Search

Sunday, September 16, 2018

গায়েবি মামলার হিড়িক

ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী

এর কাছাকাছি বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহেও আমরা লিখেছিলাম। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে সে পরিস্থিতি আরো মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এর মধ্যে গায়েবি মামলার একেবারে হিড়িক পড়ে গেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মী কিংবা সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এই গায়েবি মামলা দায়ের করা হচ্ছে। তা ছাড়া যারা সত্য প্রকাশ করতে চান, তারাও সরকারি রুদ্র রোষের শিকার হয়েছেন। 

বাংলাদেশে এখন সত্য প্রকাশ ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। এমনকি সড়ক দুর্ঘটনায় এক মাসে কতজন মারা গেল সে তথ্যও প্রকাশ করা যাচ্ছে না। সে রকম তথ্য প্রকাশ করে যাত্রীকাল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী কারাগারে গিয়েছিলেন। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। তার বিরুদ্ধে প্রথমে দেয়া হয়েছিল চাঁদাবাজির মামলা। সেটি ডাহা মিথ্যা ও বানোয়াট। সে কথা প্রমাণিত হয়ে যাওয়ার পর তিনি কারাগারে থাকতে থাকতেই তার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে বিস্ফোরক মামলা। চাঁদাবাজির মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন, বিস্ফোরক মামলার পরিণতি জানতে সময় লাগবে।

তবে নতুন করে দায়ের করা বিস্ফোরক আইনের মামলায় পুলিশ মোজাম্মেল হককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে। ওই মামলায় বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি মীরপুর ১৩ নম্বরে বিআরটিএ’র কার্যালয়ের পেছন থেকে ৩৫টি পেট্রলবোমাসহ আবিদুর আহসান নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় আবিদুরসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও ৪০ থেকে ৪৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারাসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনের ৩/৬ ধারায় মামলা হয়। 

মামলায় বলা হয়, দুষ্কৃতকারীরা সবাই মিলে দেশে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি, সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন, সরকার ও জনসাধারণের সম্পত্তি ধ্বংস, ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে গাড়িতে পেট্রলবোমা মেরে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারাসহ বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনে অপরাধ করেছে। 

ওই মামলায় মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নাম উল্লেখ ছিল না। তবে ৮ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানার এসআই রায়হানুর রহমান মোজাম্মেল হককে কাফরুল থানার বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর অনুমতিসহ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। এতে বলা হয়, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, মোজাম্মেল হক এজাহারভুক্ত পলাতক আসামিদের সহায়তায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনা ঘটান।

এ ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করে এক সহযোগী পত্রিকা। তারা বিআরটিএ কার্যালয়ের পেছনে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অন্তত ১০ জনের সাথে কথা বলেন। 

ফুটপাতের একজন চা-দোকানি ওই প্রতিবেদককে জানান, ৪ ফেব্রুয়ারি এই গলি থেকে পুলিশ ককটেলসহ কাউকে গ্রেফতার করার কথা শোনেননি কিংবা দেখেননি। দোকানে বসেছিলেন একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, এই এলাকায় থাকেন, কিন্তু এমন কথা শোনেননি। পাশে বিআরটিসির স্টাফ কোয়ার্টার মার্কেটের একটি স্টেশনারি দোকান মালিক বলেন, ‘এ ধরনের খবর জানি না কিংবা শুনিনি।’ 

আরেক বাসিন্দা জানান, ‘ককটেল বা পেট্রলবোমা উদ্ধার হলে আমরা শুনব না, তা হতে পারে না।’ আর চাঁদাবাজির মামলার বাদী দুলাল মিয়া, ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। সুতরাং মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা দু’টি মামলাই গায়েবি। মূল কথা হলো, ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় যে আড়াই শ’ লোকের মৃত্যু হয়, সে পরিসংখ্যান না প্রকাশ করার জন্য মোজাম্মেল হককে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে দেন।

এ রকম ঘটনা এই একটিই নয়, ভূরি ভূরি। বিশেষ করে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে নয়া পল্টনে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ দেখে সরকার একেবারে ভড়কে গেছে। আর তার পর থেকেই শুরু হয়েছে এমন আজগুবি আর গায়েবি মামলা। 

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ফাইয়েদুল আলম ছেলের চিকিৎসার জন্য গত ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুর যান। ওইদিন বেলা ১১টায় জেলা শহরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মানববন্ধনে লাঠিপেটা করে পুলিশ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যানবাহন ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাতে মামলা করে পুলিশ। সেই মামলায় সিঙ্গাপুর যাওয়া ওই নেতাকেও আসামি করা হয়। একই ধরনের মামলার অভিযোগ উঠেছে শ্রীপুরে। সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সিরাজ কাইয়াকে আসামি করা হয়েছে। অথচ তার স্বজনেরা বলেছেন, তিনি চিকিৎসার জন্য এক সপ্তাহ ধরে ভারতে অবস্থান করছেন।

এমনি ঘটনা আরো আছে। ওয়ারী থানাধীন লুৎফুল হকের বয়স ৮২ বছর। তিনি গুরুতর অসুস্থ। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কিডনির চিকিৎসার জন্য তিনি গত ৪ আগস্ট থেকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাওয়ার পর তিনি বাড়ি ফিরে গেছেন। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা এমনই নাজুক যে, অন্য কারও সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। ল্যাবএইডে চিকিৎসার সময় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশ দেখতে পেয়েছে যে, বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর ওয়ারীতে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের এক সমাবেশে ৩ সেপ্টেম্বর এই লুৎফুল হকও অংশ নিয়েছেন। এই মামলার ৯৬ জন আসামির একজন লুৎফুল হকও। 

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী এই নাশকতামূলক কাজের জন্য তারা আর কে মিশন রোডের বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের খেলার মাঠে সমবেত হয়েছিল। তার ছেলে রেজাউল হক জানান, মামলা দায়েরের দু’দিন পর গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে হুইল চেয়ারে করে জামিনের জন্য আদালতে নিয়ে যান তারা। আদালত চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত তাকে জামিন দিয়েছেন।

এ রকম ঘটনা আরো আছে। বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা সাব্বির আহমেদ আরিফকে একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনাটি যখন ঘটে তখন তিনি দেশেই ছিলেন না। তার ভিসা, ইমিগ্রেশন ও হোটেল ডকুমেন্ট, বর্ডিং পাস প্রভৃতি পরীক্ষা করে দেখা গেছে তিনি সেপ্টেম্বরের ১ থেকে ৪ তারিখ পর্যন্ত কলকাতায় ছিলেন। 

