Search

Sunday, May 27, 2018

পিরোজপুরে ‘বাড়ি দখল করতে’ যুবলীগ নেতার অবিশ্বাস্য কাণ্ড

  •  পিরোজপুর শহরের বাইপাস সড়কে থাকে গীতা রানীর পরিবার। 
  •  ওবায়দুল বাড়ি ও ক্লিনিক দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। 




বাসাটিতে গ্যাস নেই। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগও বিচ্ছিন্ন। এ অবস্থায় নয় মাস ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গীতা রানী মজুমদার ও তাঁর স্নাতকপড়ুয়া একমাত্র মেয়ে।

গীতা রানীর বাসার বিদ্যুৎ, পানির সংযোগ কোনো কর্তৃপক্ষ বিচ্ছিন্ন করেনি। পরিবারটিকে বের করে দিয়ে বাড়িটি দখল করতে পিরোজপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুল হক ওরফে পিন্টু এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

পিরোজপুর শহরের বাইপাস সড়কের মাছিমপুর এলাকায় সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পঞ্চম তলায় থাকে গীতা রানীর পরিবার। তাঁর স্বামী চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ হালদার এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। এর অর্ধেক মালিকানা বিক্রি করা হয় যুবলীগের নেতা ওবায়দুল হকের কাছে। সেই সূত্রে তিনি বাড়িটির অর্ধেকের মালিক হন। কিন্তু তিনি ক্লিনিকের ব্যবসা করায়ত্ত করার পর এখন পুরো বাড়িটিও দখল করতে চান বলে বিজয় কৃষ্ণের পরিবারের অভিযোগ।

গীতা রানী জানান, গত বছরের আগস্টে তাঁদের বাসার পানি ও বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রান্নার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার আনতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। কারা এটা করছে—জানতে চাইলে গীতা রানী বলেন, বাড়ি ও ক্লিনিকটি পুরোপুরি দখল করে রেখেছেন ওবায়দুল হক। তিনিই পানি ও বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। বাসায় আসা-যাওয়া করতে বাধা দিচ্ছেন, ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।

সম্প্রতি এই প্রতিবেদক পিরোজপুরে ওই বাসায় গেলে নিচতলা থেকে পিছু নেন তিন যুবক। পঞ্চম তলায় গীতা রানীর বাসার কলবেল চাপতেই তিনজনের মধ্যে রেজাউল পরিচয় দিয়ে একজন এই প্রতিবেদককে জেরা করা শুরু করেন। একপর্যায়ে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর কিছুটা দমে যান। তবে এই প্রতিবেদক ওই বাসা থেকে বের হওয়া পর্যন্ত বাসার সামনেই বসে ছিলেন তাঁরা।

গীতা রানীর বাসার একটি কক্ষে আলমারি, ওয়ার্ডরোবের তালা ভাঙা। ঘরে কেরোসিনের একটি চুলা। গীতা রানী বলেন, ‘প্রায় দিনই হোটেল থেকে খাবার কিনে আনিয়ে খেতে হয়। অন্য বাসায় গিয়ে গোসল করতে হয়। সব সময় আতঙ্কে থাকি। এভাবে কত দিন বেঁচে থাকতে পারব জানি না।’ বিষয়টি স্থানীয় সাংসদ, মেয়র, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ দায়িত্বশীল সবাই জানেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

২০১৬ সালের ২১ মার্চ গভীর রাতে ক্লিনিকটির মালিক চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ হালদার, তাঁর মা, স্ত্রী গীতা রানী ও কলেজপড়ুয়া মেয়েকে একদল দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে মারধর করে এবং দামি জিনিসপত্র লুট করে। চোখ ও হাত-পা বেঁধে তাঁদের ঝাটকাঠি এলাকার একটি বাড়িতে রেখে আসে। স্থানীয় লোকজন সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে শহরের পালপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছে দেন। পিরোজপুর-১ আসনের সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল খবর পেয়ে পুলিশের সহায়তায় পরিবারটিকে তাদের বাসায় তুলে দেন। এর পাঁচ দিন পর সাংসদের হস্তক্ষেপে মামলা নেয় পিরোজপুর সদর থানার পুলিশ। মামলায় ওবায়দুল হককে প্রধান আসামি করা হয়।

গীতা রানী জানান, মামলা করার পর তাঁদের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়। পুলিশও ওই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেয়। এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতে নারাজি দিয়েছেন।

চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ হালদার তাঁর ক্লিনিকের অর্ধেক শেয়ার ওবায়দুল হকের কাছে বিক্রি করেন। এর পরপরই ২০১৫ সালের অক্টোবরে রহস্যজনকভাবে অপহৃত হন বিজয় কৃষ্ণ। আহত অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে। এরপর তিনি মানসিকভাবে বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং তাঁকে এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই ক্লিনিকসহ পুরো বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেন ওবায়দুল হক। শুধু পঞ্চম তলায় বিজয় কৃষ্ণের পরিবার থাকে। গীতা রানী বলেন, এখন তাঁদের উচ্ছেদের জন্য অমানবিক পন্থা বেছে নিয়েছেন ওবায়দুল হক।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওবায়দুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দুই কোটি টাকা দিয়ে এই ক্লিনিকের অর্ধেক মালিকানা কিনেছি। পরে আরও টাকা দিই পুরোটা কেনার জন্য।কিন্তু রেজিস্ট্রি করার আগেই চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ অসুস্থ হয়ে পড়েন।’ একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘সাংসদ পরিবারটিকে বাসায় তুলে দেওয়ার কারণে তাদের সরাতে পারছি না।’

সাংসদ এ কে এম এ আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে আমি তাঁদের বাড়িতে উঠিয়ে দিয়েছি। এখন শুনছি পুরো বাড়িটি দখল করার চেষ্টা চলছে। এর বিচার হওয়া উচিত।’ সাংসদ আরও বলেন, ওবায়দুল হকের দাবি অনুযায়ী, বাড়িটি যদি তিনি কয়েক কোটি টাকা দিয়ে কিনে থাকেন, তাহলে তাঁর আয়ের উৎস সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন। তাঁর আয়কর নথি যাচাই-বাছাই করে দুদকের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া।

জানতে চাইলে পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মালেক বলেন, ওই সম্পত্তি নিয়ে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে দুই পক্ষের একসঙ্গে থাকা কঠিন। তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল হক যে দুই কোটি টাকা দিয়ে অর্ধেক মালিকানা কিনেছে, তার চেয়ে কিছু কম টাকা ফেরত দিলেও সে সরে আসবে।’ অথবা চিকিৎসক বিজয়ের পরিবার চাইলে বাকি অর্ধেক শেয়ারের জন্য আগের চেয়ে বেশি টাকা ওবায়দুল হকের কাছ থেকে নিয়ে দিতে পারেন তিনি।

মেয়রের এ প্রস্তাব শুনে গীতা রানী বলেন, মেয়রের বক্তব্যেই তো প্রমাণ হয়, ওবায়দুল হক যে পুরো বাড়ি তাঁর বলে দাবি করছেন, তা মিথ্যা।

যুবলীগের নেতা ওবায়দুল হকরা তিন ভাই। বড় ভাই পুলিশ পরিদর্শক। ছোট ভাই অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির একজন নেতা।

জানতে চাইলে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন, ‘মালিকানার বিষয়ে আমার করণীয় কিছু নেই। কিন্তু তাঁদের ওপর অমানবিক আচরণ করলে সেটা দেখতে পারি।’ পরিবারের নিরাপত্তা ও প্রতিকার চেয়ে গীতা রানী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। এমন কাজ যে-ই করুন, তিনি পার পাবেন না। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/মে ২৭,২০১৮ 

বদি ভাই ভয় নাই, জয় বাংলা বলে এগিয়ে চলো...

