Search

Saturday, May 26, 2018

এমপি বদিই বাংলাদেশে ইয়াবা এনেছে — আ.লীগ নেতা



মাদক নির্মূল অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রতি রাতেই ৮-১০ জন মারা যাচ্ছেন। অথচ যাকে নিয়ে শুরু থেকে আলোচনা, সেই আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। বদি কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া এলাকার এমপি।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, আমরা কী বলব, আপনি টেকনাফ থানার ওসি আর বিজিবির এই ব্যাটেলিয়নের কমান্ডারের সঙ্গে কথা বলেন, তারাই বলে দেবে বাংলাদেশে ইয়াবা কে এনেছে। ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এমপি আছেন বদি সাহেব। আমরা দেখি যারা ইয়াবা আমদানির মূল কারিগর, তারা সবাই এমপি সাহেবের আশেপাশে থাকে। আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকে। এমপি তাদের শেল্টার দেন। তাহলে মানুষ কী বুঝবে? আপনি টেকনাফে এসে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। শতকরা ৯৫ জনই বলবেন এমপি বদির মাধ্যমেই ইয়াবা এসেছে বাংলাদেশে৷ মূল হোতাদের এখন এলাকায় দেখছিই না।

মাদকবিরোধী অভিযানের আগে পাঁচটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার সমন্বয়ে মাদক ব্যবসায়ী ও পৃষ্ঠপোষকদের একটি তালিকা তৈরি করে সরকার। সেই তালিকায় মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে আব্দুর রহমান বদির নাম।

এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় এক নম্বরে আছে বদির নাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা টেকনাফের শীর্ষ মানব পাচারকারীর তালিকাতেও তার নাম ছিল। দেশে মাদক ইয়াবার গডফাদার ও ব্যবসায়ীর তালিকায় টানা ১০ বছর ধরে ছিল বদির নাম।




Thursday, May 24, 2018

City water retention area shrinks fast

Kamrun Nahar 

The water retention area, proposed in Dhaka's Detailed Area Plan (DAP), has declined alarmingly over the last seven years, said an official of the Rajdhani Unnayan Kartripakkha (RAJUK).

In its wake, the city's waterlogging problem aggravated, he added. There is an area of 1,590 sq km under the DAP gazetted in 2010.

Of the area, 5,540 acres or 22.42 sq km were proposed to be protected as a water retention area including ponds, canals, lakes and other water bodies.

But a Rajuk study in 2016-17 found that only 1,744 acres or 7.06 sq km existed as the water retention area.

The city development authority conducted the study for preparing a revised DAP for the period of 2016-35.

RAJUK can’t shirk responsibility


On the condition of anonymity, an official said the Rajuk cannot shirk its liability for the city's awful situation.

Rajuk prepared the master plan that other agencies like city corporations, Dhaka WASA, Water Development Board, Rajuk and Cantonment Board were supposed to implement, he added.

"Rajuk has failed to monitor and coordinate the master plan as the custodian of it," he said.

"It should have strictly monitored what the other agencies were doing," he further said.

He said the Dhaka WASA could not save the 26 canals under its jurisdiction.

Some of them have been grabbed while others have become moribund. Some of them are being used for making concrete walkways while the others are silting up.

The natural flow of the canals must not be obstructed, the official observed.

Bangladesh Institute of Planners General Secretary Adilur Rahman Khan gave even more disturbing information on the extinction of flood flow zones under the DAP area.

He said 2,000-3,000 acres of flood flow zones are lost every year in the DMDP area.

Rajuk as the city's development authority and regulator has no comprehensive data on it due to a weak monitoring system.

Govt. made 158 amendments


The Rajuk source said a high-powered cabinet committee made 158 amendments to the DAP in eight years.

It paved the way for influential quarters to fill the water bodies and flood flow zones, he added.

A seven-member ministerial committee was assigned to approve the DAP in 2010. But it turned into a committee allowing the conversion of land use, he said.

Dhaka city had 43 canals. Of them, 17 have been grabbed fully. Twelve are on the verge of extinction.

Only eight canals are maintained by the deputy commissioner of Dhaka and 26 by the Dhaka WASA as part of a storm drainage system.

The canals under the WASA, each 75 kilometres long, remain mostly clogged with solid waste.

Most of these canals need regular dredging and cleaning, but WASA has failed to do so over the years.

Ten kilometres of the canals have been turned into concrete box culverts to make way for roads on them, significantly reducing their capacity to carry water.

Drainage system messed up


According to experts, the drainage system depends on the topography of any particular city.

After the devastating flood in 1988, Japan International Cooperation Agency (JICA) prepared a Flood Action Plan.

It recommended that a minimum of 12 per cent area be kept as water retention reservoir in the forms of pond, canal, lake, agricultural land and flood plain to save Dhaka city from damaging floods.

Besides, there should be a system to pump out extra water. If the pump system is not kept, the water retention reservoir or flood plains should be increased, it said.

Experts say rainfall above 40 millimetres at a time in Dhaka floods the city with water which takes at least three hours to recede.

The available pumping facility can drain out up to 20mm rain. Rainwater is supposed to be carried away instantly to low-lying retention areas by a well-networked storm drainage system.

They said the city's temperature increased from 28-32 degrees Celsius a few years ago to 38-42 degrees Celsius in recent years.

The experts find a link of the weather conditions with the climate change. Waterlogging is a big problem nowadays due to the erratic rainfall.

Experts say the situation may aggravate with the monsoon approaching fast. The rainy season usually begins in June.

Talking to the FE, DAP project director Ashraful Islam said the present roadside drainage network does not have the capacity to drain out excess rainwater as downpour's intensity has increased.