সাব্বির বলেছেন, পুলিশ সবসময় আমার পিছু নেয় বলে আমি বাড়িতেই থাকতে পারি না। তাই আমি যখন ইন্ডিয়ায় ছিলাম তখন আমি আসামি হয়েছি। এই মামলার অপর আসামি মো. ইব্রাহিম ওয়ারী থানা যুবদলের একজন নেতা। 

গত বছর ১২ নভেম্বর জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, তার বিমান টিকিট, ইমিগ্রেশন এবং হোটেল ডকুমেন্ট বলে যে তিনি ৭ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত তার ছোট বোনের চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে ছিলেন। তার আইনজীবী এসব কাগজপত্র আদালতে দাখিল করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে এখন ১৬টি মামলা ঝুলছে। 

গত ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন তবে পুলিশ তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তিনি সে ধরনের কোনো কাজ করেননি। পুলিশের এসআই উৎপল দত্ত মামলার বিবরণে লেখেন যে, তিনি এবং আরো কিছু পুলিশ সদস্য তিন সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের খেলার মাঠে সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে উপস্থিত হন। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকার লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করে এসআই উৎপল সেখানে সমবেত হওয়া ৯৬ জনকে চিহ্নিত করেন এবং নাশকতায় জড়িত আরো বহুসংখ্যক লোক চিহ্নিত করতে পারেননি।

ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই খেলার মাঠে যান। গিয়ে তিনি দেখতে পান ডজনখানের ছেলে সেখানে ক্রিকেট খেলছে। তাদের কাছে তিনি জানতে চান, ৩ সেপ্টেম্বর ওই খেলার মাঠে বিএনপির লোকজন সমবেত হয়েছিল কিনা। কিন্তু তারা বলেন, আমরা এখানে প্রত্যেক দিন খেলতে আসি, আমরা এরকম কোনো ঘটনা দেখিনি বা শুনিওনি। ওই খেলার মাঠের আশপাশের কমপক্ষে ১০ ব্যক্তি বলেছেন, ৩ সেপ্টেম্বর এখানে তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। খেলার মাঠ ৮ ফুট উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা এবং এই মাঠে প্রবেশ বা বের হওয়ার জন্য একটি মাত্র দরজা রয়েছে। উৎপল তার মামলায় বলেছেন, তিনি এসব কথা জেনেছেন ঘটনার আশপাশের লোকজন ও দোকানদারদের কাছ থেকে। কিন্তু দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি আশপাশের কমপক্ষে ১৫ দোকানের মালিক শ্রমিকের সাথে কথা বলেছেন। তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি এখানে এ ধরনের তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। 

একজন দোকানদার হাসতে হাসতে বললেন, এই খেলার মাঠে বিএনপির লোকজন জড়ো হয়েছিল এ কথা আপনার মুখেই প্রথম শুনলাম। এ বিষয়ে উৎপলকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। ঘটনার চমৎকারিত্ব এখানেই শেষ নয়। আরেকটি পত্রিকা রিপোর্ট করেছে, বিএনপির চকবাজার থানার আহ্বায়ক আবুল আজিজুল্লাহ নাশকতামূলক কাজ করেছে। কিন্তু আজিজুল্লাহ তার ২৬ মাস আগে ২০১৬ সালের মে মাসে ইন্তেকাল করেছেন। তবে ৫ সেপ্টেম্বর দায়ের করা পুলিশের মামলায় বলা হয়েছে, আজিজুল্লাহ অন্য নেতাদের সাথে মিলে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।

এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী এসআই কামালউদ্দিন বলেন, সাক্ষীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটি যাচাই করার জন্য তার হাতে কোনো সময় ছিল না। তবে যদি কোনো মৃত ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করা হয়ে থাকে তাহলে সংশোধন করা হবে। দেশজুড়ে আসলে এখন এ পরিস্থিতি চলছে। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের চাপে রাখা, ভয়ভীতি দেখানো, মামলা হামলা গ্রেফতার করে তাদের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য সরকার এমন নিকৃষ্ট পন্থা অবলম্বন করছে। সরকার জনগণের ভোটের ওপর মোটেও নির্ভর করতে চাইছে না। কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর তারা পুলিশ ছাত্রলীগ ও হেলমেটবাহিনী দিয়ে যে নির্যাতন চালিয়েছে তাতে এই বিপুল ছাত্রসমাজের ভোটের আসা তারা করতে পারেন না। তেমনিভাবে স্কুল-কলেজের যেসব তরুণ শিক্ষার্থী সদ্য ভোটার হয়েছেন তাদের ওপরও যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তাতেও নতুন ভোটারদের ভোট আশাও সুদূর পরাহত।

সুতরাং সরকারের হাতে থাকল কী? তাদের হাতে আছে র‌্যাব পুলিশ বিজিবি প্রশাসন আর ডাণ্ডা। কিন্তু পৃথিবীতে যুগে যুগে প্রমাণিত হয়েছে যে জনতার শক্তির সামনে তাদের প্রতিরোধের মুখে সেসব বাহিনী খড়কুটোর মতো উড়ে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত জনগণেরই জয় হয়। 

  • লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮ 

LGED in a hurry to take up road projects

FHM Humayan Kabir

The government is in a hurry to get rural infrastructure development projects involving substantial volume of funds approved by the Planning Commission (PC) before the forthcoming national elections, officials said on Saturday.

They said the Local Government and Engineering Department (LGED) alone has sought approval for nine projects meant to construct rural roads and bridges, where billions will be required.

"All the projects have been sent to us within the last couple of weeks for approval. Now we're coming under pressure to approve those on an emergency basis," a PC official said.

Within a day or two from the date of sending the projects from the ministry to the commission, some government ministers, lawmakers and political heavyweights are putting pressure on the commission for the approval, the official said.

Development analysts say since the national election is round the corner, the ruling party is taking up projects in a hurry out of political consideration.

According to the ministry of local government, rural development and cooperative, it has sent at least nine rural infrastructure development projects within last couple of weeks to the commission.

"Since the lawmakers have pledged their voters to develop roads, bridges, culverts and other infrastructure in their constituencies, they are putting pressure on us to approve projects before the elections," said a ministry official.

"We're trying to prepare the projects, which are necessary and are sending those to the commission for getting approval," he said preferring anonymity.

"We have even been forced to hold Project Evaluation Committee (PEC) meeting within two days from the appraisal of a project of the LGED. We are getting so much pressure on that we are not able to scrutinise properly rather to place it before the next ECNEC meeting," he said.

