Search

Sunday, October 21, 2018

কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত ভূমিকায় থাকতে হবে

এ সপ্তাহের সাক্ষাৎকার

গভর্নর মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী, ১৯৭৫ সালে তৎকালীন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে চাকরিজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্র্যাক ব্যাংক ও বিকাশের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ব্যাংক খাতের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সানাউল্লাহ সাকিব।

প্রথম আলো: ৩০ বছরের বেশি ব্যাংক খাতের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। এখন দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন। কেমন চলছে দেশের ব্যাংক খাত?

মোহাম্মদ এ (রুমী) আলী: আর্থিক খাতের কার্যক্রমকে দুভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। প্রথমত, গত ১০ বছরে আর্থিক সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। বিকাশ, এজেন্ট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে গেছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি অনেক হয়েছে। যারা ব্যাংকের সেবা নেওয়ার কথা চিন্তাও করত না, তারাও সেবা পাচ্ছে। এটা আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় অর্জন।

দ্বিতীয়ত, এ সময়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বড় একটা আলোচনার বিষয় হয়ে গেছে। সবার মধ্যেই ব্যাংক খাতের নানা আলোচনা জায়গা করে নিয়েছে। শেয়ারবাজারে ধস, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণেই ঋণখেলাপি হতে পারে। কিন্তু আমাদের এখানে তেমন কিছু ঘটেনি। এখানকার সমস্যা আর্থিক ব্যবস্থার দুর্বলতা। বলা যায়, খেলাপি ঋণ কোনো কারণ না, এটা হলো ফলাফল। এই ফলাফলের অন্যতম কারণ সারা বিশ্বে ব্যাংকিং পরিচালনায় যেসব ভালো চর্চা হয়, আমরা তা অনুসরণ করছি না, মানছি না। এর মধ্যে প্রধানতম হলো ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা। এটা শুধু মানা হচ্ছে না তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষাও করা হচ্ছে। তদারকির ব্যবস্থা জোরদার না হওয়ার কারণেও এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে। কেউ যদি জবাবদিহির মধ্যে না থাকে, তাহলে তো এভাবেই চলবে। ব্যাংকের কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক—সবাইকে জবাবদিহির মধ্যে থাকতে হবে। সম্প্রতি যে তারল্যসংকট হলো, তার প্রধান কারণ ছিল যথাযথ তারল্য ব্যবস্থাপনা না করা।

সব মিলিয়ে আমাদের দেশে আর্থিক খাতে ভালো–খারাপ সব দিকই আছে। এখন প্রধান কাজ হলো ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার যে প্রধান দিকগুলো আছে, সেগুলোর নিয়মকানুন পরিপালনে চাপ বাড়াতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত থাকতে হবে।

প্রথম আলো: কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে? দেখা যাচ্ছে, বাইরের চাপে বড় বড় সিদ্ধান্ত হচ্ছে।

রুমী আলী: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা ও ব্যাংকগুলোকে তদারকির মধ্যে রাখা। বিশ্বের কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের বাইরে না। অর্থাৎ দেশের মধ্যেই কাজ করতে হয় সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো না, এটাও বুঝতে হবে। তবে ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও সজাগ থাকতে হবে। বাইরে থেকে চাপ দিলেই সবকিছু মাথা পেতে নেওয়া যাবে না। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাড়াতে হবে, দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নতুন নতুন ঝুঁকির বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা তো এখন বড় একটা ঝুঁকি। আরও বড় ঝুঁকি হলো, এক ব্যাংকের কারণে অন্য ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়া। এসব মোকাবিলায় কাজ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ হলো, যেসব আইন আছে তা পালনে বাধ্য করা। যারা মানবে, তাদের পুরস্কৃত করতে হবে; যারা মানবে না, তাদের তিরস্কারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। বাইরে থেকে চাপ দিয়ে ব্যাংকগুলো যেসব সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে, তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাপ দিলেই যে সব মানতে হবে, এমন কথা নেই। বাইরে থেকে সবকিছু ঠিক করে দিলে মুদ্রানীতি ঠিক থাকবে না, এতে প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

প্রথম আলো: ব্যাংকের পরিচালকেরা তো অন্য ব্যবসার মতো আর্থিক খাতকেও পরিচালনা করছেন। এমন কাঠামো নিয়ে কত দূর যাবে দেশের ব্যাংকগুলো?

রুমী আলী: ব্যাংক তো অন্য ব্যবসার মতো না। ব্যাংক চলে আমানতকারীদের টাকায়। তাঁরা বিশ্বাস করে ব্যাংকে টাকা রাখেন। উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ টাকা দেন। জনগণের টাকার সুরক্ষা দিতেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসেছে। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অবশ্যই নিয়মকানুন জানতে হবে। অনেক দেশে ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে পর্ষদের কেউ জড়িত থাকেন না। ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশের পর্ষদেই বড় ঋণ অনুমোদন হয়। আবার এখানে পরস্পরবিরোধী আইনও আছে। বলা হচ্ছে, পর্ষদ ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করবে না, আবার পর্ষদেই ঋণ অনুমোদন হচ্ছে। পর্ষদ ব্যাংকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করতে পারে, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দিতে পারে এবং নীতিমালাও ঠিক করে দিতে পারে। এর বেশি না। কিন্তু ব্যাংকের বেশির ভাগ পরিচালকই প্রকৃত কাজ করছেন না। সুশাসন চাইলে, ব্যাংক খাতের উন্নয়ন চাইলে সবাইকে যাঁর যাঁর ভূমিকা রাখতে হবে। এর বেশি বা কম রাখা যাবে না।

প্রথম আলো: ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) যেভাবে বের করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে পুরো খাতে আস্থার সংকট আরও বাড়ছে কি? গত ছয় মাসে পাঁচজন এমডি চাকরি হারিয়েছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

রুমী আলী: বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া তো কারও চাকরি চলে যেতে পারে না। কাউকে চাপ প্রয়োগ করে সরানোর খবর পেলে বাংলাদেশ ব্যাংক না করতে পারে। তবে পাঁচজনকেই যে একই কারণে চলে যেতে হয়েছে, তা আমি বলব না। যদি কোনো ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এমডিকে সরিয়ে দেওয়া হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত হবে তখন পর্ষদকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া। আবার যদি কোনো পর্ষদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে এমডিকে বের করে দেয়, তাহলে তো বাংলাদেশ ব্যাংকও এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল। এ জন্য সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

ব্যাংকের পর্ষদে তো বিভিন্ন পক্ষের পরিচালক থাকার পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালক থাকেন। এখন তারা যদি সব পক্ষই এক হয়ে যায়, তাহলে প্রশ্ন আসে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী দেখে তাঁদের পর্ষদে বসার অনুমোদন দিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা দেওয়া হোক, এসব তদারকির জন্য। তবে তদারকি বিভাগগুলোর দায়িত্বে যাঁরা থাকবেন, তাঁদেরও কঠোর জবাবদিহির মধ্যে রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার এখনই শুরু করতে হবে।

প্রথম আলো: রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীনই আপনি ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন। কেমন চাপ ছিল?

