Search

Wednesday, September 19, 2018

A blow to the fundamentals of the Constitution

EDITORIAL

Incorporate suggested changes into the Digital Security Bill

We are extremely disappointed and shocked that a parliamentary standing committee report on the said Bill has been placed before the House without a single substantial change. The role of the JS body in this regard is disappointing. We are constrained to suggest that the parliamentary body has not only abdicated its duty as the representative of the people to protect their interest, it has, by its inaction, also relinquished its oath-bound obligation to defend the constitution by upholding its fundamental values, one of which is the freedom of speech and the media. It has failed the people woefully.

The government may put up bills in a manner that would suit them. But it is for the MPs, the people's representatives, to ensure that in fulfilling the government's agenda, the rights of the people are not trampled and constitutional guarantees are not abridged. Forwarding the report on the bill as it is to the parliament only suggests that the JS body did not take the public concerns, especially those of the media, seriously since not a single point suggested by the editors, journalists and media bodies has been incorporated. What is equally shocking is that the body has deemed it fit to revalidate an archaic, colonial and anti-people act like the Official Secrets Act.

We need hardly remind that in the day and age of technology, the digital platform has become an integrated and inseparable part of all media, and any effort to stifle it will in effect choke the mainstream media and thus the freedom of expression. In trying to prevent digital crime, the government will end up throttling the digital space.

We urge the parliament not to rush through its passage, reconsider the whole process and listen to the concerns raised. There is still time till the bill is passed to prevent an anti-people law from being enacted.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 19, 2018

Tuesday, September 18, 2018

ডিবি পরিচয়ে অপকর্মকারী কারা?

গোলাম মোর্তোজা

পূর্বাচল থেকে গুলিবিদ্ধ তিন যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিচয়ও মিলেছে তিন যুবকের। কারা, কেন, কী কারণে তাদের গুলি করে হত্যা করল, কিছুই জানা যায়নি। পুলিশ কোনো ক্লু পাচ্ছে না।
ক্লু নিয়ে সামনে এলেন নিহতদের পরিবার। পরিবার সূত্রে জানা গেল, ১২ সেপ্টেম্বর রাতে পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে যুবকদের তুলে নেওয়া হয়েছিল। ডিবির জ্যাকেট পরা পাঁচ-ছয় জন তাদের তুলে নিয়েছিল। তুলে নেওয়ার সময় তারা মানিকগঞ্জের ডিবি বলে পরিচয় দিয়েছিল। সন্ধান করতে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা ফেরিঘাটের প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে এসব তথ্য জেনেছেন। পূর্বাচলে তাদেরই লাশ পাওয়া গেছে ১৪ সেপ্টেম্বর।

পুরনো কিছু প্রশ্ন আবার নতুন করে সামনে এসেছে। রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি কেন মানুষকে তুলে নিবে, কেনই বা হত্যা করবে? এটা তো বিশ্বাসযোগ্য কোনো কথা হতে পারে না। তাহলে ডিবি পরিচয়ে কারা মানুষকে তুলে নিচ্ছে, হত্যা করছে?

এই প্রশ্নটি ডিবি পুলিশের ভেতরে আসছে কি না, নিশ্চিত নই। তবে সংবাদকর্মী থেকে সাধারণ জনমানুষের ভেতরে ‘প্রশ্ন- আতঙ্ক’ বড়ভাবে কাজ করছে।

নানা কারণে আমরা তো পুরনো ঘটনাগুলো মনে রাখতে পারি না। মনে করার জন্যে ‘ডিবি’ লিখে যদি একটু গুগলের আশ্রয় নেন, তবে অসংখ্য সংবাদের সন্ধান পাবেন। তার কয়েকটি শিরোনাম-

‘ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়ার পর ৫ জন নিখোঁজ’

‘ডিবি পরিচয়ে এক নারীকে তুলে নিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি’

‘চাঁদা দাবি, চট্টগ্রামে ৮ ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা’

‘ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার’

‘ডিবি পরিচয়ে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, এসআইসহ ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার’

এমন আরও বহু শিরোনাম তুলে ধরা যায়, দেওয়া যায় বিস্তারিত বিবরণ। তা দিয়ে লেখার পরিধি বাড়ানোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এসব সংবাদ সত্য, না অসত্য? ডিবির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্যে বিশেষ কোনো মহল, এসব অপকর্ম করছে কি না?

প্রশ্নগুলোর উত্তরের সন্ধান করা ডিবিরই দায়িত্ব। সংবাদগুলো অসত্য হলে তা দেশের মানুষকে জানানো দরকার। বিশেষ কোনো মহল এসব করে থাকলে, তাদের সন্ধান- ধরাও ডিবিরই দায়িত্ব। এই কাজ ডিবি করছে কি না? যত জোর দিয়ে করা প্রত্যাশিত তা করছে কি না?


কক্সবাজারে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা ১৭ লাখ টাকাসহ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এই সদস্যরা সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

একেবারে করছে না, তা বলা যাবে না। বেশ কিছু ‘ভুয়া ডিবি’ বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। ‘ভুয়া ডিবি’ গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাবও। যারা ডিবি পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি ছিনতাই করেছে বা করার চেষ্টা করেছে।

তবে ডিবির বিরুদ্ধে যত বড় অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা পুলিশের ভাবমূর্তি জনমনে যে গতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, সেই গতিতে ও আন্তরিকতায় ডিবি পুলিশকে তৎপর হতে দেখা গেছে, তা বলা যাবে বলে মনে হয় না। ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া বা অপহরণের একটি অভিযোগ আসার পরে, কখনো বলা হয়েছে ‘আমরা করিনি’।

কখনো কোনো কিছু না বলে চুপ থাকা হয়েছে।

তিনটি ঘটনা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করছি।

ক. কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের ঢাকা মেডিকেলের সামনে থেকে টেনে হেঁচড়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এসেছিল ডিবির বিরুদ্ধে। কয়েক ঘণ্টা নানা শঙ্কা চলল। তারপর ডিবির পক্ষ থেকে বলা হলো, তুলে আনা হয়নি- তথ্য জানার জন্যে তাদের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছিল।

খ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামসুন্নাহার হলের সামনে থেকে একজন ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল।