During the last few weeks, the LGED sent Mymensingh rural infrastructure development project worth Tk 6.0 billion, rural transport improvement project involving an investment of Tk 45 billion, and construction of below 100-metre long bridges across the country project at a cost of Tk 30 billion.

Besides, it has sought approval for rural employment and road maintenance programme project involving a sum of Tk 25 billion, rural infrastructure (road) development project Tk 50 billion, bridge building project in Feni district for Tk 5.50 billion, rural infrastructure for greater Cumilla project, and JICA-funded disaster risk management project.

Former finance and planning advisor to the Bangladesh's caretaker government Dr Mirza Azizul Islam said that most of the projects are politically-motivated.

"The ruling party lawmakers, who wish to contest the parliamentary elections, will be able to tell people that they are working for them."

"Taking up expensive projects with a shorter period of time will ultimately affect their execution. Once the cost and execution time will overrun and their viability will also be affected," he said.

Mr Islam said since the election is knocking at the door, there is also the possibility of diverting project funds to influence election.

Economist Dr MA Taslim told the FE such projects are usually designed to influence electorates.

"There are reasons to assume that the government might have taken up some politically-motivated projects because those are being initiated just before the national election. The projects will neither be of quality nor viable."

He said in the name of development work, the funds could be misused, Prof Taslim expressed the fear.


  • Courtesy: The Financial Express/ Sep 16, 2018

Immediate DUCSU polls demanded as DU sits with student bodies today

Arifur Rahman 

Academics and former student leaders emphasise favourable environment and immediate announcement of schedule as Dhaka University authorities are set for talks with student organisations today on the long-awaited election to Dhaka University Central Student Union.

Welcoming the move, they pointed out that flexing political muscle instead of intellectual exercise was the outcome of the absence of a functional DUCSU for about three decades.

Political coexistence, they demanded, must be ensured for a fair and participatory poll to the student union of the university which was the cradle of all democratic and cultural movements of the country.

Proctor AKM Golam Rabbani on September 12 sent a letter to the president and the general secretary of all student organisations and their Dhaka University units inviting them to the meeting.

The move came as fifteen former students of the university on September 12 filed a petition with the High Court for charging Dhaka University vice-chancellor, proctor and treasurer with contempt of court for violating a High Court order asking them to hold the DUCSU polls.

Talking to New Age, DU VC Professor Akhtaruzzaman said that the move was the first in sixteen years and they would discuss ways of how to revive DUCSU.

He further said that they would take further initiative after getting the feedback from the student bodies and other activities including updating voters’ roll were already going on.

Praising the move, Dhaka University Professor Emeritus Serajul Islam Choudhury said that DUCSU poll was a must as its absence had already caused irreparable losses.

As the university decided to sit with the student bodies, all stakeholders of the university should also reach a consensus on holding the election.
DU law department professor Asif Nazrul said that without ensuring political coexistence and democratic environment on the campus, all attempts to hold the poll would go in vein.

Demanding immediate election schedule, president of Communist Party of Bangladesh Mujahidul Islam Selim, also the first DUCSU vice-president after independence, said that DU VC should seek apologies firstly for collecting fees from the students in the name of central students’ union without holding the poll violating university ordinance. 

Former DUCSU general secretary Mostak Hossain said that the university authorities should declare the election schedule first and then other activities, including political coexistence, should be ensured to hold the poll.

On March 4 last year, president Abdul Hamid, also chancellor of the university, while addressing the 50th convocation of the university, had called for the university students’ union election. 

He had then said that in order to develop new leadership as well as strengthen the democratic foundation of the university, DUCSU election was necessary.

From the chancellor to the students, everyone wants it but the student union elections did not take place in about three decades as the successive DU administrations and governments did not want it to maintain their dominance on the campus.

On the one hand, they wholeheartedly glorify DUCSU roles in the nation’s history while, on the other, they do nothing to hold the election, which is a clear violation of the university ordinance of 1973. 

This practice is breaching express provisions of Articles 4 and 20 of the ordinances presidential order number 11 and the fundamental rights ensured under the article 27 of the same order.

This violation renders all the senate committees and vice-chancellor elections of the university in the last 27 years unconstitutional as in the senate of DU five seats are reserved for the student representatives that remained vacant since the fall of autocratic regime in 1990.

DUCSU was formed in 1924 after the establishment of Dhaka University in 1921, and its first vice-president was nominated in the 1924-25 academic session. Since then, the VP used to be nominated until 1953 when the first election was held.

The last DUCSU election was held in 1990. It was the sixth election after independence. Jatiyatabadi Chhatra Dal-backed Aman-Khokon (Amanullah Aman and Khairul Kabir Khokan) panel won the election and they stayed the leaders of the students’ body until its dissolution.

On September 12, fifteen former Dhaka University students filed a contempt petition against Dhaka University vice-chancellor Md Akhtaruzzaman, proctor AKM Golam Rabbani and treasurer Kamal Uddin for violating a High Court order asking them to hold the DUCSU polls.

The vacation bench of Justice Md Nazrul Islam Talukder and Justice KM Hafizul Alam would hear the petition today.

On January 17, the High Court bench of Justice Syed Muhammad Dastagir Husain and Justice Md Ataur Rahman Khan asked the Dhaka University authorities to take steps for holding DUCSU polls at a ‘suitable time, preferably within six months.’
The court also said that the Dhaka University senate was not formed properly without five elected representatives of the DUCSU.

The Dhaka University senate was formed without the five DUSCU representatives for long, it observed.

Courtesy: New Age /Sep 16, 2018

15 Islamic parties form alliance in support to AL


A new alliance of 15 Islamic parties, the Islamic Democratic Alliance, emerged on Saturday to further strengthen the ruling Awami League‑led alliance in the next general election likely to be held in December.

Party representatives declared the alliance at a press conference held at a city hotel.
Speaking at the conference, alliance members said that they would work to help the Sheikh Hasina-led government continue the ‘unprecedented development’ it had achieved and protect the country from conspirators.

Bangladesh Islami Oikya Jote chairman Misbahur Rahman Chowdhury was made chairman of the alliance. Bangladesh Tariqat Federation former secretary general MA Awal was named alliance co-chairman and spokesperson with Democratic Islamic Movement chairman M Nurul Islam Khan as secretary general.

