Search

Monday, October 1, 2018

Improving railway service

Editorial

After successive governments' morbid unease with the country's railway, the incumbent government directed its focus on this cheapest and safest mode of transportation. The government investment totalling Tk 456 billion over the past 10 years was more than that of the three and a half decades before that period. Naturally, the hope was that the Bangladesh Railway (BR) would see commensurate improvement in its service. 

A report quoting insiders and communication experts now disappoints both the government and the public by claiming that if the railway has any improvement, it has not been more than cosmetic. In the past 10 years (2009-19), the investment has increased from Tk19.12 billion to 111.54 billion -an increase by 483 per cent. But railway service here leaves much to be desired on account of many of its endemic weaknesses and deficiencies. Are there quarters which are in an unholy alliance to derail the service delivery deliberately or is this a case of misplaced investment?

Reading between the lines, one can see that the large chunks of money have been allocated for quite a few mega projects. In the process, the existing infrastructure of the BR did not receive the fund it needed to bring about a perceptible improvement in its service. 

The authorities could do well if they concentrated on the existing railway tracks, passenger coaches, wagons and locomotives with an eye for expansion and improvement of the overall service. When replacement of metre gauge tracks as well as the old and rickety broad gauge ones was the order of the day, the demand remained largely unmet. Even railway engineers once claimed that use of bamboo to hold railway tracks together was sound from engineering point of view. How ludicrous! When so much money was invested in the railway, effective repair works suffered like this. Railway tracks are unable to support trains moving at speeds faster than only 70-80 km an hour.

There is no guarantee that larger investment means improvement in the system. Where the investment is made makes the difference in the situation. When trains have to wait at a station for a long time in order allow another to pass by, the paucity of double tracks exposes the weakness of the infrastructure. A train journey from Dhaka to Kolkata can reveal how backward the country's railway is when compared with the electric trains that run on a vastly wide network in West Bengal. So the need was to take on the existing weak railway tracks and expanding those with a view to operating more passenger and goods trains.

Lobbies favouring road transports have never wanted the railway to flourish. Now it is time that the government provided a shot in the arm of the BR. Money invested in the sector must be made worth doing so. The infrastructure has to be developed under a long-term comprehensive plan. The prime minister of the country once declared that people will be travelling in high-speed trains. To materialise her vision, the investment has to be meticulous in addition to its size.

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 01, 2018

‘নির্লজ্জের’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

সম্পাদকীয়

খেলাপি ঋণের দায় এড়াতে পারেন না অর্থমন্ত্রী


অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঋণখেলাপিদের নির্লজ্জ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর এই মন্তব্যে নির্লজ্জ ঋণখেলাপিরা আদৌ লজ্জিত হবেন বলে মনে হয় না। এর আগে জাতীয় সংসদেও ১০০ শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেই তালিকায় ক্ষমতাসীন দলের দুজন সাংসদের নামও ছিল। যাঁদের দায়িত্ব আইন করে ঋণখেলাপিদের ধরা, তাঁরা নিজেরাই যদি শীর্ষ ঋণখেলাপি হন, তাহলে ঋণখেলাপির অপসংস্কৃতির প্রসার ঘটাই স্বাভাবিক।

অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তালিকা থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে ঋণখেলাপি ২ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এসব ঋণখেলাপির কাছে ৮৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনাদায়ি অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ঋণ অনাদায়ি ব্যাংকের তালিকার শীর্ষেও রয়েছে সরকারি চারটি ব্যাংক। ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে সোনালী ব্যাংকের ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা, জনতা ব্যাংকের ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৭ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের ৯ হাজার ২৮৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং বেসিক ব্যাংকের ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি ৮৫ লাখ ৭ হাজার টাকা।

আবুল মাল আবদুল মুহিত একজন অভিজ্ঞ আমলা। তিন মেয়াদে (আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদে প্রায় ১০ বছর এবং সামরিক শাসক এরশাদের আমলে ২ বছর) অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে সচিব ছাড়াও বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। তিনি যে ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের হিসাব দিয়েছেন, এর বেশির ভাগই তাঁর আমলের। তাঁর সময়েই হল–মার্ক, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা ঘটেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ১০ শতাংশ খেলাপি বা মন্দ ঋণ থাকতে পারে। কিন্তু বর্তমানে মন্দ ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি এবং ব্যাংকগুলো থেকে নানা কারসাজি করে কথিত ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে আর শোধ করছেন না। এর পেছনে যে রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয় আছে, সেটি এখন দিবালোকের মতো সত্য।

গত ১০ বছরে ব্যাংকিং খাতে যে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে তাতে শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি খাতের অনেক ব্যাংকও ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী মাঝেমধ্যে উষ্মা প্রকাশ ছাড়া ব্যাংকিং খাতের বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি বন্ধ করতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন, সে রকম উদাহরণ কমই আছে। মধ্যরাতে কোনো কোনো ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের ঘটনাও ঘটেছে। অনেক সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে দেখেছি।

অর্থমন্ত্রীকে যেই কথিত ঋণগ্রহীতা ঋণ নিতে কয়েক জোড়া জুতা খোয়ানোর কাহিনি শুনিয়েছেন, তাঁকে খুঁজে বের করা দরকার। ঋণ নিতে তাঁর জুতা খোয়ানোর পেছনের রহস্যটি বের করতে পারলে ব্যাংকিং খাতের অনেক অনিয়ম-দুর্নীতিরই অবসান ঘটবে। কেউ যদি ‘জুতা খুইয়ে’ ঋণ নিয়েও থাকেন, তার অর্থ এই নয় যে তিনি সেটি শোধ করবেন না।

জনগণের অর্থ নিয়ে যাঁরা এ ধরনের মামাবাড়ির আবদার তোলেন, অর্থমন্ত্রী তাঁদের ছেড়ে দিতে পারেন না। খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের পাশাপাশি যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা নিয়মবহির্ভূতভাবে ঋণ দিয়েছেন, তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

অর্থমন্ত্রী তাঁর উত্তরসূরির জন্য প্রতিবেদন লিখে যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু প্রতিবেদন লেখা বা সদুপদেশ দেওয়ার চেয়ে জরুরি হলো তাঁর ভাষায় নির্লজ্জ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। অন্যথায় নির্লজ্জ ঋণখেলাপিদের ছাড় দেওয়ার দায় তিনি এড়াতে পারবেন না।