রুমী আলী: আমার সময়ে ব্যক্তিগতভাবে কোনো চাপ পাইনি। না সরকারের পক্ষ থেকে, না অন্য কোনো মহল থেকে। তিন বছরে একবারের জন্যও আমাকে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ফোন দেননি বা কোনো চিঠি পাঠাননি। ওই সময়ে ওরিয়েন্টাল ব্যাংক, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সৃষ্টিসহ বেশ কিছু সমস্যা হয়েছিল। এরপরও যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে ইসলামী ব্যাংকগুলোর জন্য নীতিমালার উদ্যোগ নিয়েও করতে পারিনি।

প্রথম আলো: বিয়াক কী নিয়ে কাজ করছে?

রুমী আলী: বাণিজ্যিক যে দ্বন্দ্ব আছে, তা নিরসন করাই বিয়াকের কাজ। মধ্যস্থতা ও সালিসির মাধ্যমে এটা করা হয়। আদালতে গেলে এসব মামলা বছরের পর বছর ঘুরে। কেউ হারে কেউ জেতে। তবে এ ব্যবস্থায় একটা সুরাহা হয়, কেউ বঞ্চিত হয় না। যৌক্তিক সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্বের অনেক দেশ আছে, যেখানে নিজেরা মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলে। সমাধান না হলেই তারা মামলায় যায়। বাংলাদেশের আইনেও এ সুযোগ আছে, তবে চর্চা নেই।

আবার আর্থিক খাতে ঋণ নিয়েও আমরা কাজ করছি। অর্থঋণ আদালতে গেলে অনেক সময় লাগে। কেউ হারে, কেউ জেতে। আমরা চাই উভয় পক্ষের মধ্যে যৌক্তিক আলোচনা ও মধ্যস্থতা। কোনো ঋণ যখন সন্দেহজনক পর্যায়ে যায়, তখনই বিয়াকের তদারকিতে দিলে ভালো। এতে সহজেই সমাধান হয়। বিয়াক ভালোভাবে কাজ করতে পারলে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব বা খেলাপি ঋণ নিয়ে বড় ধরনের সমালোচনা তৈরি হবে না।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২১ অক্টোবর ২০১৮

Thursday, October 18, 2018

ঋণের নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এসএ গ্রুপের কর্ণধার মো. শাহাবুদ্দিন আলম। জালিয়াতির মাধ্যমে গড়ে তোলা বিপুল সম্পদ কৌশলে ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে হস্তান্তর করে আবেদন করেছেন কোম্পানি বিলুপ্তির। সবশেষে চেষ্টায় ছিলেন বিদেশে পালানোর। তবে সে চেষ্টায় সফল হননি চট্টগ্রামের এ ঋণখেলাপি ব্যবসায়ী। রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গতকাল তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ইপিজেড থানায় ব্যাংক এশিয়ার দায়ের করা অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় শাহাবুদ্দিন আলমকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। তারা বলছে, আলোচিত এ ব্যবসায়ী বিভিন্ন সময় ভুয়া কাগজ সৃষ্টি করে বিভিন্ন ব্যাংকে এলসি খুলেছেন। কিন্তু এলসির বিপরীতে যেসব কাঁচামাল আমদানির কথা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা আসেনি। যেসব এলসির বিপরীতে বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করেছেন, সেগুলোও নিয়ম ভেঙে খোলাবাজারে বিক্রি করেছেন। কিন্তু এলসির বিপরীতে নেয়া ঋণ আর ব্যাংককে পরিশোধ করেননি।

শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, এ ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠান এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের সঙ্গে ব্যাংক এশিয়ার চট্টগ্রামের সিডিএ এভিনিউ শাখার একটি চুক্তি হয়। চুক্তিপত্র অনুযায়ী ক্রুড অয়েল আমদানির জন্য ২০১৪ সালের ১৯ জুন তিনি ব্যাংক এশিয়ায় একটি এলসি খোলেন। সেই এলসির বিপরীতে ওই বছরের ২৪ জুলাই তিনি ৮৪ লাখ ডলার মূল্যের পাম অয়েল আমদানির জন্য চুক্তি করেন।

চুক্তিপত্র অনুযায়ী এলসির বিপরীতে প্রথম চালানে ওই বছরের ২৯ জুলাই ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৯১০ মার্কিন ডলার মূল্যের প্রায় ৬৮ লাখ টন রিফাইনড ব্লিচড ডিওডোরাইজড পাম অয়েল আমদানি করেন। ব্যাংকের দেনা পরিশোধে আমদানি কাঁচামাল খালাসও করেন। ওই এলসির বিপরীতে দ্বিতীয় চালানে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ডলার মূল্যের প্রায় ৪২ টন পাম অয়েল খোলাবাজারে বিক্রি করে ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।

সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাম অয়েল আমদানির বিপরীতে খোলা দুটি এলসির মধ্যে ইনভয়েস, ব্যাংকের এনডোর্স করা মূল দলিলাদি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতের নির্দেশনার পর পুনরায় মূল কাগজপত্র খোঁজাখুঁজি চলছে।

ব্যাংক এশিয়ার সিডিএ এভিনিউ শাখা থেকে এর আগেও শাহাবুদ্দিন আলম ৭০৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা একই কায়দায় এলসি খুলে আত্মসাৎ করেছেন। এ ঘটনায় আলোচিত এ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এছাড়া ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা থেকে ঋণের নামে ৯৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন এ ব্যবসায়ী। এ নিয়ে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা চলছে।

ব্যাংক এশিয়া ও ইসলামী ব্যাংকের মতো ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের আগ্রাবাদ শাখা থেকেও ঋণের নামে ৭০১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এসএ গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলম। এ ঘটনা নিয়েও চট্টগ্রাম আদালতে মামলা চলছে। পূবালী ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখা থেকে ঋণের নামে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম। একই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১৮০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন কৃষি ব্যাংকের ষোলশহর শাখা থেকে।

এর বাইরে এসএ গ্রুপের কর্ণধার অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছেন ৫৪৮ কোটি টাকা। এছাড়া জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম শেখ মুজিব রোডের করপোরেট শাখা থেকে ১১৮ কোটি, প্রাইম ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৫৫ কোটি ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম।

এসএ গ্রুপের কাছে পাওনাদার একাধিক ব্যাংকের এমডি বলেন, শাহাবুদ্দিন আলম দেশের ব্যাংকিং খাতে ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের একজন। তার গ্রেফতার অন্যদের জন্য যেন নিদর্শন হয়। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ তত্পরতা যেন থেমে না যায়। ইচ্ছাকৃত অন্য খেলাপিদেরও আইনের আওতায় আনা হলে খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি কিছুটা হলেও বন্ধ হবে।

