Search

Sunday, January 27, 2019

চালের দাম - চালকলমালিকদের নিয়ন্ত্রণ করুন

সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির প্রধান উৎসই চাল। বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষকে প্রচুর পরিমাণে ভাত খেতে হয় শুধু শর্করার চাহিদা পূরণের জন্য নয়, তাঁদের আমিষেরও একটা বড় অংশ আসে ভাত থেকে। তাই চালকে বলা হয় আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য এবং এর দাম যেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়সাধ্যের সীমা অতিক্রম না করে, সরকারকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। কিন্তু আমাদের বাজার যেহেতু মুক্তবাজার অর্থনীতির নিয়মে চলে, তাই সরকারের পক্ষে খোলাবাজারে চালের দাম বেঁধে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে চালের বাজারের প্রতি সরকারের কোনো নজরদারি থাকবে না। দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারের গতি–প্রকৃতি অনুযায়ী চালের দাম ওঠানামা করা স্বাভাবিক, কিন্তু যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই যখন চালের দাম বেড়ে যায়, তখন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষগুলোকে কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই নিতে হয়। এটা তাদের দায়িত্বের একটা অংশ।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে দেশের বাজারে চালের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম তিন থেকে চার টাকা বেড়ে যাওয়া সামান্য বিষয় নয়। এর ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর ওপর আর্থিক চাপ বেড়েছে। কিন্তু চালের এই মূল্যবৃদ্ধির কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের (বিটিসি) দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেল এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, গত অর্থবছরে (২০১৭–১৮) দেশে আগের বছরের তুলনায় ২৪ লাখ ৭৪ হাজার টন বেশি চাল উৎপন্ন হয়েছে। একই বছরে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে ৪২ লাখ টনেরও বেশি চাল। অন্যদিকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম প্রতি টনে প্রায় ৪০ মার্কিন ডলার কমেছে। ফলে টিসিবির দ্রব্যমূল্য মনিটর সেল বলছে, বাংলাদেশের বাজারে চালের যে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, তার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই।

তাহলে চালের দাম বাড়ার কারণ কী? এর দায় কার?

চাল ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলেছেন, চালকলমালিকেরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। এটা একটা বহুল উচ্চারিত অভিযোগ, কয়েকটি বড় চালকলের মালিকেরা একজোট হয়ে চালের বাজার নিজেদের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করেন। চালের সর্বশেষ দাম বাড়ানোর পেছনে রয়েছে তাঁদের কারসাজি। খাদ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী ১০ জানুয়ারি চালকলমালিক ও ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসলে তাঁরা চালের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। এর অর্থ চালের দাম তাঁরা ইচ্ছা করলেই বাড়াতে কিংবা কমাতে পারেন, এর সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক নেই। আশ্বাস দেওয়ার পর বড় কলগুলো চালের দাম কেজিপ্রতি মাত্র ১ টাকা কমিয়েছে; কিন্তু তার কোনো সুফল খুচরা বাজারে পড়েনি। খোলাবাজারে মানুষকে এখনো প্রতি কেজি চাল তিন থেকে চার টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

অযৌক্তিক মুনাফার লোভে কারও এ ধরনের তৎপরতাকে মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারকে অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে। যুক্তিসংগত কারণ ব্যাখ্যা না করে খেয়ালখুশিমতো চালের দাম বাড়ানোর পথ বন্ধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। এটা শুধু এই মুহূর্তের সমস্যা নয়, একটা স্থায়ী সমস্যা হিসেবে বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। এর স্থায়ী সমাধানের জন্য বাজারে নিয়মিত নজরদারি জোরালো করতে হবে এবং অযৌক্তিক দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণকারী চালকলমালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের আশ্বাসে সরকারের বা আমাদের আশ্বস্ত হওয়ার সুযোগ নেই, চালের দাম অবিলম্বে আগের অবস্থায় নামিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে অযৌক্তিকভাবে চালসহ যেকোনো ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানো একটা অপরাধ। এই অপরাধের বিচার হওয়া উচিত।

  • Courtesy: Ptothom Alo/ Jan 27, 2019

কমছে রিজার্ভ বাড়ছে ডলার সঙ্কট


দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বছরের ২৩ জানুয়ারি ছিল ৩ হাজার ২৪১ কোটি ডলার। এক বছরের ব্যবধানে গত ২৩ জানুয়ারি তা কমে নেমেছে ৩ হাজার ১০৬ কোটিতে। এক বছরে কমেছে ১৩৫ কোটি ডলার, যা শতকরা হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪ ভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রচলিত জ্বালানি তেল আমদানির সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে এলএনজি।