The other 12 alliance members were Bangladesh Islamic Party, Bangladesh Democratic Front, Bangladesh Jamaat E Darussunnah, Bangladesh Islamic Democratic Forum, Bangladesh Gana Kafela, Bangladesh Janaseba Andolon, Bangladesh Peoples Democratic Party, Bangladesh Islamic Peshajibi Parishad, Islami Union Bangladesh, Bangladesh Manobadikar Andollon and National Labour Party.

All 15 parties besides Tariqat Federation were unregistered and some had split from other parties.

Tariqat Federation and Islami Oikya Jote were also partners of the AL-led alliance.

When asked about the registration status of the parties, MA Awal said that the 14 unregistered parties had already applied to the Election Commission for registration but the EC was yet to respond.

Misbahur Rahman said that the EC playing a mysterious role in giving registrations to the political parties and that the registration process was flawed.

  • Courtesy: New Age/Sep 16, 2018

দেশ কোন দিকে যাচ্ছে?

মহিউদ্দিন আহমদ

দেখা হয় অনেকের সঙ্গে। স্লামালেকুম, কেমন আছেন—এ রকম শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সবাই প্রশ্ন ছুড়ে দেন—দেশ কোন দিকে যাচ্ছে? দেশের অবস্থা কী? এসব প্রশ্নের চটজলদি জবাব দেওয়া যায় না। সবজান্তার মতো ভাব করে বলতে হয়—সব ঠিক আছে, অথবা আমরা জাহান্নামে যাচ্ছি, অথবা নির্বোধের মতো বলতে হয়—কিছুই বুঝতে পারছি না।

মানুষের মনে কৌতূহল, চোখে জিজ্ঞাসা। এর একটি ইতিবাচক দিক আছে। সবাই দেশ নিয়ে, সমাজ নিয়ে ভাবেন। দেশের মঙ্গল হলে খুশি হন, খারাপ সংবাদ পেলে কষ্ট পান। আবার এর একটি নেতিবাচক দিকও আছে। কেমন যেন একটা সন্দেহ, অবিশ্বাস আর অনিশ্চয়তার দিকে আমরা দ্রুত ধাবমান হচ্ছি। আমরা কি আস্থা হারিয়ে ফেলছি?

শুনতে পাই ডিসেম্বরের শেষে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তারিখ ঘোষণা করেনি। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের কথা বলেছেন কমিশনের সচিব। তিনি সরকারের লোক। হয়তো সরকারের কাছ থেকে ইঙ্গিত পেয়েছেন। অর্থমন্ত্রী কথা প্রসঙ্গে বলেছেন, নির্বাচন ২৭ ডিসেম্বর হবে, এটা তাঁর ‘হাঞ্চ’ বা অনুমান। এ নিয়ে সরকারের একজন মন্ত্রী তাঁর মৃদু সমালোচনা করেছেন। এটা শুনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারও উষ্মা প্রকাশ করেছেন।

এক অর্থে বলা যায়, নির্বাচন হতে যাচ্ছে ১০ বছর পর। ৫ বছর আগে একটি নির্বাচন হলেও তাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ তেমন ছিল না। ১৫৩টি নির্বাচনী আসনে ভোট হয়নি। বিএনপির নেতৃত্বে একটি জোট ভোট বর্জন করেছিল। তাদের সঙ্গী হয়েছিল আরও কয়েকটি দল। সেসব আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা বিনা বাধায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ দেশে সচরাচর অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়াতে দেখা যায়। কিন্তু ১৫৩টি আসনে মহাজোটের প্রার্থীরা এতই জনপ্রিয় যে আর কেউ সেখানে দাঁড়ানোর সাহস দেখাননি। বাকি আসনগুলোর ভোট হওয়ার আগেই সরকার গঠন করার মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট। তাই অন্য আসনগুলোতে ভোট হলেও ভোটারদের মধ্যে তেমন উৎসাহ ছিল না। নির্বাচন কমিশন অবশ্য দাবি করেছিল, শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ ভোট দিয়েছে। অনেকেই এই দাবির সত্যতা খুঁজে পাননি। কমিশনের দাবি মেনে নিলেও এটা স্বীকার করতেই হয় যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটাররা ভোট দেননি।

এবার যখন নির্বাচনের ঘণ্টা বেজে উঠেছে, সবাই অস্থির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, তাঁরা ভোট দেবেন। অনেক তরুণ-তরুণী প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। স্বভাবতই তাঁদের আগ্রহ ও উৎসাহ বেশি থাকার কথা। এ দেশে এতবার নির্বাচন হওয়ার পরও নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাস গেল না। ভোটারদের সামনে দুটো প্রশ্ন: এক. নির্ঝঞ্ঝাটে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কি না; দুই. তাঁর ভোটটি ঠিকমতো গোনা হবে কি না। এ দেশে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া, তার বয়স প্রায় শত বছর। কিন্তু এখনো উদ্বেগ গেল না। স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে, গণতন্ত্রের জন্য এ দেশ, এ দেশের মানুষ যথেষ্ট তৈরি কি না।

নির্বাচন সামনে রেখে পরস্পরবিরোধী রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। তাদের বাক্যবাণ, আস্ফালন এবং তর্জন-গর্জনে পরিবেশ ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে। আগামী নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন ভালো হওয়া বা না হওয়া অনেকাংশে নির্ভর করে বিবদমান প্রার্থী ও দলের আচরণের ওপর। তারা চাইলেই একটা সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে। অতীতের নির্বাচনগুলোয় আমরা অনেক মারামারি-কাটাকাটি-খুনোখুনি দেখেছি। এবারও কি তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে? প্রধান নির্বাচন কমিশনার তো বলেই দিয়েছেন, নির্বাচনে অনিয়ম হবে না—এই গ্যারান্টি তিনি দিতে পারেন না। এটা তাঁর অক্ষমতার আহাজারি কিংবা বাস্তবতার স্থূল প্রতিফলন।

আমরা শুনেছি, অনেক বছর আগে এ দেশে  নাকি ভালো, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতো। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনটি ছিল অখণ্ড পাকিস্তানের প্রথম এবং শেষ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে অতি উৎসাহী হয়ে আমরা অনেকেই একটার বেশি ভোট দিয়েছিলাম। না দিলেও ফলাফলে হেরফের হতো না। নির্বাচনটি নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছিল। ওটাকেই এখন পর্যন্ত একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে ধরা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো সে রকম গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

আমার মনে একটা কৌতূহল, ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনটি কেমন ছিল। শুনেছি, ওটাই নাকি ভালো নির্বাচন ছিল, যেমনটি আমরা দেখেছি ১৯৭০ সালে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন এবং ভোট দিয়েছিলেন, ওই প্রজন্মটি এখন বিলীয়মান। প্রবীণদের স্মৃতিতে হয়তো এখনো তা রয়ে গেছে। ওই নির্বাচন সম্পর্কে একটু ধারণা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নেওয়া যায়।

