Search

Monday, July 29, 2024

১৯৫২ থেকে যত গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে এটিই সবচেয়ে ব্যাপক



বর্ষীয়ান রাষ্ট্রচিন্তাবিদ, তাত্ত্বিক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বহনকারী বদরুদ্দীন উমর রাজনীতি ও গবেষণায় সম্পৃক্ত রয়েছেন ৫৩ বছর ধরে। দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে শতাধিক বই রয়েছে তার। দেশের চলমান ছাত্র আন্দোলন ও এর ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিকা মাহজাবিন 


চলমান ছাত্র আন্দোলন ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।


উন্নয়নের কথা বলে অপকীর্তি ঠেকানো যায় না। মানুষের প্রতি জুলুমের বিষয়টিই শেষ পর্যন্ত সামনে এসেছে। বর্তমান আন্দোলনকে বুঝতে হলে অতীতে ঘটে যাওয়া গণ-অভ্যুত্থানগুলো বুঝতে হবে। এ অঞ্চলে মোট পাঁচটি অভ্যুত্থান হয়েছে। শুরুর অভ্যুত্থানটি ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। 


বাংলাদেশে এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি ব্যাপক ও বৃহৎ গণ-অভ্যুত্থান আমরা দেখছি। এ গণ-অভ্যুত্থানের প্রকৃত চরিত্র, কারণ এবং এর সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে— এটি বোঝার জন্য এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে সেদিকে তাকাতে হবে। সেটি ছাড়া এ গণ-অভ্যুত্থানকে বোঝার উপায় নেই। এখানে একটি কথা বলা দরকার, অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশে একমাত্র বাংলাদেশেই গণ-অভ্যুত্থানের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ অঞ্চলে ১৯৫২ সালে আমরা প্রথম গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম। দ্বিতীয় গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম ১৯৬৯ সালে। তৃতীয়টি ছিল ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে। নব্বইয়ে এরশাদের বিরুদ্ধে চতুর্থ গণ-অভ্যুত্থান দেখেছিলাম।


এই প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৫২ সালের ক্ষেত্রে সরকার পরিবর্তন সরাসরি হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের শুরুর দিকের এ সময়টাতে রাজনৈতিক দলগুলো গঠিত হয়। দেখা যায়, বায়ান্নর আন্দোলনের পরিণতিতেই ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ সরকার পতন হয়। শুধু যে সরকারের পতন হয়েছিল তা-ই নয়; মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলা থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল তাতে সামরিক সরকার টিকে থাকলেও আইয়ুব খানের সরকার উচ্ছেদ হয়ে ইয়াহিয়া খানের সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ১৯৭১ সালে জানুয়ারি কিংবা এর আগেই ব্যাপক গণ-আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলনের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে সরকার তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে আর সক্ষম ছিল না। তখন প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনী সরাসরি রাষ্ট্র শাসন পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছিল। ২৫ মার্চের পর যুদ্ধ আরম্ভ হয়; সেই যুদ্ধের ফলে সরকার নয়, পাকিস্তান রাষ্ট্রই উচ্ছেদ হয়েছিল। এতই শক্তিশালী ছিল তখনকার অভ্যুত্থান এবং জনগণের আন্দোলন। এরপর স্বাধীন বাংলাদেশে এরশাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এ আন্দোলন কিন্তু দেশব্যাপী বিশাল আন্দোলন ছিল না। সে সময় আমি লিখেছিলাম—এটি একটি নাগরিক অভ্যুত্থান। কারণ গ্রামাঞ্চলে এরশাদবিরোধী আন্দোলন ছিল না। এ আন্দোলন ছিল ঢাকা শহর এবং অন্যান্য শহরকেন্দ্রিক। সেই নাগরিক বুর্জোয়ার অভ্যুত্থানের ফলে এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল। দেখা গেছে, আগের চারটি অভ্যুত্থানের পরই সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭১ সালের গণ-অভ্যুত্থান পরিণতি লাভ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের এবং মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রই উচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। 


বর্তমানে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, এর ফলে চারদিকে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে এ সরকারের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ এ গণ-অভ্যুত্থান যত ব্যাপক হয়েছে এর আগে কোনো অভ্যুত্থান এত ব্যাপক কখনো হয়নি। ঢাকা শহর এবং অন্যান্য শহরাঞ্চলে তো বটেই সমগ্র গ্রামাঞ্চলে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় না গিয়ে সরকার ছাত্রদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করেছে এতে এ আন্দোলন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। জনগণ যে যার পক্ষ থেকে এ আন্দোলনে শরিক হয়েছে। এ কথা বলা দরকার, ছাত্ররা যে আন্দোলন করেছে তা আর কোটার আন্দোলন হিসেবে দেখলেই চলবে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্রলীগ যে তাণ্ডব, নির্যাতন এবং নানাভাবে জুলুম চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ ছাত্রদের ক্ষোভ ছিল। এ ক্ষোভের একটি ভূমিকাও ছাত্রদের কোটা আন্দোলনে পড়েছে। এটিকে শুধু কোটা আন্দোলন, শুধু চাকরির আন্দোলন হিসেবেই দেখলে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল তার প্রতিক্রিয়া ছিল কোটা আন্দোলনে। সরকারি আক্রমণের কারণে এই কোটা আন্দোলন জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে একটি অভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং ব্যাপকভাবে সারা দেশে অভ্যুত্থান হয়েছে। 


শুধু ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের কারণে জনগণ এ অভ্যুত্থানে নেমেছে এমন নয়। সারা দেশে জনগণের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সবকিছুর দাম বেপরোয়াভাবে বেড়েছে। সরকার জনগণের মতপ্রকাশের ওপর, বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করেছে। সংবাদপত্রগুলোয় সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ করে সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে কিছুই বলা যায় না। এক অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নেই। তাদের ধারণা, এ সরকার যত দিন থাকবে তত দিন পর্যন্ত ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, দেশের টাকা পাচার, সরকারের প্রজেক্ট থেকে টাকা চুরি, এসব বন্ধ করা কিছুতেই সম্ভব হবে না। কাজেই অভ্যুত্থান এখন হয়েছে। 


এ অভ্যুত্থান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে বলে সরকার দাবি করছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এত দিনেও সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। এখন পর্যন্ত তারা কারফিউ দিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট বন্ধ ও সীমিত রাখার মাধ্যমে তথ্যপ্রবাহের ওপর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর থেকে বোঝা যায়, তারা এখনো পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, কোটা আন্দোলনের নেতাকর্মীদের তারা নতুন করে ধরপাকড় করছে। তাদের জোরপূর্বক গ্রেফতার করে তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এর পরিণতি যে কি দাঁড়াবে! নতুনভাবে চারদিকে আন্দোলন শুরু হয় কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়। চারদিকে সরকারের নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। এটা যে শুধু দেশেই হচ্ছে তা নয়। সারা দুনিয়ায়; শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, বুদ্ধিজীবীরা, লেখকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং এ হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ঢাকায় ১৪টি দেশের কূটনৈতিক মিশন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বরাতে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কিন্তু আসলে কত লোক যে মারা গেছে তার কোনো হিসাব নেই। হতে পারে শুধু হাসপাতালের তথ্য দিয়ে হিসাব করা হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালের বাইরে যাদের মেরে ফেলা হয়েছে তাদের তো হাসপাতালে আনা হয়নি। কত লোক মারা গেছে তার হিসাব আসলে নেই। এই যে বেহিসেব হত্যাকাণ্ড, এর বিরুদ্ধে জনগণ চারদিকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এ কথা বলা যায় না যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পরিস্থিতি যেভাবে আছে এতে নতুনভাবে আবার একটা আন্দোলন; আরেকটা ধাক্কা আসার সম্ভাবনা পুরোপুরিই রয়েছে। এ ধাক্কায় সরকারের অবস্থা কী হবে সেটি ভবিষ্যতেই দেখা যাবে।

 



আপনি ঊনসত্তর সালের গণ-অভ্যুত্থান দেখেছেন। এর সঙ্গে এবারের আন্দোলনকে কীভাবে তুলনা করবেন?


ঊনসত্তর সালের আন্দোলনের সঙ্গে এবারের আন্দোলনের সাদৃশ্য রয়েছে। সেটি হলো, আইয়ুব খান ১০ বছর পাকিস্তান শাসন করেছিল। ১০ বছর পর ‘‌ডিকেড অব ডেভেলপমেন্ট’ বলে চারদিকে খুব উৎসব শুরু হয়েছিল। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে সমগ্র দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, বিক্ষুব্ধ হয়েছে এবং এ সরকারের পরিবর্তন চেয়েছে। দেখা গেল, উন্নয়নের কথা বললেও আইয়ুব খানের আমলে যে শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হয়নি। উপরন্তু উন্নয়ন সত্ত্বেও শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ একটি পর্যায়ে এসেছিল। সেখানে উন্নয়নের কথা মানুষ চিন্তা করেনি, বরং তাদের ওপর কত নির্যাতন হয়েছে সেটি চিন্তা করেছে। কারণ আইয়ুব খানের উন্নয়ন জণগণের কাজে আসেনি। এ উন্নয়নের ফলে শাসক শ্রেণীর লোকজনই সুবিধা পেয়েছিল। বর্তমান সরকারও গলা ফাটিয়ে উন্নয়নের কথাই বলে যাচ্ছে। দেখা যাবে যে বড় বড় এ প্রকল্পে আইয়ুব খানের আমলে যা হয়েছিল তার চেয়েও খারাপ অবস্থা। এ রকম বড় প্রকল্পগুলোয় আইয়ুব খানের আমলে সে রকমভাবে চুরি হয়নি। এখন বড় বড় প্রকল্প মানে বড় বড় চুরি। লাখ লাখ কোটি টাকা এসব প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে। এর থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন, সরকারি আমলা ও সুবিধাভোগী লোকজন হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এভাবে লুটপাট করে তারা যে অবস্থা তৈরি করেছে দেশে তাতে উন্নয়নের ফল জনগণের কাছে পৌঁছেনি। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে মানুষের আয়-মজুরি সেভাবে বাড়েনি। কাজেই তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে। মানুষ আগে যে তিনবেলা খেত, তারা এখন দুই বেলা-এক বেলা খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে আছে। মাছ-মাংস যেভাবে খেত সেভাবে এখন আর পারছে না। খাবার জিনিসও কমে গেছে। 


একের পর এক সরকারি কর্তাব্যক্তির হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির রিপোর্টের প্রভাবও জনগণের মধ্যে পড়েছে। বড় বড় অবকাঠামো সাধারণ মানুষের কতটুকু উপকারে এসেছে? শিক্ষা, স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে দেশের মানুষ পিছিয়ে যাচ্ছে। আইয়ুব খান যেমন উন্নয়নের কথা বলে পার পায়নি; বর্তমান এ সরকারও উন্নয়নের কথা বলে পার পাবে বলে মনে হয় না।  


সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যমান পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করা হচ্ছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?


আওয়ামী লীগ এখন বেকায়দায় পড়ে দোষ কার ঘাড়ে চাপাবে এটি ভেবে অস্থির আছে। এক্ষেত্রে তো তারা বিএনপি-জামায়াত ছাড়া আর কিছু দেখে না। তারা বাংলাদেশের জনগণকে দেখে না। জনগণ যে তাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে এ চিন্তা তাদের নেই। এ চিন্তা করার ক্ষমতাও তাদের নেই। কিন্তু এ কথা বলে পার পাওয়ার উপায় তাদের নেই। এজন্যই তারা বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করছে। এটি ঠিক যে বিএনপি-জামায়াত এ আন্দোলনে কিছুটা অংশগ্রহণ করেছে। এতে দোষের কিছু নেই। এমন একটি অভ্যুত্থান-আন্দোলন হলে জামায়াত বা বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকবে? আমরা মনে করি, এ দল দুটির যতটা অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল ততটা অংশগ্রহণ তারা মোটেই করেনি। নিজেদের দেউলিয়াপনার কারণে বিএনপি ও জামায়াত সেভাবে নামেনি। নামা দরকার ছিল তাদের। কিন্তু তাদের সেই ক্ষমতা নেই। এখন আওয়ামী লীগ যে তাদের দোষারোপ করছে, এতে আওয়ামী লীগের কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো বিএনপি-জামায়াতেরই লাভ হচ্ছে। যে কাজ তারা করেনি সেই কাজের দায়িত্ব তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে জামায়াত ও বিএনপিকে তারা গৌরবান্বিতই করছে। এর ফলে তাদের শক্তিই বাড়াচ্ছে। এটি আওয়ামী লীগের চরম মূর্খতা ও দেউলিয়াপনার কারণ। ওবায়দুল কাদের তাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের রাস্তায় নামার যে ডাক দিয়েছিলেন সেটি অরণ্যে রোদন ছাড়া আর কিছু নয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা তার ডাকে সাড়া দেননি। কেউই রাস্তায় নামেননি। এ কথা তিনিই বিবৃতি দিয়ে বলেছেন। এদিকে অংশগ্রহণ করেনি বলে ঢাকার কিছু কিছু ওয়ার্ডের কমিটি বাদ করে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেরাই দলের পক্ষে দাঁড়ায়নি। সরকারের পক্ষে আছে শুধু পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মি। 


আওয়ামী লীগের কর্মীরা রাস্তায় না নামার পেছনে কারণ কী হতে পারে?


তারা নামেনি এজন্য যে ওপরের সারির নেতারা অবস্থা না বুঝলেও নিচের সারির কর্মীরা অবস্থা বুঝতে পারছেন। সাধারণ কর্মী ও নিচের স্তরের কর্মীরা আওয়ামী লীগের দুর্বলতা কোথায় তা ধরতে পারছেন। সেজন্য আওয়ামী লীগ নেতারা যে নীতি অনুসরণ করছেন এটিতে যাওয়ার তাদের কোনো উৎসাহ নেই। তারা দেখছেন যে এটি করলে জনগণ তাদের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। সব জায়গায় তারা মার খাওয়ার ভয়ে আছেন এবং ভবিষ্যতে তাদের কী হবে বলা মুশকিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে চলে গেলে সাধারণ কর্মীরা ভয় করছেন তাদের ওপর বিপদ নেমে আসবে। 


চলমান আন্দোলন নিয়ে ভারত, চীন, রাশিয়াসহ পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকাকে আপনি কীভাবে দেখেন?


দেখা যাচ্ছে যে এ আন্দোলনে ভারত একেবারে চুপচাপ আছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এ আন্দোলনে নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বলেছেন। কিন্তু ভারত সরকার একেবারে চুপ করে আছে। তার কারণ বর্তমান ক্ষমতাশীল দল ভারতের ওপর নির্ভরশীল। তবে পশ্চিমারা নানাভাবে সমালোচনা করছে। বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, লেখক, অধ্যাপক, রাজনৈতিক নেতারা বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এমনকি ভারত সরকার বাংলাদেশের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকলেও সে দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী প্রতিবাদ করেছেন।


বণিক বার্তা/ সাক্ষাৎকারে বদরুদ্দীন উমর

জুলাই ২৯, ২০২৪। 

Tuesday, July 2, 2024

রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি, কেরানিও শতকোটি টাকার মালিক!



স্বাস্থ্যখাত

রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে দুর্নীতি। এখন চারদিকে শুধুই দুর্নীতির খবর। কোটি টাকা না, শত কোটি, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন তারা তা নিয়ে খুব বেশি অনুসন্ধানের কথা শোনা যায় না। আগে যেখানে এক কোটি টাকার কথা শুনলেও অনেকে চমকে উঠছেন, এখন সেখানে হাজার কোটি টাকার খবরেও কেউ অনুসন্ধান করছে না। সর্বশেষ নজরে এলো হোমিও প্যাথি ডাক্তার ডা. দিলিপ রায়ের দুর্নীতির খবর। কিভাবে তিনি এত টাকার মালিক হলেন সেটার অনুসন্ধান জরুরী। 


সাবেক এক মন্ত্রীর প্রশ্রয়ে স্বাস্থ্যখাতে ঠিকাদার মিঠুর উত্থান হয়েছে। দেশের বাইরে তার হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ। নিম্নমানের যন্ত্রপাতি এবং অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করে তিনি হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নিউজ করতে গিয়ে হুমকিতে পড়তে হয়েছে সাংবাদিকদেরও। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীরও অনেক কর্মকর্তা তাকে প্রটেকশন দিয়েছেন। এরপর এলো ড্রাইভার মালেকের শত শত কোটি টাকার সম্পদের কথা। সাবেক একজন মহাপরিচালকের ড্রাইভার হিসেবে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেনাকাটাসহ সব সেক্টরেই তার হাত ছিল। একজন ড্রাইভার কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন। এর পর এলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (পরিচালক) এডুকেশনে বিভাগে কেরানি আফজালের কাহিনী। কানাডায় তার বাড়ি আছে। কেরানি কিভাবে এত বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হলেন সেটাও এখনো অজানা। 


দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছিলেন, ‘এসব দুর্নীতিবাজদের মূল নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান হল সচিবালয়। সচিবালয় থেকে এগুলো বন্ধ করা না গেলে এদের কখনই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’ ঠিক তাই হচ্ছে। স্বাস্থ্যের মতো সব জায়গায় দুর্নীতির বিশাল নেটওয়ার্ক। সবাই মিলেই গড়ে তুলেছে সিন্ডিকেট। যে দুর্নীতির ভাগ পায় সবাই। ফলে এখন মন্ত্রণালয়ও কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে পারছে না। গত নির্বাচনের আগে আমলা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দুই শতাধিক ব্যক্তির দুর্নীতির তালিকা ছাপা হয়েছিল। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে তারা এখন আরও বেশি বেপরোয়া। 


দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার জহিরুল হক বলেন, ‘আমরা নিজেরাও অনুসন্ধান করে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। পাশাপাশি কারোর বিরুদ্ধে মিডিয়ায় খবর এলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমরা তদন্ত করে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। কাউকে ছাড় দেবো না।’


