Search

Wednesday, December 28, 2016

The dark colors of the times

By Fazal M. Kamal


Every generation feels that it’s living through the worst of times. As do the ones now that are occupying Earth for fleeting moments, as is the eternal law. In times like the present, obviously, there are more than only a couple reasons for conditions to look as dismal as they do. And those are mighty substantive reasons too. The ongoing deaths and destructions are more than sufficient to make reasonable people feel sick to the stomach, as the phrase states.

While thousands are being killed indiscriminately---on myriad supposed causes!---and while hundreds of thousands are rendered homeless, the world cannot but note with colossal regret the rise to power of all sorts of megalomaniacs and demagogues with tons of hubris, conceit and narcissism, not to mention disdain for their fellow humans. It’s little wonder then that people are being sacrificed with disturbingly zero compunction.

For a random instance take the case of the governing cabal in Israel. As it persistently continues to increase the acreage of its occupation of Palestinian property, farms and land, it demands to be allowed the total and unencumbered freedom to do this as well as other murderous acts and not be held accountable for its actions that not only are illegitimate but are also in many cases in direct violation of United Nations resolutions (for whatever they are worth).

A very recent example is a UN resolution that has condemned the disgraceful Netanyahu administration’s laissez faire approach to relentless land grab without the littlest concern about the people whose land is being grabbed for what’s been called building settlements for mostly belligerent groups of Israelis who, to begin with, have long ago decided to equate religion with land, as bizarre as it may sound.

While being deadly irresponsible Bibi (believe it or not, yeah, that’s how he’s known to many) has the ugly arrogance to display immense and insane rancor. The fact, however, is that he is, in actuality, supported by a large segment of the Israeli populace, proving yet again that the majority isn’t always right or moral or even rational. Nevertheless, the unfortunate reality is that, in perfect view of the entire world, they’re getting away with murder, literally.

Another abhorrent development is the rise and rise of a property developer in the United States ably voted to the highest office in the land (and possibly the most powerful oval room on the globe) mainly by a potent combination of the “rust belt” and the “rustic belt” defying the odds. Certainly their triumph was crucially assisted by a number of failings on the part of their adversaries, one of them being, as has been noted by many, liberal elitism---to say nothing of the FBI director! Perhaps so; but the ascendance of the vengeful and the hysteric in no way augurs well for people anywhere.

This once again brings to the fore the unsolved conundrum of whether the majority’s opinions are valid, correct, ethical. If facts are scrutinized they tend to demonstrate that in a large enough sampling this isn’t the case. Aside from Israel another instance that can be cited relates to Russia---and the case is clear as sparkling daylight. The people there plainly prefer what are known as “strongmen” maybe because of their history. And “strongmen” everywhere have a decided weakness to bes intolerant of any whiff of dissent.

Hence the ease with which Mr. Putin has been so successful in cheering up another person who has a declared preference for “strongmen,” i.e. a president-elect who can’t wait to intervene in international matters even though there are some weeks to go before he can tuck himself in that lofty office in the White House. Unmistakably a master of Twitterverse with an unrestrained gusto to tweet anytime---day, night, morning or evening. But that’s an accomplishment that could just as well come to someone with a restricted glossary.

Given the universal nature of the world as it exists now in social, cultural, economic and political terms, it is to be expected that many other leaders would develop a penchant to not merely utilize the so-called social media but also become increasingly petulant and intolerant of opinions at variance to her or his own. To quote Indian activist lawyer Indira Jaising, “the defining characteristic of the present government [in India] is that it undermines the rule of law… The second attempt to undermine the rule of law was the refusal to make appointments of judges to the high courts on the recommendation of the Chief Justice of India… To disregard the constitution has now become a pattern with this government.”

While talking with The Wire about the Indian government’s actions against some of the NGOs active in human rights and legal issues Ms. Jaising added, “Look at Teesta [Setalvad], she has been at the receiving end of the present administration(‘s anger) for the last several years, but it has not stopped her from pursuing the cases of the 2002 riots. This government should understand that some of us do what we do not because we are hired to do it or because we get money to do it, it’s not the foreign funding which makes us speak up; it is because we believe in the work we do. In any case, we are taking legal recourse to fight for our constitutional rights.”

Rulers with inclinations toward total control may also look at Turkey’s President Erdogan for a better grasp of how to intimidate and snuff the daylight out of persons he, for reasons of his very own, cannot stand. He’s been doing a spectacular job on that front especially following an “attempted coup” that may or may not have been an attempted coup. But that apparently for now is irrelevant because hundreds are being targeted because of their purported involvement and/or support in that “incident.”

Noticeably, whatever the color of the times (and unhappily we’ve to confess the dominant color is a very dark gray, at best) the inclination of those in control of the state machinery is more often than not to use it for the purpose of neutering opposition and dissent even if these are not against the law and even if they’re enshrined in a nation’s constitution and even if the UN with the backing of the largest number of countries adopts a resolution. The reason for these detestable transgressions is a simple one: when moral principles are abandoned, anything is possible, both in individual and collective instances.

