Search

Wednesday, April 11, 2018

বেগম জিয়ার পক্ষে লড়বেন ৩০০ আইনজীবী



জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা বাড়ানোর জন্য জারি করা রুলের উপর শুনানি করতে খালেদা জিয়ার পক্ষে লড়তে ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেছেন আইনজীবীরা। আইনজীবীদের স্বাক্ষরের পর তা গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

তিনি বলেন, সিনিয়র আইনজীবীসহ অসংখ্যা আইনজীবী রয়েছেন বেগম খালদা জিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য। তাদের সংখ্যা তিন শতাধিক হবে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আইনজীবীদের তালিকা সম্বলিত ওকালতনামা আমি নিজে জমা দিয়েছি। এখন রুলের শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে অংশ নেবেন ওকালত নামায় স্বাক্ষরকারী আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির জন্য হাইকোর্ট ইতোপূর্বে যে রুল জারি করেছিলেন তা আইনগতভাবে মোকাবেলা করার জন্য আইনজীবীরা প্রস্তুত রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ওকালত নামা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলায় লড়বেন অন্য আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্পিকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সাবেক আইনমন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদআহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জে মোহাম্মাদ আলী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রেজাক খান, সাবেক মন্ত্রী ও ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, সাবেক মন্ত্রী ও ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির, সাবেক মন্ত্রী ও ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধরী।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈয়মুর আলম খন্দকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও দলের যুগ্ম-মহাসিচব ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বারের সাবেক সম্পাদক ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আকতারুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন, ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান, মির্জা আল মাহমুদ জাকির হোসেন ভুঁঞাসহ প্রায় তিন শতাধিক আইনজীবী।

খালেদা জিয়ার দণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার জন্য করা আপিল আবেদনের শুনানিতে ৫৩ জন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তখন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে প্রধান করে করা আইনজীবী প্যানেলের ৫৩ সদস্যই ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেছিলেন।

এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা কেন বৃদ্ধি করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

  • Courtesy: আমাদের সময়.কম/ Apr 11, 2018

পুলিশ বাহিনীর সাথে ছাত্রলীগ - জাফর ইকবাল


শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, যখন সরকার কোন কিছুর সম্মুখীন হয়, তখন সরকারের পুলিশ বাহিনীর সাথে ছাত্রলীগও এসে পড়ে। ছাত্রলীগ যারা করে তারাওতো ছাত্র, তারা পড়াশোনা করবে। তারা যেন কোন ভুল না করে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে যেন কোন সংঘাত সৃষ্টি না হয়।

বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে সাংবাদিকদের সারাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে কিছু প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মের উপর আমার আস্থা রয়েছে। ৫২র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে তরুণরা নেতৃত্ব দিয়েছে। আমি আশা করব তারা যেন সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়।

তিনি আরো বলেন, ৫৬ শতাংশ কোটা যে হিসেবে অনেক বেশি। একসময় হয়ত এটার প্রয়োজন ছিল, তবে তা এখন একটা সঙ্গত সংখ্যায় নামিয়ে আনা দরকার। কোটা সংস্কারের কথা বলে প্রচ্ছন্ন ভাবে অনেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে কথা বলছে। এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যেন কোনভাবেই অশ্রদ্ধা না হয় সেইদিকে খেয়াল রাখার আহবান জানান।
  • Courtesy: আমাদের সময়.কম / Apr 11, 2018

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়নে বিতর্কের অবকাশ নেই

অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ


বাংলাদেশের সংবিধানে ১২৬ অনুচ্ছেদে লিখিত আছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।’ সংবিধানের চতুর্থ ভাগে নির্বাহী বিভাগের প্রথম পরিচ্ছেদ হল রাষ্ট্রপতি, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা, তৃতীয় পরিচ্ছেদে স্থানীয় শাসন, চতুর্থ পরিচ্ছেদে প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ, পঞ্চম পরিচ্ছেদে এটর্নি জেনারেল যা সংবিধানের ৪৮-৬৪ অনুচ্ছেদে বিধৃত আছে।

নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। অনুরূপভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা প্রদান সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। বিশেষ করে সংবিধানের ১২০ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেরূপ কর্মচারী প্রয়োজন বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি বরাবর অনুরোধ করলে তিনি তাঁর ব্যবস্থা করবেন। এবং নির্বাচনকালীন সময়ে উক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নির্বাচন কমিশনের অধীন থাকবেন।

সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছে, সেনাবাহিনী নিয়োগের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের আছে কি না? সংবিধানের ১৫৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, “শৃঙ্খলা বাহিনীর অর্থ (ক) স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী বা বিমান বাহিনী। (খ) পুলিশ বাহিনী। (গ) আইনের দ্বারা এই সংজ্ঞার অর্থের অন্তর্গত বলে ঘোষিত যে কোন শৃঙ্খলা বাহিনী ইত্যাদি।” কিন্তু আর, পি, ও-এর ২ অনুচ্ছেদে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ান, র‌্যাব, আনসার, ব্যাটালিয়ান আনসার, বর্ডার গার্ড, কোস্টাল গার্ডকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখ নেই। তাহলে নির্বাচন কমিশন কীভাবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারেন?

শুধুমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন অনুসারে যেমান নির্বাহী বিভাগের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিশেষ করে শিক্ষা, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার ও জনপ্রশাসন ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চাইলে নির্বাহী বিভাগ সহায়তা প্রদান করে থাকে সেক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি সেনাবাহিনী মোতায়েন যদি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত দিক সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন তার অভিপ্রায় নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে গোচরীভূত করবেন এবং রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জ্ঞাপন করবেন। নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা দেবেন এটিই বিধেয়।

নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সংবিধানের ১১৮ (৪) অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন।


পরিচিতি : সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ও খসড়া সংবিধান প্রণেতা/মতামত গ্রহণ : মাহবুবুল ইসলাম/সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
  • Courtesy: আমাদের সময়.কম /Apr 11, 2018



আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সমর্থন


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

বুধবার সকালে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবির প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। শিক্ষক সমিতি মনে করে, এই কোটা সংস্কার এখন যুগের চাহিদা। সে অনুযায়ী কোটা সংস্কার বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দ্রুততম সময়ে ঘোষণা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়াও আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনরূপ পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্যও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

  • Courtesy: Banikbarta/ April 11, 2018

ছাত্রী নির্যাতনে ঢাবিতে রাতে উত্তেজনা, ছাত্রলীগ নেত্রী বহিষ্কার

আসিফুর রহমান


দিনের আন্দোলন শেষে ঘরে ফিরে গেলেও গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে আবারও হঠাৎ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের তিন ছাত্রীকে নির্যাতনের প্রতিবাদে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহানকে বহিষ্কারের দাবিতে মধ্যরাতে হলের ভেতরে-বাইরে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ছাত্রলীগ, পরে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইফফাতকে বহিষ্কার করা হয়। ভোররাত সোয়া চারটার দিকে আন্দোলনকারীরা হলে ফিরে যান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে ইফফাত হলের তিন ছাত্রীকে একটি কক্ষে ডেকে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের চিৎকার শুনে সেখানে যান উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মোর্শেদা খানম। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোর্শেদা কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারেন। এতে তাঁর পা কেটে যায়।

খবর পেয়ে অন্য ছাত্রীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ইফফাতকে মারধর করে তাঁকে আটকে রাখেন। ছাত্রী নির্যাতন করায় তাঁর বহিষ্কারের দাবিতে বাইরে বিক্ষোভ করতে থাকেন অনেকে। ‘নির্যাতনকারীর কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মরতে নয়, পড়তে চাই’, ‘বোনের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’—এসব স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।

কেউ কেউ মোর্শেদার কেটে যাওয়া পায়ের ছবি তুলে ও ছাত্রী নির্যাতনের কথা লিখে ফেসবুকে শেয়ার করেন। মোর্শেদার সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করে তা–ও শেয়ার করেন। মুহূর্তেই খবরটি ছড়িয়ে যায়।

ভিডিওতে মোর্শেদাকে বলতে শোনা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এ ধরনের নির্যাতন সহ্য করছেন। প্রশাসন তাঁদের আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না করায় তাঁরা হলের নেত্রীদের কথামতো চলতে বাধ্য হন। সবশেষ গত রোববারের আন্দোলনে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ছাত্রীরা রাত্রিবেলা হল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। ওই দিন ও পরের দিন সোমবার আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় বেশ কয়েকজনকে চড়-থাপ্পড় দেন ইফফাত। আজ (মঙ্গলবার) গিয়ে দেখেন, তিনজনকে মারধর করা হচ্ছে। তিনি আর নিজের ক্ষোভ সংবরণ করতে পারেননি। জানালায় লাথি দিয়ে তিনি প্রতিবাদ করেন।

