Search

Monday, July 2, 2018

নন-এমপিও শিক্ষকদের দাবি মেনে নিতে ১৪ বিশিষ্টজনের বিবৃতি


এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত নন-এমপিও শিক্ষকদের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশের বিশিষ্ট ১৪ নাগরিক। 

গতকাল সাংবাদিক, লেখক কামাল লোহানী  স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃবিতে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অজয় কুমার রায়, কথাশিল্পী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক, লেখক ও রাবির সাবেক অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, শাহজাহাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. সফিউদ্দিন আহমেদ, সাহিত্যিক ও কলাম লেখক অধ্যাপক যতীন সরকার, নাট্যকর্মী মামুনুর রশিদ, সাবেক অধ্যাপক ও সংস্কৃতি কর্মী কাজী মদিনা, শিক্ষাবার্তার সম্পাদক এএন রাশেদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমএম আকাশ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, সংষ্কৃতি কর্মী শংকর সাঁওজাল এবং সংগীত শিল্পী সঙ্গীতা ইমাম। 

বিবৃতিতে বলা হয়, বাজেটে এমপিওভুক্তির ব্যাপারে সুস্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। তারপরও ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলা হচ্ছে। এদিকে পাঁচ হাজার ২৪২টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রণালয় জনবল কাঠামো ও এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করায় শিক্ষকরা চরম হতাশ।

স্বীকৃতির সময় ছয় বছর বেতন দেব না, এ শর্ত দিয়ে ২০ বছর বা তা চেয়ে বেশি সময় বেতন না দেয়া কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে হবে। ১৯৯৪ সালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী তাদের মুখে শরবত তুলে দিয়ে বলেছিলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের আর কোনো আন্দোলন করতে হবে না। অথচ তার সময়েই শিক্ষকরা রাস্তায় অনশন করছে। পুলিশের নির্যাতন সহ্য করছে। যা জাতির জন্য যেমন কলঙ্কের তেমনি বেদনারও। শিক্ষকদের দাবি দাওয়া দ্রুত মেনে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তারা। 

  • কার্টে সিঃ মানবজমিন/ জুলাই ২,২০১৮ 

Anti-quota campaigners under BCL cosh!

Imperious impunity
Several leaders of the platform demanding civil service quota reform were allegedly set upon by the members of the BCL while they were about to address a press conference regarding the issue on June 30. And this was not for the first time that students ventilating their grievances collectively have suffered the wrath of the BCL activists. Predictably, the matter was denied by the BCL central leaders claiming that no BCL activists were involved in the violence. The explanations they offered do not hold water and the pictures say otherwise.

The behaviour of the Chhatra League activists, particularly on the campus of the country's highest seat of learning, provokes one to ask a few fundamental questions. Firstly, don't the students have the right to air their demands or the liberty to dissent? Secondly, who has given the right to an appendage of the ruling party to stifle the students' demand by force? There have been similar instances in the past where AL appendages were seen trying to chastise opposition dissent behaving as another arm of law enforcement.

We have commented many times before about the unbridled behaviour of the BCL activists, not only in DU but also in several other educational institutions. Regrettably, the central leadership of the party has not moved strongly enough to restrain these elements. Despite the PM expressing annoyance in the past, the situation has not changed. The responsibility of maintaining law and order or addressing students' demands is that of the University administration. We would hope that they would not allow their responsibilities to be outsourced to any student organisation.  

Courtesy: The Daily Star/ Editorial/ Jul 02, 2018 

TIB slams inertia of government

TORTURE OF WOMEN MIGRANT WORKERS

The Transparency International Bangladesh (TIB) yesterday expressed deep concern over the return of several hundred female migrant workers from the Middle East reportedly after being abused and tortured by their employers.

Slamming the visible inertia of the authorities concerned in the country's migration sector in such a crisis, the international graft watchdog's Bangladesh chapter urged the government to ensure accountability of related institutions to stop irregularities, according to a statement.

ENSURE RIGHTS & SECURITY

The TIB called upon the government to ensure the rights and security of female migrant workers in the Middle East, the statement reads.

It says in the last week of June alone, around 120 tortured female workers returned home from the Middle East. In the previous month, 260 others were forced to come back.

“At one end, the return of hundreds of female migrant workers from the Middle East after being subjected to brutal torture, abuse and fraudulence is a glaring instance of lack of good governance in the migration sector.

“On the other hand, the inertia of the authorities concerned over the issue is frustrating and an insulting proof of lack of empathy towards women's rights,” said TIB Executive Director Dr Iftekharuzzaman.

“It is the government's responsibility to ensure the rights, security and legal assistance of the hapless women who went abroad leaving behind their families and dear ones with a hope of financial security and to contribute to the country's economy.

“It is expected the government will take necessary steps in this regard,” he observed.

However, it is unfortunate that no such efforts from the government's end were seen, he added.

COMPENSATE ABUSED WOMEN WORKERS

He also urged the government to take steps to rehabilitate and compensate the abused female workers and take effective measures to prevent this from happening again. Mentioning that allegations of torture of female migrant workers in the ME nations including Saudi Arabia are nothing new, Iftekharuzzaman urged the government to take strict measures in this regard.

He recommended halting the process of sending female workers to those countries where they were subjected to abuse and torture until the countries pledge to prevent such occurrences and sending female workers to countries which are relatively safer and more humane.

He put stress on ensuring legal security of female migrant workers in the destination countries through bilateral agreements, if necessary, by bringing amendment to the legal framework to bring the perpetrators to the book, and ensuring the victims' compensation, medical assistance and due salaries.

  • Courtesy: The Daily Star/ Jul 02, 2018

Sunday, July 1, 2018

জিতলো কে?

রুমীন ফারহানা

একটি সুস্থ স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যখন কোনও নির্বাচন হয় তখন তাতে হার-জিতের বিষয়টিও হয় সহজ,সরল, স্বাভাবিক। যে দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয় হার-জিত তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু আমাদের মতো দেশে যেহেতু কোনও কিছুই সহজ সরল স্বাভাবিকভাবে হওয়ার কোনও কায়দা নেই, তাই যেকোনও নির্বাচনের পরপরই একটি প্রশ্ন চারপাশে ঘুরপাক খেতে থাকে। জিতল কে? প্রার্থী, দল, গণতন্ত্র, ভোট, নাকি সবক’টিই? এখানে কখনও প্রার্থী জেতে,দল জেতে তো কখনও জেতে ভোট বা গণতন্ত্র। সবক’টি একত্রে জেতার সৌভাগ্য আমাদের জীবনে কমই আসে। পত্রিকাগুলো শিরোনাম করে–‘জিতল মফিজ হারলো গণতন্ত্র’। এ এক আজব অবস্থা।