  • কার্টসি: প্রথম আলো /০১ অক্টোবর ২০১৮

কালো আইনটির সংশোধন চাই

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন


সম্প্রতি মিয়ানমারে রয়টার্সের দুজন সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সরকারের তরফে অভিযোগ ছিল, তাঁরা ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ করে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য প্রকাশ করেছেন; আর দণ্ডপ্রাপ্ত সাংবাদিকেরা বলছেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাঁরা আসলে ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন’। কিন্তু পুরো পৃথিবীর প্রতিবাদ উপেক্ষা করে মিয়ানমার রাষ্ট্রের কালো আইন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁদের শাস্তি দিয়েছে।

সাংবাদিকতার শিক্ষক হিসেবে আমরা মনে করি, সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে বাংলাদেশেও মিয়ানমারের মতো অসংখ্য ঘটনা ঘটবে। কেন এই আশঙ্কা? আমরা কি ভুলে গেছি, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় কত সাংবাদিক এবং সাধারণ নাগরিক হয়রানির শিকার হয়েছেন! এ বছরের প্রথম ছয় মাসে মোট মামলা হয়েছে ৩৯১টি। ওই সব মামলার বেশির ভাগই হয় ৫৭ ধারায়। এসব মামলায় আসামি ৭৮৫ জন, যাঁদের ৩১৩ জন গ্রেপ্তার হন। এই সময়ে ৫৭ ধারায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা হয়। আমরা দেখেছি, এ আইনের অপব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে; সর্বশেষ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম ছাত্রলীগের এক নেতার মামলায় কারাগারে আছেন।

আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই অভিযোগে শুরু থেকেই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের মুখে সরকার থেকে এর আগে বলা হয়েছে, এটি বাতিল করা হচ্ছে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে, ওই ধারাটির বক্তব্য বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যায় ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের ভিন্ন ভিন্ন ধারায় রাখা হয়েছে। জনগণের সঙ্গে এই প্রতারণা কেন?

বারবার বলা হয়েছিল, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নতুন আইন করা হবে এবং চূড়ান্তকরণের আগে সংশোধনের সুযোগ থাকবে। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হয়নি; সাংবাদিকসহ অংশীজনদের আপত্তি উপেক্ষা করেই পাস হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল। জাতীয় সংসদে আইনটি উত্থাপনের পর দেখা যায়, এতে লক্ষণীয় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এমনকি ‘ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তি’-বিষয়ক ৩২ ধারার মতো আরও কঠিন এবং বহুল আলোচিত, বিতর্কিত ও নিন্দিত একটি ধারা এতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণ কেন এই আইনের বিরোধিতা ও আইনটি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তা আইনটির বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো বিবেচনায় নিলেই বোঝা যাবে।

৩২ ধারামতে, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অতিগোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ ও সংরক্ষণ করেন বা সহায়তা করেন তাহলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা; ২৫ লাখ টাকা জরিমানা।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ৪৩ ধারার মূল বিষয়বস্তু পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তার। এ আইনের উপধারা-১-এ বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে কোনো স্থানে এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বা সাক্ষ্য-প্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছে পরিবর্তন বা অন্য কোনো উপায়ে দুষ্প্রাপ্য হওয়ার বা করার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করে নিম্নবর্ণিত কার্য সম্পাদন করতে পারবেন:

ক) ওই স্থানে প্রবেশ করে তল্লাশি এবং প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ;

খ) ওই স্থানে তল্লাশিকালে প্রাপ্ত অপরাধ সংঘটনে ব্যবহার্য কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তথ্য-উপাত্ত বা অন্য সরঞ্জামাদি এবং অপরাধ প্রমাণে সহায়ক কোনো দলিল জব্দকরণ;

গ) ওই স্থানে উপস্থিত যেকোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশি;

ঘ) ওই স্থানে উপস্থিত কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ করেছেন বা করছেন বলে সন্দেহ হলে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার।

এ ছাড়া হ্যাকিং, কম্পিউটারের সোর্স কোড ধ্বংস ও সরকারি তথ্য বেআইনিভাবে ধারণ, প্রেরণ ও সংরক্ষণ করে থাকছে নানা শাস্তি ও জরিমানার বিধান।

নতুন আইনের বেশির ভাগ ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে এর মধ্যে মানহানির ২৯ ধারাসহ ২০, ২৫ ও ৪৮ ধারার অপরাধে জামিনের বিধান আছে। আইন বাস্তবায়নে থাকছে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি। আর তদারকিতে থাকবে উচ্চপর্যায়ের ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল। এর প্রধান হবেন প্রধানমন্ত্রী।

এই আইনের ধারাগুলোতে চোখ বোলালে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, এখানে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হচ্ছে। সে উপলব্ধি থেকে সম্পাদক পরিষদ এ আইনের ২১, ২৫, ২৮,৩ ১, ৩২ ও ৪৩—এই ছয়টি ধারা সম্পর্কে আপত্তি জানিয়েছে। তাঁরা দাবি করেছেন, নতুন আইনটির, বিশেষ করে এ ছয়টি ধারা সংবিধান ও তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল আইন হিসেবে পাস না করতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশও (টিআইবি) আহ্বান জানিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বিলটির বিভিন্ন ধারার ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্বেগ ও মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে, যা তাঁদের স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া ধারাটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং যেকোনো ধরনের গবেষণামূলক কর্মকাল পরিচালনার প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।

আমরা মনে করি, সরকারঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটি সে ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করবে। মত, দ্বিমত এবং ভিন্নমতের সম্মিলন ছাড়া সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায় না। আর গণতন্ত্রকে শ্বাসরোধ করলে সেটি স্বৈরতন্ত্রে রূপ নেয়, যা কখনোই একটি দেশের জন্য কল্যাণকর নয়।

আমরা আশা করতে চাই জনগণের বাক্‌স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়—এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার কার্যকর করবে না। তাই কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসহ (সিপিজে) অন্যরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যে আবেদন জানিয়েছেন, সেই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমরাও আশা করছি, তিনি (মহামান্য রাষ্ট্রপতি) এতে সই করবেন না, তিনি এমন ‘কালো আইনের’ অনুমোদন দেবেন না।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জয় হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক।

রোবায়েত ফেরদৌস, মাহ্বুবুল হক ভূঁইয়া, কাজী আনিছ, এম মাহবুব আলম, নাসরিন আক্তার, সাহস মোস্তাফিজ, মাহমুদা আক্তার, রিফাত সুলতানা ও সজীব সরকার: লেখকেরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক

  • কার্টসি: প্রথম আলো / ০১ অক্টোবর ২০১৮

একটা বই নিয়ে তাদের এত ভয় কেন?