মোর্শেদা ছাত্রলীগের সুফিয়া কামাল হল শাখার সহসভাপতি। তবে তিনি শুরু থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে। তাঁকে প্রথমে সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পরে তাঁকে মগবাজারে এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

ছাত্রী নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে বিক্ষোভ করে কবি সুফিয়া কামাল হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। তাঁরা ফটকের বাইরে অবস্থান নিয়ে ইফফাতের বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের ছাত্রীরাও রাতে তাঁদের হলের ভেতরে প্রতিবাদ মিছিল করেন।

ছাত্রদের হলগুলোর কলাপসিবল গেট আটকে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতারা অবস্থান নেন। বিজয় একাত্তর হলের ফটক ভেঙে হাজারো শিক্ষার্থী বেরিয়ে যান।

কবি সুফিয়া কামাল হলের ভেতরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা ইফফাতের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা রহমানের মুঠোফোনটি এ সময় বন্ধ পাওয়া যায়।

আন্দোলন থামাতে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী হলে প্রবেশ করেন। ইফফাতকে হল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করে পেছন দিয়ে বের করে দেন। পরে তিনি বের হওয়ার পথে ছাত্রদের তোপের মুখে পড়েন।

ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইফফাতকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

তারপরও বিক্ষোভ না থামায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ইফফাতকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।

বিক্ষুব্ধ ছাত্রীদের অভিযোগ ছিল, ছাত্রলীগের হল শাখা সভাপতি আগেও সাধারণ ছাত্রীদের নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে মারধর করতেন। তবে এত দিন ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি।

ছাত্রী নির্যাতনের বিষয়ে জানতে ইফফাতের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী কাউকে বকা দিয়েছিলেন ইফফাত। ওই ছাত্রী নিজেই কাচে লাথি মেরে পা কেটে ফেলেন। এটাকে ইস্যু করে অনেকে গুজব ছড়িয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

ইফফাতকে বহিষ্কারের খবর পেয়ে ভোররাত সোয়া চারটার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ বুধবার সকাল ১০টায় আন্দোলনকারীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হওয়ার কথা।

  •  Courtesy: Prothom Alo/Apr 11, 2018

SCBA demands judicial probe into attack on quota reform demonstrators



The Supreme Court Bar Association (SCBA) today demanded the formation of a judicial committee headed by a Supreme Court judge to investigate the attack on the students and job seekers waging movement for quota reforms in public service recruitment.

The association also demanded arrest and punishment of the people who were involved in the attack and torture on the demonstrators at the Dhaka University (DU) campus.

“We strongly condemned and protested the incident of attack and repression,” SCBA President Advocate Zainul Abedin said at a press conference at its auditorium.

“We feel that ongoing movement of the students and job seekers for quota reforms in public service recruitment is reasonable. There is no alternative to the talents for building the country in a true sense,” he said.

The SCBA president added that the law enforcers charged batons, tear shells and spread bullets on the people who enforced the peaceful movement on demand of reformation of quota on Sunday.

He urged the government to release the protesters who have been arrested during the movement at Shahbagh in the city.

SCBA Secretary Barrister AM Mahbub Uddin Khokon also spoke at the press conference.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 10, 2018

ACC arrests ex-audit committee chair, 3 others

FARMERS BANK SCAM


The Anti-Corruption Commission on Tuesday arrested former Farmers Bank audit committee chairman Mahabubul Haque Chisty, his son Rashedul Haque Chisty and the Bank’s senior vice-president Zia Uddin Ahmed and first vice-president Muhammad Masudur Rahman Khan in connection with embezzlement of Tk 160 crore.

Dhaka metropolitan magistrate Golam Nabi later remanded the four in the commission custody for five days for interrogation in a case the commission filed with Gulshan police station on Tuesday for embezzlement of about Tk 160 crore.
Mahabubul’s wife Ruzi Chisty, the bank’s senior vice-president Delower Hossain and the four were named in the case for their alleged involvement in the embezzlement.

