Search

Thursday, September 20, 2018

পদত্যাগ ও দেশান্তরি হতে বাধ্য হয়েছি - সিনহা

‘স্বপ্নভঙ্গ’ বইয়ে বিচারপতি সিনহা

২০১৭ সালে বর্তমান সরকারের চাপে পদত্যাগ ও দেশান্তরি হতে বাধ্য হয়েছি বলে দাবি করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। একটি স্বপ্নভঙ্গ : আইনের শাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র-এ শিরোনামে সম্প্রতি প্রকাশিত বইয়ে এ দাবি করেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। প্রতিষ্ঠিত কোনো পাবলিকেসন্স বইটি প্রকাশ না করলেও বইটি স্বত্ব দেয়া হয়েছে ললিতমোহন-ধনভতি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনকে।

বইটিতে বিভিন্ন অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সাফল্য-ব্যর্থতা, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, প্রতিরক্ষা ও পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা, আদালত অবমাননা, বিচার বিভাগের ওপর প্রশাসন বিভাগের হস্তক্ষেপ, ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা।

এ ছাড়া বইটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায় ও রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে। বইটির শেষ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে বিচারপতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে। প্রত্যেকটি অধ্যায়ে তথ্যের পাশাপাশি তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বইটির মুখবন্ধে সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহা দাবি করেন, সিলেটের একটি আদালতের অ্যাডভোকেট থেকে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার সুযোগ হলেও ২০১৭ সালে বর্তমান সরকার কর্তৃক জোরপূর্বক দেশত্যাগ, পদত্যাগ ও নির্বাসনে যেতে বাধ্য হই। এটা ছিল বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজির বিহীন ঘটনা। বইটিতে তিনি আলোচনা করেছেন বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, পুলিশের বাড়াবাড়ি, জরুরি অবস্থায় ডিজিএফআইয়ের বিতর্কিত ভূমিকা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে। উল্লেখ্য, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে বাস করছেন।

চাপের মুখেই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি : সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বই নিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, বাংলাদেশের এই সাবেক প্রধান বিচারপতি দাবি করছেন- তাকে সরকারের চাপ এবং হুমকির মুখে দেশত্যাগ করতে হয়েছে।

এ বইতে বিচারপতি সিনহা সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন কোন পরিপ্রেেিত সরকারের সঙ্গে তার বিরোধ হয়েছিল এবং কিভাবে তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং তারপর কেন তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের একটি এজেন্সির হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের মুখে তিনি দেশ ছেড়েছেন। বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়টি যেন সরকারের প যায়, সেজন্য তার ওপর সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল।

সিনহার পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল-সংক্রান্ত একটি মামলার আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে। এ রায় নিয়ে মতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে প্রচ চাপের মুখে বিচারপতি সিনহা দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

বইটির মুখবন্ধে সুরেন্দ্র সিনহা লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং তার দলের অন্য সদস্য ও মন্ত্রীরা পার্লামেন্টের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য আমার কঠোর নিন্দা করেন। প্রধানমন্ত্রীসহ কেবিনেট মন্ত্রীরা আমার বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বদনাম করতে শুরু করেন।

আমি যখন আমার সরকারি বাসভবনে আবদ্ধ, আইনজীবী এবং বিচারকদের আমার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছিল না, তখন সংবাদমাধ্যমকে বলা হয় আমি অসুস্থ। আমি চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়েছি।’ ‘একাধিক মন্ত্রী বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবো।"

‘অক্টোবরের ১৪ তারিখ, যখন আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হই তখন একটি প্রকাশ্য বিবৃতিতে আমি পরিস্থিতি স্পষ্ট করার চেষ্টা করি যে, আমি অসুস্থ নই এবং আমি চিরকালের জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না।’

‘আমি আশা করছিলাম যে, আমার প্রত্যক্ষ অনুপস্থিতি এবং আদালতের নিয়মিত ছুটি- এ দুটো মিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সহায়ক হবে এবং শুভবুদ্ধির উদয় হবে। সরকার ওই রায়ের যে মর্মবস্তু অর্থাৎ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যে জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর তা বুঝতে পারবে।’ ‘শেষ পর্যন্ত একটি এজেন্সির ভীতি প্রদর্শন এবং আমার পরিবারের প্রতি হুমকির কারণে আমি বিদেশ থেকে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেই।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। গত বছরের নানা নাটকীয় ঘটনাবলির পর কোনো গণমাধ্যমে এটিই ছিল তার প্রথম সাাৎকার। তিনি সাাৎকারে বলেন, ‘আমাকে যখন কমপ্লিটলি হাউজ অ্যারেস্ট করা হলো, ...তখন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিদিন একজন করে ডাক্তার আমার কাছে পাঠানো হতো। আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।’

‘এর মধ্যে এক এজেন্সি চিফ এসে বললেন, হ্যাঁ আপনাকে বলা হলো আপনি বিদেশ যাবেন, আপনি যাচ্ছেন না।’ ‘আমি বললাম, কেন যাবো আমি বিদেশে?’

