Search

Thursday, May 17, 2018

Need free, fair polls in Bangladesh — USAID




The US expects that Bangladesh fulfill its commitment to hold free, fair, credible and participatory elections that reflect the will of the Bangladeshi people.

USAID Administrator Mark A Green, who arrived in Dhaka on May 14, has highlighted the importance of preserving the rights of free speech and assembly as well as a free and independent press, before, during, and after the upcoming national voting later this year.

In reply to a question on BNP chief Khaleda Zia, who is now in jail and under a judicial process, he said “US government expects fair and systematic process will be followed”.

He was speaking to a selective group of journalists after wrapping up a 14-day tour at American Club today. He will be leaving for Myanmar, where he will raise the urgent need to take steps to end the Rohingya crisis.


  • Courtesy —  The Daily Star/ Thursday, May 17, 2017


Parliament lost Tk 37cr in quorum crisis: TIB

The current parliament incurred losses of total Tk 37.37 crore due to quorum crisis since January last year.
A total of 38 hours was also wasted in five sessions of the 10th parliament, Transparency International Bangladesh(TIB) said at a briefing at its Dhanmondi office this morning.

TIB also said, only nine per cent of the total time was spent in law making process among the total time, over 260 hours, spent in the five sessions.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 17, 2018

Yet another scandalous election

Editorial 


THE Khulna mayoral elections held on Tuesday was another disappoint in terms of the incumbents’ political and cultural ability to hold elections in free and fair manner. Many expected that the Khulna city corporation polls, an election held after a series of scandalous ones under the present regime, beginning from the last phases of those to Upajila in March 2014 and Dhaka city corporation April 2015, would be better in terms of neutrality of the civil administration, law enforcing agencies and the Election Commission in allowing equal opportunities to the contesting candidates belonging to the ruling quarters and the opposition camp while paving the way for the voters to go to the polling stations without fear and choose their representatives freely.

But, alas, it was not to happen: the party-neutral section of the mainstream media has reported on the systematic intimidation of the active supporters of the opposition candidate particularly by way of arresting the campaigners from the beginning of the electoral race two weeks ago, creating an uneven field for the opposition in the first place. Then, on the election-day, the public administration and the law enforcing agencies publicly appeared to be supportive of all the unfair means the ruling party candidate and his supporters adopted to forcibly win the elections – stuffing of ballot papers, muscle flexing in and around the polling stations, obstructing the voters from coming to the polling centres.

The election was marred, as a field-level report of the News Age says on Wednesday, by ‘widespread rigging, ballot stuffing and muscle flexing by ruling Awami League activists’ with the ‘law enforcers turning a blind eye’. While the polling agents of the opposition candidates were reportedly ousted by the muscle-flexing ruling party activists from many polling centres, many voters publicly complained that they could not cast votes for they were told by the polling officers that their votes had already been cast!

The long series of vote riggings, with direct and indirect supports of the administration, and without any effective intervention by Election Commission to stop such riggings, would further strengthen the opposition camp’s apprehension about a free and fair national election scheduled for late this year. Subsequently, they might ultimately decide not to take part in the next national election as they did in 2014. 

The incumbents, after being able to sustain its power even after the most farcical elections of the country’s history last time, may even opt for mechanically legitimising their perpetuation in power for another term through another sham elections with the main opposition parties staying outside the electoral race, but people’s right to vote and freely choose their representatives would be the prime casualty. Moreover, a repetition of 2014 elections would destroy the already damaged political fabric of democratic politics for the years to come.

Under the circumstance, it is imperative for the politically conscious and democratically oriented sections of the society, particularly those having no blind allegiance to the political camps crudely contesting for power, to initiate necessary activism to prevent the country from such a disastrous future without further delay.

  • Courtesy: New Age /Editorial/ May 17, 2018

কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে 'জাল-ভোট -গ্যাং'

'জাল-ভোট -গ্যাং' — কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে ভোট ডাকাত দল। 


মঙ্গলবারের খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি 'জাল-ভোট -গ্যাং' নৌকায় একচেটিয়া সিল মারার মিশনে নামে। ভোটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জাল ভোট দিয়ে চালিয়ে যায় নিশ্চিন্তে।  

নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর তালকুদার আবদুল খালেক সঙ্গে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক বের হলেই কেন্দ্র দখলে নিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে সিল মেরে বাক্স ভরে সটকে পড়ে তারা।

তারা সকাল ৮টা থাকে ১০টা পর্যন্ত প্রথমে রেকি করে কয়েকটি কেন্দ্রে। বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সমর্থকদের দুর্বল অবস্থান ও সাংবাদিকদের মুভমেন্ট দেখে ১০টার পর শুরু করে জাল ভোট দেয়ার মিশন।

১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালকুদার আবদুল খালেক প্রবেশ করেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নূর নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এ সময় সাংবাদিক ও কিছু পর্যবেক্ষকও প্রবেশ করেন তাঁর সঙ্গে। কেন্দ্র পরিদর্শন করে বের হয়ে এলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে সাংবাদিকরাও বের হয়ে আসেন। এমন সময় নগর যুবলীগ নেতা জাকির ও কানা রানার নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি গ্রুপ আচমকা প্রবেশ করে ভোটকেন্দ্রের ভেতর। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে শুরু করেন জালভোট প্রদান। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে সামনে থাকা সব ব্যালট পেপারের বান্ডিলে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে মুহূর্তের মধ্যে কেন্দ্র ত্যাগ করে। খবর পেয়ে মিডিয়া ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আসতে আসতে সটকে পড়ে তারা। চলে যায় পরবর্তী কেন্দ্রে। 

একইভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে তালুকদার আবদুল খালেক ভেতরে অবস্থান কালে জালভোট গ্যাং কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়। খালেক ও সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকরা বের হয়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই একযোগে প্রবেশ করে মুহূর্তেই সব ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে সটকে পড়ে তারা। 

সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এই 'জাল-ভোট -গ্যাং'  বিনা বাধায় জালভোট প্রদান করছে। মুহুর্তেই স্থান ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটরা এলে কেন্দ্র শান্ত দেখে চলে যাচ্ছেন। 

৪নং ওয়ার্ডের দেয়ানা উত্তর পাড়া ভোট কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করে তালুকদার আবদুল খালেকের সমর্থকরা। কেন্দ্রে প্রবেশ করে জাল ভোট দিয়ে সরে পড়ে তারা। 

দুপুর ২টার দিকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া বিদ্যুৎ স্কুল কেন্দ্রে যান তালুকদার আবদুল খালেক। সেখান থেকে তিনি বের হয়ে এলে তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের বহর কেন্দ্রে প্রবেশ করে জাল ভোট দেয়া শুরু করে। একইভাবে তারা জাল ভোট দেয় ওই ওয়ার্ডের হাতেম আলী স্কুল কেন্দ্র, ইসলামাবাদ ভোটকেন্দ্র, পাইওনিয়ার স্কুল ভোটকেন্দ্র, গন্ডামারি লায়ন্স স্কুল ও নিরালয় স্কুল কেন্দ্র থেকেও। এসব কেন্দ্রের বিএনপির পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে অবস্থানরত প্রশাসনের সামনেই মারধর করে বের করে দিয়ে জাল ভোট দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে টহল পুলিশ ও সাংবাদিকরা আসার আগেই কেটে পড়ে। 

  • তথ্যসূত্র — মানবজমিন/বুধবার, মে ১৬, ২০১৮। 

বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভালো উপায় ছিল — উইলিয়াম ক্রাউলি



বিবিসির সাবেক সাংবাদিক উইলিয়াম ক্রাউলি বলেন, বাংলাদেশের প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি ভালো উপায় ছিল। কিন্তু সেটি বর্তমান সরকার বাতিল করেছে। 

বুধবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতির কথা উঠে আসে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান বলেন, ভারত বা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে দলীয় নীতির ভিত্তিতে নির্বাচন হলেও বাংলাদেশে পরিস্থিতি ভিন্ন। এখানকার রাজনীতি দুই পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত। ফলে তৃতীয় কোনো রাজনীতিক দলের উত্থানের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধীদের অব্যাহতভাবে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করার মাধ্যমে দেশের সুশীল সমাজকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ার ভয়ে সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া কঠিন। খালেদা জিয়ার জেলদণ্ড, বিরোধী মত দমন এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে ডেভিড বার্গম্যান বলেন, যেকোনো উপায়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে।
পররাষ্ট্রনীতির প্রভাব বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডেভিড বার্গম্যান বলেন, ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন না করতে পশ্চিমা দেশগুলো সরকারকে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু ভারতের একক সমর্থনের কারণে আওয়ামী লীগ ওই পরিস্থিতি গায়ের জোরে উতরে যায়।

‘দক্ষিণ এশিয়ায় সিদ্ধান্তের সময়: আসন্ন নির্বাচন ও গণমাধ্যম’ (সাউথ এশিয়া ডিসাইটস: আপকামিং ইলেকশন অ্যান্ড দ্য মিডিয়া) শীর্ষক ওই সেমিনারের যৌথ আয়োজক ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট মিনস্টার এবং শেভেনিং সাউথ এশিয়া জার্নালিজম প্রোগ্রাম। ‘ইনস্টিটিউট অব গভর্নমেন্ট’ হাউসে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপী এই সেমিনার।

আগামী দুই বছর দক্ষিণ এশিয়ায় অনেকটা নির্বাচনের মৌসুম। এ সময়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশগুলোয় ক্ষমতাসীন দলগুলোর কর্তৃত্ববাদী আচরণ, বিরোধী মত দমন এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের কারণে এ অঞ্চলের নির্বাচনী নিরপেক্ষতা আগাম আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে।

নির্বাচন ঘিরে সরকার ও বিরোধী দলের অবস্থান, গণমাধ্যমের ভূমিকা, নির্বাচনে প্রবাসীদের প্রভাব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভুয়া সংবাদের প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দৃষ্টি—এই চারটি ভিন্ন ধাপে চলে দিনব্যাপী আলোচনা।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট মিনস্টারের ‘মিডিয়া হিস্ট্রি’ বিষয়ের অধ্যাপক জেন সিয়াটন বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের অবক্ষয়ের প্রবণতা এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের অব্যাহত চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের চিফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স করেসপনডেন্ট গিডিয়ন রচম্যান বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো একসময় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য আদর্শ গণতন্ত্রের উদাহরণ হিসেবে সামনে ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে মনোরঞ্জনবাদী রাজনীতির উত্থান এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন দেশে দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভারতের নরেন্দ্র মোদি অনেকটা একই কৌশলে গণমাধ্যমগুলোকে এড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার ও ফেসবুকে সরাসরি ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এই পরিস্থিতি গণমাধ্যমগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
বিবিসির সাবেক সাংবাদিক ডেভিড পেইজ বলেন, সাংবাদিকদের অনেকেই রাজনৈতিক কর্মীর মতো আচরণ করেন। তাঁরা ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করেন। এটা গণতন্ত্রের পথে বড় বাধা।
আলোচনা করে একমত হন যে গণতন্ত্র কেবল বেশি ভোট পেয়ে জিতে যাওয়া নয়; ন্যায়সংগত ও জবাবদিহিমূলক সরকার নিশ্চিত করাই আসল কথা। এ কাজে গণমাধ্যমগুলোকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

