Search

Thursday, September 13, 2018

খেলাপি ঋণে শীর্ষ ১০ - কীর্তিমান দুই সহোদর


অর্থমন্ত্রী গতকাল সংসদে যে ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন, তার শীর্ষ দশের বেশির ভাগই পুরনো। নতুন করে ঢুকেছে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী দুই প্রতিষ্ঠান রিমেক্স ফুটওয়্যার ও ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড। এর কর্ণধার দুই সহোদর এমএ আজিজ ও এমএ কাদের। ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে তারা বের করে নিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এ দুই সহদর এখন জনতা ব্যাংকেরও শীর্ষ ঋণখেলাপি।

রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান এমএ আজিজ। চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ারও চেয়ারম্যান তিনি। কয়েক বছর ধরে দেশের ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র আসছে তার প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারেই। সংসদে প্রকাশ করা শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এমএ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার রয়েছে তৃতীয় স্থানে। শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড রয়েছে দশম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এমএ আজিজের বড় ভাই এমএ কাদের।

চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় দুই সহোদরকে উদার হাতে ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরেই জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন এমএ কাদের ও এমএ আজিজ। এর মধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই সহোদরকে দেয়া জনতা ব্যাংকের এ ঋণের বড় অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই ভাই-ই নাম লিখিয়েছেন শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির তালিকায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) ডাটাবেজে রক্ষিত তথ্যের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদে গতকাল শীর্ষ ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংসদ টেবিলে এ তালিকা তুলে ধরেন তিনি। তালিকাটি করা হয়েছে ২০১৮ সালের জুনভিত্তিক পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে। তবে শীর্ষ খেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কী পরিমাণ ঋণ রয়েছে, সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের সবক’টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের তালিকাও সংসদে তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এবারো প্রথম স্থানে আছে চট্টগ্রামের মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের নাম। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই সংসদে প্রকাশ করা শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির তালিকায়ও শীর্ষে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। দ্বিতীয় শীর্ষ ঋণখেলাপি হিসেবে নাম এসেছে বিদ্যুত্ খাতের প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস লিমিটেডের। জনতা ব্যাংক থেকে ১ হাজার ২৬ কোটি টাকা বের করে নিয়ে তৃতীয় শীর্ষ ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়েছে এমএ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড।

সংসদে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে দেশে কার্যরত ৫৭টি তফসিলি ব্যাংক  ও ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮। এসব খেলাপির কাছে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

ঋণখেলাপিদের তালিকায় চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম স্থানে আছে যথাক্রমে ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, রুবাইয়া ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লি., রাইজিং স্টিল লিমিটেড, ঢাকা ট্রেডিং হাউজ, বেনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও আনোয়ারা স্পিনিং মিলস। দশম স্থানটি ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টসের।

তালিকায় শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির মধ্যে এর পরই আছে যথাক্রমে ইয়াসির এন্টারপ্রাইজ, চৌধুরী নিটওয়্যারস, সিদ্দিক ট্রেডার্স, রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার, আলফা কম্পোজিট টাওয়েলস, হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, মুন্নু ফেব্রিকস, ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং লিমিটেড, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিকস ও শাহরিজ কম্পোজিট টাওয়েল লিমিটেড।

শীর্ষ ঋণখেলাপিদের তালিকায় পরের ২০টি প্রতিষ্ঠান হলো— ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, সুরুজ মিয়া জুট স্পিনিং মিলস, প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, সালেহ কার্পেট মিলস লিমিটেড, পদ্মা পলি কটন নিট ফেব্রিকস, এসকে স্টিল, হেল্পলাইন রিসোর্সেস লিমিটেড, এইচ স্টিল রি-রোলিং মিলস, অটবি লিমিটেড, বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড, তাইপে বাংলা ফেব্রিকস, ঢাকা নর্থ পাওয়ার ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেড, টি অ্যান্ড ব্রাদার নিট কম্পোজিট, তানিয়া এন্টারপ্রাইজ ইউনিট-২, সিক্স সিজনস অ্যাপার্টমেন্ট লিমিটেড, ইসলাম ট্রেডিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, রহমান স্পিনিং মিলস লিমিটেড, জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপার্স লিমিটেড, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) লিমিটেড ও সিমেট সিটি জেনারেল ট্রেডিং এলএলসি।

অর্থমন্ত্রীর প্রকাশ করা শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ৪১তম স্থানে আছে এমকে শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড স্টিলস লিমিটেড। ৬০তম শীর্ষ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানটি ওয়ান ডেনিম মিলস লিমিটেড। ঋণখেলাপির তালিকায় ৪২ থেকে ৫৯তম স্থানে আছে যথাক্রমে কটন করপোরেশন, ন্যাশনাল স্টিল, এমবিএ গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড, সোনালী জুট মিলস লিমিটেড, এক্সপার টেক লিমিটেড, ওয়াল-মার্ট ফ্যাশন লিমিটেড, সাদ মুসা ফেব্রিকস লিমিটেড, চিটাগং ইস্পাত, এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, হিমালয়া পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড, আমাদের বাড়ি লিমিটেড, এমদাদুল হক ভুইঞা, চৌধুরী টাওয়েল ইন্ডা. (প্রা.) লিমিটেড, চৌধুরী লেদার অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড, আর্থ এগ্রো ফার্মস লিমিটেড, নর্দান পাওয়ার সলিউশন লিমিটেড, ম্যাক শিপ বিল্ডার্স ও দি আরাব কন্ট্রাক্টরস বাংলাদেশ লিমিটেড।

শীর্ষ ঋণখেলাপির এ তালিকায় ৬১ থেকে ৮০তম স্থানে আছে যথাক্রমে লিবার্টি ফ্যাশন ওয়্যারস লিমিটেড, বিশ্বাস গার্মেন্টস লিমিটেড, মাস্টার্ড ট্রেডিং, হিন্দোল ওয়ালী টেক্সটাইল লিমিটেড, সগির অ্যান্ড ব্রাদার্স, গ্লোব মেটাল কমপ্লেক্স লিমিটেড, অরনেট সার্ভিসেস লিমিটেড, জালাল অ্যান্ড সন্স, করোল্লা করপোরেশন বিডি লিমিটেড, সাইদ ফুডস লিমিটেড, এপেক্স নিট কম্পোজিট লিমিটেড, এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, আলী পেপার মিলস লিমিটেড, ড্রেজ বাংলা প্রাইভেট লিমিটেড, গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডায়িং লিমিটেড, আরজান কার্পেট অ্যান্ড জুট উইভিং মিলস লিমিটেড, ইন্ট্রাকো সিএনজি লিমিটেড, ফরচুন স্টিল, ফাইবার শাইন লিমিটেড ও দোয়েল অ্যাপারেলস লিমিটেড।

অর্থমন্ত্রীর প্রকাশ করা শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির তালিকায় শেষ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হলো— জাহিদ এন্টারপ্রাইজ, মজিবর রহমান খান, কেয়ার স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, জয়নব ট্রেডিং কোম্পানি, তাবাসসুম এন্টারপ্রাইজ, এপেক্স উইভিংস অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস, রিসোর্স ডেভেলপমেন্টে ফাউন্ডেশন, দ্য ওয়েল টেক্স, ডেল্টা সিস্টেমস, টেলিবার্তা, এমআর সোয়েটার কম্পোজিট, রেফকো ফার্মাসিউটিক্যালস, মাবিয়া শিপ ব্রেকার্স, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, নর্দান ডিস্টিলারিজ, নিউ রাখি টেক্সটাইলস, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, শফিক স্টিল, জারজিস কম্পোজিট নিট ইন্ডাস্ট্রিজ ও হিলফুল ফুজুল সমাজকল্যাণ সংস্থা।

