Search

Sunday, October 21, 2018

Sylhet Rally: Oikyafront denied nod again


Police once again denied permission to Jatiya Oikyafront, the newly formed alliance of BNP and several other parties, to hold a rally in Sylhet on October 24.

The Sylhet Metropolitan Police (SMP) Commissioner Golam Kibria said that the permission was not granted on “security grounds”.

“This application has been denied over the same security ground issue”, the SMP commissioner told The Daily Star, refusing to provide further explanation.

“As you see the situation at Narsingdi, anything might happen,” he added, referring to the raids that took place in two militant hideouts in the district.

He said that the Jatiya Oikyafront had filed another application to hold rally on October 24, despite being denied permission for the rally planned for a day earlier.

Sylhet BNP, on behalf of the alliance, filed an application with the SMP yesterday seeking permission to hold the rally in the field of the Registrar's Office at Bandarbazar area in Sylhet, Ali Ahmed, general secretary of Sylhet district unit of BNP said.

“After an hour or more, they called us and confirmed that permission for the rally would not be given on security grounds”, he said.

Last Wednesday, the Oikyafront filed an application to hold the rally on October 23 but it was denied the next day for the same reason. However, police did not elaborate on what the “security grounds” were.

The Jatiya Oikyafront is an alliance of BNP, Dr Kamal Hossain-led Jatiya Oikya Prokriya, ASM Abdur Rab's Jatiya Samajtantrik Dal and Mahmudur Rahman Manna's Nagorik Oikya.

The Oikyafront was formed on October 13 to press for holding the national election under a polls-time neutral government after dissolution of parliament and release of BNP chairperson Khaleda Zia from jail.

After its formation, the alliance, on October 16, declared to hold its first public rally in Sylhet on October 23 but after their application for it was denied, they declared to hold the rally on October 24.

They planned to offer Fateha at the Shrine of Hazrat Shahjalal (R) and Shah Paran (R) and at the grave of General MAG Osmani on October 24.

  • Courtesy: The Daily Star /Oct 21, 2018

সৌদি আরবে শঙ্কায় লাখ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক

 নতুন নতুন নিয়মের জালে আটকা পড়ছেন সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকরা। এ কারণে লাখ লাখ শ্রমিক অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। যারা ব্যবসা করছেন তারাও হয়ে পড়ছেন তটস্থ। কেউ কেউ তল্পিতল্পা গুছিয়ে দেশের পথে রওনা দিয়েছেন। সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশিরা আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে সৌদি আরবের বিশাল শ্রম বাজার হারিয়ে ফেলবে বাংলাদেশ। সৌদি আরবকে তাড়িয়ে দিতে হচ্ছে না, নিয়মের জালে আটকা পড়ে দেশের পথে রওনা দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের। ইতিমধ্যে অনেকেই দিচ্ছেনও। 

মদিনা শহরেই বসবাস করেন বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি।

ওখানে বাংলা মার্কেট নামে বাঙালি এলাকা রয়েছে। বাংলাদেশিরাই সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। খেজুর, জায়নামাজ, জুতা, তসবিহসহ নানা পণ্যের দোকানের মালিক ছিলেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু গেল কয়েক মাসে ব্যবধানে ওই এলাকায় বাঙালি দোকানের সংখ্যা কমে এসেছে। যে কয়েকটি দোকান রয়েছে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাংলা মার্কেটে বসবাসরত বাংলাদেশি শ্রমিকরা জানালেন, সৌদি আরবে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে ভিনদেশিদের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেগুলোতে বাধ্যতামূলক সৌদিয়ান নাগরিকদের চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের আয়কর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে দিগুণ থেকে তিন গুণও। এ কারণে মদিনার বাংলা মার্কেট ও আশপাশ এলাকায় হাটলেই চোখে পড়ে অধিকাংশ দোকান বন্ধ। মদিনাতে বসবাসরত সিলেটের বালাগঞ্জের আব্দুল কাদির জানালেন, মদিনাতে যারা দোকান দিতেন তারা অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছেন। সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়মের কারণে তারা টিকতে পারছেন না বলে দেশে চলে গেছেন। এ কারণে দোকান বন্ধ থাকার দৃশ্যটি চোখে পড়ে বেশি। 

উহুদের ময়দান ও আশপাশ এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কাজ করেন অন্তত ২০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে তারা পরিছন্নতা কর্মী হিসেবে ওখানে কাজ করেন। ওই এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মী নরসিংদীর বেলাবো এলাকার আব্দুর রহমান। তিনি জানালেন, মাসে তারা ৫০০ রিয়াল বেতনে চাকরি করেন। এই টাকা বাংলাদেশের হিসেবে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এতে তারা নিজেরাও খেয়ে বেঁচে থাকতে পারেন না। দেশে টাকা পাঠাবেন কী করে। তিনি জানান, প্রতি দুই বছর পরপর তাদের আকামা রি-এন্ট্রি করতে হয়। এতে খরচ পড়ে বাংলাদেশের হিসেবে প্রায় তিন লাখ টাকা। এই টাকা জোগাড় করা অনেক বাংলাদেশির পক্ষে সম্ভব হয় না। এ কারণে অনেকেই অবৈধ হয়ে পড়েছেন। ধরা পড়ে দেশে চলে গেছেন। আব্দুর রহমান জানান, আগে সৌদি আরবে এই নিয়ম ছিল না। সম্প্রতি সৌদিতে থাকা বাংলাদেশিরা এই নিয়মের মধ্য পড়েছেন। 

মক্কার মিসফালাহ এলাকার পাশেই রয়েছে বাঙালিদের বাজার। প্রায় ৭০ বছর ধরে ওই এলাকায় পরিবারপরিজন নিয়ে বসবাস করেন কক্সবাজার এলাকায় দুই ভাই আব্দুল মনাফ ও তাহির আলী। তিন প্রজন্ম ধরে তারা বসবাস করে বাসাবাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু নতুন নিয়মের কারণে তাদের আকামা রি-এন্ট্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের কফিলের তরফ থেকে সম্প্রতি সময়ে সহযোগিতা পাচ্ছেন না। ফলে পরিবারপরিজন নিয়ে তারাও পড়েছেন শঙ্কায়। নিজ বাসায় তারা কথা বলেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। বললেন, বাঙালি বাজার ও আশপাশ এলাকায় বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশির বসবাস। এখানে ব্যবসাবাণিজ্যে বাংলাদেশিদের আধিপত্য রয়েছে। কিন্তু সরকার মুখে কিছু বলছে না, আইন করে বাঙালিদের তাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। এমন কঠিন অবস্থায় অতীতে কখনো বাংলাদেশিরা পড়েননি বলে জানান ওই দুই ভাই। তারাও যেকোনো সময় দেশের পথে রওনা দিতে পারেন বলে আশঙ্কায় রয়েছেন।

মিসফালাহ এলাকার কবুতর চত্বর ও হেরেম শরীফের বাইরের এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে অনেক বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা মাসে কোম্পানীর মাধ্যমে মাত্র ৫০০ রিয়াল বেতনে চাকরি করেন। কিন্তু আকামা রি-এন্ট্রি করা নিয়ে তারা আশঙ্কায় রয়েছেন। এত টাকা তাদের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার কফিলও তাদের ওই টাকা দিচ্ছে না। কয়েকজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী জানালেন, সৌদি আরবে এখন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবেই বাংলাদেশিদের চাকরি দেয়া হয়। অন্য কোনো পেশায় বাংলাদেশিদের তেমন আধিপত্য নেই। বাংলাদেশিদের চাকরিও দেয়া হয় না। ব্যবসাবাণিজ্য যারা করছিলেন তারা নতুন নিয়মের কারণে ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছেন। এ কারণে বাঙালি বাজারে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা দিন দিন কমেই চলেছে। পরিচ্ছনতা কর্মী হিসেবে নিয়োজিত থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এভাবে চলছে- সৌদি আরবে কেবল পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে ব্রান্ডিং হতে পারেন বাংলাদেশিরা। এতে করে ইমেজ সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ। 

