Search

Monday, July 30, 2018

থেঁতলানো দেহ আর ‘...হাসি পুষ্পের হাসি’

গোলাম মোর্তোজা

পরাধীন দেশে শোষকের অত্যাচার-অন্যায্যতা-নিপীড়ন দেখে কবি নজরুল লিখেছিলেন, ‘দেখিয়া-শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে’।

দিন বদলেছে। এখন আমরা ‘খেপে’ যাই না। ‘মুখে যা আসে’ তা বলি না। বলতে পারি না।

আমরা নীরব, নির্বিকার। সবকিছু মেনে নিতে শিখেছি। শিখেছি শুধু নিজে ভালো থাকার কায়দা-কানুন। এই কায়দা উটপাখির বালুতে, হাতির জঙ্গলে মুখ লুকানোর কায়দা। আমি দেখলাম না মানে, কেউ আমাকে দেখল না। ‘আমি তো ভালো আছি, আমার সন্তানের তো কিছু হয়নি’- কী দরকার অন্যকে নিয়ে ভাবার বা ঝামেলায় জড়ানোর!

মিম বা রাজীবের বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধুদের আর্তচিৎকার গিজ গিজ করা এই মানুষের শহরে, কংক্রিটের দেয়ালে দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়। ভেতরে দগ্ধ-মর্মাহত মানুষের কিছু করার থাকে না।

থেঁতলানো দেহ যে রাজীব বা মিমের, কষ্ট হয় চিনতে। পিচঢালা রাজপথ আর রাজীব-মিমের রক্ত মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

কলেজ ছুটির পর বিমানবন্দর সড়কে তারা দলবেঁধে দাঁড়িয়ে ছিল, রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায়। প্রতিদিনই তারা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে বাসের অপেক্ষায়। একটি বাস আরেকটি বাসকে দানবীয় রূপে অতিক্রম করে চাপা দিয়ে দিল রাজীব, মিমদের। দুজন পৃথিবী থেকে চলে গেল। আহত হয়ে হাসপাতালে স্থান নিলো অনেকে। সহপাঠী বন্ধুদের আর্তচিৎকারে ভারি হয়ে উঠল বাতাস-আকাশ। আপনি পত্রিকায় পড়ছেন, টেলিভিশনে দেখছেন। তাও টেলিভিশনে রক্ত, থেঁতলানো ক্ষত-বিক্ষত ছবি দেখাচ্ছে না। তা আপনি সহ্য করতে পারছেন না। চোখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন টেলিভিশনের পর্দা থেকে। একটু চিন্তা করেন সহপাঠী বন্ধুদের কথা। এক মুহূর্ত আগে যে রাজীব-মিম তাদের সঙ্গে হাসিমুখে গল্প করছিল, তারা নেই...। ভাবতে পারছেন? রাজীব-মিমের বাবা-মায়ের স্থানে বসান তো নিজেকে। আপনার সন্তানের দিকে তাকিয়ে ভাবেন একবার, রক্ত-থেঁতলে যাওয়া দেহ...। পারছেন ভাবতে?

আপনি পারেন বা না পারেন, তাতে কিছু যায়-আসে না। যাদের পারার কথা তারা ঠিকই পারেন।

রাজীব-মিম এবং আরও অনেক আহতদের রক্ত বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছিল, ক্ষিপ্ত বন্ধুরা কিছু বাস ভাঙচুর করছিল। ঠিক সেই সময়ে অন্য একটি অনুষ্ঠানে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হলেন নেতা-মন্ত্রী শাহজাহান খান। তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হলেও, মূলত ড্রাইভার হেলপারদের নেতা। নিজের পরিবার-আত্মীয়রা জাবালে নূরসহ অনেক পরিবহনের মালিক। মালিক, শ্রমিকনেতা মন্ত্রীর কাছে সংবাদকর্মীরা জানতে চেয়েছিলেন ঘণ্টাখানেক আগের দুর্ঘটনার বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া। দুই জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুবিষয়ক প্রশ্নে মন্ত্রী হাসছিলেন। তার বিগলিত হাসি থামছিল না। বিদ্রোহী কবি যেমন লিখেছিলেন, ’আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি’-সেভাবেই হাসছিলেন মন্ত্রী।

মনে হচ্ছিল, কোনো সাফল্য বা আনন্দের ঘটনাবিষয়ক প্রশ্ন করা হয়েছে। হাসিমুখে মুখে মন্ত্রী বললেন, ‘যে যতটা অপরাধ করবে, সে সেইভাবে শাস্তি পাবে।’

সংবাদকর্মীরা নাছোড়বান্দার মতো প্রশ্ন করছিলেন, বলছিলেন হত্যাকাণ্ড ঘটানো কেউ আপনার মদদে শাস্তি পায় না...। পরিপূর্ণ হাসি মুখে এবার মন্ত্রী বললেন আসল কথা।

‘শোনেন, কয়েকদিন আগে ভারতের মহারাষ্ট্রে একটা গাড়ি অ্যাকসিডেন্টে ৩৩ জন মারা গেল। এখন সেখানে কী আমরা যেভাবে এগুলোকে নিয়ে কথা বলি, এগুলো কি উনারা কথা বলেন?’

মন্ত্রীর বক্তব্যের অর্থ বা তাৎপর্য বোঝার জন্যে গবেষণার প্রয়োজন হয় না। সহজ-সরলভাবেই বোঝা যায়, ৩৩ জন মারা যাওয়া নিয়ে ভারতে কথা হয় না, দুজন মারা যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশে কেন এত কথা হবে? কেন সংবাদকর্মীরা এত প্রশ্ন করবেন?

