Search

Wednesday, May 23, 2018

সরকারি ব্যাংকের ঋণপত্রের টাকাও এখন খেলাপি!







  •  রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংক
  •  নন-ফান্ডেড ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদে শোধ না করায় ফান্ডেড বা নগদ দায়ে পরিণত হচ্ছে।
  •  এরপরও এ ঋণগুলো ধীরে ধীরে খেলাপি হয়ে পড়ছে।


কারখানার জন্য বিদেশ থেকে মূলধনি যন্ত্র ও কাঁচামাল আনেন শিল্পোদ্যোক্তারা। এ জন্য ব্যাংক তাঁদের ঋণপত্র সুবিধা দেয়, যা নন-ফান্ডেড ঋণ নামে পরিচিত। নগদ টাকার পরিবর্তে অন্য যেসব সুবিধা মিলে, তার সবই নন-ফান্ডেড। তবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো থেকে ঋণপত্র, গ্যারান্টিসহ বিভিন্ন নামে নেওয়া নন-ফান্ডেড ঋণ নির্দিষ্ট মেয়াদে শোধ করছেন না অনেকে। ফলে এসব ঋণ ফান্ডেড বা নগদ দায়ে পরিণত হচ্ছে। এরপরও শোধ না করায় এ ঋণগুলো ধীরে ধীরে খেলাপি হয়ে পড়ছে। তাতে এসব ব্যাংকের জন্য নন-ফান্ডেড দায় এখন বড় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী—রাষ্ট্রমালিকানাধীন এ চার ব্যাংকে ২০১৭ সালে ১৮ হাজার ৮৯১ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ বর্তমানে ফান্ডেড দায়ে পরিণত হয়েছে। আবার এর মধ্যে ৪ হাজার ১৪২ কোটি টাকার ঋণ ২০১৭ সালে খেলাপির খাতায় নাম লিখিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি মাসে এ চার ব্যাংকের সঙ্গে এক সভা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ব্যাংকগুলোর ২০১৭ সালের আর্থিক চিত্র উপস্থাপন করা হয়। এতেও উঠে আসে নতুন করে নন-ফান্ডেড ঋণ খেলাপি হওয়ার তথ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে সোনালী ব্যাংকের ২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ ফান্ডেড ঋণে পরিণত হয়। এর মধ্যে আবার ১ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে গত বছরই। ফলে ২০১৭ সালে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা, ২০১৬ সালে যা ছিল ১০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা।

খেলাপির পরিমাণ বাড়ার পরও ২০১৭ সালে ৭০৯ কোটি টাকা প্রকৃত বা নিট মুনাফা করেছে সোনালী ব্যাংক। কারণ, রাষ্ট্রমালিকানাধীন এ ব্যাংককে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সুবিধার কারণে ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির যে ঘাটতি দেখা দেয়, ২০১৭ সালের আর্থিক হিসাবে তা পূরণ করতে হয়নি। এমনকি এ সঞ্চিতি সংরক্ষণ থেকে ব্যাংকটিকে পুরোপুরি অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপি ঋণ কমাতে না পেরে এ কৌশলের আশ্রয় নেয় সোনালী ব্যাংক।

এদিকে অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের মতো বড় ধরনের ঋণ অনিয়ম নিয়ে আলোচনায় থাকা জনতা ব্যাংকের ২০১৭ সালে ১৩ হাজার ২৬ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ ফান্ডেড দায়ে পরিণত হয়েছে। আবার এর মধ্যে ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। ফলে ২০১৭ সাল শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। আগের বছরই ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। এরপরও ব্যাংকটি গত বছর ২৭৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় ব্যাংকটি মুনাফা দেখানোর সুযোগ পেয়েছে।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু নন-ফান্ডেড ঋণ ফান্ডেড হয়ে গেছে। তবে তা খুব বড় অঙ্কের নয়। আমরা নতুন করে ঋণপত্র খোলায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছি। যাচাই-বাছাই করেই নন-ফান্ডেড দায় তৈরি করা হচ্ছে।’

অগ্রণী ব্যাংকে ২০১৭ সালে ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ ফান্ডেড দায়ে পরিণত হয়। আর এর মধ্যে ৩৬৩ কোটি টাকার ফান্ডেড ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। ২০১৬ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৬ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা, তবে গত বছর তা কমে হয়েছে ৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এদিকে গত বছর ব্যাংকটি ৬৯৩ কোটি টাকা প্রকৃত মুনাফা করে। ২০১৬ সালেও ব্যাংকটি ৬৯৭ কোটি টাকা লোকসান গুনেছিল।

এদিকে রূপালী ব্যাংকে গত বছর ৫১৯ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ ফান্ডেড দায়ে পরিণত হয়। ফান্ডেড হওয়া ৭৬১ কোটি টাকা ২০১৭ সালে খেলাপি হয়ে পড়ে। ফলে গত বছর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। বিশেষ সুবিধা নিয়ে গত বছর ৬০ কোটি টাকা মুনাফা করে ব্যাংকটি। যদিও ২০১৬ সালে ১২১ কোটি টাকা লোকসান করেছিল।

রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যবসায়ীদের বিলম্ব ঋণপত্র সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। কম সুদ হওয়ায় অনেকেই এ সুবিধা নিয়েছেন। তাঁদের অনেকে খেলাপি হয়ে গেছেন।’

হল-মার্ক কেলেঙ্কারির পর রাষ্ট্রমালিকানাধীন এই চার ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, নির্বাহী কমিটি ও নিরীক্ষা কমিটির সভায় উপস্থিত থেকে মতামত দেন। এরপরও ব্যাংকগুলোর পর্ষদে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে। অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট, যে দুই বড় গ্রাহক নিয়ে জনতা ব্যাংক বিপদে পড়েছে, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধির উপস্থিতিতেই অনুমোদিত হয়।

  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো / মে ২২,২০১৮ 

Tuesday, May 22, 2018

ক্রসফায়ার বনাম আইন-বিচার



ড. রমিত আজাদ 



একজন ব্যাক্তিকে দোষারোপ করা হলেই তিনি অপরাধী নন। তাকে আসামী না বলে অভিযুক্ত বলাই ঠিক। অভিযুক্ত ব্যাক্তিটি দোষী কি নির্দোষ সেটা প্রমাণ সাপেক্ষ। আর এ জন্যই রয়েছে আদালত। সেখানে তার পক্ষ-বিপক্ষ হয়ে ডিবেট করেন মিনিমাম দুজন আইনজ্ঞ। সেই ডিবেট শোনেন একজন আইনজ্ঞ বিজ্ঞ বিচারক। ডিবেটের ফল হিসাবেই বিচারক রায় ঘোষণা করেন, অভিযুক্ত দোষী কি নির্দোষ, দোষী হলে তার শাস্তির মাত্রা কি হবে। বিচার মাত্র একদিনে হয় না। 