অর্থমন্ত্রী এদিন খেলাপি ঋণের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও প্রকাশ করেন। তালিকা অনুযায়ী সংখ্যাটি ৮৮। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। দেশের সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে ৯ হাজার ২৮৪ কোটি, রূপালী ব্যাংকে ৪ হাজার ৯০১ কোটি, বেসিক ব্যাংকে ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি, কৃষি ব্যাংকে ২ হাজার ১৭৮ কোটি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩২ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ৬৯৬ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৭৬ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বেসরকারি অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে সাউথইস্ট ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৯৯৮ কোটি, প্রাইম ব্যাংকে ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে ৩ হাজার ৫২০ কোটি, এবি ব্যাংকে ২ হাজার ৯৪৭ কোটি, দ্য সিটি ব্যাংকে ২ হাজার ৬৭১ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকে ২ হাজার ৭২ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে (ইউসিবি) ২ হাজার ৫১৮ কোটি, পূবালী ব্যাংকে ২ হাজার ১১৬ কোটি, উত্তরা ব্যাংকে ১ হাজার ৪৫৭ কোটি, ইস্টার্ন ব্যাংকে ১ হাজার ৬২৬ কোটি, ঢাকা ব্যাংকে ২ হাজার ৫৩১ কোটি. আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ২ হাজার ১৮০ কোটি ও সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকে ২ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। এছাড়া বেসরকারি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে খেলাপি ঋণ রয়েছে ১ হাজার ১৫৭ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ১ হাজার ১৯২ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ১ হাজার ৮২ কোটি, ওয়ান ব্যাংকে ১ হাজার ৩২৬ কোটি, এক্সিম ব্যাংকে ১ হাজার ৬৮৩ কোটি, ব্যাংক এশিয়ায় ১ হাজার ৬৭৩ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে ১ হাজার ৪৪৩ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংকে ১ হাজার ৭৬০ কোটি, ফারমার্স ব্যাংকে ১ হাজার ৩৯৪ কোটি ও ট্রাস্ট ব্যাংকে ১ হাজার ৩১ কোটি টাকা। 

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা / সেপ্টেম্বর ১৩,২০১৮ 

কোন কারণে জেলের ভেতর এত নাটক? - ড. কামাল


নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা. গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, জেলখানায় আদালত কাঙ্ক্ষিত নয়। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আইনজীবী সমিতি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।  ড. কামাল হোসেন বলেন, কোন কারণে জেলের ভেতর এত নাটক করা হচ্ছে? বেসামরিক সময়ের তথাকথিত জেলখানায় আদালত কাঙ্ক্ষিত নয়। তিনি বলেন, সামরিক সময়ে কর্নেল তাহেরের বিচারালয় কারাগারের ভেতর স্থাপনও মানুষ ভালো চোখে দেখেনি। 

ড. কামাল বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে যারা অপমানিত করছে তারা অসভ্য। তাদের বিচার একদিন হবেই। অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য রাখেন।  দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসানকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ বছরের কারাদন্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দায়ের করা আরও এক মামলা তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন। সেই মামলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর থেকে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালতে এ মামলার কার্যক্রম চলছে।

ড. কামাল বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীকেতো নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া যায়না। ইতিপূর্বে কি পটভূমিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেছিল আপনারা সবাই জানেন। সুষ্ঠু নির্বাচনে যাতে প্রশাসন পক্ষপাতিত্ব না করে সেজন্যই এসেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারকেতো নিরপেক্ষ থাকতে হবে। 

ড. কামাল বলেন, জেলখানায় আদালত স্ববিরোধী। জেলখানায় জেলখানা হবে। আদালতে আদালত হবে। জেলখানা আদালত হতে পারেনা। এসব অস্বাভাবিক কাজ কেন করা হচ্ছে। এটা কেন প্রয়োজন হলো তা বুঝতে হবে। তিনি বলেন, জেলখানায় আদালত নিয়ে কত নাটকীয়তা কেন? ড. কামাল বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ। অসুস্থ ব্যক্তিকেতো হাসপাতালে নিতে হবে। চিকিৎসা দিতে হবে। এটা সংবিধানে তার স্বীকৃত অধিকার। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮ 

Protesters demonstrate for gazette

QUOTA REFORM MOVEMENT









Bangladesh General Students’ Rights Protection Council brings out a procession on Dhaka University campus on Wednesday in protest against the issuance of 40th BCS recruitment circular without reforming quota system. — Sony Ramany

Students and jobseekers staged protests at the Dhaka University on Wednesday for immediate publication of a gazette notification reforming quota system in government jobs as the government on Tuesday issued circular for the 40th Bangladesh Civil Service recruitment with existing quota system.

Hundreds of students bought out a procession from science library that paraded all important streets on the campus, including Arts Faculty, Business Faculty, Central Library, Madhu’s Canteen and Raju Sculpture.

Bangladesh General Students Rights Protection Council central leaders Rashed Khan, Faruk Hasan among others joined the first procession after their release on bail.

Addressing the rally, council joint convener leader Nurul Haq Nur said that five months had elapsed since prime minister Sheikh Hasina announced the abolition of quota system in parliament but the government was yet to take any visible step causing frustration among students.

He said that they never wanted the abolition of quota system in government jobs, but demanded its reform.

Nurul urged the government to publish the gazette notification as soon as possible, withdraw ‘false’ cases against the students and ensure exemplary punishment for attackers on protesters.

Bangladesh Public Service Commission published the circular for the 40th BCS on Tuesday keeping previous quota system.

A secretary-level committee for a review of the quota system in public service recruitment was yet to finalise its report although the protesters’ deadline for publication of gazette notification reforming the quota expired on August 31.

Earlier on August 12, the protesters threatened to launch a tougher movement paralysing the country from September if their detained fellows were not released and a gazette notification reforming the quota system was not published by August 31.

Students and jobseekers took to the streets on February 17 and continued protests for reducing the quota in government jobs to 10 per cent from the existing 56 per cent, including 30 per cent for freedom fighters’ children and their grandchildren, 10 per cent for women and 10 per cent for districts, 5 per cent for ethnic minorities and 1 per cent for physically challenged people. 

The government on July 2 formed the seven-member committee to reform or abolish the quota system. 

The committee that includes secretaries from the Prime Minister’s Office, public administration ministry, finance division, legislative division, Liberation War affairs ministry and Public Service Commission was initially given 15 working days to submit the report. The timeframe was later extended to 90 working days.

Amid countrywide protests for reform of the quota system, prime minister Sheikh Hasina on April 11 told parliament that there would be no quota in government jobs. 

  • Courtesy: New Age/ Sep 13, 2018

Unlicensed hospitals a menace to public health

Editorial 

In response to a public litigation, the High Court (HC) ruled on September 11 that authorities must close down 14 private hospitals and clinics in the city's Mohammadpur residential area. These hospitals and clinics have been operating with neither valid documents nor requisite facilities or medical personnel. Indeed, from what has been reported in the press, we understand that these establishments were frequently visited by doctors on government payroll and the clientele were procured by middlemen.

That such medical establishments were allowed to operate in the heart of the capital city is alarming, to say the least. We are looking at all sorts of clinics and hospitals here, offering services from general medicine to diagnostic services; mental health to trauma care. We would like to know why the Directorate of Heath Services has to be directed by the HC to take action against the operation of these illegal medial establishments, many of which are run by public servants.