Tuesday, December 27, 2016

জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে কেন

কাদির কল্লোল, বিবিসি বাংলা, ঢাকা
বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর চালানো বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা সন্দেহ তৈরি হচ্ছে, এবং এ সব অভিযানের সরকারি ব্যাখ্যা নিয়ে তারা নিজেরাও সন্দিহান - বলছে বিরোধীদল বিএনপি
পুলিশের একজন কর্মকর্তা অবশ্য এসব সন্দেহকে সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন।
তবে এই 'সন্দেহের' কথা নতুন করে উঠেছে ঢাকার পূর্ব আশকোনা এলাকায় পুলিশের জঙ্গীবিরোধী অভিযানের পর।
আশকোনায় নিহতদের একজন এক মহিলা - যিনি নিজের শরীরে বাধা গ্রেনেডের আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিহত হন । আরেক নিহত কিশোর আফিফ কাদেরীর মৃতদেহ পাওয়া যায় বাড়িটির ভেতরে । তার শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে মৃতদেহের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন।
অভিযানের সময় জঙ্গী সন্দেহে আটক দু'জন নারীকে আজ আদালতে হাজির করে সাত দিনের পুলিশী রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
কিন্তু এসব অভিযানের সময় ঠিক কি ঘটে তা নিয়ে লোকজনের সাথে কথা বললে তাদের মধ্যে এক ধরণের বিভ্রান্তি দেখা যায়। ঢাকার কল্যাণপুর সহ বিভিন্ন এলাকার জঙ্গিবিরোধী অভিযান নিয়েও এধরণের বক্তব্য পাওয়া গেছে।
ঢাকার রাস্তায় কয়েকজনের সাথে কথা বলে দেখা গেল, তাদের মনে সন্দেহ রয়েছে এবং পুলিশের বক্তব্য তাদের কাছে পরিষ্কার নয়।
একজন বলেন - "সরকার যা বলে তাই আমাদের বিশ্বাস করতে হয়, কারণ সরকারের বক্তব্য যাচাই করার সুযোগ আমাদের নেই ।"
একজন তরুণী বললেন, যা ঘটছে তা তার কাছে 'কনফিউজিং' লাগছে - "কখনো মনে হচ্ছে এগুলো সত্যি ঘটছে, কখনো মনে হচ্ছে সরকার পক্ষে এগুলো দেখানোর জন্য প্ল্যান করে ।"
'এসব অভিযানের ভিত্তি কি, জঙ্গীদের উৎসস্থল কি' - এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন একজন।
ওদিকে পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক দলও। আশকোনার অভিযানের পর বিরোধীদল বিএনপির একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই অভিযানের সরকারি ব্যাখ্যা নিয়ে তারা সন্দিহান।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলছেন, জঙ্গী ইস্যুকে জিইয়ে রাখার জন্য সরকার অবিযানের নামে এসব ঘটনা সাজাচ্ছে বলে তারা মনে করেন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের নূর খান লিটন বলেন, আগের অভিযানগুলোর সময় আটক ব্যক্তিরা আদালতে তাদের অনেক আগে থেকে আটক করে রাখার কথা বলেছিল।
"কোর্টে অনেকে বলেছেন ছয় মাস বা একবছর আগে তাদের আটক করা হয়েছে। ফলে এসব অভিযান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। তবে সব ক্ষেত্রেই যে এটা সত্য - তা নাও হতে পারে।"
তবে পুলিশ এসব বক্তব্য মানতে রাজী নয়। ঢাকা পুলিশের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, এসব অভিযান ঘটেছে দিনের আলোতে, যা ঘটেছে তা তারা প্রকাশও করেছেন। কিন্তু একটি মহল এ নিয়ে সন্দেহ তৈরির চেষ্টায় আছে বলে তাদের ধারণা।
"আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা, সততা এবং জবাবদিহিতার সাথেই এ সব অভিযান চালাচ্ছি। এতে বাড়ির মালিক, ভাড়াটে, আশপাশের লোক - সবারই বর্ণনা থাকে। কেউ সন্দেহ করবে এটা আমরা চিন্তাই করি না " - বলেন মি. রহমান।
"আর যাদের সন্দেহ করার - এমন এক শ্রেণীর লোক সারা জীবনই থাকবে যারা সন্দেহই করে যাবে, কোন কাজ করতে পারবে না" - বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Thursday, December 22, 2016

The truth is right here

  By Fazal M. Kamal

 

  Apparently, and especially as gleaned from the verbal declarations of the leaders of myriad types and various ranks, the government has assumed a schizophrenic tendency. It wants its political adversaries to participate in electoral processes yet, simultaneously, they keep up a persistent drumbeat of negative proclamations. And more often than not the edicts are unadulterated confections of the uninitiated and ignorant personages, some even verging on the imbecilic.


On the same day and often almost in the same breath, administration leaders, for causes that aren’t most times clear, urge the main opposition alliance to be party to its political dispensation but, as stated before, seeming to have instant amnesia, this is followed up, fast as greased lightning, with accusations of the vicious kinds oftentimes straining the credulity of the people and could well be in the domain civil prosecution.

Naturally, this splintered personality approach to governance, politics, public speaking and

all that those encompass give birth to a plethora of questions in the minds of all rational beings. If we assume---perhaps irrationally---the ruling party and its cohorts want a peaceful and cooperative democratic environment, why are they relentlessly hounding opposition supporters? Why are activists and political opponents of the regime disappearing with almost clockwork regularity? Why are dissenters reprimanded in public declarations by many who’ve been gifted ministerial elevations and have readily available pulpits to pontificate? Why, indeed, are opposition leaders attacked virulently on a personal level as if there’s an ongoing domestic fracas?


This is but a minor sampling of the contradictions that arise due to the self-contradictory assertions of some of the motormouths ensconced in the corridors of power. (Whether some of them deserve to be in those comfy chairs, is obviously a different but live issue that can be dealt with another good day.) To this already vertiginously head-spinning atmosphere newer issues are added, like the incursion of persecuted Rohingya unabashedly and inhumanely victimized by the Myanmar armed forces and the atrocious actions of a section of Buddhist monks topped off by the uncaring and shameful attitude of a Nobel laureate.


Given that there is a collection of a number of other unresolved problems, both internal and external aside from subjects that relate to the neighborhood, it should not require any elaboration to realize that it is definitely in the interest of the nation---maybe not in the interest of coteries---to have or create as few problems as are humanly possible so that the people feel secure in their present and future and not be buffeted by anxieties engendered by unpredictable and unpleasant political circumstances.  

In a country where, for one instance, a very recent report has revealed, 40 percent of young people aged between 15 and 24 years today are “not in education, employment or training” making the actual number of such youth reaching 11.6 million as there are at present a total of 29 million youth of that age group in the country. This is the third-worst statistic in the Asia-Pacific region according to the ILO. Ignoring this so-called time bomb, as well as many other matters demanding instantaneous attention, the rulers of this country evidently would rather focus on power plays, probably believing that keeping these young people engaged in internecine combats for the lumps that come their way due to political alignments is good enough.


With furious forces of geopolitics bearing down on the South Asian region, a fact that cannot be evaded even if the most spirited genuflections are displayed, and the probabilities of an easing of these elements being next to nothing in view of the objective and evolving conditions, it certainly makes more sense to have a reasonably cohesive nation behind an able administration instead of a bickering and strife-filled political landscape.


Evidently, therefore, it should be serving the interests of the people to minimize the sometimes deadly political battles and generate an environment that can demonstrate to the nation that definite positive times await them, and not a milieu where murders and mayhem are almost everyday occurrences, where sadistic oral exercises are not the norm, and where the national leadership will be free to make decisions that it believes is appropriate and correct primarily for the welfare of the people.


In brief, it’s high time the noxious political atmosphere was purged for the greater good of the nation. It doesn’t have to be self-aggrandizement all the time and perhaps forever. Clearly, it does not require knowledge in nanotechnology to appreciate these axiomatic truths. The ethos of having it all for all time must cease to function, simply because it’s the right course.

