Search

Wednesday, January 30, 2019

মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে প্রায় ৫০০০ গার্মেন্ট শ্রমিক চাকরিচ্যুত

এএফপি’র রিপোর্ট


বাংলাদেশে এ মাসে বেতন বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ধর্মঘটে যোগ দেন গার্মেন্ট শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তা সহিংস হয়ে ওঠে। এ ধর্মঘটে যোগ দেয়ার কারণে নিম্ন বেতনভুক্ত এসব শ্রমিকের প্রায় ৫০০০ জনকে চাকরিচ্যুত করেছেন কারখানার মালিকরা। বিশ্বের বিভিন্ন ব্রান্ডের পোশাক সেলাই করতেন এসব শ্রমিক। মঙ্গলবার এসব তথ্য দিয়েছে পুলিশ। সারাদেশে গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক কয়েক দিনের এ ধর্মঘট, প্রতিবাদে কারখানা ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। এতে ৩০০০ কোটি ডলারের এ শিল্পে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ওই প্রতিবাদ বিক্ষোভে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।

ঢাকার উপকণ্ঠে আশুলিয়া হলো এ শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। সেখানে বড় বড় খুচরা ক্রেতাদের জন্য পোশাক সেলাই করা হয়। সেখানে সংঘর্ষে একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন।

পুলিশ বলেছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগে কয়েক হাজার শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো অভিযোগ করেছে, এ শিল্পে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। দমনপীড়ন চালানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, শ্রমিক অসন্তোষের কারণে এখন পর্যন্ত ৪৮৯৯ জন শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। একটি কারখানা থেকেই বরখাস্ত করা হয়েছে কমপক্ষে ১২০০ শ্রমিককে। তাদের বেতন মাসে ৯৫ ডলার থেকে শুরু হয়ে আরো উপরে। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নগুলো বলছে, বরখাস্ত করা শ্রমিকের বাস্তব সংখ্যা আরো অনেক বেশি, যা ৭ হাজারের কাছাকাচি। এ ছাড়া আরো একশত শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন স্বপন বলেছেন, অনেক শ্রমিক কাজে ফিরতে ভয়ে আছেন। তিনি বলেন, অজ্ঞাত ৩০০০ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে পীড়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেক শ্রমিক কারখানায় না যাওয়াকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন। 
বাংলাদেশে রয়েছে ৪৫০০ তৈরি পোশাক কারখানা। এতে কাজ করেন ৪১ লাখ শ্রমিক। চীনের পরেই এ দেশটি সারা বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ। বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগই আসে এই পোশাক বিক্রি থেকে। তাই এই শিল্প উল্লেখযোগ্য শক্তি রাখে।

শ্রমিকদের ধর্মঘট বন্ধ করতে মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ। তবে ওই ধর্মঘট মাত্র তখনই শেষ হয় যখন সরকার বেতন সামান্য বৃদ্ধি করতে রাজি হয়। এই বৃদ্ধি এতটাই সামান্য যে, কোনো কোনো শ্রমিকের জন্য তা মাসে মাত্র কয়েক সেন্ট (১০০ সেন্ট সমান এক ডলার)। সোমবার আমস্টার্ডাম ভিত্তিক শ্রমিক অধিকার বিষয়ক সংগঠন ক্লিন ক্লোথস ক্যাম্পেইনের বেন ভ্যানপেপোরস্ট্রেইটি বলেছেন, প্রকৃত সত্য হলো সাম্প্রতিক সংশোধনীর পরও বাংলাদেশের এসব শ্রমিক এখনও খুবই কম মজুরি পাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার শ্রমিকদের ভীতি প্রদর্শনেেক বেছে নিয়েছে এবং তাদের যেকোনো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টাকে দমন করছে। 
  • মানবজমিন / ৩০ জানুয়ারি ২০১৯
  • http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=157086

৯০,০০০ বন্দির মানবেতর জীবন

মানবজমিন অনুসন্ধান


এক ব্যক্তির ঘুমানোর স্থানে ঘুমাচ্ছে দুই থেকে তিন জন। শীতের রাত যেন এক একটি বছর। কাঁথা নেই, কম্বল নেই। মশারি নেই। দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে কাটে প্রতিটি রাত। শৌচাগারে দীর্ঘ লাইন। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়েও অমানবিক দুর্ভোগ। মামলায় হাজিরা দিতে গেলে দিনভর থাকতে হয় না খেয়ে।

‘রাখিব নিরাপদ দেখাবো আলোর পথ’ স্লোগানে চলা দেশের কারাগারগুলোর চিত্র এটি। ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দি নিয়ে চলা কারাগারগুলোতে যেন সমস্যা আর সংকটের শেষ নেই। বাড়তি বন্দির কারণে বাড়তি সমস্যা। অসুস্থ হলেও চিকিৎসা পেতে পোহাতে হয় ঝক্কি। হাসপাতালে নিতে গেলে প্রহর গুনতে হয়। এম্বুলেন্স সংকট। কারাগারে থাকা বন্দিদের বেশির ভাগেরই সাজাপ্রাপ্ত না। তারা সত্যিকার অর্থে অপরাধী কি-না তাও প্রমাণ হয়নি। বন্দিদের একটি বড় অংশ রাজনৈতিক মামলার আসামি। 

আর একক মামলা হিসেবে মাদকের মামলার আসামি মোট বন্দির এক-তৃতীয়াংশের বেশি। অনেকেই বন্দি হয়েছেন ‘গায়েবি’ মামলায়। জামিন হলে কেউ কেউ মুক্ত হচ্ছেন। যাদের জামিন হয়নি তারা প্রহর গুনছেন মুক্তির। সারা দেশে রয়েছে ৫৫টি জেলা কারাগার ও ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার মিলে মোট ৬৮টি কারাগার। কারাগারগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৪০ হাজার ৬শ’ ৬৪ জন। কিন্তু ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ, তিন গুণ বন্দি থাকেন কোনো কোনো কারাগারে। স্বাধীনতার পর সর্বোচ্চ সংখ্যক বন্দি ছিল গত বছরের শেষদিকে। গত সোমবারের হিসাব অনুসারে সারা দেশে কারাগারে বন্দি রয়েছে ৯১ হাজার ৭শ’ ৪২ জন। তার আগের দিন রোববারে এই সংখ্যা ছিল ৯২ হাজার ১শ’ ৭৭ জন। এর মধ্যে মাদক মামলার আসামি ২৯ হাজার ৬৩ জন। নারী আসামি ৩ হাজার ৩ শ’ ৩২। গত ডিসেম্বরে কারাবন্দির সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ। 