We would probably never have known of these illegal establishments had it not been reported in media. But now that the report has been followed up by a HC order, we expect authorities to come back with concrete actions within four weeks as to what steps they have taken to stop these clinics and diagnostic centres from operating. The quality of public health in our country is already highly suspect and the last thing we need is for illegal medical centres to crop up and operate with impunity in our urban centres where the chances of medical malpractice are much higher, putting public health in jeopardy.

  • Courtesy: The Daily Star/Sep 13, 2018

Arrest 'trade' goes on

Errant policemen make money from arbitrary detention, release









Relatives of people arrested have a last glimpse of their loved ones and exchange a few words through the vent of a prison van just before it left Sylhet Judge Court for jail yesterday. They were picked up by law enforcers during the ongoing drive against militants. Photo: Dwoha Chowdhury

Muhammad Jahidul Islam is an activist of Bangladesh Chhatra League. His entire family strongly supports the Awami League.

Yet, in the case filed against Jahid, Sub-Inspector Anwarul Islam of Khoksa Police Station mentioned that the accused was held on suspicion that he and some others had met to plan subversive activities to topple the government.

Jahid, who appeared in this year's HSC examinations, was returning to his home in Satpakhia village of Khoksa upazila, Kushtia, around 10:30pm on Friday when a team of police detained him.  

Jahid was never accused in any case before this, family members said.

Jahid's father Shafiullah alleged that he gave Tk 10,000 to SI Anwar as the official assured him of pressing a petty charge against his son.

The SI had threatened to file a case against Jahid under the Special Powers Act if he was not paid. In such a case, Jahid would not get bail even in a month, he had warned.

Jahid is another victim of the arrest trade police allegedly indulged in after launching a special crackdown against militants and criminals across the country on Friday.

The weeklong operation came in the wake of a string of targeted killings, especially the murder of SP Babul Akter's wife in Chittagong on June 5. 

As part of the drive, police arrested 11,684 people, including 145 suspected militants, till yesterday morning. As many as 3,155 people, including 26 suspected militants, were nabbed in 24 hours till yesterday morning.

There are allegations that police are releasing many of the arrestees taking money from families.

“We always vote for Awami League. How come my son was involved in a plot to topple the government?” said Jahid's father while talking to our correspondent on the court premises in Kushtia.

Khoksa unit AL General Secretary Torikul Islam too says that Jahid's family members are diehard AL supporters.

Jahid was released on bail granted by the chief judicial magistrate yesterday.

“I have been harassed socially with this incident,” said Saifullah, who also spent additional Tk 15,000 for other expenditures related to the case.

SI Anwarul denied receiving any money. “If I had taken the money, Jahidul would have been released already,” he added.

Contacted, eminent jurist Shahdeen Malik said he is not surprised at such malpractices relating to arrests.

A rising number of allegations against law enforcers of taking bribe and being involved in extortion were already anticipated, he said.

MONEY BUYS FREEDOM

Nurunnabi, 55, is a utensil shop owner of Bazalia Bazar in Satkania.

He was asked by some cops to go to Satkania Police Station with them to have some talks while returning home after closing the shop around 4:00pm on Monday.

At the police station, he was confined to the lock-up, and his family was asked to come over.

As the family members went to the police station, some officials said Nurunnabi is a Jamaat man and he would be made accused in several cases if Tk 50 thousand is not paid.

“The family members paid the cops accordingly and he was released from police custody,” a neighbour of Nurunnabi told The Daily Star, wishing anonymity since he was involved in the whole process.

Contacted over the phone, Nurunnabi said he does not want to go through further harassment by describing what police did to him.

Maulana Sahabuddin, a madrasa teacher in Purangar union under Satkania upazila in Chittagong, was released from custody around two hours after his detention. His family had to pay a hefty amount of money to cops.

Seven policemen picked him up from a tea stall at Purangar Bazar around 10:00pm on Sunday.

Sahabuddin declined to give further details and disclose the amount he gave to police fearing trouble again.

Mahmudul Huq, 30, a hardware store owner at Bazalia Bazar, however, is not fortunate enough to get released although he provided a good amount to police. He, however, was implicated in a simple case which helped him get bail from court.

He said three policemen asked him on Sunday afternoon to go with them to be a witness in a case. As soon as they reached the police station, he was detained in a lock-up and his family was informed.

“When my elder brother came to the police station they said to him that I am a Jamaat man,” Mahmudul said, adding that he was never involved in politics and has no case against him.

Sub-Inspector Najmul Hossain of Satkania Police Station admitted that there was no case against Mahmudul. He was arrested on suspicion of taking drugs and creating chaos.

Asked about the amount given to police, Mahmudul said, he does not know as his brother paid it. “I am a small businessman. I want no trouble with police,” he added.

Farid Uddin Khandakar, officer-in-charge of Satkania Police Station, however, denied all the allegations, saying that they only arrest the criminals and arrestees were sent to court.

“None was released in exchange for money. This allegation is completely false,” he said. 

PRO-BNP MEN ARRESTED

Monirul Islam, 20, a diploma student at Agriculture Training Institute in Ishwardi, Pabna, was picked up on Monday and made accused in a case filed earlier against unnamed persons for stealing an electric transformer in his locality.

Monirul, who is from Debottar village in Atghoria upazila, is the information affairs secretary of Pabna district Jatiyatabadi Chhatra Dal, a pro-BNP student body, according to his elder brother Md Mahabub Alam.

Mahbub claimed his brother is innocent.

Faruk Hossain, officer-in-charge of Atghoria Police Station, said Monirul was arrested as there are specific allegations against him.

Cops of Kawkhali Police Station in Pirojpur arrested Jakir Hossain Jewel, 40, in front of a mosque in his village Keundiya around 8:30pm on Monday when he went there to offer Tarabih prayers.

Jakir, son of late Abdul Mannan, is the organising secretary of ward-6 unit BNP in Kawkhali union.

Although Jakir was arrested at 8:30om on Monday, police in the case mentioned that it was 2:00am yesterday, said his cousin Nizamuddin.

Jewel was shown arrested in a case relating to a ballot paper snatching incident in the first phase of UP polls held on March 22. There are around 200 unnamed accused in the case.

ASI MALEK TRANSFERRED

Meanwhile, ASI Malek of Naldanga Police Station was transferred to Range Reserve Force (RRI), a day after he demanded Tk 20,000 from a union parishad chairman for the release of Milon Hossain, a shop owner in Natore's Naldanga upazila.

Police picked up Milon on Saturday and produced before a court after 48 hours.

Natore SP Shyamal Kumar Mukherjee said Malek was transferred following the allegation and step would be taken if the allegation against him is proved in investigation.

[Shariful Islam wrote the story based on reports from Amanur Aman of Kushtia, Minhaj Uddin of Chittagong, Ahmed Humayun Kabir Tapu of Pabna and Habibur Rahman of Pirojpur]  

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 13, 2018

Cases too puzzling

Man lives in Oman, accused of joining 'secret meeting' in Comilla; questions over another case against a schoolteacher


Implicated in three “false cases” and tired of police harassment, Ahad Khalifa was desperately looking for a break.

So he shut his tailoring shop at Muradnagar Bazar in Comilla and left the country for Oman four and a half years ago. 

The last time he came home was on October 25 last year with the body of his father-in-law, who died in Oman. Ahad, 36, left the country again on February 10 this year, according to his travel documents.

But his living in a faraway land, some 3,500km from home, could not save him from being implicated in another case.

On September 8, Muradnagar police named him in a case on charges of planning to carry out subversive activities.

According to the case statement, Ahad is among 33 identified and 15-20 unknown accused who were holding a secret meeting at the Muradnagar Madrasapara house of Alamgir Hossain, convener of the upazila unit Chhatra Dal on that day. There, they were planning to vandalise key installations and vehicles on the highway. 