বিবিসিকে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা



বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বিবিসিকে বলেছেন, এ ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি' বইটি তিনি নিজে লিখে নিজের উদ্যোগে প্রকাশ করেছেন, অন্য কারো এতে কোনো ইন্ধন নেই।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বইটি প্রকাশের পেছনে অনেকের ইন্ধন, উদ্যোগ এবং সাহায্যের যে কথা খোলাখুলি বলেছেন, বিচারপতি সিনহা তা প্রত্যাখ্যান করেন।

"প্রধানমন্ত্রী যদি জানেন, তাহলে তা প্রকাশ কেন করছেন না? সাংবাদিকদের তা বের করতে বলছেন কেন?"

বিচারপতি সিনহা বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় লেখা নিয়েও তাকে একই ধরনের কথা শুনতে হয়েছে। "তারা কখনো বলেছে আইএসআই এই রায় লিখে দিয়েছে, কখনো বলেছে ড. কামাল হোসেন লিখে দিয়েছেন। আবারো এখন এই বই নিয়ে একই প্রশ্ন।"

তিনি বলেন, বইটিতে তার ব্যক্তিগত সব অভিজ্ঞতা তিনি লিখেছেন যেটা অন্য কারো পক্ষে লিখে দেওয়া সম্ভব নয়।

"বইটিতে কিছু ভুল রয়ে গেছে, মুখবন্ধে আমি তার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছি। অন্য কেউ যদি এডিট করে দিত, তাহলে এই ভুলগুলো থাকতো না।"

"আসলে স্বৈরশাসনে যারা মনোনিবেশ করেন, হিটলারের ইতিহাস যদি দেখেন, তার গোয়েন্দারা মিথ্যাকে সত্য বানানোর চেষ্টা করতো। সরকারের যে সব বাহিনী এখন আছে, তাদের কথাই এখন প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) মুখে ফুটে ওঠে।"

"উনি কেন এত ভয় পাচ্ছেন, এটা তো আত্মজীবণীমুলক একটি বই।"

বিচারপতি সিনহার বইটি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার ঢাকায় বলেন, ''ক্ষমতা হারানোর জ্বালা থেকে বিচারপতি এস কে সিনহা বই লিখে মনগড়া কথা বলছেন। ক্ষমতায় যখন কেউ থাকে না, তখন অনেক অন্তরজ্বালা বেদনা থাকে। এই অন্তরজ্বালা থেকে অনেকে অনেক কথা বলেন।''

''উনি প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায়, এখন যা বলছেন বইতে, সেটা বলার সাহস কেন একজন বিচারপতির থাকে না - এটা নৈতিকতার প্রশ্ন,'' বলছেন মি. কাদের।

রাজনৈতিক আশ্রয়

শনিবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি সিনহা জানান, দেশে তার জীবনের ঝুঁকির কারণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন।

রোববার টেলিফোনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিবিসির কাছেও তার রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি এই আশ্রয় চেয়েছেন।

"আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি হিসাবে এখানে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়াটা আমাদের দেশে, সরকার এবং মূল্যবোধের জন্য একটা প্রশ্ন...কিন্তু আমার জীবনের নিরাপত্তা কে দেবে"

কেন তিনি মনে করছেন দেশে তার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে? বিবিসির এই প্রশ্নে বিচারপতি সিনহা বলেন, জঙ্গি বিষয়ক বিভিন্ন মামলার রায় দেওয়া নিয়ে একদিকে ধর্মীয় জঙ্গিদের কাছ থেকে হুমকি এবং অন্যদিকে সেনা গোয়েন্দাদের কাছ থেকে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে বলে তাকে বিদেশে আশ্রয় চাইতে হয়েছে।

"আমাকে মারার জন্য জঙ্গিরা একাধিকবার চেষ্টা করেছে। আমার স্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে। আমার গ্রামের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে...আমার দুটো কুকুর পর্যন্ত তারা মেরে ফেলেছিল...।"

"অন্যদিকে সরকার আমাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে, ডিজিএফআই আমাকে জোর করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে, তারা আমাকে হুমকি দিয়েছে।"

বিচারপতি সিনহা তার সাক্ষাৎকারে বার বার ঘুরে ফিরে বলার চেষ্টা করেছেন তাকে নিয়ে কিছু মানুষ শেখ হাসিনাকে বিভ্রান্ত করেছে, ভুল বুঝিয়েছে। আবার একইসাথে গণতন্ত্র এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে শেখ হাসিনার নানা ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।

"আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র আনতে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য লড়াই করেছিল, কেয়ারটেকারের মধ্য দিয়েই তারা ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই তিনি সুর পাল্টে ফেলেন।"

এখন কেন তিনি এত সরব হলেন?

দেশে যখন একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, সে সময় এতদিন পর তিনি কেন এই বই প্রকাশ করলেন? তিনি কি কাউকে রাজনৈতিক সুবিধা দিতে চেয়েছেন?

এই প্রশ্নে বিচারপতি সিনহা বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতিতে কে জিতলো, কে হারলো তা নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। "সরকার আমার বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার করেছে, আমি শুধু তা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম। যখন শেষ করতে পেরেছি তখন প্রকাশ করেছি। এতে বিরোধী দল যদি কোনো সুবিধা পেয়ে থাকে, তাতে আমার কী লাভ?"

"তারা (সরকার) এত ভয় পাচ্ছে কেন? তারা তো উন্নয়ন করেছে। দেশের অর্থনীতি ভালো, আমি নিজেও তা স্বীকার করি। তাহলে আমার একটা বই নিয়ে এত ভয় পাচ্ছে কেন? তাহলে তারা যে দুর্নীতি করেছে সেটা কি উন্নয়নকে ছাপিয়ে যাবে? এই কারণেই কি তারা ভয় পাচ্ছে?"

  • বিবিসি বাংলা/৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

Carbon tax may yield Tk 4,300cr a year: PRI

Carbon tax would facilitate reduction in emission of environment-polluting greenhouse gas and allow the state to earn revenue, said the Policy Research Institute (PRI) of Bangladesh yesterday. The research organisation said levying 10 percent carbon tax on the current prices of octane, petrol and diesel would enable the government to earn Tk 4,300 crore in revenue in the first year alone.

