Search

Tuesday, February 13, 2018

সরকারের বিজয়!

অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়



সরকারের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত বিজয়ের সুর। এ বিজয় চিরস্থায়ী এবং অপ্রতিরোধ্য— এ রকম একটি ভাব থেকে তৈরি হয়েছে অতি আত্মবিশ্বাস। সেখান থেকে এসেছে বেপরোয়া ও থোড়াই কেয়ার মনোভঙ্গি। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বৃহৎ ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো তাদের চাহিদা পূরণ হওয়ায় খুশি, দেশের ভেতর ক্ষমতার নানা কেন্দ্র নিজ নিজ চাহিদার চেয়ে বেশি পেয়ে খুশি। সরকারের তাই এ রকম ধারণা হয়েছে যে, তার আর জবাবদিহিতার কোনো দরকার নেই। যা খুশি তাই করলে কোনো কিছু যায় আসে না। জলজ্যান্ত সত্য অস্বীকারেও তাই কোনো লজ্জাশরম নেই।

শত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি, দুর্নীতিবাজদের রক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা তাই প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে। প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃঢ় সমর্থন বা অংশীদারিত্ব ছাড়া কোনো বড় দুর্নীতি ঘটতে বা তা বিচারের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। শেয়ারবাজারের ধসের পেছনে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ভূমিকা চিহ্নিত হয়েছিল খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত রিপোর্টে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ পাচারের বিষয়ে তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। এ দুজন ব্যক্তির ওপরই মানুষের আস্থা ছিল, কিন্তু দুটো তদন্ত কমিটির ক্ষেত্রেই ফলাফল হয়েছে অভিন্ন। পুরো রিপোর্ট প্রকাশিতও হয়নি। মূল দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি; বরং তারা ক্ষমতার ছড়ি নিয়ে আরো নতুন নতুন অপরাধের কাহিনী তৈরি করছেন।

সবাই বলেছেন, আর কোনো ব্যাংকের দরকার নেই। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সবার বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার দলীয় পরিচয়ের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্যাংক খোলার অনুমতি দিয়েছে। সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বাধীন ফারমার্স ব্যাংক নিয়ে প্রথম থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তার পরও এ ব্যাংকে সরকার বরাবর তহবিল জোগান দিয়ে গেছে। জলবায়ু তহবিলের টাকাও এখানেই জমা রাখা হয়েছিল। একপর্যায়ে ব্যাংকে ধস নামে। এখন সেই ব্যাংককে পুঁজি জোগান দিতে আবার রাষ্ট্রীয় ব্যাংককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ব্যাংক ও আইসিবি মিলে দুর্নীতি আর অনিয়মের থলিতে ঢালছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা  (বণিক বার্তা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)। জনতা, সোনালী, বেসিক ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের কাহিনী সরকার প্রকাশ করেনি, করেছে গণমাধ্যম।

দেশে গত প্রায় এক দশকে আইয়ুব ও এরশাদের পর তৃতীয় ‘উন্নয়ন’ দশকের চাপে আছি আমরা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভালো। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে বিস্তর। ঘুষ, নিয়োগ বাণিজ্য, আটক বাণিজ্য সবই বর্ধনশীল। নির্মাণ খাত সবচেয়ে গতিশীল। ইটভাটা অসংখ্য, বৈধ যত তার চেয়ে অবৈধ সংখ্যা বেশি। সিমেন্ট কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। শীতলক্ষ্যাসহ বিভিন্ন নদীর বাতাসে পানিতে এর প্রবল ছোঁয়া পাওয়া যায়। দূষণরোধের কোনো ব্যবস্থা কাজ করে না। রড উৎপাদন বেড়েছে। নিয়ম মেনে বা না মেনে বালি তোলার পরিমাণ বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফার্নিচারের ব্যবসাও বেড়েছে। এজন্য বনের গাছের ব্যবসা ভালো। দেশে নির্বিচারে বনজঙ্গল উজাড় করায় প্রশাসন বরাবর সক্রিয় সহযোগী। সরকারি তথ্যই বলছে, ‘দেশে সবচেয়ে বেশি বন উজাড় হয়েছে উচ্চপ্রবৃদ্ধির এই এক দশকেই। ...শুধু গাজীপুরেই এক দশকে ধ্বংস হয়েছে প্রায় ৭৯ শতাংশ বনাঞ্চল’ (বণিক বার্তা, নভেম্বর ৪, ২০১৭)।

নির্মাণকাজে সরকার যেসব বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার আকার ও বরাদ্দ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এসব প্রকল্পে ব্যয় বরাদ্দের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই, এর যৌক্তিক বিন্যাসেরও কোনো ব্যবস্থা নেই, যৌক্তিকতা বিচারের কোনো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানও আর কার্যকর নেই। তার ফলে এগুলোর ব্যয় অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দুই-তিন গুণ বেশি হলেও সরকার তা নিয়ে কোনোভাবেই বিচলিত নয়। বরং সরকারি অনুমোদন নিয়েই এগুলোর ব্যয় শনৈঃশনৈঃ বেড়ে যাচ্ছে। সরকার নিয়মনীতি অমান্য করে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানিকে উচ্চমূল্যে কাজ দিচ্ছে, আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য ২০১০ সাল থেকে সরকার চলছে ‘দায়মুক্তি আইন’ ঢাল দিয়ে, নানা সুবিধা ছাড়াও ভয়াবহ দুর্ঘটনার ক্ষতির দায় থেকে বাঁচানোর জন্য দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে বিদেশী কোম্পানিকেও (রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দ্রষ্টব্য)। 