"Areas like Dhanmondi, Mirpur and Karwan Bazar are inundated even after a brief spell of rain," he commented.

He suggested that the capacity of the roadside drainage network be increased along with regular cleaning.

Rainwater harvesting can also be a major way out for conserving excess rainwater for some time, said Mr Ashraf.

The city has some 0.15-0.2 million houses with rooftops where tanks can be installed for rainwater harvesting, he said.

This should be made mandatory and enforced by taking community initiatives and motivating the people, he added.

Aggressive tree plantation or mandatory green space has to be ensured by city corporations and other authorities to reduce the city's temperature, he mentioned.

"The residents may be given incentive to create green space in their houses."

  • Courtesy: The Financial Express/ May 24, 2018

সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র - নির্মাণ ব্যয় বৈশ্বিক গড়ের চেয়েও বেশি

সাইফ বাপ্পী ও ইয়ামিন সাজিদ 


একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত সব খরচকেই মূলধনি ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়। ভূমি অধিগ্রহণ, অনুমোদন, আইনি বিভিন্ন প্রক্রিয়া, যন্ত্রপাতি ক্রয়, নির্মাণকাজ ও কমিশনিং অর্থাৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যয়ই এর মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এ ব্যয় কেমন, তা খোঁজার চেষ্টা করেছেন যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন গবেষক। তুলনামূলক বিশ্লেষণে তারা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় বৈশ্বিক গড়ের চেয়েও বেশি।

কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সবচেয়ে কম মূলধনি ব্যয় চীনে কিলোওয়াটপ্রতি ৫৬৮ ডলার। আর বৈশ্বিক গড় ব্যয় ৯৭৪ ডলার। তবে বাংলাদেশে এক্ষেত্রে কিলোওয়াটপ্রতি খরচ করা হয়েছে গড়ে ১ হাজার ১৬৪ ডলার। এমনকি সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫ ডলারও খরচ করা হয়েছে।

গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বৈশ্বিক মূলধনি ব্যয় কিলোওয়াটপ্রতি গড়ে ৫৫১ ডলার। আর বাংলাদেশে সরকারিভাবে এ প্রযুক্তির গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি ব্যয় গড়ে ১ হাজার ১৭৭ ডলার।

এছাড়া আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি বৈশ্বিক মূলধনি ব্যয় হচ্ছে গড়ে ১ হাজার ৬০০ ডলার। একই প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি গড়ে ৩ হাজার ৩৪৩ ডলার ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশে।

দেশে প্রথমবারের মতো নির্মাণ হচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মূলধনি ব্যয়ও বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ঢের বেশি। পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি বৈশ্বিক মূলধনি ব্যয় গড়ে ৪ হাজার ৪৭৪ ডলার হলেও বাংলাদেশে খরচ হচ্ছে ৫ হাজার ৬২৫ ডলার।

যদিও বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অত্যধিক বা অযৌক্তিক ব্যয়ের সুযোগ নেই বলে দাবি করেন বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের দেয়া ব্যয়ের প্রত্যেকটি খাত অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করেই প্রকল্প চূড়ান্ত করে। ফলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অধিক ব্যয় বা অযৌক্তিক ব্যয়ের প্রশ্নই আসে না।

মূলধনি ব্যয়ের এ চিত্র খুুঁজতে বাংলাদেশে চালু ও নির্মাণাধীন ৬১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলধনি ব্যয় বিশ্লেষণ করেছেন কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কুমার বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মনজুর মোরশেদ। গবেষণার ফলাফল গত মার্চে ফ্রন্টিয়ার্স ইন এনার্জি রিসার্চে প্রকাশ হয়েছে।

এর মধ্যেও ব্যতিক্রম নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ। সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি বৈশ্বিক ব্যয় গড়ে ৪ হাজার ৫৪ ডলার হলেও বাংলাদেশে তা ৩ হাজার ৬৪৯ ডলার। তুলনামূলক কম মূলধনি ব্যয় জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে। বাংলাদেশে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মূলধনি ব্যয় কিলোওয়াটপ্রতি গড়ে ২ হাজার ৬৭৬ ডলার; বৈশ্বিক গড় ব্যয় যেখানে ২ হাজার ৮৬৬ ডলার।

মোট তিনটি পর্যায়ে গবেষণাটি করেছেন গবেষকরা। প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ (বিপিডিবি) বিভিন্ন প্রকল্প, ইডকল ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে মূলধনি ব্যয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত এসব তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মূলধনি ব্যয়ের একটি ডাটাবেজ তৈরি করেছেন তারা। বিশ্লেষণের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্মাণের বছর কিলোওয়াটপ্রতি স্থাপিত ব্যয়কে টাকার অংক থেকে ডলারে রূপান্তর করেছেন গবেষকদ্বয়। এজন্য ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ডলার ও টাকার বিনিময় হারকে ব্যবহার করা হয়েছে। পুরনো আমলের ব্যয়ের তথ্যকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে তারা সহায়তা নিয়েছেন ২০১৫ সালের ভোক্তা ব্যয় সারণির (সিপিআই)। এসবের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রযুক্তির মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে কমে এসেছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মূলধনি ব্যয় বাড়ছে।

দেশে উৎপাদনে আছে গ্যাস ও স্টিম টারবাইন প্রযুক্তির ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে উৎপাদনে আছে ১৮টি। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সরকারি মালিকানাধীন গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বোচ্চ মূলধনি ব্যয় ১ হাজার ৮২৩ ও সর্বনিম্ন ৬৮০ ডলার। অর্থাৎ সরকারিভাবে এ প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি ব্যয়ের পরিমাণ গড়ে ১ হাজার ১৭৭ ডলার।