Sunday, December 18, 2016

India must rethink Bangladesh strategy

By Seema Guha / First Post
With Bangladesh celebrating its Independence on Friday, India’s role in the 1971 liberation war is being emphasised both in Dhaka, Delhi and Kolkata. Ever since Prime Minister Sheikh Hasina came to power in 2008, relations between the two neighbours are on a high. However, some blips have occurred in recent times which if not repaired in time, do not bode well for the future.
Hasina is coming to India in February to renew India-Bangladesh ties. But with the Teesta Waters Agreement showing no signs of being signed in a hurry, there is disappointment in Bangladesh. Modi’s visit to Dhaka in 2015 generated much goodwill. The prime minister’s speech where he said air and water did not belong to any nation, but was the property of all humanity.
The Bangladeshis were bowled over by Modi and believed he would be in a position to deliver on the Teesta agreement. However, chances are now dim with West Bengal chief minister Mamata Banerjee unlikely to come on board.
However, the Teesta is not the only issue that is bugging Dhaka. Bangladesh just cannot understand the noise in India over its recent purchase of two submarines from China at a reportedly very competitive price of $24 billion. The deal was inked in 2013, but New Delhi’s hackles were raised when the first submarine was delivered last month. This, coupled with the fact that President Xi Jinping, during his visit to Dhaka in October, extended a $24 billion loan to Bangladesh. All of this aligns with New Delhi’s concerns about Beijing spreading its wings across India’s neighbourhood and its fears of encirclement by its powerful Asian rival.
For Bangladesh, India’s fears are completely unjustified
"Yes, we have friendly relations with China, but our ties with India are at another level. We can never forget India’s contribution to the Liberation War. So the concern here is baffling," said a senior Bangladeshi official, contacted by phone from Delhi. He spoke on condition of anonymity.
Like their counterparts in West Bengal, Bangladeshis are fiercely independent. They value their freedom and sovereignty earned with blood, sweat and tears and the loss of thousands of lives. They acknowledge and are grateful to Indira Gandhi and India. But it is a sensitive nation and savours its freedom of choice. So, if Dhaka wants to have good relations with Beijing, it should not make Delhi jittery. After all, nations choose what is best for their respective national interests, and a good deal is a good deal whether for individuals or nations.
The current Awami League government is India-friendly, but that did not prevent Hasina from ordering the submarines from China.
Bangladesh wants to shore up its defence capabilities to secure its maritime boundaries and its special economic zone. Dhaka is doing this for self-defence and not to threaten any other country. As Bangladeshi officials never tire of pointing out, these submarines will never be used against India, so where’s the threat?
New Delhi is certainly not afraid of Bangladesh attacking India, but it is concerned about Beijing’s growing clout in India’s neghbourhood. China has always been an all-weather friend to Pakistan and is investing $46 billion for Xi’s pet 'One-Belt One-Road' project. Despite a change in government, Sri Lanka too has agreed to allow the Chinese to build a port city in Colombo. China is also active in the Maldives and Nepal.
Considering that the proposal to build a deep sea port in Sonadia, near Cox’s Bazar in Chittagong is not going through and Dhaka will have a global tender for a consortium to take on the
project, India should be reassured. Somehow, suspicion and concern remain. New Delhi was looking at Chinese moves in buiding the Hambantota port in Sri Lanka, Gwadar in Pakistan and Sonadia in Bangladesh. The feeling of encirclement was complete.
But Dhaka has assured Delhi about Sonadia. It is also a true that Hambantota was first offered to India, but no one was willing to take up the port project.
India needs an alternative vision for the region
It is a fact that China is moving quickly in the neigbourhood. China’s way of working, for a variety of reasons is certainly more efficient than India’s slow progress on projects. So all countries that seek to upgrade their infrastructure will welcome Chinese investments. As Srinath Raghvan, an independent analyst who follows Bangladesh closely, put it: "China’s maritime and one road one belt policy is hard to resist. India does not have an alternative to offer on the table. Bimstec (Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Cooperation) is a slow starter."
China delivers, India scrambles and takes time for everything. In such a case, naturally, India’s neighbours go with China.
"India has not been able to give an alternative vision that is as appealing. So, there is resentment in Delhi and attempts to browbeat the smaller neighbours, but this can boomerang,’’ said Raghavan. He acknowledged that China is moving in fast in the periphery. It is time for India to rethink its strategy.

Saturday, December 10, 2016

কামালপুরের যুদ্ধ এবং এক দুঃসাহসী মেজরের গল্প

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে মেজর জিয়া



By জাকারিয়া

জুলাই, ৩য় সপ্তাহ, ১৯৭১


ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার মইনুল হোসেনের প্রতি জিয়ার হুকুম এলো কামালপুর বিওপিতে হিট করতে হবে। কামালপুরের মত এত শক্তিশালী পাকিস্তানী ঘাঁটিতে আক্রমনে মইনের হাঁতে না আছে রসদ, না আছে যথেষ্ট প্রশিক্ষিত সৈন্য, না পর্যাপ্ত গোলাবারুদ। মইন যখন হিট এন্ড রান কৌশল নিয়ে ভাবছিলেন তখন জিয়ার এই নির্দেশ তাঁর মাথায় বজ্রাঘাতের মতই মনে হল। অথচ  জিয়া তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। জামালপুর, টাঙ্গাইল এবং ঢাকা প্রবেশের সংযোগ মুখেই ছিল কামালপুর বিওপির অবস্থান। জিও স্ট্র্যাটেজিক্যালি এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এটি অক্ষত থাকা মানেই মুক্তিযোদ্ধাদের ঢাকায় প্রবেশের স্বপ্ন চিরতরে ত্যাগ করতে হবে। কিন্তু জিয়া নামের স্বল্প পরিচিত এক মেজরের স্বপ্ন তিনি ঢাকায় প্রবেশ করবেন এবং তা করবেন এই ঘাঁটিটিকে গুড়িয়ে দিয়েই।


কামালপুর ঘাঁটিটিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এতোটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে যে, এখানে মোট চারবার নিয়মিত বাহিনী পর্যায়ে সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে। ( ৩১ জুলাই, ২২ অক্টোবর, ১৪ নভেম্বর, ২৪-৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ )। হিট এন্ড রান হয়েছে মোট ২০ বার।

কামালপুর যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১৯৭ জন, আহত অসংখ্য, পাকিস্তানের মেজর আইয়ুব সহ মোট নিহত ২২০ জন। শুধুমাত্র এই এক যুদ্ধেই বীর উত্তম থেকে বীর প্রতীক মিলিয়ে ২৯ জন মুক্তিযোদ্ধা সাহসিকতায় পুরস্কার পেয়েছেন। পুরো মুক্তিযুদ্ধে এমন ইতিহাস দ্বিতীয়টি আর নেই।