কারা সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের আগস্ট মাস থেকেই সারা দেশে কারাবন্দির সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। তাদের বেশির ভাগই নাশকতা, বিস্ফোরক ও আইনি কাজে বাধার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার। আগস্টে সারা দেশে বন্দি ছিল ৮৩ হাজার ৫ শ’ ৬ জন। সেপ্টেম্বর মাসে বন্দির সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৮ হাজার ৯ শ’ ৭৫ জন। বন্দির সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় তখন চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ লঘু অপরাধে আটক প্রায় ৭ হাজার জনকে মুক্তি দেয়া হয়। তারপরও বন্দির সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। অক্টোবরে ওই সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৫ হাজার ৬শ’ ২৫ জনে।  ঢাকা বিভাগের ১৭ কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১১ হাজার ৩৪২ জনের। গত আগস্টে এসব কারাগারে বন্দি ছিল ২৮ হাজার ৩শ’ ৪৯ জন। নভেম্বরে বন্দির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২ হাজার ৬শ’ জনে।

এই বিপুল সংখ্যক বন্দিকে মানবিক সুবিধা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কারা কর্তৃপক্ষ। দেশের অনেক কারাগারে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। শীতের রাতে ঘরের বাইরেও থাকতে হয়েছে বন্দিদের। কাঁথা জুটে তো বালিশ জুটে না। নিচের বিছানার জন্য কম্বল জুটলেও গায়ের উপরে কম্বল জুটছে না। এসব কম্বলকে ব্যবহার অনুপযোগী বলছেন বন্দিরা। এভাবেই কাটছে বন্দি জীবন। কারা ইতিহাসে বন্দির বালিশ ছিল না। গত নভেম্বর থেকে কারাবন্দিদের মধ্যে বালিশ বিতরণ করা হচ্ছে। খাবার নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত কারাবন্দিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে দেয়া হয় পুরনো আটার একটি রুটি ও ছোট এক টুকরো গুড়। দুপুরে নিম্নমানের চালের ভাত, পাতলা ডাল ও সবজি। রাতে সবজি ও মাছ। সপ্তাহে একদিন গরু ও মুরগির মাংস দেয়া হয়। 

জেল থেকে বের হয়েছেন এমন বন্দিদের অভিযোগ, সপ্তাহে একদিন মাংস দেয়া হলেও বেশির ভাগের পাতে যায় শুধু  ঝোল। আর মাংস পেলেও বোঝা যায় না তা কিসের মাংস। 

জুনায়েদ মিয়া নামের কারামুক্ত একজন জানান, কারাগারের খাবার খাওয়ার মতো না। মনে হয় সিদ্ধ সবজি, যেন মসলাহীন রান্না। এমনকি লবণও ঠিকমতো  দেয়া হয় না। সাধারণ কারাবন্দিদের এভাবেই থাকতে হয়। তবে টাকা ব্যয় করলে আছে ভিন্ন ব্যবস্থা।

বিকাল ৫টা থেকে ৫টা ৩০ মিনিটের মধ্যে কয়েদিদের রাতের খাবার সরবরাহ করা হয়। যাদের আদালতে হাজিরা দিতে নিয়ে যাওয়া হয় তারা বঞ্চিত হন কারাগারের খাবার থেকে। তারা কারাগারে পৌঁছানোর আগেই খাবার বিতরণ শেষ হয়। 

কারামুক্ত ইকবাল চৌধুরী জানান, তাকে একটি ‘গায়েবি’ মামলায় ধানমণ্ডি থেকে গত বছরের ১০ই ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। স্থান হয় কেরানীগঞ্জে কারা ওয়ার্ড পদ্মায়। কারাগারের কষ্টের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, রাত গভীর হলে বাড়ে শীতের তীব্রতা। কাঁপতে থাকেন বন্দিরা। বয়স্কদের অবস্থা করুণ। ফ্লোরে ঢালাও বিছানায় ২০ জনের স্থানে ৫০ জনকে ঘুমাতে হয়। প্রায় জড়াজড়ি অবস্থা। মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসেরও উষ্ণতাও শীতের প্রভাবকে মুক্ত করতে পারে না। ঘুমের ঘোরে শীত থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই পাশের ব্যক্তিকে জড়িয়ে ধরেন। ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হন অনেকে। সর্দি-কাশি, জ্বর লেগেই থাকে। একটি ওয়ার্ডের ৪৫-৫০ জনের জন্য একটি মাত্র  শৌচাগার। দিনে-রাতে লাইন লেগেই থাকে। রাতের গভীরেও কেউ না কেউ থাকেন সেখানে। করাগারে কী দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন বন্দিরা। দিনটা  যেমন তেমন কাটে, রাতটা দুঃসহ। শীতের রাতে গরম কাপড়, কম্বল বলতে কিছু নেই। 