‘আপনি চলে যান আপনার টাকা-পয়সার আমরা ব্যবস্থা করছি।’

“আমি বললাম, এটা হয় না। আমি আপনাদের টাকা নেবো না। আর আপনারা বললেই আমি ‘ইয়ে’ করব না। আমি চাই সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমি আলাপ করি । ব্যাপারটা কী হয়েছে আমি জানতে চাই। (তিনি) বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার সাথে কথা বলবেন না।” বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের ইমপিচ করার মতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে পার্লামেন্টের সদস্যদের দেয়ার পর ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্ট ডিভিশনের একটি বিশেষ বেঞ্চ ওই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন। সরকার এর বিরুদ্ধে আপিল করে এবং সাত সদস্যের একটি বেঞ্চে আপিলের শুনানি হয়।

বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার বইতে লেখেন, ‘জুলাইয়ের ৩ তারিখ প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ আপিল খারিজ করে হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় বহাল রাখেন। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসের ১ তারিখ সর্বসম্মত রায়ের পূর্ণ বিবরণ প্রকাশিত হয়।’ সেখানে তিনি লেখেন, ‘ওই সিদ্ধান্তের পর সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখে পার্লামেন্ট একটি প্রস্তাব পাস করে, যাতে সেই রায়কে বাতিল করার জন্য আইনি পদেেপর আহ্বান জানানো হয়।’


  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮ 

ডিআইজি মিজানের অঢেল সম্পদের খোঁজ

স্ত্রীসহ দুদকে তলব

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে পুলিশের বিতর্কিত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। সে কারণে মিজান ও তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সংস্থাটি।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে ডিআইজি মিজানুর রহমানের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার এবং তাঁর স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসংগতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে।

মিজানুর রহমানের ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান স্বপন ও ভাগনে পুলিশের এসআই মাহামুদুল হাসানের নামেও স্থাবর ও অস্থাবর প্রচুর সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। দুদকের ধারণা, এসব সম্পদের প্রকৃত মালিক ডিআইজি মিজান।

প্রাথমিক অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় দুদক আইনের ২৬(১) ধারায় মিজানুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নার নামে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে সংস্থাটি।

সূত্র জানায়, ডিআইজি মিজান তাঁর আয়কর নথিতে নিজের নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৭৬৩ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। তবে দুদকের অনুসন্ধানে আয়কর নথির বাইরে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ মিলেছে।

সোহেলিয়া আনার রত্না তাঁর আয়কর নথিতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৩৫ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। অথচ তাঁর আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৮৩ টাকা। অর্থাৎ দুদকের অনুসন্ধানে আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুদক মনে করে।

মিজানুর রহমানের ছোট ভাইয়ের নামে রাজধানীর বেইলি রোডে বেইলি রোজ নামের অ্যাপার্টমেন্টে ২ হাজার ৪০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ও ভাগনে মাহামুদুল হাসানের নামে চাকরিতে প্রবেশের আগেই ঢাকার পাইওনিয়ার রোডে ১ হাজার ৯১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া গেছে। দুদক ধারণা করছে, ডিআইজি মিজানই তাঁদের নামে এসব সম্পদ করেছেন।

এসব অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়ায় মিজানুর রহমানকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একই সঙ্গে মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাকে প্রথমবারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অবৈধ সম্পদের খোঁজে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্ত্রীসহ ডিআইজি মিজানকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে দুদকে হাজির হতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ডিআইজি মিজানের উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২৯ নম্বর বাড়ির ঠিকানায় তলবি নোটিশ পাঠিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। দুদক সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম দফায় প্রায় সাত ঘণ্টা ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। সকাল সাড়ে নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই দিন সকাল নয়টারও আগে কালো রঙের একটি পাজেরো গাড়িতে সাইরেন বাজিয়ে দুদকে আসেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দুদক ছাড়েন বিকেল পাঁচটায়।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত এই ডিআইজি। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, আয়কর ফাইলে দেওয়া তথ্যের বাইরে তাঁর কোনো সম্পদ নেই। এ সময় এক সংবাদ পাঠিকাকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে মিজান বলেন, ‘আই অ্যাম সরি।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে মিজান বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সে কমিটি সবকিছু খতিয়ে দেখবে।

ডিআইজি মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানুরের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে। জানা গেছে, ব্যাংক কর্মকর্তা মরিয়ম আক্তারকে গত বছরের জুলাই মাসে বিয়ে করেন মিজানুর রহমান। ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেই কথা গোপন রাখার শর্ত দিয়েছিলেন স্ত্রীকে। মরিয়ম রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পুলিশ পাঠিয়ে মরিয়মকে গ্রেপ্তার করান। মিজানুর রহমান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন, সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পায় পুলিশের তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়।

সবশেষ মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তোলেন। ওই সংবাদ পাঠিকা প্রথমে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তাতে তিনি অভিযোগ করেন, মিজানুর রহমান মুঠোফোনে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বাড়ির বাইরে বের হলে তাঁকে হেনস্তা করবেন এবং অশ্লীল ছবি তৈরি করে প্রচার করবেন। গত ১০ এপ্রিল তিনি তাঁর নামে খোলা একটি ফেসবুক পেজের কথা জানতে পারেন। তিনি দেখতে পান, পেজটি তাঁর নামে খোলা এবং সেখানে তাঁর ছবির সঙ্গে অশ্লীল ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে সংবাদ পাঠিকা অভিযোগ জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন।

