Search

Tuesday, October 16, 2018

বৈঠক থেকে মাহবুব তালুকদারের বেরিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে

স্টার অনলাইন রিপোর্ট
 
নির্বাচন কমিশনের আরও একটি বৈঠক থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক চলছিলো। আজ (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বৈঠক শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মাথায় তিনি ওয়াক আউট করেন।
 
পরে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় তিন মাস নির্বাচন কমিশন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। এতে একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ছাড়াও সুশীল সমাজ, মিডিয়া, পর্যবেক্ষণকারী, নারীনেত্রী প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।”
ঐ সংলাপকে একপক্ষীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন তাদের বক্তব্য শোনা ছাড়া নিজেদের মতামত প্রদান করেনি। সবার সংলাপ সুদৃশ্য গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হলেও সংলাপের সুপারিশ বা প্রস্তাব সম্পর্কে এ পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি।”
সংলাপের কোনো কার্যকারিতা না দেখে তিনি ব্যক্তিগতভাবে উক্ত সংলাপ পর্যালোচনা করে কমিশন সভায় কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করতে চেয়েছিলেন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও অংশীদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ‘কতিপয় প্রস্তাবনা’ শিরোনামে আমি যা আলোচনা করতে চেয়েছিলাম আমাকে নির্বাচন কমিশন সভায় তা উপস্থাপনা করতে দেওয়া হয়নি।”
“অথচ বিগত ৮ অক্টোবর কমিশন সচিবালয় থেকে ইউ ও নোটের মাধ্যমে আমাকে আজকের সভায় তা উপস্থাপনার অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। আমাকে আমার প্রস্তাবনা উপস্থাপনা করতে বলে তা উপস্থাপনা করতে না দেওয়ায় আমি অপমানিত বোধ করেছি,” যোগ করেন মাহবুব।
তার মতে, “বাক প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান প্রদত্ত আমার মৌলিক অধিকার নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই আমার এই অধিকার খর্ব করতে পারে না। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের এ রকম সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ প্রদান করেছি এবং এর প্রতিবাদ স্বরূপ নির্বাচন কমিশন সভা বর্জন করেছি।”
 
যা ছিলো মাহবুব তালুকদারের পাঁচ দফায়?
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের পাঁচ দফায় থাকা বিষয়গুলো নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:
১. জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েন: আগের নির্বাচনগুলোতে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম মূল্যায়ন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কীভাবে তাদের ব্যবহার করা যায় তা ঠিক করতে হবে।
২. অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে নির্বাচনে অনিয়মের পথ বন্ধ হয়। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ না হলে তা গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশকে সমর্থন করে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশন দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে আলোচনা করতে পারে।
৩. নির্বাচনে নিরপেক্ষতা: নির্বাচনে নিরপেক্ষতা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ওপর নির্ভর করে। নির্বাচনকালে সংসদ সদস্যদের নিষ্ক্রিয় রাখা নির্বাচন কমিশনের একার ওপর তা নির্ভর করে না। এতে সরকারের সহযোগিতা দরকার।
৪. নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি: নির্বাচন কমিশনের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে। কিন্তু, ক্ষমতা প্রয়োগে সীমাবদ্ধতাও আছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে রাজনৈতিক বাস্তবতায় কমিশন ক্ষমতা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ওপর খুব একটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে না। ক্ষমতা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কীভাবে আরও নিয়ন্ত্রণাধীন করা যায়, তা দেখা উচিত।
৫. সরকারের সঙ্গে সংলাপ: জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকার নির্বাচন কমিশনের বড় অংশীজন। সংলাপে দেখা যায় কিছু বিষয় রাজনৈতিক বা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। এসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপ আবশ্যক।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের বৈঠক থেকে ২০ মিনিট পরই বের  হয়ে যান মাহবুব তালুকদার। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনায় সেদিনও আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি।
 Courtesy: The Daily Star Bangla Oct 16, 2018

Rescheduled loans jump in Q2

AKM Zamir Uddin

Banks went on a loan rescheduling spree once again in the second quarter of 2018 after holding back in the first quarter.

Between the months of April and June, default loans amounting to Tk 5,879 crore were rescheduled, in contrast to Tk 1,458 crore three months earlier, according to data from the central bank.
Of the total amount rescheduled by banks, two banks accounted for 42.69 percent: state-run Sonali rescheduled Tk 1,340 crore and Islami Tk 1,169 crore.





Bangladesh Bank officials said the large scale rescheduling of non-performing loans would not bring any good to the chaotic banking sector as most of the default loans were regularised bypassing the central bank's instructions.

For instance, Sonali rescheduled more than Tk 1,200 crore of classified loans of a controversial business group by taking only 1 percent down payment.

As per central bank instructions, banks would have to take down payment of 10 percent to 50 percent when rescheduling the toxic loans.

The repayment track record of the business group, which was marked the top defaulter of the bank in December last year, is poor: it became a defaulter despite rescheduling its NPLs a number of times, said a BB official.