ভারতে ৩৩ জন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বাসের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন না। বাস তাদের চাপা দিয়ে হত্যা করেনি। দুর্গম পাহাড়ি পথে বাসটি খাদে পড়ে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। চালকের ভুলে হোক, দুর্গম পাহাড় আঁকাবাঁকা পথের কারণে হোক, এটা একটা দুর্ঘটনা। বাসের জন্যে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের চাপা দিয়ে থেঁতলে দেয়া দুর্ঘটনার সঙ্গে তা তুলনা করা যায় কিনা, তা বিবেচনার বিষয়। হ্যাঁ, দুর্ঘটনা সব দেশেই ঘটে, মানুষ মারাও যায়। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এমন নিয়মকানুনহীন দানবীয় ভঙ্গিতে শহরে বা হাইওয়েতে বাস-ট্রাক আর কোনো দেশে চলে? একটি নজিরও দেখানো যাবে? একজন মন্ত্রীর এমন অবস্থানের নজির আছে কোথাও?

মৃত্যু বা দুর্ঘটনার পর বাস, চালক-হেলপাররা চলে আসেন দোষারোপের কেন্দ্রে। পরিসংখ্যান বলে ৪৯% দুর্ঘটনা ঘটে চালকদের দায়িত্বহীন চালানোর কারণে। এখানেই শেষ নয়, আরও কথা আছে। যে বাসটি চালককে দেওয়া হয়েছে, সেটা ফিটনেসবিহীন চলাচলের অনুপযোগী। প্রতি ট্রিপ অনুযায়ী মালিককে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত একজন চালকই গাড়ি চালান। তার ঠিক মতো খাওয়া নেই, বিশ্রাম নেই। পুলিশকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। ফলে চালক আইন না মানার সুযোগ পেয়ে যায়। আর মালিক-শ্রমিকদের উভয় নেতা মন্ত্রী হওয়ায়, দুর্ঘটনা বা যা কিছু ঘটাক না কেন- তার শাস্তি হবে না, সেটা চালক-হেলপারদের জানা। বিশেষ একটি কারণে নয়, সামগ্রিক অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটে দুর্ঘটনা। নিয়মিত মারা যায় মানুষ। মারা গেলেন রাজীব-মিম।

তা নিয়ে হাসি মুখের নেতা-মন্ত্রীর বক্তব্য শুনেছেন-দেখেছেন, এদেশের মানুষ। রাতে ভাত খেয়েছেন, ঘুমিয়েছেন। সকালে বেরিয়ে পড়েছেন, যে যার কাজে।

আজও দেশের কোথাও না কোথাও মানুষের শরীর থেঁতলে দেবে ক্ষমতাবানদের পরিবহন। তাতে আমাদের কারও ঘুমে কোনো সমস্যা হবে না, শুধু সন্তান বা বন্ধু হারানো কয়েকজন ছাড়া।
  • কার্টসিঃ দ্য ডেইলি স্টার/ জুলাই ৩০,২০১৮ 


Curious logic of govt.'s costly borrowing

AKM Zamir Uddin

The cost of borrowing, be it for the government or businesses, is imperative: the lower the costs, the better.
But for the Bangladesh government this fact seems to be immaterial: it has been resorting to costlier options for the last several years even though the cheaper ones are knocking at its front door.

The government borrowed from high-cost national savings tools instead of going for the low-cost bank borrowing in the recently concluded fiscal year, and in doing so, have created a large financial burden for the near future.

In fiscal 2017-18, the government borrowed only Tk 5,666 crore from the banking sector by using Treasury bills and bonds against the annual target of Tk 28,203 crore.

On the other hand, the net sales of savings certificates stood at Tk 46,758 crore against the annual upward revised target of Tk 44,000 crore.

The government is yet to face any obstacle in managing its deficit financing but it would have gotten more fiscal space for the development projects if the interest payment against its domestic borrowing was lower, said Ahsan H Mansur, executive director of the Policy Research Institute of Bangladesh.

More than Tk 51,000 crore was allocated for interest payments this fiscal year in contrast to about Tk 41,000 crore last year, he said. “It is a matter of concern that the interest payment is increasing.”

The government should frame a fresh regulation for the savings instruments, one that allows revision of the yield every quarter in line with the market rate, he said. The yield of the savings tools should be revised in line with the banks' fixed deposit receipts' rate.

The difference in rate between the savings tools and banks' products hovered from 1 percentage point to 1.50 percentage points a few years ago. Now, it has widened substantially. The rate of interest on bank borrowings is from 3.10 percent to 8.09 percent, whereas on savings instruments it is 11.04 percent to 11.76 percent.

INTEREST RATES POLITICISED

Politicians and bureaucrats have mainly forced the government not to lower the interest rate on savings tools, meaning that the issue has already become 'politicised', Mansur added. AB Mirza Azizul Islam, a former caretaker government adviser, echoed the same. “The government's debt servicing costs would balloon.”

Since it is the most expensive borrowing tool for the government, sales of savings instrument should be stopped once the annual target is reached, he observed. 

  • Courtesy: The Daily Star Business /Jul 30, 2018

Saga of price hike

Price hikes have ever remained a bane for people in this country. What needs to be considered is the condition that triggers any price spiral. If it is artificially induced, it is not only an unethical business practice but also leaves its deleterious impact on the country's economy in many ways. Every year during the monsoon when rains fall incessantly and many areas go under water, the kitchen market becomes volatile with lean supply. Items like green chilli, vegetables can be dearer, no doubt. But then there is a section of traders who create an artificial crisis -greater than it really is -- in order to make the most of the situation. This is unfair. Right at this moment, the elements have conspired to produce an inclement weather where production and supply will definitely suffer a bit but this should not lead to a condition for fleecing the consumers with outrageous price hikes of all the essentials.

