Search

Thursday, May 17, 2018

কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে 'জাল-ভোট -গ্যাং'

'জাল-ভোট -গ্যাং' — কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে ভোট ডাকাত দল। 


মঙ্গলবারের খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি 'জাল-ভোট -গ্যাং' নৌকায় একচেটিয়া সিল মারার মিশনে নামে। ভোটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জাল ভোট দিয়ে চালিয়ে যায় নিশ্চিন্তে।  

নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর তালকুদার আবদুল খালেক সঙ্গে সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক বের হলেই কেন্দ্র দখলে নিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে সিল মেরে বাক্স ভরে সটকে পড়ে তারা।

তারা সকাল ৮টা থাকে ১০টা পর্যন্ত প্রথমে রেকি করে কয়েকটি কেন্দ্রে। বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সমর্থকদের দুর্বল অবস্থান ও সাংবাদিকদের মুভমেন্ট দেখে ১০টার পর শুরু করে জাল ভোট দেয়ার মিশন।

১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তালকুদার আবদুল খালেক প্রবেশ করেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নূর নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এ সময় সাংবাদিক ও কিছু পর্যবেক্ষকও প্রবেশ করেন তাঁর সঙ্গে। কেন্দ্র পরিদর্শন করে বের হয়ে এলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে সাংবাদিকরাও বের হয়ে আসেন। এমন সময় নগর যুবলীগ নেতা জাকির ও কানা রানার নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি গ্রুপ আচমকা প্রবেশ করে ভোটকেন্দ্রের ভেতর। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দিয়ে শুরু করেন জালভোট প্রদান। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে সামনে থাকা সব ব্যালট পেপারের বান্ডিলে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে মুহূর্তের মধ্যে কেন্দ্র ত্যাগ করে। খবর পেয়ে মিডিয়া ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আসতে আসতে সটকে পড়ে তারা। চলে যায় পরবর্তী কেন্দ্রে। 

একইভাবে প্রতিটি কেন্দ্রে তালুকদার আবদুল খালেক ভেতরে অবস্থান কালে জালভোট গ্যাং কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়। খালেক ও সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকরা বের হয়ে যাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই একযোগে প্রবেশ করে মুহূর্তেই সব ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে সটকে পড়ে তারা। 

সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এই 'জাল-ভোট -গ্যাং'  বিনা বাধায় জালভোট প্রদান করছে। মুহুর্তেই স্থান ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটরা এলে কেন্দ্র শান্ত দেখে চলে যাচ্ছেন। 

৪নং ওয়ার্ডের দেয়ানা উত্তর পাড়া ভোট কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা করে তালুকদার আবদুল খালেকের সমর্থকরা। কেন্দ্রে প্রবেশ করে জাল ভোট দিয়ে সরে পড়ে তারা। 

দুপুর ২টার দিকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া বিদ্যুৎ স্কুল কেন্দ্রে যান তালুকদার আবদুল খালেক। সেখান থেকে তিনি বের হয়ে এলে তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের বহর কেন্দ্রে প্রবেশ করে জাল ভোট দেয়া শুরু করে। একইভাবে তারা জাল ভোট দেয় ওই ওয়ার্ডের হাতেম আলী স্কুল কেন্দ্র, ইসলামাবাদ ভোটকেন্দ্র, পাইওনিয়ার স্কুল ভোটকেন্দ্র, গন্ডামারি লায়ন্স স্কুল ও নিরালয় স্কুল কেন্দ্র থেকেও। এসব কেন্দ্রের বিএনপির পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে অবস্থানরত প্রশাসনের সামনেই মারধর করে বের করে দিয়ে জাল ভোট দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে টহল পুলিশ ও সাংবাদিকরা আসার আগেই কেটে পড়ে। 

  • তথ্যসূত্র — মানবজমিন/বুধবার, মে ১৬, ২০১৮। 

No comments:

Post a Comment