Search

Saturday, February 17, 2018

চাপেও ঐক্য অটুট বিএনপিতে

সাংগঠনিক কার্যক্রমে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির পরও সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে বিএনপিতে এখন আরো বেশি ঐক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেকোনো প্রয়োজনে কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সিনিয়র নেতারা বসছেন একত্রে। পরামর্শ নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। মাঠে থেকে নেতারাই এগিয়ে নিচ্ছেন চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে ঘোষিত সব কর্মসূচি।
সিনিয়র নেতারা বলেছেন, বিএনপি এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। ক্ষমতাসীনরা তাদের চাপে রাখতে কিংবা নেতৃত্বে ভাঙন ধরাতে দীর্ঘ দিন ধরেই নানা কৌশল প্রয়োগ করে আসছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি, এবারো হবে না। তাদের মতে, মাঠের নেতাকর্মীরা ১১ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন, কিন্তু কেউই দল ছেড়ে যাননি। এটিই বিএনপির সবচেয়ে বড় সফলতা। গত ৮ ফেব্রæয়ারি দুর্নীতির একটি মামলায় কারাবন্দী হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার ওই কারাবন্দী দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল কেউই মেনে নিতে পারেনি। ক্ষোভের পাশাপাশি আবেগের অশ্রু ও ঝরিয়েছেন নেতাকর্মীরা। কোনো কোনো মহলের প্রচারণা ছিল, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপি আরো দুর্বল হয়ে পড়বে, এমনকি ভেঙেও যেতে পারে দলটি।

কারাবন্দী হওয়ার পর গত ৯ দিনে বিএনপির সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম সূ²ভাবে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দলের নেতারা চমৎকার বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যেকোনো ইস্যুতে করণীয় নির্ধারণে পরস্পরের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চলছে খুব গোছালোভাবে। এখন পর্যন্ত কোনো বিষয়ে মনোমালিন্য বা দূরত্ব তৈরি হয়নি। তারেক রহমানের পরামর্শে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রয়োজনানুযায়ী সব ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সিনিয়র নেতারা তাকে সহায়তা করছেন।

দল পরিচালনার ক্ষেত্রেই নয়, সিনিয়র নেতারা প্রতিটি কর্মসূচিতেও নিজেদের উপস্থিত রাখছেন। গ্রেফতার এড়িয়ে মাঠের নেতারা যে যেভাবে পারছেন, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। দলের এক নেতা গতকাল বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিটি কর্মসূচি মনিটর করছেন। এ কারণে সবাই আরো বেশি সতর্ক ও উদ্যমী।

তারেক রহমান রয়েছেন লন্ডনে। দলের বর্তমান প্রতিকূল অবস্থায় তিনি খুব সক্রিয় ও সজাগ ভূমিকা পালন করছেন বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত তিনি তিনবার দলীয় ফোরামে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা রেখেছেন। এসব বক্তৃতায় দলের ঐক্য বজায় রাখার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে সবাইকে মাঠে থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চাইতে বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ। শুধু তা-ই নয়, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নেতারা রাজপথে সক্রিয়ও। সব প্রতিকূল অবস্থা কাটিয়ে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, মামলা-হামলা, গুম-খুনের পরও একজন কর্মী দল ছেড়ে যাননি। আমাদের আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। তাই শেষ মুহূর্তে কেউ দল ছেড়ে যাবে বলে আমি মনে করি না। বরং যারা দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন দলের এই পরিস্থিতিতে তারা আরো সক্রিয় হচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, দেশের এই চরম সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে বা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা বদ্ধপরিকর। যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আমরা প্রস্তুত। আন্দোলন সফলে আমরা রাজপথে থাকব। সেখান থেকে জেলে গেলেও আমরা পিছু হটব না।
জানা গেছে, কারাবন্দী হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া আইনজীবীদের মাধ্যমে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছেন। নেতাকর্মীদের তিনি ভেঙে না পড়ে, আইন হাতে তুলে না নিয়ে রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নেতারা বলছেন, বিএনপি প্রধানের নির্দেশমতোই চলছে দল। সাংঘর্ষিক নয়, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেই রয়েছে তারা।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান নয়া দিগন্তকে বলেন, বিএনপি বর্তমানে সবচেয়ে ঐক্যবদ্ধ। যেকোনো চ্যালেঞ্জ গ্রহণে নেতাকর্মীরা ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে প্রস্তুত আছেন। আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপিকে কোণঠাসা করতে সরকারের যে ষড়যন্ত্র, তা এবার সফল হবে না। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের কাছে সরকার পরাজিত হবেই। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে।
খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর এ পর্যন্ত সারা দেশে ছয় হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নতুন করে মামলা হয়েছে দুই শতাধিক। প্রতিনিয়ত পুলিশি অভিযান, তল্লাশি চলছে। দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মীই বাসা-বাড়ি ছাড়া। রাজধানীতে রয়েছে পুলিশের কড়া নজরদারি। মহানগরের প্রথম সারির নেতাদের ধরতে পুলিশি তৎপরতা বহাল রয়েছে। অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন পুলিশের নজরদারিতে।
এমন পরিস্থিতিতে গ্রেফতার এড়িয়ে সাংগঠনিক সব কর্মসূচি সফল করার নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি।

 - নয়া দিগন্ত ,১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

Trump announces funds for credible polls in Bangladesh

Special Correspondent

Trump administration, for the first time, has allocated $ 80.9 million for holding a credible elections in Bangladesh and strengthening the civil society and democratic institutions which are now under pressure.

Besides, this fund will also be used to improve the rule of law and to improve human rights situation in Bangladesh. In the proposed budget of US President Donald Trump for the fiscal year 2018-19, this money has been allocated through USAID.
On Monday, US President Donald Trump announced the 2018-19 Foreign Affairs budget. The president proposed a $ 39.3 billion budget for State Department and International Aid Agency USAID for conducting their respective activities.