The receipts will rise to Tk 4,800 crore in the first year if the tax is slapped on fuel oil and kerosene.

At the same time, 11 lakh tonnes of carbon dioxide (CO2) emission will be reduced.

And the amount of tax receipts will increase to Tk 15,283 crore by 2031 and Tk 24,424 crore by 2041.

Some 67.92 million tonnes of CO2 emission could be reduced by then through the tax.

The prices of goods and services that use gasoline and diesel intensively will rise and output and employment will fall for imposition of the tax.

But the revenue from the carbon tax can be used for investment in clean fuel, clean technology and infrastructure projects and in the process offset the output loss, said Sadiq Ahmed, vice-chairman of the PRI, at a discussion on carbon tax in Bangladesh at its office in Dhaka.

The PRI, the Adam Smith International and the Economic Dialogue on Green Growth jointly organised the event.

The impact of price increase on low-income people will be less, Ahmed said while presenting a paper on carbon tax for Bangladesh, authored by him and PRI Director Bazlul Haque Khondker.

It would be higher on high-income people, he said, adding that the increase in the cost of living for the poor could be offset through increased investment in health, education and social protection.

“We primarily suggest withdrawal of subsidy on fuel to discourage its consumption to reduce emission. Then, we recommend levying excise tax on top of the prices,” Ahmed said.

The PRI has come up with the recommendation at a time when CO2 emission is growing 9 percent yearly owing to rapid urbanisation and industrialisation, which increases the use of electricity and transport.

From a global perspective, Bangladesh's contribution to greenhouse gas is 0.2 percent.

However, the country's increasing growth rate will push up the demand for power and transport, and this will lead to a spiral in CO2 emission to upwards of 10 percent.

Power, industry and transport together contribute 76 percent of the CO2 emission in Bangladesh. Power generation is the lead polluter at 44 percent, followed by industries at 18 percent and transport at 14 percent, according to the PRI.

“Fossil fuel is the culprit. That explains why Bangladesh has to go big on renewable energy,” said Zaidi Sattar, chairman of the PRI.

“Business as usual is no longer an option. We have to act, and act now to leave the future generation with a land that is green,” he added.

The PRI said globally the share of fossil fuel in power generation is declining while the share of renewable energy is increasing.

In Bangladesh, the share of renewables has fallen to 1.6 percent in 2017 from 9.8 percent in 1990, according to Ahmed.

“Contrary to global trend, much of the power production in Bangladesh is shifted to carbon-polluting fossil fuel.”

The government has set a target to generate 10 percent of electricity from renewable sources by 2020, but at the same time it subsidises fossil fuel, he said.

In countries that have moved ahead successfully with renewable energy, the use of fossil fuel has been taxed there considerably to discourage its use, Ahmed said, adding that a number of countries have slapped carbon tax to reduce consumption.

The government should have a clear policy on energy, said M Ismail Hossain, chairman of the department of economics of North South University.

“Carbon tax is a well-established practice to discourage something that is socially undesirable,” said Ahsan H Mansur, executive director of the PRI.

The revenue from the carbon tax could be used for road development to facilitate faster transport. It will reduce cost, time and emission, he said. Mashiur Rahman, economic affairs adviser to the Prime Minister, echoed the same.

This is high time for levying such tax, said Selim Raihan, executive director of the South Asia Network on Economic Modelling. “But, we should also note that Bangladesh is also a victim of actions taken by other countries.”

  • Courtesy: The Daily Star /Oct 01, 2018

Stop the illegal tree felling!

EDITORIAL

Forests endangered by loggers



In remote Diri Mro Para in Bandarban's Alikadam, a group has been cutting down trees illegally from a Village Common Forest (VCF), causing a serious water crisis for ethnic communities who depend on VCFs to conserve their water sources. The indiscriminate felling of trees also threatens the livelihood of locals, who fear they might have to leave their ancestral homes if the logging continues as that will leave them with no means to survive. 

They alleged that a couple of influential people managed to get local administration and forest officials to look the other way as their men felled trees illegally from the VCFs. When contacted, these men, however, claimed to have bought the trees from Diri Mro Para's village chief who dismissed the claim as false. Unfortunately, this has become a recurring problem across the Hill Tracts, as evidenced by media reports.

In the meanwhile, villagers who protested the illegal cutting down of trees were threatened with death by the loggers. What we would like to ask is, why haven't any action been taken against those responsible for the illegal tree felling and making death threats to those protesting the crime? Deforestation was already a problem in the area, which is why headman of each Mouza were instructed to conserve VCF forests by the government in the first place. Amidst the already severe deforestation crisis, the felling of trees by this criminal gang not only threatens nearby communities but the environment also. So why are the authorities responsible for protecting the environment not at all bothered?

Those tasked with conserving the environment must do better. We call on the authorities to immediately investigate the matter and bring an end to the illegal tree felling.

  • Courtesy: The Daily Star / Oct 01, 2018

BNP focuses on polls, unity

Rolls out 12-point goal to be 'fulfilled' if voted to power, places 7-point demand, announces 2-day agitation



Urging party men to prepare for both the election and movement, the BNP yesterday unveiled a 12-point goal and promised to accomplish those if voted to power through the upcoming parliamentary polls.

From a rally in the capital, the party also presented a seven-point demand, including unconditional release of Khaleda Zia, saying these would be the basis of forging a “greater unity” among political parties.

Announcing the next course of action to press for the demands, the BNP said it will stage rallies and submit memorandums to the deputy commissioners and divisional commissioners in district and divisional headquarters on October 3 and 4 respectively.


It also explained what it will do if it takes office, after remaining out of parliament since 2014, when it boycotted the 10th parliamentary polls. 

The party's 12-goal includes establishing good governance, rule of law, and checks and balances, modernising armed forces, and freeing the Anti-Corruption Commission of political influence and making it effective. 

“We will fulfil the promises if we go to power,” BNP Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir said in his address at the rally, held at Suhrawardy Udyan.

Addressing the party activists and supporters, senior BNP leaders said people from all walks of life should be united to oust the “fascist” government because a conspiracy is on to hold another “farcical” election like that of January 5, 2014.

“Our movement will continue till our demands are met,” said Mirza Fakhrul, who read out the demands and goals.