জেদ্দা এলাকায় বসবাস করেন সিলেট সদরের বাবুল মিয়া। তিনি জানালেন, ‘আকামা’ সঙ্গে নিয়ে ঘুরলেও কোনো লাভ হয় না। পুলিশ প্রায় সময় আকামা নিয়ে গায়েব করে ফেলে। এরপর ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। কোনো কারণ ছাড়াই বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশিদের সঙ্গে এধরনের আচরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সৌদি আরবে স্থানে স্থানে আছে পুলিশের চেকপোস্ট। এই চেকপোস্টে পুলিশের রোষানলে পড়েন বাংলাদেশি শ্রমিকরাই বেশি। তার কথা প্রমাণ মিললো মক্কার হেরেম শরিফ এলাকায়। ফজরের নামাজের পরপরই বাঙালি অধ্যুষিত মিসফালাহ এলাকায় পুলিশ চেকপোস্ট বসায়। তারা দেখে দেখে আকামা চেক করে। এমনকি বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ হজ্ব পালনে যাওয়া বাংলাদেশিরাও পড়েন ওই চেকপোস্টে তল্লাশির মুখে। ফলে ওমরাহ পালনে যারা মক্কা যান তাদের সব সময় পাসপোর্ট ও ভিসার কাগজ সঙ্গে রাখতে হচ্ছে। গত ১৫ দিনে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ওমরাহ পালনে গিয়ে সঙ্গে কাগজপত্র না থাকা বেকায়দায় পড়েন। পরে হোটেল থেকে মুয়াল্লিমের মাধ্যমে কাগজপত্র এনে তাদের ছাড়িয়ে নিতে হয়েছে। 

এমন কঠোর আইন সৌদি আরবে অন্য কারো জন্য নয়। পাকিস্তানি ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার বিপুলসংখ্যক মানুষ ওমরাহ পালনে যান। তারা স্থানীয়ভাবে দেশের এম্বেসির সহযোগিতা পাওয়ার কারণে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ এম্বেসির পক্ষ থেকে সে ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানালেন জেদ্দা এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা। তারা জানান, কোনো বাংলাদেশির সমস্যা হলে বারবার ধরনা দিলেও এম্বেসির কর্মকর্তাদের দেখা মিলে না। ফলে অসহায় অবস্থায় নিজেদের ঝামেলা নিজেদের মেটাতে হয়। মদিনার করিম আল হেজ্জাজ নামে বাংলাদেশি মালিকানাধীন এক আবাসিক হোটেল আগে পরিচালনা করতেন বাংলাদেশিরা। সম্প্রতি সময়ে ওই হোটেলে বাধ্যতামূলক চাকরি দিতে হয়েছে সৌদির কয়েকজন নাগরিককে। তারাই এখন হোটেল পরিচালনা করেন।

ফলে মালিকের কর্তৃত্বও দিন দিন বিলুপ্ত হচ্ছে। ওই হোটেলের এক কর্মচারী জানালেন, যেসব সৌদি নাগরিকদের এখানে চাকরি দেয়া হয়েছে, তাদের উচ্চ মূল্যে বেতন দিতে হচ্ছে। এভাবে চললে বেশি দিন ওই মালিকের পক্ষে হোটেল চালানো সম্ভব হবে না। একদিন হোটেল ব্যবসাও গুটিয়ে দেশের পথে রওনা দিতে হবে।   

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২১ অক্টোবর ২০১৮  

সিলেটে এখনও সমাবেশের অনুমতি পায়নি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট


একদিন পিছিয়েও সিলেটে সমাবেশের অনুমতি পায়নি নবগঠিত বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা গিয়ে অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে লিখিত  আবেদন জানালেও তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে মাজার জিয়ারতে কোনো বাধা নেই। এ কারণে ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে একসঙ্গে ঐক্যযাত্রা শুরু করতে বুধবার সিলেট আসছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। এতেও যাতে বেশিসংখ্যক লোকের সমাগম না ঘটে সে কারণে পুলিশ আগে থেকেই কড়াকড়ি শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট বিএনপির নেতারা। 

তারা বলেন, পুলিশের বাড়াবাড়ি ন্যক্কারজনক। ২৩শে অক্টোবর সিলেটে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে বুধবার মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে ওই দিন সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয়নি।

এ কারণে একদিন পিছিয়ে ২৪শে অক্টোবর সিলেটে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নেয় ঐক্যফ্রন্ট। 

এই সিদ্ধান্ত মোতাবেক গতকাল দুপুরে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয়সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলনের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে গিয়ে ২৪শে অক্টোবর সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন দেন। গতকাল বিকালে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির মানবজমিনকে জানিয়েছেন- আবেদন দিয়ে তারা ফিরে আসার পরপরই পুলিশের পক্ষ থেকে ফোনে জানিয়ে দেয়া হয় অনুমতি দেয়া যাবে না। কেন অনুমতি দেয়া যাবে না- সে ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমরা বারবার বলছি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হবে। এরপরও পুলিশ অনুমতি দিচ্ছে না। 

এদিকে সমাবেশের অনুমতি না পেলেও আগামী ২৪শে অক্টোবর সিলেট আসবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তারা সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে তাদের ঐক্যযাত্রা শুরু করবেন। সিলেট বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের পক্ষ থেকে এই প্রস্তুতিই নেয়া হচ্ছে। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম জানিয়েছেন, পুলিশ সমাবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়ে দিয়েছি। এখন কেবল মাজার জিয়ারতের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। যদি শেষ মুহূর্তেও সমাবেশের অনুমতি মেলে আমরা করতে প্রস্তুত থাকবো। 

তিনি বলেন, সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার রাতেও বেশ কয়েজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের ভয়ে নেতাকর্মীরা বাসায় রাতযাপন করতে পারছেন না। এদিকে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সিলেট সফরকে কেন্দ্র করে গতকাল সকালে দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করেছে সিলেট মহানগর বিএনপি। মহানগর সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী সাদেকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আগামী ২৪শে অক্টোবর বুধবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের সিলেট সফর সফল করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সভায় ৮০ বছর ঊর্ধ্ব ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান বুদুরী, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক তানিমুল ইসলাম তানিম, মহানগর যুগ্ম সম্পাদক ফাহিম রহমান মৌসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম ও ছাত্রদল নেতা আল-আমিনকে অন্যায়ভাবে আটকের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। 

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর সহসভাপতি কাউন্সিলার ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সহসভাপতি জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর, সহসভাপতি কাউন্সিলার রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সহসভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, সহসভাপতি অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী, সহসভাপতি বাবু নিহার রঞ্জন দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব কাদির শাহী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান সাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল আহমদ মোর্শেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ রেজাউল করিম আলো, প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সদস্য বদরুদ্দোজা বদর প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্রমূলক একটি মামলার ফরমায়েশি রায়ে বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। ২৯শে অক্টোবর আবারো আরো একটি মামলায় ফরমায়েশি রায় দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আবারো কোনো অন্যায় রায় হলে গণতন্ত্রকামী জনতা ঘরে বসে থাকবে না। ২৪শে অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের সিলেট সফর ঐক্যবদ্ধভাবে সফল করতে হবে। 