চ্যানেল ফোরের বার্তাপ্রধান ডোরোথি বায়ার্ন বলেন, ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের চাপ মোকাবিলায় স্বাধীন সাংবাদিকতা চর্চা আরও বেশি বেগবান করতে হবে। সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায় ও মিথ্যাচার মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, দেশে দেশে গণমাধ্যমগুলোর যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে। পরিণতির ভয়ে কোনো সংবাদ গোপন না রেখে তা বিদেশি কোনো বন্ধু পত্রিকায় ছাপানোর ব্যবস্থা করতে হবে। গণমানুষের কাছে স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে চ্যানেল ফোরের এই সাংবাদিক বলেন, মিয়ানমারে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সাধারণ মানুষ গোপনে ভিডিও চিত্র ধারণ করে রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুরতার খবর ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে যুক্ত করে কাজ করলে প্রভাবশালীরা তথ্য গোপন রাখতে পারবে না।

অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিবিসির হার্ডটকের উপস্থাপক ডেভিড লিয়ন, বিবিসি রেডিও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা ফিল টিনলিন, ভারতীয় লেখক ও গবেষক ম্যানু পিল্লাই, লেখক ও প্রযুক্তিবিষয়ক ব্লগার জেমি বার্লেট, ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক নাইমুল করিম এলিন, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট মিনস্টারের শিক্ষক ইফশিতা বসু, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সহকারী অধ্যাপক রাজেশ ভেনুগোপাল প্রমুখ।

তথ্যসূত্র — প্রথম আলো/ বুধবার, মে ১৬, ২০১৮। 

অর্পিত দায়িত্ব পালনে ইসি ব্যর্থ হয়েছে

খুলনা সিটি নির্বাচন

খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যে পুরোপুরি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, সেটি বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর ও ছবিতেই অনেকটা পরিষ্কার। নির্বাচন নিয়ে জনমনে সন্দেহ-সংশয় ছিল। তবে ঘটনাগুলো যেভাবে ঘটেছে, তা খুলনাবাসীকে মোটেই অবাক করেনি। সুতরাং ভোটকেন্দ্রগুলোর বাইরের পরিবেশ দৃশ্যত শান্ত থাকা আর ভেতর-বাইরের সবটাই সরকারি দলের কবজায় থাকার মতো একটি পরিবেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন যে সম্ভব নয়, তা সহজপাঠের মতো বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেনি। এটা অশনিসংকেত। 

গাজীপুরসহ চারটি সিটি নির্বাচন ঘিরে এখন যে প্রশ্নটি জ্বলে উঠবে, তা হলো খুলনায় যে নির্বাচন হলো, সেসব স্থানেও আওয়ামী লীগ ও ইসির মতে ‘চমৎকার ও সুন্দর নির্বাচন’ হলে, এই রকম সিটি নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি আমাদের প্রত্যক্ষ করতে হবে কি হবে না? আমরা সহজে যা বুঝি তা হলো জনসাধারণকে ফাঁকি দেওয়া কিংবা সত্য আড়াল করা যায় না। খুলনায় নির্বাচন কমিশন ও পুলিশের পক্ষপাত এবং বিরোধী দলের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রাক্-নির্বাচনী পর্বের কিছু ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। এরপর ভোটের দিনের যে বিবরণ আমরা পেয়েছি, তা কার্যত প্রাক্-নির্বাচনী পর্বেরই ধারাবাহিকতা। 

তবে নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্রের ‘দু-একটি বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা দর্শন করা নিশ্চয় খুলনাবাসীকে মর্মাহত করবে। কারণ, তারা দেখেছে, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইসি ও আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারবে না যে বিএনপির ‘পরাজিত’ প্রার্থী এক লাখের বেশি ভোট পেয়েছেন। যে প্রার্থী এতটা বিপুল পরিমাণ ভোট পেতে পারেন, তাঁর পোলিং এজেন্ট দিতে লোকবলের অভাব পড়েছিল, সেটা বিশ্বাস করানো কঠিন। প্রথম আলোর অন্তত পাঁচজন সাংবাদিকের সরেজমিন পরিদর্শন করা ৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে তাঁরা ৬০টি কেন্দ্রে কোনো পোলিং এজেন্ট দেখেননি। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও তাঁর দলীয় প্রার্থীর মেয়র হওয়ার খবর শুনে স্মরণ করেছেন যে খুলনার এই এলাকাটিতে আওয়ামী লীগ আগে কখনো এত ভালো করেনি। 

