Search

Wednesday, December 5, 2018

শাজাহান খানের স্থাবর সম্পদ ৯৩ গুণ বেড়েছে

  • শাজাহানের স্থাবর সম্পত্তি বেড়ে ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা
  • স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকা
  • শাজাহান খান মূলত একজন প্রভাবশালী শ্রমিকনেতা


এক দশক আগে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নিজের নামে ঢাকায় কোনো ফ্ল্যাট কিংবা জমি ছিল না। অথচ এখন লালমাটিয়া, বাড্ডা, মেরাদিয়া ও পূর্বাচলে নিজের এবং স্ত্রীর নামে জমি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই মন্ত্রীর স্থাবর সম্পদ ৯৩ গুণ এবং তাঁর স্ত্রীর বেড়েছে ১২ গুণের বেশি। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাজাহান খানের দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী শাজাহান খানের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ১২ হাজার ৯৩৩ টাকা। তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ৮৬ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৪ টাকা। আর যৌথ মালিকানায় শাজাহান খান ২ কোটি ৭৫ লাখ ২১ হাজার ৫৩২ কোটি টাকার সম্পত্তির কথা উল্লেখ করেছেন। সব মিলিয়ে শাজাহানের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা। এক দশকে শাজাহান খান এবং তাঁর স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি বাড়ার হার যথাক্রমে ৯৩ ও ১২ গুণের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান মূলত একজন প্রভাবশালী শ্রমিকনেতা। প্রায় এক যুগ আগে বাংলাদেশের পরিবহনশ্রমিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠনটির বড় পদে আসীন হন তিনি। ২০০৯ সালে মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়ার পর তাঁর ওই পদে থাকার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমনকি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে সব সময় তাঁদের রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন শাজাহান খান। নিরাপদ সড়কের দাবিতে এ বছরের আগস্টে স্কুলছাত্রদের আন্দোলনের সময়ও যথারীতি পরিবহনশ্রমিকদের পক্ষ নেন তিনি।

২০০৮ ও ২০১৪ সালের মতো এবারের নির্বাচনের হলফনামাতেও শাজাহান খান পেশার কথা বলতে গিয়ে রাজনীতি ও ব্যবসার কথা উল্লেখ করেছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাজাহান খানের হলফনামায় দেখা যায়, ব্যবসার পাশাপাশি মন্ত্রী ও সাংসদ হিসেবে পাওয়া ভাতা হচ্ছে তাঁর আয়ের মূল উৎস। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ কোটি ৩৬ লাখ ২ হাজার ২৫০ টাকা। আর মন্ত্রী ও সাংসদের পারিতোষিক ও ভাতা হিসেবে তিনি বছরে আয় করেন ২৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫৮০ টাকা। ২০০৮ সালে শাজাহান খানের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৩ টাকা। তাঁর স্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, শাজাহান খান এবং তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫৯ লাখ ১৮ হাজার ৩৪৮ টাকা ও ৩৬ লাখ ৮৭ হাজার ৪৭০ টাকা। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে শাজাহানের হলফনামায় তাঁদের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ যথাক্রমে ৩ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭২৪ টাকা ও ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অর্থাৎ গত ১০ বছরে শাজাহান খানের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে পাঁচ গুণ।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় শাজাহান খান তাঁর স্ত্রীর নামে ঢাকার আনন্দনগর ও পূর্বাচলে জমি থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। এবারের হলফনামায় শাজাহান খান নিজের নামে লালমাটিয়ায় ফ্ল্যাট ও জমির কথা উল্লেখ করেছেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী তাঁর স্ত্রীর নামে পূর্বাচলের পাশাপাশি বাড্ডায় জমি এবং মেরাদিয়ায় ফ্ল্যাট থাকার কথা জানিয়েছেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামায় ব্যক্তি ও সংস্থা মিলিয়ে শাজাহান খান ৪৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৫৩ টাকা দেনার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এবারের হলফনামায় কোনো ঋণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি তিনি।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

Find the missing

EDITORIAL

Families in despair as cases of disappearance remain unsolved


We can empathise with Shabnam Zaman's despair at the apparent lack of movement by law enforcers in investigating how her father, former ambassador Maroof Zaman, went missing under dubious circumstances on December 4, 2017. His family members are in the dark as to who picked him up and where he is now. The one common thread that unites the families of the disappeared in our country is their loved ones' hope that they be returned unharmed.

It is difficult to imagine why no law enforcement agency has any clue as to what happened to Mr Zaman. The facts are very clear. The gentleman in question left in his car to pick up his daughter from the airport. Some time later, he called the residence and asked family members to hand over his laptop to someone who'd be going to the house. The footage of these people is there and yet, after a year of knocking on every conceivable door, the family is nowhere near finding the truth as to who took him and why, and whether Mr Zaman is alive or dead.