সিলেট বিএনপি এখন যেকোনো সময়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী। সব রকম ভেদাভেদ ও বিভক্তি ভুলে বাকশালী সরকারের পতন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সবাইকে শামিল হতে হবে।

ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে- খন্দকার মুক্তাদির: সিলেট-১ আসনের ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রয়োগে প্রতিটি ঘরে ঘরে জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। 

তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে স্থানীয় ঝর্ণারপাড় এলাকায় এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। 

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জুর আহমদ সুলেক মিয়ার সভাপতিত্বে ও যুবদল নেতা আব্দুল মুনিম এবং সাবেক জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক অলি চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য দেন, সিলেট জেলা বিএনপিরসহ সভাপতি আজিজ উদ্দিন চেয়ারম্যান, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী জাহানারা ইয়াসমিন, মাওলানা হাফিজ আফতাব আহমদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম, আব্দুস সোবহান, আব্দুর রহমান, পাখি মিয়া, আলতু মিয়া, ওয়ার্ড সাংগঠনিক সম্পাদক তারেক আহমদ খান, মানিক মিয়া, যুবদল নেতা শাহ নেওয়াজ বক্ত তারেক, শাহিবুর রহমান সুজান, মোবারক হোসেন ফাত্তাহ, আমজাদ হোসেন, মঞ্জুরুল আলম, লুদু মিয়া, শাহীন আহমদ প্রমুখ।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) আবদুল ওয়াহাব রাতে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় সিলেটে ২৪শে অক্টোবরও সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। এর আগে তারা ২৩শে অক্টোবরের সমাবেশের জন্য আবেদন জানালেও একই কারণে তাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, পুলিশ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে।   
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২১ অক্টোবর ২০১৮ 

শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে এনডিআই-এর ২০ দফা সুপারিশ

ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে অবাধ ও অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য করতে সরকার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের কাছে যথাক্রমে ৬টি, আটটি ও ছয়টি- এই মোট ২০ দফা  সুপারিশ রেখেছে। তাদের কথায়, সামগ্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার আস্থা বাড়ানোর জন্য এগুলো দরকারী। এগুলো মানা হলে শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে। এনডিআই বলেছে তারা আগামী নির্বাচনের এক মাস আগে বাংলাদেশে প্রাক নির্বাচনী মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তখন তাদের কাজ হবে তাদেরই প্রদত্ত সুপারিশমালার কতোটা বাস্তবায়ন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা।

সরকারের জন্য ছয় দফা:

১. সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের সূচনা করুন, যা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

২. নির্বাচন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করা হবে না, এই মর্মে প্রকাশ্যে অঙ্গীকার ঘোষণা করতে হবে।

৩. কঠোরভাবে নিরপেক্ষ থাকতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে পরিষ্কার বার্তা পাঠান। নির্বাচনী স্টেকহোল্ডারদের ভীতসন্ত্রস্ত রাখা থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দিতে হবে। 

৪. রাজনৈতিক কর্মী, নাগরিক সমাজ এবং মিডিয়া প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে চলমান থাকা সকল মামলার দ্রুত বিচারিক নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া।

৫. অনলাইন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার নিবন্ধনের জন্য বিবেচনাধীন সকল আবেদন নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখা নিশ্চিত করুন। এনডিআই মনে করে যে, অনলাইন ও সামাজিক মিডিয়া নির্বাচনী জনমত গঠনে বড় ভূমিকা রাখবে। তারা ম্যানিপুলেশন এবং সহিংসতার হুমকিমুক্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং ভোটারদের মতামত গঠনের অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও ভূমিকা রাখবে। 

৬. বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত থাকা মতপ্রকাশের ও বাকস্বাধীনতা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন দ্বারা যে খর্ব করা হবে না তা স্পষ্ট করতে হবে।

উল্লেখ্য, এনডিআই প্রতিনিধি দল এই সুপারিশমালা তৈরি করতে ২০১৮ সালের ৫ থেকে ১১ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতা, নির্বাচন কমিশন, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি, নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে। তারা নারী সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক কর্মী; মিডিয়া প্রতিনিধি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা; ব্যবসায়ী নেতা এবং আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের মতামতও নেন।

বর্তমান এনডিআই বোর্ডের সদস্য এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক সাবেক মার্কিন সহকারী সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কার্ল ইন্ডারফার্থ দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত বিষয়ক তিনি একজন বিশেষজ্ঞ।

পাকিস্তানি লেখক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফারাহ নাজ ইস্পাহানী এবং সিনিয়র সহযোগী ও এনডিআইয়ের এশিয়া প্রোগ্রামের আঞ্চলিক পরিচালক পিটার ম্যানিকাস, এনডিআই নির্বাচন উপদেষ্টা মাইকেল ম্যাকনুলি এবং এনডিআই এর এশীয় বিষয়ক সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যাডাম নেলসন ওই প্রতিনিধি দলে আছেন।

নির্বাচন কমিশনারের কাছে আট দফা সুপারিশ: 

১. সমস্ত সাংবিধানিক ও আইনি ক্ষমতা প্রয়োগ করুন। পুলিশকে তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করুন। যাতে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা এবং সকল রাজনৈতিক দল ও তাদের সমর্থকদের আইনের সমান সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। 

২. নির্বাচনে নারী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সদস্যদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংসতার সমস্যাটি তুলে ধরা এবং তা মোকাবিলা করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির অভিযান পরিচালনা করুন। 

৩. বেসরকারি খাত থেকে বেশি সংখ্যায় নির্বাচনী কর্মী নিয়োগে এখনই সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। প্রিজাইডিং অফিসারসহ পোলিং কর্মীদের মধ্যে লিঙ্গ ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটিকে অগ্রাধিকার দিন। 

৪. যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে জনগণকে স্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করুন। যদি তাই হয়, তাহলে যেসব নির্দিষ্ট এলাকা এবং ভোট কেন্দ্রে তা ব্যবহার করা হবে এবং কীভাবে সেই অবস্থান বাছাই করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিন। 

৫. এটা নিশ্চিত করুন যেসব ভোটিং সেন্টারে ভোটারদের ইভিএম ব্যবহার করতে হবে, সে বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। 

৬. ইভিএম প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকা পোল কর্মীরা যে ইভিএম ব্যবহার এবং তার দেখভালের জন্য ভালো প্রশিক্ষিত, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। 

৭. ইভিএম সোর্স কোড পরিদর্শন করার এখতিয়ার নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং দলগুলোকে প্রদান করুন। ইভিএম সংক্রান্ত ইসির দেয়া যেকোনো সার্টিফিকেশন পরীক্ষার এবং যন্ত্রের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে দেখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

৮. একটি ভোট কেন্দ্রের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়া যাচাই করার বিষয়ে বিদ্যমান বাধানিষেধ তুলে নিন। কারণ কোনো একটি নির্দিষ্ট ভোট কেন্দ্রে ভোট দেয়ার সূচনা থেকে সারাদিন ভোটদান, ভোটদান পর্ব বন্ধ হওয়া এবং গণনা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পর্যবেক্ষকদের দিনভর উপস্থিতির দরকার আছে