The group sought the latest round of rescheduling as its owner will contest in the upcoming national election, said a Sonali official.     
Contacted, Md Obayed Ullah Al Masud, managing director of Sonali, told The Daily Star the lender had secured prior approval from the central bank to reschedule the default loans. The group is now making its loan instalments on a regular basis, he added.
Some banks have frequently breached the central bank's norms while rescheduling default loans, the BB official said.

A central bank inspection team has recently found that a first generation bank rescheduled more than Tk 4,000 crore last year by grossly violating banking rules.

The central bank termed the non-performing and rescheduled loans as stressed assets of the lenders as such loans are highly risky for them.

Last year, Islami Bank also rescheduled Tk 3,099 crore and it has also kept the same track this year.

There is a requirement for banks to get no-objection certificate from the central bank when they want to reschedule default loans under extraordinary circumstances.

In recent years, the central bank has given such NOCs to banks on a wholesale basis to keep down the default loan figure, the BB official said upon conditions of anonymity to speak candidly on the matter.

The practice will be damaging for the entire banking sector in the days to come as many of unscrupulous persons receive fresh loans after rescheduling their default ones.

“They then refuse to repay the loans, which is harmful both for the depositors' interest and financial health of banks,” he added.
In 2017, all 57 banks operating in Bangladesh had rescheduled NPLs amounting to Tk 19,120 crore, up 24 percent year-on-year.
Despite huge loan rescheduling, NPLs in the banking sector surged Tk 89,340 crore in June this year, up from Tk 74,149 crore a year earlier.
Courtesy: The Daily Star Oct 16, 2018

Bangladesh slips 5 notches in Global Passport Power Index

Unb, Dhaka
Bangladesh has ranked 100th in the Global Passport Power Rank 2018, slipping five notches from its previous ranking.
In 2017, Bangladesh ranked 95th with visa-free access to 38 countries, according to the rankings released on Tuesday by Henley & Partners, a US-based citizenship and planning firm.
Bangladesh is placed at 100th position jointly with Lebanon, Iran and Kosovo in the global ranking for 2018, all having visa-free access to 41 countries, according to the index.



Japan has the most powerful passport, according to the ranking, with visa-free access to 190 countries in the world. Singapore secured the second position with visa-free access to 189 countries. Passports of France, Germany, and South Korea, all of which have visa-free access to 188 countries, have been placed third.

Iraq and Afghanistan remained at the low end of the spectrum, providing visa-free access to 30 countries each, with Syria and Somalia just ahead with 32 visa-free destinations.

Among Bangladesh's neighbours, India and Pakistan placed 81st and 104th while Myanmar on the 93rd spot with Nepal 101st and Bhutan 86th position, the report revealed.

The statistics of the Henley Passport Index are based on exclusive data from the International Air Transport Association, which maintains the world's largest and most accurate database of travel information, and is enhanced by extensive in-house research.

   Courtesy: The Daily Star Oct 16, 2018

Editorial

With recognition comes decision-making power

The lack of recognition of women's unpaid work in Bangladesh is something that has fortunately begun to be discussed. This was highlighted yet again at a press conference on Sunday marking the International Day of Rural Women. While it is a good sign that we have begun to at least talk about the issue, we are far from monetising unpaid work and giving these women the due recognition for their valuable labour.



According to a joint study published by the Centre for Policy Dialogue and Manusher Jonno Foundation in December 2015, 89.5 percent of women are employed in the informal sector “with varying and often unpredictable earning patterns.” The results of the study were eye-opening: it estimated that the value of women's unpaid household work amounted to nearly 77 percent of the country's GDP in 2013-14. Furthermore, the rate of women working in the informal sector is much higher than the world average, according to ILO, which largely explains why much of their labour remains unrecognized.

The consequences of unremunerated work have been far-reaching for rural women. It has resulted in the deprivation of their social status and severely limited their decision-making power in the household. The fact that 93 percent of landless women are not availing the benefits of the Vulnerable Development Group (VGD), a safety net programme assisted by the World Food Programme—as reported in a Bangla daily yesterday—gives rise to new concerns about the effectiveness of existing initiatives which are supposed to help uplift women from poverty.

The government should think about forming a satellite account, as recommended by researchers and economists, to show women's contribution in the economy. And it is imperative that programmes targeted at rural women are implemented properly and funds used efficiently.

   Courtesy: The Daily Star Editorial Oct 16, 2018

Oikyafront looks for expansion

Works on BNP's proposal for taking in 4 members of 20-party combine

Mohammad Al-Masum Molla

The Jatiya Oikyafront, formed recently with the BNP and several other parties, now wants to expand by including more partners from the BNP-led 20-party alliance.



Senior leaders of the Oikyafront are now working on it in the light of a proposal made by the BNP, sources in the platform said.
According to the proposal, four components of the 20-party alliance -- Liberal Democratic Party, Bangladesh Kalyan Party, Bangladesh Jatiya Party, and Jatiya Party (Kazi Zafar-led faction) -- may be invited to join the Oikyafront soon, they added.

“The door of the Jatiya Oikyafront is open to all and anyone can join. If any component of the BNP-led 20-party alliance wants to join, we will welcome them,” Moudud Ahmed, BNP's standing committee member, told The Daily Star yesterday.