যুদ্ধ

রাত ৩:০০ টা। জিয়া নিজে অবস্থান নিয়েছেন টিলার উপরে। আর সে অবস্থান থেকে কামানের গোলা বর্ষণের মাধ্যমেই যুদ্ধের সুচনা হয়। রাত সাড়ে তিনটায় ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ তাঁর দুই প্লাটুন সৈন্য নিয়ে শত্রু ঘাঁটিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে তিনি বিওপির একদম কাছে গিয়ে মেগাফোনে পাকিস্তানিদের উদ্দ্যেশ্যে বলতে থাকেন,


‘আভি তক ওয়াক্ত হ্যাঁয়। শালালোগ সারেন্ডার করো, ন্যাহি তো জিন্দা নেহি ছোড়েংগা’।

সালাউদ্দিন মমতাজের অসীম সাহসে আর তাঁর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমনে পাকিস্তানিদের প্রথম ডিফেন্স কর্ডন শেলপ্রুফ বাঙ্কারে ঢুকে পরে। এ সময় সালাউদ্দিন মমতাজ আরও সাহসী হয়ে উঠেন এবং ২০-২৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে বিওপির কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকে পড়েন। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই তিনি কমান্ড করছিলেন। তাঁর সহযোদ্ধারা তাকে নিরাপদ পজিশন নিতে বললেও লাভ হয়নি। হঠাৎ ই মেশিনগানের গুলি এসে ঢুকে তাঁর মাথায়, পাশে বিস্ফোরিত হয় মর্টারের শেল। লুটিয়ে পড়েন এই বীরযোদ্ধা...

স্বাধীনতার সোনালী রোদের স্পর্শ তাঁর আর পাওয়া হল না।

এক পর্যায়ে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে হাতাহাতি আর বেয়নেট দিয়ে যুদ্ধ হয় বাংকারের ভেতরে বাইরে।

সালাউদ্দিন মমতাজের নিহত হবার খবর জানতে পেরে মেজর মইন ওয়ারল্যাসে ক্যাপ্টেন মাহবুবকে কমান্ড করেন পেছন থেকে আক্রমনের জন্য। কিন্তু ক্যাপ্টেন মাহবুবের সাড়া না পেয়ে তিনি ঝোপঝাড় আর গাছের আড়াল থেকে বের হয়ে  খোলা জায়গায় চলে আসেন যেন ওয়ারল্যাস ভালোভাবে কাজ করতে পারে। দুর্ভাগ্য এবারেও পিছু ছাড়েনি তাঁদের।এক ঝাঁক মেশিনগানের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান ওয়ারল্যাস অপারেটর। এ সময় তাঁর ওয়ারল্যাস সেটটিও অকেজো হয়ে যায়।  মেজর মইন হতভম্ব হয়ে এ সময় চিৎকার করে অনেকটা নিষ্ফল নির্দেশ দিয়ে যেতে  থাকেন। খুব দ্রুত ভোরের আলো ফুটে উঠে। তাঁরা দেখতে পান চারিদিকে হতাহতের ছড়াছড়ি। ক্যাপ্টেন হাফিজ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে আছেন। লেঃ মান্নানও আহত হয়েছেন। জিয়া উদ্ধারকাজে যোগ দেন। গোলাগুলি চলা অবস্থাতেই জিয়া, মইন, লিয়াকতরা মিলে হাফিজ, মান্নান সহ অন্য আহত যোদ্ধাদের উদ্ধার করে পিছু হটেন।

অন্যদিকে দুইটি ১২০ মি মি মর্টার আর বেশ কিছু সেনা সহ বকশিগঞ্জ থেকে কামালপুরের দিকে আসতে থাকা তিনটি লড়ি উড়ে যায় কাট অফ পার্টির পুতে রাখা মাইনে। তাঁদের এ্যামবুশে দশ জন পাক সেনা নিহত এবং ১০-১১ জন আহত হয়। এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন, ২/৩ জন আহত হন। এ যুদ্ধে মোট ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন আর আহত হন সাতান্ন জন যা মোটামুটি প্রথম বেঙ্গলের এক দশমাংশ। কামালপুরের এই যুদ্ধ ৩১ বালুচ রেজিমেন্টের জন্য ছিল এক দুঃসহ  নাইটমেয়ার। তাঁরা ধারণাই করতে পারেনি যে, নাতিদীর্ঘ প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদেরকে নিয়ে জেড ফোর্স এত শক্ত কামড় দিতে পারে।


ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ স্বাধীনতার দলিল পত্রের ১০ম খন্ডে জানিয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন পাকিস্তানী সেনা নিহত হয়েছিল সে যুদ্ধে।


শাফায়াত এবং মইন দুজনেই বলেছেন, টানা তিনদিন পাকিস্তানী আর্মির হেলিকপ্টার ঢাকা থেকে কামালপুর আসা যাওয়া করেছে কেবল পাকিস্তানী আর্মিদের লাশ আর আহতদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য।

যুদ্ধের পর ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মানেকশ হেলিকপ্টারে করে জেড ফোর্স হেড কোয়ার্টারে আসেন আর উচ্ছসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘জেড ফোর্স শুড আপ রিয়াল টাইগার ক্যারেকটার।’ এমনকি এটাও বলেন, তাঁর ধারণাতেও ছিল না যে, জেড ফোর্স এমন অপারেশনের সাহস রাখে। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী জেড ফোর্স কে যেসব ওয়ারল্যাস দিয়েছিলেন সেগুলো নিম্ন মানের এবং ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলে মেজর মইন জেনারেল মানেকশ কে অভিযোগ করেছিলেন। মেজর মইনের মতে ক্যাপ্টেন মাহবুবকে সময়মত ওয়ারল্যাসে কমান্ড করতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হত এবং শত্রুপক্ষের ক্যাজুয়ালটি আরও বেশি হত। অতি দরকারের সময় ওয়ারলেসের কাজ না করা ছিল মড়ার উপর খাড়ার ঘা। যুদ্ধের সেই সময়টাতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল এবং আগের কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় পাট ক্ষেতে এক ফুট পানি জমে গিয়েছিল। এ ধরনের যুদ্ধে ক্রলিং এবং কুইক মুভের যে প্রয়োজন হয় তাঁর বিপরীতে এই ব্যাপারটাকে ‘ক্রুশিয়াল লুজিং ফ্যাক্টর’ হিসেবে বিবেচনা করেছেন মেজর মইন।