যেমন ধরুন সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে যদি এখন প্রশ্ন করা হয় এই নির্বাচনে জিতল কে, তাহলে তার সহজ স্বাভাবিক উত্তর হওয়া উচিত ছিল আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, যিনি ২ লাখেরও অধিক ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু আদতে বিষয়টি বোধহয় তত সরল নয়। নির্বাচনটি ঘিরে নানা তরফে এত কথা শোনা যাচ্ছে যে চট করে এর একটি সহজ উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন। আওয়ামী লীগের তরফে যখন দাবি করা হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, মানুষ বিএনপির রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে দেশের অব্যাহত উন্নয়ন, অর্জন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে রায় দিয়েছে, ঠিক তখনই ঘৃণাভরে নির্বাচনি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি করেছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদের অবশ্য বিষয়টি খোলাসা করে বলেছেন যে ‘জিতলে আছি হারলে নাই’ নীতিতে চলছে বিএনপি। তার ভাষায় বিএনপি ‘নালিশ পার্টি’, সুতরাং এই নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাবার কিছু নেই।

তবে মুশকিল হলো নির্বাচনটি নিয়ে কেবল যদি বিএনপি আপত্তি তুলতো তাহলে বলার কিছু ছিল না। নালিশ পার্টি নালিশ করবে তা নিয়ে অস্থির হলে চলে না। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকগুলো এই নির্বাচন নিয়ে গত কয়দিন যাবৎ শিরোনাম করতে গিয়ে লিখেছে, ‘নিয়ম অনিয়মের নির্বাচন’। বলেছে, ‘বাইরে সুনসান ভেতরে গড়বড়’, ‘দিনভর বহিরাগতদের অবস্থান’ কিংবা ‘আওয়ামী লীগ জিতেছে গণতন্ত্র হেরেছে’, ‘খুলনার অভিযোগ গাজীপুরেও’, ‘খুলনার চেয়েও একধাপ এগিয়ে’, ‘অনেক কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট, ব্যবধানও বেশি’– ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনকি বিবিসি এই নির্বাচন নিয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে তাদের হতাশার কথাই ব্যক্ত করেছে। জাতীয় দৈনিকগুলোর কল্যাণে এই নির্বাচনের যে চিত্র আমরা জানতে পেরেছি তাতে মূলত বলা হয়েছে ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে সিল মারা, বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ব্যালট ছিনতাই, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এজেন্টদের হুমকি ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কেন্দ্রের ভেতর বাইরে বহিরাগতদের দাপট ইত্যাদি। লক্ষণীয় বিষয় হলো এই সকল অন্যায় অনিয়ম হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা বড় অংশকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে, যাতে প্রশাসন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল।

একটি কথা বারবারই উঠেছে। তা হলো বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিল না। বিএনপির মতো বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল, যারা বারবারই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছে তাদের কেন পোলিং এজেন্ট থাকবে না? এবার নাকি খুলনার তিক্ত অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে গাজীপুরে তিন সেট এজেন্ট প্রস্তুত রাখা হয়েছিল যাতে এক সেট আটক বা নির্যাতনের শিকার হলে পরবর্তী সেট দায়িত্ব নিতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিন সেট এজেন্ট তেমন কাজে আসেনি। কারণ, তাদের কাউকে ভোটের আগের রাতে, কাউকে ভোটের দিন ভোরে বাড়ি থেকে,কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। 

ভয়ে আতঙ্কে বা গ্রেফতার এড়াতে অনেকে বাড়ি থাকতে না পারলেও শেষ রক্ষা হয়নি। কেন্দ্রের ভেতর বুথ থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ বা ডিবি তুলে নিয়ে গেছে তাদের। ভয়ে নাম পরিচয় গোপন করা সত্ত্বেও এমন ৪২ জন সম্পর্কে জানা গেছে, যারা বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট বা কেন্দ্র কমিটির সদস্য ছিলেন। এদের গাজীপুর থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে যাতে তারা কোনও ভূমিকা পালন করতে না পারে এবং একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা অন্য এজেন্টদের মধ্যেও ভীতির সঞ্চার করেছে, যাতে তারা মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। জানের মায়া সবারই আছে, নাকি? আরও মজার বিষয় হলো, ভোটের আগের দিন সন্ধ্যায় এলাকা থেকে সক্রিয় নেতাকর্মী ধরে নিয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ, যাদের পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাওয়া যায়। 

গাজীপুরে শেষের কয়েক দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গ্রেফতারের এতটাই স্টিমরোলার চালান হয় যে অবশেষে নির্বাচনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা আসে এই গণগ্রেফতার বন্ধ করার জন্য। যদিও ততক্ষণে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। গ্রেফতারের শিকার হয়েছে অগণিত নেতাকর্মী আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এই আতঙ্ক সৃষ্টিই ছিল মূল উদ্দেশ্য। পুলিশের গাড়িতে  ঘুরেছে সরকারি দলের প্রার্থী, অন্যদিকে বিরোধী দল ব্যস্ত ছিল জান বাঁচানোর খেলায়। নির্বাচনের এত চমৎকার  এবং সুপরিকল্পিত নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ কে দেখেছে কবে? আর সকল মুশকিলের আসান-স্বরূপ একজন এসপি তো ছিলেনই সর্বক্ষণ।

গাজীপুরের নির্বাচনটি এতটাই সুনিয়ন্ত্রিত এবং সুপরিকল্পিত ছিল যে ফলাফল ঘোষণার ৪ দিন পার হলেও এর বিশ্লেষণ চলছে এবং নানা নিত্যনতুন আঙ্গিকের দেখাও মিলছে। ২৮টি সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’ বা ‘ইডব্লিউজি’ তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে বলছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাড়ে ৪৬ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে। এত নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকার পরও যখন প্রায় ৫০ শতাংশ  কেন্দ্রেই অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় তখন আর যাই হোক সেই নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলার কোনও রাস্তা থাকে না। নির্বাচন কমিশন, আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাকর্মী এবং একশ্রেণির সুশীল বুদ্ধিজীবী বলার চেষ্টা করছেন ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে অনিয়মের অভিযোগে মাত্র ৯টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে, শতকরা হিসাবে যা ২ শতাংশের বেশি হবে না। মজা হলো, অনিয়ম সবক’টি কেন্দ্রেই হয়েছে, স্থগিত হয়েছে বা প্রকটভাবে সামনে এসেছে কেবল ৯টি কেন্দ্র। 
ধরা যাক একটি এলাকায় ২ লাখ লোকের বাস। আমরা যদি সেখানে কোনও জরিপ চালাই তাহলে ২০০ থেকে ৫০০ জনের ওপর জরিপ করে সেটাই ওই এলাকার জনমতের প্রতিফলন বলে ধরে নেবো। এটাই রীতি। আর পর্যবেক্ষক বা সাংবাদিক কখনোই সব কেন্দ্রে যান না, যাওয়া সম্ভবও না। একজন অভিজ্ঞ নির্বাচন বিশ্লেষক বলছিলেন যে বাংলাদেশের নির্বাচনের ধারাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। ৯১ পূর্ব নির্বাচন, ৯১ থেকে ২০০৮ এবং ২০০৮ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, ৯১ পরবর্তী যে নির্বাচনের ধারা আমরা তৈরি করেছিলাম তা আর ধরে রাখতে পারিনি। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনি ইতিহাস পুরো বিষয়টিকেই বদলে দিয়েছে। এখন ভোট মানেই পুলিশ, প্রশাসন, ক্যাডার ব্যবহার করে সরকার দলীয় প্রার্থীর জয়লাভ। ভোটের সঙ্গে এখন আর ভোটারের তেমন সম্পর্ক  নেই।