অনেকেই বাইরে থেকে কম্বল কিনেছেন। কিন্তু দরিদ্র বন্দিদের করুণ অবস্থা। কেঁপে-কেশে রাত কাটে তাদের। পাশে শুয়ে অন্য কারও কম্বলে আশ্রয় নেন তারা। একে তো শীতের কষ্ট সেই সঙ্গে আছে মশার উপদ্রব। সারারাত মশার কামড়। সহজে ঘুম আসে না। এই অবস্থায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারা চিকিৎসক জানান, কারাগারে থাকা কয়েদিরা প্রায়ই চুলকানি জাতীয় চর্মরোগ, পুষ্টিহীনতা, শ্বাসকষ্ট, শারীরিক দুর্বলতা, মনোবিকৃতির মতো জটিলতায় ভোগেন। তবে হঠাৎ কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে বিপাকে পড়তে হয় কারা কর্তৃপক্ষকে। কারাগারে রয়েছে চিকিৎসক ও এম্বুলেন্স সংকট। দেশের ৬৮টি কারাগারে রয়েছে মাত্র আট জন চিকিৎসক ও ১১টি এম্বুলেন্স। এমনকি বন্দির সংখ্যা লাখ ছুঁয়ে গেলেও বন্দিদের সেবা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জনবল সংকট রয়েছে। 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক কারাগার পরিস্থিতি নিয়ে মানবজমিনকে বলেন, ৪০ হাজার বন্দির স্থানে রাখা হচ্ছে ৯০ হাজারেরও বেশি লোককে। এতে তাদের  মৌলিক অধিকার রক্ষার সুযোগ থাকছে না। বন্দিরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারাগারের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। সেখানে পানির অভাব আছে, বন্দিরা রোগাক্রান্ত হচ্ছেন। জায়গার অভাবে বন্দিরা পালাক্রমে ঘুমাচ্ছেন। এটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।  দণ্ডপ্রাপ্তদের সংশোধন করতে কারাগারে নানা ব্যবস্থা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে ইমাম আছেন, বই পাঠের জন্য লাইব্রেরি আছে। এমনকি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। 

এতকিছুর পরও আতঙ্কের ব্যাপার হচ্ছে কারাগারে মরণনেশা মাদক ঢুকছে। মাদক কারাগারে ঢোকার সুযোগ থাকলে অনেকক্ষেত্রেই সংশোধনের আয়োজন ব্যর্থ হয়ে যাবে। এসব বিষয়ে অবশ্যই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি।

কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কারা বিভাগে ১২ হাজার ১শ’ ৭৩টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১ হাজার ৫শ’ ৮৯টি। এসব বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন মানবজমিনকে বলেন, নানা সংকটের মধ্য দিয়েই সেবা দিচ্ছে কারাকর্তৃপক্ষ। শীতে যাতে কারাবন্দিদের কষ্ট না হয় এজন্য অতিরিক্ত ২৫ ভাগ কম্বল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কারাগারে ঘরের বাইরেও অনেক বন্দির রাতযাপন সম্পর্কে তিনি বলেন, বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। দু’একটি কারাগারে স্থানের সমস্যা হয়েছে। এটা স্থায়ী কোনো সমস্যা না। 

  • মানবজমিন/ ২০১৯, বুধবার 
  • http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=157085

Tuesday, January 29, 2019

সৃজনশীলতা হারিয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত এনসিটিবি

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) মূল কাজ হচ্ছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম নিয়ে গবেষণা ও সৃজনশীল বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া। অথচ গবেষণা ও সৃজনশীল পাঠ্যবই তৈরির পরিবর্তে এই প্রতিষ্ঠানের এখন মূল কাজ হয়ে গেছে কেনাকাটা ও বই নিয়ে বাণিজ্যের অংশীদার হওয়া। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এখন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

এতে এনসিটিবি তার মূল চরিত্র হারিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গড়ে উঠেছে নানামুখী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন এনসিটিবির শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কর্মচারীরাও। এমনটিই বলেছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ২০১৭ সালে এনসিটিবি নিয়ে তাদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে।

সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে খোদ সরকারও কোটি কোটি শিক্ষার্থীর পাঠ্যবইয়ের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে এদের সাথে সমঝোতা বা তাদের দাবির কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের প্রাথমিকে পাঠ্যবই ছাপার পুনঃটেন্ডার করতে গিয়ে। পুনঃটেন্ডার করে প্রাথমিকের পাঠ্যবই বিদেশে ছাপাতে হয়েছে। অথচ দেশীয় মুদ্রাকররা এর তীব্র বিরোধিতা করলেও এনসিটিবির শীর্ষপর্যায় থেকে ছাপার কাজ বিদেশীদের হাতে দেয়ার জন্য সব ধরনের নাটক সাজানোর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি টেন্ডারের শর্ত ও বিধি লঙ্ঘন করে এ কাজ করা হয়েছে।

এনসিটিবির সামগ্রিক চরিত্র ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আলী নয়া দিগন্তকে বলেন, এনসিটিবি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। এটি একটি রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষাবিদেরা শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম ও কারিকুলাম নিয়ে গবেষণা করবে। নতুন নতুন ধারণা ও সৃজনশীল মেধা দিয়ে শিক্ষাবিদদের পরামর্শ অনুসারে কারিকুলাম সাজাবে। পৃথিবী অনেক দূর এগিয়ে গেছে, কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও কারিকুলাম এখনো সেকেলে।

অধ্যাপক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আক্ষেপ করে বলেন, এনসিটিবি প্রতি বছর পাঠ্যবই ছাপার বাণিজ্যের সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেছে। অথচ তাদের দায়িত্ব ছিল, প্রতি কয়েক বছর পরপরই পাঠ্যবইয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন কিছু দেয়া। এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তকের গবেষক ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে বৈঠক না করে, বই ছাপার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক করছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১২ সালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের কারিকুলাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে তা পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করা হয়। তার আগে হয়েছিল ১৯৯২ সালে। পাঠ্যবইয়ের কারিকুলামের পরিবর্তন আগামীতে কবে হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই নীতিনির্ধারক মহলের। তবে এনসিটিবির শীর্ষ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, নতুন সরকারের নতুন শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী কারিকুলামের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, আগামী দু-এক বছরের মধ্যে কিছু একটা হতে পারে। কী হবে তার কার্যক্রম শুরু হবে নির্দেশনা পাওয়ার পর।