নির্বাচন কমিশনকে নির্মোহ থাকতে হবে। ঢাকায় বিএনপির ফল প্রত্যাখ্যান ও সিইসির পদত্যাগ দাবি রাজনৈতিক। কিন্তু বিএনপি প্রার্থীর ১০৫ কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এবং ৪৫ কেন্দ্রে পুনঃ তদন্তের দাবি আইনগত বিষয়। বিএনপি যদি সত্যি সত্যি প্রতিকার চায় তাহলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আসতে হবে। এটাও লক্ষণীয় যে বিএনপি ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলছে না। ‘পরাজিতরা’ কখনো যে আইনি লড়াইয়ে যেতে চায় না, সেই পরিস্থিতি ইসির জন্য অবমাননাকর। আর তা নির্বাচনী আইন সংস্কারের অপরিহার্যতাকেই নির্দেশ করে। আশা করব, বিএনপি মেঠো বক্তৃতার পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালেও আসবে। 

ইসিকে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়ার মনোভাব পরিত্যাগ করতে হবে। ক্ষমতাসীন দলের হম্বিতম্বি গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণার জন্য সুখকর নয়। এই নির্বাচন সারা দেশের ভোটারদের মধ্যে একটা আস্থা তৈরির সুযোগ এনেছিল। কিন্তু তা হলো না। সিইসি ও কমিশনারদের নীরবতা হয়তো তাৎপর্যহীন নয়। 

এসব সত্ত্বেও আমরা আশা করব, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা নির্বাচনী বিভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে খুলনাবাসীর উন্নয়নে কাজ করবেন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার যে মনোভাব ব্যক্ত করেছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাই।
  • Courtesy: Prothom Alo /সম্পাদকীয় /May 17, 2018

খুলনার ভোটের অনিয়ম তদন্তের তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকালে সংঘটিত অনিয়ম ও হুমকির ঘটনায় হতাশ যুক্তরাষ্ট্র। ওই নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, হুমকি-ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভাঙচুর ও অনিয়মের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। নির্বাচনটিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করায় সব দলকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন- পরবর্তী নির্বাচনের জন্য খুলনার ঘটনাগুলোর তদন্ত হওয়া জরুরি। সেখানে অনিয়মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

গতকাল বিকালে সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ওই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে।

এদিকে, মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

খুলনা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, বাংলাদেশে অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা বারবার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের এ আহ্বান অব্যাহত থাকবে। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসক ও দূতের বৈঠক

ঢাকা সফররত মার্কিন দাতব্য সংস্থা ইউএসএআইডির প্রশাসক মার্ক গ্রীণকে নিয়ে বুধবার বিকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে গ্রীণ ও বার্নিকাট উভয়েই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন। এ সময় উপস্থিত এক জ্যেষ্ঠ কূটনৈতিক সংবাদদাতা পর্যবেক্ষক হিসেবে খুলনা নির্বাচনের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন জানতে চান।

জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন- এটা খুব উৎসাহজনক যে, অনেক রাজনৈতিক দল খুলনার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমি প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাই। তবে ওই নির্বাচনে বল প্রয়োগ, ভোটারদের বাধা দান, ভাঙচুর এবং অনিয়মের যেসব ঘটনা ঘটেছে তার স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া জরুরি। জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

পরবর্তী নির্বাচনের জন্য এটি জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন- সেখানে অনিয়ম ও হুমকির যেসব ঘটনা ঘটেছে তা ‘খুব হতাশাজনক’। এ সময় আগামী নির্বাচনগুলোতে সব দল রাজনৈতিক দলকে আইনের সীমার মধ্যে থাকার আহ্বান জানান তিনি। 

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপক জাল ভোট প্রদান, কেন্দ্র দখল ও প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ দিনব্যাপী বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ মিলেছে। এ অবস্থায় রাতে চূড়ান্তভাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। 

  • Courtesy: Manabzamin /May 17, 2018

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাস্তব কাজ ও কল্পনাবিলাস

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে সরকারি মহল থেকে পর্যাপ্ত তথ্য প্রদান এবং সেসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের উপযুক্ত পরিসর না থাকায় এ বিষয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিভ্রান্তিও হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম বাংলাদেশি কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর (বিএস-১) কাজ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন স্যাটেলাইটের ভিন্ন ভিন্ন কাজ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেক বিএস-১ দিয়ে সব ধরনের স্যাটেলাইটের কাজ করাতে চেয়েছেন। যোগাযোগের কাজের জন্য বানানো স্যাটেলাইট শুধু যোগাযোগের কাজই করবে। আবহাওয়া পূর্বাভাস, ভূতাত্ত্বিক জরিপ, ছবি তোলা, মানচিত্র তৈরি, জলবায়ু পরিবর্তনের সমীক্ষা ইত্যাকার কাজগুলো ভিন্ন ভিন্ন স্যাটেলাইট দিয়ে করানো হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে কারিগরি দিক থেকে বিএস-১ সক্ষমতার দিকগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পাচ্ছি।

বিএস-১-এর রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে হওয়া আলোচনাগুলোয় ট্রান্সপন্ডার বিক্রির ব্যাপারটির বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। প্রথমেই ট্রান্সপন্ডার সম্পর্কে খানিকটা জেনে নিই।