গ. নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদল সভাপতিকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এলো ১৫ সেপ্টেম্বর। দুই দিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলো ১৭ সেপ্টেম্বর রনিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।

দুইটি ক্ষেত্রে যাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল, কয়েক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রশ্ন হলো ‘তুলে নেওয়া’র দায় ডিবি নিলো কেন? কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী নেতারা আত্মগোপনে ছিলেন না। তথ্য জানার জন্যে তাদের ডাকা যেতে পারত। সাড়া না দিলে, অন্য ব্যবস্থার কথা নিশ্চয় ভাবা যেত।

শামসুননাহার হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছাত্রী থাকেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের তো বহুবিধ পথ ছিল। হল প্রভোস্টের কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেত। অভিযোগ খুব গুরুতর হলে তাকে নিশ্চয়ই ডিবি কার্যালয়েও নিয়ে যাওয়া যেত। তা না করে সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাস থেকে একজন ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার আতঙ্ক ছড়ানোর দায় ডিবি কেন নিলো?

রনিকে যদি ১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, তবে ১৫ সেপ্টেম্বর ডিবির বিরুদ্ধে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এলো কেন? ডিবি কি তা তদন্ত করেছে, করবে?

মানুষের কাছে যখন এসব প্রশ্নের উত্তর থাকে না, তখন সামনে যে সংবাদ আসে - সবই বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়ে যায়। সত্য-অসত্য-গুজব যাই হোক না কেন।

সেই বিশ্বাসযোগ্যতা পোক্ত হয়ে যায়, যখন সুনির্দিষ্ট কিছু সত্যতা মানুষের সামনে আসে। তেমন দুইটি ঘটনা-

ঘটনা এক: ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে ধরা পড়লেন ১১ জন ডিবি সদস্য। যারা কাফরুলের একটি ক্লাবে র‍্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে ফিরছিলেন। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের এই ঘটনা ফলাও করে গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছিল।

ঘটনা দুই: কক্সবাজারের এক ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে ১৭ লাখ টাকা আদায় করেছিল ডিবি সদস্যরা। মাইক্রোবাসযোগে ফেরার পথে টাকাসহ ৬ ডিবি সদস্যকে আটক করে সেনা সদস্যরা। এটাও ২০১৭ সালের ঘটনা।

ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ আসছে, যা অকল্পনীয়। নারায়ণগঞ্জে ৭ অপহরণ হত্যা র‍্যাব কর্তৃক সংঘটিত, এই সত্য জানার পর মানুষের কাছে কোনো কিছুই যেন আর অবিশ্বাস্য মনে হয় না। তার বিচার চলছে। বলা হয় ‘কাউকে ছাড় দেওয়া’ হচ্ছে না। ডিবি বলবে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেই ব্যবস্থা মানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘প্রত্যাহার’ এবং কিছুদিন পর আবার পদায়ন। পুরো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবশ্যই অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আবার একথাও স্বীকার করতে হবে যে, ডিবি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিছু সংখ্যকের দায় পুরো বাহিনী নেবে কি না, নিতে হবে কি না?

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে শৈথিল্য দৃশ্যমান হলে, কিছু সংখ্যকের দায় পুরো বাহিনীকে বহন করতে হয়।

চাঁদাবাজি- খুন- ইয়াবাসহ মাদক চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে ডিবি- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গাইবান্ধার সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ যখন পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে, পুলিশি তদন্তে তার প্রমাণ মিলছে না। একজন বা দুইজন পুলিশ সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিচ্ছে, অনেক পুলিশ দাঁড়িয়ে তা দেখছে, আগুন দেওয়ায় সহায়তা করছে-এই ভিডিও চিত্র সামনে আসার পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ‘প্রত্যাহার’ করা হচ্ছে।

অপহৃত হওয়ার পর যারা ফিরে এসেছেন, কারা তাদের অপহরণ করেছিল, তা অনুসন্ধান করতে দেখা যায়নি।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলো ১২ জন শিক্ষার্থীকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছিল ৫ সেপ্টেম্বর। ডিবি তাদের আদালতে হাজির করেছে ৫ দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর। ৫ সেপ্টেম্বর যে তাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল, তা ডিবি স্বীকার না করে বলেছে ৯ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করেছে। পরিবারের না ডিবির, কার বক্তব্য সত্য? মানুষ ভেবে নিচ্ছেন তার মতো করে।

এমন বাস্তবতায় ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া মানুষের লাশ পাওয়া যাওয়ার সংবাদ, মানুষের মনে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া জন্ম দেয়, ডিবি বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সম্পর্কে মানুষের মনোভাব কেমন হয়, নীতি- নির্ধারকদের জন্যে তা জানাটা কি অতি জরুরি নয়?

  • কার্টসিঃ The Daily Star/ Sep 18,2018 

রাঘববোয়াল পুঁজি লুটেরাদের কথা

মইনুল ইসলাম

১২ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘বিশ্বে অতি ধনীর উত্থানে শীর্ষে বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি একটি বড় দুঃসংবাদ। মার্কিন গবেষণা সংস্থা ‘ওয়েলথ এক্স’-এর ২০১৮ সালের ওয়ার্ল্ড আলট্রা ওয়েলথ রিপোর্টের গবেষণা মোতাবেক ২০১২ সাল থেকে ২০১৭—এই পাঁচ বছরে অতি ধনী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সব ধনী দেশকে পেছনে ফেলে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে। ওই সময় বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে ১৭.৩ শতাংশ হারে। ওই প্রতিবেদনে ৩ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি নিট সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিদের অতি ধনী ‘আলট্রা-হাই নেট-ওয়ার্থ ইন্ডিভিজ্যুয়াল’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, বিশ্বে অতি ধনী ব্যক্তির সংখ্যা মোট ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৫ জন। তাঁদের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আছেন যুক্তরাষ্ট্রে—৭৯ হাজার ৫৯৫ জন। দ্বিতীয় স্থানে জাপান, সে দেশে আছেন ১৭ হাজার ৯১৫ জন। তৃতীয় থেকে দশম স্থানে আছে গণচীন (১৬ হাজার ৮৭৫ জন), জার্মানি (১৫ হাজার ৮০ জন), কানাডা (১০ হাজার ৮৪০ জন), ফ্রান্স (১০ হাজার ১২০ জন), হংকং (১০ হাজার ১০ জন), যুক্তরাজ্য (৯ হাজার ৩৭০ জন), সুইজারল্যান্ড (৬ হাজার ৪০০ জন) ও ইতালি (৫ হাজার ৯৬০ জন)। অন্য দেশগুলোর ধনকুবেরের সংখ্যা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। এই ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৫ জন ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১২.৯ শতাংশ, কিন্তু তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ছিল ১৬.৩ শতাংশ। তাঁদের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে ৩১.৫ ট্রিলিয়ন (মানে সাড়ে ৩১ লাখ কোটি) ডলারে। গত পাঁচ বছরে ধনকুবেরের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গণচীন ও হংকংয়ে, কিন্তু ধনকুবেরের সংখ্যার প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ১৭.৩ শতাংশ, বাংলাদেশে। গণচীনে ধনকুবেরের প্রবৃদ্ধির হার ১৩.৪ শতাংশ।