The demands also include dissolution of parliament ahead of the polls, resignation of the government and formation of a non-party polls-time administration based on talks with all political parties.


“People from all walks of life and of different opinions should forge unity against the government,” Fakhrul added.

The party has been trying for a “greater national unity” to mount pressure on the government to hold a free and fair election.

Earlier, Dr Kamal Hossain's Jatiya Oikya Prokriya and Badruddoza Chowdhury's Juktofront pledged to work together. On September 22, senior BNP leaders shared a stage with the two veteran leaders and representatives of some smaller parties.   

At yesterday's gathering, Mirza Abbas, a standing committee member, said, “The government is trying to foil the unity process. If it [the process] succeeds, it will be good, but if fails, we have to continue our movement.”

CHAIR FOR KHALEDA

The rally kicked off around 2:00pm in the presence of thousands of supporters and activists -- calling for the release of Khaleda, return of party's acting chairman Tarique Rahman and election under a non-partisan interim government.









The centre chair on stage is left empty at the BNP rally yesterday. Party leaders made the symbolic gesture as their chief Khaleda Zia is in jail. Photo: Star

An empty chair was kept at the centre stage, symbolising the absence of the BNP chairperson, who is now behind bars after conviction in a corruption case.

As the main speaker, party's standing committee member Khandakar Mosharraf Hossain urged government officials to carry out their duties independently and not to follow “illegal orders” of the “illegal Awami League” government.

“Please stand beside the people. There is nothing to fear as we do not believe in the politics of vengeance,” he said.

The BNP leader said there would be no election without Khaleda and people will not accept any such election, he said.

Speaking at the rally, BNP standing committee member Moudud Ahmed alleged that the government is ruining the election atmosphere fearing debacle in the upcoming polls. “Everyone has to be aware of the government attempt to foil the election.”

Countering some AL leaders' statement that they will resist BNP on the streets, Moudud said, “We will also resist. This time we will not leave the ground.”

He said they tried to have Khaleda released through legal battles but failed, as the government interfered in the lower court. “So there is only way to get Khaleda Zia released and that's taking to the streets.”

The former law minister also said if his party wins the polls, Digital Security Act will be scrapped within a week.

The law, dubbed draconian by democratic forces of the country, is “contradictory” to the constitution, Moudud said, adding that it is “a severe blow to press freedom”.

“Police have been given the power to arrest people without warrants under this law -- which is unprecedented,” he said. “The law has been enacted to cover up the misdeeds of the ruling party.”







A BNP activist, who was on his way to the rally, protests while being dragged away by police. The photo was taken from the city's Shahbagh area yesterday. Photo: Star

Jamiruddin Sircar, another standing committee member, said, “The ongoing movement will stop only when the government will step down.”

Senior BNP leader Abdul Moyeen Khan said, “The government has turned into an autocratic regime and none of the autocratic regimes across the world stayed in office forever. All the democratic forces should be united to corner the Awami League.”

Nazrul Islam Khan, another central leader, underscored the need for a “greater unity” to free Khaleda and force the government to hold the upcoming national election under an impartial election-time administration.

“We can't have our demands met if we fail to form a greater national unity.”

In November last year, the party held a public rally in Suhrawardy Udyan where Khaleda Zia was present.

BNP leaders alleged that a number of party men were arrested from the meeting venue and many party leaders and activists were barred from arriving at the venue.

THE GOALS

If elected, the BNP said, it will not allow any terrorist group to use the territory of Bangladesh to carry out criminal activities targeting any other country.

Its other goals are appointment of judges in a transparent way and independence of judiciary; freedom of media; security and fundamental rights of citizens; maintaining the policy of “friends to all, malice to none” in maintaining relations with foreign countries,  and ensuring better living standards of low-income people; national consensus ending politics of vengeance.

DEMANDS 

The party will press for army deployment with magistracy power at all polling centres during the upcoming national polls; presence of local and international observers during elections, and reconstitution of Election Commission and discarding any plan to use EVM.    

Besides, it wants release of opposition leaders, scrapping of their punishment and withdrawal of false cases lodged against them; end to filing political cases and implicating opposition party men in new cases from the first day of announcement of the election schedule; stopping arrest of opposition men in old cases; withdrawal of cases against quota and safe road protesters and journalists who took to the streets.

  • Courtesy: The Daily Star/ Oct 01, 2018

Six killed in 'shootouts' in a single day

Six alleged criminals including two suspected drug dealers were killed in separate “gunfights” in three districts early yesterday. A “drug dealer” was killed in Narayanganj, two alleged criminals – “a drug trader and a robber” -- were killed in Cox's Bazar in “gunfights” with police, while three suspected robbers were killed in infighting in Bandarban, law enforcers claimed.

At least 413 people have been killed in custody, shooting and incidents of shootouts involving law enforcers in the last nine months, according to rights body Ain o Salish Kendra (ASK).

Narayanganj police claimed that Ali Nur, 50, an accused in at least 20 cases and a listed top drug dealer, was killed in a “shootout” with the law enforcers in Sonargaon upazila.

Morshed Alam, officer-in-charge of Sonargaon police, said the “shootout” took place when a patrol team raided Chilarbagh area.

The drug peddlers opened fire on police, who retaliated, resulting in a “gunfight”, in which Nur was injured.

He was taken to a local hospital where doctors declared him dead. Police claimed to have recovered 300 yaba pills, a gun and 1.5kg of cannabis from the spot.

The death came days after Narayanganj police put a bounty of Tk 10,000 for information leading to his arrest.

Another alleged drug peddler, Imran alias Putia Mistri, 35, was killed in a “shootout” with police in Cox's Bazar's Teknaf upazila around 5:00am yesterday.

Ranajit Kumar Barua, officer-in-charge of Teknaf police, said they arrested Imran on Saturday night and took him to Dargahpara graveyard area to recover stashed yaba pills.

Sensing the presence of police, his cohorts opened fire on them, prompting them to retaliate, he said, adding that Ranajit was hit and he died on the spot.

Police claimed to have recovered three firearms, five bullets and 7,000 yaba pills from the spot.

With these, at least 238 suspected drug dealers have been killed since the nationwide anti-narcotics drive began on May 4. Most of them were killed in so-called shootouts involving police and Rab.

In Maheshkhali upazila of the district, suspected robber Mohammad Karim, 32, was killed in a so-called gunfight with police.

