Search

Wednesday, May 23, 2018

তাদের এখন কি নামে ডাকা হবে?


জিয়া হাসান 



আকবর আলী খান তার শুয়োরের বাচ্চার অর্থনীতি নিবন্ধে, আসানসোলের মহকুমা প্রশাসক মাইকেল ক্যারিটের সাথে এক পাঞ্জাবী ঠিকাদারের কথোপকথনের কথা লিখেছেন — 

‘হুজুর এদেশে তিন ধরনের মানুষ আছে। যারা ঘুষ খায় না। যারা ঘুষ খায় এবং কাজ করে। আর তিন নম্বর দলে আছে কিছু শুয়োরের বাচ্চা, যারা ঘুষও খায় কিন্তু কাজ করে দেয় না।’

বাংলাট্রিবিউনে প্রকাশিত, ‘টাকাও নিয়েছে, ক্রসফায়ারও দিয়েছে’ —  নিউজটা পড়ে সেই শুয়োরের বাচ্চাদের কথাই মনে পড়লো।

এই নিউজে দেখবেন, সরকারের বর্তমান মাদক ব্যবসায়ীদের গনহত্যার অভিযানের শিকার টঙ্গির রেজাউল ইসলাম ওরফে রনি (২৮)। এই নিউজে প্রকাশ পেয়েছে নিহত রেজাউল এক সময়ে মাদক ব্যবসায়ী ছিল এবং পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো।

নিহত রেজাউলের মা পারভীন বেগম বলেন, ‘গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে টঙ্গী এরশাদ নগরের বটতলা এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ রেজাউলকে তুলে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রনিকে খুঁজতে গাজীপুর শহরের ডিবি কার্যালয়ে যাই। সে সময় একটি সাদা কাগজে আমার সই নেওয়া হয় এবং তিন লাখ টাকা রেখে রেজাউলকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’

ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর তাকে আবার আটক করা হয়। সেখান থেকে তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে পুলিশ সেখানেও টাকা দাবি করে এবং রেজাউলের বাবা থানা পুলিশকে আরো পাঁচ লাখ টাকা দেয়।

প্রথমে রেজাউলের মায়ের কাছ থেকে তিন লক্ষ তার পরে ছেড়ে দেয়ার পরে আবার আটক করে ৫ লক্ষ টাকা, মোট আট লক্ষ টাকা নেয়ার পরেও, রেজাউলকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়। 

রেজাউলের মা বলেন, "তারা আমাদের কাছে টাকাও নিয়েছে, আবার ছেলেকেও ক্রসফায়ারে দিয়েছে।’

ব্রিটিশ আমলে, যারা এক বার ঘুষ খেয়ে কাজ করেনা তাদেরকে সেই পাঞ্জাবি ঠিকাদার বলেছিল শূয়রের বাচ্চা। যে রেফারেন্সে, আকবর আলী খান তার পরার্রপরতার অর্থনীতি গ্রন্থে লিখেছেন, শূয়রের বাচ্চার অর্থনীতি নিবন্ধ।

এখন দুই বার টাকা নিয়ে, শুধু কাজ করা তো নয়, তাকে হত্যা করে যারা, তাদেরকে আমরা কিসের বাচ্চা বলবো ?

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সকল ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ কর। সুষ্ঠু তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়ায় সকল অপরাধিদের শাস্তি নিশ্চিত করে, আইনের শাসন ফিরিয়ে দাও।
  • লেখক ব্লগার ও উদ্দ্যোক্তা। 


‘আট লক্ষ টাকাও নিয়েছে, ক্রসফায়ারেও দিয়েছে’



গাজীপুরের টঙ্গীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রেজাউল ইসলাম ওরফে রনির (২৮) কাছ থেকে টাকা নিয়েও পুলিশ তাকে ক্রসফায়ারে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের মা পারভীন বেগম। 

রেজাউল ওরফে রনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকার ৩ নম্বর ব্লকের হাফিজুল ইসলামের ছেলে।

নিহত রেজাউলের মা পারভীন বেগম বলেন, ‘গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে টঙ্গী এরশাদ নগরের বটতলা এলাকা থেকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ রেজাউলকে তুলে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রনিকে খুঁজতে গাজীপুর শহরের ডিবি কার্যালয়ে যাই। সে সময় একটি সাদা কাগজে আমার সই নেওয়া হয় এবং তিন লাখ টাকা রেখে রেজাউলকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’

এ ব্যাপারে পারভীন বেগম আরও বলেন, ‘ডিবি কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর পুলিশের মূল কার্যালয়ের সামনে থেকে টঙ্গী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বকর সিদ্দিক রেজাউলকে আবারও আটক করেন। তাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে টঙ্গী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে পুলিশ সেখানেও টাকা দাবি করে। সোমবার সকালে রেজাউলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তার বাবা থানা পুলিশকে পাঁচ লাখ টাকা দেয়। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে আসার পর আমরা জানতে পারি ছেলে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। তারা আমাদের কাছে টাকাও নিয়েছে, আবার ছেলেকেও ক্রসফায়ারে দিয়েছে।’


  • তথ্যসূত্র —  banglatribune.com/ মঙ্গলবার, মে ২২, ২০১৮।  লিঙ্ক —  https://bit.ly/2s2ma8V

নির্বাচন কমিশন ও রাজনীতি

সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম

বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিতর্কিত হয়ে পড়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে হঠাৎ করে যখন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনটি মহামান্য হাইকোর্টের একটি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল, তখন নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি বিতর্কিত হয়ে উঠেছিল। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতেও পরিহার্য বিলম্ব করেছিলেন নির্বাচন কমিশন। আট দিন আগে, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। নির্বাচন কমিশন ইনিয়ে-বিনিয়ে ওই নির্বাচন সম্বন্ধে সাফাই গাইতে থাকে। দুঃখজনক হলেও এটাই মনে হলো যে, নির্বাচন কমিশন মনে হয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। 

নির্বাচন কমিশন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনটিকে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠানের জন্য কতটুকু পদক্ষেপ নিয়েছেন আর কতটুকু পদক্ষেপ নেননি, সেটা খুলনা মহানগরের জনগণ উপলব্ধি করেছেন এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের জনগণ পরোক্ষভাবে হলেও উপলব্ধি করেছেন। নির্বাচনের দিন যা যা হয়েছে তার জ্বলন্ত অমোচনীয় (বা মুছে ফেলার অযোগ্য) স্বাক্ষর মুদ্রণ মিডিয়া ও টিভিতে ধারণকৃত আছে। যেহেতু ক্ষমতাসীন সরকার বা আওয়ামী লীগ দলীয় পার্লামেন্ট কর্তৃক সংবিধান তাদের সুবিধার কথা খেয়াল রেখেই সংশোধন করা হয়েছে এবং যেহেতু সংবিধান মোতাবেক জাতীয় নির্বাচন বা পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেহেতু নির্বাচনের কমিশনের সাংবিধানিক ভূমিকার গুরুত্ব অতীতের তুলনায় এখন বেশি।