Asked about this development, a top leader of Oikyafront Mahmudur Rahman Manna, said, “The Oikyafront leaders will sit tomorrow [today] at 12 noon to discuss issues, including expansion of the alliance.”

Manna, also convenor of Nagorik Oikya, may be made the spokesperson for the Oikyafront, a senior BNP leader said.
Even after inclusion of some components of the 20-party combine in the Oikyafront, the 20-party will function as a separate platform.
“The demands and goals of all the opposition forces are the same. We will chalk out our action programmes in consultation with the Oikyafront leaders. The 20-party alliance will hold the programmes simultaneously with those of the Oikyafront,” said Goyeshwar Chandra Roy, BNP's standing committee member.

Senior leaders of the 20-party alliance yesterday in a meeting welcomed the formation of the Oikyafront. In the meeting at the BNP chief's Gulshan office, party's Secretary General Mirza Fakhrul Islam Alamgir and standing committee member Nazrul Islam Khan briefed the 20-party alliance leaders about the aims and objectives of the Oikyafront, meeting sources said.

A senior BNP leader is in communication with the leaders of left-leaning political parties, urging them to take to the streets with a similar demand for a free and fair election under a non-partisan interim government.

After weeks of talks and intense negotiations, the BNP and four other political parties formally launched an alliance called Jatiya Oikyafront on Saturday, excluding Bikalpadhara Bangladesh led by former president Prof Badruddoza Chowdhury, just months before the national election.

The four other parties are -- Gonoforum led by Dr Kamal Hossain, Jatiya Samajtantrik Dal led by ASM Abdur Rab, Nagorik Oikya and Forward Party.

  Courtesy: The Daily Star Oct 16, 2018 

ভাঙনের মুখে বিকল্প ধারা

কাফি কামাল
ভাঙনের মুখে পড়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশ। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলটির নেতারা। শীর্ষ নেতাদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে নেতাকর্মীরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ হওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দলটির বেশির ভাগ নেতা।



কিন্তু বিএনপিসহ  জাতীয় ঐক্যের নেতাদের ওপর অযথা চাপ প্রয়োগ ও শর্তজুড়ে দেয়ার মাধ্যমে ঐক্য প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছিল দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। শেষ পর্যন্ত বিকল্পধারার শীর্ষ নেতৃত্ব জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান নেয়ায় প্রকাশ্যে এসেছে সে বিক্ষোভ, বিদ্রোহ। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যাওয়ায় বহিষ্কৃত হয়েছেন বিকল্পধারার ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ আহমেদ বাদল ও কৃষি সম্পাদক জানে আলম হাওলাদার। কিন্তু যে অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ দলটির অন্দরমহলেই।

বিগত ১৪ বছরে দলের কাউন্সিল না হওয়ায় কাউকে বহিষ্কার করার ক্ষমতা শীর্ষ নেতৃত্বের আছে কি না সেটা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
 
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শিগগিরই তলবি সভা ডেকে শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি নতুন কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন একাধিক নেতা। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে তারা আলাদা তলবি সভা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সেই সঙ্গে জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়ে তারা দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে একাত্মতা পোষণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিকল্পধারার নেতারা জানান, ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছেন ২৬-২৭ জন। তাদের মধ্যে ১৭ জনই এখন বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন- সমবায় সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবুল, যোগাযোগ সম্পাদক খন্দকার জোবায়ের, কৃষকধারার আহ্বায়ক চাষী এনামুল, প্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী জুনু প্রমুখ। ওদিকে বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বি. চৌধুরীর নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জে তিনি এবং তার পুত্র মাহী বি. চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সেখানে অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে নিজ দল বিকল্পধারার অবস্থান। এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ ও বিকল্পধারা সে প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়ানোই স্থগিত করা হয়েছে যুক্তফ্রন্টের কার্যক্রম। তবে যুক্তফ্রন্টের দুই দল জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হওয়ায় যুক্তফ্রন্টের কার্যকারিতাও আর নেই।

বিকল্পধারার সহসভাপতি শাহ আহমেদ বাদল বলেন, বিগত ১৪ বছরে বিকল্পধারার শীর্ষ নেতারা দলটির কোনো সম্মেলন করেননি। বরং বিকল্পধারার কর্ণধার হিসেবে পরিচিত মাহী বি. চৌধুরীর অসাংগঠনিক সিদ্ধান্তে আগেও অনেক গুণীজন দলত্যাগ করেছেন। কাউকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, কাউকে করা হয়েছে অকারণে বহিষ্কার। এভাবে রাজনীতি চলতে পারে না। তিনি বলেন, প্রফেসর ডা. বি. চৌধুরী পুত্রস্নেহে অন্ধ। তাই বিকল্পধারা মানেই মাহী বি. চৌধুরীর স্বেচ্ছাচারিতা, একনায়কত্ব ও স্বৈরাচারী আচরণ। সবচেয়ে বড় কথা, সাংগঠনিক কাজে নয় মাহী বি. চৌধুরী বিকল্পধারাকে একটি বাণিজ্যিক সংস্থায় ও বার্গেনিং এজেন্সিতে পরিণত করেছে। আর প্রফেসর বি. চৌধুরী তার ছেলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন। মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান বেকায়দায় আছেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা ও ব্যাংকঋণের চাপে। আসলে উনাকে মাহী বি. চৌধুরীই চাপে রেখেছেন। মাহী একের পর এক গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছেন, দলের সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান- তাই তার বিরুদ্ধেই আমাদের এই বিদ্রোহ। বাদল বলেন, আমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিকল্পধারার রাজনীতি করছি।