জ্ঞানী সক্রেটিসের বিচার হয়েছিলো মাত্র একদিনে, আর তিনি তার প্রতিবাদ করেছিলেন, যথেষ্ট সময় নিয়ে অনেকগুলো দিনে ধাপে ধাপে বিচার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিলো অভিযুক্ত যেন আত্মপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সময় পায়, আইনজ্ঞরা যেন তথ্য-প্রমাণ হাজির করার ও আলাপ-আলোচনা করার যথেষ্ট সময় পান এবং সর্বোপরি বিচারকও যেন চিন্তা-ভাবনা করার পর্যাপ্ত সময় পান। মাত্র একদিনে সম্পাদিত সক্রেটিসের বিচারের রায় মানব জাতির জন্য একটা বিপর্যয় ছিলো। তবে ঐ থেকে মানুষ শিক্ষা নিয়েছিলো ও বিচার প্রক্রিয়াকে সংশোধন করেছিলো। পরে বিচার প্রক্রিয়ার আরও উন্নতি হয়েছে। আধুনিক যুগে বিচারও হয় কয়েকবার, কয়েকটি আদালতে। নিম্ন আদালতে বিচারের রায় সঠিক হয়নি অভিযুক্ত এমন মনে করলে, তিনি আপ‌িল করে উচ্চ আদালতে নতুন করে বিচারের আবেদন করতে পারেন, এতে আদালত অবমাননা হয় না। এরপর উচ্চ আদালতে অধিকতর জ্ঞানী ও দক্ষ আইনজ্ঞ এবং বিচারকরা নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এমন উদাহরণের কোন অভাব নাই যে, নিম্ন আদালত যেই অভিযুক্তকে অপরাধী বলে সাব্যস্ত করেছিলো ও তীব্র শাস্তি দিয়েছিলো, উচ্চ আদালত সেই একই অভিযুক্তকে নির্দোষ বলে খালাস দিয়েছিলো। এই সব মিলিয়েই তো বিচার ব্যবস্থা।





কিন্তু একজন অভিযুক্তকে কোনরূপ বিচারের আওতায় না এনে সরাসরি ক্রসফায়ারে দিয়ে তার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে ফেললে আইন, আদালত, বিচার ও শাস্তি এই সবকিছু কি অর্থহীন হয়ে যায় না?


  • লেখক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক । 

ঢাকায় প্রাণঘাতী সুপারবাগ মহামারী আতংক!

রাজধানী ঢাকার ড্রেন ও জলায় কার্বাপেনেম, কলিস্টিন রেজিস্ট্যান্ট ই. কোলাই (সুপারবাগ) পাওয়া যাচ্ছে।

সুপারবাগ নিয়ে ভয় পাওয়ার কারণ হল - এগুলো দিয়ে ইনফেকশান হলে চিকিৎসা করা খুব কঠিন। হয়তো আপনার ফুসফুসে বা প্রস্রাবে এরকম ইনফেকশান হল। প্রচলিত কোন অ্যান্টিবায়োটিকে আর কাজ হবে না।
মেডিকেল জার্নাল ওয়েবসাইট পাবমেড এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি ও অবহেলায়  রাজধানী ঢাকার ড্রেন ও জলাগুলো বিষাক্ত হয়ে পড়েছে।

  • তথ্যসূত্র —  jugantor.com/মে ২০, ২০১৮। 


খাদ্যে ভেজাল-বিষ মানদণ্ডে, বাংলাদেশ কী পৃথিবীতে শীর্ষে?

গোলাম মোর্তোজা

বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ফল পাকানোর কথা, বাংলাদেশের সব মানুষই কম বেশি জানেন। অফিসে একজন বলছিলেন, বেল ছাড়া কোনো ফলই খাওয়ার উপায় নেই। সবই বিষ মিশ্রিত, ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর!
বললাম, দেশীয় ফলের মধ্যে আনারসে বিষ মেশানো হয় না। আনারস খাওয়া যায়। দেশে এখন আনারস আবাদের পরিমাণ এত বেড়েছে যে, বিষ দিয়ে পাকানোর প্রয়োজন হয় না। আনারসেও বিষ মেশানো হয়, আলোচনায় সে কথা সবাই বললেন। একমত হতে পারলাম না। ধারণা ছিল, আনারস এবং তরমুজে কোনো বিষ মেশানো হয় না।

গত দু’ সপ্তাহে দুবার ‘একটি কুড়ি দুটি পাতার দেশ শ্রীমঙ্গল গিয়েছিলাম। বর্ষার চা বাগান আর প্রকৃতির আকর্ষণে। শ্রীমঙ্গলে ঢোকার আগে থেকেই রাস্তার দুপাশে আনারস নিয়ে বসে আছেন খুচরা বিক্রেতারা। গাছ পাকা বা খেত পাকা আনারস। মাত্র বাগান থেকে আনা হচ্ছে, টকটকে রঙিন আনারস। পৃথিবীর অন্যতম সুস্বাদু এই আনারস ৩০ বা ৪০ টাকা হালি। দামাদামি করলে আরও কমে কেনা যায়।

পরের সকালে বের হয়েছি। সেই রকম বৃষ্টি, যে রকম বৃষ্টি ঢাকার শহরে অনুধাবন করা যায় না। এর মধ্যে ছোট ছোট ঠেলা গাড়ি ভর্তি আনারস, কাঁঠাল, লিচু নিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছেন। এসব ঠেলা চালকরা বিক্রি করতে পারেন না।

আনারস বাগান কোথায়?- প্রশ্নের উত্তরে ‘এই দিক দিয়ে, ওই দিকে যান। কিন্তু বাগানের আনারস তো কাঁচা। এখন সিজন শুরু হয়নি। বাগানে গিয়ে পাবেন না।’

এগুলো কি পাকা না?

‘এগুলো তো বিষ দিয়ে পাকানো।’

গতকাল রাস্তা থেকে কিনেছিলাম, সেগুলো তো পাকা ছিল।

‘সব বিষ দিয়ে পাকানো। আনারস পাকার সময় হয় নাই এখনও।’

কাঁঠাল নিয়ে যাওয়া ঠেলাওয়ালারা জানালেন, এগুলো ভালো না। ‘ঘাই’ দিয়ে পাকানো। ‘ঘাই’ মানে পেরেক জাতীয় কিছু একটা দিয়ে বোটার দিক  ফুটো করে বিষ দিয়ে পাকানো।

বাগান থেকে কাঁঠাল এনে রাস্তায় জড়ো করা হচ্ছে। তারাও স্বীকার করলেন ‘ঘাই’ দিয়ে পাকানো। বেছে দু’টি কাঁঠাল দিয়ে বললেন ‘ভালো আছে’ নিয়ে যান। দাম মাত্র ১০০ টাকা। কাঁচা একটি কাঁঠাল দিলেন, টাকা নিলেন না। রেস্ট হাউজে এনে দেখা গেল, নরম পাকা কাঁঠালের কোষগুলো সাদা, মিষ্টি তো নয়ই- খাবার অনুপযোগী স্বাদ। কাঁচা কাঁঠালকে ‘ঘাই’ দিয়ে পাকানো হয়েছে।