নির্বাচন কমিশনের অতি সাম্প্রতিক ভূমিকা

এখন থেকে আট-নয় মাস আগে, নির্বাচন কমিশন একটি ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। অর্থাৎ সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা বা সংলাপের আয়োজন করেছিল। একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও সংলাপে অংশ নিয়েছিল। পার্টির পক্ষ থেকে নাতিদীর্ঘ লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। আমরা যেই বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছিলাম তা হলো, নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান ক্ষমতা ও সক্ষমতা কার্যকর করা এবং প্রয়োজনে বৃদ্ধি করার জন্য চেষ্টা করা। আজ বলতে হয়, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান করার নিমিত্তে, নির্বাচন কমিশন যা যা করতে পারত, তা করা হয়নি। না হলে কী হতে পারে, বা কী হওয়া উচিত, সেগুলো আলোচনার দাবি রাখে।

দুইটি বিখ্যাত রায়ের রেফারেন্স

এই পর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুইটি রায়ের রেফারেন্স বা সূত্র এখানে উল্লেখ করে রাখছি; কারণ, এই দুইটি রায় থেকে কিছু বাক্য বা অনুচ্ছেদ এই কলামে উদ্ধৃত আছে। প্রথমটি হলো, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়; ইংরেজি পরিভাষায় Constitution of Bangladesh: 13th Amendments Act Case: Appellate Division Full Judgment. এই বিখ্যাত রায়টি আইন-আদালত বিষয়ক গ্রহণযোগ্য রিপোর্টিং জার্নাল বা রেফারেন্স-জার্নালে মুদ্রিত হয়েছে; যেমনটি সচরাচর হয়। এটা হচ্ছে Special Edition. The Lawyers (A Monthly Appellate Division Law Reports). Appellate Division Cases (ADC). Volume IX(A) September 2012. এই রায়টির সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নাম জড়িত। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত রায়; ইংরেজিতে Judgment on 16th Amendment of Constitution. এই রায়টিও আইন-আদালত বিষয়ক গ্রহণযোগ্য রিপোর্টিং বা রেফারেন্স জার্নাল মুদ্রিত হয়েছে। আমার সামনে এই পূর্ণাঙ্গ রায়টি তা বইয়ের মতো মুদ্রিত বাঁধাই অবস্থায় আছে এবং আমিও তা পড়েছি। এটা হচ্ছে The Apex Law Reports 2017. Volume X 2017(2). উল্লেখ্য, একটি রায় হলো- ২০১১-১২ সালের এবং অপরটি ২০১৭ সালের।

অসাধারণ নাগরিকের কথা

আমরা সাধারণ নাগরিক, সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী। আমাদের কথা মূল্যবান মনে হতেও পারে, নাও পারে। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই অসাধারণ ব্যক্তিদের অসাধারণ কথাগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হওয়া স্বাভাবিক। তাই আমি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের দুইজন প্রধান বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন সেই মন্তব্যগুলো আপনাদের নজরে আনছি। সঙ্গে আমার মন্তব্য উপস্থাপন করছি।

বিচারপতি খায়রুল হকের রায় থেকে

এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের অনুচ্ছেদ ১১৭৭-এর সারমর্ম :
এক. কারচুপিমুক্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন সত্যকার স্বাধীন ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সকল জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিদের একান্ত নির্ভেজাল প্রচেষ্টা প্রয়োজন। 

ইবরাহিমের মন্তব্য : নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আহ্বান করা সংলাপের সময়, জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে অনেক ধরনের বাস্তবসম্মত পরামর্শ উপস্থাপন করা হয়েছিল, ওইগুলোর ভাগ্য সম্বন্ধে আমরা কিছু জানি না। দুই. এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের অনুচ্ছেদ ১১৭৮। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীন করিতে হইবে। ইহাকে সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করিতে হইবে। লোকবল নিয়োগে কোনো প্রকার বাধা সৃষ্টি করা যাইবে না। নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে সর্বপ্রকার প্রয়োজন নিরসনকল্পে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ লইবেন। 

সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত সকল প্রকার সহায়তা সরকারের নির্বাহী বিভাগ ত্বরিত প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন, অন্যথায় তাহারা সংবিধান ভঙ্গ করিবার দায়ে দায়ী হইবেন। এই ব্যাপারে কোনো তরফে কোনো গাফিলতি দেখা দিলে নির্বাচন কমিশন প্রকাশ্যে অভিযোগ উত্থাপন করিবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ত্বরিত গ্রহণ করিবেন, অন্যথায় তাহারাও সংবিধান ভঙ্গের দায়ে দায়ী হইবেন। সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ হইতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনের সহিত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং নির্বাচন কমিশনের বিবেচনা অনুসারে, যাহারা এমনকি পরোক্ষভাবে জড়িত, রাষ্ট্রের সেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকিবে। নির্বাচন কমিশনাররা অন্তর্মুখী হইবেন না। যতদ্দূর সম্ভব, তাহাদের দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা বজায় রাখিবেন। সতত মনে রাখিবেন যে, জনগণের নিকটেই তাহাদের জবাবদিহিতা। তাহারা সকলে জনগণের সেবক মাত্র। তাহারা কী কাজ করিতেছেন তাহাও জনগণের জানিবার অধিকার রহিয়াছে, তাহারা কী কাজ করিতে পারিতেছেন না এবং কেন পারিতেছেন না, তাহাও জানিবার অধিকার জনগণের রহিয়াছে। 

নির্বাচনী আইন বা বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ ত্বরিত লইতে হইবে। এ ব্যাপারে কোনোরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন চলিবে না। শৈথিল্য প্রদর্শন করিলে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে আইন অমান্যকারী হইবেন। 