অথচ স্বাস্থ্য খাতে যাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাওয়া কথা সেই চিকিৎসকরাই বঞ্চিত হচ্ছেন। এখন হাসপাতালে অনেক শিক্ষকের পদ শূন্য। ছাত্ররা সুশিক্ষা থেকে বঞ্জিত হচ্ছে। শিক্ষকদের পদোন্নতি হচ্ছে না। মেধাবীরাও আসতে আগ্রহী হচ্ছেন না। একজন চিকিৎসকের চাকরি নেওয়ার পর অধ্যাপক হতে আর চাকরির বয়স থাকে না। দলবাজ না হলে পদোন্নতিও হয় না। পুরো স্বাস্থ্য খাতে যেন অশনি সংকেত। চিকিৎসকরাও কাজে উৎসাহ হারাচ্ছেন। জুনিয়রদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন অনেকে। ফলে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে দুর্নীতি দেখার কেউ নেই। সুযোগ সুবিধা না পেলে কেন তারা এই পেশায় থাকবেন? ফলে সামনের দিনে চিকিৎসা সেক্টরে ব্যাপক শূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে।


বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক দুলাল বলেন, ‘আসলে দুর্নীতি এমন ভয়াবহ পর্যায়ে গেছে। যারা দুর্নীতি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে দুর্নীতি বেড়ে গেছে। অনেক বড় কর্মকর্তাও এর সঙ্গেও জড়িত। সবাইকে জবাবদিহিতার মধ্যে না আনা গেলে বা পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে জবাবদিহিতায় আনতে না পারলে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না।’  


সর্বশেষ দুর্নীতির তথ্য সামনে এসে ডা. দিলীপ কুমার রায়ের। পনের বছরের ব্যবধানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়। রাজনীতির জাদুর ছোঁয়ায় তিনি হোমিও মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক থেকে হয়েছেন বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথী বোর্ডের চেয়ারম্যানও। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারে সিদ্ধহস্ত দিলীপ কুমার রায় টানা পাঁচ মেয়াদে ১৫ বছর ধরে হোমিও বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ দখলে রেখেও গড়েছেন রেকর্ড।


বোর্ডে দুর্নীতি হালাল করতে নীতিকে পাল্টে অনিয়মকেও তার ব্যক্তিগত নিয়মে পরিণত করেছেন। চা-পোষা হোমিও চিকিৎসক সেই দিলীপ কুমার এখন রাজনীতিতে বড় নেতা, স্বর্ণ, ডায়মন্ড, ইটভাটা, খাদ্য ও ওষুধের এক্সেসরিজের ব্যবসায়ীও। ফরিদপুরের বোয়ালমারী এলাকার ধোপা পরিবারের সন্তান দিলীপ কুমার এখন প্রতিষ্ঠিত এক স্বর্ণ ও হিরা ব্যবসায়ীর নাম। কারখানা গড়ে ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছেন খাদ্য, ওষুধ ও ওষুধের এক্সেসরিজ খাতেও। অথচ ৮০-এর দশকে হোমিওপ্যাথী মেডিকেল কলেজে ছিলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। পাশাপাশি হাঁটতেন রাজনৈতিক এক নেতার অনুসারী হয়ে। এরপর দিলীপ কুমারের উত্থান যত না আকাশচুম্বী ততই রহস্যে ঘেরা।


অথচ ২০১৫ সালের ৩০ জুন ডা. দিলীপ কুমার রায়কে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ অনুসন্ধান করেন দুদকের উপ-পরিচালক এসএম মফিদুল ইসলাম। তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দিলীপ কুমার রায়কে অব্যাহতি দেয় কমিশন।


ইত্তেফাক/ জুন ১০, ২০২৪

Monday, July 1, 2024

তিস্তা মহাপরিকল্পনার ভূরাজনৈতিক প্রভাব এবং করণীয়

মো:নিজাম উদ্দিন 



এক.
তিস্তার ভিক্টিম কারা?
উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলার দুই কোটি মানুষের জীবন জীবিকার সাথে গভীর ভাবে যুক্ত তিস্তা নদী।হিমালয় থেকে সিকিম এবং পশ্চিম বঙ্গের মধ্যে দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে ডুকেছে।তিস্তার পানি যেন উত্তরাঞ্চলের প্রাণ। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবায় ব্যারাজ নির্মার্ণ করে পানি আটকে দেয়!ফলে স্বাভাবিক পানির প্রবাহ হারায় তিস্তা!সেচ মৌসুমে তিস্তায় পানির অভাবে কৃত্রিম মরু করণ চলে আর বর্ষায় অস্বাভাবিক বন্যা, সময়ে অসময়ে বন্যাই এখন তিস্তা পাড়ের মানুষের নিয়তি। তিস্তার স্বাভাবিক যে পানি বাংলাদেশের পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না। ফলে উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবনের এক অভিশাপ এখন তিস্তা। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টোটা ।যার জন্য একমাত্র দায়ী আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। 

২০১১ সালে মনমোহন সিংহ সরকার বাংলাদেশের সাথে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তির কাছাকাছি চলে গেলেও সেই চুক্তিটি আজও হয়নি।বলা হয় পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বাধার কথা!এক যুগ পেড়িয়ে গেছে।যা দেওয়ার সব দেওয়াও হয়েছে শুধু বাংলাদেশ তার তিস্তার পানির ন্যা্য্য হিস্যা পায়নি!পাচ্ছে না।ফলে তিস্তা পাড়ের দুই কোটি মানুষ পানি সংকটের ভিক্টিম।

দুই.
তিস্তা মহাপরিকল্পনা কী?
প্রতিবেশীর সাথে পানিবণ্টন চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ সরকার তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়।যার নাম তিস্তা মহাপরিকল্পনা।অর্থাৎ ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি হলে কিন্তু এই তিস্তা মহাপরিকল্পনা করার প্রয়োজনই পড়তো না। এই তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে কেন্দ্র করেই এখন ভা র ত, চীন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তুলপাড় চলছে!খুব সহজ করে বললে তিস্তা মহাপরিকল্পনা হচ্ছে তিস্তা নদী পুনরুদ্ধার ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প । তিস্তা নদীর খনন, নদী শাসন,গভীরতা বাড়ানো,প্রস্থ কমানো,নৌ বন্দর নির্মাণ,তিস্তাকে কেন্দ্র করে উজানে সেচ মৌসুমে পানির জন্য বৃহৎ জলাধার নির্মাণ এবং নদীর দুই পাড়ে সেটেলাইট সিটি নির্মাণ।তিস্তা মহাপরিকল্পনার মাধ্যমে প্রায় ১৭১ বর্গ কিলোমিটার ভূমি উদ্ধার করা সম্ভব এবং নদীর গভীরতা বাড়বে পাঁচ থেকে দশ মিটার পর্যন্ত।  তিস্তা মহাপরিকল্পনা যা চীন করতে যাচ্ছে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে রংপুর বিভাগের তিস্তা পাড়ের দুই কোটি মানুষের জীবন জীবিকায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখবে। কিন্তু প্রকল্পটি নিয়ে এখন ব্যাপক রাজনীতি হচ্ছে। জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির খুব মুখ রোচক গল্প হয়েছে এখন এই তিস্তা। গল্প এখানেই থেমে নেই। চলুন, আরেকটু আগাই!

তিন.
তিস্তায় ভারতের রাজনীতিটা কী?
২০২২ সালে চীনা রাষ্ট্রদূত তিস্তা মহাপরিকল্পনাটি স্বশরীরে পরিদর্শন করতে গেলে ভারতও আড়মোড়া দিয়ে জাগে। চীন তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে একটি পরিক্ষা নিরীক্ষা চালায় এবং একটি রিপোর্ট তৈরি করে। এখন ভারত বলছে এই প্রকল্পে তারাও সহযোগীতা করতে আগ্রহী।অথচ জীবিত তিস্তাকে মেরে ফেলার জন্য দায়ী তারাই।সংবাদ বেরুচ্ছে -China, India in tug of war over Teesta project in Bangladesh. অর্থাৎ তিস্তা নিয়ে চীন -ভারতের টানাটানি! চীন একশো কোটি ডলার ব্যয়ের এই মহাপরিকল্পনার প্রাথমিক সমীক্ষা করেছে। বাংলাদেশ চীনের কাছে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যও সাহায্যেও চেয়েছে। এমনকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চীন বলেছিল দ্রুত কাজ শুরু হবে কিন্তু ভারতের বাঁধায় সব আটকে আছে। সরকারও ভা র তকে ক্ষেপাতে চাচ্ছে না।কারণ ক্ষমতার রাজনীতি! কারণ এ অঞ্চলের ভূরাজনীতি!পানি এখন ভারত বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন -তিস্তার সমাধান না হলে বাংলাদেশ যেন ভারতের সাথে ট্রানজিটের বিষয়টি পুনঃ বিবেচনা করে! 

ভারত কেন চীনের তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিরোধিতা করছে? এর তুমুল বিশ্লেষণ হচ্ছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীনের এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত নীতি।এই প্রকল্পে চীনের আগ্রহের কারণ তাদের মেগা প্রজেক্ট বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ। যা এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশকে যুক্ত করছে।বাংলাদেশ -চীন-ভারত-মিয়ানমার প্রস্তাবিত এই অর্থনৈতিক করিডোরের মাধ্যমে চীন তাদের ইউনান প্রদেশকে মিয়ানমার, বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গের সাথে যুক্ত করতে চায়।চীন তার বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর মাধ্যমে ভারতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে চায়।তিস্তা মহাপরিকল্পনা তাদের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভকেই প্রমোট করে যা কোনো ভাবেই ভা র ত করতে দিতে চায়না। 

চার.
তিস্তায় চীনের রাজনীতিটা কী?
তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীনের যুক্ত হওয়ার মানে হচ্ছে চীনের অবস্থান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত স্পর্শ কাতর জায়গা শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেকের খুব কাছাকাছি চলে আসা।শিলিগুড়ি করিডোর বা চিকেন নেকের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স  রাজ্য গুলোর সাথে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ভা র ত চায়না তার এমন একটি স্পর্শ কাতর জায়গার কাছাকাছি চলে আসুক চীন! তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীন যুক্ত হওয়া মানে বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির সাথে তার বন্ধন দৃঢ় হওয়া। তিস্তা মহাপরিকল্পনা যেহেতু ভারতের তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি না করার ফলে হচ্ছে তাই তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীন যুক্ত থাকলে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী চীনপন্থী কমিউনিটি গড়ে উঠতে পারে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে ভা রত বিরোধিতা আরো চরম পর্যায়ে চলে যেতে পারে। ভারত এই কাজটা হতে দিতে চায় না। ফলে সে নিজেই তিস্তা মহাপরিকল্পনায় যুক্ত হওয়ায় প্রস্তাব নিয়ে আসছে।অর্থাৎ চীনের প্রস্তাব নিজের স্বার্থে ভা র ত বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ,নাগরিক সমাজের এখন উচিত ভা র তের ভন্ডামির মুখোশটা খুলে দেওয়া, প্রশ্ন তোলা যে-ভাই তুমি আমার তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তিটা আগে করে দাও,তিস্তা মহাপরিকল্পনা করতে হবে না! 

পাঁচ.
তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের করণীয়? 
তিস্তা মহাপরিকল্পনায় ভারতের যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব হাস্যকর।বিষয়টা এমন- একটা নদীকে মেরে পুকুর বানিয়ে দেওয়ার মতো,কাউকে খুন করে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো!জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে আজ তিস্তা  মহাপরিকল্পনাকে চীন ভারতের সামনে একটা বড় বার্গেনিং টুল হিসাবে ব্যবহার করতে পারতো,দু দেশের কাছ থেকেই বাংলাদেশ বিশেষ সুবিধা আদায় করতে পারতো।কিন্তু এইটা এখন সম্ভব কী?কোনো অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থানের যে যে রাজনীতি তাই ভূরাজনীতি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশকে ভূরাজনৈতিক ভাবে আরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়ে যাবে। কারণ এই মহাপরিকল্পনায় যুক্ত হওয়া চীন ভারত উভয়ের জন্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
 
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই আগামী দিনের আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতির কথা মাথায় রেখে তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীনকে যুক্ত করা উচিৎ। বাংলাদেশে সম্ভাব্য ভারতীয় আগ্রাসন টেকানোর এটা একটা অগ্রীম কৌশল হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ কি তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে সে পথে হাঁটবে?

লেখক: মো:নিজাম উদ্দিন 
সহ-সভাপতি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ

Friday, June 21, 2024

লুটপাটকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন



বাংলাদেশি বাবাদের দুর্নীতি, লুটপাট আর পাচার করা টাকায় কতো যে সন্তান বিদেশে রাজকীয় জীবনযাপন করে আর বেগমপড়ায় কতো যে বেগমরা থাকেন সেই তালিকা কখনো আমরা পাবো না।

বেগমদের সাহেবরা তো ধনীই, উপরন্তু বিদেশে তাঁরা ‘সেকেন্ড হোম’ বানিয়েছেন বিনিয়োগকারী কোটায়। খরচ বেশি নয়; মাত্র দেড় লাখ কানাডীয় ডলার অর্থাৎ এক কোটি ১০ লাখ টাকা জমা দিলেই কানাডা আপনাকে নাগরিকত্ব দেবে। বেগমদেরও এই পরিমাণ টাকা দিতে হয়েছে। বিনিময়ে তাঁরা পেয়েছেন প্রবাসে নিরাপদ ঘর।

তবে বেগম পাড়ার সাহেবরা কিন্তু বছরের বেশির ভাগটা নিজের দেশেই কাটান। তারা সেখানেটাকা বানাবার মেশিন চালু রাখেন। যখন প্রয়োজন বা বিপদে পড়েন শুধু তখন তারা বেগমপাড়ায় যান।

আফসোস কয়েক বছর পেরিয়ে গেল, পদ্মা-যমুনায় অনেক জল গড়ালো, কানাডায় সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর ভাইসহ অনেকে এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেন, আদালত নির্দেশও দিল-কিন্তু জানা গেল না সেই সাহেবদের পরিচয়।

যারা বৈধভাবে বিদেশে সম্পদ করেছেন তাদের বিষয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু যারা অবৈধভাবে সম্পদ করেছেন তাদের বিষয়ে আপত্তি আছে।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন একবার বলেছেন, বিদেশে টাকা পাচারের সত্যতা মিলেছে।তবে রাজনীতিবিদেরা নন, বিদেশে বেশি অর্থ পাচার করেন সরকারি চাকুরেরা।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমার ধারণা ছিল রাজনীতিবিদদের সংখ্যা বেশি হবে, কিন্তু আমার কাছে যে তথ্যএসেছে, সংখ্যার দিক থেকে আমাদের অনেক সরকারি কর্মচারীর বাড়িঘর সেখানে বেশি আছে এবং তাঁদের ছেলেমেয়েরা সেখানে থাকে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর টাকা পাচারের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাই কোর্ট বেঞ্চ দুদকের কৌঁসুলি মো. খুরশীদ আলম খানকে আদালতে বলেন, “বিদেশে এত লোক টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারা টাকা নিয়ে যাচ্ছে, তাদের একজনের নামও পাননি! উই ওয়ান্ট টু সি দুদক কয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আপনারা অন্ততপক্ষে এটা দেখান যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। টাকা আসবে কি আসবে না, সেটা পরে দেখা যাবে।”

আফসোস কোনও কিছুতেই কিছু হয়নি। বরং সুইস ব্যাংকসমূহে বাংলাদেশি নাগরিকদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়।

মালয়েশিয়ায় ‘মাই সেকেন্ড হোম’ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। দুবাইয়েও একদল বাংলাদেশি বিপুল সম্পদের মালিক। যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর-কোথায় তাদের সম্পদ নেই?

আমি বেশ কয়েকবার লিখেছিলাম এমন যদি করা যায় যে মন্ত্রী-সংসদ সদস্য থেকে শুরু করেসব জনপ্রতিনিধি এবং সচিব থেকে শুরু করে সব সরকারি কর্মকর্তাদের একটাই পাসপোর্ট হতে হবে। বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনও দেশের পাসপোর্ট তাদের থাকতে পারবে না। দেশের বাইরে তাদের কোন বাড়ি এবং সম্পদ থাকবে না। তারা নিজেরা এবং তাদের সন্তানদের সবার আগে দেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাবেন। গণপরিবহনে চড়বেন। পাবলিক স্কুলে সন্তানদের পড়াবেন। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া সরকারি সব সেবা নিতে বাধ্য থাকবেন। এগুলো করা গেলে হয়তো বাংলাদেশটা বদলে যাবে।

আসলে আমরা কপাল পোড়া জনগণ! ভেবে দেখেন, আমাদের জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী-সংসদ সদস্য-আমলাদের প্রায় সবাই কথায় কথায় দেশের মঙ্গলের কথা বলেন। দেশ সেবা করছেন দাবি করেন। অথচ নিজেরা সরকারি হাসপাতালে যান না। সরকারি স্কুলে সন্তানদের পড়ান না।গড়ে তোলেন বেগমপাড়া। টাকা পাচার করেন বিদেশে।
জানি লিখে খুব একটা লাভ নেই। কারণ এই দেশ থেকে যারা বিদেশে টাকা পাচার করে, যারা বেগমপাড়ায় কিংবা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করে তারা তো কেউ সাধারণ জনগন নন, কৃষক নন। তারা তো সব বড় মানুষ, অনেক ক্ষেত্রে তারাই তো নীতি নির্ধারক!

এর আগে লিখেছিলাম, আপনার বাবার আয়টা হালাল তো? আপনার আত্মীয় যাকে নিয়ে এতো গর্ব করছেন, তিনি সৎভাবে আয় করেন তো?

