Search

Saturday, July 7, 2018

নুরুর পিতার কান্না


কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবক ও উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মুক্তি চেয়েছেন তারা।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার ৬ জুলাই আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়েছে।

প্রতিবাদ সমাজে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ইনামুল হক বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ছাত্রসমাজের ন্যায্য আন্দোলন। এই আন্দোলনে কারা হামলা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকারের এত এত গোয়েন্দা সংস্থা, এ ঘটনার ছবি, ভিডিও ফুটেজ আছে। সরকারের উচিৎ এদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী এগুলো চোখে দেখছেন না।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের পেটোয়া বাহিনী ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। আজ কোদাল দিয়ে কোপানো হচ্ছে, লাঠি দিয়ে মারা হচ্ছে, হাতুড়ি পেটা করা হচ্ছে। যারাই প্রতিবাদ করতে যাচ্ছেন, যুক্তিসঙ্গত আন্দোলন করছেন তারাই পেটোয়া বাহিনীর রোষানলে পড়ছেন ‘

প্রতিবাদ সমাবেশে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরুর বাবা।

নুরুর পিতা ইদ্রিস হাওলাদার আটক হওয়া ছাত্রদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি দেশের মা। দেশের নাগরিকরা আপনার সন্তানের মতো। সন্তানরা আপনার কাছে আবদার করতেই পারে। আপনি দেবেন কী দেবেন না, সেটা আপনার বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু আপনি নির্যাতন করতে পারেন না। আহত ছেলে-মেয়েদের রাষ্ট্রীয়ভাবে চিকিৎসা করানো হোক এবং গ্রেপ্তার ছেলে-মেয়েদেরকে তাদের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দিন। এই সমাবেশে ইদ্রিস হাওলাদার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

তিনি বলেন, ‘কষ্টে আমি কথা বলতে পারছি না। আমার হৃদয় ফেটে যাচ্ছে। সারাদেশের মানুষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে ছিল। আমার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স করা একজন মানুষ। তার জ্ঞান আছে, যা আমার নাও থাকতে পারে। তাই সে সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে কোটা সংস্কার আন্দোলন করে। আমার ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে। সে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি গ্রামে কৃষি কাজ করি। তার চিকিৎসায় আমি টাকা দিয়েছি। নুরুকে মারধরের পর তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেও তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।


তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ছেলের লেখাপড়া করাচ্ছি জমিজমা বিক্রি করে। হামলায় আমার ছেলে গুরুতর আহত হয়েছে। এখন জমিজমা বিক্রি করে তার চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছি।’

প্রতিবাদ সমাবেশে তেল-গ্যাস বিদ্যুৎ, বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের ভাষায় সরকার উন্নয়ন করছে। জনগণের জন্য যদি উন্নয়ন হয় তাহলে সরকারের এত ভয় কেন? কেন তাদের পেটোয়া বাহিনীর দরকার হচ্ছে? কেন আন্দোলনকারীদের ওপর এমন হামলা চালানো হলো?’

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির অসঙ্গতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা প্রকৃতভাবে সুবিধাবঞ্চিত সেই অসহায় নারী, সুবিধাবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধারা এর সুফল পায় না। সরকারি আমলা, কর্মকর্তা ও তাদের লোকজন এই কোটার সুযোগ নিচ্ছে। কোটা যত থাকবে, নিয়োগ বাণিজ্যে তত লাভ। এই কারণে তারা এই কোটার সংস্কার চায় না।’

সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিলেন। কিন্তু সেটির বাস্তবায়ন হলো না। এটি সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না, এটি ছিল তার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এ কারণে পরবর্তীতে আরও জটিলতা তৈরি হয়েছে।’

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ কামাল।

তিনি বলেন, ‘এই সরকার রাষ্ট্রবিদ্রোহী সরকার। রাষ্ট্রবিদ্রোহ কেবল নাগরিক করে না, সরকারও করে সেটি আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে।’

দেশের রাজা যদি ঠিকমতো দেশ শাসন না করেন তবে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত বলে মন্তব্য করেন তিনি।


আন্দোলনকারীদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রশাসনের মতো অর্থব ও তেলবাজ প্রশাসন আমি দেখিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা আর কোনো শিক্ষক দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই।’

আহমেদ কামাল আরও বলেন, ‘৭৫ এ বাকশাল ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যেন বাকশালে যোগ দেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কিছু শিক্ষক বাকশালে যোগ দেননি। আজকেও দেখি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পাশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তরুণ শিক্ষক দাঁড়িয়েছেন। এখনও আলো নিভে যায়নি, একদিন আলো দপ করে ঠিকই জ্বলে উঠবে।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ফলে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হলো। কিন্তু তারপরও দেখলাম প্রশাসন আন্দোলনকারীদের তথ্য নিয়েছে, নাম-ঠিকানা নিয়েছে তাদের পরিবারকে হয়রানি করেছে। ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। অগ্নিকন্যা বললেন এরা সব রাজাকারের বাচ্চা। প্রথম দিকেই এদের রাজাকার, জামায়াত, দেশদ্রোহী বানানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কাজ হয়নি। এই ছাত্র সমাজ সকলের ইন্টাররেস্ট দেখছে। সে কারণে কাজ হয়নি। সকলের জন্য সমান সুযোগ দেওয়া এটা একটি ডেমোক্রেটিক ডিমান্ড।’

  • কার্টসিঃ সারাবাংলা / জুলাই ৭,২০১৮ 


Shouldn’t govt. punish BCL’s criminals?

GOVT. JOB QUOTA REFORMISTS ATTACKED


Apolitical students, who have been pressing for their demand for reforms in existing quota system in government jobs, were attacked by ruling party’s student cadres and activists several times for four consecutive days last week on the Dhaka University (DU) campus area as well as some other public varsities across the country. The incidents took place when the protesters were about to hold a press briefing to announce their next course of action as three months have passed since Prime Minister Sheikh Hasina declared removal of the quota system.

Because of their wanton disregard for law, which is attributable to impunity, atrocious activities on campuses of all the public varsities and colleges in this Republic by some violent members of the Bangladesh Chhatra League (BCL)—the student wing of the ruling party Awami League—they are the most despised and much dreaded group at present. No student is allowed board and lodging in the public varsity/college dormitories unless and until s/he declares allegiance to the BCL leaders who rule the roost, absolutely. 

Those challenging their boisterous bravado and command are invariably manhandled and beaten up. The victims have no scope to complain against the perpetrators as the heads of the institutions will not utter a word against the malefactors.

Some pro-quota leaders were physically assaulted and —-women students were not spared. Family members of Nur, one of the injured leaders of quota reform movement, alleged that authorities of the Anwar Khan Modern Medical College Hospital forcibly released him in the wee hours. The leaders and activists of quota reform movement fear arrest and enforced disappearance in the face of repeated attacks by the ruling party’s student cadres and following arrest of their leaders.