যদিও বৈশ্বিকভাবে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি ব্যয় সর্বনিম্ন ৩৬১ থেকে সর্বোচ্চ ৭৪১ ডলার। এ হিসাবে গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি বৈশ্বিক গড় মূলধনি ব্যয়ের পরিমাণ ৫৫১ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশে সরকারি মালিকানায় গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে কিলোওয়াটপ্রতি ৬২৬ ডলার বেশি মূলধনি ব্যয় হচ্ছে।

তবে বেসরকারি মালিকানাধীন গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মূলধনি ব্যয় তুলনামূলক কম, কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন ৫৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৯৫ ডলার, যার গড় ৮১৯ ডলার। অর্থাৎ বেসরকারি গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের গড় মূলধনি ব্যয় বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ২৬৮ ডলার বেশি।

কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর গড় মূলধনি ব্যয় বেসরকারির তুলনায় ১ দশমিক ৭ ও বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় ১ দশমিক ২ গুণ বেশি। এক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন মূলধনি ব্যয় ৫৪৫ ও সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫ ডলার, যার গড় দাঁড়ায় ১ হাজার ১৬৪ ডলার। বিশ্বের অন্যান্য দেশে একই প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় হচ্ছে গড়ে ৯৭৪ ডলার।

এ প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্রও বেসরকারিভাবে নির্মাণ করলে সরকারি কেন্দ্রের চেয়ে কম ব্যয় পড়ছে। বেসরকারি কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন মূলধনি ব্যয় হচ্ছে ৫৬৮ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৮১ ডলার। অর্থাৎ বেসরকারি কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিলোওয়াটপ্রতি গড় মূলধনি ব্যয়ের পরিমাণ ৭০৪ ডলার। এ হিসাবে একই প্রযুক্তি (কম্বাইন্ড সাইকেল) ব্যবহার করেও সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয়ের ব্যবধান ৪৬০ ডলার।

রামপালসহ দেশে কয়লাভিত্তিক অন্য যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন, তার সবই আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির। এ প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় সর্বনিম্ন ২ হাজার ৮৬৭ থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮২০ ডলার। এ হিসাবে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় হচ্ছে গড়ে ৩ হাজার ৩৪৩ ডলার। যদিও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন ৮২৬ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৭৪ ডলার বা গড়ে ১ হাজার ৬০০ ডলার মূলধনি ব্যয় হচ্ছে। অর্থাৎ আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ১ হাজার ৭৪৩ ডলার বেশি মূলধনি ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশে।

বাংলাদেশে সাব-ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বড়পুকুরিয়ায়। এখানকার একটি ইউনিটের মূলধনি ব্যয় ১ হাজার ৫৮৪ ডলার, যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে ১৯১ ডলার বেশি। সাব-ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় হয় সর্বনিম্ন ৬১৯ থেকে ২ হাজার ১৬৮ ডলার, যার গড় দাঁড়ায় ১ হাজার ৩৯৪ ডলার।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় বিশ্লেষণে নির্মীয়মাণ একমাত্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। এরপর বিশ্বের অন্যান্য দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে তারা এ ব্যয়ের তুলনা করেছেন। তাতে দেখা গেছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় ৫ হাজার ৬২৫ ডলার, যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি গড় মূলধনি ব্যয়ের পরিমাণ সর্বনিম্ন ২ হাজার ৬৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৮৮৩ ডলার, যার গড় পরিমাণ ৪ হাজার ৪৭৪ ডলার।

এর মধ্যেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূলধনি ব্যয় কাঠামোয় তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সৌর ও জলবিদ্যুৎ— উভয় ক্ষেত্রেই দেশে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলধনি ব্যয় তুলনামূলক কম। এর মধ্যে সৌরশক্তিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩৯১ ও সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৯০৭ ডলার। অর্থাৎ বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুতে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় গড়ে ৩ হাজার ৬৪৯ ডলার। বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে এ ব্যয় ৪০৫ ডলার কম।

এছাড়া জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশে কিলোওয়াটপ্রতি মূলধনি ব্যয় গড়ে ২ হাজার ৬৭৬ ডলার হলেও বৈশ্বিক গড় ব্যয় এক্ষেত্রে ২ হাজার ৮৬৬ ডলার। অর্থাৎ জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে কিলোওয়াটপ্রতি ১৯০ ডলার কম মূলধনি ব্যয় হয়েছে বাংলাদেশে।

  • কার্টেসিঃ বনিক বার্তা / মে ২৪,২০১৮

National, Islami in desperate bid

LOAN RESCHEDULING


AKM Zamir Uddin

National Bank and Islami Bank Bangladesh went on a loan rescheduling spree in 2017, in what can be viewed as a stunning example of financial engineering to cover up their ailing financial health.

Of the Tk 19,120 crore rescheduled by the 57 banks in 2017, the two first-generation banks accounted for 39 percent. National Bank rescheduled Tk 4,333 crore and Islami Bank Tk 3,099 crore.

In a brazen move, National rescheduled Tk 4,011 crore in the final quarter of 2017 without following Bangladesh Bank instructions properly.

As per BB rules, to reschedule a loan a bank must take 5 to 15 percent as down payment for the outstanding loans. The down payment requirement will increase to 50 percent if the defaulted loan is rescheduled for the second or third time.

In case of a waiver from down payment or relaxing the repayment period, a bank must take prior approval from the BB for rescheduling the loan.

National had taken the BB's permission to reschedule a maximum of Tk 500 crore, meaning it rescheduled an additional Tk 3,511 crore in the final quarter of last year, according to BB officials.

