Search

Wednesday, October 24, 2018

US$ price in local kerb market goes up

Siddique Islam

Exchange rate of cash US dollar against the local currency in the banking channel and also in the open market, known as kerb market, has increased by around Tk 1.0 in a week, traders said. The US currency rate reached Tk 86.70 on Tuesday, as the demand for the greenback has gone up lately. It was Tk 85.70-85.80 last week, they added.

Cash US dollar was quoted at rates ranging between Tk 84.50 and Tk 86.80 each by some banks on the day, according to the central bank's latest monitoring report.

"The demand-supply mismatch of the US dollar in the market is the main cause behind the rising trend of cash dollar rates," a senior currency trader told the FE.

He also said cash dollar is mainly used for medical treatment, education and business purposes.

"Tourists also buy cash dollar in an increased amount ahead of the long vacations like Eid etc," the trader added.

Some senior bankers feared that the country's remittance inflow through formal channel may be affected in the near future, if the ongoing upward trend of cash US dollar exchange rate continues in the market.

Currently, there is a gap of nearly Tk 4.0 between the exchange rate of cash dollar and telegraphic transfer (TT) clean rate for remitters.

The banks offered an average rate of Tk 82. 87 to the remitters for TT on Tuesday, according to the daily report of Bangladesh Foreign Exchange Dealers' Association (BAFEDA).

"The inward remittance flow may switch to informal channels from official ones, if the gap continues over long-term," a senior official of a leading private commercial bank (PCB) told the FE.

He also urged the policy-makers for taking effective measures to minimise the gap between the two rates for ensuring the existing upward trend in inward remittance flow in the coming months.

The central bank has already strengthened its monitoring and supervision to bring down the exchange rate of cash US dollar at a reasonable level.

"We've been informed about the high rate of cash dollar in the market," a senior official of Bangladesh Bank (BB) told the FE.

He also said BB may consider import of cash US dollar to meet the growing demand for the greenback in the market.

Sources, however, said the rate of cash US dollar normally increases in the market when illegal transactions like smuggling and under-invoicing go up.

The existing exchange rate of cash dollar in the open market indicates that some developments like those are taking place in the shady economy ahead of the general election, they opined.

The greenback was traded in the open market in the capital at prices between Tk 86.50 and Tk 86.70 on the day, according to the traders.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 24, 2018

‘Nagad’ postal MFS upsets private operators

Uneven competition, rise in financial crimes feared

Mehdi Musharraf Bhuiyan

The recent introduction of a digital financial service scheme by Bangladesh Post Office (BPO) has raised concerns among relevant parties and industry insiders. The Bangladesh Post Office early this week introduced its own digital financial service called 'Nagad' on a test basis to reach out to the unbanked population of the country.

But the new service, with its increased transactions limit, may create uneven competition in the market while increasing the scope for money laundering and terrorist financing, insiders fear.

Under the planned scheme, a customer of Nagad will be able to cash in or cash out Tk. 50,000 in a single transaction and maximum Tk. 250,000 via 10 transactions per day.

This comes at odd with other mobile financial service providers in the market, who, as per the mobile financial services (MFS) regulations, can cash in a maximum of Tk. 15,000 via two transactions and cash out a maximum of Tk. 10,000 via same number of transactions a day.

The reason behind this discrimination, however, is that all other MFS operators, which are regulated by Bangladesh Bank, is bound by the transaction limit set by the central bank.

BPO officials say Nagad, being a product of Bangladesh Post Office, will be regulated under the "Bangladesh Postal Act Amendment 2010" and will not come under the purview of these MFS regulations.

Insiders, however, cautioned that the forthcoming service, which does not fall under the purview of the central bank's monitoring and supervision, is prone to be used as a platform of extortion, money laundering, terrorist financing and illegal hundi business due to the lack of regulatory monitoring and oversight.

Post Office said with its long-drawn experience in handling financial transactions, it is well-equipped to tackle any misuse that may arise from Nagad.

"We've been providing financial transaction services like money order for more than a century without any major instance of financial crimes," said director general of Bangladesh Post Office Sushanta Kumar Mandal.

Unlike the MFS regulations 2018, the Post Office does not have any clear regulatory guideline on how to monitor and supervise the transactions of a digital platform, as such risking a variety of misuse of the system, they also pointed out.

In August, BPO sought formal approval from Bangladesh Bank to operationalise its digital payment platform.

However, their application was later rejected by the central bank. Consequently, BPO decided to go on its own as per its relevant act.

"We did not give our approval for Nagad. However, if it is found that there are loopholes in this system, the authorities will act accordingly," said Md. Serajul Islam, executive director of Bangladesh Bank.

Industry insiders warned that Nagad's apparent advantage in terms of transaction limit might create uneven competition and distort the level-playing field in the MFS market.

For the last eight years, Bangladesh Bank, different government agencies and service providers have been working diligently on bringing discipline and order in the mobile financial service industry, said Shamsuddin Haider Dalim, Head of  Corporate Communications of bKash, the leading MFS provider of the country.

"It requires an even-playing field for a healthy competition …," he added.

"The system has not fully gone into operations yet. But the authorities need to scrutinise thoroughly whether it has a strong risk mitigation plan before it launches full-scale operations," said a high official of Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU), preferring anonymity.

"Central bank is the regulatory body of all payment system in a country," said former Bangladesh Bank governor Dr. Atiur Rahman, when asked on the issue.

"Therefore, no payment system should be introduced in the country without the approval of Bangladesh Bank," he told the FE.

Bangladesh has seen a proliferation of mobile financial services in recent years mainly due to limited banking presence in rural areas.

The present number of registered clients of mobile financial services is roughly 64.7 million, served by 18 banks, the BB data shows.