অতি ধনীর এই দ্রুততম প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশের জন্য মহা বিপৎসংকেত হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। কারণ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের জিডিপি এবং জিএনআই প্রবৃদ্ধির হার যেভাবে বেড়ে চলেছে, সে প্রবৃদ্ধি এই ধনকুবেরদের দেশে-বিদেশের সম্পদের প্রবল স্ফীতি ঘটানোর অর্থই হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফলের সিংহভাগ দেশের ধনাঢ্য গোষ্ঠীগুলোর কাছে জমা হচ্ছে। সোজা কথায়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ন্যায্য হিস্যা থেকে দেশের শ্রমজীবী জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে ক্ষমতাসীন মহলের মারাত্মক ভ্রান্ত নীতির কারণে। দেশের আয় ও সম্পদের এহেন মারাত্মক পুঞ্জীভবন বর্তমান সরকারের ‘জনগণের সরকার’ দাবিকে মুখ ভ্যাঙচাচ্ছে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার রাজনীতিকে ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজম’-এর খারাপ নজির হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে উপহাসের পাত্রে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বলে দাবিদার দল আওয়ামী লীগের জন্য এই শিরোপা অত্যন্ত লজ্জাজনক। 

বাংলাদেশের চারটি মূলনীতির মধ্যে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র আবার পুনঃস্থাপিত হয়েছে। ২০১১ সালে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার সে রায়কে সংবিধানে ফিরিয়ে এনেছে। কিন্তু আমি বারবার জানিয়ে যাচ্ছি যে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করা সত্ত্বেও সরকার এখনো ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’র অহিফেনের মৌতাতে মেতে রয়েছে। ‘স্বজনতোষী পুঁজিবাদ’ (ক্রোনি ক্যাপিটালিজম) আজও নীতিপ্রণেতাদের ধ্যানজ্ঞান হিসেবে ‘হলি রিটের’ মর্যাদায় বহাল রয়ে গেছে। এসব পণ্ডিতম্মন্য ব্যক্তি সারা বিশ্বে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্যকে চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। বাংলাদেশেও এই ক্রমবর্ধমান বৈষম্য যে মহাসংকটে পরিণত হয়ে যাচ্ছে, তার আলামত বারবার পেয়েও তাঁরা নির্বিকার! 

গত বছরের ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) তাদের পরিচালিত হাউসহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে ২০১৬-এর তথ্য-উপাত্তগুলো একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল, যেগুলো ১৮ অক্টোবর ২০১৭ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় পরিচালিত এবারের জরিপে ৪৬ হাজার হাউসহোল্ড বা খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। জরিপের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিম্নরূপ:

১. বাংলাদেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থানকারী জনসংখ্যার অনুপাত ২০১৬ সালে ২৪.৩ শতাংশ ছিল, যে হার ২০১০ সালে ছিল ৩১.৫ শতাংশ। অতএব, ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল-এই ছয় বছরে দারিদ্র্য কমেছে ৭.২ শতাংশ। মানে, ওই ছয় বছরে প্রতিবছর গড়ে ১.২ শতাংশ হারে দারিদ্র্য কমেছে। এর আগের পাঁচ বছর মানে ২০০৫-১০ মেয়াদে দারিদ্র্য হ্রাসের হার ছিল প্রতিবছর ১.৭ শতাংশ। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে দারিদ্র্য হ্রাসের হার ক্রমেই শ্লথ হয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণটাও জরিপের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে ধরা পড়েছে, সেটা হলো বাংলাদেশে আয়ের বৈষম্য বেড়ে মারাত্মক পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

২. অর্থনীতিশাস্ত্রে আয়ের বৈষম্য পরিমাপের বহুল ব্যবহৃত পরিমাপক হলো জিনি (বা গিনি) সহগ, যেটার মান এবারের জরিপে ২০১০ সালের ০.৪৬৫-এর চেয়ে বেড়ে ২০১৬ সালে ০.৪৮৩-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। জিনি সহগের মান বাড়লে বোঝা যায় যে দেশে আয়ের বৈষম্য বেড়েই যাচ্ছে। যেসব দেশের জিনি সহগ ০.৫ পেরিয়ে যায়, সেসব দেশকে উন্নয়ন তত্ত্বে উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশ হিসেবে অভিহিত করা হয়, বাংলাদেশ এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। মহাজোট সরকার নিজেদের দরিদ্রবান্ধব সরকার হিসেবে প্রোপাগান্ডা চালাতে সিদ্ধহস্ত। তাদের আমলে আয়বৈষম্য বেড়ে গেছে, এটা তাদের এহেন মিথ্যাচারের প্রতি চরম চপেটাঘাত বৈকি!

৩. আরও একটা উপাত্ত একই সাক্ষ্য বহন করছে: ছয় বছর আগে দেশের ১০ শতাংশ উচ্চবিত্ত ধনাঢ্য ব্যক্তির দখলে দেশের মোট জিডিপির ৩৫.৮৪ শতাংশ ছিল, ২০১৬ সালে ওই ১০ শতাংশ মানুষের হাতে দেশের ৩৮.১৬ শতাংশ আয় জমা হয়ে যাচ্ছে। এর বিপরীতে ১০ শতাংশ দরিদ্রতম মানুষ ২০১৬ সালে মোট আয়ের মাত্র ১.১ শতাংশের মালিক হতে পেরেছে, যেখানে ২০১০ সালে তারা মোট আয়ের ২ শতাংশের মালিক ছিল। একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর হাতে যে জিডিপি পুঞ্জীভূত হয়ে যাচ্ছে, এটা তার অকাট্য প্রমাণ। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে আঁকড়ে ধরলে এটাই তো হবে, নয় কি?