It is not only the prices of perishable varieties of agricultural produce that have become jittery, the staple rice has also registered increased price. Rice price is falling in the international market. Along with those, livestock items such as eggs and chicken are also becoming dearer. The list does not quite end there. Onion and spices have also marked a restive price tendency. Anyone can see that some items have nothing to do with the worsening weather. The crux of the problem has to be found there. There is no need to be an expert to identify the reason behind the price escalation. Traders have done this before and they are doing it now and they will be doing it in the future unless, of course, effective measures are taken against manipulative means resorted to for conditioning market to suit their purpose.         

Traders target occasions like the big festivals for maximising their profit. Eid-ul-Azha is not far away and the time has proved doubly propitious because of the rains. Until recently, their syndicated attempt to raise prices of essentials was not very conspicuous this time. But now they seem to have thrown caution into the wind and are after exaggerated profit. Consumer rights bodies have noticed the move and have pleaded with the government for conducting regular market monitoring and supervision. What needs to be ensured is that traders have no scope for artificial disruption of the supply line in order to hike prices.

True, in open market economy demand and supply are decisive in matters of maintaining price levels. But when the process itself is disrupted by manipulative means, it is criminal. In this country, prices shoot up vigorously if commodities in the international market go up even moderately. But if prices fall in the international market, prices do not respond accordingly; or if they do, it takes a long time to do so. The excuse is that the stock was of the earlier lots but the same excuse from the consumers is not entertained when cheaper import of earlier batches suddenly register hike. The hike is made effective immediately. Monitoring should cover imported commodities at this level too.

  • Courtesy: The Financial Express/ Editorial/ Jul 30,2018

ব্যাংকগুলোর দক্ষতা বাড়াতে হবে

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় নিয়ে বণিক বার্তায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাংক পরিচালনার ব্যয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যয়ের যে তফাত তুলে ধরা হয়েছে, তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। দেখা যাচ্ছে, যেখানে অন্যান্য দেশের ব্যাংকগুলোর আয়ের বড় অংশ যাচ্ছে নিট মুনাফা হিসেবে, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর বড় ব্যয় পরিচালন খাতে। অন্যদের তুলনায় বাংলাদেশে পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ায় ব্যাংকগুলোর ব্যবসায়িক নীতি ও মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত ব্যাংকিং। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত খাত। একের পর এক ঋণ কেলেঙ্কারি আর অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে দেশের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারকে জনগণের করের টাকা দিতে হচ্ছে। এবারের বাজেটেও এজন্য বরাদ্দ রয়েছে। এসব মিলিয়ে দেশের মানুষের আস্থা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে ব্যাংকিং খাত। এ অবস্থায় ব্যাংকিং খাতের পরিচালন ব্যয় নিয়ে যে চিত্র সামনে এসেছে, তাতে ব্যাংকগুলো ব্যবসায়িক উন্নতির দিকে কতটুকু মনোযোগী, সেটা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হতে পারে। 

এর আগেও ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। অথচ পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ব্যাংকেরই কাজের একটি অংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের মাসিক বেতন-ভাতা ব্যাংক বিশেষে মাসে ৮ থেকে ১৮ লাখ টাকা। এছাড়া শাখা প্রতিষ্ঠা ও ব্যয় নির্বাহেও বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। দেশে ব্যাংকের তুলনায় দক্ষ এমডির সংখ্যা কম। এতে স্বাভাবিকভাবেই দক্ষদের চাহিদা থাকে, ফলে বেতন বাড়ে। এর প্রভাব পড়ে ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়ের ওপর। এমডিসহ কর্মীদের বেতন নির্ধারণে ব্যাংকের সম্পদ ও মূলধন বিবেচ্য হওয়া উচিত। আর গ্রাহকসেবার জন্য ব্যাংক শাখায় প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করা ব্যতীত অতিরিক্ত সাজসজ্জার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার পেছনে খেলাপি ঋণও বড় একটি কারণ। খেলাপি ঋণের হার বেশি হওয়ায় ব্যাংককে সঞ্চিতি সংরক্ষণের জন্য পরিচালন মুনাফার বড় একটি অংশ রেখে দিতে হচ্ছে। খেলাপি ঋণ সমস্যা সমাধানে ব্যাংক ও সরকারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। 

পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার জন্য করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহারকেও দায়ী করছেন ব্যাংকাররা। তবে এবারের বাজেটে ব্যাংকিং খাতে আড়াই শতাংশীয় পয়েন্ট করপোরেট ট্যাক্স কমানো হয়েছে। এতে পরিচালন ব্যয় কমে যাওয়ার কথা। আবার প্রযুক্তিগত উন্নতির জন্য ব্যয় বাড়লে অন্য খাতে কমানোর মাধ্যমে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ায় এর প্রভাব গ্রাহকদের ওপর পড়ছে। ব্যয়কৃত অর্থ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করতে গিয়ে ব্যাংক আমানতকারীদের সুদের হার কমিয়ে ঋণ গ্রহণকারীদের সুদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে গ্রাহকদের ওপর বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক ফি চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা দেখছি, সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিলেও অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয়ের কারণে সুদের হারও কমাতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ১ জুলাই থেকে ঋণ বিতরণে সুদের হার এক অংকে নামিয়ে আনার কথা বলা হলেও অধিকাংশ ব্যাংক এটি কার্যকর করতে পারেনি।