নির্মাণ ছাড়া সরকারের প্রশাসনের আরেকটি আগ্রহ কেনাকাটায়। যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে, কাজ নেই; বাস কেনা হচ্ছে, কিছুদিন পরই সেগুলো হাওয়া; ডেমু ট্রেন কেনা হচ্ছে, কিছুদিন পরই তার কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হচ্ছে; সিসিটিভি কেনা হচ্ছে কিন্তু প্রয়োজনের সময় তা নষ্ট; ঋণ করে সাবমেরিনসহ সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে। কেনা হচ্ছে গাড়ি, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গাড়ির মডেল পরিবর্তন করা, আরো বড় আরো দামি গাড়ি কেনার পথে প্রবল উৎসাহ। সর্বজনের অর্থ যেকোনোভাবে বরাদ্দে কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু এ অর্থ জোগাড়ে বাড়ছে মানুষের ওপরই চাপ। গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, ভ্যাট বসছে সর্বত্র, খাজনা বাড়ছে।

শিক্ষা খাতও এখন কিছু লোকের খুব দ্রুত টাকার মালিক হওয়ার জায়গা। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষা খাতে শিক্ষার কী অবশিষ্ট থাকছে, সেটাই খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রশ্ন ফাঁস নিয়মিত, কোচিং আর টিউশনি নির্ভরতার কারণে শিক্ষার্থীদের জীবন বিষময়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরীক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর করার কারণে গাইড বই, কোচিংয়ের বাণিজ্যের পথ খুলেছে। চলছে নিয়োগ বাণিজ্য। এতে যাদের লাভ তারা খুশি। তারা এ ব্যবস্থাই টিকিয়ে রাখতে চায়। শুধু শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদেরই ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্য সব মন্ত্রণালয়ের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিশ্চিন্ত। চিকিৎসা খাতের অবস্থাও তা-ই।

বলা বাহুল্য, উন্নয়নের ধরনে যদি দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, জবাবদিহিহীনতা, দখল, দূষণ থাকে, অর্থাৎ যদি উন্নয়ন প্রকল্প অতি উচ্চমাত্রায় সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি/বিপর্যয়ের কারণ হয়, তাহলে তা কুশাসন অবধারিত করে তোলে। নদীনালা, খালবিল যারা দখল করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা সম্পদ পাচার করে, তাদের দরকার হয় প্রশাসনের সমর্থন। এ সমর্থন পেলে তার অপরাধের গতি আরো বাড়ে। এর মধ্যে দুর্নীতি, অনিয়ম, সন্ত্রাস সবই প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা অর্জন করে। সেটাই ঘটছে অবিরাম।

প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিংবা প্রকল্প ব্যয়ের ক্ষেত্রে যদি স্বচ্ছতা না থাকে, যদি কোনো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের এগুলো তদারকি বা অনিয়ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা না থাকে, তাহলে তৈরি হয় যথেচ্ছাচার। যারা ঠিকাদার, তারাই যদি কর্তাব্যক্তিদের সমর্থন/অংশগ্রহণে প্রকল্প নির্ধারণ করে, তাহলে ব্যয় বরাদ্দ অনিয়ন্ত্রিত না হওয়ার কারণ নেই। যদি কমিশনপ্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে প্রকল্প বাছাই, তাহলে কমিশন যত বাড়ে, প্রকল্প ব্যয়ও তত বাড়তে থাকে। আগে ঘুষ কমিশনের একটা সীমা ছিল, এখন তাও নেই বলে জানা যায়। বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যয় যে বিশ্বে রেকর্ড করছে, তা এ গতিতেই হয়েছে।

ব্যবসায়ী-লবিস্ট-রাজনীতিবিদ-প্রশাসনের দুষ্ট আঁতাত আরো অনেক অপরাধ-সহিংসতাকেও ডাকে। বলপূর্বক টেন্ডার দখল, জমি-ব্যবসা দখল করতে গিয়ে খুন, রাষ্ট্রীয় সংস্থায় সহযোগিতায় গুম, আটক বাণিজ্য, দরকষাকষি এগুলোও অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় চলে যায়। প্রশাসন আর দল একাকার হয়ে গেলে দ্রুত অর্থ উপার্জনের বল্গাহীন প্রতিযোগিতা চলবেই। বাড়তেই থাকবে ধর্ষণ, নারী-শিশু-সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা, ক্রসফায়ার, হেফাজতে নির্যাতন এবং সরকারি দলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর হানাহানি।

গত কিছু দিনে দেশে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, হেফাজতে খুন, গুম, ধর্ষণ ইত্যাদির তাই কোনো বিরতি নেই। সাম্প্রদায়িক হামলার সংখ্যাও বেড়েছে। ক্রসফায়ার, খুন, গুম, সাম্প্রদায়িক হামলা সম্পর্কে সরকারি ভাষ্য খুবই সরল, একঘেয়ে ও কৃত্রিম। ভাষ্যকারদের অবিরাম মিথ্যা ভাষণ ও নির্লিপ্ত অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, তাদের আদেশ অনুযায়ী অসার কথাগুলোই জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে এবং কেউ যদি না করে তাতে তাদের কিছু এসে যায় না।

সরকার তাই পূর্ণ বিজয়ীর বেশে। বাংলাদেশে বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠান এখন সরকারের করায়ত্ত। নির্বাচনও তার হাতের মুঠোয়। তাই সর্বজনের অর্থ দিয়ে, দেশের উন্নয়নের কথা বলে যা খুশি তা করায় তার কোনো দ্বিধা নেই, দলীয় নেতার মাস্তান হওয়ার কারণে ফাঁসির আসামির দণ্ড মওকুফ করে দিতে কোনো সংকোচ নেই, বিচার ব্যবস্থা চুরমার করতে কোনো দুশ্চিন্তা নেই, সুন্দরবনবিনাশে বা রূপপুর মহাবিপদ প্রকল্প নিয়ে তার বুকে কাঁপুনি নেই। শত হাজার মানুষ বিনা বিচারে খুন-গুম হয়ে গেলে তা নিয়েও তার মুখে হাসি-মশকরা শোনা যায়। অপ্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের বিভিন্ন স্তরে এগুলোকে বিজয় হিসেবেই দেখা হয়!

