Search

Sunday, March 4, 2018

RMG failing to move apace with BD economic progress

CPD also finds foreign staff prevalence in industry's upper echelons


The extent of social upgradation Bangladesh's apparel sector has attained over the last five years is unable to keep pace with the desired progress on the economic front, risking its sustainability, a study reveals.

Such uneven situation has posed a threat to the long-term sustainability and competitiveness of the largest export-earning sector, says the study report by the Centre for Policy Dialogue.

It also revealed that the ratio of female workers declined while male participation increased.

Also, while the share of female employment in upper-and middle grades was slowly rising particularly in grade III, IV and V, they remained scant in top grades such as grade I and II.

The wage gap between male and female has also declined, it further showed.

"The upgradation is most prominent in case of social issues, particularly with regard to standards, non-discrimination and employability, but very poor in terms of rights," Khondaker Golam Moazzem, research director of the CPD, said while presenting the preliminary findings of the survey.

Upgradation is moderate in gender-related issues while enterprises are behind in terms of economic upgradation due to poor performance in product and functional upgradation.

"Such an unbalanced growth usually has limited positive impact in terms of firm's overall competitiveness, especially of small and medium enterprises," says the presentation on the findings.

The outcome of the survey, titled 'New Dynamics in Bangladesh's Apparel Enterprises: Perspectives on Restructuring, Upgradation and Compliance Assurance', was shared at a dialogue on 'Ongoing Upgradation in RMG Enterprise: Results from a Survey' in the city Saturday.

Dr Debapriya Bhattacharya, a distinguished fellow of the CPD, moderated the discussion chaired by its chairman Professor Rehman Sobhan.

Mikail Shipar, former labour secretary, Md Siddiqur Rahman, president of Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA), Fazlee Shamim Ehsan, vice-president of Bangladesh Knitwear Manufacturers and Exporters Association (BKMEA), Shamsunnahar Bhuiyan, member of the Minimum Wage Board, Md Babul Akhter, former secretary-general of IndustriAll Bangladesh Council, and Dr A K Enamul Haque, Professor at the Department of Economics of East-West University, among others, also spoke at the meet in the city.

CPD is currently conducting this study to examine the state of transformation of Bangladesh's RMG enterprises during post-Rana Plaza period, particularly with regard to economic, social and gender-related issues.

The survey has been conducted on 2,123 workers in 252 garment factories to get an overview of the latest status of the export industry.

"Though the overall ratio of female workers declined in the RMG sector, the sewing and finishing sections are still dominated by women with 74.90 per cent and 58.60 per cent," the CPD study shows.

The proportion of female workers reached 60.80 per cent because of the introduction of modern technologies in units that squeezed the opportunity for them as they are less knowledgeable about operating different machines compared to males.

The ratio of male workers increased to 39.20 per cent in the RMG sector, he said, adding that a male worker on an average receives Tk 7,270 as monthly wage whereas a female gets Tk 7,058.

In 2015, the female and male workers' participation in the workforce was 64 and 36 per cent respectively.

Some 16 per cent of the surveyed enterprises have employed foreign staffs in almost all sections, with the highest -- 37.3 per cent -- in production planning, followed by 20.1 per cent in merchandising, 11.9 per cent in quality assurance, 8.2 per cent in washing department and each 6.0 per cent in both administration and industrial engineering, it revealed.

And 3.0 per cent each are in both sewing and knitting departments, 2.2 per cent in maintenance department and 1.5 per cent are in research and development.

More than 60 per cent of the factories received order from buyers, Mr Moazzem said, adding sub-contracting activities declined by 6.7 per cent and that 17 per cent enterprises are engaged either in partial or full sub-contracting activities.

"Both entrepreneurs and buyers have kept their confidence in investing in the sector, creating additional employment at a time when workers are losing jobs due to closure of a good number of factories," the study report says.

Still 41 per cent of the sample enterprises operate their businesses in rented spaces, 34 per cent in shared buildings where 63 per cent are RMG-related establishments and 16 per cent of them mentioned that they will either relocate or close within one to five years, it found.

Major changes were observed in case of ownership which is family- based towards corporatisation with better use of management dominance of group-led activities.

Of them, 67 per cent are private limited and 3.0 per cent are public limited companies and 89 per cent of them have boards mostly family-based.

The role of group companies is increasingly visible in RMG sector with 61 per cent found sister concerns of different groups, not only RMG-based but also non-RMG-based enterprises.

Less than 20 per cent of the surveyed enterprises have 'advanced' levels of technologies while 41 per cent have 'moderately better'.

Most of the firms have workers' participatory committee 91 per cent  while trade unions are almost non-existent, only 3.3 per cent.

Mr Akhter opined that unions so far formed in small units and it is quite impossible to form unions in large units due to complexities in the labour-law provisions.

He, however, alleged that real unions are few as most of them are backed either by owners, government and owners, unions and NGOs whereas unions were allowed following pressure from both local and international arenas.

He reiterated his demand for Tk 16,000 as minimum monthly wages for garment workers.

Montu Ghosh, a labour leader, demanded Tk 10,000 as basic payment, and Tk 6,000 as house rent, conveyance and medical allowance.

Participants also stressed government's strong control and monitoring on market, saying house rent and other daily expenses have gone up significantly since new wages were announced.