আনারস বাগানে গিয়ে দেখি, সত্যি সত্যি বাগানভর্তি কাঁচা আনারস। একটি আনারসও পাকেনি। বৃষ্টির সকালে, বাগানে কেউ নেই। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর একজনকে পাওয়া গেল। তিনি স্থানীয়, বাগানের কেউ নন। জানালেন, আনারস পাকতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে। বিষ দিয়ে পাকানোর বিষয়টি তিনিও নিশ্চিত করলেন।

কৌতূহলবশত দুটি কাঁচা আনারস বাগান থেকে সংগ্রহ করলাম। কাটার পর দেখা গেল সবুজ আনারসের ভেতরটা প্রায় সাদা, কিন্তু খেতে সুস্বাদু। আর কয়েকদিন পর পাকলে, বাইরে-ভেতরে রঙ এবং স্বাদ দুটোই পরিপূর্ণ হবে।

অপূর্ণ, অপ্রাপ্ত বয়স্ক কাঁঠাল-আনারস পাকানোর এমন ঘটনা জেনে মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেল।

২. আনারস শুরু থেকে পাকা পর্যন্ত ৩ মাস সময় লাগে। বেশি লাভের লোভে, দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে আনারস পাকানোর ব্যবস্থা করা হয়। একটু অনুসন্ধান করতে গিয়েই বিষয়টি জানলাম। আনারসের ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে সুপারফিক্স নামক একটি হরমোন স্প্রে করা হয়। যার ফলে অতি দ্রুত বড় হয়। অপরিণত আনারস ফুলেফেঁপে বড় হয়ে ওঠে। মাস দেড়েক পরে মানে প্রাকৃতিক নিয়মে পাকার মাস দেড়েক আগে, বিষাক্ত রাইপেন- ইথোফেন স্প্রে করা হয়। স্প্রে করার এক থেকে তিন দিনের মধ্যে বাগানের সব আনারস এক সঙ্গে পেকে টকটকে রঙ ধারণ করে। তারপর স্প্রে করা হয় ফরমালিন। যা আনারসকে পচন থেকে রক্ষা করে। ফরমালিন স্প্রের পরের দিন বাগানের সব আনারস তোলা হয়। পাইকাররা কিনে বাজারে নিয়ে আসেন।

তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাঁচা আনারস বাগান থেকে তুলে ক্যালসিয়াম কার্বাইড স্প্রে করে পাকানো হয়। পচন ঠেকানোর জন্যে দেওয়া হয় ফরমালিন।

৩. মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাঁঠালের দাম বেশি পাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় ভাষায় ‘ঘাই’ দিয়ে পাকানোর কথা, উপরে লিখেছি।

রোজার সময়ের আরেকটি অপরিহার্য ফল কলা। বাংলাদেশে সবরি- চাপা- সাগর কলা উৎপাদন হয়। সময়ের আগে কলায় বিশেষ করে সবরি কলায় হরমোন স্প্রে করা হয়। অপরিণত কলা কেরোসিনের স্টোভের হিট দিয়ে নরম করা হয়। রাইপেন- ইথোফেন বা কার্বাইড স্প্রে করে পাকানো হয়। স্প্রে করার আগে কলা পরিষ্কার করা হয় সার্ফএক্সেল বা শ্যাম্পু দিয়ে। পাকানোর এই বিষাক্ত পদ্ধতি বাদামতলি থেকে কারওয়ানবাজার এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলার আড়তে অনুসরণ করা হয়ে থাকে। বিষাক্ত কলা বাজার থেকে কিনে খায় মানুষ।

ঈশ্বরদীর লিচু বাগান, যেকোনো মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয়। লিচু বাগানে গেলে, আকার- পরিমাণ দেখে বিস্মিত হতে হয়। সেই লিচুতেও পাঁচ থেকে ছয়বার কীটনাশক স্প্রে করা হয়। ঝড়ে না পড়া, বোটা শক্ত, বৃদ্ধি, রঙ চকচকে করাসহ সব কিছুর জন্য বিষ দেওয়া হয়।

কাঁচা পেঁপে পাকানো হয়, রাইপেন- ইথোফেন স্প্রে করে। বাইরের আবরণ দেখে মনে হয় পাকা। আসলে কাঁচা। পেঁপে বিষ দিয়ে পাকানোয় খাওয়ার অনুপযুক্ত থাকে। কোনোটা খাওয়া গেলেও তাতে, পেঁপের স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ থাকে না। এসব পাকা পেঁপেতে বিষ জাতীয় যা থাকে তা মানব দেহের জন্যে অত্যন্ত ক্ষতিকর।

সবচেয়ে সুস্বাদু ফল আম। আরও এক মাস আগে থেকে বাজারে আম উঠেছে। এসবই কাঁচা অপরিণত আম, বিষ দিয়ে পাকানো।

মাছে ফরমালিন। সবজিসহ সবকিছুতেই বিষ।

৪. সত্যি, বাজারে বেল ছাড়া আর কোনো ফল দেখছি না, যা পাকানোর ক্ষেত্রে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়নি। কী এক ভয়ঙ্কর দেশের মানুষ আমরা। আমাদের সব ফল, ভয়ঙ্কর বিষ মেশানো। প্রকৃতি নয়, বিষ মিশিয়ে আপনাকে খাওয়াচ্ছে মানুষ। একেবারে সাধারণ চাষি থেকে ছোট- বড় ব্যবসায়ী, সবাই এমন অন্যায়- অনৈতিক কাজ করছেন। লিচু বা আম বাগানগুলো মুকুল আসার আগে- পরে বড় ব্যবসায়ী, সুপার শপগুলো কিনে নেয়। বিষ মেশানোর অপকর্ম তারাও করে। কারও বিবেক স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। মুনাফাই তাদের কাছে শেষ কথা, মানুষের জীবন নয়।

ফলে যে বিষ দেওয়া হয়, তা একবারে পরিমাণ মত খেলে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষ মারা যায়। চাষি বা ব্যবসায়ীরা আপনাকে একবারে বিষ খাইয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যা করছেন না। তারা আপনাকে হত্যা করছেন ধীরে ধীরে। এসব বিষ ফল- সবজি- মাছের সঙ্গে শরীরে ঢুকছে। ফুসফুস- পাকস্থলী- কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শরীরে বাসা বাঁধছে ক্যান্সার। মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, বুঝতে পারছেন না।

আমদানি করা আপেল- আঙ্গুরের অবস্থা তো আরও খারাপ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রায় খাবার অনুপযোগী। পচা খেজুর আমদানি করা হয়।

৫. ঠিক জানি না,সমাজের সর্বস্তরে এমন অবক্ষয়- অনৈতিকতা, এই মাত্রায় আর কোনো দেশে আছে কিনা! ভারত- পাকিস্তান- শ্রীলংকা- নেপাল- ভুটানে নেই। যত দূর জানি মিয়ানমারের অবস্থাও এমন নয়। থাইল্যান্ড- মালয়েশিয়া- সিঙ্গাপুর- দক্ষিণ কোরিয়া- জাপান কোনো দেশের মানুষ খাদ্যে ভেজাল বা বিষ মেশানোর কথা চিন্তা করতে পারে না।