আওয়ামী লীগের সমর্থক-শুভাকাঙ্ক্ষী বুদ্ধিজীবীরা যদি একটু কম সুবিধা-পদ-বিত্তের পেছনে দৌড়াতেন, যদি তাদের মেরুদণ্ড একটু দেখা যেত, যদি তেলবাজি থেকে সরে একটু দায়িত্ব নিয়ে চলতেন, তাহলে হয়তো বিজয়ের উন্মাদনায় আওয়ামী লীগ সরকারের এতটা পতন ঘটত না, লুটপাট-দুর্নীতি-ঔদ্ধত্য-দখলদারিত্ব আর যথেচ্ছাচারে এতটা মাখামাখি অবস্থা তৈরি হতো না।

  • বণিক বার্তা / ১৩-২- ২০১৮


No election without Khaleda: BNP

Shamsuzzaman Dudu among 85 arrested



The Bangladesh Nationalist Party on Monday formed human chains across the country for unconditional release of party chairperson Khaleda Zia vowing that no general election would be allowed to be held in the country without her.

The main opposition BNP formed the human chains as part of its three-day second-phase programme for the release of Khaleda, jailed for five years on February 8.

The party would stage sit-in across the country today. In Dhaka, it would hold one-hour sit-in on the Institute of Engineers, Bangladesh premises at 11:00am. It would observe eight-hour hunger strike from 9:00am on Wednesday. 

BNP claimed that more than 4,400 leaders and activists had so far been arrested across the country since January 30, including 85 on Monday. 

Dudu arrested

NP senior joint secretary general Ruhul Kabir Rizvi at a briefing at the party central office on Monday mentioned the figures, saying that BNP vice-chairman Shamsuzzaman Dudu was arrested in Matsabhaban area in Dhaka while he was returning after participating in the human chain at the National Press Club.

Replying to a question, Rizvi said that the government was conspiring to delay Khaleda’s release showing her arrested in various ‘politically motivated’ cases. 

Police obstructed and attacked human chains at places, including Bhola, Pirojpur, Moulvibazar, Lakshmipur, Thakurgaon, Dinajpur and Netrokona. Police arrested several leaders and activists at human chains.

In Dhaka city, several thousand leaders and activists of BNP and its front and associated organisations and BNP-led alliance joined the human chain.

The participants chanted various slogans including immediate release of Khaleda threatened that fire would ignite if anything happened to her.

Addressing the human chain, BNP secretary general Mirza Fakhrul Islam Alamgir said that their peaceful movement would continue until the release of Khaleda and restoration of democracy.

Referring to Khaleda’s instruction, he urged party leaders and activists to have patience and carry out the movement peacefully. He said that BNP would go to next election along with Khaleda and cautioned that no election would be held in the country without her.

He reiterated demand for election-supportive government and a neutral Election Commission for a fair and neutral election. He asked the government to stop arrest BNP leaders and activists.

BNP standing committee member Mirza Abbas said that election would be held with participation of Khaleda.  BNP staged human chains in other parts of the country including in Chittagong, Rajshahi, Khulna, Sylhet and Bogra.

A special judge’s court set up at Bakshibazar in Dhaka on February 8 jailed Khaleda for five years and her elder son, Tarique Rahman, acting BNP chairman, and four others for 10 years in Zia Orphanage Trust corruption case. Khaleda is kept at former Dhaka Central Jail on Nazimuddin road in old part of the Dhaka city.

BNP leaders including Khandaker Mosharraf Hossain, Nazrul Islam Khan, Amir Khosru Mahmud Chowdhury, Kamal Ibne Yusuf, Altaf Hossain, Mohammad Shahjahan, Barkatullah Bulu and alliance leaders including Syed Muhammad Ibrahim of Kalyan Party, Mostafa Zamal Haider of Jatiya Party (Kazi Zafar), Fariduzzaman Farhad of National People’s Party and Saifuddin Moni of Democratic League, among others, joined the human chain.

Additional police was deployed in front of National Press Club while water canon was placed in the area.

Replying to a question, Rizvi at the briefing said that the government was conspiring to delay Khaleda’s release showing her arrested in various ‘politically motivated’ cases. 


  • Courtesy: New Age Feb 13, 2018

ZIA ORPHANAGE CASE - Judge still correcting verdict



The judge continued revising and correcting till Monday the verdict pronounced on February 8 sentencing Bangladesh Nationalist Party to imprisonment for five years in Zia Orphanage Trust case.

Khaleda’s lawyer Aminul Islam told New Age that he was informed by the court officials that the verdict was still being corrected by the judge. 
He said that Khaleda awaiting the certified copy of the verdict to appeal against it.

Aminul said that Kaleda’s lawyer Sanaullah Mia on Monday submitted stamps of Tk 5,000 and relevant papers to the trial court’s copying department for getting the certified copy. 

On February 8, Dhaka special court 5’s judge Md Akhteruzzaman read out the operative part of a 632-page verdict.

Anti-Corruption Commission prosecutor Mosharraf Hossain Kazal said that it would take time to write and type the 632-page verdict before issuing the certified copy.

He said that the commission was not in a hurry to get the certified copy.

Former district judge and Supreme Court registrar Ikteder Ahmed told New Age that the full verdict must be read out in open court and it has to be signed in open court, according to Section 369 of the Code of Criminal Procedure.

  • New Age/Feb 13,2018


পরীক্ষার ফরমেও ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি!