Commission’s public relations officer Pranab Kumar Bhatacharjee told reporters that a commission tem led deputy director M Samsul Alam was trying to arrest the rest two accused.

Earlier on April 3, the commission imposed a ban on travel of 17 people –Rashed’s wife Farhana Ahmed, daughter Rimi Chisty, the bank’s former managing director and chief executive officer AKM Shameem, deputy managing director Abdul Motaleb Patwari, senior executive vice-president Gazi Salauddin, executive vice-president Mohammad Jahangir Alam Majumdar, executive officers Lutful Haque, M Monirul Haque, Md Tafazzal Hossain, Mohammad Shamsul Hassan Bhuiyan, Mahbub Ahmed, and Md Zakir Hossain and the six named in the case.

Pranab said that the commission initiated the inquiry in July 2017. On April 2, scam-hit Farmers Bank former chairman Muhiuddin Khan Alamgir, also ruling Awami League lawmaker, urged the speaker to issue a ruling asking the Bangladesh Bank governor not to give information to reporters about disbursement of loans by private commercial banks.

On a point of order in the parliament session, Muhiuddin claimed that reports published in the media on the basis of central bank information over the loan irregularities against him were baseless.

He said that appropriate measures should be taken so that the central bank could not reveal private commercial bank’s loan distribution information that, according him, helped newspapers to publish ‘imaginary reports’. 

He noted that none could provide private bank’s information to media as per the Bangladesh Bank Order.

On November 27, 2017, Muhiuddin resigned as the Farmers Bank chairman as the central bank asked him to quit because of severe liquidity crisis caused by unbridled corruption and misappropriation of funds. 

The new generation Farmers Bank, awarded licence in 2013 on political consideration, sought a Tk 1,100 crore fund in February 2018 in bailout to overcome the liquidity crisis due to aggressive banking, loan irregularities, gross mismanagement and undue interference by the previous board of directors.

The government has planned to inject Tk 715 crore into the scam-hit Farmers Bank despite criticism that the proposed bailout fund would set a bad precedence in the banking history.

In a recent statement, Transparency International Bangladesh vehemently opposed the government move for injecting fund into Farmers Bank. In the statement, TIB executive director Iftekharzzman demanded punishment of the corrupt officials of the banks and its directors. 

It also demanded that share of the corrupt directors should be confiscated by the government and sold to arrange bailout fund.

Finance minister AMA Muhith on Tuesday said that he would not let Farmers Bank go bankrupt even though the operators of the bank were most wicked.

The present government wanted to recover the bank from its liquidity crisis, he said during a dividend handover ceremony by state-owned Investment Corporation of Bangladesh at the ministry.

He said that he wanted to prove advanced remarks by many lawmakers that failure of the government caused downfall of a bank in parliament wrong.

  • Courtesy: New Age /Apr 11, 2018 

Matia draws flak for comment



Participants of the quota reform movement yesterday (Tuesday) reacted to Agricultural Minister Matia Chowdhury's remarks over the movement in parliament on Monday.

Her comments triggered a barrage of criticism and condemnation on social media.

Matia Chowdhury, also a presidium member of the ruling Awami League, in an unscheduled discussion at parliament on Monday, said “Will the children and successors of those who risked their lives to fight for independence not get an opportunity? Will the children of Razakars get the chance?

Will the quota for the freedom fighters be shrunk for them?”   

A faction of the quota reform movement of Dhaka University demanded an apology from the minister for her remarks.

“We are the children of Bangabandhu not Rajakars and we have no faith in the government that gives assurances and then labels us Rajakars,” Syed Zobaer Uddin, a representative of the protesters, also a master's student of Dhaka University, said in front of the Raju Sculpture.

Demonstrators burned effigies of Matia Chowdhury in front of Raju Scuplture at around 8:00pm.

Besides, students of Jahangirnagar University (JU) threatened to declare Matia Chowdhury persona non-grata on the campus if she did not apologise for her comments.

She would have to apologise in three days, Khan Muntasir Arman, JU unit convener of quota reform committee, announced while addressing a rally in front of the central library.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 11, 2018

Job Quota Reform: Long call falls on deaf ears

Inam Ahmed and Shakhawat Liton


The call for reforming the quota system for government jobs was voiced just a year after it was introduced in 1972 and since then, several public service reform committees and the Public Service Commission itself, the body that oversees government recruitment, have objected to the policy.