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী


কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগের এমপি আবদুর রহমান বদি এখন মিডিয়ায় এক বিরাট সম্রাট। প্রতিদিনই মিডিয়া তাকে নিয়ে নানা ধরনের খবর প্রচার করছে। শুধু প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মিডিয়াই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তিনি এক বিরাট হিরো। 

হিরো অবশ্য তিনি নতুন নন। রাজনীতিতে আসার আগে থেকেই টেকনাফ- উখিয়ায় তাকে সম্রাট হিসেবে চেনেন ওই এলাকার সাধারণ মানুষ। আর এমপি হওয়ার পর তো কোনো কথাই নেই। বাংলাদেশে রাজনীতি সচেতন মানুষের মধ্যে এমন কেউ নেই, যিনি আবদুর রহমান বদির নাম জানেন না। সে দিক থেকে তিনি ‘হিরো নম্বর ওয়ান’।

সম্প্রতি তার নাম মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ার কারণ, সরকারের মাদকবিরোধী অভিযান। এই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে প্রতিদিন। এই লেখা যেদিন প্রকাশিত হবে, তত দিনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শতাধিক হয়ে যেতে পারে। সরকার এই অভিযানকে বলছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। 

যখন থেকে বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে, তখন থেকে একই কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। নতুন কোনো ক্রিয়েটিভ কাহিনী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকার তৈরি করতে পারেনি। সে কাহিনী গৎবাঁধা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাকেই আটক করুক, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী আটক ব্যক্তি একজন ‘কুখ্যাত’ ঘাতক কিংবা সন্ত্রাসী অথবা অস্ত্রবাজ। পুলিশ বা র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী ওই ব্যক্তিসংশ্লিষ্ট বাহিনীর কানে কানে জানায় যে, অমুক জায়গায় তার আরো অস্ত্র লুকানো আছে। তখন ওই বাহিনী ফোর্স নিয়ে সে অস্ত্র উদ্ধারের জন্য নির্ধারিত এলাকার দিকে রওনা হয়। কিন্তু ওই এলাকায় আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকে সন্ত্রাসীর সহযোগীরা।

ওই সহযোগীরা এতই দক্ষ যে, তারা আগে থেকেই অত্যন্ত নির্ভুলভাবে জানতে পারে যে, ঠিক কোথায় র‌্যাব বা পুলিশ অভিযানে যাচ্ছে। এদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। কখনো তারা ভুল করে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাছাকাছি যেতেই তারা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ ক্ষেত্রেও আটক ব্যক্তির সহযোগীরা চিতার চেয়েও ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে মুহূর্তেই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। আর নিহত হয় পুলিশের জিম্মায় থাকা কথিত সন্ত্রাসী। আজ পর্যন্ত ওই সন্ত্রাসীর সহযোগীদের কেউ ধরাও পড়েনি বা নিহত হয়নি। 

এসব অভিযানে গিয়ে এত বড় বন্দুকযুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ নিহত হয়নি। কখনো কখনো বলা হয় যে, এই অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কথা কেউ বিশ্বাস করে না। সাধারণ মানুষ মনে করে যে, কথিত ওই সন্ত্রাসীকে র‌্যাব বা পুলিশ ঠাণ্ডামাথায় গুলি করে হত্যা করেছে। সরকারের সাম্প্রতিক মাদকবিরোধী অভিযানেও হত্যা সম্পর্কে একই কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে। আর যথারীতি মানুষ তা অবিশ্বাসও করে যাচ্ছে।

এই অভিযানেই এসেছে এমপি বদির নাম। দীর্ঘকাল ধরে বদি নিজ এলাকায় তো বটেই গোটা দেশেই মাদকসম্রাট হিসেবে সুনাম নিয়ে আছেন। তার ওপর তার বিরুদ্ধে আছে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় আদম পাচারেরও অভিযোগ। সেভাবে তাকে আদমসম্রাটও বলা হয়। এই মাদকবিরোধী অভিযানের আগে সরকারের পাঁচটি সংস্থা মিলে মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করেছে। এই তালিকায় শীর্ষ মাদকসম্রাট হিসেবে আছে এমপি বদির নাম। মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় মাদক কারবারি হিসেবে এক নম্বরে আছে এমপি বদির নাম। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে কিছুতেই রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে সরকার বরং বদির পক্ষ নিয়ে কথা বলতে কসুর করছে না। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বদির পিঠ চাপড়ে দিয়ে আগে বলেছিলেন যে, উখিয়া টেকনাফে এমপি বদির বিকল্প নেই। আর এখন মাদকবিরোধী অভিযানের সময় তিনি বলছেন, একজন এমপিকে তো আর চট করে ধরা যায় না। কেন ধরা যায় না? সাধারণ মানুষ যারা বন্দুকযুদ্ধের নামে খুন হচ্ছেন, তাদের পরিবারের তো ভিন্ন ভাষ্য আছে। তারা বলছেন, পুলিশ টাকা চেয়েছিল, দিতে পারেনি বলে বন্দুকযুদ্ধের নামে খুন করা হয়েছে। এখানে তো ন্যায়বিচার হলো না।

এটা সবাই জানেন যে, ইয়াবার মতো ভয়াবহ মাদকের মূল উৎস টেকনাফ। মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক ইয়াবা আসছে বাংলাদেশে। টেকনাফের অনেক স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা ইয়াবার সঙ্গে জড়িত থাকায় বারবার এমপি বদির নাম উঠে এসেছে। এমনকি তার ঘনিষ্ঠ কর্মী ও আত্মীয়স্বজনের নামও জড়িত ইয়াবার কারবারে। তাদের কেউ কেউ এরই মধ্যে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। 

গত ২২ মে সচিবালয়ে এমপি বদির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘সংসদ সদস্য বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে আছে। আমরা সেই অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। বদিসহ অন্য মাদকব্যবসায়ীদের বিষয়ে আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের দিন। বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তথ্য-প্রমাণ নাই।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

গত ৩১ ডিসেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে ১৪১ জনের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। ওই তালিকায় গডফাদার হিসেবে বদি ও তার পাঁচ ভাইয়ের নাম রয়েছে। তালিকার দ্বিতীয় পৃষ্ঠার একটি প্যারায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি দেশের ইয়াবা জগতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী। তার ইশারার বাইরে কিছু হয় না। দেশের ইয়াবা আগ্রাসন বন্ধের জন্য তার ইচ্ছাশক্তিই যথেষ্ট।’ তালিকায় সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে মাদক সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি বলা হয়েছে। এতে বদির সঙ্গে তার পাঁচ ভাইয়ের নামও উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে সরকারের প্রায় সব সংস্থার তালিকায় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ছাড়াও তার পাঁচ ভাইয়ের নাম রয়েছে। তার ভাইয়েরা ছাড়াও তালিকায় আছে তার পিএস মং মং সেন ও ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপুসহ বেশ কয়েক জন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির নাম।