যোগাযোগে ট্রান্সিভার, রিপিটার ও ট্রান্সপন্ডার 


ট্রান্সপন্ডার (ট্রান্সমিটার-রিস্পন্ডার) কোনো উৎস থেকে সংকেত গ্রহণ করে এবং তাকে অ্যাম্পলিফাই বা বিবর্ধন করে আবার এমনভাবে ফেরত পাঠায় যাতে বহুসংখ্যক গ্রাহক ওই সংকেত বা সিগন্যাল গ্রহণ করতে পারে। ট্রান্সপন্ডার অনেকটা টিভি বা রেডিওর রিলে স্টেশনের মতো, যারা একই সঙ্গে বহু চ্যানেল সম্প্রচার করে। স্যাটেলাইট কমিউনিকেশনে একটি ট্রান্সপন্ডার এক গুচ্ছ ভূ থেকে উপগ্রহে আপ লিংক তরঙ্গপথ গ্রহণ করে পৃথিবীর দিকে ডাউন লিংকে তাদের অপর আরেক গুচ্ছ ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি সেট সম্প্রচার করে। কী কাজ দেওয়া হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ট্রান্সপন্ডার বিবিধ রকমের কাজ যুগপৎ করতে পারে। যেমন: লোকেশন সার্ভিস, দূরত্ব পরিমাপের মতো কাজ।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর কারিগরি বৈশিষ্ট্য


বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কারিগরি নকশা তৈরি, প্রস্তুতকরণ, পরীক্ষা এবং কক্ষপথে উৎক্ষেপণের দায়িত্বে ছিল ‘থ্যালেস এলেনিয়া স্পেস’ কোম্পানি। এর আয়ুষ্কাল ১৫ বছর এবং মূল কাজ হলো টিভি সম্প্রচার, ভিস্যাট ও ডিটিএইচ। 

বিএস-১ স্যাটেলাইটটি ২৬টি কে-ইউ ব্যান্ড এবং ১৪টি সি ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার সজ্জিত হয়েছে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথের অবস্থান থেকে। কে-ইউ ব্যান্ডের আওতায় রয়েছে বাংলাদেশ, বঙ্গোপসাগরে তার জলসীমাসহ ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চল। সি ব্যান্ডেরও আওতায় থাকবে এই সমুদয় অঞ্চল। উল্লেখ্য, যেহেতু বাংলাদেশ ৯০ দশমিক ৪ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে, তাই ১১৯ দশমিক ২ পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে থাকা ভূ-স্থির উপগ্রহের (জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট) সবচেয়ে অনুকূল আওতায় (অপটিমাম কভারেজ) বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমা পড়ছে না; বরং এর খুব উচ্চমান সুবিধা পাবে ইন্দো-ফিলিপিনো অঞ্চল।

থ্যালিস বলছে, ইন অরবিট টেস্ট (আইওটি) সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে বিএস-১ নিম্নোক্ত প্রান্তিক সেবাগুলো দিতে পারবে:

১. ডিটিএইচ (ডিরেক্ট টু হোম)-মাল্টিপ্লেক্সড ডিজিটাল টেলিভিশন, রেডিও এবং সংশ্লিষ্ট ডেটা, যা সরাসরি খুব ছোট রেডিও অ্যানটেনাগুলোয় সরবরাহ করবে। 

২. ভিডিও ডিস্ট্রিবিউশন-মাল্টিপ্লেক্সড ডিজিটাল টেলিভিশন, রেডিও এবং সংশ্লিষ্ট ডেটা, যা মধ্যমান রেডিও অ্যানটেনাগুলোয় সরবরাহ করবে। 

৩. ভিস্যাট প্রাইভেট নেটওয়ার্ক-ভয়েস, ডেটা এবং ইন্টারনেট সার্ভিসযুক্ত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক সরবরাহ করবে, যা ব্যাংক, গ্যাস স্টেশন ইত্যাদিতে মধ্যমান রেডিও অ্যানটেনার মাধ্যমে সরবরাহ করবে। 

৪. ব্রডব্যান্ড-রিমোট অ্যান্ড ইউজারকে (ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান) উচ্চগতির ইন্টারনেট সুবিধা দেবে। 

৫. কমিউনিকেশন ট্রাংক-ওয়াইড ব্যান্ড উচ্চ ক্ষমতার পয়েন্ট টু পয়েন্ট ডেটা সার্ভিস সরবরাহ করবে।

উপরিউক্ত ৪ ও ৫ নম্বর সেবার জন্য আলাদা একটি স্যাটেলাইট ফোন অপারেটর তৈরি করার প্রয়োজন পড়বে। এর ইউজার টার্মিনাল (যাকে আমরা মোবাইল বলি) ল্যাপটপ সাইজের বা তারও বড় হয়ে থাকে। বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক কোম্পানি মাত্র তিন বা চারটি স্যাটেলাইট দিয়ে সারা পৃথিবীতে এই জরুরি সেবা দিয়ে থাকে, সাধারণত দুর্যোগপূর্ণ কিংবা প্রত্যন্ত এলাকায় যা কাজে লাগে। ভূমিকম্প, সুনামি এমনকি প্রলয়ংকরী ঝড় ও বন্যার সময়ে বৈশ্বিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকে এসব স্যাট ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায়। তবে যেহেতু বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট একটি জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট (ব্যবহারকারী থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করে) তাই এর ভয়েস ও ডেটা কমিউনিকেশনে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সময়ের পার্থক্য (ল্যাটেন্সি বা ডিলে) থাকে, যা দিয়ে উচ্চ ভয়েস ও ডেটা ধারণক্ষমতার স্বাভাবিক বাণিজ্যিক টেরেস্ট্রিয়াল টেলিসেবা দেওয়া যায় না। লো আর্থ অরবিট বা লিও স্যাটেলাইটের তুলনায় এখানে ব্যান্ডউইথ বেশি থাকলেও উচ্চ ল্যাটেন্সির কারণে ৬০ থেকে ৫১২ কেবিপিএসের টেকসই সেবাদান সম্ভব। ফলে বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মূলত ডিজিটাল টিভি ব্রডকাস্টিং, রেডিও ব্রডকাস্টিং এবং ভি-স্যাট স্যাটেলাইট। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট একটি যোগাযোগ উপগ্রহ, যা দিয়ে কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে জরুরি টেলিকম সেবাও দেওয়া যাবে।