Under  the  budget, Donald Trump proposed 500 million dollars for Afghanistan, 80.9 million for Bangladesh and 200 million dollars for Pakistan in his proposed budget. There is no other South Asian country on the list of help where the President’s help for whole Central Asia is only 16.7 million.
Meanwhile, in order to keep the US budget deficit narrowing to $ 3 trillion in the next 10 years, President Trump cuts several federal agency budgets and proposes to close the budget allocation for 22 federal agencies - which has already begun to crack in the US media. Analysts say the Congress may not endorse all the proposals for the president’s budget cut-offs. In the meantime, keeping the budget deficit in the range of 3 trillion, without any federal budget allocating budget and keeping the President happy, the budget of foreign ministry can be passed, that is now a big challenge for the Congress.
Amidst the huge hue and cry in the US media about the state department’s budget, it is a convincing argument that the ‘House Operations Committee’ of the House of Appropriation Committee, subcommittee on ‘Foreign Operations, Trade and Other’ has proposed the budget for 2018-19 fiscal year of the United States Foreign Ministry on July 13, 2017.
A total of $60 million has been proposed for improving worker safety and labor rights in Bangladesh. In the suggestion of the sub-committee, the Foreign Office, Trade and Other Sub Committees have also been asked to provide details about the steps taken by the State Department to ensure a fair, neutral and participatory election in Bangladesh.
The proposal approved in the sub-committee (House Resolution 3362) has been submitted for the passage of the Congressional House of Representatives on July 19, 2017. However, on Monday, President Trump proposed the State Department budget to increase the amount of allocations for Bangladesh to $ 80.9 million, where it is the first time that the US National Donald Trump’s interest in crediting the next national election is credited.

Courtesy: HOLIDAY/Feb 16, 2018

Khaleda’s imprisonment stirs global uproar, election uncertainty

Shahid Islam in Toronto

A missed opportunity often yields disaster and turns unmanageable, if not handled with care. The conviction and imprisonment of BNP chairperson and, three times PM of Bangladesh, Khaleda Zia, on February 8 could have led to instant chaos; which has been averted, thanks to Khaleda’s instruction to her followers not to become unruly, as well as the sagacity displayed by the law enforcers, so far.

Politics transformed
But the political landscape has been transformed, perhaps irretrievably. The BNP had already declared not to join the upcoming election unless Khaleda Zia is freed and allowed to participate in the polling; transforming the political ambiance into a dreaded uncertainty similar to the one witnessed prior to the 2014 election.
Khaleda Zia, who has been the chairperson of BNP for the last 37 years, is considered indispensable by her followers due to the entrenched culture of family rule that had characterised Bangladesh politics for over three decades now.
That filial legacy has been crushing on many counts. For instance, incumbent PM Sheikh Hasina also faced somewhat similar corruption charges; initiated by the same Anti- Corruption Commission (ACC), but her charges were quashed upon her coming to power in 2009, and, she too inherited the throne of her deceased father who was gunned down by a faction of the military on August 15, 1975.

Turbulence feared
However, the nation is heaving a sigh of relief, at least momentarily, that nothing too unpleasant had shattered the street peace as yet; to cause public discomfort and economic damages of a kind that often happened in the past. That having said, what tomorrow will beacon is very much an unknown. The comparative calmness could turn into a calamity any time; the signs of impending turbulences are very much visible in the horizon.
In coming days, BNP will look for few indications before catapulting its peaceful movement to the next, combative rung. Intentional delay in facilitating a deserved bail; mistreatment of the imprisoned former PM in captivity; deterioration of her health; mistreatment of peaceful demonstrators in the streets; can all combine, conflate, conflagrate and contribute to the degeneration of a peaceful movement for her freedom. Hence, the government will be wiser by not allowing the crisis to derail and retrograded by design, or by accident.

Global concern
Already observers within and outside the country are concerned about the venue where the former PM has been sheltered in captivity and, the manner in which her party loyalists are being treated in streets across the country.
Within an hour of her conviction, Khaleda was taken to the ghost-infested, abandoned Old Dhaka central jail at Najumuddin Road from Special Court-5 of Bakshibazar. Her lawyers and supporters said she was donned in prisoners’ garb and treated like a normal prisoner. On the Valentine’s Day, a team of doctors were not allowed to see her in the prison to take stock of her physical condition.
Meanwhile, BNP followers among the expatriates have already launched demonstrations in major cities of the world, while the UN — which tried unsuccessfully in 2014 to make the Bangladesh polling an inclusive one by bringing the abstaining BNP to the hasting — released a statement on the prospective deterioration of Bangladesh’s political ambiance following Khaleda’s arrest.
The UN Secretary-General`s deputy spokesman, Farhan Haq, said about the arrest of BNP loyalists across the country that, “We only recently received the report concerning the arrest and the subsequent events. We are monitoring what the events are on the ground and we will react accordingly.” Haq added: “We would, of course, be concerned about any reports of violence and, at this point, we call on all sides to maintain calm and we expect to have a further reaction after we have evaluated the situation further.”
Asked whether the conviction of Khaleda Zia and her son Tarique Rahman is the process to eradicate them from the general election, Haq said: “We are not ready to say anything on whether the verdict will have any effect on the election. We are analysing the situation.”

US’s concern
The USA, the lone existential superpower of the universe, had already expressed concerns about the conviction, arrest, and imprisonment of Khaleda Zia and urged Bangladesh to ensure ‘fair trial’ for the ex-prime minister who was sentenced to five years rigorous imprisonment for what the BNP says a ‘retributive venture’ to break up BNP and censor Khaleda from contesting the upcoming election.
“We are aware of the conviction of Bangladesh Nationalist Party (BNP) leader Khaleda Zia, and encourage Bangladesh to the guarantee of a fair trial,” a State Department spokesperson said following the Dhaka Special Court’s verdict of five years’ imprisonment of Khaleda for alleged embezzlement of 21 million taka (about $250,000) in foreign donations meant for the Zia Orphanage Trust, named after her deceased husband, Ziaur Rahman, who too was gunned down by a faction of the military in 1981.
The US spokesperson further added: “”We are concerned by reported arrests of opposition members. We encourage the government of Bangladesh to ensure fair trial guarantees for all of its individuals in Bangladesh.”  The statement opined:  “”We continue to call upon the Government of Bangladesh to provide the right to all individuals to freely express their political views, without fear of reprisal, and to hold elections that are free, fair, peaceful, and credible, reflecting the will of the Bangladeshi people. We also call on members of society to act peacefully and responsibly. We stress that all sides must eschew violence; violence hinders democratic processes.”