এক সহযোগী জানিয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকাসংক্রান্ত গোপনীয় প্রতিবেদনের ভূমিকা অংশে বলা হয়েছে, সরকারদলীয় এমপি হওয়ার সুবাদে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুসারী-সহযোগী নিয়ে তিনি ইচ্ছামাফিক ইয়াবা কারবারিসহ অন্য উৎস হতে অবৈধ আয়ে জড়িত আছেন। শীর্ষ ইয়াবা কারবারিরা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবার করার সাহস রাখে না। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জেলার অন্য শীর্ষ মাদক কারবারি বা টেকনাফের যেকোনো চাঁদাবাজ এলাকায় প্রভাব বিস্তারে সক্ষম নয়। বিশেষত, মিয়ানমার থেকে চোরাচালান হওয়া ইয়াবা কারবার বন্ধ করার জন্য তার ইচ্ছাশক্তি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’ এক বছর আগে মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর যে তালিকা তৈরি করেছিল, তাতে ইয়াবা কারবারির সংখ্যা বলা হয় ২০০ জন। 

দুই বছর আগে এই তালিকায় মাদক কারবারির সংখ্যা ছিল ৫৫৪ জন। দু’টি তালিকাতেই কক্সবাজারের ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে আবদুর রহমান বদি, তার আপন ও সৎ চার ভাই রয়েছেন। এর বাইরে বদির বেয়াই আক্তার কামাল ও শাহেদ কামাল, মামা হায়দার আলী, মামাতো ভাই কামরুল ইসলাম রাসেল ও ভাগ্নে নিপুও ইয়াবা কারবারে জড়িত বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বদির ঘনিষ্ঠজন ও ডান হাত জাফর আহমেদ ও তার চার ছেলের নাম রয়েছে শীর্ষ কারবারি হিসেবে। অর্থাৎ বদির বৃত্তের বাইরে নেই কারবারিদের কেউ। আবার টেকনাফের রাজনীতি, অর্থনীতি সব চলছে ইয়াবাকে কেন্দ্র করে। জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে এমন কোনো সেক্টর নেই, যারা ইয়াবা কারবারের মাঝে জড়িত নন।

আর একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে- ভারতের সীমান্তবর্তী একটি জেলার পুলিশ সুপার তাদের জানিয়েছেন, ‘পুলিশের একটি অংশ ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। তাদের সামাল দেয়া বড় কঠিন। কারণ, তাদের বেশির ভাগই মাদক কারবারিদের সঙ্গে মিশে গেছে। মাদক কারবারিদের সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের একটা অংশ মিশে গেছে। তারা প্রকাশ্যে কিংবা পর্দার অন্তরালে থেকে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। একই সঙ্গে তারা মাদক কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারাও পাচ্ছেন। তাই মাদক নির্মূলের পাশাপাশি জড়িত পুলিশ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তবে আপাতত আবদুর রহমান বদির কোনো ভয় আছে বলে মনে হয় না। কারণ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আছেন বদির পাশে। তারা বলছেন, বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও কোনো প্রমাণ নেই। যেন, যে ৬০ জনের বেশি মানুষকে এ পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের প্রমাণ রয়েছে! তাদের বিরুদ্ধেও কোনো প্রমাণ নেই। তাহলে কেন এই হত্যাযজ্ঞ? এই বিচারবহির্ভূত হত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে আমরা স্লোগান দিতে পারি- ‘বদি ভাই ভয় নাই, রাষ্ট্র আছে তোমার সাথে’, ‘বদি ভাই এগিয়ে চলো, সরকার আছে তোমার সাথে’, ‘বদি ভাই চিরজীবী হোক’।
  • কার্টেসিঃ নয়াদিগন্ত/ মে ২৭,২০১৮ 

নিষ্ঠুরতা কি সহনীয় হয়ে উঠছে?

বিচারবহির্ভূত হত্যা


কামাল আহমেদ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাভাষীদের চলতি আলোচনার কারণে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ আবদুর রহমান বদিকে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি বললেও সম্ভবত কম বলা হবে। আলোচনায় যেসব বিষয় এসেছে, সেগুলোর মধ্যে আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে কোনো একটি অনুষ্ঠানে তাঁর খোলামেলা আলোচনার ছবি, সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে অন্তত তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানের কিছু ছবি, ত্রাণমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি এবং তাঁর ফেসবুকের একটি স্ক্রিনশট; যাতে লেখা আছে, ‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে।’ জন-আলোচনায় সাংসদ বদির এই প্রাধান্য পাওয়ার কারণ সর্বনাশা ইয়াবার কারবারে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ।

সরকারঘোষিত ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ নিহতের সংখ্যা ১২ দিনে ৮১ ছাড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের সম্পর্কে যতটা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এঁদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর তৈরি তালিকায় মাদক কারবারি হিসেবে নাম নথিভুক্ত ছিল। পুলিশ ছাড়া আর যারা তালিকা করে, তাদের মধ্যে আছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, পুলিশের অভিজাত অংশে—র‍্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আরও কোনো কোনো সংস্থার তালিকায়ও তাঁদের নাম থাকার সম্ভাবনা আছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে সাংসদ বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও প্রমাণ নেই। প্রমাণ পেলে সরকার ব্যবস্থা নেবে। আইনসম্মত ও যৌক্তিক এই মন্তব্যের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। বছর কয়েক আগে সাংসদের ছয় ভাইয়ের নাম সরকারের তৈরি তালিকায় ছিল। ছোট ভাইয়ের ইয়াবার চালান ধরা পড়ার পর পাঁচ বছরেও যেহেতু তদন্ত শেষ হয়নি, সেহেতু তাঁরা সবাই নিরপরাধ বিবেচিত হবেন, সেটাই স্বাভাবিক। শুক্রবার তাঁর যে বেয়াইয়ের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, তাঁর মৃত্যুও কাম্য ছিল না। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল, তা আদালতের বিচার্য বিষয় ছিল। সাংসদের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে যুক্তি দিলেন, তাঁর বেয়াইয়ের ক্ষেত্রেও সেই যুক্তি প্রযোজ্য হওয়ার কথা ছিল। শুধু সাংসদ বদি কেন, এর আগে আরও কয়েকজন সাংসদ এবং ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসার অভিযোগ এসেছে। যেহেতু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা যায় না, সেহেতু ধরে নেওয়া যায়, তাঁদের ক্ষেত্রেও প্রমাণের জন্য অপেক্ষার পালা চলছে। তবে নিহত ব্যক্তিদের কপাল খারাপ যে তাঁদের ক্ষেত্রে একই নীতি অনুসৃত হয়নি।