একই সাথে পিডিবির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার আমদানি ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু চাহিদার চেয়ে ডলারের সরবরাহ বাড়েনি। ফলে বাজারে ডলারের ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। এ ঘাটতি মেটাতে রিজার্ভ থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে কমে যাচ্ছে রিজার্ভ। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ না বাড়লে বা চাহিদার লাগাম টেনে ধরতে না পারলে সঙ্কট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের শুরু থেকেই ডলারের সঙ্কট দেখা দেয়। ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত তহবিলের সংস্থান না করেই অস্বাভাবিকভাবে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে থাকে। পাশাপাশি অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের মাধ্যমে ডলার বিনিয়োগ করতে থাকে। ফলে নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এলসির দায় পরিশোধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে ব্যাংকগুলো।

বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করা হয়। এভাবে চলতি অর্থবছরের গত ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর কাছে ১৩৩ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়; যার স্থানীয় মূল্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে গিয়ে টানা পড়েছে রিজার্ভে।

গত ২৩ জানুয়ারি রিজার্ভ নেমেছে ৩ হাজার ১০৬ কোটি ডলারে, যেখানে এক বছর আগেও একই সময়ে ছিল ৩ হাজার ২৪১ কোটি ডলার। এরও আগে রিজার্ভ ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে ছেড়ে গিয়েছিল।

এ দিকে ডলারের মূল্য আগের স্থানে ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। যেমন বছরখানেক আগেও যেখানে প্রতি ডলার পেতে ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা ব্যয় হতো, বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৮৩ টাকা ৯৫ পয়সা। তবে বাজারে এই দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে প্রতি ডলার পেতে ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা ব্যয় হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডলারের সঙ্কট সামনে আরো বাড়তে পারে। কারণ আগে পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন আমদানি করা হতো। কিন্তু এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে এলএনজি আমদানি। প্রতি মাসে বিপুল অঙ্কের এলএনজি আমদানির দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর সাথে রাসায়নিক সার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হচ্ছে। একই সাথে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশ থেকে পণ্য আমাদনি বেড়ে গেছে। এর ফলে আকুর (এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন) দায় বেড়ে হয়েছে ১৪৪ কোটি ডলার।

সব মিলে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এ দিকে প্রায় প্রতি মাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৮ শতাংশ, যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ। আর মাস হিসাবে গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যেখানে আগের বছরের ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় সাড়ে ২১ শতাংশ। অন্য দিকে কাক্সিক্ষত হারে রফতানি আয় বাড়ছে না এবং অবমুক্ত হচ্ছে না বৈদেশিক ঋণ।
  • নয়াদিগন্ত / জানু ২৭, ২০১৯ 

Thursday, January 24, 2019

অর্থপাচার মামলা : ইউনিপেটুইউর চেয়ারম্যান এমডির ১২ বছর কারাদণ্ড

অর্থপাচারের একটি মামলায় মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপেটুইউ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মুনতাসির হোসেনসহ ছয়জনের ১২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত অন্য আসামিরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. শহিদুজ্জামান শাহীন, নির্বাহী পরিচালক মাসুদুর রহমান, জিএম জামশেদ রহমান, উপদেষ্টা মঞ্জুর এহসান চৌধুরী ও ইউনিল্যান্ড লিমিটেডের পরিচালক এইচএম আরশাদ উল্লাহ। এদের মধ্যে শহিদুজ্জামান শাহীন, মাসুদুর রহমান ও মঞ্জুর এহসান চৌধুরী বর্তমানে পলাতক।

গতকাল রায় ঘোষণাকালে কারাগারে থাকা দুই আসামি মুনতাসির হোসেন ও জামশেদ রহমান এবং জামিনে থাকা এইচএম আরশাদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত আরশাদের জামিন বাতিল করে তাকে দণ্ড পরোয়ানামূলে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

রায়ে আসামিদের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২ হাজার ৭০২ কোটি ৪১ লাখ ১১ হাজার ৭৮৪ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে, যা রাষ্ট্র পাবে। ১৮০ দিনের মধ্যে অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা প্রদানের জন্য আসামিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া রায়ে মামলাসংক্রান্ত বিভিন্ন হিসাবে অবরুদ্ধ থাকা ৪২০ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া মামলার চার্জশিটে উল্লিখিত ইউনিপেটুইউ বাংলাদেশ লিমিটেড নামীয় এবং আসামিদের দ্বারা পরিচালিত সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফরহাদ হোসেন নিয়ন জানান, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপেটুইউ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সারা দেশে ১৪৫টি মামলা করা হয়। এরই মধ্যে চারটি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। আর পঞ্চম মামলায় তাদের সাজা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২২ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। ২০১৫ সালের ৬ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।

  • Courtesy: Banikbarta /Jan 24, 2019

এক বছরে শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে ২৫%


শিক্ষা ব্যয় কমিয়ে আনতে অবৈতনিক শিক্ষা, বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক ও উপবৃত্তি প্রদানসহ নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও কমছে না শিক্ষা ব্যয়। লাগামহীনভাবে শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধিকে এক্ষেত্রে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকেই। গত এক বছরে সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে গড়ে ২৫ শতাংশ।