চুয়ান্নর নির্বাচন হয়েছিল ৮ থেকে ১২ মার্চ। ওই নির্বাচনে শেরেবাংলা, মাওলানা ভাসানী ও সোহ্‌রাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগকে ধরাশায়ী করেছিল। তখন ছিল ‘পৃথক নির্বাচনী’ ব্যবস্থা; অর্থাৎ মুসলমান আসনে ভোট দিত মুসলমানরা, অমুসলমানরা দিত অমুসলমান প্রার্থীকে। তো, ২৩৭টি মুসলমান আসনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট জিতেছিল ২২৮টি আসনে। নির্বাচনটি কেমন হয়েছিল? তার আগে পরিস্থিতি কেমন ছিল? কোথাও কি কোনো রকম গোলমাল হয়নি? এর তত্ত্বতালাশ করতে খোঁজ নিলাম তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরির। ১৯৫৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির অভিজ্ঞতা তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে:

‘সকাল সাতটায় রাজেন্দ্রপুর স্টেশনে পৌঁছালাম। হাতিরদিয়া ও আড়াল থেকে শাহজাহানের নেতৃত্বে একদল কর্মী স্টেশনে এল। মাওলানা ভাসানী সাহেবকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য পাঁচ শতাধিক মানুষ অপেক্ষা করছিল।...সেখান থেকে হাতিতে করে কাপাসিয়ায় রওনা হলাম। পাঁচ শর মতো মানুষ সঙ্গে চলল। রাজবাড়ি ও কাপাসিয়ার মাঝপথে মুসলিম লীগের ৬০ জনের মতো গুন্ডা হঠাৎ লাঠি, বাঁশের তীক্ষ্ণ বল্লম এবং ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ওপর প্রচণ্ডভাবে আক্রমণ করল। ইটের টুকরোর আঘাতে আমাদের ১২ জনের মতো আহত হলো। আমরা সবাই ছিলাম খালি হাতে। তারা হাতিকে ভয় দেখানোর জন্য জেলা বোর্ডের রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন এবং কাপাসিয়া থেকে আসা লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে দ্রুত এগিয়ে গেলে গুন্ডারা উত্তর ও দক্ষিণ দিকে পালিয়ে যায়।...প্রায় ৫ হাজার লোক আমাদের কাপাসিয়াতে নিয়ে গেল। অবাক কাণ্ড যে একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর, একদল কনস্টেবল, তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর কাছেই ঘুরছিল। কিন্তু তারা একেবারেই নিশ্চুপ ছিল।

‘মাওলানা ভাসানী ঈদগাহ ময়দানের জনসভায় বক্তৃতা করলেন। তিনি ডা. গিয়াসুদ্দিনের বাড়িতে আরজু মিঞার নিয়ে আসা খাবার খেলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে হাতির পিঠে চড়ে আড়াল পৌঁছালাম।...আড়ালের জনসভায় ৮০ হাজারের মতো লোক উপস্থিত ছিল। জহির ভাই ঢাকা থেকে এসেছেন।

‘রশিদ মিঞা রাত ১১টার দিকে ভাসানী সাহেবের সঙ্গে দেখা করলেন। রাত দেড়টায় ঘুমাতে গেলাম (সূত্র: তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি, ১৯৫৪, প্রথমা প্রকাশন)।’

ভাবতে অবাক লাগে। নির্বাচনী প্রচারে তখনো প্রতিপক্ষের গুন্ডারা হামলা করত। তখনো পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করত। তবে জনতা ধাওয়া করলে গুন্ডারা পালাত।

  • মহিউদ্দিন আহমদ: লেখক ও গবেষক
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৮  

ঋণ আদায়ে চাই কঠোর আইনি পদক্ষেপ

সম্পাদকীয়

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কথা রেখেছেন। তিনি গত বুধবার জাতীয় সংসদে শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহল মনে করে, তাঁর প্রকাশিত তালিকার বাইরেও অনেক ঋণখেলাপি আছেন, রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা হিসাবের কারসাজিতে নিজেদের নাম আড়াল করতে সক্ষম হয়েছেন; যাঁদের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকের মালিকেরাও রয়েছেন।

ব্যাংকঋণের বিষয়টি পুরোপুরি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয় হলেও এর পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, যেসব বড় খেলাপির নাম প্রকাশ করা হয়নি, তা যত না আইনি জটিলতা, তার থেকে রাজনৈতিক সমস্যা বেশি।  

শীর্ষ ঋণখেলাপি হিসেবে যাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাঁদের লজ্জা হবে কি না কিংবা তাঁদের কাছে পাওনা অর্থ অদূর ভবিষ্যতে ফেরত পাওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব ভবিষ্যৎই দিতে পারে। ১০০ শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ব্যবসার সূত্রে রাজনীতিক বনে যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যাও কম নয়। যখন রাজনৈতিক প্রভাবে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে সেই ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে কোনো পরিচালক খেলাপি হন, তখন সেটি আইনের সুস্পষ্ট বরখেলাপ। কৌতূহলের বিষয় যে এই রাজনীতিক বনে যাওয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন আওয়ামী লীগের সাংসদ আছেন, তেমনি আছেন সাবেক মন্ত্রী এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতারাও। এঁরা যে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নিয়েছেন এবং পরিশোধে অনাগ্রহ দেখিয়ে যাচ্ছেন, তাতে সন্দেহ নেই।

অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঋণখেলাপির সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮ এবং এঁদের কাছে আটকা আছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। একদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি ব্যাংকের মালিকদের নানাভাবে প্রণোদনা দেওয়া, অন্যদিকে তাঁদের ঋণখেলাপি হওয়া ব্যাংকিং খাতের অসুস্থতারই লক্ষণ।

অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, খেলাপি ঋণের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকের সংখ্যা ৮৮ এবং  সিংহভাগ খেলাপি ঋণ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ সোনালী ব্যাংকের, ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। এরপর যথাক্রমে জনতা ব্যাংকে ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকে ৯ হাজার ২৮৪ কোটি, রূপালী ব্যাংকে ৪ হাজার ৯০১ কোটি, বেসিক ব্যাংকে ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি, কৃষি ব্যাংকে ২ হাজার ১৭৮ কোটি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে ২ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে পূবালী ব্যাংকে ২ হাজার ১১৬ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৫ হাজার ৭৬ কোটি, ইসলামী ব্যাংকে ৩ হাজার ৫২০ কোটি আর প্রাইম ব্যাংকে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা খেলাপি রয়েছে।