মাদকের মতো অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে মৃত্যু অথবা অপরাধীকে নির্মূল করাই যখন একমাত্র সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তখন যাঁদের প্রাণ গেছে, তাঁদের আসল পরিচয়টাও একটু দেখা দরকার। যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে পালিয়ে ছিলেন—এমন কারও কথা শোনা যায়নি। তবে গ্রেপ্তার হয়ে আদালত থেকে জামিনে ছিলেন, এমন অনেকের কথাই শোনা গেছে। পুলিশের দুর্নীতিগ্রস্তদের চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন, এমন কয়েকজনের কথাও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অন্তত একজন রাজনৈতিক বিরোধীদলীয় কর্মীর মৃত্যুর কথাও জানা গেছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক হচ্ছে, পরিচয় ভুল হওয়ায় নিহত হওয়ার ঘটনা। অর্থাৎ সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই শুধু অভিযোগ ওঠার কারণেই এঁদেরকে প্রাণ দিতে হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ (টিআইবি) শাখার ২০১৩ সালের একটি জরিপ বলছে যে দেশটিতে জনসেবা খাতে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হচ্ছে পুলিশ। গত পাঁচ বছরে পুলিশের ভাবমূর্তির যে খুব একটা উন্নতি ঘটেছে, সে কথা বলার মতো কোনো দৃষ্টান্ত তারা তৈরি করতে পেরেছে এমন নয়। মাদকবিরোধী যুদ্ধ চলার সময়েই ইত্তেফাক একজন পুলিশ সুপারের ভাষ্য উল্লেখ করে বলছে, সীমান্তবর্তী একটি জেলায় পুলিশ মাদক কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা পায় (আমাদেরও অনেকে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিশে গেছে, ইত্তেফাক, ২৫ মে, ২০১৮)। সীমান্তবর্তী অন্যান্য জেলার অবস্থা এর চেয়ে উন্নত কিছু হবে, এমনটি মনে করা কঠিন। ইতিমধ্যে খবর বেরিয়েছে, পুলিশ টাকা আদায়ের জন্য আটক করে মাদকের অভিযোগ দিয়ে শুধু হয়রানি করছে তা-ই নয়, গাজীপুরে টাকা নেওয়ার পরও কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে মেরে ফেলা হয়েছে (টাকাও নিয়েছে, ক্রসফায়ারেও দিয়েছে; বাংলা ট্রিবিউন, ২২ মে, ২০১৮)। চট্টগ্রামে র‍্যাবের সোর্স পরিচয় ভুল করায় নিহত হয়েছেন একজন এবং পরে সেই সোর্সও ক্রসফায়ারে মারা পড়েছেন (‘ভুল তথ্যে’ র‍্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাবিব নিহত, দাবি পরিবারের; বিডিনিউজ ২৪.কম, ২১ মে, ২০১৮)।

সন্দেহের বশে এবং বিনা বিচারে হত্যার এই ধারা ধীরে ধীরে সমাজে সহনীয় হয়ে উঠছে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ২০১৩, ’১৪ ও ’১৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার সময়েও এ রকম বিনা বিচারে নাশকতার সন্দেহে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযানে নিয়ে যাওয়ার পরিণতিতে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। সংবাদমাধ্যমের একটি বড় অংশই এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাষ্য কোনো ধরনের প্রশ্ন ছাড়াই প্রকাশ করে এসেছে। কিন্তু দু-একটা সংবাদপত্রের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব কল্পকাহিনির গোমর ফাঁস হতে শুরু করে এবং মানবাধিকারকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কৌশলে পরিবর্তন আসে। শুরু হয় পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার কৌশল অনুসরণ। এরপর ২০১৬তে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা পরিচালনার পর জঙ্গি নির্মূলে আবারও ‘বন্দুকযুদ্ধ’ একটি সমাধান হিসেবে ফিরে আসে। জঙ্গিবাদের নৃশংসতার বিপরীতে বন্দুকযুদ্ধের বিরুদ্ধে অনেকেই নীরবতার নীতি গ্রহণ করেন।

জঙ্গিবাদীদের কাছে নানা ধরনের অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক ছিল, তাদের কৌশল ছিল আত্মঘাতী লড়াইয়ের। মাদক কারবারিদের কাছেও অস্ত্রশস্ত্র থাকা অস্বাভাবিক নয়। তবে মাদক কারবারিদের বাজার দখল বা নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় ধরনের কোনো লড়াই বা অস্ত্র প্রদর্শনের নজির তেমন একটা নজরে পড়ে না। আসলে মাঠপর্যায়ে যাঁরা এগুলো লেনদেন করেন, তাঁরা খুব বড় মাপের কেউ নন। এই ব্যবসায় যাঁরা বড় খেলোয়াড়, তাঁরা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকতা যথেষ্ট পরিমাণে পেয়ে থাকেন। পুলিশের গৎবাঁধা বন্দুকযুদ্ধের কাহিনির উপর্যুপরি পুনরাবৃত্তির বিশ্বাসযোগ্যতা তাই এখন শূন্যের কোঠায়। এসব মৃত্যুর খবরে অবশ্য সরকারের প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ হবে। কেননা, এসব বন্দুকযুদ্ধ—দুর্নীতি ও রাজনৈতিক পক্ষপাতের কারণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য খুবই কার্যকর। আতঙ্কের কারণে মাঠপর্যায়ের খুচরা কারবারিরা আপাতত হয়তো আত্মগোপন করবেন। তবে দীর্ঘ মেয়াদে সমাজের মাদকমুক্তিতে তা খুব একটা কাজে আসবে না। ফিলিপাইন বা মেক্সিকোর অভিজ্ঞতা সে কথাই বলে।

মাদকের সমস্যা এক দিনের নয়, অতএব সমাধানও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে—এমন ভাবনার সুযোগ নেই। এর উৎপাদনকেন্দ্র বাংলাদেশে নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোতে। আগে আসত ভারত থেকে ফেনসিডিল এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে সাগরপথে হেরোইন। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের ইয়াবা। এসব সরবরাহের পথ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখায় ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিলে চুনোপুঁটিদের ক্রসফায়ারকেই মোক্ষম দাওয়াই ভাবা হতো না। তবে আতঙ্ক সৃষ্টি করার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলে আলাদা কথা। নির্বাচনের আগে সেই আশঙ্কাকে নাকচও করা যায় না।

‘মাদক সমস্যা মোকাবিলার উদ্দেশ্য মহৎ, কৌশল বেআইনি’ শিরোনামে গত সপ্তাহে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত আমার নিবন্ধে শতাধিক পাঠকের মন্তব্যে দেখা যায়, বন্দুকযুদ্ধের কৌশলকে সমর্থন ও বিরোধিতার মধ্যে ব্যবধান খুব বেশি নয়। সমর্থনকারীদের অনেকের মন্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে যে এই নিষ্ঠুরতা অনেকের কাছেই সহনীয় হয়ে উঠেছে। ‘আপনি আইন ধুয়ে পানি খান’ মন্তব্যে বোঝা যায়, এই সমস্যা জনগোষ্ঠীকে কতটা ভোগাচ্ছে। কিন্তু একইভাবে রাজনৈতিক সন্ত্রাস আমাদের ভুগিয়েছে, ধর্মীয় উগ্রবাদ ভুগিয়েছে, ভোগাচ্ছে যত্রতত্র ধর্ষণের ঘটনা, শিশু নির্যাতন, চাঁদাবাজি, অপহরণ; বেপরোয়া চালকদের মানুষ চাপা দেওয়ার প্রতিযোগিতার মতো নানা অপরাধ। ইতিমধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে মানববন্ধনও হয়েছে। ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, মানুষ চাপা দেওয়ার মতো ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পারলে গণপিটুনিতে মেরে ফেলার দৃষ্টান্তও আমাদের রয়েছে। এসব অপরাধের ক্ষেত্রে মানুষের ধৈর্যচ্যুতির কারণ হচ্ছে, পুলিশের দুর্নীতি ও অদক্ষতার কারণে তদন্ত ঝুলে যাওয়া, মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ দিতে না পারা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রেও কি তাহলে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ই সমাধান?