পরিচালন ব্যয় কমাতে হলে ব্যাংকগুলোকেই এ ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে। যথাসম্ভব অপব্যয় কমাতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোকে দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনতে পারলে ব্যাংকের মুনাফা বাড়বে। ব্যাংকগুলো স্বল্প সুদে গ্রাহকদের ঋণ ও আমানতকারীদের বেশি সুদ দিতে পারবে, এতে দেশের ব্যাংকিং খাতেরই কল্যাণ হবে।

  • কার্টসিঃ বনিকবার্তা/ জুলাই ৩০,২০১৮ 

গ্রামে উচ্চশিক্ষার প্রসারতা এখনো ২ শতাংশে সীমিত

সুমন আফসার

ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উচ্চপ্রবৃদ্ধি হচ্ছে দেশে। প্রসার বাড়ছে উচ্চশিক্ষারও। তবে শহরে যেভাবে বাড়ছে, গ্রামে সেভাবে বাড়ছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য বলছে, গ্রামে উচ্চশিক্ষার প্রসারতা এখনো ২ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে সীমিত। যদিও শহরাঞ্চলে এ হার ৮ দশমিক ৬ শতাংশ।

উচ্চশিক্ষায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে আর্থিক সক্ষমতার অভাবকেই বড় করে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ধারে-কাছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকাকেও আরেকটি কারণ বলে মনে করছেন তারা। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের অপ্রতুলতায় উচ্চশিক্ষার জন্য বেসরকারি খাতের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে বেশি। কিন্তু আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় গ্রামের অনেকের পক্ষেই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।

লক্ষ্মীপুরের মান্দারি ইউনিয়নের রেদওয়ান আহমেদ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে স্নাতক সম্মানে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। থাকা-খাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চব্যয় বহন করা আর সম্ভব হয়নি। ভর্তির এক বছরের মধ্যেই শিক্ষার যতি টানতে হয় তাকে। এরপর চাষাবাদের জমি বিক্রি করে অর্থের সন্ধানে পাড়ি দিতে হয় সৌদি আরবে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, মাধ্যমিকের পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীকেই শিক্ষাগ্রহণে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করতে হয়। বেসরকারি শিক্ষা খাতের ব্যয় বহন গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের পক্ষেই সম্ভব হয় না। অভাব-অনটনে পরিবার-সন্তানের পাশে দাঁড়াতে পারে না। উল্টো পড়ালেখা বাদ দিয়ে তারা পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। এছাড়া গ্রামে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও কলেজ নেই। ধারেকাছে বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। তাই দূরত্ব ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে মাত্র ৪০টি। পক্ষান্তরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন ১০০-এর মতো। একইভাবে সারা দেশে ৪ হাজার ৪১৯টি কলেজের মধ্যে সরকারি মাত্র ৩২৮টি। বাকি ৪ হাজার ৯১টি কলেজই বেসরকারি।

তবে বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আমাদের দেশে অধিকাংশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ই শহরকেন্দ্রিক। আবার শহরের সঙ্গে গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।

উচ্চশিক্ষার মতো উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্নেও শহরের তুলনায় অনেক পিছিয়ে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। বিবিএসের পরিসংখ্যান বলছে, শহরে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করছে ১১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। যদিও গ্রামে এ হার বেশ কম, মাত্র ৬ শতাংশ। শহর ও গ্রামের শিক্ষার এ বৈষম্য আবার নারীদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি। শহুরে নারীর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের হার যেখানে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, সেখানে গ্রামের নারীদের মধ্যে এ হার মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ।

যদিও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শহর-গ্রামে পার্থক্য সেভাবে নেই। গ্রামে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্নের হার ২৩ দশমিক ১ শতাংশ। শহরে এ হার ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্নের হার শহর ও গ্রামে যথাক্রমে ৩৮ দশমিক ৩ ও ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

বিনামূল্যে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি উপবৃত্তি ও খাবার বিতরণের মতো কর্মসূচির সুবাদে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ এখন প্রায় শতভাগ। মাধ্যমিকেও বিনামূল্যে বইসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ কারণে শিক্ষার এ দুই স্তরে শহর ও গ্রামের মধ্যে তেমন একটা তফাত থাকছে না।

রাশেদা কে চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রাথমিকের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই সরকারি। বিনামূল্যে বইসহ উপবৃত্তি গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোকে সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে উৎসাহিত করছে। বিনামূল্যে বইসহ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে মাধ্যমিকেও। এসব কারণেই মূলত গ্রামের শিক্ষার্থীরাও শহরের মতো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সম্পন্ন করতে পারছে। পরে তা আর ধরে রাখা যাচ্ছে না। মাধ্যমিক-পরবর্তী শিক্ষা থেকেই মূলত শহর ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। এরও প্রধান কারণ অর্থনৈতিক।

আর্থিক সক্ষমতার অভাবে মাধ্যমিকের পর আর শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার চড়ানল গ্রামের কামাল হোসেনের। স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪ নিয়ে মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পরও কলেজে না গিয়ে পরিবারের হাল ধরতে বিদেশ পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে।

ব্যানবেইসের সর্বশেষ প্রকাশিত বাংলাদেশ এডুকেশন স্ট্যাটিস্টিকস রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ঝরে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি মাধ্যমিকে। এ ধাপে গিয়ে ঝরে পড়ছে ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর উচ্চ মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার ২২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