But in so doing, National was able to slash its total default loans down to Tk 1,611 crore from Tk 3,027 crore a quarter earlier. And with it, its provisioning requirement also lessened.

Still it was not enough to prevent National from logging in a 14.44 percent decline in net profits from a year earlier: Tk 479.82 crore.

Furthermore, National Bank did not even provide the central bank with the data on rescheduled loans even when a detailed inspection of the bank's financial health was conducted in December last year.

“We are completely in the dark,” said the central bank official. The Daily Star could not contact Choudhury Moshtaq Ahmed, managing director of National Bank, as he is in Singapore for treatment.

Later, the correspondent contacted ASM Bulbul, the bank's deputy managing director, but he declined to comment on the matter.

Islami Bank usually reschedules non-performing loans in the last quarter of a year to book higher profit by averting provisioning against bad loans, said Abu Reza Md Yeahia, deputy managing director of the bank.“We have rescheduled the loans following the central bank's rules,” he said.

In 2016, all 57 banks operating in Bangladesh had rescheduled NPLs amounting to Tk 15,417 crore.

Despite huge loan rescheduling, NPLs in the banking sector surged 19.51 percent year-on-year to Tk 74,303 crore last year.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 24, 2018


No headway in new VAT law implementation

Sohel Parvez

No notable progress has been made in narrowing down the differences between businesses and the revenue authorities on the VAT law 2012 although one year has passed since the government deferred its implementation by two years.

The plan to automate the VAT system under the existing law is yet to take off as the National Board of Revenue could not finalise the revised rules owing to opposition from the Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry.

As of now, there has been some headway in only two areas.

The government has revised upwards the cost and tenure of the VAT Online Project (VOP) that it took in 2013 to implement the new VAT and Supplementary Duty Act 2012 through automation of the VAT system.

The cost of the scheme has increased 25.11 percent to Tk 690 crore. Its tenure has been extended until 2020.

And the NBR formed a joint panel with representatives from the FBCCI to review the Act and resolve the standoff related to the new VAT law.

Since April 30, the panel has held two meetings, where it was decided that a study on the impact of the much-talked about Act on business and the economy would be recommended.

VAT’S COMPATIBILITY


It was also decided to make forms under the existing VAT law 1991 compatible with the online system, incorporate good provisions of the new law in the incoming fiscal year, according to minutes of the first meeting held on April 30.

Contacted, NBR Member VAT Policy Md Rezaul Hasan said digitisation of the VAT system did not go as planned because of the delays in finalisation of rules under the present law.

“We are going to include provisions to facilitate online registration and online return submission under the 1991 law in fiscal 2018-19.”

Registration and return submission forms are different between the two laws, said Hasan, also the project director of VOP.

The online system was developed based on 2012 VAT law and forms were prepared in line with the latest legislation.

Since the implementation of the law was deferred, the forms will now be incorporated in the 1991 law so that firms can submit returns online from next fiscal year.

“We want to start piloting the online return submission at the Large Taxpayers Unit VAT from July,” he added. Taxmen said the NBR prepared the draft for amending VAT rules of 1991 in August last year after the government deferred the implementation of the new law for two years in the face of opposition from businesses.

Some revenue officials said amendments were planned based on verbal consent from representatives of the FBCCI to review the new law. 

But the country's apex trade body opposed the amendment on the ground that some provisions of the VAT law 2012 were included. It was given the draft of the amendment for its feedback.

“This is undesirable,” said FBCCI President Md Shafiul Islam Mohiuddin in a letter to NBR Chairman Md Mosharraf Hossain Bhuiyan in February.

The apex body said approval for the amendment was taken from the finance minister before taking its views.

The FBCCI said the VAT software has not been customised in line with the 1991 law.

SHORTCOMINGS OF VAT ONLINE 


The apex chamber cited various shortcomings of the existing VAT online system and added that it would not be wise to proceed with the plan to digitise the VAT return system without addressing the problems.

On the issue of sluggish progress, Ahsan H Mansur, executive director of the Policy Research Institute, said the momentum of automation of revenue administration could not be sustained because of opposition from the FBCCI.

“Some rules and forms need to be changed to go for online. But this is being blocked. No reform could be done if the NBR has to proceed in line with views of the FBCCI,” he added.

The FBCCI president was not found available for comments yesterday.

While the government has a stated position to implement the VAT and SD Act 2012 from July 2019, it is critical that the implementation is not deferred further, said Towfiqul Islam Khan, research fellow of the Centre for Policy Dialogue.

As part of the preparation, the implementation of online VAT registration and filing system and digitisation of VAT process and bringing in more businesses under the system should be given priority, he said.

The finance minister may consider sharing his proposals on the implementation plan of the new VAT law, including the debated issues, in the forthcoming budget sessions, Khan added.

  • Courtesy: The Daily Star /May 24, 2018

রোডম্যাপের ধারেকাছেও নেই ইসি

সিরাজুস সালেকিন 


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ৭টি বিষয় নির্ধারণ করে গত বছর জুলাইয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে এ রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছিল। ঘোষিত রোডম্যাপে জনগণের প্রত্যাশার প্রতি গুরুত্ব রেখে সাংবিধানিকভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার করেছিল সাংবিধানিক সংস্থাটি। তবে রোডম্যাপের ৪টি বিষয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারেনি ইসি। বাকি ৩টি কার্যক্রম সঠিক সময়ে শেষ হওয়ার বিষয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন। একটা প্রশ্ন যে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর যেন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জিত হয় সেটা নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য। এজন্য তারা কিছু কাজ রোডম্যাপে চিহ্নিত করেছে। এগুলো তারা সময়মতো করতে না পারলে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিশ্বাসযোগ্য করবে কীভাবে? এই অপারগতা তাদের অক্ষমতা কিনা? কি কারণে করতে পারছে না সেটা আমাদের বিস্মিত করছে এবং এর প্রভাব নিঃসন্দেহে আগামী সংসদ নির্বাচনে পড়বে। আমরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