Global media
Global media and observers have also expressed concerns as the verdict simultaneously sentenced Zia’s ‘fugitive’ elder son and BNP’s senior vice president, Tarique Rahman, who was tried in absentia and sentenced to 10 years in prison, along with four others.
The Canadian Broadcasting Corporation (CBC) wrote: The judge also sentenced Zia’s son, Tarique Rahman, and four others to 10 years in prison for involvement in the crime. All can appeal their convictions……. But Bangladesh law says anyone imprisoned for more than two years cannot run for office for the next five years.” Quoting law minister Anisul Huq, the CBC said: “It’s up to the appeals court to decide whether she will be eligible to run (for election).”
The Hindu newspaper of India wrote: “The sentencing of former Bangladesh Prime Minister Khaleda Zia to five years of rigorous imprisonment by a special judge’s court in Dhaka on charges of corruption has upended politics in an election year. Her arrest and possible disqualification from contesting — unless higher courts decide otherwise — has created a political crisis for her Bangladesh Nationalist Party, and equally a challenging opportunity for the ruling Awami League. The BNP is entirely dependent for leadership on the Zia family.”
As the crisis deepens, some of the BNP insiders are maintaining in private that they have prepared for all the eventualities; including the consequences of boycotting another polling which the BNP did in 1984, 1986, and in 2014.
That makes the nation of Bangladesh vulnerable to another major political storm which could derail all the development programs the ruling AL had undertaken, and swaggers about as its glorious achievements in rebuilding a nation that the AL had led to independence. Curiously, it was the deceased husband of Mrs. Zia, who had made the first public proclamation of independence on March 27, 1971.

Courtesy: HOLIDAY/Feb 16, 2018

Thursday, February 15, 2018

দেশে চালের দাম আবার বাড়ছে



কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর আবার বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। সরু ও মোটা সব ধরনের চালের দামই এখন বাড়ন্ত। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ দেড় টাকা। তবে সরু চালের দাম বেড়েছে আরেকটু বেশি, কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে বেড়েছে খুচরা পর্যায়েও।

দেশে চালের বাজার আবার চড়তে থাকার কারণ হিসেবে ভারতের বাজারে পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, ভারত থেকে চাল আমদানিতে আগের চেয়ে টনপ্রতি ২০-৩০ ডলার বেশি ব্যয় হচ্ছে। বাড়তি মূল্যে আমদানি করা এ চাল স্থানীয় বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারিভাবে চাল আমদানি হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার টন। বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির পরিমাণ ২১ লাখ ২৯ হাজার টন, যার সিংহভাগই এসেছে ভারত থেকে। এ চালের বড় অংশই ব্যবসায়ীরা এনেছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। আমদানির এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে এক সপ্তাহ আগের তুলনায় বেশি।

হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারকরা জানান, এক সপ্তাহ আগেও ভারত থেকে মানভেদে প্রতি টন স্বর্ণ চাল আমদানি হতো ৪২০-৪৩০ ডলারে। একই চাল আমদানিতে এখন ব্যয় হচ্ছে ৪৪০-৪৪৫ ডলার। একইভাবে রত্না জাতের চালেও টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০ ডলার বেশি খরচ হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে স্থলবন্দরটি দিয়ে প্রতি টন ভারতীয় রত্না চাল ৪৪০-৪৫০ ডলার মূল্যে আমদানি হলেও এখন ব্যয় করতে হচ্ছে ৪৭০ ডলার।

বাড়তি দামে আমদানি করা প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল ৩৮ থেকে সাড়ে ৩৮ টাকায় বিক্রি করছেন আমদানিকারকরা। একই চাল এক সপ্তাহ আগে তারা বিক্রি করেছিলেন কেজিপ্রতি সাড়ে ৩৬-৩৭ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি রত্না চাল ৩৯ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা।

আমদানিকারকদের কাছ থেকে চাল কিনে পাইকারিতে তা বিক্রি করেন হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী অনুপ বসাক। তিনি বলেন, ভারতে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও বাড়ছে। আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে পণ্যটি কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কেনা চাল বাড়তি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই।

ভারতে চালের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিচ্ছেন স্থানীয় মিলাররাও। ফলে কয়েক দিনের ব্যবধানে রাজধানীতেও সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। রাজধানীর পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম কেজিতে ১ টাকা বাড়লেও খুচরায় বেড়েছে আড়াই টাকা পর্যন্ত।

রাজধানীর বাবুবাজারের চালের আড়ত ঘুরে গতকাল পাইকারিতে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৫৮-৫৯ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। চারদিন আগেও এ বাজারে একই চাল বিক্রি হয়েছিল ৫৬-৫৭ টাকায়। কেরানীগঞ্জের আগানগরের বৌবাজার এলাকায় গতকাল খুচরায় প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয় ৬৩ টাকায়। চারদিন আগেও একই চাল ৬১ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন এখানকার দোকানিরা। একইভাবে ৪১ টাকার স্বর্ণা চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায় ও ৪৬-৪৮ টাকা কেজি দরের বিআর-২৮ চাল ৪৮-৫০ টাকায়।

নওগাঁ জেলা ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা বণিক বার্তাকে বলেন, দেশে বর্তমানে চালের কোনো সংকট নেই। ভারত থেকেও পর্যাপ্ত চাল আমদানি হচ্ছে। তবে বর্তমানে ভারত সরকার চাল সংগ্রহ করায় সে দেশে দাম কিছুটা বেড়েছে। আমদানিনির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। ভারতে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বড় মিল মালিকরাও সরবরাহ সীমিত করে এনেছেন। দু-একদিনের মধ্যে দাম বাড়িয়ে তারা সরবরাহ স্বাভাবিক করবেন।

মিল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ার জন্য ধান সংকটকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ধানের অভাবে অনেক মিল বন্ধ থাকায় চাল সরবরাহ কমে গেছে। এছাড়া বাজারে ধানের দাম বেড়েছে। ভারত থেকে আমদানি মূল্যও বেড়েছে। এ কারণে চালের বাজার একটু বাড়তির দিকে রয়েছে।

চট্টগ্রামেও সব ধরনের চালের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ২ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চাল কেনার কারণে এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। একই সময়ে খুচরায় চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত।

খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে পুরনো মৌসুমের চালের মজুদ কমে আসছে। ২০১৭ সালে বাজারে অস্থিরতার পর থেকে আমদানিনির্ভর হয়ে পড়েছে দেশের চালের বাজার। বর্তমানে ৬০-৭০ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে আমদানিকৃত চাল। ফলে প্রতিদিনই পাইকারি বাজারে দামের ওঠানামা রয়েছে।

আড়ত থেকে নেয়া চালের দর পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগেও প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ভারতীয় বেতি চাল বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। একই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৫০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা একই পরিমাণ চাল ১ হাজার ৫৫০ থেকে বেড়ে ১ হাজার ৬৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আমদানিকৃত চালের পাশাপাশি বেড়েছে দেশী চালের দামও। খাতুনগঞ্জে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা মিনিকেট চাল ২ হাজার ৪০০ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি বস্তা পাইজাম ২ হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব চালের দাম খুচরা পর্যায়ে আরেক দফা বেড়ে ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চাল বাবদ অতিরিক্ত সর্বোচ্চ ৩ টাকা বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে ভোক্তাদের।