They all are members and supporters of BNP and Jamaat and their front organisations.

The accused were also planning subversive activities to cause irreparable loss to the state, the case statement claims.

Sub-Inspector Abdul Gofran, who filed the case, wrote in the statement that based on a tip-off they raided Alamgir's house at Pirkashimpur around 12:30am on September 8.

Police arrested accused Alamgir, ANM Ilias, Nayeb-e Amir (deputy chief) of Muradnagar upazila Jamaat, and Mohammad Alam, an activist of Sramik Dal, a pro-BNP workers' organisation, from the spot. The rest fled the scene, it added.

The names of the other accused, including Ahad, came up during interrogation, the case statement reads.

“I was leading a happy life in Bangladesh. I had a tailoring shop. Still I had to leave the country to get respite from being implicated in false cases,” Ahad told The Daily Star yesterday by phone from Oman.

Ahad, son of late Kenu Mia of Maddhapara in Muradnagar, said his “only fault” was that he was a neighbour of BNP leader and former MP Shah Mofazzel Hossain Kaikobad.

“I am outside the country, then how can I commit any crime back home and be accused in a case?” asked Ahad, who has three sons aged 12, 6 and 4.

He works at a sports item shop at Barka, 60km off Oman's capital Muscat, he said.

During his visit to the country last year, he secured bail in the three cases filed against him previously.

Ironically, on October 25 last year, the day they buried his father-in-law, police filed another case against him, although he had nothing to do with the incident, he claimed.

Details of this case was not immediately available.

“To my knowledge, I never harmed anyone or committed any crime for which I may be accused in any case. But sadly, I am accused in five cases, including the latest one,” he said.

The travel documents that he sent to The Daily Star show he left the country on February 10. 

This newspaper could not verify the authenticity of the documents and cannot confirm if he entered the country again after that.

But Shahid Sawdagor, 60, who has a shop at Muradnagar Bazar, said he last saw Ahad in the area seven-eight months ago.

Ahad's neighbour Haji Almas, 55, confirmed this to The Daily Star. 

Taslima Akter Munni, Ahad's wife, said her husband was the lone breadwinner of the family. “I have never seen him getting involved in political activities.”

Asked to explain how Ahad could possibly be present in the alleged secret meeting, Monzur Alam, officer-in-charge of Muradnagar Police Station, said, “Without investigation, I can't confirm that an Oman expatriate has been made accused in the case.” 

He said they already arrested three top accused and filed the case based on their statements.

But as election nears, such inexplicable cases against BNP leaders, activists and even supporters are rising.

Some 12,000 BNP men have been arrested this month alone while about 1 lakh more have been made accused in various cases across the country, BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir told reporters at a human chain before the Jatiya Press Club on Monday.

The case of Khokon Master, 50, is no less quizzical. He is an assistant teacher at Tanki Habib Sharker High School in Comilla.

On September 8, he was at his school from 9:30am to 4:00pm, said headmaster of the school Zainal Abedin.

And yet he was made an accused in a case filed with Bangara Bazar Police Station for “holding a secret meeting” at 10:05am at the yard of the house of Sultan Ahmed, a local BNP leader, the same day.

In the case statement, SI Sujon Shyam claimed they raided the house during the meeting and arrested Sultan, Khokon Master and one Shahid Mia from the house.  

Four identified and 25-30 unknown BNP-Jamaat and their front organisation leaders and activists ran away, the statement reads.

Last night, the police official hung up the phone when The Daily Star asked him how he was certain about their political identity when he did not even know their names.

The case statement also claims that the arrestees admitted during interrogation that they were planning to vandalise vehicles, create panic among people and carry out subversive activities centring a human chain planned for September 10 and a hunger strike programme on September 12 in protest against Khaleda Zia's trial inside the old Dhaka Central Jail.

“Mosharraf Hossain alias Khokon Master is an assistant teacher at our school and on September 8 he was present at the school from 9:30am to 4:00pm,” Zainal Abedin, the headteacher, told The Daily Star yesterday.

He also wrote a letter for submission before the court, certifying that the teacher was indeed at the school on the day. The Daily Star has a copy of the letter.    

Shahinur Akter, wife of Khokon Master, said her husband was arrested from Tonki Bazar, 12km from Pirkashimpur from where the police claimed to have arrested him, after Maghrib prayers (around 6:15pm) on September 8. 

Khokon's brother Anwar Hossain Sumon claimed that the case was totally false as no meeting took place at Pirkashimpur that day. He also said his brother was implicated in the case as they were supporters of ex-BNP MP Shah Mofazzel Hossain Kaikobad.  

Contacted, OC of the Bangara Bazar Police Station Abdullah Al Mamun said, “We filed the case after being confirmed about their involvement.”

Cases like these raise serious questions about the authenticity of the charges.  

Contacted last night, BNP leader Amir Khosru Mahmud Chowdhury said the government was filing such cases against BNP men to keep the party out of the election race.

“The government wants to drive the BNP leaders and activists out of the scene even before the election schedule is announced,” he alleged.

Earlier on September 3, 82-year-old Luthful Haque, who cannot even move without the help of others, was made an accused in a case filed by the Wari police in the capital, as reported in this paper on Tuesday under the headline “A case, many questions”. 

According to the case statement, police found him among a group of “miscreants from the BNP and its front organisations who gathered in Wari on September 3 as part of a plan to overthrow the government”.

In the same case, BNP's ward-level leader Sabbir Ahmed Arif was made an accused although he was not in the country when the incident allegedly took place.

His visa, immigration and hotel documents, boarding passes of his flights to and from Kolkata show that he was in India from September 1 to 4. The Daily Star obtained copies of these papers.

Ninety-six identified people were made accused in the case although locals claimed that no such incident took place on that day.

Courtesy: The Daily Star Sep 13, 2018

সৌদি ভিশন যখন আমাদের ভীষণ

মুনির হাসান

সৌদি আরবের মক্কায় এক যুবকের সঙ্গে দেখা হলো। তিনি ফেনীর মানুষ। আট বছর আগে মক্কা গিয়ে একটা চার তারকা হোটেলে চাকরি শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী এক সন্তান নিয়ে দেশের বাড়িতে থাকেন। তিনি নিয়মিত দেশে টাকা পাঠান, তাঁর পাঠানো টাকায় বোনের বিয়ে হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, ‘এ দেশে আর থাকতে পারব বলে মনে হচ্ছে না।’ কারণ, ‘আকামা’র (সৌদি আরবে বিদেশিদের কাজ করার অনুমতিপত্র) চার্জ দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে। আগে ছিল বছরে পাঁচ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা), আগামী বছর থেকে সেটি হয়ে যাচ্ছে ১২ হাজার রিয়াল (প্রায় পৌনে তিন লাখ টাকা)! তা ছাড়া, প্রতি মাসে ২০০ রিয়াল করে অতিরিক্ত ‘স্যালারি ট্যাক্স’ দিতে হবে। তাঁর বর্তমান বেতন মাসে ১ হাজার ৫০০ রিয়াল। এ ছাড়া হোটেলের বোর্ডারদের বকশিশ, টিপস পান। তিনি বললেন, এখন বেতনও নিয়মিত পান না। এরপর আমার কাছে জানতে চাইলেন, ‘এই বেতনে বছরে ১২ হাজার রিয়াল যদি দিয়ে দিতে হয়, তাহলে আমি নিজে খাব কী, আর বাড়িতে পাঠাব কী?’