খেলাপি ঋণের সমস্যাটি বেশ পুরোনো এবং পূর্বাপর সব সরকার একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও ঋণখেলাপিদের কাছে প্রাপ্য অর্থ উদ্ধারের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।  

আরও উদ্বেগের বিষয়, যে সরকার খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ, সে সরকারের দুজন সাংসদের কোম্পানিও শীর্ষ খেলাপি ঋণের তালিকায় আছে। এগুলো হলো যথাক্রমে ঢাকার সাংসদ আসলামুল হকের নর্থ পাওয়ার ইউটিলিটি ও রাজশাহীর সাংসদ এনামুল হকের নর্দান পাওয়ার সল্যুশন। যাঁদের দায়িত্ব খেলাপি ঋণ আদায়ে আইন করা, তাঁরাই যদি খেলাপি ঋণে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরে আসবে কীভাবে?  

সংসদে শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করলেই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। তাঁর সময়েই হল-মার্ক, বেসিক ব্যাংকের মতো ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে।  ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে খেলাপি ঋণ আদায় করার বিকল্প নেই।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৮  

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হুমকির মুখে স্বাধীন সাংবাদিকতা

উৎপল রায় 

মঙ্গলবার বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের ওপর প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এই বিলের ওপর সংসদীয় কমিটির প্রতিবেদন পেশ করা হতে পারে বলে জানা গেছে। 

এদিকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল’ চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে অংশীজনদের মতামতকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটিকে দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি প্রস্তাবিত এই বিলটি জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার আগে সংশোধনীর তাগিদ দিয়েছেন সম্পাদক পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, প্রস্তাবিত এই আইন বাস্তবায়িত হলে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। 

এ বিষয়ে ‘ডেইলি স্টার’ সম্পাদক মাহ্‌্‌ফুজ আনাম মানবজমিনকে বলেন, ‘সংসদীয় কমিটি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছিল। দুই দফা আলোচনায় আমরা যে আভাস-ইঙ্গিত পেয়েছিলাম বিশেষ করে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম এবং পরবর্তীকালে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, এই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আমাদের সঙ্গে বসবে। কিন্তু পত্রিকায় দেখলাম প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়ে গেছে।

কিন্তু সেখানে আমাদের যে মূল দাবিগুলো ছিল সেগুলো বিকৃত হয়েছে বলে আমি মনে করি। এখানে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা, সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ার স্বাধীনতা একেবারেই সুরক্ষিত হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি যে এভাবে একটি ব্যুরোক্রেসি স্ট্রাকচারের মধ্যে গণমাধ্যমের পুরো স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত হচ্ছে। এই আইনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কম্পিউটার তল্লাশি করা, সিজ করা, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বন্ধ করা এবং প্রয়োজনবোধে গ্রেপ্তারের অধিকার দেয়া হয়েছে। এটি খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি প্রেস কাউন্সিলে পাঠানোর প্রস্তাব আমরা দিয়েছিলাম। প্রেস কাউন্সিল একটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান। তার আইনি কাঠামো আছে। যা কিছু হবে ওখানে শুনানি হবে। প্রেস কাউন্সিল থেকে যদি অনুমতি দেয়া হয় যে নিয়মের লঙ্ঘন হয়েছে তাহলে পদক্ষেপের ব্যাপার হতে পারে। আরেকটি প্রস্তাব করেছিলাম যে, দেশে যে তথ্য অধিকার আইন আছে, সেই আইনে গণমাধ্যমের জন্য যে ধরনের স্বার্থরক্ষা হয়েছে সেগুলো যেন সমুন্নত থাকে। একই সঙ্গে তথ্য অধিকার আইন এবং এই আইনে কোথাও যদি সাংঘর্ষিক হয় তাহলে তথ্য অধিকার আইন প্রাধ্যান্য পাবে। কিন্তু এগুলোর কোনো কিছুই রক্ষিত হয়নি বলে আমাদের ধারণা। আমি মনে করি এভাবে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে।’ 

‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, ‘এ বিষয়ে সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং অন্যান্য সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তার একটিও গ্রহণ না করা খুবই দুঃখজনক। সেই সময় আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অসঙ্গতিপূর্ণ ধারাগুলো বাদ দেয়া হবে। কিন্তু এর একটিও বাদ না দিয়ে শুধু শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেটি সাংবাদিকদের অধিকারের জায়গাটুকু হরণ করার মতো, সেগুলো বহাল রেখে এই আইন পাস করার যে প্রক্রিয়া তৈরি করা হচ্ছে এবং সংসদীয় কমিটির যে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে আমি এটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করছি। 
তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতেও দেখেছি, এধরনের কালাকানুন পাস হয়েছে। যার পরিণতি শুভকর হয়নি।’ নঈম নিজাম বলেন, সামাজিক গণমাধ্যমের জন্য সরকার আলাদা আইন করতে পারতো এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো। কিন্তু সেটি না করে মূলধারার গণমাধ্যমকে আরো কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই আইন পাস করা হচ্ছে। আমি আশা করবো, এখনো সময় আছে আইনটি সংসদে পাস হওয়ার আগে সংশোধনী এনে এ জায়গাগুলো সরকার পরিবর্তনের ব্যবস্থা করবে। এর অন্যথা হলে বাংলাদেশের আগামী দিনের গণমাধ্যম হুমকির মুখে পড়বে।’ 

ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি চূড়ান্ত করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন টিআইবি’র (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। 

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি। অংশীজনদের মতামত অগ্রাহ্য করে গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতা হরণের ঝুঁকিপূর্ণ ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল’-এর বিতর্কিত ধারাসমূহ অপরিবর্তিত রেখে সংসদীয় কমিটি কর্তৃক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। এই আইন প্রণয়নে সরকারকে আরো দূরদর্শী হওয়ার আহবান জানান ইফতেখারুজ্জামান। 

তিনি বলেন, একদিকে প্রস্তাবিত বিলের ৮, ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারাগুলোর ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্বেগ ও মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে, যা তাদের স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে বিতর্কিত ৩২ ধারার ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ অনুসরণের সুপারিশ করার দৃষ্টান্ত অত্যন্ত হতাশা ও দুঃখজনক।