A total of 195,343,990 transactions took place through MFS platforms in August alone and the total value of transactions was Tk. 343.99 billion.

  • Courtesy: The Financial Express /Oct 24, 2018

রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল কি অপরাধ - ড. কামাল


সিলেটে আজ ২৪ অক্টোবর দুপুর ২ টায় সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

ড. কামাল গতকাল থেকে সিলেটে অবস্থান করছেন। ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রায় সবাই ইতোমধ্যে সিলেটে এসে পৌঁছেছেন। সমাবেশের আগে সিলেটের পরিস্থিতি কেমন দেখছেন, এ প্রশ্নের উত্তরে টেলিফোনে ড. কামাল হোসেন বলেন, “এ বিষয়টি জানতেই সকাল থেকে গণফোরামের নেতাদের সঙ্গে বসেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, কয়েক জায়গায় কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কথা হচ্ছে যে, রাষ্ট্র তো সংবিধান অনুযায়ী পরিচালনা হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের অপরাধ কি? রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিল ও প্রচার কি অপরাধ?”

তিনি আরও বলেন, “কেউ সংবিধান মানছে না। কিন্তু, সংবিধানের ব্যাপারে আমাদের সবার শ্রদ্ধা থাকা উচিত। পুলিশ যদি বলেও যে, উপর মহলের আদেশেই এসব গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রেও তা আইনসম্মত হতে হবে।”

ড. কামাল আরও বলেন, “আমরা সিলেটে সরকারের সমালোচনা করার জন্য আসিনি। গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কেনো দরকার, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য এসেছি। দেশের সকল নাগরিক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্যও এসব জানা প্রয়োজন। সরকার যদি এসব চর্চা না করে, তাহলে তাদেরই বিপদ।”
  • Courtesy: The Daily Star /Bangla /Oct 24, 2018

আইন সবার জন্য সমান হবে না কেন?

সম্পাদকীয়

ফৌজদারি মামলা

সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে সরকার তথা ওই কর্মচারীর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে—এ রকম বিধান রেখে গত রোববার ‘সরকারি চাকরি বিল ২০১৮’ শীর্ষক যে বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে, আমরা মনে করি তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। কেননা, সংবিধানের ২৯(৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবেন না, কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।’ অন্যদিকে সমাজের অনগ্রসর অংশের ক্ষেত্রে যে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা সংবিধানে আছে, তা কোনোভাবে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। তাঁরা সমাজের অনগ্রসর অংশ নন। এ আইনটি কার্যকর হলে দুর্নীতি দমন কমিশন শুধু নখদন্তহীন বাঘেই পরিণত হবে না, এ-সংক্রান্ত আইনগুলোও সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়বে।

তবে এই বিলে সরকারি কর্মচারীদের মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিয়োগ এবং সেবাপ্রার্থীদের সেবাদানে সরকারি কর্মচারীরা ব্যর্থ হলে যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে তাদের জবাবদিহির যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি সমর্থনযোগ্য বলে মনে করি।

উল্লিখিত বিলটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারী যেই সুবিধা পাবেন, বাইরের কোনো ব্যক্তি এমনকি জনপ্রতিনিধিও সেই সুযোগ পাবেন না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাইলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এর মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের একধরনের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা শুধু বৈষম্যপূর্ণ নয়, সংবিধানের মৌলিক চেতনারও বিরোধী।

উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী দুদক অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়েও যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে। ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ৫ ধারায়ও এ বিধান বলবৎ রাখা হয়েছিল। স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, এত দিন পর সেটি পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ল কেন?

প্রস্তাবিত বিলটি কার্যকর হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে যদি হাতেনাতে ধরে ফেলে, তারপরও তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের এই ছাড় দেওয়ার কোনো যুক্তি আছে বলে মনে করি না। কেননা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সরকারি কর্মচারী বা অকর্মচারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযুক্ত হিসেবে। অন্যান্য অভিযুক্ত যেমন আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করবেন, সরকারি কর্মচারীদের জন্য সেই সুযোগ থাকবে। এখানে বিচারের আগেই কেউ দায়মুক্তি পেতে পারেন না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যখন আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে, তখন আমরাও এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, ‘কোনো কর্মচারী ফৌজদারি অপরাধের কারণে দণ্ডিত হলে রাষ্ট্রপতি যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ও চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অপসারণকৃত ব্যক্তিকে অনুরূপ বরখাস্ত বা অপসারণ থেকে অব্যাহতি প্রদানের বিশেষ কারণ বা পরিস্থিতি রয়েছে, তাহলে তিনি ওই ব্যক্তিকে ওই শাস্তি থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে ওই কর্মচারী পুনরায় চাকরিতে বহাল হবেন।’ এর মাধ্যমে কেবল অভিযুক্ত কর্মচারীই নন, দণ্ডিত সরকারি কর্মচারীও দায়মুক্তি পাবেন, যা আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। যে আইন সবাইকে সমান সুযোগ দেয় না, সেই আইন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের প্রথম সমাবেশ আজ

  • সমাবেশ সফল করতে ঐক্যফ্রন্টের প্রচারপত্র বিলি
  • সমাবেশে সাধারণ মানুষের ঢল নামবে বলে আশা
  • ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা সিলেটে 



নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজ বুধবার প্রথম সমাবেশ করছে সিলেটে। বেলা দুইটায় নগরের তালতলার রেজিস্টারি মাঠের এ সমাবেশে যোগ দিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা সিলেটে পৌঁছেছেন।

এদিকে রাতে জেলা বিএনপির সভাপতির বাসায় প্রস্তুতি সভা করে বের হওয়ার পর নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া শাহজালাল উপশহরের একটি হোটেলের সামনে থেকে বিএনপির আটজন কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