৪. দেশের দরিদ্রতম ৫ শতাংশ মানুষের কাছে ২০১০ সালে ছিল ০.৭৮ শতাংশ আয়, কিন্তু ২০১৬ সালে তাদের কাছে মাত্র ০.২৩ শতাংশ আয় গিয়ে পৌঁছাতে পেরেছে। তার মানে, দেশের হতদরিদ্র ব্যক্তিরা ওই ছয় বছরে আরও দরিদ্র হয়ে গেছে।

১৯৭৫ সাল থেকে এ দেশের সরকারগুলো ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’র ডামাডোলে শরিক হয়ে ব্যক্তি খাত ও বাজারীকরণকে আঁকড়ে ধরার ফলে এ দেশে আয় ও সম্পদ বণ্টনের বৈষম্য বেড়ে বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে গেছে। ১৯৭২ সালে বিআইডিএসের গবেষণায় নির্ণীত হয়েছিল যে বাংলাদেশের আয়বৈষম্য পরিমাপক জিনি সহগ ০.৩২। ২০১৬ সালে এসে জিনি সহগ ০.৪৮৩-এ পৌঁছে গেছে। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে ২২টি কোটিপতি পরিবারের কথা বলা হতো, যারা রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় পাকিস্তানের শিল্প-বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ওই ২২ পরিবারের মধ্যে দুটো পরিবার ছিল পূর্ব পাকিস্তানের, তা-ও একটি ছিল অবাঙালি। ওই বাংলাদেশেই ২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মোতাবেক ২৩ হাজার ২১২ জন কোটিপতি ছিলেন। 

২০১৪ সালে তাঁদের ওই সংখ্যা ৫০ হাজার অতিক্রম করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যাংকের আমানতকারীদের সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার অতিক্রম করেছে বলে খোদ অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। 

এসব তথ্যের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল যে একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে গিয়ে পুঞ্জীভূত হয়ে যাওয়ার কিংবা তাদের মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়ার বিপৎসংকেত পাওয়া যাচ্ছে, সে ব্যাপারে ক্ষমতাসীন সরকারের কি কোনো করণীয় নেই? সাধারণ জনগণের কাছে বোধগম্য যেসব বিষয় এই বিপদটার জানান দিচ্ছে সেগুলো হলো: 

১. দেশে প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে ১১ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেখানে মা-বাবার বিত্তের নিক্তিতে সন্তানের স্কুলের এবং শিক্ষার মানে বৈষম্য সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে; ২. দেশে চার ধরনের মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে; ৩. ব্যাংকের ঋণ সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশের কাছে কুক্ষিগত হয়ে যাচ্ছে এবং ঋণখেলাপি বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে; ৪. দেশের জায়গাজমি, অ্যাপার্টমেন্ট, প্লট, ফ্ল্যাট, মানে রিয়েল এস্টেটের দাম প্রচণ্ডভাবে বেড়েছে; ৫. বিদেশে পুঁজি পাচার মারাত্মকভাবে বাড়ছে; ৬. ঢাকা নগরীতে জনসংখ্যা ১ কোটি ৭৫ লাখে পৌঁছে গেছে, যেখানে আবার ৪০ শতাংশ বা ৭০ লাখ মানুষ বস্তিবাসী; ৭. দেশে গাড়ি, বিশেষত বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে; ৯. বিদেশে বাড়িঘর, ব্যবসাপাতি কেনার হিড়িক পড়েছে; ১০. ধনাঢ্য পরিবারগুলোর বিদেশ ভ্রমণ বাড়ছে; ১১. উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের বিদেশে পড়তে যাওয়ার খায়েশ বাড়ছে; ১২. উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য ঘন ঘন বিদেশে যাওয়ার খাসলত বাড়ছে; ১৩. প্রাইভেট হাসপাতাল ও বিলাসবহুল ক্লিনিক দ্রুত বাড়ছে; ১৪. প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার হিড়িক পড়েছে; ১৫. দেশে ইংলিশ মিডিয়াম কিন্ডারগার্টেন, ক্যাডেট স্কুল, পাবলিক স্কুল এবং ও লেভেল/এ লেভেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার মচ্ছব চলছে এবং ১৬. প্রধানত প্রাইভেট কারের কারণে সৃষ্ট ঢাকা ও চট্টগ্রামের ট্রাফিক জ্যাম নাগরিক জীবনকে বিপর্যস্ত করছে।

ইন্টারনেটে উইকিপিডিয়ায় খোঁজ নিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়—১৮৭০ থেকে ১৯১৪ সালের পুঁজিবাদী বিকাশে ‘রবার ব্যারন’দের ভূমিকার বর্ণনা পাওয়া যাবে, যার সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর ৪৭ বছরের রাঘববোয়াল পুঁজি লুটেরাদের অবিশ্বাস্য ধনসম্পদ আহরণের পদ্ধতির আশ্চর্যজনক মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। এসব রবার ব্যারন সৃষ্টির জন্য কি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম আমরা?

