Search

Thursday, May 17, 2018

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট — আকাশে অশ্বডিম্ব প্রেরণ (পার্ট ২)


জিয়া হাসান 


দেশীয় অপারেটরদেরকে বিক্রি করে , মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কাকে ট্রান্সপন্ডার ভাড়া দিয়ে বিদেশী মুদ্রা অর্জন করা হবে মানে কি? লাঞ্চ হয়ে গেল, কিন্তু তার আগে ডিলগুলো ক্লোজ করা হয় নাই কেন ? এত সাধের ময়না, তবে কথা কেন কয় না? সোফিয়া তো কথা বলেছিল?

মিয়ানমার সরকার, ২০১৯ সালে একটি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাবে। নিউজ রিপোর্টে দেখতে পাচ্ছি মিয়ানমার ইতিমধ্যেই দুইটি কোম্পানির সাথে ক্যাপাসিটি বুক করে ফেলেছে, সেল করার জন্যে। 

পাকিস্তান ২০১১ সালে পাকস্যাট 1R লাঞ্ছ করে। লাঞ্চিং-এর  আগেই তাদের ৬০% ট্রান্সন্ডার ক্যাপাসিটি বুক করা ছিল। 

কিন্ত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট লাঞ্চ হয়েছে, ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ । ১৫ বছরে এটার জীবন শেষ। তার মানে, প্রতি দিন এর পেছনে ৩০০০ কোটি ভাগ ১৫ বছর মানে, ৫৪৭৫ দিন = ৫৫ লক্ষ টাকার ইনভেস্টমেন্ট রিটার্ন তুলে আনতে হবে শুধুমাত্র ফিক্সড কস্ট কাভার করার জন্যে। অপারেশনাল কস্ট এবং সুদ বাদ দিলাম।

কিন্ত, সরকারের সহযোগী ৭১ টিভি মিডিয়ার মালিক মোজাম্মেল বাবু ২৪ এপ্রিলে একটি আলোচনা সভায় বলেছেন, "বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট যে অরবিটাল স্লটে (১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) স্থাপন করা হবে, তার মাধ্যমে কাজ করা বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলোর জন্য হবে একটি চ্যালেঞ্জ। "

সে দিনের মিটিং এ উপস্থিত আমার একজন সাংবাদিক বন্ধু জানিয়েছেন স্যাটেলাইট টেলিভিশনের মালিকেরা ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১১৯.১ ডিগ্রিতে হওয়াতে এইটার থেকে কিউ ব্যান্ড কানেক্টিভিটি নিয়ে তারা কাজ করতে পারবেন না , কারণ তাতে বৃষ্টির কারণে ট্রান্সমিশন বিঘ্নিত হবে ।

“বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২৬টি রাখছেন কিউ-ব্যান্ডে। এ ব্যান্ডে টেলিভিশন চালাতে পারি না, এক ফোঁটা বৃষ্টি হলেও ফ্রিকোয়েন্সি কাজ করে না। ১৪টি সি-ব্যান্ডের জন্য আমরা আগ্রহী।”- মোজাম্মেল বাবু,, একাত্তর টিভি।

তারা বলেছেন,তাদের জন্যে বর্তমানের ৯০ ডিগ্রি বা ৮৯ ডিগ্রিতে স্থাপিত সিঙ্গাপুর বা চীনের কমার্শিয়াল স্যাটেলাইট গুলোই ভালো কারণ এগুলো যে কৌণিক অবস্থানে  আছে তাতে ভালো ট্রান্সমিশন পাওয়া যাবে, যেটা বন্ধু স্যাটেলাইটে পাওয়া যাবেনা।  সিঙ্গাপুর/চীনের স্যাটেলাইটের  অ্যাঙ্গেল বাংলাদেশের জন্যে সুবিধাজনক।

বলে রাখা ভালো জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটগুলো আকাশে একটা ফিক্সড জায়গায় থাকে এবং এটা পৃথিবীর সাথে একই গতিতে ঘোরে। ফলে এই স্যাটেলাইটের অরবিটাল স্লট কেনার সময়ে সুবিধাজনক জায়গায় কেনা জরুর‌ি যেটা বাংলাদেশ কিনতে পারে নাই কারণ,  ২০১২ সালে বাংলাদেশে যে অরবিটাল স্লট কেনার জন্যে অঅবেদন করেছিল, সেই স্লট পায় নাই। ২০টি দেশ বাংলাদেশের অরবিটাল স্লট কেনার বিরোধিতা করেছিল। ফলে বাংলাদেশ ফাইনালি রাশিয়ান স্পুটনিক কোম্পানি থেকে অসুবিধাজনক স্লট ভাড়া নেয়- সরকারের ইগো প্রজেক্ট কমপ্লিট করার জন্যে ।


একই মিটিং এ মোজাম্মেল বাবু  বলেছেন তারা সি ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন. কিন্ত বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সি ব্যান্ডে এনক্রিপশান সুবিধা না থাকাসহ অনেক অসুবিধা আছে।  তাহলে তাদের প্রযুক্তি চেঞ্জ করতে হবে। তাই হয়তো এটা চ্যানেল মালিকদের কথার কথা। 
কারণ তারা কিউ ব্যান্ডে সুবিধাজনক ট্রান্সমিশানের জায়গায় থাকতে চায়, যার অপশন বর্তমানে তারা সিঙ্গাপুর বা চাইনিজ কোম্পানিগুলো থেকে পাচ্ছেন। এইটা তারা সেই দিনের মিটিং এ বার বার বলেছেন। লিংক  যদি একাত্তর টিভি বা বাকিরা একজিস্টিং কন্ট্রাক্ট থেকে বের হয়ে প্রযুক্তি চেঞ্জ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে রাজিও থাকে, তার মানে এখনো আলোচনা চলছে। এবং এর থেকে বোঝা যায় সরকার এখনও তাদের পেট মিডিয়া একাত্তর টিভিকেও তার ট্রান্সপন্ডার সেল করতে পারে নাই এবং এগ্রিমেন্ট কমপ্লিট করে নাই। ধোঁয়া ধোঁয়া আলাপ চলছে।

বিদেশী নেটওয়ার্ক এই ডাটা কিনবে সেই প্রশ্ন তো অনেক দুরের চাঁদ অার দেশী স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর কাছেই ট্রান্সপন্ডার ভাড়া নেবার বিষয়টা জাস্ট একটা উইশফুল থিঙ্কিং।

তাহলে কিসের ভিত্তিতে মন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের মিডিয়া গুলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে ডাউনস্ট্রিম ব্যান্ডউইথ কিনবেই, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে ?

যদি আজকে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কগুলো বলে, তাদের অন্য কোম্পানির সাথে কনট্র্যাক্ট আছে, তাই, তারা কিনতে পারবে না। বা কিনতে হলে, সেই কন্ট্রাক্টের দায় বাংলাদেশ সরকারকে নিতে হবে, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, তখন কি হবে ?

তাছাড়া এখানে কত ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল কার জন্যে সুবিধাজনক সে ধরনের অনেক ইস্যু আছে, যা নিয়ে কোন অভিজ্ঞতা নেই সরকারের ।

আমাদের প্রশ্ন, এই স্যাটালাইট উৎক্ষেপণের আগে এই কন্ট্রাক্ট গুলো শেষ করে ফেলা হয়নি কেন ? 