আজকের সমাবেশ সফল করতে গতকাল সকালে ও দুপুরে নগরে ঐক্যফ্রন্টের প্রচারপত্র বিলি করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির নেতারা। আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাবেশে অংশ নিতে কোনো ধরনের বাধা না দিলে দলীয় কর্মী–সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষের ঢল নামবে বলে আশা করছি।’

গতকাল বিকেলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে সিলেটে পৌঁছান গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকতউল্লা বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশ। এটা জনগণের দাবি, জনগণ সমর্থন এসেই দিয়ে যাবে। দাবি আদায়ে পরবর্তী কর্মসূচি বুধবারের সমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হবে।’

ড. কামাল হোসেন এশার নামাজের পর হজরত শাহজালাল (রহ.)–এর মাজার জিয়ারত করেন। তাঁর সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা ছিলেন।

রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী বলেন, তাঁর সোবহানীঘাটের বাসায় নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি সভা করছিলেন। পুলিশ বাসা ঘিরে রাখে। রাত পৌনে নয়টার দিকে ওই বাসা থেকে বের হলে শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে পুলিশ গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। প্রায় একই সময়ে শাহজালাল উপশহরের একটি হোটেলের সামনে থেকে আটজনকে আটক করে পুলিশ।

শাহরিয়ারকে পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় নগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি অসুস্থ, তাই নিয়ে যাচ্ছি।’

প্রচারপত্র বিলি করতে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ 

আজ বেলা ১১টায় কোর্ট পয়েন্ট থেকে নগর আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র বিলি করবে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেজিস্টারি মাঠ ও কোর্ট পয়েন্ট পাশাপাশি হলেও ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ শুরু হবে বেলা দুইটায়। আর আমরা প্রচারপত্র বিলি করতে মাঠে থাকব বেলা ১১টা থেকে। তাঁদের সমাবেশ শুরুর আগেই আমাদের কর্মসূচি শেষ হবে বলে কোনো ধরনের দ্বন্দ্বের অবকাশ নেই।’

চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি মেলেনি 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান, চট্টগ্রামে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার জন্য লালদীঘি মাঠ ব্যবহারের অনুমতি গতকালও পায়নি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। গতকাল ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা–কর্মী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অনুমতির বিষয়ে আলোচনা করেন।

রাজশাহীর সমাবেশ পেছাতে পারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী জানান, আগামী ২ নভেম্বর রাজশাহীতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি গতকাল বলেন, লিয়াজোঁ কমিটি সমাবেশের জন্য রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠের কথা প্রস্তাব করেছে। তবে ১ থেকে ৩ নভেম্বর ওই মাঠে ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে সমাবেশ পেছানোর সম্ভাবনা বেশি। সমাবেশের সম্ভাব্য তারিখ ৬ নভেম্বর হতে পারে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

চার–চারটি লাশ! পুলিশের তেমন মাথাব্যথা নেই

গোলাম মর্তুজা ও মজিবুল হক

  • চারজনের কারও বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকার তথ্য পুলিশ জানাতে পারেনি
  • নিহত চারজনের ব্যাপারে পুলিশ এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই বলছে না
  • হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অনুসন্ধানের আগ্রহ কম পুলিশের 
  • সূত্র বলছে, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, চার ব্যক্তি ক্রসফায়ারের শিকার


ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন পুরিন্দা গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কাপড় তৈরি ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় সবাই নিজের বাড়িতে থাকেন। শুধু ১১ অক্টোবর ওই গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় আয়নাল হাজির বাড়ির দোতলায় ভাড়াটে হিসেবে ওঠে একটি পরিবার। পরিবারটির কর্তা ফারুক হোসেন নিজেকে ‘নাইট কোচে’র চালক বলে পরিচয় দেন। 

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষের সামনেই ফারুক হোসেনসহ চারজনকে চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে ধরে নিয়ে যায় একদল লোক। ‘আপনারা কারা, কেন ওদের নিয়ে যাচ্ছেন’—উৎসাহী কেউ কেউ এ রকম প্রশ্ন করে ধমক খেয়েছেন। ওই লোকগুলো নিজেদের ‘আইনের লোক’ ও ‘ডিবি’র লোক বলে পরিচয় দেন।

ওই বাসা থেকে সেদিন ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ফারুক, সবুজ সরদার, জহিরুল ও লিটন নামের চারজনকে। দুদিন পরে গ্রামের মানুষ দুই কিলোমিটার দূরে রাস্তার ধারে চারজনের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পান। চার লাশের মধ্যে তিনজনকে পুরিন্দা থেকে ধরে নেওয়া হয়। আর সেখানে পাওয়া আরেকটি লাশ ঢাকার মাইক্রোবাস চালক লুৎফর রহমান মোল্লার। ফারুকের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া লিটনের এখনো কোনো খোঁজ নেই।

নিহত চারজনের ব্যাপারে পুলিশ এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই বলছে না। কীভাবে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন, কারা খুন করল, এ ব্যাপারে অনুসন্ধানের আগ্রহও কম পুলিশের। তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র বলছে, পুরো পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, চার ব্যক্তি ‘ক্রসফায়ার’এর শিকার। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, এরা মহাসড়কে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে চারজনের কারও বিরুদ্ধে থানায় মামলা থাকার তথ্য পুলিশ জানাতে পারেনি।

পুলিশের বিরুদ্ধে ধরে নিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠলেও, তা ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, নিহতের পরিবার মিথ্যা অভিযোগ করছে। ডিবি পুলিশ সেখানো কোনো অভিযান চালায়নি। তাদের আটকও করা হয়নি।

