Search

Thursday, May 3, 2018

বেপরোয়া ব্যাংকিং ও খেলাপি ঋণের খাদ

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর হালচাল নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অর্থমন্ত্রী পরিস্থিতি গুরুতর নয় বলে দাবি করছেন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ এবং পরিচালনা পর্ষদে পরিবারতন্ত্রকে অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন প্রথম সারির অর্থনীতিবিদেরা।


রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর অবস্থা হয়েছে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! বছরের শুরুতে ব্যাংকিং খাত পড়েছে তারল্যসংকট ও সুদের হারের বৃদ্ধির দশায়। ইতিমধ্যে এ খাত খেলাপি ঋণের ভারে নুয়ে পড়া এবং অনিয়ম ও বিচারহীনতায় নিমজ্জিত, লাগামহীন লোপাটে তলায়মান। এ অবস্থায় যেখানে ব্যাংকগুলোকে শৃঙ্খলায় আনা দরকার ছিল, সেখানে ব্যাংকের মালিকদের চাপের মুখে আরও ছাড় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ছাড়ের তালিকায় রয়েছে: ১. ব্যাংকগুলোর নগদ জমা সংরক্ষণ বা ক্যাশ রিজার্ভ রেসিও (সিআরআর) সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ করা, ২. সরকারি আমানতের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বেসরকারি খাতের ব্যাংকে প্রদান, ৩. ঋণ আমানত অনুপাতের সীমা (এডিআর) সমন্বয়ের সময় ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো এবং ৪. বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রদত্ত সুদহার ৬ দশমিক ৭৫ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশ করা। 

উল্লেখ্য, ব্যাংকগুলোর আমানতের সাড়ে ৬ শতাংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা রাখার বিধান বলবৎ ছিল। সরকারি আমানতের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার প্রবিধান ছিল। সরকারি আমানতের সংরক্ষণ ছাড়া অন্য সব সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নেওয়ার কথা। এসব সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ তাই যথেষ্ট যুক্তিসংগত।

ব্যাংকব্যবস্থা নিয়ে ইদানীং যে আলোচনা হচ্ছে, তা বাংলাদেশের অর্থনীতির সঙ্গে যেমন যুক্ত, একই সঙ্গে জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও জবাবদিহির সঙ্গেও জড়িত। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে টেকসই ও মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকেও টেকসই ও শক্তিশালী করা জরুরি। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপ আসলে কতটুকু ব্যাংকব্যবস্থার সত্যিকার পরিবর্তনের জন্য এবং কতটুকু নিছকই গোষ্ঠীস্বার্থের জন্য, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এসব প্রশ্নের উত্তর মিললে সংকট নিরসনের পন্থাও বাতলানো সহজতর হতে পারে।

খেলাপি ঋণের বাড়বাড়ন্ত

খেলাপি ঋণসংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা বা বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। এরপর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে মোট ঋণের পরিমাণ ৭ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা বা মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশ। অর্থাৎ বাড়ার অনুপাত ৬ থেকে ১১ শতাংশে। এর সঙ্গে অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা (জুন, ২০১৭ পর্যন্ত)। 

বাংলাদেশ ব্যাংক জানাচ্ছে, অবলোপন করা ঋণের পরিমাণও ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঙ্ক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপির প্রায় ১৩ শতাংশ। নিয়ম যে ছিল না তা নয়। ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও তাঁদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ৫০ হাজার টাকার ওপরে ঋণ অবলোপনের আগে আদালতে মামলা করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু কাজির গরু কেতাবেই রয়ে যাচ্ছে!

মোট ঋণের তুলনায় খেলাপি ঋণের পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। পার্শ্ববর্তী ভারতের জিডিপির পরিমাণ ২ দশমিক শূন্য ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)। আর তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৫৪ বিলিয়ন ডলার (১৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার)। অর্থাৎ ভারতের জিডিপির ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ খেলাপি ঋণ।

মূলধন জোগানোর ধাক্কা

খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকায় সরকারি ব্যাংকগুলো মূলধন-ঘাটতিতে পড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে সরকারি-বেসরকারি মোট নয়টি ব্যাংকের মূলধন-ঘাটতির পরিমাণ ১৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। তাই পুনঃ মূলধনের নামে এ ব্যাংকগুলোকে ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট ১৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা জোগান দিতে হয়েছে, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ করা এডিপির ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ করের টাকা দিয়ে বিসমিল্লাহ, হল-মার্ক, এননটেক্সসহ অন্যান্য ব্যাংক লুটকারীর ভরণপোষণ করা হচ্ছে। বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছেন। লুটকারীদের যাঁদের জেলে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের আয়েশি জীবনের চিত্র পত্রিকান্তরে দেখা যাচ্ছে। বিচারহীনতা এর চেয়ে বড় কী দৃষ্টান্ত হতে পারে। সেলুকাস আর কী করবে!

কুখ্যাত সেই ১০০ জনের কী হলো? 

কয়েক মাস আগে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দেশের ১০০টি খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেন, কিন্তু তাতে সর্বজনবিদিত তারকা খেলাপিদের নাম নেই। যাঁদের নাম থাকা উচিত ছিল, তাঁদের প্রায় সবাই পুনঃ তফসিলীকরণের আড়ালে কিংবা উচ্চ আদালতের আশ্রয়ে থাকায় আইনি বাধ্যবাধকতায় তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। আগে সাধারণত খেলাপি হলে শুধু ঋণ পুনঃ তফসিল করার সুযোগ ছিল। কিন্তু বর্তমানে ‘ঋণ পুনর্গঠন’ নামে অনেক বেশি সুবিধা ও সুযোগ দেওয়া হয়েছে। 

২০১৫ সালে বড় ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বড় অঙ্কের ঋণ পুনর্গঠনের নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে। এ পক্ষপাতমূলক সুবিধার আওতায় ৫০০ কোটি টাকা বা তার বেশি অঙ্কের ঋণেরই শুধু পুনর্গঠন করা যাবে। অর্থাৎ নিয়ম পালনকারী বৈষম্যের স্বীকার হবেন। অন্যদিকে, খেলাপির অনন্ত সুযোগ-সুবিধা! নীতিমালা অনুসারে মেয়াদি ঋণ পুনর্গঠন সর্বোচ্চ ১২ বছরের জন্য। আর তলবি ও চলমান ঋণ পুনর্গঠন হবে ছয় বছরের জন্য। ঋণের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকার কম হলে ডাউন পেমেন্ট বা এককালীন জমা দিতে হবে ২ শতাংশ হারে। আর এক হাজার কোটি টাকা ও তার বেশি পরিমাণ ঋণের জন্য এককালীন জমা দিতে হবে ১ শতাংশ হারে। পরিসংখ্যান বলছে, পুনর্গঠন-সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীদের বড় অংশই কিস্তি পরিশোধ করছেন না। ইতিমধ্যেই পুনর্গঠন-সুবিধা পাওয়া অর্ধেকই নতুন করে খেলাপি হয়েছে। ফলে এ সুযোগের কারণে দেখা যাচ্ছে, ব্যাংক থেকে দেওয়া ঋণের বিপুলাংশ খেলাপিতে পরিণত হচ্ছে।