শিক্ষাবিদ কাজী ফারুক আহমেদ বলেন, শহরে শিক্ষার্থী উপস্থিতির বিষয়টিতে খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়, নিয়মিত না এলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। গ্রামাঞ্চলের কলেজগুলোয় শিক্ষার্থী উপস্থিতির বিষয়টি ততটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হয়ে পার্টটাইম কাজ করে। আবার কেউ কেউ পরিবারকে কৃষি কিংবা ব্যবসায় সময় দিয়ে থাকে। কলেজে না যেতে যেতে একসময় তারা অনিয়মিত হয়ে পড়ে।

  • কার্টসিঃ বনিকবার্তা/ জুলাই ৩০,২০১৮ 

সরকারি টাকায় রাজনৈতিক কর্মীরা যাচ্ছেন হজে

সরকারি টাকায় রাজনৈতিক কর্মীরা যাচ্ছেন হজে। তাদের পাশাপাশি সমাজের ধনাঢ্য, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মচারী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সরকারি টাকায় হজ করতে সৌদি আরবে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় খরচে হজ পালনের জন্য ৮৬ জনের সরকারি আদেশ (জিও) জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ শাখা। নতুন করে আরো একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দুয়েক দিনের মধ্যে এ তালিকা জারি করা হতে যারে। 

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে তালিকা কাঁটাছেঁড়ার কাজ চলছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা ধর্মমন্ত্রী এবং সচিবের নির্দেশনা অনুযায়ী কাঁটাছেঁড়ার কাজ করছেন। তবে সচিবের দেয়া তালিকা অনেক ক্ষেত্রে বাদ যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা ঘেটে দেখা গেছে, রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. জিয়াউদ্দিন খান, চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মনির হোসেন, আওয়ামী লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন ফারুক, রংপুর পীরগঞ্জের ১নং চৈত্রকোল ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. সেকেন্দার আলী, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব হোসেন হাওলাদার। 

এদিকে সাধারণ ব্যক্তিদের মধ্যে সরকারি খরচে হজ করতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন-গোপালগঞ্জ সদরের হাসমত আলী শেখ, টুঙ্গিপাড়ার মো. আয়ুব আলী শেখ ও মুন্সী মো. কামরুজ্জামান, কোটালীপাড়ার বেগম নুরুন নাহার মাহমুদা ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, রংপুরের পীরগঞ্জের মো. রফিকুল ইসলাম (বকুল), সাভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রামের উলিপুরের মো. হাবিবুর রহমান, ফরিদপুরের বোয়ালমারীর মো. ইদ্রিস মোল্লা, পটুয়াখালির দশমিনার সৈয়দ মাহবুব আলম, নরসিংদী সদরের মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান ভূঁইয়া, ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌরসভার মো. আনছার আলী, নাটোরের দুর্গাবাহারপুরের হাফেজ মো. মহসীন আলী, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ার জিয়াউর রহমান ও মো. জহিরুল ইসলাম মামুন মিয়া, পটুয়াখালীর বাউফলের মো. হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রামের পটিয়ার মফজল আহমদ (মাস্টার), সূত্রাপুরের ঋষিকেশ দাস রোডের বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. জসিম উদ্দিন, খিলগাঁও ঈদগাহ জামে মসজিদের খাদেম মো. সাইদুর রহমান, নরসিংদীর ভিরিন্দা পূর্বপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মো. খলিলুর রহমান এবং মাদারীপুরের বিসিক শিল্প নগরীর মো. আজাদ হোসেন মুন্সী। 

এ ছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অডিটর কেরামত আলী মোল্লা, ফ্ল্যাট নং- সি-৪, স্কাইভিউ গার্ডেন, ৭৭/১, শান্তিনগরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কন্ট্রোলার মির্জা সিরাজুল আলমও রাষ্ট্রীয় খরচে হজ করতে যাচ্ছেন। এদের বাইরে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় খরচে হজ করতে সৌদি আরবে যাবেন। এ তালিকায় সহকারী প্রকৌশলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উপ-প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, ব্যক্তিগত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং অফিস সহায়ক, ড্রাইভারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারী রয়েছেন। 
কার্টসিঃ মানবজমিন/ জুলাই ৩০,২০১৮ 

জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় বরিশালের মেয়র প্রার্থীর উপর আওয়ামী লীগে হামলা

বরিশালে কাউন্সিলর পদে কিছু ভোট হলেও মেয়র পদের ব্যালট দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় বাসদের মেয়র প্রার্থী ডাঃ মনিষা চক্রবর্তীর উপর হামলা করা হয়েছে। বাসদ জেলা সভাপতি জানান, রিটার্নিং অফিসারের সামনে এ ঘটনা ঘটলেও কোন একশনে তিনি যাননি ।

জেলা বাসদ সভাপতি ইমরুল হাকিম রুমন মানবজমিনকে জানান, পৌনে ১০টার দিকে তারা তাদের মেয়র প্রার্থী ডাঃ মনিষা চক্রবর্তীসহ সদর গার্লস কেন্দ্রে জান। সেখানে তারা জানতে পারেন মেয়র ব্যালট বাদে অন্য ব্যালট দেয়া হচ্ছে। প্রার্থী ভিতরে গিয়ে দেখেন মেয়র ব্যালটে আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্রকাশ্যে সিল মারছে। তিনি সাথে সাথে রিটার্নিং অফিসারকে সংবাদ দেন।

রিটার্নিং অফিসার দ্রুত চলে আসেন। এসময় তার সামনেই বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী মনিষাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। বাসদ সভাপতি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। এ ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসারকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউদ্দিন সিকদার মানবজমিনকে অভিযোগ করেন, সোয়া ৮টার মধ্যে তার কেন্দ্রগুলো থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। এখন ২৪, ২৫ ২৬ নং ওয়ার্ড পুরোপুরি আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের দখলে । এখানে স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক ভোট দিতে এসে পড়েন বিড়ম্বনায়। তাকে শুধু কাউন্সিল প্রার্থীর ব্যালট দেয়া হয়।