ইসির রোডম্যাপে উল্লিখিত বিষয়গুলো হচ্ছে- আইনি কাঠামো পর্যালোচনা ও সংস্কার; নির্বাচনী প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ; সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ; নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ; বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন; নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। একজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে আইন সংস্কার কমিটি গঠন করেছে ইসি। আইনি কাঠামো সংস্কারের খসড়া প্রস্তুত হলেও তা প্রণয়নের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারেনি। অথচ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইন প্রণয়নের লক্ষ্য ছিল ইসির রোডম্যাপে।

গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ করে এ উদ্দেশ্যে মতামতও গ্রহণ করে ইসি। ইসি সূত্রে জানা গেছে, মূলত আরপিও সংশোধন নিয়ে এক প্রকার দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। বিশেষ করে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণায় অংশ নেয়ার ইস্যুতে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে দরকষাকষি চলছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বেশ কয়েকবার এই ইস্যুতে প্রধান নির্বাচন  কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে। আচরণবিধি সংশোধন ছাড়াও আইন সংস্কার কমিটি আরপিওতে প্রায় ২০-২৫টি সংশোধনীর বিষয়ে সুপারিশ করেছে। তবে সেগুলো এখন পর্যন্ত কমিশন সভায় চূড়ান্ত হয়নি। কমিশন সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করলে তা আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের পর সংসদে চূড়ান্ত অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় যাবে।

রোডম্যাপের দ্বিতীয় বিষয়টিও অনেকটা দেরিতে হলেও সম্পন্ন করতে পেরেছে কমিশন। নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নারী সংগঠন এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সংলাপ করেছে ইসি। গত বছর জুলাই থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে এসব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। তবে সংলাপের সুপারিশমালা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত করার লক্ষ্য থাকলেও তা করতে পারেনি ইসি। সংলাপের সুপারিশমালা নিয়ে গত এপ্রিলে বই আকারে প্রকাশ করে কমিশন। যদিও সংলাপে আসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ আমলে নেয়নি ইসি।

রোডম্যাপের তৃতীয় বিষয়টি ছিল সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ। এই কাজেও কালক্ষেপণ করে সাংবিধানিক সংস্থাটি। গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সীমানা পুনঃনির্ধারণ শেষে গেজেট প্রকাশ করার লক্ষ্য থাকলেও তা করতে ইসি ব্যর্থ হয়েছে। ব্যাপকহারে শুনানির পর গত ৩০শে এপ্রিল সীমানা পুনর্বিন্যাসের গেজেট প্রকাশ করা হয়। তবে সেখানেও হয়েছে ক্ষমতাসীনদের দেন- দরবার। আর অনেক রাজনৈতিক দলের পরামর্শ হয়েছে সীমানা পুনর্বিন্যাস ইস্যুতে।

রোডম্যাপের চতুর্থ বিষয়টি ছিল ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং বিতরণ। এই ইস্যুতেও পিছিয়ে রয়েছে ইসি। রোডম্যাপ অনুযায়ী, জুন মাসের মধ্যে ৩০০ নির্বাচনী এলাকার জন্য ভোটার তালিকা মুদ্রণ, ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডি প্রণয়ন ও বিতরণের লক্ষ্য ছিল ইসির। বিষয়টি বাস্তবায়নের দায়িত্বে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অনুশাখা ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। ইসি সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ভোটার তালিকার মুদ্রণ বা সিডি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিতরা। মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বিষয়টি। আর রোডম্যাপের পঞ্চম বিষয় ভোটকেন্দ্র স্থাপনে একই রকম অগ্রগতি। গত মার্চে মাঠ প্রশাসনকে ভোট কেন্দ্র স্থাপন, নির্ভুল ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুতকরণ এবং ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সম্পর্কে আস্থা সৃষ্টির জন্য বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এসব নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

রোডম্যাপের ষষ্ঠ বিষয় নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষার ক্ষেত্রেও ইসি ব্যর্থ হয়েছে। এই কাজের অংশ হিসেবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন শর্তাদি প্রতিপালন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে ইসি। তবে অনেক দল সঠিকভাবে তথ্য দেয়নি। যেসব তথ্য ইসি পেয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়নি। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তথ্য পর্যালোচনা করে নিবন্ধন বহাল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানুয়ারিতে গ্রহণ করার কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। আর গত অক্টোবরে নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদন গ্রহণ করেছে ইসি। চলতি বছরের মার্চের মধ্যে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার থাকলেও তার করেনি। বরঞ্চ এই কাজে ইসি গড়িমসি করছে বলে আবেদনকারী দলগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রদানের জন্য ৫-৬টি দলের তালিকা করেছে ইসি। তবে তাদের আদৌ নিবন্ধন দেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গোয়েন্দা প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। রোডম্যাপের সপ্তম বিষয় ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ। আগামী জুন থেকে এই বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করবে বলে ইসির রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি। নির্বাচিত সংসদের মেয়াদ হয় এমপিরা শপথ নেয়ার দিন থেকে পরবর্তী ৫ বছর। বর্তমান সংসদের মেয়াদপূর্ণ হবে ২০১৯ সালের ১৩ই জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ১৩ই জানুয়ারির পূর্বের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষে আগামী ডিসেম্বরেই একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে সরকার। 

  • কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২৪,২০১৮

দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা

মহিউদ্দিন অদুল 


দেশে চলছে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মাদক ব্যবসায়ীদের জেলাভিত্তিক টপটেন তালিকার সঙ্গে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডের তালিকার সমন্বয়ে চলছে এই সর্বাত্মক অভিযান। গত এক সপ্তাহেই মাদকবিরোধী অভিযানে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে  ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারিয়েছে ৩৭ জন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি এরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী। এরপর নড়ে চড়ে বসেছে দেশের মাদক সাম্রাজ্য। গা-ঢাকা দিয়েছে দেশের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা।

দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে অনেকে। ফলে রাঘববোয়াল ধরতে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানায় চালানো অভিযানে এখন অনেক ক্ষেত্রেই ধরা পড়ছে চুনোপুঁটি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দীন আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর মাদকবিরোধী সর্বাত্মক অভিযান চলছে। এখন পুলিশ ও র‌্যাব আইন মেনে অভিযান পরিচালনা করলে অনেকক্ষেত্রে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। তারাও জবাবে আত্মরক্ষার্থে আইন মেনে প্রতিরোধ করতে গিয়ে গুলি ছুড়ছে। এতে কিছু মাদকব্যবসায়ী নিহত হচ্ছে। এই ভয়ে জড়িতরা গা-ঢাকা দিতে বা পালাতে পারে। 

সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন্স ও গোয়েন্দা) সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলা ভিত্তিক টপটেনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। অভিযান শুরুর পর থেকে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। 


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশ-র‌্যাব সূত্র জানায়, ৪ঠা মে থেকে মাদকবিরোধী অভিযান জোরালোভাবে শুরু করে র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের সঙ্গে শুরু হয় মোবাইল কোর্ট। কয়েক মাস আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের করা মাদক ব্যবসায়ীদের জেলাভিত্তিক টপটেন তালিকার সঙ্গে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডের তালিকার সমন্বয়ে এই অভিযান চলছে। এই তালিকায় প্রায় প্রতিটি জেলা থেকে শীর্ষ ১০ জন করে মাদক ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে। অল্প কয়েকটিতে অবশ্য ১০ জনের কম নাম এসেছে। সারা দেশে ওই টপটেন তালিকায় ৬৫০ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর নাম উঠে আসে। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগের ক্ষমতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী পুলিশ, এলিট ফোর্স র‌্যাব, সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিরও মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে কাস্টমস ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এছাড়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুরোধে একই কাজ করে থাকে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা, আনসার ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে বিশেষ করে র‌্যাব ও পুলিশ দেশের বিভিন্ন জেলায় মাদকবিরোধী ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করে। এতে বিভিন্ন জেলায় এলাকাভিত্তিক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেপ্তার হতে থাকে। 

এ পর্যন্ত অন্তত এক হাজার মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার হয়। উদ্ধার হতে থাকে মাদকের বড় বড় চালান। অভিযানে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের একের পর এক ‘বন্দুকযুদ্ধে’র খবর আসতে থাকে। এরমধ্যে গত ১৫ই মে থেকে ৮ দিনে প্রাণ গেছে ৪৩ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর। গতকাল বুধবার ৮ জন মারা গেছে। কিন্তু অভিযান যতই গড়াচ্ছে ততই সতর্ক হয়ে যাচ্ছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা। তারা গা-ঢাকা দিতে শুরু করেছে। এলাকা বদল করছে। ভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করছে। অনেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে আত্মগোপন করেছে। অনেকে পালাচ্ছে বিদেশে। শুধু তাই নয়। মাদক ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকের বিদেশে থাকার নিরাপদ স্থানও রয়েছে। তাদের কেউ কেউ এরই মধ্যে সেসব দেশে সটকে পড়েছে। প্রাণে বাঁচতে তাদের অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, মাদক মামলায় বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়া বন্দিরা সাধারণ জামিনের জোর চেষ্টা চালান। কিন্তু এই অবস্থায় জীবনের ঝুঁকি এড়াতে সম্প্রতি বন্দি মাদক বিক্রেতাদের জামিনে মুক্তির চেষ্টা কমে গেছে বলে জানিয়েছে একাধিক আদালত ও কারাসূত্র। 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জানায়, রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই এরই মধ্যে বিভিন্ন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কয়েকজনের সীমান্ত পারের খবর আসছে বলে জানান এক কর্মকর্তা। সাতক্ষীরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা। তারা সীমান্তে গিয়ে ওপারের লোকদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে লিয়াজোঁ করছে। তারপর তাদেরকে ভারতের ভেতরে বিভিন্ন রাজ্যে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে। সেখানে দু’তিন হাজার টাকা থেকে কয়েক লাখ টাকার লিয়াজোঁ হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে গত মঙ্গলবার রাজধানীর মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইশতিয়াক, নাদিম ওরফে পঁচিশ, আরশাদ, চোরা সেলিমসহ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরা। কিন্তু তাদের কারও টিকিট পায়নি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাদের পরিবর্তে কয়েকজন ছিঁচকে মাদক বিক্রেতাকে ধরে আনে তারা। অপরদিকে গতকাল মঙ্গলবার চানখাঁরপুলে অভিযান চালিয়েও অনেকটা হতাশ হতে হয়েছে। তবে অন্যতম মাদক বিক্রেতা রিপনকে ১ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। 