  • ফরমপ্রতি ৫০০ টাকা করে নিচ্ছে ছাত্রলীগ।
  • প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রকে বেধড়ক পিটুনি।

স্নাতক পরীক্ষার ফরম পূরণে বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় গতকাল সোমবার ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক ছাত্র। হামলার পর থেকে তিনি কানে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। তবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আহত রহিম ফরাজী ওই কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য ফি বাবদ কলেজের অগ্রণী ব্যাংক শাখায় ৪ হাজার ৬৭৫ টাকা জমা দিয়েছেন। এর রসিদও রয়েছে তাঁর কাছে। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ফরমগুলো সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে বিনা মূল্যে সরবরাহ করার কথা থাকলেও সেগুলো সংগ্রহ করতে হয় কলেজের ছাত্রলীগের নেতাদের কাছ থেকে। প্রতি ফরমের জন্য ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়, যার কোনো রসিদও দেওয়া হয় না।

রহিম জানান, তিনি বামপন্থী ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ভুক্তভোগী আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী বাড়তি টাকা দিতে অনিচ্ছুক বলে তাঁকে জানান। এরপর তাঁরা বিষয়টা নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আবদুল কুদ্দুসের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু অধ্যক্ষ কোনো সুরাহা করতে পারবেন না বলে জানান। এরপরে তিনিসহ কয়েকজন এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ছাত্রসংসদে যান। সেখানে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার নেতারা রহিম ফরায়েজিকে মারধর শুরু করেন। মারধরের নেতৃত্বে ছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা।

আক্রান্ত রহিমের অভিযোগ, মারধরের পর থেকে তিনি বাম কানে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁর কানের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ঘটনার বর্ণনা দিতে দিতে কেঁদে ফেলেন এই যুবক। তিনি বলেন, ‘ভাই, আমি ভয় পাই না। তবে ওরা খুব মারছে। আমারে বলছে, এখানে আটকে শিবির বলে পুলিশে ধরায়ে দেবে। পরে কয়েকজন আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলেছে, এখানে আর না আসতে। কিন্তু আমার তো পরীক্ষা আছে।’ রহিম বলেন, অসুস্থতার কারণে এসএসসি পরীক্ষার আগে ও পরে তাঁর শিক্ষাজীবনে চার বছরের ছেদ পড়েছিল। এখন একজনের বাড়িতে লজিং থেকে টিউশনি করে চলছেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, এসব অসত্য অভিযোগ। রহিমের সঙ্গে কলেজের বাইরে কারও বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছিল। সেটার দায় তো আর ছাত্রলীগের নয়। বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ফরম তো বিভাগগুলো থেকে দেওয়ার কথা। অন্য কারও তো দেওয়ার কথা নয়। মারধরের অভিযোগ শুনে তিনি বলেন, ‘কই আমার কাছে তো কেউ অভিযোগ করল না। আমি বিকেল পর্যন্ত তো কলেজেই ছিলাম।’

  • Courtesy: ProthomAlo Feb 13, 2018

Monday, February 12, 2018

Question Paper Leak-Spree: HEADACHE? cut the head

Staff Correspondent 


In an extraordinary move to stop question paper leak, the government yesterday (Sunday) decided to shut down internet service for two and a half hours on exam days.

Mobile internet will remain fully shut and internet speed will be slashed to 25Kbps for other internet users from 8:00am to 10:30am on those days.

“With this speed customers cannot do anything,” MA Hakim, president of Internet Service Providers Association Bangladesh, told The Daily Star.

During the test run of the speed cap last night, this correspondent could not access any site. 

"We all want the question leak to stop and the government should do everything it can about it. But shutting the internet cannot be a solution as it affects our daily lives,” said Hakim.

On February 18, the country will be out of internet service for five hours (from 8:00am to 10:30am and from 12:00noon to 2:30pm), as there are two exams on that day.

Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission made the decision following a request by the education ministry.

The decision drew flak from internet users who termed the decision “ridiculous,” saying it was like "chopping the head off to get rid of a headache".

Some 20 lakh students are taking the SSC exam that began on February 1. 

As of December last year, 7.5 crore mobile phones have internet connections while the total number (mobiles and other devices) of internet connections is 8.05 crore, according to the BTRC.

BTRC Chairman Shahjahan Mahmood declined to comment on the government decision.

Contacted last night, ICT Minister Mustafa Jabbar said, "We could not make the education ministry realise that Facebook is not responsible for question leak. But we had to do this following their request ... I hope that government officials realise this in the coming days."

Earlier in the morning, the telecom regulator suddenly asked all the four mobile phone operators to shut mobile internet for 30 minutes across the country before the exam. But before the order took effect, the question of Information and Communication Technology were already circulating in social media and Facebook messenger groups.

Images of MCQ part of "Ga" set was found on several Facebook pages at 8:57am, about an hour before the exam started. Yesterday, only MCQ test was held. After the exam, The Daily Star found them to be identical with the original questions.

Leaked question papers of some other exams over the last few days were also found similar or identical to the original question papers.

Meanwhile, the people leaking the questions vowed to leak questions of the upcoming exams. One Facebook account named Aberul Islam Abir wrote, “Free…Free…Free…Those who need MCQ papers of physics/history/ finance, add me and gave me a message.”

On Saturday, detectives arrested 14 people from different areas in the capital, most of whom are admins of several such Facebook and messenger groups, DB sources said.

"RIDICULOUS DECISION"

Internet users came down hard on the government for the decision.

"This is ridiculous. It's like cutting your head when you have a headache. This can never be the solution," said Shimul, a businessman from Uttara. Reza, an online freelancer, said the decision would affect people like himself who earn their living via the internet.

