Search

Friday, December 9, 2016

বিএনপির নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ১৩ দফা এবং কানাডায় ‘মাই ডেমোক্রেসি’!

By মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো

সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গত ১৮ নভেম্বর তিনি এ প্রস্তাব দিয়েছেন।


বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টিতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে বিরোধী দল বিএনপি একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে কানাডার নির্বাচন পুনর্গঠন নিয়ে ক্ষমতাসীন লিবারেল দলীয় জাস্টিন ট্রুডোর সরকার ‘মাই ডেমোক্রেসি’ অর্থাৎ ‘আমার গণতন্ত্র’ শিরোনামে অনলাইনে একটি জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। লক্ষ্যগত দিক থেকে উদ্দোগ দুটির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে অতি প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত ‘গণতন্ত্র’ অর্জন!

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে বিএনপির ১৩ দফা প্রস্তাব পেশ এবং তা নিয়ে দলটির মাঠ পর্যায়ে জনগণকে সম্পৃক্তকরণ এবং একই ইস্যুতে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সভা সেমিনার করার সিদ্ধান্তসহ সরকারের উপর দেশি-বিদেশি চাপ সৃষ্টিতে উন্নয়নসহযোগী বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাথে যোগাযোগ কাকতালীয়ভাবে কানাডার সেই ‘মাই ডেমোক্রেসি’র সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ মেলবন্ধন ঘটিয়েছে।

কানাডার সেই অনলাইন ‘মাই ডেমোক্রেসি ডটসিএ’তে বলা হয়েছে- পরিপুষ্ট গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকারের উচিত জনগণের মতামত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এই জাতীয় উদ্যোগের ক্ষেত্রে কানাডা সরকার যথাসম্ভব সকল নাগরিকের মতামতের ভিত্তিতে ‘ইলেকটোরাল রিফর্ম’ বা নির্বাচন পুনর্গঠন চায়। পাশাপাশি নির্বাচন পদ্ধতি, ভোট গ্রহণ, বাধ্যতামূলক ভোট ও অনলাইন ভোট, সবটাই হবে ‘মাই ডেমোক্রেসি ডটসিএ’র অন্তর্ভুক্ত। এটি সামাজিক ও পরিসংখ্যান বিজ্ঞানীসহ কানাডা সরকার এবং নির্বাচনি রাজনীতি ও গবেষণা পদ্ধতির বিশেষজ্ঞ দলের একটি যৌথ উদ্ভাবন। লক্ষ্যগত দিক থেকে তা নির্বাচন পুনর্গঠনে কানাডার জনগণকে মতামত প্রদানে সুযোগ করে দেবে। এটির তথ্য ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে দেড় কোটি কানাডিয়ানের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া শুরু করবে। পরবর্তীতে কানাডা সরকার জনসমক্ষে তার চূড়ান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরবে। সেটাই হবে নির্বাচন পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে দেশব্যাপী সফরে মিনিস্টার অব ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশন বা গণতান্ত্রিক প্রাতিষ্ঠানিক মন্ত্রী মরিয়ম মুন্সেফের নির্বাচন পুনর্গঠনসংক্রান্ত মতামত বিনিময়ের অভিব্যক্তিটিও যুক্ত থাকবে।



ফলশ্রুতিতে কানাডা সরকারের ‘পরিপুষ্ট গণতন্ত্র’ হচ্ছে জনগণের মতামত, অর্থাৎ ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’, বাংলাদেশও তাই বলে। তথাপি প্রশ্নটি হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে কানাডার নির্বাচন পুনর্গঠন কতটা সাযুজ্যপূর্ণ, যদিও সরকার দেশটি ডিজিটাল হওয়া ছাড়াও মধ্যমসারির দেশে উন্নীত হওয়ার আশাবাদটি ব্যক্ত করে।

তাই রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপি প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসংক্রান্ত ১৩ দফার বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে জনগণকে সম্পৃক্ত করা কতটা সফল হবে কিংবা তাতে রাষ্ট্রপতি কতটা জনগণের সম্পৃক্তিকে মূল্যায়ন করবেন, সেটাই দেখার বিষয়। 

সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আপামর মিডিয়ার ‘ওয়াচডগ’-এর ভূমিকা পালনটিও হবে বিবেচ্য। কেননা গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ কিংবা জনগণের সার্বিক মূল্যায়ন বা ক্ষমতায়নে বিরোধী দলের কণ্ঠরোধ সবটাই দেখা তাদের উপর নির্ভরশীল।

No comments:

Post a Comment