সম্প্রতি গাজীপুর আর খুলনা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগের কথা জানাতে গিয়ে সরকারি দলের তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এদেশের নির্বাচন নিয়ে একমাত্র ভারত ছাড়া আর কোনও দেশের মন্তব্য শুনবার মতো ধৈর্য সম্ভবত সরকারের অবশিষ্ট নেই।

গাজীপুর বা খুলনা সিটি নির্বাচন ছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এতে হারলেও সরকার পরিবর্তনের কোনও সুযোগ ছিল না। বরং নির্বাচনটা যদি সত্যিকার অর্থেই সুষ্ঠু হতো তাহলে সরকারের দাবি যে তাদের অধীনে ভালো নির্বাচন সম্ভব সেই দাবিই জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা পেত। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য হলো, আমরা অতীত সরকারের খারাপ নজিরগুলো কেবল যে চর্চা করি তাই নয়, বরং আরও শতগুণ খারাপ কী করে করা যায় তার প্রতিযোগিতায় নামি। তাই আজকে যেকোনও নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গেলেই শুনতে হয় ‘মাগুরা নির্বাচনে’র কথা। এই ‘মাগুরা নির্বাচনকে’ আদর্শ ধরে এগোনোর ফলে প্রতিটি নির্বাচনই এখন ‘মাগুরা মার্কা’ নির্বাচন। পরিশেষে বলি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আর নির্ভুল ভোটার তালিকা দিয়ে কী হবে যদি ভোটার তার ভোটটাই দিতে না পারে?

  • লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
  • কার্টে সিঃ বাংলা টিবিউন/ জুলাই ১, ২০১৮

রক্তাক্ত কোটা সংস্কার, বন্ধকী বিবেক

গোলাম মোর্তোজা


নুরুলদের অপরাধ কী? কেন তাদের উপর এই বর্বর নির্যাতন?

ক. নুরুলরা এমপি-মন্ত্রী বা বড় ব্যবসায়ীর সন্তান নন। তারা গ্রামীণ চাষা-ভুষার সন্তান। এটা তাদের অপরাধ।

খ. যাদের দামি গাড়ি আছে। যাদের সন্তানরা ২০ হাজার ডলার মূল্যের ঘড়ি পরেন। গাড়ির নিচে পিষে মানুষ মারেন, তাদের কাছে ন্যায্যতার কথা বলা, নিঃসন্দেহে অপরাধ। যে অপরাধ নুরুলরা করছেন।

২.
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘আর কি করার ছিল?’ বা ‘আর কিছু করার ছিল না’ - একদল মানুষ আছেন সব কিছুর পক্ষ নিয়ে যারা একথা বলেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন, দায়মুক্তির আইন, সবচেয়ে বেশি ব্যয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নমানের সড়ক, বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, জনসম্পৃক্ত এসব বিষয়ে বারবার তারা এসব কথা বলেছেন।

যখন যুক্তি দেওয়া যায় না, তখন কুযুক্তি দেওয়া হয়। কুযুক্তিতে খুব একটা সুবিধা হয় না। তখন কুৎসিত বিষোদগার শুরু হয়। যুক্তির কাছে, কুযুক্তি-বিষোদগার, সবই তুচ্ছ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে যুক্তি।

যারা ক্ষমতাবান-যারা বিত্তবান, তারা ‘আর কিছু করার ছিল না’ বলে অপকর্মের পক্ষে অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করেন। যুক্তি যারা দেন, তাদের উপর ক্ষিপ্ত হন। ক্ষিপ্ততা গোপন থাকে না, প্রকাশ দেখা যায়।

৩.
নুরুলদের ক্ষেত্রেও ক্ষিপ্ততার প্রকাশ দেখা গেছে। নুরুলরা ‘কোটা’ নিয়ে কথা বলেছেন। ‘কোটা’ যে কত ভয়াবহ মাত্রায় অযৌক্তিক পদ্ধতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, তা যুক্তি দিয়ে তুলে ধরেছেন। তাদের যুক্তির পেছনে গবেষণা-তথ্যের যোগান দিয়েছেন ড. আকবর আলী খানসহ সমাজের কিছু বিদগ্ধ মানুষ।

নুরুলরা অযৌক্তিক অন্যায্য কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছেন, চেয়েছেন ন্যায্যতা।

যুক্তি না থাকায় ক্ষমতাসীনরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সরকার বিরোধী ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখিয়ে বলেছেন ‘হঠাৎ করে কেন এই আন্দোলন?’

নুরুলরা তথ্য-যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন, তাদের কোটা সংস্কারের দাবি গত কয়েক বছরের, হঠাৎ করে নয়। বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা ‘জামায়াত- শিবির’। অসত্য অভিযোগ ভিত্তি পায়নি।

তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে ধারণ করে ন্যায্যতা প্রত্যাশা করেছেন। দৃশ্যমানভাবে প্রমাণ করেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও পুলিশ-র‍্যাবকে দিয়ে পেটানো হয়েছে। ছাত্রলীগকে দিয়ে আক্রমণ করানো হয়েছে। হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। রাস্তা থেকে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কোনো কিছুই কোনো কাজে আসেনি। নুরুলরা চেয়েছিলেন ‘কোটা সংস্কার’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন ‘কোটা থাকারই দরকার নেই’। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, কোটা বাতিল হয়ে গেছে। এটা নিয়ে আর কিছু বলার নেই। এও বলেছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কোটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