গত বছর হাওড়ে আগাম বন্যায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। একই বছর দ্বিতীয়বারের বন্যায়ও ফসলহানি ঘটে। এতে চালের মজুদ অস্বাভাবিক কমে যায় এবং বাড়তে থাকে চালের দাম। বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে চাল আমদানিতে উৎসাহ দেয়া হয়। আমদানি শুল্ক নামিয়ে আনা হয় ২ শতাংশে। এরপর ভারত থেকে ব্যাপক হারে চাল আমদানি হতে থাকে। যদিও এর প্রভাব সেভাবে পড়েনি বাজারে।

  • বনিক বার্তা / ১৫-২- ২০১৮

‘প্রশ্ন ফাঁসের বন্যার পানি শিশুদের গায়ে লাগছে’




রাষ্ট্রের ব্যর্থতায় বন্যার পানির মতো এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভাসছে দেশ। সেই বন্যার পানি শিশুদের গায়ে লাগছে। সরকারকে আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’ ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র মুঠোফোনে রাখার ঘটনায় চট্টগ্রাম শহর থেকে গ্রেপ্তার করা ১১ শিক্ষার্থীর জামিন শুনানিতে গতকাল বুধবার দুপুরে আদালতে এসব কথা বলেন আইনজীবী জাফর ইকবাল।

গতকাল দুপুরে শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে তাদের পক্ষে ৪০ আইনজীবী উপস্থিত হন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের রিমান্ডের আবেদন না মঞ্জুর করে জামিন দেওয়ার আবেদন জানান। পরে চট্টগ্রাম মহানগর শিশু আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস অভিভাবকদের কাছ থেকে হলফনামা নিয়ে আইনজীবীদের জিম্মায় ১০ শিক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর করেন। হলফনামা গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় একজন শিক্ষার্থীর জামিন হয়নি।

জামিন শুনানিতে আরেক আইনজীবী মঞ্জুরুল হক আনসারী বলেন, ‘যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে তারা আড়ালে কেন? এখানে দায়ী করা হচ্ছে যারা ঘটনার শিকার তাদের। মোবাইল, ফেসবুকের লিংকে অনেক কিছু আসে। যদি কোনো লিংক থেকে প্রশ্নপত্র আসে সেটি কোথা থেকে কারা পাঠিয়েছে, সেটি বের করতে হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পুলিশ সেটি বের করতে পারে। শিক্ষার্থীদের রিমান্ডে নিয়ে কি বের করা যাবে?’

গত মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম শহরের বাংলাদেশ মহিলা সমিতি (বাওয়া) বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাস থেকে ৯ শিক্ষার্থী ও ১ শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট।

একই সময়ে বাওয়া স্কুলের উল্টো দিকের রাস্তা থেকে আরও ২ শিক্ষার্থীকে (দুই বোন) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১১ শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা ৭টি মুঠোফোনে এবং ২টি ট্যাবে পদার্থবিজ্ঞানের ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে ৯ জন চিটাগাং আইডিয়াল হাইস্কুলের পটিয়া শাখার এসএসসি পরীক্ষার্থী (সবাইকে বহিষ্কার করা হয়েছে)। বাকি ২ জন বাওয়া স্কুলের ছাত্রী। গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষিকাও পটিয়ার ওই স্কুলের।

শিক্ষিকাকে গতকাল পৃথক আদালতে হাজির করা হয়। তাঁর জামিন আবেদন এবং রিমান্ড শুনানির জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য রেখেছেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দীন।

১১ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বাওয়া স্কুলের ওই ২ ছাত্রীর বাবার বিরুদ্ধেও একই আইনে মামলা হয়েছে। তাঁদের বাবার মুঠোফোনেও প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে।

গ্রেপ্তার করা শিক্ষার্থীদের মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে সেখানে অভিভাবক ও আত্মীয়-স্বজনেরা ভিড় জমান। গতকাল সকাল ১০টায় কোতোয়ালি থানা প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, আত্মীয়-স্বজনেরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ জড়ো হন। তাঁরা সবাই উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। থানার ভেতর থেকে কেউ বের হলেই ছুটে গিয়ে সন্তানদের অবস্থান জানতে চান। কেউ কেউ বাইরে থেকে জুস, পাউরুটি, কেক নিয়ে তা পুলিশকে দিয়ে ভেতরে পাঠান। কয়েকজন অভিভাবক হাজতে থাকা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে দেখা করেন। সাত ছাত্রকে কোতোয়ালি থানার একটি হাজতে রাখা হয়। আরেকটি হাজতে দুই ছাত্রী এবং এক শিক্ষিকাকে রাখা হয়।

আদালত প্রাঙ্গণে এক ছাত্রীর ভাই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাঁর বোন তো প্রশ্ন ফাঁস করেনি। সে ফেসবুকের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র পেয়েছে। প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তা না করে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের গ্রেপ্তার করে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

দুই ছাত্রের অভিভাবক মো. আবু জাফর চৌধুরী ও সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ইন্টারনেটে এসেছে। পরীক্ষার্থীরাও মুঠোফোনে তা পেয়েছে। তারা তো তা ফাঁস করেনি।

গতকাল বেলা সোয়া ২টায় চট্টগ্রাম মহানগর শিশু আদালতে ১১ পরীক্ষার্থীকে নেওয়ার পর প্রথমে তাদের আসামিদের জন্য নির্ধারিত কাঠগড়ায় রাখা হয়। এক আইনজীবী এর প্রতিবাদ জানালে দায়িত্বরত পুলিশের সদস্যরা তাদের কাঠগড়ার বাইরে নিয়ে আসেন। শুনানি শুরু হওয়ার পর বেলা সাড়ে তিনটায় বিচারক এজলাস থেকে নেমে ১১ শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের খাসকামরায় নিয়ে যান। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এর আগে শুনানির সময় ১১ শিক্ষার্থীদর চোখেমুখে ছিল চরম আতঙ্ক। অনেকের চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল। ভয়ে অনেকে মাথা নিচু করে রাখেন।

আদালত প্রাঙ্গণে চারজন অভিভাবক প্রথম আলোকে বলেন, বিচারক শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চেয়েছেন তারা কীভাবে এই প্রশ্নপত্র পেয়েছে।