ইউরোপ- উত্তর আমেরিকায় ফল বা খাবারে ভেজাল বা বিষের কথা কল্পনাও করা যায় না। দক্ষিণ আফ্রিকায় দিনে দুপুরে ছিনতাইকারীরা মানুষ হত্যা করে মাঝেমধ্যেই। কিন্তু প্রকৃতির ফলে বা খাবারে তারা বিষ মেশায় না। ল্যাটিন আমেরিকার মেক্সিকো, ব্রাজিলের কথা জানি, তাদের সমাজও এমন নয়। এর বাইরের পৃথিবী নিজে সরাসরি দেখিনি। খোঁজ নিয়ে যতটা জেনেছি, খাবারে বিষের মত অনৈতিকতার এমন তথ্য কোথাও পাইনি। কোনো জরিপ হলে, খাবারে ভেজাল বা বিষ মেশানোর মানদণ্ডে, পৃথিবীতে বাংলাদেশই কী প্রথম স্থান অধিকার করবে?

৬. ছোট দোকানিরা তো বটেই, সুপার শপগুলোও মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার বিক্রি করে।  বোতলজাত পানির কোনোটাতেই যেসব উপাদান থাকার কথা লেখা থাকে, তা বাস্তবে থাকে না। মোটা ইরি চাল মেশিনে সরু করে কেটে, মিনিকেট নামে বেশি দামে বিক্রি হয়। মিনিকেট নামে কোনো ধান বা চাল নেই। প্রকাশ্যেই এমন প্রতারণা চলছে। লাল চালের চাহিদা বাড়ছে। সাদা চালকে রঙ করে লাল করা হচ্ছে। দুধে শুধু পানি নয়, শ্যাম্পু জাতীয় নানা কিছু মেশানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘি নামে বাজারে যা বিক্রি হয়, তার সঙ্গে আর যাই হোক ঘি’র কোনো সম্পর্ক থাকে না- দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া।

প্রতারণা- অনৈতিকতা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছে।

একদিকে খাবারে ভেজাল বা বিষ দিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে, আরেক দিকে ভেজাল বিরোধী অভিযানের নামে মানুষের সঙ্গে রসিকতা করা হচ্ছে। সারা বছর খবর নেই, অভিযান রমজান মাসে। উৎসমুখে ব্যবস্থা না নিয়ে, অভিযান খুচরো বিক্রেতা পর্যায়ে। সবচেয়ে বড় ইয়াবা সম্রাট বা গডফাদারকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে টিকিয়ে রেখে, ছোট ছোট চোরাচালানিদের বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হচ্ছে। বিমানবন্দর, সমুদ্র বন্দর দিয়ে অবৈধভাবে মোবাইল ফোন সেট দেশে ঢুকছে অবাধে। অভিযান চালানো হচ্ছে বসুন্ধরা সিটি বা আরও কোনো মার্কেটে। উৎসমুখে সুযোগ অবারিত রেখে, ১০টি ফোন সেট যিনি বিক্রি করছেন- অভিযান তার বিরুদ্ধে।

রাতের ঢাকায় মহিষ দেখতে পাবেন। সকালের বাজারে মহিষের মাংস পাবেন না, সব গরুর মাংস। সব বকরির মাংসই এদেশে খাসির মাংস হয়ে যায়। সাদা বা অন্য রঙের খাসি তুলনামূলকভাবে রোগা দেখায়, কালো খাসির চেয়ে। হাট থেকে কালো খাসি কিনে এনে দেখা গেল, সাদা খাসিকে রঙ করে কালো বানানো হয়েছে- গ্রামে নিজেই তা প্রত্যক্ষ করেছি। এক কেজি খেজুর রসের পাটালির দাম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। এক কেজি চিনির দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। যে খেজুরের রসে ৫ কেজি পাটালি হওয়ার কথা, তার সঙ্গে ৫ কেজি চিনি মিশিয়ে ১০ কেজি পাটালি তৈরি করা হয়। নিজে দেখেছি এবং বাংলাদেশের সর্বত্র এমনটা চলছে।

অসত্য- অন্যায়- অনৈতিকতা, অপরাধ প্রবণতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। আইনের শাসনহীন দেশের দৃষ্টান্তে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ।

হাত বা পায়ে পচন ধরলে, তার চিকিৎসা আছে। অপারেশনে একটি হাত কেটে ফেললেও মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন। পচন যদি মাথায় ধরে, বেঁচে থাকার সম্ভাবনা - অসম্ভবে পরিণত হয়। এই রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের মানুষের পচনটা ধরেছে মাথায়।
  • The Daily Star/Bangla/May 22,2018 

নিউইয়র্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলের ১২টি এপার্টমেন্ট নিয়ে তোলপাড়!





বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তমাল মনসুর নিউ ইয়র্কের আফতাব টাওয়ারের ১২টি এপার্টমেন্ট ও ৪টি পার্কিং স্পটের মালিক । এ নিয়ে ভবনের নিচতলায় অবস্থিত মসজিদ মিশন সেন্টার নামক একটি মসজিদের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন তিনি। বাংলাদেশের বিখ্যাত নির্মাতা জহিরুল ইসলামের ভাই আজহারুল ইসলাম ২০১১ সালে নিউ ইয়র্ক সিটির জ্যামাইকাতে আফতাব টাওয়ার নির্মাণ করেন। এই ভবনে ২৪টি এপার্টমেন্ট ও বেইসমেন্ট রয়েছে। এর অর্ধেক অর্থাৎ ১২টি এপার্টমেন্টের মালিক হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমের ছেলে তমাল মনসুর। 

একই ভবনের নিচে অবস্থিত মসজিদ মিশনের কর্মকর্তা মাওলানা হাফেজ রফিকুল ইসলামের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল মসজিদের জন্য বেইসমেন্ট।

তবে, মসজিদে মুসল্লি সমাগমের কারণে পানি সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যু তুলে তিনি মামলা ঠুকেছেন ম্যানেজমেন্ট ও মসজিদের বিরুদ্ধে। 

সূত্রমতে, জ্যামাইকাতে তমাল মনসুরের আরো দুটি বড় বড় প্রোপার্টি রয়েছে। যেখানে এখন নির্মাণ কাজ চলছে। উল্লিখিত দুই প্রোপার্টিতে এপার্টমেন্ট নির্মাণের কাজ চলছে। এখানে কোনো বাংলাদেশি নির্মাণ কোম্পানিকে কাজ দেয়া হয়নি। গায়ানিজ একজন কন্ট্রাক্টর এই ভবনগুলোতে এপার্টমেন্ট তৈরির কাজ করছেন বলে জানা গেছে।

নিউ ইয়র্কে সম্পত্তি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তমাল মনসুরের সঙ্গে রোববার (২০ মে) ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমার সম্পদ আছে কি নেই এটা অন্য কারো বিষয় হতে পারে না। একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। 