ইবরাহিমের মন্তব্য : নির্বাচন কমিশনের সাথে সরকার এবং সরকারের অঙ্গ-প্রত্যক্ষগুলো কতটুকু সহযোগিতা করেছেন বা করেননি, সেটা জনগণ উপলব্ধি করতে পারছেন। নির্বাচন কমিশন কেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী তলব করেননি, এর উত্তর নির্বাচন কমিশনকেই দিতে হবে। খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী। যদি নির্বাচন কমিশন মনে করে যে, তারা দায়ী নন, তাহলে তাদের স্পষ্ট করে বলতে হবে, কাদের অসহযোগিতা বা কাদের অদক্ষতা এ জন্য দায়ী? তিন. এ বি এম খায়রুল হক রায়ের অনুচ্ছেদ-১১৭৯। শুধু তাহাই নহে, সংবাদ মাধ্যম ও আপামর জনসাধারণ তাহাদের অধিকার সম্বন্ধে শুধু ওয়াকিবহাল নয়, সোচ্চার হইতে হইবে। তাহা হইলেই শুধু নির্বাচন কমিশন ও সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত হইবে এবং তাহারা সকলেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকিবেন। ইবরাহিমের মন্তব: সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন; এটাকে যদি সরকার দমন করতে চায়, তাহলে সরকার সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হওয়া উচিত।

বিচারপতি সিনহার রায় থেকে

এসকে সিনহা প্রদত্ত রায়ের অনুচ্ছেদ ১৯২-এর ভাবার্থ। এক. খায়রুল হকের নেতৃত্বে যে রায় দেয়া হয়েছিল সেই রায়ে, আশা করা হয়েছিল বাংলাদেশ সরকার নির্বাচন কমিশনকে এমনভাবে শক্তিশালী করবে যে, ওই নির্বাচন কমিশন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার তথা স্বাধীন ও উন্মুক্ত বা পক্ষপাতহীন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবেন। সেই রায়ে আশা করা হয়েছিল যে, সরকারের হস্তক্ষেপ ব্যতীতই নির্বাচন কমিশনে শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে। এস কে সিনহার নেতৃত্বে প্রদত্ত রায়ে মন্তব্য হচ্ছে, ২০১১ বা ২০১২ সালের পরবর্তী বাংলাদেশের কোনো সরকারই ওপরে ব্যক্ত প্রত্যাশাগুলো পূরণের লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই রায়ে মন্তব্য করা হয়েছে বিরোধী দলও এই বিষয়টি পার্লামেন্টে বা অন্য কোনো ফোরামে উপস্থাপন করেননি। আরো মন্তব্য বিরোধী দল কর্তৃক এইরূপ নিষ্ক্রিয়তা বা নিশ্চুপ থাকার ফল হলো, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। 

ইবরাহিমের মন্তব্যঃ খুলনা সিটি করপোরেশনের বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, দেশবাসীর সামনে পুনরায় প্রমাণিত হলো, নির্বাচন কমিশন এখনো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি, এখনো ক্ষমতাসীন সরকারের দয়া-মায়া বা ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। 

দুই. এস কে সিনহার রায়ের ১৯৩ অনুচ্ছেদের প্রথম অর্ধেকের ভাবার্থ। জাতীয় সংসদের নির্বাচন যদি স্বাধীনভাবে, পক্ষপাতহীনভাবে এবং কোনো হস্তক্ষেপ ব্যতীত অনুষ্ঠান করা না যায় বা করা না হয়, তাহলে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না। গ্রহণযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ব্যতীত, গ্রহণযোগ্য বা বিশ্বাসযোগ্য পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠা বা গঠন করা সম্ভব নয়। ফলে আমাদের দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং পার্লামেন্ট এখনো শৈশবেই রয়ে গেল। জনগণ এই দুইটি প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা স্থাপন করতে পারছেন না। যদি এ দুইটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাতিষ্ঠানিকী করণের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও সম্মান অর্জন করা না হয় তাহলে কোনো বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়। 

স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যতীত, জ্ঞানী বা মেধাবী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হতে পারবেন না এবং এ কারণে পার্লামেন্টের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। ইবরাহিমের মন্তব্য- ২০১৮ সালের শেষাংশে পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু এটা কতটুকু অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে, সেটা এখনো অনিশ্চিত। সেই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অপরিহার্য। কিন্তু মে ২০১৮ সালে পর্যালোচনা করে দেখছি যে, তাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো আশাব্যঞ্জক প্রচেষ্টা নেই। অতএব, আগামীতে যদি পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে সেটি যে অগ্রহণযোগ্য হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। অগ্রহণযোগ্য বা বিতর্কিত কিংবা গোলযোগপূর্ণ হলে, এর জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনই দায়ী থাকবেন।

নির্বাচন কমিশন কি সংবিধান লঙ্ঘন করছেন?

বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের অনুচ্ছেদ-১১৭৮ উদ্ধৃত করছি। নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে সর্বপ্রকার প্রয়োজন নিরসনকল্পে সরকার তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ লইবেন। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত সকল প্রকার সহায়তা সরকারের নির্বাহী বিভাগ ত্বরিত প্রদান করিতে বাধ্য থাকিবেন, অন্যথায় তাহারা সংবিধান ভঙ্গ করিবার দায়ে দায়ী হইবেন। এ ব্যাপারে কোনো তরফে কোনো গাফিলতি দেখা দিলে নির্বাচন কমিশন প্রকাশ্যে অভিযোগ উত্থাপন করিবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ত্বরিত গ্রহণ করিবেন, অন্যথায় তাহারাও সংবিধান ভঙ্গের দায়ে দায়ী হইবেন। 

সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ হইতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ পর্যন্ত নির্বাচনের সহিত প্রত্যক্ষভাবে ত্বরিত এবং নির্বাচন কমিশনের বিবেচনা (ডিসক্রিশন) অনুসারে, যাহারা এমনকি পরোক্ষভাবে জড়িত, রাষ্ট্রের সেই সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকিবে। নির্বাচন কমিশনারগণ অন্তর্মুখী (ইনট্রোভার্ট) হইবেন না। যতদূর সম্ভব তাহাদের দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা (ট্রান্সপারেন্সি) বজায় রাখিবেন। সতত মনে রাখিবেন যে, জনগণের নিকটেই তাহাদের জবাবদিহিতা (অ্যাকাউনটেবিলিটি)। তাহারা সকলে জনগণের সেবক মাত্র। তাহারা কী কাজ করিতেছেন তাহাও জনগণের জানিবার অধিকার রহিয়াছে, তাহারা কী কাজ করিতে পারিতেছেন না এবং কেন পারিতেছেন না তাহাও জানিবার অধিকার জনগণের রহিয়াছে। নির্বাচনী আইন বা বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ ত্বরিত লইতে হইবে। এ ব্যাপারে কোনোরূপ শৈথল্য প্রদর্শন চলিবে না। শৈথিল্য প্রদর্শন করিলে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে আইন অমান্যকারী হইবেন।