However, documents show subsequent governments paid no heed to the suggestions for making room for more efficient people in bureaucracy by reforming the quota structure, leading to today's anger among the youths in the midst of a slowing job market.

All these recommendations had strong arguments evidenced by statistics that while some positive discrimination is required for the disadvantaged groups, other provisions simply discourage meritocracy.

When Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman introduced quota in September 1972, the reality was quite different with a country ravaged by war and suffering from long deprivation and extreme poverty. The Pakistani rule had discriminated against the Bangalees, and the districts other than Dhaka even more suffered from a lack of education and opportunities.

So, Bangabandhu had introduced a quota system that allocated 40 percent of the jobs to districts, 30 percent to freedom fighters who had lost nine months of their educational life fighting for the country, and 10 percent for the war-affected women. The rest 20 percent were to be appointed on merit.

In 1972, two high-powered reform bodies were assigned to make suggestions for the civil bureaucracy. It recommended next year several measures for selection process based on merit and long-term career planning.

In 1976, the Pay and Service Commission was formed and that also recommended merit-based recruitment. Meanwhile, the government increased merit quota to 40 percent from 20 percent and district quota was halved to 20 percent.

Talking to this newspaper recently, former caretaker govt adviser Akbar Ali Khan said that in 1977, almost all members of the then Pay and Service Commission expressed their opposition to enforcing any type of quota for recruiting government officers.

From 1982 to 1984, two major reform bodies were appointed -- one a martial law committee and the other a civilian one.

Later in 1985, during the martial law rule of HM Ershad, the quota for the war-affected women was discontinued as no job seekers were found and this quota was given for women candidates as a major step to promote women empowerment. Ershad, for the first time, also introduced a 5 percent quota for the ethnic minorities.  

In December 1996, after the Awami League government came to power, the Public Administration Reform Commission was set up as the first major attempt to modernise the bureaucracy.

The commission observed that the quota system on the face of it is unconstitutional and proposed a constitutionally supportive recruitment policy is followed.

The commission had recommended an increase in the merit quota to 55 percent from 45 percent.

The quota for freedom fighters was a problem area from the beginning because the required number of candidates was not found as an analysis of this category from 1982 to 1990 shows.

In 1982, seven percent of the quota was fulfilled against 30 percent allocation. This dipped continuously except in 1984 and in 1990 only one percent was fulfilled.

The posts against the unfulfilled quota remain vacant and the commission fulfils the empty posts with candidates from the next examination. In the context of such unfulfilled posts, the PSC recommended an increase in merit and women quotas.

“This request continued since 1987, but for ten years the government remains silent on the issue,” AMM Shawkat Ali, a former bureaucrat and adviser to a caretaker government, wrote in his book “Bangladesh Civil Service: a political-administrative perspective”. 

“During this period of ten years, committees constituted by the government and other studies sponsored by the government also recommended reduction of quota for freedom fighters.”

However, instead of reforming this quota, the government in 1997 extended the freedom fighters' quota to include their descendants, making things even more complicated.

Another big drawback of the current quota system is that it leads to misuse of the system, defeating the purpose of helping those from backward communities.

Experts say those who already enjoyed quota privileges should not be eligible for that again. Their descendants also should not have it either, because a person who benefitted from this system should already have established his or her family and children.

Former PSC chairman Sadat Hossain says, “The quota is a special provision for under-privileged populations, and it's an exception. It can't be more than the merit provision.”

As the PSC chair, Sadat had initiated a reform move, and also former cabinet secretary Akbar Ali Khan and former chief election commissioner Kazi Rakibuddin Ahmed carried out a study in March 2008.

They found out existence of 257 types of quotas for all government jobs and recommended a reduction in the quota to 20 percent.

But nothing has been done to do away with the anomalies and to modernise the quota system.

  • Courtesy: The Daily Star /Apr 11, 2018

Tuesday, April 10, 2018

রাতটা বিভীষিকার ছিল, কিন্তু গর্বেরও ছিল! -— তাসনিম হালিম মিম

তাসনিম হালিম মিম


প্রথমেই জানিয়ে দেই, সরকারি চাকরি নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র কনসার্নড না। হবো আইনজীবী। তাই কোটা সংস্কার নিয়ে আমার ব্যক্তিগত প্যারা ছিল না। তবুও গতকাল রাত ১১:৩০-১২ টার মধ্যে যখন আমাদের হলের গেট ভেঙে বের হওয়ার জন্য নিচে আহ্বান জানালো, তখন দ্বিতীয়বার ভাবিনি। কারণ ছিল একটাই। কিছু প্রশ্নের উত্তর দাবি করা। ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন ঢুকেছে? সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সামনে গুলি চালানোর সাহস কোত্থেকে আসে? আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনেরা যখন শান্তিপূর্ণ ছিল, তখন তাদের উপর টিয়ারশেল মারা হলো কেন?