এনসিটিবির প্রশাসনিক বিন্যাস সম্পর্কে হচ্ছে বিভিন্ন কথা প্রচলিত থাকলেও, এখানে যারা নিয়োগ পান তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আত্মীয় স্বজন বলেই পরিচিত। এ ছাড়া রয়েছে প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের তদবিরের পদায়ন। কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ, গবেষণা কর্মকর্তাসহ নানা পদে যারা নিয়োজিত তাদের কারোরই অতীত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এখানে রয়েছেন, অর্থনীতিতে পাস করা কর্মকর্তা, যিনি প্রাথমিকের বাংলা বইয়ের সম্পাদনা করেন। এরূপ বিভিন্ন ধরনের জগাখিচুড়ি নিয়ে চলছে এনসিটিবি বছরের পর বছর। সরকার পরিবর্তন হলে শুধু বদলায় এর কর্মকর্তা। গত তিন দফায় একই সরকার ক্ষমতায় থাকায় এবং টানা দুই টার্মে একই ব্যক্তি শিক্ষামন্ত্রী থাকায় এখানে গড়ে উঠেছে বড় ধরনের অনিয়মের সিন্ডিকেট।

প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে জুনিয়র কর্মকর্তার শাসন কায়েম হয়েছে। উপসচিব (কমন) এবং ঊর্ধ্বতন ভাণ্ডার কর্মকর্তা হিসেবে ২৪তম বিসিএস কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই দু’টি পদে এর আগে অপেক্ষাকৃত সিনিয়র কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হতো। উৎপাদন নিয়ন্ত্রক পদেও অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা পদায়ন পেয়েছেন। বিদায়ী শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং তার সাবেক এপিএস মন্মথ রঞ্জন বারৈ নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট এখানেও সক্রিয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আর এ প্রতিষ্ঠানে (এনসিটিবিতে) কর্মরতদের বেশির ভাগই বছরের পর বছর একই পদে চাকরি করছেন।

বিতরণ নিয়ন্ত্রণ জিয়াউল হক, ঊর্ধ্বতন ভাণ্ডার কর্মকর্তা আবু হেনা মাশুকুর রহমান, ঊধ্বর্তন বিশেষজ্ঞ মোখলেস উর রহমান, বিশেষজ্ঞ পারভেজ আক্তারসহ অধ্যাপক হাসমত মনোয়ার, আলেয়া আক্তার, মোস্তফা সাইফুল আলম, সৈয়দ মাহফুজ আলী, চৌধুরী মুসাররাত হোসেন জুবেরী, সাহানা আহমেদ প্রমুখ সর্বনিম্ন ছয় বছর থেকে এক যুগ একই পদে ও একই কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে ক্যাডার কর্মকর্তা আছেন মোট ৬১ জন। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের হিসেবে মূল চাকরি কলেজে শিক্ষকতা। কিন্তু তারা লেকচারার হিসেবে যোগদান করার পর এখনো একই প্রতিষ্ঠানে থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

মন্ত্রণালয় ও এনসিটিবি সূত্র জানান, এনসিটিবি কারিকুলাম গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবেই কখনোই রূপ পায়নি। এখানে যাদের পদায়ন করা হয় গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে, তাদের কারোই গবেষণা কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। কিন্তু এখানে কর্মরত রয়েছেন গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে। এখানে নিয়োজিত গবেষণা কর্মকর্তারা এখন কাজ করেন, ছাপাখানায় বই ছাপা কেমন হচ্ছে তা তদারকিতে। ছাপা বই ঠিকমত ট্রাকে উঠছে কি না, তার নজরদারিতে।

এনসিটিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, গবেষণার পরিবর্তে আমার কাজ হচ্ছে প্রতিদিন মুদ্রাকরদের সাথে দেন-দরবারে ব্যস্ত থাকা। তাদের সাথে ঝগড়া মেটানো। কারিকুলাম নিয়ে মনোসংযোগের ফুসরত কোথায়?

এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, এনসিটিবি গবেষণা বাদ দিয়ে শুধু বই ছাপা ও সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে এমনটি নয়। এনসিটিবির আইন ও বিধিমালার মধ্যে রয়েছে, বই ছাপা ও সরবরাহের কাজ করার। আর কারিকুলাম নিয়ে গবেষণা হচ্ছে না, এটিও সঠিক নয়। তিনি জানান, প্রাথমিকের পাঠ্যবই রিভিউর কাজ শেষ হয়েছে। মাধ্যমিকের কাজ চলছে।
  • নয়া দিগন্ত/ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা!


বাংলাদেশ থেকে ১০ বছরে (২০০৬ থেকে ২০১৫) বাংলাদেশ থেকে ৬১.৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। বর্তমান বি‌নিময় হার অনুযায়ী বাং‌লা‌দে‌শী মুদ্রায় যার প‌রিমাণ প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্য দিয়ে অর্থ পাচারকারী শীর্ষ ৩০ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) সোমবার অর্থ পাচারের এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্লোবাল ফিন্যানসিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই)।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থাটি গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেয়। জিএফআই ১৪৮ দেশের ওপর জরিপ পরিচালনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অর্থ পাচারের হিসাব জানিয়েছে তারা। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের চেয়ে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৫ শতাংশ। 

তাদের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫৯০ কোটি ডলার অবৈধ উপায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া একই বছরে ২৮০ কোটি ডলার অবৈধভাবে দেশে এসেছে। 

সংস্থাটি অর্থ পাচারের যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা হলো, আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করা সেই টাকা যা অবৈধভাবে অর্জিত, ব্যবহৃত অথবা স্থানান্তরিত।

সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে, টাকার অঙ্কের দিক দিয়ে ২০১৫ সালে অর্থপাচারে শীর্ষ ৩০ দেশের একটি ছিল বাংলাদেশ। এ েেত্র দণি এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। জিএফআই বলছে, টাকা পাচারের এ প্রবণতা টেকসই উন্নয়নে বড় বাধা। বাণিজ্যের কথা বলে অবৈধভাবে এসব অর্থ পাচার হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
  • নয়া দিগন্ত / ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

গায়েবি মামলা — হাঁক এলেই দল বেঁধে ছোটেন তাঁরা

গোলাম মর্তুজা

  • গায়েবি মামলা আসামিরা আগাম জামিন নিতে আসছেন হাইকোর্টে
  • বৃদ্ধ, নিরীহ ও শ্রমজীবী মানুষেরা নজরে পড়ছেন 
  • গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে দেড় মাসে সারা দেশে ৪ হাজার ১৮২টি গায়েবি মামলা হয়েছে
  • এসব মামলায় ৮৮ হাজার জনের নাম উল্লেখ আছে



ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে একদল মানুষ আগাম জামিন নিতে আসেন। গতকাল হাইকোর্টে।  ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীতে হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনের বড় গাছগুলোর তলায় মানুষের ছোট ছোট জটলা। ময়মনসিংহের গৌরীপুর ও মুক্তাগাছা, নেত্রকোনার বারহাট্টা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, যশোরের মনিরামপুর, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, ঢাকার উত্তরাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন তাঁরা। প্রতিটি জটলায় আলোচনার বিষয় গায়েবি মামলা। তাঁরা সবাই আসামি; এসেছেন জামিন নিতে। অনেকের পরনে লুঙ্গি-পাঞ্জাবি। কারও হাতে পোঁটলা; তাতে বিস্কুট, চিড়া-মুড়ি বা পানের ডিব্বা। কেউ বয়সের ভারে ন্যুব্জ, চুল-দাড়ি সাদা।

কিছু সময় পরপর কেউ একজন এসে হাঁক ছাড়েন। তারপর দল বেঁধে ছোটেন জটলার মানুষেরা। ‘গৌরীপুর, গৌরীপুর-সব আউয়াইন’। ২৫-৩০ জনের দলটি গাছতলা থেকে আদালত ভবনের দিকে হাঁটা ধরে।

যশোরের মনিরামপুরের শহীদুল্লাহ সরদারের সঙ্গে দেখা হলো হাইকোর্ট চত্বরে। নাশকতার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরক মামলায় আসামি হয়েছেন। চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ, বয়স সত্তরের কোঠায় বলে জানালেন। তবে মামলায় লেখা ৫৫।

মামলায় কী অভিযোগ আনা হয়েছে, জানতে চাইতেই ক্ষুব্ধ কণ্ঠে শহীদুল্লাহ বলেন, ১৪ জানুয়ারি ঝাপা গ্রামে তাঁর বাড়ির পাশের বালুর গাদায় খেলতে গিয়ে চার ও পাঁচ বছর বয়সী দুই নাতি ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়। শিশু দুটিকে ১০ দিন হাসপাতালেও থাকতে হয়েছে। পুলিশ ২২ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার ষড়যন্ত্র ও বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা করেছে। সেই মামলায় এক নম্বর আসামি শহীদুল্লাহ। ওই মামলায় জামিন নিতে শহীদুল্লাহর সঙ্গে এসেছেন আরও ৯ জন।

তাঁদের মতো নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আসামি হয়ে কয়েক শ লোক গতকাল সোমবার জামিন নিতে এসেছিলেন হাইকোর্টে। বিএনপি দাবি করে আসছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে দেড় মাসে সারা দেশে ৪ হাজার ১৮২টি গায়েবি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৮৮ হাজার জনের নাম উল্লেখ আছে। আর আসামি করা হয়েছে পৌনে তিন লাখ ব্যক্তিকে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে আসা আশি-ঊর্ধ্ব আমির হামজাও নাশকতা মামলার আসামি। তাঁর সঙ্গে একই মামলার আসামি মধ্য ষাটের আবদুল আলিম। তাঁরা জানান, নির্বাচনের আগে পুলিশের ওপর হামলা, নাশকতার অভিযোগে ৭৪ জনের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। জামিন নিতে গতকাল তাঁরা ২৪ জন ঢাকায় এসেছেন। জামিনও পেয়েছেন।

গায়েবি মামলার আসামি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের আবদুস ছাত্তার (মাঝে) আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে আসেন। গতকাল দুপুরে।  ছবি: প্রথম আলো

আমির হামজা বলেন, তিনি কৃষক। আগেও রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, ‘এখন ইরি ধানের মৌসুম। আর আমাগেরে এহন এই কোর্ট-কাচারিতে চক্কর দিতে হচ্ছে।’

আমির হামজার সঙ্গে আসা লোকজন জানান, বাসে ও মাইক্রোবাসে তাঁরা সবাই এখানে এসেছেন। আসা-যাওয়ার খরচ তাঁদের। আর মামলা পরিচালনার বিষয়ে বিএনপির একজন নেতা সাহায্য করছেন।

অ্যানেক্স ভবনের ঠিক সামনেই হাঁটাপথের ওপর গোল হয়ে বসেছিলেন লুঙ্গি-পাঞ্জাবি বা গেঞ্জি পরা কয়েকজন। তাঁরা এসেছেন সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে। জানালেন, নির্বাচনের দিন সহিংসতার অভিযোগে গোয়াইনঘাট থানায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। সেই মামলার ২০ জন আসামি এসেছেন জামিনের জন্য। সবাই নিম্ন আয়ের; কৃষি অথবা পাথর কোয়ারির শ্রমিক। আসামিদের মধ্যে তাজিমুল আলীর বয়স ষাটের ওপর।

তাজিমুল বলেন, তাঁদের বাড়ি গোয়াইনঘাটের যাত্রাবা গ্রামে। সেখানে নির্বাচনের দিন একটি ভোটকেন্দ্রে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছেন। এরপর তিনি ও তাঁর চার ছেলেকে ওই মামলার আসামি করা হয়েছে বলে জানতে পারেন। কথা বলার সময় তাজিমুলের দন্তহীন মুখ থেকে পানের রস গড়িয়ে পড়ছিল।

ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও পুলিশের ওপর হামলা মামলার আসামি সিলেটের তজিমুল ইসলাম (বাঁয়ে)। গতকাল হাইকোর্টে।  ছবি: প্রথম আলো

গোয়াইনঘাট থেকে আসা লোকজন জানান, তাঁরা সবাই শ্রমিক। কৃষিকাজ করে বা পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করেন। মামলার পর থেকেই তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য বাড়ি বাড়ি আসছে পুলিশ। কেউ বাড়িতে থাকতে পারছেন না, কাজকর্মও করতে পারছেন না। তাঁরা যেহেতু বিএনপি করেন না, তাই বিএনপির নেতারাও তাঁদের সাহায্য করছেন না।