বহুবিধ কাজে ব্যবহৃত নানাবিধ কৃত্রিম উপগ্রহ


কৃত্রিম সম্প্রচার ও যোগাযোগ উপগ্রহের বাইরেও নানাবিধ স্যাটেলাইট রয়েছে, যা মহাশূন্য দর্শন (স্পেস অবজারভেশন, এস্ট্রনমি), আবহাওয়া পরিমাপ (ওয়েদার অ্যান্ড এটমোস্ফেরিক স্ট্যাডি), বিশেষ বিশেষ গবেষণা, বিশেষায়িত টেলিযোগাযোগ, নেভিগেশন, সার্চ অ্যান্ড রেস্কিউ, রিমোট সেন্সিং ইত্যাদি বিশেষ বিশেষ কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কথা হচ্ছে, এর জন্য ওই বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহকে বিশেষ বিশেষ হার্ডওয়্যারে সজ্জিত করা হয়। যোগাযোগ স্যাটেলাইটে যেমন থাকে ট্রান্সপন্ডার, তেমনি আবহাওয়া উপগ্রহগুলোয় পে লোড হিসাবে থাকে রেডিও মিটার (রেডিয়েশন মাপার যন্ত্র), স্কেটারোমিটার (পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত বিভিন্ন গ্যাস, যেমন: কার্বন ডাই-অক্সাইড, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি পরিমাপক), লাইটিং ইমেজার (বিদ্যুৎ চমকানো মনিটর করা) ইত্যাদি। এ ছাড়া গবেষণাকাজে নিয়োজিত উপগ্রহে স্পেকট্রেমিটার (তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ স্ট্যাডি মনিটর করা), আলটিমিটার (উচ্চতা ও স্পেস ডিসট্যান্স মাপা) ইত্যাদি নামক বিভিন্ন ধরনের মনিটরিং যন্ত্র ও ক্যামেরা থাকে।

যেহেতু বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে শুধু ট্রান্সপন্ডার নামক যন্ত্র আছে এবং এর বাইরে ওপরে বর্ণিত অন্য কোনো যন্ত্র বা ক্যামেরা নেই, তাই এটা মূলত ডিজিটাল টিভি ব্রডকাস্টিং, রেডিও ব্রডকাস্টিং এবং একটি যোগাযোগ স্যাটেলাইট। আশা করি, এই পর্যায়ে এসে বিভ্রান্তির কিছুটা অবসান হবে এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-কে জড়িয়ে রচিত কল্পকথা ছড়ানোর অতি উৎসাহী ব্যাপারগুলো কমে আসবে।

অন্যায্য প্রত্যাশার চাপ কিংবা অতি উৎসাহী প্রচারণা! 

১. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বাংলাদেশে ডিরেক্ট টু হোম (ডিটিএইচ) সেবায় ব্যাপক মাত্রা যোগ করবে। দেশে এখনো কেব্‌ল টিভির জয়জয়কার, এখানে স্যাটেলাইট টিভি বা ডিশ টিভির ব্যবসা ব্যাপকভাবে উন্মুক্ত হয়নি। যেহেতু কেব্‌ল টিভি শত শত কিংবা হাজার মাইলের কেব্‌ল ওয়্যার লাইন টেনে করা হয়, তাই নগরীর রাস্তার ওভার হেড কিংবা আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেস ম্যানেজমেন্টে এটা প্রশাসনিক দিক থেকে জঞ্জালপূর্ণ, তাই কেব্‌ল সম্প্রচার বন্ধ হওয়া জরুরি।

যেহেতু বাংলাদেশ ৯০ দশমিক ৪ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে, তাই ১১৯ দশমিক ২ পূর্ব দ্রাঘিমার অর্বিটাল পজিশনে থাকা জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের (ভূ-স্থির উপগ্রহ) অনুকূল আওতায় বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমা থাকছে না। ফলে বাংলাদেশি টিভি সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষভাবে বৃষ্টি, কুয়াশা এবং ঝড়-বাদলের সময়ে সম্প্রচার কোয়ালিটি পাইলট করে প্রমাণ করে দেখানোর একটা বাধ্যবাধকতা থেকে গেছে। অন্যদিকে, যেহেতু বর্তমানে টিভি স্টেশনগুলো ইতিমধ্যেই বাইরের স্যাটেলাইট সম্প্রচার কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তিবদ্ধ এবং টিভিগুলোর সঞ্চালনের সমুদয় কারিগরি যন্ত্রপাতি ডিটিএইচ পদ্ধতির নয়, তাই এখনই তাদের ওপর বিএস-১-এর ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রত্যাশাও অন্যায্য।