দলের প্রচার সম্পাদক থেকে যুগ্ম সম্পাদক ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছি পর্যায়ক্রমে। কিন্তু আমরা অনেক কথা বলতে পারিনি। দলের একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেই। যেটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয় সেটি টঙ্গীর কাছাকাছি। এভাবে রাজনীতি করা যায় না। আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবে যেতে চেয়েছি। এই জন্যই আমাদের নাকি বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু নিজেরা দলের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে অন্যকে শাস্তি দেয়ার অধিকার রাখে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি- দুয়েকদিনের মধ্যে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তলবি সভা ডেকে বিকল্পধারার বর্তমান সভাপতি-মহাসচিব ও যুগ্ম মহাসচিবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
তারপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিকল্পধারার প্রতিনিধিত্ব করবো। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমানে সক্রিয় ২৬-২৭ জন নেতার মধ্যে বেশিরভাগই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। নাটোর, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী জেলা দলের যে কমিটি রয়েছে তারাও আমাদের সঙ্গে আছেন। কৃষক ধারা আমাদের সঙ্গে আছেন। অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো এখন নিষ্ক্রিয়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, খোদ মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা কমিটির নেতাকর্মীরাও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। বাদল বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণদাবি অনুযায়ী যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সে আন্দোলনের সঙ্গে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করব। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হয়ে ৭ দফা ও ১১ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবো।
বিএনপির প্রথম মহাসচিব প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপি ভেঙেই গঠিত হয়েছিল বিকল্পধারা। নানা কারণে দুটি দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দূরত্বও ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে সে দূরত্ব ভুলে ঐক্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বিএনপি। দেশের রাজনৈতিক মহল বিষয়টিকে নিয়েছিল ইতিবাচক এক পদক্ষেপ হিসেবে। ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে দুটি দল একমঞ্চে আসছে ভেবে স্বস্তিবোধও করছিল অনেকেই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া ছিল বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জে। বিকল্পধারা গঠনের পর নেতাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের কারণে ক্ষুব্ধ ছিল স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তার পরও জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছিল তারা। তবে শেষ পর্যন্ত বিকল্পধারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংযুক্ত না হওয়া ও তাদের তরফে ষড়যন্ত্রের বক্তব্য আসার পর সে ক্ষোভ এখন তুঙ্গে। মুন্সিগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ২০০২ সালে থেকে এমন কোনো কাজ নেই যা বিকল্পধারার শীর্ষ নেতারা করেননি।

বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ও জনভিত্তিহীন দলটি যুক্ত না হওয়ায় বরং শাপেবর হয়েছে। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে পারবে। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির বন ও পরিবেশ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান সিমু বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন এখনও বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে চৌধুরী পরিবার। বিশেষ করে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরীর কার্যকলাপ ও কথাবার্তায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা দারুণভাবে ক্ষুব্ধ। এছাড়া মুন্সিগঞ্জে বিকল্পধারার কোনো সাংগঠনিক অবস্থান নেই। এলাকায় জনভিত্তি নেই। এলাকায় বিকল্পধারার শীর্ষ নেতাদের আনাগোনাও নেই। দলটির রাজনীতি বেঁচে আছে কেবল রাজধানীতে মিডিয়ার সহায়তায়। সিমু বলেন, ২০০৮ সালে প্রফেসর বি. চৌধুরী যখন নির্বাচন করেছিলেন তখন তিনি ৩০ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। এখন কুলো মার্কায় এককভাবে নির্বাচন করলে মাহী বি. চৌধুরী ৩-৪ হাজারের বেশি ভোট পাবেন না। কারণ, যারা ২০০৮ সালে প্রফেসর বি. চৌধুরীর নির্বাচন করেছিলেন তারা ইতিমধ্যে বিএনপির রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। পদ-পদবি নিয়ে সক্রিয়ভাবে বিএনপির রাজনীতি করছেন।
বিকল্পধারার বহিষ্কৃত ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহ আহমেদ বাদলের অবস্থানের পক্ষে পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করেন বিকল্পধারার কৃষি সম্পাদক (বহিষ্কৃত) জানে আলম হাওলাদার। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই দলের রাজনীতি করি। জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার অগ্রগতির অংশ হিসেবে প্রফেসর বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন ১৫ই সেপ্টেম্বর শহীদ মিনারে গিয়ে যে দাবি ও লক্ষ্য ঘোষণার কথা ছিল সেটা শেষ পর্যন্ত হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবে। আমরা সেদিন প্রেস ক্লাবে অপেক্ষা করছিলাম। একপর্যায়ে ঘোষণা হলো শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মগবাজার থেকে বি. চৌধুরী ফিরে যাচ্ছেন। এই সময় আমি মহাসচিবকে বলেছিলাম- দেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে। তাই বি. চৌধুরী অসুস্থ হলে মহাসচিবের অন্তত উপস্থিত হওয়া উচিত।
জানে আলম বলেন, আমার সেই ফোন করাটাই অপরাধ বিবেচিত হলো এবং আমাকে ৭ দিনের শোকজ দিয়ে বহিষ্কার করা হলো। কিন্তু সেদিন প্রেস ক্লাবে বিকল্পধারার যিনি প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি কোনো শাস্তির মুখে পড়েনি। যে নেতারা ১৪ বছরে দলের একটি কাউন্সিল করতে পারেনি তারা কাউকে বহিষ্কারও করতে পারে না।