ফারুক যে বাড়িতে ভাড়া ছিলেন তার ঠিক সামনেই পুরিন্দা পশ্চিমপাড়া আহলে হাদিস মসজিদ। মাগরিবের নামাজ পড়তে শুক্রবার বিকেলে মসজিদে আসা মুসল্লিদের অনেকেই দেখেছেন গেঞ্জি-প্যান্ট পরা একদল লোক বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। আর ৩০ গজ দূরে মহাসড়কের ওপর একটি নোয়া মাইক্রোবাসসহ একাধিক গাড়ি দাঁড়ানো। কিছুক্ষণ পরই ওই বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে চারজনকে ধরে নেওয়া হয়। দুজনকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। অন্য দুজনের হাত খোলা ছিল।

যে বাড়ি থেকে চারজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে, সেই বাড়িটি এখন তালাবদ্ধ। গতকাল সকালে দেখা গেল, কয়েকটি শিশু সেখানে খেলছে। বাড়ির লোক কোথায় জিজ্ঞেস করতেই এক শিশু বলল, ‘পুলিশে ধইরা নিয়া মাইরা ফালাইছে।’

পুরিন্দা পশ্চিমপাড়া মসজিদের পাশেই কাজল মিয়ার মুদির দোকান। তিনি বলেন, সেদিন মাগরিবের নামাজের আগেই গ্রামের নতুন ভাড়াটে ফারুক এসে তাঁর দোকান থেকে লবন কিনে নিয়ে যান। কাজলের দোকানে ফারুকের বিষয়ে কথা বলত বলতেই জড়ো হন বেশ কয়েকজন। তাঁদের একজন আবু সাঈদ বলেন, এই গ্রামে মানুষ ঘর ভাড়া দেয় না। আয়নাল হাজীর পরিবার নরসিংদীর মাধবদীতে থাকে। তাঁর বাড়িতে ১২ দিন আগে ভাড়ায় ওঠে একটি পরিবার। সাঈদের সঙ্গে একদিন ফারুকের দেখাও হয়েছিল। তখন ফারুক বলেছিলেন, তিনি ঢাকা-কক্সবাজার পথে বাস চালান, বেশির ভাগ সময়ই রাতে কাজে যেতে হয়। প্রতিবেশী হিসেবে সাঈদকে কক্সবাজার নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ফারুক।

ওই বাড়ির পাশের বাড়ির বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় ধরে নেওয়ার খবর শুনে তিনি গিয়ে দেখেন ফারুকের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছেন। মুঠোফোনে অন্যদের নিজের স্বামীর ছবি দেখাচ্ছেন। গ্রামবাসীর সামনে ধরে নেওয়া হলেও কেউ আইনি ঝামেলায় জড়াতে চান না বলে ভয়ে এগোননি। এরপর রোববার তাঁরা জানতে পারেন তিন কিলোমিটার দূরে পাঁচরুখী এলাকায় যে চারটি লাশ পাওয়া গেছে, তাদের মধ্যে তিনজনকে এই বাড়ি থেকে ধরে নেওয়া হয়।

এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাঁচরুখী বলে যে স্থানে চারজনের লাশ পাওয়া যায় তার দুপাশে পুলিশের দুটি তল্লাশি চৌকি (চেকপোস্ট) ছিল। লাশ পাওয়ার স্থান থেকে নরসিংদীমুখী সড়কে আধা কিলোমিটার গেলেই ছনপাড়া স্থায়ী তল্লাশি চৌকি। আর ঘটনাস্থল থেকে ঢাকামুখী সড়কে এক কিলোমিটার গেলেই আদুরিয়া তল্লাশি চৌকি। দুই তল্লাশি চৌকির মাঝামাঝি জায়গায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

পাঁচরুখী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ছোলা-পুরির দোকান করেন রিয়াজউদ্দীন। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন ফজরের নামাজের আগে অনেকেই পরপর আট–নয়টি গুলির শব্দ শুনেছেন। তবে মহাসড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় অনেক রকম শব্দ পাওয়া যায় বলে এ নিয়ে কেউ বিশেষ মাথা ঘামায়নি। সকালে উঠে তাঁরা লাশ পাওয়ার খবর শোনেন।

ফারুকের মৃত্যুর পর স্ত্রী তাসলিমা বেগম এক বছরের ছেলেকে নিয়ে বোনের বাসায় গিয়ে উঠেছেন। গতকাল তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, লাশের পাশ থেকে পুলিশ যে নোয়া মাইক্রোবাসটি উদ্ধার দেখিয়েছে, সেটিতে করেই শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাসলিমা বলেন, তিনি লিখতে-পড়তে জানেন না বলে গাড়ির নম্বর পড়তে পারেননি। তবে রঙ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট দেখে তিনি এই গাড়িটিকে শনাক্ত করতে পেরেছেন। গতকালও তিনি বলেন, ‘রাইতে আমি খাওন দিয়া আইলাম, পুলিশে কইলো সকালে কোর্টে চালান দিবো। এই জন্য সকাল ৭টা বাজে গিয়া দেখি হ্যারা ফাঁড়িতে নাই। তয় ফাঁড়িতে হ্যার ভাগিনা লিটন তহনও আছিল। লিটনে কইছে রাইত তিনটা বাজে হ্যাগো ধইরা নিয়া পুলিশে কইছে “চল তগো চালান দিবো”। এই কথা শুইনা আমি চিক্কুর পাইড়া কানছি। ফাঁড়িতে কোন পুলিশের সঙ্গে তাসলিমার কথা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এতো কইতাম পারি না, তয় এক স্যারের নাম নূর আলম বইলা হেইখানকার একজনে কইছে।’