জ্যামাইকার আফতাব টাওয়ারে তার কোনো এপার্টমেন্ট আছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে এটাকে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার উপর হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। 

উল্লিখিত বিষয়ে নিউ ইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টে দায়েরকৃত মামলার ইনডেক্স নং ৭০৬৯৪৮/২০১৮। মামলার তারিখ মে ৩, ২০১৮। আর এই মামলার বাদী হচ্ছেন লেমবডা প্রোপ্রার্টিজ ইনক নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তমাল মনসুর এফিডেভিটের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানকে মামলাটি পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছেন। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছে আফতাব স্কাইভিউ কনডোমোনিয়াম, বোর্ড অব ম্যানেজারর্স অব আফতাব কনডোমোনিয়াম, হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ টি আলী, আব্দুল মালেক, মির্জা রেজওয়ান ও মসজিদ মিশন সেন্টার ইনক। 

মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে বাদী আফতাব টাওয়ারের ১২টি বাণিজ্যিক এপার্টমেন্টের মালিক। যার মধ্যে আছে এপার্টমেন্ট ২এ থেকে ৪ডি এবং ৪টি পার্কিং স্পেস। যার মধ্যে আছে পিএস১, পিএস২, পিএস৩ এবং পিএস৪। উল্লেখ্য, আফতাব স্কাইভিউতে ২৪টি এপার্টমেন্ট, দুটি কমিউনিটি সেন্টার ও ১৩টি পার্কিং স্পট রয়েছে।

মামলার আর্জিতে কনডোমোনিয়াম বোর্ড গঠনের বিভিন্ন নিয়মাবলী উল্লেখ করে এর বেইসমেন্টের দুটি কমিউনিটি সেন্টারের স্পেস মসজিদ মিশন মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে উল্লেখ করা হয়। 

আর্জিতে বলা হয়, মুসল্লিদের সংখ্যাধিক্যের কারণে সিটির অকুপেন্সি সার্টিফিকেট আইন বার বার ভঙ্গ করেছে কথিত মসজিদটি। এভাবে ৮৬ জনের জায়গায় সেখানে শত শত মুসল্লির সমাবেশ ঘটে নামাজের সময়। এর ফলে মুসল্লিদের ওজু করার কারণে প্রচুর পানি খরচ হচ্ছে। এরফলে কনডোমোনিয়ামের জন্য বরাদ্দকৃত পানির চাইতে অনেক বেশি পানি ব্যবহৃত হচ্ছে মৃসল্লিদের ওজুর কারণে। 

এ বিষয়ে অফতাব টাওয়ার ম্যানেজমেন্টদের পানির প্রতিকার বিষয়ে বার বার দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কোনো লাভ হয়নি। এর ফলে সিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই ভবনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভায়োলেশন মামলা করেছে। যার কোনো প্রতিকার ম্যানেজমেন্ট বোর্ড না করার কারণে দরপতন ঘটেছে মামলার বাদী তমাল মনসুরের এপার্টমেন্ট সমূহের। ফলে বাদী তার ভাড়ার আয় ছাড়াও প্রোপার্টির সঠিক বাজার মূল্য পাচ্ছেন না। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নতুন ম্যানেজমেন্ট বোর্ড গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সার্টিফিকেট অব অকুপেন্সি মেনে চলতে হবে মসজিদটিকে। এ ছাড়াও আরো অনেক অনিয়মের বিষয় আছে ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে। 

আইন ভঙ্গ, উন্নাসিকতা, অবেহলা ও উপেক্ষার কারণে বাণিজ্যিক এই ভবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ একটি দুরুহ বিষয়। তারপরও বলা যায় উল্লিখিত কারণসমূহের জন্য বাদী তমাল মনসুরের ১২টি এপার্টমেন্ট বাজার দরের চেয়ে কমপক্ষে সাড়ে তিন লাখ ডলারের দরপতনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ৪টি পার্কিং স্পটের দাম কমেছে কমপক্ষে ৪০ হাজার ডলার এবং এক লাখ ২০ হাজার ডলারের ক্ষতি হয়েছে ইমেজ নষ্টের কারণে। মামলায় এসবের প্রতিকার কামনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কনডোমোনিয়াম বোর্ড ম্যানেজমেন্টের অন্যতম কর্মকর্তা এবং মসজিদ মিশনের প্রধান মওলানা হাফেজ রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তমাল মনসুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে। এই হিসেবে বাংলাদেশিদের একটি মসজিদের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নেবেন এটা আমরা চিন্তাই করতে পারিনি। তিনি আমাদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছেন। এখন এই মামলার অন্যতম কারণ হচ্ছে তার সম্পদের খবর যাতে কোনোভাবেই কেউ ফাঁস করতে না পারে এজন্য তিনি আমাদের ভয় দেখাচ্ছেন। আমরাও আইনের মাধ্যমেই এর জবাব দেবো।

হাফেজ রফিকুল ইসলাম বলেন, তমাল মনসুরের ১২টি নয়, আরো অনেক প্রোপ্রার্টি আছে। বাংলাদেশের একজন মন্ত্রীর ছেলে এতো সম্পদের মালিক কিভাবে হলেন তা যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে। 

বাংলা পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে তমাল মনসুর বার বার বলেন, আপনারা যা বলছেন তা সঠিক নয়। কোনটি সঠিক নয় এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা যে আইনজীবী মামলা করেছেন তার কাছে প্রশ্ন করুন। 

তিনি বলেন, আমার সম্পত্তির বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের আই আর এস জানে। আমি বিগত ১৫ বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ সিটিজেন। অন্য কোনো লোককে কোনো কথা বলতে আমি বাধ্য নই।

একজন মন্ত্রীর ছেলে হিসেবে বিশাল সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখানে আমার পারিবারিক বিষয়টিকে কেন আনা হচ্ছে। বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তারা কেন এমন প্রশ্ন তুলছে এটা তাদেরই জিজ্ঞেস করুন। নিজের ১২টি এপার্টমেন্ট আছে কি না জানতে চাইতে তিনি এ বিষয়ে হ্যাঁ বা না সরাসরি উত্তর না দিয়ে এটা তার ব্যক্তিগত বিষয় বলে মন্তব্য করেন।

উল্লিখিত এপার্টমেন্ট সমূহের দাম জানতে চাইলে একজন রিয়েল এস্টেট ব্রোকার বাংলা পত্রিকাকে বলেন, এখানে এখন প্রতিটি এপার্টমেন্টের দাম হচ্ছে কমপক্ষে চার লাখ ডলার। এই হিসেবে ১২টি এপার্টমেন্টের দাম ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার। এর বাইরে পার্কিং লটের দাম না হয় বাদই দিলাম। 

অপরদিকে মসজিদ মিশন সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলার ঘটনায় স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে গত ১৬ই মে বুধবার তারাবির নামাজের সময় মামলার বিষয়টি মসজিদ কর্তৃপক্ষ মুসল্লিদের দৃষ্টিগোচরে আনলে উপস্থিত মুসল্লিরা আইনগত প্রক্রিয়ায় ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময়ও এ ঘটনার ব্যাপারে মুসল্লিারা তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। 