চাকরিতে কোটা নিয়ে প্যারা থাক বা না থাক, উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্য প্যারা নেওয়া ছাড়া উপায় নাই।

পরের ঘটনায় আসি।

নিচে যখন কলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হচ্ছিল, আমাদের হলের ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট আপু ছাত্রীদের সামনে গিয়ে তাকে কিছু কথা বলতে দেওয়ার অনুরোধ করলো। কিন্তু কেউ তাকে সেই সুযোগ দিল না। কারণ পলিটিক্যাল মেয়েদের কাছ থেকে আমরা আগেই জানতে পেরেছি, ছাত্রলীগ প্রেসিডেন্ট হল থেকে মেয়েদের বের হয়ে আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষপাতী নয়। তাই ধরেই নিয়ে ছিলাম, প্রেসিডেন্ট এর কথা মেনে কোনো পলিটিক্যালভাবে সিট পাওয়া মেয়ে আজ রাতে হল থেকে বের হচ্ছে না। হতভম্ব হয়ে গেলাম তালা ভাঙার পর। সবার আগে বের হয়েছে পলিটিক্যাল মেয়েরাই, নেতার কথার ধার ধারে কে, যদি মনের ভেতর থেকে উলটো দিকের ডাক আসে?

পাশাপাশি দুটো হলের মেয়েরা যখন বিশাল মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকলো, তখন গার্ড অফ অনার দেওয়ার মতো করে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে আমাদের ভাই, সহপাঠীরা দাঁড়িয়ে ছিল। তারা তালি দিয়ে আমাদের অভিনন্দন জানাচ্ছিল। ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের চেহারা দেখে আমার আরো অবাক হওয়ার পালা। আমার ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্রলীগ করা অধিকাংশ সহপাঠী ও বড় ভাই, আরো অনেক ছাত্রলীগের চেনা বড় ভাই, তারা সবাই দেখি আন্দোলনে। খুব আনন্দ লাগলো এই ভেবে যে, যাক, এবার ছাত্রলীগ বিরোধিতা করবে না, হামলা তো না বটেই।

হাহ! আফসোস…। রাত আনুমানিক ২ টার দিকে আমরা সব মেয়ে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্ত্বরে বসে স্লোগান দিচ্ছিলাম। ছেলেরা আমাদের ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল, বোঝা যাচ্ছিল, তারা খারাপ কিছুর জন্য প্রিপেয়ার্ড। সেই খারাপ কিছুটা কী, সেটা একটু পরেই বুঝতে পারলাম। রোকেয়া হলের সামনে গণ্ডগোলের বাতাস পাওয়া যাচ্ছিল। দেখলাম সেখানে ছাত্রলীগ কর্মী জড়ো করছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। দারুণ অবাক হলাম! আজ তো আর তাদের পক্ষে কর্মী পাওয়া যাওয়ার কথা না। মোটামুটি সবাই আন্দোলনে।

তবে?

কী জানলাম ও দেখলাম, জানেন? নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীর অভাবে ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজের কর্মী নিয়ে এসেছে, সাথে আরো ভাড়া করা বাইরের পোলাপাইন।