নামে-বেনামে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিপুল সম্পদ রয়েছে—এমন অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকে এ বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ২০,২০১৮ 

Wednesday, September 19, 2018

দেশের সব স্তরে দুর্নীতি ও লুট হয়েছে - ড. কামাল


জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বর্তমান  সরকার প্রতারক, মিথ্যুক ও স্বৈরাচার। সরকার ঢালাওভাবে মিথ্যাচার করছে। দেশের জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে লুটপাট করে বিদেশে গাড়ি-বাড়ি করেছে। লুটেরা এ সরকার বিদেশে পালিয়েও রক্ষা পাবে না। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণই তাদেরকে খুঁজে বের করে এনে বিচার করবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের লোকেরা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন বলেছিলেন। এবং দ্রুত সকল দলের অংশগ্রহণে আরেকটি নির্বাচন দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু মিথ্যুক সরকার তা বেমালুম ভুলে গেছে। এই অবৈধ সরকারের যারা পতাকা উড়িয়ে অহংকারের সুরে কথা বলেন, তাদের দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্যবোধ নেই। 

তিনি বলেন, জনগণকে বোকা ও নিরক্ষর মনে করবেন না। পুলিশ দিয়ে ছাত্র পেটাবেন, সাদা পোশাকে লুঙ্গি পরে জনগণকে পিটাবেন, আর অহংকারের সুরে বলবেন আমরা জানি না। এটা হতে পারে না। প্রয়োজনে তদন্ত করেন, দ্যাখেন জনগণকে কারা পিটিয়েছে। আমিও এই তদন্ত দলে যেতে রাজি আছি। 

ড. কামাল বর্তমান সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের মধ্যেও কিছু বিবেকবান সৎ ও শিক্ষিত লোক আছেন, আপনারা জনগণের পক্ষ থেকে হিসাব চান, কারণ আপনারা জনগণের প্রতিনিধি। না হলে আপনারা গাড়ি-বাড়ি ব্যবহার করছেন এবং হারাম খাচ্ছেন। স্বৈরাচারী এই সরকারকে হঠাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খুলনা মহানগরীর শহীদ হাদিস পার্কে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, অবাধ, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

জেএসডির খুলনা জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট আ ফ ম মহাসিনের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক ও যুক্তফ্রন্ট নেতা আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, বিকল্প ধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়ছার। 

জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-জেএসডির সহসভাপতি সাবেক এমপি দবির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, কেন্দ্রীয় নেতা তৌহিদ হোসেন, মাগুরার জেএসডি নেতা এমএ আউয়াল, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম, খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক কাওয়ার আলী সানা, জেএসডি নেতা আব্দুল লতিফ, জিল্লুর রহমান, সুধাংশু সরকার, খুলনা মহানগর জেএসডির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক প্রমুখ। 

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আ স ম আব্দুর রব বলেন, আওয়ামী লীগের এই ৯ বছরের শাসনামলে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হয়েছে। জনগণের শান্তি নেই, নিরাপত্তা নেই, আইনের শাসন নেই। গুম, খুন, ডাকাতি, ক্রসফায়ার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। 

আ স ম আব্দুর রব বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা ও আইনের শাসনের জন্য দেশের সকল জনগণ ও দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এবার যদি নিরপক্ষ ভোট না হয়, তবে জাতি মারাত্মক সংকটে পড়বে। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে, মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে হবে, নিরপেক্ষ লোক দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। 
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান রাষ্ট্র পুলিশি রাষ্ট্র। এখন এই রাষ্ট্রকে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র বলা যায় না। মান্না বলেন, আগামী অক্টোবর মাসে বৃহত্তর ঐক্য হবে। এবং জুলুমবাজ, দখলবাজ এই সরকারের হাত হতে দেশ রক্ষার জন্য আবারও খুলনায় আসবো। তিনি বলেন, লাখো জনতা মাঠে নামলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে। 

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকার উন্নয়নের কথা বলে কিন্তু গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন হয় না, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকে না। এক টাকার কাজ করে নেতাকর্মীদের ভাগে এক শ’ টাকা জোটে, যা জনগণের টাকা। আমি দেখতে পাচ্ছি নৌকা ডুবতে বসেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজেছে। তাই তিনি সকল জনগণ ও দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। 

সরকার জনগণের সেবকমাত্র সেটা জনগণকেই বোঝাতে হবে 
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, দেশে নিজের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে সকল নাগরিককে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। 

তিনি বলেন, সরকার জনগণের সেবকমাত্র। তারা যদি সেটা না বোঝে তাহলে নাগরিককে মালিকের ভূমিকায় আসতে হবে এবং সেটা বুঝিয়ে দিতে হবে। একই সঙ্গে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

খুলনায় আয়োজিত জনসভায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় যশোর প্রেস ক্লাবে নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশব্যাপী বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য তারা বের হয়েছেন। এটা কোনো দলীয় লক্ষ্য নয়, সংবিধানে দেয়া অধিকারের জন্যই। ফলে দেশের মালিককে তাদের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় হতে হবে। 

তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষা, সুশাসন নিশ্চিত ও সংবিধান অনুযায়ী দেশে শাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নাগরিকদের সচেতন হওয়া জরুরি। এজন্য সবাইকে মালিকের ভূমিকায় আসার আহ্বান জানান তিনি।

ড. কামাল বলেন, অসহায় বোধ করার কিছু নেই। সরকারের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নিতে হবে। সিংহাসনে যারা আছেন তারা সেবকমাত্র। তারা যদি সেটা না বোঝে তবে তাদের তা বুঝিয়ে দেয়া দরকার। কারণ আমরা জনগণ মালিক তাই আমাদের দায়িত্ববোধও আছে। এটাকে মনে রেখেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। যাতে এদেশে শাসন ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা, অর্থনীতি সবকিছু যেন জনস্বার্থে ও জাতীয় স্বার্থে হয়।

মতবিনিময়কালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্প ধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আব্দুর নূরসহ যশোর জেলা নেতৃবৃন্দ। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৯,২০১৮ 

Health services need revamping

Editorial

The basic goal of the country's rural health sector has remained largely unmet. Its much-vaunted purpose: bringing health services to the doorsteps of villagers still faces a daunting challenge. Qualified doctors and nurses remain conspicuous by their absence at these centres, forcing patients to go to the nearby private doctors' chambers. Few can afford to do that owing to the expenses involved in visiting private practitioners. However, a tiny segment of these health complexes with obstetrics and gynaecological departments are found tolerably functioning.

As the pledged government health services remain elusive, the quacks are having their heyday. Both the print and electronic media remain replete with news of hazardous practices of the rural quacks.  Apart from these phony doctors, there are the long-extinct herbal medicine practitioners and faith healers. Exorcists also do brisk business in remote areas in the cases of hysteria and similar diseases. Against this backdrop, reports of villagers losing their limbs in quackery are only natural. In the absence of properly equipped clinics within easy reach, critically ill poor rural patients turn to quacks. Treatment received from them is less costly than that from the qualified doctors in the towns. But due to the complications caused by antiquated and wrong treatment, the patients have to pay a heavy price. Although the luckier people can escape physical harm, many cannot. Owing to pervasive ignorance and poverty, these quacks generally get away with their act. Lax enforcement of preventive laws also aggravates the situation. 

The government-run health service apart, the private sector doesn't offer any better look. Beside the erratic price hike of life-saving drugs, their artificial crisis, sale of spurious medicines etc, few pharmacies in semi-urban areas meet the basic prerequisites for running such outlets. Pharmacies in the rural area nowadays present a dismal look in general.  Many of them operate without even compounders, let alone meet the provision for appointing a pharmacist with expertise in selecting the right medicines. In many cases, the shop-owners themselves play a proactive role in picking medicines from the shelves. They are found recommending to the evidently ignorant clients different medicines other than those prescribed. It points to the alarming extent of insensitivity to which the medicine sellers have stooped.

A similar situation prevails at pharmacies across the cities as well. Buying drugs over the counter is an added element here. Purchase of exclusive medicines without prescriptions occupies a major place in the list of many irregularities at urban pharmacies. Taking wrong medicines and doses as per hurriedly written prescriptions by doctors can lead to terrible health hazards. Few pharmacies in the cities are aware of the prerequisite of appointing qualified pharmacists. It's only them who can greatly help patients avert hazardous consequences of taking wrong medicines. On account of many surveillance activities, any headlong decline in the urban areas can be reined in. But the rural health sector can in no way be left in the lurch.

  • Courtesy: The Financial Express/  Sep 19, 2018

কাল নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি - বাম গণতান্ত্রিক জোট

দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ নেই


অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাও করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এর পাশাপাশি তারা জেলায় জেলায় জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করবে।

পল্টনের মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয় জোটের পক্ষ থেকে। এর পাশাপশি সংবাদ সম্মেলন থেকে নেতৃবৃন্দ বলেন, ৪৭ বছরের অভিজ্ঞতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যেমন কোনো সুযোগ নেই, তেমনি সরকার অনুগত বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের যাবতীয় অগণতান্ত্রিক ধারা পদ্ধতি বহাল রেখে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার প্রস্তাব করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে অবাধ ও নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘেরাও এবং জেলাপর্যায়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রাক্কালে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো: শাহ আলম, বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুদ্দিন কবির আতিক, গণসংহতির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণতান্ত্রিক ও মুক্ত পরিবেশে প্রার্থী হওয়ার ও নিরাপদে ভোট প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের ন্যূনতম সুযোগও এখন দেশে নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরো একটি একতরফা নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর গণঅনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের অনুগত ভূমিকা পালনে নিয়োজিত থাকায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের’ এক অভিনব মডেলও চালু করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অবাধ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ১১ দফা দাবি জানানো হয়। এই দাবিগুলো আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে। বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস কাবের সামনে জমায়েত শেষে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে এই ঘেরাও মিছিল শুরু হবে। একই দিন জেলাপর্যায়ে সকালে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।