এদিকে যুক্তফ্রন্টের ব্যাপারে জোটটির অন্যতম শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই জোট গঠন করা হয়েছিল, সেখান থেকে বিকল্পধারা সরে গেছে। নাগরিক ঐক্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ও সমপ্রতি এই জোটে যুক্ত হওয়া সোনার বাংলা পার্টি এবং বাংলাদেশ জনদল নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে। সুতরাং এককভাবে বিকল্পধারা দিয়ে এই যুক্তফ্রন্টের কার্যকারিতা থাকে না।
বিকল্পধারা নেতারা বলছেন, বিএনপি নেতাদের যে দুটি শর্ত দেয়া হয়েছিল দুটিই বাস্তবতা বিবর্জিত। বিকল্পধারার নেতাকর্মীরা এই দুই শর্তের ব্যাপারে একমত নয়।

  Courtesy: Manabzamin Oct 16, 2018

সম্পাদকদের নজিরবিহীন মানববন্ধন


সাত দফা দাবিতে এক নজিরবিহীন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সংবাদপত্রের সম্পাদকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল এই কর্মসূচি থেকে সংসদের শেষ অধিবেশনেই বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত সাংবাদিকতাবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনীর দাবি জানানো হয়। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্পাদকরা একসঙ্গে এ ধরনের কর্মসূচি পালন করলেন।




মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে সম্পাদক পরিষদের দাবিগুলো তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।

২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনেই আনতে হবে।

৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেয়ার অনুমতি দেয়া যেতে পারে, তবে কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেয়া উচিত, সেই বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।

৪. কোনো সংবাদমাধ্যমের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে।

৫. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতা দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেপ্তার করা যাবে না।

৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি-না, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করতে হবে। ওই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পারে।
এবং

৭. এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইন দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যকভাবে করতে হবে।

তিনি বলেন, সম্পাদক পরিষদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নয়। পরিষদ আইনের বিশেষ কতগুলো ধারা সংশোধনের দাবি করছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার আগ থেকেই এ আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছিল। তিনি বলেন, আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি। বর্তমান আইনটি শুধু সাইবার জগৎ নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমেরও কণ্ঠরোধ করবে। সম্পাদকরা চান, আগামী সংসদ অধিবেশনেই এই আইন সংশোধনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হবে। মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘আমরা আশা করব, আমাদের এই দাবি সরকার গ্রহণ করবে।

সংসদের শেষ অধিবেশনে যথাযথ সংশোধনী এনে এই আইনটি সবার জন্য গ্রহণযোগ্য করবে।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রী বলেছেন- আলোচনার দরজা বন্ধ হয়নি। আমরাও মনে করি না আলোচনার দরজা বন্ধ। আলোচনার নামে প্রহসন যেন না হয়। আমরা আলোচনায় গিয়েছি, আমরা অত্যন্ত বিশ্বাস নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু সেই বিশ্বাসের প্রতিফলন এখনো হয়নি। তারা (মন্ত্রীরা) বলেছেন, আলোচনার দরজা খোলা, শুনে আমরা খুশি। আমরা আলোচনা করতে চাই, তবে গ্রহণযোগ্য আলোচনা চাই, যে আলোচনা গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে নিয়ে যাবে।

শুধু আলোচনার জন্য আলোচনা নয়।’ এরপর সংবাদপত্রের ১৬ জন সম্পাদক ১০ মিনিট মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে সম্পাদকদের মধ্যে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজের সম্পাদক নূরুল কবীর, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, করতোয়ার সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহীদুজ্জামান খান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ ও ইন্ডিপেনডেন্টের সম্পাদক এম শামসুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত শনিবার একটি সংবাদ সম্মেলন করে সম্পাদক পরিষদ। সেই সংবাদ সম্মেলন থেকেই এই মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