Human rights organisation Ain o Salish Kendra's data tells us that as many as 544 people have fallen victim to alleged enforced disappearance between 2010 and July 2018. And that over 300 of them are still missing. The calls for forming an empowered independent commission to investigate these disappearances have all but fallen on deaf ears and year after year, families like that of Mr Zaman live with the knowledge of not knowing what happened to their loved ones. Too many of these cases have remained unsolved, which is hardly helpful in increasing faith of the people on the state of law and order in the country. It is time the authorities raised the veil on these unsolved cases and launched vigorous investigations to find the missing people. 

  • Courtesy: The Daily Star/ Dec 05, 2018

US, European nations keen to observe Dec 30 polls

Foreign ministry tells EC


The Ministry of Foreign Affairs informed the Election Commission that several Western countries, along with some reputed regional and international groups, expressed their interest in sending election observers for the December 30 polls.

According to diplomatic sources, the United States, France, Denmark and Norway showed interest in sending election observers.

US-based National Democratic Institute (NDI) and Bangkok-based Asian Network for Free Election (ANFREL) were also willing to send observers, said the sources.

US submitted a list of 65 observers and ANFREL sent a list of 28 to the EC, said sources.

Among the major Asian countries, Japan showed interest to observe the upcoming election.

Two of the biggest Asian countries -- China and India -- had no plan to send any election observer teams to Bangladesh, said the sources.

However, a diplomat of High Commission of India yesterday told The Daily Star that India would consider sending support if Dhaka seeks assistance.

"I think the Bangladesh Election Commission and the Election Commission of India are in direct contact regarding the observer issue," he said.

Around ten foreign embassies in Dhaka already contacted the foreign ministry showing interest in observing the election, said the ministry sources.

Meanwhile, the Election Commission of Bangladesh wrote to the SAARC nations inviting them to send two election observers from each country for the December 30 polls, said EC sources.

Commonwealth headquarters was also requested to send its election observer group to Bangladesh, sources added.

Besides, the EC invited the Association of World Election Bodies (A-WEB) and Association of Asian Election Authorities (AAEA) to send two observers each from their respective organisations, sources said.

Bangladesh is a member of both AWEB and AAEA and regularly pays for subscriptions to the organisations.

The US is expected to have 20 teams, 12 from NDI and eight from the US embassy, along with its agencies like USAID, in Dhaka for observing the polls, foreign ministry officials said.

“I think none is flying in from the USA. NDI team members will mostly come from different Asian countries and the eight US embassy teams will comprise the diplomats and their local members in Bangladesh,” said an official of the foreign ministry.

Each NDI team would comprise two observers to monitor various constituencies across Bangladesh, said a diplomatic source.

Washington has already cleared fund and instructed authorities concerned to send 12 observer teams to monitor the December 30 polls, diplomatic sources added.

An NDI pre-election observer team has already arrived in Dhaka and began its activities, said the diplomatic source.

A five-member delegation of NDI had a meeting with the EC yesterday to discuss its plan of monitoring the polls, EC sources said.

  • Courtesy: The Daily Star/ Dec 05, 2018

‘BCL members’ dismantle CU Khaleda Zia Hall nameplate


Leaders and activists of the Bangladesh Chhatra League allegedly dismantled the nameplate of Deshnetri Begum Khaleda Zia Hall of Chittagong University on Tuesday.

Campus sources said a group of BCL activists removed a signboard that led the way to the dormitory and later dismantled the dormitory nameplate in front of the hall at about 3:00pm.

At that time, they also demanded that the university administration should rename the dormitory after Bir Protik Taramon Bibi.

The BCL leaders and activists claimed that a dormitory of a university could not be named after a person who had misappropriated the money of orphans and masterminded the August 21 grenade attack.

Chittagong University proctor Mohammad Ali Asgar Chowdhury said it was not easy to change the name of the hall. 

‘The university authorities will look into the matter if the BCL submits a written demand in this connection,’ he added.

  • Courtesy: New Age/ Dec 05, 2018

ভোটারের ভাবনা - গাজীপুরে ‘নির্ঘাত কনটেস্ট’ হবে!

ধুর ভাই কিসের ইলেকশনের কথা কন? আমি তো কুনো ভুটের আলাপ পাই না। লোকজন সব দাবড়ানির ভয়ে মরতাছে। আইজ অর বাড়ি পুলিশ যায়, কাইল তার বাড়ি ডিবি যায়। ভুটের মইধ্যে যায়া মরব? আমি গরিব মানুষ। দুকানদারি কইরে খাই, আমার বাড়িও পুলিশ আসে! আমার ভায়রা আবার বিএনপি করে তো! সেই কারণে তারা ভাবে আমিও বিএনপি।’ পান চিবুতে চিবুতে কথাগুলো বলছিলেন গাজীপুরের পঞ্চাশোর্ধ্ব চা–দোকানি হাতেম আলী। লুঙ্গির খুট দিয়ে পানের পিক মুছতে মুছতে এদিক-ওদিক চেয়ে দেখে নিচ্ছিলেন কেউ তাঁর কথাগুলো শুনে ফেলল কি না। আমি তাঁকে জিগ্যেস করেছিলাম, ‘ভোটের ভাব কেমন বোঝেন?’ তখন তিনি ওই কথাগুলো বলছিলেন। কিন্তু যখন তাঁকে নিজের পরিচয় জানালাম, তখন তিনি থমকে গেলেন। তারপর মুহূর্তে ইউটার্ন নিলেন। তখন বললেন উল্টো কথা। তখন তাঁর কথার অর্থ যা দাঁড়ায় তা হলো: খুব সুন্দর ভোটের পরিবেশ আছে। নির্বাচনের আমেজ এখনো নেই বটে, তবে ভোট হচ্ছে বলে সবাই আনন্দে আছে।