অর্থ আত্মসাতের এসব ঘটনায় এসএ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে দুই ডজনের বেশি ব্যাংক ১১১টি মামলা করেছে। এসব মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই তিনি কোম্পানি বিলুপ্তির আবেদন করেন। পাশাপাশি ঋণের নামে আত্মসাৎ করা অর্থ ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে হস্তান্তর করে নিজের বাড়ি ও গাড়ি বিক্রি করে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে তথ্য রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।

সিআইডির সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঋণের নামে আত্মসাৎ করা অর্থের বড় অংশই বিদেশে পাচার করেছেন শাহাবুদ্দিন আলম। পাচার করা এসব অর্থ দিয়ে তিনি বিদেশে অবৈধ সম্পদও গড়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার আইনে মামলা করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যাংকের মামলাগুলো এলে সেগুলোতেও তাকে গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।

শাহাবুদ্দিন আলমের গ্রেফতারের বিষয়ে সিআইডির মুখপাত্র ও অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, চট্টগ্রামে ব্যাংক এশিয়া থেকে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এর ভিত্তিতে এসএ গ্রুপের কর্ণধারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি যেহেতু চট্টগ্রামের আদালতের, তাই তাকে ঢাকার আদালতে সমর্পণ করা হয়েছে। পরে চট্টগ্রাম আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আত্মসাত্কৃত অর্থ পাচারের উৎস খুঁজে দেখা হবে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন আলম ভাগ্যগুণে দেশের দুই ডজনের বেশি ব্যাংক থেকে ঋণ পেয়েছেন। ব্যাংকগুলোও বাছবিচার ছাড়াই প্রায় জামানতবিহীন ঋণ দিয়েছে এ ব্যবসায়ীকে। ঋণের অর্থে তিনি গড়ে তুলেছেন দেড় ডজন কোম্পানি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের ভারে নিমজ্জিত এসএ গ্রুপের এ কর্ণধার এখন চূড়ান্ত উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডোবানোর। যদিও তিনি নিজেই একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক।

এসব নিয়ে গত ১৯ জুলাই ‘শাহাবুদ্দিন আলম: ব্যাংক লুটের কারিগর’ শিরোনামে বণিক বার্তায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

  • কার্টসিঃ বনিক বার্তা /১৮ অক্টোবর ২০১৮

গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের লড়াই

মুভমেন্ট ফর জাস্টিস’র আত্মপ্রকাশ


দেশ আবার ভয়াবহ সংঘাতের হাত থেকে বাঁচাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে সবাইকে এ ফ্রন্টে যোগ দেয়ার আহবান জানিয়েছেন নবগঠিত ঐক্যফ্রন্টটির নেতারা। বুধবার, অক্টোবর ১৭, জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারা এ আহবান জানান। ন্যায় প্রতিষ্ঠার সামাজিক আন্দোলন ‘মুভমেন্ট ফর জাস্টিস’ এর আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। 

এতে মুভমেন্ট ফর জাস্টিস এর প্রধান সমন্বয়ক সাবেক ছাত্রনেতা সানাউল হক নীরুর সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা তাপস পাঠানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ ব ম মোস্তফা আমিন, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমান, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এনামুল করিম শামীম, সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফ উদ্দিন খান, শহিদুল্লাহ শহীদ, সাবেক ছাত্রনেত্রী আসমা শহীদ প্রমুখ।

মঈনুল হোসেন বলেন, দেশ আবার ভয়াবহ সংঘাতের দিকে যাচ্ছে। এ থেকে বাঁচানো যায় কিনা সে লক্ষ্যেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। গণতন্ত্র ফেরাতে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা ঐক্য গড়েছি। এই প্রক্রিয়া ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি বলেন, দলীয় অন্ধগলির রাজনীতি করতে গিয়ে আজ আমরা বিভক্ত হয়ে পড়েছি। অবিশ্বাস আজকে মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ের ক্ষেত্রে।

ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, ঐক্যফ্রন্ট দেখে আসলে সরকার ভয় পেতে শুরু করেছে। সরকার জানে এবার কাজটা এতো সহজ হবে না। কিন্তু তারা যাবার আগে একটা মরণ কামড় দেবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কোন দলীয় জোট নয়, এতে বিএনপি, আওয়ামীলীগসহ সব দল অংশ নিতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাচ্ছি জনগনের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। সরকার গঠন হবে জনগনের ভোটে, বিদেশীদের কথায় নয়। রাজনীতি শুধু নির্বাচনে জোতার জন্য নয়, হুজুগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দুটি অংশ ছিল। প্রথমত, ভারত আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, দেশের জনগন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে লড়াই করেছিল। আমরা স্বাধীন ভুমি পেয়েছি। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পায়নি। এজন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এখনো চলছে। 

বিশিষ্ট এ আইনজীবী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এটা বোকারাও বিশ্বাস করে না। ভারত, বৃটেন কোথাও সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হয় না। 

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বর্তমান সরকারি দলই আন্দোলন করে এনেছে। এখন তারা বলছে এটা চলবে না। পদ্ধতির প্রয়োগে ভুল থাকতে পারে, তাই বলে পদ্ধতি ভুল হবে কেন? রক্তের উপর ক্ষমতায় এসে আবার ভুলে যাওয়া মেনে নেয়া যায়না। 

ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, গত নির্বাচনের পর সরকার বললো এটা নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু পরে আর নির্বাচন দিল না। এভাবে জাতিকে বোকা মনে করার কোন কারণ নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে সংবিধান চলছে তার এমপিরা নির্বাচিত নয়। দেশকে লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ সেনাপ্রধান নিয়ে একটি মন্তব্য করে একটি ভুল করেছেন, এজন্য তিনি দু:খও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তাই বলে একজন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা কেন?

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমি তাকে বিশ্বাস করি, কিন্তু তার আশেপাশে যেসব চাটুকররা আছে তাদের বিশ্বাস নেই। তারা আমাদের সিকি, আধুলি বলেছেন। একবার সিকি আধুলিদের সুযোগ দিয়েই দেখেন আমরা পারি কিনা। 

তিনি বলেন, স্কুল শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের সময় লিখেছিল-রাষ্ট্রযন্ত্রের মেরামত চলছে। এখন এ রাষ্ট্রযন্ত্রের মেরামতের সময় এসেছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন। কিন্তু সে পরিবেশ নেই।

সরকার নিজে কথা বলছে, জনসভা করছে, কিন্তু বিরোধীরা করতে গেলেই বাধা দেয়া হচ্ছে। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন সবাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেই। জনগন সাহস দিলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে প্রধানমন্ত্রীও লাভবান হবেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনিও জিততে পারেন। কারণ তার সরকারও কিছু ভালো কাজ করেছে। আর যদি হারেন তাহলে তাকে জেলে যেতে হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। 

সেনাপ্রধান সম্পর্কে দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমার শব্দ চয়নে কিছু ভুল হয়েছে। আমি সেটা স্বীকারও করেছি। এখন সেটাকে অজুহাত করলে হবে না। তারপরও রাষ্ট্রদ্রোহ হয় কি করে? চোখে ছানি পড়লে হবে না। আমরা আসল জিনিস দেখতে পাচ্ছিনা।

আসিফ নজরুল বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় যারাই ঐক্য প্রক্রিয়ায় আসবে তাদেরকেই সাথে নিবেন। আগে থেকেই শর্ত দেবেন না। কোন দল ক্ষমতায় আসবে কি আসবে না সেটা জনগণের উপর ছেড়ে দিন।

সানাউল হক নীরু বলেন, দেশে কেউ ক্ষমতায় গেলে নামার কথা ভুলে যায়। দেশে যে পরিস্থতি চলছে তা ভয়াবহ। এ অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা চেষ্টা করে দেখতে চাই। যে পথে গেলে দেশ এবং দেশের মানুষ ভালো থাকবে আমরা সে পথ দেখাতে চাই।
  • কার্টসিঃ নয়াদিগন্ত/ ১৭ অক্টোবর ২০১৮

Micro-merchants transact $18b a year


About 20 lakh people are involved in micro-merchant retail trade in Bangladesh, transacting more than $18.42 billion a year, according to a United Nations study.