Responding to a question, the BGMEA president cited declining trend in global demand and prices of apparel items, rise in local cost of doing business and currency appreciation against the US dollar as factors for less-than-required upgradation in economic aspects.

Terming the 70 federations in RMG sector 'ridiculous', Mr Sobhan raised question how the unions' demand would be taken seriously if they don't place their united demands.

"The way you (factory owners) dealt with workers should be different," he said, suggesting making the workers partners and stakeholders of the industry, investing for their training to update them to skilled ones.

Following the investments, they (workers) would stay as they would get share of their profit, he mentioned.

He also called for launching a campaign or dialogue both in the country and beyond to dig out the 78 per cent margin gap in the supply chain.

  • Courtesy: The Financial Express Mar 04, 2018

সংকটটা খুব গভীর


সাম্প্রতিক এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। একে বেশকিছু পণ্ডিত ব্যক্তি শিক্ষার সর্বনাশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমার মতে যা শিক্ষার সর্বনাশ, তা দেশেরও সর্বনাশ। যা হোক, শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, এবার এমন কড়া ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যে প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা মোটেই নেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সব কটি পরীক্ষারই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। গত ৯ বছর ধরেই বিচ্ছিন্নভাবে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু এবার ব্যাপারটি মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা বোর্ডগুলোর অদক্ষতা এবং ব্যর্থতাকেই বহুলাংশে দায়ী করতে হয়। কারণ এ ধরনের পাবলিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের দায়িত্ব তাদেরই। প্রশ্ন ফাঁস কেন ঘটে এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি কীভাবে রোধ করা যায়- এ বিষয়গুলো দেশবাসীকে তাদের জানানো উচিত। অন্তত এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জাতীয় সংসদে আলাপ-আলোচনা হবে এবং শিক্ষামন্ত্রী এ ব্যাপারে একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন, এটা আমাদের খুবই কাম্য ছিল।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের কল্যাণে দেখা গেল, বেশকিছু অসাধু শিক্ষক এবং কিছুসংখ্যক প্রতারক এই মহা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। দেশে মহামারী আকারে বিরাজমান দুর্নীতির সঙ্গে পরীক্ষায় জালিয়াতির মতো দুর্নীতিও ভালোভাবেই যুক্ত হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে একদল শিক্ষক, যারা মানুষ গড়ার কারিগর বলে সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। বাস্তবে তারা মানুষ ধ্বংসের কারিগর হিসেবে জনসমক্ষে আবির্ভূত হয়েছে। একদিকে তারা শ্রেণীকক্ষে শিক্ষা দিচ্ছে না, অন্যদিকে পরীক্ষার ব্যাপারে তরুণ বয়সের ছাত্র-ছাত্রীদের অসৎ-অন্যায় কর্মে দীক্ষা দিচ্ছে। কিছুদিন আগে দ্য ডেইলি স্টারে (১৪.০২.১৮) দেখা গেল, পরীক্ষা শেষে চট্টগ্রাম শহরের একটি কেন্দ্রে ফটোসাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে একদল ছাত্রী লজ্জায় মুখ ঢেকে নিচ্ছে। এ লজ্জা দেশের। এর দায়ভার শিক্ষা ও পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত সবাইকে নিতে হবে।

পরীক্ষার ক্ষেত্রে এ ধরনের দুর্নীতির ফলে অসংখ্য সৎ, পরিশ্রমী এবং মেধাবী ছাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের পাবলিক পরীক্ষা ব্যবস্থাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অভিভাবকরা হতাশ হয়েছে এবং দুঃখ পেয়েছে। এমনই দেশের অসংখ্য অভিভাবকের হতাশার অভিব্যক্তি প্রকাশ পেল গত মাসের ১৪ তারিখে বিবিসির বাংলার প্রবাহ অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার এক মহিলা অভিভাবকের কণ্ঠে। দেশব্যাপী দুর্নীতির যে বাড়বাড়ন্ত চলছে, তা শিক্ষা ক্ষেত্রেও এত বিপুলভাবে বিস্তার লাভ করবে তা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে অর্জিত উন্নয়ন নিয়ে আমরা যখন গর্ববোধ করি, তখন এই প্রশ্ন ফাঁসের মহামারী আমাদের দারুণভাবে হতাশ করে। শিক্ষা ক্ষেত্রে যদি সত্য এবং সততা পরিত্যক্ত এবং বর্জিত হয়, তাহলে শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্যটিই নষ্ট হয়। কারণ শিক্ষার উদ্দেশ্যই হল সৎ, শিক্ষিত ও মেধাবী মানুষ তৈরি করা। ফাঁসকৃত প্রশ্ন এবং নকলবাজির মাধ্যমে পাস করা একদল নকল এবং তস্কর মানুষ দেশের সম্পদ না হয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এ প্রশ্ন ফাঁস এবং পরীক্ষায় দুর্নীতি রোধ করা কি একটি সরকারের পক্ষে খুবই দুরূহ কাজ? সরকার জঙ্গিদের যে কঠিন হাতে দমন করেছে, একই কঠোরতার সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসসহ পাবলিক পরীক্ষার সর্বপ্রকার দুর্নীতি দমন করতেও সক্ষম বলে আমাদের বিশ্বাস। এ ব্যাপারে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) যেভাবে পরীক্ষা নেয়, সেই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করা যেতে পারে।