সেখানে মানিক নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন। তিনি বললেন, ইলেকশন নিয়ে মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য নেই। সবাই একধরনের চাপা আশঙ্কার মধ্যে আছে। গায়েবি মামলা ও ধরপাকড়ে বিরোধী শিবিরের লোকজন চাপে আছে।  

এলাকাটি গাজীপুর–২ আসনের মধ্যে পড়েছে। এখানে আওয়ামী লীগ থেকে টিকিট পেয়েছেন জাহিদ আহসান রাসেল। বিএনপির শিবির থেকে তাঁকে মোকাবিলা করবেন এম মঞ্জুরুল করিম রনি ও সালাহ উদ্দিন সরকার। ‘ভোটে কে পাস করবে বলে মনে হয়?’—এই প্রশ্নের জবাবে হাতেম আলী বললেন, ‘ভুট যুদি শ্যাষ পর্যুন্ত হয় আর দাঙ্গা–ফ্যাসাদ ছাড়া হয়, তাইলে নির্ঘাত কনটেস্ট হবে। এই পুরা গাজীপুরে একচাইটা বইলা কিছু নাই। কড়া ফাইট কইরা পাস করতে হইব।’

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির অফিসে স্থানীয় আইনজীবী ও সাংবাদিক আসাদুল্লাহ বাদল বললেন, গাজীপুর শহর ও তার আশপাশের এলাকায় প্রচুর পোশাক কারখানা ও অন্যান্য শিল্পকারখানা আছে। এসব শিল্পকারখানায় লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এদের একটা বিরাট অংশ স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভোটার। তাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। এখানকার ভোটারদের মধ্যে মতাদর্শগত দিক থেকে একটি মিশ্র ব্যাপার আছে। ফলে একচেটিয়া জনসমর্থন কোনো নেতারই নেই। স্বচ্ছ ভোট হলে এই ভোটারদের রায় একটি নিয়ামক শক্তি হয়ে উঠবে।

বাদল বললেন, প্রতিদিনই এখানে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সরকারদলীয় প্রার্থীরাই মূলত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। এখন এখানে সরব আছেন সরকারপন্থীরা। বিরোধীরা নানা ধরনের আশঙ্কা ও আতঙ্কে নীরব। তাঁদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ আছে। ১৫ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মাঠে নামলে হয়তো বিরোধীদের সরকারপন্থীরা ধাওয়া করতে পারবে না। তখন কিছুটা সমতা আসবে। সে পরিস্থিতি হলে এই নীরব ভোটাররা প্রকাশ্যে আসবেন। তখন নির্বাচনী আমেজ টের পাওয়া যাবে। তবে তিনি মনে করেন, এখন জনমনে থমথমে ভাব আছে। সরকারপন্থী ও বিরোধীরা একটা শীতলযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

গাজীপুর-১ আসনে (কালিয়াকৈর উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডগুলো নিয়ে গঠিত) আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে লড়বেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বিএনপির তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর সঙ্গে তাঁর মূল লড়াই হবে। কালিয়াকৈরে সেখানকার ভোটার নজরুল পাশার সঙ্গে কথা হলো। নজরুল বললেন, এখানে এই দুই প্রার্থীই হেভিওয়েট। ভোট স্বচ্ছ হলে তঁাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তবে নজরুল মনে করেন, মোজাম্মেল হক এখানকার ভোটার নন বলে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে একধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আছে।

গাজীপুর-৩ আসনে (শ্রীপুর উপজেলা এবং গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়ালগর ও পিরুজালী ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) আওয়ামী লীগের প্রার্থিতায় পরিবর্তন এসেছে। টানা ৩০ বছর এখান থেকে প্রার্থী হয়ে এসেছেন আইনজীবী মো. রহমত আলী। তাঁর অসুস্থতার কারণে এবার তাঁর ছেলে আইনজীবী জামিল হাসান দুর্জয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দল মনোনয়ন দিয়েছে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজকে। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, সাধারণ মানুষের কাছে সবুজের জনপ্রিয়তা অনেক। তিনি অনেক আগে থেকেই তৃণমূল পর্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। আমতলী এলাকার বাচ্চু মিয়া বললেন, ‘সবুজ ভাই সবার সাথে কোলাকুলি করে বহুত আগে থাইকা। বিএনপির মধ্যেও সে জনপ্রিয়। তার কুনো ক্ষতি বিএনপির লোকজনও চায় না।’ সবুজের সঙ্গে বিএনপির হয়ে লড়াইয়ে থাকবেন অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু।