এনডিআই’র নতুন রিপোর্ট রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী হতে আগ্রহীদের জন্য আধা ডজন সুপারিশ রেখেছে। 
এতে বলা আছে, ১. বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সুবিধাজনক হতে পারে এমন সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপের চেষ্টা করুন; ২.  কথোপকথন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তঃদলীয় বিরোধ নিষ্পত্তির অঙ্গীকার করুন, ৩. দলগুলোর মধ্যে নারীর অংশগ্রহণের যেসব প্রতিবন্ধকতা  আছে তা স্বীকার করুন এবং সেসব নিরসনে পদক্ষেপ নিন। নারী যাতে একটি আসনে কম প্রতিদ্বন্দ্বিতার কবলে পড়ে সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিন। এজন্য দলগুলোর কমিটিতে যাতে ৩৩ শতাংশ নারী থাকে তা নিশ্চত করুন। সংসদীয় নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এই লক্ষ্য নির্দিষ্ট আছে। ৪.  সংসদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য বাছাইয়ে স্বচ্ছ মানদণ্ড প্রয়োগ করুন। ৫. হেট স্পিচ ও সহিংসতা বন্ধে দলের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। প্রতিটি স্তরে পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে যে, নারী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য প্রান্তিক দলের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহ্য করা হবে না, ৬. নির্বাচনী প্রচারাভিযানের কার্যক্রমগুলোতে যুব সমাজের কাছে ব্যাপকভিত্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য স্থির করুন। দলের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে তরুণদের বেশি সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করুন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২১ অক্টোবর ২০১৮ 

কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত ভূমিকায় থাকতে হবে

এ সপ্তাহের সাক্ষাৎকার

গভর্নর মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে চাকরিজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্র্যাক ব্যাংক ও বিকাশের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যাংক খাতের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সানাউল্লাহ সাকিব।

প্রথম আলো: ৩০ বছরের বেশি ব্যাংক খাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। এখন দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন। কেমন চলছে দেশের ব্যাংক খাত?

মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী: আর্থিক খাতের কার্যক্রমকে দুভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। প্রথমত, গত ১০ বছরে আর্থিক সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। বিকাশ, এজেন্ট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে গেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অনেক হয়েছে। যারা ব্যাংকের সেবা নেওয়ার কথা চিন্তাও করত না, তারাও সেবা পাচ্ছে। এটা আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় অর্জন।

দ্বিতীয়ত, এ সময়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বড় একটা আলোচনার বিষয় হয়ে গেছে। সবার মধ্যেই ব্যাংক খাতের নানা আলোচনা জায়গা করে নিয়েছে। শেয়ারবাজারে ধস, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণেই ঋণখেলাপি হতে পারে। কিন্তু আমাদের এখানে তেমন কিছু ঘটেনি। এখানকার সমস্যা আর্থিক ব্যবস্থার দুর্বলতা। বলা যায়, খেলাপি ঋণ কোনো কারণ না, এটা হলো ফলাফল। এই ফলাফলের অন্যতম কারণ সারা বিশ্বে ব্যাংকিং পরিচালনায় যেসব ভালো চর্চা হয়, আমরা তা অনুসরণ করছি না, মানছি না। এর মধ্যে প্রধানতম হলো ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা। এটা শুধু মানা হচ্ছে না তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষাও করা হচ্ছে। তদারকির ব্যবস্থা জোরদার না হওয়ার কারণেও এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে। কেউ যদি জবাবদিহির মধ্যে না থাকে, তাহলে তো এভাবেই চলবে। ব্যাংকের কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক—সবাইকে জবাবদিহির মধ্যে থাকতে হবে। সম্প্রতি যে তারল্যসংকট হলো, তার প্রধান কারণ ছিল যথাযথ তারল্য ব্যবস্থাপনা না করা।

সব মিলিয়ে আমাদের দেশে আর্থিক খাতে ভালো–খারাপ সব দিকই আছে। এখন প্রধান কাজ হলো ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার যে প্রধান দিকগুলো আছে, সেগুলোর নিয়মকানুন পরিপালনে চাপ বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত থাকতে হবে।

প্রথম আলো: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে? দেখা যাচ্ছে, বাইরের চাপে বড় বড় সিদ্ধান্ত হচ্ছে।

রুমী আলী: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা ও ব্যাংকগুলোকে তদারকির মধ্যে রাখা। বিশ্বের কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বাইরে না। অর্থাৎ দেশের মধ্যেই কাজ করতে হয় সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো না, এটাও বুঝতে হবে। তবে ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও সজাগ থাকতে হবে। বাইরে থেকে চাপ দিলেই সবকিছু মাথা পেতে নেওয়া যাবে না। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে, দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নতুন নতুন ঝুঁকির বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা তো এখন বড় একটা ঝুঁকি। আরও বড় ঝুঁকি হলো, এক ব্যাংকের কারণে অন্য ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়া। এসব মোকাবিলায় কাজ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ হলো, যেসব আইন আছে তা পালনে বাধ্য করা। যারা মানবে, তাদের পুরস্কৃত করতে হবে; যারা মানবে না, তাদের তিরস্কারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাইরে থেকে চাপ দিয়ে ব্যাংকগুলো যেসব সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে, তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাপ দিলেই যে সব মানতে হবে, এমন কথা নেই। বাইরে থেকে সবকিছু ঠিক করে দিলে মুদ্রানীতি ঠিক থাকবে না, এতে প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রথম আলো: ব্যাংকের পরিচালকেরা তো অন্য ব্যবসার মতো আর্থিক খাতকেও পরিচালনা করছেন। এমন কাঠামো নিয়ে কত দূর যাবে দেশের ব্যাংকগুলো?

রুমী আলী: ব্যাংক তো অন্য ব্যবসার মতো না। ব্যাংক চলে আমানতকারীদের টাকায়। তাঁরা বিশ্বাস করে ব্যাংকে টাকা রাখেন। উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ টাকা দেন। জনগণের টাকার সুরক্ষা দিতেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসেছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অবশ্যই নিয়মকানুন জানতে হবে। অনেক দেশে ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে পর্ষদের কেউ জড়িত থাকেন না। ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশের পর্ষদেই বড় ঋণ অনুমোদন হয়। আবার এখানে পরস্পরবিরোধী আইনও আছে। বলা হচ্ছে, পর্ষদ ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করবে না, আবার পর্ষদেই ঋণ অনুমোদন হচ্ছে। পর্ষদ ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করতে পারে, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দিতে পারে এবং নীতিমালাও ঠিক করে দিতে পারে। এর বেশি না। কিন্তু ব্যাংকের বেশির ভাগ পরিচালকই প্রকৃত কাজ করছেন না। সুশাসন চাইলে, ব্যাংক খাতের উন্নয়ন চাইলে সবাইকে যাঁর যাঁর ভূমিকা রাখতে হবে। এর বেশি বা কম রাখা যাবে না।

প্রথম আলো: ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) যেভাবে বের করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে পুরো খাতে আস্থার সংকট আরও বাড়ছে কি? গত ছয় মাসে পাঁচজন এমডি চাকরি হারিয়েছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

রুমী আলী: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া তো কারও চাকরি চলে যেতে পারে না। কাউকে চাপ প্রয়োগ করে সরানোর খবর পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক না করতে পারে। তবে পাঁচজনকেই যে একই কারণে চলে যেতে হয়েছে, তা আমি বলব না। যদি কোনো ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এমডিকে সরিয়ে দেওয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে তখন পর্ষদকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া। আবার যদি কোনো পর্ষদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে এমডিকে বের করে দেয়, তাহলে তো বাংলাদেশ ব্যাংকও এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল। এ জন্য সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

ব্যাংকের পর্ষদে তো বিভিন্ন পক্ষের পরিচালক থাকার পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালক থাকেন। এখন তারা যদি সব পক্ষই এক হয়ে যায়, তাহলে প্রশ্ন আসে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী দেখে তাঁদের পর্ষদে বসার অনুমোদন দিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেওয়া হোক, এসব তদারকির জন্য। তবে তদারকি বিভাগগুলোর দায়িত্বে যাঁরা থাকবেন, তাঁদেরও কঠোর জবাবদিহির মধ্যে রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এখনই শুরু করতে হবে।

প্রথম আলো: রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীনই আপনি ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন। কেমন চাপ ছিল?