কিন্তু কোটা বাতিল বা সংস্কারের যে উদ্যোগ, সে বিষয়ে দীর্ঘ সময় ‘নীরবতা’ পালন করা হয়েছে। কখনো কখনো বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। ‘কিছু জানি না, নির্দেশ পাইনি’ ‘অগ্রগতি নেই’- জাতীয় কথা সচিব বলেছেন। নুরুলরা রাস্তায় নেমেছেন। তখন বলা হয়েছে, ‘প্রজ্ঞাপন জারির কাজ চলছে’।

‘প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত, বিদেশ থেকে ফিরলেই প্রজ্ঞাপন, রোজার পরে, ঈদের পরে’ প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ফিরেছেন, রোজা-ঈদ গেছে, প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। গভীর নীরবতা চলছে।

৪.
কেন নীরবতা, সে বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন নুরুলরা। মনে রাখতে হবে, তারা আন্দোলনের জন্যে রাস্তায় নেমে আসেননি। সরকার পতনের ডাক দেননি। তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলতে চেয়েছিলেন, কোটা বাতিল বা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারি করছেন না কেন, প্রজ্ঞাপন জারি করুন।

বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে, এ কথা বলা যাবে না? আওয়ামী লীগের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে, নুরুলদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বলবেন, প্রজ্ঞাপন জারির কাজ চলছে, আর ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেবেন পেটানোর জন্যে? এ কেমন নীতি? যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদকারী হিসেবেই তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গর্ব করে বাংলাদেশ। দেশের মানুষ তো সে কারণেই তাদের শ্রদ্ধা করেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটা অংশ বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে, ন্যায্যতার দাবিতে আন্দোলনরতদের এমন নির্লজ্জভাবে প্রহার করবে? বঙ্গবন্ধুর গড়া ছাত্রলীগ, লাঠিয়াল-মাস্তান বাহিনী হয়ে উঠল? ন্যায্যতার বিরুদ্ধে অন্যায্যতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে, সাধারণ শিক্ষার্থী নুরুলদের পিটিয়ে আহত-রক্তাক্ত করবে?

তুলনায় আপনি ক্ষিপ্ত হলেও স্মরণ করে দেখেন, আইয়ুব খানের কুখ্যাত এনএসএফ সাধারণ শিক্ষার্থীদের এমন নির্দয়ভাবে নির্যাতন করেনি, ছাত্রলীগ এখন যা করছে। শিক্ষকদের কাছে অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে পাঠান। শিক্ষিত শিক্ষকরা যে অন্ধ হয়ে গেছেন, তারা যে কানে শোনেন না, চোখে দেখেন না- গ্রামের কৃষক অভিভাবকরা তা জানেন না।

‘ভিসির বাড়ি কেন ভাঙল’- তেজী মূর্তিতে গর্ত থেকে একবার বেরিয়েছিলেন শিক্ষকরা। তখন লিখেছিলাম ‘ভিসির বাড়ি কারা ভাঙল’ তদন্ত করে তা প্রকাশ করার বা ব্যবস্থা নেওয়ার সাহস শিক্ষক, সরকার বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই। বাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও চিত্রে যাদের ছবি দেখা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার নৈতিক সাহস গর্ত থেকে বের হয়ে আসা সেই সব শিক্ষকরা বহু আগে বন্ধক রেখেছেন। তারা আবার গর্তে ঢুকে গেছেন।

নুরুলদের যারা লাথি-ঘুষি-পিটিয়ে রক্তাক্ত করল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষকরা তাদের প্রায় সবাইকে চেনেন-জানেন। চিনি না বলার সুযোগ নেই, কারণ ভিডিও চিত্রে প্রায় সবাইকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এদের অনেকের কাছে শিক্ষকরা পদ-পদবির জন্যে তদবির করেন। অনেককে নিজের বা নিজেদের শক্তির জন্যে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করেন। তারা পৃষ্ঠপোষক হয়ে, কী করে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন!

৫.
শিক্ষক হয়ে নিজে যিনি ঘুষি দিয়ে আরেক শিক্ষকের নাক ফাটিয়ে দেন, শিক্ষার্থীদের দেখে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার উপর। তার শক্তির উৎস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী কৃষকের সন্তান নুরুলরা নয়। তার শক্তির উৎস লাঠিয়াল বাহিনী, যে লাঠিয়াল বাহিনী পেটায় কৃষকের সন্তান নুরুলদের। মানুষের বিবেক, শিক্ষকদের বিবেক কতটা নির্দয় হতে পারে! সন্তানতুল্য নুরুলদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হলো, শিক্ষকরা নিশ্চিন্তে ক্লাবে আড্ডা দিলেন, বাসায় ফিরে সন্তানকে আদর করলেন, ভাত খেলেন, ঘুমালেন। হাসপাতালে শুয়ে থাকা, মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা নুরুলদের, একবার স্বপ্নেও দেখলেন না! রক্তাক্ত নুরুলের মুখ, আহত- গ্রেপ্তার রাশেদের মুখ, শিক্ষকদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে না। যারা নুরুলদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করল তারা অক্ষতই থেকে গেল। যারা আহত হলো গ্রেপ্তারও হলো তারাই। এই আকালে একজন অধ্যাপক জাবেদ বাঁচাতে চেয়েছিলেন নাক- মুখ ফেটে রক্ত বের হওয়া নুরুল হককে। রক্তাক্ত নুরুল অধ্যাপক জাবেদের পা আকড়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন। আর কোনো শিক্ষক এগিয়ে আসেননি। রক্ষা করতে পারেননি অধ্যাপক জাবেদ, নিজে কিছুটা আহত হয়েছেন ছাত্রলীগের আক্রমণে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।

এই বাংলাদেশে ৫৬ শতাংশ সরকারি চাকরি হয় কোটায়।

এই সেই শিক্ষকরা, যারা বাতাসের গতি বুঝে নুরুলদের কাছে গিয়ে সংহতি জানিয়েছিলেন।

এই সেই ছাত্রলীগ, কোটা আন্দোলনকারীদের প্রথম ‘বিজয়’ মিছিলটি তাদের দিয়ে করানো হয়েছিল। আগের রাতে আন্দোলনকারীদের পিটিয়ে, মাঝরাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে সূর্যসেন হলে আশ্রয় নিয়েছে যে ছাত্রলীগ, আবার পরের দুপুরে ‘বিজয়’ মিছিল করেছে সেই ছাত্রলীগ।

এই সেই ছাত্রলীগ, যাদেরকে দিয়ে সাধারণ ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করানো হয়েছে।

এই সেই ছাত্রলীগ, যাদেরকে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী নুরুলদের জখম-রক্তাক্ত করানো হলো।

  • কার্টেসিঃ The DailyStar Bangla/ jul 1, 2018 

বেসরকারি ব্যাংক খেলাপি বেড়ে দ্বিগুণ, তিন গুণ..