৪ নং ওয়ার্ডের মহাবাজ কেন্দ্রে কোন ব্যালটই দেয়া হচ্ছে না বলে ভোটারদের অভিযোগ। পুরো কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সিল মারছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রিজাইডিং অফিসার তানভির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমি উপরের মহলকে অবহিত করেছি। 

মাহামুদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে মেয়র পদে ব্যালট দেয়া বন্ধ করা নিয়ে ইসলামী আন্দোলন কর্মীদের সাথে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হাতাহাতি হয়। সংবাদ পেয়ে ছুটে যান মেয়র প্রার্থী মাওলানা ওবায়েদুর রহমান মাহাবুব। তার সাথে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে কিছু ভোটার ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ জুলাই ৩০,২০১৮ 

Sunday, July 29, 2018

ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে

হাছান আদনান

চীনের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃত ব্যাংকটি পরিচালন আয়ের মাত্র ৩০ দশমিক ৬১ শতাংশ ব্যয় করে। বাকি ৬৯ দশমিক ৩৯ শতাংশই ব্যাংকটির নিট মুনাফা। অর্থাৎ ১০০ টাকা আয় করলে প্রায় ৭০ টাকাই  ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়নার ব্যালান্সশিটে নিট মুনাফা হিসেবে যোগ হয়। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ ব্যাংক ‘ব্যাংক অব চায়না’ও পরিচালন আয়ের মাত্র ৩৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ব্যয় করে।

বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনাকারী এইচএসবিসি হোল্ডিংস ব্যয় করে পরিচালন আয়ের ৫১ দশমিক ২৭ শতাংশ। পরিচালন আয়ের ৫৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সিটি গ্রুপ। বিশ্বের অন্য বৃহৎ ব্যাংকগুলোর মধ্যে জেপি মর্গান চেজ অ্যান্ড কোং পরিচালন আয়ের ৫৮ দশমিক ৬৩, ব্যাঙ্কো সান্তান্দার ৪০ দশমিক ৫৩, এগ্রিকালচারাল ব্যাংক অব চায়না ৩৮ দশমিক ৫৯ ও ব্যাংক অব আমেরিকা ৬৪ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যয় করে।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র এর ঠিক উল্টো। দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃত ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির পরিচালন আয়ের মাত্র ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ গেছে নিট মুনাফায়। বাকি ৮৬ দশমিক ৩৩ শতাংশই পরিচালন ব্যয়, সঞ্চিতি সংরক্ষণ ও সরকারকে কর পরিশোধ বাবদ চলে গেছে।

দেশের অনেক বেসরকারি ব্যাংকের আয় অনুপাতে পরিচালন ব্যয় আরো বেশি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর ব্যয় আবার বেসরকারি ব্যাংকের চেয়েও নাজুক। একই কথা বলছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যও। দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে দেশের ব্যাংকগুলোর আয়ের ৭৮ দশমিক ৫০ শতাংশই ব্যয় হয়েছে। আয়ের মাত্র সাড়ে ২১ শতাংশ নিট মুনাফা হিসেবে বণ্টন করতে পেরেছে ব্যাংকগুলো।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, পরিচালন আয়ের তুলনায় ব্যয় বিবেচনায় সবার উপরে রয়েছে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘দ্য ব্যাংকার’ ম্যাগাজিনের তথ্য বলছে, বিশ্বের ব্যাংকিং খাতের পরিচালন আয়ের বিপরীতে গড় ব্যয় ৬৭ দশমিক ১১ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে কম চীনে ৩৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এশিয়া মহাদেশের ব্যাংকিং খাতে পরিচালন আয়ের বিপরীতে ব্যয় হয় ৫০ দশমিক ৪১ শতাংশ। মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষেত্রে এ হার ৪১ দশমিক ৩৩, লাতিন আমেরিকায় ৫৫ দশমিক ৪, পশ্চিম ইউরোপে ৫৬ দশমিক ১৪, পূর্ব ইউরোপে ৫১ দশমিক ৪১, আফ্রিকায় ৬১ দশমিক ৮৭ ও উত্তর আমেরিকায় ৬৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।

ব্যাংকারদের উচ্চবেতন-ভাতা, বোনাসসহ পরিচালন ব্যয়ের বাহুল্য, খেলাপি ঋণের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের চাপ ও উচ্চ করপোরেট ট্যাক্সের কারণেই দেশের ব্যাংকিং খাতের আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিপুল এ পরিচালন ব্যয় ও খেলাপি ঋণ দেশে ব্যাংকঋণের সুদহার কমানোরও প্রতিবন্ধক বলে মনে করছেন তারা।

আর বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের দাবি, ব্যাংকারদের বেতন আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা মিলিয়ে ব্যাংকের আয়ের বড় অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। জ্যেষ্ঠ ব্যাংকারদের পেছনে ব্যাংকের খরচ ধারণার চেয়েও বেশি।

বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার বণিক বার্তাকে বলেন, প্রতি মাসে শুধু বেতন-ভাতা বাবদ আমাদের ব্যাংকের প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়। দেশের অন্য কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে এত বেশি ব্যয় হয় না। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে পরিমাণ বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নেন, তা অপ্রত্যাশিত। পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনতে পারলে ব্যাংকের মুনাফা বাড়বে। ব্যাংক স্বল্প সুদে গ্রাহকদের ঋণ দিতে পারবে।