বিপরীতে যেহেতু খুব উচ্চমান কভারেজ পাওয়া যাবে ইন্দো-ফিলিপিনো টেরিটরিতে, নবগঠিত বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএসসিএল) ওই অঞ্চলে সম্ভাব্য গ্রাহক-ক্রেতা খুঁজতে হবে দ্রুত। অন্যান্য দেশে সাধারণ একটি যোগাযোগ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের আগেই এই ধরনের বাণিজ্যিক বন্দোবস্ত করে রাখা হয়। আমাদের বেলায় সেটা ঘটেনি।

পাশাপাশি বিএস-১ ‘ভিস্যাট’ভিত্তিক প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরির পথ উন্মুক্ত করবে। এটা ভয়েস, ডেটা ও ইন্টারনেট সার্ভিসযুক্ত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরির পথ উন্মুক্ত করবে, যা বাংলাদেশের ব্যাংক, গ্যাস স্টেশন, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদিতে অনুপস্থিত। আমরা আশা করব, বিসিএসসিএল দেশে ও দেশের বাইরে ফার ইস্টার্ন ইন্দো-ফিলিপিনো জোনে রাজস্ব আয়ের ভিস্যাট-কেন্দ্রিক এই নতুন দিকও সন্ধান করে দেখবে।

২. প্রলয়ংকরী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ করে মর্মন্তুদ বন্যা, ঝড় বা সিডরের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায়, কিংবা ভূমিকম্প পরিস্থিতিতে কীভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকর্মীদের যোগাযোগের জন্য বিএস-১-কেন্দ্রিক স্যাটেলাইট ইউজার অ্যান্ড টার্মিনাল ফোন বা ল্যাপটপ কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যেহেতু বৈশ্বিক কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যেই স্থাপিত বিশেষ কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে এই সার্ভিস দিচ্ছে, তাই সেখান থেকে খরচ সীমিত রেখে পর্যাপ্তসংখ্যক স্যাট ফোন বা স্যাট টার্মিনাল কেনা যেতে পারে (হাইতি, ক্রাইস্ট চার্চ, সিচুয়ানে কিংবা ইতালিতে এই কোম্পানিগুলো কাজ করেছে)। অন্যদিকে, এই কাজের জন্য বাংলাদেশের বাহিনীগুলোর ওয়াকিটকি সার্ভিসও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর বাইরে টেলিকমের ইমার্জেন্সি সার্ভিস প্রভিশনের কাজও বাকি আছে। তাই অপ্রয়োজনীয় খরচের লাগাম টেনে সাশ্রয়ী এবং টেকসই সমাধানই কাম্য।

৩. বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দিয়ে ছবি তোলা, ইমেজ প্রসেসিং, বন্যা পরিস্থিতি পরিমাপ, পানির উচ্চতা নির্ণয়, আবহাওয়া পূর্বাভাস, দূরত্ব পরিমাপ, নদীর নাব্যতা ও গতিপথ পর্যবেক্ষণ, জলাভূমির সংকোচন-প্রসারণ, রাস্তাঘাটের নিপুণ ডিজিটাল মানচিত্র, আর্থ অবজারভেটরি কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত কাজগুলো করা যাবে না। এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিশেষায়িত কৃত্রিম উপগ্রহ রয়েছে।

  • ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব: প্রকৌশলী। সিনিয়র সফটওয়্যার সলিউশন আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন নেদারল্যান্ডস।
  • কার্টেসি — প্রথম আলো/ বুধবার, মে ১৬, ২০১৮। 

Wednesday, May 16, 2018

Biman now at financial risk

Debt-equity ratio goes up abnormally

Kamrun Nahar 


National flag carrier Biman Bangladesh Airlines is now at financial risk as its debt-equity ratio has gone up abnormally to 4:1 from the normal rate of 1.5:1, a Biman official said on Tuesday.

After receiving four state-of-the-art aircraft Dreamliner 787 from Boeing this year, he said, the amount of loan will reach about Tk 80 billion from the present amount of Tk 44 billion. Biman needs government investment, equity support and fund to augment its equity base, he added.

"The rate of property is not increasing same as the debt. We are at risk as the amount of our debt is much more than our capital," said general manager (public relations) Shakil Meraj at a workshop organised for aviation reporters.

He said, "We need government support to increase our capital or equity base."

A Biman official said there is no allocation for Biman in the national budget. The government has provided only Tk 1.5 billion as cash incentive for Biman in last 46 years.

The government converted Biman into a public limited company in 2007 when the amount of liabilities was over Tk 16 billion. Liabilities to the civil aviation authority and oil company were declared as equity by the government, not cash. Biman's property has increased insignificantly over the years after making it a company, an official said seeking anonymity. Seven secretaries own the shares of the company.

Mr Shakil said Biman has property worth over Tk 20 billion including own offices in different districts, and six aircraft. Four Dreamliners will be added to the fleet by this year and the amount of loan will increase by Tk 35 billion to Tk 80 billion, he added.

He said jet fuel cost has increased by 29 per cent compared to that of the last year. Biman also incurred a loss of Tk 1.04 billion due to depreciation of taka.

Despite being the state carrier, he said, Biman pays the same landing permit charges like those of foreign airlines to the civil aviation authority which should be rationalised.