The United Nations Capital Development Fund (UNCDF), the UN's capital investment agency for the world's 48 least developed countries, and Dnet, a social enterprise based in Dhaka, published the study report at a programme at the Westin Dhaka hotel yesterday.

They also launched a web portal, www.microentrepreneursasia.com, where anyone can find data about the country's micro-entrepreneurs who conduct most of their business activities in the form of low-value transactions.

The UN body undertook the first-ever comprehensive study on retail micro-merchants landscape of Bangladesh this year. It found the retail micro-merchant sector offers great opportunities for innovation such as introduction of digital payments to retail micro-merchants and digitalisation of whole supply chains. Md Ashadul Islam, secretary of the financial institutions division under the finance ministry, inaugurated the web portal. He said the portal would act as an enabler of rural development through micro-entrepreneurs.

“This is a big step forward to better understand the landscape of our micro-merchants and entrepreneurs which will enable policymakers and financial service providers to design policies and targeted products in an effective manner,” Islam said.

The secretary also said the government is prioritising the inclusion of micro-merchants and other micro, small and medium enterprises in the formal sector to accelerate sustainable and inclusive economic growth.

He said the government is continuously recognising the potential of using digital technologies and digitalisation across economic sectors, including retail shops.

Manfred Fernholz, first secretary of the European Union delegation to Bangladesh, said the country has successfully improved its socio-economic status emerging as a middle-income country.

“Going forward, special attention is required for women empowerment in the micro-merchants sector because less than 10 percent of the shops are managed by women.”

Fernholz said, right now the UNCDF is trying to reach out to 100,000 micro-merchants and gradually it has to expand its coverage to the whole segment.

“It's high time we extended supports to enable micro-merchants to incorporate wider range of digital financial services in their business operations.”

Md Arfan Ali, president and managing director of Bank Asia Ltd, said there are about 13 lakh micro-entrepreneurs in Bangladesh. But banks have failed to serve them.

“To give a boost to the economy we need to collaborate with each other -- among the government agencies, mobile phone operators, financial service providers and development partners -- to make sure digital financial services are accessible by everyone, irrespective of status.”

Md Nazim Uddin, an executive director of the Bangladesh Bank; Sirajul Hossain, chief executive officer of Dnet, and Rajeev Kumar Gupta, programme manager of the Shaping Inclusive Finance Transformations programme of the UNCDF, also spoke. 

  • Courtesy: The Daily Star / Oct 18, 2018

ইসিকে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র কয়েকমাস আগে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি দেয়া হলো প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে। তাকে ব্যবহারের জন্য সরকারের পরিবহন পুল থেকে এ গাড়ি বরাদ্দ দেযা হয়েছে। সরকারি যানবাহন অধিদফতরের পরিবহন কমিশনার মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ গত রবিবার সিইসির কাছে গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো ভ-১১-১৯৬৬) হস্তান্তর করেন। সিইসি বর্তমানে দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে একটি জিপ ও একটি প্রাইভেটকার রয়েছে। 

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, পরিবহন পুল থেকে সিইসির ব্যবহারের জন্য একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি পাঠানো হয়েছে। পরিবহন কমিশনার গাড়িটি হস্তান্তর করেছেন। তিনি আরও জানান, পরিবহন পুলে বিভিন্ন সময়ে গাড়ির চাহিদাপত্র দেয়া হয়। এটা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ। 

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপহার হিসেবে কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রীকে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি দেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পাওয়ার পর ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানা গেছে, মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসিভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের সময় আনা গাড়িগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এসব গাড়ি সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয়। প্রতিটি গাড়ির ক্ষেত্রে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার মতো খরচ পড়ে। 

ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি দামে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কিনছে বাংলাদেশ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি ইভিএম কিনতে খরচ করবে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ টাকা। এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ইসির জন্য যে ইভিএম তৈরি করেছিল, তার প্রতিটির দাম পড়েছিল ২০-২২ হাজার টাকা। বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে কিছু পার্থক্য থাকলেও দামের বিশাল পার্থক্যকে অস্বাভাবিক বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ভারতের নির্বাচন কমিশন ওই দেশের লোকসভা, রাজ্যসভাসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য নতুন মডেলের ইভিএমের দাম নির্ধারণ করেছে ১৭ হাজার রুপি। প্রতি রুপি ১ টাকা ২৫ পয়সা হিসেবে ধরে বাংলাদেশি টাকায় ভারতের ইভিএমের দাম পড়ে ২১ হাজার ২৫০ টাকা। সেই হিসাবে ১১ গুণ বেশি খরচ করে ইভিএম কিনছে বাংলাদেশ। তবে ইসি দাবি করছে, গুণগত মান বিবেচনায় বাংলাদেশের ইভিএমের দাম অন্যান্য দেশের চেয়ে তুলনামূলক কম পড়ছে। 

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে (অব) ড. সাখাওয়াত হোসেন গতকাল একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সিইসিকে বিএমডব্লিউ গাড়ি দেয়া ও অতিরিক্ত দামে ইভিএম ক্রয় প্রসঙ্গে বলেন, সিইসি বিএমডব্লিউ গাড়ি গ্রহণ করবেন কি না সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইভিএম ক্রয় বিষয়ে বলেন, তাদের সময়ে ইভিএম ক্রয় করা হয়েছিল ২০-২২ হাজার টাকায়। এখন দেখতে হবে বর্তমান ইভিএম-এ কি পরিমাণ প্রযুক্তি অতিরিক্ত রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন বিতর্কমুক্ত থাকলে ভাল।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদত হোসেন একই টকশোতে বলেন, নির্বাচনের আগে বিএমডব্লিউ গাড়ি ও ১১ গুণ বেশি দামে ইভিএম ক্রয় করতে দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ নিয়ে দেশে যথেষ্ট সমালোচনাও হচ্ছে। 