একজন শিক্ষার্থীর পেছনে ব্যক্তি খাতে ব্যয়িত অর্থের বড় একটি অংশই খরচ হয় খাতা-কলম ও স্কুল ড্রেস, সহায়ক বইসহ আনুষঙ্গিক শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ে। কয়েক বছর ধরে দেশে এসব উপকরণের দাম বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে কাগজের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। গত নয় মাসে ধরনভেদে কাগজের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। কলমের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ। আর শিক্ষার্থীদের পোশাকের কাপড় ২০ ও পোশাক তৈরির খরচ বেড়েছে ২০ শতাংশ। সব মিলিয়ে শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে গড়ে ২৫ শতাংশ।

শিক্ষা উপকরণের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। ফলে পড়ালেখার খরচের চাপে একসময় ঝরে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। এ বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী বণিক বার্তাকে বলেন, মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক বছরে কাগজ, খাতা-কলম ও স্কুল ড্রেসের ক্রয়মূল্যসহ শিক্ষা উপকরণ বাবদ অভিভাবকের ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে অভিভাবকের পক্ষ থেকে পড়ালেখার খরচ বহনে অসমর্থতা। শিক্ষা ব্যয় নির্বাহ করতে না পারায় প্রতি বছরই কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। এর ফলে আমরা ঝরে পড়া রোধের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছি না।

রাজধানীর বাবুবাজার-জিন্দাবাজার এলাকার পাইকারি কাগজ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক মাস আগে বসুন্ধরা পেপার মিলে তৈরি প্রতি টন কাগজের দাম ছিল ৬৮ থেকে ৭০ হাজার টাকা, যা বর্তমানে ৯৭-৯৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে এক বছরেরও কম সময়ে বসুন্ধরা কাগজের দাম বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। একইভাবে মেঘনা গ্রুপের তৈরি ফ্রেশ কাগজের দাম আগে প্রতি টন ৬৮-৭০ হাজার টাকা থাকলেও এখন তা ৯৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দাম বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। আর পারটেক্স কোম্পানির তৈরি প্রতি টন কাগজ ৮২ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ লাখ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ২২ শতাংশ। এর বাইরে ৩৪-৩৫ হাজার টাকার কাটিং পেপার ৫১-৫২ হাজার টাকা, ৩৪-৩৫ হাজার টাকার নিউজপ্রিন্ট কাগজ এখন ৪৭-৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে। আমদানি করা ৭১-৭২ হাজার টাকার কাগজের টন এখন ৮৮ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে।

কাগজ আমদানিকারকরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে কাগজ ও পাল্পের দাম অনেকটা বেড়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও আনুষঙ্গিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় কাগজের দামও দফায় দফায় বেড়েছে। আগে প্রতি টন পাল্প আমদানির বুকিং দর ছিল ৪৫০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে এটি ৭০০ ডলারে পৌঁছেছে।

এ বিষয়ে পুরান ঢাকার বাবুবাজারের কাগজ ব্যবসায়ী ও মেসার্স জেনারেল স্টেশনারির স্বত্বাধিকারী লোকমান হোসেন বলেন, আট-নয় মাস আগে যে কাগজের রিম ছিল ৭০০-৮০০ টাকা, বর্তমানে তা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর যে কাগজের রিম ১ হাজার টাকা ছিল, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন তিনি।

পাইকারি বাজারে কাগজের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। নীলক্ষেত, পল্টন, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকার বিভিন্ন স্টেশনারি দোকান ঘুরে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কাগজ, খাতা ও গাইড বই। কাগজ-কলমের পাশাপাশি অঙ্কনের কাজে ব্যবহূত আর্ট পেপার ও কালার পেনসিলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। খুচরা বাজারে ১২০ পৃষ্ঠার আর্ট পেপারের দাম কিছুদিন আগেও ছিল ৯০-১০০ টাকা। বর্তমানে তা ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২৬০ টাকার কালার পেনসিল ৩২০ টাকা এবং ১২০ টাকার কালার পেনসিল ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নীলক্ষেত মার্কেটের এক খুচরা ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, গত নভেম্বরে হঠাৎ করেই কাগজের দাম বেড়ে যায়। এছাড়া কলমের ক্রয়মূল্যও বেড়েছে, যদিও এখনো আগের দামেই কলম বিক্রি করছেন তারা। তবে পাইকারি দাম আরো বাড়লে খুচরায় দাম বাড়াতে বাধ্য হবেন তারা। আর কাগজের দাম বাড়ার কারণে প্রকাশনাগুলো গাইড বইয়ের দামও ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি।