"It is going to hurt my business. Is it the only option to prevent the leak? I'm dumbfounded," he said.

Earlier, the government had temporarily shut down internet across the country in 2015 for the first time, after the Supreme Court delivered verdicts upholding the death penalties of war criminals Salauddin Quader Chowdhury and Ali Ahsan Mohammad Mojaheed.

ARRESTS

Abdul Baten, joint commissioner of Detective Branch of police, echoed the education minister's claim that some “dishonest people” take snapshots of the question papers when it reaches the examination centres and leak those 30 to 40 minutes before the test.

“The question paper reaches the centre in different phases. From the deputy commissioner's office, it first goes to the centres, then to sub-centres and finally to the exam centres on the morning of the exams. During this period, there is no chance to leak the question as it remains sealed,” Baten said.

The DB suspects some officials of the education board are behind the leak.

About the arrestees, Baten said the leakers were asking people to send money in advance to become members of secret Facebook messenger groups or WhatsAapp groups to get the questions.

Three of them -- Ahsan Ullah, a student of Sirajul Islam Medical College, Aman Ullah, an IT engineer, and Barkat Ullah -- are brothers from Chandpur.

“Ahsan Ullah opened five Facebook accounts and collected several thousand followers. Besides, he is a follower of such groups himself.

“He used to collect question papers from those accounts and post it on his own page,” Baten said, adding that Ahsan received Tk 2 lakh in two days.

“Thousands of students are connected with such Facebook groups. It is hard to identify the origin of the leak. It might take at least six months to trace it,” said Baten.

The DB suggested turning off the mobile phones of those who handle question papers before exams.

300 MOBILE NUMBERS IDENTIFIED

The government has so far identified and blocked 300 mobile numbers involved in question leak, said Mohammad Alamgir, who is heading an 11-member committee of the education ministry probing the leak. Police already launched a drive to arrest their owners, he said.

"They will face action under the exam and cyber laws, whoever they might be,” added Alamgir, also secretary of the technical and madrasa division of the ministry.

Most of the owners of those numbers are students, but there are some guardians as well, he added.

  • Courtesy: The Daly Star Feb 12, 2018

শেখ হাসিনার মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া!



সাড়ে ১০ বছর আগে তৎকালীন ‘সেনা-সমর্থিত’ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একটি চাঁদাবাজির মামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

ওই সময়ে শেখ হাসিনার মুক্তি দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিশিষ্ট নাগরিক উল্লেখ করে তাকে মুক্তি দিয়ে অভিযোগের আইনি প্রক্রিয়ার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।

সাড়ে ১০ বছর পর সেই সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে দায়েরকৃত দুর্নীতি মামলাতেই সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে যেতে হয়েছে খালেদা জিয়াকে। আর এই সময়ে সরকার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।

২০০৬ সালে নির্বাচন ও ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির দ্বন্দ্বে জরুরি অবস্থা জারির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

এরপর অনেক রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করা হয় বিভিন্ন মামলায়। তখন গ্রেফতার হয়েছিল আওয়ামী লীগ বিএনপির দুই শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াও।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই ভোররাতে ধানমণ্ডির সুধা সদনের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় শেখ হাসিনাকে। প্রায় ৩ কোটি টাকার একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

এই গ্রেফতারের একদিন পরই তার মুক্তি চেয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন খালেদা জিয়া। সেই বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশও হয়।

খালেদা তাতে বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত। শেখ হাসিনাকে মুক্ত রেখে আইন পরিচালনা করা হলে পারস্পরিক অবিশ্বাস, সন্দেহ, সামাজিক উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক আশঙ্কা কমে আসবে।’

শেখ হাসিনাকে যেভাবে গ্রেফতার করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে খালেদা জিয়া দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতার কন্যা এবং দেশের সম্মানিত নাগরিক।’ তাকে গ্রেফতার করায় বিবেকমান নাগরিকেরা আহত হয়েছেন। এর ফলে দেশে বিদেশেও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের আড়াই মাস পর ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল অন্য আরেকটি মামলায়। খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা দুই নেত্রীর বিরুদ্ধেই বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়। সেই সব মামলার ভেতরই একটি মামলা ছিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা।

২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন মামলাটি দায়ের করে রমনা থানায়। ওই মামলার রায়ে ৫ বছর কারাদণ্ড পেয়ে বর্তমানে জেলখানায় আছেন খালেদা জিয়া।

  • Courtesy: শীর্ষ নিউজ/জে Feb 12, 2018

ওয়ান ইলেভেনের সময়ে ওবায়দুল কাদের দুর্নীতিবাজের আওতায় ছিল

নিলুফার চৌধুরী মনি 



আমাদের বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ওবায়দুল কাদের যে তাকে দুর্নীতিবাজ বলে গালি দিয়েছেন, এটি খুব দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক। কারণ, ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়ে ওবায়দুল কাদেরও দুর্নীতিবাজ ছিলেন! ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়ে যে মামলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার এই মামলা সেই সময়ের।

সেই সময়ে মামলার সাথে ওবায়দুল কাদেরও জড়িত ছিলেন । তিনি যে দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন সেটির বাস্তব প্রমাণ রয়েছে ইউটিউবে। এখন আমাদের দেশের মানুষ ইউটিউবে সার্চ করলে বুঝতে পারবে, কারা ছিল দুর্নীতিবাজ। ওবায়দুল কাদেরের এতগুলো ফটো রেখে বিএনপিকে একটি ষড়যন্ত্রের মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে এবং তারা জোর করে যা ইচ্ছা তাই করছে।