এ প্রসঙ্গে গোয়াইনঘাট পরিদর্শক (তদন্ত) হিল্লোর রায় গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা ওই এলাকার কামাইর কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেন। পুলিশ বাধা দিলে তাদের ওপর আক্রমণ করেন। তাঁর দাবি, বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষকে নিয়ে হামলা করেছেন। তাই মামলার আসামি হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের পেশার পরিচয়টা মুখ্য বিষয় হয়নি।

এসব মামলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর কর্মকর্তারা নাম উল্লেখ করে কথা বলতে চান না। তবে একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এসব ঢালাও মামলার বিষয়ে নির্দেশনা আসবে বলে তাঁরা শুনেছেন। সে ক্ষেত্রে তদন্ত করে নির্দোষ লোকদের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।

তবে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-মিডিয়া) রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ রকম কোনো উদ্যোগের কথা শোনেননি।
  • প্রথম আলো/ ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

HC summons DG of ACC, 3 govt officials

They have to explain why a person other than the accused spent 3 years in jail



Abu Salek (L) and Jahlam (R). Photo: Collected

The High Court yesterday summoned the director general of the Anti-Corruption Commission (ACC) and three other government officials to explain why a person named Jaha Alam, instead of the real accused, was in jail for the last three years.

They will have to appear before the HC bench of Justice FRM Nazmul Ahsan and Justice KM Kamrul Quader by 10:30am on February 3, HC sources said.

The three government officials were plaintiffs of two of the 33 cases filed against Abu Salek, a businessman. They represented the secretaries of the law and home ministries.

Meanwhile, Judge Sheikh Golam Mahbub of the special court-6 yesterday exempted Alam from the charges.

HOW JAHA ALAM LANDED IN JAIL

Between 2010 and 2011, Salek misappropriated about Tk 18 crore from Sonali Bank's Cantonment branch. Salek used a fake address to open an account with the bank, the ACC said. 

Salek also had an account in another private bank, ACC sources said.

In 2012, the anti-graft watchdog filed the 33 cases over the misappropriation, and Salek was made accused in most of them.

During investigation, the commission asked the banks' officials to identify and trace Salek.

The officials informed the ACC that the address provided by Salek in his bank documents was in Tangail's Nagarpur, ACC sources said.

The commission then summoned Salek to its office where the bank officials, including the account's introducers, were present.

However, the man who appeared before the ACC claimed that the authorities concerned were mistaken and his name was Jaha Alam, not Abu Salek.

“To ascertain further, we sent the photo that Salek used in the bank's Know-Your-Client form to Nagarpur's Union Parishad chairman, who identified him as Jaha Alam,” said an investigation officer preferring anonymity.

Later, the ACC placed a charge-sheet before the court identifying him as Abu Salek alias Jaha Alam.

In 2016, Alam was arrested by police in connection with most of the cases in which Salek was accused.

HOW JAHA ALAM'S IDENTITY WAS KNOWN

Different media outlets reported that Jaha Alam said he was wrongly accused, after which the ACC investigated the matter further.

The commission found Alam's claim to be true.

Contacted, ACC Director General Moyeedul Islam said of the 33 cases, Alam was made accused in most of them.

“We have already urged the court to exempt Jaha Alam from prosecution,” he said, adding that the process was underway.

He, however, said Salek, who was on the run, would remain as the accused in the cases.

Yesterday, the HC bench passed the order in a suo moto move following a report published in the Bangla daily Prothom Alo yesterday under the headline “Wrong accused in jail in 33 cases: Sir, I am Jaha Alam, not Salek.”

Supreme Court lawyer Amit Das Gupta placed the news report before the HC bench for necessary orders in this regard.

HC judges issued the summons after going through the report.

The court also gave a rule asking the authorities concerned to explain why Jaha Alam should not be acquitted of the cases in which he was not an accused, Amit told The Daily Star.

Ealier, the DG of the ACC said that the faces of Abu Salek and Jaha Alam, according to the photograph, were similar.

'JAHA IS INNOCENT'

Speaking to our Manikganj correspondent, Alam's elder brother Shanur said his brother used to work in Narsingdi's Ghorashal Jute Mill in 2003 as a machine operator.

His job was made permanent in 2012, from which he earned Tk 2,000-3,000 per week.

His family is unable to bear the expenses of the cases.

“I demand the release of my brother and [for the] punishment to the real culprits,” he said, adding that the family sought compensation from the government in this regard.

Meanwhile, the ACC learnt from a Facebook post on Salek's profile that he was in Nepal about one month ago. Alam is still languishing in Kashimpur jail.
  • The Daily star/ jan 29, 2019 

$5.9b siphoned off in 2015

Bangladesh second in South Asia, among top 30 countries in world in terms of illicit financial flows

Rejaul Karim Byron

Some $5.9 billion was siphoned out of Bangladesh in 2015 through trade misinvoicing, the Global Financial Integrity (GFI) said in a report yesterday.

Bangladesh ranked second in South Asia in terms of illicit outflows of money, according to the report. 

The Washington-based research and advisory organisation came out with the findings by analysing data of trade in goods of 148 developing countries with advanced economies. The report, based on International Monetary Fund (IMF) data, also said $2.36 billion entered the country in 2015.

The GFI said trade-related illicit financial flows (IFFs) appear to be both significant and persistent features of developing country trade with advanced economies. 

“Trade misinvoicing remains an obstacle to achieving sustainable and equitable growth in the developing world,” said the GFI report titled “Illicit Financial Flows to and from 148 Developing Countries: 2006-2015”.

The GFI defines IFFs as money that is illegally earned, used or moved and which crosses an international border.

Trade misinvoicing is a method of moving IFFs, and includes the deliberate misrepresentation of the value of imports or exports in order to evade customs duties and VAT, launder the proceeds of criminal activity or to hide offshore the proceeds of legitimate trade transactions, among other motivations, it said.

The new study comes more than a year after the GFI's 2017 report which estimated that Bangladesh had lost between $6 billion and $9 billion to illicit money outflows in 2014.

At that time, the GFI analysed discrepancies between bilateral trade statistics and balance of payments data, as reported to the IMF, to detect flows of capital that were illegally earned, transferred, or utilised.