স্কুল ড্রেস তৈরির খরচও বেড়েছে ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ হারে। গত বছরও সাদা রঙের কাপড় কিনতে গজপ্রতি খরচ হতো ৬০-৬৫  টাকা। এ বছরের শুরুতে কাপড়ের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সে হিসাবে দাম বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। সাদা রঙের উন্নত মানের কাপড়ের গজপ্রতি সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ১২০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়, দাম বৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ।

একইভাবে বেড়েছে পোশাক তৈরির খরচও। গত বছর কামিজ বানানোর খরচ পড়ত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৩০০-৪০০ টাকা। সে হিসাবে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর প্যান্ট-শার্ট বানানোর সর্বোচ্চ খরচ পড়ত গড়ে ৬০০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, সে হিসাবে খরচ বেড়েছে ১৭ শতাংশ।

কারওয়ান বাজারের প্রেয়সী টেইলার্সের সুমন মিয়া জানান, পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় আমাদেরও বেশি দামে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর কারিগর সংকটের কারণে মজুরি খরচও বেড়ে গেছে।

শিক্ষার্থীদের দেয়া বৃত্তির টাকার ব্যবহার কীভাবে হচ্ছে, তা জানতে দুই বছর আগে একটি জরিপ চালায় বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। আট জেলার ৪৩টি বিদ্যালয়ের ওপর স্টুডেন্ট ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনস (এফজিডি) শীর্ষক জরিপটি চালানো হয়। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন স্টাইপেন্ডস: এ কোয়ালিটেটিভ অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক ব্যানবেইসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণে একজন শিক্ষার্থীর জন্য বছরে ব্যয় হয় গড়ে ৪ হাজার ৭৮৮ টাকা। এর মধ্যে স্টেশনারি (খাতা, কলম, পেনসিল ইত্যাদি) বাবদ ব্যয় করতে হয় ১ হাজার ২৭৩ টাকা, যা মোট ব্যয়ের ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া ৪১৩ টাকা বা ৮ দশমিক ৬ শতাংশ খরচ হয় গাইড বই এবং ৫১৫ টাকা বা ১০ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় হয় পোশাক ক্রয় বাবদ। 
  • Courtesy: Banikbarta /Jan 24, 2019

আদালতে বেগম জিয়া


গ্যাটকো মামলার চার্জ গঠনের শুনানিতে হাজির করা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে তাকে বসানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন- ‘আমি তো কিছুই দেখছি না। আমি তো আপনাকেও (বিচারক) দেখছি না। এই দেয়াল তো এর আগে ছিল না, এখন কোথা থেকে এলো। আমি এখানে থাকব না, আমি এখান থেকে চলে যাব।’

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ২৪, আদালতে প্রবেশ করার পর বিচারককে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। আদালতে যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বসানো হয়, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।

এর পর বিচারক বলেন, বসার জন্য আগামীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর পর দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতে এজলাসের বামপাশে পেশকারের পেছনে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় খালেদা জিয়াকে বসানো হয়। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারককে উদ্দেশ করে খালেদা জিয়া বলেন, আমাকে কাঠগড়ায় ঢোকাতে চাচ্ছেন? এতেও আমি রাজি আছি। এ সময় বারবারই খালেদা জিয়াকে বলতে শোনা যায়- আমি এখান থেকে কিছুই দেখতে পারছি না।

এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম ও মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বিচারককে বলেন, কেন তাকে (খালেদা জিয়া) পৃথক করছেন? আপনি সিদ্ধান্ত দিয়ে তাকে সামনে নিয়ে আসেন। তাকে পৃথক রাখার কোনো সুযোগ নেই।

এ সময় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আদালত তো এভাবেই নির্মিত। নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ওই জায়গায় বসানো হয়েছে।

এ সময় বিচারক বলেন, আমি তো আজ নতুন। বিষয়টি আমি দেখব। আজ এখানেই থাকুক।

দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এ খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয়।

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল বৃহস্পতিবার।

এর আগেও আদালতের স্থান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, সাজা দিতে চাইলে দিয়ে দেন। আমি আর এ আদালতে আসব না। তিনি আরও বলেন, এ আদালতে আমার আইনজীবীরা বসতে পারেন না। অনেককে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

Yawning wealth gap

EDITORIAL

Rich-poor gaps have evoked catchphrases like haves and have-nots, the rich getting richer and the poor poorer, and triggered 1.0 per cent versus 99 per cent Wall Street movement with its short-lived but conscience-pricking effect in an unequal world. As for concentration of wealth in fewer hands, economists tend to emphasise its two ramifications: Firstly, super-rich class has an increasing number of entrants at the astounding rate of one billionaire every two days; and second, while the rich grow richer and many among the poor come out of the poverty trap, income inequality between the rich and the poor has increased. In other words, the poor may be better off with an improvement in their living standards; but there is an issue with child nutrition and mother care.