মনে রাখবেন আইজিপি, সচিব থেকে শুরু করে যতো বড় কর্মকর্তাই তিনি হন না কেন এই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে বেতন স্কেল ৭৮ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়াসহ সব মিলিয়ে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা তিনি পেতে পারেন। এই যুগে সব খরচ সামলে এই টাকা দিয়ে তিনি কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হন, কী করে তাঁর এতো গাড়ি-বাড়ি থাকে, কী করে তিনি আপনাকে বিদেশে বাদামী স্কুলে পড়ানোর টাকা দেন? আপনার সেই প্রশ্ন তোলা উচিত।

শুধু সরকারি চাকরিজীবী নন, আপনার বাবা বা স্বজন রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, বিচারক, সাংবাদিক, শিক্ষক, উপাচার্য, প্রক্টর, প্রকৌশলী, বেসরকারি চাকরিজীবী কিংবা যাই হোন না কেন আপনি যদি গাড়ি-বাড়ি থেকে শুরু করে অঢেল সম্পদ দেখেন এবং যখন যা চান তাই পেয়ে থাকেন, কিন্তু আপনাদের জমিদারি না থাকে তাহলে তাঁর সম্পদের উৎস নিয়ে সন্দেহ করুন, প্রশ্ন তুলুন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা সামাজিক আন্দোলন জরুরী।

আসলে একটা ভয়াবহ সমাজব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি আমরা। এইতো ২০-৩০ বছর আগেও যে লোকটা দুর্নীতি করতো, তার দিকে সবাই বাঁকা চোখে তাকাতো।

আর আজকে যে কোনোভাবে টাকা আয় করলে বা গাড়ি-বাড়ি বা সম্পদ থাকলেই আমরা তাদের তোয়াজ করি‌। মসজিদ কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে নানা পদ-পদবীতে বসাই‌। নানাভাবে তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করতে চাই। অথচ এই নোংরা কিটগুলোর আশ্রয় হওয়া উচিত ছিল জেলখানায়।

কথাগুলো বলছি, কারণ এই বাংলাদেশ সংকটটা যতোটা না অর্থনৈতিক তার চেয়েও বেশি মানবিক মূল্যবোধের। সত্যিকারের সব সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শ্রদ্ধা জানাই। সব দপ্তরেই এমন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাদের জন্য শ্রদ্ধা।

তবে বাস্তবতা হলো একদল লোক দুর্নীতি-লুটপাট করে টাকা পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। আরেকদল মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম করেও কোনওমতে টিকে থাকতে পারছেন না।

ভয়াবহ এই দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা দরকার। এই দেশের প্রতিটা বড় বাড়ি, ফ্ল্যাট, দামি গাড়ির মালিকের সম্পদের উৎস সন্ধান করা উচিত। বিদেশে কাদের কাদের সম্পদ আছে-এগুলো অনুসন্ধান করা জরুরী। আশায় থাকি যদি কোনদিন এই রাষ্ট্রের হুশ ফেরে!

আর যতদিন সেটা না হয় সামাজিকভাবে আমরা যেন এই দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করি। অন্তত প্রশ্ন তুলি। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে এই লুটপাটকারি দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলতেই হবে।


শরিফুল হাসান : কলামিস্ট ও অভিবাসনবিশেষজ্ঞ

জুন ২১, ২০২৪ 

link - https://rajneete.com/opinion/vneu08c6r0

Friday, June 14, 2024

তিনি আমাদের ধ্রুব তাঁরা


স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান-এর পরিবার সংকট ও সম্ভবনা যেন একই সুত্রে গাঁথা, তার যৌক্তিক কারণ কি হতে পারে?

স্বাধীনতা’র ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল পরিচয়, প্রথম ব্রিগেড কমান্ডার জেড-ফোর্স, রণাঙ্গনে প্রথম ৫শো বর্গ মাইল ভূখন্ড স্বাধীন করাসহ বীরউত্তম উপাধিতে ভূষিত হওয়া এত কিছু অর্জন যার তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকদের বিশ্ব দরবারে জাতিস্বত্বা “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” হিসেবে পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যা তার রাজনৈতিক দর্শন।

তলাবিহীন ঝুড়ি ও রাষ্ট্রের বদনাম গুছিয়ে মাত্র সাড়ে চার বছরের মধ্যে আধুনিক স্ব-নির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন ১৯ দফা কর্মসূচী’র মাধ্যমে।

আর “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” ও “১৯ দফা’র” লক্ষ্য উদ্দেশ্য-কে হাজার বছর টেনে নিয়ে যাবার জন্য প্লাটফর্ম হিসেবে রেখে গিয়েছেন “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি”।

তার রাজনৈতিক ও আর্দশিক উত্তরসূরী আমরা কোটি কোটি জনতা। রক্তের ও রাজনৈতিক এবং আর্দশিক উত্তরসূরী “যিনি আমাদের ধ্রুব তাঁরা” তিনি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমান-এর যোগ্যতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে, বিনা ভোটে অবৈধ ভাবে দখলদার সরকার বাংলাদেশের স্বার্থ-কে বিকিয়ে দিয়ে নানান ধরনের পথ অবলম্বন করে চলেছেন শুধু মাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকা ও দীর্ঘস্হায়ী করার উদ্দেশ্য।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশ-দরদী তারেক রহমান তাঁর দল বিএনপি আগামী’র বাংলাদেশ-কে “কল্যাণ রাষ্ট্র” বি-নির্মাণে নেতৃত্বের উপযোগী সুশৃঙ্খল ব্যবস্থায় সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য সুদূর লন্ডন থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

দেশ-নায়ক তারেক রহমান-এর এই প্রচেষ্টা-কে ইতিবাচক দৃষ্টি’তে দেখছেন যেসমস্ত দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, নাগরিক সমাজ প্রতিনিধি, সকল স্তরের নেতাকর্মী সমর্থক ও সাধারণ নাগরিক।

তাদের সাথে সরকার প্রতারণার আশ্রয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে আজ্ঞাবহ গোষ্ঠী-কে দিয়ে বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী শক্তি-কে মানসিক ও কাঠামোগত ভাবে দূর্বল করতে এবং সমাজে বিভ্রান্ত তৈরি করতে এই পরিস্থিতিতে দুদকের এক মামলায় বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও উনার সহধর্মিণী প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার জুবাইদা রহমান-কে সাজা দিয়ে স্থাবর অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদালতের এই আদেশ।

দলের সকল স্তরের নেতাকর্মী সমর্থক বিশ্বাস করেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর একনিষ্ঠ লক্ষ্য স্থির রেখেই ধৈর্যের সাথে সবকিছু মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।

তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সবার চোখের সামনে ঝলঝল করছে। অনেকটা সুদূর প্রসারী চিন্তা থেকে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকর করতে তিনি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব থাকা অবস্থায় বিএনপি সরকারের সময়ে ২০০৫ সাল ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু করেন।

বাংলাদেশে গতানুগতিক ধারার আন্দোলনের বাহিরে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে, শান্তিপূর্ণ গণ-সমাবেশের মাধ্যমে গণ আন্দোলন তৈরি করা যায় তার দৃষ্টান্ত ইতিমধ্যে তিনি স্হাপন করেন বিভাগীয় গণ-সমাবেশ সফল করার মধ্যে দিয়ে।

তখনকার গণমাধ্যমে বিএনপি’র তৃণমূল সম্মেলন নিয়ে শিরোনামসহ সকল সংবাদ গুলো জলন্ত স্বাক্ষী।

আর ২০১৮ সাল ৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অন্যায় ভাবে দুদকে’র করা মামলায় আদালতের আদেশে প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা, প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের মাতা বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া-কে কারাগারে নিয়ে যাবার পর থেকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রতিটি সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের বিষয়ে কেউ নেতিবাচক প্রশ্ন কিংবা মন্তব্য করেননি।

সেজন্যই আওয়ামী দখলদার অবৈধ সরকারের নেতৃবৃন্দ দেশ-নায়ক তারেক রহমান-এর যোগ্যতাকে হিংসা করেন ও সবসময় একধরনের আতংকে ভোগে, স্বপ্ন দেখেন এই বুঝি তারেক রহমান এলেন…।

দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি থেকে ছোট্ট এই লেখায় একমাত্র অনুভূতি বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশদরদী তারেক রহমান ইনশাআল্লাহ সফল হবেন। হতেই তো হবে? “তিনি আমাদের ধ্রুব তাঁরা” বাংলাদেশের ভাগ্যে, বিএনপি’র ভাগ্যে আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান-এর উত্তরসূরীদের ভাগ্য যে একই সুত্রে গাঁথা।


লেখক:- শায়রুল কবির খান

সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী

সদস্য, বিএনপি চেয়ারপার্সন প্রেস উইং ও বিএনপি মিডিয়া সেল।



Wednesday, May 29, 2024

এই নতজানু বাংলাদেশ শহীদ জিয়ার নয়

প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান 


বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে অগ্রসরমান পৃথিবীর এক অনন্য বিস্ময়ের নাম বাংলাদেশ। যার সূচনা হয়েছিলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সাড়ে ৭ কোটি বাংলাদেশির বিজয়োল্লাসের মধ্য দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছিলো। সেদিন স্বাধীনতার মহান ঘোষক জেনারেল জিয়া পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন সেই বিদ্রোহই বিপ্লবের পথকে শাণিত করে। উন্মোচিত করে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই সবুজ গালিচায় মোড়ানো সার্বভৌম ভূখন্ড। 


শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার বাগবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে জিয়াউর রহমান দ্বিতীয়। ১৯৫২ সালে তিনি করাচি একাডেমি স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচিতে ডি. জে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৫৫ সালে সামরিক বাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। করাচিতে দু'বছর চাকরি করার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে পূর্ব পাকিস্তানে আসেন। এছাড়াও তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ লাভ করেন। একই বছর তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে পদোন্নতি পেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জয়দেবপুরে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। 


১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত, নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর বর্বর হামলা চালিয়ে হত্যা ও মানুষের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি শুরু করলে জিয়া দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধে পরাজিত হলে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও সেদিন দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। স্ত্রী- সন্তানদের জীবন বিপন্ন হতে পারে জানা সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করার জন্য নিজ নামে জেড ফোর্স গঠন করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে ১নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। 


দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হলে লাল সবুজের পতাকায় শোভিত স্বাধীন দেশে তিনি পুনরায় সেনাবাহিনীতে ফিরে যান এবং ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে তিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শেখ মুজিবের সরকার জিয়াউর রহমানকে 'বীর উত্তম' খেতাবে ভূষিত করে। 


১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের পর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ক্যু ও পাল্টা ক্যু‘র মাধ্যমে দেশ যখন চরম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকটে নিপতিত তখন জিয়াউর রহমান আবার দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। 


১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব ও সংহতির মধ্যদিয়ে তিনি গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্ত হয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রশ্নাতীত জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পাদপীঠে আসীন করে। 


জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ২৩ জুন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানিকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। 


জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পরপরই উন্নয়ন অভিযাত্রায় সূচনা হয়। এতো অল্প সময়ে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন খুব সম্ভবত পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্রনায়কের পক্ষে সম্ভব হয়নি। নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কিছু উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরা হলো- 


১) ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন সরকার সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল তথা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। মাত্র ৪টি পত্রিকা রেখে সকল পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। বাকশাল প্রবর্তনে রুষ্ঠ সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনে ব্যাকুল ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধান সংশোধন করে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন। জিয়াউর রহমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রথা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। গণমাধ্যমের উপর থেকে সকল কালাকানুন প্রত্যাহার করে মুক্ত স্বাধীন গণমাধ্যম চালু করেন। 


২) তিনি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের কুশীলব কর্নেল তাহেরকে গ্রেফতার করেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর অস্তিত্ব রক্ষা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অগ্রনায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। 


৩) সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল-পিআইবি প্রতিষ্ঠা করেন। 


৪) ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট পুরস্কার চালু অনুদান তহবিল গঠন, ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং ১৯৭৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চলচ্চিত্রে প্রেসিডেন্ট পুরস্কারের সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ বছরই তিনি জাতীয় জনসংখ্যা পরিষদ এবং এর সাথে স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগে যুক্ত করেন। 


৫) ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৬ সালে তিনি প্রবর্তন করেন একুশে পদক। 


৬) গুণী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মান জানাতে ১৯৭৭ সালে তিনি চালু করেন দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার 'স্বাধীনতা পদক' প্রবর্তন করেন। 


৭) শিল্প-সংস্কৃতিতে শিশুদের মেধা মননের বিকাশের লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৭৭ সালের ১৫ জুলাই পুরোনো হাইকোর্ট ভবনের পশ্চিম পাশে তিনি শিশু একাডেমির নতুন ভবন উদ্বোধন করেন। 


৮) ১৯৭৮ সালে তিনি কলেরা (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতাল, দক্ষ নার্স তৈরির লক্ষ্যে ৫ জানুয়ারি ১৯৮১ সালে ঢাকার মহাখালীতে নার্সিং কলেজ এবং ১৯৮১ সালের ৩ এপ্রিল তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। তারই পৃষ্ঠপোষকতায় নিপসম, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও ইপিআই প্রতিষ্ঠিত হয়। 


৯) তিনি ৫০ শয্যার ক্যান্সার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, পিজি হাসপাতালের সি-ব্লক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটসহ চিকিৎসকদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বিএমএ ভবন-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 


১০) বাংলাদেশি জাতির মননের প্রতীক বাংলা একাডেমির উন্নয়নে বাংলা একাডেমি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮' জারি করেন। 


১১) ১৯৭৬ সালের ১ নভেম্বর কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান যশোরের উলশী-যদুনাথপুর খাল খননের মাধ্যমে খাল খনন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। 


১২) ১৯৭৭ সালের ২২ মে জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। 


১৩) ১৯৭৯ সালের ৯ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৭৭) প্রদান করেন। জিয়ার আগ্রহেই ১৯৮১ সালের মার্চ-এপ্রিলে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। 


১৪) ১৯৭৮ সালে ৪টি বিভাগীয় শহরে ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। 


১৫) শিশুদের বিনোদনের জন্য ১৯৭৯ সালে রাজধানীর শাহবাগে তিনি প্রতিষ্ঠান করেন জাতীয় শিশু পার্ক। শিশুর স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও পরিচর্যার জন্য শ্যামলীতে একটি শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। 


১৬) ১৯৭৬ সালে শিশুদের সাংস্কৃতিক বিকাশ তরান্বিত করতে পুনরায় রিয়েলিটি টেলিভিশন প্রতিযোগিতা 'নতুন কুড়ি' চালু করেন। 


১৭) ১৯৮০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। 


১৮) দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্ক প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেন তিনি।


১৯) দেশে সকল ধর্মের মানুষের স্বীয় ধর্ম পালনের সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। 


২০) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। 


২১) পল্লী চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন এবং প্রথম বছরেই ২৭ হাজার লোককে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। 


২২) ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৩) ১৯৮১ সালের ১৯ জানুয়ারি দেশের মেধাবী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বরেণ্য ব্যক্তিদের একটি বহর নিয়ে তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে হিযবুল বাহার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমি ধারণা সৃষ্টি হয়। 


২৪) তিনি বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় দফতর প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৫) বিদ্যুতের আলো সারাদেশে পৌঁছে দিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। 


২৬) তিনি জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৭) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপন অভিযান পরিচালনা করেন। 


২৮) ১৯৮০ সালের ২৬ ডিসেম্বর জিয়া বাংলাদেশি কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঢাকায় ফরেন অ্যাফেয়ার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। 


২৯) ইরান-ইরাক যুদ্ধ বন্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পরিচিতি ও ভাবমুর্তি বৃদ্ধি করেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। 


৩০) নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭৮ সালে প্রথম মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু করেন। 


৩১) বাংলাদেশে প্রথম মহিলা রাষ্ট্রদূত ও মহিলা অডিটর জেনারেল নিয়োগ করেন। 


৩২) মহিলা পুলিশ, আনসার ভিডিপি বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। কর্মজীবী মহিলাদের সুবিধার্থে তিনিই প্রথম কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করেন। 


৩৩) জাতীয় সংসদে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ১৫ থেকে ৫০-এ উন্নীত করেন। 


৩৪) ১৯৮০ সালে তিনি যৌতুক বিরোধী আইন প্রণয়ন করেন। ১৯৭৮ সালে কুয়েতে ৬০৭৮ জন শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যমে বিদেশে মানবসম্পদ পাঠানোর সূচনা করেন প্রেসিডেন্ট জিয়া। 


৩৫) মুজিব আমলের মৃতপ্রায় কলকারখানাগুলো তিনি বেসরকারিকরণের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবীত করেন। 


৩৬) ১৯৭৭ সালে পোশাক কারখানা তৈরির মাধ্যমে তিনি দেশে তৈরি পোশাকখাতের সূচনা করেন। 


৩৭) ১৯৮১ সালে ঢাকায় জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। 


৩৮) প্রেসিডেন্ট জিয়ার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ লাভ কর। 


৩৯) উপজাতীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে রাঙামাটিতে 'উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট এবং নেত্রকোনার বিরিশিরিতে উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। 


শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন-সার্বভৌম ভূখন্ড দিয়েছিলেন। জাতি হিসেবে তিনি গড়ে দিয়েছিলেন আত্মমর্যাদার ভীত। যা তার স্বল্প সময়ের শাসনকালে বিশ্বব্যাপী প্রসংশিত ও অনুকরণীয় হয়। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এখন আমরা একটি উল্টো বাংলাদেশকে দেখছি। যে বাংলাদেশে নেই গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন। শৌর্য-বীর্য আর সমৃদ্ধির বাংলাদেশের পরিবর্তে এখন আমরা এক নতজানু, ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু বাংলাদেশকে দেখছি। পরাধীনতার এই বাংলাদেশ আমার না। এটি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া সেই বাংলাদেশ নয়। 


লেখক: প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান  

মহাসচিব, ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইউট্যাব।

Tuesday, April 23, 2024

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি

 

মার্কিন মানবাধিকার রিপোর্ট-২০২৩

২০২৩ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিষয়ে এ কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার, এপ্রিল ২২, ২০২৪  এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিধিবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতন, স্বেচ্ছাচারমূলক আটক-গ্রেপ্তার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক বন্দি, মতপ্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা, শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অযৌক্তিক বিধিনিষেধ এবং সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার পরিবর্তনের সুযোগ না থাকাসহ নানা ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেখা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় শাস্তির বদলে দায়মুক্তিরও তথ্যও পাওয়া গেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের সরকার কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার বা সরকারি সংস্থা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ বিধিবহির্ভূত নানা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে খবর রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাতে মোট কতজন নিহত হয়েছে, সরকার সেই সংখ্যা প্রকাশ করেনি, আবার ঘটনাগুলো তদন্তে স্বচ্ছ পদক্ষেপও নেয়নি।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিগত বছরের তুলনায় কমেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত আটজনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালে মৃত্যু হওয়ার কথা বলেছে।

অন্যদিকে আরেকটি মানবাধিকার সংগঠন একই সময়ে ১২ জনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার খবর দিয়েছে। রিপোর্টে ২৬ মার্চ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে গুম ও অপহরণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে বলেও প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে।