ভুলতা পুলিশ ফাঁড়িতে নূর আলম নামের কোনো কর্মকর্তা নেই বলে জানা গেল। তবে জেলার অন্য ইউনিটে এই নামে কর্মকর্তা রয়েছেন। এদিকে গুলিবিদ্ধ চারজনের লাশ সোমবার রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়াটি অস্ত্রটি পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

শ্রমিক অসন্তোষ

সম্পাদকীয়

বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করুন


বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে মাঝেমধ্যেই যে বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষের অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে থাকে, সে জন্য শ্রমিকদের কোনোভাবে দায়ী করা যায় না। কেননা বেতন–ভাতা বা সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে তাঁরা কাজ বন্ধ করেননি, বরং কাজ করার পরও মজুরি আটকে দিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে। এ ধরনের পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভরত পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে ১২ পুলিশ সদস্যসহ আহত হন অর্ধশতাধিক শ্রমিক। সংঘর্ষের সময় ইপিজেডের সামনে শিমরাইল-নারায়ণগঞ্জ সড়কে ভাঙচুর হয়েছে অর্ধশতাধিক যানবাহন; আগুন দেওয়া হয়েছে একটি কাভার্ড ভ্যানে। পরে মালিকপক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। মালিকপক্ষ ১৫ নভেম্বরের মধ্যে বেতন–ভাতা পরিশোধ করার আশ্বাস দিয়েছে।

অন্যদিকে অন্তিম নিটিং ডাইং অ্যান্ড ফিনিশিং ও অন্তিম নিট কম্পোজিটের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মঙ্গলবার সকালে দুই ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে মহাসড়কের ১৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন। প্রতি মাসের ১০ তারিখে মজুরি দেওয়ার কথা থাকলেও ওই কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিক গত মাসের মজুরি পাননি। মালিকপক্ষ তাঁদের মজুরি না দিয়ে গত শনিবার ও রোববার কারখানার তিনটি সেকশন বন্ধ ঘোষণা করে।

দুটি স্থানেই মালিকপক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। সড়ক যোগাযোগও স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। কিন্তু এই স্বাভাবিক অবস্থা কতটা স্থায়ী হবে, তা নির্ভর করছে মালিকপক্ষের ওপর। তাঁরা ওয়াদা অনুযায়ী শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করে রাখলে কারখানা ঠিকমতো চলবে। ওয়াদা পালন না করলে নতুন করে হাঙ্গামা তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকেরা এখন পর্যন্ত পুরোনো মজুরিকাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাচ্ছেন। সরকার নতুন মজুরিকাঠামো ঘোষণা করলেও শ্রমিকেরা মেনে নেননি। তাঁদের দাবি ছিল ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১২ হাজার টাকা করার। বিশেষজ্ঞেরা শ্রমিকদের মজুরি ১০ হাজার টাকা হওয়া উচিত বলে অভিমত প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু মালিকপক্ষ কোনোভাবেই ৮ হাজার টাকার বেশি করতে রাজি হয়নি।

কিন্তু সেই পুরোনো কাঠামোর মজুরি নিয়েই যখন মালিকপক্ষ ধানাইপানাই করছে, তখন নতুন মজুরিকাঠামো বাস্তবায়ন কীভাবে আশা করা যায়? হতে পারে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ঠকানোর জন্যই বেতন–ভাতা বকেয়া রাখছে। কিন্তু এ ধরনের অপকৌশল যে মালিক, শ্রমিক কিংবা শিল্পের জন্য মঙ্গলজনক নয়, সে কথাও তাদের বুঝতে হবে। আমরা আশা করব, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন–ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করা হবে এবং নারায়ণগঞ্জ ইপিজেড, রূপগঞ্জসহ সব শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হতে ইসিতে আবেদন

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন গাজীপুরের কাজী আবুল হোসেন মাস্টার। একাদশ জাতীয় সংসদে গাজীপুর-৩ আসনের এমপি হতে চান তিনি। একই উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী ও সিইসির কাছে চিঠি লিখেছেন তিনি। চিঠিতে নিজেকে গাজীপুর সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি দাবি করেছেন আবুল হোসেন মাস্টার। চিঠির সঙ্গে নির্বাচনী ইশতেহারও যুক্ত করেছেন। এমপি হওয়ার আগ্রহের কারণ জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকেই তার শখ এমপি হবেন। তিনি জানতে পেরেছেন গতবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকেই এমপি হয়েছেন। তাই এবার ভোটের আগে তিনি প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

আবুল হোসেন জানান, গতকাল পর্যন্ত তার আবেদনের বিষয়ে কারও পক্ষ থেকে সাড়া পাননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলা যুবলীগের কোনো কমিটি নেই। জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। ১৭ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হওয়ার জন্য কি প্রয়োজন তা জানতে চেয়েছেন আবুল হোসেন। এর আগে ১৫ই অক্টোবরের চিঠিতে তিনি ব্যক্তিগত কাজে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চান। আর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন আবুল হোসেন। ওই আবেদনে তিনি লিখেছেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছেন সিইসি বরাবর আবেদন করলে এমপি হওয়া যাবে।