Pradip Kumar Das, officer-in-charge of Maheshkhali police, said the gunfight took place in Shapladeba village when robbers opened fire on law enforcers.

Bullet-hit Karim was rushed to Maheshkhali Upazila Health Complex where he was declared dead. Police claimed to have recovered eight locally made guns and 20 bullets from the spot.

In Bandarban, three alleged robbers were killed in what police claimed was a gunfight between two gangs in Baisharia area.

The deceased were identified as Anwar Hossain alias Anaiya, 28, Hamidur Rahman, 25, and Parvez Hossain Bappi, 26.

Zaker Hossain Majumadar, superintendent of Bandarban police, said a team of law enforcers rushed to the spot after hearing gunshots and recovered the bodies.

Four homemade guns and eight bullets were also found there, he claimed.

The deceased were accused in cases filed for robbery, murder, and abduction, the SP said.

Our correspondents in the districts concerned contributed to this report.

ASK REPORT

Of the 413 people who died in the last nine months while in custody, during “shootings” and “shootouts” involving law enforcers, 260 were killed during the countrywide anti-narcotics drive between May 15 and yesterday, according to a report released by the ASK.

The rights body prepared the report based on reports published in eight newspapers and information collected from its own sources.

Referring to the killings of 260 people during the drive, the rights body said the situation was panicking people.

Cox's Bazar Municipality councillor Akramul Haque was killed in a “gunfight” involving law enforcers on May 26, the report said, adding that his family on May 31 revealed an audio clip creating more controversy about involvement of law enforcers in such killings.

According to allegations raised by family members and witnesses, 21 people were detained by plainclothes men in the last nine months, the report said. Of them, two returned and 10 were later found to be arrested. However, the law-enforcement agencies denied such allegations.

The report further said 62 people died in jail custody during the corresponding time, while 20 people were killed and 2,609 wounded in 194 incidents of political violence.

The ASK said 95 women fell victim to sexual harassment. Of them, four committed suicide and seven people including a woman were killed for protesting harassment.

Besides, 616 women were raped and 54 of them were killed after rape, the report added.

  • Courtesy: The Daily Star/ Oct 01, 2018

যেখানে প্রধান বিচারপতি বিচার পায় না সেখানে খালেদা জিয়া বা অন্যরা কিভাবে ন্যায়বিচার পাবেন?

বই প্রকাশনা উৎসবে এস কে সিনহা


বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রের তিন নম্বর ব্যক্তি। সেই প্রধান বিচারপতি যেখানে ন্যায়বিচার পান না সেখানে খালেদা জিয়া বা অন্যরা ন্যায়বিচার কিভাবে পাবেন? আর এই মুহূর্তে আমি দেশে গেলে আমাকে হত্যা করা হবে। আমার জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই, যেহেতু দেশে কোনো আইন নেই।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে (নিউ ইয়র্ক সময়) ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে সাবেক প্রধান বিচারপতির আলোচিত বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মোহাম্মদ দীপুর সঞ্চালনায় প্রকাশনা উৎসবে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছাড়াও আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম বক্তব্য রাখেন।

বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। বিচার বিভাগের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই বিষয়গুলো আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুব এ আলমকে জানিয়েছিলাম কিন্তু কাজ হয়নি। ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতিদের ইম্পিচ করা নিয়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি ছয়জন বিচারপতিকে নিয়ে একটি বেঞ্চ করেছিলাম। আমরা এই সংশোধনী বাতিলের জন্য একমতও হয়েছিলাম কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা তা করতে পারিনি। উল্টো আমাকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হলো। আমাকে নিয়ে অনেক নাটক করা হলো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি বলেছিলাম, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে। কিন্তু তিনি তা করেননি। উল্টো আমাকে অনুরোধ করেছিলেন তার সরকারের পক্ষে রায় দিতে। আমি সেই সময় তাকে বলেছিলাম- এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ আমি একটি বেঞ্চ করেছি তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে আমি সেই সিদ্ধান্তই মেনে নেবো। আমরা আরো চেয়েছিলাম যে- পুলিশ যাকে রিমান্ডে নেবে তাকে যেন জীবত বা সুস্থ অবস্থায় কোর্টে আনা হয়-এ বিষয়ে লিখিত দিতে। আমাকে নিয়ে নাটক করা শুরু হলো। একটি এজেন্সিকে দিয়ে আমাকে হুমকি দেয়া হলো- আমি যেন এসব থেকে বিরত থাকি।

আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানালাম ওই এজেন্সির বিষয়টি। আমি তাকে বললাম ওই এজেন্সি যেন কোর্টে না আসে, বা কোন বিচারকের বাড়িতে না যায়। এরই মধ্যে ভারতের রাষ্ট্রপতি এলেন। হোটেলে নৈশভোজে আমি গেলাম। যেখানে প্রধানমন্ত্রী আবারো সরকারের পক্ষে রায় দেয়ার জন্য বললেন। আমি প্রায় ছয় মাস অপেক্ষা করলাম। একদিন ওই এজেন্সি আমাকে সরাসরি ফোন করল। বললেন, আমরা মিটিং ফিক্সড করছি, আশা করি আপনি আসবেন।

বিকেলে আমি ওই এজেন্সি থেকে ফ্যাক্স পাই। আমাকে জানানো হলো রাষ্ট্রপতির সাথে বৈঠক। আমি গিয়ে বিস্মিত। আমাকে মিলিটারি সেক্রেটারির রুমে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ পায়চারী করছেন। ৪৫ মিনিট পরে আমাকে ডাকা হলো। দেখলাম প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেল বসে আছেন। আমি বুঝতে পারলাম কেন আমাকে দাওয়াত দেয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী আবারো বললেন, তাদের ফেভারে রায় দেয়ার জন্য। আরো বললেন, আমি আপনার সাপোর্ট চাই।

আমি হাসলাম এবং বেঞ্চের কথা তাকে জানালাম। তিনি রেগে বললেন, সার্ট আপ অ্যান্ড গো। আমি বললাম আমি যাবো না, রাষ্ট্রপতি বললে যাবো। কারণ তিনিই আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। সেই দিনের মিটিংটি সন্ধ্যা ৭ থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে। আমি কিভাবে সেখান থেকে এলাম আপনাদের বলতে পারব না।