তারা বলেছে, বাংলাদেশে স্বাধীন আন্দোলনে বাধা দেয়া হয়। আছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সরকার পরিবর্তনে নাগরিকদের অক্ষমতা। রাজনৈতিক অংশগ্রহণে গুরুতর ও অযৌক্তিক বাধা। বাংলাদেশে সরকারে আছে মারাত্মক দুর্নীতি। দেশের ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলোর ওপর আছে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ অথবা হয়রানি। সরকারের তরফ থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, নিষ্ঠুর নির্যাতন, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ ও শাস্তি দেয়া হয়। আছে জীবনের প্রতি হুমকি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর সমস্যা, রাজনৈতিক বন্দি ও আটক। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি এমন অজুহাতে মিথ্যা অভিযোগসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে এসব কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ওই বছরে বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তা পুনঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওই বছরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসনকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে তাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বাংলাদেশের হাসপাতালে। এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে ২০০৮ সালের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় তাকে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে তাকে জেলখানা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ২০২০ সালে সেখান থেকে তাকে স্থানান্তর করে গৃহবন্দি করা হয়। রাজনৈতিক বন্দি ও আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ও দেশের ভিতরকার আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার তথ্যপ্রমাণে ঘাটতি আছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, তাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য রাজনৈতিক ছক সাজানো হয়েছে। পক্ষান্তরে প্রসিকিউটররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কিছু দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করেছেন। এই রিপোর্টে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার দিকেও দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংবিধান সংবাদ মাধ্যম ও মিডিয়ার সদস্যসহ সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। কিন্তু সরকার এই অধিকারে ঘন ঘন হস্তক্ষেপ করেছে। এক্ষত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সীমাবদ্ধতা আছে। সরকারের হয়রানি অথবা প্রতিশোধ নেয়ার ভয়ে সরকারের সমালোচনার ক্ষেত্র মিডিয়ার সদস্যরা ও ব্লগাররা নিজেরাই সেন্সর করেছেন। এতে তুলে ধরা হয়েছে সরকারি পর্যায়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র, বিচারের ক্ষেত্রে হয়রানি, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তারসহ নানা রকম নিষ্পেষণের কথা। উল্লেখ্য, প্রতি বছর সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সময় গত রাতে এই রিপোর্ট প্রকাশ হয়। তাতে বাংলাদেশ অধ্যায়ে আরও বলা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মিডিয়ার স্বাধীনতায় মারাত্মক বিধিনিষেধ আছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে আছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অথবা সহিংসতার হুমকি। সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় অথবা বিচার করা হয়। সেন্সরশিপ করা হয়। ইন্টারনেট স্বাধীনতায় আছে মারাত্মক বিধিনিষেধ। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অথবা স্বাধীন সমাবেশের ক্ষেত্রেও আছে বড় রকমের হস্তক্ষেপ। আছে সংগঠন, অর্থায়ন ও বেসরকারি এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আছে নিবর্তনমূলক আইন। মুক্তভাবে চলাচলে আছে বিধিনিষেধ। রিপোর্টে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতনের বিষয়ে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সদস্যদের শনাক্তে বা শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয় না। 

এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যেসব যুদ্ধাপরাধ ও নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে তার বিচার করার জন্য ২০১০ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেই আদালত শাস্তি দিয়েই যাচ্ছে। এর মধ্যে আছে মৃত্যুদণ্ড। অনেক পর্যবেক্ষক এই প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দেখেন। কারণ, আদালত বিশেষত বাছাই করে অভিযুক্ত করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের। এতে খেয়ালখুশিমতো ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সহ বেআইনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তার তদন্ত নিজেরাই করেছে। তারা এমন সব ঘটনা ঘটিয়েছে যেখানে তাদের শারীরিক মারাত্মক প্রহারে মানুষ আহত হয়েছে অথবা মারা গেছেন। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে কতজন মানুষ মারা গেছেন তার মোট কোনো সংখ্যা সরকার প্রকাশ করেনি। এমনকি এসব ঘটনার স্বচ্ছ তদন্তও করেনি। এই তদন্ত যারা করেছেন তাদের স্বাধীনতা ও পেশাগত মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। 

রিপোর্টে বলা হয়েছে, সারা বছরেই আইন প্রয়োগকারীরা তল্লাশি বা রেইড দিয়েছে কথিত সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ড, মাদক ও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিরুদ্ধে। কোনো কোনো ঘেরাওয়ের কালে, গ্রেপ্তারকালে সন্দেজজনক কিছু মৃত্যু ঘটেছে। একই ঘটনা ঘটেছে অন্য আইন প্রয়োগকারীদের অপারেশনেও। রিপোর্টে আরও বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমে যায় গত বছর। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আইন ও শালিশ কেন্দ্র রিপোর্ট করেছে যে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যকাণ্ড, অথবা হেফাজতে থাকা অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন আটজন। এর মধ্যে দুজন আইন প্রয়োগকারী এজেন্সির গুলিতে নিহত হয়েছেন। তিনজন নিহত হয়েছেন নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার আগে বা হেফাজতে নেয়ার পর শারীরিক নির্যাতনে। ২৬শে মার্চ সুলতানা জেসমিন র‌্যাবের হেফাজতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। র‌্যাব কর্মকর্তারা বলেছেন, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন আটক অবস্থায়। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা এটাকে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা এক্ষেত্রে প্রমাণ হিসেবে মাথার ক্ষতের কথা তুলে ধরেছে। র‌্যাবের ইউনিটের কমান্ড কর্মকর্তারা মিডিয়াকে বলেছেন, জেসমিন আর্থিক প্রতারণায় জড়িত থাকার জন্য তাকে তুলে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে। 

ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করে চাকরিপ্রত্যাশিতদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি একটি রিপোর্ট জমা দেয় আগস্টে। কিন্তু সেই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। অক্টোবরে হাই কোর্টের দু’জন বিচারক বলেন, এই রিপোর্ট অস্পষ্ট। গ্রেপ্তার ও আটকের বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যাখ্যা নেই এতে। এমন মন্তব্যের সময়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। ১৮ই মার্চ সাদা পোশাকে র‌্যাব কর্মকর্তারা এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে। এতে আহত হন একজন। ওই রিপোর্টে বলা হয়, মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপ এবং মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হচ্ছে গুম এবং অপহরণ অব্যাহত আছে। অভিযোগ আছে এসব করছে নিরাপত্তা সার্ভিসের লোকজন। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে একটি স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন রিপোর্ট করেছে যে, এ সময়ে ৩২ জনকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে। এসব ঘটনা প্রতিরোধে, তদন্তে বা শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে সীমিত উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো রিপোর্ট করেছে যে, জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন যারা তারা বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ভিন্ন মতাবলম্বী। গুমের অভিযোগের পর নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা কোনো রকম অভিযোগ ছাড়া কিছু মানুষকে ছেড়ে দিয়েছে। গ্রেপ্তার করেছে অন্যদের। ফ্রিডম হাউসের ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২৩ কান্ট্রি রিপোর্টে’ উল্লেখ করেছে যে, জোরপূর্বক গুম, গোপন জেলখানার ব্যবহার, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার ও নির্যাতন সহ মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বিষয়ক এজেন্সিগুলো। বছরজুড়ে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের ফিরিয়ে দিতে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যেসব সদস্য অপহরণে জড়িত তাদের বিচারের। ভিকটিমের পরিবারগুলোর সংগঠন মায়ের ডাক র‌্যালি করেছে। বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলেছে, তাদের কোনো সদস্য আইনগতভাবে, প্রশাসনিক, বিচারিক কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। মায়ের ডাক ও স্থানীয় মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অধিকারকে হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন জোরপূর্বক ও অনিচ্ছায় গুমের শিকার বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ বিষয়ক জাতিসংঘের চেয়ার-র‌্যাপোর্টিউর সহ জাতিসংঘের র‌্যাপোর্টিউররা। মার্চে সরকার জানায়, তারা ২৮ জন জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তির বিষয় দেখছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘের কাছে জোরপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংখ্যা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে উপস্থাপনের জন্য নাগরিক সমাজের সংগঠনের সমালোচনা করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ দেশে ফেরার একটি ট্রাভেল পাস নিশ্চিত করেন জুনে। তিনি বাংলাদেশ থেকে জোরপূর্বক গুম করার পর বৈধ কাগজ ছাড়া অবস্থানের কারণে ভারতে আট বছর আটকে আছেন। ২০১৫ সালে তাকে ঢাকার বাসা থেকে তুলে নেয় হয়। ভারত সীমান্তের কাছে তাকে ছেড়ে দেয়ার আগে দুই মাস নিখোঁজ ছিলেন। 

প্রতিবেদনে মিডিয়ার স্বাধীনতা অংশে বলা হয়, আইনে ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যকে সীমিত করা হয়েছে। কিন্তু পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে, বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিরুদ্ধে কথা বলাকে সরকার বিধিনিষেধ দিয়েছে বলেই মনে হয়। সাংবিধানিক কোনো পরিষদের সমালোচনাকে আইনে ফৌজদারি অপরাধ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে স্বাধীনতা যুদ্ধ, জাতীয় সঙ্গীত বা জাতীয় পতাকার  বিরুদ্ধে প্রাপাগাণ্ডা ছড়ানোর কারণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে। সরকারের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে সারাবছরই সরকার ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। আইনমন্ত্রী রিপোর্ট করেছেন যে, সারাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কমপক্ষে ৭০০০ মামলা মুলতবি আছে। আগস্টে সরকার ঘোষণা দেয়, তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পরিণত করবে। পার্লামেন্ট এই আইন পাস করেছে সেপ্টেম্বর মাসে। আইন ও সালিস কেন্দ্র রিপোর্ট করেছে যে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ১১৯টি ঘটনায় সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়েছে। আরেকটি মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন বলেছে, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাংবাদিকদের ওপর ৩০৯টি হামলা বা হয়রানির ঘটনা ঘটছে। আহত হয়েছেন ১৩৮ জন সাংবাদিক। রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট ও সুনাম নষ্ট করার জন্য প্রিন্ট, অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের অভিযোগে প্রথম আলোর সম্পাদক ও একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মার্চে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আওয়ামী লীগ পন্থি একজন আইনজীবি। এ অভিযোগে সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে আটক করে পুলিশ। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। এই আইনকে সংশোধন বা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী, নাগরিক সমাজের সংগঠন, সম্পাদক পরিষদ ও রাজনৈতিক দলগুলো।  জুনে জামালপুরে একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সাংবাদিক গোলাম রাব্বানি নাদিমকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ আটক করে আরও কয়েকজনকে। 

No significant changes in human rights situation in Bangladesh in 2023: US bureau

2023 Country Reports on Human Rights Practices: Bangladesh

BUREAU OF DEMOCRACY, HUMAN RIGHTS, AND LABOR

Tuesday, April 23, 2024


EXECUTIVE SUMMARY

There were no significant changes in the human rights situation in Bangladesh during the year.


Significant human rights issues included credible reports of: arbitrary or unlawful killings, including extrajudicial killings; enforced disappearance; torture or cruel, inhuman, or degrading treatment or punishment by the government; harsh and life-threatening prison conditions; arbitrary arrest or detention; serious problems with the independence of the judiciary; political prisoners or detainees; transnational repression against individuals in another country; arbitrary or unlawful interference with privacy; punishment of family members for alleged offenses of a relative; serious restrictions on freedom of expression and media freedom, including violence or threats of violence against journalists, unjustified arrests or prosecutions of journalists, censorship, and enforcement of or threat to enforce criminal libel laws to limit expression; serious restrictions on internet freedom; substantial interference with the freedom of peaceful assembly and freedom of association, including overly restrictive laws on the organization, funding, or operation of nongovernmental and civil society organizations; restrictions on freedom of movement; inability of citizens to change their government peacefully through free and fair elections; serious and unreasonable restrictions on political participation; serious government corruption; serious government restrictions on or harassment of domestic and international human rights organizations; extensive gender-based violence, including domestic and intimate partner violence, sexual violence, workplace violence, child, early, and forced marriage, and other forms of such violence; crimes involving violence or threats of violence targeting members of ethnic minority groups or Indigenous peoples; laws criminalizing consensual same-sex sexual conduct between adults; crimes involving violence or threats of violence targeting lesbian, gay, bisexual, transgender, queer, or intersex persons; significant restrictions on independent trade unions and workers’ freedom of association; and existence of the worst forms of child labor.


There were numerous reports of widespread impunity for human rights abuses. In most cases, the government did not take credible steps to identify and punish officials or security force members who may have committed human rights abuses.


Section 1.

Respect for the Integrity of the Person

A. ARBITRARY DEPRIVATION OF LIFE AND OTHER UNLAWFUL OR POLITICALLY MOTIVATED KILLINGS

There were reports that the government or its agents committed arbitrary or unlawful killings, including extrajudicial killings. Police policy required internal investigations of all significant uses of force by police, including actions that resulted in serious physical injury or death, usually by a professional standards unit that reports directly to the inspector general of police. The government, however, neither released official statistics on total killings by security personnel nor took transparent measures to investigate cases. Human rights groups expressed skepticism regarding the independence and professional standards of the units conducting these assessments. In the few known instances in which the government brought charges, those found guilty generally received administrative punishment.


Law enforcement raids occurred throughout the year, allegedly to counter terrorist activity, drugs, and illegal firearms. Suspicious deaths occurred during some raids, arrests, and other law enforcement operations.


Extrajudicial killings decreased from the previous year. Domestic human rights organization Ain o Salish Kendra (ASK) reported eight individuals died from January to September in alleged extrajudicial killings or while in custody, including two in shootouts with law enforcement agencies and three due to physical torture before or while in custody. According to another domestic human rights organization, of 12 incidents of alleged extrajudicial killings between January and September, four deaths resulted from law enforcement crossfire killings, four persons were shot to death by law enforcement officers, and four others died from alleged torture while in custody.


On March 26, Sultana Jasmine died in custody of the Rapid Action Battalion (RAB) due to brain bleeding. RAB officials said she suffered a stroke and fell while detained. Family members called the story a cover-up and pointed to evidence of a head injury. The commanding officer of the RAB unit involved told media they picked up Jasmine pursuant to a financial fraud complaint. The case filed against Jasmine under the Digital Security Act (DSA) “for siphoning money off from job seekers using her Facebook account,” however, was not recorded until the day after she was picked up. Following widespread media coverage of the death in custody, the High Court ordered the government to submit a report detailing the RAB officers involved in the incident and explaining why the RAB picked up Jasmine before a case was even filed. In May, the government formed a committee to examine the death and provide a report within 15 days. The committee turned over a report of the findings to the High Court in August, but the report was not made public. In October, two High Court justices stated the report was unclear and did not provide an adequate explanation of the circumstances of her arrest and detention. At the time of the justices’ comments, the report had still not been released to the public.


On March 18, plainclothes RAB officers shot and killed a man and injured another during an attempt to arrest a murder suspect in Narayanganj’s Sonargaon sub-district. According to witnesses, the man saw individuals in plainclothes who refused to identify themselves as they detained the suspect. Fearing an abduction, the man and other neighbors reportedly tried to intervene and as more individuals joined the commotion, the RAB resorted to gunfire and shot the man in the stomach. Authorities claimed ”miscreants” opened fire on the RAB officers, injuring four officers and causing them to return fire in ”self-defense.” Witnesses contradicted that story and said the individuals were unarmed.


There were no public reports of accountability for RAB officers who conducted alleged extrajudicial killings in 2022 against Shaheen Miah and Mohammad Raju.


B. DISAPPEARANCE

There were reports of disappearances by or on behalf of government authorities. Human rights groups and media reported disappearances and kidnappings continued, allegedly committed by security services. Between January and September, a local human rights organization reported 32 persons were victims of enforced disappearances. The government made limited efforts to prevent, investigate, or punish such acts. Civil society organizations reported most victims of enforced disappearance were opposition leaders, activists, and dissidents. Following alleged disappearances, security forces released some individuals without charge and arrested others.


Freedom House’s Freedom in the World 2023 Country Report noted, “security agencies continue to commit human rights abuses including enforced disappearances, the use of secret prisons, arbitrary arrests, and torture.”


Throughout the year, families of enforced disappearance victims called on the government to return their family members and prosecute members of law enforcement agencies involved in their abductions. Mayer Dak, an organization advocating for victim families, held rallies and issued a statement saying its members received no legislative, administrative, or judicial remedy for the incidents of enforced disappearances.


In February, media outlets reported UN rapporteurs, including the UN chair-rapporteur of the Working Group on Enforced or Involuntary Disappearances (WGEID), sent a letter to the government in December 2022 expressing concern over harassment of Mayer Dak and local human rights organization Odhikar.


In March, the government stated it was looking into the cases of 28 victims of enforced disappearance but criticized civil society organizations for allegedly providing inflated numbers of enforced disappearance victims to the United Nations.


In June, opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP) leader Salahuddin Ahmed, who was stranded in India for eight years without valid documents after being forcibly disappeared in Bangladesh, secured a travel pass to return home. In 2015, Ahmed was abducted from his home in Dhaka and disappeared for two months before being released across the border in India.


C. TORTURE AND OTHER CRUEL, INHUMAN, OR DEGRADING TREATMENT OR PUNISHMENT, AND OTHER RELATED ABUSES

Although the constitution and law prohibited torture and other cruel, inhuman, or degrading treatment or punishment, local and international human rights organizations and media reported security forces, including those from the intelligence services, police, and soldiers seconded into civilian law enforcement agencies, employed such practices. The law allowed a magistrate to place a suspect in interrogative custody, known as remand, during which questioning of the suspect could take place without a lawyer present. Human rights organizations alleged many instances of torture occurred during remand. Some victims who filed cases under the Torture and Custodial (Prevention) Act were reportedly harassed and threatened, while some withdrew their cases due to fear of reprisal.


According to multiple organizations, security forces reportedly used torture to gather information from alleged militants and members of political opposition parties. These forces reportedly used beatings with iron rods, kneecappings, electric shock, rape and other sexual abuse, and mock executions. Organizations also claimed security forces were involved in widespread and routine commission of torture, occasionally resulting in death, for the purpose of soliciting payment of bribes or obtaining confessions. According to civil society and media, impunity was a pervasive problem in the security forces, including but not limited to the RAB, Border Guards Bangladesh, Detective Branch of Police, and other units. Politicization of crimes, corruption, and lack of independent accountability mechanisms were significant factors contributing to impunity, including for custodial torture. While police were required to conduct internal investigations of significant abuses, civil society organizations alleged investigative mechanisms were not independent.


In July, human rights organizations and media reported a fellow inmate abused Runa Laila in Dhaka’s Kashimpur prison, with the support of the prison guards. According to the reports, Shamima Noor Papia, an expelled leader of the ruling Awami League’s (AL) youth wing, attempted to steal money from Laila through physical force. Papia and prison guards allegedly beat Laila, stripped her naked, coerced her to drink sewer water, and subsequently denied her medical treatment.