তারপরেও কেন তারা এতকথা বলে কেন? ওবায়দুল কাদের একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে এমন কথা বলেন, যেটি শুনলে আমি লজ্জা পাই। আমার সন্দেহ হয়, আসলে তিনি রাজনৈতিক কর্মী না বড় কোন লিডার! রাজনৈতিক কর্মী হয়ে কিভাবে কথা বলতে হয়, সেটি তিনি জানেন না। ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় তিনি বলেছেন, ‘রাজনীতি হচ্ছে একটি পাঠশালা’।

সেই সময়ে তিনি কী এই শিক্ষা নিয়েছেন? তিনি কি এই শিক্ষা নিয়েছেন, তার বিরোধী দলের কর্মীদের সবসময় বাজে কথা এবং বাজে গালি দিয়ে সম্বোধন করবেন? যেখানে ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় দুর্নীতির সাথে তিনি নিজে জড়িত ছিলেন এবং সারা বিশ্বের কাছে ইউটিউবে প্রমাণিত হয়ে আছে, সেখানে তার এমন কথা নিঃসন্দেহে বেমানান।

  • Courtesy: AmaderShomoy.Com

Sunday, February 11, 2018

ফারমার্স ব্যাংক কেলেঙ্কারি - ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে কমিশন নিতেন মহিউদ্দিন আলমগীর



ঋণ দেওয়ার বিনিময়ে গ্রাহকের কাছ থেকে কমিশন নিয়েছেন বহুল আলোচিত ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী)।

এ ছাড়া এ দু’জন টাকার বিনিময়ে ব্যাংকে অনেক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশে দেওয়া ঋণ পরিশোধ না হলেও অভিনব কায়দায় পরিশোধ দেখানো হয়েছে। মাত্র তিনটি ঋণ হিসাব এবং এক বছরের নিয়োগের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তদন্তে চাঞ্চল্যকর এসব অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের গুরুতর অনিয়মের মাধ্যমে তাদের নৈতিক স্খলন ঘটেছে। এ অনিয়ম বের হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় এখন এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের সব ঋণে বহির্নিরীক্ষক দিয়ে বিশেষ অডিট করাচ্ছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, নমুনা ভিত্তিতে মাত্র কয়েকটি ঋণ হিসাবের ওপর নিরীক্ষণ চালিয়ে ব্যাপক এ জালিয়াতির তথ্য পাওয়া গেছে। আমানতকারীদের অর্থ লোপাট, ব্যাংকটির অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হওয়ায় অনিয়মের ধরন এবং জালিয়াতির মাধ্যমে কত টাকা তছরুপ হয়েছে, তা বের করা জরুরি। একই সঙ্গে ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত চিত্র নির্ণয় করা আবশ্যক। এমন পরিস্থিতিতে বহির্নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে তার অনুমোদন প্রক্রিয়া, ঋণের সদ্ব্যবহার, সহায়ক জামানত, ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব যাচাইসহ সার্বিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে চিহ্নিত করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর মানি লন্ডারিং বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) এবং দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে।

ঋণ হিসাব থেকে দু’জনের নামে পে-অর্ডার ইস্যু
মহীউদ্দীন খান আলমগীরের একক সুপারিশে গত বছর তনুজ করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় ফারমার্স ব্যাংক। পরিচালনা পর্ষদ, ক্রেডিট কমিটি বা ইসি কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এ ঋণ দেওয়া হয়। গত বছরের ১৯ জুলাই গ্রাহকের একটি মেয়াদি হিসাব থেকে এক কোটি ২২ লাখ টাকা তার চলতি হিসাবে স্থানান্তর হয়। একই দিন ৪২ লাখ টাকা নগদে উত্তোলন করেন ওই গ্রাহক। প্রথমে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামে ৮০ লাখ টাকার একটি পে-অর্ডার ইস্যু করে তনুজ করপোরেশন। পরে আবার বাতিল করে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নামে ১৮ লাখ টাকা ও মাহাবুবুল হক চিশতীর নামে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। অবশিষ্ট ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা জনৈক জাকির হোসেন নামের অপর ব্যক্তির।

জাহান ট্রেডার্স নামে অপর একটি ঋণ হিসাব থেকে গত বছরের ১৯ মার্চ এক কোটি ৪০ লাখ টাকা আরেকটি চলতি হিসাবে স্থানান্তর হয়। এই ঋণও দেওয়া হয় মহীউদ্দীন খান আলমগীরের একক সুপারিশে। আর উভয় গ্রাহক নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও পুরো টাকা তুলেছেন নগদে। ফলে অবশিষ্ট টাকাও প্রকৃত খাতে ব্যবহার হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের এমপি মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সার্বিক অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের অডিট কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতী বলেন, ‘পদত্যাগ করার পর চেয়ারম্যান এবং তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হচ্ছে। সুবিধাবাদীরা এটা করছেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীর আজ চেয়ারম্যান থাকলে কেউ এসব বলতে পারত না।’ পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘পে-অর্ডারে কত আছে?’ সুনির্দিষ্ট অঙ্ক বলার পর তিনি বলেন, ‘এটা আমার স্মরণে নেই।’ তিনি বলেন, ‘একজন চেয়ারম্যান, যিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমানে এমপি। পদত্যাগ করার কথা পরিচালনা পর্ষদে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সামনে তার পদত্যাগপত্রে সই হয় কীভাবে। এটা আপনারা একটু দেখেন।’