কে করবে এই সব কন্ট্রাক্ট ? সেখানে দুর্নীতির দায় কে নেবে ?

দ্বিতীয়ত ভারত যেখানে ফ্রি, ট্রান্সপন্ডার সার্ভিস দিয়ে বসে আছে, সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইটে, যে সার্ভিসটা নিতে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে চুক্তি সাক্ষর করেছে এবং শ্রীলঙ্কা নেপালের জন্যেও যে ফ্রি সার্ভিস নেয়ার দরজা খোলা রেখেছে , সেটা জানা সত্ত্বেও তাহলে কিসের ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কা, নেপাল বাংলাদেশ থেকে পয়সা দিয়ে ট্রান্সপন্ডার সার্ভিস কিনবে?

ভারতের ফ্রি স্যাটালাইট সার্ভিস নিতে বাংলাদেশ চুক্তি সাক্ষর করেছে (পড়ুন -  https://bit.ly/2ISMtbU)

তাছাড়া শ্রীলঙ্কার নিজের স্যাটেলাইট আছে। সে কেন কিনবে ?

এমনকি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জিওস্টেশনারি যে লোকেশান তার মধ্যে ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া পড়েছে, তাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট আছে।

এবং আগামী দুই তিন বছরে ভারত যদি এই রিজিয়নে আরো ফ্রি সার্ভিস দেয়, তখন কার কাছে এই ট্রাসপন্ডার সার্ভিস বেচা হবে ? সেই গুলো তখন অবিক্রিত থাকলে তার দায় কে নেবে ?

বেচার যদি সুযোগ থাকতোই তাহলে একটাও চুক্তি সাক্ষর বা নিদেন পক্ষে এমওইঊ সাইন না করে, এই ভাবে, আশাবাদের ভিত্তিতে, ৩ হাজার কোটি টাকা খরচের মানে কি ?

এখন যদি বেচতে না পারি, তার দায় কে নেবে।

প্লাস স্যাটেলাইট ইন্ডাস্ট্রিতে এশিয়াতে যে বড় বড় প্রাইভেট অপারেটর আছে, তদের প্রফিট ইতিমধ্যে কমে আসছে, কারণ অনেকগুলো স্যাটেলাইট লাঞ্চ হওয়াতে এই সারভিসের ওভার ক্যাপাসিটি শেষ হয়ে গ্যাছে। 

ওভার-ক্যাপাসিটির জন্যে এশিয়াস্যাটের প্রফিট কমে আসার লিংক। [https://www.satellitetoday.com/…/asiasat-revenues-flat-fir…/]

এবং এই ক্যাপাসিটি দিনে দিনে বাড়ছে, ফলে, দুইটা জিনিষ হবে, এই ট্রান্সপ্ন্ডার সারভিসের দাম কমবে। এবং আমরা সেল করতে পারলেও সরকার যে প্রফিটের কথা বলছে, সেটা হবে না। এবং প্রাইভেট অপারেটরদের সাথে আমাদের দুর্নীতিপরায়ণ অযোগ্য কর্মকর্তাদের দিয়ে, হয়তো দেশের আরো বড় বারোটা বাজানো হবে।

আরো প্রশ্ন আছে, প্রথমেই আমাদের ফিক্সড কস্ট অনেক বেশ‌ি হয়ে গেছে কিনা।

১২ টা কু ব্যান্ডের ,২.৫ টনের মোটামুটি একই পে-লোডের এই সাউথ এশিয়ান ফ্রি স্যাটেলাইট বানাতে ভারতের মোট খরচ হয়েছে , ৬৯ মিলিয়ন ডলার। 

আমাদের স্যাটেলাইট বানাতে থেলস এলায়ন্সের সাথে চুক্তির পরিমাণ, ২৩০ মিলিয়ন ডলার। প্রায় চার গুণ বেশি ? কেন ? (পড়ুন - https://en.wikipedia.org/wiki/South_Asia_Satellite) 

এই যে প্রতি দিন আগামীকাল থেকে, স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি ফ্রি বসে থাকবে যার ইনভেস্টমেন্ট রিটার্ন তুলতে প্রতি দিন ৫৫ লক্ষ টাকা আয় করতে হবে, এবং যার জন্যে এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ দেয়া হয়েছে যা সুদে আসলে বাড়তে থাকবে, তার দায় কি এই স্যাটেলাইটের সিদ্ধান্ত গ্রহীতা নেবে ? 

নাকি তার দায় আমরা করদাতারা  নেবো যার জন্যে আমাদের গ্যাস বিদ্যুৎ দুধ সব কিছুর খরচ বাড়বে ?

এই প্রশ্নের জবার কে দেবে?

রিয়ালিটি হচ্ছে আমরা আমরা হাততালি পাওয়ার জন্যে একটা স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি আকাশে তুলে রাখছি,এবং বলছি, এ থেকে বছরে এতো কোটি টাকা পাওয়া যাবে। কিন্ত বেচা বিক্রির কাজ এখনো শুরুও তো হয় নাই।

অনেকে বলতেছেন,এতে ভাবমূর্তি বাড়বে। বাংলাদেশের নাগরিকেরা বিদেশে যখন এয়ারপোর্টে এয়ারপোর্টে দঁড়িয়ে থেকে, ইমিগ্রেশান ফর্ম পুরণ করতে পারে না, আশেপাশে শিক্ষিত বাঙালি খোঁজে  সেখানে কেউ তাদের জিজ্ঞেস করবে না, আমরা আকাশে স্যাটেলাইট তুলছি কিনা। 

শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করে এখন আমরা ভাবমূর্তি বেচবো ।

বাস্তবতা হচ্ছে এটা বাংলাদেশ নয়, আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তির প্রজেক্ট। যেই ভাবমূর্তির ট্যাক্সের দায় এবং অর্থনৈতিক উশৃঙ্খলতার দায় আমাদেরকে প্রজন্মের পরে প্রজন্ম বইতে হবে। এখুনি যার চাপে, নাগরিকের নাভিশ্বাস উঠেছে।

আর আমরা এমন বলদ জাতি নিজের ট্যাক্সের পয়সায় স্যাটালেইট দেখে উন্নয়ন চেতনায় জাম্প দিয়ে যাচ্ছি, কিন্ত কোন দিক থেকে এই চেতনার গ্লিসারিণ সাপোজিটারি ঢুকছে টের পাচ্ছিনা।

পড়ুন - বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট — আকাশে অশ্বডিম্ব প্রেরণ (পার্ট ১)

— লেখক সাড়া জাগানো ব্লগার ও তরুন উদ্দ্যোক্তা। 

Satellite tender 3: Family links raise further questions

By David Bergman


The Bangladesh government has in the last few days launched the country's first satellite, named Bangabandhu-1. 

Back in May 2012, I wrote a series of three articles for the Bangladesh daily newspaper, The New Age about how the whole process started with serious irregularities in the tender process that resulted in a small US company receiving a $10 million consultancy contract when it did not meet the most basic tender requirements.  

Since the newspaper's website before 2016 is no longer online, I am publishing the articles again . Below is the third of the three reports, published on May 17, 2012. 
---- 

Bangabandhu space satellite tender III 

Family links raise further questions about tender 

By David Bergman

A key member of the small US company that won in contentious circumstances a $10 million consultancy contract to assist the government in the launch of the Bangladesh satellite Bangubandhu 1 is related through marriage to an Awami League minister. 