শুনানি শুরুর আগে আদালত প্রাঙ্গণে এক অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী প্রথম আলোর কাছে বলে, ফেসবুকে ‘সায়েম আহমেদ’ নামের একটি গ্রুপ থেকে তাকে এসএসসি প্রশ্ন নেওয়ার জন্য মেসেজ দেয়। প্রশ্ন নিতে হলে বিকাশে প্রথমে ৩০০ টাকা পাঠাতে বলে। এই টাকা পাঠানোর পর তাকে গ্রুপে যুক্ত করে। এরপর পরীক্ষার দিন সকালে পরীক্ষা শুরুর এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র পাঠায়। প্রশ্নপত্র দেওয়ার পর আরও ৬০০ টাকা বিকাশে পাঠাতে হয়। এভাবে তারা ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে বহুনির্বাচনী প্রশ্নপত্র (এমসিকিউ) পেয়েছে। যাদের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়েছে তাঁদের কাউকে চেনে না বলে জানায় সে। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই তাদের যোগাযোগ হয়।

গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে বিচারক আবার এজলাসে ওঠেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীও সত্য বলেনি। শুধু একজন অভিভাবক কিছুটা সত্য বলেছেন। দেশটা আমরা কাদের হাতে রেখে যাব। আগামীতে তারাই দেশের হাল ধরবে।’ পরে বিচারক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সনজয় কুমার সিনহাকে ১১ শিক্ষার্থীকে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। যাতে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রটি শনাক্ত হয়। বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তা ১১ শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। 

  • Courtesy: ProthomAlo Feb 15, 2018

EP urges govt to create conditions for inclusive polls



A European Parliament delegation on Wednesday urged the Bangladesh authorities to create necessary conditions for inclusive, free and fair general elections. 

It observed that political situation in Bangladesh ‘is challenging at this moment’, and hoped that the political situation would become less confrontational and less hostile in the coming months leading to the elections. 

The delegation said this in separate meetings with Bangladesh officials and at a press conference in Dhaka. 

‘It is a challenging situation at this moment here,’ Jean Lambert, chairperson of the delegations for relations with the countries of South Asia, said replying to a question at a press conference. The next general elections should be inclusive, free and fair so that Bangladesh people got a better choice, she said. 

She hoped the Election Commission would be able to play its role independently in conducting the polls and said the European Union was likely to send an election observation mission during the polls. 

Lambert stressed the need for ensuring freedom of expression, freedom of assembly and bringing an end to enforced disappearances, extra-judicial killings and violence against women in Bangladesh.

Mentioning the approval of the digital security act and ICT act in Bangladesh, she said freedom of expression and freedom of assembly was important in a democracy. Lambert mentioned constraints in finding the civil society organisations here and said civil society had a role in criticising the government.

The delegation visited Rohingya camps in Cox’s Bazar and gathered first-hand information on the ongoing crisis involving Rohingya influx from Myanmar. 

Describing Rohingya influx as a humanitarian tragedy and one of the most serious refugee crises in the world, she expected that international community and the European Union would continue their engagement in providing support to address the crisis. 

The EP would discuss the matter in a session later this month and foreign ministers of the EU member countries were expected to assess the situation in March for sustainable solution to the Rohingya crisis through addressing root causes, she said. 

European ambassador Rensje Teerink was also present at the press conference. 

The EP delegation also held meetings with state minister for foreign affairs Md Shahriar Alam, the Election Commission and representatives of other ministries, EU officials said.


  • Courtesy: New Age Feb 15, 2018 

BNP stages hunger strike demanding Khaleda’s release




As part of its countrywide scheduled programme, Bangladesh Nationalist Party leaders and activists observed token hunger strike in front of Press Club in the capital demanding unconditional release of their party chairperson Khaleda Zia who was jailed for five years in a graft case last Thursday.

Several hundred leaders and activists, including party standing committee members Khandaker Mosharraf Hossain, Moudud Ahmed, Nazrul Islam Khan, Amir Khasru Mahmud Chowdhury, joined the programme started around 10:00am amid tight security by police.

BNP secretary general Mirza Fakhrul Islam Alamgir concluded the hunger strike around 1:00pm, which was supposed to continue till 4:00pm, calling to continue movement for releasing Khaleda Zia from Jail and holding a fair election. The programme was concluded early as the authorities requested, Mirza Fakhrul Islam Alamgir said.

The hunger strike was the last day programme of three-day agitations of the opposition party for immediate unconditional release of Khaleda and cancellation of sentence against her elder son Tarique Rahman now in London.

Earlier, on Tuesday, the BNP leaders and activists staged a sit-in programme in front of the party’s central office at Nayapaltan in the city.

A special judge’s court in Dhaka on Thursday handed Khaleda five years’ jail in Zia Orphanage Trust corruption case and soon after delivering the judgment she was led away to Old Dhaka Central Jail on Nazimuddin Road.



  • Courtesy: New Age Feb 15, 2018

Wednesday, February 14, 2018

BNP stages countrywide sit-in vowing to free Khaleda



The Bangladesh Nationalist Party on Tuesday staged countrywide sit-in vowing to free party chairperson Khaleda Zia from jail through movement.

The sit-in was the second-day programme of three-day agitations of the opposition party for immediate unconditional release of Khaleda and cancellation of sentence against her elder son Tarique Rahman now in London.

BNP is scheduled for observing countrywide eight-hour token hunger strike today from 9:00am. In Dhaka, the hunger strike would be held for six hours from 10:00am in front of the National Press Club.

Police obstructed sit-in in Narail, Magura, Jhalakati, Lakshmipur, Kushtia, Mymensingh and Jhenaidah, BNP claimed.

BNP senior joint secretary general Ruhul Kabir Rizvi at a briefing at BNP central office on Tuesday said that the police arrested 150 BNP leaders and activists on Tuesday taking to 4,550 the number of BNP leaders and activists arrested since January 30.

He criticised ruling Awami League general secretary Obaidul Quader for implicating BNP acting chairman Tarique Rahman in recent attack on Bangladesh High Commission in London.

The party announced Monday afternoon that the sit-in would be held in front of the National Press Club, later in the evening informed that it would be held at Institution of Engineers, Bangladesh (IEB) and finally it was held in front of BNP central office. Party leaders at the sit-in alleged that all on a sudden the permission for the sit-in at IEB was cancelled.

BNP secretary general Mirza Fakhrul Islam Alamgir urged the leaders and activists to take a vow to intensify the current peaceful movement for the release of Khaleda through mass uprising.

He said that the current movement was for the release of Khaleda and other leaders and activists from jail and restoration of democracy. Fakhrul said that Tarique was leading the movement from London.

He alleged that the government had violated human rights and committed crimes against humanity by keeping Khaleda in solitary confinement in jail. 