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস, নকলবাজি, টাকার বিনিময়ে ফলাফল পরিবর্তন- এ ধরনের নানা রকমের দুর্নীতির কথা দেশে শোনা যায়। দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করার ফলে এবং বয়স্ক হওয়ায় বহু তরুণ আমাদের কাছে এসব বিষয়ে দুঃখ এবং হতাশা ব্যক্ত করে থাকে। তরুণদের এক বিরাট অংশের মনে এ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, দেশে ন্যায়-নীতি বলে কিছু নেই, বাংলাদেশে এগুলো চলে না। সৎপথে উন্নতি হয় না। দেশে আয়-উন্নতির জন্য দরকার হয় অন্যায়-অসৎ তথা ‘দুই নম্বরি পথ’, আর এ অন্যায় এবং অসৎ পথের প্রথম পাঠটি আমাদের কিশোর-কিশোরীরা এসএসসি পরীক্ষা থেকেই শুরু করছে। তারপর জীবনের নানা ঘাটে তারা দেখতে পায় ঘুষ-দুর্নীতির রমরমা ব্যবসা। চাকরির পরীক্ষায়ও একই কাণ্ড ঘটে। প্রশ্ন ফাঁস হয় এবং পরীক্ষায় সফল হলেও মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগ হয় না। তার জন্য দরকার হয় বড় কর্তাদের বড় অঙ্কের টাকা প্রদান। অবৈধ টাকার বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্তরা তাই কর্মজীবনে সে টাকা সুদে-আসলে তোলার ব্যাপারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক নিয়োগে কিছুসংখ্যক সংসদ সদস্য বা এমপিদের নিয়োগ বাণিজ্য সবারই জানা।

শুধু নিয়োগই নয়, বদলি এবং পদায়নের ব্যাপারেও অবৈধ টাকা-কড়ির লেনদেন একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ব্যাপক অভিযোগ আছে। আমরা নিজেরাও এসব ঘটনা জানি। পুলিশ বিভাগে ঘুষের ব্যাপারটি সবারই জানা। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন উপকমিশনার এক সম্মেলনে প্রকাশ্যেই বলেছেন, পুলিশ বাহিনীতে ঘুষ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তিনি ঢাকার একটি থানার ওসি বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হতে এবং একজন এসআইকে সুবিধাজনক তথা লাভজনক জায়গায় বদলি হতে কত টাকা ঘুষ দিতে হয় তার একটি তালিকাও দিয়েছেন (দ্য ডেইলি স্টার, ১৯.০২.২৮)। উল্লিখিত ঘুষের পরিমাণ অবাক করার মতো।

এত বড় অঙ্কের ঘুষ দেয়ার সক্ষমতা অর্জনের পেছনে যেমন অতীতের দুর্নীতি আছে, তেমনি বিশ্বাস করার কারণ আছে এই পদায়ন, পদোন্নতি ও বদলির জন্য বিরাট অঙ্কের বিনিয়োগ থেকে তারা বহুগুণ বেশি লাভবান হবে বলে তাদের আশা থাকে। আজকের পত্র-পত্রিকায় দেখা গেল, বর্তমানে দেশে যে ১০ হাজারের মতো পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগদান করা হবে, তাতেও নিয়োগ বাণিজ্যের আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশের কিছু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং রাজনীতিক ও সংসদ সদস্যদের মতো কিছু লোক মিলিতভাবে এ নিয়োগ বাণিজ্যে অংশ নিতে পারে এ আশঙ্কায় পুলিশের সদর দফতর থেকে কয়েকটি মনিটরিং টিম সারা দেশ ঘুরে তদারকি করার উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যোগটি অবশ্যই প্রশংসনীয়।

দেশে বিরাজমান এ সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রভাব শিক্ষাঙ্গনেও পড়েছে। আরও দশজন চাকরিজীবীর মতো শিক্ষকও দুর্নীতির মাধ্যমে ধনী হতে চায়। নিরামিষ নীতিকথায় তারা আটকে থাকতে চায় না। তাই তাদের একটি বড় অংশ বেছে নিয়েছে কোচিংবাজি, নকলে সাহায্য এবং প্রশ্ন ফাঁসের মতো জঘন্য অপরাধমূলক কাজ। ফলে শ্রেণীকক্ষে যথাযথ শিক্ষাদান, সত্যিকার পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মার খাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে দেশব্যাপী অপশিক্ষিত ও অল্পশিক্ষিত একদল তরুণ-তরুণী, যারা দেশ ও জাতির উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারবে না।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে, দেশের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কবল থেকে শিক্ষাঙ্গনও মুক্ত নয়। এটার লাগাম শক্ত হাতে অবিলম্বে টেনে না ধরলে দেশের সর্বনাশ হবে। কারণ উন্নয়নের মূল নায়ক হল মানুষ। মানবসম্পদই একটি দেশের বড় সম্পদ। আর মানুষ সম্পদে পরিণত হয় শিক্ষার গুণে। শিক্ষার ফল নির্ণয়ের জন্য যে পরীক্ষার অনুষ্ঠান, সেটাই যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তবে সে শিক্ষা নামের প্রহসন দেশে এক বিরাট মানবসংকট সৃষ্টি করবে। এখনই শোনা যায়, দক্ষ লোকের অভাবের কারণে বহু বিদেশি বাংলাদেশে কাজ করে এবং দেশের বহু কোটি ডলার তারা তাদের দেশে নিয়ে যায়।