Shafiq A Chaudari, the vice-president of business development for Space Partnership International, the company that won the contract, is a brother-in-law of Farid Khan, the younger brother of Faruq Khan, the minister of civil aviation and tourism.

Farid Khan had an apparent interest in Space Partnership International winning the contract as he is the vice-chairman of Summit Communications, which was the main local partner of the US company in the tender application.

Summit Communications is part of the highly influential Summit Group which is run by Aziz Khan — the brother of both Farid and Farooq Khan — and which has won a significant number of major government tenders most notably in the power sector. Farid Khan is also a director of one of the group’s main companies, Summit Power Limited. 

In the past week, New Age has disclosed that Space Partnership International was given the $10 million contract even though it failed to meet the minimum tender requirements and received a significantly lower score in its technical evaluation compared with another company which was then unfairly disqualified.

Whilst there is no direct evidence that the family and business connections played a role in Space Partnership International winning the contract, in light of these previous disclosures the connections raise additional questions about the integrity of the tender process. 

Shafiq Chaudhuri, who is an experienced engineer in the satellite and telecommunications sector working in the United States for most of his career, told New Age that he started in his senior position at Space Partnership International in April 2011.

‘Space Partnership International approached me because in the request for proposals [from the Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission] there had been a requirement that within the executive team of 10 consultants, there needed to be a Bangladeshi person with at least 15 years’ experience working in the field. I have 30 years’ experience,‘ he said.

‘The company knew of me from Washington. I am well known in the community for the work I do. And they said that there is an opportunity, would you be interested? I didn’t want to relocate myself [to Bangladesh] as I have a wife and kids. So we came to a deal that I will be on and off [in Bangladesh].’

Shafiq Chaudhuri confirmed that his sister-in-law was married to Farid Khan. 

When subsequently asked in an e-mail whether his family relations may have played any role in Space Partnership International receiving the contract, the US company’s vice-president said, ‘We are confident that the selection process was conducted properly and that we were selected because we were the most qualified.… We have nothing more to add.’

Farid Khan denied that his relationship with Shafiq Chaudhuri had any role in winning the contract stating in an e-mail sent from the United States that ‘given the limited nature of Summit’s role in the contract, it would make no sense for Summit to try to influence the outcome of the tender. It would be unnecessary risk well outside of the parameters of our standard business practices.’

He added that the company is ‘extremely sensitive about family relationships and always are conservative in all business dealings to protect the integrity of all involved.’

Farid also argued that as the inclusion of qualified Bangladeshis was encouraged in the tender documents, ‘it seems only natural that [Space Partnership International] would bring in Shafiq Chaudhuri, who has over 30 years of experience in satellite communications technology and they could not find better experienced Bangladeshi satellite engineer in the world.…’

The role that Summit Communications plays in the consultancy contract, however, remains unclear as statements made by Space Partnership International both in its bid documents to the Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission as well as in an interview with New Age contradict with those made by Summit Communication.

In Space Partnership International’s April 2011 bid document sent to BTRC, Summit Communications is described as ‘a subsidiary of the Summit Group of companies, one of the leading industrial conglomerates of Bangladesh, [which] will provide logistics, procurement, engineering support and network implementation in Bangladesh.’

At a meeting with New Age in March 2012 after the company had won the contract, Space Partnership International’s managing director Bruce Kraselzky said that Summit Communications ‘has tremendous expertise in communications because of their experience on ground as a terrestrial operator. So for the feasibility study we will be looking to them for guidance to assess requirement, how do we make sure that we compliment rather than compete with existing terrestrial environment.’

However, Ariful Islam, the managing director of Summit Communications questioned this description of the company’s role in the consultancy contract. ‘We are just the local office. Space Partnership International is just using our address. We do not do any work for them,’ he said. 

‘I mean that in the satellite consultancy, Summit Communications plays no role except passing documents to the BTRC. We are just a liaison office. We have no expertise in satellite or related fields. Our real role is as a local office to take documents for the BTRC.’

Farid Khan also told New Age that Summit Communications was engaged by the US company ‘with the objective that once the satellite project is awarded, the SCL will consider providing its network services. Summit Communications Ltd and Summit Group have no connection with [Space Partnership International] other than our expression to provide future services of network.’

Iftekharuzzaman, the executive director of Transparency International, told New Age that allegations of any inappropriate influence should be subject to ‘independent investigation so that anyone found to be guilty of violating the rules by direct or indirect influence is brought to justice.’

He added, ‘Failure to ensure transparency and accountability in the bidding process will severely undermine Bangladesh’s standing as a destination of international business and investment. On the other hand, if the government does not take prompt action it will only create for itself an image of the protector of wrongdoings, and hence lose credibility.’

Satellite tender 2: BRTC manipulates tender evaluation


By David Bergman 
 


The Bangladesh government has in the last few days launched the country's first satellite, named Bangabandhu-1.

Back in May 2012, I wrote a series of three articles for the Bangladesh daily newspaper, The New Age about how the whole process started with serious irregularities in the tender process that resulted in a small US company receiving a $10 million consultancy contract when it did not meet the most basic tender requirements. 

Since the newspaper's website before 2016 is no longer online, I am publishing the articles again. Below is the second of the three reports, published on May 17, 2012. The links to the first article is here: US bid winner doesn't meet tender requirements. The second final article will be published shortly. 

---

Bangabandhu Space Satellite Tender-II 

BTRC manipulates evaluation to advantage small US Company

By David Bergman 


The Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission manipulated the results of a technical evaluation of tender proposal involving five international companies each of whom were bidding to assist the government in the launch of the country’s first space satellite to ensure that a small US company won the contract. 

A New Age investigation has found that Space Partnership International, which in March 2012 signed a $10 million consultancy contract with the government, only won the tender after another applicant, which had received a much higher score in the technical evaluation, was disqualified in highly contentious circumstances.

Inquiries also show that BTRC was aided in this manipulation by Space Partnership International which provided the regulator with misleading information

This disclosure comes a day after New Age reported that the winning company had not even met the minimum tender requirements and should not have been shortlisted for the technical evaluation.

In May 2011, a seven member evaluation committee led by one of the BTRC’s commissioners, Mallick Sudhir Chandra, and also comprising of three further BTRC staff members and three other non-BTRC government employees, started the process of technically evaluating the proposals of the five short-listed applicants.

According to the BTRC’s version, Space Partnership International, a small US company with barely a dozen employees, was the only applicant to obtain an average of more than 80 marks – requiring only its financial bid to be opened.

New Age can however reveal that one of the other five applicants, the large US public company Globecomm Systems Inc, received a far higher score. 

‘When the scores of all the evaluators were averaged, two of the companies received over 80 marks,’ one of the evaluators told New Age on the basis that his name would not be disclosed fearing repercussions. ‘Space Partnership International received 81 marks, but Globecomm received 92 marks.’

At a meeting of the committee in early June a piece of paper was distributed to the evaluators summarising all the marks given. 

‘I could see that not only had Globecomm received an average of over 90 marks, but that each of the seven members of the committee had given Globecomm over 90 marks,’ this person added. 
Another evaluator confirmed this scoring. 