কার্টেসি — মানবজমিন/ মে ২২, ২০১৮।



রোগীদের বিদেশমুখী করছে আস্থার সংকট

তাওছিয়া তাজমিম


রোগের চিকিৎসায় রোগী-চিকিৎসক আস্থার সম্পর্ক বিশেষ কিছু। এ আস্থার উপচার চিকিৎসকের দক্ষতা, সেবিকার শুশ্রূষা। বাংলাদেশে চিকিৎসকের অদক্ষতায় রোগীর আস্থায় চিড় ধরেছে আগেই। সেবিকাদের যেনতেন শুশ্রূষা একে আরো অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আস্থারই এ সংকটই রোগীদের বিদেশমুখী করতে মূল ভূমিকা রাখছে। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে উচ্চবিত্তরা পাড়ি দিচ্ছেন সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায়। মধ্যবিত্তরা খুঁজে নিচ্ছেন ভারতের বিভিন্ন ডাক্তারখানা।

বিভিন্ন গবেষণার তথ্য বলছে, প্রতি বছর শুধু চিকিৎসার জন্যই দেশের বাইরে পা রাখছেন তিন লাখের বেশি বাংলাদেশী। এর বড় অংশই যাচ্ছেন ভারতে, যাদের সংখ্যা বছরে দুই লাখের কম নয়।

চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কেউ নিজ দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশে পা রাখলে তাকে মেডিকেল ট্যুরিস্ট বলা হয়। এটা শুধু চিকিৎসাসেবা গ্রহণ নয়, গন্তব্য দেশের জন্য এটা আয়েরও বড় উৎস। মেডিকেল ট্যুরিজমের বাজার, কারা যাচ্ছে, কারা তাদের আকৃষ্ট করছে, তা নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা গবেষণা হয়েছে। এ ধরনের একটি গবেষণা করেছেন ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুব আলি ও অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. অনীতা মাধেকার। গবেষণায় তারা বাংলাদেশী রোগীদের বিদেশমুখিতার গতিপ্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। দেশীয় চিকিৎসাসেবা বাদ দিয়ে কেন তারা বিদেশমুখী হচ্ছেন, চেষ্টা করেছেন তার কারণ খোঁজার।

বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল ট্যুরিজম নিয়ে এক দশক ধরেই কাজ করছেন এ দুই গবেষক। প্রথম পর্যায়ে তারা ভারতে চিকিৎসা নিয়ে ফেরা ছয়টি বিভাগ ও দুটি জেলার ১ হাজার ২৮২ জনের ওপর একটি জরিপ চালান। এদের তথ্য সংগ্রহ করেন ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নেয়া ১১৩ জনের ওপর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত আরেকটি জরিপ চালান তারা। উভয় জরিপের ফলাফলেই চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি আস্থার সংকট বিদেশমুখিতার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে বিদেশে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রায় ২৬ শতাংশ চিকিৎসকের অদক্ষতার কথা জানান। নার্সের অদক্ষতাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ১২ শতাংশ। অপর্যাপ্ত হসপিটাল ব্যবস্থাপনা, রোগীর নিরাপত্তা, উচ্চব্যয়, ভুল চিকিৎসা, নিম্নমানের ওষুধ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতার কথাও অনেকে বলেন। তবে তাদের সংখ্যাটা নগণ্য।

এ আস্থাহীনতা ক্রমেই বাড়ছে বলে মনে করেন গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব আলি। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ২০১২ সালের পর গত বছরও একই ধরনের একটি গবেষণা আমরা করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি, চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি আস্থাহীনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। দেশে বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের কোনো ধরনের জবাবদিহির আওতায় আনা হয় না। প্রশিক্ষিত নার্সেরও অভাব রয়েছে। বিদেশের মতো আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থায় নার্সদের ভালো চোখে দেখা হয় না। আবার নার্সরাও রোগীদের বিষয়ে সময়সচেতন নন। সে কারণে বাংলাদেশী রোগীরা এখন ভারতের বেঙ্গালুরু ও চেন্নাই এবং থাইল্যান্ডে বেশি যাচ্ছেন। এছাড়া আমাদের দেশে আরেকটি বড় সমস্যা, হাসপাতালগুলোয় বায়োটেকনোলজিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের অভাব রয়েছে। বাইরের হাসপাতালগুলোয় এ সমস্যা নেই।

চিকিৎসকদের আস্থায় নিতে না পেরে চোখের চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ভারতে যেতে হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শাহেদ মাহমুদকে। চোখের সমস্যায় প্রথমে দেশের শীর্ষ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দেখান তিনি। চিকিৎসা নিতে গিয়ে পরামর্শ পান একেক চিকিৎসকের কাছ থেকে একেক রকম। পাশাপাশি চোখের কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের জন্য বড় অংকের চিকিৎসা ব্যয়ের কথাও জানান চিকিৎসকরা। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করেই রোগীকে বারবার আসতে বাধ্য করা হয়। সব মিলিয়ে চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা হারিয়ে শেষমেশ দেশের বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শাহেদ মাহমুদ। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ভারতের হায়দরাবাদে এলভি প্রসাদ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নেন তিনি। সেখানে চোখের চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। ভারতে চিকিৎসা নেয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, দেশটিতে চিকিৎসকের সেবার মান তুলনামূলক অনেক ভালো। ব্যয়ও এখানকার চেয়ে কম।

দেশে আস্থা হারিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান নাজমা বেগমও। ২০১১ সালে রাজধানীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করার পর তার গর্ভাশয়ে টিউমার ধরা পড়ে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার করে তার গর্ভাশয় ফেলে দেয়া হয়। এর বছর চারেক পর আবার অসুস্থ হলে তিনি আর ওই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার ভরসা পাননি। মেডিকেল ভিসায় পাড়ি দেন কলকাতায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন চিকিৎসকের লক্ষ্য হওয়া উচিত রোগীর সন্তুষ্টি অর্জন। শুধু রোগমুক্তি নয়, চিকিৎসকের আচার-ব্যবহার-নৈতিকতাও এর সঙ্গে জড়িত। চিকিৎসক একটু ভালো কথা বললে, সহমর্মী হলে রোগীরা ভালো অনুভব করেন। এটা রোগীর মানসিক শক্তিও বাড়িয়ে দেয়। তবে চিকিৎসকের সবচেয়ে বড় যেটা থাকতে হয়, তা হলো দক্ষতা।