গাজীপুর-৪ আসনে (কাপাসিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত) তাজউদ্দীনকন্যা সিমিন হোসেন রিমির সঙ্গে লড়বেন প্রয়াত বিএনপি নেতা হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান।

কাপাসিয়া সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আজগর হোসেন খান বলছিলেন, এই দুই প্রার্থীরই পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর রক্ত রিমির গায়ে বইছে। অন্যদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যে ফকির আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ফকির মজনু শাহর বংশধর হলেন শাহ রিয়াজুল হান্নান। দুজনের বিষয়েই জনমনে অগাধ শ্রদ্ধা আছে। তবে ভোটাররা যদি ব্যক্তি ইমেজকে সরিয়ে দিয়ে নৌকা এবং ধানের শীষ প্রতীককে মাথায় নিয়ে ভোট দেন, তাহলে কী ফল হবে তা নীরব ভোটাররা সরব না হওয়া পর্যন্ত আন্দাজ করা যাচ্ছে না।

গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশন ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত) আসনে আওয়ামী লীগের মেহের আফরোজ চুমকি এবং বিএনপির এ কে এম ফজলুল হক মিলন লড়বেন।

আমতলী বাজারের জাকির হোসেন মনে করেন, ভোট সুষ্ঠু হলে তাঁদের মধ্যেও তীব্র লড়াই হবে। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে যা বোঝা গেল, তার চুম্বক কথা হলো আপাতত সরকারপন্থী ও সরকারবিরোধীদের মধ্যে একটা শীতল যুদ্ধ চলছে। ভোটে তার চূড়ান্ত প্রতিফলন দেখা যাবে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/ ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

জামালপুর-৩ আসন - আচরণবিধি ভেঙে সমাবেশ প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের

যুব সমাবেশ আয়োজনের নামে জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হয়েছে। নেতা–কর্মীরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মিছিল ও মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে যুব সমাবেশে যোগ দেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। মেলান্দহ উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে শহীদ মিনার চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। সরেজমিনে বেলা তিনটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সমাবেশে উপস্থিত থেকে দেখা যায়, বিভিন্ন জায়গা থেকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা–কর্মীরা যুব সমাবেশে অংশ নিতে থাকেন। মোটরসাইকেল মহড়া দিয়েও একটি পক্ষ সমাবেশে অংশ নেয়। বেলা সাড়ে তিনটার মধ্যেই খোলা মাঠটি মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এরপর স্থানীয় নেতা–কর্মীরা বক্তব্য শুরু করেন।

অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ বক্তা পাঁচবারের সাংসদ মির্জা আজমকে আমৃত্যু সাংসদ নির্বাচিত করার ঘোষণা দেন। বিশাল ভোটের ব্যবধানে মির্জা আজমকে নির্বাচিত করে শেখ হাসিনাকে আসনটি উপহার দেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে। প্রায় বক্তাই নির্বাচনী সংশ্লিষ্ট বক্তব্য রাখেন।

নির্বাচনী আচরণবিধির ১২ ধারা অনুযায়ী, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বা দলের মনোনীত প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের আগে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন না। আচরণবিধির ৮ ধারা মতে, মোটরসাইকেল সহকারে মিছিল বা কোনোরূপ শোডাউন দেওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল বিকেলে মির্জা আজমের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেলান্দহ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য একেএম হাবিবুর রহমান বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিন উপলক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেখানে কোনো প্রচারণা চালানো হয়নি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর বলেন, রাজনৈতিক সভা ও সমাবেশ নিষেধ নয়। তবে ১০ তারিখের আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালানো যাবে না। খোলা মাঠে সমাবেশ এবং নির্বাচনী বক্তৃতা রাখা আচরণবিধি লঙ্ঘন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ঋণখেলাপি হলেও বৈধ প্রার্থী তাঁরা

  • কয়েকজন প্রার্থী খেলাপি ঋণ নিয়মিত করেননি
  • ব্যাংক কোনো টাকা ফেরত পায়নি 
  • আদালত থেকে ঋণের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়েছেন
  • ফলে ঋণখেলাপি হিসেবে তাঁরা বিবেচিত হচ্ছেন না


৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নানের খেলাপি ঋণ ৮২ কোটি টাকা। সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নিজেই উল্লেখ করেছেন খেলাপি ঋণের এসব তথ্য। এরপরও তাঁকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন লক্ষ্মীপুর জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা।