কেন রায় থেকে উদ্ধৃত করলাম

রায় থেকে উদ্ধৃত করার পেছনে কারণ আছে। আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন, বাংলাদেশে (বর্তমানে বাধাপ্রাপ্ত) গণতান্ত্রিক রাজনীতি পুনরুদ্ধার ও অর্থনেতিক উন্নয়নের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের মনে স্বস্তি আনার জন্য, জনগণকে নির্বাচনমুখী করার জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন, সেই পরিবেশ ইতিবাচকভাবে সৃষ্টিতে অনেকগুলো উপাত্ত কাজ করে। আমরা সাধারণ রাজনৈতিক কর্মীরা বলা এক জিনিস, আর অসাধারণ ব্যক্তিত্বরা বলা আরেক জিনিস। সম্মানিত পাঠক, আপনারা খায়রুল হকের রায় এবং সিনহার রায় থেকে উদ্ধৃত করা অনুচ্ছেদগুলো পড়লে নিজেরাই বুঝতে পারবেন যে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরাও নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে কী কী মন্তব্য করেছেন।

পার্লামেন্ট নির্বাচনে কমিশনের ভূমিকা

ক্ষমতাসীন সরকারের তৎপরতা দেখে আমরা মনে করছি যে, সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে এবং আইনের মারপ্যাঁচে নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণা করে, আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চায়। বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের লাখ লাখ কর্মী মামলার কারণে ঘর ছাড়া; ঘরবাড়ি, ভিটামাটি, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি অনেক কিছু বিক্রি করে টাকা যোগাড় করে মামলার খরচ মিটাচ্ছেন এবং সংসার চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এ রূপ লাখ লাখ কর্মীর সঙ্গে কোটি কোটি মানুষ পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত। যদি আগামী নির্বাচনের এক-দুই মাস আগে থেকে বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনীয় এবং নির্বাচন অনুকূল না থাকে, তাহলে, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের কর্মীরা বা সমর্থকেরা কিসের ভরসায় এলাকায় থাকবেন? কর্মীদের সাজানো বিভিন্ন মামলায় বা কল্পিত মামলার অজুহাতে গ্রেফতার করা হবে না বা বাড়িছাড়া করা হবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা কি আছে? শান্তিতে নির্বাচন করা যাবে, এমন গ্যারান্টি নির্বাচন কমিশনই দিতে পারে। 

নির্বাচন কমিশনকে আগ্রহী হতে হবে, সাহসী হতে হবে এবং ক্ষমতাসীন সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করার জন্য দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে। আমি বলতে চাচ্ছি- নির্বাচন কমিশনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা আগামীতে কিরূপ ভূমিকা রাখতে চান। বর্তমানে (মে ২০১৮) নির্বাচন কমিশনের ওপর থেকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের তথা তাদের প্রতিনিধিত্বশীল অংশের পক্ষ থেকে আস্থা ক্ষয়িষ্ণু। এই নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের জন্য দাবি ইতোমধ্যেই মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্বের নজরে এসেছে। এ প্রসঙ্গে আগামীতে একটি কলামে ইন’শা আল্লাহ আবারো লিখব।

  • লেখক : মেজর জেনারেল (অব.); চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি 
  • কার্টেসিঃ নয়াদিগন্ত/মে ২৩, ২০১৮ 

Shootouts are not the answer

Long-term strategy needed in the fight against drugs


We are extremely concerned at the rising death toll in shootouts by law enforcers in countrywide anti-narcotic drives. In the last nine days alone, at least 33 alleged drug peddlers have been killed in “gunfights” according to our reports. The details around these gunfights are hazy at best, and there are contradictory accounts by police and family members and neighbours of the deceased, who have made claims of plainclothes men picking up the accused.

While we appreciate the fact that the drug problem is being prioritised, we must say that shootouts are not the answer. Firstly, concerns of extrajudicial killings (as expressed by many rights activists) have begun to surface and the latest incidents of shootouts must be investigated thoroughly. Everyone is entitled to due process under the constitution regardless of the crime they're accused of. The long list of killings in shootouts shows that there is a trust deficit in the judicial process on the part of law enforcers.

Secondly, shootouts do nothing to get to the root causes. We must remember that with the death of alleged drug traders, law enforcers are losing a valuable source of intel which can help them nab the masterminds the drug kingpins who are calling the shots. Given the transnational nature of the drug business, cross-border cooperation among law enforcement agencies of the countries involved is needed in order to disrupt the supply chain.

Law enforcers ought to be given clear directives to conduct anti-narcotic drives and they must ensure that due process is followed. Furthermore, the fight against such organised crimes cannot be won without a viable long-term strategy that includes intelligence gathering and enhancing cooperation with law enforcement agencies outside our borders.

Courtesy: Editorial/The Daily Star/ May 23, 3018

দুই মেয়াদে নির্বাচন প্রসঙ্গ আছে ১৬তম সংশোধনীর রায়েও


আগামী সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে  কোনো ধরনের নির্বাচনী সংস্কারে যেতে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার কোনো প্রস্তুতি  নেই। অথচ নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহারই শুধু নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দেয়ার মূল রায়দানকারী সাবেক প্রধান  বিচারপতি এবং আইন কমিশনের বর্তমান  চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হকেরও নির্বাচন সংস্কারে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ রয়েছে। 

বিচারপতি এস কে সিনহা তার রায়ে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের  নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ যে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে শর্তসাপেক্ষে দুই মেয়াদে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন করার কথা বলেছিলেন, তার পুনরুল্লেখ করেন। তার রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিভিউ দরখাস্তে যেসব বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে এক্সপাঞ্জ চাওয়া হয়েছে, তার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ নেই। 

বিচারপতি সিনহা লিখেছিলেন, দুই মেয়াদে (২০১৪ সালের দশম এবং আসন্ন একাদশ সংসদ) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে শুধু একটি বাধা অপসারণ করতে হবে।