কামালপুর যুদ্ধে ঘোর অন্ধকার আর মুষলধারে বৃষ্টির কারনে যুদ্ধ প্রায় ৩০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। কিন্তু এদিকে জেড ফোর্সের প্রি এইচ আওয়ার বোমা গুলোও বিস্ফোরিত হতে থাকে। ফলে নিজেদের বোমাতেও ১ম বেঙ্গল ধরাশায়ী হয়েছিল সে রাতে।
কামালপুর যুদ্ধের আহত-শ্রান্ত যোদ্ধাদের নিয়ে ফিরে আসলেন জিয়া এবং মইন। সেদিন ৩১শে জুলাইতেই জিয়া মেজর শাফায়াত জামিলকে ৩য় বেঙ্গল সহ পাঠান জেড ফোরসের ২য় অপারেশনে।

২য় অপারেশনের এই যুদ্ধটিকেই পরবর্তীতে বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাটের যুদ্ধ বলে বর্ণনা করা হয়।


৩১শে জুলাই, ১৯৭১


দুপুরবেলায় যাত্রা শুরু করেন ৩য় বেঙ্গলের সৈন্যরা। পরপর তিনটি ছোট বড় নদী আর কাঁদা পানিতে হেঁটে প্রায় পচিশ মাইল পেরিয়ে সবুজপুর পৌঁছান। সেখান থেকে ১২ টি নৌকায় অপারেশন জোনে পৌঁছান। ব্রক্ষ্মপুত্র আর যমুনার সাথে তিস্তা যেখানে এসে মিশেছে সেখান থেকে চিলমারি বন্দর, কুড়িগ্রাম, উত্তরবঙ্গ আর বক্ষ্মপুত্রের দুই পাড়ে মুক্তিযোদ্ধা ঘাটিগুলোকে নিয়ন্ত্রন করা যায়।

১লা আগস্ট ভোর রাত ৫ টায় লেঃ নুরুন্নবির ডেল্টা কোম্পানি প্রথম হিট করে। ডেল্টা কোম্পানিকে ব্যাকআপ দেয় লেঃ আনোয়ারের আলফা কোম্পানি। ৩০ মিনিটের সেই যুদ্ধে ৩ টি বার্জ, ২ টি শান্টিং ইঞ্জিন ধ্বংস করা হল আর দুইটি বগিতে হেভি মেশিনগানের ব্রাশফায়ার করে বেশ কিছু পাক সেনা আহত কিংবা নিহত করা হল। এর ফলে বাহাদুরাবাদ ঘাট ব্যাপক ভাবে ধ্বংস হয় আর উত্তরবঙ্গের সাথে বাহাদুরাবাদ রেল রুট ক্লোজ হয়ে যায়।

এরই মাঝে জেড ফোর্স’র ৩য় অপারেশনে জিয়া আবার নিজে সম্মুখ সমরে হাজির হন ৩রা আগস্ট ভোর তিনটা ৪৫ এ। অপারেশনটির দায়িত্ব ছিল অষ্টম বেঙ্গলের উপর। শেরপুরের ঝিনাইগতি থানার এ যুদ্ধে পাকিস্তানিদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। মুক্তিযোদ্ধারা রান এন্ড ক্রল করে বিওপির ৫০ গজের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের তীব্রতায় সেনারা বিওপি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী ক্ষেতে পালিয়ে গিয়েছিল। আক্রমনে ছিল ক্যাপ্টেন আমিন আহমেদের ব্র্যাভো কোম্পানি আর লেঃ মোদাসসের’র ডেল্টা কোম্পানি। আর বিওপির পাশে শালবনে ফরোয়ার্ড এরিয়া এসেম্বলি থেকে জিয়া ওয়ারল্যাস  যোগাযোগের মাধ্যমে যুদ্ধ কো-অরডিনেট করছিলেন। মোট ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা সে যুদ্ধে শহীদ হন।

বাহাদুরাবাদ ঘাট আর দেওয়ানগঞ্জে যুদ্ধবিজয়ী ৩য় বেঙ্গল'র যোদ্ধারা তেলঢালায় ফেরার পথে শাহ কামালের মাজারের পাশে একটি জিপ গাড়ির পাশে মেজর জিয়াকে দুঃশ্চিন্তিত অবস্থায় দেখতে পান। ফিরতে দেরি দেখে মেজর জিয়া ধারণা করেন ৩য় বেঙ্গল বাহাদুরাবাদ অপারেশনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। কিন্তু যখন দেওয়ানগঞ্জ অপারেশনের কথা জিয়াকে জানিয়ে বলা হল - এখন থেকে দেশের ভেতরেই যুদ্ধ চালানো অসম্ভব কিছু না তখন জিয়া স্মিত হেসে বললেন,


‘তাহলে তো একবার সবাইকে নিয়ে ভেতরে ঢুকতেই হয়’। 


- মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে আহরিত তথ্য এই লেখায় ব্যবহার করা হয়েছে।  

Friday, December 9, 2016

The cycle needs the courts' intervention

David Bergman / The Wire

Over the past seven years, the practice of enforced disappearances has become a small but routine part of law enforcement in Bangladesh. State bodies, for a variety of reasons – political, law and order, and financial – pick up people and, instead of bringing them to court within 24 hours, keep them in secret detention. They deny having ever taken them, and after holding them illegally for days, weeks or even months, either kill them or formally arrest them after pretending to have just detained them.

A few men are also released without arrest, though they are then usually pushed over the border into India, where they are arrested by Indian officials for illegal entry. This, though, is a relatively new practice.

When the Bangladesh Nationalist Party came to power in 2001, extra-judicial killings were the main concern at the time. However, since the Awami League took over after the elections in 2009, disappearances have become part of the country’s criminal justice system, with at least 320 people secretly detained for various periods of time. In this year alone, human rights and media organisations report over 75 people were secretly detained, of whom 13 were subsequently killed, 18 remain missing and the remaining are shown to have been arrested.

On Tuesday, newspapers, citing eyewitnesses, reported that the paramilitary Rapid Action Batallion had picked up three activists of the Bangladesh Nationalist Party’s youth league in Natore district on Saturday, and that their bodies, bearing wounds from gun shots fired at close range, were found on Monday.

The obvious question is, how do the Bangladesh government and law enforcement authorities get away with flouting the most basic principles of due process and law?

More specifically, why is the High Court not stepping in and using its constitutional powers to ensure the enforcement of law and the immediate release of those detained?


No use moving court?


One answer to this is that the families of the disappeared very rarely approach the courts – and this is not just because many of them do not have the resources to hire lawyers or are unaware of their legal rights.

It is because these families are often advised against taking legal recourse. Lawyers tell them two things: The first is that doing so could jeopardise the safety of their relative by triggering the state into killing the unlawfully detained person. And second, the court will not, in any case, pass orders that will force the state to release the person.