নতুন প্রজন্মের ব্যক্তি মালিকানাধীন ফারমার্স ব্যাংক ঋণ বিতরণে অনিয়ম, জালিয়াতি ও লুটপাটে অতীতের যেকোনো ব্যাংক কেলেঙ্কারি-অনিয়মকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৩ সালের জুনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে এরই মধ্যে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৭৭ কোটি টাকা। রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত নতুন ব্যাংকগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। ওগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে। পত্রিকান্তরে পরিচালনা পর্ষদের নয়-ছয়ের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ঋণ আমানত অনুপাতের গ্রহণযোগ্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে ১০ ব্যাংকের। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বেপরোয়া ব্যাংকিংর ফলে আমানতের ৮৫ ভাগেরও বেশি ঋণ দিয়েছে। এতে গোটা ব্যাংক খাতে হঠাৎ করেই বেড়েছে তারল্য চাহিদা। বাড়তে শুরু করেছে ঋণের সুদ হার। এমন বেপরোয়া ব্যাংকিং ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরও আগেই সচেতন হওয়া উচিত ছিল।

  • ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর: অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Courtesy: Prothom Alo/ May 03, 2018

বন্দী বেগম জিয়াকে এতো ভয় কেন — আসিফ নজরুল



(বিএনপি কমিউনিকেশন) — সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে কিছু ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। 

তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু মানুষ এসব ভুয়া ভিডিও শেয়ার করছেন বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। 

সোমবার সকালে আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেইজে দেয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো — 

কারো নামে মিথ্যে এবং বিকৃত সংবাদ পরিবেশনার একটাই মানে আছে। তা হচ্ছে বিকৃত সংবাদ পরিবেশনকারীরা ভয় পায় তাকে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুরোনো ভিডিও থেকে জালিয়াতি করে, নানা জায়গা থেকে বাক্য বা শব্দ জুড়ে দিয়ে তাঁর বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। সব জেনে বুঝে এগুলো শেয়ার করছে কিছু তথাকথিত প্রগতিশীল মানুষ। খালেদা জিয়া এখন জেলে বন্দী, বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ। তবু তাকে এতো ভয় কেন? তার সাথে শুদ্ধভাবে লড়া যাবে না বলে? তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি বলে?

কুৎসিত শাজাহান কী করে মন্ত্রী থাকেন?




সড়কে মৃত্যুর মিছিলের বিপরীতে বাস-ট্রাক চালক-শ্রমিকদের যথোপযুক্ত শাস্তির বিপরীতে অবস্থান নেওয়ায় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আরণ্যক নাট্যদলের মে দিবসের আয়োজনে যোগ দিয়ে কামাল লোহানীর কণ্ঠে এই ক্ষোভ প্রকাশ পায়।

আরণ্যকের মে দিবসের আলোচনঙসভায় যোগ দিয়ে কামাল লোহানী বলেন, “সড়কে চালকদের যোগ্যতা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, যখন মানুষ মারার অপরাধে তাদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি উঠে, তখন তার বিপরীতে অবস্থান নেন মন্ত্রী শাজাহান খান। তিনি বলছেন, চালকদের কুকুর –বেড়াল চিনলেই হবে। এই কুৎসিত লোকটি কী করে মন্ত্রী হয়?

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী রাজনৈতিক শামীম ওসমানের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, “বাসচালক –শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে তিনি এখন সেই টাকার বলে মানুষ কিনে নিচ্ছেন।”

এসময় তিনি জানান, দেশের ‘বহুল প্রচারিত’ একটি পত্রিকায় শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে লেখা পাঠালেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে এসেছে তার কাছে। কামাল লোহানী বলেন, “৬২ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে দেখলাম না কোনোদিন লেখা ফিরে এসেছে। লেখা হয় ছাপা হবে, না হলে তা ডাস্টবিনে নিক্ষিপ্ত হবে। কোনোদিন ফিরে আসেনি লেখা। আমি সেই বহুল প্রচারিত দৈনিকের এক জনকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, ‘এ নিয়ে আর জিজ্ঞাসা করবেন না’। অর্থের জোর বড় সাংঘাতিক!”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় সরকার মুক্তবাক, মুক্তকণ্ঠ রোধ করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এসময় তিনি আইনমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনাও করেন।

মে দিবসের আলোচনায় যোগ দিয়ে কামাল লোহানী বলেন, শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্বের পুরোভাগে থাকা ‘বিরাট হৃদয় অগ্নিগর্ভ’ চোখগুলো বন্ধ হয়ে আসছে। পরে তিনি শিশু শ্রমের বিরুদ্ধেও সবাইকে সোচ্চার হতে বলেন।

আরণ্যকের দল প্রধান নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদও কামাল লোহানীর মতো নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সমালোচনায় মেতে উঠেন। সড়কে দুর্ঘটনা, ধর্ষণের বিপরীতে দায়ী বাস চালক ও শ্রমিকদের পক্ষ নেওয়ায় তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার দাবিও জানান তিনি।

মামুনুর রশীদ বলেন, “বাংলাদেশের ২ শতাংশ মানুষ ৯৮ শতাংশ রাষ্ট্রীয় সম্পদের মালিক বনে গেছে। উল্টোদিকে বাঙালির মধ্যে এখনও কর্মসংস্কৃতি আসেনি। বাঙালি সেই অলস আর কুঁড়েই থেকে গেছে।”

চলতি সময়ে শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা ক্ষমতাসীনের স্তব-স্তুতিতে মুখর থাকার অভিযোগ আনেন নাট্যব্যক্তিত্ব মান্নান হীরা।

তিনি বলেন, “এদেশের যে শ্রমিক শ্রেণি রয়েছে তারা এখন মৃতপ্রায়। শ্রমিক শ্রেণির কণ্ঠে এখন অধিকার আন্দোলনের বিপরীতে শোনা যায় সরকারি প্রচারণা। আন্দোলনের ধ্বনির চেয়ে তাদের কণ্ঠে শোনা যায় শোষকের জয়গান। ট্রেড ইউনিয়নের ম্যানেজমেন্ট এখন শোষকের সঙ্গে আপস করে শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখেছে।”

শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে সংস্কৃতিকর্মীদের সমন্বয়ের পরামর্শ দেন মান্নান হীরা।

Hasina isn’t worthy of receiving Global Women's Leadership Award — Senator Lee Rhiannon



Why is the Bangladeshi Prime Minister Sheikh Hasina is  getting the Global Women’s Leadership Award who  has agreed to lowering the age girls for marriege? Asked  Lee Rhiannon, Green  Senator  for New  South Wales, Australia.

It is surprising  to see that the Foreign Minister of Australia hosting  a Prime Minister from a country also committed to the cause of women like the former who has made a breach of the cause by agreeing to marriage of girls under 18 in her country. Bangladesh has the highest rate of child marriage in the world.

A 2012 UNICEF Report noted that two out of three marriages in Bangladesh involve child marriages. 

PM Hasina undermined  the initiative  by agreeing to a law that permits girls under age 18 to allow marriages  under “special circumstances”. Human Rights Watch reports that there is no age limit on the marriage of girls under this exception.  

RAB confesses kidnapping, killing  of people and disposing bodies


In April 2017, Swedish Radio reported on a secretly recorded interview with a senior officer in the Rapid Action Battalion (RAB), a counterterror unit of police and military, who admitted that the force routinely picks up people, kills them and disposes of the bodies.


—   Lee is an Australian Greens Senator for NSW. Lee is the Greens spokesperson for housing, industry, gun control, animal welfare, democracy and local government.

Courtesy — https://www.facebook.com/lee.rhiannon/

Why Dictators Love Development Statistics


They're an easily faked way to score international points.

By ALEX GLADSTEIN/newrepublic.com/ April 26, 2018


Exchanges at the Organization of American States usually don’t do well on YouTube. But when the Honduran Minister of Foreign Affairs brought up Venezuela’s crackdown on dissent last summer, Venezuelan representative Delcy Rodríguez scored surprise points with a rebuttal citing the United Nations’ 2016 Human Development Index, which ranks Venezuela 59 spots higher than Honduras. Crackdown or no crackdown, “Venezuela does not demonstrate such terrifying statistics,” she said, in an exchange that soon went viral on Spanish-speaking social media. It was a win for the Maduro regime, and the key to victory was trusted U.N. data.