কাজী আবুল হোসেন মাস্টার নিজেকে গাজীপুরের জয়দেবপুরের মৃত আলহাজ মো. ইসলাম উদ্দিন কাজীর ছেলে বলে পরিচয় দিয়েছেন চিঠিতে। আবেদনের সঙ্গে নির্বাচনী ইশতেহারও যুক্ত করেছেন আবুল হোসেন মাস্টার। নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি লিখেছেন, পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে পরিবেশবান্ধব ও সেবামূলক কাজ করার মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করেছেন তিনি। বর্তমান কর্মপরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, শান্তি, যোগাযোগ অবকাঠামো প্রণয়ন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের কাজে নিজেকে উপস্থিত রাখেন তিনি। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে, দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা, স্বাধীন জীবন যাপন, কারিগরি শিক্ষা, উন্নত স্বাস্থ্য সেবা, খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত করা, সমাজের প্রতি দৃষ্টি রাখা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়া, যোগাযোগ ব্যবস্থা গতিশীল করা, বাণিজ্য ক্ষেত্রে ব্যাংকিং সহযোগিতা, শিল্পায়ন স্থাপন, বেকার সমস্যা দূর করাসহ আরো অনেক কিছু। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি গাজীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি হতে চান।

  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

মধ্যরাতে তরুণীর সঙ্গে পুলিশের অশোভন আচরণ ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ

মধ্যরাতে চেকপোস্টে তরুণীর সঙ্গে পুলিশের অশোভন আচরণের তদন্ত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা বিভাগ। তারা ওই  ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। পরে তদন্ত কর্মকর্তারা ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাকিব রাজ নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ৬ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে লিখেন, ‘দেখুন একটা অসভ্য মেয়ের কারসাজি। আজ রাত ২টায় (২২.১০.১৮) এই মেয়েটা পুলিশ চেকপোস্টে পুলিশ তাকে চেক করতে চাইলে সে পুলিশের সঙ্গে এই রকম ব্যবহার করে। সবাই প্লিজ শেয়ার করবেন।’ 

ভিডিওতে দেখা যায় চেকপোস্টে  সিএনজিতে বসা এক তরুণীর সঙ্গে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা অশোভন আচরণ করছেন। ভিডিওতে শোনা যায়, ‘বেয়াদব মেয়ে, বাসা থেকে আপনাকে ভালো শিক্ষা দেয় না।’ এসময় মেয়েটিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার চেহারায় লাইট মারতেছেন কেন।

লাইট ব্যাগে মারেন। ব্যাগ চেক করেন। আপনি আমার সঙ্গে এভাবে কথা বলছেন কেন। ফিল্ডিং মারেন মাইয়াগো দেখলে।’ তখন পুলিশ সদস্যদের বলতে শোনা যায় ‘আপনাকে দেখে যেন আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি, আপনি তো বিশ্ব সুন্দরী হয়ে গেছেন। আপনার সমস্যা কি। এটা আমাদের চেকপোস্ট।’ এসময় পুলিশ সদস্যরা তরুণীকে এডিকটেড, হোটেল থেকে নেমে আসছে। এতরাতে কেন, কোথায় যাচ্ছ বলতে শোনা যায়।’ গতকাল ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই তদন্তে নামে পুলিশের সাইবার ইউনিট। 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত উপ- কমিশনার নাজমুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, পুলিশের চেকপোস্টে গভীর রাতে এক ভদ্র মহিলার সঙ্গে কিছু পুলিশ সদস্যের ভিডিওসহ কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের নজরে আসে। পরে বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করি। তদন্তে আমরা ওই ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছি। ভদ্র মহিলার সঙ্গে পুলিশের এরকম আচরণের জন্য আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছি। তিনি বলেন, ঘটনার ভিডিও নজরে আসার পরপরই আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে একটি পেশাদারী সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে অনলাইনে পুলিশকে নিয়ে কোনো ঘৃণাবোধ না ছড়ানোর অনুরোধ করেছিলাম। আমরা আশ্বাস দিয়েছিলাম নিরপেক্ষ ও সঠিক অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা সেটা করেছি। কি ব্যবস্থা নেয়া হবে- এমন প্রশ্নে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা সুপারিশ করেছি। এখন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮

Courtesy: Manabziban Oct 24, 2018

এমন নির্বাচন হওয়া উচিত যাতে বৈধতার সংকট থেকে শাসনব্যবস্থা মুক্ত হয়

অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন দেখতে চায় দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এমনটাই মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন এমন হওয়া উচিত যাতে বৈধতার সংকট থেকে শাসন ব্যবস্থা মুক্ত হয়। তবে এখন নির্বাচন হবে কি-না এখানেও প্রকৃতপক্ষে অনেক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ওপরও এবার এক ধরনের চাপ রয়েছে।  

সরকারের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা কাজ করছে যে, পরিপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের ফলাফল কি হতে পারে? আওয়ামী লীগ যদি বিএনপিকে দুর্বল করার পরেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। এতে তাদের বিজয়টা আরো নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা এখনো সার্বিকভাবে নিজেদের সফল মনে করতে পারছে না। কারণ প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ওভাবে ভাঙা বা দুর্বল করা যায় নি। বরং উল্টো আমরা সম্প্রতি দেখেছি যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়েছে। আমাদের মতো দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে মূলত দুইটা শক্তি থাকে। একটি রাজনৈতিক শক্তি আরেকটি সামাজিক শক্তি। দুইটা মিলে রাজনৈতিক শক্তিটা আরো বেড়ে যায়। ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার ফলে মনে হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাটা একটু বেড়েছে।

সম্প্রতি ধানমন্ডির পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) কার্যালয়ে মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান, লেখক, গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক সংকটসহ নানা ইস্যুতে খোলামেলা আলোচনা করেন।