রুমী আলী: আমার সময়ে ব্যক্তিগতভাবে কোনো চাপ পাইনি। না সরকারের পক্ষ থেকে, না অন্য কোনো মহল থেকে। তিন বছরে একবারের জন্যও আমাকে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ফোন দেননি বা কোনো চিঠি পাঠাননি। ওই সময়ে ওরিয়েন্টাল ব্যাংক, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সৃষ্টিসহ বেশ কিছু সমস্যা হয়েছিল। এরপরও যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য নীতিমালার উদ্যোগ নিয়েও করতে পারিনি।

প্রথম আলো: বিয়াক কী নিয়ে কাজ করছে?

রুমী আলী: বাণিজ্যিক যে দ্বন্দ্ব আছে, তা নিরসন করাই বিয়াকের কাজ। মধ্যস্থতা ও সালিসির মাধ্যমে এটা করা হয়। আদালতে গেলে এসব মামলা বছরের পর বছর ঘুরে। কেউ হারে কেউ জেতে। তবে এ ব্যবস্থায় একটা সুরাহা হয়, কেউ বঞ্চিত হয় না। যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যেখানে নিজেরা মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলে। সমাধান না হলেই তারা মামলায় যায়। বাংলাদেশের আইনেও এ সুযোগ আছে, তবে চর্চা নেই।

আবার আর্থিক খাতে ঋণ নিয়েও আমরা কাজ করছি। অর্থঋণ আদালতে গেলে অনেক সময় লাগে। কেউ হারে, কেউ জেতে। আমরা চাই উভয় পক্ষের মধ্যে যৌক্তিক আলোচনা ও মধ্যস্থতা। কোনো ঋণ যখন সন্দেহজনক পর্যায়ে যায়, তখনই বিয়াকের তদারকিতে দিলে ভালো। এতে সহজেই সমাধান হয়। বিয়াক ভালোভাবে কাজ করতে পারলে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব বা খেলাপি ঋণ নিয়ে বড় ধরনের সমালোচনা তৈরি হবে না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২১ অক্টোবর ২০১৮

Thursday, October 18, 2018

ঋণের নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এসএ গ্রুপের কর্ণধার মো. শাহাবুদ্দিন আলম। জালিয়াতির মাধ্যমে গড়ে তোলা বিপুল সম্পদ কৌশলে ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে হস্তান্তর করে আবেদন করেছেন কোম্পানি বিলুপ্তির। সবশেষে চেষ্টায় ছিলেন বিদেশে পালানোর। তবে সে চেষ্টায় সফল হননি চট্টগ্রামের এ ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী। রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গতকাল তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ইপিজেড থানায় ব্যাংক এশিয়ার দায়ের করা অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় শাহাবুদ্দিন আলমকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। তারা বলছে, আলোচিত এ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় ভুয়া কাগজ সৃষ্টি করে বিভিন্ন ব্যাংকে এলসি খুলেছেন। কিন্তু এলসির বিপরীতে যেসব কাঁচামাল আমদানির কথা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা আসেনি। যেসব এলসির বিপরীতে বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করেছেন, সেগুলোও নিয়ম ভেঙে খোলাবাজারে বিক্রি করেছেন। কিন্তু এলসির বিপরীতে নেয়া ঋণ আর ব্যাংককে পরিশোধ করেননি।

শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, এ ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠান এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের সঙ্গে ব্যাংক এশিয়ার চট্টগ্রামের সিডিএ এভিনিউ শাখার একটি চুক্তি হয়। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ক্রুড অয়েল আমদানির জন্য ২০১৪ সালের ১৯ জুন তিনি ব্যাংক এশিয়ায় একটি এলসি খোলেন। সেই এলসির বিপরীতে ওই বছরের ২৪ জুলাই তিনি ৮৪ লাখ ডলার মূল্যের পাম অয়েল আমদানির জন্য চুক্তি করেন।

চুক্তিপত্র অনুযায়ী এলসির বিপরীতে প্রথম চালানে ওই বছরের ২৯ জুলাই ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৯১০ মার্কিন ডলার মূল্যের প্রায় ৬৮ লাখ টন রিফাইনড ব্লিচড ডিওডোরাইজড পাম অয়েল আমদানি করেন। ব্যাংকের দেনা পরিশোধে আমদানি কাঁচামাল খালাসও করেন। ওই এলসির বিপরীতে দ্বিতীয় চালানে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ডলার মূল্যের প্রায় ৪২ টন পাম অয়েল খোলাবাজারে বিক্রি করে ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।

সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাম অয়েল আমদানির বিপরীতে খোলা দুটি এলসির মধ্যে ইনভয়েস, ব্যাংকের এনডোর্স করা মূল দলিলাদি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতের নির্দেশনার পর পুনরায় মূল কাগজপত্র খোঁজাখুঁজি চলছে।

ব্যাংক এশিয়ার সিডিএ এভিনিউ শাখা থেকে এর আগেও শাহাবুদ্দিন আলম ৭০৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা একই কায়দায় এলসি খুলে আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় আলোচিত এ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণের নামে ৯৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন এ ব্যবসায়ী। এ নিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা চলছে।

ব্যাংক এশিয়া ও ইসলামী ব্যাংকের মতো ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখা থেকেও ঋণের নামে ৭০১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এসএ গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলম। এ ঘটনা নিয়েও চট্টগ্রাম আদালতে মামলা চলছে। পূবালী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখা থেকে ঋণের নামে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম। একই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন কৃষি ব্যাংকের ষোলশহর শাখা থেকে।

এর বাইরে এসএ গ্রুপের কর্ণধার অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছেন ৫৪৮ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম শেখ মুজিব রোডের করপোরেট শাখা থেকে ১১৮ কোটি, প্রাইম ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৫৫ কোটি ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম।

এসএ গ্রুপের কাছে পাওনাদার একাধিক ব্যাংকের এমডি বলেন, শাহাবুদ্দিন আলম দেশের ব্যাংকিং খাতে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের একজন। তার গ্রেফতার অন্যদের জন্য যেন নিদর্শন হয়। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ তত্পরতা যেন থেমে না যায়। ইচ্ছাকৃত অন্য খেলাপিদেরও আইনের আওতায় আনা হলে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি কিছুটা হলেও বন্ধ হবে।

অর্থ আত্মসাতের এসব ঘটনায় এসএ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক ১১১টি মামলা করেছে। এসব মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই তিনি কোম্পানি বিলুপ্তির আবেদন করেন। পাশাপাশি ঋণের নামে আত্মসাৎ করা অর্থ ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে হস্তান্তর করে নিজের বাড়ি ও গাড়ি বিক্রি করে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে তথ্য রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।

সিআইডির সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঋণের নামে আত্মসাৎ করা অর্থের বড় অংশই বিদেশে পাচার করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম। পাচার করা এসব অর্থ দিয়ে তিনি বিদেশে অবৈধ সম্পদও গড়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার আইনে মামলা করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংকের মামলাগুলো এলে সেগুলোতেও তাকে গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।