আইন ও সুশাসনের অভাবের ফলে দেশে শিক্ষিত তরুণ সমাজের মধ্যে যে হতাশা বিরাজমান তা আমরা নিজেরাও দেখি। বহু প্রতিভাবান তরুণ-তরুণী উন্নত পশ্চিমা দেশ, বিশেষ করে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার যুবসমাজের ওপর সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, শতকরা ৮২ জন তরুণ-তরুণী উন্নত ভাগ্যের আশায় দেশ ছেড়ে পশ্চিমা দেশে যেতে আগ্রহী। মেধাবী যুবসমাজের দেশত্যাগ, যাকে আমরা মেধা পাচার বলি, তার ফলে দেশের যে বিরাট ক্ষতি হয়, সেটা আমাদের জাতীয় নীতিনির্ধারকরা কি গভীরভাবে খতিয়ে দেখেছেন? দেশের নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতিসহ প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা আসলে দেশের সর্বনাশেরই বড় দৃষ্টান্ত।

  • মো. মইনুল ইসলাম : সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  • Courtesy: Jugantor/03-03-18


পরামর্শকের পকেটেই ৬৭ কোটি!


সম্পাদকীয়: দাতাদের বেঁধে দেয়া শর্তের কারণে ঋণ ও অনুদানের একটি বড় অংশ যে তাদের নিজেদের পকেটেই চলে যায়, তার একটি উদাহরণ গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত ‘পরামর্শকের পকেটে ৬৭ কোটি টাকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি।

এতে জানা যায়, গ্রামীণ ও নগরাঞ্চলের, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণের জীবনের মানোন্নয়ন, দারিদ্র্যবিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য সরকার, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কেএফডব্লিউর যৌথ অর্থায়নে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ নামের প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৪৮ কোটি টাকা এবং জিসিএফ ও কেএফডব্লিউর অনুদান থেকে ৪৪০ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা।

অর্থের ৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে পরামর্শকের পেছনে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে দেশি ও আন্তর্জাতিক পরামর্শকের যৌক্তিকতা এবং এ খাতে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। আমরাও মনে করি, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আদৌ পরামর্শক নিয়োগের প্রয়োজন আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত। প্রকল্পের অর্থের একটি বড় অংশ যদি অপ্রয়োজনীয় খাতে চলে যায়, তাহলে স্বভাবতই প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে এর প্রভাব পড়বে। এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য হবে ব্যাহত।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। এসব এলাকায় জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো নির্মাণ শুধু প্রয়োজন নয়, জরুরি। জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ অবকাঠামো বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবেষ্টিত গ্রামীণ জনপদের মানুষ জলবায়ু সহিষ্ণু মানের টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসবে।

এতে ব্যাপক জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং এসব এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। কাজেই এ প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে প্রকল্পের অর্থের অপচয় ও নয়ছয় রোধ করতে হবে কঠোরভাবে। এ ব্যাপারে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

  • Courtesy: Jugantor/03-03-18

রায়ের কপি পৌঁছুতে বিলম্ব ‘ইচ্ছাকৃত’ - জাফরুল্লাহ


বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজার রায়ের কপি এখনও হাইকোর্টে না পৌঁছানোর কঠোর সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ‘সদরঘাট থেকে ঢাকা হাইকোর্ট যাতায়াতে ডিজিটাল যুগে কয় ঘণ্টা সময় লাগে তা আমাদের জানা। বিচারিক আদালত থেকে বেগম জিয়ার রায়ের কপি হাইকোর্টে পৌঁছুতে কোনোভাবেই এত সময় লাগার কথা নয়! এটা অনেকটা ইচ্ছাকৃত বিলম্ব।’

শনিবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঐতিহাসিক ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঐতিহাসিক ৩ মার্চ ’৭১ উদযাপন কমিটি।

দেশে যখন গণতন্ত্র থাকে না তখন চতুর্দিকে নৈরাজ্য চলে ব‌লে মন্তব্য ক‌রে‌ন ড. জাফরুল্লাহ।

তিনি বলেন, ‘চার কিলোমিটার রাস্তা যেতে ১৫ দিন সময় লাগে! খালেদা জিয়া আড়াই কোটি টাকা চুরি করেছেন বলা হয়, কিন্তু তিনি এত কম টাকা কেন চুরি করেছেন তা আমি জানি না। আরও বেশি করে করতে পারতেন।’

রাজনৈতিক এই বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘কোনও জাতি এক ব্যক্তির দ্বারা গঠিত হয় না। একজনের একদিনের বক্তৃতা ও ঘোষণা দ্বারাও নয়। বহুজনের শ্রমের দ্বারা জাতি গঠিত হয়।’