অবশ্য দুই সপ্তাহ আগে মানববন্ধন কর্মসূচিটি ঘোষণার পর তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে সেটি স্থগিত করেছিলেন সম্পাদক পরিষদ। পরে তিন মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের বৈঠক হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংশোধন ছাড়াই আইনটি পাস ও সে আইনে সম্মতি জানিয়ে প্রেসিডেন্ট সই করেন। এরপর ফের স্থগিত কর্মসূচিটি পালনের ঘোষণা দেন সম্পাদক পরিষদ। সম্পাদকরা বলছেন, আইনটির উল্লিখিত ধারাগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। 

 Courtesy: Manabzamin Oct 16, 2018

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

বাসস, ঢাকা
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরিটি (জিডি) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে।



একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জিডি হয়। গত বৃহস্পতিবার সেনা সদরের পক্ষ থেকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই জিডি করা হয়।
এই জিডিটি রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলে এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে স্থানান্তর করা হয়। আজ সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো: আব্দুল বাতেন বাসসকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফজলুর রহমানকে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) তাপস কুমার দাস বাসসকে জানান, সেনা সদর দপ্তরের আইনবিষয়ক উইংয়ের মেজর এম রকিবুল আলম বৃহস্পতিবার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় জিডি করেন।
টেলিভিশনে দেওয়া জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অসত্য’ বলে আখ্যায়িত করে গত শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে বক্তব্য দেওয়া হয়। আইএসপিআর বলেছে, ডা. জাফরুল্লাহর দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য কেবল সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেনি, বরং তা সেনাবাহিনীর প্রধানের পদকে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে।

পরে সংবাদ সম্মেলন করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেনারেল আজিজকে অসাবধানতাবশত কোনো মনঃকষ্ট দিয়ে থাকলে সে জন্য আমি পুনরায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি। উল্লেখ্য, আমি ইতিমধ্যে বিগত দুদিন কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে আমার বক্তব্যে ভুল শব্দচয়ন ও শব্দবিভ্রাটের বিষয়টি প্রকাশ করে সেনাপ্রধানের নিকট দুঃখ প্রকাশ করেছি।’ তিনি বলেন, সময় টেলিভিশনের বিশেষ অনুরোধে শারীরিক দুর্বলতা নিয়েই আমি ৯ অক্টোবর রাত ১০টায় তাদের একটি টক শোতে অংশ নিই। ওই টক শোতে অপর অতিথিরা ছিলেন সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ আলম লেলিন। আলোচনাকালে আমি দেশের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে অসাবধানতাবশত একটি ভুল তথ্য উল্লেখ করেছিলাম। জেনারেল আজিজ একজন দক্ষ আর্টিলারি সেনা কর্মকর্তা। তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ‘জিওসি’ ছিলেন না, ‘কমান্ড্যান্ট’ও ছিলেন না। তিনি তাঁর কর্মজীবনের একসময়ে চট্টগ্রাম সেনাছাউনিতে আর্টিলারি প্রশিক্ষক ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ‘কোর্ট মার্শাল’ হয়নি একবার ‘কোর্ট অব এনকোয়ারি’ হয়েছিল। ভুল বক্তব্য ও শব্দবিভ্রাটের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং মর্মাহত। সেনাবাহিনী বা জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এরূপ কোনো অভিপ্রায়ও আমার নেই। আমাদের সেনাবাহিনীর গৌরবে আমি গর্বিত।’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘জেনারেল আজিজের সম্মানহানি করার কোনো চিন্তা বা উদ্দেশ্য আমার ছিল না।’

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্য নিয়ে আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে জনাব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য ছিল একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য। কারণ, বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরিজীবনে কখনোই চট্টগ্রামের জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, ২০১১ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত ঢাকার মিরপুরে ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার এবং ২০১২ সালের মে থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিএসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণিত সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে কোনো সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর দীর্ঘ, বর্ণাঢ্য সামরিক চাকরিজীবনে কখনোই কোর্ট মার্শালের সম্মুখীন হননি।’

আইএসপিআরের পরিচালক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আলমগীর কবিরের স্বাক্ষরিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘চাকরিরত একজন সেনাবাহিনীপ্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির এরূপ দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সেনাবাহিনীপ্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসমক্ষে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান।’

আইএসপিআরের বক্তব্যে বলা হয়, ‘ডা. জাফরুল্লাহর দায়িত্বজ্ঞানহীন অসত্য বক্তব্য কেবল সেনাবাহিনীপ্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেনি, বরং তা সেনাবাহিনীপ্রধানের পদকে চরমভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে, যা প্রকারান্তরে সেনাবাহিনীর চাকরিরত সব সদস্যকে বিভ্রান্ত করেছে এবং তাঁদের মনোবলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়া এরূপ অপপ্রচার সেনাবাহিনীর মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সংহতি ও একতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।’

 Courtesy: Prothom Alo Oct 16, 2018

সাইবার ট্রাইব্যুনাল


এক দিনেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৭ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
 