একইভাবে অগ্রণী ব্যাংকে ৫০২ কোটি টাকার ঋণখেলাপি ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ পরিবারের পাঁচ প্রতিষ্ঠান। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। এরপরও তাঁকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

শুধু এই দুজনই নন, তাঁদের মতো নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক আরও কয়েকজন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই খেলাপি ঋণ নিয়মিত করেননি, ব্যাংকের ধারেকাছেও যাননি। ফলে ব্যাংক কোনো টাকাও ফেরত পায়নি। উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে তাঁরা নিজের নামে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা সব ঋণের ওপর স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। ফলে ঋণখেলাপি হিসেবে তাঁরা বিবেচিত হচ্ছেন না। এর মধ্যে কেউ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কয়েক আগে, অনেকে অনেক আগেই। আবার কেউ কেউ ব্যাংকের মাধ্যমে নির্দিষ্ট টাকা জমা দিয়ে ঋণ নিয়মিতও করেছেন। ব্যাংকাররা বলছেন, নির্বাচনের সময় আগে যেভাবে ঋণ আদায় হতো, এবার তেমনটা দেখা যায়নি। কারণ, ঋণখেলাপিরা এখন ব্যাংকে আসার চেয়ে আদালতেই বেশি যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এই প্রবণতা নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যাংকগুলো টিকিয়ে রাখতে সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। মাননীয় আদালতকে অনুরোধ করব, যাতে নির্বাচনের সময় স্থগিতাদেশগুলো দীর্ঘমেয়াদি না হয়। এতে ব্যাংকগুলো বঞ্চিত হয়। কারণ, এ সময় গ্রাহকেরা কিছু টাকা ফেরত দেয়। ব্যাংকের জন্য হাইকোর্টে পৃথক তিনটি বেঞ্চ করার জন্য আমরা অনেক দিন ধরেই দাবি করছি। তাহলে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হতো।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একইভাবে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী, বিএনপির সাবেক হুইপ শহীদুল হক জামালও নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে খেলাপি ঋণের কারণে প্রার্থী হতে পারেননি জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া, চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

হলফনামায় সানম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান উল্লেখ করেছেন, তাঁর নামে বর্তমানে ৭টি চেক জালিয়াতি ও ২টি অর্থঋণ আদালতের মামলা চলমান আছে। তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং শেয়ারবাজারে আছে ৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ৩০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর ঋণ রয়েছে ১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮২ কোটি টাকা।

হলফনামার ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স করপোরেশন (বিআইএফসি) তাঁর কাছে ১৪৩ কোটি টাকা পায়। এর মধ্যে খেলাপি ৬০ কোটি টাকা। ২ ডিসেম্বর তাঁর ঋণের বিষয় জানাতে লক্ষ্মীপুর জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বিআইএফসির একজন কর্মকর্তা। এ ছাড়া আরও ২০ টির বেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁদের দাবি না শুনেই আবদুল মান্নানকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

এর কারণ ছিল, গত ১৬ অক্টোবর বিচারপতি মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে বেঞ্চ তাঁর ঋণের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এর ফলে তাঁর ঋণ খেলাপি হিসেবে গণ্য হবে না। আবদুল মান্নান তা নিজেই হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

বিআইএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তফা বিলাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুল মান্নানের তথ্য নিয়ে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম। রিটের কারণে আমাদের আপত্তি কাজে আসেনি।’

আবদুল মান্নানের কাছে রূপালী ব্যাংকের পাওনা ১৫ কোটি টাকা, যার পুরোটাই খেলাপি। রূপালী ব্যাংকের এমডি আতাউর রহমান প্রধানও বলেন, ‘আমরা আপত্তি করেছিলাম। রিটের কারণে আপত্তি টেকেনি।’

একইভাবে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, ব্যাংকে নগদ জমা রয়েছে ১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। নিজের পেশার পরিচয় দিয়েছেন এন্টারটেইনমেন্ট রিপাবলিকের কর্ণধার, ইনফো লিংকের চেয়ারম্যান, অ্যাভালন এস্টেটের এমডি ও কেসি মেমোরিয়ালের পরিচালক।

এন্টারটেইনমেন্ট রিপাবলিকের কাছে বিআইএফসির পাওনা ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। গত রোববার হলফনামা যাচাইকালে বিআইএফসির প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে আপত্তি জানালেও রিটার্নিং কর্মকর্তা তা গ্রহণ করেননি। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি তালিকায় তাঁর নাম ছিল না।

সূত্র জানায়, স্থগিতাদেশের কারণে খেলাপির তালিকায় তাঁর নাম ছিল না। এ কারণে প্রার্থী হতে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি।

বিআইএফসির এমডি মোস্তফা বিলাল এ নিয়ে বলেন, ‘আমরা আপত্তি তুলেছিলাম। তা গ্রহণ করা হয়নি।’