২ ও ৩ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন না করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যে জাতি বীরদের সম্মান করতে পারে না সেই জাতির কপালে দুর্ভোগ আছে। আজকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ২ ও ৩ মার্চ উদযাপিত হয় না কেন? মানুষতো জানে যারা বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তারা বেঈমানি করছেন।’

ড. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আজ যেটা বলা সহজ সেই কথাটা ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বলা সহজ ছিল না। তখন জীবনকে বাজি রাখতে হতো। জাতি যখন দিকভ্রান্ত হতাশ তখন ২৩-২৪ বছরের যুবক এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটিয়ে দেন। হঠাৎ সাহসের সঙ্গে পতাকাটা তুলে ধরলেন। পরদিন একটা দিক নির্দেশনা দিলেন শাহজাহান সিরাজ। রব শুরু করলেন, এটাই আমাদের পতাকা। আমরা চিন্তা করতে বাধ্য হলাম আমাদেরকে এই পথে এগুতে হবে। তার পরদিন বিস্তারিত তুলে ধরলেন শাহজাহান সিরাজ। একটা পড়া দরকার। আমি স্কুলের বই খুলে দেখি কোথাও রবের নাম নেই, শাহজাহান সিরাজের নাম নেই। কেন? ইশতেহার শব্দটাও তো নেই।’

যখন এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা থাকে তখন ঢাকাকেন্দ্রিক শাসন ও ইসলামাবাদের শাসনের মধ্যে তেমন তফাত থাকে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শাজাহান সিরাজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সচিব ব্যারিস্টার শুল্কা সারওয়াত সিরাজের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কবি আল মুজাহিদী, বেগম রাবেয়া সিরাজ ও বাংলাদেশ ছিন্নমূল হকার্স সমিতির আহ্বায়ক কামাল সিদ্দিকী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার পর ওই দিনই কড়া নিরাপত্তায় খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই বন্দি আছেন। 

এ মামলায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আদেশে জানান, বিচারিক আদালতের নথি পেলেই খালেদা জিয়ার মামলার আদেশ দেয়া হবে। 

  • ব্রে‌কিং‌নিউজ/০৩ মার্চ ২০১৮

LNG supply and capacity payment


That some government agencies here are more prone to putting the cart before the horse is, more or less, a proven fact.  Taxpayers' money is often wasted just because of neglect, inefficiency and lack of coordination in putting all the necessary factors in place to make projects and programmes a success. The Petrobangla's programme to supply imported liquefied natural gas (LNG) from next month using the facilities of the country's first floating, storage and re-gasification unit (FSRU)-based terminal at Moheskhali could soon be such an example.

The state-owned agency has already struck deals on the import of LNG from a number of sources and the construction of the terminal by a US firm is now reported to be at the final phase. The stage is also set for putting into effect yet another hike in gas prices for the domestic consumers to compensate for high cost of imported LNG. However, what is not yet fully ready is the pipeline to carry the entire volume of gas to be made available by the LNG terminal to the consumers.

A report, published in this paper quoting a senior official of Petrobangla, said the lack of preparedness, in terms of gas transmission pipeline, is likely to cost the government an additional amount, in the form of capacity payment, from the first day of the commercial launch of the terminal. It would not be able to evacuate the entire volume of re-gasified LNG from the terminal; a large part of the gas transmission pipeline between Anwara-Fouzderhat is yet to be laid. But as per contract with the builder of the terminal, the government would have to make full payment to the former even if it fails to evacuate lower than actual volume of LNG.

What is more frustrating is that the government is at risk of making capacity payment when a large number of industrial units in Chittagong region have remained gas-starved for years together. It is almost certain that the capacity payment would be substantial since the Gas Transmission Company Limited (GTCL) is yet to acquire land for laying the Anwara-Fouzderhat pipeline. The development, thus, speaks of usual sloth and inefficiency ingrained in the state entities.

However, some state entities have developed a habit of making capacity payments to private parties in recent years. The Power Development Board (PDB) is one such organisation that has been paying billions of taka to private rental power plants for its failure to utilise the generating capacity of the latter.

Allegations are aplenty about irregularities in such payments. It is not unlikely that the scopes for indulging in irregularities are deliberately created in deals struck between the private parties and the state agencies to share funds beyond regular ones. The relevant ministry should look into the issue of probable capacity payment to the LNG terminal and the delay in laying a major part of the pipeline. 

  • Courtesy: The Financial Express/ editorial/ march 04, 2018


আবারো ৩টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন পেতে যাচ্ছে


আবারো তিনটি নতুন ব্যাংক অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। এই তিন ব্যাংক হচ্ছে বাংলা ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড। 

বাংলা ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসিম উদ্দিন। তিনি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ছিলেন। 

পিপলস ব্যাংকের প্রধান উদ্যোক্তা হলেন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এম এ কাশেম, যিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। 

অন্যদিকে সিটিজেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা হচ্ছেন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইকবাল। 

গত বছরের শেষ দিকে বাংলা ও পিপলস ব্যাংককে লাইসেন্স দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করেছিল অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এখন সিটিজেন ব্যাংকের বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে।

দেশে বর্তমানে ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও নতুন তিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদনপ্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে ৯টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্ততপক্ষে তিনটির আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। বাদবাকিগুলো অধিকাংশই কোনো রকমে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছে।