On duty police personnel were seen leaving the spot just before the attack on the quota reform movement activists allegedly by Bangladesh Chhatra League members at Central Shaheed Minar in Dhaka. When asked reason for their leaving by the journalists who were present at that time, they said that they would let them know later.

Deputy Commissioner of Dhaka Metropolitan Police (DMP) Masudur Rahman confirmed that eight students had been arrested between Saturday and Tuesday. What is being done is sheer fascism poles apart from Damocracy for which millions of Bangladeshis made supreme sacrifice by embracing martyrdom.

The government has formed a seven-member committee led by the cabinet secretary to make recommendations about quota reforms. Formed on Monday night, the committee is likely to meet on 8 July for the first time. The delay is inordinate, to say the least.

Cadres of the Bangladesh Chhatra League have earned the dubious distinction owing to involvement of some of them in frequent wrangle, extortion, violent crimes like rape, manslaughter and what have you since long. Even during the incumbency of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, who was then Prime Minister, in internecine fratricide over establishing supremacy one faction of the BCL gunned down seven members of the same party on 4 April 1974 in the Surja Sen Hall dormitory on the Dhaka University (DU) campus for the first time in the varsity’s history.

What is more, with Sheikh Hasina herself as the chief guest at the TSC in DU at the founding anniversary of the BCL on 9 January 1992, BCL activist Moniruzzaman Badal was shot dead. Afterwards until recent times some 65 murders have happened on public university and college campuses across the country.

Given that usually members of the proctorial team or police are entrusted with maintaining campus security, but the current administration seems to be depending more on the activists of the pro-Awami League student body for the job. In case of the two latest incidents, the authorities did not call the police, and the BCL men foiled the students’ protests, harassed female students and beat up demonstrators. On 23 January, several hundred BCL men from the DU as well as from outside attacked a group of students and leaders and activists of left-leaning student organisations to “rescue” DU Vice Chancellor Prof Akhtaruzzaman, who was kept confined in front of his office by the protestors. At least 50 male and female students and two journalists were injured in the attack.

Much ink has been spilt and tons of paper wasted by newspapers in which columnists as well as commentators wrote on the necessity for minimal governance in which the rule of law, of necessity, is fundamental. The person in command of the Government’s statutory human rights body —- the National Human Rights Commission (NHRC) chairman Dr. Mizanur Rahman —- affirmed on August 11, 2010, “The country is devoid of the rule of law. The rule of law is totally absent in the country where most people fail to get justice because of poverty and ignorance.” Inconceivable though it may sound, it explains the dire straits the nation is undergoing now.

The people are witnessing unprecedented, incredible, unheard-of shocking occurrences in succession. Horrific murders and ugly incidents —- reminiscent of the misdeeds during the two previous ALregimes —- in gargantuan proportions are being created by boys [and girls] of affiliated organisations of the ruling Awami League (AL) since it came to power in 2009. On all the campuses across the country two rival groups of pro-AL Chhatra League (BCL) have been ruling the roost. They are found engaged in mortal armed clashes to grab business contracts at various educational institutions including ‘varsities.

Mortal gunfights continue to ensue from time to time when pro-AL BCL and Juba League men snatch tender papers for development works.  History’s worst incident was revealed when victims among the Eden Girls’ University College students complained that their fellow girls in leadership positions of the BCL forced them into illegal physical abuse.

It is advisable that exemplary punishment is meted out to the culprits after a thorough investigation by an independent judicial commission headed by a retired Supreme Court judge.
  • Courtesy: Weekly Holiday /Editorial /Jul 6, 2018

Thursday, July 5, 2018

গাজীপুর নির্বাচন খুলনা মডেলে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন - সুজন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন খুলনা সিটি নির্বাচনের মতোই নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন বলে মনে করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আদ্যপান্ত তুলে ধরে সুজন।

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘গাজীপুরেও খুলনা মডেলে নির্বাচন হয়েছে যা ছিল নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন। খুলনা মডেলের কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় প্রধান প্রতিপক্ষকে মাঠ ছাড়া করা, বিএনপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করা, নির্বাচনের দিন জোর জবরদস্তি করা এবং নির্বাচন কমিশনের নির্বিকার ভূমিকা গাজীপুরেও পালন করতে দেখা গেছে।’

সুজনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘হঠাৎ করে আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে রোজার আগে এক মাসের বেশি সময়ের জন্য নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ইফতার অনুষ্ঠানের নামে প্রার্থীরা বা তাদের পক্ষে বিরাট অংকের অর্থ ব্যয় করে। যার লাগাম টেনে ধরতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। এ ধরনের টাকার খেলা বিত্তবান প্রার্থীদের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত সুবিধা সৃষ্টি করেছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার  সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সদস্যগণ।

'Gave up hope for life'

Toriqul recounts the BCL attack on him; doctors say both bones of his right leg broken









Screen grab from a video clip shows Abdullah Al Mamun, a BCL leader of Rajshahi University unit BCL, bludgeon Toriqul Islam with a hammer on Monday. Photo: star

With two bones of his right leg broken, eight stitches on his head and bruises all over the body, Toriqul Islam still lies in his hospital bed.

"I begged them not to beat me, but no one cared. Everyone who had a stick kept beating me. For a moment, I gave up hope for life," he told The Daily Star yesterday.

He spoke in whispers and with frequent pauses, as speaking any louder sends a searing pain through his body.

A master's student at Rajshahi University and joint convenor of the quota reform movement there, Toriqul was beaten badly by several Chhatra League men on Monday afternoon in front of the university's main gate.

One of the BCL men, Abdullah Al Mamun, pounded his back and legs with a hammer as seen in photos and footage published in the media.

Police and some journalists took him to Rajshahi Medical College Hospital where doctors plastered his broken leg up to his thigh. He has been kept under observation.

X-rays show broken bones of Toriqul's leg. Photo: star

MAK Shamsuddin, head of orthopaedic surgery department of the hospital, said it would take at least three months for the broken bones to heal.

"We will keep the plaster for four weeks. He is having pain all over his body and needs complete rest," he told this newspaper.

Mamun, an assistant secretary of RU unit BCL, hung up the phone when The Daily Star sought his comment last night.

Second among three siblings, Toriqul, 24, recounted the brutal attack to The Daily Star lying in his hospital bed yesterday. 

He was going to the campus for bringing out a prescheduled procession with national flags around 4:00pm. But he saw the main gate was closed. In front of the gate, there was a crowd, surrounded by police.

"I thought they were general students and quota reformists and went ahead. In fact, they were Chhatra League leaders and activists who started chasing us," he said, still looking frightened. 

So Toriqul, from Gaibandha, started running in panic but got caught soon. The attackers surrounded him and started slapping, punching and kicking indiscriminately. Then someone hit his head and other parts of the body with bamboo poles. Then another. Then another. He cannot recall how many. 