An Oxfam report has found 26 people now possess the same amount of wealth as the poorest half of the humanity comprising 3.6 billion. The increasing concentration of wealth in fewer hands is illustrated by the fact that while in 2017, 43 persons accounted for half of the world's wealth, in 2018 only 26 persons have done the same! The report entitled "Public Good or Private Wealth" has been released ahead of the World Economic Forum (WFE) meeting of political and business leaders in Davos, Switzerland. Up close the title shows a tinge of benign sentimentality conveying a sense urgency to stem the tide of private wealth accumulation in the face of its apparent daunting nature. The Oxfam reports are periodically remindful of growing asymmetrical wealth acquisition and distribution patterns to the governments and corporations, and therefore serving a useful purpose. Nonetheless those have come under criticism of think-tanks. The reports are said to be "obsessed with the rich, and have failed to provide an effective solution for reducing inequality." Interventionist polices, it is argued, are likely to destroy wealth rather than provide for a fair redistribution of wealth.

Basically, the system offers all kinds of facilities, incentives and fiscal waivers for entrepreneurs to increase the profitability of their business. Tax evasion, capital flight, non-performing loans, investment in real estate overseas, miss-invoicing of exports and imports, rent-seeking and all manner of extortionist forays make people wealthy beyond their dreams. The rags to riches stories add to the ranks of the nouveau riche.

What makes one sit up and take note is an Indian prominent economist's insightful observation into phenomenon of the rising superrich in his country. He believed that such wealthy people would have been the architects of high rate of gross domestic product (GDP) growth in India. So, considerations of sustained GDP growth can weigh in for a nurture of all avenues of wealth creation. In India, it is learnt, inheritance and wealth taxes have been scaled down. The charity Oxfam's findings are clearly diagnostic leaving suggestions as to where remedial measures need to be taken. It is ironic that poor people suffer twice, once from being deprived of basic services and also enduring a higher burden of taxation. As an insult to injury, whilst governments fail to tax the wealthy, they pass the burden of indirect taxes on to the numerically majority poor people. The Oxfam's plea for the governments to deliver 'real change' by ensuring corporations and wealthy individuals pay their fair share of tax and invest in free healthcare and education resonates with all right thinking people

  • Courtesy: The Financial Express /Jan 24, 2019

ডিআইটি পুকুর ভরাট - রাজউককে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে

সম্পাদকীয়

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার ডিআইটি পুকুরটি দখল ও দূষণের কবলে পড়ে যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলরসহ স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন পুকুরটি দখল করার পাঁয়তারা করছেন এক দশক ধরে। ময়লা-আবর্জনা ফেলে প্রায় ভরাট করে ফেলা হয়েছে। সেটাকে এখন ছোট ডোবার মতো দেখাচ্ছে। ভরে গেছে কচুরিপানায়। এখন সেখান থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুকুরের চারপাশের গাছপালা কেটে দোকানপাট, রিকশা গ্যারেজ ও খাবারের হোটেল নির্মাণ করা হয়েছে। এসব দোকান ও হোটেলের বর্জ্য সব পুকুরের জায়গায় ফেলা হয়। এ ছাড়া আশপাশের বাসাবাড়ির বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে এই পুকুরে।

অথচ নব্বইয়ের দশকে এই পুকুরে গোসল করত স্থানীয় লোকজন। রান্নাবান্নাসহ দৈনন্দিন নানা কাজের জন্য পুকুরের পানি ব্যবহার করত বাসিন্দারা। পরবর্তী সময়ে এখানে কয়েক বছর মাছের চাষও হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় কোনো বাড়িতে আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য এই পুকুরের পানি ছিল অন্যতম উৎস।

প্রায় দেড় একরের এই পুকুরের মালিক রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এভাবে পুকুরটি ভরাট হয়ে যাচ্ছে অথচ সে ব্যাপারে রাজউক কিছুই জানে না! রাজউকের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তাই জানেন না এই পুকুরের অস্তিত্ব। এর চেয়ে বিস্ময়ের আর কী হতে পারে। তার মানে হচ্ছে রাজউক তার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়। তা না হলে ১০ বছর ধরে একটি পুকুর চোখের সামনে ভরাট হচ্ছে, অথচ তারা জানেই না। রাজউকের এ ধরনের গাফিলতি গ্রহণযোগ্য নয়।

নগরজীবনে পুকুর, খাল থাকাটা খুবই জরুরি। এগুলো বর্ষা মৌসুমে এলাকার জলাবদ্ধতা থেকে নগরকে রক্ষা করে। ঢাকায় একসময় প্রচুর জলাধার, পুকুর ও খাল–বিল ছিল। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ভূমি আগ্রাসনের কারণে অনেক পুকুর ও খাল আজ বিলীন হয়ে গেছে। পুকুরগুলো ভরাটের কারণে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। অভিজ্ঞ মহলের মতে, এভাবে পুকুর, জলাশয় ভরাট হতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাবে। এ ছাড়া দেখা দেবে মিঠা পানির সংকট এবং আর্সেনিকের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। নিজেদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই এসব জলাধার আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের দেশে জলাধার সংরক্ষণ আইন রয়েছে। কিন্তু এ আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। তাই জলাধারগুলো দখল হয়েই চলেছে।