তিনি বলেন, সরকারের ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দুর্নীতি প্রতিরোধ সুশাসন নিশ্চিত হওয়ার যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে প্রস্তাবিত আইনটি সেক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। 

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ৩২ ধারার অপপ্রয়োগের ফলে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্য জানার আইনি অধিকার ব্যাপকভাবে রুদ্ধ হবে। এছাড়া এই ধারাটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং যেকোনো ধরনের গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে, যা সংবিধানের মূল চেতনা, বিশেষ করে মুক্তচিন্তা বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশের পথ ব্যাপকভাবে রুদ্ধ করবে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৮ 

ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়ার অভিযোগ, চার দিন ধরে নিখোঁজ ৫ জন


রাজধানীর বিমানবন্দর ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তুলে নেয়ার চার দিন পরও নিখোঁজ রয়েছেন দুই শিক্ষার্থীসহ পাঁচজন। রাজধানীর বিভিন্ন  থানা ও ডিবি কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। এমনকি চার দিন পার হলেও তাদের আদালতে হাজির করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ ওই ব্যক্তিদের স্বজনরা। গতকাল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বজনরা এমন অভিযোগ করেছেন। স্বজনরা বলেছেন, চোখের সামনে সন্তানদের তুলে নেয়ার ঘটনায় তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। 

অবিলম্বে যেন তাদের সন্তানদের আদালতে হাজির করা হয়। নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুরের বাধাই এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা বারের শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাফিউল আলম ও তার ছোট ভাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনিরুল আলম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মো. আবুল হায়াত। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার পশুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ এবং ঢাকার ডেমরার সারুলিয়া এলাকার ডগাইর ফাজিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোশারফ হোসাইন মায়াজ। 

সংবাদ সম্মেলনে স্বজনদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাফিউল আলম ও মনিরুল ইসলামের মা রমিছা খানম। তিনি বলেন, ১২ই সেপ্টেম্বর রাতে আমাদের পাঁচ সন্তানকে ডিবি পরিচয়ে সাদা পোশাকধারীরা তুলে নিয়ে গেছে। ওই দিন পবিত্র হজ পালন শেষে আমি ঢাকা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাই। সন্ধ্যা সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি ফেরার জন্য একটি মাইক্রোবাসে উঠি। ঠিক তখনই একদল অপরিচিত লোক আমার দুই ছেলেকে গাড়ি থেকে নামানোর জন্য টানা-হেঁচড়া শুরু করে। তখন আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ওরা তাদের পরিচয়পত্র ও অস্ত্র দেখিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ দাবি করে। আমি তখন আমার ছেলেদের কী অপরাধ জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু তারা কিছু না বলে আমার চোখের সামনে থেকে আমার দুই ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় গাড়িতে থাকা আমার ছেলের বন্ধু মো. আবুল হায়াতকেও তারা তুলে নিয়ে যায়। পরে ওই রাতেই ডিবি পরিচয়দানকারীরা আমার ছেলে শাফিউলকে নিয়ে গভীর রাতে তার বাসায় যায়। সেখান থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা শাফিউলের বন্ধু অপর দুই রুমমেট শাফিউল্লাহ ও মোশারফ হোসাইন মায়াজকে তুলে নিয়ে যায়। 

রমিছা খানম বলেন, গত চারদিন ধরে দুই সন্তানের খোঁজ না পেয়ে আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। শুধু আমার না নিখোঁজ অন্যান্য সন্তানদের মায়েদেরও একই অবস্থা। সন্তানকে না পেয়ে তারা বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। দুজন মা তাদের সন্তানদের খোঁজ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছেন। তাই দয়া করে আমাদের সন্তানদের সন্ধান দেন। তারা যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তবে তার জন্য আইন আছে। তাদের আদালতে হাজির করে আইনের আওতায় আনুন। 

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করলে আইন অনুযায়ী স্বজনদের দেখা করার সুযোগ থাকে। কিন্তু আমরা সেই সুযোগও পাচ্ছি না। চার দিন পরও তাদের আটক না দেখানো দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থি। এমনকি উচ্চ আদালতের আদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন; যা অস্বাভাবিক বিষয়। আমরা এখন আমাদের সন্তানদের নিয়ে শঙ্কিত। আমাদের আকুল আবেদন সন্তানদের যেন আমাদের কাছে নিরাপদে হস্তান্তর করা হয়। তাদের নিয়ে যেন কোনো নাটক সাজানো না হয়। তারা যদি সত্যিই কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তাদের আদালতের মাধ্যমে বিচারের সম্মুখীন করা হোক। আমরা দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের কাছে আমাদের সন্তানদের আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি।

রমিছা খানম ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহর ছোট ভাই মো. নাসিরুউল্লাহ, মোশারফ হোসাইন মায়াজের বাবা সাইদুল ইসলাম, তার মা রোকেয়া বেগম ও বোন কামরুন নাহার। তবে মো. আবুল হায়াতের কোনো স্বজন উপস্থিত ছিলেন না। মোশারফ হোসাইন মায়াজের বড় বোন কামরুন নাহার মানবজমিনকে বলেন, আমরা চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে মায়াজ সবার ছোট। মাদরাসায় পড়ালেখার পাশাপাশি সে প্রাইভেট পড়ায়। ওই দিন বিকাল সাড়ে ৫টায় সে তার এক বন্ধুর সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অন্যান্য দিন ১০টার দিকে বাসায় ফিরলেও ওই দিন সাড়ে ১১টায় বাসায় ফেরেনি। এজন্য বাবা-মা সবাই চিন্তায় পড়ে যান। আমার মা আমার শোবার রুমে এসে কান্নাকাটি শুরু করে দেন। তার বন্ধুদের ফোন দিলেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। কামরুন নাহার বলেন, এভাবে সারা রাত ও পরের দিন যাত্রাবাড়ী থানাসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। পরে বিকালবেলা আমার এক মামার মাধ্যমে জানতে পারি তাকে ডিবি ধরে নিয়ে গেছে। শফিউল্লাহর ভাই নাসিরউল্লাহ বলেন, আমার ভাই যাত্রাবাড়ীর মীর হাজারীবাগে একটি মেসে থেকে লেখাপড়া করে। সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৮ 

Thursday, September 13, 2018

গরিব দেশে এত ধনকুবের!