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মদিনায় ইলেকট্রনিকসের সামগ্রী ও গিফট আইটেমের ব্যবসা করছেন জামশেদ হোসেন (ছদ্মনাম)। স্ত্রী, তিন সন্তান নিয়ে তাঁর চমৎকার জীবন দেখে এসেছিলাম তিন বছর আগে। মদিনায় মসজিদে নববির কাছেই তাঁর দুটি দোকান। কিন্তু এরই মধ্যে স্ত্রী-সন্তানদের পাঠিয়ে দিয়েছেন দেশে। কারণ জানালেন, সৌদি সরকারের পরিবার কর (ফ্যামিলি ট্যাক্স) অনেক বেড়ে গেছে। পরিবারের সদস্যপিছু কর এখন দুই হাজার রিয়াল। চার সদস্যের জন্য তাঁকে বছরে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত আট হাজার রিয়াল। জীবনযাত্রার খরচও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। আকামার ফিও বেড়েছে। এ ছাড়া ১১ সেপ্টেম্বর থেকে (১ মহররম, আরবি নতুন বছরের শুরু) তাঁর দোকানের মালিকানার ৭০ শতাংশ সৌদি নাগরিককে দিতে হবে। নইলে আর ব্যবসা করতে পারবেন না। বর্তমানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে একজন সৌদি কর্মী রাখার বিধান থাকলেও সেটি কেউ অনুসরণ করে না। প্রবাসীরা নিজেদের ব্যবসা বড় করার সঙ্গে সঙ্গে দেশ থেকে ভাই-আত্মীয়দের নিয়ে যেতেন। কাগজে-কলমে প্রতিষ্ঠানটি থাকত একজন সৌদির, যাকে একটি ফি দিলেই চলত।

মদিনায় মসজিদে নববি এলাকার (মার্কেজিয়া নামে পরিচিত) অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালান বাঙালিরা। তাঁদের বড় অংশই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এবং কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। অনেকেই ৩০-৩৫ বছর ধরে সেই দেশে আছেন। অনেকের সন্তানদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা মক্কা-মদিনায়। এখন তাঁদের মনে হচ্ছে প্রবাসজীবনের পাততাড়ি গোটাতে হবে। সৌদি সরকারের নতুন আইন অনুসারে, কোনো বিদেশি সেখানে এককভাবে ব্যবসা করতে পারবেন না, ব্যবসার কমপক্ষে ৭০ শতাংশের অংশীদারকে সৌদি নাগরিক হতে হবে।

শুধু সৌদি আরবে অন্যান্য দেশের লোকদেরও একই অবস্থা। ভারতের মুম্বাই নিবাসী মেকানিক্যাল প্রকৌশলী বেলাল হোসেন চাকরি করেন কোরীয় গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কিয়াতে। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে এ বছরই দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কারণ, ওই ‘ফ্যামিলি ট্যাক্স’। তাঁর কোম্পানি তাঁর পরিবারের কর দেয় না। পাকিস্তানিদের পরিবারের সদস্যদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ফলে বেশ কিছু পাকিস্তানি কমিউনিটি স্কুলশিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁদের এসবের কারণ জিজ্ঞাসা করলে আঙুল দিয়ে একটি সাইনবোর্ড বা বিলবোর্ড দেখিয়ে দেন। সেখানে ২০৩০ সালের নতুন সৌদি আরব গড়ে তোলার স্বপ্ন ‘ভিশন ২০৩০’- এর ঘোষণা। ওই সময়ে সৌদি আরব প্রয়োজনের অতিরিক্ত একজন বিদেশি কর্মীও রাখতে চায় না। ‘হোয়াইট কালার জবে’ সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বিদেশি থাকতে পারবে। বর্তমানে এ সংখ্যা কোথাও কোথাও ৮০ শতাংশের বেশি। ব্যবসা-বাণিজ্যের সবটুকু নিজেরাই করতে চায়, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া।

সৌদি সরকার এসবের জন্য সৌদি নাগরিকদের গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। বহুদিনের ‘আলসেমির’ দুর্নাম দূর করে জাতিকে কর্মঠ হিসেবে প্রমাণ করতে চায় তারা। তরুণদের জন্য বেকার ভাতা বাতিল করে দিয়েছে। রাজপরিবার ‘সবাইকে কাজ করে খাওয়ার’ পরামর্শ দিচ্ছে। বেকার ভাতা বাতিল করাতে হাজার হাজার সৌদি তরুণের কর্মসংস্থানের প্রয়োজন হচ্ছে। তাই তারা বিদেশিদের ‘দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার’ আয়োজন করছে। নিত্যনতুন করারোপ, পুরোনো আইনগুলোর কঠোর প্রয়োগ চলছে। কয়েক দিন মদিনায় থাকাকালে দেখেছি, বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা তল্লাশির ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দিচ্ছেন। সৌদি সরকারে ‘আজনবি’ (বিদেশি বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত উর্দু শব্দ) খেদানোর এ কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ কিছু দেশকে উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে সৌদি আরবে কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের মাসিক স্যালারি ট্যাক্স মওকুফও করা হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন বেলাল হোসেন। বেলালের বক্তব্য, তাঁদের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের ফলে তাঁদের কিছু উপকার হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁদের পাততাড়ি গোটাতে হবে বলেই তাঁর আশঙ্কা।

তেল আবিষ্কারের পর থেকে সৌদি আরব বিশ্বের অন্যতম প্রবাসী কর্মীদের দেশ। আমেরিকা ও রাশিয়ার পরই বিদেশি কর্মীর সংখ্যায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সৌদি আরবে এক কোটির বেশি বিদেশি রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ৪০ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই সৌদি আরবে কর্মরত। এঁদের বড় অংশই এখন কর্ম ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছেন। কেউ কেউ পরিবার-পরিজনকে দেশে পাঠিয়ে দিতে শুরু করেছেন। বাকিরাও একই রকম ভাবছেন। ৩১ বছর ধরে মদিনায় অবস্থান করছেন গাড়িচালক শফিক। চট্টগ্রামের হালিশহরে ছেলেমেয়েদের আগেই পাঠিয়ে দিয়েছেন। ‘যে কয়েক দিন থাকতে পারি থাকব, না হলে চলে যাব’—এমনটাই ভাবছেন তিনি।

আগামী এক দশকের মধ্যে সৌদি আরবের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্ত আসবে বলে ধারণা করা যায়। এ পরিবর্তনের কেন্দ্রে থাকবে শিক্ষিত ও কর্মঠ সৌদি তরুণসমাজ। গণিত অলিম্পিয়াডের সুবাদে জানি, সেখানে কয়েক বছর ধরে হাইস্কুল থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আলাদা করা হচ্ছে। তাদের জন্য আলাদা পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে, থাকছে নিবিড় অনুশীলন। গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, ইনফরমেটিকস ইত্যাদি অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ শেষে তাদের বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠানো হচ্ছে রাষ্ট্রীয় খরচে। পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে বড় আকারের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা অবকাঠামো। অন্যদিকে সৌদি আরব জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পর্যটনকে তাদের অর্থনীতির একটি বড় অংশ করতে চায়। সে জন্য শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর ওপর তাদের নির্ভর করতে হবে। আর এসবের লক্ষ্য তথা ভিশন-২০৩০ নিয়ে বিদেশি কর্মী ও উদ্যোক্তাদের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।