BNP leaders ruled out the ruling party claim about split of BNP, claiming that the party was now more united and strong. Standing Committee member Khandaker Mosharraf Hossain said that the next general election would not be allowed to hold without BNP and Khaleda.

Another standing committee member Moudud Ahmed said that there was no alternative to movement to free Khaleda. He said that they would continue legal process alongside the movement.

BNP leaders Mirza Abbas, Nazrul Islam Khan, Syed Moazzem Hossain Alal, Shahiduddin Chowdhury Annie, Labour Party faction chairman Mustafizur Rahman Iran and Liberal Democratic Party joint secretary general Shahdat Hossain Selim, among others, addressed the sit-in. Additional police were deployed near the venue.

Asked for comment home affairs minister Asaduzzaman Khan told reporters at the ministry that the government would allow peaceful demonstrations. Police would go for no actions unless the public movement was obstructed by any political programme, he added. 

Earlier, BNP announced two-day countrywide demonstration for February 9 and February 10 in protest at the verdict that sentenced Khaleda for five years in jail in Zia Orphanage Trust graft case on February 8. Khaleda was kept in former Dhaka Central Jail on Nazimuddin Road in old part of Dhaka city.

New Age staff correspondent in Sylhet reported that Syleht BNP and its front organisations staged a sit-in at Registrar’s Math in the city. BNP chairperson’s adviser MA Haque, central assistant organising secretary Dildar Hossain Selim, Sylhet city mayor and the party’s central executive member Ariful Haque Chowdhury, district BNP president Abul Kaher Chowdhury Shamim and general secretary Ali Ahmed, city president Nasim Hossain and general secretary Badruzzamaan Selim, among others, addressed the programme. 

New Age Rajshahi University correspondent reported that pro-BNP teachers and employees of Rajshahi University on Tuesday continued their demonstrations on the campus for the third consecutive day.

  • Courtesy: New Age Feb 14, 2018

চাঁদাবাজির রাজ্য বুড়িমারী বন্দর



রাতদিন ২৪ ঘণ্টাই চলে চাঁদাবাজি। পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে যত জায়গায় যেতে হয় তার সব ক্ষেত্রেই দিতে হয় চাঁদা। চাঁদা না দিলে আটকে থাকে পণ্য। ব্যবসায়ীরা বিপুল ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে চাঁদা দিয়েই মালামাল ছাড়িয়ে নেন। দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বুড়িমারী স্থলবন্দরে এই ভয়াবহ চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা ওই বন্দরকে এখন চাঁদাবাজির রাজ্য বলেই আখ্যায়িত করেন। এই চাঁদাবাজির রাজ্যের আয়তন বুড়িমারী স্থলবন্দর ও বন্দরের বাইরে (জিরো পয়েন্ট থেকে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত) বিস্তৃত।

চাঁদাবাজিতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ এমনকি শ্রমিক ইউনিয়ন ও দালালদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। আর চাঁদাবাজির একটি সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে নাম রয়েছে স্থানীয় এমপি (লালমনিরহাট-১) মোতাহার হোসেনের।

স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্ত্তী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অনেক নাম এসেছে। এখানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও পুলিশ, বন্দর কর্মকর্তা, শ্রমিক নেতাদের নাম রয়েছে। এর মধ্যে যারা আমাদের আওতায় (স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ) তাদের বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। অন্যদের বিষয়ে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্ট তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পণ্য আমদানি-রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে বুড়িমারী স্থলবন্দর। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এ স্থলবন্দর দিয়ে পাথর, ফল, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ফলে এ ধরনের একটি বন্দরে চাঁদাবাজির কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

চাঁদাবাজির চিত্র : জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০টি পাথরবাহী এবং ৬০-৭০টি ফলবাহী ট্রাক ছাড়াও অন্যান্য পণ্যবাহী ট্রাক বুড়িমারী স্থলবন্দরে যাতায়াত করে। একটি সংগঠিত চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট বন্দর কর্তৃপক্ষ, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ অফিস, কাস্টমস, দালাল অফিস, লেবার হ্যান্ডলিং ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন, হাইওয়ে পুলিশ ও পাটগ্রাম থানা পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থার নামে যাতায়াতকারী ট্রাকে চাঁদাবাজি করে অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। দিনের আলোর পাশাপাশি সন্ধ্যার পরও ওই চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকে।

ফলবাহী ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির হার : কাস্টমস অফিস ২ হাজার টাকা (প্রতি বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে), উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ অফিস-২০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), বন্দর কর্তৃপক্ষ ৫০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), থানা পুলিশ ৪০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), হাইওয়ে পুলিশ ২০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), কাস্টমস নিরাপত্তা প্রহরী ১০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), বন্দর নিরাপত্তা প্রহরী ৫০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), এসবি পুলিশ ২০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), লেবার অ্যাসোসিয়েশন ১ হাজার টাকা ((ট্রাকপ্রতি), দালাল অফিস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), ট্রাক টার্মিনাল (বাবুল গ্রুপ) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি), জিরো পয়েন্ট (বাবুল গ্রুপ) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা (ট্রাকপ্রতি)। পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়াও পাথরবাহী ট্রাকের জন্য ঘাটে ঘাটে চাঁদার পৃথক হার রয়েছে।

চাঁদাবাজিতে জড়িত যেসব কর্মকর্তা : চাঁদাবাজির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বুড়িমারী স্থলবন্দরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. আবদুল কাদের, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইমিগ্রেশন) মো. আনোয়ার হোসেন, ভারপ্রাপ্ত ও তদন্ত কর্মকর্তা (পাটগ্রাম থানা) পরিদর্শক অবনি শঙ্কর, পরিদর্শক মো. মাহফুজ আলম ও হাইওয়ে পুলিশ পরিদর্শক প্রসূন কুমারের নাম এসেছে প্রতিবেদনে।

সংগঠিত সিন্ডিকেট : প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী বুড়িমারী স্থলবন্দরের চাঁদাবাজির বিষয়টি মূলত দুটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট স্থলবন্দরকেন্দ্রিক চাঁদাবাজিতে জড়িত রয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মোতাহার হোসেন এমপির পক্ষে মো. তাহাজ্জুল ইসলাম মিঠু, সভাপতি বুড়িমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ কয়েকজন ব্যক্তি চাঁদা আদায় করে থাকেন।’ এই গ্রুপটির বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সম্মিলিত আরেকটি গ্রুপও চাঁদাবাজিতে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে বুড়িমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মুছা, বুড়িমারী ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা বকুল মিয়া প্রমুখের নাম রয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া বুড়িমারী ট্রাক শাখার সভাপতি (দালাল অফিস নিয়ন্ত্রণকারী) মো. আওলাদ হোসেন (সরদার), লেবার ইউনিয়নের সভাপতি মো. সফর উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সদস্য ফজলু, মান্নান প্রমুখও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
  • bd-pratidin/13-2-18

Tuesday, February 13, 2018

সরকারের বিজয়!

অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়



সরকারের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত বিজয়ের সুর। এ বিজয় চিরস্থায়ী এবং অপ্রতিরোধ্য— এ রকম একটি ভাব থেকে তৈরি হয়েছে অতি আত্মবিশ্বাস। সেখান থেকে এসেছে বেপরোয়া ও থোড়াই কেয়ার মনোভঙ্গি। ভারত, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বৃহৎ ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো তাদের চাহিদা পূরণ হওয়ায় খুশি, দেশের ভেতর ক্ষমতার নানা কেন্দ্র নিজ নিজ চাহিদার চেয়ে বেশি পেয়ে খুশি। সরকারের তাই এ রকম ধারণা হয়েছে যে, তার আর জবাবদিহিতার কোনো দরকার নেই। যা খুশি তাই করলে কোনো কিছু যায় আসে না। জলজ্যান্ত সত্য অস্বীকারেও তাই কোনো লজ্জাশরম নেই।

শত হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির ক্ষেত্র তৈরি, দুর্নীতিবাজদের রক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা তাই প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে। প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃঢ় সমর্থন বা অংশীদারিত্ব ছাড়া কোনো বড় দুর্নীতি ঘটতে বা তা বিচারের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। শেয়ারবাজারের ধসের পেছনে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ভূমিকা চিহ্নিত হয়েছিল খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত রিপোর্টে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ পাচারের বিষয়ে তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। এ দুজন ব্যক্তির ওপরই মানুষের আস্থা ছিল, কিন্তু দুটো তদন্ত কমিটির ক্ষেত্রেই ফলাফল হয়েছে অভিন্ন। পুরো রিপোর্ট প্রকাশিতও হয়নি। মূল দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি; বরং তারা ক্ষমতার ছড়ি নিয়ে আরো নতুন নতুন অপরাধের কাহিনী তৈরি করছেন।

সবাই বলেছেন, আর কোনো ব্যাংকের দরকার নেই। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সবার বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার দলীয় পরিচয়ের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্যাংক খোলার অনুমতি দিয়েছে। সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বাধীন ফারমার্স ব্যাংক নিয়ে প্রথম থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তার পরও এ ব্যাংকে সরকার বরাবর তহবিল জোগান দিয়ে গেছে। জলবায়ু তহবিলের টাকাও এখানেই জমা রাখা হয়েছিল। একপর্যায়ে ব্যাংকে ধস নামে। এখন সেই ব্যাংককে পুঁজি জোগান দিতে আবার রাষ্ট্রীয় ব্যাংককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ব্যাংক ও আইসিবি মিলে দুর্নীতি আর অনিয়মের থলিতে ঢালছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা  (বণিক বার্তা, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)। জনতা, সোনালী, বেসিক ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের কাহিনী সরকার প্রকাশ করেনি, করেছে গণমাধ্যম।

দেশে গত প্রায় এক দশকে আইয়ুব ও এরশাদের পর তৃতীয় ‘উন্নয়ন’ দশকের চাপে আছি আমরা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভালো। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে বিস্তর। ঘুষ, নিয়োগ বাণিজ্য, আটক বাণিজ্য সবই বর্ধনশীল। নির্মাণ খাত সবচেয়ে গতিশীল। ইটভাটা অসংখ্য, বৈধ যত তার চেয়ে অবৈধ সংখ্যা বেশি। সিমেন্ট কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। শীতলক্ষ্যাসহ বিভিন্ন নদীর বাতাসে পানিতে এর প্রবল ছোঁয়া পাওয়া যায়। দূষণরোধের কোনো ব্যবস্থা কাজ করে না। রড উৎপাদন বেড়েছে। নিয়ম মেনে বা না মেনে বালি তোলার পরিমাণ বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফার্নিচারের ব্যবসাও বেড়েছে। এজন্য বনের গাছের ব্যবসা ভালো। দেশে নির্বিচারে বনজঙ্গল উজাড় করায় প্রশাসন বরাবর সক্রিয় সহযোগী। সরকারি তথ্যই বলছে, ‘দেশে সবচেয়ে বেশি বন উজাড় হয়েছে উচ্চপ্রবৃদ্ধির এই এক দশকেই। ...শুধু গাজীপুরেই এক দশকে ধ্বংস হয়েছে প্রায় ৭৯ শতাংশ বনাঞ্চল’ (বণিক বার্তা, নভেম্বর ৪, ২০১৭)।

নির্মাণকাজে সরকার যেসব বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার আকার ও বরাদ্দ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এসব প্রকল্পে ব্যয় বরাদ্দের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই, এর যৌক্তিক বিন্যাসেরও কোনো ব্যবস্থা নেই, যৌক্তিকতা বিচারের কোনো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানও আর কার্যকর নেই। তার ফলে এগুলোর ব্যয় অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দুই-তিন গুণ বেশি হলেও সরকার তা নিয়ে কোনোভাবেই বিচলিত নয়। বরং সরকারি অনুমোদন নিয়েই এগুলোর ব্যয় শনৈঃশনৈঃ বেড়ে যাচ্ছে। সরকার নিয়মনীতি অমান্য করে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানিকে উচ্চমূল্যে কাজ দিচ্ছে, আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য ২০১০ সাল থেকে সরকার চলছে ‘দায়মুক্তি আইন’ ঢাল দিয়ে, নানা সুবিধা ছাড়াও ভয়াবহ দুর্ঘটনার ক্ষতির দায় থেকে বাঁচানোর জন্য দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে বিদেশী কোম্পানিকেও (রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প দ্রষ্টব্য)। 

নির্মাণ ছাড়া সরকারের প্রশাসনের আরেকটি আগ্রহ কেনাকাটায়। যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে, কাজ নেই; বাস কেনা হচ্ছে, কিছুদিন পরই সেগুলো হাওয়া; ডেমু ট্রেন কেনা হচ্ছে, কিছুদিন পরই তার কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হচ্ছে; সিসিটিভি কেনা হচ্ছে কিন্তু প্রয়োজনের সময় তা নষ্ট; ঋণ করে সাবমেরিনসহ সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে। কেনা হচ্ছে গাড়ি, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গাড়ির মডেল পরিবর্তন করা, আরো বড় আরো দামি গাড়ি কেনার পথে প্রবল উৎসাহ। সর্বজনের অর্থ যেকোনোভাবে বরাদ্দে কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু এ অর্থ জোগাড়ে বাড়ছে মানুষের ওপরই চাপ। গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, ভ্যাট বসছে সর্বত্র, খাজনা বাড়ছে।