আর তা হলো কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করা যাবে না।     

সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞরা একমত যে, ষোড়শ সংশোধনী মামলায় আপিল বিভাগের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে দায়ের করা হলেও  সে বিষয়ে শিগগিরই শুনানির কোনো সম্ভাবনা নেই। ওই রায় ও তার পর্যবেক্ষণকে নির্বাহী বিভাগ কীভাবে দেখে, সেটা মূল্যায়ন করে স্বাধীন সাংবিধানিক সংস্থার দাবিদার নির্বাচন কমিশন হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। প্রত্যেকটি সাংবিধানিক সংস্থা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বাধ্য। কিন্তু হুদা কমিশন নির্বাচন সংক্রান্ত নির্দেশনা আমলে নিতে সরকারের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় নিয়ে স্পিকটি নট হিসেবে থাকতেই পণ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

পাঁচ নির্বাচন কমিশনার বহু ঘটা করে সমালোচকদের মতে তথাকথিত স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়ার পরের  ১৫ মাসে আজ পর্যন্ত ভুলেও কেউ নির্বাচন সংস্কারে মুখ খুলেননি। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা বলছেন এটা লক্ষণীয়  যে, বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে সরকারের খারাপ সম্পর্ক রয়েছে বলেই নির্বাচন কমিশন শুধু তারই পর্যবেক্ষণের বিষয় মুখ লুকিয়ে রাখছে, বিষয়টি  তেমন নয়। তারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায়ে নির্বাচন সম্পর্কে দেয়া পর্যবেক্ষণ আমলে নিতেই অনিচ্ছুক। তারা কথায় কথায় কমিটি করতে অভ্যস্ত।

এইচ টি ইমামের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল এমপিদের প্রচারণায় অংশগ্রহণের বিষয়ে অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে না করতেই নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়। আর গতকালই তারা তা বিবেচনা করতে পূর্ণাঙ্গ কমিশনের  বৈঠকও ডেকে ফেলেছেন। 

ইসি সূত্রগুলোর মতে তাদের এই মনোভাবের কারণ সংক্রান্ত বক্তব্য হলো, আওয়ামী লীগ নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। তাদের কথা তো শুনতেই হয়। কিন্তু এই যুক্তি বিরোধীদলীয় কোনো ইচ্ছা বাস্তবায়নে দেখা যায় না। তবে সুপ্রিম কোর্ট নিজেই কোনো দলের চেয়ে বড় পক্ষ। তার কথার মর্যাদা সব দলের সম্মিলিত মতামতের ওপর প্রাধান্য পাওয়ার কথা।    

এর আগে তারা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো, সুশীল সমাজ ও মিডিয়া প্রতিনিধির সঙ্গে দীর্ঘ সংলাপে মিলিত হয়েছিল। কিন্তু সেই আলোচনার ভিত্তিতে সমপ্রতি তারা দামি কাগজে রঙিন প্রতিবেদন ছাপানোর ব্যবস্থা করলেও তার বাস্তবায়নে আদৌ  কোনো উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা যায়নি। অথচ পর্যবেক্ষকরা সকৌতুকে লক্ষ্য করছেন যে, আওয়ামী লীগের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে তারা গুরুত্বের সঙ্গে নির্বাচনী সংস্কারে উঠেপড়ে লেগেছেন। সংসদ সদস্যরা যাতে গাজীপুরের নির্বাচনে প্রচারাভিযানে অংশ নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে তারা মঙ্গলবার বৈঠক করেছেন।   

প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত জানুয়ারিতে বলেছিলেন, আগামী অক্টোবরে তারা সাধারণ নির্বাচন বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করবেন। এখন বোঝা যাচ্ছে, তারা ব্যালট  পেপার ছাপানো কিংবা অমোচনীয় কালি সংগ্রহের দিকেই নির্দেশ করেছেন। কোনো ধরনের আইন বা বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কারে তারা যাবেন না।  

অনেকের মতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন বলতে তারা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আরপিও-র বাংলা তরজমা, এমপিদের নির্বাচনী প্রচারণায় নামাতে আচরণবিধি সংশোধন করা বুঝে থাকেন। আরপিও’র কিছু বিষয় সংশোধনে তারা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ শিথিল মনোভাব দেখানোর পরে তারাও নীরব থাকছেন। রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনায় তারা বলেছিল ডিলিমিটেশন আইন সংশোধন করা হবে।

জনসংখ্যার অনুপাত এবং প্রশাসনিক ইউনিটের অখণ্ডতা বজায় রাখার কথা বলা আছে আইনে। এটা অসঙ্গতি। কারণ দুটো একসঙ্গে রাখা যায় না। কিন্তু সরকারি দলের অনীহা থাকার কারণে ইসি এখানেও চুপ আছে।  

বিএনপি তার লিখিত প্রস্তাবে আরপিও সংস্কার করে আইনশৃঙ্খলার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনীকে আনা সহ প্রায় দুশ’ প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। এর কোনো একটিও বাস্তবে রূপ নেবে কিনা তা নিয়ে বিএনপি দ্বিধান্বিত।  আরপিও নিয়ে কিছু করার কোনো প্রস্তুতি ইসির  নেই। জিজ্ঞেস করলে কর্মকর্তারা বলেন, কাজ চলছে। আসলে চলছে না। 

নির্বাচনী তফসিল করার পরে জনসভা করার অনুমতি চাইলে ডিএমপি কমিশনারকে তিন দিনের মধ্যে বলতে হবে, মুখ ফুটে কমিশনাররা কিছু না বললে ধরে নিতে হবে জনসভার অনুমতি মিলেছে। ইদানীং এবিষয়েও ইসি চুপ আছে। কারণ তারা বুঝে গেছে, এটা হবে না।

সিনহার পর্যবেক্ষণ: 


বিচারপতি এস কে সিনহা তার রায়ে লিখেছেন, স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে যোগ দেয়নি। সে কারণে সংসদ দুই মাসের  বেশি স্থায়ী হয়নি। বিরাট বিক্ষোভের পরে সরকার সংবিধান সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছিল। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করা হয়েছিল। কিন্তু এই ব্যবস্থার যে অনিরাময়যোগ্য কিছু অন্তর্গত দুর্বলতা রয়েছে, তা শনাক্ত করতে বেশি বিলম্ব ঘটেনি। ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ, ৫৮ঙ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়। এবং ৬১, ৯৯, ১২৩, ১৪৭ এবং ১৫২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয়। তৃতীয় তফসিলে ফরম ১ ক যুক্ত করা হয়। সংশোধিত বিধানের আওতায়, একটি নির্দলীয় সরকার প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা ভোগ করবে। কিন্তু তারা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করবে।  এবং পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী শপথ না নেয়া পর্যন্ত মেয়াদে এই সরকার কোনো নীতিনির্ধারণী সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত  নেয়া ছাড়াই দৈনন্দিন রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।