In June, media reported Ekramul Hossain Ershad died after alleged beatings in police custody. Police arrested Ershad on May 31 and took him to the hospital on June 3 where he was pronounced dead. His relatives claimed he died after severe beatings following his arrest.


Also in June, a senior judicial magistrate in Shariatpur asked police to act against two police officers over the alleged abuse to extort bribes of four accused persons in custody. The victims alleged the accused officers blindfolded them, beat them with a hammer, and removed their fingernails and toenails with pliers.


Prison and Detention Center Conditions

Prison conditions were harsh and at times life threatening due to severe overcrowding, inadequate facilities, and physical abuse.


Local human rights organization ASK reported 77 prisoners, of whom 42 were on trial and 35 were convicted, died in jail custody from January to September. Former detainees reported some inmates who died in prison were transported to a hospital and pronounced dead due to natural causes. Another local human rights organization claimed 94 individuals died in jail between January and September.


Abusive Physical Conditions: According to the Bangladesh Prisons Directorate (BPD), over 80,000 prisoners were held in 68 facilities across the country designed to hold approximately 42,600 inmates.


Conditions in prisons, and often within the same prison complex, varied widely. Authorities held some prisoners in areas subject to high temperatures, poor ventilation, and overcrowding.


In August, the Office of the Comptroller and Auditor General provided a report to parliament on prison conditions and noted prison meals were smaller than the minimums prescribed.


Administration: Prisons lacked any formal process for offenders to submit grievances and authorities rarely conducted investigations of credible allegations of mistreatment. Prisons had no ombudsperson to receive prisoner complaints.


Independent Monitoring: The government permitted visits from government inspectors and nongovernmental observers who were aligned with the ruling party. No reports on these inspections were released. The International Committee of the Red Cross continued to support the BPD and assisted 68 prison centers across the country. According to the BPD, district and magistrate judges visited the prisons at least once every month.


D. ARBITRARY ARREST OR DETENTION

The constitution prohibited arbitrary arrest and detention, but the law permitted authorities to arrest and detain an individual without an order from a magistrate or a warrant if authorities perceived the individual might constitute a threat to security and public order, or if authorities perceived the individual was involved with a serious crime. The constitution provided for the right of any person to challenge the lawfulness of their arrest or detention in court, but the government did not generally observe these requirements. Authorities often held detainees for a few days without divulging their whereabouts or circumstances to family or legal counsel, or without acknowledging having arrested them.


Arrest Procedures and Treatment of Detainees

The constitution required arrests and detentions be authorized by a warrant or occur because of observation of a crime in progress, but the law granted broad exceptions to these protections.


Under the constitution detainees had to be brought before a judicial officer to face charges within 24 hours, but this was not regularly enforced. The government or a district magistrate could order a person detained for 30 days to prevent the commission of an act that could threaten national security; however, authorities sometimes held detainees for longer periods with impunity.


There was a functioning bail system, but police routinely rearrested bailed individuals on other charges, despite directives from the Supreme Court’s Appellate Division prohibiting rearrest of persons on new charges without first producing them in court.


Authorities generally permitted defense lawyers to meet with their clients only after formal charges were filed in the courts, which in some cases occurred weeks or months after the initial arrest. Detainees were legally entitled to counsel even if they could not afford to pay for it, but the country lacked sufficient funds to provide this service. Many detainees were not permitted to communicate with others outside of detention.


Arbitrary Arrest: Arbitrary arrests occurred, often in conjunction with political demonstrations or speech, or as part of security force responses to alleged terrorist activity, and the government held persons in detention without specific charges, sometimes to collect information regarding other suspects. The expansiveness of the 1974 Special Powers Act granted legal justification for arrests that would often otherwise be considered arbitrary, since it removed the requirement that arrests be based on crimes that have occurred previously. Human rights activists claimed police falsely constructed cases to target opposition leaders, workers, and supporters, and that the government used law enforcement agencies to crack down on political rivals.


Police continued to arbitrarily arrest members of opposition political parties. In August, the Asian Human Rights Commission (AHRC) and CIVICUS Monitor issued a joint statement noting media had reported police sent over 800 BNP leaders to jail prior to protests at the end of July. The statement called on authorities “to release all those arrested for exercising their peaceful right to protest and to undertake a prompt and independent investigation into human rights violations and abuses committed by security forces and ruling party activists.”


Pretrial Detention: Arbitrary and lengthy pretrial detention continued due to bureaucratic inefficiencies, limited resources, lax enforcement of pretrial rules, and corruption. Lawyers attributed the overuse of laws such as the DSA, some of which had provisions that generally did not allow for bail, as another explanation for the high numbers of pretrial detentions. In some cases, the length of pretrial detention equaled or exceeded the sentence for the alleged crime.


In July, the Bangladesh Appellate Court extended the pretrial detention without bail of Khadija Kubra for four more months. Khadija, age 17, was a university student arrested in September 2022 under the DSA after a guest on a webinar she hosted in 2020 made remarks critical of the ruling party. In February, the High Court granted bail to Khadija but the state appealed the decision. In November, she was released on bail, but the charges against her remain.


E. DENIAL OF FAIR PUBLIC TRIAL

The constitution provided for an independent judiciary, but corruption and political interference compromised its independence. The government generally did not respect judicial independence and impartiality.


Human rights observers maintained that lower courts often ruled based on influence from or loyalty to political patronage networks, particularly in cases filed against opposition political party supporters. Observers claimed judges who made decisions unfavorable to the government risked transfer to other jurisdictions.


Observers alleged judges sometimes accepted bribes from attorneys or other court officials for bail or acquittal in criminal cases.


Corruption and a substantial backlog of cases hindered the court system, and the granting of extended continuances effectively prevented many defendants from obtaining fair trials. In some cases, defendants remained in custody during trial for longer than the maximum sentence of the crime for which they were charged. Media reported in June over 500,000 cases were pending with the High Court alone, with around 90,000 new cases filed every year. According to the Supreme Court Annual Report, the High Court disposed of 690 pending cases annually on average since 2018.


Defendants who could not afford an attorney or chose to remain undefended were not eligible for bail during proceedings. The National Legal Aid Services Organization offered some services to defendants who could not afford private attorneys, but access to those services often required burdensome formalities and extensive periods of time. Many defendants were unaware of these services.


Trial Procedures

The constitution provided for the right to a fair and public trial, but the judiciary did not always protect this right due to corruption, partisanship, and weak human resources. Legal experts noted prosecution witnesses often did not show up in court to give oral testimony and there were insufficient judges to handle the pending caseload in a timely manner.


Defendants did not have the right to a timely trial. Indigent defendants had the right to a public defender, but in many cases public defenders were not well prepared or adequately acquainted with details of the case. Trials were conducted in the Bengali language; the government did not provide free interpretation for defendants who could not understand or speak Bengali.


The government frequently did not respect the rights of accused persons to confront prosecution or plaintiff witnesses and present their own witnesses and evidence. Authorities did not always respect the right not to be compelled to testify or confess guilt, and defendants who did not confess were often kept in custody. Some defendants claimed police pressured them to confess under duress.


The administrative process by which lower court and jail authorities were notified of the outcome of High Court appeals was very slow.


Mobile courts headed by executive branch magistrates rendered immediate verdicts that often included prison terms for defendants who did not have legal representation.


In October, media reported the court granted the RAB additional time to submit its probe report in a high-profile case involving the killing of two journalists in 2012. This was the 104th deferral of the probe deadline. Law enforcement officials arrested and charged eight individuals with the double murder, but the RAB had not submitted its report.


Political Prisoners and Detainees

There were reports of political prisoners or detainees. Political affiliation was often a factor in claims of arrest and prosecution of members of opposition parties, including through spurious charges under the pretext of responding to national security threats.


Former prime minister and chairperson of the lead opposition political party BNP Khaleda Zia remained confined to her home. She was barred from receiving needed medical treatment abroad but was being treated in a Bangladeshi hospital. In 2018, she was sentenced to 10 years’ imprisonment on corruption and embezzlement charges first filed in 2008. Zia was transferred from prison to a hospital in 2019 and released to house arrest in 2020. International and domestic legal experts noted the lack of evidence to support the conviction and suggested a political ploy to remove the leader of the opposition from the electoral process, even as multiple corruption charges against Prime Minister Hasina were dropped by prosecutors.


The Bangladesh International Crimes Tribunal, established in 2010 to conduct trials of those accused of war crimes and atrocities that took place during the 1971 War of Independence, continued to issue sentences, including the death penalty, to those accused of crimes during the war. Many observers viewed the proceedings as politically motivated, as the court had almost exclusively indicted members of opposition political parties.


F. TRANSNATIONAL REPRESSION

The government used transnational repression to intimidate or exact reprisals against individuals outside its sovereign borders, including against members of diaspora populations, such as political opponents, civil society activists, human rights defenders, and journalists.


Threats, Harassment, Surveillance, and Coercion: According to the press, police and intelligence agencies continued to threaten, harass, and surveil human rights defenders, civil society leaders, and the family members of critics based outside of the country. Journalists living abroad continued to report police and intelligence agencies harassed and intimidated their relatives in the country to silence criticism. In March, four men allegedly associated with the ruling party attacked the brother of London-based journalist Zulkarnain Saer Khan, beating him with iron rods in retaliation for Khan’s Al-Jazeera reporting on the prime minister.


In July, the prime minister instructed the country’s overseas diplomats to “be vigilant” against persons spreading “antistate” propaganda so that the international community would not be “misled.”


In August, police arrested and detained Anisha Siddika on charges of conspiring to commit sabotage, three days after a widely shared Facebook post by her U.S.-based son, Michigan State University graduate student Tanzilur Rahman, criticizing the trial process of late war crimes convict Delwar Hossain Sayedee, an Islamic leader. A court granted her bail eight days later, after first denying it twice.


Misuse of International Law Enforcement Tools: There were credible reports that the government attempted to misuse international law enforcement tools for politically motivated purposes against specific individuals located outside the country. In July, media reported police flagged three journalists for Interpol as “cyber terrorists” propagating antigovernment propaganda.


Bilateral Pressure: There were credible reports the government, for politically motivated purposes, attempted to exert bilateral pressure on other countries aimed at having them take adverse action against specific individuals. In May, media reported the Ministry of Home Affairs sent Bangladesh missions abroad a list of those spreading “propaganda against the country” in foreign countries, instructing those missions to pressure host governments to take legal action against them under their existing laws.


G. PROPERTY SEIZURE AND RESTITUTION

The government did not implement a 2001 act to accelerate the process of return of land primarily to Hindu individuals. The act allowed the government to confiscate property of anyone whom it declares to be an enemy of the state. It was often used to seize property abandoned by minority religious groups when they fled the country, particularly after the 1971 independence war.


Minority groups continued to report land ownership disputes that disproportionately displaced members of Indigenous communities and ethnic minorities, especially in areas near new roads or industrial development zones. They also claimed local police, civil authorities, and political leaders were sometimes involved in evictions or shielded politically influential land grabbers from prosecution. While the law allowed for land restitution for Indigenous persons living in the Chittagong Hill Tracts (CHT), this rarely occurred.


H. ARBITRARY OR UNLAWFUL INTERFERENCE WITH PRIVACY, FAMILY, HOME, OR CORRESPONDENCE

The law did not prohibit arbitrary interference with private correspondence. Intelligence and law enforcement agencies could monitor private communications with the permission of the Ministry of Home Affairs, but police rarely obtained such permission when monitoring private correspondence. Human rights organizations alleged police, the National Security Intelligence, and the Directorate General of Forces Intelligence employed informers to conduct surveillance and report on citizens perceived to be critical of the government.


There were reports that government authorities arbitrarily entered homes; accessed, collected, or used private communications or personal data of targeted individuals based on exercise of their human rights; and punished family members for offenses allegedly committed by relatives.


In January, Israeli newspaper Haaretz alleged the country’s National Telecommunication Monitoring Center purchased vehicle-mounted surveillance devices from an Israeli company. As the two countries did not have diplomatic ties, the purchase was allegedly conducted via a firm registered in Cyprus.


Section 2.

Respect for Civil Liberties

A. FREEDOM OF EXPRESSION, INCLUDING FOR MEMBERS OF THE PRESS AND OTHER MEDIA

The constitution provided for freedom of expression, including for members of the press and other media, but the government frequently contravened this right. There were significant limitations on freedom of expression. Members of media and bloggers self-censored their criticisms of the government due to harassment and fear of reprisal.


Freedom of Expression: The constitution equated criticism of the constitution with sedition. Punishment for conviction of sedition ranged from three years to life imprisonment.


The law limited hate speech but did not clearly define it, which permitted the government broad latitude to interpret it. The government could restrict speech deemed to be against the security of the state; against friendly relations with foreign states; and against public order, decency, or morality; or which constitutes contempt of court, defamation, or incitement to an offense. The law criminalized any criticism of constitutional bodies.


The DSA, passed ostensibly to reduce cybercrime, provided for sentences of up to life imprisonment for spreading “propaganda” against the Bangladesh Liberation War, the national anthem, or the national flag. Throughout the year the government widely used the DSA against persons criticizing the government. Media and the law minister reported over 7,000 DSA cases pending across the country, with one nongovernmental organization (NGO) reporting police brought cases against 20 children aged 13 to 17 years.


The law was used against speech found on social media, websites, and other digital platforms, including for commentators living outside of the country. From January 2020 to March 2023, international rights organization Article 19 reported 229 journalists were indicted and 56 arrested under the DSA. The Centre for Governance Studies reported journalists made up 27 percent of those accused under DSA.


In May, the United Nations’ special rapporteur on extreme poverty and human rights expressed grave concern over the DSA’s misuse to create a climate of fear and censorship. Recommending immediate suspension of the law, he stated journalists, human rights defenders, opposition politicians, and academics were detained under the DSA for exercising their rights to freedom of expression and opinion.


Human rights organizations protested news in February that Hindu teen Poritosh Sarkar was put into solitary confinement for eight months after facing DSA charges for “hurting religious sentiments” through a 2021 social media post. Prison authorities told Sarkar’s family he was being kept in a solitary confinement cell without windows “for his safety” from local individuals offended by his post. The Rangpur Cyber Tribunal denied him bail three times before finally granting it in May 2022. In February, however, the court revoked his bail and sent him back to jail.


In August, the government announced it would replace the DSA with the Cyber Security Act (CSA); parliament passed the CSA in September. The CSA reduced penalties for many crimes, made some crimes bailable that previously were not, and eliminated jail time as a punishment for defamation. The CSA, however, recycled almost all DSA sections, and the law continued to allow police the power to search, seize, and arrest suspects without a warrant. Observers charged the CSA was simply the same law with a new name and that the law continued to criminalize free speech. Cases initiated under the repealed DSA continued under the CSA.


Violence and Harassment: Authorities, including intelligence services and student affiliates of the ruling party, subjected journalists to violence, harassment, and intimidation, especially when tied to the DSA, which human rights activists called a government and ruling party tool to intimidate journalists. Individuals faced the threat of being arrested, held in pretrial detention, subjected to expensive criminal trials, fines, and imprisonment, as well as the social stigma associated with having a criminal record.


ASK reported 119 instances of journalist harassment from January to June. Another local human rights organization reported 309 cases of attacks on or harassment of journalists between January and September, including 138 journalists injured.


In late March, an allegedly pro-ruling party lawyer filed a DSA charge against the editor and a reporter of prominent newspaper Prothom Alo, accusing them of using print, online, and electronic media to “tarnish the image and reputation of the state.” Police detained the reporter, Shamsuzzaman Shams, for 20 hours on unclear grounds. The charges against Rahman and Shams stemmed from a March 26 story Prothom Alo published on the country’s 52nd anniversary of independence. The situation sparked a public outcry against the DSA, as students, lawyers, human rights activists, civil society organizations, the Editors’ Council, and political parties demonstrated across the country to demand the law’s amendment or repeal.


In June, the RAB arrested a union council chairman in Jamalpur, and police arrested several others accused of the murder of journalist Golam Rabbani Nadim. On June 14, a group of men ambushed Nadim, a correspondent for website Banglanews24 and broadcaster for Ekattor TV, while he was traveling home on his motorcycle. The men beat Nadim and left him unconscious; bystanders took him to the hospital. After he died the next day from a severe head injury, his family said he was targeted in retaliation for a series of reports in May for Banglanews24 about Mahmudul Alam Babu, chair of a local government unit and member of the ruling AL party.


Censorship or Content Restrictions for Members of the Press and Other Media, Including Online Media: Both print and online independent media were active and expressed a variety of views; however, media outlets that criticized the government were pressured by the government. Independent media could not operate freely or without restrictions.


The government maintained editorial control over the country’s public television station and allegedly mandated private channels broadcast government content for free. Civil society organizations stated political interference influenced the licensing process, since all television channel licenses granted by the government were for stations supporting the ruling party.


In January, the government ordered the closure of 191 websites it accused of publishing “anti-state news.”


In February, the government shut down Dainik Dinkal, a broadsheet Bengali-language newspaper and the only paper of the main opposition BNP. Dhaka district authorities first ordered the shutdown of the paper in December 2022, saying the paper violated the country’s printing and publication laws. Dainik Dinkal continued to publish, however, after lodging an appeal at the Press Council. The council rejected the appeal, upholding the district magistrate’s order to the paper to stop publication. Two Dhaka-based journalist unions issued a joint statement that the decision was a “reflection of the repression of opposition voices.”


Prothom Alo journalist Rozina Islam continued to face charges in an Official Secrets Act case. In January, police opened further investigation into the case despite having submitted to the court a report in October 2022 stating that police found no evidence against her. The government arrested Islam in 2021 under the 1923 Official Secrets Act and sections of the penal code for investigating a corruption story involving the Ministry of Health, accusing her of taking photographs and stealing official documents from the ministry. If convicted, Islam could be sentenced to up to 14 years in prison or the death penalty.


Independent journalists and media alleged intelligence services influenced media outlets in part by withholding financially important government advertising and pressing private companies to withhold their advertising. The government penalized media that criticized it or carried messages of the political opposition’s activities and statements.


Privately owned newspapers usually were free to carry diverse views except on politically sensitive topics or those that criticized the ruling party. Political polarization and self-censorship remained a problem. Investigative journalists often complained of their management and of editors “killing” reports due to fear of pressure from the government and intelligence agencies. Some journalists received threats after publishing stories. According to journalists and human rights groups, journalists engaged in self-censorship due to fear of security force retribution, prosecution under the DSA, and the possibility of being charged with politically motivated cases. Although public criticism of the government was common and vocal, some media figures expressed fear of harassment by the government.