এদিকে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, শেয়ারবাজারে তাঁর বিনিয়োগ আছে ৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং তাঁর স্ত্রীর বিনিয়োগ ৫ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান। ব্যাংকটির পরিচালকদের সিংহভাগ তাঁর পরিবারের সদস্য।

সূত্র জানায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান জাভেদ স্টিল, ভ্যানগার্ড স্টিলস, আসিফ স্টিল, আফরোজা ওয়েল ও আসিফ সিনথেটিকের ঋণ ৫০২ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অংশ ১০ শতাংশ। এসব ঋণের পুরোটাই খেলাপি হয়ে আছে, তবে ব্যাংকের তালিকায় তা নিয়মিত। কেননা, উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে খেলাপি ঋণকে নিয়মিত দেখানো হচ্ছে। এ কারণে ব্যাংকও কোনো আপত্তি তুলতে পারছে না।

অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি গ্রাহক শহীদুল হক জামালও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বিএনপির সাবেক হুইপ। ঋণকে খেলাপি হিসেবে না দেখাতে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়েছেন তিনি।

অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঋণখেলাপি অনেকেই আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়েছেন। এ কারণে খেলাপি হওয়ার পরও তাঁরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। আমরা চেষ্টা করে অনেকের রিট শূন্য (ভ্যাকেট) করতে পারি। সব ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না, সময়সাপেক্ষও।’

এদিকে নির্বাচনে অংশ নিতে গত মাসে ঋণ পুনঃ তফসিল করেছেন সরকারদলীয় বেশ কয়েকজন সাংসদ। এর মধ্যে অন্যতম রাজশাহী-৪ আসনের এনামুল হক, চাঁদপুর-৪ আসনের শামসুল হক ভূঁইয়া, ঢাকা-১৪ আসনের আসলামুল হক, শরীয়তপুর-৩ আসনের নাহিম রাজ্জাক, পটুয়াখালী-২ আসনের আ স ম ফিরোজ অন্যতম। আবার ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সব ঋণ এখন নিয়মিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা ছাড়াও গ্রুপটিকে নতুন করে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে একাধিক ব্যাংক।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেশির ভাগই ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে চায় না। সবাই স্থগিতাদেশ নিয়ে বসে আছে। অনেকে এভাবে নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে। ফলে ব্যাংকগুলো কোনো টাকাই পাচ্ছে না। খেলাপি ঋণও আদায় হচ্ছে না।’

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতা - ঝুঁকি দূর করতে ইসিকে সতর্ক থাকতে হবে

সম্পাদকীয়

নির্বাচনের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সহিংস ঘটনা ঘটতে শুরু করেছে। গত শনিবার রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হক ও তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদের সমর্থকদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষে যুবলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন, নেত্রকোনায় জেলা কৃষক লীগের এক নেতা খুন হয়েছেন এবং যশোরের বেনাপোলে খুন হয়েছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।

রাজশাহীর বাগমারায় সংঘর্ষটি পুরোপুরি নির্বাচনকেন্দ্রিক এবং একই দলের দুটি পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে। এনামুল হক ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন, আবুল কালাম আজাদও একই আসনে আওয়ামী লীগেরই মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে এর আগেও একাধিকবার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের দ্বন্দ্ব-বিরোধ যে সহিংসতার রূপ নিতে পারে, এমন আশঙ্কা ওই এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল। কিন্তু এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কোনো শান্তি-সমঝোতার পদক্ষেপ নেয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যাতে সংঘর্ষ এড়ানো যায়।

নির্বাচনের আগে এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটা প্রবণতা: বলপ্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা কিংবা নিজেদের পেশিশক্তির প্রদর্শনী করে ভোটযুদ্ধে জয়লাভের চেষ্টা বৃদ্ধি পেলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা দুরূহ হয়ে পড়বে। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা লক্ষ করা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নেতার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের যেসব নেতার কর্মী-সমর্থকেরা কাউকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করবেন; ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি সহিংস কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন, সেসব নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এমন ঘোষণা দেওয়া আওয়ামী লীগের নিজের স্বার্থে এবং নির্বাচনী পরিবেশের জন্য প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেদের মধ্যে যেমন সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছেন, তেমনি তঁাদের বিরুদ্ধে বিরোধীদের ওপর হামলার অভিযোগও উঠতে শুরু করেছে। যেমন, গত শনিবারই সন্ধ্যায় নাটোর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাড়িতে আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করেছে বলে দুলু অভিযোগ করেছেন, যদিও আওয়ামী লীগ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ফেনী-২ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল অভিযোগ করেছেন, সরকারি দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাঁকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দিচ্ছে, তারা তাঁকে তাঁর বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি বলেন, গত শনিবার সকালে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে সন্ত্রাসীরা তাঁর বাড়ির সামনে এসে ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