"I collapsed…. I cried, pleaded them not to beat me and tried to save myself. But I could not stand up,” he said.

Then someone started hitting his right leg and back with something heavy.

"It did not feel like a stick. It might be a rod or something heavy, I thought. I could not bear the first strike; I screamed. I felt my leg got broken after the second strike. I could not bear the pain.”

But the attackers kept on beating.

The Daily Star has photographs and videos of the incident.

The X-ray plate shows both the bones of his right leg have been fractured.

On-duty police did nothing to stop the attackers when they chased the students, he alleged. "If the police intervened right then, they [the attackers] could not beat me.”

About joining the quota reform movement, he said, "I have seen how my seniors worked hard for government jobs. But I also saw their agonies when they failed to get government jobs despite facing the BCS viva voce more than once, just because of the quota system.

"I don't hope for a government job for myself. But I don't want the future generations to face the discrimination due to the quota system. That's why I joined the movement," Toriqul said.

About his future plan, he said, "Let's see what happens. I have to find a job after completing my studies. Both my parents are ill; I need to take care of them."

At this stage, two policemen  Constable Nazmul and Habilder Hasinur  entered the room and asked The Daily Star reporter to stop the interview with Toriqul and leave the room right away. 

They also claimed that Toriqul was in police custody and that no one was allowed to talk to him without the authorities' permission.

Contacted, Matihar Police Station Officer-in-Charge Shahadat Hossain Khan said Toriqul was not in police custody.

  • Courtesy: The Daily Star/ Jul 05, 2018

Gazipur ‘national’ election


Shaukat Mahmood



You don’t hear about ‘fair play’ in the FIFA World Cup anymore. It’s not needed. The flurry of fouls in the first half with no call for penalty, reminds one of prevailing global circumstances and the domestic political style of Trump, Putin and the likes of them.

It seems to be the new normal, like the normality of Gazipur City Corporation elections, following the polls in Khulna. What happened on 26 June exceeded all levels of the 2014 election. The apprehensions concerning the government and the Election Commission were proven to be only too true. The opposition’s doubts were confirmed. The police successfully warded off the polling agents and supporters of the ‘sheaf of paddy’ (the election symbol of the major opposition party BNP). BNP supporters could hardly gather the courage to go to the voting centres. Those who did go, did so with the ‘boat’ badge on display, pretending to be supporters of the ruling Awami League.

The government and the Election Commission chimed in harmony that the election was free, fair and successful, proving Awami League’s popularity was still at the top. There were long lines at the polling centres and the voters cast their votes in peace. When journalists tried to get the real picture of the election, the voters in the queues simply smirked happily.Newspersons of the electronic media couldn’t screen these shots showing long lines outside the centres, but ‘non-boat’ people being obstructed from entering. Inside, supporters of the ruling party were stamping ballot papers one after the after, while the presiding officers and polling officers silently looked on. In some instances, reporters were surrounded by the ‘boat’ hoodlums, as in Mirza Ibrahim Memorial College.


And the top brass of Dhaka’s TV stations werealso too scared to show the actual incidents on ground. After all, calls from the intelligence agencies were still fresh on their mind. Two journalists of two TV channels had lost their jobs for live telecast of election irregularities and it took much time, effort and requests to reinstate them.

The Election Working Group, an election observation organisation, saw 139 types of irregularities in 45.5 centres of the Gazipur election. The US ambassador expressed her concern, saying that this local government election was a leading indicator to the national polls. Awami League’s general secretary, who is also the bridges minister, issued a warning in response: don’t say anything that will harm bilateral ties. An election commissioner, Rafiqul Islam, also said at a programme in Rajshahi, the US ambassador has no right to speak in such a manner. The Prime Minister’s media advisor Iqbal Sobhan Chowdhury said at a News 24 TV talk-show on 30 June night, this was outside of diplomatic norms. The simple fact is that fascism has taken on epidemic proportions.

Basically, it was the police who were the government’s driving force at the Gazipur elections. Police personnel of the government ilk, particularly those from a certain district, were said to have been brought to Gazipur during the city election. They wandered around armed and in plainclothes, instilling fear in the polling agents and BNP supporters alike. Persons picked up were not kept at the police station, but elsewhere, and their families were gripped with fear of ‘crossfire’ killings. The Awami League leaders paid neither heed to the election code of conduct, nor to the Election Commission. Mass arrests were made a day before the voting, despite prohibition from the court and the commission.

A ruling party leader had told me that the local Awami League was not happy with Jahangir being nominated as the party candidate and initially the election had been postponed. Later, however, they patched things up. It is said that the party general secretary Obaidul Quader himself was insistent about this nomination. Another leader had asked him, “If the election is going to be rigged, why not nominate a tested Awami League leader like Azmatullah?”

On the other hand, BNP’s candidate Hasanuddin Sarkar was far ahead in popularity, both among the people and within the party. The party’s central leaders put a lot of effort into the campaign too. But weaknesses in the vote management, less involvement of the city leaders in the committee formed to oversee the election, the committee’s president and general secretary being forced to remain absent by outside forces, fund constraints, and failure to consolidate a faction of former mayor Mannan’s supporters, are factors that are now being discussed as some of the reasons behind the defeat.

Observers can draw these conclusions from the Khulna and Gazipur city polls. During local and national elections under the present government, this model is likely to be followed: 1. The Election Commission will remain silent and without any reaction. 2. The police will be the muscle behind the voting. 3. It is best to have no opposition candidate, but if there is one, the polling agents will not be allowed to go to the centre. 4. Only voters with the boat badge will be allowed to vote. A recount of votes should have been demanded where 125,000 votes went in favour of the sheaf of paddy in Gazipur. After all, it took so much time and effort to stamp the boat symbol on the ballot papers and to fix the results. 5. Let alone publishing or telecasting any news about irregularities, the newsmen cannot even see such discrepancies. They must only show the long lines of voters and the false festivity. After all, the intelligent agencies have delivered a message: “Watch, but don’t tell.”

This election has delivered Awami League’s message: In no circumstances will an iota of tolerance be displayed towards the opposition. Zero tolerance. Not a single election can be held without rigging. The ruling party had ruled out dialogue with BNP. But the question is, will they be able to maintain this stance? Khulna, Gazipur, Sylhet, Barisal, Rajshahi – they want it all. Who do they want to show that people have full support for development? They want to show that there is only one party, one leader in the country.

In the recent panchayet elections in India’s West Bengal, Mamata Banerjee’s Trinamool Congress won. It was even accused of not allowing any opposition party to field candidates in 37 per cent of the seats. The Kolkata High Court took this up and had suspended the results of the election. The magazine Desh’s 2 Jun issue wrote about the ‘strange democratic process’, saying that there was no care about majority, it was all about whether the democratic process could do away with any opposition.