  • এক বছরে পূবালীর খেলাপি ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণ
  • স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বেড়ে হয়েছে তিন গুণ
  • সোস্যাল ইসলামীর খেলাপি ঋণ এখন দ্বিগুণ ছুঁই ছুঁই
  • সাউথইস্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণও প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে


সরকারি ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোও যে খারাপ হয়ে পড়ছে, তা দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। তবে বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের আর্থিক চিত্র এক বছরে যে এতই খারাপ হয়েছে, তা একরকম আড়ালেই রয়ে গেছে। কোনো ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এক বছরে দ্বিগুণ, আবার কারও কারও তিন গুণও বেড়েছে; যার প্রভাব পড়ছে মুনাফায়।

২০১৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৩ ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা আগের বছরের চেয়ে কমেছে। আর খেলাপি ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি রাখতে না পারায় ১৩টি ব্যাংক নগদ লভ্যাংশও দিতে পারেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো নষ্ট করেছেন সরকারনিযুক্ত পরিচালকেরা। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো খারাপ করার পেছনে দায়ী কিছু দুষ্ট প্রভাবশালী পরিচালক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে এসব ব্যাংক নিয়ন্ত্রণের পুরো ক্ষমতা রয়েছে, তারপরও তারা হাত গুটিয়ে বসে আছে। এসব ব্যাংকের পরিচালকেরা সরকারকে চাপ দিয়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করছেন। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।

এদিকে, সম্প্রতি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালকদের চাপে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নগদ জমার হার (সিআরআর), ঋণ আমানত অনুপাত সমন্বয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ শতাংশ আমানত গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকদের চাপে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিবারতন্ত্র কায়েমের সুযোগ অবারিত হয়েছে। কমানো হয়েছে ব্যাংকের প্রাতিষ্ঠানিক কর হারও। এর মধ্যে ব্যাংকমালিকেরা ঋণের সুদ হার কমিয়ে এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন।    

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত মার্চ শেষে দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ২১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৩৭ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের মার্চে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ২৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক বছরে স্টান্ডার্ড ব্যাংকের খেলাপি ঋণ তিন গুণ বেড়েছে। ২০১৭ সালের মার্চে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৪২৮ কোটি টাকা, গত মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২০১ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) মামুন ‐উ র‐রশিদ বলেন, ‘যেসব ঋণ আগে পুনঃতফসিল করা হয়েছিল, তা আবারও খেলাপি হয়ে পড়েছে। চেষ্টা করছি যোগাযোগের মাধ্যমে ঋণগুলো ঠিক করতে।’

পূবালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০১৭ সালের মার্চে খেলাপি ছিল ১ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা, গত মার্চে তা হয়েছে ২ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।

জানা গেছে, কেয়া গ্রুপের ৫৮০ কোটি টাকা ও চট্টগ্রামভিত্তিক এসএ গ্রুপের ২৮০ কোটি টাকার পুনর্গঠন করা ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। তবে কেয়া গ্রুপ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

পূবালী ব্যাংকের এমডি আবদুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা টাকা আদায়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

মালিকানায় পরিবর্তনের পর সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এখন দ্বিগুণ ছুঁই ছুঁই। ২০১৭ সালের মার্চে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৮৩৩ কোটি টাকা, গত মার্চ শেষে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ২২৯ কোটি টাকা মুনাফা করলেও গত বছরে তা কমে হয় ১৪৬ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এক বছরে ১ হাজার ৮২৯ কোটি থেকে বেড়ে ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা হয়েছে। এ ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেমকে পরিচালক পদ ছাড়তে হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর পরিবার।

সাউথইস্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণও এক বছরে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ২০১৭ সালের মার্চে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৫২ কোটি টাকা, গত মার্চে তা ১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

২০১৭ সালে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা বদল হওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণও ৩ হাজার ৩৬০ কোটি থেকে বেড়ে ৩ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা হয়েছে। এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১ হাজার ১১২ কোটি থেকে বেড়ে ১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা হয়েছে।

এদিকে আইএফআইসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণও ৯০৩ কোটি থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫২৯ কোটিতে পৌঁছেছে। আইএফআইসির এমডি  শাহ আলম সারওয়ার বলেন, ‘নির্দিষ্ট মাসে অনেকেই কিস্তির টাকা ও সুদ পরিশোধ করতে পারে না। ফলে ত্রৈমাসিক হিসাবে খেলাপি অনেক মনে হচ্ছে।’
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ জুলাই ১,২০১৮

‘দুর্ঘটনা’ বললেই ৪০৫ জনের মৃত্যুর দায় খালাস?

মওদুদ রহমান

১০৪ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ডেভিড গোডাল সুইজারল্যান্ডে এসে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করলেন গেল মে মাসে। বেঁচে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে ওঠা ডেভিডের সঙ্গে যমদূতের দেখা করিয়ে দেওয়ার খরচ জোগাতে অনলাইনে উঠেছিল ১০ লাখ টাকারও বেশি চাঁদা। অথচ বাংলাদেশের সড়কে বিনা খরচাতেই তিনি দেখা দেন। প্রায় প্রতিদিনই তাঁর কাছ থেকে আমাদের পালিয়ে বাঁচতে হয়। যাঁরা কোনো কারণে পারেন না, তাঁরা মারা পড়েন, হয়ে যান নিহত হওয়ার ‘সংখ্যা’। এবারের রোজার ঈদে বাড়ি যাওয়া-আসার মাঝে মাত্র ১৩ দিনে মারা গেছেন ৪০৫ জন। এর মধ্যে সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩৯। এই মৃত্যুগুলোর ওপর দুর্ঘটনার ট্যাগ লাগিয়ে দিলে অনেকেরই দায় খালাস হয়, এমনকি কিছু টাকার বিনিময়ে মামলা পর্যন্ত আপসরফা হয়ে যায়!