বাসায় এসে আমি ঘুমাতে পারিনি। রাত ৪টায় ওঠে গেলাম। ১ ঘণ্টা হাঁটাহাঁটি করি। কী করব চিন্তা করছি। সকাল ৮টায় আমি কোর্টে চলে গেলাম। ছয়জন বিচারপতির সাথে আমি বসি। বঙ্গভবনের বিষয়টি আমি তাদের জানাইনি। তিনজন আমার পক্ষে ছিলেন, দু’জন সরকারের পক্ষে, একজন কোনো পক্ষে মত দেননি।

আমি বিদেশে গেলাম। তারা সরকারকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে। আমাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বানানো হলো, জড়ানো হলো ড. কামাল হোসেনকে। পূজার ছুটিতে রাষ্ট্রপতির সাথে আমার দেখা হয়।

৩০ সেপ্টেম্বর আবারো বঙ্গভবনে ডাকা হলো। আমি গেলাম। আরো পাঁচজন বিচারপতিকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। সেখানে আইনমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। ওই পাঁচজন বিচারপতি তখনো আসেননি। আমি কল করলাম, তারা বললেন, ৪৫ মিনিট পরে আসবেন। বুঝলাম কেন দেরিতে আসবেন। রাষ্ট্রপতি আমাকে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে অন্যান্য বিচারকদের অভিযোগ আছে। তারা আপনার সাথে কোর্টে বসবেন না।

আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম। তারা বিচারপতি ওয়াহাব মিয়ার সাথে বৈঠক করছে। আমি ষড়যন্ত্র টের পাচ্ছিলাম এবং বাসায় চলে এলাম। একদিন ওই এজেন্সির চিফ আমার কোর্টে আসে। এসে বলে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। সুতরাং আপনাকে তিন মাসের জন্য ছুটিতে যেতে হবে। আমি হতভম্ব।

আমার সেক্রেটারি আমাকে কানে কানে বললেন, স্যার পুরো কোর্ট সিভিল পোশাকে ডিজিএফআই দখল করে আছে। আমি আমার সেক্রেটারিকে বললাম এক মাসের ছুটির আবেদন করতে। ছুটি শেষে বাসায় আসার পর আমি দেখি আমার পুরো বাসা মিলিটারি ঘিরে রেখেছে। অর্থাৎ আমি গৃহবন্দী।

ওই এজেন্সির প্রধান এসে বললেন, আপনি অসুস্থ, আপনি হাসপাতালে চলে যান। আমি বললাম আমি তো সুস্থ। আর আমি আপনার কথা শুনব কেন? তখন আমাকে হুমকি দেয়া শুরু করল। আমাকে পরীক্ষা করাতে ডাক্তার নিয়ে আসে। এক সময় আমার আত্মীয়স্বজনকে হয়রানি শুরু করে। আমাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়।

আমি প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, তারপর কানাডায় এবং পরে আমেরিকায় আসি। তিনি আরো বলেন, আমার এ বইতে সব কিছু আসেনি। দ্বিতীয় খণ্ডে আসবে। সেটি তাড়াতাড়িই প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চতুর্থ সংশাধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সেই বাকশাল কায়েম করেছেন। ১৫৪ জন এমপি মনোনয়ন দিয়েই এমপি হয়েছেন। বাকিরা ২% থেকে ৫% ভোটে এমপি হয়েছেন। ভারত তাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এস কে সিনহা বলেন, ভারত সমর্থন দেয়ার কারণ হলো বাংলাদেশে জঙ্গি আছে, সন্ত্রাস আছে। আওয়ামী লীগ বলেছিল জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস বন্ধ করবে। অন্য দিকে করিডোরসহ ভারত তাদের সুবিধা পাবে। ইতোমধ্যেই ভারত শ্রীলঙ্কা এবং নেপালকে হারিয়েছে। এই অবস্থায় এগোতে থাকলে ভারতকে দুটো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আই হেইট পলিটিক্স। আমি চাই না রাজনীতিবিদরা আমার সামনে আসুক। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এস কে সিনহা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রের তিন নম্বর ব্যক্তি। সেই প্রধান বিচারপতি যেখানে ন্যায়বিচার পান না সেখানে খালেদা জিয়া বা অন্যরা ন্যায়বিচার কিভাবে পাবেন? আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছি, এখানো কোনো কিছু পাইনি। যে কারণে অনেক দেশে নিমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও আমি যেতে পারছি না।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন অন্যের অর্থে আপনি বই বের করেছেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বই বের করার জন্য কী আমাজন আমার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে? এগুলো বানোয়াট। আমার বইকে প্রধানমন্ত্রী ভয় পাচ্ছেন কেন?

আপনি কি আবার দেশে ফিরে যাবেন- এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি দেশ ত্যাগের সময় বলেছিলাম- আমি আবারো ফিরে আসবো। এখন গেলে আমাকে হত্যা করবে, আমার জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। তা ছাড়া দেশে আইনও নেই। এখানেও আমি নিউজার্সির যে বাড়িতে থাকি, তারপাশে আরেকটি বাড়ি ওই এজেন্সি ভাড়া করেছে। দুটো ক্যামেরা দিয়ে ২৪ ঘণ্টা ভিডিও করছে।

  • - Noyadigonto/ Oct 1,2018 

Sunday, September 30, 2018

তথ্যঅধিকার আইনের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংঘর্ষিক যে কারণে

গোলাম মোর্তোজা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শুরু থেকেই সাংবাদিক-সম্পাদকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তবে তথ্য কমিশন, কোনো কোনো সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার শিক্ষক বলছেন, নতুন এই আইনটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।

১. তথ্য অধিকার আইনের প্রথম অধ্যায়ের ৩ (খ): তথ্য প্রদানে বাধা সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সাংঘর্ষিক হইলে, এই আইনের বিধানাবালী প্রাধান্য পাইবে।

তথ্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে, ‘সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তথ্য অধিকার আইনে অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে। অন্য কোনো আইনের মাধ্যমে এই আইনের বিধান ক্ষুণ্ণ হবে না।’ (প্রথম আলো, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮)
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের কোনো বিধানের সহিত যদি অন্য কোনো আইনের কোনো বিধান অসমঞ্জস্ হয়, তাহা হইলে অন্য কোনো আইনের বিধানের সহিত এই আইনের বিধান যতখানি অসমঞ্জস্ হয় ততখানির ক্ষেত্রে 

এই আইনের বিধান কার্যকর থাকিবে:
তবে শর্ত থাকে যে, তথ্য অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও তথ্য অধিকার আইনের এই দুটি ধারা উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, আইন দুটি পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যম বা সংবাদকর্মীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে না। কারণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যেখানে অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে, সেখানে তথ্য অধিকার আইন সুরক্ষা দিবে। কারণ দুই আইনেই তথ্য অধিকার আইনের প্রাধান্য স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

২. এখন দেখা যাক- তথ্য অধিকার আইন গণমাধ্যম বা সংবাদকর্মীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে কীভাবে এবং কতটা সুরক্ষা দিবে?