Certain observers contend that the government’s attitude of “everything-is-mine” has given rise to questions in the public mind. Why this shameless exercise to forcefully win the election? How much longer will this continue? Whether it is appointment in government jobs, votes in the local government election, wherever, loyalty is the key. Why? It is so that even if the government steps down before the national election, it will have its band of trusted men.

In the meantime, post-Gazipur, BNP is pondering on certain issues. The leaders realise that joining in such elections is of no use. Yet they cannot stay away either. For at least another month there will be less police pressure. BNP can rise up and reveal the government’s harsh activities. BNP’s standing committee member Barrister Moudud Ahmed said, it depends on the next three city elections whether BNP will join the national election or not.

Meanwhile, BNP is trying to forge a greater political alliance, with the common demand of Sheikh Hasina stepping down as prime minister. The 20-party alliance led by BNP will not contest in the election if held under Sheikh Hasina. As it has no support from international quarters, Awami League is insistent on holding an election, even if forcibly.
  •  The writer is Vice Chairman, BNP and a jourlalist leader. 


পাষণ্ড মন একটুও গলেনি!









রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় ফেলে তরিকুলকে হাতুড়ি দিয়ে পেটায় ছাত্রলীগের নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন। ইনসেটে হাসপাতালে তরিকুল। ছবি: স্টার

ডান পায়ের ভাঙা দুই হাড়, মাথায় আটটি সেলাই ও সারা শরীরে মারের ক্ষত নিয়ে যন্ত্রণায় দিন যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুল ইসলামের।

ছাত্রলীগের হামলার কথা বলতে গিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তরিকুল বলছিলেন, ‘ওদেরকে অনুরোধ করছিলাম, আর যেন না মারে। কেউ কথা শুনল না। যাদের হাতে লাঠি ছিল সবাই পেটাচ্ছিল। খুব কাছে থেকে যেন দেখছিলাম মৃত্যুকে। কী নির্দয়ভাবেই না পেটাচ্ছিল আমাকে! কোনো মানুষ মানুষকে পেটাতে পারে এভাবে, কল্পনাও করিনি কোনোদিন। এক পর্যায়ে জীবনেরই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

কথা বলার শক্তি নেই, ক্ষীণ গলায় থেমে থেমে কথাগুলো বলছিলেন তরিকুল। একটু জোরে কথা বলার চেষ্টা করলেই যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছিল তার শরীর।

কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভের সময় গত সোমবার তরিকুলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে রাস্তায় ঘিরে ধরে পেটায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন মিলে যখন লাঠি নিয়ে তরিকুলকে পেটাচ্ছিল তখন আব্দুল্লাহ আল মামুন লোহার হাতুড়ি দিয়ে তার পিঠে ও পায়ে আঘাত করে। কাঠের উপর যেভাবে পেরেক পোঁতা হয়, সেভাবে তরিকুলের শরীরে আঘাত করছিল হাতুড়ি দিয়ে। তরিকুল এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।

লাঠি- হাতুড়ির আঘাতে যন্ত্রণায় কাতরানো তরিকুলকে পুলিশ ও কয়েকজন সাংবাদিক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। তার ভাঙা পা-টি উরু পর্যন্ত প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছে। ডাক্তাররা এখন তার শারীরিক অবস্থা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।

তরিকুলের অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান এমএকে শামসুদ্দিন জানান, তার ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।

‘চার সপ্তাহ পায়ের প্লাস্টার রাখা হবে। তার সারা শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। এখন সম্পূর্ণ বিশ্রাম দরকার তার।’

তরিকুলকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো ছাত্রলীগের উপ সম্পাদক মামুনকে গতরাতে ফোন করা হলে সাংবাদিক বুঝতে পেরেই তিনি ফোন রেখে দেন









রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় ফেলে তরিকুলকে হাতুড়ি দিয়ে পেটায় ছাত্রলীগের নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন। ইনসেটে হাসপাতালে তরিকুল। ছবি: স্টার

তরিকুল ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। তার বাড়ি গাইবান্ধায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে তরিকুল দ্বিতীয়। সেদিনের কথা স্মরণ করতে গিয়ে বলছিলেন, পূর্ব ঘোষিত পতাকা মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন। মেইন গেটের সামনে গিয়ে দেখেন গেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গেটের সামনেই একটি জটলা ছিল। পুলিশ তাদের ঘিরে রেখেছিল।

তরিকুল বলেন, জটলা করে থাকা ছাত্রদের আন্দোলনকারী ভেবে সামনে গিয়ে দেখি ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। তারা আমাদের ধাওয়া করে। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ধরে ফেলে ওরা। এর পরই ঘিরে ধরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পেটাতে শুরু করে। এসময় কেউ একজন বাঁশের লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। সারা শরীরে কত মার পড়েছে আর স্মরণ করতে পারছিলেন না তিনি।

‘মারের চোটে রাস্তায় পড়ে যাই... চিৎকার করে ওদের থামতে বলছিলাম। কিন্তু আর উঠে দাড়াতে পারিনি।’

তিনি জানান, এর পরই কেউ একজন ভারি কিছু দিয়ে তার ডান পায়ে আর পিঠে আঘাত করতে শুরু করে।

‘ওটা লাঠি মনে হচ্ছিল না। ভাবলাম রড বা এধরনের ভারি কিছু হবে। প্রথম আঘাতেই চিৎকার করে উঠি। দ্বিতীয় বারের আঘাতে পা-টা ভেঙে গেল মনে হয়েছিল। যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল আর বাঁচব না। মারা যাওয়াও হয়ত সহজ ছিল, এই কষ্ট সহ্য করার চেয়ে। কাকুতি- মিনতি করেছি বাঁচার জন্যে। তাদের মন একটুও গলেনি।’

হাতুড়ির আঘাতে ভেঙে যাওয়া তরিকুলের ডান পায়ের দুই হাড়ের এক্স-রে ছবি। ছবি: স্টার

এর পরও থামেনি হামলাকারীরা। পুরো ঘটনাটির ছবি ও ভিডিও রয়েছে দ্য ডেইলি স্টারের কাছে। এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, তরিকুলের ডান পায়ের দুটি হাড়ই ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

তরিকুল বলেন, ‘হামলার সময় সেখানেই পুলিশ ছিল। কিন্তু তারা থামায়নি। পুলিশ চাইলেই আমাকে এভাবে মারতে পারত না।’

তরিকুলের সঙ্গে কথা বলার সময় পুলিশের কনস্টেবল নাজমুল ও হাবিলদার হাসিনুর হাসপাতাল কক্ষে ঢুকে এই প্রতিবেদকে তাৎক্ষণিকভাবে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তারা বলেন, তরিকুল পুলিশ হেফাজতে রয়েছে তাই তার সঙ্গে কথা বলতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। এ ব্যাপারে মতিহার থানার ওসি শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তরিকুলের পুলিশ হেফাজতে থাকার কথা অস্বীকার করেন।