এখন ডিআইটি পুকুরকে রক্ষার জন্য রাজউককে অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা আশা করব, রাজউক অবিলম্বে পুকুরটিকে অবৈধ দখলমুক্ত করে বর্জ্য অপসারণ ও জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করার প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেবে।
  • Courtesy: Prothom Alo / 24, 2019

‘সঠিকভাবে দেশ চালাতে স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রয়োজন’


গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে স্বাধীন সাংবাদিকতার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেছেন, ‘আমি সাংবাদিক, আমার স্বাধীনতার জন্য সরকারকে আমার প্রয়োজন। আর সঠিকভাবে দেশ চালানোর জন্য সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতা প্রয়োজন। এভাবে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে।’

বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মাহ্‌ফুজ আনাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন,‘সমাজতন্ত্র শ্রমিকের কথা বলে, খেটে খাওয়া মানুষের কথা বলে, সাধারণ মানুষের কথা বলে। তারপরও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমাজে মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ হলো, সেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতা ছিল না, ব্যক্তিস্বাধীনতা ছিল না। যার ফলে সমাজের পরিচালক, নীতিনির্ধারকেরা কখনোই অবগত হতে পারেননি, তাঁরা যেভাবে সমাজকে চালাতে চাচ্ছেন, সেভাবে সমাজ চলছে কি না।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ‘সভ্যতার বিবর্তনে সবচেয়ে বড় যে সংগ্রাম, সেটা হলো স্বাধীনতার সংগ্রাম। সবার প্রথমে গোষ্ঠী স্বাধীনতা। তারপরে আরও গভীরে ব্যক্তিস্বাধীনতা। সাংবাদিক যদি হতে চাও, তোমাকে সবচেয়ে আগে ভালোবাসতে হবে ব্যক্তিস্বাধীনতা। তুমি যদি প্রশ্ন করতে না জানো, তোমার যদি প্রশ্ন করার স্বাধীনতা না থাকে, তাহলে সাংবাদিকতার কোনো অর্থ নেই। তোমার ভালোবাসা থাকতে হবে স্বাধীনতার সঙ্গে। মেধা দিয়ে প্রশ্ন করে সমাজের মূল্যায়ন করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের, গণতন্ত্রের, স্বাধীনতার এবং জনগণের প্রয়োজনে তোমার সাংবাদিকতা। এর বাইরে যদি কোনো প্রয়োজন থাকে, তাহলে অচিরেই তুমি এই পেশা থেকে সরে যাও। সমাজসেবার স্পৃহা নিয়ে, মনে স্বাধীন চেতনাবোধ নিয়ে এই পেশায় আসতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান বলেন, ‘বস্তুনিষ্ঠতাই সাংবাদিকতার মূল বিষয়। এটি ছাড়া সঠিক সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। গণমাধ্যমে সত্যের অপলাপ ও ফরমায়েশি সাংবাদিকতা কাম্য নয়। অপসাংবাদিকতা সমাজ, দেশ তথা মানবসভ্যতাকে কলুষিত করে। সত্যের জয় সব সময় নিশ্চিত। তাই সত্য প্রকাশ করা ও সত্য অনুসন্ধান করাই সাংবাদিকতার প্রধান কাজ।’

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক গোলাম রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। এরপর বেলা ১১টায় বিভাগের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার একাডেমিক ও পেশাগত পরিসরে অসামান্য অবদান রাখায় গোলাম রহমান ও মাহ্‌ফুজ আনামকে ‘আজীবন সম্মাননা-২০১৮’ দেওয়া হয়।

বিভাগের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজ্জামেল হক এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষকেরা। আলোচনা সভা শেষে বিভাগের নতুন ওয়েবসাইট ‘জেএমএসপেনডটকম’-এর উদ্বোধন করা হয়।

  • Courtesy: Prothom Alo /Jan 24, 2019

‘সামাজিক অসন্তোষ আরও বাড়তে পারে’

রবাব রসাঁ

সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা অক্সফামের প্রতিবেদনে জানা যায় বর্তমানে ২৬ জন ধনী ব্যক্তির কাছে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তা পৃথিবীর সব গরীব লোকের অর্ধেকের সমান। অর্থাৎ ২৬ জন মানুষের হাতে ৩৮০ কোটি মানুষের সমান সম্পদ!