নতুন ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারের শীর্ষ মহলের সম্মতি পাওয়ার পর গত বছর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলা ও পিপলস ব্যাংকের অনুমোদনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল। এখন আমরা সিটিজেন ব্যাংক লিমিটেড নামে অপর একটি ব্যাংকের সম্মতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গত সপ্তাহে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। সেখান থেকে সম্মতি পাওয়া গেলে ওই ব্যাংককেও অনুমোদন দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করা হবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নতুন ব্যাংক খোলার বিষয়ে আমাদের কাছে সুপারিশ করতে পারে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আগামী পরিচালনা পর্ষদে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

এর আগে নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ব্যাংক রয়েছে। তারপরও দেশের প্রচুর অঞ্চল ব্যাংক সেবার বাইরে রয়েছে। এ কারণেই নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। আমরা আরো তিন বা চারটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেবো। তিনি বলেন, অনেকগুলো ব্যাংক একীভূত (মার্জার) করার চেষ্টা চলছে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবরের মতো দেশে নতুন করে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে আসছে। এর আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নতুন ব্যাংক হিসেবে সিটিজেন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া যায় কি না সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত চেয়েছিল। সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতকে আরো সুশৃঙ্খল করার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সালে ৯টি ব্যাংকের অনুুমোদন প্রদান করা হয়।

কিন্তু এই ব্যাংকগুলোর মূলধন পর্যাপ্ততার হার, সম্পদের ওপর মুনাফার হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এসব ব্যাংকের ইক্যুইটি মূলধনের ওপর মুনাফার হারও সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত হয়নি। প্রথম কয়েক বছরের মধ্যেই কয়েকটি নতুন ব্যাংকের বিরূপ শ্রেণীকরণ ঋণের হার বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে নতুন দুটি ব্যাংকের পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ায় তাদের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’

নতুন ব্যাংকগুলো লাইসেন্সের শর্ত পরিপালন করছে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, ‘নতুন ব্যাংকগুলো তিন বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ইস্যু, মোট ঋণ ও অগ্রিমের অন্তত ৫ শতাংশ কৃষি ও পল্লীঋণ খাতে বিনিয়োগ করার ইত্যাদি শর্তে প্রদান করা হলেও ব্যাংকগুলো তা পরিপালন করতে সক্ষম হয়নি। এখন এই প্রেক্ষাপটে ও বিরাজমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে আরো নতুন বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদান আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সহায়ক হবে না বলে ইতঃপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক মতামত ব্যক্ত করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামতে সর্বশেষ বলা হয়, ‘ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘বাংলা ব্যাংক লিমিটেড’ ও ‘পিপলস ব্যাংক লিমিটেড’ নামে দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে।

এই দুটি ব্যাংকের বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর লাইসেন্স প্রদানসংক্রান্ত বিধিবিধান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুুসৃত নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে সার্বিক বিবেচনায় এ পর্যায়ে আরো একটি নতুন ব্যাংক অনুমতি দেয়ার বিষয়ে উপরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেয়ার যৌক্তিকতা রয়েছে।’

  • নয়া দিগন্ত/৩-৩-১৮ 

দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৬ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা

গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির হিসাব অনুযায়ী ২০১৪ সালেই পাচার হয়েছে ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা



যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ‘গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটি’- জিএফআই’র সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৭ হাজার কোটি টাকা। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, অবৈধ উপায়ে উপার্জিত টাকা এদেশে খরচ করতে না পারা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকায় পাচারের প্রবণতা বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত ‘হলমার্ক গ্রুপ’ ২০১১ সালে সোনালী ব্যাংকে ভুয়া এলসি খুলে একদিনেই বিদেশে পাচার করে ১৫শ কোটি টাকা। একই বছর বিসমিল্লাহ গ্রুপও একই পদ্ধতিতে দেশের ৫টি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মালয়েশিয়ায় পাঠায় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা জিএফআই’র সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের নানা দেশে ২০১৪ সালেই পাচার হয়েছে ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। আর ১০ বছরে গড়ে পাচারের পরিমাণ ৪৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। 

বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ২৬তম। 

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, অতিমাত্রায় দুর্নীতি, বিনিয়োগের পরিবেশের অভাব ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে টাকা পাচার হচ্ছে। 

বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, বিশাল অংকের টাকা পাচারের কারণে দেশ একদিকে হারাচ্ছে বিনিয়োগ, অন্যদিকে স্থবির হয়ে পড়ছে উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পাচার ঠেকাতে এখনই সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • দিনকাল/3-3-2018

Another brutal attack by BCL members


Disciplinary action called for

Rajshahi Government College student Golam Mawla lies unconscious on the college ground on Wednesday after several BCL men brutalised his face with a hammer. The student lay near the college pond, beaten senseless, for a while but no one came to his aid “out of fear”. Later, a number of teachers rescued him and sent him to a hospital, where he is being treated. Photo: Star

The barbaric attack on a second year student of Rajshahi Government College by some Bangladesh Chhatra League (BCL) activists has left us shocked and outraged. The young man was mercilessly hit with a hammer leaving him severely injured. The victim was left senseless and no one dared to come to his rescue, as is evident from the picture published in this paper on March 3 that showed some young men leering away shamelessly at his still form lying on the grass.