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিচার চেয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালে আজ ৭টি মামলা হয়েছে। ঢাকায় অবস্থিত সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আজ সোমবার সাত ব্যক্তি পৃথক সাতটি মামলা করেন।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস্‌সামছ জগলুল হোসেন সাতটি মামলার মধ্যে একটি মামলাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন। দুটি মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গেন্ডারিয়া ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর অপর তিনটি মামলা সরাসরি খারিজ করার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) নজরুল ইসলাম শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর আজই প্রথম সাইবার ট্রাইব্যুনালে সাতজন ব্যক্তি হাজির হয়ে নালিশি মামলা করেছেন। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সংক্ষুব্ধ যেকোনো নাগরিক সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে মামলা করতে পারবেন।


আজ যে সাতজন ব্যক্তি আদালতে মামলা করেছেন এর মধ্যে তিনজন নারী আর চারজন পুরুষ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর প্রথম মামলাটি করেছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মেডিকেলের ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে সিআইডি ১০ অক্টোবর পল্টন থানায় এ মামলা করে। পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর এখন পর্যন্ত ঢাকায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। পল্টন ছাড়াও রাজধানীর শাহবাগ ও গুলশান থানায় মামলা হয়েছে।

একটি মামলা এজাহার হিসেবে নিতে নির্দেশ:
একটি মামলার আরজি ও আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক নারীর (৩০) গত বছর পারিবারিকভাবে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর স্বামী ইতালি চলে যান। বিয়ের পর ওই নারীর ফেসবুক পাসওয়ার্ড জেনে নেন তাঁর স্বামী। বিদেশে থাকা অবস্থায় ইমো, ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের যোগাযোগ চলতে থাকে। বিয়ের ৯ মাস পর স্বামী বাংলাদেশে চলে আসেন। গত এপ্রিলে ওই নারী তাঁর স্বামীকে ডিভোর্স দেন। এরপর ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ভাইবার, ইমোতে ওই নারীর আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করেন তাঁর সাবেক স্বামী। এ ঘটনায় মিরপুর থানায় ওই নারী মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নেওয়ায় তিনি আদালতে হাজির হয়ে মামলা করেছেন।

ওই নারীর আইনজীবী ইমরুল কায়েস প্রথম আলোকে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই নারী তাঁর সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হয়ে নালিশি মামলা করেন। আদালত ওই নারীর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩(২), ২৪-ক, ২৫-ক এবং ২৯ (২) ধারায় মামলা করেন ওই নারী।

দুটি মামলা তদন্তের নির্দেশ:
ট্রাইব্যুনালে করা দুটি মামলা তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ বছরের এক নারীর অভিযোগ তিনি যে এলাকায় থাকেন সেই এলাকাতে বাস করেন সোহাগ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি তাঁর সন্তানদের স্কুলে আনা-নেওয়ার পথে সোহাগ নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এরপর আসামি সোহাগ তাঁর মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করেন। তিনি (সোহাগ) ফোনে তাঁকে (নারী) প্রেমের প্রস্তাব দেন। সোহাগকে ফোন করতে নিষেধ করার পরও গভীর রাতে ফোন দেন। প্রতিবাদ করায় তাঁর শিশুসন্তানকে অপহরণ করার হুমকি দেন সোহাগ। ওই নারীর অভিযোগ, সোহাগ তাঁর ছবি বিবৃত করে ফেসবুক, ইমোতে প্রকাশ করেন। ওই নারীর এই অভিযোগ তদন্ত করতে গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৬ ও ২৭ ধারায় মামলা করেন ওই নারী।
আবদুস সালাম নামের এক ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মামলা করেন। সেখানে বলা হয়, আবদুস সালাম থাকেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায়। আসামি রফিকুল বাদী সালামের নামে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। এ মামলাটি তদন্ত করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

অন্য চারটি মামলা:
এক নারী নালিশি মামলায় বলেছেন, গত বছর উত্তরার একটি প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন তাঁকে ধর্ষণ করে তা ভিডিও করে। বিয়ের পর আসামিরা ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আদালত ওই নারীর মামলা খারিজের আদেশ দেন। ওই নারী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ধারায় মামলা করেন।
কামাল উদ্দিন আহমেদ নামের একজন মামলায় দাবি করেন, ২০১৬ সালে তিনি ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ নামে একটি সংগঠন করেন। আবুল বাশার নামে এক ব্যক্তি কামালকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। কামাল উদ্দিনও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫-ক ধারায় মামলা করেন।

সুজন আহমেদ নামের এক ব্যক্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৪ এর (১) ধারায় মামলা করেন। মামলায় সুজন দাবি করেন, তিনি মোটরচালক লীগের সাভার পৌর কমিটির প্রচার সম্পাদক। এই এলাকার কাজী রিপন ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন প্রতারণা করে আসছেন। ছাত্রলীগের সাবেক এক সাধারণ সম্পাদকের ছবি বিকৃত করে তা ফেসবুকে প্রচার করেন আসামি রিপন। আদালত এ মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।

আর আনোয়ার হোসেন আবু নামের এক ব্যক্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মামলা করেন। মামলায় তিনি বলেছেন, চানখাঁরপুলে তাঁর একটি হোটেল আছে। হোটেলের খাবার নিয়ে রুদ্র সাইফুল নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে আপত্তিকর তথ্য প্রচার করেছেন।

 Courtesy: Prothom Alo Oct 15, 2018

Monday, October 15, 2018

দেশের এক-তৃতীয়াংশ যুবক বেকার!