সৌদিপ্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের বিদেশি রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ জোগান দেন। তাঁদের অর্ধেকও যদি আগামী এক দশকে দেশে ফিরে আসেন, তাহলে শুধু আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না, বেকারত্বও বাড়বে। কিছু নতুন সামাজিক সমস্যাও তৈরি হবে। তাই এখন থেকেই এ বিষয়ে ভাবা দরকার। সৌদি আরবে কর্মরত আমাদের দক্ষ কর্মীদের দেশে ফেরার পর কীভাবে কাজে লাগানো যাবে, উদ্যোক্তারা যদি দেশে ফিরে নিজেদের প্রতিষ্ঠান গড়তে চান, তাহলে তাঁদের কীভাবে সাহায্য করা যাবে, সেসব নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা আমাদের থাকা দরকার।

সৌদি সরকারের ভিশন-২০৩০ যেন কোনোভাবেই আমাদের জন্য ‘ভীষণ’ না হয়ে দাঁড়ায়, তার লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু দরকার। যত তাড়াতাড়ি তা করা যাবে, ততই সেটা মঙ্গল।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৩,২০১৮ 

তাঁরা ককটেল দেখেননি, তবুও সাক্ষী


পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর পল্টন থানার পুলিশ একটি মামলা করে। এতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। 

পুলিশ দাবি করছে, ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডের পূর্ব মাথায় ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে তাঁরা হামলা করেন। তাঁদের ইটের আঘাতে পুলিশের দুজন কর্মকর্তাসহ পাঁচজন সদস্য আঘাত পান। সেখান থেকে উদ্ধার দেখানো হয় জর্দার কৌটার তিনটি অংশ।

পুলিশ বলছে, ইব্রাহীম মোল্লা নামের এক ব্যক্তির সামনে থেকে জর্দার কৌটা উদ্ধার করা হয়। তাঁকে করা হয় জব্দ তালিকার সাক্ষী। অবশ্য ইব্রাহীম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ তাঁর নাম-ঠিকানা লিখে নিয়েছিল। কিন্তু কোনো জর্দার কৌটা তিনি দেখেননি। 

জব্দ তালিকা প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আলী বলেন, গন্ডগোল শেষ হওয়ার পর জর্দার কৌটা জব্দ করা হয়। তখন হয়তো ইব্রাহীম তা দেখেননি।পল্টন থানার এ মামলার মতো রাজধানীর ৩২ থানায় এমন মামলা আরও হয়েছে ১ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে কয়েকটি মামলার জব্দ তালিকার সাক্ষীরা বলেছেন, তাঁদের সামনে থেকে কোনো কিছু জব্দ করতে তাঁরা দেখেননি। পুলিশ শুধু তাঁদের নাম-ঠিকানা ও স্বাক্ষর নিয়েছিল।

১ সেপ্টেম্বর ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এরপর থেকেই বিএনপি ও এর অঙ্গ–সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে নতুন নতুন মামলা দিচ্ছে পুলিশ। ধরপাকড়ও শুরু করেছে। পুলিশ বলছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কয়েক দিনে রাস্তা অবরোধ করছেন। বাধা দিলে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা করছেন। ককটেল ছুড়ে পুলিশ সদস্যদের গুরুতর আহত করছেন।

ঢাকার আদালত, পুলিশ ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ দিনে ঢাকা মহানগরের ৩২টি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ–সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে ৮৬টি মামলা করেছে। গ্রেপ্তার করেছে ১৬৯ জনকে। এর মধ্যে গত সোমবারই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭১ জনকে।

বেশির ভাগ মামলা করা হয়েছে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার কারণে দণ্ডবিধিতে, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক আইনে, যা অজামিনযোগ্য। এসব মামলায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আসামি করা হচ্ছে ঢাকা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতাদের নাম উল্লেখ করে। 

পল্টন থানার বিএনপির সভাপতি আদিল খান বাবুকে আসামি করে বিএনপির ৪৩ জনের নাম উল্লেখ করে মতিঝিল থানায় আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় পুলিশ দাবি করছে, ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। আসামিদের আঘাতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হন। রাস্তার বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন আসামিরা। বাঁশের লাঠিসহ দুটি ক্রিকেট খেলার স্টাম্প জব্দ দেখিয়েছে পুলিশ।

জব্দ তালিকার সাক্ষী মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি রাস্তার ফুটপাতের দোকানদার। সেদিন কোনো ঘটনা তিনি সেখানে ঘটতে দেখেননি। 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারসহ বিএনপির ১৫ জন নেতার নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশ দাবি করছে, ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে সূত্রাপুরের হাজী আবদুল মজিদ লেনের হক মটরসের সামনে বেলা দেড়টার দিকে মিছিল নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। চার টুকরা জর্দার কৌটার অংশ জব্দ দেখিয়েছে পুলিশ। 

আবদুস সাত্তারসহ বিএনপির ১৬ জন নেতা-কর্মী সূত্রাপুরের জনসন রোডে জাকির ফার্মেসির সামনে ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটিয়েছেন বলে মামলা করে পুলিশ। এ মামলাটিও বিস্ফোরক আইনে করা।

জব্দ তালিকার সাক্ষী ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, কোন জায়গা থেকে ককটেল জব্দ করা হয়েছে, তা তিনি দেখেননি। তবে জব্দ তালিকা প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার এসআই নাজমুল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। 

সূত্রাপুর থানা-পুলিশ দাবি করছে, ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে রায় সাহেব বাজার মোড়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারসহ বিএনপির ১৬ জন নেতা-কর্মী পুলিশের ওপর হামলা করেন। মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার দেখানো হয়েছে।

আদালতকে পুলিশ জানিয়েছে, পাবলিক সাক্ষী রবিনের সামনে থেকে এসব ককটেল জব্দ করা হয়। অথচ রবিন প্রথম আলোকে বলছেন, তিনি কোনো ককটেল দেখেননি। রায় সাহেব বাজারে সেদিন কোনো ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা-ও তিনি জানেন না। সূত্রাপুরে রবিনের মোবাইল সার্ভিসিংয়ের একটি দোকান আছে।

মামলাই হচ্ছে কেবল, আটক কম 

রাজধানীর সূত্রাপুর, ওয়ারী ও গেন্ডারিয়া থানায় গত ১২ দিনে মামলা হয়েছে ১১টি। সূত্রাপুর থানায় হয়েছে ৮টি। কিন্তু কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি। সূত্রাপুর থানার ৮ মামলার মধ্যে ১টিতে পুলিশ বলেছে, ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে সূত্রাপুরের কাজী আবদুর রউফ রোডের গোডাউনের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে ১৮ জন নেতা-কর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা করেন। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটান। তবে এই মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হননি। 

একইভাবে সূত্রাপুর থানার আরেকটি মামলায় পুলিশ দাবি করে, বিএনপির নেতা সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার কাজী আবুল বাশারসহ ৯৫ জন নেতা-কর্মী ৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে আর কে মিশন রোডের বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের মাঠের কাছে একত্র হন। সরকার উৎখাতের জন্য সেখানে বসে ষড়যন্ত্র করে। এ মামলায়ও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। 

সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

বিএনপির নেতা-কর্মীদের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবাহ প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ থানায় থানায় নতুন মামলা করছে। আসামি করছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের। এর ফলে বেশির ভাগ নেতা-কর্মী এলাকাছাড়া।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রথম আলোকে বলেন, নতুন করে পুলিশ যেসব মামলা করেছে, তা হাস্যকর। কোনো ঘটনাই ঘটেনি অথচ থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের যত নেতা আছেন, সবাইকে আসামি করা হচ্ছে। এর আগে এমন মামলা কেউ দেখেনি। নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের নামে সাজানো মামলা দেওয়া হচ্ছে।

তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও গণসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোথাও যদি আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত হয়, এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ সেখানে মামলা নিতে বাধ্য। কাউকে হয়রানির উদ্দেশ্যে কোনো মামলা হচ্ছে না।’

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৩,২০১৮ 

৮৬ বছরের প্যারালাইসিস রোগী নাশকতা মামলার আসামি!