আওয়ামী লীগের লোকজন কোনো নেতার পক্ষে মিছিল–সমাবেশ ইত্যাদি করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছেন, এমন খবরও আসছে। যেমন চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে গত শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া বিক্ষোভ-মিছিল, সড়ক অবরোধ করে যানজট সৃষ্টি করা এবং জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর ক্ষেত্রেও তাঁরা বিবেচনাবোধের পরিচয় দিচ্ছেন না।

এসব ক্ষেত্রে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি যত গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সক্রিয় তৎপরতা। নির্বাচনকেন্দ্রিক সব ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে দলনির্বিশেষে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারীদের অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে।
  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

সিইসির ভাগনে শাহজাদার আয় ও সম্পদ দুটোই বেশি

পটুয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম শাহজাদার পেশা ব্যবসা। ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ২৩ লাখ টাকা। তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হাসান মামুনের বিরুদ্ধে আছে ১২টি মামলা। তাঁর পেশা ব্যবসা হলেও সে খাতে কোনো আয় দেখাননি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া তাঁদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী-৩ আসন। এ আসনে সাতজন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপির দুই প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি ও মুহাম্মদ শাহজাহানের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। হলফনামা থেকে আরও জানা গেছে, অপর পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে তিনজনই ব্যবসায়ী ।

পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় ও সম্পদ আছে আওয়ামী লীগের এস এম শাহজাদার। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার ভাগনে। তাঁর বাড়ি দশমিনায়। তিনি টাইলস ও স্যানিটারি সামগ্রী ব্যবসায়ী। তিনি এই ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে আয় করেন ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ৯ লাখ ৬৩ হাজার এবং স্ত্রীর হাতে নগদ রয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা ।

অস্থায়ী সম্পদের মধ্যে আরও আছে শাহজাদার নিজের একটি গাড়ি, যার মূল্যে ৩১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে আছে আরেকটি গাড়ি, যার মূল্য ১৪ লাখ টাকা। দুজনের নামে আছে ৩৫ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থায়ী সম্পদের মধ্যে শাহজাদার নামে ৩২ শতাংশ অকৃষিজমি এবং স্ত্রীর নামে ১৪৭ শতাংশ কৃষিজমি রয়েছে। ঢাকায় তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে, যার মূল্য ২৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এলাকায় তাঁর পাকা বাড়ির মূল্য ২৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি কোনো মামলা নেই বলে হলফনামা থেকে জানা গেছে।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুন তাঁর হলফনামায় ১২টি মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ১১টি মামলা রয়েছে। যার ৯টি মামলা ঢাকার পল্টন থানায় করা। তাঁর বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এই মামলাগুলোর একটি বিচারাধীন এবং সব মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

হাসান মামুনের বাড়ি দশমিনায়। সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। তিনি গার্মেন্টস সামগ্রী সরবরাহকারী ব্যবসায়ী। তবে তিনি ব্যবসা থেকে কোনো আয় দেখাননি। তাঁর স্ত্রীর চাকরি থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। হাসান মামুনের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো অর্থ জমা নেই। তবে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে ২২ লাখ টাকা এবং সঞ্চয়পত্র রয়েছে ৩ লাখ টাকার। দুজনের নামে ৬৫ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তিনি তাঁর ব্যবসায়ের পুঁজি দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী কামাল খান। গলাচিপার বাসিন্দা কামাল খান এসএসসি পাস। তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী এবং বছরে আয় করেন ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তাঁর কৃষিজমি রয়েছে ১২০ শতাংশ এবং এ থেকে বছরে আয় ১৪ হাজার ৪০০ টাকা। হাতে নগদ ১ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে রয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। এ ছাড়া ১ লাখ টাকার আসবাব ও ইলেকট্রিক সামগ্রী রয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলামের বাড়ি দশমিনায়। তিনি কামিল পাস। পেশায় তিনি চাকরিজীবী। তাঁর আয়ের উৎস কৃষি খাত ও বাসাভাড়া। এ বাবদ তিনি বছরে আয় করেন ২ লাখ টাকা। তাঁর হাতে নগদ আছে ৫০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৩ লাখ টাকা। সাইফুল ইসলামের একটি গাড়ি রয়েছে, যার দাম ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

গণফোরামের প্রার্থী দশমিনা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ। এসএসসি পাস মোহাম্মদ উল্লাহ তাঁর ব্যবসা ও পেশার বিবরণীতে নিজেকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পরামর্শদাতা ও উৎসাহ প্রদানমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি পরামর্শদাতা হিসেবে বছরে আয় করেন ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তাঁর হাতে নগদ ২০ হাজার ও ব্যাংকে রয়েছে ১ হাজার টাকা।

  • কার্টসিঃ প্রথম আলো/০৫ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচনের পরিবেশ কেমন, জানতে চেয়েছে এনডিআই-ইইউ