শিক্ষা খাতও এখন কিছু লোকের খুব দ্রুত টাকার মালিক হওয়ার জায়গা। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষা খাতে শিক্ষার কী অবশিষ্ট থাকছে, সেটাই খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রশ্ন ফাঁস নিয়মিত, কোচিং আর টিউশনি নির্ভরতার কারণে শিক্ষার্থীদের জীবন বিষময়। শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরীক্ষা ব্যবস্থায় রূপান্তর করার কারণে গাইড বই, কোচিংয়ের বাণিজ্যের পথ খুলেছে। চলছে নিয়োগ বাণিজ্য। এতে যাদের লাভ তারা খুশি। তারা এ ব্যবস্থাই টিকিয়ে রাখতে চায়। শুধু শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদেরই ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্য সব মন্ত্রণালয়ের মতো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিশ্চিন্ত। চিকিৎসা খাতের অবস্থাও তা-ই।

বলা বাহুল্য, উন্নয়নের ধরনে যদি দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, জবাবদিহিহীনতা, দখল, দূষণ থাকে, অর্থাৎ যদি উন্নয়ন প্রকল্প অতি উচ্চমাত্রায় সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি/বিপর্যয়ের কারণ হয়, তাহলে তা কুশাসন অবধারিত করে তোলে। নদীনালা, খালবিল যারা দখল করে, যারা ব্যাংক লুট করে, যারা সম্পদ পাচার করে, তাদের দরকার হয় প্রশাসনের সমর্থন। এ সমর্থন পেলে তার অপরাধের গতি আরো বাড়ে। এর মধ্যে দুর্নীতি, অনিয়ম, সন্ত্রাস সবই প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা অর্জন করে। সেটাই ঘটছে অবিরাম।

প্রকল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিংবা প্রকল্প ব্যয়ের ক্ষেত্রে যদি স্বচ্ছতা না থাকে, যদি কোনো স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের এগুলো তদারকি বা অনিয়ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা না থাকে, তাহলে তৈরি হয় যথেচ্ছাচার। যারা ঠিকাদার, তারাই যদি কর্তাব্যক্তিদের সমর্থন/অংশগ্রহণে প্রকল্প নির্ধারণ করে, তাহলে ব্যয় বরাদ্দ অনিয়ন্ত্রিত না হওয়ার কারণ নেই। যদি কমিশনপ্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে প্রকল্প বাছাই, তাহলে কমিশন যত বাড়ে, প্রকল্প ব্যয়ও তত বাড়তে থাকে। আগে ঘুষ কমিশনের একটা সীমা ছিল, এখন তাও নেই বলে জানা যায়। বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যয় যে বিশ্বে রেকর্ড করছে, তা এ গতিতেই হয়েছে।

ব্যবসায়ী-লবিস্ট-রাজনীতিবিদ-প্রশাসনের দুষ্ট আঁতাত আরো অনেক অপরাধ-সহিংসতাকেও ডাকে। বলপূর্বক টেন্ডার দখল, জমি-ব্যবসা দখল করতে গিয়ে খুন, রাষ্ট্রীয় সংস্থায় সহযোগিতায় গুম, আটক বাণিজ্য, দরকষাকষি এগুলোও অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় চলে যায়। প্রশাসন আর দল একাকার হয়ে গেলে দ্রুত অর্থ উপার্জনের বল্গাহীন প্রতিযোগিতা চলবেই। বাড়তেই থাকবে ধর্ষণ, নারী-শিশু-সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা, ক্রসফায়ার, হেফাজতে নির্যাতন এবং সরকারি দলে বিভিন্ন গোষ্ঠীর হানাহানি।

গত কিছু দিনে দেশে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, হেফাজতে খুন, গুম, ধর্ষণ ইত্যাদির তাই কোনো বিরতি নেই। সাম্প্রদায়িক হামলার সংখ্যাও বেড়েছে। ক্রসফায়ার, খুন, গুম, সাম্প্রদায়িক হামলা সম্পর্কে সরকারি ভাষ্য খুবই সরল, একঘেয়ে ও কৃত্রিম। ভাষ্যকারদের অবিরাম মিথ্যা ভাষণ ও নির্লিপ্ত অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, তাদের আদেশ অনুযায়ী অসার কথাগুলোই জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে এবং কেউ যদি না করে তাতে তাদের কিছু এসে যায় না।

সরকার তাই পূর্ণ বিজয়ীর বেশে। বাংলাদেশে বিচার বিভাগসহ সব প্রতিষ্ঠান এখন সরকারের করায়ত্ত। নির্বাচনও তার হাতের মুঠোয়। তাই সর্বজনের অর্থ দিয়ে, দেশের উন্নয়নের কথা বলে যা খুশি তা করায় তার কোনো দ্বিধা নেই, দলীয় নেতার মাস্তান হওয়ার কারণে ফাঁসির আসামির দণ্ড মওকুফ করে দিতে কোনো সংকোচ নেই, বিচার ব্যবস্থা চুরমার করতে কোনো দুশ্চিন্তা নেই, সুন্দরবনবিনাশে বা রূপপুর মহাবিপদ প্রকল্প নিয়ে তার বুকে কাঁপুনি নেই। শত হাজার মানুষ বিনা বিচারে খুন-গুম হয়ে গেলে তা নিয়েও তার মুখে হাসি-মশকরা শোনা যায়। অপ্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের বিভিন্ন স্তরে এগুলোকে বিজয় হিসেবেই দেখা হয়!

আওয়ামী লীগের সমর্থক-শুভাকাঙ্ক্ষী বুদ্ধিজীবীরা যদি একটু কম সুবিধা-পদ-বিত্তের পেছনে দৌড়াতেন, যদি তাদের মেরুদণ্ড একটু দেখা যেত, যদি তেলবাজি থেকে সরে একটু দায়িত্ব নিয়ে চলতেন, তাহলে হয়তো বিজয়ের উন্মাদনায় আওয়ামী লীগ সরকারের এতটা পতন ঘটত না, লুটপাট-দুর্নীতি-ঔদ্ধত্য-দখলদারিত্ব আর যথেচ্ছাচারে এতটা মাখামাখি অবস্থা তৈরি হতো না।

  • বণিক বার্তা / ১৩-২- ২০১৮