বগুড়ায় একটি নাশকতা মামলায় ৮৬ বছর বয়স্ক শয্যাশায়ী এক প্যারালাইসিস রোগীকে আসামি করেছে পুলিশ। মামলায় আবদুল খালেক সরকারের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৩৮ বছর। ধুনট থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের আওতায় ৭ই সেপ্টেম্বর এ মামলা করে পুলিশ। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৭ই সেপ্টেম্বর উপজেলার কান্তনগর বাজারে মাদকবিরোধী অভিযান ও থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ডিউটিতে আসে থানা পুলিশ। এ সময় নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ারপাড়া রহমানিয়া সিনিয়র মাদ্‌রাসার পিছনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠকে নাশকতার পরিকল্পনা করছে বলে খবর পেয়ে রাত ৮টায় অভিযান চালায় থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের নান্দিয়ারপাড়া গ্রামের মৃত মোবারক আলী সরকারের ছেলে আবদুল খালেক সরকারের বয়স ৮৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্যারালাইসিস রোগী। প্যারালাইসিস রোগী হিসেবে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে ৩১শে জুলাই থেকে ৪ঠা আগস্ট পর্যন্ত ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও তিনি সার্বক্ষণিক শয্যাশায়ী। তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আবদুল খালেক সরকারের পরিবার। ওই মামলায় আরো ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিমগাছী ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মশিউর রহমান মোল্লা জানান, পুলিশ কার নামে মামলা দিচ্ছে তার বর্তমান অবস্থা কি এসবের কোনো তোয়াক্কা করছে না। ইচ্ছামতো বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্য মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

এদিকে নতুন করে মামলার জালে আটকে পড়ছে বগুড়া বিএনপি। গেল এক সপ্তাহে ছয় উপজেলায় দায়ের হয়েছে নতুন ১১টি মামলা। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে আরো শ’পাঁচেক নেতাকর্মীকে। সবগুলো মামলাই পুলিশের পক্ষ থেকে করা করা হয়েছে। নাশকতার পরিকল্পনা, ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে এসব মামলায়। 

এমন এক মামলায় ৮৬ বছরের প্যারালাইসিস রোগীর নামও যুক্ত করা হয়েছে আসামির তালিকায়। কেবল তাই নয়, ছয় বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী, পবিত্র হজপালন শেষে এখনও দেশে ফেরেননি এসব ব্যক্তির নামও পাওয়া গেছে আসামির তালিকায়। ফলে মামলাগুলো নিয়ে বিএনপি’র পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও নানামুখী প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের নির্দেশে বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মীদের নামে এসব মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে বসবাসকারী বিএনপি-জামায়াতের প্রভাবশালী নেতাদের নির্বাচনের আগে কারাবন্দি করার ফন্দির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসব মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপি’র। 

নাশকতার অভিযোগে একই রকম তিনটি মামলা হয়েছে বগুড়া সদর থানায়। এতে সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সদরে আরো দু’টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় জেলা যুবদলের সভাপতি সিপার আল বখতিয়ারের নাম উল্লেখ আছে। মামলা হয়েছে গাবতলী উপজেলাতেও। সেখানে বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, উপজেলা চেয়ারম্যান মোরশেদ মিল্টন, পৌরচেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবুল বাশার, তালোড়া বিএনপি’র সভাপতি আবুল হোসেন সরকার, তালোড়া পৌরচেয়ারম্যান বেলাল হোসেন। এসব মামলায় কমপক্ষে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরো ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম দেয়া হয়েছে বলে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল বলেন, ‘বগুড়া সদরে আবার শুরু হলো মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা। সদর উপজেলা বিএনপি’র সহ সাংগঠনিক সম্পাদক গোকুল ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আইউব খানকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় জেলে থাকলেও মামলা হওয়ার মতো কোন কর্মসূচি বিএনপি দেয়নি। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই এসব মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। তার দৃষ্টিতে এসব গায়েবি মামলা। বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির লক্ষেই আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে পুলিশ’। আমরা একটি সুস্থ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চাই। দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাবার জন্য কাজ করতে চাই’।

কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সম্পাদক ও জেলা বিএনপি’র সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম বলেন, সারকার বিএনপি’র জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই মামলা মোকদ্দমা দিয়ে দমিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। তিনি মনে করেন এসব মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি’র গণতান্ত্রিক আন্দোলন থামাতে পারবে না। বিএনপি হারানো গণতন্ত্র উদ্ধার করেই ঘরে ফিরবে বলে তিনি জানান। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮ 

আওয়ামী লীগ নেতার ভিডিও ভাইরাল (ভিডিও)

অশ্লীল বাক্যবাণসহ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি সরাসরি হুমকি দিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণের একটি বক্তৃতার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ নেতা খোন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ নামে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের ফেসবুক টাইম লাইনে ভিডিও এবং সমাবেশের বেশ কয়েকটি ছবি আপলোড করা হয় সোমবার রাতে। 

৭ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি আপলোড করার পর থেকে লাইক, কমেন্টস ও শেয়ারের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। উপজেলা সদরের গোয়ালপাড়া বাজারের এক পথসভায় পদ্মাকর, দোগাছী ও হরিশংকরপুর ইউনিয়নসহ সদরের পূর্বাঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মীদের সরাসরি হুমকি দিয়েই বক্তব্যটি দেন। তাদের সারেন্ডারের জন্য সময় বেঁধে দেন সাতদিন। বিএনপিকে শেল্টার দিলে আওয়ামী লীগ নেতাদেরও একই পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। 

বক্তব্যের শুরুতে শহিদুল ইসলাম হিরণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, যদি আপনাদের রাজনীতি করতে হয়- রাজনীতির ধারায় রাজনীতি করতে হবে। থানা আওয়ামী লীগ, জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রাজনীতি করতে হবে। আপনাদের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রাজনীতি করতে হবে। ইউনিয়ন, থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের বাইরে রাজনীতি করে এখানে যদি আপনারা মনে করেন, আমরাও একটা আওয়ামী লীগের মিছিল করে দেবো, তাহলে ... (অশ্রাব্য) চামড়া খুলে দিবো। সেদিন আপনারা কিন্তু একটা মিটিং করতে চেয়েছিলেন। আমরা সে মিটিং করতে দেইনি। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আপনাদের মিটিং করতে হবে।

আওয়ামী লীগের পতাকাতলেই মিটিং করতে হবে। ইউনিয়ন, থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আপনাদের মিটিং করতে হবে। কে কি বললো, ওই ঝিনেদা বসে; তার কথায় যদি আপনারা এখানে মিছিল করেন, মিছিলের প্রতিবাদ হবে। ... (অশ্রাব্য) চামড়া খুলে দেবো। হ্যান্ডকাপ পরাইয়ে থানায় নিয়ে যাবো। নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা শুনলাম- কালকে নাকি মিষ্টি খেয়েছে। আরে তোমরা মিষ্টি খেয়েছো, আমরা কি... (অশ্রাব্য)। আমরা আওয়ামী লীগ করি না? তোমরা আওয়ামী লীগ করে কার কারণে মিষ্টি খেয়েছো? মিষ্টি কিন্তু হজম হবে না। পরিষ্কার কথা বলে দিচ্ছি। হিরণ বলেন, আমরা কিন্তু আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগের থানা কমিটির নেতা আমি। পরিষ্কার কথা বলতেছি- যার নমিনেশন হোক, শহিদুল ইসলাম হিরণের কাছে, আমরা যারা দাঁড়িয়ে আছি; আমাদের কাছে এসেই নির্বাচন করতে হবে। তাছাড়া নির্বাচন হবে না। পরিষ্কার ভাষায় বলতেছি, ওই মিষ্টি খেয়ে কোনো লাভ নেই। 