  • মইনুল ইসলাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৮,২০১৮ 

বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ বিআরটি হচ্ছে না

প্রতিবন্ধক ফ্লাইওভার

শামীম রাহমান

পরিকল্পনা ছিল, গাজীপুর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রীদের দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে দেয়ার। এ লক্ষ্যে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বিশেষায়িত বাস লেনের (বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি) একাংশের কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি বেধেছে বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ অংশটি বাস্তবায়নে। মগবাজার-মৌচাক ও প্রস্তাবিত শান্তিনগর-ঝিলমিল ফ্লাইওভারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় অংশটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে সরকার।

সরকারের কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) গাজীপুর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি নির্মাণের সুপারিশ ছিল। এটিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল বিআরটি-৩ নামে। প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান না হওয়ায় ২০১২ সালে প্রকল্পটির একাংশ (গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত) অনুমোদন দেয় সরকার, যার কাজ চলছে। বিআরটির অন্য অংশটি হলো বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ, তবে এটি আর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গাজীপুর-কেরানীগঞ্জ বদলে এখন বিআরটি লাইনটি বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখান থেকে ফিডার সার্ভিসের মাধ্যমে ফার্মগেট ও গুলিস্তানে বিআরটির যাত্রীদের পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান ডিটিসিএর কর্মকর্তারা। এটিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে পার্ট অব দ্য বিআরটি নামে। 

বিআরটি বাস্তবায়ন-সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ দলের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল হক। বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ অংশে বিআরটি নির্মাণে সমস্যার বিষয়ে তিনি বলেন, বিমানবন্দর থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত বিআরটি লাইনটি যাওয়ার কথা ছিল মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-বিজয়নগর-শান্তিনগর হয়ে। এ পথে লাইনটি এগিয়ে নিতে প্রথম বাধার মুখে পড়বে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারে। ফ্লাইওভারের নিচে বড় বড় খুঁটির কারণে বিআরটির জন্য লেন বের করা যাবে না। আবার উপরেও মাত্র দুটি লেন। যদি ফ্লাইওভারটি ছয় লেন থাকত, তাহলে দুপাশে একটি করে লেন বিআরটির জন্য রাখা যেত।

শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত শান্তিনগর-ঝিলমিল ফ্লাইওভারের অ্যালাইনমেন্ট আর বিআরটি-৩-এর অ্যালাইনমেন্ট একই। এ ফ্লাইওভারও থাকবে রাস্তার মাঝখানে। এসব কারণে বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ বিআরটির পরিকল্পনাই আর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।

বিকল্প পরিকল্পনার বিষয়ে অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, গাজীপুর-বিমানবন্দর বিআরটি হচ্ছে। চিন্তার বিষয় হচ্ছে, এটি ব্যবহার করে যেসব যাত্রী বিমানবন্দরে এসে নামবে, তাদের কীভাবে শহরের ভেতরে আনা হবে। এ কারণে বিআরটি-৩-এর মূল নকশা বাস্তবায়ন না করে গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশটি সম্প্রসারণ করে মহাখালী পর্যন্ত এগিয়ে নেয়া হবে। মহাখালী থেকে চালু করা হবে ফিডার সার্ভিস। একটি ফিডার সার্ভিস যাত্রীদের নিয়ে যাবে ফার্মগেটে। আরেকটি ফিডার সার্ভিস দিয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত যাত্রীদের পৌঁছে দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

বর্তমান বিআরটি-৩-এর গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশের কাজ চলছে। গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সেতু বিভাগ (বিবিএ) ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লাইনটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার বিআরটি লেন। এর মধ্যে পড়েছে টঙ্গী সেতু। এটি বিআরটি প্রকল্পের আওতায় ১০ লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণ করা হচ্ছে ছয়টি ফ্লাইওভার, একটি বাস ডিপো, ১১৩টি সংযোগ সড়ক ও ২৪ কিলোমিটার উচ্চক্ষমতার ড্রেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে অংশটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ বিআরটি বাস্তবায়ন না হলে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশটি তেমন কাজে আসবে না।

পরিবহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মিজানুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ঢাকার যানজট নিরসনের সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম হতে পারে মেট্রোরেল ও বিআরটি। সরকারের কৌশলগত পরিকল্পনাতেও গাজীপুর-কেরানীগঞ্জ বাস ট্রানজিটের সুপারিশ ছিল। এ পরিকল্পনার কথা না ভেবে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার বানানো হয়েছে। শান্তিনগর-ঝিলমিলে ফ্লাইওভার বানানোরও উদ্যোগ নিয়েছে। এসব ভুল পরিকল্পনার কারণে যদি বিআরটি লাইনটি অর্ধেক বাস্তবায়ন করেই থেমে যেতে হয়, তাহলে যেটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে তার সুফলও মিলবে না।

তিনি আরো বলেন, উদ্দেশ্য ছিল বিআরটি দিয়ে কেরানীগঞ্জ থেকে গাজীপুরে নির্বিঘ্নে যাত্রীদের পৌঁছে দেয়া। অর্ধেক বিআরটি দিয়ে সেটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিআরটি লাইনটি ঢাকা-ময়মসসিংহ সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করার কথা ছিল। কেরানীগঞ্জ-বিমানবন্দর বিআরটি না হলে সে লক্ষ্যও পূরণ হবে না।

বিআরটির পরিকল্পনা, সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ হয়েছে ডিটিসিএর তত্ত্বাবধানে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ কাজগুলো করা হয়েছে। তবে বিআরটির এ অংশটির সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়ন করলেও অর্থায়নে রাজি হয়নি বিশ্বব্যাংক। কারণ হিসেবে তারা শান্তিনগর-ঝিলমিল ফ্লাইওভারের অনুমোদনকে দায়ী করেছে।

বিআরটি প্রকল্পে সৃষ্ট এসব জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার আনিসুর রহমান বলেন, গাজীপুর-বিমানবন্দর অংশের কাজ চলছে। আর বিমানবন্দর-কেরানীগঞ্জ অংশের বদলে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী পর্যন্ত বিআরটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা শুধু পরিকল্পনা করে দিই, বাস্তবায়ন করি না। এ অংশটি সওজ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন ও এলজিইডি বাস্তবায়ন করবে। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৮,২০১৮

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট রয়েছে - টিআইবি


বর্তমানে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া নিয়ে আস্থার সংকট রয়েছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হতে পারে যদি রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করে। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আস্থার সংকট রয়েছে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি’র নিজ কার্যালয়ে ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাকে একচ্ছত্রভাবে কেন্দ্রীকরণের প্রবণতা বিদ্যমান। টিআইবি মনে করে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং হেরে যাওয়া দলের ফল প্রত্যাখ্যান করার কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা থাকলে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে টিআইবি। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা রয়েছে।
জনগণের মধ্যেও এই আস্থাহীনতা দেখা যাচ্ছে।

রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ইশতেহার প্রকাশে আগ্রহী হলেও পরবর্তীতে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে তৎপরতা চোখে পড়ে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত কোনো কোনো অঙ্গীকার পূরণ হলেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গীকার কখনো পূরণ করা হয় না। এসব অঙ্গীকারের মধ্যে ছিল কার্যকর সংসদ, ন্যায়পাল নিয়োগ, কালো আইন বাতিল, জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও-টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন এবং বিতর্কিত বা নিয়ন্ত্রণমূলক আইন প্রণয়ন ইত্যাদি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর যেমন ইশতেহার বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়েছে, তেমনি দুর্নীতি দমন, অবাধ তথ্য প্রবাহের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন সংক্রান্ত অনেক ভালো ভালো আইন প্রণয়ন করা হলেও সেসব আইনের বাস্তবায়ন হয় না।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাস্তবতা হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান যেহেতু সাংবিধানিকভাবে বাতিল হয়েছে, তাই সাংবিধানিক পন্থায় যেভাবে বৈধ, সেভাবে নির্বাচন করতে হবে। আমরা যদি পৃথিবীর দিকে তাকাই, যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র বিরাজ করছে সেখানে কিন্তু নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিরল। তবে বেশ কয়েকটি দেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশন করে না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অন্য যারা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে তাদের মধ্যে আমরা সাধারণত ধরে থাকি প্রশাসন, আইনপ্রক্রিয়া সংস্থা ইত্যাদি। কিন্তু সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে যদি তাদের (রাজনৈতিক দল) দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকে তাহলে এটা (নিরপেক্ষ নির্বাচন) সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য হয়নি এই কথা বলা যাবে না। তবে রাজনৈতিক দল এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটা আস্থাহীনতা রয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং সব দলের মধ্যে আস্থা অর্জন করতে পারলে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির জন্য টিআইবি ৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৫টি সুপারিশ করে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংসদে সরকারি দলের একচ্ছত্র ভূমিকা নিরুৎসায়িত করতে বৈধ ও আগ্রহী সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও নির্বাচিত সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও সংসদ নেতা একজন হওয়া উচিত নয়। তিনজন একব্যক্তি হলে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে না। বিরোধীদলকে সংসদীয় কার্যক্রমে আরো বেশি সুযোগ দেয়া, ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে নিয়োগ দেয়া, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক দলগুলোতে অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ দেয়া। এ ছাড়া এমন কোনো আইনি সংস্কার না করা যাতে দুদকের স্বাধীনতা খর্ব হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা প্রত্যাহার না করা, বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্বিচারে আটকসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা এবং নারী, সংখ্যালঘু ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি নিশ্চিত করারও সুপারিশ করে টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন- টিআইবি’র রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রধান শাহজাদা এম আকরাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির উপদেষ্টা ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসানসহ কর্মকর্তারা। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৭,২০১৮ 

A loan defaulting epidemic: Over two lakh privileged institutions!

Syed Mansur Hashim

The information disclosed by the finance minister in parliament this month, as a response to a question by a member of parliament, is quite an eye opener. As per Bangladesh Bank data the country now has 230,658 defaulters: companies and institutions that have defaulted on bank loans totalling Tk 1.31 trillion until June 2018. We are further informed by the honourable finance minister that many of these defaulters are heavily involved in the management of 88 banks and financial institutions. The bulk of the default loans belong to the State-owned Commercial Banks (SCBs) where Sonali Bank leads with Tk 186.62 billion, followed by Janata Bank (Tk 148.4 billion), Agrani Bank (Tk 92.84 billion), Rupali Bank (Tk 49.01 billion), Basic Bank (Tk 85.76 billion), Bangladesh Krishi Bank (Tk 21.78 billion), and Bangladesh Development Bank Tk 23.32 billion. In the private sector, things aren't particularly rosy either with the National Bank defaulted loan amount at Tk 50.76 billion, Islami Bank Tk 35.20 billion, and Prime Bank Tk 35.85 billion.

The finance minister deserves a round of applause for making public a list of 100 top defaulters which included some of the top business houses and a horde of lesser known names. What comes as a surprise of course is what happened between last June and September of this year, i.e. back in June, the finance minister had hinted that special measures were being taken to address the banking crisis that would come into effect within a month. He is quoted to have said in this paper that “I admit that the conditions of state banks are not up to our expectations and we are continuing to recapitalise these banks. But we need to understand that these banks often cannot operate on commercial basis.”

True. Needless to say, the finance minister must be finding himself between a rock and a hard place because of reasons beyond our comprehension, nothing substantial has been done to bring back financial discipline in the banking sector; neither in SCBs, nor in private sector banks. The situation in the privately-owned banks is getting to be as bad as the situation in SCBs. By his own admission, and I quote here, “The problem of the private banks is that they help each other and one bank's director gets loans from another bank”. One must ask the question then why was the Banking Company Act amended to allow for four members of the same family to sit on the board of a bank?  Again allowing for a person to hold the position of a director of a bank for nine years is counterproductive for good governance.

As pointed out by the International Chamber of Commerce's (ICCB) News Bulletin (Jan-Mar, 2018): “According to a Bangladesh Bank study five years (during CY2012 to CY2016) average ratio of gross NPLs to total loans were about 27.1 percent, whereas, it was 4.9 percent for PCBs, 6.5 percent for FCBs & 22.56 percent for SCBs. The percentage of classified loan to total outstanding stood at 10.1 percent in June 2016. The percentage was highest for the SBs 26.1 percent, for the PCBs 5.4 percent, for the SCBs 25.7 percent and for the FCBs 8.3 percent.”

The recurring scams remain unsolved which has only encouraged the culture of default and that is reflected in the rise of NPLs. When we look at CPD's “State of the Bangladesh Economy in FY2017-18 (Third Reading)” released to the media on June 3, 2018, we find observations that tell us that this seemingly unstoppable rise in NPLs is primarily due to a number of reasons: “The general trend of NPL has been consistently high for the last few years. Financial frauds, lack of proper due diligence during loan sanctions, political influence on loan disbursement, and the failure to undertake strong measures against loan defaulters and wrong-doers have contributed to high NPLs in the banks. Additionally, the legal framework for dealing with non-performing loans, which consists of the Money Loan Court Act 2003 and Bankruptcy Act 1997, has become more or less dysfunctional. The number of judges dealing with non-performing loan cases is inadequate, and as a consequence, the backlog of cases is a long one.”