Libel/Slander Laws: Libel, slander, defamation, and blasphemy were treated as criminal offenses, most often employed against individuals speaking against the government, the prime minister, or other government officials. Laws referring to defamation of individuals and organizations were used to prosecute opposition figures and members of civil society.


Minority rights organizations criticized the arbitrary detention under the DSA of minority community members on the pretext of blasphemy.


National Security: Authorities stated the DSA was essential to protect national and cyber security and prevent communalism, though they allegedly used the law to arrest or punish critics of the government or deter criticism of government policies and officials.


Nongovernmental Impact: Societal pressures limited freedom of expression. Atheist, secular, religious minority, and lesbian, gay, bisexual, transgender, queer, and intersex (LGBTQI+) writers and bloggers reported they continued to receive death threats from extremist organizations.


Internet Freedom

The government restricted and disrupted access to the internet and censored online content in numerous incidents. Laws banned virtual private networks and voice-over-internet-protocol telephone, but authorities rarely enforced the prohibition.


In a number of incidents, the government interfered in internet communications, filtered or blocked access, restricted content, and censored websites or other communications and internet services. Throughout the year, the government blocked or slowed internet services in cities and neighborhoods where opposition parties held rallies. It suspended or closed many websites based on vague criteria, or with explicit reference to their pro-opposition content being in violation of legal requirements.


Local NGOs reported at least 17 internet shutdowns since 2012 under various circumstances, including communal riots, civic and political protest, and elections. In a survey, 88 percent of respondents said they had experienced an internet shutdown in the past three years and 50 percent said they had had such an experience within the previous year.


The Bangladesh Telecommunications Regulatory Commission was charged with regulating telecommunications. It carried out law enforcement and government requests to block content by ordering internet service providers to act. The commission regularly ordered social media companies to take down content it deemed critical of the ruling party or harmful to religious beliefs. Sweden-based website Netra News remained blocked since 2020 after it published reports alleging corruption by a government minister.


B. FREEDOMS OF PEACEFUL ASSEMBLY AND ASSOCIATION

The government restricted freedoms of peaceful assembly and association.


Freedom of Peaceful Assembly

The law provided for the right to peaceful assembly, but the government generally did not respect this right. The law gave the government broad discretion to ban assemblies of more than four persons. The government required advance permission for gatherings such as protests and demonstrations.


Press reporting documented authorities often prohibited gatherings by opposition groups and imposed unreasonable requirements for permits. Police and especially ruling party activists in many instances used force to block or disperse demonstrations assembled by opposition parties, organizations, and activists.


Government authorities frequently denied the lead opposition BNP and other opposition parties permission to hold events. Government authorities allowed ruling party activists to intimidate and attack opposition supporters at their events.


In August, Amnesty International and Human Rights Watch called on authorities to end use of excessive force against protestors following clashes during BNP sit-ins on July 28 and 29. Human Rights Watch reported police indiscriminately fired rubber bullets, tear gas, and water cannons, and beat opposition party supporters with batons during protests.


Media reported over 300 persons were injured on August 19 as BNP leaders and activists clashed with police during the party’s road march in Habiganj. BNP marchers allegedly hurled brick chips at police, and police officers opened fire and used tear gas. The BNP claimed their leaders and activists sustained bullet injuries, but police claimed they fired rubber bullets.


Freedom of Association

The law provided for the right of citizens to form associations, subject to “reasonable restrictions” in the interest of morality or public order, and the government generally respected this right. The law restricted the receipt of foreign funds by NGOs and provided for punishment of NGOs making derogatory comments regarding the constitution or constitutional institutions. The government’s NGO Affairs Bureau increasingly withheld or delayed approval for foreign funding to NGOs, especially those working on matters the bureau deemed sensitive, such as human rights, labor rights, Indigenous rights, LGBTQI+ rights, or humanitarian assistance to Rohingya refugees. Activists and NGOs in-country reported increasing instances of government scrutiny and bureaucratic restrictions and delays, including restricting funding to NGOs and use of other coercive tools such as bank account freezes, tax audits, and summary tax judgments.


C. FREEDOM OF RELIGION

See the Department of State’s International Religious Freedom Report.


D. FREEDOM OF MOVEMENT AND THE RIGHT TO LEAVE THE COUNTRY

The law provided for freedom of internal movement, emigration, and repatriation, and the government generally respected these rights, except in three sensitive areas: the CHT, Rohingya refugee camps in Cox’s Bazar, and on the island of Bhasan Char in the Bay of Bengal.


In-country Movement: The government enforced restrictions on access to the CHT by foreigners and restricted movement of Rohingya refugees. The refugee camps in Cox’s Bazar were surrounded by barbed and concertina wire fencing with few pedestrian gates to allow Rohingya to move among the camps or into the local community. Bhasan Char, an island with no regular transport links to the mainland, sheltered over 30,000 Rohingya refugees who voluntarily relocated there at the urging of the government. Authorities caught and detained many Rohingya who tried to leave Bhasan Char or camps in Cox’s Bazar and returned them to the registered camps.


Foreign Travel: While foreign travel was allowed, some senior domestic civil society and international NGO representatives, as well as opposition party members, reported harassment and delays when applying for a visa, entering, or departing the country. The government prevented war crimes suspects from the 1971 independence war from leaving the country.


CEOs of privately-owned banks reported they were not permitted to leave the country without obtaining express governmental permission, which was on occasion withheld. Some opposition political leaders also reported delays and harassment on attempting to leave the country.


E. PROTECTION OF REFUGEES

The government cooperated with the Office of the UN High Commissioner for Refugees (UNHCR) and other humanitarian organizations in providing protection and assistance to Rohingya refugees.


The government was not a party to the 1951 Convention Relating to the Status of Refugees or the 1967 Protocol. As a result, the government claimed it was not under legal obligation to uphold the basic rights enshrined in this treaty.


Prior to the 2017 Rohingya arrivals, the government and UNHCR provided temporary protection and basic assistance to approximately 33,000 registered Rohingya refugees from Burma living in two official camps (Kutupalong and Nayapara), while the government and the International Organization for Migration aided approximately 200,000 undocumented Rohingya living in makeshift settlements in Cox’s Bazar. In 2017, more than 750,000 Rohingya fled genocide in neighboring Burma to seek safe haven in Bangladesh. As of September 30, because of this influx, 965,467 registered Rohingya refugees were living in refugee camps. The government claimed actual numbers totaled more than 1.2 million. The government did not recognize the arrivals as refugees, referring to them instead as “forcibly displaced Myanmar nationals,” but abided by many of the established UN standards for refugees. One notable exception was that Rohingya did not enjoy full freedom of movement throughout the country. Government officials stated repatriation was the government’s only goal, stressing privileges such as freedom of movement, postsecondary education, or livelihood opportunities could not be afforded to the Rohingya population.


A National Task Force of 25 ministries and department representatives and chaired by the Ministry of Foreign Affairs provided oversight and strategic guidance for the overall Rohingya response. The Ministry of Home Affairs coordinated and maintained law and order for the response, with support from the Armed Police Battalion. At the local level, the Refugee Relief and Repatriation Commission, under the Ministry of Disaster Management and Relief, was responsible for the management of the camps.


As of September 30, Bhasan Char hosted 30,748 Rohingya refugees. Media reported the government spent 31 billion taka ($310 million) to prepare for the eventual transfer of 100,000 refugees to the island. Programs operated under a 2021 memorandum of understanding (MOU) between the government and UNHCR that outlined the humanitarian and protection framework underlying UN operational engagements on the island. The MOU had provisions to improve protections and services for Rohingya refugees on Bhasan Char. It proposed expanded access to services, such as education, skills and vocational training, livelihoods, health care, and uninterrupted telecommunication services, which were funded by some international donors through the 2023 Joint Response Plan.


In July, the High Court dismissed a bail application for a suspect in the murder of Mohammad Mohib Ullah, chairman and founder of the Arakan Rohingya Society for Peace and Human Rights. In 2022, the government brought charges against 29 Rohingya in connection with the September 2021 killing. In October, authorities arrested a suspect for his alleged role in Mohib Ullah’s murder.


Access to Asylum: The law did not provide for granting asylum or refugee status, nor had the government established a formal system for providing protection to refugees. Nonetheless, the government provided significant protection and assistance to Rohingya refugees residing in the country. Prior to 2017, the government cooperated with UNHCR to provide temporary protection and basic assistance to registered refugees residing in two official camps. After the 2017 arrival of more than 750,000 additional Rohingya refugees, the government started to register the refugees biometrically and provided identity cards. UNHCR continued to operate registration centers to update individual and family status due to marriages, divorces, births, and deaths.


Abuse of Refugees and Asylum Seekers: The government mostly cooperated with UNHCR and other humanitarian organizations in providing protection and assistance to Rohingya refugees, despite security concerns in the camps. Observers reported human trafficking and smuggling were common in the camps, with few cases prosecuted. When discovered, government officials returned trafficking victims to the camps.


International organizations reported gender-based violence directed against women in the camps. Intimate partner violence comprised 81 percent of the cases for the first half of the year.


Accountability for crimes against refugees remained a problem. Rohingya relied on government officials responsible for each camp (also known as the Camps in Charge, or CiC) to address allegations of crime. The CiCs were largely autonomous and varied in terms of responsiveness to camp needs. According to international organizations, some CiCs were susceptible to corruption. Observers alleged some border guard, military, and police officials were involved in facilitating trafficking of Rohingya women and children, ranging from “looking the other way,” to bribes for allowing traffickers to access Rohingya in the camps, to direct involvement in trafficking.


The NGO Fortify Rights reported in August that members of the Armed Police Battalion, a specialized unit of the Bangladesh police with responsibility for security in the Rohingya camps, arbitrarily detained and allegedly tortured refugees while systematically extorting camp residents. According to media reports, battalion officers killed four Rohingya in crossfire gunfights.


Police arrested at least 924 Rohingya outside the camps throughout the year. News sources reported that as of October 1, at least 54 Rohingya, including 19 Rohingya leaders (Majhis), 18 gang members, and a Rohingya volunteer worker, were killed in clashes or gunfights between gangs in the camps.


Freedom of Movement: There were restrictions on Rohingya freedom of movement. According to the 1993 MOU between the government and UNHCR, registered Rohingya refugees were not permitted to move outside official camps. After the 2017 influx, police set up checkpoints on the roads to restrict travel by both registered refugees and arrivals beyond the Ukhiya and Teknaf subdistricts. Rohingya located at Bhasan Char had little means to exit the island or travel to camps in Cox’s Bazar, where many claimed to have family members, leading some human rights groups to label the situation on the island as “detention.”


The government allowed at least two trips per month from the island to the camps in Cox’s Bazar for family visits. Regular and reliable connections to and from the mainland for logistics, trade, family visit, medical, and other reasons did not exist. Refugees complained to donor representatives that they often had to wait months for an opportunity to visit Cox’s Bazar, that visits were only permitted when deemed “urgent,” and that unpaid government-appointed Rohingya community leaders had to be bribed to certify a visit request as urgent enough to merit approval and vouch for the visitors’ intent to return to Bhasan Char.


Many camp authorities conducted curfews and law enforcement patrols, particularly at night, in response to reported concerns regarding violent attacks, abductions, or kidnappings in the camps. Stating a desire to better secure the camp and protect Rohingya from migrant smuggling, the government maintained watchtowers and fencing in the camps in Cox’s Bazar. Humanitarian agencies said fencing hindered delivery of services to refugees and exacerbated tensions between refugees and host communities.


Employment: There were credible reports the government imposed restrictions on refugees’ ability to work. The government did not formally authorize Rohingya refugees in the country to work, although it allowed some volunteer opportunities with small stipends and limited cash-for-work activities for Rohingya to perform tasks within the camps. A skills development framework endorsed by the National Task Force outlined the skills and training that could be provided to refugees and host communities, with UN support, based on assumptions of the kinds of livelihoods generally available to Rohingya in Rakhine State.


On Bhasan Char, skills development and livelihood opportunities were limited but appeared to increase during the year.


Despite movement restrictions, some refugees worked illegally as manual laborers on the informal economy, where some were exploited as labor trafficking victims.


Access to Basic Services: While agencies made significant efforts to support those refugees who were most vulnerable, the shortage of land remained a central problem hindering the ability of Rohingya to access basic services. During the year, multiple cuts to food rations due to funding shortfalls dramatically reduced refugees’ access to adequate and nutritious food. This increased food insecurity throughout the camps.


Public education remained a problem. Higher education remained out of reach of most of the population, but in July, UNICEF completed implementation of the Burmese curriculum and reported over 300,000 Rohingya children were enrolled in kindergarten and grades one through 10. The government continued to forbid education outside this program.


Government authorities allowed registered and unregistered Rohingya regular access to public health care, but the Rohingya needed authorities’ permission to leave the camp. Humanitarian partners ensured their health-care expenses were covered and that they returned to the camps. The health sector maintained information on all the health facilities within the camps and the surrounding areas. Based on available data, overall coverage met the minimum requirements.


Bhasan Char had primary healthcare facilities but lacked secondary and tertiary facilities, necessitating referrals to medical facilities off the island for advanced-level care. The transfer of patients to mainland facilities was hampered by required authorizations to depart the island, weather conditions, and boat availability.


F. STATUS AND TREATMENT OF INTERNALLY DISPLACED PERSONS

Societal tensions and marginalization of Indigenous persons continued in the CHT because of a government policy initiated during an internal armed conflict from 1973-97. This policy relocated landless ethnic Bengalis to the CHT with the implicit objective of changing the demographic balance to make Bengalis the majority. The most recent national census revealed Indigenous people were now a minority in two of the three CHT districts.


The internally displaced persons (IDPs) in the CHT had limited physical security. Community leaders maintained Indigenous persons faced widespread violation of their rights by settlers, sometimes supported by security forces.


The number of IDPs in the CHT was in dispute. NGOs estimated the number could exceed 500,000, which included non-Indigenous as well as Indigenous persons. In 2020, the independent CHT Commission estimated slightly more than 90,000 Indigenous IDPs resided in the area.


For further information about IDPs in the country, please see the materials of the Internal Displacement Monitoring Center.


G. STATELESS PERSONS

Rohingya in the country were legally or in fact stateless. They could not acquire Bangladeshi citizenship, nor did the government of Burma recognize them as citizens.


Every individual born in Bangladesh was a citizen of the country by birth by law. This provision, however, was not afforded to Rohingya. A 2009 amendment to the law allowed anyone born in the country to either a Bangladeshi mother or father the right to claim citizenship. This amendment was not retroactively applied to Rohingya children born in the country to stateless fathers prior to 2009, so these children remained stateless. There were cases in which children born to one Bangladeshi parent and one Rohingya parent were not recognized as citizens, despite the 2009 amendment.


Section 3.

Freedom to Participate in the Political Process

The constitution provided citizens the ability to choose their government in free and fair periodic elections held by secret ballot and based on universal and equal suffrage. International observers reported recent elections were neither free nor fair because they were marred by serious irregularities.


ELECTIONS AND POLITICAL PARTICIPATION

Abuses or Irregularities in Recent Elections: National elections were widely reported to not be fair or free of abuses and irregularities. Observers considered 2018 parliamentary elections neither free nor fair and marred by irregularities including ballot box stuffing and intimidation of opposition polling agents and voters. During the campaign leading to the election, there were many credible reports of harassment, intimidation, arbitrary arrests, and violence that made it difficult for opposition candidates and their supporters to meet, hold rallies, or campaign freely.


Intimidation, irregularities, and violence during campaigns and voting marked almost all parliamentary by-elections and local government elections during the year.


Campaigning for a July 17 parliamentary by-election, independent candidate and social media star Ashraful “Hero” Alam was attacked, reportedly by AL-aligned activists. Local police officials refused to accept his filing of a case against his attackers. On election day he was attacked again and hospitalized after police ejected him from a polling station and, according to reporters present, refused to protect him from a mob of governing party supporters. Authorities arrested 10 suspects in relation to the second assault.


Political Parties and Political Participation: The government mobilized law enforcement resources to level civil and criminal charges against opposition party leaders and activists. Press reporting supported claims by the BNP and other parties that police criminally charged thousands of BNP members related to political demonstrations during the year and detained many of the accused. Human rights observers claimed most of these charges were baseless.


Opposition activists faced criminal charges. Leaders and members of Jamaat-e-Islami (Jamaat), the largest Islamist political party in the country, said they could not consistently exercise their constitutional freedoms of speech and assembly because of harassment by law enforcement authorities. The police granted Jamaat permission to hold rallies in a few instances but frequently denied it in others. As it was not registered as a political party, Jamaat candidates were prohibited from seeking office under the Jamaat name.


AL-affiliated organizations, particularly its student wing, the Bangladesh Chhatra League, carried out violence and intimidation around the country with impunity against nonpartisan individuals as well as opposition groups and others deemed critical of the government. On April 10, after the prime minister’s denunciation in parliament of the country’s leading newspaper Prothom Alo, AL youth activists broke in and vandalized the newspaper’s offices, livestreaming their actions on social media.


A series of BNP and AL rallies in July saw clashes as BNP activists tried to stage sit-ins at main roads and entry points to Dhaka and met with pushback from police and reportedly AL affiliates. In a common pattern, police withdrew from a BNP protest site and allowed AL activists to attack. In the July clashes scores of persons were injured, including some BNP leaders. Political rallies sparked violence again in late October, as the police and BNP supporters clashed, resulting in more than 13,700 arrests, and leaving at least 14 dead as of November.


Press reported in June that police headquarters ordered units across the country to speed up pending criminal cases – often dormant or old – to legally entangle potential candidates from the BNP and Jamaat-e-Islami ahead of possible national elections. Potential candidates reportedly faced dozens or hundreds of cases. Minutes of a July 6 meeting leaked to the press documented officials from police headquarters instructing police around the country to implicate BNP and Jamaat supporters in criminal cases filed since 2013, stating, “BNP and Jamaat have to be declared disqualified for the election…all BNP and Jamaat leaders who are expected to contest elections are accused in some cases.” Police were instructed to collaborate with the judiciary to speed up cases and coordinate witness testimony.


In August, Human Rights Watch reported authorities filed cases against more than 1,500 named opposition leaders and activists and 15,000 unnamed individuals in the weeks leading up to BNP rallies at the end of July. In October, less than 90 days before expected elections and ahead of major political rallies in Dhaka, the BNP claimed authorities detained 200 of its leaders and activists within a 15-hour period.


In numerous instances, the government interfered with the right of opposition parties to organize public functions and restricted broadcasting of opposition political events. Press reported that government authorities hindered telecommunications connectivity for rallygoers attending opposition events, even as ruling party rallies on the same day were undisturbed.