It is at this stage, that New Age has learnt that the evaluation committee came under pressure from within the BTRC to disqualify Globecomm on the basis that it broke a condition in the tender which prohibited applicants from having tied to satellite manufacturers.

The claim that Globecomm was involved with manufacturing was first made in a letter, dated 8 June 2011 and titled ‘confidential’, which Space Partnership International’s managing director Bruce Krapelsky sent to the BTRC’s evaluation committee chairman.

The letter stated that Globecomm was ‘a manufacturer and supplier of ground-­based systems directly related to the satellite industry.’ 

Krapelsky supported this contention by pointing to wording on Globecomm’s website which refers to the company’s ‘engineering expertise’ having produced ‘a wide range of satellite and wireless terminal products’. 

On the basis of this letter, the evaluation committee disqualified Globecomm. ‘[I]t was found from the contents of [Globecomm’s] website that it was offering satellite earth stations and related equipments as its products,’ it stated. 

However space satellite experts have told New Age that it is not correct to claim that Globecomm was involved in manufacturing. 

Robert Bell, executive director of both the Society of Satellite Progesional International and the World Teleport Association, a US based satellite industry trade association whose members include Globecomm told New Age that, ‘The company is not a manufacturer. It is a system’s integrator.’ 
‘In the space satellite sector, there is a clear distinction between manufacturers who make the components and integrators who buy the already manufactured components and create a system from them,’ he added. ‘I have never heard of Globecomm being talked about as being involved in manufacturing,’

Andrew Smith, the President of Integral Systems Europe Limited, who once worked at Globecomm confirmed this. ‘The company has nothing whatsoever to do with the manufacturing of ground stations. They are not manufacturers but integrators.’ 

New Age can also confirmed that members on the BTRC’s evaluation committee, none of whom have any expertise in the satellite sector, did not seek any expert opinion on the accuracy of Space Partnership International’s claims. 

According to one evaluator, BTRC’s chairman in fact specifically rejected this suggestion at a meeting he arranged with the evaluation committee. 

‘It was suggested that it would be a good idea to get an expert to assess whether Globecomm should be disqualified. But the chairman said there was no time for that,’ a person who was present at the meeting told New Age.

In addition, if reference to ‘producing products’ and ‘engineering’ on a company’s website was the basis for disqualification, the application of Space Partnership International – the company that won – would also have to be under question. 

This is because the website of RKF Engineering Solutions Ltd, the company with which Space Partnership International had applied for the tender, has a whole section titled ‘products and services’ stating that ‘RKF offers a host of products’ and is ‘working with … manufacturers’. 

Globecomm appealed against its disqualification to a procurement review panel in September 2011.

At the hearing, BTRC supported its view that Globecomm had ties with manufacturers by claiming that the company had acquired a ground station division of the satellite manufacturer, Matra Marconi.

In response, Globecomm told the panel that the division purchased in England was not involved in the manufacture of satellites or earth station equipment, and that the subsidiary company that Globecomm had created to run the division was in any case closed down in 2006. 

The review panel however did not believe the company, and ruled that that ‘because Globecomm could not prove one of the vital conditions of the RFP documentarily … it is conclusive proof that Globecomm Systems Inc has a ties/interest with Matra Marconi who is a satellite manufacturer.’ 

Andrew Smith, who used to work for the Matra Marconi division before it was purchased by Globecom however told New Age that, the division ‘had nothing to do with manufacturing of satellite or ground system. It was just involved in earth station system integration.’ In addition, records filed with UK’s ‘Companies House’ corroborate what Globecomm story about the establishment and sale of the company.

Before Space Partnership International could sign the contract, however one further obstacle was placed in BTRC’s way and New Age has discovered that this forced the government regulator to change the actual scoring given by the technical evaluation committee.

‘In the middle of February 2010, six months after all the evaluations were done, I was asked to sign a sheet which had new scoring for Globecomm. In the new sheet, the total scoring for the company was now below 80,’ one of the evaluators told New Age.

This was confirmed by another committee member.

The BTRC changed the scoring as the cabinet’s purchase committee had asked to see the score sheet relating to the disqualified bidder. 

‘There was no meeting of the evaluation committee to consider this. I was told that since Globecomm had a conflict of interest which disqualified it, its technical scoring should be lowered,’ the person added. 

In response to a detailed set of questions about the evaluation process both Bruce Krapelsy, Space Partnership International’s Managing Director and Zia Ahmed, BTRC’s Chairman told New Age that the selection process was conducted ‘properly’ and that the company was selected because it was the best qualified.

Krapelsy said that, ‘Our focus is now on helping BTRC to achieve its objectives with respect to the construction, launch and implementation of the Bangabandhu satellite system.’ 

At an earlier meeting, when asked how such a small company managed to beat much bigger companies, Krapelsy told New Age that, ‘We found our way through as we were clearly the best. We brought a very unique combination of expertise to this project that none of the other players had from a complete perspective.’ 

The BTRC Chairman said that the, ‘Entire responsibility for the evaluation was with the evaluation committee. Whatever they recommended I sent to the government. I was not aware of what was going on with the evaluation.’ 

About whether he placed any pressure on the evaluation committee he said, ‘the Evaluation committee was absolutely free to decide on everything, and my point was only that they should consider all the [tender] requirements.’ 

He said that he did not know what happened at the purchase committee. ‘I was not present, it was the chairman of the assessment panel who attended.’

The chairman of the assessment panel decelined to comment. His term as commissioner ended on April 26, 2012. He is waiting to hear whether he will be reappointed commissioner for another term.

Iftekharuzzaman, executive director of Transparency International Bangladesh told New Age, ‘Before proceeding any further on the project the Government should constitute a full-fledged independent investigation in order to establish, without any bias or influence, if any violations took place, in which case the bidding process should be re-opened and the wrongdoers should be handed exemplary punishment,’

He also called on the US Government to ‘conduct due investigations … in case the US company or any associated quarter has been involved in any malpractice and abuse of power,’ he said, emphasising that the US ambassador was present at the contract signing ceremony.

Source — Bangladesh Politico 

Khaleda Zia corruption conviction: Meritorious or Malicious?


By David Bergman  


What should one make of the prosecution and conviction of Khaleda Zia, the leader of Bangladesh's main opposition party for offences involving alleged embezzlement of around Tk 21 million ($252,000)?

Khaleda Zia, was convicted in February 2018, and is currently in jail serving a five year sentence of imprisonment. In March, the High Court granted her bail pending an appeal, but this order was stayed by the Appellate Division which ruled that it would consider her bail application in a hearing on May 8. This court has now heard arguments and a much delayed decision will be given by the Appellate court on Wednesday.

Is there any merit in the case against her or is this just about malicious politics, to remove her from involvement in the elections as Lord Carlile, a member of her legal team (recently refused entry into Bangladesh) believes?

The context of the prosecution would of course suggest that it is political. Whilst all 15 of the criminal cases lodged against the current prime minister Sheikh Hasina before 2009 whilst she was out of power have been dismissed by the courts, 37 cases remain lodged against Khaleda Zia, the opposition leader. And of course there has been the Awami League government's various actions since 2011, including extra-judicial killings, disappearances and arbitrary arrests. which have sought to repress and weaken the opposition political parties. 