শাহাবুদ্দিন আলমের গ্রেফতারের বিষয়ে সিআইডির মুখপাত্র ও অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, চট্টগ্রামে ব্যাংক এশিয়া থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এর ভিত্তিতে এসএ গ্রুপের কর্ণধারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি যেহেতু চট্টগ্রামের আদালতের, তাই তাকে ঢাকার আদালতে সমর্পণ করা হয়েছে। পরে চট্টগ্রাম আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আত্মসাত্কৃত অর্থ পাচারের উৎস খুঁজে দেখা হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন আলম ভাগ্যগুণে দেশের দুই ডজনের বেশি ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়েছেন। ব্যাংকগুলোও বাছবিচার ছাড়াই প্রায় জামানতবিহীন ঋণ দিয়েছে এ ব্যবসায়ীকে। ঋণের অর্থে তিনি গড়ে তুলেছেন দেড় ডজন কোম্পানি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের ভারে নিমজ্জিত এসএ গ্রুপের এ কর্ণধার এখন চূড়ান্ত উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডোবানোর। যদিও তিনি নিজেই একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক।

এসব নিয়ে গত ১৯ জুলাই ‘শাহাবুদ্দিন আলম: ব্যাংক লুটের কারিগর’ শিরোনামে বণিক বার্তায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা /১৮ অক্টোবর ২০১৮

গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের লড়াই

মুভমেন্ট ফর জাস্টিস’র আত্মপ্রকাশ


দেশ আবার ভয়াবহ সংঘাতের হাত থেকে বাঁচাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে সবাইকে এ ফ্রন্টে যোগ দেয়ার আহবান জানিয়েছেন নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টটির নেতারা। বুধবার, অক্টোবর ১৭, জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এ আহবান জানান। ন্যায় প্রতিষ্ঠার সামাজিক আন্দোলন ‘মুভমেন্ট ফর জাস্টিস’ এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। 

এতে মুভমেন্ট ফর জাস্টিস এর প্রধান সমন্বয়ক সাবেক ছাত্রনেতা সানাউল হক নীরুর সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা তাপস পাঠানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ ব ম মোস্তফা আমিন, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমান, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এনামুল করিম শামীম, সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফ উদ্দিন খান, শহিদুল্লাহ শহীদ, সাবেক ছাত্রনেত্রী আসমা শহীদ প্রমুখ।

মঈনুল হোসেন বলেন, দেশ আবার ভয়াবহ সংঘাতের দিকে যাচ্ছে। এ থেকে বাঁচানো যায় কিনা সে লক্ষ্যেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরাতে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা ঐক্য গড়েছি। এই প্রক্রিয়া ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি বলেন, দলীয় অন্ধগলির রাজনীতি করতে গিয়ে আজ আমরা বিভক্ত হয়ে পড়েছি। অবিশ্বাস আজকে মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ের ক্ষেত্রে।

ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, ঐক্যফ্রন্ট দেখে আসলে সরকার ভয় পেতে শুরু করেছে। সরকার জানে এবার কাজটা এতো সহজ হবে না। কিন্তু তারা যাবার আগে একটা মরণ কামড় দেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কোন দলীয় জোট নয়, এতে বিএনপি, আওয়ামীলীগসহ সব দল অংশ নিতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি জনগনের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। সরকার গঠন হবে জনগনের ভোটে, বিদেশীদের কথায় নয়। রাজনীতি শুধু নির্বাচনে জোতার জন্য নয়, হুজুগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দুটি অংশ ছিল। প্রথমত, ভারত আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, দেশের জনগন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে লড়াই করেছিল। আমরা স্বাধীন ভুমি পেয়েছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পায়নি। এজন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো চলছে। 

বিশিষ্ট এ আইনজীবী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এটা বোকারাও বিশ্বাস করে না। ভারত, বৃটেন কোথাও সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হয় না। 

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বর্তমান সরকারি দলই আন্দোলন করে এনেছে। এখন তারা বলছে এটা চলবে না। পদ্ধতির প্রয়োগে ভুল থাকতে পারে, তাই বলে পদ্ধতি ভুল হবে কেন? রক্তের উপর ক্ষমতায় এসে আবার ভুলে যাওয়া মেনে নেয়া যায়না। 

ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, গত নির্বাচনের পর সরকার বললো এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু পরে আর নির্বাচন দিল না। এভাবে জাতিকে বোকা মনে করার কোন কারণ নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে সংবিধান চলছে তার এমপিরা নির্বাচিত নয়। দেশকে লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ সেনাপ্রধান নিয়ে একটি মন্তব্য করে একটি ভুল করেছেন, এজন্য তিনি দু:খও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাই বলে একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা কেন?

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমি তাকে বিশ্বাস করি, কিন্তু তার আশেপাশে যেসব চাটুকররা আছে তাদের বিশ্বাস নেই। তারা আমাদের সিকি, আধুলি বলেছেন। একবার সিকি আধুলিদের সুযোগ দিয়েই দেখেন আমরা পারি কিনা। 

তিনি বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের সময় লিখেছিল-রাষ্ট্রযন্ত্রের মেরামত চলছে। এখন এ রাষ্ট্রযন্ত্রের মেরামতের সময় এসেছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন। কিন্তু সে পরিবেশ নেই।

সরকার নিজে কথা বলছে, জনসভা করছে, কিন্তু বিরোধীরা করতে গেলেই বাধা দেয়া হচ্ছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন সবাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেই। জনগন সাহস দিলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে প্রধানমন্ত্রীও লাভবান হবেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনিও জিততে পারেন। কারণ তার সরকারও কিছু ভালো কাজ করেছে। আর যদি হারেন তাহলে তাকে জেলে যেতে হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। 

সেনাপ্রধান সম্পর্কে দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমার শব্দ চয়নে কিছু ভুল হয়েছে। আমি সেটা স্বীকারও করেছি। এখন সেটাকে অজুহাত করলে হবে না। তারপরও রাষ্ট্রদ্রোহ হয় কি করে? চোখে ছানি পড়লে হবে না। আমরা আসল জিনিস দেখতে পাচ্ছিনা।

আসিফ নজরুল বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় যারাই ঐক্য প্রক্রিয়ায় আসবে তাদেরকেই সাথে নিবেন। আগে থেকেই শর্ত দেবেন না। কোন দল ক্ষমতায় আসবে কি আসবে না সেটা জনগণের উপর ছেড়ে দিন।

সানাউল হক নীরু বলেন, দেশে কেউ ক্ষমতায় গেলে নামার কথা ভুলে যায়। দেশে যে পরিস্থতি চলছে তা ভয়াবহ। এ অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা চেষ্টা করে দেখতে চাই। যে পথে গেলে দেশ এবং দেশের মানুষ ভালো থাকবে আমরা সে পথ দেখাতে চাই।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ ১৭ অক্টোবর ২০১৮

Micro-merchants transact $18b a year


About 20 lakh people are involved in micro-merchant retail trade in Bangladesh, transacting more than $18.42 billion a year, according to a United Nations study.

The United Nations Capital Development Fund (UNCDF), the UN's capital investment agency for the world's 48 least developed countries, and Dnet, a social enterprise based in Dhaka, published the study report at a programme at the Westin Dhaka hotel yesterday.

They also launched a web portal, www.microentrepreneursasia.com, where anyone can find data about the country's micro-entrepreneurs who conduct most of their business activities in the form of low-value transactions.

The UN body undertook the first-ever comprehensive study on retail micro-merchants landscape of Bangladesh this year. It found the retail micro-merchant sector offers great opportunities for innovation such as introduction of digital payments to retail micro-merchants and digitalisation of whole supply chains. Md Ashadul Islam, secretary of the financial institutions division under the finance ministry, inaugurated the web portal. He said the portal would act as an enabler of rural development through micro-entrepreneurs.