  • Courtesy: The Daily Star /Bangla /July 05, 2018

গাজীপুরের ‘জাতীয়’ নির্বাচন


—  শওকত মাহমুদ 


এখন আর বিশ্বকাপ ফুটবলে ‘ফেয়ার প্লে’ শ্লোগানটি শোনা যায় না। দরকারও নেই। বর্তমান আসরের প্রাথমিক পর্বে ফাউলের ছড়াছড়ি এবং পেনাল্টি না হওয়ার ঘটনা চলমান বৈশ্বিক উত্তেজনা এবং ট্রাম্প-পুতিনদের ব্যাকরণহীন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্টাইলের কথাই মনে করিয়ে দেয়। সবই স্বাভাবিক এই সময়ের জন্য; যেমনি করে স্বাভাবিক খুলনার পর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাম্প্রতিক নির্বাচন। ২০১৪ থেকে বাংলাদেশে সকল পর্যায়ের নির্বাচনে যা হয়েছে, তার চাইতে একটু বেশিই হয়ে গেছে গত ২৬ জুনে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন যা করবে বলে আশংকা ছিল, তাই করেছে। অপরদিকে বিরোধীদল যা ভেবেছিল তাই হয়েছে। পোলিং এজেন্ট ও ধানের শীষের সমর্থকদের দাবড়ে বেড়ানো পুলিশ সফল হয়েছে। পোলিং এজেন্ট তো দূরের কথা ভোটারদেরকেও বিএনপি সাহস দিতে পারেনি ভোট কেন্দ্রে যেতে। আর যারা গেছে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে যেতে হয়েছে।

সরকার ও নির্বাচন কমিশন একই সুরে দাবি করেছে যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে এবং জনপ্রিয়তার তুল্যদণ্ডে আবারও প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগই এক নম্বরে। ভোটকেন্দ্রে লম্বা লাইন ছিল, শান্তির সঙ্গে ভোটাররা ভোট দিতে পেরেছেন। সাংবাদিকেরা ব্যাকুল চিত্তে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে পরম তৃপ্তি নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো ভোটাররা সুখের হাসি হেসেছেন। কিন্তু বৈদ্যুতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা প্রচার করতে পারেননি যে ওইসব ভোটারের বুকে নৌকার ব্যাজ ঝুলছে। কেন্দ্রের বাইরে বড় লাইন কিন্তু ভেতরে গড়বড়, ব্যাজহীন ভোটাররা নানা কেন্দ্রে বাধাগ্রস্ত হয়েছেন অথচ ভেতরে ব্যালট পেপারে শাসক দলের সমর্থকেরা নিশ্চুপ প্রিসাইডিং-পোলিং অফিসারদের সামনে সীল মেরে চলেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা নৌকার ‘সন্ত্রাসীদের’ দ্বারা ঘেরাও হয়েছে পড়েছিলেন। যেমন মীর্জা ইব্রাহীম মেমোরিয়াল কলেজে। আবার ঢাকায় টিভি স্টেশনগুলোর কর্তাব্যক্তিরা মাঠের সত্য প্রচার করতে সাহস পাননি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ফোন এবং খুলনার নির্বাচনে অনিয়মের লাইভ সম্প্রচার করে দু’টি স্টেশনের দুই সাংবাদিকের চাকরি খোয়ানো এবং যথেষ্ট তদবিরের পর চাকরি ফিরে পাওয়ার স্মৃতিটা এখনও তাদের মধ্যে জীয়ল।

পর্যবেক্ষণকারীদের সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ গাজীপুরে ৪৬ দশমিক ৫টি কেন্দ্রে ১৩৯ ধরনের অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেছেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, স্থানীয় সংস্থার এই ভোট leading indicator to national poll। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী এর পাল্টা জবাবে হুশিয়ারি দিয়েছেন যে, এমন কিছু বলবেন না, যাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নষ্ট হয়। রফিকুল ইসলাম নামে একজন নির্বাচন কমিশনার রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে বলে বসেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নাকি অধিকার নেই এমন কথা বলার। প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী ৩০ জুন রাতে ‘নিউজ টুয়েন্টিফোর’ এর টক শো’তে বললেন,‘এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।’ আসলে ফ্যাসিবাদের সংক্রমণ মহামারী আকারে শুরু হয়েছে।

মূলত: পুলিশই ছিল গাজীপুর নির্বাচনে সরকারের চালিকাশক্তি। নির্বাচন পরিচালনাকারী স্থানীয় এসপিকে দায়িত্বে রাখাটা আওয়ামী লীগের জন্য মূল কর্তব্য ছিল। তিনি সুযোগ্য প্রতিদানও দিয়েছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নির্বাচনী অনিয়ম ঘটাতে দক্ষ গোপালগঞ্জের অফিসারদের সমাবেশ ঘটানো হয়েছিল সেখানে। তারা সাদা পোশাকে সশস্ত্র অবস্থায় পোলিং এজেন্ট ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে যথেষ্ট ত্রাস সৃষ্টি করে। আটক করা ব্যক্তিদের থানায় নয় বরং পুলিশ লাইনের কোথাও রাখা হয়েছিল। তাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ক্রসফায়ারের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। নির্বাচনী বিধি-বিধান লংঘনে আওয়ামী লীগের কর্তাব্যক্তিরা নির্বাচন কমিশনকে থোড়াই কেয়ার করেছে। ভোটের একদিন আগে উচ্চ আদালত ও কমিশন গণগ্রেফতারের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তাও পুলিশ মানেনি। তাতে কি হয়েছে?

শাসক দলের একজন নেতা আমাকে বলেছেন, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বড় দূরত্ব ছিল। প্রথমে আওয়ামী লীগ নামেনি বলে ভোট স্থগিত করা হয়। শেষে কেন্দ্রীয় চাপে কিছুটা মিল হয়। সে জন্য পুলিশের ওপর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্ভরতা ছিল পর্বত প্রমাণ এবং প্রার্থী নিজেই বলে ফেলেছিলেন যে তিনি ভাবতেই পারেন না যে তিনি হারবেন। জনান্তিকে চাউর আছে, ওবায়দুল কাদের এই নমিনেশনের ব্যাপারে জেদী ছিলেন। তাঁকে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেছিলেন, যদি কারচুপি করেই জেতাতে হয় তাহলে আযমতউল্লার মতো পরীক্ষিত আওয়ামী লীগ নেতা নয় কেন?” একদিন হয়তো এমন সময় আসবে, সেদিন মানুষ পুলিশমুক্ত নির্বাচন চাইবে।

অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাসানউদ্দিন সরকার ব্যক্তিগত জনসমর্থন ও দলীয় জনপ্রিয়তায় অনেক এগিয়ে ছিলেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রচারে যথেষ্ট কাজ করেছেন। কিন্তু ভোট ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, পরিচালনা কমিটিতে মহানগর নেতৃবৃন্দের কম সম্পৃক্ততা (মহানগর কমিটি এখনও নেই), বহিরাগত বলে শেষ আড়াই দিন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাধ্যতামূলক অনুপস্থিতি, অর্থ সংকট এবং সাবেক মেয়র মান্নান সমর্থকদের একাংশকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারার ব্যর্থতাগুলো এখন আলোচিত হচ্ছে।

খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষকেরা এমন মতে উপনীত হতে পারেন যে, বর্তমান সরকারের অধীনে ভবিষ্যতে স্থানীয় ও জাতীয় যতো নির্বাচন হবে সে সবের মডেল হবে নিম্নরূপ ১. নির্বাচন কমিশন থাকবে নিশ্চুপ, প্রতিক্রিয়াহীন, ২. পুলিশ হবে ভোটের সর্বাত্মক পেশিশক্তি, ৩. বিরোধী দলের প্রার্থী না থাকাই ভালো এবং থাকলে তার পোলিং এজেন্টেরা কেন্দ্রে যেতে পারবেন না, ৪. শুধু নৌকার ব্যাজ লাগানো ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন। গাজীপুরে ধানের শীষ যে সোয়া লাখ ভোট পেয়েছে, তার পুনঃগণনা চাওয়া উচিত ছিল। কেননা এতো ব্যালটে ধানের শীর্ষের ছাপ্পা আছে কিনা সন্দেহ, বরং সাজানো ফলাফল বানাতে গিয়ে অনেক সময় লেগে গেছে, ৫. সাংবাদিকেরা কোন অনিয়ম দেখতে পারবেন না, লেখা বা প্রচার করা তো দূরের ব্যাপার। শুধু প্রচার হবে জোটের লম্বা লাইন এবং কৃত্রিম উৎসবের দৃশ্যবলী। গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে এমন অনুরোধ এসেছে, ‘শুধু দেখবেন, দেখাবেন না।’

এই ভোটের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ তাদের বার্তা স্পষ্ট করেছে যে, কোনও পরিস্থিতিতেই নির্বাচন বা বিরোধী দলের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র সহনশীল হবে না। জিরো টলারেন্স। একটি নির্বাচনকেও কারচুপিমুক্ত করবে না। বিএনপি’র সঙ্গে সংলাপ নাকচ করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। কিন্তু প্রশ্ন হল, তারা কি এ অবস্থা ধরে রাখতে পারবে? খুলনা, গাজীপুর, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী- সব তার চাই। কাদেরকে দেখাতে চাইছে যে উন্নয়নের প্রতি মানুষ ব্যাপকভাবে সমর্থনশীল হয়ে পড়ছে। দেখাতে চাইছে দেশে দল একটাই, নেত্রী একজনই। সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যে ও তাদের করা পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়ে গেল তাতে মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। দলটি এই বদনামও কুড়িয়েছে যে সেখানে কোনও বিরোধী দল ৩৭ ভাগ আসনে গায়ের জোরে কোন প্রার্থীই দিতে দেয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট অবশ্য এটা ভাল করে ধরেছে। ঝুলিয়ে রেখেছে ফলাফল। এ প্রসঙ্গে ২ জুন সাময়িকী ‘দেশ’ সংখ্যায় “অদ্ভূত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া” শিরোনামে নিবন্ধ একটা প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করেছে – সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভাবনা নেই, ভাবনা হলো বিরোধীশূন্য করে দেওয়া যাবে কিনা গোটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। কিন্তু শাসকদল ভুলে গেছে উন্নয়নের প্রমাণ হিসেবে বিরোধী দলকে ‘হাওয়া’ করে দেওয়াটা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। উন্নয়ন করলেই যে ভোটে জেতা যাবে এমন নয়…… যে জঙ্গলমহল নাকি তৃণমূল রাজত্বে উন্নয়নের কাতুকুতুকে খিলখিল করে হাসছিল, সেখানে বিজেপি প্রচুর আসন পেয়েছে। উন্নয়ন করলেই ক্ষমতাসীন সরকারকে চিরকাল ভোট লুঠ করে জিততে হবে, এমন উপপাদ্য রাজনীতির অংকে কেউ প্রমাণ করে যাননি। মাঠে ঘাটে রাজনীতি করেন বলে যারা দাবী করেন, আত্মশ্লাঘা অনুভব করেন, দেশটাকে তাঁদের মতো করে রাজনীতিবিদেরাই মাঠঘাট করে রেখেছেন।

কোন কোন পর্যবেক্ষক মনে করেন, সরকারের “সব কিছু আমার” পরিকল্পনা জনমনে অন্য রকম প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে-জোর করে জেতার বেশরম প্রক্রিয়া কেন? আর কতোদিন? সরকারের উচ্চপদে নিয়োগ হোক, স্থানীয় সরকারের ভোট হোক, সে ক্ষেত্রে আনুগত্যই হয়ে উঠেছে প্রধান মানদ-। কেন? নাকি জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকার বিদায় নিলেও যেন এসব পকেটে বিশ্বস্ত লোক থাকে!

অন্যদিকে বিএনপি’র মধ্যে গাজীপুর নির্বাচনোত্তর এক নতুন ভাবনা শুরু হয়েছে। বিএনপি নেতাদের বুঝ হয়েছে এভাবে নির্বাচনে গিয়ে আসলেই লাভ নেই। কিন্তু আবার ছেড়েও আসতে পারছে না। অন্তত: আরও এক মাস কম ঝামেলায় মিডিয়াতে নির্বাচনী তৎপরতার নামে কম পুলিশী বাধায় বিএনপি জেগে থাকবে। সরকারের কর্কশ দিকগুলো আরও তুলে ধরতে পারবে। এরমধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টা পরিষ্কার হবে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বাকী তিন সিটির ভোট দেখে সিদ্ধান্ত হবে জাতীয় ডিসেম্বরের জাতীয় ভোটে বিএনপি যাবে কিনা। অবশ্য এরমধ্যে বিএনপি বৃহত্তর একটা রাজনেতিক ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে। কমন ইস্যু হতে পারে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটানো। শুধু সংসদ বাতিলের আন্দোলন করলে আওয়ামী লীগ বলতে পারে যে সংসদীয় গণতন্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগ করলেও শেষ সংসদের প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট শেখ হাসিনার অধীনে ভোটে যাবে না। আবার ভোটটা অন্তর্ভুক্তিমুলক না করে বসেও থাকবে না। কেননা পুরোপুরি আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন নেই বলে আওয়ামী লীগ জোর-জবরদস্তির এক তরফা নির্বাচনে যেতে চাইছে।
  • লেখক বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইসচেয়ারম্যান ও নন্দিত সাংবাদিক নেতা। 