Participation of Women and Members of Marginalized or Vulnerable Groups: No laws limited participation of women or members of minorities in the political process, and they did participate. Freedom House noted in its annual report that societal discrimination against women, as well as against LGBTQI+ persons, limited their participation in politics. Religious, ethnic, and other marginalized groups remained underrepresented in politics and state agencies.


Section 4.

Corruption in Government

The law provided criminal penalties for conviction of corruption by officials, but the government did not implement the law effectively. There were numerous reports of government corruption during the year, and officials frequently engaged in corrupt practices with impunity.


The Anti-Corruption Commission (ACC), set up in 2004 to serve as an independent monitoring mechanism, was mandated to focus on investigating cases of corruption, including but not limited to bribery, embezzlement, extortion, abuse of discretion, and improper political contributions. Local human rights organizations questioned the independence and effectiveness of the ACC, which they claimed was evidenced by the acquittal of most cases brought against ruling party officials and bureaucrats, while legal processes, investigations, and filing of cases against leaders of the opposition parties continued. In August, media sources reported the ACC faced a backlog of over 6,500 cases.


Corruption: Corruption remained a serious problem. Freedom House’s annual report noted “corruption is endemic, and anticorruption efforts have been weakened by politicized enforcement.”


In January, the ACC opened an inquiry based on allegations Dhaka Water Supply and Sewerage Authority managing director Taqsem A. Khan bought 14 houses and several cars in the United States during his 13-year tenure as the authority’s managing director. According to the allegations, Taqsem stole money from foreign-loan funded projects to fund his luxury purchases.


In February, media outlets broke news of an internal government report outlining corruption allegations against the former mayor of Gazipur, Mohammad Zahangir Alam. Corruption claims included payments for garbage pickups which never took place, road construction projects which were not performed, skimming lease payments owed to the Gazipur City Corporation, and charges for public events which did not take place. The government did not publicly release the internal report.


For additional information about corruption in the country, please see the Department of State’s Investment Climate Statement for the country, and the Department of State’s International Narcotics Control Strategy Report, which includes information on financial crimes.


Section 5.

Governmental Posture Towards International and Nongovernmental Monitoring and Investigation of Alleged Abuses of Human Rights

Several domestic and international human rights groups investigated and published their findings on human rights cases, but they generally operated with significant government restrictions. Government officials were rarely cooperative and responsive to their reports, occasionally verbally attacking critical organizations and activists by name.


Although human rights groups often sharply criticized the government, they also practiced self-censorship. Observers alleged the government strategically reduced the effectiveness and inhibited operations of civil society through restrictions. Even civil society members affiliated with the ruling party reported receiving threats of arrest from the security forces for public criticism of government policies.


The government continued to restrict the funding and operations of the human rights organization Odhikar following its rejection of the organization’s registration in 2022. The organization’s officials continued to report harassment, intimidation, and surveillance by government officials and security forces.


The Dhaka Cyber Tribunal continued to conduct hearings in a case against Odhikar’s secretary Adilur Rahman Khan and director Nasiruddin Elan over alleged violations in 2013 of the Information and Communications Technology Act. In July, three UN special rapporteurs called on the government to stop harassing Odhikar and ensure respect for due process, calling the case emblematic of the use of criminal proceedings to silence human rights defenders and organizations. On September 14, the tribunal convicted Khan and Elan and sentenced them each to two years in prison and a fine of 10,000 taka ($90). On October 15 authorities released them on bail for one year and stayed the fine, following their appeal to the High Court and its subsequent ruling.


The government required all NGOs, including religious organizations, to register with the Ministry of Social Welfare. Some local and international NGOs working on human rights issues claimed intelligence agencies monitored them. The government sometimes restricted international NGOs’ ability to operate through delays in project registration, cease-and-desist letters, and visa refusals.


The NGO Affairs Bureau continued to block project approval and release of funding to several NGOs. Several NGOs said they received informal notification from the government to cease or slow down activities. Others faced repeated formal roadblocks to get projects approved despite submitting all the required paperwork. In some cases, banks refused to release funds to NGOs working on sensitive governance and rights issues. Lengthy delays caused some NGOs to curtail activities as they could not pay their staff.


The law included what rights groups reported were punitive provisions for NGOs making “derogatory” comments regarding the constitution of the country, its founding history, or constitutional bodies.


Retribution against Human Rights Defenders: The government filed numerous cases against human rights defenders. Human rights defenders claimed they were under constant government surveillance and they and their family members experienced frequent harassment.


In July, the Centre for Governance Studies released a report on the status of human rights defenders in the country. The report found at least 65 percent of surveyed human rights defenders said that the ruling AL party, law enforcement, and intelligence services obstructed their work. The report noted 62 percent of those surveyed claimed the overall environment of their work was “very unsafe” or “unsafe,” and 42 percent noted threats, intimidation and persecution from sources connected to the state, including law enforcement, state intelligence agencies, and government officials.


The United Nations or Other International Bodies: Since 2013 the government had not responded to a request from the UN WGEID to visit the country. The Office of the UN Resident Coordinator in the country reported several other pending requests for UN special rapporteurs to visit the country since 2017, including the special rapporteur on extrajudicial, summary, or arbitrary executions; the special rapporteur on the rights to freedom of peaceful assembly and of association; and the special rapporteur on the promotion and protection of human rights and fundamental freedoms while countering terrorism. Some UN special rapporteurs visited throughout the year, including the rapporteur on extreme poverty and human rights in May and the rapporteur on the human rights of migrants in January.


Government Human Rights Bodies: The National Human Rights Commission’s primary activities were to investigate human rights abuses, address discrimination in law, educate the public on human rights, and advise the government on key human rights matters. Most human rights organizations questioned the independence and effectiveness of the commission, alleging the government used state institutions including the commission to implement its political agenda.


Section 6.

Discrimination and Societal Abuses

WOMEN

Rape and Domestic Violence: The law prohibited rape of girls and women by men and physical spousal abuse, but the law excluded marital rape if the girl or woman was older than 13. Conviction of rape was punishable by life imprisonment or the death penalty. The government did not enforce the law effectively.


Human rights organizations found rape remained a serious issue in the country. There were allegations of rapists blackmailing survivors by threatening to release the video of the rape on social media. There were many reports of sexual violence committed with impunity.


In February, police arrested five men for the gang rape of a woman the month prior. According to news reports, the woman hired a rickshaw pulled by one of the accused, who then abducted her and took her to a building under construction where a group of five men raped her. In July, police arrested a man for raping a woman college student in Dhaka. According to police, the accused lured the student to the third floor of a shopping mall where he raped her.


According to guidelines for handling rape cases, the officer in charge of a police station had to record any information relating to rape or sexual assault irrespective of the place of occurrence. Chemical and DNA tests had to be conducted within 48 hours from when the incident was reported. Guidelines also stipulated every police station was required to have a woman police officer available to survivors of rape or sexual assault during the recording of the case by the duty officer. The statements of the survivor had to be recorded in the presence of a lawyer, social worker, protection officer, or any other individual the survivor deemed appropriate.


Survivors with disabilities were supposed to be provided with government-supported interpretation services, if necessary, and the investigating officer along with a woman police officer was required to escort the survivor to a timely medical examination.


According to human rights monitors, many survivors did not report rapes due to lack of access to legal services, social stigma, fear of further harassment, and the legal requirement to produce witnesses. The burden was on the rape survivor to prove a rape occurred, using medical evidence.


Other Forms of Gender-based Violence or Harassment: Some NGOs reported violence against women related to disputes concerning dowries, despite dowry demands being illegal. By law, an individual convicted of demanding or giving a dowry could be imprisoned for up to five years, fined, or both, but the practice remained common throughout the country. From January to September, ASK found 114 incidents of dowry-related violence against women, with 51 women killed because of dowry disputes.


In late July, six persons allegedly beat four girl soccer players in Khulna for wearing shorts during soccer practice. Though one of the victims filed a case with the police against the attackers, the alleged attackers continued to threaten the girls with promises to file false cases against them, acid attacks, harm to their family members, and death. Police arrested the main accused individual and pledged to provide security to the victims and other players; however, half of the players at the academy stopped attending practice due to the threats.


ASK reported five incidents of fatwas (religious edicts) used to target women between January and August. A Supreme Court Appellate Division ruling allows the use of fatwas only to settle religious matters; fatwas could not be invoked to justify punishment, nor could they supersede secular law. Nevertheless, in some cases, these declarations resulted in extrajudicial punishments, often against women, for perceived moral transgressions.


Cases of vigilantism against women occurred. The incidents included whipping, beating, and other forms of physical violence.


Assailants threw acid in the faces of survivors, usually women, leaving them disfigured and often blind. Acid attacks were in some instances related to a woman’s refusal to accept a marriage proposal or to land or other money disputes.


Although sexual harassment was prohibited by a 2009 High Court ruling, harassment, also known as “Eve teasing,” was common according to multiple NGOs.


Discrimination: The constitution declared all citizens equal before the law with entitlement to equal protection under the law. It also explicitly recognized the equal rights of women to those of men “in all spheres of the state and of public life.” According to NGOs, the government did not always enforce gender equality laws effectively. Women did not enjoy the same legal status and rights as men in family, property, and inheritance law. Family and inheritance laws varied by religion.


The labor law prohibited wage discrimination based on sex, but it did not prohibit other forms of labor-related discrimination. Women were generally underrepresented in supervisory and management positions and earned less than men counterparts even when performing similar functions.


Reproductive Rights: There were no reports of coerced abortion or involuntary sterilization on the part of government authorities.


A full range of contraceptive methods, including long-acting reversible contraception and permanent methods, were available through government, NGO, and for-profit clinics and hospitals. Low-income families were more likely to rely on public family planning services offered free of cost. Government district hospitals had crisis management centers providing contraceptive care to survivors of sexual assault. These facilities did not provide postexposure prophylaxis. Due to cultural and religious factors, many women were unable to access contraception without their husbands’ permission. The UN Population Fund’s (UNFPA) State of World Population 2023 report claimed contraceptive prevalence rate was 64 percent, but that two-thirds of women lacked decision-making authority on sexual and reproductive health and rights.


Weaknesses in the public-health system, such as lack of trained providers and equipment in rural areas, resulted in inequitable access to information and services.


Taboos and stigma surrounding menstruation created social and religious barriers for menstruating women. In conservative communities some menstruating women could not use the kitchen or observe religious practices due to fear of contamination. A civil society organization estimated one in four girls stayed home from school while menstruating. The cost of menstrual products was relatively high compared to average wages, due in part to being heavily taxed, prompting some women to use potentially unhygienic materials while menstruating.


Civil society organizations reported survivors of child marriage had less negotiating power to make family planning choices.


LGBTQI+ groups reported nonmale persons faced legal, cultural, and social barriers that impeded access to sexual and reproductive health services. In many cases, there were requirements for a third party, such as a spouse or male guardian, to authorize access to health-care services.


Many health practitioners expressed discomfort in discussing sexual activity, and shamed patients that discussed sexually transmitted infections. Discussions of women’s sexuality were particularly taboo. Civil society organizations and LGBTQI+ activists often cited social stigma against HIV and AIDS and against higher-risk populations as a barrier for accessing health services, especially for the transgender community.


SYSTEMIC RACIAL OR ETHNIC VIOLENCE AND DISCRIMINATION

The law provided for the protection of members of some marginalized ethnic or racial communities; however, these laws were rarely enforced. NGOs reported national origin, racial, and ethnic minorities faced discrimination. For example, some Dalits (lowest-caste Hindus) suffered from restricted access to land, adequate housing, education, and employment.

Members of the estimated 300,000 Urdu-speaking population (known as Biharis, originally Urdu-speaking Muslims who migrated to then East Pakistan before the Bangladesh Liberation War) stated their requests to obtain passports were sometimes rejected by immigration officers due to their lack of a permanent address. Almost all of this population still resided in refugee-like camps established by the International Committee of the Red Cross in the 1970s, when Biharis believed they would return to Pakistan following the 1971 war. In 2008, a High Court ruling that the Bihari community had rights as citizens prompted the international donor community to cease support because the community was technically no longer stateless. While the government provided some basic services, including water and electricity, Biharis reported social and economic discrimination as well as a lack of initiatives integrating them into society, leaving them isolated in crowded camps.


INDIGENOUS PEOPLES

The Indigenous communities of the CHT and other areas throughout the country experienced widespread discrimination and abuse despite nationwide government quotas for participation of Indigenous residents in the civil service and higher education. These conditions also persisted despite provisions for local governance in the 1997 Peace Accord, which was not fully implemented. Indigenous persons were unable to participate effectively in decisions affecting their lands due to disagreements regarding land dispute resolution procedures under the Land Commission Act. Local organizations claimed the army and intelligence forces carried out extrajudicial killings and arbitrary arrests; beat, harassed, threatened, and jailed Indigenous people on false charges; and labeled rights activists as terrorists and extortionists.


Indigenous activists claimed ethnic minorities were drastically undercounted by the census, impacting land rights and the development budget of the CHT and other Indigenous lands. The official census reported 1.65 million minority persons, while the Bangladesh Indigenous Peoples’ Forum estimated there were around three million ethnic minority persons. While the country had a 20 percent poverty rate, poverty in the plains, where some Indigenous persons lived, was more than 80 percent and more than 65 percent in the CHT. Organizations corroborated health care available to Indigenous persons was well below the standard available to non-Indigenous persons in the country.


Human rights organizations continued to allege evictions and communal attacks occurred against local populations in the CHT, often at the direction of the government, army, and intelligence agencies. To mark International Day of the World’s Indigenous Peoples on August 9, the Bangladesh Adivasi Forum organized a discussion to demand constitutional recognition of ethnic minorities as “indigenous people.”


In January, media reported 100 persons armed with sticks attacked an Mro village in the CHT’s Bandarban district. Attackers vandalized and burned a dozen Mro houses, and looted the homes for mobile phones, household utensils, clothes, cattle, and poultry. Community members alleged the attackers were affiliated with Lama Rubber Industries and sought to drive villagers from the area. The rubber plantation company responded that Indigenous people were building houses on company land. Indigenous communities in areas other than the CHT reported the loss of land to Bengali Muslims, and Indigenous peoples’ advocacy groups reported deforestation to support Rohingya refugee camps and other commercial pursuits caused severe environmental degradation in their land, adversely affecting their livelihoods.


In January, CHT political group the Parbatya Chattagram Jana Samhati Samiti (PCJSS) noted in an annual report 235 incidences of human rights violations by security forces, armed extremist groups, and land grabbers in the CHT the previous year. The PCJSS also stated the government escalated “military measure” to manage the situation in the CHT, instead of using political and peaceful means through the implementation of the 1997 accord.


Reports of sexual assaults on Indigenous women and children by Bengali neighbors or security personnel remained unresolved.


CHILDREN

Birth Registration: The government did not register births for nor extend citizenship to Rohingya refugees born in the country, although it permitted UNHCR to register births within the refugee camps.


Education: Education was free and compulsory through eighth grade by law, and the government offered subsidies to parents to keep girls in class through 10th grade. Enrollments in primary schools showed gender parity, but completion rates fell in secondary school, with more boys than girls completing that level. Early and forced marriage was a factor in girls’ attrition from secondary school.


Child Abuse: Many forms of child abuse, including sexual abuse, physical and humiliating punishment, child abandonment, kidnapping, and trafficking, continued to be serious and widespread. The law prohibited child abuse and neglect with the penalty for conviction of up to five years’ imprisonment, a fine, or both. The Department of Social Services operated “Child Helpline – 1098,” a free telephone service designed to help children facing violence, abuse, and exploitation. The hotline received approximately 80,000 calls a year on average and was accessible from anywhere in the country. The hotline center provided services such as removal, referral, and counseling.


During the year, former students detailed multiple allegations of sexual abuse at the hands of teachers and older pupils in Islamic madrassas. In February, a Dhaka court sentenced a madrasa teacher to life in prison on charges of raping a student, age nine, in 2019. In May, a madrasa teacher reportedly raped a girl, age eight, after calling her to his room when she went to the madrasa to study around 4:00 p.m. In May, the AL student league suspended a local leader after police arrested him on charges of raping two teenage boys. In July, media reported police recovered the body of a girl, age eight, from a pond in Rajshahi after she was kidnapped from her house. Her body showed signs of rape.


Despite advances, trafficking of children and inadequate care and protection for survivors of trafficking continued to be problems. Child labor and abuse at the workplace remained problems in certain industries, mostly in the informal sector, and child domestic workers were vulnerable to all forms of abuse.


Child, Early, and Forced Marriage: The legal age of marriage was 18 for women and 21 for men. The law included a provision for marriages of women and men at any age in “special circumstances.”


UNFPA’s 2023 report assessed 51 percent of girls married before the age of 18. High rates of child marriage resulted in girls leaving school at a higher rate than boys. UNICEF noted girls who marry in childhood were less likely to remain in school.


The government’s own statistics were lower than UNFPA’s estimate but still high. In June, the BBS reported the number of early marriages involving girls under 15 and 18 years of age increased significantly in 2022. According to BBS, 40.9 percent of girls under 18 years of age married in 2022, compared to 32.4 percent in 2021. The rates were higher in rural areas than urban ones. The statistics further showed that 6.5 percent of girls under the age of 15 married in 2022, up from 4.7 percent in 2021.


To reduce early and forced marriages, the government offered stipends for girls’ school expenses beyond the compulsory level. The government and NGOs conducted workshops and public events to teach parents the importance of their daughters waiting until age 18 before marrying.


According to the Ministry of Women and Children’s Affairs, two mobile services were available to report cases of child marriage and provide other services; the Joya App and a “109 Hotline.” The ministry’s website hosts a digital library to provide information on existing laws and other resources to prevent child marriage.


Sexual Exploitation of Children: The law prohibited sexual exploitation of children; the penalty for conviction was 10 years to life imprisonment. Child pornography and selling or distributing such material was prohibited. Child sex trafficking victims in brothels were able to produce notarized certificates stating they were older than age 18, and some observers claimed corrupt government and law enforcement officials condoned or facilitated these practices. In addition to cross-border trafficking, traffickers lured girls from around the country into domestic commercial sexual exploitation in legal and illegal brothels and hotels.


ANTISEMITISM

There was no Jewish community in the country. Politicians and imams made antisemitic statements, reportedly to gain support from their constituencies.


TRAFFICKING IN PERSONS

See the State Department’s Trafficking in Persons Report at https://www.state.gov/trafficking-in-persons-report/.