There is no evidence to support the fear that a court process will trigger state murder. Arguably, it does the opposite and is protective of the detained person. Nonetheless, there is a strong perception among many lawyers that the safety of those in detention depends on their families not publicly campaigning for their release – a view that is given credence by the threats such families receive from people associated with the government or law enforcement agencies.

There is more support for the second reason the lawyers offer families about why they should not go to court.

One of the very few habeas corpus applications – a recourse in law under which a person can report an unlawful detention – to be filed in a case of enforced disappearance involves Salauddin Ahmed, a joint secretary general of the Bangladesh Nationalist Party who was picked up in March 2015.

Ahmed’s wife filed the application shortly afterwards and the court passed a preliminary order requiring various state bodies to explain why they should not be ordered to bring him to court.

However, when the law enforcement bodies denied having picked up the Opposition leader or ever having had him in their custody, the court simply passed an order seeking a report from the Home Ministry every six months on the results of their investigation into the disappearance.

Because of cases like this, lawyers are of the view that courts in Bangladesh are not strong enough – or, in some cases, too politicised – to stand up to the state authorities.

This is the impression one gets when looking back at two cases where human rights organisations challenged mass extra-judicial killings in the country – one case dates back to 2006, when the Bangladesh Nationalist Party was in power, and the other to 2009, at the beginning of the Awami League period. After passing initial orders asking law enforcement bodies to respond to the claims, the courts held no further hearings and gave no orders, interim or final. The cases just died.


Activists silent


In such as scenario, one may understand why the families of the disappeared do not take the judicial route to find their loved ones. But it is difficult to appreciate why no human rights organisation has filed a public interest writ in any (or all) of the cases, seeking the release of the illegally-detained men, independent investigations and other orders from the court.

Clearly, their lack of success in the past in getting the courts to pass substantive orders to stop extra-judicial killings may well have had some impact. However, their current reluctance to approach the courts over the enforced disappearances seems to have more to do with partisanship and fear.

Many of the disappeared are Opposition activists, and the human rights organisations do not want to be seen as supporting them. They also fear that doing so would make them vulnerable to harassment at the hands of the government. Odhikar, one of the country’s two main human rights bodies, has already had its funding blocked, its members arrested and is being investigated for money laundering.


Judicial apathy


While cases may not be coming to the courts, nothing is stopping the High Court benches from passing suo moto orders. These are not uncommon and judges in Bangladesh have acted on their own after reading media reports about rights violations that they feel require judicial scrutiny.

Seven years ago, in November 2009, the High Court took up the matter of two disappearances on the basis of news reports. One newspaper article was about a press briefing by one Bablu Khalashi, who claimed his father and uncle, Lutfor and Khairul Khalashi, had been arrested by the Rapid Action Battalion but had not been handed over to the police. He feared the two may have become victims “of an encounter killing”. The second article reported that the two men had indeed been killed in “crossfire”.

On November 17 that year, the court passed a suo moto order calling on the paramilitary force’s director general and the home secretary to show cause within 48 hours “as to why appropriate action shall not be taken against [two Rapid Action Battalion officers] and their companion for the liability of killing” the two men. It also sought “an explanation by the director general of RAB as to such heinous activity now continuing in his battalion”.

The force dismissed the media reports as “baseless, false and motivated” and said no “operation whatsoever was conducted by the RAB 3 and RAB 8 at the alleged place of occurrence”. In an affidavit, it also stated that one of the officers mentioned did not exist. Pointing out that the police were investigating the two deaths, it added that ‘if this Hon’ble Court passes any order in this instant rule, the investigation process of the case will be frustrated”.

On November 23, the court asked the force for more details of the officers involved in the detention of the two men. At the next hearing on December 14, the government sought more time and the court scheduled the next hearing for January 11, 2010, even as it told the attorney general to inform the authorities not to kill any more people in the name of crossfire, encounter or gunfight till then.

However, on January 7, five days before the hearing, the chief justice reconstituted some of the High Court benches, which resulted in the two judges who had given the suo moto rule being assigned to different benches.

It is the responsibility of the office of the chief justice to assign cases such as this one to other courts. But the chief justice of that time, Justice Md Tafazzel Islam, retired a month later without re-assigning the case. Neither did the three others who came after him. No further hearing was conducted and now, the case file has gone missing.

There have also been no other suo moto orders by the High Court over disappearances since then.


Needed: A proactive High Court


There is only one institution that has the power to control the executive in its unlawful use of detention powers, and that is the High Court and its appellate division.

The court is clearly concerned that law enforcement agencies follow the law while detaining people. This was evident when its appellate division set out a series of principles for the police and magistrates to follow during detentions.

But in the meantime, the High Court has clearly not responded to the human rights crisis playing out with enforced disappearances continuing unabated. If the families of the disappeared and human rights organisations are unwilling to bring cases to court, it surely must be up to the court to take up the challenge itself.

বিএনপির নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ১৩ দফা এবং কানাডায় ‘মাই ডেমোক্রেসি’!

By মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো

সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গত ১৮ নভেম্বর তিনি এ প্রস্তাব দিয়েছেন।


বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে বিরোধী দল বিএনপি একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে কানাডার নির্বাচন পুনর্গঠন নিয়ে ক্ষমতাসীন লিবারেল দলীয় জাস্টিন ট্রুডোর সরকার ‘মাই ডেমোক্রেসি’ অর্থাৎ ‘আমার গণতন্ত্র’ শিরোনামে অনলাইনে একটি জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। লক্ষ্যগত দিক থেকে উদ্দোগ দুটির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে অতি প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত ‘গণতন্ত্র’ অর্জন!