We thank the faculty members who finally gathered around and sent Golam Mawla to the hospital; he needed multiple stitches to his battered face. His family is also worried that his injuries may incapacitate him so much that he may not be able to continue his studies. So what is holding up the immediate expulsion of these so-called students from the student body they belong to? Not a week goes by when we are left free from reporting on excesses of the BCL because they display no respect either for their fellow students or the rule of law.

No matter what the point of contention was between the victim and his attackers, such barbarism is intolerable. We expect the university authorities to be firm in their decision in identifying persons involved (as the campus is under CCTV coverage) and cancel their studentship from the university. Such a heinous attack actually warrants legal action to be taken against the attackers.

When will the BCL leadership rein in these aggressive, violence-prone elements within its organisation that only serve to tarnish the image of the student body and ultimately the ruling party? We believe that Awami League's central leadership has a major role to play in this matter because some BCL members are simply out of control and they can only be brought to heel if the party takes a tough stance on the issue.

Saturday, March 3, 2018

নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ ৭ জনকে আদালতের নোটিস


নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জামপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রেলওয়ের লিজকৃত জমি দখল করে মাটি ভরাটের অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাসহ সাতজনকে নোটিস পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

 
বৃহস্পতিবার বিকালে দায়েরকৃত মামলার বাদী মহজমপুর উত্তর কাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন। গতকাল সকালে আদালতের নোটিস পৌঁছলে সামসুল আলমের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা, টেঁটা, বল্লম নিয়ে মহড়া দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে টহল জোরদার করে। এ নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এর আগে ওই জমি জোরপূর্বক দখল করে বেড়া দেয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগী আলী হোসেন বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

 
জানা যায়, আলী হোসেন রেলওয়ের কাছ থেকে ছয় শতাংশ জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল ও খাজনা পরিশোধ করছেন। সম্প্রতি ওই জমিতে তিনি দোকান নির্মাণ করতে গেলে সামসুল আলমের নেতৃত্বে তুহিনুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোতালেব, আনোয়ার হোসেন, হাসেম, গোলজারসহ ১৫-২০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে বাধা দেয়। এ ঘটনায় তিনি গত ১ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওইদিন বিকালে শুনানি শেষে আদালত ওই জমির ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পাশাপাশি ১৫ দিনের মধ্যে বিবাদীদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।

 

Courtesy: Bonikbarta Mar 03, 2018

হাওড়ে বাঁধ নির্মাণ: বাস্তবায়নের সময় পেরোলেও কাজ হয়েছে অর্ধেক

হাওড়ের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার। বুধবার এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময় পেরিয়ে গেলেও এর মধ্যে সার্বিকভাবে প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র অর্ধেক। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাঁধে মাটি ফেলার কাজও শুরু হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে স্থানীয় কৃষকরা।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওড়ের বোয়ালমারা বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হয়েছিল পাঁচটি। এদের অনুকূলে অর্থও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর পরও গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাঁধটির কোনো প্রকল্পেরই কাজ শুরু হয়নি।
 

একই অবস্থা জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওড়ের ভুরাখালী স্লুইস গেটসংলগ্ন বাঁধ এবং হালেয়ার বাঁধেরও। এ দুই বাঁধেও এখন পর্যন্ত কোনো মাটি ফেলা হয়নি। পুরো জেলায় এ রকম আরো কয়েকটি বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় শেষ হলেও এখন পর্যন্ত সেগুলোর কাজই শুরু হয়নি। সার্বিকভাবে ৯৮৭টি প্রকল্পের একটিরও কাজ সময়মতো শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত এসব বাঁধ নির্মাণের ৬৫ শতাংশের মতো কাজ শেষ হয়েছে। যদিও স্থানীয় কৃষক ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, সার্বিকভাবে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশের মতো।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ১৩টি পিআইসির সদস্যদের লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। এছাড়া কাজের মেয়াদ আরো ১৫ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হিসাব অনুযায়ী, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাওড়ের ৬৫ শতাংশ বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ৮০ শতাংশ, বিশ্বম্ভরপুরে ৫৮, জামালগঞ্জে ৭৫, তাহিরপুরে ৭০, ধর্মপাশায় ৭৫, দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৭০, দোয়ারাবাজারে ৭০, দিরাইয়ে ৬৫, ছাতকে ৫০, শাল্লায় ৫০ ও জগন্নাথপুরে ৬৫ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে ৫৫ শতাংশের কাছাকাছি।

নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় এবারো হাওড়ের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। গত বছর নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণ না হওয়া ও নির্মাণকাজে অনিয়মের কারণে অকালবন্যায় তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ হাওড়াঞ্চলের ফসল। গত বছর বৃষ্টি শুরু হয়েছিল মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে। আর শেষ সপ্তাহে শুরু হওয়া অকালবন্যায় তলিয়ে যায় একের পর এক হাওড়।