হোসেন জিল্লুর বলেন, বর্তমান সরকার আইনসম্মত নির্বাচিত সরকার। সেই অর্থে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন আছে। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের সমস্যা সাংবিধানিক বা আইনি সমস্যা নয়। ওটা ছিল একধরনের বৈধতার সংকট। অংশগ্রহণ অনেক কম ছিল। ১৫৩ জন বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়ে গেছেন। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনটা এমন হওয়া উচিত যাতে করে  বৈধতার সংকট থেকে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা ভালোভাবে মুক্ত হয়। সেই ধরনের একটি নির্বাচন হওয়া উচিত। যারা প্রতিযোগিতা করতে চায় তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে থেকে যেন প্রতিযোগিতা করতে পারে। আবার প্রতিযোগী যারা তাদের বিষয়ে বলতে চাই যে, নিছক ক্ষমতার পালাবদলের জন্য যেন নির্বাচনটা না হয়। ওই ধরনের প্রতিযোগীদের সামনে আশা উচিত যারা এটাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখবে। এবং বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত বিচ্যুতিগুলোকে পাশ কাটিয়ে সঠিক পথে যেন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারে।

ঐক্যফ্রন্ট গঠনের কারণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলাফল কোন্‌ দিকে যাবে সেটা অনেক পরের বিষয়। তবে ক্ষমতাসীন দল এই প্রতিযোগিতার বিষয় নিয়ে কতটুকু স্বস্তির মধ্যে থাকবে বা সাহস করে এগিয়ে যাবে এই অনিশ্চয়তা কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রতিযোগিতামূলক একটি আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন ইস্যুতে কতটুকু বদ্ধপরিকর থাকবে। প্রথমে আমরা শুনেছি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আবার শুনেছি নাও হতে পারে। তার মানে এখনো আমরা একটি দ্বিধাদ্বন্দ্ব এবং অনিশ্চয়তার জায়গায় আছি। অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা যেমন বেড়েছে আবার দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনিশ্চয়তাও বেড়েছে। 

স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ যাদের ভোট দেবে সেই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী সবাই অংশগ্রহণ করতে পারছে না। অনেক সময় মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের অংশগ্রহণই করতে দিচ্ছে না। ভোট দেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। সেখানে সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড দেখা যায়। ’৮০-র দশকে এই সংস্কৃতিটা ছিল। সন্ত্রাসনির্ভর রাজনীতি, দখল, জালভোট ইত্যাদির একটি সংস্কৃতি ছিল। মাঝের দুই দশকে আমরা এগুলোকে বিতাড়িত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখন আবার সেগুলো পুরোদমে ফিরে এসেছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায় ইদানীং নির্বাচনগুলোতে জালভোট পড়েছে। কেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। এগুলোর অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা। 

সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তাদের ভূমিকাটা আমরা দেখি যে অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন হয় আগ বাড়িয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে সহায়তার চেষ্টা করে। অথবা তাদের যে সাংবিধানিক দায়িত্ব সেটা পালন না করে স্বেচ্ছা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকে। চোখ-কান বন্ধ করে কিছু শুনবে না, দেখবে না। তিনি বলেন, ভোটাধিকারের একটি ক্রাইসিস তৈরি হয়েছে। এটার কু-প্রভাব কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গন ছাড়িয়ে পেশাজীবী অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়েছে। বিজনেস চেম্বারগুলোতে এখন আর ভোট হয় না। যেটা হয় তার নাম হচ্ছে সমঝোতা।

অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা চিন্তা করি তার নানা সূচক আছে। একটি হচ্ছে খণ্ডিত সূচক আরেকটি হচ্ছে সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করা। 

সার্বিক মূল্যায়নে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় যে, স্বাধীনতার সময়ে আমাদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি ছিল। সে অবস্থা থেকে এক ধরনের টেকসই ভিত্তি তৈরি করা গেছে বর্তমান অর্থনীতিতে। যার ফলে আমাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিক তৈরি হয়েছে। যেমন প্রবৃদ্ধির মাত্রাগুলো কোনো সময় ঠিক ওলটপালটের দিকে যায় নি। মোটামুটি একটি গতি ধরে এগিয়েছে। স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে আমাদের চাওয়ার জায়গাটায় একটি পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে যে অবস্থা থেকে শুরু করেছিলাম সেটা দিয়ে অর্থনীতি কীভাবে চলছে তা পরিমাপ করা যাবে না। ৭০ দশকে আমাদের প্রবৃদ্ধি ১ থেকে ২ শতাংশে ছিল। এখন সেটা ৬ থেকে ৭-এর দিকে চলে গেছে। 

সরকারি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এত কিছুর পরেও ২০১৮তে প্রায় ৩৯ মিলিয়ন মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। আমরা এগিয়েছি কিন্তু চার কোটি মানুষ এখনো দরিদ্রসীমার নিচে। এই বিষয়গুলো আমাদের জানান দেয় যে, এগিয়েছে কিন্তু চ্যালেঞ্জটা কি পর্যায়ে সেটা জানা বা বোঝা দরকার। এক্ষেত্রে গতি বাড়ানো প্রয়োজন এবং এগুবার ধরনটাও উন্নত করা দরকার। 

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নে বেশি উন্নয়ন কম গণতন্ত্র- এই কথাটিই আসলে সঠিক নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক যেটা অর্থনীতির ওপর নির্ভর করে। যেমন ধরে নিলাম কম গণতন্ত্র তার মানে নির্বাচন হচ্ছে না। কিন্তু গণতন্ত্রের আরেকটি অন্যতম সূচক হচ্ছে জবাবদিহিতা। জবাবদিহিতা নেই সে জন্য এখন ব্যাংক কলাপস করছে। সেটার প্রভাব কিন্তু সরাসরি অর্থনীতির ওপর পড়ছে। সুতরাং গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার অভাবে আমাদের প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে শেষ হচ্ছে না। জবাবদিহিতার অভাবকে যদি আমরা গণতন্ত্রের অন্যতম সূচক ধরি তাহলে বুঝতে পারছি উন্নয়নের জন্য এটা অত্যাবশ্যক। অন্যথায় প্রকল্প বিলম্ব, অযৌক্তিক প্রকল্প ব্যয় হতেই থাকবে। এগুলোর জন্য ব্যাংকিং ক্রাইসিস হতেই থাকবে। সুতরাং উন্নয়ন দরকার, গণতন্ত্রের দরকার নেই- এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে এক ধরনের ব্যাখ্যা চালু করার চেষ্টা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সম্প্রচার নীতিমালা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে, সম্পাদক পরিষদসহ সচেতন নাগরিকরা এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন ছিল নজিরবিহীন। এটাও দেখছি যে, তুচ্ছ অজুহাতে আজকাল মানুষকে হয়রানি ও ধরপাকড় করা হচ্ছে। আমরা সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করা তো ঠিক নয়। 