কি উপায়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করা হবে, সেটা সংবিধানের ৫৮গ অনুচ্ছেদে বলা আছে। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বাছাই নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলো। এরকম একটি মেয়াদে সেনাবাহিনীর প্রধান একটি ক্যু-এর ব্যর্থ চেষ্টা করেছিলেন এবং তার পরিণামে তাকে অপসারিত হতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হলো। এবং আপিল বিভাগেও তা এলো। আবদুল মান্নান বনাম বাংলাদেশ (৬৪ ডিএলআর) মামলায় সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে ওই সংশোধনীকে সংবিধান বহির্ভূত বলে রায় দেয়া হলো। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে এটা স্থির হলো যে, আগামী দুটি সাধারণ নির্বাচন ত্রয়োদশ সংশোধনীর আওতায় হতে পারে; তবে শর্ত হলো ৫৮ গ অনুচ্ছেদের ৩ ও ৪ ধারার আওতায় প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতির মধ্য থেকে  নেয়া যাবে না। 

বিচারপতি এস কে সিনহা আপিল বিভাগ কেন ওই নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেই বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ  দেন। তিনি লিখেছেন, আপিল বিভাগ ওই পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন এটা বিবেচনায় নিয়ে যে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগে তাহলে রাজনীতিকীকরণ হতে পারে। আর  সেজন্য বিকল্প ব্যবস্থা হবে নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করা। তার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ জোরদার করতে হবে যাতে সংসদীয় নির্বাচন সর্বদাই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে। আপিল বিভাগ লক্ষ্য করেছেন যে, প্রতিটি নির্বাচনে যে দল হেরে যায়, তারাই নির্বাচনে নিরপেক্ষতার বিষয়ে অভিযোগ তুলে থাকে এবং বিরোধী দল সংসদে সহযোগিতা করে না। শেষ পর্যন্ত  দেখা গেল, ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিলো না। 

এরপর বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, এই আপিল বিভাগ মত দিচ্ছে যে, সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব রকম ক্ষমতা প্রদান করে তাকে শক্তিশালী করবে। নির্বাচন কমিশনে  কোনো শূন্যতা তৈরি হলে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই তা আপনাআপনি পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু  কোনো সরকারই এবিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 

বিচারপতি সিনহা অবাধ নির্বাচনে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ের উল্লেখ করে বলেছেন, এটা প্রত্যাশিত যে, একটি দেশ যেখানে সাংবিধানিক গণতন্ত্র থাকবে, সেখানে নিচে উল্লিখিত বিষয়গুলো বিদ্যমান থাকবে। আর তা হলো: ক. নির্বাচনের শুদ্ধতা, খ. শাসনে সাধুতা, গ. ব্যক্তির মর্যাদার পবিত্রতা, ঘ.আইনের শাসনের পূতঃপবিত্রতা, ঙ. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, চ. আমলাতন্ত্রের দক্ষতা এবং গ্রহণযোগ্যতা, ছ. বিচারবিভাগ, আমলাতন্ত্র, নির্বাচন কমিশন, সংসদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা, জ. এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সততা ও শ্রদ্ধাভাজন হওয়া। 

বিচারপতি খায়রুলের পর্যবেক্ষণ: 


বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনী রায়ের অথর জাজ। তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায়ে এসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফরমস মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শাহ’র বরাতে লিখেছেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে যতো ধরনের ক্ষমতার দরকার তার সবটারই এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। সংবিধানে যে ‘নির্বাচন’ শব্দটি রয়েছে এর আওতায় একটি নির্বাচন করার আগে ও পরের প্রতিটি স্তর ও ধাপ অন্তর্ভুক্ত  আছে বলেই গণ্য হবে। সংসদ যদি কখনও কোনো ‘‘বৈধ’’ আইন তৈরি করে তবে তার বিধানাবলী তাকে মানতে হবে। তবে সংবিধান নির্বাচন কমিশনের জন্য এমনই রেসিডুয়ারি ক্ষমতা সংরক্ষিত করেছে যার আওতায় তার পক্ষে অবাধ নির্বাচনের স্বার্থে সবরকম পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব।        

বিচারপতি খায়রুল এরপর মন্তব্য করেছেন, ‘‘ওই মতামত থেকে এটাই পরিষ্কার যে, সর্বাগ্রে নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলের প্রভাব বা হস্তক্ষেপ  থেকে তার নিজকে মুক্ত রাখতে হবে। এমন ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করতে হবে যারা জনগণের চোখে নিরপেক্ষ বলে গণ্য হবেন।’’

বিচারপতি খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার  পূর্ণাঙ্গ রায়ে দুই মেয়াদে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জায়গা থেকে সরে এসে নতুন করে এখতিয়ারবহির্ভূত রায় পুনর্লিখন করেছেন বলে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন সুপারসিডেড হয়ে পদত্যাগকারী বিচারপতি এম এ ওয়াহ্‌হাব মিয়া। বিচারপতি ওয়াহ্‌হাব মিয়া মনে করেন, বিচারপতি খায়রুল যেভাবে দুই মেয়াদে কেয়ারটেকারের অধীনে নির্বাচন করার রায় পাল্টেছেন তা এখতিয়ারবহির্ভূত। বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানাও বিচারপতি ওয়াহ্‌হাব মিয়াকে সমর্থন করেছেন। 
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি নির্বাচনের পরে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে এবং ইসি পুনর্গঠনের আওয়াজ তুলেছে। 

  • কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২৩,২০১৮  

Most banks see EPS fall


Some 18 of the 30 listed banks saw their earnings per share (EPS) plummet in the first quarter of the year because of huge provisioning against default loans.
EPS is the portion of a company's profit allocated to each outstanding share of common stock. In short, it serves as an indicator of a company's profitability.

One, AB, Al Arafah, City, Dhaka, Eastern, First Security, Islami, Mercantile, National, Prime, Rupali, Shahjalal, Southeast, Standard, Trust and Uttara saw their EPS decline, according to data from the Dhaka Stock Exchange.

On the other hand, ICB Islami saw higher losses this quarter. Ten banks though saw their EPS grow. Pubali is yet to announce their EPS.

In the first quarter, One Bank's EPS declined the most, by 73.17 percent year-on-year, to Tk 0.33.