In the first section below, the basic facts of the current case are set out. In the second section, the prosecution allegations which have been accepted by the court are summarised And in the third section, there is an analysis of the prosecution case/conviction

1. Facts of the case
Below are the facts of the case 

The original money

A. In June 1991, a bank account was established in the government Sonali Bank, named, "Prime Minister's Orphanage Fund." It was set up by Dr. Kamal Uddin Siddique, Khaleda Zia's principal secretary.

B. A sum of $1.25 million - equivalent to Tk. 44. 5 million - was placed in the account

Money unused for two years

C. In the two years period, between June 1991 to September 1993, none of the money was disbursed.

Establishment of a Private Trust

D. In September 1993 a Trust named the 'Zia Orphanage Trust', was established with Khaleda Zia's two sons Tarique Rahman and Mr. Arafat Rahman and Khaleda Zia's late husband Ziaur Rahman's sister's son, Mr. Mominur Rahman as its trustees. The address of the trust was the same address where Khaleda Zia resided at the time. Tarique Rahman was appointed as the settlor of the Trust. The account could be operated under the signature of Mr. Tarique Rahman and either one of the other two signatories.

E. On November 13, 1993, the Prime Minister’s Office issued a cheque for Tk. 23 million (signed by Dr Kamal Siddique,) which was deposited in the Zia Orphanage Trust's bank account in Sonali Bank. (The remaining half of the money was put into a different Trust and is not relevant to this case)

Money continues to be unused for a further 13 years

F. For another 13 years, between 1993 to 2006, the money continued to be unused.

G. After accruing interest, by April 2006, the money was worth Tk33.7 million. 

Money moved to Prime Bank

H. In the four months between April and July 2006, the trustees issued a total of six cheques, worth Tk 33 million depositing them into a number of different bank accounts which were opened in Prime Bank, a private bank.

- A total of Tk 23 million was placed in three separate bank accounts (Tk 10 million, Tk 8 million and TK 5 million) each named Zia Orphanage Trust

- Tk 10 million was placed in the account of Salimul Haque. Haque was a businessman, a BNP MP at the time, and chairman of Prime Bank itself.

New Authority given to operate bank accounts

I. The Trustees passed a resolution on March 28, 2006 which conferred authority on:

- someone called MS Rahman to operate two of the bank accounts in the name of the Zia Ophanage Trust with a total of Tk 13 million (Tk 5 million and Tk 8 million). These two accounts remain operative.

- Salimul Haque to operate another two of the bank accounts - one which was in the name of Zia Orphanage Trust with a total of Tk 10 million, and the other account, which was held in his own name worth Tk10 million

More new accounts set up

J. In another resolution on October 15, 2006, the Trustees set up two new accounts in another branch within Prime Bank - one in the name of Gias Uddin Ahmed and another in the joint name of Salimul Haque and Syed Ahmed. 

K. Tk 10 million was moved from one of the existing Zia Orphanage accounts into Gias Uddin's account; and Tk 10 million was moved from the account of Salimul Haque into the new joint account of  Salimul Haque and Syed Ahmed. 

L. On February 7, 2007, the money was removed from the joint account of Salimul Haque and Syed Ahmed and  put into a new account in the sole name of Gias Uddin Ahmed. 

Money given to Shorfuddin Ahmed 

M. At this point, Gias Uddin controlled both accounts  In the form of six pay orders, Giasuddin then took the money out from the two accounts (which with interest now totalled Tk 21.07 million) and on March 28, 2007 deposited the money in the current account of Shorfuddin Ahmed which was located in the same bank. 

2. The prosecution allegation

Why does the prosecution/court consider that these facts amount to a crime? They argue that:

A. Khaleda Zia authorised the Tk. 44. 5 million to be deposited in June 1991 in the Sonali Bank account named the Prime Minister Orphanage Fund; 

B. The money was intended to be given to the government and was placed in a government bank account, the Prime Minister Orphanage Fund; 

C. Two years later, Khaleda Zia authorised Tk 23 million of the money to moved into a new bank account belonging to a private Trust called Zia Rahman Orphanage Trust whose Trustees were her two sons and nephew.

D. This transfer was illegal as the money was government money. This was the beginning of the process of embezzlement by Khaleda Zia. 

E. Although Khaleda Zia was not a trustee, she continued to have authority over the Trust and what happened to the money; 

F. Khaleda Zia was involved in all the subsequent actions (set out in detail above) involving the trust including;

- moving the money to prime bank; 
- setting up new accounts in the names of various people
- moving the money between accounts
 which finally resulted in Tk22.1 million of the money transferring into the private account of Shorfuddin Ahmed.

G. The transfer of the money to Shorfuddin Ahmed was the culmination of the embezzlement

The defence argument

A. The money came from the Emir of Kuwait and the initial account in Sonali Bank was set up on the initiative of Mustafizur Rahman (the then Foreign Minister) and that Khaleda Zia did not sign any document relating to the opening of this account nor did she operate it. 

B. The account was in all intents and purposes a private account and the term "prime minister" in the account name referred to the person, not to the office of the Prime Minister. The defence have produced a letter - though this was not given to the court - that purports to come from the Kuwait embassy that states, that "the donation was given to the Zia Orphanage Trust". This is the name of the private trust set up in 1993. The defence argue that by implication the money was not meant to be given to the government but to this private Trust. 

C. There is no documentary evidence that in 1993 Khaleda Zia was involved in transferring the money from the Sonali Bank account to the bank account of the new Trust. 

D. Khaleda Zia was not a trustee of the Trust and had no authority over decisions made by the Trust, so she cannot be held responsible for what happened to the money between 1993 and 2007 

E. The Trust gave the money to Shorfuddin as payment of land to be used for an Orphanage 

F. Shorfuddin gave the money back to the Trust following an order of a court in unconnected proceedings.


3. Analysis

There would certainly seem legitimate reasons why investigators might be suspicions about this particular pot of money. 

First, in the seventeen years, between 1991 (when the money was first given) and 2008 (when the investigation into the case started) none of the money was used for the purposes for which is was provided, that is to assist Orphans. 

Secondly, in 2006 and 2007, the Trust set up a series of new accounts in different people names, moved the money around these accounts, and finally put Tk 21 million (out of the Tk 33 million) into an account belonging to a particular person - who took the money out.

Why, one could ask, would a private orphanage trust, if it was legitimate, not spend any of its money on orphans for 15 years? At the very least this is surely serious dereliction of duty on the part of those entrusted with the money, and in particular the Trustees who were given responsibility for it in the previous 15 years. 

And why would a legitimate private Trust set up a series of new bank accounts, some under different people's names, and transfer its money between them in the way that it did? 

There does seem something rather fishy about all this. 

However, it is one thing to say that there seems gross failure in the utilisation of money - which there clearly was - and quite another thing to argue that Khaleda Zia has committed a criminal offence of embezzlement.

The prosecution case against Khaleda can be divided into two parts; the allegation that government money was transferred to a private trust in 1993; and then the claim that some of the money in the private Trust was embezzled by Khaleda Zia through various account transfers that took place in 2006/7.

Government to private money?

Was the money given by the Kuwait Emir a donation to the government or a donation to a private trust? This is a crucial matter as the prosecution's whole argument is based around the claim that government money was illegally removed and transferred into a private Trust.