Another Biman official said they buy jet fuel at 30 per cent higher rate which is not in practice for other airlines which get special rates in their own countries.

Few months back, Biman bought five cobus from Germany at a cost of Tk 25 million. But the National Board of Revenue (NBR) has charged them 500 per cent duty, considering those commercially-operated buses on the streets. This has created a row between the two organisations.

Industry experts said Biman is at financial risk as it has already a huge amount of debt although it is true that they have got the loan as the government has given them sovereign guarantee. Biman has lost credit worthiness in the credit market.

Biman has repaid loan of over Tk 53.41 billion since 2007 after it signed agreement to purchase 10 new aircraft from Boeing at a cost of Tk 20 billion. Biman has taken loan from Sonali Bank UK, Standard Chartered Bank (London) and HSBC (Hong Kong) through tender.

The major source of revenue is international ticket sale which is 65 per cent. Over 18 per cent of its revenue comes from ground handling. From Hajj flight operations, Biman earns 15 per cent revenue, and from domestic flights only 2.0 per cent revenue. Another 2.0 per cent comes from poultry complex, training centre and catering service.

  • Courtesy: The Financial Express /May 16, 2018

অসহায় অর্থমন্ত্রী!

ব্যাংকিং খাতকে বাঁচাবে কে?


বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক যা বলেছেন, তার সারমর্ম হলো ঋণখেলাপির দায় শুধু ক্ষমতাসীনদের নয়, এই সংস্কৃতির শুরু হয়েছিল বিএনপির আমলে। আমাদের প্রশ্ন হলো, বিএনপির আমলে শুরু হওয়া খেলাপি ঋণ সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ আমলে এসে কমেছে না বেড়েছে? যদি বেড়ে থাকে তার দায় আওয়ামী লীগকেই নিতে হবে।

দুই দলের এই নালিশ-পাল্টা নালিশের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একটি নতুন তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের পরিচালকেরা পরস্পর যোগসাজশ করে ঋণ দেওয়ার ফলেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। কিন্তু এসব তথ্যের চেয়েও উদ্বেগজনক হলো, অর্থমন্ত্রী অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেছেন, ‘কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব জানি না।’ তিনি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন একটানা সাড়ে নয় বছর। এখন খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন, সেটি যদি না জানেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?

আমরা লক্ষ করছি, সরকার ফি বছরই জনগণের করের অর্থে মূলধন জোগান দিয়ে সরকারি ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখছে। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকেরা তো ব্যাংকগুলোকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। সরকার বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের জবাবদিহির আওতায় না এনে একই পরিবারের চারজনকে ব্যাংকের পরিচালক এবং একনাগাড়ে নয় বছর পরিচালক পদে থাকার সুযোগ দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংকার, বিশেষজ্ঞদের আপত্তিও সরকার আমলে নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা খাত চলে আইনকানুনের ভিত্তিতে। সেই আইনটিই যদি ত্রুটিপূর্ণ হয় কিংবা পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারী হওয়ার পথ প্রশস্ত করে, তখন আর কিছুই করার থাকে না।

অর্থমন্ত্রী আরও স্বীকার করেছেন, আগ্রাসী ব্যাংকিং হয়েছে। ব্যাংকিং আগ্রাসী হোক আর রক্ষণশীল হোক, ব্যাংক থেকে দেওয়া ঋণ তো ফেরত আনতে হবে। ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে ব্যাংকিং আইনের সংস্কার করতে হবে। কিন্তু সরকার আইন সংস্কারের নামে ব্যাংক পরিচালকদের পরস্পর পিঠ চুলকানোর সুযোগ করে দিয়েছে। এখন নিরুপায় হয়ে অর্থমন্ত্রী আহাজারি করছেন। আইন প্রতিপালনের ক্ষেত্রে নজরদারি প্রতিষ্ঠান হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর মতো সেই প্রতিষ্ঠানও সম্ভবত অসহায়। তারা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। উদাহরণ হিসেবে ফারমার্স ব্যাংকের কথা বলা যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম ধরল, তখন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো ব্যাংকটি এতটা দুরবস্থায় পড়ত না।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হলো খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং ব্যাংকগুলোর মূলধন বাড়ানো। ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থ অনেক বড়। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকিং খাতকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যদি সরকার আগ্রাসী নীতি নিয়ে থাকে, তাহলে আদায়ের ক্ষেত্রে কেন নমনীয় হবে? প্রয়োজনে ঋণ আদালত আইন সংশোধন করতে হবে। অনেক ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে যেমন বিচারের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আছে, ঋণ আদালতের মামলায়ও সেটি করা হোক। তাতে কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা আদালতে একটি মামলা ঠুকে বছরের পর বছর ঋণ আটকে রাখতে পারবেন না।

অর্থমন্ত্রী অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেই ব্যাংকিং খাতের দুরবস্থা কাটবে না; বরং তাঁকে এই অসহায়ত্ব থেকে বেরিয়ে এসে খেলাপি ঋণ আদায়ে একটি টেকসই কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। কার আমলে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি শুরু হয়েছে, সেই বিতর্কের চেয়েও জরুরি হলো খেলাপি ঋণটি আদায় করা। অন্যথায় ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্য চলতেই থাকবে। 
  • Courtesy: Prothom Alo /May 15, 2018