“We had Tk 30 crore of unrealised loss from our capital market exposure due to the decline in bourse's index,” said Ashraful Haq Amin, senior vice-president and in-charge of finance division of One Bank. Dhaka Stock Exchange statistics shows its benchmark index, DSEX, declined 656.97 points, or 10.50 percent, to 5,597.44 points in the first quarter.

The banking sector had to keep huge provisioning in the first quarter as the classified loans are soaring, said Khondkar Ibrahim Khaled, a former deputy governor of the Bangladesh Bank. “Those with higher classified loans saw their EPS decline mostly.”

On the other hand, many banks could not disburse new loans in the first quarter as they have already reached their loan-deposit ratio, so profits were hampered, he added. Huge competition to attract deposits is another reason for the decline in banks' EPS in the quarter.

Banks are offering higher interest on deposits but the lending rate is yet to rise proportionally, so the spread declined this quarter and with it, the EPS.

For instance, in March banks' spread stood at 4.34 percent, in contrast to 4.62 percent a year earlier.

“We are keeping sufficient provisioning, so EPS is affected,” said Mohammad Habibur Rahman Chowdhury, deputy managing director and chief financial officer of Prime Bank.

The main difference maker in this quarter's EPS was the declining operating profit, he said.

Prime Bank's operating profit this quarter stood at Tk 109 crore, down almost 55 percent year-on-year.

  • Courtesy: The Daily Star / May 23, 2018


Exploiting fear, they make a quick buck


A section of law enforcers allegedly have been making quick bucks by instilling fear into people of making their relatives victims of “shootouts” during the ongoing countrywide anti-narcotics drives. In Dinajpur, law enforcers allegedly threatened a paddy trader to kill him in gunfight and took a bribe of Tk 10,000 from him.

Two families in Comilla and Gazipur complained that they had given money to cops to free their two relatives, but both were killed in “gunfights” later.

Paddy trader Dabirul Islam from Amtoli area in Dinajpur's Chirirbandar upazila yesterday alleged that two plainclothes policeman demanded Tk 50,000 from him around 7:00pm on Monday.

The 42-year-old trader said Md Firozzaman and Anwar Hossain, assistant sub-inspectors of Chirirbandar Police Station, caught him while he was urinating at the back of a local restaurant.

“They took away my mobile phone and asked me to go to a nearby litchi orchard.”

Treating him as a drug trader, the cops slapped him several times. They also tried to handcuff him.

As the victim protested, one of the cops pointed his gun at the trader and threatened to kill him in “crossfire”.

At one point, the ASIs demanded he paid them Tk 50,000 or face death.

Dabirul phoned one of his acquaintances and asked him to send Tk 10,000 to a mobile phone through a mobile money transfer platform. The phone number was provided to him by the policemen.

After around an hour, the cops let Dabirul go as they became sure that the amount was transferred to the mobile phone.

Talking to The Daily Star, Md Firozzaman said he had been in Amtoli area on Monday afternoon, but he knew nothing about the bribing incident.

In Comilla, “drug dealers” Peyar Ali, 24, and Sharif, 26, were killed in a “gunfight” early yesterday.

Peyar Ali's mother Komola Begum alleged that cops from Kotwali Model Police Station detained her son at her home on Monday afternoon.

“My son was accused in about 10 cases, but he secured bail in all those,” she told The Daily Star.

Komola said one Sohag, an informant of DB Sub-Inspector Shah Kamal, demanded her family pay Tk 200,000 for his release. “I managed to collect Tk 25,000 and gave it to Sohag. But he was killed,” she added.

Contacted, Kamal denied the allegation. “A team of Kotwali Model Police Station had led the operation to nab criminals and we assisted the team.”

In Gazipur, family members of “drug dealer” Rezaul Islam alias Beshti Rony allegedly paid Tk 8 lakh to law enforcers for his release, but he was killed in a “gunfight”.

Rezaul's mother Parvin Begum said DB police picked up her son around 2:00am on Saturday.

Around noon the following day, Rezaul's family members went to the DB's Gazipur city office. “They freed my son after receiving Tk 3 lakh and having me signed a blank sheet of paper.”

As Rezaul walked out of the DB office, ASI Abu Bakkar Siddiqui of Tongi Police Station detained him again and took him to the station.

“At the police station, cops demanded Tk 5 lakh for freeing him,” she said, adding that her husband gave Tk 5 lakh to police on Monday.

Later they came to know that their son was killed in a “gunfight”. Officer-in-Charge Amir Hossain of DB police claimed they did not detain Rezaul.

Abu Bakkar denied the allegation of taking money from Rezaul's family. He said Rezaul was accused in 14 cases.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 23, 2018

Padma Bridge Rail Link: Soaring land prices jacking up cost


The cost of the Padma Bridge rail link, the construction of which is yet to start in full swing, has gone up by Tk 4,269 crore due to escalating land acquisition expenditure and delay in project implementation.
The original cost of the project was Tk 34,989 crore and now it stands at Tk 39,258 crore, a 12 percent hike.

The Executive Committee of the National Economic Council (Ecnec) yesterday (Tuesday) approved the revised project and two years more time for completing it. Now it has to be finished by June 2024.

The cost increased as the cost of land acquisition rose, said Planning Minister AHM Mustafa Kamal at a press briefing after the Ecnec meeting.

Land was not available at the price first estimated, he added.

The revised project documents show that now Tk 6,224 crore has been allocated for acquiring 1,786 acres. Originally, Tk 2,853 crore had been earmarked for 1,700 acres.

Due to the delayed start of the project, the cost of construction also went up by Tk 959 crore.

The Ecnec had approved the project in May 2016 but the loan agreement with China was delayed causing late start to the project.

Late last month, the Economic Relations Division (ERD) signed a Tk 21,036 crore equivalent loan agreement with Exim Bank of China.

The railway ministry earlier this month at a press conference said the government was going to start construction in a month.

Under the project, a double rail line would be built from Dhaka to Jessore and 23km of it would be elevated.

The project would bring four districts Munshiganj, Shariatpur, Madaripur and Narail under the coverage of the railway network.

Now, it takes more than nine hours to travel the 412km from Dhaka to Khulna but once the project is done, the distance would be reduced to 213km and it would take four hours.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 23, 3018 

GODFATHERS remain untouched

Inam Ahmed and Shakhawat Liton


As the special drive against yaba peddlers goes on in full swing, questions arise why some alleged yaba godfathers in Ukhia-Teknaf, the gateway of smuggling the crazy drug into Bangladesh, whose names have prominently figured in multiple intelligence reports, remain out of the net.