আমাদের উচ্চ আদালত অনেক বিষয়েই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অন্যায়ের প্রতিকারে উদ্যোগী হয়েছেন এবং তাঁদের সাফল্যও আছে। কিন্তু শুধু সন্দেহের বশে যেসব বেআইনি হত্যাকাণ্ডের মতো নিষ্ঠুরতার চর্চা চলছে, তা বন্ধে তাঁরা কেন উদ্যোগী হচ্ছেন না, তার কোনো উত্তর আমাদের জানা নেই। তবে আমরা উদ্বিগ্ন হচ্ছি এই ভেবে যে বিনা বিচারে সন্দেহভাজনকে সাজা দেওয়ার প্রথা আদালতের ভাবমূর্তির জন্য মোটেও শুভ নয়।এসব বন্দুকযুদ্ধ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা বড় অংশকেও যে নিষ্ঠুরতায় অভ্যস্ত করে তুলছে, সেটাও একটা দুর্ভাবনার বিষয়।
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ মে ২৭,২০১৮


Anarchy rules transport sector

Cheating continues in the name of seating service

Tuhin Shubhra Adhikary

With the government failing to regulate the so-called “seating service” bus operators in the capital, the buses continue to charge extra every day.

Around 96 percent buses and minibuses offering “seating services” are taking extra fares, a survey of a passengers' platform revealed yesterday.

Bangladesh Jatri Kalyan Samity, the platform, said in the name of “seating services,” 96 percent buses and minibuses lock their doors between 7:00am and 11:00am and 2:00pm and 11:00pm, causing trouble for passengers who want to get on the buses between their starting point and journey end.

Those buses take extra fare as they do not follow the government's fare chart, the platform alleged, saying, “For this reason, transportation cost for the lower-income group is becoming unbearable.”

Unregulated charging of fares is common throughout the year but during Ramadan many regular buses turn themselves into “seating services” putting passengers in trouble, Mozammel Haque Chowdhury, secretary general of the samity, observed.

“Cashing in on the higher demand for buses before Iftar time, they [bus operators] overcharge the passengers,” he told The Daily Star referring to the survey yesterday.

The transport owners on April 15 last year stopped operating “seating service” buses in the capital amid widespread allegations that they were charging extra fares.

Following that move, Bangladesh Road Transport Authority (BRTA) in association with Dhaka Road Transport Owners' Association's (DRTOA) vigilance teams conducted mobile courts to stop such practices.

But the move backfired as a good number of buses were withdrawn from the road for five consecutive days, causing immense sufferings to the passengers.

Against the backdrop, BRTA suspended their drive for 15 days and later for three months. It has been more than a year now since they stopped the drive.

SURVEY RESULTS

From the second to seventh Ramadan, five teams of Jatri Kalyan Samity conducted the survey on 310 buses and 557 passengers in different spots.

As part of the study, they also surveyed 214 CNG-run auto-rickshaws, 185 auto-rickshaw passengers, and 56 taxi passengers.

Around 82 percent of the surveyed passengers expressed deep discontent over the services of the public transport sector during Ramadan.

Ninety-two percent passengers said they face sufferings every day, while 98 percent said they are victims of overcharging, the survey shows.

Sixty-two percent passengers said they are forced to get on and down from moving buses, while 28 percent have to stand on the bus even after paying for “seating service”.

Ninety-three percent passengers do not know where to file a complaint, while 88 percent said they do not bother to file a complaint as they believe they would not get any remedy.

They survey shows 94 percent CNG-run auto-rickshaws run on a contract basis and 98 percent of those who follow the meter claim extra fares or tips. They usually demand Tk 10, but during Ramadan they want Tk 30 to 35.

Asked about the allegations, Mahbubur Rahman, organising secretary of DRTOA, refuted the allegations of overcharging.

“In many cases, we take less than the government-fixed fares,” he told this correspondent yesterday.

On the standing passengers in “seating service” buses, he claimed some passengers take help from traffic police to board the bus during peak hours.

COMMITTEE FORMED, BUT NO REMEDY

In April last year, BRTA formed an eight-member committee to make recommendations for quality passenger services in the public transport sector in Dhaka.

Led by Mahbub-E-Rabbani, director (road safety) of BRTA, the committee on October 15 gave seven recommendations over “seating service” and 26 recommendations for public transport sector, insiders said.

The BRTA on February 14 held a meeting with the stakeholders including leaders of transport owners and workers and decided that all recommendations submitted by the committee would not be implemented right now.

The BRTA on April 17 sent several recommendations to Dhaka Metro Regional Transport Committee (MRTC), which gives route permit for the metropolis, and the authorities concerned to implement those.

A copy of the recommendations was sent to the commissioner of Dhaka Metropolitan Police, who is also the chairman of MRTC, the chief executive officers of both city corporations, and the associations of transport owners and workers.

A deputy director of BRTA (Dhaka Division), who is also the member secretary of MRTC, was asked to include those recommendations as an agenda of next MRTC meeting.

“We have sent the recommendations and it is now the responsibility and MRTC and other authorities concerned to implement those,” Mahbub-E-Rabbani, also the spokesperson of BRTA, said on May 21.

Contacted on April 26, Masud Alam said they had received the proposal sent by BRTA.

“Now we will talk with the Dhaka Metropolitan Police commissioner who is the chief of the committee and set the next course of action. We will take a decision in this regard soon,” Masud added.

Contacted again yesterday, Masud said, “We will go for implementation of the recommendations after holding a meeting with the stakeholders.”

Asked about a possible date of the meeting, he said, “We will hold the meeting soon.”

Mozammel alleged that the government takes some initiative following public pressure but it actually does not want to take action against the “seating service” bus operators. For this reason, no action was taken even after formation of a committee more than a year ago.

BRTA RECOMMENDATIONS

According to BRTA proposals, bus operators will have to take separate route permit for running seating service buses.

The operators will not be able to use all its buses for seating service as they will have to earmark a bigger portion of their vehicles for non-seating services.

The MRTC will decide how many buses of a company can offer seating services, the proposal says.

Seating service offering buses will have a different colour determined by the MRTC. These buses will be comparatively new and comfortable and will not be allowed to take any standing passengers.

There will be a different fare rate for the seating service buses. Every “seating service” routes will be divided into slabs and the fares will be fixed on the basis of those slabs.

The city corporations will have to build city stopovers in Mirpur and Anandabazar areas, set up counters for seating service buses, install CCTV cameras on different important points and bus bays on appropriate spots, the recommendations read.

  • Courtesy: The Daily Star/ May 27, 2018

River pollution problem relocated, not resolved

THE Bangladesh government could finally relocate the tanneries industry from the heart of Dhaka to its outskirts. The objective of the relocation of tanneries to the Leather Industry Estate at Savar was to stop further pollution of the River Buriganga, the ecological life line of the capital city. The River Dhaleswari at Savar, a distributary of the Buriganga, is now being polluted as factory managements there keep disposing chromium mixed untreated effluents in the river. The river and the areas surrounding the estate are polluted by at least 20,000 cubic metres of untreated effluents and an unknown quantity of solid wastes from 111 relocated tanneries every day. The Chinese contractor Jiangsu Lingzhi Environmental Protection Co responsible for building and maintaining the central effluent treatment plant is blamed for not having installed a chrome separation unit. The Bangladesh Small and Cottage Industries Corporation, meanwhile, allowed tanners to dump solid waste in the locality. The problem of river pollution is relocated, it seems, and not resolved.