দেশের প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক ন্যাশনাল। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির পরিচালন আয় ছিল ১ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। বড় অংকের এ আয় করতে গিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংককে ব্যয় করতে হয়েছে ৬০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৮৭ কোটি টাকা বা ৬৪ দশমিক ২৮ শতাংশই ব্যয় হয়েছে ব্যাংকটির কর্মীদের বেতন পরিশোধে। পরিচালন মুনাফা থেকে সঞ্চিতি সংরক্ষণ (প্রভিশন) ও সরকারকে কর পরিশোধের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের নিট মুনাফা ছিল ৪৭৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে ব্যাংকটির পরিচালন আয়ের মাত্র ২৯ দশমিক ১৭ শতাংশ নিট মুনাফা। বাকি প্রায় ৭১ শতাংশই গেছে পরিচালন ব্যয়, কর পরিশোধ ও সঞ্চিতি সংরক্ষণে।

বিদায়ী বছরে বেসরকারি এবি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালন আয়ের ৯৯ শতাংশের বেশি ব্যয় হয়ে গেছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে বিপুল অংকের সঞ্চিতি সংরক্ষণের কারণে মাত্র ৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা পেয়েছে ব্যাংকটি।

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক পরিচালন আয়ের ৭৮ শতাংশই ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন-ভাতা খাতে, যা ব্যাংকটির মোট ব্যয়ের ৬২ শতাংশ।

দক্ষতা, সেবার মান, করপোরেট গভর্ন্যান্সসহ সামগ্রিক সূচকে দেশের ব্যাংকগুলো এখনো বৈশ্বিক মানের তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, আমাদের দেশের ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা পদটিকে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব বাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। এজন্য ব্যাংকের টাকায় নানা ধরনের প্রচার-প্রচারণা চলে। ব্যাংকগুলো দৈনন্দিন পরিচালনার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের অপব্যয় করে। এসব কারণে ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। ব্যয়কৃত অর্থ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করতে গিয়ে ব্যাংক আমানতকারীদের সুদহার কমিয়ে ঋণ গ্রহণকারীদের সুদ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের অযৌক্তিক ফি আরোপ করে।

ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা অনেক বেশি বলেও মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর। তার মতে, এ কারণেও ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় বাড়ছে। ব্যাংকগুলো সেবার মান না বাড়িয়ে মুনাফা বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। আমি ব্যাংকের মুনাফা বাড়িয়ে বছর শেষে বণ্টন করে দেয়ার বিরোধী। ব্যাংক মুনাফার অংশ দিয়ে মূলধন বাড়াতে পারে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে এনে গ্রাহকদের কম সুদে ঋণ দেয়া ও আমানতকারীদের বেশি সুদ দেয়ার ব্যবস্থা করার মধ্যেই দেশের ব্যাংকিং খাতের কল্যাণ নিহিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আয়ের বিপরীতে ব্যয়ের হার ছিল ৮৭ দশমিক ৯ শতাংশ। এ খাতের ব্যাংকগুলো আয়ের মাত্র ১২ শতাংশ নিট মুনাফায় নিতে পেরেছে। সরকারি বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের পরিস্থিতি আরো নাজুক। ব্যাংক দুটি ১০০ টাকা আয় করতে গিয়ে ১৩২ টাকা ৮০ পয়সা ব্যয় করেছে। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর আয় অনুযায়ী ব্যয়ের হার ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ এ খাতের ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আয় করে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা নিট মুনাফায় নিতে পেরেছে। তবে ব্যয় কমিয়ে ভালো মুনাফা করেছে দেশে কার্যরত বিদেশী ব্যাংকগুলো। এ ব্যাংকগুলো আয় অনুপাতে ব্যয় করেছে মাত্র ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে দেশের ব্যাংকগুলো আয়ের ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশই ২০১৭ সালে ব্যয় করেছে। এর আগে ২০১৬ সালে আয় অনুপাতে ব্যাংকগুলোর ব্যয় ছিল ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ।

ব্যাংকের আকার ছোট হওয়ার কারণেই পরিচালন ব্যয় বেশি বলে দাবি করেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনিস এ খান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, দেশে বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে ৪০টি। বেশির ভাগ ব্যাংকের সম্পদ ২০ হাজার কোটি টাকার নিচে। ছোট-বড় সব ব্যাংকেরই প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শাখা আছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোর সংস্থাপন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যাংকের অনুপাতে দেশে দক্ষ, যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যাংকারের সংকট আছে জানিয়ে আনিস এ খান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, একটি ব্যাংকে বেশ কয়েকজন ডিএমডি পর্যায়ের ব্যাংকার থাকতে হয়। এর বাইরে ব্যাংকের করপোরেট, রিটেইল, এসএমই, মানবসম্পদসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোয় জ্যেষ্ঠ ব্যাংকার লাগে। এ পর্যায়ের ব্যাংকারদের পেছনে ব্যয় অনেক। ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার পেছনে খেলাপি ঋণও বড় একটি কারণ।

পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার জন্য করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহারকেও দায়ী করছেন ব্যাংকাররা। খেলাপি ঋণের হার বেশি হওয়ায় এর বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণকেও আরেকটি কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে ব্যাংকগুলোকে উচ্চহারে কর পরিশোধ করতে হয়। খেলাপি ঋণের হার বেশি হওয়ায় ব্যাংককে সঞ্চিতি সংরক্ষণের জন্য পরিচালন মুনাফার বড় একটি অংশ রেখে দেয়া হচ্ছে। এ দুটি খাত বাদে ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় ততটা বেশি নয়।