আমাদের ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের, বহিরাগত ছাত্রলীগ দিয়ে ধাওয়া করিয়ে টিএসসিতে ঢোকানো হলো। যারা ধাওয়া করেছিল, তাদের হাতে রামদা, রড, ইট ছিল। বৃষ্টির মতো ইট পড়ছিল আমাদের গায়ে। হুড়োহুড়ি করে টিএসসিতে ঢোকার সময় ৭-৮ জন মেয়ে পড়ে যায়। পদপিষ্ট হয়ে তাদের যে কী অবস্থা হয়, তা না বললেও বুঝতে পারার কথা। এরা যে বেঁচে ফিরলো কী করে, সেটা ভেবেই আমি আশ্চর্য হয়ে যাই। তবে সবাই এতোটা লাকি না। আমার হলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বড় আপু, যার সাথে সম্পর্ক আপন বড় বোনের চেয়ে কম নিবিড় না, তার হাত ভেঙে যায় ইট লেগে। বান্ধবীর রুমের আরেক বড় আপুর মাথা ফেটে যায়। কীভাবে জানেন? তার জুনিয়র ভাইদের রড দিয়ে ওরা মারতে এসেছিল, ভাইদের আড়াল করতে গিয়ে। একটা মেয়েকে দেখে ওরা রড না মেরে ইট মারলো। আপুর মাথায় ষোলটা সেলাই পড়েছে।

এরপর আরেক সার্কাস শুরু হলো। বাইরে থেকে টিয়ারশেলের গন্ধ আসছিল টিএসসিতে। সবাই নাকে কাপড় চেপে আগুন ঘিরে বসে আম্বুলেন্সের জন্য ওয়েট করছিল, আহতদের হাসপাতালে নিতে হবে। সেই এম্বুলেন্স আর আসেই না, ঢামেক থেকে বলা হয়, “এই ঝামেলার মধ্যে সময় লাগছে ইত্যাদি ইত্যাদি”। এম্বুলেন্স শেষ পর্যন্ত এসেছিল আমাদের ‘মহামান্য’ প্রক্টর সাহেব টিএসসিতে আসার পর।

প্রক্টর এসেই বললেন, “দেখ, আমি লাইফ রিস্ক নিয়ে এসেছি!” জী স্যার! উদ্ধার করেছেন। যেখানে আমরা পুষ্পরাজির মধ্যে আরাম করছিলাম, সেখানে আপনি লাইফ রিস্ক নিয়ে এসেছেন, আমরা ধন্য।

ভিসির আলমারির ভাঙা ছবি দিয়ে যারা মায়াকান্না করছেন, তাদের কাছে প্রশ্ন, ভিসিকে একটা বিশাল বাসভবন দিয়ে ক্যাম্পাসে কেন রাখা হয়? উত্তর যদি হয়, ‘ছাত্রদের জন্য’– তাহলে কীভাবে তিনি শান্তিপূর্ণ ছাত্রদের উপর হামলা করার জন্য পুলিশকে ক্যাম্পাসে আসার অনুমতি দেন!!!!

ছাত্ররা পুলিশের জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, পুলিশ ফুলের উপর মুতে দিয়ে ছাত্রদের থেকে রক্ত নিল। যাদের ভিসির বাড়ির আলমারি বা ফ্রিজের খাবারের জন্য বুক ফেটে যাচ্ছে, তাদের কাছে প্রশ্ন, ঢাবি’র একজন শিক্ষার্থীর চোখ, শত শত শিক্ষার্থীর রক্তের চেয়েও কি ওই আলমারির মূল্য বেশি?

একজন ছাত্র মৃতপ্রায় হওয়ার পর ছাত্ররা ক্ষেপে গেলে, আপনারা তাদের জামাত-শিবির বলেন, বহিরাগত বলেন। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেই এই ছাত্ররাই যখন শান্ত ছিল, আর তাদের শান্তিকে মিডল ফিঙ্গার দেখিয়ে পেটোয়া বাহিনী যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন কোথায় ছিলেন আপনারা? আর আপনাদের অসহিংসতা? আপনাদের মনুষ্যত্বহীন রাজকীয় চামচামোকে লাল-নীল-সবুজ-হলুদ-বেগুনী রঙের সালাম দিলাম।

রাতটা বিভীষিকার ছিল। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমাদের সবার মনের মধ্যে একটা প্রচণ্ড সাহস কাজ করছিল। কারণ আমাদের সবার জন্য আমরা সবাই ছিলাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাবতাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মরে গেছে, সবার মেরুদণ্ড প্লাস্টিকের হয়ে গেছে। সেই আমি যখন ব্লকের রান্নাঘরে মাথায় ওড়না দিয়ে চাল ধুতে আসা অসম্ভব নিরীহ মেয়েটাকে নিজের পাশে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিতে দেখি, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’– তখন গর্ব হয়। নিজের চিন্তা ভুল প্রমাণিত হওয়ার এতো যে আনন্দ, তা কে জানতো!!!

  • কার্টেসি - womenchapter.com