At first glance it may seem obvious that the Kuwait Emir's donation was given to the Bangladesh 'government ' since it was put into an account called "The Prime Minister's Orphanage Fund." However, this may not have been the intention of the the Kuwait Emir, since a letter from the country's embassy dated  August 11, 2015 states that "the donation was given to the Zia Orphanage Trust". 

The Zia Orphanage Trust was created two years after the Kuwaiti Emir gave the money - so the meaning of the letter is confusing. However it is certainly possible to read this letter as meaning that the Kuwait government had agreed in 1991 that the money would be put into a private Trust, known as The Zia Orphanage Trust, and not given to the government. If this is so, then the initial placing of the money into an account named The Prime Minister's Orphanage Fund may well have simply been a stop-gap measure, and was not meant to be government money. 

One does not know for certain what were the intentions of the Kuwait Government - and this is because the investigators never sought to inquire from whom the money came, yet alone what was the intention of the Kuwait Emir. 

Section 405 of the Penal Code, the offence for which the opposition leader has been convicted, requires evidence of "misappropriation". But if the Emir of Kuwait intended that the money would be placed in a private trust, there would be no misappropriation .

It is difficult to see how a prosecution of this kind could take place - of indeed how a court could have reached the conclusions it did - without the authorities first making these inquiries.

Subsequent embezzlement

Was the money embezzled, and if so, was the money embezzled by Khaleda Zia?

The criminal court ruled, on the basis of the prosecution argument that, the embezzlement took place when Tk 21 million was transferred into the account of Shorfuddin Ahmed. It may well indeed be the case that this financial transfer was part of a criminal plan to steal the money - however the prosecution do not substantiate this claim very well. 

- it does not respond or engage at all with the defence argument that this money was part of a deal to buy property for the Orphanage. 

- it does not deal with the defence claim that because of a problem in the sale, and as a result of an unconnected court action, the money was apparently returned to the Trust account in 2007, before the investigation into the case started.

In addition, even if it can be proven that the money was transferred to Shorfuddin Ahmed's account in order to steal it - the prosecution provided no evidence that Khaleda Zia had any knowledge or involvement in any of the transfers that took place in 2006/7 and in particular the one to his account.* 

She was not a Trustee and the prosecution provided no evidence to support the contention that she was involved in making any decisions involving the Trust. 

It is true that one may have good reason to suspect that she could have had some influence over the decisions - the Trustees were Khaleda's two sons and her nephew, and the address of the Trust was also the family's home address where Khaleda also lived - but there is no direct evidence. The claim is supposition, and the prosecution/court do not engage with this lack of evidence simply stating as fact that Khaleda was part of the Trustee's decision-making process without providing any evidence.

This final argument would of course not exonerate the Trustees who did give clear authority about the transfer of the money to Shorfuddin Ahmed - but this would still first require the prosecution to clearly show that the money given to the Emir was intended to be given to the government and not to a private trust also that the transfer to Shorfuddin Ahmed was not intended to be used for the purposes of buying property for the Orphanage.

Conclusion

There is no doubt that serious questions are raised about the use or lack of use of this fund of money - and at the very least the Emir of Kuwait should be furious at the failure of the BNP opposition family to spend the money. The failure itself to use the money for the purpose it was given does raise questions as to whether there were any criminal intentions on the part of the Trustees.

However, moving from suspicion to criminal prosecution is a different matter, and it is clear there have been significant weaknesses in the current prosecution case which raise questions about whether legal action against Khaleda Zia was at all justified.   A much stronger case could be made against the Trustees - but even then there needs to be much greater clarity how the final transfer to Shorfuddin Ahmed was an attempt at embezzlement. And the prosecution have not yet shown that.
--- 

* Indeed, all in all, there is very little evidence linking Khaleda Zia to decisions involving the money from the Emir of Kuwait. In relation to the money going into the Prime Minister's Orphanage Fund in 1991, and then from the Fund to the Trust in 1993, there is no documentation supporting the claim that the movement of money was based on an instruction from Khaleda Zia. Indeed a number of civil servants present in the prime minister's office between 1991-3 confirmed this in oral testimony before the court. So for example, one stated, "Nowhere in the bank account, in the records received from the Prime Minister’s office and in the register of Prime Minister’s Orphanage Fund, there is a signature of Begum Khaleda Zia, nor is her name mentioned."

One assumes that the basis to the claim that Khaleda Zia was involved in these transfers of money is through implication - in that she must have been so involved as they were done by her private secretary. In addition there is testimony of one civil servant - which was in opposition to other evidence heard at the Trial - who said that, "The original file of the orphanage fund in its note sheet had the approval and signature of the Hon'ble Prime Minister."

Courtesy  —   Bangladesh Politico

বিরোধী দলীয় নেতাদের অব্যাহতভাবে আটকে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির প্রধান মার্ক গ্রিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অভিন্ন মূল্যাবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বন্ধুদের খোলামেলা ও আন্তরিকতার সাথে কথা বলা প্রয়োজন। বিরোধী দলীয় নেতৃবৃন্দের অব্যাহতভাবে আটক ও সাংবাদিকদের হয়রানি বাংলাদেশের অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর মত আমরাও উদ্বিগ্ন। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক অগ্রগতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের জন্য সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, যা এদেশের মানুষের মতামতের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাবে।

বাংলাদেশ সফর শেষে আজ আমেরিকান ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মার্ক গ্রিন এ সব কথা বলেন। এ সফরকালে তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। দীর্ঘ দিনে কংগ্রেসম্যান, রাষ্ট্রদূত ও মিলিনিয়াম চ্যালেঞ্জ অ্যাকাউন্টের বোর্ড অব ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালনকারী গ্রিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত।
  • কার্টেসিঃ নয়াদিগন্ত/মে ১৭, ২০১৮   

রাজস্ব ফাঁকি - ৪৭১ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য লুকিয়েছে গ্রেট ওয়াল

আব্বাস উদ্দিন নয়ন 

রাজস্ব ফাঁকি দিতে ছয় বছরে প্রায় ৪৭১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রির তথ্য লুকিয়েছে গ্রেট ওয়াল সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৮২৬ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করলেও ১ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা বিক্রির তথ্য প্রদর্শন করে সরকারকে বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সম্প্রতি গ্রেট ওয়াল সিরামিকের প্রধান কার্যালয় ও কারখানায় অভিযান চালিয়ে তথ্য গোপন করার প্রমাণ পায় এনবিআর। গোপনকৃত এ বিক্রয়মূল্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সুদসহ ১৮৩ কোটি টাকা দাবিনামা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি।

জানা গেছে, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরের আওতাধীন গ্রেট ওয়াল সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এ অনিয়ম তদন্ত করেছে এনবিআরের মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। মূসক চালান না দিয়েই গ্রেট ওয়াল সিরামিক পণ্য বিক্রি করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এনবিআরের নির্দেশে কোম্পানিটিতে অভিযান চালায় অধিদপ্তরের প্রিভেন্টিভ টিম।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেট ওয়াল সিরামিকের বিরুদ্ধে মূসক চালান না দিয়ে পণ্য সরবরাহ গোপন করার অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ তদন্ত পরিচালনার জন্য মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত দল গঠন করে অভিযান পরিচালনা করে অধিদপ্তর। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানটির গাজীপুরের কারখানা ও রাজধানীর হাতিরপুলে প্রধান কার্যালয় থেকে মূসক দাখিলপত্র, প্রকৃত বিক্রয় তথ্য ও আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ করে অধিদপ্তরের প্রিভেন্টিভ টিম। পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রদানকৃত মূসক চালানপত্র ও প্রকৃত বিক্রয় তথ্য যাচাই করে ছয় বছরে ৪৭১ কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করার প্রমাণ মেলে। গোপনকৃত বিক্রয়মূল্যের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ ১১৪ কোটি ৮২ লাখ এবং সুদ বাবদ ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা মিলে মোট ১৮২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা দাবিনামা জারি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এনবিআরের নির্দেশনা পেলেই কোম্পানিটিকে কারণ দর্শানোর নোটিসসহ দাবিনামা জারি করবে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তর।