FORCED ORGAN HARVESTING

Organ harvesting continued in the country. In July, the RAB publicized the arrests of suspects in a kidney trafficking ring. The accused leader of the ring claimed he was underpaid for his own kidney by a broker in India in 2019. According to the RAB, the man noted the huge demand for kidney transplant patients in India and started the organ trafficking ring. After finding wealthy clients who needed kidneys online or through local brokers from different areas, the accused arranged for donors to be sent to India. During the arrests, the RAB recovered fake certificates for kidney donors and recipients, passports, bank cards, Indian rupees, and Bangladeshi taka. The organ traffickers allegedly charged recipients as much as five million taka ($45,000) per kidney, but paid donors 500,000-600,000 taka ($4,500-$5,400). The RAB estimated the organ trafficking ring sold 50 kidneys before the arrests.


ACTS OF VIOLENCE, CRIMINALIZATION, AND OTHER ABUSES BASED ON SEXUAL ORIENTATION, GENDER IDENTITY OR EXPRESSION, OR SEX CHARACTERISTICS

Criminalization: Same-sex sexual conduct was illegal under the penal code, which carried with it punishment up to life imprisonment. The government did not actively enforce the law. Members of LGBTQI+ groups reported the government retained the law because of societal pressure. There were no credible efforts to rescind discriminatory laws that targeted LGBTQI+ persons.


Violence and Harassment: Members of LGBTQI+ communities received threatening messages via telephone, text, and social media, and some were harassed by police. They stressed the need for online and physical security due to continued threats of physical violence. The government and police took few official actions to investigate, prosecute, and punish those complicit in violence and abuses against LGBTQI+ persons. LGBTQI+ advocacy organizations reported police used the law as a pretext to harass individuals who were perceived to be LGBTQI+ regardless of their sexual orientation. Some groups reported harassment under a suspicious behavior provision of the police code. LGBTQI+ individuals experienced high levels of fear, harassment, and law enforcement actions taken in the wake of violent extremist attacks in the past decade.


On August 20, media reported Islamic extremists killed Golam Kibria, a gay schoolteacher in Savar, claiming Kibria’s sexual orientation contradicted their beliefs. Human rights groups emphasized this incident was not an isolated occurrence but rather emblematic of the broader human rights abuses faced by LGBTQI+ individuals within the country.


NGOs reported high levels of sexual and gender-based violence against Rohingya LGBTQI+ individuals living in the refugee camps, who stated their ongoing physical and psychological needs were not adequately met.


Discrimination: The law did not prohibit discrimination by state and nonstate actors based on sexual orientation, gender identity or expression, or sex characteristics. LGBTQI+ groups reported official discrimination in employment and occupation, housing, and access to government services, including health care and access to justice. Though the government offered limited training and employment opportunities to help third-gender persons gain employment, rights activists stated only a small number of third-gender persons worked in the manufacturing and service sectors, and many faced workplace discrimination.


Mental health care was a top concern and, according to these groups, mental health-care providers tended to use moralistic terms to shame LGBTQI+ persons. Access to preexposure and postexposure medications that prevent transmittal of HIV during sex was limited. HIV testing was free, but stigma regarding testing and seeking treatment remained strong.

While some transgender women in the country identified as hijra (a cultural South Asian term for some transgender women as well as some intersex and gender-nonconforming individuals), due to an affinity for the hijra subculture or a desire for increased social protection, not all chose to do so. Many transgender women asserted their transgender identities and corrected those that identified them as hijra. Meanwhile, transgender men received little support or tolerance, particularly in poor and rural communities. Transgender rights advocates claimed the government conducted genitalia checks on hijra in some cases, before allowing them access to services.


Availability of Legal Gender Recognition: Passports and legal identification documents, including voter registration forms, included the option to select “X” or “Hijra” as a third gender. The most recent national census included a “third gender” category. Although the government made some progress in promoting social acceptance of hijra persons, the government made limited efforts to promote the rights of others in the LGBTQI+ community and did not offer legal recognition.


Involuntary or Coercive Medical or Psychological Practices: LGBTQI+ activists reported so-called conversion therapy practices were widespread. Lesbian women and gay men recounted stories of being sent by their parents to drug rehabilitation facilities and forced to take sedatives, wear traditional clothing, and recite the Quran. The government did not condemn these practices.


Restrictions of Freedom of Expression, Association, or Peaceful Assembly: Organizations working on LGBTQI+ topics in the country faced major hurdles to fund and implement projects due to their inability to register with the government as formal LGBTQI+ NGOs and thus receive international funding. Organizations specifically assisting lesbians were rare, though programming by LGBTQI+ organizations continued to expand beyond traditional male and hijra participants. Severe social stigma regarding sexual orientation was common and prevented open discussion of the subject.


PERSONS WITH DISABILITIES

The law provided for equal treatment and freedom from discrimination for persons with disabilities, and the government took mostly effective measures to enforce these provisions.

The law required physical structures be made accessible to those with disabilities, but the government did not implement the law effectively and government buildings had no accommodations for persons with disabilities. The law required persons with disabilities to register for identity cards to track their enrollment in educational institutions and access to jobs. This registration allowed them to be included in voter lists, to cast votes, and to participate in elections. Local NGOs estimated 50 to 60 percent of those with disabilities were unable to exercise their right to vote, as voting centers lacked accommodations for persons with disabilities.


According to NGOs, some children with disabilities did not attend public school due to lack of accommodation. The government trained teachers on inclusive education and recruited disability specialists at the district level. The government also allocated stipends for students with disabilities.


Many organizations reported persons with visual disabilities experienced difficulties accessing technology. While individuals reported government websites contained more user-friendly services for persons with disabilities, they also reported information for persons with disabilities was usually uploaded on portals as scanned documents, which made it incompatible for software used by persons with visual impairments. The government provided students with visual impairments with accessible books every year.


The government took some action to investigate those responsible for violence and abuses against persons with disabilities.


Government facilities for treating persons with mental disabilities were inadequate.


Section 7.

Worker Rights

A. FREEDOM OF ASSOCIATION AND THE RIGHT TO COLLECTIVE BARGAINING

The law provided for the right to join and, with government approval, to form unions. The law did not cover workers in the informal sector, who make up about 85 percent of the labor force. The legal definition of workers excluded managerial, supervisory, and administrative staff. Civil servants, firefighters, security guards, and employers’ confidential assistants were not allowed to join unions. Unions were not permitted in export processing zones (EPZ) and special economic zones. The law provided for workers in unions to bargain collectively and engage in legal strikes and prohibited antiunion discrimination.


The law provided for workers in a collective bargaining union to have the right to strike in the event of a failure to reach settlement, but the law placed limitations on this right. At least 75 percent of union employees had to support a strike action. The government could prohibit a strike deemed to pose a “serious hardship to the community” and could terminate any strike lasting more than 30 days. The law additionally prohibited strikes for the first three years of commercial production if the factory was built with foreign investment or owned by a foreign investor. Few strikes followed the cumbersome legal requirements, however, and strikes or walkouts often occurred spontaneously. Work stoppages, strikes, and workplace actions regarding wage arrears, improper or illegal shutdowns, layoffs, terminations, and discrimination were prevalent in several sectors during the year.


The law required every factory with more than 50 employees to have a participation committee. The law stated there was no requirement for a participation committee if a trade union existed in the establishment. Employers often selected or appointed workers to participation committees rather than allowing worker elections to those positions as required by law. Employers also failed to comply with laws and regulations that provided for the effectiveness and independence of participation committees.


The law severely restricted the right to organize and bargain collectively for the nearly 488,000 workers in the EPZs. EPZ workers could establish worker welfare associations (WWA), but the law did not empower WWAs to independently represent workers in collective bargaining. WWAs were prohibited from establishing any connection to outside political parties, unions, federations, or NGOs.


WWAs remained dominated by the Bangladesh Export Processing Zones Authority (BEPZA) and continued to supplant independent unions. Among the 456 operating enterprises in the eight EPZs, WWAs were formed in only 288 enterprises. The law gave BEPZA discretion to ban any strike in EPZs it views as prejudicial to the public interest. The Ministry of Labour and Employment’s Department of Inspection for Factories and Establishments (DIFE) continued to face obstacles to conducting inspections in the EPZs, including the requirement to obtain prior approval from the BEPZA Executive Chairman. Following the issuance of the October 2022 EPZ Labor Rules, the DIFE conducted roughly 45 inspections in EPZ factories. The law provided for EPZ labor tribunals, appellate tribunals, and conciliators, but those institutions were not established. Instead, 13 labor courts and one appellate labor court heard EPZ cases. The law did not empower the DIFE to file cases in the labor courts or give notice to an establishment for violations in EPZs factories, but the law required DIFE to send its observations directly to the BEPZA. More than 50 percent of WWAs in any particular zone of an EPZ were required to approve a federation.


There were 10 economic zones in operation under the Bangladesh Economic Zones Authority. The DIFE, however, did not have the authority to inspect enterprises in the economic zones. Workers in the economic zones were prevented from forming trade unions and were not permitted to establish communication with external worker rights organizations.


The government did not effectively enforce laws protecting freedom of association, the right to bargain collectively, and the right to strike. Penalties for unfair labor practices and antiunion discrimination were not commensurate with penalties for other laws involving denials of civil rights. Penalties were sometimes applied against violators, more often against workers than employers. The Department of Labor (DOL) within the Ministry of Labour and Employment reported that between January 2022 and August 2023, workers filed 17 complaints regarding unfair labor practices and antiunion discrimination, and as of November all complaints remained under investigation.


The law did not allow workers to file unfair labor practice or antiunion discrimination cases directly with the labor courts. Workers first had to file complaints with the DOL alleging unfair labor practices. The DOL first investigated and attempted to bring the parties to consensus through arbitration. DOL’s decisions were not binding. The DOL could file cases with the labor court if arbitration failed to reach a resolution between the parties. A labor court could order reinstatement of workers fired for union activities, but reinstatement was rarely awarded. The DIFE had authority to mediate wage-related disputes. Labor organizations reported the conciliation process slowed down workers’ access to justice.


While the law allowed for more than one union in a factory, the DOL did not allow more than one union per factory in the garment industry. Labor leaders continued to report that only management-supported unions received quick union registration credentials.


Barriers to union formation remained in law and practice. The law required a minimum of 20 percent of workers at an enterprise for union registration. According to labor leaders and labor organizations, unions in large enterprises faced significant difficulties meeting the 20 percent membership threshold. From January to August, the DOL rejected 37 registration applications for not meeting the membership threshold. Labor groups also cited practical barriers to registration beyond the law, including the DOL’s failure to review and issue registration certificates to unions within the 55-day legal limit, comparing worker signatures, and requiring unions to hold two general meetings for registration. Labor rights organizations reported that politically affiliated factory owners interfered with the union registration process and trade union activities. The International Trade Union Confederation noted the labor law did not align with international labor standards and raised concerns over obstruction in forming trade unions and police interference with peaceful workers protests. The confederation also called for stronger measures to restrain interference in union elections.


Labor leaders, organizers, and workers faced violence, threats, and unfair labor practices for exercising the rights to freedom of association and collective bargaining. On June 25, assailants killed prominent labor organizer Shahidul Islam after he attempted to resolve a labor dispute over two months of unpaid wages and holiday bonuses at the Prince Jacquard Sweaters factory near Dhaka. Islam was the president of the Gazipur branch of the Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation. According to press reports, an autopsy report from August 9 indicated he died from profuse bleeding after sustaining a blow to his head. The Industrial Police, the lead agency on this case, reported the arrest of nine individuals and confessional statements from key suspects.


Following attempts by workers to organize at the Fashion Forum Limited factory, in March factory management beat three organizers of the proposed union and forced them to resign. The following day, workers protested and clashed with the management. On March 31, factory management filed a criminal case against Bangladesh Garment and Industrial Workers Federation general secretary Babul Akter for supporting union activity at the factory and allegedly encouraging workers to engage in violence in the factory. Criminal charges against Akter remained pending as of November.


Labor groups reported violence, intimidation and unfair labor practices against organizers, union leaders, and workers following the second attempted union registration of the Sommilito Sramik Union at Mondol Fashion. According to reports, on July 15, Mondol Fashion factory authorities detained, beat, and threatened union leaders and members. On July 29, factory management forced three union leaders to sign employment termination orders. Labor groups reported that at least six union leaders and members took shelter in the Sommilito Garment Shromik Federation office while others left the area in fear for their lives.


During the year, the Ministry of Labour and Employment reported the garment sector had 1,203 active trade unions and around 450 active participation committees. Labor leaders, however, claimed much lower numbers of trade unions, asserting intimidation, corruption, and violence suppressed union organizing. The ministry reported the fisheries sector had 71 active unions. Only 70 tanneries were unionized under the sector’s single union. The tea sector had one union, the largest in the country, representing around 150,000 workers at 167 plantations.


B. PROHIBITION OF FORCED OR COMPULSORY LABOR

See the Department of State’s Trafficking in Persons Report at https://www.state.gov/trafficking-in-persons-report/.


C. PROHIBITION OF CHILD LABOR AND MINIMUM AGE FOR EMPLOYMENT

See the Department of Labor’s Findings on the Worst Forms of Child Labor at https://www.dol.gov/agencies/ilab/resources/reports/child-labor/findings .


D. DISCRIMINATION (SEE SECTION 6)

E. ACCEPTABLE CONDITIONS OF WORK

Wage and Hour Laws: The National Minimum Wage Board established minimum monthly wages by sector. The minimum wage was not indexed to inflation, but the board occasionally made cost-of-living adjustments to wages in some sectors. None of the set minimum wages provided a sufficient standard of living for urban dwellers, but many were above the poverty level. Failure to pay the specified minimum wage was punishable by imprisonment up to one year, a fine, or both, and the employer was supposed to repay owed wages. There were 42 sectors under minimum wage regulation. During the year, the government did not include any new industrial sectors under the minimum wage regulation. Despite a labor law requirement to revise the minimum wage every five years, wages in many sectors long remained unchanged. Wages received little attention in sectors lacking strong trade unions or labor organizations.


By law a standard workday was eight hours. A standard workweek was 48 hours, but the workweek could be extended to 60 hours subject to payment of an overtime allowance double the basic wage. Overtime could not be compulsory. Workers had to have one hour of rest if they worked for more than six hours a day, or a half hour of rest for more than five hours’ work per day. The law stated every worker should be allowed at least 11 festival holidays with full wages in a year, fixed by the employer in consultation with the collective bargaining agent, if any. Factory workers were supposed to receive one day off every week. Shop workers received one-and-a-half days off per week. The labor law did not specify a penalty for forced overtime or failing to pay overtime wages.


Occupational Safety and Health: The law establishes occupational safety and health (OSH) standards, and amendments to the law created mandatory worker safety committees. The labor law specified sanctions when failure to comply caused harm. Penalties for violations of OSH laws were commensurate with those for crimes such as negligence.


Labor law implementing rules outlined the process for forming OSH committees in factories. The committees included both management and workers nominated by the collective bargaining agreement or, in absence of an agreement, worker representatives of the factory’s participation committee. Where there was no union or participation committee, the Ministry of Labour and Employment was responsible for arranging participation committee elections.


The highest number of workplace accidents took place in the transport, construction, production, and service sectors. The construction and clothing sectors were reportedly the deadliest for workers.


On May 4, a boiler explosion at the Rahima Industrial Complex Limited killed seven workers. According to the fire service, the explosion occurred due to excess temperature in the boiler chamber. During the investigation, the DIFE found several safety violations including absence of safety equipment.


In 2022 the Ministry of Commerce approved and issued a framework between the DIFE and the Ready-Made Garment Sustainability Council (RSC), a private, tripartite organization with a mandate to oversee safety standards at garment factories. Under the framework, the DIFE held meetings with RSC; shared data and reports in prescribed format; conducted technical discussion on safety monitoring; and established a joint working group. The Ministry of Commerce supervised the activities of the RSC through the Government Coordination Council. The council included participation from the Ministry of Foreign Affairs, Ministry of Textiles and Jute, Ministry of Labour and Employment, Ministry of Industry, Bangladesh Economic Zones Authority, and BEPZA.


The building code failed to meet basic international fire safety standards, and government oversight of building safety outside the garment export sector remained limited. Although prior work under the brand-led Accord and similar programs improved structural, fire, and electrical safety conditions in 2,300 ready-made garment factories producing for Western brands, safety auditors reported fire detection and suppression systems in these factories often did not work because they were not maintained properly. The government’s National Initiative covers 1,549 additional RMG factories producing for domestic sale or for export to other foreign markets. Under the DIFE, the government formed a Remediation and Coordination Cell to monitor and remediate National Initiative factories. The DIFE oversaw an Industrial Safety Unit, consisting of seven engineers, to oversee the National Initiative factories. The Industrial Safety Unit worked closely with the RSC to monitor and remediate industrial safety standards in the garment sector.


Wage, Hour, and OSH Enforcement: DIFE labor inspectors only had the legal authority to make unannounced inspections in establishments outside the EPZs. Within EPZs, the DIFE could only conduct announced inspections, with limitations. The government did not effectively enforce minimum wage, overtime, and OSH laws. Penalties for violations were not commensurate with those for similar crimes and were rarely applied against violators.


DIFE inspectors did not have authority to issue penalties or initiate sanctions; they could notify establishments of violations in writing and file complaints with the labor courts. The DIFE regularly filed cases with the labor courts against employers for administrative violations of the law, such as not maintaining documents. The Ministry of Labour and Employment reported the DIFE filed cases against some factories for failure to pay minimum wages and overtime during the year, but labor organizations saw no cases.


There were criticisms regarding the DIFE’s complaint mechanism. A worker had to enter their name, position, and identity number in the complaint form. Once the complaint was received, the DIFE issued a letter to factory management with reference to the complaint form, which identified the complainant. This mechanism provided inadequate protections to workers and raised doubts on efficacy. BEPZA maintains a helpline telephone number for EPZ workers.


DIFE’s resources were inadequate to inspect and remediate problems effectively. The factory inspection department had only 401 inspectors and 31 inspectorate offices to review safety matters in more than 530,000 production units and shops.


Although increased focus on the garment industry improved safety compliance, resources, inspections, and remediation across other sectors were inadequate. Legal limits on hours of work were routinely violated and a labor rights NGO found 95 percent of factories did not comply with overtime limits. Employers often required workers, including pregnant women, to work 12 hours a day or more to meet quotas and export deadlines, but they did not always properly compensate workers for their overtime. Employers in many cases delayed workers’ pay or denied full leave benefits.


According to the Labour Force Survey 2016-2017, of a total of 61 million employed persons, 85 percent worked in the informal sector. Legal protection for workers in the informal sector was inadequate although most OSH incidents occurred there.