  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮ 

চেক জালিয়াতি ও বেনামি কোম্পানির নামে অর্থ আত্মসাৎ

বাপেক্স কর্মকর্তাদের দুর্নীতি

ইয়ামিন সাজিদ
গ্যাসকূপ খননকাজে মালপত্র সরবরাহকারী হিসেবে যে প্রতিষ্ঠানকে দেখানো হয়েছে তা ভুয়া। টাকাও উত্তোলন করা হয়েছে ভুয়া ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে। এছাড়া বিলের বিপরীতে ইস্যুকৃত চেকের অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে ডিডি, পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা করা হয়েছে মালপত্র সরবরাহকারী ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে। অর্থ আত্মসাতের এ ঘটনা ঘটেছে বাপেক্সেরই কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতায়। বাপেক্সের নিজস্ব তদন্তেই প্রতিষ্ঠানটির ছয় কর্মকর্তার দুর্নীতির এ তথ্য উঠে এসেছে। 

অভিযুক্ত ছয় কর্মকর্তা হলেন— মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবউদ্দিন, উপব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) মো. হাদিউজ্জামান, ব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) নুসরাত সিদ্দিক, উপমহাব্যবস্থাপক (খনন) জামাল ও রেজাউল করিম এবং উপব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন। কোম্পানির ফেঞ্চুগঞ্জ-৪ ও ৫ এবং সালদা-৩ ও ৪ নম্বর গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়ন প্রকল্পে এ দুর্নীতি করেছেন তারা।

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এ ছয় কর্মকর্তাকে কেন বরখাস্ত করা হবে না, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার কারণ দর্শাতে বলা হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানো না হলে বরখাস্তের কথাও বলা হয়। যদিও নোটিস পাওয়ার দেড় বছর পরও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযুক্তদের রক্ষায় বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ আছে।

জানতে চাইলে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম রুহুল ইসলাম চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে বাপেক্সের সর্বোচ্চ অথরিটির মাধ্যমে সর্বশেষ বোর্ডসভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকিদের বাপেক্সের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে ২০১০ সালের জুলাইয়ে বাপেক্সের নিজস্ব দুটি গ্যাসক্ষেত্রে চারটি উন্নয়ন কূপ খনন প্রকল্প নেয়া হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ গ্যাসক্ষেত্রের ৪ ও ৫ এবং সালদা গ্যাসক্ষেত্রের ৩ ও ৪ নম্বর কূপ খননে ব্যয় ধরা হয় ৩০৫ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থায়ন ২৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি শেষ হয় ২০১৬ সালের জুনে।

প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ও আর্থিক ব্যয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দেয়ায় তা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে বাপেক্স কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক তদন্তে ব্যাংক ভাউচার, চেক ও ব্যাংক বিবরণী জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পায় কমিটি। এছাড়া গ্যাসকূপ খননকাজে ব্যবহূত মালপত্র ক্রয়ে ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে স্থানীয় আরএফকিউ পদ্ধতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়। এ অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন প্রকল্পের পরিচালকসহ ছয় কর্মকর্তা। নানা কৌশলে সংঘবদ্ধভাবে প্রকল্পের টাকা তসরুপ করেন তারা।

জানা যায়, একজন কর্মকর্তা চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর পেনশন হিসেবে সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা পেয়ে থাকেন। কেউ কেউ এর কমও পান। তবে এ প্রকল্পের পরিচালক মো. শাহাবউদ্দিন প্রকল্প থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে নিজের বেতন-ভাতার বাইরে বেনামি কোম্পানি ও চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। এর বাইরেও বড় অংকের অর্থ আত্মসাতে শাহাবউদ্দিনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে বাপেক্সের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

শাহাবউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট করে যে অর্থ আত্মসাতের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্যাংক ভাউচার ও ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ১ কোটি ৮৫ লাখ ২২ হাজার টাকা। এছাড়া ২০১৫ সালের ২৩ জুন পরিশোধিত নগদ ভাউচারের মাধ্যমে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নাম উল্লেখ না করে ৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা তুলে ২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ। এর বাইরে সালদা গ্যাসক্ষেত্রের ৩ ও ৪ নম্বর কূপ খননে দ্বিতীয় দফায় ফিজিক্যাল ইনভেন্টরি কাজ চলাকালে ৩৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, অস্থায়ী শ্রমিক মজুরি খাতে ৪৩ লাখ ৩৮ হাজার, কনটেইনার ক্রয়ের ক্ষেত্রে খোলা দরপত্র আহ্বান না করে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে ব্যাংক থেকে নগদ ৩৯ লাখ ও সালদা গ্যাসক্ষেত্রে জেনারেটর ক্রয়ের নামে ৫ লাখ ৯৮ হাজারসহ ৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা তসরুপেরও প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

অর্থ আত্মসাত্কারী চক্রের আরেক সদস্য বাপেক্সের উপব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) মো. হাদিউজ্জামান। প্রকল্প পরিচালকের সহায়তায় ক্রয়, নির্মাণ ও মেরামতকাজের বিপরীতে উপরোক্ত অর্থের ভাগসহ ৬১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।