গ্রেট ওয়ালের এ অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আ ফ ম আব্দুল্লাহ খান বণিক বার্তাকে বলেন, গোয়েন্দারা প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে গিয়ে বিক্রয় ও ভ্যাট পরিশোধের সব তথ্য-প্রমাণ দেখতে চান। প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা গোয়েন্দাদের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন, সেগুলোর সঙ্গে আগে সংগৃহীত তথ্যের গরমিল পাওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে তাদের সার্ভার ও কম্পিউটার থেকে প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে বড় ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিসের পর বকেয়া রাজস্ব আদায়ে তাদের বিরুদ্ধে কাস্টমস ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়েছে। এখন মূসক আইন অনুযায়ী তাদের রাজস্ব পরিশোধ করতে হবে।

এনবিআর বলছে, গোপনকৃত মূসকযোগ্য বিক্রয়মূল্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১-এর ৩, ৬, ৭, ৩১, ৩২ ও একই আইনের বিধি ১৬, ২৬ ও ২৩ এবং এনবিআরের প্রজ্ঞাপন ১৭৭/২০১০ অনুযায়ী কোম্পানিটির কাছে ১১৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা দাবি করেছে এনবিআর। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক বাবদ ৫৩ কোটি ৪০ লাখ ও মূসক বাবদ ৬১ কোটি ৪২ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। একই আইনের ৩৭(৩)-এর বিধান অনুযায়ী বকেয়া রাজস্বে মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ বাবদ আরো ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা দাবি করেছে সংস্থাটি।

এ বিষয়ে জানতে গ্রেট ওয়াল সিরামিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল হুদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে কোম্পানির এক কর্মকর্তা বলেন, এনবিআরের গোয়েন্দা দল হঠাৎ করেই কারখানা ও প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে গোয়েন্দারা কোম্পানির দেয়া তথ্য গ্রহণ না করে নিজেদের তথ্য ব্যবহার করেছে। এখন আইন অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কোম্পানি।

  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা/ মে ১৭, ২০১৮

Harassment at land offices

EDITORIAL


Speed up digitisation of land records


A recent hearing organised by the Anti-Corruption Commission on the harassment people faced when visiting land offices for tax and mutation issues brought out a plethora of complaints that ranged from non-cooperation to the issue of graft. We have written on this issue many times. The vast majority of service-seekers are common people as land is the most contentious of issues and they are given the runaround despite producing valid documents to prove ownership when it comes to mutation.

What has come to light from the hearing is that there are systemic problems related to the demand for bribes and other fraudulent activities. Service-seekers are given the runaround in many land offices on one pretext or another and those seeking redress may end up wasting months, if not years, in the hope of sorting out land-related issues. There is a general lack of professionalism in these offices and no real effort to improve efficiency.

Our land record system follows an antiquated system that British colonial rulers introduced—starting from surveys to property taxes. The various ministries that oversee the records system have little coordination. Because land deeds are still prepared by hand, there are bound to be mistakes. And this opens the door for corruption, which is where brokers come in to move papers faster.

The only way out of this quagmire is to speed up the digitisation of land records, which was initiated in 2011 and will allow authorities, landowners or buyers to have access to documents in an online database.

  • Courtesy: The Daily Star/ Editorial/ May 17, 2018

খুলনা সিটিতে ‘নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচনের নতুন রূপ

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছিল এই শহরের মানুষের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা না বাধিয়ে কেবল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে এবং প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে ভোট নেওয়ার এমন দৃশ্য এই শহরের মানুষ আগে দেখেনি।
নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার সব ব্যবস্থাই ছিল-পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেট ও টহল। এর মধ্যেই প্রতিপক্ষের এজেন্ট বের করে দেওয়া, দল বেঁধে বুথে ঢুকে ব্যালটে সিল মারা, বাবার সঙ্গে শিশুর ভোট দেওয়া, দল বেঁধে জাল ভোট দেওয়া, ভোটারদের প্রকাশ্যে ব্যালটে সিল মারতে বাধ্য করা, দুপুরের আগেই ব্যালট শেষ হওয়াসহ নানা ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়। কোথাও কোথাও ছিল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীদের সহযোগিতার ভূমিকায়।

এই নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতাও বেশ স্পষ্ট হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকলেও তারা সেভাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ফলে বিভিন্ন প্রার্থী ভোটের আগে ও ভোটের দিন নানা অভিযোগ করলেও কমিশন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।


মঙ্গলবার সকালে ভোট শুরুর পরপর বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়ার খবর আসতে থাকলেও কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল ভালো। বিক্ষিপ্ত কিছু কেন্দ্র ছাড়া পরিবেশও ভালো ছিল। মূলত বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ভোটের পরিবেশ পাল্টাতে থাকে। বিভিন্ন কেন্দ্রে সরকারি দলের কর্মীরা ঢুকে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে। যেসব কেন্দ্রে এসব হয়েছে, তা আধঘণ্টার বেশি স্থায়ী ছিল না। এরপর তারা সটকে পড়ে, সুযোগ বুঝে আবার ফিরে আসে। তারা ফিরে যাওয়ার পরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয় হয় শৃঙ্খলা রক্ষার নামে। ততক্ষণে সাধারণ ভোটার আতঙ্কিত হয়ে কেন্দ্র ছাড়েন। আর, এসব চলে বেলা সাড়ে ১১ থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় সবচেয়ে বেশি। তবে শেষ সময় পর্যন্ত এ ধরনের খবর আসতে থাকে। ফলে দুপুরের পর ওই সব কেন্দ্রে তেমন ভোটার দেখা যায়নি।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সরকারি দলের কাউন্সিলর প্রার্থীর লোকজন দলীয় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যালটেই সিল মারে। সিল মারা ব্যালট বিভিন্ন কেন্দ্রে পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। যা পরে সংবাদকর্মীরা ক্যামেরায় ধারণ করেন।


বুথ দখল করে একটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে সিল মারা হচ্ছে। পরে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়। ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় কেন্দ্র, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: টিপু সুলতান

প্রথম আলোর আটজন সংবাদকর্মী দিনভর ৮০টি কেন্দ্র ঘুরেছেন। প্রায় সব কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের জটলা দেখা যায়। তাঁরা কার্যত কেন্দ্রের প্রবেশমুখ নিয়ন্ত্রণ করেন। ভোটার, পর্যবেক্ষক যে-ই আসুন, তাঁরা নজরদারি করেন।