২০১১ সালে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সিগনাল, মানুষ, গরু ও ছাগল চিনতে পারার ক্ষমতাকে চালকদের লাইসেন্স পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। একই সময়ে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও পরীক্ষা ছাড়াই বাস-ট্রাকের জন্য নতুন করে ২৪ হাজার পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের সুপারিশে মদদ দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত কতজন লাইসেন্স পেয়েছিলেন কিংবা কেবল গরু, ছাগল, সিগনাল আর মানুষের মধ্যে পার্থক্য করতে পারার যোগ্যতায় কতজন চালকের আসনে বসে এখন সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, সেই পরিসংখ্যান না থাকলেও মৃতের টালিখাতার হিসাব বলছে, বর্তমানে প্রতিদিন সড়কে কমপক্ষে ৬৪ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। আর পঙ্গুত্বের তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ (প্রথম আলো, ২১ এপ্রিল, ২০১৮)।

কোনো ঘটনার মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়িতে অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায়। একই ক্রিয়ার নিয়মিত পুনরাবৃত্তিতে জনমনে প্রতিক্রিয়া আর জমে না। ঠিক তাই পত্রিকায় প্রতিদিন সড়কে মানুষ মারা পড়তে থাকার খবর আমাদের কাছে এখন শুধুই ‘সংবাদ’। নিহত ব্যক্তিদের এখন আর ব্যক্তি নামে মনে রাখার উপায় নেই, ‘বড়’ কোনো নাম জড়িত না থাকলে শুধু সংখ্যা উল্লেখেই দায়িত্ব শেষ করে ফেলে সংবাদমাধ্যমগুলো। আর দুই বাসের মাঝে রাজীব হোসেনের কাটাপড়া হাত ঝুলতে থাকার মতো ছবি প্রকাশ পেলে অনলাইনজুড়ে শুরু হয় কয়েক দিনের মাতম। সেই মাতম ঢাকা দিতে কখনো দেওয়া হয় চাকরির আশ্বাস, আবার কখনোবা খরচ হয়ে যাওয়া জীবনের দামের দফারফা হয় টাকার লেনদেনে (ইত্তেফাক, ২৪ জুন, ২০১৮)। কিন্তু এই ভয়াবহ ঘটনাগুলো লাগাতার কেন ঘটেই চলেছে, কী কারণে এই মৃত্যুমিছিল থামানোর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না, কোন বাধায় রেল ও নৌ যোগাযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম দুটি বিকশিত হতে পারছে না—এসব প্রশ্ন উত্তরহীনই থেকে যাচ্ছে।


সড়ক দুর্ঘটনার যেকোনো আলোচনায় প্রধান বিষয় হয় চালকের অদক্ষতা, অসচেতনতা, আইন অমান্য করা এবং পথে বহু প্রাণের জিম্মাদার হয়েও বেপরোয়া মনোভাবের মতো বিষয়গুলো। অথচ তাদের কথা শোনার সময় আমাদের হয় না। 
চার বছর আগে এক গবেষণাকাজে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন রুটের চালকদের সঙ্গে কথা বলি, জানার চেষ্টা করি তাঁদের কথা। অধিকাংশ চালকই জানিয়েছিলেন, তাঁদের একার আয়ে সংসার চলে না। স্ত্রী এবং কোনো কোনো সময় ছেলেমেয়েদেরও অর্থ উপার্জনে নানা কাজে যুক্ত হতে হয়। 

জানিয়েছিলেন সুপারভাইজারদের প্রতিটি ট্রিপের সময় বেঁধে দেওয়ার কথা, সড়কে হয়রানি আর পুলিশি-অপুলিশি চাঁদাবাজির কথা। পুরোনো চাকা ব্যবহার করতে বাধ্য হওয়া এবং সড়ক বিভাজক আর রোডমার্ক না থাকার মতো কারিগরি বিষয়গুলোও যে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, এ কথা তাঁরা দ্বিধাহীনভাবে স্বীকার করেন। কেউ কেউ আমাকে পালটা প্রশ্ন করেছিলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী আসলে কে?’ (সর্বজনকথা, ফেব্রুয়ারি, ২০১৫)।

সড়কে রোজার ঈদের আগে-পরে হতাহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ছয়টি নির্দেশনা জারি করেছেন। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন, কমিটি গঠন, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি, বিশেষজ্ঞ সুপারিশ প্রস্তুত করার মতো কাজগুলো এ পর্যন্ত কম হয়নি। অথচ সরষের ভেতরেই থেকে যাওয়া ভূতের কারণে অবস্থা দিনকে দিন খারাপ হয়েছে। সিস্টেমের এই ভূত বাঁচিয়ে সড়কে মানুষের মৃত্যু কেবল কয়েকটি নির্দেশনা জারির মাধ্যমে যে বন্ধ করা যাবে না, তা বলে দেওয়াই যায়। অন্তত নিকট অতীতের ইতিহাস আমাদের সেটাই বলছে। আর এ কারণেই ১৯৯৭ সালে প্রথম সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক অ্যাকশন প্ল্যানের পর ২০১১ সাল পর্যন্ত পরপর ছয়টি প্ল্যান অনুমোদন পেলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।

ঘটনা ঘটার সব রকম পরিবেশ আর অব্যবস্থাপনা জারি রেখে ঘটনার পুনরাবৃত্তিকে দুর্ঘটনা হিসেবে প্রচার করতে পারলেই বাংলাদেশে দায়িত্ববানরা দায়মুক্তি পান। এ কারণেই বছর হাজারে হাজারে মানুষ মরলেও কারও কোনো বিকার হয় না, বিচার তো দূরের কথা! বেঘোরে প্রাণ হারিয়ে সংখ্যার ফ্রেমে বন্দী হয়ে যাওয়া মানুষগুলো বারবার জানিয়ে যাচ্ছে, এ দেশের সড়কে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। তারপরও ভোঁতা হয়ে যাওয়া অনুভূতির দোষে সড়কে নেমে কোনোমতে বেঁচে বাড়ি ফিরতে পেরেই এখন আমাদের খুশি থাকতে হয়। আর নীতিনির্ধারকদের দায়িত্ব শেষ হয় কিছু লোকদেখানো নির্দেশনা জারি করার মাধ্যমে। অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার চলতে থাকা এই দুষ্টচক্র না ভাঙলে হয়তোবা ভবিষ্যতে সড়কে মৃত্যুই হবে এখন বেঁচে থাকা অনেকের নিয়তি। কাজেই দুষ্টচক্র ভাঙার চেষ্টা এই মুহূর্তে অনেক বেশি জরুরি।

  • মওদুদ রহমান। প্রকৌশলী, গবেষক। 
  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ জুলাই ১,২০১৮

কোটা আন্দোলনকারীদের খুঁজে খুঁজে মারল ছাত্রলীগ!


পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলনের আগমুহূর্তে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা।


  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রথমে ছাত্রলীগের হামলা গণহামলা।
  • পরে খুঁজে খুঁজে বেধড়ক মারধর।
  • প্রতিবাদে আজ মানববন্ধন, কাল বিক্ষোভ।


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গতকাল শনিবার হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হকসহ অন্তত ছয়জন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১০।

হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় কলেজে মানববন্ধন এবং কাল সোমবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ করা হবে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হবে।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন কবীর প্রথম আলোকে এই কর্মসূচির কথা জানান। তিনি বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী থাকায় এখানে মানববন্ধন হবে না।


এখন পর্যন্ত কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় পরবর্তী কর্মসূচি জানাতে গতকাল বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন ডাকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। কিন্তু এ নিয়ে আগের দিন থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি মন্তব্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গতকাল মধুর ক্যানটিনে জড়ো হন। পরে সকাল ১০টার দিকে গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক, ফারুক হোসেন, আতাউল্লাহসহ কয়েকজন নেতা গ্রন্থাগারের সামনে যান। তাঁরা সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা একযোগে ‘শিবির ধর’, ‘শিবির ধর’ বলে আন্দোলনকারী নেতাদের ধাওয়া করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক এস এম জাবেদ আহমদ দুই পক্ষকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত আন্দোলনকারীদের এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। সবচেয়ে বেশি মারধরের শিকার হন যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক; তাঁর নাক-মুখ ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল। তিনি অধ্যাপক জাবেদ আহমদের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার আকুতি জানাতে থাকেন। ওই শিক্ষক নিজের পরিচয় দিয়ে ছাত্রটিকে রক্ষার চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা নিবৃত্ত হননি। বরং নিজের হাতে আঘাত পান অধ্যাপক জাবেদ। মারধরের শিকার আহত নুরুলকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেন হামলাকারীরা। পরে তাঁকে পেছনের দরজা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়।


মারধরের একপর্যায়ে গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক জাবেদ আহমদের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক।  ছবি: প্রথম আলো


ছাত্রলীগের মারমুখী নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে কেন্দ্রীয় মসজিদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চত্বর ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সামনে নিয়ে মারধর করেন। পরে পরিচিতজনেরা আহতদের ধরাধরি করে হাসপাতালে নেন। পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন গ্রন্থাগারের ভেতরে ঢুকে পড়েন। তিনি একটি কক্ষে আহত অবস্থায় পড়ে ছিলেন। বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গ্রন্থাগারের উত্তর পাশের একটি দরজা দিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, হামলার সময় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির ৫০-৬০ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। অনেকেই পরবর্তী কমিটিতে পদপ্রার্থী। তবে মারধরে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের বেশির ভাগই কনিষ্ঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগেরও কিছু নেতা-কর্মী হামলায় অংশ নেন।

আলোকচিত্রীদের ক্যামেরায় মারধরে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, উপসম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আরাফাত, মানবসম্পদবিষয়ক উপসম্পাদক জহির আহমেদ খান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপসম্পাদক আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল জুবায়ের ভূইয়াকে চিহ্নিত করা গেছে।


তাঁদের বাইরে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাকিব হাসান, মেহেদী হাসান, স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক অসীম কুমার বৈদ্য, সাবেক সদস্য মাহবুব খান, জিয়াউর রহমান হল শাখার সভাপতি আরিফুর রহমান, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সভাপতি বরিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান, মুহসীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রমুখকে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা গ্রন্থাগারের ভেতরে প্রবেশ করে আন্দোলনকারীদের খুঁজতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আরশকে বের করে এনে সাইকেল স্ট্যান্ডের পাশে নিয়ে মারধর করা হয়। এ সময় তিনি জ্ঞান হারান। পরে তাঁকে রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আন্দোলনে জড়িত অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আবদুল্লাহকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁর দাবি, তিনি গ্রন্থাগারে পড়তে এসেছিলেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরে আন্দোলনকারীদের খুঁজতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অবস্থান নেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের সামনেও ছাত্রলীগের একটি পক্ষ অবস্থান নেয়। হাসপাতালের ভেতর গিয়ে দেখা যায়, আহত আতাউল্লাহ ও সাদ্দাম হোসেনকে একটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আতাউল্লাহর ভাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাসুদুল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই ঠোঁট, মুখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন।


আহত সাদ্দাম হোসেনের বন্ধু আরিফ সরদার বলেন, সাদ্দামের হাত কেটে গেছে এবং মাথায় আঘাত পেয়েছেন। এদিকে মারধরের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় গুরুতর আহত নুরুল হক গোপনে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গতকাল বেলা দেড়টার দিকে শাহবাগে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিনসহ পাঁচজনকে বের করে আনেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ সময় জসিমসহ দুজনকে মারধর করা হয়। পরে জসিমকে শাহবাগ থানার একটি গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে আসে।

পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতর প্রবেশ না করলেও শাহবাগ থানার সামনে বেশ কয়েকটি পুলিশ ভ্যান, জলকামান ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন ছিল। আর ক্যাম্পাসের ভেতরে সকাল থেকেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির তৎপরতা দেখা যায়নি। দুপুরের পরে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডির লোকজন গ্রন্থাগারে গিয়ে আহত হয়ে পড়ে থাকা হাসান আল মামুনকে বের করে আনেন।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্রন্থাগারের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে বলে আমি শুনেছি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চলাকালেও লাইব্রেরি খোলা রেখেছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, একটি পক্ষ লাইব্রেরির প্রবেশপথের রাস্তা অবরোধ করবে কেন?’

উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


ঢাকার বাইরে প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম, সংবাদদাতা, বগুড়া জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে বগুড়া শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। আজ রোববার সকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আরজু। গতকাল বেলা দুইটার দিকে নগরের ষোলশহর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ চট্টগ্রামের যুগ্ম আহ্বায়ক সায়েম চৌধুরী।


আন্দোলনকারীরা ছড়িয়ে পড়লে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ধরে পেটানো হয়। ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে। ছবি: প্রথম আলো


কোটা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ৫৫ শতাংশ নিয়োগ হয় অগ্রাধিকার কোটায়। বাকি ৪৫ শতাংশ নিয়োগ হয় মেধা কোটায়। বিদ্যমান কোটা সংস্কারের পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে এর আগে গত ১৪ মার্চ কার্জন হল এলাকায় হামলা চালিয়েছিল পুলিশ। এরপর গত ৮ এপ্রিল শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করলে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আন্দোলন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। গত ২৭ জুন জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কোটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে বিদ্যমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সরকার ইচ্ছা করলে খুব অল্প সময়েই কোটার সংস্কার করতে পারে। কেন দেরি হচ্ছে, সেটা সরকারই ভালো বলতে পারবে।

  • কার্টেসিঃ প্রথম আলো/ জুলাই ১,২০১৮ 

Saturday, June 30, 2018

Trail of sadness spews bad omen for national election

FROM GAZIPUR TO GONOBHOVON


Shahid Islam

Much of the holy expectations notwithstanding, no one seems happy with the outcome of the just concluded Gazipur city polling; both the winners and losers shedding tears for different reasons. The winners, including the ruling party chief and PM Sheikh Hasina, think the margin of victory for the ruling party candidate defied deserved national vote - bank calculations, according to sources close to the PMO, while the losers trashed out the results as a sham and an outright heist that showed why the upcoming national election could not be held under the dispensation of the incumbent regime.