এদিকে ইভিএম তৈরির ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটির সুপারিশও পুরোপুরি আমলে নেয়নি ইসি। ভোটারদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য কমিটি ইভিএম ভোটার ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল বা ভিভিপিএটি (যন্ত্রে ভোট দেয়ার পর তা একটি কাগজে ছাপা হয়ে বের হবে) সুবিধা রাখার পরামর্শ দিলেও তা রাখা হয়নি। এতে ভোট পুনর্গণনার বিষয় এলে ইসিকে সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে। 

নতুন ইভিএম কেনার জন্য ইসির ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত ১৭ সেপ্টেম্বর পাস করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। দেড় লাখ ইভিএম কিনতে ওই প্রকল্পে ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট প্রকল্পে ব্যয়ের ৯২ শতাংশ। আগামী ছয় বছরে তিন পর্যায়ে দেড় লাখ ইভিএম কেনার ঘোষণা দেয়া হলেও প্রকল্পের দলিল বলছে ভিন্ন কথা। শুধু চলতি অর্থবছরেই ১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্ধেকের বেশি টাকা চলতি অর্থবছরে খরচ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকল্প দলিলে আন্তর্জাতিক বাজারে ইভিএমের দাম ২ থেকে ৩ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইভিএম নির্মাণ করে এমন কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, সাধারণত ভোটার ও প্রার্থীসংখ্যা, ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভোট গণনা, সার্ভার-সমতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের স্পেসিফিকেশনের ওপর ইভিএমের দাম নির্ভর করে। 

ভারত ও বাংলাদেশের কেন্দ্রপ্রতি ভোটারের সংখ্যা প্রায় একই রকম। ভোটারদের শিক্ষার হার ও সচেতনতা প্রায় একই পর্যায়ের। দামের এত পার্থক্য থাকলেও বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ইভিএমের পার্থক্য খুব বেশি নয়। বাংলাদেশের ইভিএমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বা হাতের আঙুলের ছাপ দিয়ে বা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। ভারতের ইভিএমে এই সুবিধা নেই। তবে ভারতের ইভিএমে ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) সংযুক্ত আছে। কিন্তু বাংলাদেশের ইভিএমে সেই সুবিধা নেই। 

বাংলাদেশের ইভিএমে তিনটি অংশ আছে। এগুলো হলো কন্ট্রোল ইউনিট, ব্যালট ইউনিট ও ডিসপ্লে ইউনিট। ভোটারের নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করতে আঙুলের ছাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেতে ওই ভোটারের ছবিসহ যাবতীয় তথ্য চলে আসবে। ব্যাটারির মাধ্যমে ইভিএম চলবে। চার্জ থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। ইভিএমের সঙ্গে বাইরের কোনো ইন্টারনেট বা এ ধরনের কোনো সংযোগ থাকবে না। ফলে এটি হ্যাক করার কোনো সুযোগ নেই। প্রকল্প দলিলে বলা হয়েছে, ইভিএমের ওয়ারেন্টি ১০ বছর নিশ্চিত করতে হবে। 

ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, আগামী নভেম্বর মাস থেকে ১৬ লাখ ইভিএম কেনা শুরু করবে ভারতের নির্বাচন কমিশন। নতুন মডেলের ওই ইভিএমে কন্ট্রোল ইউনিট ও ব্যালট ইউনিট এই দুটি ইউনিট আছে। সর্বোচ্চ ৩৮৪ জন প্রার্থী থাকলেও এই ইভিএমে ভোট নেয়া সম্ভব হবে। একটি ইভিএমে সর্বোচ্চ দুই হাজার ভোট নেয়া যাবে। এই ইভিএম ব্যাটারিতে চলবে। ভারতের ইভিএমে ভোট দেয়ার কইে একটি স্বচ্ছ বাক্স থাকে। ভোটার ভোট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোন প্রার্থীকে ভোট দিলেন, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইভিএম থেকে একটি কাগজে ছাপা হয়ে স্বচ্ছ বাক্সে পড়বে। মূলত ভোটাধিকারের দলিল বা ব্যালট হিসেবে এটি কাজ করবে। কেউ চ্যালেঞ্জ করলে প্রমাণ হিসেবে এটি রাখা হয়। ভারতের নির্বাচন কমিশন এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে যেসব ইভিএম ব্যবহার করেছিল, সেগুলোর দাম ছিল ৮ হাজার ৬৭০ রুপি করে। 

ইভিএম প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দাম নির্ভর করে যন্ত্রাংশের মান ও ‘কনফিগারেশনের’ ওপর। তাঁরা সবচেয়ে মানসম্পন্ন ইভিএম তৈরি করছেন, যাতে ১০-১৫ বছর ব্যবহার করা যায়। ইভিএমের দাম বেশি পড়ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে ইভিএমের দাম প্রায় চার হাজার ডলার। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাঁরা তুলনা করে দেখেছেন, বাংলাদেশের ইভিএমের দাম তুলনামূলক কম পড়ছে। 

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে নতুন ইভিএম সরবরাহ করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। ইতিমধ্যে চীন ও হংকং থেকে ইভিএমের মূল যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আনার প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে বিএমটিএফ। সাধারণ ঋণপত্র খুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। তবে আমদানির প্রক্রিয়া ভিন্ন বলে ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ইভিএম আমদানির জন্য এ েেত্র বিশেষ অনুমোদন দিতে হয়েছে। 

এর আগে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন বাংলাদেশে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করে। ওই ইভিএম তৈরি করেছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। বুয়েটের তৈরি ইভিএমে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন পুরোপুরি ইভিএমে হয়েছিল। ওই ইভিএমে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করার ব্যবস্থা ছিল না। ভিভিপিএটি সুবিধাও ছিল না। 

ওই ইভিএম তৈরির নেতৃত্বে ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবির। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য বুয়েট ১ হাজার ১০০টি ইভিএম তৈরি করেছিল। প্রতিটি ইভিএমের খরচ পড়েছিল ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। বৃহৎ আকারে উৎপাদনে গেলে খরচ আরও কমে যেত। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে ভোটার পরিচয় নিশ্চিত করা, ভিভিপিএটি সুবিধা যুক্ত করে ৪০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে ইভিএম তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, বৈশিষ্ট্যের কারণে ইভিএমের দামের তুলনা করা কঠিন। কিন্তু প্রতিটি ইভিএমের দাম ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ধরা হলে তা অস্বাভাবিকই। 

এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম বলেন, কারিগরি কমিটি পেপার ট্রেইলের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু উপকমিটি দেখেছে, পেপার ট্রেইল যুক্ত করে অনেকে ঝামেলায় পড়েছে। ভারতে ১৫-১৮ শতাংশ কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করতে হয়েছে পেপার ট্রেইলে সমস্যার কারণে। পেপার ট্রেইল মূলত ভোটারের মানসিক শান্তির জন্য যুক্ত করা হয়। এই ইভিএমে ভোটার যে মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য ঠিক করবেন, সে মার্কা স্ক্রিনজুড়ে বড় হয়ে ভেসে উঠবে। এটি ইলেকট্রনিক্যালি করা হয়েছে পেপারে না যাওয়ার জন্য। 