এছাড়া চেকের অর্থ ডিডি ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) নুসরাত সিদ্দিক, উপমহাব্যবস্থাপক (খনন) জামাল ও রেজাউল করিম এবং উপব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন আরো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় জ্বালানি বিভাগ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনে আরো বড় অংকের অর্থের অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা/ সেপ্টেম্বর ১৯,২০১৮ 

বাক্সবন্দি হবে বাকস্বাধীনতা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

মতিউর রহমান চৌধুরী 

কোনো ওজর আপত্তিতেই কাজ হলো না। শেষ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সহসাই পাস হতে চলেছে সংসদে। সম্পাদক পরিষদ প্রত্যাখ্যান করেছে। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোও আপত্তি তুলেছে। সিভিল সোসাইটি বিচ্ছিন্নভাবে কথা বলেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, বাংলাদেশে সিভিল সোসাইটি মৃতপ্রায়। দলীয় ব্যানারে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় মাঝেমধ্যে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিরামহীনভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।

বলছে, এই আইন পাস হলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করবে। দেশীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো কমবেশি সোচ্চার। ডিজিটাল যুগে এই আইন? সরকার বলছেন ডিজিটাল যুগ মানে এটা নয়- অবাধ লাইসেন্স? যা কিছু বলা বা লেখা যাবে। যা ইচ্ছে লেখার মানে হচ্ছে স্বেচ্ছাচারিতা। এটা কখনো কাম্য নয়। এ জন্য কি আইনের দরকার? যে আইন আমার মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়। যে আইন সংবিধানের প্রতি মানুষকে শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায় না। যে আইন বাকস্বাধীনতাকে বাক্সবন্দি করে। 

মনে রাখা দরকার, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণের অপরিহার্য অধিকার হচ্ছে বাকস্বাধীনতা। মানুষ কথা বলবে, ভাববে, অন্যের কথা শুনবে। ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা জানাবে। এটাই তো সংবিধান নামক দলিলের কথা। ক্ষমতার বাইরে থেকে আওয়ামী লীগ এ কথাগুলো কতবার বলেছে। লড়াই করেছে রাজপথে। নিকট অতীতে ১২ বছর আগে রাজপথ কাঁপিয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য। জরুরি জমানার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে কথা বলেছে। 

সংবাদপত্রের ফাইল ঘাঁটলে অসংখ্য শিরোনাম দেখা যায়- যা কিনা আজকের আওয়ামী লীগের চরিত্রের মধ্যে বিস্তর ফারাক। ভারতে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৬৬/এ ধারাটি বাতিল করে দিয়েছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। বিচারক রায়ে বলেছেন, ধারাটি অসাংবিধানিক। বাকস্বাধীনতার পরিপন্থি, অস্বচ্ছ ও পরিণামে ভয়ঙ্কর। 

যাই হোক, ইতিহাস মোটেই শাসকদের পক্ষে থাকে না। বাংলাদেশেও দেখেছি। বিদেশেও ভূরি ভূরি নজির রয়েছে। যে সব দেশ মৌলিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় না- ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা করে না- সে সব দেশ মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিকট অতীতে ইরাক-লিবিয়ার ইতিহাস সবার জানা। আগে উন্নয়ন- পরে গণতন্ত্র চর্চা করতে গিয়ে অনেক দেশের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে। ভিন্নমতকে দমন করা সহজ। বন্দুক পারে না এমন কিছু নেই এই দুনিয়ায়। কিন্তু বন্দুকের তো কোনো দিক নেই। জনগণের প্রতি আস্থা হারিয়ে পৃথিবীতে অনেক শাসকই বন্দুকের প্রতি আস্থাশীল হয়ে পড়েন। আখেরে তাদের দু’কূলই যায়। ক্ষমতা দীর্ঘ করার জন্য বিএনপি অনেক কূটচালের আশ্রয় নিয়েছিল। এর অন্যতম রূপকার ছিলেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া জোটের দুই নেতা। খালেদা জিয়া নিজের ইচ্ছায় অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এখনো একই প্রবণতা। অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ায় ভুলের মিছিল লম্বা হচ্ছে। 

বিশেষ ক্ষমতা আইন চালু করে আওয়ামী লীগ বরাবরই নিন্দিত হয়েছে। কখনো প্রশংসা পায়নি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারাই। আজ যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় তাদের অনেকেই বারবার এই আইনে বন্দি হয়েছেন। নির্যাতিত হয়েছেন। ২০০৬ সালের ৮ই অক্টোবর তথ্যপ্রযুক্তি আইন চালু করেছিল বিএনপি। এখন মূল্য দিচ্ছে কড়াভাবে। তাদের জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে কে জানে। স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতার পক্ষে কেউই কথা বলবেন না। অনেকেই অবশ্য ভুলে যান সবকিছুর একটা সীমারেখা আছে। বা থাকতে হবে। শাসকেরা এর সুযোগ নিয়ে ভিন্নমতকে কব্জা করতে চান। বিপত্তিটা সেখানেই। 