১৫ মের নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, অন্তত ৫৪টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। খুলনার খালিশপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবাটি হাজি শরীয়তউল্লাহ বিদ্যাপীঠ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮১৭ জন। ভোট গণনা শেষে দেখা গেল, এই কেন্দ্রে মাত্র একজন ছাড়া বাকি সবাই ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী পেয়েছেন ১ হাজার ১১৪ ভোট। ধানের শীষ পেয়েছে ৩৭৩ ভোট। ভোটের হার ৯৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

এ রকম অস্বাভাবিক হারে ভোট পড়েছে আরও একটি ভোটকেন্দ্রে। খালিশপুরেরই ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠ কেন্দ্রে (স্কুলভবনের দ্বিতীয় তলা) মোট ভোটার ১ হাজার ৫০৩ জন। ভোট পড়েছে ১ হাজার ৪৬৭টি। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৯৯৭ ভোট। ধানের শীষের পক্ষে পড়েছে ৩৯০। ভোটের হার ৯৭ দশমিক ৬০ শতাংশ।


ভোটকেন্দ্রে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের একজন পোলিং এজেন্ট। তবে কেন্দ্রে ছিল না অন্য কোনো দলের পোলিং এজেন্ট। এইচ আর এইচ প্রিন্স আগাখান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা, ১৫ মে। ছবি: সাইফুল ইসলাম

নতুন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ১৫০৮। ভোট পড়েছে ১৩৭৮টি। ভোটের হার ৯১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

অথচ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের গড় হার ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। তিনটি কেন্দ্রে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ৮৫ শতাংশের বেশি ভোট বেশি পড়েছে ৩ কেন্দ্রে। ছয়টি কেন্দ্রে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ৭৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে ১২ কেন্দ্রে। ৩০ কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশের বেশি।

ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। শহরের বসুপাড়ায় নুরানি বহুমুখী মাদ্রাসা কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক দলের একজন সদস্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় একজন নেতার হাতে অপদস্থ হন। তিনি বিষয়টি মোবাইল ফোনে তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে নিজেই কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান। তখন পেছন থেকে তাঁকে একরকম ধাওয়া করা হয়।

প্রায় সব ভোটকেন্দ্রের অনতিদূরে নৌকা প্রতীকের একটি করে অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় ছিল। সকাল সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে তাঁরা সেখানে অবস্থান নেন। অনেক কেন্দ্রে বিএনপির পোলিং এজেন্টরা সেখানে প্রথম বাধা পান। অনেকে শারীরিকভাবে আঘাত বা অপমান-অপদস্থ হয়ে সেখান থেকে ফিরে গেছেন। গণমাধ্যমের কর্মীরা কেন্দ্রে পৌঁছার আগেই, অর্থাৎ সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরুর আধঘণ্টা বা পৌনে এক ঘণ্টার আগেই এক দফা এ ঘটনাগুলো ঘটে।

ভোটের দিন নির্বাচনী এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকেরা গাড়ি ও মোটরসাইকেলে নৌকা প্রতীকের স্টিকার লাগিয়ে অবাধে চলাচল করেন। এ ব্যাপারে একজন মোটরসাইকেলচালক ছাড়া পুলিশ বা ভ্রাম্যমাণ আদালত কাউকে শাস্তি বা অর্থদণ্ড করেছেন, এমন খবর পাওয়া যায়নি।

তবে রাতে ভোট গণনা শেষে যে ফলাফল আসে, তাতে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ভোটারের মধ্যে ৩ লাখ ৬ হাজার ৬৩৬ ভোট পান পাঁচ মেয়র প্রার্থী। বাতিল হয় ৬ হাজার ৫৬৫ ভোট। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৭৮ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী হন। বিএনপিসহ অন্য চার মেয়র প্রার্থী পেয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ভোট। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু পান ১ লাখ ৯ হাজার ২৫১ ভোট।

কিন্তু প্রথম আলোর আটজন সংবাদকর্মী ৮০টি কেন্দ্র ঘুরে ধানের শীষ ব্যাজধারী বিএনপির ৮০ জন নেতা বা কর্মীকেও দেখতে পাননি।

তাহলে এই বিপুলসংখ্যক ভোট কারা, কখন দিল? কারণ, লাইনে দাঁড়ানো, ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সময় বা বুথফেরত অধিকাংশ ভোটারের হাতে ছিল নৌকা প্রতীকের ভোটার স্লিপ বা বুকে ছিল ব্যাজ। বিষয়টি খোদ তালুকদার আবদুল খালেককেও ভাবিয়েছে।

গতকাল বিজয়-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তালুকদার খালেক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোটের দিন আমাদের কর্মীদের পরিচিতি ছিল, তারা নৌকার ব্যাজ পরে ছিল। কিন্তু আমি সারা দিন বিএনপির প্রতীকের ব্যাজধারী কাউকে কোনো কেন্দ্রে দেখিনি। এত ভোট কোত্থেকে এল!’


খুলনার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে সোনাপোতা স্কুল কেন্দ্রে নারী ভোটকেন্দ্রের সামনে বিএনপির প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: প্রথম আলো

তালুকদার খালেক দাবি করেন, ভোট অবাধ, সুষ্ঠু হয়েছে। কেবল কিছু কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীরা কিছু বিশৃঙ্খলা করেছে। তার দায় তিনি নেবেন না।

তবে মোট যে ভোট পড়েছে, তা হিসাব করে দেখা যায়, কাউন্সিলরদের ভোটের চেয়ে মেয়র ভোট ৪১১টি বেশি পড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, কেবল কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারও কারও জন্য বুথ দখল বা জাল ভোট দেওয়া হলে মেয়র প্রার্থীদের মোট ভোটের সংখ্যা কম হতো।

তালুকদার খালেককে দীর্ঘদিন থেকে জানেন, খুলনা শহরের এমন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের কয়েকজনের সঙ্গে গতকাল এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা বলেন, খালেক সেই ব্যক্তি, যিনি ২০১৩ সালে মেয়র নির্বাচনে বিনা বাক্যে পরাজয় মেনে নিয়েছিলেন। তাঁর মতো ব্যক্তি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকদের পুলিশ দিয়ে মাঠছাড়া করে এভাবে জিতবেন এবং তাতে তাঁর সায় থাকবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেনি। এই শহরের মানুষ এ ধরনের নিয়ন্ত্রিত ভোটও আগে কখনো দেখেনি।

এর মধ্যে সিপিবির মেয়র পদপ্রার্থী মিজানুর রহমান অনেকটা আক্ষেপ করে প্রথম আলোকে বলেন, এই নির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেক মেয়র হলেন, কিন্তু বিসর্জন দিলেন তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। এই মন্তব্য সম্পর্কে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তালুকদার খালেককে প্রশ্ন করা হলেও তিনি এড়িয়ে যান। 

বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দাবি, খুলনায় ভোট ডাকাতির একটা নতুন সংস্করণ হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তার একটা মহড়া হয়ে গেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনেরও একটা পরীক্ষা হয়েছে। তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সচেতন নাগরিক কমিটির খুলনার সভাপতি আনোয়ারুল কাদির নির্বাচন কমিশনের ভিজিল্যান্স টিমের সদস্য। তিনি ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা রেখেছে, তেমনটা যদি জাতীয় নির্বাচনে রাখে, তবে সেই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে। কমিশনের উচিত হবে খুলনার নির্বাচনের ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নেওয়া।
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/মে ১৭, ২০১৮