জানতে চাইলে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, কারিগরি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ইভিএম প্রস্তুত করা হয়েছে এই বক্তব্য আংশিক সত্য। তিনি কমিটির দুটি বৈঠকে অংশ নেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, মেশিন ঠিক আছে। কিন্তু মেশিনের সঙ্গে ভিভিপিএটি যুক্ত করতে হবে। ভিভিপিএটি ছাড়া মেশিন গ্রহণযোগ্য হবে না। 

জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে কারিগরি কমিটিকে জিজ্ঞাসা না করে ইসি সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। একটি সাব-কমিটি বৈঠক করে কারিগরি কমিটির ওই সুপারিশ বাদ দিয়েছে। সুতরাং এখানে আমার নাম ব্যবহার করা ইসির ঠিক হচ্ছে না।
  • কার্টসিঃ দিনকাল/ ১৭অক্টোবর ২০১৮

Shrinking farm land

Editorial

All is not well in the agricultural sector. In sync with continuous decline in its contribution to the gross domestic product (GDP), per capita farm land holding has been shrinking for the last few decades. The rate of reduction in per-capita farm holding has got pace in recent years. The statistics might appear rather disturbing to many if the same are examined in the context of food and nutrition security of an ever-increasing population.

The state of per capita farm landholding and agricultural labourers has been depicted in a presentation made by the head of one of the country's leading farm research bodies at the Economic Relations Division. According to the presentation, the average per capita farm landholding, which was 1.7 hectares in 1960s, has now reduced to 0.10 hectares. Country's population is projected to reach 215 million in 2050. One can figure out well the overall land-man ratio with such a large population in place. 

But despite continuous shrinking of farm land -- an estimated 1.0 per cent arable land is lost every year to housing and other physical infrastructural facilities for a rising population-the country has made notable achievements in cereal, vegetables and fruit production. Bangladesh is now near self-sufficient in food as production of cereals has increased more than threefold over the last four decades. (The claim some quarters make about self-sufficiency in food is apparently exaggerated.  Note the near-crisis situation in the event of even a partial loss of a major rice crop.)   

There is no denying that per acre yield of rice, in particular, has gone up substantially with greater adoption of modern farm technology. But that has not been without a cost. As a natural consequence of expansion of rice crop acreage, particularly during the Rabi season, areas under some other crops have shrunk and the country is now largely dependent on their import. However, such a development is considered inevitable in land-scarce Bangladesh. Yet, adoption of modern farm technology here has not been to the fullest extent. There are flaws in the use of improved agricultural inputs; and farm mechanisation is progressing slowly.

In the present scenario, Bangladesh is left with one option, i.e., increased cropping intensity - to raise its farm-level productivity. The cropping intensity is now estimated at around 127 per cent. But the intensity varies from one area to another because of a number of factors, including locations of land and climatic conditions. Yet the cropping intensity, according to experts, can be increased further in many areas to offset the impact of loss of farm land. But while doing so, there is a need to exercise caution.

Soil fertility comes under threat when the cropping intensity is raised rather imprudently. It is thus important to give the cropping areas some rest and maintain nutritional balance and other natural properties of soil, among others. The task is difficult and it may be even more difficult in the future with changing circumstances. The policymakers would have to devise best and balanced ways to compensate for the loss of production due to the shrinking of farm land. 

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 18, 2018

ব্যাংক লুটেরা চক্রকে ধরা হচ্ছে না


একের পর এক অনিয়ম ও লুটপাটে পরিণত হচ্ছে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক। এসব লুটপাটের পরও অধরাই রয়ে গেছে ব্যাংক লুটেরা চক্র। ফলে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে বেশ ভালোভাবেই জীবনযাপন করছেন অপরাধীরা। 

গত কয়েক বছরে সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের পর এবার হরিলুট ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বেসিক ব্যাংক। সরকারি এই ব্যাংকটি থেকে ঋণ বিতরণের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি দুর্নীতিবাজ চক্র। অন্যান্য ব্যাংকের মতো অনিয়মের খবর প্রকাশের পর বেসিক ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা হয়।  

২০০৯-১৩ সাল পর্যন্ত লাগামহীন লুটপাট, জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত দেড় শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলাও করে দুদক। ঘাটতি মেটাতে মূলধন সরবরাহ করে সরকার। তবে দুর্নীতিতে মুখ থুবড়ে পড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বরং এখনো অব্যাহত রয়েছে হরিলুট কান্ড। ফলে বারবার মূলধন সরবরাহ করে সরকার ব্যাংকটিকে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। সঙ্গত কারণে সেই টাকা ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছে ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদসহ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকও। সূত্রমতে, বর্তমান সরকারের সময়ে লুটপাট হওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি মেটাতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা মূলধন দেয়া হয়েছে সরকারের প থেকে। 

২০০৯-১৩ সালের মধ্যে দুর্নীতিতে ডুবে যাওয়া ব্যাংকটিতে ফের ঘটেছে অনিয়ম, লুটপাট ও ঋণ কেলেঙ্কারি। ফলে জনতা, সোনালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য ব্যাংকগুলোর মতো বেসিক ব্যাংকটিও এখন ফতুর। অথচ সরকারি এই ব্যাংকটি লুটের মূলহোতা ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ সাবেক পর্ষদ এবং ব্যবসায়ী নামের ব্যাংক লুটের মাফিয়া চক্র অধরা থেকে বেশ ভালই আছেন। এর মধ্যে কেউ হয়েছেন পুরস্কৃত। কেউ পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা। কেউ আবার রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অর্থ পাচারের পর নিজেরাও দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। 

বেসিক ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েকজন কারাগারে থাকলেও দুদকের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। ফলে বেসিক ব্যাংক লুটেরাদের আদৌ শাস্তি হওয়া ও লুট হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকটি লুটপাটের পর ২০১৫ সালে গডফাদারদের কৌশলে আড়ালে রেখে ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর আদালতের নির্দেশে ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ পর্ষদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করলেও তা শেষ হয়নি। বরং চলতি বছরের জানুয়ারিতে সময় পার হয়ে গেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৮ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। আর ৬৮টি শাখার মধ্যে ২১টিই লোকসানে। অন্য সূত্র বলছে, ২০১৪ সালে প্রথমে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট ধরা পড়ার পর ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ ও চলতি ২০১৮ সালেও ঋণ কেলেঙ্কারি হয়েছে ব্যাংকটিতে। বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। অর্থাৎ কোনোভাবেই অনিয়ম, দুর্নীতির লাগাম টানা যাচ্ছে না সরকারি এই ব্যাংকটির। 

এদিকে দুর্নীতিতে ডুবন্ত বেসিক ব্যাংককে টেনে তোলার দায়িত্ব পাওয়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ আউয়াল খান ব্যর্থ হয়েছেন। গত ১৪ আগস্ট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এমডির পদত্যাগে ‘বিচলিত নন’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘এমডির পদত্যাগের কারণে বেসিক ব্যাংক নতুন করে কোনো সংকটে পড়বে না। পদত্যাগের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।’ 