একটা সমাজ কি ভিন্নমত ছাড়া চলতে পারে? ক্ষমতা চিরস্থায়ী ভাবলে অবশ্য কথা নেই। এই পথটা সর্বনাশা। আজ আমাকে আপনি দমন করতে পারেন। ভাবতে পারেন সামনে সব আমার। আমি সবকিছু দমন করবো। কার কি এসে যায়! ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর। কাউকেই ক্ষমা করে না। এক সময় বাংলাদেশের উদারনৈতিক গণতন্ত্রের প্রশংসা করতো সবাই। বিশেষ করে পশ্চিমা দুনিয়া। বলা হতো বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র মুসলিম দেশ যেখানে পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র চর্চা হয়। এখন তারা কি বলছে কারো না জানার কথা নয়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিদেশি সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্র আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য সরকারের কড়া সমালোচনা করছে।

কথা বললেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এক ধরনের রোগে পরিণত হয়েছে। মামলার প্রতিও মানুষের আস্থা কমছে। ভয়ের সংস্কৃতি অন্য এক ভয়ের জন্ম দেয়। জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি গণভোটে দেন। জনগণ গ্রহণ করলে কেউ আপত্তি জানাবে না। আর যদি কোনো সমালোচনাতেই সরকার কান না দেয় তাহলে ফিল্মী দুনিয়ার সুপারস্টার শাহরুখ খানের বিখ্যাত একটি উক্তির কথা স্মরণ করবো। তার কথায়, সময় বদলে গিয়েছে। মনে যা আছে সেটা বলা বা প্রকাশ না করাই ভালো। কারণ সবাই জানেন। এই মনের কথা বলতে হলে বাথরুমে গিয়ে বরং বলাই ভালো। শাহরুখ খান জিন্দাবাদ। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ সেপ্টেম্বর ১৯,২০১৮ 

সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে

সম্পাদকীয়

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে ব্যাপক তোড়জোড় চলছে, তা দোষের নয়।  নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও প্রার্থীই চাইবেন জয়ী হতে এবং সে জন্য আইনের বিধান মেনে তাঁরা কাজ করবেন—এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণার আগেই দল বিশেষ ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যেসব খবর আসছে এবং হাটে-মাঠে-ঘাটে তাকালে যে দৃশ্য চোখে পড়ছে তাতে দেখা যায়, বিভিন্ন আসনে স্থানীয় নেতারা বাহারি পোস্টার ছাপিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। কেউ কেউ সংবাদ সম্মেলন করে, জনসমাবেশের এন্তেজাম করেও প্রার্থিতার কথা জানাচ্ছেন, ভোট চাইছেন। কিন্তু সেই সুযোগটি নিতে পারছে শুধু ক্ষমতাসীন দল ও তার সহযোগীরা। অন্যদিকে সরকারের যাঁরা প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত, অর্থাৎ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের রাখা হয়েছে দৌড়ের ওপর। নির্বাচনের মাস তিনেক আগেই রাস্তাঘাটে যেভাবে পোস্টার লাগানো হয়েছে, তাতে মনে হবে এটি দলীয় নির্বাচন। প্রায় প্রতিটি আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা যেভাবে রংবেরঙের পোস্টার টানিয়ে নিজেদের মাহাত্ম্য প্রচার করছেন, তা কোনোভাবেই সুরুচির পরিচায়ক নয়।

যখন আওয়ামী লীগের নেতারা ট্রেন ও লঞ্চযোগে ‘নির্বাচনী যাত্রা’ চালাচ্ছেন, তখন বিরোধী দল, বিশেষ করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে অযথা হয়রানির খবর আসছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। যখন কোনো মৃত ব্যক্তির নামে সন্ত্রাসের মামলা দেওয়া হয়, কিংবা যিনি ঘটনার সময় বিদেশে অবস্থান করছেন, তাঁকে মামলার আসামি করা হয়, তখন কারও বুঝতে বাকি থাকে না যে এসব মামলা রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আগের মামলাগুলোর পক্ষে যুক্তি দেখানো হয় যে তাঁরা ২০১৪-১৫ সালের সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু নতুন করে মামলা দেওয়ার কী কারণ থাকতে পারে? এখন তো সে রকম কোনো ঘটনা ঘটছে না। এসব মামলার ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে এসে ঠেকেছে।

যেকোনো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পূর্বশর্ত সবার জন্য সমান সুযোগ। যেখানে ক্ষমতাসীন দল ও জোটের প্রার্থীরা অবাধে নির্বাচনের আগাম প্রচার চালাচ্ছেন, সেখানে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি কেবল অনৈতিক নয়, বেআইনিও। সভা-সমাবেশের ক্ষেত্রেও সরকার স্ববিরোধী অবস্থান নিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগীরা চাইলেই কোনো স্থানে জনসমাবেশ করতে পারে। কিন্তু বিরোধী দলের কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে নানা বাধাবিপত্তি আরোপ করা হয়। যদিও সরকারের শীর্ষ মহল থেকে বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে যেকোনো দল চাইলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করতে পারবে।’ আশা করি, এই দৃষ্টান্ত অন্যান্য শহর ও এলাকায়ও অনুসৃত হবে। নির্বাচন সামনে রেখে যদি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিই পালন করতে না পারেন, তাহলে তঁাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বলা প্রহসন বলেই মনে হয়। 