তিনি বলেন, উন্নত দেশে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সেবা নিতে ব্যাংকে যেতে হয় না। ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে গ্রাহকরা যাবতীয় কাজ করেন। কিন্তু বাংলাদেশে কিছু হলেই গ্রাহকরা ব্যাংকে ছুটে যান। এ কারণে শাখা পর্যায়ে অনেক কর্মকর্তাকে কাজ করতে হয়। তবে প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যাংকগুলোর আধুনিকায়নের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে পারলে ব্যাংকঋণের সুদহার সবসময়ের জন্য ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা / জুলাই ২৯,২০১৮ 

Expediting completion of DEE project

Meticulous planning, effective organisation, competent leadership and rigorous controls are vital to the execution of any project. These become even more crucial in case of a mega project like the Dhaka Elevated Expressway (DEE) that promises to ease the chronic traffic congestion in the capital city of 18 million people. The project, launched by the prime minister in April 2011, was slated to be completed by 2014. But until now, in seven years, only 9.28 per cent of work has been finished.  In fact, the DEE project was inaugurated for a second time - by the road transport and bridges minister, on this occasion - in 2015.

Inordinate delay in completion of project is not unique to the DEE. But it exemplifies the deficiencies in planning, preparation, financing and actual construction work of a project. As land acquisition complications held up construction for two years, a revised deal was signed in December 2013 by bringing about changes to design and cost. According to the latest design, the expressway would connect Hazrat Shahjalal International Airport with Kutubkhali on Dhaka-Chittagong Highway via Banani, Mogbazar, Kamalapur and Jatrabari. Another two years elapsed before the road transport and bridges minister could inaugurate the construction for the second time in August 2015.

The mega project has an outlay of Taka 89.40 billion including a government contribution of Taka 24.13 billion as viability gap fund (VGF). If the government expenditure of Taka 48.85 billion on account of land acquisition, resettlement and relocation of utility service lines is considered, then the total cost comes to Taka 138.25 billion. In the latest twist to this saga of delays and postponements, the project was finally commissioned through issuance of work order in April this year. It also marked the commencement of 25 years of concession period for the venture. But the progress of work till June has been a miserable 9.28 per cent. Most importantly, the contractor has not yet been able to arrange a financier till now, which partly explains the reason behind this abysmally slow progress of the project over the past seven years.

Now the question arises: Where have things gone wrong? Is it because of the delay in land acquisition by the government? If so, how could the government sign the contract in the first place without ensuring ready availability of land? Or can the failure be attributed to the inability of the bridges division and the PPP authority to constantly monitor developments, exert sufficient pressure on the contractor and extend helping hand, if required, to solve problems including funding? In addition to the PPP Act, there also exists a Procurement Guidelines for PPP projects. Shouldn't the government have played a more proactive role based on laws, rules, regulations and policies?

Enough time has already been wasted. The concerned parties should now undertake concerted measures to deliver results in a time-bound manner and ensure that the expressway is ready for use by the city-dwellers within 2020. Proper coordination, supportive roles and proactive actions by both the partners in this much vaunted PPP project is urgently required to make that happen in an orderly manner.

  • Courtesy: The Financial Express/ Editorial /Jul 29, 2018

NBR detects evasion of Tk 8.7b in tax

Its two wings scan over 2,800 cases


Doulot Akter Mala 

Income tax intelligence and investigation cells across the country have uncovered tax evasion worth Tk 8.71 billion.

The two wings of the National Board of Revenue (NBR) have detected the evasion after scrutinising some 2,847 cases since their inception.

According to revenue board data, the cells have so far logged some 3,881 allegations of tax evasion from various sources and means including written, verbal and telephonic.

Of the allegations, it has detected tax evasion in 73.35 per cent cases.

Audit, intelligence and investigation wing of the income tax department recently compiled the data until March 2018 of a total of 31 investigation and intelligence cells (IIC) in each of the tax zones.

The wing recently submitted details and summary of the compiled data of evaded taxes and other findings to the chairman of NBR.

In the data, the board has found that field-level income tax zones have identified evidences of tax evasion in majority of the allegations and information collected by the cells.

The NBR formed the intelligence and investigation cells between December 2016 to January 2017 at each of its tax zones for unearthing tax evasion and dealing with suspected tax files.

The field-level tax officials have initially selected 2,216 cases for investigation. Until March last, the cells realised Tk 160 million evaded taxes by resolving some 657 cases. However, some Tk 8.55 billion evaded taxes, detected by the cells, remained unrealised.

Some field offices, including zone-four and zone-seven of Dhaka, zone-four in Chittagong, Gazipur and Khulna zones could not place any demand and recovery against detected tax evasion, according to the NBR data.

Income tax zone-four of Dhaka, however, found the highest number of allegations to be 1,039, of which it primarily found incidences of tax evasion in 1,038 allegations.

Income tax zone-14 of Dhaka detected the highest amount of tax evasion from 89 cases. The amount was Tk 6.69 billion.

Tax zone-five, Dhaka has found evasion worth Tk 842 million followed by tax zone-eight, Dhaka with Tk 270 million.

Tax zone-10, Dhaka realised Tk 34 million in evaded taxes.

Large Taxpayers Unit (LTU) realised Tk 33.8 million and Mymensingh tax zone recovered Tk 21.3 million during the period.

Officials said the income tax department has no separate directorate for investigation and intelligence.

Value Added Tax (VAT) and Customs wings have two separate directorates for conducting investigation and intelligence activities.

Considering the necessity, all of the tax zones have formed a cell in their respective tax zones following an instruction from the NBR.

Earlier, income tax-related investigations were only conducted by the Central Intelligence Cell (CIC), along with customs and VAT-related cases.

  • Courtesy: The Financial Express /Jul 29, 2018