লোকবল নিয়োগে অনিয়মের ক্ষেত্রে তার সংশ্নিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল চিশতী বলেন, ‘নিয়োগে তো কমিটি থাকে। নিয়োগ কমিটির ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কমিটি অনুমোদন দিলে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন।’ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে একটি পরীক্ষা নেওয়া হলেও নম্বরপত্র মূল্যায়ন না করে আর্থিক লেনদেনের বিপরীতে নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটা সঠিক নয়। এসব অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অংশ।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এ প্রসঙ্গে বলেন, কোনো গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে মহীউদ্দীন খান আলমগীর, বাবুল চিশতী বা পর্ষদের কোনো সদস্যের অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়ে থাকলে সেটা ফৌজদারি অপরাধ। কেননা, ঋণগ্রহীতার অ্যাকাউন্ট থেকে পরিচালকের অ্যাকাউন্টে টাকা যাওয়ার কথা নয়। এই একটি কারণেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের পর্ষদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ঘাপটি মেরে বসে থাকবেন। ব্যাংকের অবস্থা ভালো হলে আবার চেয়ারম্যান হবেন। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের শেয়ার বিক্রির ব্যবস্থা করা উচিত।

ফারমার্স ব্যাংকের বর্তমান এমডি মো. এহসান খসরু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে বহির্নিরীক্ষক দিয়ে ফাংশনাল অডিটের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ থাকা গুলশান ও মতিঝিল শাখার পরিদর্শন শেষ পর্যায়ে এসেছে। ব্যাংকটির ৫৬টি শাখার মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের ঋণ রয়েছে ১৫টির মতো শাখায়। রোববার থেকে বাকি শাখার পরিদর্শন শুরু হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে এসব পরিদর্শন শেষ করে পাঠানো সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণের মধ্যে অর্ধেকের বেশি রয়েছে এক কোটি টাকার বেশি অঙ্কের।

এ দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। এটা গোপনীয় বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না। বিএফআইইউ যা তথ্য পায়, তা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেওয়া হয়। আর মানি লন্ডারিং হলে সেটা যাবে দুদকে।

তারল্য সংকট এবং বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে গত ২৭ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং চেয়ারম্যান পদ থেকে মহীউদ্দীন খান আলমগীর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। একই দিন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও ব্যাংক থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর ১৯ ডিসেম্বর একেএম শামীমকে এমডি থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিতে চলমান তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন করে এক হাজার ১০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

জনবল নিয়োগে অনিয়ম
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোকবল নিয়োগে অনিয়মের সঙ্গে তৎকালীন চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীর সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা দু’জন যোগসাজশ করে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগ দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, লোক নিয়োগে ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মও মানা হয়নি। প্রতিবেদনে শুধু ২০১৭ সালে লোকবল নিয়োগের একটি চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, আলোচ্য বছর ব্যাংকটিতে ৮৫ কর্মকর্তা নিয়োগ হয়। এর প্রতিটিতে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশ রয়েছে। এ ছাড়া অনেক প্রার্থীর জীবনবৃত্তান্তের ওপর তার স্বাক্ষরসহ ‘পরিচালক জনাব চিশতী’ কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। এসব নিয়োগের জন্য ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ থেকে সংক্ষিপ্ত একটি পরীক্ষা নেওয়া হলেও এসব উত্তরপত্রে কোনো নম্বর দেওয়া হয়নি। আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে এসব নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।

ঋণ পরিশোধ না করেই সমন্বয়
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসটুআরএস করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফেরদৌস জবায়েত ইসলাম ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি। তার নামে গুলশান শাখায় সৃষ্ট চারটি হিসাবে ৪৪ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঋণ দেওয়া হয়েছে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সুপারিশের ভিত্তিতে। এর মধ্যে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি মেয়াদি ঋণ ছাড়া অন্য ঋণের বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের কাছে কোনো তথ্যই নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল যাওয়ার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে এসব ঋণ সমন্বয় দেখানো হলেও বাস্তবে সমন্বয় হয়নি। যে কারণে বিপুল অঙ্কের এ অর্থ জমা দেখানো হলেও ওই দিন শাখায় ছিল মাত্র আড়াই লাখ টাকা। অভিনব কায়দায় শুধু ভাউচারের মারপ্যাঁচে ঋণ সমন্বয় দেখানো হয়েছে।

ঋণ সমন্বয়ে জালিয়াতির কৌশলটি ছিল এ রকম- গত ২৬ নভেম্বর চারজন গ্রাহকের আট কোটি ৬০ লাখ টাকার স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় তারা নগদায়ন করেন। তারা হলেন- জামালগঞ্জ শাখার গ্রাহক আলী আশরাফ, মিরপুরের পাইকপাড়া শাখার গ্রাহক শংকর নকরেক, কুমিল্লা শাখার রাকিবুল হাসান ও ধানুয়া শাখার মো. পলিন। একই দিন ব্যাংকটির টাঙ্গাইল শাখায় ফারাহ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, ফারিব অটো রাইস মিল ও আরসিএল প্লাস্টিকের হিসাবে নগদে ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা দেখানো হয়। এরপর ৬ ডিসেম্বর ফারাহ ট্রেডের হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী রাকিবুল হাসান। ফারিব অটো রাইস মিলের চলতি হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ৮০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী আলী আশরাফ। আর আরসিএল প্লাস্টিকের হিসাব থেকে পাঁচ কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন অপর স্থায়ী আমানত নগদায়নকারী মো. পলিন। এই তিন প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব থেকে উত্তোলন করা ১৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এসটুআরএস করপোরেশনের মেয়াদি ঋণ সমন্বয় হয়েছে। এ ছাড়া নয় কোটি ১৫ লাখ টাকার অপর মেয়াদি ঋণটি টাঙ্গাইল শাখা থেকে গত ৫ ডিসেম্বর নগদ জমার মাধ্যমে সমন্বয় এবং ১০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার ঋণটি গত ৭ ডিসেম্বর বকশীগঞ্জ শাখায় নগদ জমার মাধ্যমে সমন্বয় দেখানো হয়েছে। এর বাইরে গ্রাহকের সাত কোটি ৬৫ লাখ টাকার ওভারড্রাফট ঋণে গত ২৯ সেপ্টেম্বরের পর কোনো লেনদেন নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরসিএল প্লাস্টিকের স্বত্বাধিকারী রাশেদুল হক চিশতী তখনকার অডিট কমিটির চেয়ারম্যান বাবুল চিশতীর ছেলে। এসটুআরএস ব্যাংকটির ১৫টি শাখার সাজসজ্জার কাজ করেছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের টাকা যথাযথ ব্যবহার না করে অন্যত্র ব্যবহার হয়েছে। পরিদর্শন চলা অবস্থায় সে তথ্য গোপন করতে এ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।  