তফসিল ঘোষণা করা হয়নি—এই অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন চুপচাপ বসে থাকতে পারে না। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে, সেহেতু তাদের ওপর কড়া নজর রাখতে হবে। কমিশনকে মনে রাখতে হবে, তারা পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত। তফসিল ঘোষণার আগে হোক আর পরে হোক—নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা তাদের কর্তব্য। তফসিল ঘোষণার আগে কোনো দল নির্বাচনী যাত্রা চালাতে পারলে অন্যরা কেন পারবে না? নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি ব্যাহত হয়, এমন কিছু কেউ যাতে করতে না পারে, সেই নিশ্চয়তাও কমিশনকে দিতে হবে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ সেপ্টেম্বর ১৯,২০১৮ 

Classes dislocated for MPs programme

EDITORIAL

Schools are not for private use

When a sitting member of parliament (MP) decides to turn a secondary school in his constituency into a party centre for his personal use, and that too for three days during which time no classes were held, we pause to think how power goes to one's head. The school was handed back to its management with food leftovers which just goes to show how low an esteem the lawmaker holds of the educational institution, its students and teachers.

We would like to know precisely why the school's management committee did not protest this treatment, and instead condoned the action of the MP saying that there was nothing wrong in using the school premises since it was adjacent to his house. The incident occurred recently at Dhoakhola Coronation High School and College in Bera upazila and we are told that students are finding it very hard to bear the smell of stale food left behind.

It would seem that government property nowadays is treated as personal estate by some people's representatives. Apparently the feast was an attempt by the lawmaker to clinch the party's nomination in the upcoming elections. If this is the sort of behaviour we are going to witness from our lawmakers, then what hope is there to instil any worthwhile values in our children? They are learning from their “guardian”, as the MP claims he is, that displaying utter disregard for people is perfectly legitimate.

  • Courtesy: The Daily/ Sep 19, 2018  

4,300 acres of hills, forests razed for Rohingya shelters

UN report finds

A total of 4,300 acres of hills and forests were razed down to make temporary shelters, facilities and cooking fuel in Ukhia and Teknaf of Cox's Bazar, threatening the biodiversity of the three ecologically-critical areas of the country, according to a latest report.

A joint study, titled “Environmental Impact of Rohingya influx” conducted by the United Nations Development Programme (UNDP) and UN Women, with support from Ministry of Environment, Forests and Climate Change, was unveiled yesterday at a hotel in the capital.

The report highlighted the critical impact of one of the world's biggest influxes -- of above 700,000 Rohingyas -- on the environment of Cox's Bazar, and recommended measures for mitigation, restoration and conservation.

The report said since the influx began in August 2017, coupled with the host community and Rohingyas from past influxes, the crisis-affected population is now almost 1.5 million in Cox's Bazar. It has created massive pressure on the already-dilapidated environment of Cox's Bazar, which still remains significantly underfunded.

The report identified the key cause for the encroachment as the fact that nearly 6,800 tonnes of fuel wood is collected each month, and each Rohingya family uses on an average 60 bamboo culms to construct their temporary shelters.

It said due to the indiscriminate hill-cutting to provide shelters to the Rohingyas, the terrain of the hills has lost their natural setting, causing a potential risk of landslides.

The report also found thousands of shallow tube wells as threats to aquifers. Air pollution has risen due to increased vehicular traffic and smoke from firewood burned by refuges, and due to a lack of recycling, polythene bags and plastic bottles are piling up in various parts of the area, it said.

Sudipto Mukerjee, country director of UNDP Bangladesh, said the Rohingya influx has been putting immense pressure on scarce natural resources in the area, resulting in degraded natural forests, barren hills and an emerging water crisis.

“This situation demands immediate investment in restoring the environment and ecosystem, as part of the Bangladesh government's response in Cox's Bazar.”

Farah Kabir, country director of ActionAid Bangladesh, said the government should focus on alternative fuel use to address the fuel crisis. She also suggested rainwater harvesting to address the water crisis in the area.

“I urge the government to stop distributing kerosene at individual levels, as it may cause fire to break out at any time in the highly-dense camp,” she said, adding that the government can apply for the Green Climate Fund to address the issue.

Mohammad Mohsin, additional secretary of Ministry of Disaster Management and Relief, said only addressing the ecological and environmental problems will not bring any sustainable result. Rather, it requires a holistic approach by all stakeholders to address the Rohingya issue.

Mohammaed Shafiul Alam Chowdhury, chief conservator of forests, said immediate action should be taken to reduce pressure on forests by providing alternative fuel.

Anisul Islam Mahmud, minister for environment, forests and climate change, said the problem is not a simple one that can easily be managed.

“We tried rice husk and LPG as alternative fuel, but those did not get much success. Open kitchens or block kitchens can be a solution to the fuel problem,” he added.

The minister said the Rohingya issue is not going to be over in the next few years, so a well-thought and well-managed approach is needed to address the fuel crisis.

Anisul, however, said the water scarcity problem is the biggest issue there, as there will be no water there after a certain time.

He questioned whether donor agencies will come to restore the environment in Bangladesh after the Rohingyas leave for their homeland.

  • Courtesy: The Daily Star /Sep 19, 2018