For those of us working to advance human rights, such episodes are becoming frustratingly familiar. From the development initiatives of Jeffrey Sachs and Bill Gates, to Tony Blair’s despotic partnerships or Tom Friedman championing Chinese autocracy in The New York Times, the last two decades have seen political concerns repeatedly sidelined by development statistics. The classic defense of dictatorship is that without the messy constraints of free elections, free press, and free protests, autocrats can quickly tear down old cities to build efficient new ones, dam rivers to provide electricity, and lift millions out of poverty.

The problem with using statistics to sing the praises of autocracy is that collecting verifiable data inside closed societies is nearly impossible. From Ethiopia to Kazakhstan, the data that “proves” that an authoritarian regime is doing good is often produced by that very same regime.

A handful of organizations power the global industry of statistics collection, including the World Bank, the United Nations, and the World Economic Forum. Each of these organizations conduct large-scale socio-economic surveys, where researchers want to include as many countries as possible. However, many of these countries—93 of them, comprising nearly 4 billion people, according to the Human Rights Foundation—are ruled by authoritarian regimes that typically block impartial investigators from entering their borders. Often, data collectors are forced to work with the strongmen in charge.

For Bahrain, the World Economic Forum receives most of its data from surveys given to government officials at the Bahrain Economic Development Board, who conduct them and give the results back to Geneva. In WEF’s analysis from that point, outliers may be cast out or excluded with data modeling, but the foundational numbers remain entirely a creation of the dictatorship.

UNESCO representatives say that in the case of Cuba, they use the regime’s education numbers in compiling their reports. There is no on-the-ground verification for these often-encouraging figures. Meanwhile, a former treasury official from Uzbekistan said that visits from international data collectors were highly choreographed, and that the regime was easily able to control survey outcomes.

When surveys don’t go according to plan, dictators can simply shut polling down. Gallup World Poll director Jon Clifton, when I called him up as part of a Human Rights Foundation interview several years ago, recalled a time when the company’s researchers had collected data in one African country, only to have their equipment seized at the airport on the way out.

Still, no one wants blank countries on their world maps. “Ultimately, organizations need to produce some kind of data,” Clifton said. “Even if it’s not terribly good, they still need data.”

But the development reports using such numbers also wind up giving them institutional legitimacy, in ways that can affect huge decisions in aid and trade. World Bank data in particular, as one 2012 study observed, is promoted in media outlets as a reputable guide for global investment, and has inspired reforms as countries seek to climb the rankings. UNESCO’s numbers go into the World Development Report (World Bank) and the Human Development Index (UNDP), where they serve, in UNESCO’s own words, to “benchmark progress towards national and international targets.” The educational components of the Sustainable Development Goals—which guide and inspire do-gooders and impact investors across the planet—are measured with UNESCO data. Statistics flow directly from many dictatorial governments to UNESCO and then into the SDG reports.

Once regime-produced data makes it into the world’s most trusted indexes, authoritarians and their unintentional supporters use these numbers in their propaganda, which hampers efforts to promote human rights.

When Ethiopian prime minister Meles Zenawi died in 2012, Bill Gates led a chorus of Western praise for his development efforts, praising Zenawi for bringing millions out of poverty and ignoring his near-total censorship or his massacre of hundreds of protestors. The Economist and the The New York Review of Books have since pointed out that the Ethiopian regime fabricates development statistics.

Halfway across the globe in Venezuela, the late Hugo Chávez built a global reputation as the people’s president, proudly flaunting statistics showing his administration had reduced poverty by 50 percent. In 2014, Chavismo heir Nicolás Maduro justified his crackdown on dissent—torturing and kidnapping student protesters—in a New York Times op-ed citing data showing that his regime “consistently reduced inequality,” “reduced poverty enormously,” and “improved citizens’ lives over all.” The source of that data? The U.N. Economic Commission for Latin America and the Caribbean, which used Millennium Development Goal data—which came directly from the regime’s own statisticians.

In Azerbaijan, Ilham Aliyev’s dictatorship has used economic growth data to convince the world that it is a thriving, effective government with a robust investment climate. The World Economic Forum, among others, gave the Azeri regime a platform to talk about its financial success—which is used to whitewash crimes ranging from the jailing of dissidents to the theft of billions.

Rwandan dictator Paul Kagame’s human rights violations are legion: the assassination of critical journalists, sponsorship of death squads in the Congolese jungle, the use of international hitmen, and the jailing of political opponents. Despite all this, supporters ranging from Bill Clinton to Jeffrey Sachs breathlessly praise his leadership and economic success. When Kagame “won” 99 percent of the presidential vote a few months ago, the international community was quick to call that political data into question. But Rwanda’s literacy rates, life expectancy, and economic growth numbers continue to be taken at face value.

This near-universal lack of skepticism is hard to explain, especially since the problem isn’t new. In 1987, two Soviet economists published an article called Lukavaya Tsifra(“cunning numbers”) which demonstrated that between 1928 and 1985, the USSR’s GDP had grown over ten times slower than reported by the regime’s Central Statistical Administration. They showed that the regime’s “official” economic data was being falsified to whitewash human suffering.

In 2014, researchers at Bucknell compared satellite images of nighttime lights over time (a proxy for economic activity) to reported GDP growth to show that dictatorships, on average, exaggerate economic growth significantly more than democratic governments. Others have taken up this subject, too­—two examples being development historian Morten Jerven’s Poor Numbers: How We Are Misled by African Development Statisics and What to Do About It and economist Bill Easterly’s The Tyranny of Experts: Economists, Dictators, and the Forgotten Rights of the Poor. But these analyses have not fundamentally changed how people use development data.

When used by universities and research institutions, socio-economic data sets guide our fundamental understanding of the world. When used by policy makers, philanthropists, and bankers, they steer billions of dollars of aid and investment. Often, the reason data from dictators remains unchallenged is that so many economists, financiers, diplomats, and donors rely on it to do their jobs.

But without more rigorous inquiry into the origin and quality of socio-economic data, the grim reality of dictatorship often remains obscured. Beyond that, intellectuals and world leaders might do well reflect on their worship of development numbers over human rights concerns.

After all, even if the data behind the UN’s 17 Sustainable Development Goals could be verified, what do they signify if not a single one mentions the words individual rights, civil liberties, or democracy—even once? Numbers aren’t always as simple or as neutral as they seem.

—   Alex Gladstein is Chief Strategy Officer at the Human Rights Foundation and Vice President of Strategy of the Oslo Freedom Forum.