This year, the GFI detected the IFFs by analysing the trade data on over invoicing and under invoicing. 

The GFI found Bangladesh was one of the top 30 of countries, ranked by dollar value of illicit outflows in 2015. These countries not only include resource-rich countries such as South Africa and Nigeria but also European countries such as Turkey and South American nation Brazil.

The Asian countries in the top 30 countries in this category include Malaysia, India and the Philippines. The amount of IFFs from Malaysia was $33.7 billion, $9.8 billion from India and $5.1 billion from the Philippines.

Bangladesh lost the second highest amount of fund through IFFS after India among the South Asian nations. The illegal outflow through trade misinvoicing in other South Asian countries including Pakistan, Sri Lanka was less than a billion dollar.

The research and advisory organisation said increasing trade among developing and emerging market countries is seen by many economists as a primary path to greater development.

“However, high levels of misinvoicing, as a percentage of total trade, indicate that most developing country governments do not benefit from a significant portion of their international trade transactions with advanced economies,” said the GFI.

The GFI data showed that the amount of IFFs from Bangladesh was 17.5 percent of the nation's total trade with advanced countries at $33.73 billion in 2015.

In its previous report, the GFI said Bangladesh lost $75 billion due to trade misinvoicing and other unrecorded outflows between 2005 and 2014.

  • Courtesy: The Daily Star /Jan 29, 2019

Labour unrest - 4,899 garment workers lose jobs


At least 4,899 garment workers have been fired from their jobs in the aftermath of recent labour unrest over their wage disparity, according to the latest data of the Industrial Police.

They worked in different factories located in Ashulia, Gazipur and Narayanganj that witnessed labour movement for review of their new pay structure announced in November last year, officials said.

Labour leaders, however, claimed that the figure would be more than 7,000.

Garment workers in Ashulia, Gazipur, Tongi, Savar and Narayanganj industrial hubs took to the streets and continued their movement from December 09 to January 13 in protest against wage disparity among different grades.

Labour leaders also alleged that workers were still being victimised for joining the agitation, as apparel makers have filed cases against 'unidentified' accused, resorted to 'mass' dismissal of workers and put many in the process of dismissal.

Former general secretary of IndustriALL Bangladesh Council (IBC) Babul Akhter said more than 30 cases were filed in Gazipur, Ashulia and Savar against 5,000 to 5,500 workers while more than one hundred have been arrested.

IBC general secretary Shalauddin Shapon said more than 7,000 workers have been fired from their jobs. "This time, the numbers of terminations, cases and arrests have crossed the previous records," he added.

Workers who are associated with trade unions and previously raised their voice in the factories for their rightful demands are being targeted for cases and termination, he alleged.

"This is a very worrying situation. In most cases of termination, laws are not being followed and workers are being deprived of lawful benefits," Mr Shapon said.

Moreover, cases filed against 'unknown' accused have created a panic among workers, he added.

At the tripartite meeting held on January 13, apparel makers and government have assured the workers that no innocent workers would lose jobs and be harassed, the IBC leader pointed out.

In a separate statement, the IBC demanded an immediate end to termination and harassment of workers.

It also urged the government to take immediate measures to this end.

When asked, Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) president Md Siddiqur Rahman reiterated that no innocent workers would be harassed, saying that this is not acceptable.

He, however, said that apparel makers have the right to terminate workers for various reasons in line with the labour law.

"The issue of termination must be dealt with as per labour law," he said, adding that BGMEA will take action against the factories if it is proved that they harassed any innocent workers.

  • Courtesy: The Financial Express /Jan 29, 2019

Graft rises in Bangladesh


TIB Executive Director Dr Iftekharuzzaman unveiling the findings for Bangladesh in the global Corruption Perception Index 2019 in Dhanmondi's Midas Centre on January 29, 2019. Photo: Mohiuddin Alamgir

Bangladesh has gone down in the corruption index – falling six places in world ranking, Transparency International has said in a study.

In its Corruption Perceptions Index 2018 unveiled today, it said this was an “embarrassing low” for Bangladesh witnessed during its election year.

Bangladesh ranked 149 in the world, six places lower than where it stood in 2017, earning two points lower. The position was 13th from bottom.

Also, in consideration to South Asia, Bangladesh’s position was second lowest – only ahead of Afghanistan. Pakistan stayed three steps ahead of Bangladesh.

Transparency International Bangladesh (TIB) Executive Director Dr Iftekharuzzaman unveiled the report at a press conference in Dhanmondi’s Midas Centre this morning.

The index measured corruption of 180 countries where Somalia secured the bottom position. Denmark emerged as the least corrupted country in the index.

According to the report, a total score of 43 is considered average in 100. Bangladesh secured 26 points – two lower than what it earned last year.

HIGH-PROFILE CORRUPTS NOT BOOKED

“Bangladesh’s government had long list of commitments against corruption, but those were not implemented,” Iftekharuzzaman said in the briefing.

“There is no example of high-profile corrupts being booked. The Anti-Corruption Commission (ACC) is not booking high-profile corrupts,” he said.

“The ACC is netting low-level and middle-level corrupts,” Iftekharuzzaman said.

As probable cause of the slide, reasons upheld were errant corruption in the banking sector, encroachment of land and water bodies, graft in government purchase and recruitment, and increasing levels of money laundering.

GOVERNMENT IN DENIAL

“This is embarrassing for us. We are only ahead of Afghanistan in South Asia,” he said.

“There is a culture of denial among authorities. They deny facts when it comes to pointing out corruption,” Dr Iftekharuzzaman said.

“Instead, the government does not take it well when a report is published,” he added.
  • The Daily star/ jan 29, 2019 

Ducsu election should be covered by CCTV

Golam Mortoza

As the long-awaited Ducsu election is nearing,  the issue of “co-existence” has widely been in discussion for some time now, just as the issue of “level playing field” was in discussion before the last national election. The Dhaka University administration claims that there is “co-existence” of all the student organisations on campus, including in the residential halls, and all the student bodies have been carrying out their political activities freely.