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে বিএনপির ১৩ দফা প্রস্তাব পেশ এবং তা নিয়ে দলটির মাঠ পর্যায়ে জনগণকে সম্পৃক্তকরণ এবং একই ইস্যুতে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সভা সেমিনার করার সিদ্ধান্তসহ সরকারের উপর দেশি-বিদেশি চাপ সৃষ্টিতে উন্নয়নসহযোগী বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাথে যোগাযোগ কাকতালীয়ভাবে কানাডার সেই ‘মাই ডেমোক্রেসি’র সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেলবন্ধন ঘটিয়েছে।

কানাডার সেই অনলাইন ‘মাই ডেমোক্রেসি ডটসিএ’তে বলা হয়েছে- পরিপুষ্ট গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকারের উচিত জনগণের মতামত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এই জাতীয় উদ্যোগের ক্ষেত্রে কানাডা সরকার যথাসম্ভব সকল নাগরিকের মতামতের ভিত্তিতে ‘ইলেকটোরাল রিফর্ম’ বা নির্বাচন পুনর্গঠন চায়। পাশাপাশি নির্বাচন পদ্ধতি, ভোট গ্রহণ, বাধ্যতামূলক ভোট ও অনলাইন ভোট, সবটাই হবে ‘মাই ডেমোক্রেসি ডটসিএ’র অন্তর্ভুক্ত। এটি সামাজিক ও পরিসংখ্যান বিজ্ঞানীসহ কানাডা সরকার এবং নির্বাচনি রাজনীতি ও গবেষণা পদ্ধতির বিশেষজ্ঞ দলের একটি যৌথ উদ্ভাবন। লক্ষ্যগত দিক থেকে তা নির্বাচন পুনর্গঠনে কানাডার জনগণকে মতামত প্রদানে সুযোগ করে দেবে। এটির তথ্য ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে দেড় কোটি কানাডিয়ানের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া শুরু করবে। পরবর্তীতে কানাডা সরকার জনসমক্ষে তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরবে। সেটাই হবে নির্বাচন পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে দেশব্যাপী সফরে মিনিস্টার অব ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশন বা গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিক মন্ত্রী মরিয়ম মুন্সেফের নির্বাচন পুনর্গঠনসংক্রান্ত মতামত বিনিময়ের অভিব্যক্তিটিও যুক্ত থাকবে।



ফলশ্রুতিতে কানাডা সরকারের ‘পরিপুষ্ট গণতন্ত্র’ হচ্ছে জনগণের মতামত, অর্থাৎ ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’, বাংলাদেশও তাই বলে। তথাপি প্রশ্নটি হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে কানাডার নির্বাচন পুনর্গঠন কতটা সাযুজ্যপূর্ণ, যদিও সরকার দেশটি ডিজিটাল হওয়া ছাড়াও মধ্যমসারির দেশে উন্নীত হওয়ার আশাবাদটি ব্যক্ত করে।

তাই রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপি প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসংক্রান্ত ১৩ দফার বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করা কতটা সফল হবে কিংবা তাতে রাষ্ট্রপতি কতটা জনগণের সম্পৃক্তিকে মূল্যায়ন করবেন, সেটাই দেখার বিষয়। 

সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আপামর মিডিয়ার ‘ওয়াচডগ’-এর ভূমিকা পালনটিও হবে বিবেচ্য। কেননা গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ কিংবা জনগণের সার্বিক মূল্যায়ন বা ক্ষমতায়নে বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ সবটাই দেখা তাদের উপর নির্ভরশীল।

Tuesday, December 6, 2016

বেগম জিয়ার প্রস্তাবনা - একটি স্থায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন’র রূপরেখা




By জাকারিয়া চৌধুরী 


 
সকল রাজনৈতিক দল অথবা স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যে সকল দল বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদে কোন না কোন সময়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে তাঁদের অথবা সেসব দলের প্রতিনিধিদের সমন্বিত জোটের ঐকমত্যের ভিত্তিতে স্থায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গেল ১৮ নভেম্বর হোটেল ওয়েস্টিনে দেশ বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম, বিএনপি সহ বিশ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, দেশি বিদেশী অতিথি সহ সমাজের নানান শ্রেণী পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে তিনি তাঁর প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। যার মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রপতির প্রতি জোটের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশমালা তুলে ধরেন।

তাঁর পুরো বক্তব্যে যে সকল বিষয় স্পষ্ট হয়ে সামনে এসেছে তা হচ্ছে - অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ ও সাহসী নির্বাচন কমিশন গঠনের কোন বিকল্প নেই। এ ধরনের একটি কমিশন গঠনের মৌলিক প্রক্রিয়া, যোগ্য লোক বাছাইয়ের মাধ্যমে সমন্বিত করণ, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনমনের ভীতি  দূরীকরণ ও জন আস্থা ফিরিয়ে এনে একে আনন্দমুখর করে তোলা। প্রজাতন্ত্রের বিতর্কিত ও প্রকাশ্য আনুগত্য পোষণকারী কর্মচারীদের চিহ্নিত করণ এবং তাদেরকে যে কোন নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা-ই ছিল এই প্রস্তাবের মূল বিষয়।

বর্তমানে যে আজব দুর্গন্ধময় এবং সঙ'য়ে পরিপূর্ণ, প্রকাশ্যে আনুগত্যকারী ভাসমান, পদলেহনকারী নির্বাচন কমিশন রয়েছে তাঁর মেয়াদ স্বাভাবিক নিয়মে শেষ হবে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ এবং এ কমিশনের পরে নতুন যে কমিশন গঠিত হবে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সেটার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বুকে ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক, চাতুর্যপূর্ণ, প্রহসনে ভরা, কুকুর বেষ্টিত যে নির্বাচন ( যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পেছনে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার দোহাই দিয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন , দ্রুত সময়ের মধ্যেই সকলের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তিনি আরেকটি নতুন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবেন। এ জাতি শেখ হাসিনাকে যেমন জানেন, নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা তেমন ব্যবহার করেছেন। বেমালুম ভুলে গেছেন পুরো বিষয়টা ) হয়েছিল। এরপর  যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নানা দিক দিয়ে গুরুত্ব বহন করে। আর এ কারনেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনী কাঠামোকে যুগোপযোগী করা তথা নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন ও শক্তিশালী করণ এবং নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্রে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয় -  একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন করণ এবং নির্বাচনোত্তর শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমে। 

গণতন্ত্র একদিনের কোনও পায়ে হাঁটা সহজ পথ নয়। আজকের প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রই হয়ত একশ বছর পার করে প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রের রূপ পায়। আর এ কাঠামোর মাধ্যমেই জনমতের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে। বাংলাদেশের সংবিধানে পরিস্কার বলা আছে, ‘দেশের সকল ক্ষমতার উৎস এর জনগণ’।  সেই জনগণ তাঁদের স্বীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রতি পাঁচ বছর পর ভোটের মাধ্যমে তাঁদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন। আর প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত এই জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে তাঁদের জবাবদিহিতা দিতে বাধ্য। আবার যেসকল সরকার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত নন, তাঁদের জবাবদিহিতার প্রশ্ন হুমকির মুখে পড়ে। ফলে গণতন্ত্রের অন্যান্য বাহন বা নিয়ামক যেমন - আইনের শাসন,  ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, সুশাসন, মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা সবই সেই অনির্বাচিত সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