Interestingly enough, the general conversation in media has been focused on NPLs. We seldom talk about irrecoverable loans (which is part of NPLs) or loans that banks treat as “written off” and that amount, as of December 2017 (according to CPD) stands at Tk 64,618 crore, which is “87 percent of total classified loans and 8 percent of total loans”. That means Tk 8.70 out of Tk 10 non-performing loans will not be returned!

And still we have statements being issued by policymakers that what is printed in news media is rubbish. Unfortunately, the facts speak otherwise. Our central bank cannot move against top bank management despite having ample proof of irregularities in loan sanctioning. Hence, media reports may be awash with irregularities being committed in SCBs but Bangladesh Bank can only advise and not act.

When we look at our banking sector, it is clear as day that we have too many banks and yet policymakers (in their infinite wisdom) continue to grant licenses for more of them. One of these was the ill-fated Farmers' Bank that has been repeatedly bailed out by government largesse but we are yet to see any real effort to bring those responsible for the fiasco to justice. The irregularities that have led to repeated scams and the lack of assertive action to check these irregularities have become all too obvious. Our financial sector and its guardians have succumbed to political pressure and the end game is to use the banks to misappropriate public money. That basically is the bottom line.

  • Syed Mansur Hashim is Assistant Editor, The Daily Star.
  • Courtesy: The Daily Star /Sep 18, 2018

Environmental pollution out of control

Editorial

Policymakers can no longer turn a blind eye


The report entitled “Enhancing Opportunities for Clean and Resilient Growth in Urban Bangladesh” unveiled by the World Bank is yet another reminder for policymakers and the people of the country of the monumental environmental costs of unplanned urbanisation and the lack of implementation of existing environmental laws. The statistics are shocking: nearly 2.34 lakh deaths in Bangladesh due to environmental pollution and related health risks in 2015, of which 18,000 lives were lost in Dhaka city. Today, Bangladesh is one of the worst affected countries in the world.

Both the economic costs and health implications of unbridled pollution are so severe that letting environmental pollution go unaddressed could lead to the stunting of our economic growth and even a public health crisis. The issues of encroachment upon wetlands, water pollution and air pollution, to name a few, must be seriously addressed.

Furthermore, the general lack of awareness among the populace is a major issue. For instance, how many of us know just how critically high the level of indoor pollution is? According to the WB report, air pollution is the highest in South Asian countries with fine particulate matter measuring at 2.5 microgram both indoor and outdoor.

We understand that bringing environmental pollution under control is a formidable task. But with the necessary political will, it can be overcome. The WB has made several good recommendations which the government should take into consideration. These include institutional reforms for urban governance, making the environment clearance process more transparent and holding officials accountable. There is no alternative to ensuring accountability and transparency and strict implementation of existing environmental laws. The media is prepared to assist the government in its endeavours and we hope the issue is declared as priority number one by policymakers.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 18, 2018

The mystery of picked-up people returning as corpses

Editorial

Government must allay the fear


On Saturday, September 15, JCD President Mashiur Rahman Rony went missing. His family says plainclothes police picked him up from Badda but the police have denied the allegation. On Wednesday, three young men, Shafiul Alam, Monirul Alam and Monirul's friend Abul Hayat, were picked up by allegedly plainclothes police from the airport where they had gone to pick up Shafiul and Monirul's parents who were returning from Hajj. Later they also picked up two more people, one of them a 15-year-old. And again, the police denied having picked them up. 

These are just a few examples of young men being picked up allegedly by members of law enforcement, their detention denied by police and then all of a sudden acknowledged with various cases against them. There are also mysterious cases of individuals being abducted and gone missing for days only to be found dead with bullet or other injuries. On Friday, the bullet-ridden bodies of three young traders of garment factory leftovers were found in a culvert in Purbachal. On Sunday, September 16, the bullet-hit bodies of two brothers from Jessore were found in two different upazilas.

These are incidents reported in a span of not even a week. There are reports of such missing people almost every day. It is frightening enough when people are picked up by apparently members of security forces. It is even more so when no security agency will admit they have been arrested or detained.

The fear of loved ones gone missing, ending up as dead bodies, is becoming a common phenomenon and it is these fears that the government is obliged to allay.

The police or any other security force is required to inform the families of anyone they arrest or detain and produce them in front of a magistrate. Denying that they have arrested someone and then admitting it a few days later violates the law of the land. The state must put an end to such arbitrary practice.

  • Courtesy: The Daily Star / Sep 18, 2018

Scrap quota in govt jobs

Review panel suggests abolishing the system for 1st, 2nd class jobs, places report to PM for approval


A high-powered government committee has recommended abolishing the quota system for class-I and class-II jobs in civil service.

The development comes in the wake of months-long quota reform demonstrations that saw arrests of the movement's leaders and attacks on students.

"Our findings are that there should be no quota for appointments to the posts in 9th to 13th grade, previously dubbed as first class and second class jobs,” Cabinet Secretary M Shafiul Alam, who heads the committee, told reporters at the secretariat after the weekly cabinet meeting yesterday.

The committee also opined that quota is no longer indispensable to small ethnic groups and physically challenged people, he added.

Earlier in the day, the seven-member body submitted its report to Prime Minister Sheikh Hasina, suggesting that officials of grade 9 to 13 should be recruited "completely on merit".

Under the 8th National Pay Scale, class-I officials -- cadre and non-cadre -- join 9th grade positions while class-II officials are appointed to posts from 10th to 13th grade.

Quota movement leaders welcomed the recommendation, but said they would continue demonstrations until their three-point demand is met.

Apart from a gazette on quota reforms, they want withdrawal of all cases against the students who took part in demonstrations over quota or road safety and punishment to those who attacked the protesters.

The committee, formed to “review, reform or cancel” the quota system, unveiled the recommendation six days after quota reformists announced their decision to launch fresh agitations for the gazette.

Bangladesh Sadharan Chhatra Odhikar Sangrakkhan Parishad, the platform spearheading the quota movement since February, will stage demonstrations today at all universities demanding immediate publication of the gazette.