Unusual polling pattern

Foremost, the voter turnout was unusual for this geographically largest, and heterogeneously - populated city corporation of the country. For instance, in Holyson Kindergarten and High School centre in Gazipur sadar, only 14.14 percent voters voted, while voter turnout was 94% in the the Basura Maktob Madrassa centre. According to EC sources, at least 40 polling centres had a voter turnout between 14 and 41 percent while 61 centres recorded a staggering 73 to 94% turnout.
As well, the overall turnout of 57.02% is quite abnormal for an area dwelled by nearly 400,000 industrial labour voters who call the city and its suburbs their homes. No wonder the ruling party candidate defeated his rival by a margin of about 200,000 votes; which stands in contrast with the known national voting pattern and the vote-bank support both the BNP and the AL enjoy respectively.

“The turnout is abnormal. It shows clear manipulation in the voting process,” a local government expert, Tofail Ahmed, told the media. Former election commissioner Brig Gen (retd) M. Sakhawat Hussain was more tactful in saying what he had in mind: “Gazipur city is a not a remote area so that the turnout will be very high in some places and very low in some other areas” he said, adding, “There are many ways to rig an election.”

Re-election demanded

A day after the polls’ conclusion, BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir rejected the polls and demanded re-election. “This was merely a mockery in the name of elections. Different strategies of vote rigging were invented and used,” Fakhrul said in a press conference at the BNP chairperson’s Gulshan office in Dhaka. “With much hatred we reject the Gazipur City Corporation (GCC) polls,” he added.

BNP’s senior joint secretary general Ruhul Kabir Rizvi gushed out similar sentiments at a press conference and said, “As per the information we’ve received so far, over 100 polling stations have been captured ... a grand festival of fake voting occurred.” He also alleged that their “party agents were driven out of many centres by ruling party men with the help of police,” a fact corroborated by many other esteemed national dailies’ and electronic media reports.

Accusation denied

The ruling party’s reaction to such allegations was expectedly unsurprising. During a post-election briefing at the AL president’s Dhanmondi office, the party’s general secretary Obaidul Quader said, “The BNP alleged that its agents were driven out of 100 centres but they did not show any evidence. I can challenge that they will never be able to prove the allegation.” He added, “The presiding officers did not allow BNP agents in as they failed to show valid documents.” Many TV reporters however reported live from the spots the conspicuous absence of BNP polling agents in most of the polling stations for which concerned authorities had no satisfactory answer.

In response to a question why BNP’s NEC member Maj. Mizanur Rahman (retd) was arrested, Quader said, “BNP was involved in hatching a plot to thwart the polls and the election atmosphere.” Blame of plotting also came from the AL’s joint secretary general Jahangir Kabir Nanak, who said at a press conference that “BNP brought the allegations to cover up their intra-party rift and their own weakness.”

When asked why BNP agents were found missing in most of the polling stations, Nanok said: “It is because of the weakness of the BNP candidate, they have failed to appoint agents. Now they are trying to shift the blame.” Nanok’s worst premonition was a bit scary. He warned, “BNP is trying to incite undemocratic forces by putting question marks on the Election Commission.”

Who are undemocratic forces?

What Nanok and Quader insinuated as ‘undemocratic forces’ and ‘plotters’ may not be clear to many election observers and general public, but, if the PM’s concern about the landslide victory margin being ‘a bit too much’ is correct, it showed her sagacity and political realism. Of course the ruling party chief wanted her party to win the GCC polls, but she did not want the outcome, and the polling sanity, to emit a message that an election under her incumbency will be ‘neither fair, nor inclusive.”

Yet, far from being a test case to convince the opposition to join the national polling under her incumbency, the GCC polling proved to be a scheme of her party apparatuses to make it a test case of how they should rig the national election to cling onto power by offering the BNP only one third of the parliament seats.

That may be a desire and a blue print, but the 5-year lease of the incumbent government will surely expire sooner, and, it’s time for the PM to reiterate and reinforce the message to her party stalwarts that, unless they start respecting the democratic process and its outcome, the nation will once again go under the spin of an undemocratic whirlwind. We suspect that’s what had made the PM sad and introspective.
  • Courtesy: Weekly Holiday /June 29, 2018

Thursday, June 28, 2018

গাজীপুরে ৪৬.৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে - ইডব্লিউজি


গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করেছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)।

গাজীপুরের ৪২৫ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে পুরো ৫৭টি ওয়ার্ডের ১২৯টি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থাটির প্রতিনিধিরা। এ সময় তারা ১৫৯টি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনা লক্ষ্য করেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানায় ইডব্লিউজি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইডব্লিউজির পরিচালক ড. মো. আবদুল আলীম বলেন, ইডব্লিউজি যেসব ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে, সেগুলোর মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ কেন্দ্রে ১৫৯টি নির্বাচনী অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এসব অনিয়মের ঘটনা বেশিরভাগই ঘটেছে দুপুরের পর।

অনিয়মের মধ্যে জোর করে ব্যালট পেপারে সিল মারা, ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে নির্বাচনী প্রচার চালানো এবং ভোটকেন্দ্রের ভেতরে অনধিকার প্রবেশ ও অবস্থানের কথা তিনি উল্লেখ করেন।

আবদুল আলীম জানান, অনিয়মের কারণে পর্যবেক্ষণকৃত ১২টি ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়, এর মধ্যে ৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ পুনরায় চালু হয়।

ইডব্লিউজির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রে ভোটারকে প্রবেশ করতে না দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভোটকক্ষে ভোটার প্রবেশের পর আঙুলের কালির ছাপ দিয়ে বলা হয়েছে- আপনার ভোট দেয়া হয়ে গেছে এমন ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের প্রবেশ করতে না দেয়ার। কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়।

এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে প্রচার চালানো হয়েছে এমন ঘটনা ২৮টি। ভোটকেন্দ্রে অনধিকার প্রবেশ দেখা গেছে এমন ঘটনার সংখ্যা ৩০টি। ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সহিংসতার ঘটনা আটটি। ভোটকেন্দ্রের বাইরে সহিংসতা ঘটেছে নয়টি। অবৈধভাবে ব্যালটে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে ২১টি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এমন ঘটনা পাঁচটি। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে প্রার্থী কর্তৃক যানবাহন সরবরাহ করার ঘটনা ২৪ ও অন্যান্য অনিয়মের ঘটনা ১৬টি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইডব্লিউজির সদস্য আবদুল আওয়াল, হারুনুর রশীদ ও অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
  • কার্টেসিঃ যুগান্তর/ জুন ২৮, ২০১৮