ক্ষমতা হস্তান্তরের শান্তিপূর্ণ উপায় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাই যে, একটার পর একটা রাজনৈতিক সংকট হচ্ছে। কিন্তু তার সমাধান হচ্ছে না। এখন এই মুহূর্তে আমরা একটি বিশাল সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকটের অন্যতম বিষয়গুলো হচ্ছে আমাদের এখানে একচ্ছত্র ক্ষমতার ধারণাটি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মধ্যে জেঁকে বসেছে। এবং চ্যালেঞ্জের জায়গাটা কিন্তু বৃহত্তর জনগণেরও ব্যর্থতার জায়গা বলা যেতে পারে। 

শিক্ষাঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলা সেখানে শিক্ষক সম্প্রদায় কেনো দাঁড়ায় না। আইনজীবীরা সবাই এক বাক্যে কেনো দাঁড়ায় না। এখানে ব্যর্থতাটা দুটি জায়গায়। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে যারা বিচরণ করছেন সেখানের ব্যর্থতা। অন্যতম আরেকটি সমস্যা হচ্ছে মূল্যবোধ সংবলিত নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা। এ বিষয়টি গৌণ হয়ে গেছে। 

কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতি হচ্ছে না এ বিষয় থেকে আমাদের একধরনের ধারণা ছিল যে, এই ছাত্ররা কোনো ধরনের সমাজ সচেতনবিহীন একটি গোষ্ঠী হিসেবে গড়ে উঠছে। কিন্তু দুইটা আন্দোলনই নতুন করে সমাজ সচেতনতার বিস্তার ঘটিয়েছে এই যুব সমাজের মধ্যে। 

কোটা সংস্কার আন্দোলন বেকারত্ব বা তাদের অর্থনৈতিক প্রয়োজনে করেছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সার্বিক জনগণের একটি ইস্যু আছে। কিন্তু এই দুটি আন্দোলনের মাধ্যমে যে রাজনীতিবিমুখ কিশোর তরুণ একটি সম্প্রদায় গড়ে উঠছিল তাদের মধ্যে নতুন করে সমাজ সচেতনতার একটি ঢেউ উঠেছে। সেদিক থেকে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। দুটি আন্দোলনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রতিক্রিয়া হয়েছে নিপীড়নমুখী। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না।

গায়েবি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, গায়েবি মামলাটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার। মূলত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক প্রতিযোগীকে প্রতিহত করার জন্য গায়েবি মামলা করা হচ্ছে। এটা ক্ষমতাসীনদের প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার একটি কৌশল। যেটা থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশু এমনকি মৃত ব্যক্তিও। দুঃখের বিষয় হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং এর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস যোগ্যতা কমে গেছে। যেটা কাম্য নয়। আসলে এটা যেহেতু জনসম্মুখে চলে এসেছে তাই ‘শেষ বিচারে জনগণের ওপর আস্থা রাখাটাই শ্রেয়’। সেটাই হচ্ছে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদি, বৈধ নেতৃত্বের একটি রক্ষাকবজ।

সিভিল সোসাইটি সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন সিভিল সোসাইটি কথাটা উইদাউট কোড ব্যবহারের সময় হয়ে গেছে। এখানে দুটি বিষয় আছে। এক. ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর একচ্ছত্র ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষাটা তাদের রাজনৈতিক অঙ্গন পেরিয়ে পেশাজীবী এবং সিভিল জগৎ দুটিতেই ঢুকে গেছে। সিভিল সোসাইটিও এখন দু’ভাবে বিভক্ত। একটি গোষ্ঠী মূলত শ্রদ্ধার জায়গা থেকে সরে গিয়ে ক্ষমতার সুযোগ-সুবিধা ও তোষামোদকারী হিসেবে প্রতিযোগিতায় নেমে গেছে। আরেকটি গোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষভাবে সমাজের বিষয়গুলো তুলে ধরা। 

ছাত্র আন্দোলন, সম্পাদকমণ্ডলীর কর্মসূচি এখানে সিভিল সোসাইটির একধরনের একটিভিটি রয়েছে। এখানে মূলত যেটা দরকার তা হলো সিভিল সোসাইটি আরো কার্যকরভাবে পরিবর্তনের জায়গায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। এখানে ঝুঁকি নেয়ার বিষয় থাকতে পারে। সাহসের বিষয় আছে। এখানে লেগে থাকার বিষয় আছে। এগুলো সিভিল সোসাইটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। উৎপাদনশীল কর্মক্ষম শ্রমবাজার তৈরি করাও সিভিল সোসাইটির একটি বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জটা একাধারে নাগরিক সমাজেরও যেমন একইভাবে রাজনৈতিক সমাজেরও সমান চ্যালেঞ্জ। কারণ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আমরা আছি। 
  • কার্টসিঃ মানবজমিন/ ২৪ অক্টোবর ২০১৮