An expert team from Bangladesh University of Engineering and Technology that works as consultant to the leather estate said that the Chinese contractors who built the CETP were not using required chemicals for which untreated effluents were being released into the river. The BUET team raised concern that the CETP facility has not controlled the release of chromium into the river. Uncontrolled exposure to carcinogenic chromium could lead to lung cancer in humans. In a recent test of the water quality, the team found 7.48 micrograms/millilitre chromium where more than two was harmful. Local people have also complained about the unbearable stench from the water of the pond in which tanners dump the chemically contaminated waste. In the absence of a concrete solid waste management system, as New Age in May, tannery owners illegally sell toxic waste to poultry and fish feed mills which then get recycled into toxic poultry feed. Public health experts alerted repeatedly that the consumption of poultry meat under these circumstances could cause serious harm to people’s health. Considering the way tanneries are run, risking public health and violating environmental regulations, the BSCIC cannot brushed aside its responsibility.

The failure to manage and recycle the toxic waste of the tanneries at Savar undoubtedly defeated the purpose of the relocation. The government must immediately take the Chinese company to task to ensure that the CETP has its chemical treatment unit. It must also take steps to ensure that the BSCIC implements the toxic solid waste management system so that such wastes are not dumped in nearby water bodies or empty lands. Otherwise, the history of severe river pollution and consequent public health problems will be repeated at Savar. 

  • Courtesy: New Age/ Editorial/ May 27, 2018

অভিযানের মধ্যেও আসছে ইয়াবা

টেকনাফ

ইয়াবা চোরাচালানের জন্য আলোচিত শহর টেকনাফ। দামি মোটরসাইকেল আর প্রাইভেট কার নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা দাপিয়ে বেড়াতেন এই পর্যটন শহর। তবে গত কয়েক দিনে উপজেলা সদর বেশ ফাঁকা। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় দোকানপাটগুলোও ছিল প্রায় বন্ধ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যেও থেমে নেই ইয়াবা চোরাচালান।

শুক্রবার বেলা ১১টায় পৌরসভার পুরাতন বাসস্টেশনে গেলে পানের দোকানদার নবী হোসেন বলেন, অবস্থা খুবই খারাপ, ভোরে এমপি বদির (আবদুর রহমান) বেয়াই আকতার কামাল ক্রসফায়ারে চলে গেছেন। ক্রসের ভয়ে সবাই পালাচ্ছেন, দোকানের বেচাকেনাও কমে গেছে।

পাশের ফল বিক্রেতা ফরহাদ আলম বলেন, ‘কিন্তু ইয়াবা ব্যবসা তো বন্ধ নাই। রোজার মাস বলে আখড়াগুলোতে লুকিয়ে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা।’

বাসস্টেশনের আশপাশের ১০-১২টি আখড়ায় প্রকাশ্যে বিক্রি হতো ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজা। গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে সব বন্ধ। তবে একটি আখড়ার মালিক বলেন, রোজার মাসে লোকজন আসে না। দিনের বেলায় বন্ধ থাকে, রাতে চলে লুকিয়ে ইয়াবা বিক্রি।

নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর হয়ে টেকনাফের ৩৪টি পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা। চলতি মে মাসে ২১ দিনে (৪-২৫ মে) শুধু টেকনাফ থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৩ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা। এর মধ্যে বিজিবি সাড়ে ৫ লাখ, কোস্টগার্ড সাড়ে ১৪ লাখ, পুলিশ ২ লাখ ৬০ হাজার, র‍্যাব ৩০ হাজার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে।

এর আগের (১ জানুয়ারি থেকে ৩ মে পর্যন্ত) সাড়ে চার মাসে টেকনাফ উপকূল থেকে উদ্ধার হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ২১৫ ইয়াবা বড়ি। এ সময় ১২৫ জন পাচারকারীকে আটক করা হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত কোনো হোতাই ধরা পড়েনি।

‘ক্রসফায়ার’ আতঙ্ক

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আখড়ায় কয়েক প্রকারের ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৬৫ টাকায়। মিয়ানমারে ইয়াবার দাম ৭ থেকে ১০ টাকা। তা টেকনাফে বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকায়। তবে উন্নত মানের হালকা গোলাপি রঙের আর-৭ ইয়াবার দাম একটু বেশি। আর-৭ ইয়াবা মিয়ানমারে ২৫-৩০ টাকা, টেকনাফে ৫০-৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জব্দ তালিকায় ইয়াবার মূল্য লেখা হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।

টেকনাফ পুলিশের তথ্যমতে, উপজেলায় ইয়াবা বিক্রির আখড়া ছিল অর্ধশতাধিক। এখন কয়েকটিতে লুকিয়ে চলে বিক্রি। কারণ ‘ক্রসফায়ার’ আতঙ্ক।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল্লাহ মনির প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে টেকনাফের সাধারণ মানুষ খুশি। কিন্তু ঘরে ঘরে ক্রসফায়ার আতঙ্ক বিরাজ করছে, এ কারণে পুরো টেকনাফ এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়লেও ইয়াবা চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না। কারণ, মিয়ানমারের সিন্ডিকেট বাকিতেই ইয়াবা চালান পাঠাচ্ছে টেকনাফে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, ইয়াবাসহ আটক লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে মিয়ানমারের চোরাচালানিরা ইয়াবাবোঝাই নৌকা নিয়ে প্রথমে সেন্ট মার্টিন উপকূলে আসে। তারপর সেখানে বাংলাদেশি চোরাচালানিদের নৌকায় তুলে দেয় ইয়াবা। এরপর গভীর সমুদ্র দিয়ে ওই ইয়াবার চালান টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খালাস হয়। ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কয়েকটি সিন্ডিকেট জড়িত।

পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সমুদ্র উপকূল দিয়ে ইয়াবা চালান খালাসের সময় পুলিশ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া ঘাট থেকে আড়াই লাখ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করে। কিন্তু কাউকে ধরতে পারেনি।

গত দুই দিনে পুলিশ কক্সবাজার শহর, মহেশখালী ও টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়ক থেকে তিন ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে। জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, নিহত তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মাদক, অস্ত্রসহ দ্রুতবিচার আইনে মামলা আছে। ইয়াবা চোরাচালান নিয়ে অন্তঃকোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের গুলিতে তাঁরা খুন হয়েছেন। তা ছাড়া পুলিশ গত ১০ দিনে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ইয়াবাসহ ১০২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে।

  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ মে ২৭,২০১৮ 

মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নেন র‍্যাবের ৮০০ সদস্য

ঢাকার মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে ১৫৩ জনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এর মধ্যে ৭৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকি ৭৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদকবিরোধী মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

র‍্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিপুল প্রস্তুতি ছিল। র‍্যাব-২–এর নেতৃত্বে প্রায় ৮০০ জনের দল অভিযানে অংশ নেন। জেনেভা ক্যাম্পে প্রথমে ৫১৩ জনকে আটক করা হয়। সেখান থেকে তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে ১৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ৭৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্য ৭৬ জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মাদকবিরোধী মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন নারী আছেন। এ অভিযানে ১৩ হাজার ইয়াবা বড়ি ও ৩০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।’