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বেসিক ব্যাংকে ৮ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারি, দুর্নীতি ও হরিলুট হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর বিশাল অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে। তাছাড়া ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণদানের অন্তরালে তা লুটপাট হয়েছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নামের লুটেরাদের যোগসাজশে। ফলে সরকারের তথা জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা আর ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না সংশ্লিষ্টরা। 

এদিকে, বেসিক ব্যাংকের ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের স্থিতির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশদ পরিদর্শন শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। ১৯তম এ পরিদর্শন প্রতিবেদনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় ও ৬৮টি শাখার কার্যক্রমের সার-সংপে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান কার্যালয় ও ৫টি বড় শাখার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। ২০১৫ সালেও এরকম একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।  

প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নানা সমস্যায় থাকার পরও এককালীন পরিশোধের (ডাউন পেমেন্ট) শর্ত পরিপালন না করেই বড় অঙ্কের ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড বৃদ্ধি, জামানত গ্রহণ না করে ঋণ প্রদান, যাচাই ছাড়া এলসি খোলা এবং কৃষিঋণের সুদ হিসাবে অনিয়ম করেছে বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা। পর্ষদ পরিবর্তন হলেও নতুন করে ব্যাংকটির মূলধন পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে সরকার ৭৯০ কোটি ও ২০১৫ সালে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা মূলধন সরবরাহ করেছে। দুই বছরে সরকার ব্যাংকটিকে বাঁচিয়ে রাখতে ২ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা মূলধন দেয়। 

গত ডিসেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসিক ব্যাংকের মোট আমানত ছিল ১৫ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা, যা ১০ বছর আগে ছিল ১৪ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। তবে এ আমানতের ১৩ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা এসেছে মাত্র ১ হাজার ৪০১টি আমানত হিসাব থেকে। এসব হিসাবে ১ কোটি বা এর বেশি টাকা মেয়াদি আমানত হিসেবে রাখা হয়েছে। : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে সামগ্রিকভাবে ২০১৬ সালে ব্যাংকটির তির পরিমাণ ৪ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৪,৩১৯ কোটি টাকা ফেরত পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। এই টাকা লুট করা হয়েছে। 

১ বছরে মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। ২০১৬-এর ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা, যা ২০১৫-এর ডিসেম্বরে ছিল ৬ হাজার ৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে আটকে আছে ২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। 

সীমাহীন অনিয়ম করে কয়েক বছর ধরে সমালোচনায় থাকা বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও জালিয়াতিমূলক কর্মকান্ড থেমে নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-এর শেষের দিকে বেসিক ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা আমানত নিয়েছে। ব্যাংকের নিট সুদ আয় ঋণাত্মক হওয়া সত্ত্বেও বছরের শেষ দিকে এমনকি শেষ কার্যদিবসেও বিরূপ শর্তে অন্য ব্যাংক থেকে আমানত নিয়েছে বেসিক ব্যাংক। 
  • কার্টসিঃ দিনকাল/ ১৮ অক্টোবর ২০১৮

Concentration of economic activities in city hurting growth

Experts opine, focus on decentralisation


Excessive concentration of population and economic activities in Dhaka is impeding the growth of Bangladesh, experts cautioned at a seminar in the capital on Wednesday.

The country's suburban areas, including the district towns, are not creating any significant impact in supporting the economic density, suggesting major weakness in urban development, they opined.

Such observations came at a seminar titled "Bangladesh's Economic Geography: Some Patterns and Policy Issues". Leading economic think-tank Policy Research Institute of Bangladesh (PRI) organised the event.

"In Bangladesh, economic activities and urban population are excessively concentrated in Dhaka even by international standards," said PRI Director Dr. Ahmad Ahsan in his keynote presentation.

Currently, 31.9 percent of the country's total urban population lives in Dhaka, the largest city. But in China, only 3.1 percent of the total urban population lives in the country's largest city Shanghai, the PRI expert noted.

In India, the share of the largest city in total urban population is only 6.0 percent; in Indonesia, it is only 7.4 percent; in Pakistan, it is 22.6 percent; and in Vietnam, it is 22.6 percent, he added.

Such huge concentration in Dhaka city is affecting growth, urban development, non-agricultural job growth, and poverty reduction, the expert opined.

"Traffic congestion in Dhaka alone is estimated to cost about 2.5 percent of annual income or Gross Domestic Product (GDP). In addition, there are costs related to pollution, strain on water resources and utility constraints," Dr. Ahsan said.

The PRI researcher also noted that the district towns are having statistically insignificant effect on SSI and commercial density.

"And it matters, because economic density is linked to poverty reduction and expenditures through non-agricultural employment," he added.

The country's northern border belt of districts and upazillas, from Dinajpur in the north-west to Sunamganj in the northeast, is lagging behind in both consumption expenditure and economic activities, the PRI expert noted.

There are also pockets of backwardness in Chittagong Hill Tracts, Barisal islands and upazilla clusters in Khulna, he added.

Dr. Ahsan also observed that relative urban poverty levels are extremely high in Bangladesh by international standards.While rural poverty rates declined from 35.2 percent to 26.4 percent, urban poverty reduction has decelerated sharply, falling from 21.3 percent to 18.9 percent, he noted.

Reflecting on the situation, experts at the seminar called for greater decentralisation as well as for making the local government system more autonomous and powerful.

"Why is the local government system not working in Bangladesh? Because, the governance problem is really acute," said former advisor and bureaucrat Dr. Akbar Ali Khan, who attended the programme as the chief guest.

"In Bangladesh, land is the most precious thing. But, we are not protecting our nature and agricultural land. Rather, we are misusing and wasting these. The best way to prevent such practices is effective governance."

Dr. Khan also propagated the idea of 'compact village system' to make the optimum use of rural land in the country.

"In terms of decision-making, we are becoming more and more centralised," said former finance secretary Dr. Mohammad Tareque.

"But for effective decentralisation, we need to focus more and more on upazillas," he added.

"The question is why Bangladesh is not able to develop a third or fourth city," said Research Director of Bangladesh Institute of Development Studies (BIDS) Dr. Binayak Sen.

"Even the second city Chittagong is facing deterioration in terms of expenditure growth or poverty reduction," he noted.

Research Director of PRI Dr. M A Razzaque noted that around 70 percent of the country's GDP is generated from Dhaka and Chittagong.

"In terms of manufacturing, 87 percent of the country's total output is generated from these two cities; while in terms of export, the share of Dhaka and Chittagong would be even higher."

Former finance minister M Syeduzzaman in his speech noted that although, there has been talks about introducing district budget in the recent years, no effective steps have been taken to take the initiative forward.

Chairman of PRI Dr. Zaidi Sattar also spoke on the occasion.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 18, 2018

Record oil purchase pushes up imports

Siddique Islam

Bangladesh's imports grew by more than 6.0 per cent in the first two months of fiscal year 2018-19, after a record 105.07 per cent increase in oil, officials said.

The actual import in terms of settlement of letters of credit (LCs) rose to $ 8.52 billion during the July-August period of FY 19 from $ 8.04 billion in the same period of the previous fiscal, according to the central bank's latest statistics.