ড. কামালের সঙ্গে বৈঠক


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি   ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন পর্যবেক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট (এনডিআই) প্রতিনিধিদল। গুলশানের হোটেল আমারিতে গতকাল তারা প্রাতঃরাশ বৈঠকে মিলিত হন। রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি দেড় ঘণ্টার বেশি সময় স্থায়ী হয়। বৈঠকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিস্থিতি, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের ভূমিকা, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিষয়ে এনডিআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন  ও নির্বাচনের পরিবেশ প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের কেমন পরিবেশ আছে তা তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমাদের কথা বলেছি। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন কারও আজ্ঞাবহ থাকতে পারে না। উল্লেখ্য, এনডিআইয়ের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলে সিনিয়র এসোসিয়েট ও এশিয়া বিভাগের পরিচালক পিটার এম মানিকাস, প্রতিষ্ঠানের বোর্ড মেম্বার ও সাউথ এশিয়ার সাবেক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিক ইন্ডার ফার্দ, ম্যানেজার ফর গ্লোবাল ইলেকশন মাইকেল ম্যাগনালটি, এনডিআইয়ের এশিয়া রিজিওনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার এডাম নেলসন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফারানাজ ইস্পাহানী অংশ নেন।



এর আগে সোমবার একই জায়গায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলও ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানেও তিনি নির্বাচনের পরিবেশ এবং ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান তথ্য-উপাত্ত তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবহিত করেন।



ইসিতে এনডিআই: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই)। গতকাল নির্বাচন ভবনে ওই বৈঠক হয়। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে কমিশনের অবস্থান জানতে চেয়েছে এনডিআই প্রতিনিধিদল। সেই সঙ্গে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কেও ইসি থেকে অবগত হয়েছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক এ সংস্থাটি।  ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র মতে, গতকাল বিকালে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করে এনডিআই দল। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে, কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। 

এ ছাড়া এনডিআইয়ের ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলে এশিয়া বিষয়ক প্রোগ্রাম অফিসার মেইভি হিলান-হুউস্ট, সিনিয়র ইলেকশন অ্যাডভাইজার নিল নেভিটি, ডিরেক্টর অব পলিটিক্যাল পার্টি প্রোগ্রাম আইভান ডোহেরথি, ডেন্ডার ওমেন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি বিষয়ক ডিরেক্টর স্যানড্রা পিপিরাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সব দল অংশগ্রহণ না করায় বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেনি এনডিআই। এবার যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এনডিআই ১২টি দলে ভাগ হয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণ করবে। গতকালের বৈঠকে সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে এনডিআইয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ইসির প্রথম আলোচনা হলো। বৈঠকে মূলত এনডিআইয়ের প্রতিনিধিরা দেশীয় পর্যবেক্ষক কিভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন, বিদেশিরা কি করবে, ইভিএম পদ্ধতির বিষয়ে কমিশনের অবস্থান কী এসব বিষয়ে জানতে চান। 

নির্বাচন কমিশন এ সময়ে প্রতিনিধি দলটিকে বিষয়গুলোর বিস্তারিত অবহিত করে। কমিশন জানিয়েছে, শুরুতে ৪৮টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা থাকলেও বিভিন্ন কারণে এটি ৬টিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে শহরাঞ্চলের আসনগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভোট পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখতে গত ৫-১১ই অক্টোবর এনডিআইয়ের পৃথক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। সেই সফরের তারা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, নির্বাচন কমিশন, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সফরে তার মূল্যায়ন ছিল উচ্চমাত্রার উত্তেজনা ও সংকোচিত রাজনৈতিক পরিবেশে বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। তবে ওই নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে বাংলাদেশে দীর্ঘ ঐতিহ্যগত রাজনৈতিক মতবাদ, সক্রিয় গণমাধ্যম এবং ক্রমবর্ধমান তরুণ সক্রিয়তাবাদসহ এবং নাগরিক সমাজের মতো বেশ কিছু মৌলিক উপাদানও রয়েছে। 

এনডিআই মনে করে- উচ্চমাত্রার রাজনৈতিক মেরুকরণের মধ্য দিয়ে হবে আগামী নির্বাচন। সেখানে ইভিএম নিয়ে উদ্বেগ থাকার বিষয়টিও স্থান পেয়েছিল। ফলে বেশ কিছু সুপারিশ ছিল এনডিআই’র। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- সরকারকে জনসম্মুখে অঙ্গীকার করতে হবে যে নির্বাচন কমিশনের কাজ কর্মে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করবে না। রাজনৈতিক কর্মী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের কোনো ধরনের ভয় দেখানো চলবে না। এ নিয়ে সরকারের তরফে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে। নারীর অংশগ্রহণ বাধাগুলো দূর করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। সার্বিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তারণ্যের আরো বেশি সম্পৃক্ততার সুপারিশ ছিল পূর্বের দেয়া এনডিআই’র মূল্যায়নে। 

Courtesy” Manabziban Dec 05, 20