সম্প্রতি চট্টগ্রামের অন্যতম মাদক ব্যবসায়ী মমতাজ ওরফে ফারুক র‌্যাবের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এরপর চট্টগ্রামের বরিশাল কলোনির অপর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ইউসুফ ভারতে পালিয়ে যান। কিন্তু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে। কুমিল্লার অন্যতম শীর্ষ গাঁজা ব্যবসায়ী গঙ্গানগর মহল্লার আবুল হোসেন। সালদানদী রেলস্টেশনের কাছে তার বাড়ি হওয়ায় ট্রেনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক পৌঁছান। অভিযান চালানো হলেই তিনি কুমিল্লা সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ড দিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। 

ওই অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থাটির সহকারী পরিচালক খোরশেদ বলেন, ওই চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তারা গা-ঢাকা দিয়েছে। আবার মাদকের আয়ে ব্যাপক বিত্তবৈভবের মালিক বনে যাওয়া ইশতিয়াক দেশ ছেড়ে পালিয়েছে বলেই ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া গত কয়েকদিনে সাতক্ষীরাসহ একাধিক সীমান্ত দিয়ে বহু মাদক বিক্রেতা ভারতে পালিয়েছে। সীমান্তের ভারতীয় দালালদের সঙ্গে টাকার বিনিময়ে লিয়াজোঁ করে তারা সে দেশে আত্মগোপন করছে।

  •  কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২৪,২০১৮

চার মাসে ১২১২ খুন!

শুভ্র দেব


দেশজুড়ে বাড়ছে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড। সামাজিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে খুনের ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশ্লেষকরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের শুরুর চার মাসের চেয়ে চলতি বছরের চার মাসে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে সারা দেশে ১৯ হাজার ৬৭৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সালে ৩ হাজার ৯৮৮, ২০১৪ সালে ৪ হাজার ৫১৪, ২০১৫ সালে ৪ হাজার ৩৬, ২০১৬ সালে ৩ হাজার ৫৯১, ২০১৭ সালে ৩ হাজার ৫৪৯ ও চলতি বছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ২১২ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায় ২০১৭ সালের প্রথম চার মাসের খুনের তুলনায় ২০১৮ সালে খুনের সংখ্যা বেড়েছে।

২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে খুনের ঘটনা ঘটেছে ২৬৩টি। অথচ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে খুন হয়েছে ২৯১ জন। একইভাবে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে হয়েছে ২৫০টি, মার্চ মাসে ২৯৭, এপ্রিল মাসে ২৯৭। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি ২৫৬, মার্চে ৩২৭, এপ্রিলে ৩৩৮টি। পরিসংখ্যানে দেখা যায় গত বছরের চার মাসের তুলনায় চলতি বছরের চার মাসের খুনখারাবির সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি এসব খুনখারাবির ধরনও বেশ পাল্টেছে। নৃশংস, লোমহর্ষক ও অভিনব কায়দায় এখন হত্যাকাণ্ড ঘটছে। 

১৯শে মে মৌলভীবাজারে শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন এক জামাতা। ৫৫ বছর বয়সী ওই নারীর নাম রোকেয়া বেগম। হত্যাকারী জামাতার নাম আলি হোসেন। গভীর রাতে তার নিজ বাসায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তিনি সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের মাতারকাপন গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী। মেয়ে ও জামাতার সঙ্গে একই সঙ্গে শহরের শ্যামলী আবাসিক এলাকার একটি বাসায় থাকতেন। রোকেয়ার পরিবার জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে তার জামাতা দা ও শাবল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

১৮ই মে শুক্রবার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড পৌরসভার জঙ্গল মহাদেবপুর পাহাড়ের ত্রিপুরাপাড়া থেকে ফলিন ত্রিপুরার মেয়ে সুখলতি ত্রিপুরা (১৫) ও সুমন ত্রিপুরার মেয়ে ছবি রানী ত্রিপুরার (১১)-এর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজনেই বান্ধবী। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছবি রানী ত্রিপুরার বাবা সুমন ত্রিপুরা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় স্থানীয় চৌধুরীপাড়ার ইসমাঈল হোসেনের ছেলে আবুল হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

অপরাধ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক অবক্ষয়, ইন্টারনেটের ভয়াবহতা, মাদকের ভয়াল বিস্তার, পারিবারিক সম্পর্কে ঘাটতি, পরকীয়া, জমিজমা নিয়ে বিরোধ, অতিমাত্রায় ক্ষোভ, সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা কারণে এসব ঘটনা বাড়ছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা ও আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়াতে বন্ধ হচ্ছে না অপরাধ। এছাড়া বরাবরই নির্বাচনকালে বছরে দেশে অন্যরকম এক অস্থিরতা বিরাজ করে। তাই নির্বাচনের বছর আসলে অপরাধীরা বেশি তৎপর হয়ে উঠে। সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ জাতীয় নির্বাচনের বছর হওয়াতে এ বছরে অপরাধ প্রবণতা অনেক বেড়েছে। সময় যত যাবে অপরাধ আরো বাড়বে। কারণ, এসময় ঝিমিয়ে পড়া সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় সজাগ হয়। নেতাকর্মীরা তাদের প্রয়োজনে অপরাধীদের ব্যবহার করান। নির্বাচনকালীন আধিপত্য বিস্তারের একটা বিষয় থাকে। এসময় জেলে থাকা অপরাধীদের জামিনে বের করা হয়। সূত্র আরো জানিয়েছে, দেশে এখন মাদকের ভয়াবহতা খুব বেড়েছে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় মাদক। আর এখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষই মাদকের সঙ্গে জড়িত।