ক. একজন সংবাদকর্মী তথ্য অধিকার আইনের সুযোগ নিয়ে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যে তথ্য সংগ্রহ করবেন, সেই তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশিত হলে তিনি সুরক্ষা পাবেন। এক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করে সংবাদকর্মী বা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।

খ. অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্যে যেসব তথ্য প্রয়োজন হয়, তা কি তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী পাওয়া সম্ভব? দুর্নীতি, জালিয়াতির তথ্য কি তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব?

একটি উদাহরণের ভিত্তিতে আলোচনা করলে বুঝতে সুবিধা হবে।
ধরুন, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির কথা। ঋণের নামে জালিয়াতি করে ব্যাংক থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেল। এমন গুঞ্জন শোনা গেল, কিন্তু কোনো প্রমাণের নথি পাওয়া গেল না। গুঞ্জনের বিষয়টি সত্যি হলেও, তার ওপর ভিত্তি করে সংবাদ প্রকাশ করা যাবে? যাবে না। তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তথ্য-নথি-প্রমাণ চাওয়া যেতে পারে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কি তাদের জালিয়াতির সব তথ্য-প্রমাণ সংবাদকর্মীকে সরবরাহ করবেন? তাদের সরবরাহ করা নথি-প্রমাণ এনে সংবাদকর্মী 

অনুসন্ধানী রিপোর্ট করবেন?

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে নিজেদের জালিয়াতি প্রমাণ হয় এমন তথ্য-প্রমাণের কাগজপত্র সংবাদকর্মীকে দিবেন না, তা নিয়ে বোধ করি বিতর্কের অবকাশ নেই।

সংবাদকর্মীকে তার নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে গোপনে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির সংবাদ প্রকাশের আগে নিজস্ব একাধিক সোর্সের মাধ্যমে সংবাদ তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে হয়েছিল। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি, স্বর্ণের মেডেলে ভেজালসহ আলোচিত সব অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের তথ্য-প্রমাণ গোপনেই সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এই প্রক্রিয়ায় তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে সংবাদ প্রকাশ করলে, তথ্য অধিকার আইন গণমাধ্যম বা সংবাদকর্মীকে সুরক্ষা দিবে না। কারণ এই তথ্য-প্রমাণ তথ্য অধিকার আইন অনুসরণ করে সংগ্রহ করা হয়নি। বলে রাখা দরকার, বর্তমানে সংগৃহীত সব রকমের তথ্য এবং প্রকাশের সঙ্গে কোনো না কোনো প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল ডিভাইসের সম্পৃক্ততা থাকে।

গ. তথ্য অধিকার আইনের কারণে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ অকার্যকর হয়ে গিয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তা আবার কার্যকর করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী ‘সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধে’- অভিযুক্ত করা যাবে গণমাধ্যম বা সংবাদকর্মীকে।

অনুসন্ধানী সংবাদকর্মীর সংগৃহীত সত্য-সঠিক তথ্য-প্রমাণও, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করার সুযোগ থাকবে। এতে একজন সংবাদকর্মীর ১৪ বছরের জেল ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।

৩. তথ্য কমিশনের বক্তব্য বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘আইন দুটি সাংঘর্ষিক কিনা তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যেসব উদাহারণ দেয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। এই তুলনা নাগরিকের অধিকারের বিষয় মাথায় রেখে করতে হবে। তথ্য কমিশনার এই পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রায় পাঁচ হাজার লিখিত আইনের প্রায় সবই নিয়ন্ত্রণমূলক। একমাত্র ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইন-ই, কিছুটা হলেও জনমানুষকে অধিকার দিয়েছে। কিছুটা হলেও সরকারের স্বচ্ছতার পথ তৈরি হয়েছে। তথ্য অধিকার আইনের প্রাধান্যের কথাটা কৌশল হিসেবে রাখা হয়েছে। অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ফিরিয়ে আনাসহ আরও নানাবিধ আইনি ব্যাখ্যায়, তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দৃশ্যমানভাবে সাংঘর্ষিক।’

তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী তথ্য পাওয়ার পরিসর অত্যন্ত সীমিত।

বড় বড় অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী পাওয়া যায় না, যাবে না। ফলে তথ্য অধিকার আইনের প্রাধান্য স্বীকার করে নেওয়া হলেও, দুর্নীতি-জালিয়াতি-অনিয়মের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করলে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচনার সুযোগ থাকবে কিনা?

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ‘অবশ্যই সংবাদকর্মী বা গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করা যাবে। কারণ দুর্নীতি-জালিয়াতির তথ্য কোনো অবস্থাতেই তথ্য অধিকার আইন অনুসরণ করে পাওয়া যাবে না। সংবাদকর্মী তার নিজস্ব পদ্ধতিতে এসব ক্ষেত্রে যে তথ্য সংগ্রহ করবেন, তাকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করার সুযোগ থাকবে। প্রয়োগের বিষয়টি নিয়ে হয়ত আলোচনা করা যাবে, প্রয়োগ হবে না তা তো বলা যাবে না। ৫৭ ধারার উদাহরণ তো আমাদের সামনে আছে।’

বিষয়টি খুব পরিষ্কারভাবেই অনুধাবন করা যায় যে, তথ্য অধিকার আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়, তা বলা যায় না।

তরুণ সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সহজ ভাষায় বাংলাদেশের সংবিধান সম্পাদনাকারী অ্যাডভোকেট আরিফ খান এ বিষয়ে বলেন, ‘তথ্য  অধিকার আইনের প্রাধান্যের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যৌক্তিকতা প্রমাণের কৌশল হিসেবে, গণমাধ্যম বা সংবাদকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্যে নয়। তথ্য অধিকার আইন দিয়ে যে অধিকার দেওয়া হয়েছিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে তার অনেক কিছুই হরণ করা হবে।’