But opening of LCs, generally known as import orders, decreased by more than 1.0 per cent to $ 10.02 billion in the first two months of FY 19 from $ 10.13 billion in the same period of the previous fiscal.

"The overall import expenses increased mainly due to higher import of petroleum products during the period," a senior official of the Bangladesh Bank (BB) told the FE while explaining main reason for the rising trend in import payments.

Import of petroleum products rose to $ 791.68 million from $386.06 million.

The rising trend in fuel oil prices in the global market has pushed up the overall import payment obligations during the period under review, the central banker explained. Besides, oil-based power plants have also boosted the import of petroleum products, he added.

On the other hand, import of capital machinery or industrial equipment used for production came down to $ 787.08 million from $825.02 million.

The declining trend in capital machinery import may continue in the coming months ahead of the upcoming general election, according to the central banker. He also said most of the businessmen are now adopting a 'wait-and-see' policy for either setting up new industrial units or expanding their existing businesses.

However, import of intermediate goods, like coal, hard coke, clinker and scrap vessels, increased by 13.46 per cent to $711.13 million from $626.75 million.

Industrial raw material import also rose by 5.78 per cent to $ 3.11 billion during the period under review from $ 2.94 billion in the same period of the FY 18.

Talking to the FE, Mehmood Husain, managing director (MD) and chief executive officer (CEO) of NRB Bank Limited, said the existing trend in overall import may continue in the near future.

"Higher import of fuel oil may continue in the coming months because the rising trend in both prices and quantity persists," the senior banker noted.

On the other hand, the falling trend in the imports of consumer goods and food grains may continue in the near future, Mr. Husain added.

"Import of intermediate goods is expected to continue in the coming months for the implementation of different construction projects across the country," he noted.

However, food grain imports, particularly of rice and wheat, dropped by 27.88 per cent to $ 221.18 million from $ 306.67 million.

Import of consumer goods decreased by 18.70 per cent to $ 889.06 million during the period under review from $1.09 billion, the BB data showed.

  • Courtesy: The Financial Express/ Oct 18, 2018

কারাগারে থেকেই দুই পুরস্কার

সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখার জন্য সম্প্রতি লন্ডনের ফ্রন্টলাইন ক্লাব কর্তৃক ট্রিবিউট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত ৯ই অক্টোবর এ অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়। ১১ই অক্টোবর আলোকচিত্রী শহিদুলের পক্ষ থেকে পুরস্কারটি গ্রহণ করেন তার ভাগ্নি সোফিয়া করিম। তার বোন ড. কাজী নাজমা করিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এসময় শহিদুলের মুক্তির বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের কাছে আহ্বান জানান সোফিয়া করিম। ফ্রন্টলাইন ক্লাব সবসময় স্বাধীন ও নিরাপদ সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী। এছাড়া আলোকচিত্রের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লুসি ফাউন্ডেশন শহিদুলকে এ বছর ‘হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ ২০১৮-এর জন্য নির্বাচিত করেছে। আলোকচিত্রের ‘অস্কার’ বলা হয় এ পুরস্কারকে।

২৮শে অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে তার এ পুরস্কার গ্রহণ করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের আলোকচিত্রী, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা, দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় এশিয়া থেকে একমাত্র তিনিই ছিলেন জুরি বোর্ডের সভাপতি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি স্বজনরা কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। শহিদুল কারাগারে বই পড়ে সময় কাটান। কিছু দিন ধরে তার দাঁতের ব্যথা দেখা দিয়েছে। জেলখানার ভেতরে থাকা একটি সেফালি ফুলের গাছ থেকে অনেকগুলো ফুল কুড়িয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে তা স্বজনদের শুভেচ্ছা হিসেবে দিয়েছেন তিনি। তার দেয়া সেফালি ফুলগুলো ইতিমধ্যে টুইটার ও ইন্সটাগ্রামে স্থান করে নিয়েছে। অনেকেই তার সেফালি ফুলের ছবি দিয়ে টুইট করে লিখেছেন, ‘লাভ ফ্রম আওয়ার প্রিজনার অব শহিদুল আলম’। 

শহিদুল আলমের জন্ম ঢাকায় ১৯৫৫ সালে। তার বাবার নাম ডা. কাজী আবুল মনসুর এবং মায়ের নাম কাজী আনোয়ারা মনসুর। তারা দুই ভাই-বোন। নাজমা করিম ও শহিদুল আলম। তিনি রসায়ন নিয়ে লেখাপড়া করেন। পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জৈব রসায়নে পিএইচডি করেন। ১৯৮৯ সালে দৃক ফটো গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করেন শহিদুল আলম। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দক্ষিণ এশিয়ার ফটোগ্রাফি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠশালা। তিনি ছবি মেলারও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নেদার?ল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ডপ্রেস ফটো প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম এশীয় হিসেবে তিনি এ সম্মান অর্জন করেন। ‘যেই যুদ্ধ আমরা ভুলে গেছি।’ তার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও গণহত্যা নিয়ে সবচেয়ে সফল চিত্রপ্রদর্শনীর একটি। ১৯৮৩ সালে তিনি হার্ভে হ্যারিস ট্রফি জেতেন। ১৯৯৩ সালে তথ্যচিত্রের জন্য জিতে নেন মাদার জোন্স পদক। ‘৯৮-এ তিনি আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক ফাউন্ডেশন ও হাওয়ার্ড চ্যাপনিক অ্যাওয়ার্ডস লাভ করেন। ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক ও ২০১৭ সালে চীনের ডালি ইন্টারন্যাশনাল চিত্রপ্রদর্শনীতে আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। 

সূত্র জানায়, ড. শহিদুলের বাবা ডা. কাজী আবুল মনসুর ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক ও অণুজীব বিজ্ঞানী। তিনিই মনসুর’স ডায়েট বা ওরস্যালাইনের অন্যতম আবিষ্কারক। মনসুর’স মিডিয়া তার নামেই নামকরণ করা হয়েছে। যেটা দিয়ে ওলাওঠা বা কলেরার ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু চিহ্নিত করা যায় এবং বিশ্বব্যাপী এটা মনসুর’স মিডিয়া নামেই পরিচিত। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের ‘সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার’ হিসেবে পরিচিত ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করা হয় তাকে। একই বছর শহিদুলের চাচাতো ভাই কাজী সালাহউদ্দীন (বর্তমানে বাফুফে সভাপতি) ক্রীড়াক্ষেত্রে স্বাধীনতা পুরস্কার পান। একই পরিবারের দুজন একই বছরে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। শহিদুলের মা ড. কাজী আনোয়ারা মনসুর ছিলেন অগ্রণী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। ছিলেন আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েরও প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন। নারী শিক্ষায় পেয়েছেন রোকেয়া পদক। ১৯৯৯ সালে তাকে রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গুজব ছড়ানো ও উস্কানি দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। এরপর থেকে তিনি কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। 

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ১৮ অক্টোবর ২০১৮