র‍্যাব সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পে মাদকবিরোধী অভিযানে র‍্যাব-১, ২, ৩, ৪, ১০ ও ১১ অংশ নেয়। এতে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। বাধা আসতে পারে ভেবেই এতসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে উপস্থিত রাখা হয়েছে বলে র‍্যাব সূত্র জানায়।

আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১২টা থেকে এই অভিযান শুরু করে র‍্যাব। অভিযান শুরু করার আধঘণ্টার মধ্যে মাদক বিক্রির অভিযোগে শতাধিক লোককে আটক করা হয়।

৩ মে প্রধানমন্ত্রী র‍্যাবকে মাদকের বিরুদ্ধ অবস্থান নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরদিন থেকে র‍্যাব মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গতকাল শুক্রবার রাতের বিভিন্ন সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরও নয়জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বরগুনা ও দিনাজপুর থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার ১২তম দিনে এখন পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সংখ্যা ৭৩-এ দাঁড়িয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

 ১৯ মে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সরকার মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা) নীতি অবলম্বন করেছে।

গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, তত দিন এ অভিযান চলবে। আরও প্রত্যন্ত এলাকায় এ অভিযান ছড়িয়ে দেওয়া হবে। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে, তাঁদের নাম অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ১৪ মে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে মাদক কেনাবেচায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
  • প্রথম আলো/ মে ২৭,২০১৮ 


Saturday, May 26, 2018

Reflecting on the state of FDI

Saleh Akram 


The phenomenon of foreign direct investment (FDI) in Bangladesh has not been particularly bright for several years. It has been stagnating at around 1 per cent of the country's GDP. In contrast, FDI inflow to Vietnam, China and India was 6 per cent, 5 per cent and 3.5 per cent of their GDP respectively, according to the United Nations Conference on Trade and Development (UNCTAD) report 2016. Prospect of greater inflow of FDI in Bangladesh appears bleak compared to other macroeconomic variables. If we compare our FDI inflow with other South Asian countries, we are way behind Maldives, India, and Bhutan, according to the World Development Indicators.

According to economists, FDI is an investment made by a company or individual of one country in business interests located in another country. Generally, foreign investment is a sine qua non for changing the fate of a country, while FDI directly contributes to economic wellbeing of a country.   Since Bangladesh set itself a target of attaining middle income status by the end of 2021, and since that will not be possible without attaining a GDP growth rate of 8 per cent, it obviously needs more in terms of FDI to bolster the GDP growth rate to 8 per cent from existing 6.5 per cent.

Over the years, FDI received by Bangladesh has been worth around 1 per cent of its GDP. This has been one of the major factors responsible for a near stationary growth rate of around 6 per cent during the last few years.

If we look at the state of FDI in our country, the US companies are the largest investors. Last year, they invested half a billion or 25 per cent of total FDI to Bangladesh, and since the FDI was not evenly distributed there was uneven growth among various sectors of the economy. For example, textiles, gas and petroleum (energy), telecommunication and power sectors were benefited. But there are other sectors like electronics, agro-processing, leather and footwear, ICT, trade and commerce that deserved priority. Furthermore, political uncertainty has been a great barrier to FDI inflow in Bangladesh. Unreliable energy supply coupled with excessive bureaucratic interference, alleged irregularities in processing papers and frequent changes in government policies are among other impediments that figured prominently.

 Moreover, there is a clear lack of skilled manpower and skill-based education in the country that resulted in failure to attract FDI. Government intervention in the form of capacity building by establishing appropriate institutions to develop skill-based manpower is therefore necessary. What is needed now is adequate vocational training for unskilled workers.

Besides, Bangladesh's products are not diversified. According to industry insiders, RMG industries mostly produce some select categories of garments. But there are demands for other categories in the global market, which can be produced and exported by attracting FDI. Similarly, non-cotton and man-made fibre items can be produced. Now, what is needed most is adequate vocational training for unskilled workers.

In our country, disciplined, easily trainable, and low-cost workforce is in abundance, which is suitable for any labour-intensive industry. Special economic zones inside the country will help attract more FDI in near future.

Appropriate strategies for achieving higher economic growth through enhanced FDI by overcoming the associated shortcomings are needed for the export-based economy of Bangladesh. In addition, declining remittance inflow coupled with deteriorating current account balance also highlight the necessity of FDI for overcoming the dependence on remittance and stimulating the economy further. Special economic zones set up by the government inside the country are expected to attract more FDI in the near future.
  • Courtesy: The Financial Express/May 25, 2018

Secondary treasury bills, bonds market witnesses volatility

Savings certificates eclipse low-interest bearing instruments


Country's secondary market of treasury bills and bonds is lately gripped by a sharp volatility, according to the central bank data.

The less-than-expected borrowing by the government from the banking system has been identified as the main reason behind such fluctuations in the secondary market. The secondary bond market was introduced in 2011 by the central bank.

In April last, the monthly turnover of the secondary market was just Tk 6.5 billion, down from around Tk 27.8 billion in March, 2018. Turnover covers both buy and sales.

In February 2018, the turnover was Tk 5.0 billion.

Bangladesh Bank has its own depository system for the transaction and settlement of government securities in the Market Infrastructure (MI) Module.

The module is intended to expedite both the primary auction and secondary market.

The institutions and individuals can buy and sell the bills and bonds in working days from the secondary market.

But primary dealers up to 20 can only participate in the primary auctions.

Top treasury executives said that many banks now sell the bills-bonds at the end of each quarter.

Such sales by financial institutions give a boost to their profits.

Ashim Kumar Saha, head of treasury at the privately-owned Mercantile Bank, told the FE that many now trade at the end of the quarter as it generates some profits.

Mr Saha also said there was less-than-expected new issuance of bonds and bills leading to the unexpected turnover.

There was significant volume of turnover at a particular time when the government borrowed a large amount to meet its budget deficit through auctions, he recalled.

Motiur Rahman, another head of treasury at privately-owned Prime Bank, told the FE that the secondary market remains unattractive to many as the yield has fallen significantly.

Many hold the bonds as they believe there will be revaluation losses if they sell.

The 20-year maturity bond has just over 8.0 per cent payout semiannually. It was over 11 per cent in the past.

"How will institutions and individuals invest if the rate of yields becomes so low?" he asked.

He also said the banks which have surplus money usually invest in the bonds.

Many commercial lenders had liquidity shortage during the past few months, which prompted the central bank to slash cash reserve ratios.

Banks and financial institutions can use government securities as collateral only to borrow funds in the repo market.

Some economists, who are familiar with the country's financial market, told the FE the overall supply of bonds/bills fell in recent months resulting in poor turnover in the secondary market.

"The overall supply of bonds and bills in the market is poor as the government is borrowing less than expected," said Dr Ahsan H Mansur, executive director at the Policy Research Institute of Bangladesh, a Dhaka-based private-think tank.

He added that most part of government borrowing was now taking place through the national saving certificates.

Through the MI module of the Bangladesh Bank, foreign investors are also eligible to trade in the government securities, which are usually viewed as risk-free.