  • Courtesy: AmaderShomoy.Com/সমকাল

পুলিশি হেনস্তা বন্ধ করুন - সন্দেহের বশে গণ-আটক

সম্পাদকীয়


জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা ও তাঁর কারাগারে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে উত্তেজনা ও অস্থিরতার আশঙ্কা সৃষ্টি হলো, তা এড়ানো সম্ভব হলে ভালো হতো। কেননা এটা নির্বাচনের বছর, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে গণতান্ত্রিক রীতিমাফিক একটা কার্যকর রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

খালেদা জিয়া পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার ফলে নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, তা এখনই চূড়ান্ত নয়। তাঁর উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, রায়ের সার্টিফায়েড কপি পাওয়ার পর তাঁরা আপিল করবেন। সুতরাং, নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিএনপির আশান্বিত থাকার সুযোগ রয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, রায়টি তাদের কাছে যতই পক্ষপাতমূলক মনে হোক না কেন, তা এসেছে আইনি প্রক্রিয়ায় এবং এ রায়কে যদি তারা নাকচ বা ভুল প্রমাণিত করতে চায়, তবে তা করার সুযোগও রয়েছে একমাত্র আইনি প্রক্রিয়ায়।

এটা স্বস্তির বিষয় যে, রায় ঘোষণার দিন বা তার পরে বড় ধরনের কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। বিএনপির নেতারা তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আচরণে অতিমাত্রায় সতর্কতা লক্ষ করা গেছে এবং তার ফলে সাধারণ মানুষের চলাফেরায় অসুবিধার সৃষ্টি হলেও শারীরিক বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেনি। ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর আচরণও সংযত ছিল।

রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জনমনে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গের যে আশঙ্কা-উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল, তা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলে আপাতদৃষ্টিতে প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে তা সম্পূর্ণভাবে দূর হয়নি, একধরনের চাপা উদ্বেগ-আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। গত কদিনে বিএনপির প্রচুর সংখ্যক নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে, তাঁরা ক্ষুব্ধ। খালেদা জিয়ার কারাবাস তাঁদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তা ছাড়া তাঁরা আগে থেকেই সরকারি দমন-পীড়নের অভিযোগ করে আসছেন; নতুন পরিস্থিতিতে দলের কর্মকাণ্ডে আরও বাধাবিঘ্নের মুখোমুখি হলে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ-উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের অনুপস্থিতিতে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি—এ দুই প্রধান রাজনৈতিক দল, যাদের একাধিকবার সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা আছে, তাদের মধ্যে কোনো কার্যকর রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। বিএনপির চেয়ারপারসনের দণ্ডিত ও কারারুদ্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যকার দূরত্ব আরও বেড়ে গেল, বৈরিতা আরও তীব্র হলো। ফলে আপাত দৃশ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশের অন্তরালে ছাইচাপা আগুনের মতো উত্তেজনা ঘনীভূত হচ্ছে কি না—এই উদ্বেগ অস্বাভাবিক নয়।

কিন্তু আমরা শান্তি চাই। যে উদ্বেগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তার অবসান চাই। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলছে, এপ্রিলের শুরুতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। এই পরীক্ষার্থীদের এবং সার্বিকভাবে সব শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক লেখাপড়ার পরিবেশ অটুট রাখতে হলে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। কর্মজীবী মানুষের পথেঘাটে চলাফেরা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চলার নিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে হবে। সে জন্য সব রাজনৈতিক দলকে সংযম-সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হোক নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। সরকারকে দমন–পীড়নের পথ পরিহার করতে হবে; সবার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

  • Courtesy: prothomAlo/Feb 11, 2018

‘এরশাদকে খুশি করতে সরকার বেগম জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের জেলখানায় নিয়েছে’ - মাহফুজ উল্লাহ



সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, এরশাদকে খুশি করতে বর্তমান সরকার একটা আপ্রাণ চেষ্টায় আছে। কারণ সামনের নির্বাচনে এরশাদ তাদের নির্ভরযোগ্য মিত্র হবে ১৪ দলীয় জোটের। এতে তাদের জয়লাভটা সহজ হবে। সেজন্য এরশাদকে খুশি করতে  বেগম জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের জেলখানায় নেয়া হয়েছে।

পারমিতা সাহা’র সঞ্চালনায় সময় টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান সম্পাদকীয়’তে ‘কারাগারে খালেদা ও রাজনীতি’ বিষয়ক আলোচনায় তিনি একথা বলেন। এসময় অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

মাহফুজ উল্লাহ বলেন, রাজনীতিতে যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের ক্ষমতা বেশি থাকে। তারা যেভাবে ইচ্ছা প্রতিপক্ষকে দমন করতে পারে। আর ভিন্নমত বা বিরোধী দলকে দমন করতে রাষ্ট্রের পুলিশ ও অন্যান্য যন্ত্রকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়। তা খুব দুঃখজনক। এভাবে একটা খারাপ প্রবণতা তৈরি করছি।

  • Courtesy: AmaderShomoy.Com