হাওড়ে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও ফসলহানির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে চলতি বছর থেকে বাঁধ নির্মাণে ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চলতি বছর থেকে ঠিকাদারদের বদলে হাওড়ের সব বাঁধের কাজ করছে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে গঠিত পিআইসি। এতে কৃষকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদেরও। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছে জেলা ও উপজেলা কমিটি। এবার সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলার ৫৩টি হাওড়ে সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু এবারো নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্টদের দাবি, হাওড়ের পানি দেরিতে নামায় এবার কাজে বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই সব কাজ শেষ হবে।

অন্যদিকে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, পিআইসি গঠনে বিলম্ব, পাউবো ও উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোকদের পিআইসিতে অন্তর্ভুক্তির কারণে বাঁধের কাজে দেরি হচ্ছে। শেষ সময়ে এসে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা।

 

 

নির্ধারিত সময়ে বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকরা এখন ক্ষুব্ধ। তাহিরপুরের লেদারবন্দ হাওড়সংশ্লিষ্ট কৃষকরা এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভও করেছেন।

তাহিরপুরের বড়দল এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, সময় শেষ হওয়ার পর তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এখন কাজ খুবই নিম্নমানের হচ্ছে। বাঁধের নিচ থেকেই মাটি কেটে বাঁধে দেয়া হচ্ছে। আর শেষ সময়ে কাজ হওয়ায় মাটি শক্তভাবে বসার সুযোগ পাবে না। ফলে বৃষ্টি হলেই বাঁধের মাটি পানিতে মিশে যাবে।

প্রসঙ্গত, দেশের নিচু এলাকাগুলোর অন্যতম হচ্ছে হাওড়াঞ্চল। দেশে মোট বোরো আবাদের বৃহদাংশের চাষ হয় এখানেই। সিলেট জেলা ও তত্সংলগ্ন এলাকায় প্রতি বছর মার্চের দিকে এসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি হয় সীমান্তের ওপারের ভারতের মেঘালয় পাহাড়েও। মেঘালয়ের এ পাহাড়ি ঢল হাওড়ের দিকে নেমে আসে মার্চ-এপ্রিলের দিকে। ফলে এ সময় বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। বন্যার হাত থেকে হাওড়াঞ্চলের উৎপাদিত ফসল রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয় উঁচু বাঁধ। কিন্তু প্রতি বছরই এসব বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বাঁধ নির্মাণে গাফিলতির কারণে ফি বছরই তলিয়ে যায় হাওড়ের ফসল, যা গত বছর ভয়াবহ রূপ নেয়।

সরকারি হিসাবেই গত বছর ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৫৪ হাওড়ের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ১ লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির ফসল। অন্যদিকে কৃষকদের হিসাবে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।

 

জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওড় এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এখানকার ভুরাখালী স্লুুইস গেটসংলগ্ন বাঁধ ও হালেয়ার পতিত বাঁধে মাটিই পড়েনি। বৈশাখী বাঁধের কিছু অংশে মাটির কাজ চলছে। গত বছর প্রথম এ বাঁধ ভেঙেই হাওড়ে পানি প্রবেশ করেছিল বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন। এখানকার স্থানীয় কৃষক আব্দুর রউফ বলেন, এখনো হাওড়ের বাঁধগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। গতবার ফসল গেছে, এবারো যদি ফসল তুলতে না পারি, তাহলে না খেয়েই মরতে হবে।

পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, আমাদের জরিপ অনুযায়ী এখন পর্যন্ত গড়ে ৫২ শতাংশ বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর বাঁধের

কাজ অনেক আগে শেষ করা উচিত ছিল। কারণ প্রকৃতি কখন বিরূপ হবে তার যেমন ঠিক নেই, তেমনি বাঁধ শক্ত হওয়ার জন্যও কিছুটা সময় দরকার।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

 

তিনি বলেন, সব উপজেলায় এখন মূলত চলছে শেষ দিককার কাজ; যেমন মাটি সমান করা, দুরমুশ করা, ঘাস লাগানোর কাজ বাকি আছে। এবার সবকিছু আগাম পরিকল্পনা করলেও হাওড়ে জলাবদ্ধতা থাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হতে দেরি হয়, এ কারণে কাজ শেষ করতেও কিছু সময় বেশি লাগছে।

 

কিছু প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব প্রকল্পের কাজই শুরু হয়ে গেছে। এবার প্রকল্পগুলো অনেক বড়। ফলে একদিকে শুরু হলে আরেকদিকে দেখা যাচ্ছে না।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ২ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৫ হেক্টরে।

নেত্রকোনায়ও শেষ হয়নি কাজ: নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলের ফসল রক্ষা প্রকল্পের নির্মাণকাজ ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আশঙ্কা থেকে গেছে সেখানকার স্থানীয় কৃষকদের মধ্যেও।

নির্ধারিত সময়ে বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে জেলা কাবিটা স্কিম মনিটরিং কমিটির সভায়। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী সাতদিনে শতভাগ কাজ শেষ করা হবে।

 

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আকতারুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনা জেলার হাওড়াঞ্চলে প্রায় ৩৩০ কিলোমিটার ছোট-বড় বাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ ফসল রক্ষা বাঁধ হিসেবে এ বছর ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা রাখছি।
 

 Courtesy: Bonikbarta Mar 03, 2018