Dr Mansur noted that Bangladesh is missing out on an opportunity to attract foreign investors through the bond market as it remained under-developed for a long period mainly due to the inadequate supply of instruments.
  • Courtesy: The Financial Express/ May 26, 2018

Narcotics Trade in Ctg: Over 100 dealers control 300 spots

FM Mizanur Rahaman


In the port city, there are over 300 spots where peddlers have been selling drugs, including yaba, for years dodging the law enforcers, according to Chittagong Metropolitan Police (CMP) officials.
The major spots include Barisal Colony and some areas in Sadarghat, Akbar Shah, Khulshi, Bakalia, Bayezid, Pahartali, Motijharna, Kotwali, Double Mooring, Chotopool and Halishahar.

The drug trade in Chittagong, adjacent to Ukhia-Teknaf, the gateway of smuggling yaba into Bangladesh, is controlled by 114 people, according to a list of the Department of Narcotics Control (DNC). However, Rab officials say a recent home ministry list includes 58 names.

As a special drive against drug dealers goes on, most of the dealers in the port city have apparently gone into hiding, say locals and law enforcers.

A few low-tier dealers are still in some of the spots but they do not go out during the day now, they say.

Over 60 alleged drug dealers have been killed in “shootouts” with law enforcers across the country over the last 11 days.

Three of the “gunfights” took place in Chittagong.

Habibur Rahman alias Mota Habib and Md Mosharraf were killed in Barisal Colony on May 17 while Md Sukkur Ali in Bayezid area on May 22.

At least 15 alleged peddlers have been arrested in Chittagong during the drive, this correspondent has learnt from police and Rab.

Talking about the drug menace, several law enforcers and DNC officials said one of the major reasons why the illegal trade has thrived in Chittagong was some law enforcers' involvement in it.

THE  'TOP DEALERS'

The top names in the DNC list included Faruk Hossen alias Baitta Faruk alias Bischu Faruk, Yusuf Ahmed, Belal, Nasir, Salamat, Sukkur and Khasru, according to sources in the department.

Baitta Faruk, who “introduced” yellow yaba pills in Chittagong, was killed in a “gunfight” with Rab on October 20 last year.

Later on, Yusuf took over the charge in the city's major spots including in Barisal Colony and Sadarghat areas and became a yaba godfather, said police. He is accused in over 12 cases filed with different police stations.

Rezaul Karim alias Dail (phensedyl) Karim controls the “phensedyl business” in Chotopul area of Halishahar, locals said.

Mozaher, from Anwara, is said to be another yaba godfather, who was arrested by Rab on April 16 last year along with 20 lakh yaba pills worth Tk 100 crore. He is in jail now.

Sources said the dealers in Chittagong also include Md Manzurul Alam Manju alias Kana Manzu and Maijja Mia of Bahaddar Hat area, Faisal of Jamtal area, Nurul Islam of Akbar Shah area, Nurul Alam alias Laden of Panchlaish, Md Babul of Bakalia, Asraf of Halishahar, Md Kamal of Bihari Colony of Akbar Shah, Rowson Ara Begum of Chandgaon, Abu Taher alias Thakur of Khulshi, Aklima Begum of Kotwali, Abdur Razzak of Pahartali, Babul Dutta of Hazari Lane, Shahidurl Alam Hiru of Chandgaon and Rezaul Khokon of Firingi Bazar area.

Almost all the big shots in the business have been on the run since the anti-narcotics drive began, said law enforcers.

A NEW YABA ROUTE

Usually, yaba pills are smuggled into Bangladesh from Myanmar through Teknaf and then are sent to other parts of the country mainly through Chittagong.  

The tablets reach the port city via the Cox's Bazar-Lohagara-Satkania- Karnaphuli-Bakalia route despite frequent raids by law enforcers, said police.

However, as the route has become “risky” due to the drives, some smugglers started using a new one involving Chittagong Hill Tracts, Hathazari and Bayezid areas to bring the pills into Chittagong.

Explaining about the route, several law enforcers said yaba consignments first reach Naikhyangchhari border area of Khagrachhari and then are loaded into trucks and other vehicles. Later, they are taken to Dhaka either via Feni or Chittagong. Some indigenous people are involved in it, according to law enforcers.

Deputy Commissioner (DB-Port) Mohammed Shahidullah said, “We came to learn about the new route after the arrest of five drug peddlers in Bayezid area on March 20.”

Law enforcers, investigating several drug cases, said yaba consignments are also being taken directly to Chittagong in fishing boats through the Bay of Bengal. 

Peddlers unload the consignments either in Anwara or near Sitakunda upazila's coastal region.

Rab-7 Commanding Officer Lt Col Mifta Uddin said, “The syndicate members keep changing the sea routes in the face of strong vigilance by Coast Guard and Rab members.

“The yaba traders are now taking directly the contraband items to Barisal, Borguna, Patuakhali and Hatiya from Myanmar through waterways and later distribute them among the local yaba agents dodging the law enforcers,” the official said.

Alleged yaba godfather Mozaher was arrested after eight of his associates were detained in deep sea area, said Rab sources.

On May 4, police arrested two siblings, including “yaba godfather” Ashraf, who used to smuggle yaba pills into the port city in speedboats.

During the arrest in the city's Halishahar area, 13 lakh yaba tablets were seized from their possession.

Assistant Commissioner of DB (west zone) Moinul Islam told The Daily Star, “Ashraf had unloaded the yaba pills in the coastal part of Sitakunda and later brought those to his Halishahar home by his car.”

“He mainly supplied the pills to retailers and wholesalers in Dhaka and Chittagong,” added the AC.

Asked about the steps taken to contain yaba menace in Chittagong, DCShahidullah said, “We have been intensifying intelligence gathering at all the entry points of the city to arrest yaba peddlers.”

Additional Commissioner (Crime and Operation) of CMP Amena Begam said drug dealers come out of jail even after being caught red-hand taking the advantage of some “loopholes in law”. She did not explain it.

According to the CMP, 4,191 cases were filed with 16 police stations in connection with recovery of yaba pills in 2017.

Amena said most of the people, arrested over the cases, were “yaba carriers”. “We can't arrest the top guns if the arrestees don't name them in their confessional statements”.

“If we find anything fishy, we check the bank statements of the arrestees and the other suspects. If we find anything concrete, we can file cases against the big shots under the Money Laundering Act,” she said.

Asked about the list of drug peddlers prepared by the home ministry,

Shahidullah said, “We have the list and we are gathering intelligence.”

'POLICE-PEDDLER NEXUS'

Wishing not to be named, a top DNC official said a section of unscrupulous police personnel was involved in the drug trade.

“It is the reason why the illegal trade has seen a boom in recent years,” the official added.

On May 8, five policemen, including two sub-inspectors of Barawlia Highway Police Station, were closed as they were trying to sell some 28,000 yaba pills seized earlier, said police sources.

Earlier on April 25, police constable Kamruzzaman of CMP was arrested in connection with a yaba case filed with city's Double Mooring Police Station. Later, he was suspended.

On November 27, 2016, ASI Ridwan of Bakalia Police Station was arrested along with 1,700 yaba pills while on November 28, 2017 ASI Anwar of District Special Branch (DSB) was arrested by CMP for possessing 1,000 yaba pills.

Contacted, Deputy Inspector General SM Moniruzzaman (Chittagong Range), said, “If any police personnel is found involved in yaba trade, departmental action will be taken against that individual”.

Amena Begum said, “Punitive actions were taken against the dishonest police personnel found involved in the illegal businesses.” 

  • Courtesy: The Daily Star /May 26, 2018