্তিত। 

এই ব্যয়বৃদ্ধি যৌক্তিক কী না- এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম রহমান বলেন, ব্যয় বৃদ্ধির এই হার ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন রকম ফল বয়ে আনতে পারে। ব্যয় অনুপাতে একজন ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি না পেলে তো সেটা স্বস্তিদায়ক হবে না। আয় বৃদ্ধির ওপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। যদি ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় মানুষের আয় বৃদ্ধি হয় তাহলে সেটাই হবে স্বস্তিদায়ক। 

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, গত বছর আমদানি শুল্ক বাবদ এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা দিতে হয়েছে ভোক্তাদের। এটি প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের তুলনায় অনেক বেশি। ভোক্তাদের উপর থেকে এই শুল্কের হার কমাতে হবে। বাংলাদেশে আমদানি পণ্যের ওপর ২০১৭ সালে গড়ে ২৫.৬৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে গড়ে শুল্ক ছিল ৪.৭৩ শতাংশ, কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় এর হার ছিল ১২.১৯ শতাংশ।

ক্যাবের সুপারিশ: ক্যাবের প্রস্তাব অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সংস্কার এবং ‘প্রাইস স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ গঠন করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা। এলএনজি আমদানি সকল প্রকার শুল্ক-কর মুক্ত রেখে গ্যাসের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা। চিকিৎসকদের ফিসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ, ওষুধের মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুলভে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। শিক্ষা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করার লক্ষ্যে অবিলম্বে শিক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। শিক্ষার মান উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণে প্রণীত আইন ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯, প্রতিযোগিতা আইন ২০১২, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩, ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৫ এর বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানু ১৩,২০১৮ 

এমপির বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদারের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিক নেতাকে মারধর এবং চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলায় ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। আগামী ১৪ই জানুয়ারি সোমবার ভোর ৬টা থেকে ১৬ই জানুয়ারি বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট পালন করা হবে বলে শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

তবে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, বৃহসপতিবার রাত সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনের এমপি দিদারুল আলম দিদার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সমপাদক অলি আহমদ ও নগরীর অলংকার মোড় থেকে সীতাকুণ্ড রুটে চলাচলকারী ৮ নং রুটের মালিক সমিতির নেতাদের বাসায় ডাকেন। 

তিনি অলঙ্কার মোড় থেকে সীতাকুণ্ড রুটে গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ট্রেড ইউনিয়নের আইন ও শ্রমিকদের অর্পিত দায়িত্ব শ্রমিকের মতামত ছাড়া ছেড়ে দেয়া সম্ভব নয় বলে জানালে তিনি তাকে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে চাপ সৃষ্টি করেন।

তাতেও সম্মত না হওয়ায় এমপি দিদার এক পর্যায়ে ৮ নং রুটে মালিক সমিতির যুগ্ম সমপাদক খোরশেদ আলমকে নিজ হাতে মারধর শুরু করেন। এ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে এমপি দিদারুল আলম উত্তেজিত হয়ে শ্রমিক নেতা অলি আহমদের দিকে তেড়ে গিয়ে তাকেও মারধর করেন। প্রয়োজনে রিভলবার দিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে বেরিয়ে যেতে বলেন।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে সংগঠনের এক জরুরি সভায় ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী সোমবার ভোর ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় ৪৮ ঘণ্টা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুছা। মোহাম্মদ মুছা বলেন, এমপি দিদারের বিরুদ্ধে চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি ও মারধরের অভিযোগে সভায় ধর্মঘটের এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম দিদার মানবজমিনকে বলেন, শ্রমিক ফেডারেশনের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বরং শ্রমিক নেতা খোরশেদ আলমই ৮ নং রুটের পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করছে। চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে সে বোমা বানায়। সে বিএনপি-জামায়াতের লোক। বিএনপির উপর মহলের নির্দেশে সে গাড়ির ওপর বোমা মারে।
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানু ১৩,২০১৮ 

নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-আ.লীগের সংঘর্ষ, গুলিতে গার্মেন্টস কর্মী নিহত


নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় ক্ষমতাসীনদলের মাদক ব্যবসায়ী এক ইউপি মেম্বারের অনুসারীকে আটক করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে এক পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ পুলিশসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পুলিশ বহনকারী দু’টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ও প্রচুর ফাঁকা গুলি ছুড়ে। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে ঘটনাস্থলে। সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় দেড় ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঘটনটি ঘটেছে শনিবার রাতে বন্দর উপজেলার মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।

নিহত শ্রমিকের নাম আশিকুর রহমান (২৫)। তিনি মদনপুরের প্যানডেক্স গার্মেন্টের শ্রমিক ও একই এলাকার মদনপুরের চানপুর এলাকার শহীদুল ইসলামের ছেলে।

নিহতের পরিবারের লোকজন বলছেন, আশিকুর রহমান বিকালে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর সন্ধ্যায় বাজার করতে গেলে সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে প্রাণ হারান।

জানা গেছে, বন্দর উপজেলার মদনপুর বাসস্ট্যান্ড পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীনদলের আমির হোসেন ও খলিলুর রহমান খলিল মেম্বার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গত ১৮ই নভেম্বরও দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শনিবার সন্ধ্যায় মদনপুর এলাকার ড্রিমল্যান্ড নামের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে নূর নবী ও রিফাত নামের দুই যুবককে আটক করা হয়। তারা মূলত খলিল মেম্বারের লোক। এ খবর স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তখন খলিল মেম্বারের লোকজন এসে পুলিশকে ঘিরে ফেলে। তারা আটক দু’জনকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে। তখন পুলিশ বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা শুরু হয়। ওই সময়ে আমির হোসেনের লোকজন পুলিশের পক্ষ নিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ৭টায় মদনপুর এলাকার প্রভাবশালী ইউপি মেম্বার খলিলুর রহমান ও তার পক্ষের লোকজনও পুলিশকে ধাওয়া করলে পুলিশ পাল্টা অ্যাকশনে যায়। দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকে। বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল। সংঘর্ষ চলাকালে দুই গ্রুপের মাঝে পড়ে গার্মেন্ট শ্রমিক আশিকুর রহমান মারা যায়। 

এছাড়া সংঘর্ষে পুলিশের এস আই মোহাম্মদ আলী, কনস্টেবল দেবাশীষ, মোহন আহত হয়। এবং স্থানীয় অন্তত আরো ৪০ থেকে থেকে ৪৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বাবু নামের এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৯টায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বন্দর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় একজন শ্রমিক মারা গিয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। তবে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জানু ১৩,২০১৮