যুব সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য


বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার পর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম, বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের মোট যুবকদের এক-তৃতীয়াংশ বেকার। বেকারত্ব কমিয়ে আনতে  সরকারকে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে। যুব সমাজের মতো এত বড় একটি মূল্যবান সম্পদ আমরা কাজে লাগাতে পারছি না, এটি আমাদের একটি বৃহৎ জাতীয় অপচয়।

গতকাল রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম আয়োজিত যুব সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ ও এজেন্ডা ২০৩০: তারুণ্যের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দেবপ্রিয়। 

সরকারের উদ্দেশে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের জনসংখ্যার সবচেয়ে মেধাবী অংশ যুব সমাজ। নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির আগে যুব সমাজের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। তাদের মতের অগ্রাধিকার দিতে হবে। যুবকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেকারত্বের হারও বাড়ছে। এর মধ্যে যে যত বেশি শিক্ষিত, তার বেকার হওয়ার শঙ্কাও সবচেয়ে বেশি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

সম্মেলনের প্রারম্ভিক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এসডিজি অর্জনে আমাদের যুব সমাজ কাজ করছে। তাদের আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে পারলে এসডিজি অর্জনে আমরা সফল হবো। কিন্তু এটা করার জন্য যারা এখানে আছেন, আমাদের তরুণ-তরুণী, আমাদের ছেলেমেয়েরা এদের ওপরে একটা বিরাট দায়িত্ব আছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাও একটা চ্যালেঞ্জ। তবে আমাদের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। 

এ সংকট মোকাবিলায় কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন আলোচকরা।

সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার বলেন, আমরা ১১ লাখ যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এর মধ্যে ছয় লাখ যুবক-যুবতী নিজেই নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তাদের অনেকে চাকরি না করে এখন অন্যদের চাকরি দিচ্ছে। তিনি বলেন, যে পরিমাণ বেকারের কথা বলা হয়, আসলে সে পরিমাণ বেকার নেই। আমরা ডেসোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট (৬০ শতাংশের বেশি জনসংখ্যা কর্মক্ষম) সময় পার করছি। এরা কেউ বসে থাকবে না।

সম্মেলনে দেশের দুর্নীতি প্রবণতার কথা উল্লেখ করে বক্তারা জানান, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। এ ছাড়া দেশের স্বার্থে রাজনীতিবিদদের, দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি থেকে বের হওয়ার তাগিদ জানানো হয় এই সম্মেলন থেকে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, এই দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি থেকে আমাদের এই দেশকে মুক্ত করতে হবে। আমরা যেন দুর্নীতিপরায়ণতাকে প্রশ্রয় না দিই। আমরা যেন সত্য প্রকাশ করার স্বাধীনতা অর্জন করতে পারি। আমাদের বাকরুদ্ধ করার স্পর্ধা যেন কেউ দেখাতে না পারে। তিনি বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে সম্মানিত করছে। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, দেশের দায়িত্ব যেন দুর্বৃত্তদের হাতে চলে না যায়। দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সাংস্কৃতিক শূন্যতা তৈরি করা যাবে না। সাংস্কৃতিক চর্চার ওপর জোর দেন তিনি। 

জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচিবিষয়ক সংস্থার (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি বলেন, যুবসমাজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগাতে হবে। আর তাদের জন্য কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই এসডিজি অর্জন সহজ হবে।

সম্মেলনে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত বলেন, যখন বন্যা আসে, বন্যার সঙ্গে অনেক ময়লাও আসে। কিন্তু বন্যা পরবর্তী ময়লা চলে যায় আর থেকে যায় পলি মাটি, আমাদের যুব সমাজ হলো সেই পলি মাটি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের যুবসমাজ হিসেবে বিবেচনা করে। আর সরকারি হিসাবে দেশের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগই যুবসমাজ। তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জনে বিশাল এই জনশক্তির উন্নয়ন জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। যুব সম্মেলনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে যুবকদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা। 

এ ছাড়া উন্নয়নের সুফল থেকে বাদ পড়া মানুষের জন্যও কাজ করার তাগিদ আসে এই যুব সম্মেলন থেকে। ২০৩০ সাল নাগাদ এই যুবকরাই দেশের নেতৃত্ব দেবে, কর্মোপযোগী থাকবে।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকা রাখা এবং এ প্রক্রিয়ায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম, বাংলাদেশ এই উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্ল্যাটফরমের প্রায় ১০০টি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসডিজি’র বিভিন্ন অভীষ্ট বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছে। আগামী দিনের নেতৃত্ব ও উন্নয়নের চাবি যুব সমাজের হাতে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত এসডিজি অর্জন করতে হলে এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। মূলত এসডিজি সম্পর্কে যুব সমাজের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় তাদের সম্পৃক্তির ক্ষেত্র তৈরি করার প্রয়াস থেকেই এই সম্মেলনের আয়োজন। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/১৫ অক্টোবর ২০১৮