চিকিৎসকদের প্রতি রোগীদের আস্থাহীনতার বিষয়টি মানছেন হেলথ অ্যান্ড হোপ হসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরীও। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, এটি ঠিক যে, আমাদের চিকিৎসকদের একটি অংশ জনসাধারণের আস্থাহীনতার শিকার। এ আস্থাহীনতা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য দায়ী। তবে কম-বেশি মেডিকেল ট্যুরিজম সব দেশেই আছে। কিন্তু যেসব দেশে সামাজিকভাবে সুশাসনের অভাব রয়েছে ও মেডিকেল প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে প্রফেশনালিজম গড়ে ওঠেনি, সেসব দেশ থেকেই মেডিকেল ট্যুরিজম বেশি হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোয় বিপুলসংখ্যক রোগী চলে যান। কিন্তু একটি বিষয় লক্ষণীয়, দেশে প্রতিদিন যে-সংখ্যক রোগী চিকিৎসকের কাছে আসেন, তার একটি অতিক্ষুদ্র ভগ্নাংশ বিদেশে যান। এ হার আরো কমিয়ে আনতে হলে চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রত্যেককে তাদের দায়িত্বের জায়গায় সচেতন হতে হবে।

মেডিকেল ট্যুরিজমের বাজার সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেছে ভারতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিও (এফআইসিসিআই)। ২০১৫ সালের তথ্যের ভিত্তিতে তারা দেখিয়েছে, প্রতি বছর তিন লাখের বেশি বাংলাদেশী চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগেরই গন্তব্য ভারত। পাশাপাশি থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায়ও যাচ্ছেন অনেকে। মালয়েশিয়ায় প্রতি বছর চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা ২৫-৩০ হাজার। এরা যাচ্ছেন মূলত ক্যান্সার, চোখ, দাঁত, কিডনি প্রতিস্থাপন, হূদরোগ ও কসমেটিক সার্জারির জন্য।

ভারতে যাওয়া বাংলাদেশীর সংখ্যা দুই লাখের কাছাকাছি। দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব কমার্শিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরেই চিকিৎসার জন্য ভারতে পাড়ি জমান ১ লাখ ৬৫ হাজার বাংলাদেশী। মেডিকেল ট্যুরিজম থেকে ভারতের আয়েরও প্রায় অর্ধেক জোগান দিচ্ছেন বাংলাদেশীরা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশী রোগীরা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ব্যয় করেছেন ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ ডলার।

রোগীদের এ বিদেশমুখিতার সঙ্গে আর্থিক সঙ্গতি ও মানসিকতাকে বড় করে দেখছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম নাসির উদ্দিন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের চিকিৎসা বব্যস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকেরা অনেক মেধাসম্পন্ন। চিকিৎসাসেবায় এখন অনেক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের গবেষণা ও দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে জ্ঞানের আদান-প্রদান হচ্ছে। বিদেশে যাওয়ার পেছনে আর্থিক সক্ষমতা ও মানসিকতা বেশি কাজ করছে। আর এটা থাকবে। ভালো কিছুর জন্য উন্নত দেশের রোগীরাও চিকিৎসার জন্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে যান।

  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা / মে ২২, ২০১৮ 

Project cost rises manifold

ASHUGANJ CONTAINER PORT


Rejaul Karim Byron


The quest to transform the Ashuganj container terminal port into a world-class one has become more expensive for the government, with the shipping ministry now placing a fresh Tk 1,293 crore proposal -- exponentially more than the original project.

The proposal will be placed in today's meeting of the Executive Committee of the National Economic Council.

The original project was taken up in 2011 with an estimated cost of Tk 245 crore, with India footing a portion of the amount committed from its first line of credit. 

But due to complexities in land acquisition and a lack of detailed feasibility study the neighbouring country backed out from the project. 

Later, WAPCOS, an Indian water and power consultancy firm, made a detailed feasibility study and came up with a design, based on which the shipping ministry sent a proposal of Tk 831 crore for the project.

India would provide Tk 431 crore from its second line of credit.

But in October last year, the shipping ministry sought an additional Tk 431 crore after land acquisition costs increased.

The additional Tk 431 crore will have to be borne by Bangladesh, meaning the country will now have to bear two-thirds of the project cost. The project is expected to be complete by December 2021.

India is particularly interested in developing the Ashuganj port as it has designs to transport goods through the port to its seven sister states. The neighbouring country has also committed to financing a four-lane road from the port to Akhaura.

The Ashuganj port will not only facilitate transshipment between India and Bangladesh but will also play an important role in expansion of trade in most of the parts of Dhaka, Chittagong and Sylhet, according to the planning ministry proposal.

As per the agreement between Bangladesh and India, Indian goods from Kolkata will arrive at the Ashuganj port through river routes. From there, Bangladeshi trucks or trailers will carry them to Agartala.

As per primary estimates, 4 lakh twenty-foot equivalent units of containers will be transported through the river route every year.

  • Courtesy: The Daily Star /May 22, 2018

অবৈধ এমপি ‘বদি’ সর্বনাশা ইয়াবা ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণকারী — মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর



মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সম্প্রতি দেশের ১৪১জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা তৈরি করেছে যার অনেকে সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা।  

বাংলা দৈনিক যুগান্তর মঙ্গলবার, মে ২২, এক অনলাইন রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশ করে। 

যুগান্তর রিপোর্টে লেখা হয় — 

সম্প্রতি দুদক সূত্রে গোপনীয় এ তালিকার একটি কপি যুগান্তরের হাতেও আসে। তালিকার দ্বিতীয় পৃষ্ঠার একটি প্যারায় চোখ আটকে যায়। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি দেশের ইয়াবা জগতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী। তার ইশারার বাইরে কিছুই হয় না। দেশের ইয়াবা আগ্রাসন বন্ধের জন্য তার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।’
  • তথ্যসূত্র —  jugantor.com/মে ২২, ২০১৮। 



Huge loans written off to flatter balance sheets

AKM Zamir Uddin


Banks made wholesale loan write-offs in the final quarter of 2017 in a bid to flatter their balance sheets and overall performance.

As much as Tk 1,875 crore was written-off between October and December of last year, in contrast to Tk 322 crore three months earlier.

Of the 25 banks that took the facility to clean up their balance sheets, AB Bank topped the chart writing off Tk 328 crore, followed by Prime Bank (Tk 206 crore) and IFIC Bank (Tk 152 crore), according to data from the Bangladesh Bank.

With the latest update, a total of Tk 48,192 crore has been written-off between January 2003 and 2017. Of the amount, 78.13 percent remained outstanding, meaning that banks' efforts to recover the loans did not pay off.

As of December last year, state-owned banks have written off Tk 22,615 crore and private banks Tk 23,992 crore.

Two state-run specialised banks, Bangladesh Krishi Bank and Rajshahi Krishi Unnayan Bank, have written off Tk 555 crore and foreign banks Tk 1,029 crore.

As per the BB norms, loans are written off after making adequate provisions to take advantage of tax benefits. But banks are obligated to continue their recovery efforts.

For writing off loans, banks have to file law suits with the money loan court (Artha Rin Adalat) against the defaulters and keep 100 percent provisioning.

The central bank in 2003 introduced the policy to show a decreased amount of default loans on banks' balance sheets.

The amount of written-off loans will increase significantly in the months to come if the central bank fails to halt the rising trend of loan default, said an official of a commercial bank.

Defaulted and written-off loans have simultaneously been increasing in the recent years on the back of banks' failure to prevent scams, he added.