স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হুমকি দিয়ে শহীদুল ইসলাম হিরণ বলেন, কয়েকটি কথা বলতেছি- বিএনপির ভাইয়েরা, গৌহাটির বিএনপির ভাইয়েরা লাইন দিয়ে বাসায় এসেছে। ঘোড়ামারার কিছু বিএনপি আছে, তোমাদের বলে দিলাম- পরিষ্কার ভাষায় বলে দিলাম, সাতদিন তোমাদের টাইম। সারেন্ডার না করলে... (অশ্রাব্য) দিয়ে পুলিশের কাছে ধরে দিবো। পরিষ্কার ভাষায় বলছি। কাল গোপালপুর বাজারের মিটিং হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক এক এক ইউনিয়নের বিএনপিকে পিটাইতে হবে। সঙ্গে থাকবে প্রশাসন। 

পুলিশ প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ভাইয়েরা শুনে নিন- গোপালপুরের মিটিংয়ের পরে বিএনপি... (অশ্রাব্য) হবে। আমাদের নেতা যারা আছে, তারা যে নির্দেশ দেবে, সেই নির্দেশ যদি না শোনেন; ঝিনেদায় আপনারা চাকরি করতে পারবেন না। পরিষ্কার ভাষায় আমি হিরণ চেয়ারম্যান, থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে দিলাম। এখানে আওয়ামী লীগ থাকবে, আওয়ামী লীগের নির্দেশেই আপনাদের কাজ করতে হবে। 

বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় কোনো বিএনপি, কোনো ইউনিয়নে, এই বাজারে আর ঘোরাফেরা করতে পারবে না। আমরা অচিরেই এ বাজারে যারা বিএনপি করে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের ঘরে তালা মেরে দেবো। পুলিশ লাগবে না। যদি মোকাবিলা করতে চান, মোকাবিলা আপনারা করবেন আমরা প্রস্তুত আছি। পরিষ্কার কথা বলতেছি, বিএনপি যারা করেন সারেন্ডার করেন কিন্তু, এরপরে কিন্তু সময় ও সুযোগ কিন্তু আর পাবেন না। ... (অশ্রাব্য) হারাবেন, ... (অশ্রাব্য) রক্তও বেরিয়ে যাবে। ঠ্যাংও ভেঙে যাবে। পরিষ্কার কথা বলতেছি। 

নিজ দল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, আর যেসব আওয়ামী লীগওয়ালা বিএনপির শেল্টার দিচ্ছেন, আপনারা বিএনপির চর, জামায়াতের চর। আপনাদের... (অশ্রাব্য) চামড়া খুলে নেয়া হবে। এই রকম মিছিল পদ্মকর বাজারে ইউনিয়ন কমিটি ও থানা কমিটির নিয়ন্ত্রণেই হতে হবে। এখানে আপনারা ঝিনেদা থেকে নেতা নিয়ে এসে মিটিং করবেন, করেন। একবার পারেননি, আবার করতে চাইলে ... (অশ্রাব্য) চামড়া খুলে নিবো কিন্তু কইলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে, আমরা আওয়ামী লীগ করি। আপনারা যদি আওয়ামী লীগ করেন, আমাদের কাতারে মিশে যান। আর যদি বিএনপির চর হিসেবে থাকেন, তাহলে ... (অশ্রাব্য) খাওয়ার জন্য বসে থাকেন। তিনি বলেন, কালকে গোপালপুরের মিছিলে-মিটিংয়ে আপনারা প্রত্যেকেই যাবেন। 

আওয়াজ জোরে তুলবেন। গায়ের রক্ত গরম করবেন। বিএনপির ... (অশ্রাব্য) খুলবেন। পুলিশ যদি বিএনপি মারার কারণে ধরে আমি হিরণ আপনাদের সঙ্গে জেলখানায় যাব। পরিষ্কার কথা, পশ্চিম অঞ্চলেও ঘোষণা দিচ্ছি জামায়াত মুক্ত, বিএনপি মুক্ত ইউনিয়ন সাধুহাটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফুলঝানিতে ঘোষণা করা হয়েছে। কালকে পদ্মাকর, হরিশংকরপুরেও আমরা ঘোষণা করবো। পরিষ্কার কথা, ঘোষণা করার পরেই বিএনপির চামড়া তুলে নেবো আমরা। এটাই হবে স্লোগান। স্লোগানেই হবে না, প্র্যাকটিক্যালি হবে, বিএনপির চামড়া তুলেই নিতে হবে। যারা আওয়ামী লীগ করেন, এটাই কিন্তু দলিল। 

বিএনপি নেতাকর্মীদের ফের হুমকি দিয়ে হিরণ বলেন, বিএনপির ভাইয়েরা আপনাদের প্রতি কিন্তু হুঁশিয়ার। রক্ষা এবার হবে না। সুযোগ নেই। আপনাদের ম্যাডাম জেলখানায়। যার কথায় আপনারা বসে আছেন, তারও এই মাসের মধ্যে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হবে। অতএব আপনাদের ... (অশ্রাব্য) ফাটা বাঁশে বেঁধে গেছে। নইড়ে লাভ হবে না। নইড়ে কোন অবস্থায় লাভ হবে না। অতএব আপনারা সারেন্ডার করেন। 

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি যত নামধারী হন, যত পোস্টার আপনারা লাগান, তার শুদ্ধ ... (অশ্রাব্য) চামড়া তুলে দেবো। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাজনীতি করতে হবে। এক নেতা, এক নেতার পোস্টার লাগিয়ে দিয়ে কোনো কিছু হওয়া যাবে না। গোপালপুর কালকে মিটিংয়ে যাইয়েন। মিটিংয়ে ফার্স্ট থাকি, বক্তৃতায় ফার্স্ট থাকি। বক্তৃতা দেবো, সেভাবেই বাস্তবায়ন হবে। নইলে মধুপুর চৌরাস্তায় গিয়ে ... (অশ্রাব্য) চামড়া তুলে নেবো। পারবে না মানে, পারবে না কেন? আমি হিরণ মাঠে থাকবো, আমি হিরণ পদ্ধকরে যাব, আমি হিরণ হরিশংকরপুরে যাব। আমি দাঁড়িয়ে থাকবো। ঘরের থেকে বাইর করবো, চামড়া খুলে দেবো।

আপনারা যারা আওয়ামী লীগ করেন, আপনারা সরে যান। পরিষ্কার কথা বলছি। সরে না গেলে আপনাদের দশা কিন্তু সইতে হবে। কালকে গোপালপুরের জনসভায় যাবেন, জোরে আওয়াজ তুলবেন। আপনাদের দেখিয়ে দিতে হবে। বিএনপিকে মার দেবেন, সে দায়িত্ব আমার। পুলিশদের দায়িত্ব আমার। পুলিশ যদি থাকে, তারা শুনে যান, হিরণ চেয়ারম্যান এই কথা কইছে। মারলে কিছু হবে না। পুলিশ যদি কিছু কয় পুলিশের চাকরি থাকবে না। কালকে সবাই যাবেন, শান্ত থাকবেন। শান্ত মানে আমরা আমরা যেন কামড়াকামড়ি না করি। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৮