বাংলাদেশে এর প্রভাব নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন কথা বলে দুজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সঙ্গে। তারা এ নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি জানিয়েছেন বাংলাদেশে সামাজিক ন্যায়বিচার আরও বাধাগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, “যখন বিশ্বে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিলো তখন সম্পদের এমন বিস্তর বৈষম্যের বিষয়টি ছিলো না। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার যে আধুনিক সংজ্ঞা যেটাকে বলি ‘ওয়েলফেয়ার ইকোনমি’ সেটি যারা মেনে নিচ্ছেন তাদের দেশে এমনটি হয় না। যেমন, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মতো ওয়েলফেয়ার স্টেটে এমনটি হয় না।”

সেখানে কেনো এমনটি হয় না?- এর উত্তরে তিনি বলেন, “সেসব দেশগুলোতে ধনী লোক রয়েছেন কিন্তু, সেই মাত্রার গরীব লোক নেই। আমাদের দেশটিও সেরকম হওয়ার কথা ছিলো। কারণ আমাদের সংবিধানে রাজনৈতিকভাবে গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিকভাবে সমাজতন্ত্রের কথা বলা আছে। সেই সমাজতন্ত্রের মানে হলো ওয়েলফেয়ার ইকোনমি। যেটি নরওয়ে, সুইডেন বা সেসব দেশে রয়েছে। তারা তা করতে পারলে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ কেনো করতে পারবে না?”

বাংলাদেশে সমাজতন্ত্রের বাস্তবায়ন বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়, তাদের কেউ কেউ বলেন- সমাজতন্ত্র-তো পুরনো কথা। আমরা এখন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে রয়েছি। তাদেরকে বলতে চাই যে মুক্তবাজারের সঙ্গে সমাজতন্ত্রের কোনো সংঘাত নাই। কিন্তু, পুঁজিবাদী অর্থনীতির সঙ্গে সমাজতন্ত্র বা ওয়েলফেয়ার ইকোনমির সংঘর্ষ রয়েছে। দুইটা দুই জিনিস। বর্তমানে সাংবিধানিকভাবে আমাদের সমাজতন্ত্র অর্থনীতি জারি রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও আমরা চর্চা করছি পুঁজিবাদ।”

বাংলাদেশে পুঁজিবাদের প্রভাব কেমন?- এ প্রসঙ্গে এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের মন্তব্য, “এই পুঁজিবাদের কারণে আমাদের এমন দুরবস্থা হচ্ছে। আমরা একটি গরীব দেশ অথচ আমাদের দেশে অতি ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধির দিক থেকে শতকরা হিসাবে সবচেয়ে বেশি। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপানের চেয়েও বেশি। আর ধনীদের সংখ্যা বৃদ্ধির হিসাবে বাংলাদেশ তৃতীয়। কারণ হলো যে আমরা সংবিধান লঙ্ঘন করছি। তা লঙ্ঘন করে পুঁজিবাদী অর্থনীতি চর্চা করছি।”

এমন পরিস্থিতিতে আমরা কী করতে পারি?- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা যদি সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী সমাজতন্ত্র বা কল্যাণ অর্থনীতিতে নীতিগতভাবে চলে আসি- তাহলে বাজার অর্থনীতি থাকবে, এর কোনো পরিবর্তন হবে না- তখন আমরা অনুসরণ করবো নরওয়ে, সুইডেন, জার্মানি এদেরকে।”

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সামাজিক ন্যায়বিচার কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন?- এর উত্তরে তিনি বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কী বলছেন! বাংলাদেশে সামাজিক ন্যায়বিচার অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশে দরিদ্রলোকের সংখ্যাই বেশি। অতি দরিদ্র মানুষ রয়েছে দুই কোটির ওপরে। দরিদ্র লোকের সংখ্যা হবে চার কোটি। আমাদের মতো গরীব দেশের জন্যে পুঁজিবাদী অর্থনীতি খুবই ধ্বংসাত্মক। আমি বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে আমি অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। অন্যান্য যেসব ন্যায়বিচারের অভাব হয় সেটা অনেক সময় অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে হয়। তখন আইনের আশ্রয় নিতে গেলেও তার ওপর প্রভাব পড়ে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও ন্যায়বিচারের অভাব হয়। সামাজিক ন্যায়বিচারের একটা বড় উপাদান হলো অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার। এটা না থাকলে অন্যান্য সামাজিক অধিকারের ওপর প্রভাব পড়ে।”

নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক- এসব স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি সেখানে সামাজিক বিভিন্ন ধরণের রাজস্ব ব্যবস্থা ও সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বৈষম্যকে অনেকক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু, উন্নয়নশীল দেশগুলো যারা এ পথে যাচ্ছে, সেখানে দেখছি আয় বৈষম্য, ভোগ বৈষম্য এবং সম্পদ বৈষম্য- এই তিনটিই বৃদ্ধির দিকে। এর একটা বড় কারণ হলো যে সেসব দেশে কর এবং পুনর্বণ্টনের ব্যবস্থাগুলো অনেক দুর্বল রয়ে গেছে।”