সম্পাদকীয়

মাত্র কিছদিন আগেও বাংলাদেশ ছিল স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায়। উন্নয়নশীল দেশের সারিতে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করতে উন্নয়নের ধারা টেকসই করতে হবে। এমন একটি দেশে অতি ধনী বা ধনকুবের বৃদ্ধির হার মহাসম্পদশালী দেশ আমেরিকা কিংবা বিশ্বে এক নম্বর অর্থনীতির দেশ হতে চলা চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার তথ্য বিস্ময়কর বৈকি। এ যে গরিব দেশে ধনকুবেরের ছড়াছড়ি! 

ওয়েলথএক্স নামের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তিন কোটি ডলার বা আড়াইশ' কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে, বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে এমন লোকের সংখ্যা বেড়েছে ১৭.৩ শতাংশ, যা চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশের তুলনায় ঢের বেশি। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত ডিসেম্বরে বিভিন্ন ব্যাংকে এক কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ জমা রাখা বেসরকারি অ্যাকাউন্ট ছিল প্রায় ৫৫ হাজার। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ধনকুবের সংখ্যা কিন্তু উন্নত দেশগুলোতেই অনেক বেশি। চীন ও ভারতের মতো জনবহুল দেশেও আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। অর্থনীতির ভিত মজবুত হতে থাকলে, জিডিপি ও মাথাপিছু আয় বাড়লে ধনকুবের সংখ্যা বাড়তেই পারে। কিন্তু সেটা যদি আয়-বৈষম্য প্রকট করে, তবে উদ্বেগের কারণ হয় বৈকি। বাংলাদেশে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য এমন একটি ইঙ্গিত আগেই দিয়েছে।

তাদের হিসাবে, ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে ধনী পাঁচ শতাংশ পরিবারের আয় বেড়েছে বিপুল হারে; কিন্তু এর বিপরীতে সবচেয়ে দরিদ্র পাঁচ শতাংশের আয় হ্রাস পেয়েছে উদ্বেগজনক হারে। সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির মাসিক আয় প্রায় ৮৯ হাজার টাকা; সবচেয়ে গরিবের ৭৩৩ টাকা! এ বৈষম্য বাংলাদেশের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে মোটেই সঙ্গতিপূর্ণ নয়। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যারা, তাদের নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। কেন এ বৈষম্য? 

গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে হঠাৎ করেই কিছু লোক আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করছে। ব্যাংকের ঋণ নিয়ে সময়মতো ফেরত দিচ্ছে না। কেউ কেউ আদৌ ফেরত দিতেও আগ্রহী নয়। এ দলে কয়েকশ', এমনকি দুই-তিন হাজার কোটি আত্মসাতের ঘটনাও রয়েছে। কেউ কেউ বড় বড় নির্মাণ কাজ কিংবা ব্যবসায়িক চুক্তি পায়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে রফতানি প্রণোদনা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশের ব্যাংকে তা জমা রাখে। নদী-চর-সরকারি খাস জমি কিংবা দরিদ্রদের ভূখণ্ড দখল করে চলতে পারে আবাসন ব্যবসা। যথাযথ আইনের শাসন না থাকায় তাদের ধনী হওয়ার গতি থাকে বাঁধনহারা। তারা ব্যক্তিগত আয়কর কিংবা করপোরেট কর ফাঁকি দিয়েও পার পেয়ে যায়। ফলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সরকার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থের জোগান পায় না। এ ঘাটতি পূরণে বাড়তে থাকে পরোক্ষ করের বোঝা, যা থেকেও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল এ মধুলোভী চক্রের জানা। অধিকতর সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের এমন পরিণতি তো কাম্য ছিল না।

  • কার্টসিঃ সমকাল/ সেপ্টেম্বর ১৩,২০১৮ 

Unrealised loan totals Tk 1.31t from 230,658 defaulters: Muhith

The number of loan defaulters in the country reached 230,658, and the amount of unrecovered loan from them totalled over Tk 1.31 trillion until June 2018, according to the central bank.
Finance Minister A M A Muhith disclosed the information in the Jatiyo Sangsad (JS) on Wednesday in response to a query of Member of Parliament (MP) Pinu Khan.

The finance minister also informed JS that the loan defaulters were involved with 88 banks and financial institutions (FIs).

Of the banks, the volume of default loans with Sonali Bank was Tk 186.62 billion, followed by Janata Bank Tk 148.40 billion, Agrani Bank Tk 92.84 billion, Rupali Bank Tk 49.01 billion, Basic Bank Tk 85.76 billion, Bangladesh Krishi Bank Tk 21.78 billion, and Bangladesh Development Bank Tk 23.32 billion.

The amount of default loans with Pubali Bank was Tk 21.16 billion, National Bank Tk 50.76 billion, Islami Bank Tk 35.20 billion, and Prime Bank Tk 35.85 billion, Mr. Muhith also said.

Mr Muhith unveiled the list of the top 100 loan defaulters that includes Elias Brothers, Quantum Power System, Remix Footwear, Max Spinning, Rubia Vegetables Industries, Rising Steel, Dhaka Trading House, Bentex Industries, Anowara Spinning, Crescent Leather Products, Yasin Enterprise, Chowdhury Knitwear, Siddique Traders, Rupali Composite Leatherwear, Alpha Composite Towels, Hall-Mark Fashion, Munnu Fabrics, Fair Yarn Processing, Fair Trade Fabrics, Shaharish Composite Towels, Mark International, Suruj Miyan Jute Spinning Mills, Pacific Bangladesh Telecom, Saleh Carpet Limited, and Padma Poly Cotton Knit Fabrics.

Other defaulters include S K Steel, Helpline Resources, H. Steel Re-rolling, Ottobi, Bismillah Towels, Taipei Bangla Fabrics, Dhaka North Power Utility, T & Brothers Knit Composite, Tania Enterprise Unit-2, Six Seasons Apartment, Islam Trading Consortium, Rahman Spinning Mills, Japan-BD Sec Printing and Papers, Bangladesh Industrial Finance Company, Semat City General Trading, M K Ship Bulders, Cotton Corporation, National Steel, M B M Garments and Textile, Sonali Jute Mills, Expertech Limited, Walmart Fashion, Sad Musa Fabrics, Chittagong Ispat, Agro Industries, Himalaya Paper and Board Mills, Amader Bari Ltd, Emdadul Haq Bhuiyan, Chowdhury Towels, Chowdhury Leather, Earth Agro Farm, Northern Power Solution, Mac Ship Builders, The Arab Contractors, One Denim Mills, Liberty Fashion Ware, Biswas Garment, Mastered Trading , Hindul Wally Trading, Sagir & Brothers, Globe Metal Complex, Ornate Services and Jalal and Sons.

  • Courtesy: The Financial Express/ Sep 13, 2018