সরকারকে তখন তার ন্যায্যতা, যোগ্যতা, দক্ষতা, ক্ষমতা প্রমাণ করতে গিয়ে নানান ফন্দিফিকির আর ছলাকলার আশ্রয় নিতে হয়। নতুন নতুন ফর্মুলার মুলা ঝুলিয়ে জনগণকে চমক দেখিয়ে ব্যস্ত রাখতে হয়। গত ক’বছরে আমরা এমন সব আজব কর্মকাণ্ড দেখেছি। ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’, ‘বেশি উন্নয়ন কম গণতন্ত্র’, ‘সীমিত গণতন্ত্র’ ইত্যাদি নানা অগণতান্ত্রিক ফন্দি, যার কোনোটিই সাংবিধানিক পথ নয় এবং এসব কলা রাষ্ট্র, সরকার বা জনগণের জন্য শুভ পরিণতি বয়ে আনে না। আবার গণতন্ত্রের প্রধান বাহন যে নির্বাচন - তা যদি একটি দক্ষ, যোগ্য, সৎ, নিরপেক্ষ, সাহসী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশনের অধীনে না হয় - তাহলে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এ কারণেই একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রথম ও প্রধান শর্ত। নির্বাচন কমিশন গঠন সম্পর্কে আমাদের সংবিধানের ১১৮ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে - ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দান করবেন।’

দুঃখজনক হলেও সত্য, এ আইন বা বিধানাবলি আজো প্রণীত হয়নি। ঠিক সে কারণেই নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিতর্কের ধারাও অব্যাহত আছে। আর তাই নির্বাচন কমিশন গঠন ও তা শক্তিশালীকরণ সংক্রান্ত বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায়, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণয়ন বাঞ্ছনীয়। তবে যত দিন পর্যন্ত না আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠনসংক্রান্ত স্থায়ী ব্যবস্থা প্রণীত হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে কী করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন ও তা শক্তিশালী করা যায়, সেটিই ছিল বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের মূল প্রতিপাদ্য।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপরিউক্ত সুপারিশমালা প্রদানের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সদ্য সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেত্রীর নির্বাচন কমিশন নিয়ে পুনর্গঠন প্রস্তাবনা চর্বিতচর্বণ ও অন্তঃসার শুন্য। তাঁর এ প্রস্তাবনা প্রমান করেছে যে, তিনি জনগণের উপর আস্থাশীল নন। তিনি এমন কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন যা ইতোমধ্যেই আমাদের সংবিধান বা নির্বাচনী আইনে অন্তর্ভুক্ত আছে। তিনি আওয়ামী লীগের পুরানো অভ্যাসমত কথায় কথায় অতীত টেনে এনে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে যে সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, তা খুবই হাস্যকর। কারন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ আহবানকে অসম্মান দেখিয়েছেন। তাঁর পুত্র বিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী তাকে সমবেদনা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে গেলে তিনি কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সংলাপের সম্ভাবনাকে চিরদিনের জন্যে রুদ্ধ করে দিয়েছেন। ( পাঠক, খেয়াল করুন নির্বাচনের আগে হাসিনার উসিলা ছিল সংবিধান সুরক্ষা এবং আজকে ওবায়দুল কাদেরের উসিলা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া কেন দুয়ার বন্ধ রাখলেন সেজন্য আলোচনা হবে না। অথচ, কিছুদিন আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা মুখে ফেনা তুলে ফেলছিলেন এই বলে যে, বেগম খালেদা জিয়া কেন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পেশ করছেন না। এটি যেন মেষ শাবক আর সিংহের একই ঘাঁটে পানি খাওয়ার গল্পকে মনে করিয়ে দেয়। ) তিনি তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, ‘কোনও প্রেসক্রিপশন দেওয়ার আগে খালেদাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা, মানি লন্ডারিং ......ইত্যাদি ইত্যাদি’র জন্যে। এখানে পাঠকদের আরেকটা বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই। যারা শেখ হাসিনার সাংবাদিক সম্মেলন প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁরা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা যখন হাসিনার মতামত জানতে চাইলেন তখনও তিনি ওবায়দুল কাদেরের কথা গুলোই যেন প্রতিধ্বনিত করলেন। একটা শব্দ কিংবা একটা বর্ণ পর্যন্ত এদিক সেদিক হয়নি। এর মানে দাঁড়ায়, বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনা শুরুর আগেই তাঁদের প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত ছিল। তাঁদের দুজনের কেউই এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে এগিয়ে এলো না, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর প্রস্তাবনায় কি কি ভুল করেছেন, কোথায় কোথায় তাঁরা দ্বিমত করছেন কিংবা কোথায় কোন সমস্যা আছে যার কারনে একে গ্রহন করা যাচ্ছে না? তাঁদের আচরন রয়ে গেল ৬০ এর দশকের আওয়ামী লীগের মতই যা তাঁদের মত নয় তা অবশ্যই শত্রুদের মত। সুতরাং, ভিন্ন মত দেখলেই চালাও তলোয়ার। তবে হ্যাঁ, একটা বিষয় জনমানসের মনে আশা যুগিয়েছে। যে প্রস্তাবনা আওয়ামী লীগ ও তাঁদের সাঙ্গপাঙ্গরা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে সে প্রস্তাবনই গ্রহন করেছে এদেশের সাধারন মানুষ, কিছু কূটনীতিক এবং সাবেক দুইএকজন নির্বাচন কমিশনার। তাঁরা বলেছেন এটি ভাল প্রস্তাব এবং নিঃসন্দেহে এটি আলোচনার দাবি রাখে। মাঝখানে জামাতকে টেনে এরা আবারো আগের মতই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছিল যা হালে পানি পায়নি।

এই বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্য এক আলোচনা সভায় বলেন, ’বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের প্রধান নিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু এ নিয়োগ কোন পদ্ধতির মাধ্যমে হবে সেটা সংবিধানে উল্লেখ নেই। এ সমস্যাটির সমাধান রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনায়।’ জনাব খসরু সাহেব বিষয়টিকে পরিস্কার করে দেবার পরেও এরা আর কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, তিনি আর কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন চান না। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আসলে কেউই চায় না। কিন্তু নির্বাচন যাতে আর প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকেই। প্রশ্নমুক্ত নির্বাচনের প্রাথমিক শর্তই হলো একটি প্রশ্নমুক্ত ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন। তাই সরকারের এ বিষয়ে সদিচ্ছা কতটুকু বা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সরকার আসলে কেমন দেখতে চায়, সেটা পরিষ্কার হবে ২০১৭ সালের নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়েই। 

বিভিন্ন সূত্রের সহায়তা নেয়া হয়েছে।