“This is a big step forward to better understand the landscape of our micro-merchants and entrepreneurs which will enable policymakers and financial service providers to design policies and targeted products in an effective manner,” Islam said.

The secretary also said the government is prioritising the inclusion of micro-merchants and other micro, small and medium enterprises in the formal sector to accelerate sustainable and inclusive economic growth.

He said the government is continuously recognising the potential of using digital technologies and digitalisation across economic sectors, including retail shops.

Manfred Fernholz, first secretary of the European Union delegation to Bangladesh, said the country has successfully improved its socio-economic status emerging as a middle-income country.

“Going forward, special attention is required for women empowerment in the micro-merchants sector because less than 10 percent of the shops are managed by women.”

Fernholz said, right now the UNCDF is trying to reach out to 100,000 micro-merchants and gradually it has to expand its coverage to the whole segment.

“It's high time we extended supports to enable micro-merchants to incorporate wider range of digital financial services in their business operations.”

Md Arfan Ali, president and managing director of Bank Asia Ltd, said there are about 13 lakh micro-entrepreneurs in Bangladesh. But banks have failed to serve them.

“To give a boost to the economy we need to collaborate with each other -- among the government agencies, mobile phone operators, financial service providers and development partners -- to make sure digital financial services are accessible by everyone, irrespective of status.”

Md Nazim Uddin, an executive director of the Bangladesh Bank; Sirajul Hossain, chief executive officer of Dnet, and Rajeev Kumar Gupta, programme manager of the Shaping Inclusive Finance Transformations programme of the UNCDF, also spoke. 

  • Courtesy: The Daily Star / Oct 18, 2018

ইসিকে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েকমাস আগে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি দেয়া হলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে। তাকে ব্যবহারের জন্য সরকারের পরিবহন পুল থেকে এ গাড়ি বরাদ্দ দেযা হয়েছে। সরকারি যানবাহন অধিদফতরের পরিবহন কমিশনার মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ গত রবিবার সিইসির কাছে গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো ভ-১১-১৯৬৬) হস্তান্তর করেন। সিইসি বর্তমানে দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে একটি জিপ ও একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। 

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, পরিবহন পুল থেকে সিইসির ব্যবহারের জন্য একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি পাঠানো হয়েছে। পরিবহন কমিশনার গাড়িটি হস্তান্তর করেছেন। তিনি আরও জানান, পরিবহন পুলে বিভিন্ন সময়ে গাড়ির চাহিদাপত্র দেয়া হয়। এটা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ। 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার হিসেবে কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীকে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি দেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পাওয়ার পর ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানা গেছে, মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসিভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের সময় আনা গাড়িগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এসব গাড়ি সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয়। প্রতিটি গাড়ির ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মতো খরচ পড়ে। 

ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি দামে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনছে বাংলাদেশ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি ইভিএম কিনতে খরচ করবে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ টাকা। এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ইসির জন্য যে ইভিএম তৈরি করেছিল, তার প্রতিটির দাম পড়েছিল ২০-২২ হাজার টাকা। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে কিছু পার্থক্য থাকলেও দামের বিশাল পার্থক্যকে অস্বাভাবিক বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ভারতের নির্বাচন কমিশন ওই দেশের লোকসভা, রাজ্যসভাসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য নতুন মডেলের ইভিএমের দাম নির্ধারণ করেছে ১৭ হাজার রুপি। প্রতি রুপি ১ টাকা ২৫ পয়সা হিসেবে ধরে বাংলাদেশি টাকায় ভারতের ইভিএমের দাম পড়ে ২১ হাজার ২৫০ টাকা। সেই হিসাবে ১১ গুণ বেশি খরচ করে ইভিএম কিনছে বাংলাদেশ। তবে ইসি দাবি করছে, গুণগত মান বিবেচনায় বাংলাদেশের ইভিএমের দাম অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলক কম পড়ছে। 

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে (অব) ড. সাখাওয়াত হোসেন গতকাল একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সিইসিকে বিএমডব্লিউ গাড়ি দেয়া ও অতিরিক্ত দামে ইভিএম ক্রয় প্রসঙ্গে বলেন, সিইসি বিএমডব্লিউ গাড়ি গ্রহণ করবেন কি না সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইভিএম ক্রয় বিষয়ে বলেন, তাদের সময়ে ইভিএম ক্রয় করা হয়েছিল ২০-২২ হাজার টাকায়। এখন দেখতে হবে বর্তমান ইভিএম-এ কি পরিমাণ প্রযুক্তি অতিরিক্ত রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন বিতর্কমুক্ত থাকলে ভাল।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদত হোসেন একই টকশোতে বলেন, নির্বাচনের আগে বিএমডব্লিউ গাড়ি ও ১১ গুণ বেশি দামে ইভিএম ক্রয় করতে দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ নিয়ে দেশে যথেষ্ট সমালোচনাও হচ্ছে। 

এদিকে ইভিএম তৈরির ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটির সুপারিশও পুরোপুরি আমলে নেয়নি ইসি। ভোটারদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য কমিটি ইভিএম ভোটার ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল বা ভিভিপিএটি (যন্ত্রে ভোট দেয়ার পর তা একটি কাগজে ছাপা হয়ে বের হবে) সুবিধা রাখার পরামর্শ দিলেও তা রাখা হয়নি। এতে ভোট পুনর্গণনার বিষয় এলে ইসিকে সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। 

নতুন ইভিএম কেনার জন্য ইসির ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত ১৭ সেপ্টেম্বর পাস করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। দেড় লাখ ইভিএম কিনতে ওই প্রকল্পে ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট প্রকল্পে ব্যয়ের ৯২ শতাংশ। আগামী ছয় বছরে তিন পর্যায়ে দেড় লাখ ইভিএম কেনার ঘোষণা দেয়া হলেও প্রকল্পের দলিল বলছে ভিন্ন কথা। শুধু চলতি অর্থবছরেই ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্ধেকের বেশি টাকা চলতি অর্থবছরে খরচ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকল্প দলিলে আন্তর্জাতিক বাজারে ইভিএমের দাম ২ থেকে ৩ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইভিএম নির্মাণ করে এমন কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, সাধারণত ভোটার ও প্রার্থীসংখ্যা, ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভোট গণনা, সার্ভার-সমতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের স্পেসিফিকেশনের ওপর ইভিএমের দাম নির্ভর করে। 

ভারত ও বাংলাদেশের কেন্দ্রপ্রতি ভোটারের সংখ্যা প্রায় একই রকম। ভোটারদের শিক্ষার হার ও সচেতনতা প্রায় একই পর্যায়ের। দামের এত পার্থক্য থাকলেও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ইভিএমের পার্থক্য খুব বেশি নয়। বাংলাদেশের ইভিএমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বা হাতের আঙুলের ছাপ দিয়ে বা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। ভারতের ইভিএমে এই সুবিধা নেই। তবে ভারতের ইভিএমে ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) সংযুক্ত আছে। কিন্তু বাংলাদেশের ইভিএমে সেই সুবিধা নেই। 

বাংলাদেশের ইভিএমে তিনটি অংশ আছে। এগুলো হলো কন্ট্রোল ইউনিট, ব্যালট ইউনিট ও ডিসপ্লে ইউনিট। ভোটারের নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করতে আঙুলের ছাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেতে ওই ভোটারের ছবিসহ যাবতীয় তথ্য চলে আসবে। ব্যাটারির মাধ্যমে ইভিএম চলবে। চার্জ থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। ইভিএমের সঙ্গে বাইরের কোনো ইন্টারনেট বা এ ধরনের কোনো সংযোগ থাকবে না। ফলে এটি হ্যাক করার কোনো সুযোগ নেই। প্রকল্প দলিলে বলা হয়েছে, ইভিএমের ওয়ারেন্টি ১০ বছর নিশ্চিত করতে হবে। 

ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, আগামী নভেম্বর মাস থেকে ১৬ লাখ ইভিএম কেনা শুরু করবে ভারতের নির্বাচন কমিশন। নতুন মডেলের ওই ইভিএমে কন্ট্রোল ইউনিট ও ব্যালট ইউনিট এই দুটি ইউনিট আছে। সর্বোচ্চ ৩৮৪ জন প্রার্থী থাকলেও এই ইভিএমে ভোট নেয়া সম্ভব হবে। একটি ইভিএমে সর্বোচ্চ দুই হাজার ভোট নেয়া যাবে। এই ইভিএম ব্যাটারিতে চলবে। ভারতের ইভিএমে ভোট দেয়ার কইে একটি স্বচ্ছ বাক্স থাকে। ভোটার ভোট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোন প্রার্থীকে ভোট দিলেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইভিএম থেকে একটি কাগজে ছাপা হয়ে স্বচ্ছ বাক্সে পড়বে। মূলত ভোটাধিকারের দলিল বা ব্যালট হিসেবে এটি কাজ করবে। কেউ চ্যালেঞ্জ করলে প্রমাণ হিসেবে এটি রাখা হয়। ভারতের নির্বাচন কমিশন এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে যেসব ইভিএম ব্যবহার করেছিল, সেগুলোর দাম ছিল ৮ হাজার ৬৭০ রুপি করে। 

ইভিএম প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দাম নির্ভর করে যন্ত্রাংশের মান ও ‘কনফিগারেশনের’ ওপর। তাঁরা সবচেয়ে মানসম্পন্ন ইভিএম তৈরি করছেন, যাতে ১০-১৫ বছর ব্যবহার করা যায়। ইভিএমের দাম বেশি পড়ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে ইভিএমের দাম প্রায় চার হাজার ডলার। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁরা তুলনা করে দেখেছেন, বাংলাদেশের ইভিএমের দাম তুলনামূলক কম পড়ছে। 

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে নতুন ইভিএম সরবরাহ করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। ইতিমধ্যে চীন ও হংকং থেকে ইভিএমের মূল যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আনার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে বিএমটিএফ। সাধারণ ঋণপত্র খুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। তবে আমদানির প্রক্রিয়া ভিন্ন বলে ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ইভিএম আমদানির জন্য এ েেত্র বিশেষ অনুমোদন দিতে হয়েছে। 

এর আগে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন বাংলাদেশে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করে। ওই ইভিএম তৈরি করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। বুয়েটের তৈরি ইভিএমে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন পুরোপুরি ইভিএমে হয়েছিল। ওই ইভিএমে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা ছিল না। ভিভিপিএটি সুবিধাও ছিল না। 

ওই ইভিএম তৈরির নেতৃত্বে ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবির। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য বুয়েট ১ হাজার ১০০টি ইভিএম তৈরি করেছিল। প্রতিটি ইভিএমের খরচ পড়েছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। বৃহৎ আকারে উৎপাদনে গেলে খরচ আরও কমে যেত। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভিভিপিএটি সুবিধা যুক্ত করে ৪০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে ইভিএম তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, বৈশিষ্ট্যের কারণে ইভিএমের দামের তুলনা করা কঠিন। কিন্তু প্রতিটি ইভিএমের দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ধরা হলে তা অস্বাভাবিকই। 

এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, কারিগরি কমিটি পেপার ট্রেইলের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু উপকমিটি দেখেছে, পেপার ট্রেইল যুক্ত করে অনেকে ঝামেলায় পড়েছে। ভারতে ১৫-১৮ শতাংশ কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করতে হয়েছে পেপার ট্রেইলে সমস্যার কারণে। পেপার ট্রেইল মূলত ভোটারের মানসিক শান্তির জন্য যুক্ত করা হয়। এই ইভিএমে ভোটার যে মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ঠিক করবেন, সে মার্কা স্ক্রিনজুড়ে বড় হয়ে ভেসে উঠবে। এটি ইলেকট্রনিক্যালি করা হয়েছে পেপারে না যাওয়ার জন্য। 

জানতে চাইলে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, কারিগরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ইভিএম প্রস্তুত করা হয়েছে এই বক্তব্য আংশিক সত্য। তিনি কমিটির দুটি বৈঠকে অংশ নেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, মেশিন ঠিক আছে। কিন্তু মেশিনের সঙ্গে ভিভিপিএটি যুক্ত করতে হবে। ভিভিপিএটি ছাড়া মেশিন গ্রহণযোগ্য হবে না। 

জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কারিগরি কমিটিকে জিজ্ঞাসা না করে ইসি সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। একটি সাব-কমিটি বৈঠক করে কারিগরি কমিটির ওই সুপারিশ বাদ দিয়েছে। সুতরাং এখানে আমার নাম ব্যবহার করা ইসির ঠিক হচ্ছে না।
  • কার্টসিঃ দিনকাল/ ১৭অক্টোবর ২০১৮

Shrinking farm land

Editorial

All is not well in the agricultural sector. In sync with continuous decline in its contribution to the gross domestic product (GDP), per capita farm land holding has been shrinking for the last few decades. The rate of reduction in per-capita farm holding has got pace in recent years. The statistics might appear rather disturbing to many if the same are examined in the context of food and nutrition security of an ever-increasing population.

The state of per capita farm landholding and agricultural labourers has been depicted in a presentation made by the head of one of the country's leading farm research bodies at the Economic Relations Division. According to the presentation, the average per capita farm landholding, which was 1.7 hectares in 1960s, has now reduced to 0.10 hectares. Country's population is projected to reach 215 million in 2050. One can figure out well the overall land-man ratio with such a large population in place. 

But despite continuous shrinking of farm land -- an estimated 1.0 per cent arable land is lost every year to housing and other physical infrastructural facilities for a rising population-the country has made notable achievements in cereal, vegetables and fruit production. Bangladesh is now near self-sufficient in food as production of cereals has increased more than threefold over the last four decades. (The claim some quarters make about self-sufficiency in food is apparently exaggerated.  Note the near-crisis situation in the event of even a partial loss of a major rice crop.)   

There is no denying that per acre yield of rice, in particular, has gone up substantially with greater adoption of modern farm technology. But that has not been without a cost. As a natural consequence of expansion of rice crop acreage, particularly during the Rabi season, areas under some other crops have shrunk and the country is now largely dependent on their import. However, such a development is considered inevitable in land-scarce Bangladesh. Yet, adoption of modern farm technology here has not been to the fullest extent. There are flaws in the use of improved agricultural inputs; and farm mechanisation is progressing slowly.

In the present scenario, Bangladesh is left with one option, i.e., increased cropping intensity - to raise its farm-level productivity. The cropping intensity is now estimated at around 127 per cent. But the intensity varies from one area to another because of a number of factors, including locations of land and climatic conditions. Yet the cropping intensity, according to experts, can be increased further in many areas to offset the impact of loss of farm land. But while doing so, there is a need to exercise caution.

Soil fertility comes under threat when the cropping intensity is raised rather imprudently. It is thus important to give the cropping areas some rest and maintain nutritional balance and other natural properties of soil, among others. The task is difficult and it may be even more difficult in the future with changing circumstances. The policymakers would have to devise best and balanced ways to compensate for the loss of production due to the shrinking of farm land. 

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 18, 2018