এর মধ্যে আমাদের দেশও কি রয়েছে?- এর উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের দেশেও এর প্রতিফলন দেখছি। যার কারণে আমাদের দেশে সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরো হিসাবে আয় বৈষম্য ০.৪৬ থেকে ০.৪৮ হয়ে গেছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি যে ২০১০ সালে সবচেয়ে উপরের ৫ শতাংশ মানুষের আয় এবং সবচেয়ে নিচের ৪০ শতাংশ মানুষের আয়ের ক্ষেত্রে পার্থক্য বেড়েছে। তবে সবারই আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে উন্নতি হচ্ছে।”

সবারই আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকে উন্নতি হওয়া তো একটি ভালো দিক। তাহলে উদ্বেগের বিষয়টি কী হতে পারে?- অধ্যাপক রহমান বলেন, “দেশে মাথাপিছু আয় বাড়ছে, দারিদ্র কমছে। কিন্তু, কথাটা হচ্ছে যে এর সাথে সাথে আমরা দেখছি যে (বৈষম্যের) পার্থক্যটা বাড়ছে। অর্থাৎ, যে প্রবৃদ্ধিটা হচ্ছে তা যারা বেশি সম্পদের মানুষ তাদের হাতে বেশির ভাগটা যাচ্ছে। যারা কম সম্পদের মালিক তাদের হাতে তুলনামূলক কম ভাগটা যাচ্ছে। কিন্তু, সবাই পাচ্ছে। চরম দরিদ্রের সংখ্যা কমছে। তবে, ধনী-গরীবের আয়ের পার্থক্যটা বেড়ে যাওয়াটাই একটা দুশ্চিন্তার বিষয়।”

কেনো দুশ্চিন্তার বিষয় বলে আপনি মনে করেন?- এর উত্তরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে দারিদ্র ও চরম দারিদ্রের হার কমেছে। কিন্তু, ধনী-গরীবের আয়ের পার্থক্য বেড়েছে। এই পার্থক্যটাই হলো বৈষম্য। একজন বেশি ধনী আরেকজন তার তুলনায় অনেক গরীব- এমনটি হলে সমস্যা হয়।… এগুলো বাড়লে বিভিন্ন সামাজিক অসন্তুষ্টি পুঞ্জিভূত হতে থাকে এবং যে অগ্রগতি হয়েছে সেটাও অনেক সময় হুমকির মুখে পড়ে।… এর ফলে দেশে সামাজিক অসন্তোষ আরও বাড়তে পারে।”

এগুলো থেকে মুক্তির উপায় কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের মন্তব্য, “যদি একটা অর্ন্তভূক্তিমূলক সমাজ নিয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি করতে হয় তাহলে আমাদের অবশ্যই দুর্নীতি কমানো, কর ফাঁকি, ঋণখেলাপি ইত্যাদি কমাতে হবে। কর ব্যবস্থাপনা, প্রত্যক্ষ করের অংশ বাড়ানো এবং সুশাসনের মাধ্যমে আমাদের এই প্রবণতাকে রোধ করতে হবে।”

  • Courtesy: Daily Star /Bangla online/ Jan 24, 2019

Disabled man charged with attacking policemen!

EDITORIAL

Stretches one's credulity to the extreme


It is quite ludicrous that a physically challenged man whose right arm has been deformed since birth has been made one of the 52 people accused of violently attacking the police using sharp instruments like machetes. A man who can barely lift his arm and begs for a living has now to appear before the court, accused by the Jamalganj Police Station two days before the last general elections.

Tara Mia, like hundreds of others have been accused in various cases surrounding the polls last December. What is even more astonishing is the fact that he has no clue of the charges against him. What we would like to know is what happened to the order from police authorities to scrutinise how such absurd cases were filed in the last quarter of 2018. Because they keep popping up where hundreds if not thousands of people are accused of having committed acts of sabotage or violence in places where local residents claim no such incident has ever occurred. And this is not the first time that such cases have been lodged. In the very recent past, even dead people have been named accused in cases of arson and vandalism.

Our journalists had earlier visited 10 spots which were claimed by the police as “place of occurrence” in the aftermath of the BNP rally on September 30 at Suhrawardy Udyan. But local businessmen, street vendors, and shop owners—no one said there had been any incidences of vandalism during that period. It is time that the Police HQ conducted an internal enquiry to find out precisely what is going on in different parts of the country and how these ghost cases keep popping up, accusing, as in this case, a physically challenged person of attacking on duty policemen—an act which he is physically incapable of committing. We feel that those that lodge such cases deserve severe strictures from the concerned authorities. 

  • Courtesy: The Daily Star/ Jan 24, 2019