অপরাধ বিজ্ঞানী তৌহিদুল হক মানবজমিনকে বলেন, বর্তমান সময়ের বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড পর্যালোচনা করা দেখা গেছে সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণেই এসব ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক দিক দিয়ে চিন্তা করলে দেখা যায় গণতান্ত্রিক চর্চাটা খুব কম হচ্ছে। এর কারণে সব দলের মধ্যে একটা পাওয়া না পাওয়ার প্রবণতা রয়ে যায়। কে কার চেয়ে বেশি পেতে হবে। আমি কেন কম পেলাম। এ ধরনের কিছু বিষয় থেকে একটা রাজনৈতিক ক্ষোভ তৈরি হয়। আর এই ক্ষোভ থেকেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এই অপরাধ বিজ্ঞানী বলেন, রাজনৈতিক ক্ষোভটা একটাই পৈচাশিক হচ্ছে খুনের পর মরদেহের ওপরও সেই ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। বিকৃত করার পাশাপাশি অনেক সময় খণ্ডিত করা মরদেহ। এর বাইরে সামাজিক কারণে ঘটে যাওয়া ঘটনারও কমতি নেই। সম্পত্তির জের, পরকীয়া, কলহ থেকে সামাজিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। 

এর কারণ হলো সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো তার দায়দায়িত্ব থেকে অনেক দূরে আছে। একটা সামাজিক বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে যা দরকার সেটা তারা করছে না। এজন্য মানুষের মধ্যে মানুষের দূরত্ব বাড়ছে। সমাজ কল্যাণ বিভাগের এই শিক্ষক মনে করেন, সামাজিক চর্চাটা ভালোভাবে করা দরকার। শুধু আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতা দিয়ে হবে না। কারণ, তাদের তৎপরতা অপরাধ হওয়ার পর দেখা যায়। তবে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সামাজিক সংস্থাগুলোতে মানবিকতার চর্চা দরকার। তাহলেই আমারা একটি সুন্দর, সংঘাতবিহীন সমাজ পাবো। 

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি সোহেলি ফেরদৌস মানবজমিনকে বলেন, সারা দেশে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার পেছনে সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা, মাদক অন্যতম। আবার পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়া, আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট, ইন্টারনেটের অপব্যবহার আছে। এর বাইরে ধর্ষণের পর ও পরকীয়ার জের ধরে থেকে কিছু হত্যাকাণ্ড ঘটে। তিনি বলেন, পুলিশ কখনই চায় না দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। খুনের ঘটনা ঘটলে আসামিদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। 

  •  কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২৪,২০১৮

মাদক সম্রাট সংসদেই আছে- এরশাদ

মাদক নির্মূলে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, মাদক নির্মূলের নামে যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা কারা আমরা জানি না। মাদক সম্রাট তো সংসদেই আছে। তাদের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসিতে ঝোলান। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইডিইবি) মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। এরশাদ বলেন, এভাবে বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করতে পারেন না। কোথাও এর নজির নেই।

বিশ্ব এটা মেনে নেবে না। প্রত্যেক নাগরিকেরই সাংবিধানিকভাবে বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। মাদক নির্মূলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আইন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এরশাদ।

অসহনীয় যানজট প্রসঙ্গে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, যানজটের কারণে প্রতিদিন ৫১ লাখ কর্মঘণ্টা অপব্যয় হচ্ছে। দেশ হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে এগুলো বাস্তবায়ন করে ঢাকাকে যানজটমুক্ত করবো।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য ওদন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, দলটির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি প্রমুখ। 

  • কার্টেসিঃ মানবজমিন/ মে ২৪,২০১৮

Drug Dealing in Khulna: Fingers pointed at some cops, politicians

Dipankar Roy

Khulna is like a haven for drug dealers as several policemen, with ranks from constable to officers-in-charge, are directly or indirectly involved in the smuggling and the supply chain.
Several top leaders of ruling Awami League and its associate organisations also patronise and provide cover for the drug dealers and their cohorts.

According to a confidential list prepared by the Prime Minister's Office in February, 22 police officials, mostly sub-inspectors stationed in the eight police stations of Khulna Metropolitan Police (KMP), directly or indirectly help drug smuggling and supply.

The list of 346 people, obtained by The Daily Star, was sent to the home ministry on March 15 asking it to take necessary steps. The ministry later sent the list to the KMP and Department of Narcotics Control for further action.

AL lawmaker Mizanur Rahman, from Khulna-2 [Khulna Sadar] who is also the general secretary of Khulna city AL, is among the 28 people listed as the patronisers of drug dealers in Khulna city.

City Chhatra League General Secretary Asaduzzaman Russell, two ward councillors, a city AL leader, and two relatives of an MP were also named.

Two vice-presidents of Khulna city Chhatra League, and two local leaders of Bangladesh Sarak Paribahan Sramik League were among the 154 Khulna city drug dealers named.

Asked AL MP Mizanur through his personal assistant told The Daily Star that he was a victim of conspiracy and his rivals gave false information to intelligence agencies as revenge.

“From the beginning of my political carrier, I have been vocal against drugs and criminal activities. I am still vocal against drugs,” the assistant quoted him as saying.

Chhatra League leader Asaduzzaman told The Daily Star over the phone, “Since becoming the Chhatra League general secretary of Khulna city, I have launched anti-drugs campaigns in every college. People who are for drugs have got my name included in the list.”

Sonali Sen, additional deputy commissioner of KMP, said they were carrying out regular drives to arrest drug dealers and their patronisers.

Names of 12 police officials, stationed outside the KMP area but in Khulna district, have been mentioned in the list of people who directly or indirectly help drug dealers.

Officer-in-Charge Habibur Rahman of Dighalia Police Station and another OC were among them.

Habibur said he had no idea that he was in the list. “I'm a professional and conduct anti-drugs raids. How could I be involved in drug smuggling?”

The list also includes 118 drug dealers and 12 patronisers. Three UP chairmen have been named as patronises.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 24, 2018