Monday, April 30, 2018

এভাবে কোনো সভ্য দেশ চলতে পারে না - খায়রুল হক

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন


সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেছেন, দুর্ঘটনা কী পরিমাণে বেড়েছে! কারও হাত চলে যাচ্ছে, পা চলে যাচ্ছে, মাথা চলে যাচ্ছে। এভাবে কোনো সভ্য দেশ চলতে পারে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন কার্যকর করা দরকার বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলেও তাঁর মত।

সোমবার চারটি বিষয় নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন খায়রুল হক।

বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির খাসকামরায় এই বৈঠক হয়। বৈঠকে খায়রুল হকের সঙ্গে ছিলেন আইন কমিশনের সদস্য সাবেক বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর।

সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের বৈঠকে আর্থিক বিরোধ, সালিশ আইন, ট্রাফিক আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক বলেন, ট্রাফিক আইন নিয়ে চিন্তাভাবনা করার কথা বলেছি। ট্রাফ্রিক আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করি। কিন্তু তা নির্ভর করে, যদি দেশের লোক মনে করে, পরিবর্তন দরকার। আর যদি মনে করে, দরকার নেই, তা হলে হবে না। মানুষ মরতেই থাকবে।

খায়রুল হক বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে সর্বোচ্চ ৪ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০০ টাকা জরিমানা। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে যদি এ অবস্থা হয়, তা কেউ লাইসেন্স নেওয়ার তেমন গরজ বোধ করবে না।

আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, দুর্ঘটনা রোধে দরকার আইন পরিবর্তন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ। শাস্তি বাড়িয়ে হবে না। আইন প্রয়োগের প্রয়োজন আছে। মনোভাব পরিবর্তনেরও প্রয়োজন আছে।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েই চলছে। প্রথম আলোর হিসাব অনুযায়ী, গত ৪৩৪ দিনে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার।

গবেষণা বলছে, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই তরুণ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা অনুসারে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে প্রাণ যাওয়া মানুষের ৫৪ শতাংশই ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর ১৫ বছরের নিচের শিশু সাড়ে ১৮ শতাংশ। এই দুই শ্রেণিকেই দেশের ভবিষ্যৎ ও অর্থনীতির মূল শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সড়ক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ২০১৫ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি দেশের মোট দেশজ জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১.৬ শতাংশের সমান।

  • Courtesy: Prothom Alo/Apr 30, 2018

সড়ক দুর্ঘটনা: তিন বছরে পঙ্গু চার হাজার মানুষ

শামীম রাহমান

পরস্পরের গা-ঘেঁষে চলা দুই বাসের চাপে ৩ এপ্রিল ডান হাত হারান রাজধানীর তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ এপ্রিল মারা যান তিনি। এর রেশ না কাটতেই ২০ এপ্রিল বনানীতে বাসচাপায় ডান পা বিচ্ছিন্ন হয় গৃহকর্মী রোজিনা আক্তারের। গতকাল মারা গেছেন তিনিও।

২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে বাসের চাপায় বাম পা হারান মো. রাসেল নামের এক যুবক। তার এক সপ্তাহ আগে (২২ এপ্রিল) ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের শেরপুরে ট্রাকের নিচে পড়ে বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয় শিশু সুমি আক্তারের। দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিন বছরে এসব দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়েছেন ৪ হাজার মানুষ।

জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৩০৫ জন, ২০১৬ সালে ৯২৩ ও ২০১৭ সালে ১ হাজার ৭২২ জন দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়েছেন। এ তিন বছরে সারা দেশে প্রায় ১৬ হাজার দুর্ঘটনায় ২২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫৪ হাজার। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে আরো ২৯৭ জনকে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যেসব উদ্যোগ প্রয়োজন, তা নেয়া হচ্ছে না। ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন, দক্ষ চালক তৈরি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল রোধ ও সড়ক নিরাপত্তায় ভঙ্গুর অবস্থার কারণে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন তিনি।

সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সরকারি তথ্যভাণ্ডার নেই। পুলিশের তথ্য নিয়ে দুর্ঘটনায় হতাহতের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিআরটিএর প্রতিবেদনে হতাহতের সংখ্যা কম দেখানোর প্রবণতা রয়েছে।

এর আগে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) জরিপে বলা হয়, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ৬৪ জনের মৃত্যু হয়। প্রতি বছর নিহত হন ২৩ হাজার ১৬৬ জন। ‘বাংলাদেশ হেলথ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ (বিএইচআইএস)’ শীর্ষক ওই জরিপের তথ্যমতে, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা।

আর্থিক ক্ষতি আরো বেড়ে যায় পঙ্গুত্ব ও চিকিৎসা ব্যয়ের চাপে। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিচালক অধ্যাপক ডা. গণি মোল্লা বণিক বার্তাকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাত-পা ভাঙা, স্পাইন ভাঙা রোগী হাসপাতালে বেশি আসে। তবে আগের তুলনায় ইদানীং সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে হচ্ছে। একবার কেউ হাত-পা হারালে তারা সমাজের জন্য বোঝা হয়ে যায়। দেশে এখনো কৃত্রিম হাত-পা সংযোজনের ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না। আর কৃত্রিম হাত-পা লাগালেও অনেকে তা ঠিকমতো মেইনটেইন করতে পারে না। এ কারণে পঙ্গুত্বের হার কমাতে সড়ক ব্যবস্থায় উন্নতির বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনাগুলোর ৯০ ভাগই ঘটেছে চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও গতির কারণে। এর মধ্যে ৫৩ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি। আর বেপরোয়া চালকের কারণে ঘটে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা।

১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশ মতে, ১৮ বছর বয়স না হলে পাবলিক প্লেসে কেউ মোটরযান চালাতে পারবে না। পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে ন্যূনতম ২২ বছর। পেশাদার চালকদের অবশ্যই মালিকদের কাছ থেকে নিয়োগপত্র নিতে হবে। বেপরোয়া গতি ও মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। তবে যানবাহন-সংক্রান্ত এ আইন থাকলেও তার প্রয়োগ চোখে পড়ে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি সম্পর্কিত আইনের প্রয়োগে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। স্বভাবতই এসব দেশের মধ্যে দুর্ঘটনার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশেই।

মোটরযান অধ্যাদেশ প্রয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থার পরিচালক (রোড) সেফটি মাহবুব-ই-রব্বানি বণিক বার্তাকে বলেন, অবৈধ, ফিটনেসবিহীন ও আইন অমান্যকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে বিআরটিএ। অভিযান পরিচালনার প্রয়োজনীয় জনবল আমাদের নেই। তার পরও সীমিত জনবল দিয়ে আমরা গণপরিবহন খাতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।

রাজধানীর সড়কগুলোয় চোখ রাখলেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনের সত্যতা মিলবে। ঢাকার যানবাহন চালকদের এক বড় অংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। শারীরিকভাবে গাড়ি চালানোয় সক্ষম নন, রয়েছেন এমন চালকও। পেশাদারভাবে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে নিয়োগপত্রের বালাই নেই অনেক ক্ষেত্রেই। নিয়োগপত্র থাকার আইনি বাধ্যবাধকতা সম্পর্কেও জানেন না অনেক চালক। ঢাকায় চলাচলরত হিমাচল, বিকল্প, স্বাধীনসহ কয়েকটি পরিবহনের চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মালিকপক্ষের কাছ থেকে কোনো নিয়োগপত্র পাননি। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হিমাচল পরিবহনের স্বত্বাধিকারী সাইদুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, আইন থাকলেও তা অনেক সময় মানা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

সিংহভাগ দুর্ঘটনার জন্য চালকদের দায়ী করা হলেও চালকরা দুষছেন পুরো ব্যবস্থাপনাকে। গ্রিনলাইন পরিবহনের চালক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, অনেক দুর্ঘটনা ঘটে রাস্তার কারণে। বাধ্য হয়ে দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানোর কারণেও দুর্ঘটনা হয়। ছোট যানবাহনগুলো আইন না মেনে রাস্তায় এলোমেলো চলাচল করে। তাদের বেপরোয়া চলাচলে দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তার ওপর হাটবাজার, রাস্তায় গাড়ি আছে কিনা— তা না দেখেই পারাপারের প্রবণতার কারণেও দুর্ঘটনা হয়। অথচ অ্যাক্সিডেন্ট হলে সব দায় চাপানো হয় আমাদের ওপর।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. শামছুল হক বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিক্ষিপ্ত কিছু উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। বছরের কয়েক দিন অভিযান চালিয়ে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। এজন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও সেসব পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন।