সোনার ডিম পাড়া প্রজন্মকে পঙ্গু করবেন না

তানজিনা ইয়াসমিন চৌধুরী


প্রতিভার বিজ্ঞানী হেলেন কেলার বলেছিলেন, ‘এমন একজন রাজা নেই, যাঁর পূর্বপুরুষে কেউ দাস ছিলেন না, আবার এমন একজনও দাস নেই, যাঁর পূর্বপুরুষ কেউ রাজা ছিলেন না।’ সভ্যতার বিধান হলো, আমার খুব নিকট অতীত ধরেই শুধু টান দিই। বাবা কী করে? আজ সেই নিকট পূর্বপুরুষের ইতিহাস আরও ভারী, আরও বেদনাবহ হয়ে যায়, যখন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কোটাব্যবস্থার অব্যবস্থাপনায় নতুন প্রজন্ম ভোগে। 

যখন ন্যায্য চাওয়াকে পাওয়ায় রূপ দেওয়া সুশাসনের বদলে শাসকের কাছে নতিস্বীকারে বাধ্য করা হয়। যখন দেশের জনগণ শাসকদের প্রধানতম বিরোধী দল হয়ে দাঁড়ায়, তাদের সব কটি মৌলিক ইস্যু তখন স্নায়ুযুদ্ধে পরিণত হয়। আমাদেরও অসহায়ত্ব, যেকোনো দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিজেদের রাস্তার মানুষ প্রমাণ করতে হয়। সরব হতে গেলেই জোটে আইনি পুলিশ আর বেআইনি লাঠিয়ালদের আগ্রাসন। আর নীরব আমরণ অনশনে গেলে জোটে ছাগল তাড়ানো আশ্বাস।

এক কোটাব্যবস্থাতেও তিন দফায় ছাগল তাড়ানো আশ্বাস এসেছিল, শেষ ছিল গত ১৪ মে। কেন নো ভ্যাট আন্দোলন একদফায় সফল হয়, কেন কোটা আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলন সফল হয় না, তার সমীকরণ খুব স্পষ্ট হয়, যখন কোটার সুবিধাভোগী বনাম ভ্যাটের সুবিধাভোগীদের মাথা গোনা যায়। উল্লেখ্য, কোটাব্যবস্থা নিয়ে প্রকাশিত তথ্যমতে, নিবন্ধিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই-আড়াই লাখ। অর্থাৎ এক হাজার মানুষের মাঝে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ দশমিক ২ জন বা ১ দশমিক ৫ জন, যা সমগ্র জনসংখ্যার শূন্য দশমিক ১২ থেকে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। মুক্তিযোদ্ধা কোটার পরিমাণ ৩০ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের বেশি কোটা রয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রে কোটাব্যবস্থার পাঁচটি দাবি নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। প্রথম দাবি হলো, সরকারি চাকরির বেলায় বর্তমান কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্যমতে, গত এক দশকে বাংলাদেশে বেকারত্ব বেড়েছে বছরে ১ দশমিক ৬ শতাংশ হারে। সেই অনুসারে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কমেছে ২ শতাংশ হারে। অর্থাৎ কর্মক্ষম মানুষ যেভাবে বাড়ছে, যে হারে কর্মসংস্থান না বেড়ে বরং কমছে। প্রতিবছর শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে প্রায় ২৭ লাখ কর্মক্ষম ব্যক্তি। এর মধ্যে চাকরি পাচ্ছেন মাত্র ৭ শতাংশ, অর্থাৎ ১ লাখ ৯০ হাজার। বাকি প্রায় ২৫ লাখ বেকার থেকে যাচ্ছেন। আইএলওর হিসাবে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি এবং বেকারত্ব বাড়ছে এমন ২০টি দেশের তালিকার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম।

আবার বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে বিভিন্ন শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) আওতাধীন ২৯টি ক্যাডারে প্রতিবছর দেড় থেকে সোয়া দুই লাখ অংশগ্রহণ করে, যাতে সফলতার হার ২ শতাংশ, বিশেষ বিসিএসে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার চাকরিপ্রার্থীর সংস্থান হয় এভাবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে উঠে এসেছিল উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি—৯ শতাংশ। অথচ কোনো ধরনের শিক্ষার সুযোগ পাননি, এমন মানুষের মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ বেকার। আমাদের মধ্যবিত্ত মনস্তত্ত্ব, শ্রেণিভেদ, তীব্র আত্মচাহিদার ঘেরাটোপ শিক্ষার্থীর সবল হাতে-পায়ে শিকল পরায়। পাশাপাশি কোনো কাজে ন্যূনতম পেশাদারিটাও গড়ে উঠতে অন্তরায়। যেমন প্রবাসী প্রত্যেকেই কোনো কাজের আউটসোর্সিংয়ের বিষয় এলে নিজের দেশেই আহ্বান জানান। কিন্তু উপযুক্ত সাড়া মেলে না। মিললেও মেইল বা ফোনের প্রত্যুত্তরের দায়বদ্ধতার বালাই নেই। যার দরুন কাজ ডেলিভারির সুনির্দিষ্ট সময়সীমা সেই কর্মী আদৌ মেটাতে পারবেন কি না, এই নিয়ে ভয়াবহ আশঙ্কায় পড়তে হয়।

যদি মুক্তমঞ্চে (ফ্রিল্যান্সার ডটকম ইত্যাদি) একই কাজের আহ্বান জানানো হয় তো পাশের দেশ ভারত থেকে থেকে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে কমপক্ষে ১০ জন সাড়া দেয়, সময়কালভেদেই। এবং কাজটার প্রাথমিক আউটলাইন দেওয়ার পর খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত জানায়। এমনকি কাজটি তার নিজ দক্ষতার বাইরে হলে অন্য কাউকে রেফার করার মতো নিঃস্বার্থ সাহায্য করতেও কোনো কালক্ষেপণ করে না। কারণ, তারা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করে। এমন পেশাদার আচরণে কর্মদাতা অবশ্যই তার ওপর নির্ভর করবেন, তার রেফার করা ব্যক্তির কাছে তার নামও উল্লেখ করবেন। একই ইন্ডাস্ট্রিতে একে অন্যের প্রয়োজনে এই কাঁধ ভাগাভাগি সুস্থ প্রতিযোগিতাকেই প্রণোদিত করবে। কষ্টকরভাবেই সত্য যে আমাদের এহেন অপেশাদার কর্মীদের নিয়ে কাজ করাতে যথেষ্ট দেশপ্রেমী অথবা নিরুপায় হতে হয়। কোনো প্রজেক্টে গেলে টাকার ভাগীদার সবাই, দায়িত্বের ভাগীদার কেউ না। অথচ এসবই কিন্তু পরবর্তী প্রকল্পের রেফারেন্স নষ্ট করে।

আমাদের সোনার ডিম পাড়া হাঁস জিইয়ে রেখে ডিম সংগ্রহের ধৈর্য নেই। অদূরদর্শিতায় প্রথমেই হাঁসটাকে জবাই করে ফেলি। এই দক্ষতা আর পেশাদারির অভাব কিন্তু কোনো কোটায় আটকে নেই। আজ কোটাব্যবস্থার সফল সংস্কার হলে উপকৃত হবেন কয়েক হাজার। কিন্তু আমাদের পেশাদারি আর দক্ষতা বৃদ্ধিতে রক্ষা পাবে বিশাল কর্মহীন জনশক্তি। কাজেই দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং কর্মসংস্থানের সামগ্রিক সংস্কার চাই।
  • তানজিনা ইয়াসমিন চৌধুরী: জাপানপ্রবাসী গবেষক।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো / জুলাই ৫,২০১৮ 

Proctor's ridiculous denial!