However, of the 14 student organisations that are active on the campus, including the Chhatra Dal and the left-leaning bodies, 11 claim that there is no environment for “co-existence” in Madhur Canteen, the residential halls or anywhere on campus. According to them, everything is controlled by the Chhatra League alone. Chhatra Dal alleges that they are barred from entering the campus and the halls. If any link between any student and the Chhatra Dal is found, he is beaten up and ousted from the halls right away by the members of Chhatra League. In Chattogram University, a Chhatra Dal leader was recently assaulted by the activists of Chhatra League after he came out of an exam hall after sitting for his exam secretly. The Chhatra Dal has alleged that the situation in Dhaka University is far worse than in Chattogram.

In the DU residential halls, the teachers who are given the responsibility to look after the well-being of students do not help the students in case they are attacked by the Chhatra League. Torture in the guestrooms and the gonorooms is also quite common. Many Chhatra Dal leaders and activists are residing in the halls concealing their identity. If they become active during the Ducsu election, they won't be allowed to stay in the halls post-election. Their fate would also be the same if the election is not held.

The view of the left organisations is pretty much the same, as they claim that the Chhatra League do not want to give them the space to voice the rightful demands of the general students. The activists of the left organisations came under several attacks by the Chhatra League during the movement against sexual harassment on Pahela Baishakh, and also during the recent quota reform and road safety movements.

But the Chhatra League claims that they do not harass or torture anyone and do not believe in control. They are saying that the activists of Chhatra Dal who are genuine students of DU can come and reside in the halls. Their statement confirms the fact that the leaders and activists of the Chhatra Dal are not staying in the halls currently.

What is noticeable here is that it is the Chhatra League who are talking about whether the activists of Chhatra Dal can come to the campus or stay at the halls—and not the university authorities. Such an environment was not created in a day. The situation may improve to some extent if the authorities can take some effective measures centring the Ducsu election.

It should be mentioned here that the participation of the quota reform activists in the Ducsu election could be a cause for concern for both the Chhatra League and the Chhatra Dal. The leaders and activists of the quota reform movement were brutally attacked several times and many of them were arrested. They were threatened by the Chhatra League but they never backed away or changed their position. There is a visible support for them from the general students. The left organisations including the Chhatra Union were always by the side of the general students during all the student movements. Thus, the main competition in the Ducsu election might not be confined to the Chhatra League and the Chhatra Dal only, if it is held in a free and fair manner.

The code of conduct fixed by the university authorities for the Ducsu election is similar to that of the national election. The rule that former student leaders cannot participate in the election campaigns does not make any sense. The former leaders and activists of Chhatra League, Chhatra Dal, Chhatra Union and other organisations should be allowed to come to the campus and campaign for their candidates. The former leaders of Ducsu should also be allowed to do so.

Ducsu elections were held in a free and fair manner even during the military regimes. If the Dhaka University authorities are really sincere about holding a free and fair election, they should consider taking the following measures:

i) For ensuring a “level playing field” and establishing “co-existence” of all the organisations, the university authorities must wrest the halls of residence from the control of outsiders, and must not shy away from their effort should there be resistance from the BCL.

ii) It must be ensured that everyone, except those who are against our liberation, can carry out their political activities on campus freely.

iii) Eleven of the 14 student organisations on campus demand that the polling booths should be set up in the academic buildings, not in the halls. It will not be comfortable or even safe for the activists of the Chhatra Dal and the quota reform movement—who were ousted from their halls, which are controlled by the Chhatra League—to go to their respective halls to cast their vote. Also, as around 60 percent of the DU students live outside the campus, it should not be a problem for anyone if the polling booths are set up in the academic buildings. What Mujahidul Islam Selim, a former Ducsu VP, has said is very significant in the current situation: “The Ducsu election should not become a nocturnal expedition.” If the polling booths are set up in the halls, the chances of manipulation will be high.

iv) Dhaka University teachers are separated into three groups, namely blue, white, and pink. But the two committees that have been formed to evaluate the guidelines of Ducsu election and to conduct the election are comprised of teachers belonging to the blue group only—which is backed by the ruling Awami League. Only one member is included in these two committees from the pink group, backed by the left organisations. There is no member in these committees from the BNP-backed white group. In Dhaka University, there are teachers who are not directly involved with teachers' politics and who have the credibility to conduct the Ducsu election in a fair manner. They could be given the responsibility to conduct the election. But if that cannot be done, there is still a scope to involve the current and former members of the teachers' union in the process of evaluating the guidelines and conducting election-related activities. The university administration has held discussions with the active student organisations on campus. If it can hold similar discussions with the teachers of the blue, white and pink groups before finalising the guidelines, there will be less scope for controversy.

v) It is not as if a fair election can be ensured only by setting up polling booths at the academic buildings. For holding a fair election, the authorities can consider bringing the polling booths under CCTV coverage. The CCTV cameras should be installed in a way so that it will be visible from a distance, to check if the ballot boxes are staffed beforehand. And the Chhatra League can benefit from this step and disprove, with the help of CCTV footage, any potential allegations of unfair intervention in the election.

All the entry points to the campus including the Madhur Canteen and the open spaces can also be brought under the CCTV coverage. The CCTV cameras already installed at various points of the campus should be examined to see if they are effective at all. The quality of the cameras should be ensured for getting clear footage.

The CCTV footage will prove if the free movement of students (voters) has been ensured during the election. If the activists of Chhatra Dal, Chhatra League or the quota reform movement carry out any violent activities, that can be proved also. Most of all, CCTV cameras will be very effective in identifying the casting of fake votes, ballot stuffing, and interference by anyone in the voting process. 

It is not at all difficult to bring the entire campus including the residential halls under CCTV coverage. The CCTV technology is used during the Bishwa Ijtema or the Pahela Baishakh celebrations to ensure security of people. It can also be used to ensure a free and fair Ducsu election. The money it will cost is not much. We need to remember that many students were killed on DU campus in the past. So, precautions must be taken during the upcoming Ducsu election to avoid any violence on campus, and the CCTV cameras can play an effective role to ensure the security of the students.

  • Golam Mortoza is a journalist.
  • The article was translated from Bangla by Naznin Tithi.
  • Courtesy: The Daily Star/ Jan 29, 2019