  • Courtesy: Banikbarta/ Apr 30, 2018

হুন্ডি ব্যবসায় শিল্পপতি রাজনীতিক জনপ্রতিনিধি

নিহাল হাসনাইন

অর্থ পাচারের প্রধান মাধ্যম এখন হুন্ডি। কারা এ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাতে নাম এসেছে শিল্পপতি-ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের। আর হুন্ডির মাধ্যমে তাদের এ অর্থ পাচারে সহায়তা করছে কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক, কুরিয়ার সার্ভিস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ইমিগ্রেশনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা।

হুন্ডি ব্যবসায় জড়িত বিভিন্ন জেলার ৬৩২ জনের নামের তালিকাসংবলিত বিশেষ প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠায় গোয়েন্দা সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তা স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশের পৃথক তিনটি ইউনিট এবং অর্থ মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী সংস্থাগুলো তদন্তও শুরু করেছে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনটি হাতে পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মুখপাত্র ও অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম। এরই মধ্যে তদন্তও শুরু হয়েছে জানিয়ে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, প্রতিবেদনে সংযুক্ত তালিকাটি জেলা ইউনিটগুলোয় পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে যেসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে হুন্ডি-সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাবে, প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকেই এক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হবে না।

হুন্ডি ব্যবসায়ীদের এ তালিকায় দেশের অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী রয়েছেন ১০ জন। এর মধ্যে দুই শিল্পপতিকে অর্থ পাচারের অন্যতম হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তাদের একজন প্রবীর কুমার সাহা। রংধনু স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের একজন পরিচালক। নরসিংদীর ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কেরও স্বত্বাধিকারী তিনি।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, প্রবীর কুমার সাহার ব্যবসার শুরুটা সুতা ব্যবসা দিয়ে। ভারত থেকে তুলা আমদানির নামে ওই সময় থেকেই হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে মুদ্রা পাচার করছেন তিনি। পাচার করা এ অর্থে সেখানে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও গড়েছেন চারবারের এ সিআইপি।

যদিও হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেন প্রবীর কুমার সাহা। জানতে চাইলে বণিক বার্তাকে এ শিল্পপতি বলেন, ভারত থেকে যতবার তুলা আমদানি করেছি, সবই এলসির মাধ্যমে। আমি টানা চারবারের সিআইপি। সিআইপি মনোনীত করার আগে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের কখনই সিআইপি করা হয় না।

নারায়ণগঞ্জের হুন্ডি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের আরেক হোতা হিসেবে নাম এসেছে পূবালী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী পরিতোষ সাহার। এ শিল্পপতির ব্যবসাজীবনের শুরু ১৯৮০ সালে সিলিকেট ব্রোকারির মাধ্যমে। তার বাবা চাকরি করতেন জামাল সোপ ফ্যাক্টরিতে। সেই সুবাদে তিনি ওই ফ্যাক্টরিতে সাবান তৈরির মূল উপাদান সিলিকেট সরবরাহ করতেন। এ সিলিকেট আমদানি করা হয় ভারত থেকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পুরনো ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাতি রয়েছে পূবালী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী পরিতোষ সাহার। প্রথম দিকে ভাড়া করা কারখানায় সাবান উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করলেও একটা সময় সেটি কিনে নেন। এরপর একে একে গড়ে তোলেন পূবালী সোপ ফ্যাক্টরি, পূবালী ফ্লাওয়ার মিলস, শাহ পরান ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড ও পূবালী ভ্যাকুয়াম ইভাপোরেটেড সল্ট প্লান্ট নামের পৃথক চারটি প্রতিষ্ঠান।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে পরিতোষ সাহার। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে তার প্রতি চরম আস্থাও রয়েছে সব মহলের। এ আস্থাকে পুঁজি করেই নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের অর্থ ভারতে পাচার করেন তিনি। বিনিময়ে নেন ১৫ শতাংশ কমিশন। পাচার করা অর্থ ভারত থেকে চলে যায় মালয়েশিয়ায়।

নারায়ণগঞ্জের ২৩ শাহ সুজা রোডে অবস্থিত পূবালী সল্টের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে কথা হয় পরিতোষ সাহার সঙ্গে। তিনিও অর্থ পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেন। গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, কেউ হয়তো আসল তথ্য আড়াল করতেই আমার নাম এ তালিকায় দিয়েছে। ভারতের সঙ্গে আমার ব্যবসা আছে, সেটা সত্য। তবে কখনই এলসি ছাড়া কোনো পণ্য আমদানি করিনি।

হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশেষ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার ঝামেলা এড়াতেই হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ী। এছাড়া ভারতে অভিবাসী হওয়ার প্রবণতাও আছে অনেকের মধ্যে। এ কারণে তারা এ দেশে তাদের অর্জিত আয়, ভূ-সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে পাঠিয়ে দেন। এসব অর্থের অধিকাংশই যায় হুন্ডির মাধ্যমে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য অংশ চট্টগ্রামের। চট্টগ্রামকেন্দ্রিক হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিবেদনটিতে নাম এসেছে রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের খালেদ মাহমুদের। পেশায় ব্যবসায়ী খালেদ মাহমুদ সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ভাই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক রিলিফ অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী খালেদ মাহমুদ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেনে সম্পৃক্ত। দুবাইয়ে তার ব্যবসার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন মো. হাসেম ও মো. হারুন নামের দুই ভাই। এছাড়া বর্তমান রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছের মাধ্যমে কাতারের হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনা করেন তিনি।

খালেদ মাহমুদ মিনিকয় ইন্টারন্যাশনাল ও মেরিন টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের প্রোপ্রাইটর, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস, একাডেমি অব মেরিন এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং চট্টলা মিল্ক প্রসেসিং প্লান্টেরও পরিচালক। চট্টগ্রামের শেখ মুজিব রোডের দুবাই হোটেলের দ্বিতীয় তলায় খালেদ মাহমুদের অফিস রয়েছে। হুন্ডি ব্যবসার সহযোগীরা মধ্যপ্রাচ্য থেকে লেনদেন করলেও খালেদ মাহমুদ চট্টগ্রামে বসেই ব্যবসার সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন বলে জানিয়েছেন তার পরিচিতজনরা।

জানতে চাইলে হুন্ডি ব্যবসা ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পুরোপুরি অস্বীকার করেন খালেদ মাহমুদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, হুন্ডি ও অর্থ পাচার নিয়ে প্রতিবেদনে আমার নাম থাকায় খুবই অবাক হয়েছি। নিশ্চিতভাবেই ভুল বা ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিভিন্ন ধরনের লেনদেন করতে হয়। কিন্তু হুন্ডি ব্যবসা ও অর্থ পাচারসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে আমি ও আমার প্রতিষ্ঠানের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিতে নাম রয়েছে চট্টগ্রামের আরেক ব্যবসায়ী আবু আহমেদের। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারকেন্দ্রিক হুন্ডি ও স্বর্ণ ব্যবসার অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত তিনি। নিজ এলাকা ফটিকছড়ি উপজেলায় আবু আহমেদের পরিচিতি গোল্ড আবু নামে। মূলত স্বর্ণ চোরাচালানের সহযোগী ব্যবসা হিসেবে হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনা করেন তিনি। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিয়াজউদ্দিন বাজারে অভিযান চালিয়ে ২৫০টি স্বর্ণের বার (মোট আড়াই হাজার ভরি) ও নগদ ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগেও ফটিকছড়ির তৌকিরহাট এলাকায় মুড়ি বিক্রেতা ছিলেন আবু আহমেদ। এরপর চট্টগ্রাম শহরে এসে জুতার ব্যবসা শুরু করেন। হুন্ডি, স্বর্ণ ও কাপড় চোরাকারবারির মাধ্যমে বর্তমানে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন এ ব্যবসায়ী। নগরীর সুগন্ধা ও নাসিরাবাদ আবাসিক এলাকায় রয়েছে তার একাধিক ভবন। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে তার নামে রয়েছে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রিয়াজউদ্দিন বাজারের হুন্ডি ব্যবসা আবু আহমেদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।