DU administration cannot abdicate its responsibilities


We are dumbfounded by the statement of the Dhaka University Proctor that he had not been "informed" about the multiple incidents of brutal attacks on DU students by Chhatra League members after the supporters of the quota reform movement had called a press conference to brief journalists on their next course of action. This he told reporters on Tuesday, although the attacks had started on Saturday. He said this after some students came to see him to ask why he had not done anything about these attacks.

What he has said in the way of not being aware of such serious assaults on students is just preposterous. News accompanied by photographs have been circulating on social media and even published in newspapers. Is it possible that the Proctor was in an isolated chamber where no one could reach him? Or that he was so otherwise preoccupied, with what pray tell, that he did not bother to read the papers or watch the news or check his social media account?

The Proctor is trying to deny knowledge of these horrific incidents where students have been mercilessly beaten, manhandled and even arrested. On Saturday, several students, members of the quota reform movement, were injured when Chhatra League members swooped on them as they were about to have the press conference. Since then, other members have been attacked in Shahbagh, Rajshahi University and Shaheed Minar Chattar.

Will the Proctor still continue to deny having knowledge of these heinous attacks? It is absurd that the very person responsible for the welfare of the DU students would adopt a denial mode at their hour of need.

The attacks, as evident from photographs and video footage, were brutal; female students were also mercilessly beaten and humiliated. Did this not warrant the Proctor's immediate intervention? Or at least a condemnation of the crimes and action against the attackers? Instead, he has chosen to turn the other way which is very unfortunate for it makes a mockery of the position he holds.

  • Courtesy: The Daily Star/ Editorial /Jul 05, 2018

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘রাজনৈতিক ইন্ধন’ পায়নি পুলিশ


চলতি বছরের এপ্রিলে জোরালো হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে এখনও কোনো রাজনৈতিক ইন্ধন খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্দোলনের অন্যতম নেতা মো. রাশেদ খানকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ এবং বিভিন্নভাবে ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে আন্দোলনের কোনো ধাপে রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা কারও ইন্ধন খুঁজে পায়নি তারা। মেলেনি ঢাকা কিংবা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগসাজশ। 

ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা এক মামলায় গত রোববার রাশেদ খানকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাশেদ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, রাশেদকে গ্রেফতারের পর তার মোবাইল ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ফরেনসিক পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। তবে তদন্তে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। 

দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ‘কোটা সংস্কার চাই (সব ধরনের চাকরির জন্য)’- ফেসবুকে এমন একটি গ্রুপ ছাড়াও রাশেদ আরও তিনটি ক্লোজড গ্রুপে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করেন। তাদের একটির সদস্য (মেম্বার) সংখ্যা ৩০ জন, অপরটিতে ১০ জন। ৩০ জনের ক্লোজড গ্রুপটিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা রয়েছেন। ১০ জনের গ্রুপটিতেও আছেন সিনিয়র নেতারা। ওই দুই গ্রুপের চ্যাটবক্সের তথ্য যাচাই-বাছাই করে পুলিশ কারও উস্কানি কিংবা রাজনৈতিক ইন্ধনের তথ্য পায়নি। চ্যাটে তারা কথা বলেছেন আন্দোলনের ধরন ও কৌশল নিয়ে। নাশকতা কিংবা ধ্বংসাত্মক কোনো নির্দেশনা সেখানে নেই।

তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালনায় অর্থ তোলার জন্য ১৫টি বিকাশ এবং পাঁচটি রকেট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এ বিষয়ে রিমান্ডে রাশেদ পুলিশকে জানায়, অ্যাকাউন্টগুলো খুলে গ্রুপে নম্বর দেয়া হয়েছে। এটা সবাই জানতো। যে যার মতো করে টাকা দেয়। টাকা সংগ্রহের পর সেই টাকার পরিমাণ গ্রুপে পোস্ট করা হয়। কোনো ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে যাতে না হয় সেজন্য টাকা গণনার ছবিও পোস্ট করা হতো। এখানে লুকোচুরির কিছু ছিল না।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও জানতে পারেন যে, ওই ২০টি অ্যাকাউন্টে অনেকে টাকা পাঠাতো। লেনদেনের পরিমাণ ছিল খুবই অল্প (১০০, ২০০, ৫০০ এবং সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা)। শুধু একবার তারা এক লাখ ১০ হাজার টাকা পেয়েছিল। কেউ একজন তাদের ইফতার পার্টির জন্য এ খরচ দেয়।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়। সেখানে তারেক জিয়া ঢাবি শিক্ষককে কিছু নির্দেশনা দেন।

রাশেদ গ্রেফতার এবং পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রমে এ আন্দোলনের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক কিংবা বিএনপির কোনো নেতার ইন্ধন এখনও পাওয়া যায়নি- এমনটি জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে তারা (তদন্ত কর্মকর্তা) বলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদের ফেসবুক ইনবক্সে একটি ফেসবুক পেজ থেকে কিছু ম্যাসেজ এসেছিল। পেজটি প্রায়ই সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকে। তবে রাশেদ সেই ম্যাসেজগুলোতে সাড়া দেয়নি। এছাড়া তারা মোবাইলে দেশের বাইরে থেকে কোনো ফোন কিংবা ম্যাসেজ আসেনি।

ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় রাশেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন পাঁচদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। রিমান্ডে রাশেদ জানায়, ফেসবুক লাইভে একটু আবেগপ্রবণ হয়ে এমন বক্তব্য দেন তিনি।

রিমান্ডে তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের সময় সরকারের পক্ষ থেকে যখন যোগাযোগ করা হয়েছিল তখন একজন নীতিনির্ধারক বলেছিলেন, তোমরা আন্দোলন বন্ধ কর। ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হবে। প্রজ্ঞাপন না হলে তোমরা ফের আন্দোলনে নেমো। কিন্তু দীর্ঘদিন প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় আমরা আবারও আন্দোলনের প্রস্তুতি নেই। তবে আমাদের গ্রুপে কোনো উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়া হয়নি।’

  • কার্টসিঃ জাগো নিউজ/ জুলাই ৫,২০১৮