Abdur Rahman Bodi, the Awami League MP from Teknaf, has long been known as the godfather of yaba trade and he has allegedly set up a powerful network that includes his five brothers, personal assistant Mong Mong Sen and Teknaf Upazila Chairman Zafar Ahmed to spread the drug across the country.

The lawmaker's name has figured in at least three reports one by the narcotics department, one by the Border Guard Bangladesh and one by a joint intelligence body formed to tackle the drug trade in Cox's Bazar-Teknaf area.

The lists were also sent to the home ministry, but nothing has happened.

No drive in Teknaf-Cox’s Bazar

Interestingly this time, as the crackdown goes on, Teknaf-Cox's Bazar area is yet to see any major drive. But across the country, more than 30 alleged yaba traders have been killed in “gunfights” with Rab and police over the past few days.

In the latest move, the narcotics department sent a list of 141 yaba godfathers to the Anti-Corruption Commission in December 2017 that includes the names of Bodi and his gang. The department requested the ACC to investigate their wealth.

Earlier, Bodi was jailed for three years for concealing wealth but he is now out on bail.

The narcotics department report said Bodi was one of the main controllers of yaba trade in Bangladesh. Nothing happens without his nod.

In November 2012, the Department of Narcotics Control initially prepared a list of 554 top yaba traders. Later in 2014, intelligence agencies, the narcotics department, police and Rab prepared a list of 1,200 yaba traders. The list was revealed by the media in the middle of 2014.

Bodi and several of his relatives and associates were on the list, including Bodi's brothers Abdul Shukkur and Mujibur Rahman, step brothers Abdul Amin and Faisal Rahman, in-laws Akhter Kamal and Shahed Kamal, uncle Haider Ali, cousin Kamrul Islam Russell and nephew Nipu.

The 2014 list includes the names of 87 leaders of the AL and its front organisations Jubo League, Chhatra League and Sramik League who back the yaba traders in Dhaka, Chittagong, Khulna and Rajshahi divisions, the daily Observer reported on January 22 last year.

No actions were taken against them and, as reported by the daily Observer, Bodi's name was later dropped from the list.

As Bodi's name surfaced, Home Minister Asaduzzaman Khan Kamal told the media in 2014 that no action could be taken against Bodi because no evidence of his involvement in yaba trade was found.

Replying to a query about Bodi's alleged role in yaba trade, the home boss told reporters yesterday (Tuesday), "Those involved in drug trade will be brought to book. We're trying to collect more information about Bodi and action will be taken against him after receiving proper information."

Asked if only those who carry the drug would be killed in the name of gunfights, Kamal said, "We won't spare anyone, no matter if he is an MP, government official, member of security force or journalist."

But the most interesting thing happened when these alleged yaba traders participated at an anti-drug meeting at the Cox's Bazar deputy commissioner's office on October 2, 2014. Home ministry's then Senior Secretary Mozammel Haque Khan was the chief guest of the high profile meeting attended by a number of alleged yaba traders, including Bodi and Teknaf Upazila Chairman Zafar Ahmed.

They flatly denied any involvement in the yaba trade and said the list was prepared to harass them.

Meantime, the Dhaka Metropolitan Police (DMP) has recently drawn up a list of 100 top drug dealers in the city, although their details are not yet known.

But earlier in 2017, the DMP drew up another list of 100 godfathers who were mostly linked to the ruling AL and its front organisations, two from BNP and Jatiya Party, a number of cops and also narcotics department officials.

Of the godfathers in the capital, 16 were ward councillors 15 from AL and one from BNP. Besides, a thana-level president of Bastuhara (homeless) League and a ward-level secretary of Tanti (weaver) League, both pro-AL organisations, were on the list.

The DMP had also compiled a list of 1,100 dealers and retailers of yaba in the city. The list was forwarded to the home ministry.

The police headquarters has already prepared a list of 26,299 drug dealers and patrons countrywide and has been conducting raids to catch them, a senior police officer said wishing anonymity.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 23, 2018

Four crore people under poverty line mars development










A view of Karail slum in Dhaka.

About four crore people still remain under poverty line in the country and they do not get two meals a day marring the government’s development publicity, said economists, agriculturists and farmer leaders on Tuesday.

They urged the government to enhance allocation for agricultural sector in the upcoming national budget to protect rights of the millions of marginalised farmers as they were feeding the countrymen.

They made the remarks while speaking at national seminar on ‘sustainable agriculture and rights to food’ organised by Right to Food Bangladesh Secretariat at CIRDAP auditorium in Dhaka.

Former food minister and also ruling Awami League presidium member Muhammad Abdur Razzak who spoke at the seminar as the chief guest said although the country’s food productions increased, ensuring nutrition and safe food for the countrymen still remained a big challenge.

‘Four crore people are still under poverty line,’ he said, adding that employment generation at manufacturing sector was necessary to lift those poor people above the poverty line.

Senior economist Qazi Kholiquzzaman Ahmad who presided over the seminar said though social development had been taking place but the disparity of income had been widening in society. ‘The country’s 5.75 crore people are suffering from malnutrition. The roadmap of development will not be strengthened by keeping the large number of people malnourish,’ he said. 

He called for taking the country’s backward population ahead to achieve the sustainable development goals.

Former director general of Department of Agricultural Extension Hamidur Rahman said the food production increased but hidden hunger still prevailed in the country. 

‘About 40 per cent women and children are suffering from malnutrition,’ he said.
Hunger Free World country director Ataur Rahman Mitaan said that one in every four persons was in the lack of foods and that put the country’s development under question.

The subsidies in agriculture did not reach the real farmers, he alleged, adding that the middlemen should be cut off to remove that crisis from agriculture sector.

Bangabandhu Sheikh Mujib Agricultural University’s former vice-chancellor Mahabubur Rahman said 24 per cent people were hardcore poor and the poverty must be reduced to zero level. 

Right to Food Bangladesh general secretary Mohasin Ali, who presented keynote paper at the seminar, said Bangladesh has imported total 84 lakh tonnes of food grains this year and of them 36 lakh tonnes is rice. Food security is in danger due to import dependence, he said.

He presented four point recommendations to the government, namely formation of price commissions for fixing fair rate for agricultural produce, enhancing agricultural budgets with priority, giving incentives to farmers for using mechanised equipment and formulation of necessary laws and policies to protect agricultural lands.

Bangladesh Krisak Federation general secretary Jayed Iqbal, Bangladeshi Adibashi Samity general secretary Amoli Kisku, and Bhumihin Samity general Secretary Subal Das also spoke at the seminar.

  • Courtesy: New Age /May 23. 2018