এ ব্যাপারে জানতে আবু আহমেদের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ফটিকছড়ির আবু আহমেদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করে পুলিশ। আরেকটি মামলায় তাকে ঢাকায় গ্রেফতারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। পরে দুটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন তিনি। পরবর্তী সময়ে নিম্ন আদালত থেকেও জামিন মঞ্জুর হয় তার পক্ষে। হুন্ডি ও স্বর্ণ পাচার মামলায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।

হুন্ডি ব্যবসায়ী হিসেবে সীমান্তবর্তী এলাকার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জনপ্রতিনিধির নামও উঠে এসেছে বিশেষ ওই প্রতিবেদনে। এর মধ্যে রয়েছে দিনাজপুরের ১০ নং পুনট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর এ কামাল এবং একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আতিয়ার রহমান। চট্টগ্রাম বিভাগের তালিকায় নাম রয়েছে চিকদাইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রিয়তোষ চৌধুরী ও রাউজান পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জমির উদ্দিন পারভেজের। এছাড়া সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার ৪০ জনের নাম রয়েছে তালিকায়, যাদের মধ্যে পাঁচজনই জনপ্রতিনিধি।

তালিকার উপরের দিকে রয়েছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের নাম। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে চোরাকারবারের পাশাপাশি টেন্ডারবাজি, খাসজমি দখলে রাখার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

তালিকায় এরপর রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদাউস ওরফে আলফার নাম। সীমান্তে চোরাচালানির মাধ্যমে তিনি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সাতক্ষীরা সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন। ভারতের চোরাচালানকারী সিন্ডিকেটের সঙ্গেও আল ফেরদাউসের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তার ঘনিষ্ঠজনরা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মো. মোরশেদ আলীর নামও রয়েছে এ তালিকায়। সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী কুশখালী গ্রামের এ বাসিন্দার রয়েছে গরুর খাটাল। খাটালে গরু আনার জন্য হুন্ডির মাধ্যমে নিয়মিত ভারতে টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী বৈকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামানের নামও রয়েছে হুন্ডি ব্যবসায়ীর তালিকায়। অভিযোগ আছে, কয়েক বছর ধরে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতীয় গরু চোরাচালান ও টাকা পাচার করে আসছেন তিনি। সীমান্তে খুনের অভিযোগে ৩২ বছর জেলও হয় তার। পরবর্তী সময়ে জেল থেকে বেরিয়ে সীমান্তে গড়ে তোলেন চোরাচালানি সিন্ডিকেট।

তালিকার শেষের দিকে নাম রয়েছে কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম মনির। নিয়মিত হুন্ডির মাধ্যমে গরুর টাকা ভারতে পাচার করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ইসরাইল বিশ্বাসের নামও রয়েছে এ তালিকায়। ভোমরা স্থলবন্দরে সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসা রয়েছে তার।

হুন্ডি ব্যবসায়ীদের এ তালিকায় রয়েছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রাজনীতিকও। শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাতেই রাজনীতির আড়ালে হুন্ডি ব্যবসার অভিযোগ আছে চারজনের বিরুদ্ধে। এদের অন্যতম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ। তালিকায় আরো আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী মন্টু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুবলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান রাফি ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি শাহীন ভুঁইয়া।

হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকাটি ধরে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকা সংযুক্ত একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকা ধরে তদন্তসাপেক্ষে প্রতিবেদন প্রেরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারকারীদের এ তালিকায় নাম আছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার আরিফ মানি চেঞ্জারের স্বত্বাধিকারী গোলাম ফারুক আরিফের। ১৯৯৬ সাল থেকে দর্শনা পৌর এলাকার রেলবাজারে বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা করছেন তিনি।

তার ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের সমর্থনে ভারতের নদীয়া জেলার কেষ্টগঞ্জ থানার গেদে চেকপোস্টের এক মুদ্রা ব্যবসায়ীর সঙ্গে হুন্ডির ব্যবসা করছেন গোলাম ফারুক আরিফ।

যদিও গোলাম ফারুক আরিফ হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। যোগাযোগ করা হলে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বিধিবিধান মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম সঠিকভাবেই পরিচালিত হচ্ছে। গোলাম ফারুক আরিফ অভিযোগ অস্বীকার করলেও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের তালিকাসংবলিত একটি বিশেষ প্রতিবেদন পেয়েছেন বলে জানান চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত করার নির্দেশনা এসেছে। সে অনুযায়ী কাজ করব আমরা।

গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে হুন্ডি ব্যবসা প্রতিরোধে পাঁচ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসন সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা। 

স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের সক্রিয়তা আরো বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে সুপারিশে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের বৈধ চ্যানেলে স্বল্প খরচে ও দ্রুততম সময়ে টাকা পাঠানোর নিশ্চয়তা বিধান করার পাশাপাশি পরামর্শ দেয়া হয়েছে হুন্ডির মাধ্যমে মুদ্রা পাচারের সম্ভাব্য সহায়তাকারী সন্দেহজনক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নজরদারিতে আনার। সেই সঙ্গে অনুমোদনবিহীন মুদ্রাবিনিময় ব্যবসায়ীদের কাছে জনগণ যাতে না যায়, সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারণার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

  • Courtesy: Banikbarta/ Apr 30, 2018

শীতলক্ষ্যায় সরকারি-বেসরকারি দখল

অরূপ দত্ত

শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ের প্রায় পৌনে সাত একর জায়গায় চলছে জাহাজ তৈরির ধুন্ধুমার যজ্ঞ। জায়গাটা ব্যবহারে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডকে অনুমোদন দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ইজারা চুক্তির আগেই সেখানে সব ধরনের নির্মাণকাজ চলছে। নদীর পাড়ের আরেক অংশে গড়ে উঠেছে ভূমি কার্যালয়। এ ছাড়া কিছুদূর পরপরই ইট-বালু বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে নদীর তীর।

গত ২৫ মার্চ সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় দিনভর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে এ অবস্থা দেখা যায়। অথচ ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, নদীর ঢাল থেকে দেড় শ মিটারের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি কোনো স্থাপনা বা ভরাট জায়গা থাকবে না। যেসব সরকারি ভবন আগে থেকেই তৈরি এবং জনস্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলো বহাল থাকতে পারে। তবে নতুন ভরাট ও নির্মাণ নিষিদ্ধ।

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা জানা সত্ত্বেও মদনগঞ্জে মাহমুদনগর ট্রলার ঘাটের পাশে নদীর পাড়ে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডকে জাহাজ নির্মাণের অনুমোদন দেয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নৌকাযোগে ঘুরে মদনগঞ্জ মাহমুদনগর ট্রলার ঘাট এলাকায় দেখা যায়, নদীর তীরে বিভিন্ন নৌযানের অংশ তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্য পড়ছে নদীতে। উপস্থিত একজন কর্মকর্তা মো. মহসীন জানান, নদীর পাড় ছাড়াও ভেতরে অন্তত ৩৩ একর জায়গায় নৌযান তৈরি হচ্ছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, এখানে আগে ‘আলিয়া’ ও ‘আল্লার দান’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান ছোট লঞ্চ তৈরি করত। বিআইডব্লিউটিএ প্রতিষ্ঠান দুটিকে অনুমোদন দিয়েছিল। পরে আদালতের দোহাই দিয়ে তাদের তুলে দেওয়া হয়।

কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সকে অনুমোদন দেওয়া হলো কেন? জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ বন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী বলেন, অনুমোদনের পরে তিনি এখানে বদলি হয়ে আসেন। তাই বিষয়টি তাঁর জানার কথা নয়। তবে কোনো অভিযোগ থাকলে তাঁরা দেখবেন।

নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ইজারা চুক্তি (ডিড) চূড়ান্ত না হলে এ ধরনের ডকইয়ার্ড চালু করা যায় না। গত মাসেও এ চুক্তি হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ বলেন, আগেই চুক্তির সব আয়োজন শেষ হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ১৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা জমাও দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের আনুষ্ঠানিকতায় একটু সময় গেছে।

তাহলে আগেই নির্মাণকাজ চলছে কেন? এ প্রশ্নে আবদুর রশিদ বলেন, নিয়মটা হচ্ছে, সরকারি জায়গা আগে দখলে নিতে হবে, তারপর ইজারা। তিনি দাবি করেন, তাঁদের ডকইয়ার্ডে নদীর জায়গা নেই। নদীর পাড়ে কিছু করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন লাগে, তাই তাদের অনুমোদন নিয়েছেন।

নদীর জায়গায় ভূমি কার্যালয়

শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে প্রায় নদীর মধ্যে দেয়ালঘেরা একটি স্থাপনা। নৌকায় চড়ে কাছাকাছি গিয়ে দেখা যায়, নদীর তীরের নিচু অংশ ভরাট করে সীমানাদেয়াল দেওয়া হয়েছে। তীরে উঠে দেখা যায়, প্রধান ফটকের পাশে দেয়ালে লেখা, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বন্দর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়’। ভেতরে একটি বড় একতলা ভবন। সীমানাদেয়ালের পূর্ব পাশে ৩০ ফুট পাকা সড়ক।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী বলেন, নদী থেকে ওপরের এই সড়কটির দূরত্ব প্রায় আড়াই শ ফুট। ওই সড়ক পর্যন্ত নদীর সীমানা। সীমানার ভেতরেই এই ভূমি কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে।

ভেতরে গিয়ে পাওয়া গেল কার্যালয়ের প্রধান ব্যক্তি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. ছায়েদ হোসেনকে। তিনি জানান, ১৫ শতাংশ জায়গা নিয়ে এই কার্যালয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বলেন, এই জায়গা নদীর সীমানায় পড়েছে, নাকি এর বাইরে, তা তিনি জানেন না। তবে এখানে ভূমি কার্যালয় করার বিষয়ে অনেক আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পান তাঁরা।

বিআইডব্লিউটিএর একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যেকোনো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করে। তহশিল কার্যালয়টি জেলা প্রশাসনের অধীন হওয়ায় তাই উচ্ছেদ কর্মসূচি দেওয়া যাচ্ছে না।

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ভবনটি নদীর জায়গায় পড়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসন নিশ্চয়ই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

ডকইয়ার্ড ও ইট-বালুর ব্যবসা

বন্দর এলাকার ইসলামপুর, একরামপুর, মদনগঞ্জসহ নদীর তীরের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় কিছুদূর পরপর ডকইয়ার্ড। নতুন লঞ্চ, কার্গো তৈরি হচ্ছে, রং লাগানো হচ্ছে। সবই চলছে নদীর তীর ছাড়িয়ে পানির অংশে। বেশির ভাগেরই কোনো নাম নেই। টার্মিনালের বিপরীত দিকে বন্দর এলাকায় দেখা যায় সৈয়দ ডকইয়ার্ড, সাওদা ডকইয়ার্ড, মীর সাওদা ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স ওয়ার্কস। একরামপুরে রয়েছে সরকার ইঞ্জিনিয়ার্স ওয়ার্কস, আবুল হোসেন ডকইয়ার্ড, ইসলামপুরে সুন সিং শিপবিল্ডিং লি., মদনগঞ্জে নূর এ চান ডকইয়ার্ড, সরকার শিপ বিল্ডিং লিমিটেড, শেফা ডকইয়ার্ড ইত্যাদি। বেশির ভাগ ডকইয়ার্ডের উপস্থিত লোকজন দাবি করেন, বিআইডব্লিউটিএ থেকে তাঁরা অনুমোদন নিয়েছেন। তবে বিআইডব্লিউটিএ থেকে বলা হয়, কিছু ডকইয়ার্ডকে আগে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। কোনোটারই এখন মেয়াদ নেই।

বন্দর ভূমি কার্যালয়ের সীমানাদেয়ালের উত্তর ও দক্ষিণ দিকে নদীর প্রায় ৪০০ মিটার জায়গাজুড়ে ইট ও বালুর স্তূপ। এগুলো এখান থেকেই বিক্রি হচ্ছে। উপস্থিত একজন লোক কাজে তদারকি করছিলেন। নিজেকে তত্ত্বাবধায়ক আবদুর রহমান বলে পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, তাঁর ‘স্যার’ জায়গাটা ইট-বালু-সিমেন্ট-রড বিক্রির জন্য অনুমোদন নিয়েছেন। কিন্তু ‘স্যারের’ নাম বলতে তিনি রাজি হননি।

বিআইডব্লিউটিএর কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে ইট-বালু ব্যবসার জন্য একাধিক কোম্পানি আবেদন করলেও কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি।

শীতলক্ষ্যায় মাঝে মাঝে নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা টংঘর ও দোকানপাট উচ্ছেদে অভিযান হয়। কিন্তু নদীর বড় দখল বা বাণিজ্যিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএর অভিযান হয় না।

  • Courtesy: Prothom Alo,/Apr 30, 2018

জাতীয় নির্বাচনে সেনা নিয়োগের যৌক্তিকতা

আলী ইমাম মজুমদার


আগামী মাসের ১৫ তারিখে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হওয়ার কথা। এর বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। অংশগ্রহণ করছেন প্রধান দুটি দল ছাড়াও অনেক দলের প্রার্থীরা। এ দুটি নির্বাচনে সেনা নিয়োগের দাবি জানিয়েছে অংশগ্রহণকারী প্রধান একটি দল। নির্বাচন কমিশন এমনটা করতে অসম্মতি জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের অবস্থান সমর্থনযোগ্য। দুটি সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা, আয়তন ইত্যাদি বিবেচনায় এখানে নিরাপত্তা বিধানের সামর্থ্য বেসামরিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর রয়েছে। সর্বমোট ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দুটি সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা ৬০ লাখ। গোটা দেশের বিবেচনায় অতি সীমিত পরিসরের নির্বাচন বিধায় গণমাধ্যমের উপস্থিতিও থাকবে নিবিড়। সবকিছু মিলিয়ে কোনো অঘটন না ঘটলে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন তাঁদের পছন্দের প্রার্থীদের।