Unethical practice


Many banks tend to write off large amounts of default loans in the final quarter of a year to show a clean balance sheet, said Khondkar Ibrahim Khaled, a former deputy governor of the central bank.

“It is an unethical practice.”

The banks disburse the loans by taking deposits from general clients, meaning the depositors' money is not ultimately showed in the banks' financial statements due to the practice, he said.

“Written-off loans are like uncollectible loans -- the recovery of such loans is highly difficult.”

Subsequently, he urged banks to rein in corruption such that vested quarters cannot take loans banking on this unethical process.

Banks' writing off loans to clean up balance sheets is a common practice globally, said Syed Mahbubur Rahman, managing director of Dhaka Bank.

The recovery of such loans has become almost insurmountable as banks do not keep adequate collateral or take proper documentation from borrowers.

For instance, some unscrupulous borrowers kept the same property as collateral in different banks. “The disbursed loans have subsequently become defaulted and were written off,” said Rahman, also the chairman of the Association of Bankers, Bangladesh, a forum of private banks' chief executive officers and managing directors.

But a strong judicial system will help banks recover the written-off loans from defaulters, he added. 

  • Courtesy: The Daily Star/ May 22, 2018

Nine ‘drug peddlers’ killed in ‘gunfights’ in Bangladesh

22 killed in anti-drugs drives in a week as rights activists express concern


Tapos Kanti Das

Nine suspected drug peddlers were killed in reported incidents of ‘gunfight’ in Chuadanga, Rajshahi, Narsingdi, Jhenidah, Tangail, Jessore and Gazipur early Monday, highest in a day, as law enforcement agencies continued crackdown on drugs. 

Rights activists as well as a former top police official said that killing suspects in the name of gunfight was no solution to the menace of drugs, rather the law enforcers had to try to gather adequate witnesses and evidences to ensure punishment for people involved in smuggling and peddling of drugs. The rights activists expressed concern over the sudden increase in the number of extrajudicial killings in ‘gunfights’.

Of the people killed early Monday, six were killed in ‘gunfights’ with law enforcers while the rest three were killed in ‘gunfights’ between groups of drug peddlers in Jessore, law enforcement agencies claimed. The Jessore victims’ families alleged that the three were picked up from their houses earlier and police informed them that they were killed in ‘gunfights’. The families and local people said that the three had given up drug peddling and were leading normal life. 

Monday’s incidents took to 22 the number of suspected drug peddlers killed in gunfights in anti-drugs drives in the past one week.

It’s no solution: Sultana Kamal


Rights activist Sultana Kamal, also former adviser to the caretaker government, told New Age on Monday that extrajudicial killings in the name of gunfights was no solution to menace of drugs in the society and could not be accepted.

Allegations have it that political leaders and members of law enforcement agencies are involved in the business of drugs, she said, adding that the law enforcement agencies must act within the constitution that guaranteed rights to life and justice for all.

‘Drug peddlers have to be brought to book and their punishment should be ensured,’ she said, adding, ‘we are concerned about what is going on in the name of containing drugs.’ Ain o Salish Kendra executive director Sheepa Hafiza in a statement on Monday echoed Sultana Kamal.

Former inspector general of police Nur Mohammad said that death in ‘gunfights’ or ‘shootouts’ could not be imagined only 15 years ago. ‘We see deaths of drug peddlers in shootouts in Philippines,’ he said. ‘Killing drug peddlers in gunfights is no solution. Law enforcement agencies should hit the supply line. If otherwise, the vacant position of a killed drug peddlers would be filled up by another one,’ said the former police chief.

‘The law enforcers should concentrate on ensuring punishment of drug peddlers collecting adequate witnesses and evidence. Besides, creating awareness by forming committees with good politicians, elites and law enforcers may bring good results,’ he said.

Home Minister’s blessings


Home minister Asaduzzaman Khan, addressing the opening ceremony of Rapid Action Battalion’s anti-drug campaign at Gulistan in Dhaka on Sunday, said that the ongoing anti-drug drives would continue and warned about zero tolerance for drugs.

He said that the anti-drugs drive was going on as per the direction of the prime minister Sheikh Hasina to save the next generation from the clutch of drugs.

New Age correspondent in Jessore reported that three ‘former drug peddlers’ were killed in ‘gunfights’ at a place between Kholadanga and Mandalgati villages and at Taraf Nawapara, both under Kotwali police station, in Jessore early Monday.

The police claimed that the three were killed in ‘gunfights’ between gang members of drug peddlers although the families alleged that they were once involved in drug peddling and turned into innocents. The deceased were Momtazur Rahman Munna, 35, of Mahishakura and Sirajul Islam Dukhey, 35, of Tengra village under Sharsha upazila and Shafiqul Islam Shafi, 28, of Andulia village under Chaugachha upazila, Kotwali police station officer-in-charge AKM Azmal Huda said.
Momtazur’s brother Sohrab Hossain said that his brother was picked up Friday night and the body was found on Monday.

Sirajul’s son Ripon Hossain said that his father was an innocent farmer and law enforcers picked him up Saturday night.

In Jhenaidah, suspected drug peddler Sabdul Mondol, 42, wanted in several drugs related cases, was killed in a reported gunfight with Rapid Action Battalion at Narendrapur under Kaliganj upazila in Jhenaidah early Monday, Kaliganj police officer-in-charge Mizanur Rahman Khan said.

Rajshahi University Correspondent reported that suspected drug peddler Liakat Ali Mandal, 40, also local Juba League leader, of Namajgram village under Puthia upazila in Rajshahi was killed in a reported gunfight with battalion members at Khudra Jamira village of the upazila early Monday. Liakat was wanted in at least eight cases, said RAB-5 deputy commander AM Ashraful Islam.

The deceased’s brother Juber Mandal said that Liakat gave up the business of drugs two years ago. ‘He was now busy in cattle farms. He did not come back after some people called him Sunday noon and took him away.’

New Age correspondent in Tangail, quoting RAB-12 company commander Rabiul Islam, reported that suspected drug peddler Abul Kalam Azad Khan, 42, of Purba Pakutia under Ghatail upazila in the district was killed in a gunfight with battalion members at Deolabari village under the upazila early Monday.

New Age correspondent in Gazipur, quoting Tongi police station officer-in-charge Kamal Hossain, reported that suspected drug peddler Rezaul Islam alias Besoti Rony, 27, of Ershadnagar of Tongi, also an accused in 14 cases, was killed in a reported gunfight with police at Nimtoli Math of Tongi at about 3:00am.

In Narsingdi, ‘wanted drug peddler’ Iman Ali of Kauriapara of the district town, named in nine drugs cases, was killed in a reported gunfight with the battalion at Ghorashal toll plaza under Palash upazila in Narsingdi at about 4:00am, said RAB-11 company commander Jasim Uddin. In Chuadanga, suspected drug peddler Jonab Ali, 32, of Uthali village under Jibannagar upazila was killed in a ‘gunfight’ with police at about 12:45am, said Jibannagar police station officer-in-charge Mahmud Hossain.

  • Courtesy: New Age /May 22, 2018