"We will continue our movement as we are still doubtful about the implementation of quota reform recommendation which has been sent to the prime minister," Nurul Haque Nur, a joint convener of the platform, told The Daily Star.

"Our prime minister in parliament declared that there would be no quota in public service, but we did not see its implementation. We will stop our movement once the gazette is published," he said.

At present, about 56 percent of government jobs are reserved for candidates from various quotas. Of the 56 percent, 30 percent are for freedom fighters' children and grandchildren, 10 percent for women, 10 percent for people of underdeveloped districts, five percent for members of indigenous communities and one percent for physically challenged people.

The cabinet secretary said it's a big report but with brief findings.

The appointment system for the positions from 14th to grade 20th will remain unchanged. It was, in fact, not in the committee's terms of reference, he added.

Class-III and class-IV employees are appointed to the 14th to 20th grade positions. However, the government documents now mention “grade” instead of “class” while referring to the tiers in the public service.

About the next step, Shafiul said the prime minister will formally approve the committee's recommendation through the public administration ministry. Later, it will be placed before the next cabinet meeting.

Once the cabinet gives its approval, the government will issue a gazette, he added.

Asked whether the recommendation will have any influence on the 40th BCS exams advertised by the Public Service Commission recently, he said the circular of the BCS exam mentioned that the quota will be fixed accordingly if the government takes a “different” decision.

Replying to a query on the court's observation about quota for freedom fighters' children and grandchildren, he said the committee took opinions from legal experts.

"They [the legal experts] said the judgment would have no effect on the proposal as this is a policy decision of the government," Shafiul said.

In a verdict in 2015, the Appellate Division of the Supreme Court said, "The High Court Division observed that the reservation of 30 percent quota for the children of freedom fighters shall be followed strictly."

The cabinet secretary further said the committee has examined the needs of small ethnic groups and the physically challenged people and found that they can do without the quota system.

In February this year, a large number of students of public universities and jobseekers, launched the movement demanding reforms in the quota system.

The movement intensified in April when students across the country took to the streets. They blocked key points in the capital and roads and highways elsewhere.

In the wake of mass protests, Prime Minister Sheikh Hasina on April 11 announced in parliament that the quota system would be scrapped.

But as no gazette notification was issued in this regard, the protesters began boycotting classes and examinations in all universities and colleges later on.

On June 30 and July 1, alleged BCL activists attacked protesters at Dhaka University and Rajshahi University, leaving a number of students injured. Law enforcers in the following days arrested and remanded a number of leaders of the movement.

The quota reform movement lost momentum following attacks on demonstrators and arrests of some of its leaders.

The government formed the review committee on July 2 with secretaries to the public administration ministry, finance ministry, Liberation War affairs ministry, law ministry (legislative division), PSC, and the acting secretary to the Prime Minister's Office.

The committee was asked to submit a report within 15 workings days. On July 19, it was given 90 working days as it could not finish gathering information about the system.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 18, 2018

শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে ক্লাস বন্ধ

সম্পাদকীয়

শিক্ষার্থীদের কেন খেসারত দিতে হবে?


একটা সময় ছিল যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায়ই হানাহানি-সংঘর্ষ হতো। ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার জের ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেত। সেশনজট লেগে যেত। ক্ষতির মুখে পড়তেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের শিক্ষাজীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যেত। সে তুলনায় এখন শিক্ষাঙ্গন অনেক শান্ত। শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতজনিত কারণে কোথাও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘটনার কথা আমরা বেশ কিছুদিন শুনতে পাই না।

কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ নতুন ধরনের সমস্যায় পড়েছে। এই বিভাগের শিক্ষকদের অন্তঃকোন্দলের জের ধরে তাঁরা ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিবাদের বলি হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাঁরা নানাভাবে শিক্ষকদের ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শিক্ষকেরা তা নিচ্ছেন না। এতে সেশনজট লেগে যাওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছেন তাঁরা।

বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা চালু করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। রোববার শিক্ষকদের ভেতরে আটকে রেখে বিভাগের দুটি ফটকে তালা ঝুলিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন। যে সময়টাতে একজন শিক্ষার্থীর পড়ার টেবিলে নিবিড় পাঠে ডুবে থাকার কথা, সেই সময় তাঁকে ক্লাস ও পরীক্ষার দাবিতে স্লোগান দিতে হবে—এটা সভ্য সমাজের কথা হতে পারে না।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, বিভাগের নতুন সভাপতির সঙ্গে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ আছে। শিক্ষকেরা বিভাগের অন্য সব কার্যক্রম সঠিকভাবে চালালেও ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছেন না। এই অবস্থায় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মনজুরুল হাসান এ বিষয়ে বলেছেন, ‘শিক্ষকেরা ক্লাস-পরীক্ষা নিতে চাচ্ছেন না। যদি কোনো শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা না নেন, তাহলে আমার কিছু করার থাকে না।’ একটি বিভাগের সভাপতি যখন এমন কথা বলেন, তখন হতাশ হতে হয়।

ব্যক্তিগত কিংবা রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে তাঁরা এর জের ধরে ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন না। এটি স্পষ্ট অন্যায় ও অনৈতিক কাজ। এর জন্য শিক্ষার্থীরা যদি সেশনজটে পড়েন, তাহলে সেই ক্ষতি এই শিক্ষকেরা কীভাবে পুষিয়ে দেবেন? ক্ষতির শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা কি এই শিক্ষকদের প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা ধরে রাখতে পারবেন? নিশ্চয়ই পারবেন না।

সর্বোপরি কথা হলো, এভাবে চলতে পারে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্য দিয়ে চলে। সেখানে কোনো শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারী আচরণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। যেখানে শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নেওয়ার জন্য তাগিদ দেওয়া, সেখানে উল্টো শিক্ষার্থীদেরই যদি ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষকদের অনুরোধ করতে হয়, তাহলে সেটি গোটা শিক্ষকসমাজের জন্যই লজ্জাকর। দ্রুতই শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তা না হলে এ ঘটনা ও খারাপ নজির দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপরও প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যা কারও কাম্য নয়।  
কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৮,২০১৮