আর সেই অঘটন ঘটানোর সুযোগ যেন কোনো পক্ষ না পায়, সেদিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে কমিশনকে। ধারণা করা যায়, তারা দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ও কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে সচেষ্ট থাকবে। আর এসব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরল ব্যতিক্রম ছাড়া সেনা তলব করা হয়নি। তবে জাতীয় নির্বাচনে সেনা নিয়োগ নিয়ে এর মধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের জাতীয় নির্বাচনে সামরিক বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় নিয়োজিত থাকে। তবে এই নিয়োগের আকৃতি ও প্রকৃতি নিয়ে বিভিন্ন দাবি ও পাল্টা মতামত আমরা শুনতে পারছি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তাঁর এই বক্তব্যের জের ধরে সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, কমিশন সামরিক বাহিনী মোতায়েনের সুপারিশ করতে পারে, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। মন্তব্যটি বেসুরো মনে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে সরকারকে ভিন্নমত দেওয়ার কোনো সুযোগ সংবিধানে রাখা হয়নি। অবশ্য আমাদের দেশে ২০০৩-২০০৪ সালে জোট সরকারের সময় তেজগাঁও নির্বাচনী এলাকায় সংসদ উপনির্বাচনে এবং ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কমিশনের অনুরূপ উপেক্ষার নজির রয়েছে।

প্রধান বিরোধী দলের নেতৃত্বাধীন জোট চায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের আওতায় হোক। অন্যদিকে সরকার সংবিধানের বর্ণিত ব্যবস্থায় নির্বাচন প্রসঙ্গে অনড় অবস্থানে আছে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কোনো অবস্থান নেওয়ার সুযোগ খুবই ক্ষীণ। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের অভিন্ন সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের। ২০১৪ সালের মতোই সংসদ বহাল থাকবে। এ ক্ষেত্রে কয়েক দিন আগে সিইসি বলেছিলেন, আচরণবিধিতে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন হতে পারে। এরপর সব চুপচাপ। অন্যদিকে আলোচ্য দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে তাদের আচরণবিধিতে একটি রাজনৈতিক দলের সুপারিশে সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান বলে জানা যায়। এতে সংসদ সদস্যদের তাঁদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালানোর সুযোগ রাখা হচ্ছে। কোনো খেলা শুরু হওয়ার পর এর নিয়মকানুন সংশোধন অনৈতিক বলে গণ্য করা হয়। তেমনি এ ধরনের সুবিধাদান ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতসুলভ আচরণ বলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কমিশন বলছে, এসব স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য শিক্ষা নেবে। এখন সরকারি দলের চাপের মুখে নির্বাচনের আগে যদি নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি সংশোধন করে তাহলে তা একটি মন্দ দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত হবে।

জাতীয় নির্বাচন সারা দেশে এক দিনে হবে। সাড়ে ১০ কোটি ভোটার। প্রায় ৫০ হাজার ভোটকেন্দ্র। সেই কেন্দ্রগুলোর অধিকাংশের যোগাযোগব্যবস্থা সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের মতো হবে না। বিরাটসংখ্যক ভোটকেন্দ্র থাকবে দূরদূরান্তে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুর্গম। এতগুলো ভোটকেন্দ্রে এক দিনে ভোট গ্রহণের জন্য যে জোরদার নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা দরকার, তা বেসামরিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য একরূপ অসাধ্য হবে। আর জাতীয় নির্বাচনে সরকার বদল হয় বলে ক্ষমতা ধরে রাখতে কিংবা তা ছিনিয়ে নিতে বেপরোয়া হতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো। এর চাপ পড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর।

কেন্দ্রের প্রহরায় পুলিশ আর আনসারই থাকে। আর সেই প্রহরাব্যবস্থা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তুলনায় একেবারেই ভঙ্গুর। র‍্যাব, বিজিবি আর সামরিক বাহিনী থাকে মোবাইল, স্ট্রাইকিং কিংবা রিজার্ভ হিসেবে। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন। অপরিসীম লিখিত ও অলিখিত ক্ষমতার অধিকারী সাংসদের প্রভাববলয়ে বেসামরিক প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কাবু হয়ে পড়তে পারে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও সেখানে থাকবেন অসহায় অবস্থায়। সেই অবস্থায় বেসামরিক প্রশাসনকে শক্তিশালী করতে সামরিক বাহিনী কার্যকর সংখ্যায় মোতায়েন কিছুটা ইতিবাচক ফল দিতে পারে। সে জন্য নির্বাচন কমিশনের আগাম একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা উচিত।

জাতীয় নির্বাচন খুব দূরে নয়। সেই নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। এটা শুধু অংশগ্রহণমূলক হলেই হবে না। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থাকতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগের কথা বলা হচ্ছে বারবার। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনটি সফল করতে হলে নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ওপর কমিশনের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি এখন থেকে হিসাব-নিকাশ করে ঠিক করতে হবে। নির্বাচনের ৪৫ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করে এসব কাজে হাত দিলে ফল পাওয়া যাবে না। তফসিল আগে ঘোষণা করার তেমন কোনো আইনগত বিপত্তি আছে বলে জানা যায় না। থাকলেও তা অপসারণের ব্যবস্থা করা দরকার। এ রকম করতে পারলে কমিশন জনপ্রশাসন ও পুলিশে কিছু আবশ্যকীয় রদবদল করতে পারবে। এমনটা করা হলে নির্বাচন পরিচালনাব্যবস্থায় কমিশনের কর্তৃত্ব দৃশ্যমান হবে।

এই অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাব্যবস্থার মূল দায়িত্বে বরাবরের মতো পুলিশই থাকবে। তবে অধিক পরিমাণে সামরিক বাহিনীর মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করলে ভোটদান প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট ইতিবাচক ফল দেবে। আর এমনটা করতে হলে কমিশনের এখন থেকেই সরকারের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের আবশ্যকতা রয়েছে। তার আগে তাদের বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির সঙ্গে বৈঠক করে এর উদ্দেশ্য ব্যক্ত করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনাব্যবস্থার মূল দায়িত্বে যেহেতু কমিশন, তাই তাদের অগ্রণী ভূমিকা থাকা আবশ্যক।

সেনা নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এত কথা বলার কারণ, তাদের কনিষ্ঠ ও মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং সৈনিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের মাখামাখির কোনো সুযোগ নেই। অন্যদিকে বেসামরিক প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অবস্থান তার বিপরীতে। নির্বাচনটা যেহেতু হতে যাচ্ছে দলীয় সরকারের অধীনে এবং সংসদ বহাল রেখে, সে ক্ষেত্রে সেনা মোতায়েনের সংখ্যাও অনেক বাড়াতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলের নির্বাচনে বরাবর নৌবাহিনী কার্যকর ভূমিকা নেয়। তবে এবার তাদের সংখ্যাও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি অন্য সব উপজেলায় (জনসংখ্যার আকৃতি বিবেচনায়) ৫ থেকে ১০টি সেনা মোবাইল টিম করার মতো সেনা মোতায়েন কার্যকর সুফল দেবে। আর তা সময়মতো পেতে হলে পূর্বপরিকল্পনা দরকার। দরকার বাজেটের।

সুতরাং নির্বাচন কমিশনের জন্য সংগত হবে অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে সংলাপ শুরু করা। নির্বাচন সবাই চায়, তবে নিজের মনগড়াভাবে চাইলে হবে না। আর কমিশনও দেখা যাক বলে সময়ক্ষেপণ করলে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাদের সাফল্যের ক্ষেত্রে। তাদের সামনে দুটিই রাস্তা। একটি সাফল্যের। তার জন্য আন্তরিকতার পাশাপাশি প্রয়োজন দৃঢ়তা ও যথাযথ সিদ্ধান্ত। অন্যটি অবশ্যই ব্যর্থতার। এর জন্য তেমন কিছু করতে হবে না। আপনা থেকেই হবে। আর তা হলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে একটি জাতি।

  • আলী ইমাম মজুমদার: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব
  • Courtesy: Prothom Alo/ Apr 25, 2018